1 of 12

বাংলা অলঙ্কার�ডঃ সাখাওয়াত হোসেন�অধ্যাপক ,বাংলা বিভাগ�পি. এন. দাস কলেজ

2 of 12

অলঙ্কার প্রসঙ্গ

  • আজ ক্লাসে বাংলা অলঙ্কার নিয়ে আলোচনা করব । অলঙ্কার কাকে বলে ,অলঙ্কার কত প্রকার ,তাদের সংজ্ঞা উদাহরণ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হবে । বাংলা অনার্সে পাঠ্য অলঙ্কার গুলি হল-১) শব্দালঙ্কার – অনুপ্রাস ,শব্দ-শ্লেষ ,যমক ,বক্রোক্তি ও পুনরুক্তবদাভাস ।
  • ২) অর্থালঙ্কার – উপমা্‌ ,রূপক ,উল্লেখ ,উতপ্রেক্ষা ,সন্দেহ , ভ্রান্তিমান ,অপনহুতি ,অতিশয়োক্তি ,সমাসোক্তি ,প্রতিবস্তুপমা নিশ্চয় ,প্রতীপ ,দৃষ্টান্ত ,ব্যাজস্তুতি ,ব্যাতিরেক ,অর্থান্তরন্যাস বিরোধাভাস ,বিভাবনা ,অসঙ্গতি ও বিষম ।

3 of 12

“কাব্যং গ্রাহ্যম অলঙ্কারাত”�

  • অলঙ্কার থাকলেই রচনা কাব্য বলে গ্রাহ্য হয় ।অলঙ্কার কাকে বলে ? তার সংজ্ঞা নিরুপনের প্রয়োজন । যার সাহায্যে কাব্য-শরীরে ভাব ভাবনা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয় তাকেই বলে অলঙ্কার ।

4 of 12

অলঙ্কার দুই প্রকার

  • ১)শব্দালঙ্কার
  • ২)অর্থালঙ্কার

  • শব্দালঙ্কারের সংজ্ঞা-কথা বা শব্দের আশ্রয়ে কাব্য শরীরে যে সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয় তাকে শব্দালঙ্কার বলে ।
  • আজকের ক্লাসে শব্দালঙ্কার কত প্রকার ও তাদের সংজ্ঞা , উদাহরণ নিয়ে আলোচনা হবে ।

5 of 12

ক) অনুপ্রাস

  • অনুপ্রাস একটি শব্দালঙ্কার । একই বর্ণ বা বর্ণ গুচ্ছ যখন কবিতার চরণের মধ্যে বার বার ধ্বণিত হয়ে কাব্য সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে তখন তাকে অনুপ্রাস বলে ।

উদাহরণঃ- চল চপলার চকিত চমকে করিছে চরণ বিচরণ ।

ব্যাখ্যা – এখানে কবিতার চরণের মধ্যে ‘চ’ বর্ণ টি বার বার ধ্বণিত হয়ে কাব্য সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে ।তাই এটি অনুপ্রাস অলঙ্কার হয়েছে ।

6 of 12

অনুপ্রাসের প্রকার ভেদ -

  • ১। সরল অনুপ্রাস
  • ২। ছেকানুপ্রাস
  • ৩। অন্ত্যানুপ্রাস
  • ৪। শ্রুত্যনুপ্রাস
  • ৫। গুচ্ছানুপ্রাস
  • ৬। মালানুপ্রাস

7 of 12

সরল অনুপ্রাস -

  • যখন একটি বর্ণ বা বর্ণ গুচ্ছ কবিতার চরণের মধ্যে বারবার ধ্বণিত হয় তখন তাকে সরল অনুপ্রাস বলে ।

উদাহরণ – কোকিল কুহরে কুতুহলে ।

ব্যাখ্যা – এখানে ‘ক’বর্ণ টি বারবার ধ্বণিত হয়ে কাব্য সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে । তাই এটি সরল অনুপ্রাস ।

8 of 12

ছেকানুপ্রাস -

  • যখন একটি ব্যাঞ্জন গুচ্ছ কবিতার চরণের মধ্যে মাত্র দুবার ধ্বণিত হয় ,তখন তাকে বলে ছেকানুপ্রাস ।

উদা – লঙ্কার পঙ্কজ রবি গেলা অস্তাচলে ।

এখানে ‘ঙ্ক’ এই যুগ্ম ব্যাঞ্জন টি চরণের মধ্যে মাত্র দুবার ধ্বণিত হয়েছে ।তাই এটি ছেকানুপ্রাস । ছেক মানে পণ্ডিত । পন্ডিতেরা এই অলঙ্কার টি ব্যাবহার করেন ,তাই এর নাম ছেকানুপ্রাস ।

9 of 12

অন্ত্যানুপ্রাস -

  • কবিতার চরণের শেষে যে মিল, তাকে বলে অন্ত্যানুপ্রাস।

উদাহরণ – মহাভারতের কথা অমৃত সমান

কাশীরাম দাস কহে শুনে পুণ্যবান।

ব্যাখ্যা –এখানে উভয় চরণের শেষে মান ও বানের মিল ঘটেছে ।তাই এটি অন্ত্যানুপ্রাস ।

10 of 12

শ্রুত্যনুপ্রাস -

  • সঠিক অন্ত্যমিল না হলেও সদৃশ ধ্বণির প্রভাবে অনুপ্রাসে একটি ধ্বণিসাম্য লক্ষ্য করা যায় –একে শ্রুত্যনুপ্রাস বলে ।

উদা –পরপারে দেখি আঁকা

তরুছায়া মসী মাখা।

ব্যাখ্যা –এখানে আঁকা ও মাখার মধ্যে থিক মিল না হলেও ধ্বণিসাম্যে অর্থাৎ শ্রুতি তে মিল হয়েছে ।তাই এটি শ্রুত্যনুপ্রাস ।

11 of 12

গুচ্ছানুপ্রাস -

  • যখন একটি ব্যাঞ্জন গুচ্ছ বা যুগ্ম ব্যাঞ্জন কবিতার চরণের মধ্যে দুই এর বেশীবার ধ্বণিত হয় ,তখন তাকে গুচ্ছানুপ্রাস বলে ।

উদা – এত ছলনা কেন বলনা গোপ ললনা হল সারা ।

ব্যাখ্যা – এখানে ‘লনা’ এই ব্যাঞ্জন গুচ্ছ টি দুই এর বেশীবার ধ্বণিত হয়েছে ,তাই এটি গুচ্ছানুপ্রাস ।

12 of 12

মালানুপ্রাস -

  • যখন অনুপ্রাসের মালা অর্থ্যাত একাধিক অনুপ্রাস কবিতার চরণের মধ্যে পরিলক্ষিত হয় তখন তাকে বলে মালানুপ্রাস ।

উদা - শিশির কনায় মানিক ঘনায়

দূর্বাদলে দীপ জ্বলে ।

ব্যাখ্যা – এখানে ন, দ, ও ল য়ের একাধিক অনুপ্রাস হয়েছে ।তাই এটি মালানুপ্রাস অলঙ্কার ।