বর্ষাকাল আকাশ পর্যবেক্ষণের পক্ষে অনুকূল নয় তবুও কোনদিন আকাশ পরিষ্কার থাকলে দেখা যেতে পারে। এ মাসে দেখতে পাবেন বৃশ্চিক রাশির তারামণ্ডলটিকে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, বৃশ্চিক রাশি বলতে আমরা জ্যোতিষ চর্চার বিষয়ে এখানে কিছু আলোচনা করি না; এই ওয়েবসাইটটি সম্পূর্ণই জ্যোতির্বিদ্যার উপর। কিন্তু কিছু তারামণ্ডলের নাম জ্যোতিষ বিদ্যা এবং জ্যোতির্বিদ্যা উভয় জায়গায় একই।
বৃশ্চিক রাশির তারামণ্ডলের তারাগুলি খুব বেশি উজ্জ্বল নয়। তবে একটি তারা খুবই উজ্জ্বল, সেটির নাম জ্যেষ্ঠা। সঠিকভাবে দক্ষিণ দিকে মুখ করে দাঁড়ালে দিগন্ত থেকে ৪০° (চল্লিশ ডিগ্রী) উপরে রাত ন'টা নাগাদ জ্যেষ্ঠা নক্ষত্র দেখতে পাবেন। কাছাকাছি যে তারাগুলো আরও দেখতে পাবেন সেগুলো বৃশ্চিক রাশির অন্তর্গত। জ্যেষ্ঠা নক্ষত্রকে মা লক্ষ্মীর বড় বোন ধরা হয়। উত্তর গোলার্ধ থেকে এটি দেখা যাবে আর অল্প কিছুদিন।
June 2025
পশ্চিম আকাশে এক অন্যতম এক সুদৃশ্য তারামণ্ডল হল কৃত্তিকা মণ্ডল। ঈষৎ নীলাভ এই উজ্জ্বল তারাগুলো খুব কাছাকাছি এক জায়গায় জড়ো হয়ে থাকে। এখানে ছ’টি তারা দেখতে পাওয়া যায়। এঁরা সকলেই ঋষিপত্নী কল্পনা করা হয়ে থাকে। ক্রতুর স্ত্রী সন্নতি, পুলহর স্ত্রী ক্ষমা, পুলস্তর স্ত্রী প্রীতি, অত্রির স্ত্রী অনসূয়া, অঙ্গিরার স্ত্রী স্মৃতি এবং মরীচির স্ত্রী সম্ভূতি। কৃত্তিকা মণ্ডলকে আকাশে একগুচ্ছ ফুলের স্তবকের মত দেখায়। কৃত্তিকা মণ্ডল দেখতে পাওয়া যাবে আর অল্প কয়েকটা দিন। তারপর আবার শীতকালে।
(April-May ২০২৫)
এখন কৃষ্ণপক্ষ। চন্দ্রপ্রভা কম থাকায় আকাশ দেখার সুবিধা। আকাশের এক সুদৃশ্য নক্ষত্রমণ্ডল হল কৃত্তিকা মণ্ডল। এখানে সপ্তর্ষিমণ্ডলের ছয় ঋষির ঋষিপত্নীরা রয়েছেন। রাত আটটা নাগাদ পশ্চিম আকাশে একটু ডানদিক ঘেঁষে দিগন্ত থেকে কমবেশি ৩০° উপরে গায়ে গায়ে যে ছ’টি উজ্জ্বল তারা দেখতে পাবেন সেটিই কৃত্তিকা মণ্ডল। শুধু বশিষ্ঠ মুনির স্ত্রী অরুন্ধতী তপস্যার জোরে সর্বদা তাঁর সাথে রয়েছেন। অরুন্ধতী আছেন সপ্তর্ষিমণ্ডলে। (তথ্য: ২৫ এপ্রিল ২০২৫)
আমাদের অতি পরিচিত একটি নক্ষত্রমণ্ডল হল কালপুরুষ। কালপুরুষ মণ্ডল আর অল্প ক’দিন দেখতে পাবেন। দেখবেন মোটামুটি রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ। কালপুরুষের কোমরের বেল্টের পরপর তিনটি নক্ষত্র ঊষা, অনিরুদ্ধ, এবং চিত্রলেখা এদের সনাক্ত করে নিয়ে তারপর অন্য নক্ষত্রগুলো দেখলে সুবিধা হবে। দক্ষিণ-পশ্চিম আকাশে দিগন্ত থেকে কমবেশি ৩০° উপরে কেন্দ্র করে। রাত বাড়ার সাথে সাথে এটি পশ্চিমে অস্ত যাবে। গ্রীষ্মকালে কালপুরুষ মণ্ডল দেখা যায় না।
২৭ মার্চ ২০২৫
দেখুন রাতের আকাশ
শুরু হয়েছে কৃষ্ণপক্ষের আকাশ। খালি চোখে মাঝরাতে দেখতে পাবেন প্রথম পুনর্বসু তারার কাছে মঙ্গল গ্রহকে। রাত ১২টা নাগাদ পশ্চিম আকাশ থেকে ২০° উত্তরে সরে দিগন্ত থেকে কমবেশি ৩৫° উপরে দেখা যাবে মঙ্গল গ্রহ। যে লালচে আভাযুক্ত তারা দেখতে পাবেন সেটিই মঙ্গল গ্রহ। প্রায় একই জায়গায় রাত ১০টা নাগাদ দেখতে পাবেন বৃহস্পতি গ্রহকে।
(তথ্য : ১৭ মার্চ ২০২৫)
আমাদের খুব পরিচিত নক্ষত্রমণ্ডল হল সপ্তর্ষিমণ্ডল (বৃহৎ)। আরেকটি আকৃতিতে ক্ষুদ্র কিন্তু সপ্তর্ষিমণ্ডলের অনুরূপ; সেটি লঘু সপ্তর্ষিমণ্ডল বা শিশুমার নামে পরিচিত। সপ্তর্ষিমণ্ডল এখন ভালোভাবে দেখতে পাবেন মোটামুটি রাত ১০.০০ নাগাদ এবং এরপর। সাড়ে দশটা নাগাদ দেখবেন পূর্ব এবং উত্তর-পূর্বের মাঝামাঝি দিগন্ত থেকে কমবেশি ৪০° উপরে কেন্দ্র করে। সেখান থেকে যেভাবে ধ্রুবতারাকে দেখবেন — সপ্তর্ষিমণ্ডলের জিজ্ঞাসা চিহ্নের মাথার দিকের দুটি তারাকে সংযুক্ত করে এক সরলরেখা বরাবর নিম্ন অভিমুখে এগিয়ে গেলে ধ্রুবতারাকে পাবেন। মাথার দিকে দুটো তারার মধ্যে যে দূরত্ব, মোটামুটি হিসাব করে তার সাড়ে চার গুণ এগিয়ে যাবেন। যে তারাটি দেখতে পাবেন সেটি ধ্রুবতারা। ধ্রুবতারা অনেক বড় (সূর্যের থেকে প্রায় ৫ গুণ) তারা হলেও পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০০ আলোকবর্ষ দূরে থাকায় এটি অনুজ্জ্বল দেখায়। ধ্রুবতারাকে সবসময় একই জায়গায় দেখবেন। সময়ের সাথে এর স্থান পরিবর্তন হবে না। ধ্রুবতারের অবস্থান একদম সঠিক উত্তরদিক (মাত্র ১° বিচ্যুত)। ধ্রুবতারাকে দেখতে পাবেন দিগন্ত থেকে আপনার স্থান অনুযায়ী কম-বেশি ২২° বা ২৩° উঁচুতে (কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী হিসাবে)। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, এই ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী স্থানকে কেন্দ্র করে। পরিদর্শন স্থানের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হলে অর্থাৎ আপনার অবস্থিত অক্ষাংশ যদি অনেক পরিবর্তিত হয় তাহলে ধ্রুবতারার অবস্থানও সেই মত পরিবর্তিত হবে। অন্যান্য তথ্যও পরিবর্তিত হবে।
২১ মার্চ ২০২৫
আকাশে নক্ষত্র গ্যালাক্সি ইত্যাদির বৈচিত্র নিজে দেখুন এবং ছোটদের দেখান। রাতের আকাশের এই বৈচিত্র প্রত্যক্ষ করার জন্য কিছু প্রাক-প্রস্তুতি দরকার। অর্থাৎ কিছু পরিচিত তারা ঠিক কোথায় কোথায় থাকে সেটা একবার আপনার মনে করে নেওয়া দরকার। আমাদের খুব পরিচিত নক্ষত্রমণ্ডল হল সপ্তর্ষিমণ্ডল (বৃহৎ)। আরেকটি আকৃতিতে ক্ষুদ্র কিন্তু সপ্তর্ষিমণ্ডলের অনুরূপ সেটি শিশুমার নামে পরিচিত। সপ্তর্ষিমণ্ডল এখন ভালোভাবে দেখতে পাবেন মোটামুটি রাত ১১.০০ নাগাদ এবং এরপর। অতিরিক্ত আলোকপ্রভার জন্য যদি এই সময়েও দেখতে না পান তাহলে রাত ১২টার সময় অবশ্যই ভালভাবে দেখতে পাবেন কারণ তখন এটা অনেকটা আকাশের উপর দিকে থাকবে। যদিও রাত ন’টা থেকে এর উদয় হবে কিন্তু দিগন্তের খুব কাছাকাছি থাকায় রাস্তার বিভিন্ন আলোর ছটার জন্য আপনি ভালভাবে দেখতে পাবেন না। রাত ১২টা বা ১টা নাগাদ সঠিক উত্তর আকাশে মুখ করে তাকালে কিছুটা উত্তর-পূর্বে সপ্তর্ষিমণ্ডল দেখতে পাবেন। সেখান থেকে কিভাবে ধ্রুবতারাকে দেখবেন — সপ্তর্ষিমণ্ডলের জিজ্ঞাসা চিহ্নের মাথার দিকের দুটি তারাকে সংযুক্ত করে এক সরলরেখা বরাবর নিম্ন অভিমুখে এগিয়ে গেলে ধ্রুবতারাকে পাবেন। মাথার দিকে দুটো তারার মধ্যে যে দূরত্ব, মোটামুটি হিসাব করে তার সাড়ে চার গুণ এগিয়ে যাবেন। যে তারাটি দেখতে পাবেন সেটি ধ্রুবতারা। ধ্রুবতারা অনেক বড় (সূর্যের থেকে প্রায় ৫ গুণ) তারা হলেও পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০০ আলোকবর্ষ দূরে থাকায় এটি অনুজ্জ্বল দেখায়। ধ্রুবতারাকে সবসময় একই জায়গায় দেখবেন। সময়ের সাথে এর স্থান পরিবর্তন হবে না। ধ্রুবতারের অবস্থান একদম সঠিক উত্তরদিক (মাত্র ১° বিচ্যুত)। ধ্রুবতারাকে দেখতে পাবেন দিগন্ত থেকে আপনার স্থান অনুযায়ী কম-বেশি ২২° বা ২৩° উঁচুতে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, এই ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী স্থানকে কেন্দ্র করে। পরিদর্শন স্থানের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হলে অর্থাৎ আপনার অবস্থিত অক্ষাংশ যদি অনেক পরিবর্তিত হয় তাহলে ধ্রুবতারার অবস্থানও সেই মত পরিবর্তিত হবে। অন্যান্য তথ্যও পরিবর্তিত হবে।
(জানুয়ারি ২০২৪)
এই ডিসেম্বর মাসে সন্ধ্যার আকাশে শুক্র গ্রহ আর তারই কাছাকাছি খালি চোখে শনি গ্রহকে দেখতে পাবেন। শুক্র গ্রহকে দেখবেন পশ্চিম আকাশ থেকে একটু বাঁদিক ঘেঁষে দিগন্ত থেকে ২০ ডিগ্রি উঁচুতে সন্ধ্যা সাতটার আশেপাশে। শুক্র গ্রহ বেশ বড় এবং উজ্জ্বল । এটি দেখতে পেলে এবার আপনি বাঁদিক ঘেঁষে তেরছাভাবে প্রায় ১০ ডিগ্রি আরো মাথা তুলবেন। দেখবেন খুব ছোট্ট একটা স্থির আলোর বিন্দু যার আশেপাশে আর কোন তারা নেই। সেটিই শনি গ্রহ। খুবই অনুজ্জ্বল কিন্তু বুঝে নিতে অসুবিধা হবে না। খালি চোখেই দেখতে পাবেন। শনির বলয় (ring) কিন্তু দেখতে পাবেন না; যেরকমটা বইয়ে দেখে থাকেন। সাধারণ টেলিস্কোপ দিয়েও নয়। বাড়িতে বাইনোকুলার থাকলে ব্যবহার করতে পারেন। বাইনোকুলার দিয়ে দেখলে কিন্তু বড় দেখাবে না। তবে খুব আলোকিত অঞ্চলে পরিষ্কার দেখতে পাবেন। এটাই বাইনোকুলার ব্যবহারের সুবিধা। একটু গ্রাম্য পরিবেশে বাইনোকুলারের দরকার নেই। শুক্র গ্রহকে এই মাসের পর আর পশ্চিম আকাশে দেখতে পাবেন না। কিছুদিন পর পুব আকাশে ভোরবেলায় দেখতে পাবেন। মনে রাখবেন, এই গ্রহ কিন্তু বেশি রাতে দেখা যায় না; সন্ধ্যাবেলায় বা ভোরবেলায় দেখতে হয়। সেজন্য বেশি রাতে এই গ্রহ দেখার চেষ্টা করবেন না।
Posted on 20 December 2024
আকাশ পর্যবেক্ষণের ভাল সময় শীত-বসন্ত। আকাশে নক্ষত্রমণ্ডল, নক্ষত্র, আকাশগঙ্গা, গ্যালাক্সি ইত্যাদি দেখার আগে সপ্তর্ষিমণ্ডল এবং ধ্রুবতারাকে ঠিক করে দেখে রাখুন। উত্তর গোলার্ধে সারাবছর সপ্তর্ষিমণ্ডল দেখা যায়। সপ্তর্ষিমণ্ডলের জিজ্ঞাসা চিহ্নের মাথার দিকের দুটি তারাকে সংযুক্ত করে এক সরলরেখা বরাবর নিম্ন অভিমুখে এগিয়ে গেলে ধ্রুবতারাকে পাবেন। মাথার দিকে দুটো তারার মধ্যে যে দূরত্ব, মোটামুটি হিসাব করে তার সাড়ে চার গুণ এগিয়ে যাবেন। যে তারাটি দেখতে পাবেন সেটি ধ্রুবতারা। ধ্রুবতারা অনেক বড় (সূর্যের তুলনায় প্রায় ৫ গুণ বড়) তারা হলেও পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০০ আলোকবর্ষ দূরে থাকায় এটি অনুজ্জ্বল দেখায়। (সর্বশেষ তথ্য সংযোজন: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪)
আকাশ মেঘাচ্ছন্ন না থাকলে আগামীকাল ২২ ডিসেম্বর দেখুন ভোরের সূর্যোদয়। এরপর সূর্য দক্ষিণ দিকে সর্বাধিক ২৩.৫° গমন করার পর আবার আস্তে আস্তে পূর্ব দিকে সরে আসবে এবং তারপর উত্তরপূর্বে ২৩.৫° যাবে। বলা যেতে পারে সূর্যের দক্ষিণায়ন শেষ হবে। সূর্যের এই পূর্ব দিক থেকে দক্ষিণ দিকে ক্রমশ সরে যাওয়া এবছর শুরু হয়েছিল ~ ২২ সেপ্টেম্বর
(সর্বশেষ তথ্য সংযোজন: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪)
শীতকাল আকাশ পর্যবেক্ষণের ভাল সময়। ঠিক পশ্চিম আকাশ থেকে একটু বাঁদিকে দিগন্ত থেকে ২০ ডিগ্রি উঁচুতে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ শুক্র গ্রহকে পরিষ্কার দেখতে পাবেন। চলতি নাম সন্ধ্যাতারা, শুকতারা নয়: ভোরের আকাশে এটাই শুকতারা (সর্বশেষ তথ্য সংযোজন: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪)
আকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিন —কি দেখবেন, কোথায় দাঁড়িয়ে দেখবেন, সাথে কী কী রাখবেন — সেগুলো আগে থেকেই স্থির করে রাখুন। আজ মেঘলা আকাশ। আমরা আরো কিছু তথ্য বিকালের মধ্যে দেব। চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।