হ:
CONTENTS
আল্লাহ বলেন হও, আর তা হয়ে যায় :
হতভম্ব, হতাশা, হতাশ হওয়া, নিরাশ হওয়া :
পরকালে পুনর্জীবিত হয়ে কাফেররা বিশ্ময়ে বিমূঢ় ও হতভম্ব হয়ে যাবে :
বৃষ্টি অবতরণের পূর্বে মানুষের হতাশা :
হযরত ইউসুফ আ: কে হত্যার ষড়যন্ত্র :
হযরত ইব্রাহিম আ: কে হত্যার ষড়যন্ত্র :
সন্তান হত্যা :
পূত্র সন্তান হত্যা ও কন্যা সন্তান জীবিত রাখা :
নবীদেরকে হত্যা : হত্যার উপক্রম :
হযরত খিজির আ: কর্তৃক বালক হত্যা এবং তার রহস্য : তবে শরীয়ত বিরোধী কার্যকলাপ বরদাস্ত করা হবে না : দেখুন : শ > শরীয়ত।
মূসা আ: যে কিবতীকে হত্যা করে ফেলেছিলেন, সেটা কি তার পথভ্রষ্টতা ছিল ? নাকি ভুলক্রমে হত্যা ?
হুরুফে মুকাত্তাআত এর অর্থ কি? এবং এর প্রয়োজনীয়তা কি ?
আনুষ্ঠানিক ইবাদত সমূহের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে :
মক্কার মসজিদুল হারাম ও এর চতুর্সীমানার উপর কি আরব ও অনারব সকল মু’মিনদের অধিকার সমান ?
মসজিদে হারামের চতুর্সীমায় যে কাজ গুলো হারাম:
প্রাচীন কাল থেকেই যানবাহন হিসেবে উট ব্যবহৃত হয়ে আসছে :
এছাড়াও মানুষ পায়ে হেঁটে হজ্জ করতে আসতো :
দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ, কিন্তু দেশপ্রেমের সীমা কতটুকু ?
দেশ ও জাতির ইবাদত বনাম আল্লাহর ইবাদত :
আমি আমার রবের দিকে হিজরত করছি:
মূসা আ: এর প্রতি হিজরতের নির্দেশ : আল্লাহর পক্ষ থেকে
লুত আ: কে দেশ থেকে বের করে দেবার হুমকি কাফেরদে :
যে জাতি নবীদেরকে তথা আল্লাহর পথে আহ্বানকারীদেরকে দেশত্যাগে বাধ্য করে তারা নিজেরাও সেখানে বেশীদিন টিকতে পারে না :
হিজরকারীদের প্রতি আল্লাহর সহায়তা :
হিজরতকারীদের জন্য আল্লাহ দুনিয়াবী আসবাব ও সুযোগ সুবিধার দুয়ার খুলে দেন :
হিজরতের সময় হযরত মূসা আ: এর লাঠির আঘাতে সাগর দ্বিখন্ডিত হয়ে গেল :
হিজরতকারী মুসলমানগণ হিজরত করার সময় কি ধরণের জুলুমের শিকার হয়েছিল :
দান পাবার অধিকারী : ১। আত্নীয় স্বজন, ২। গরীবমিসকীন ৩। হিজরত কারী মুহাজির :
হাওয়ারী প্রসঙ্গ : (আরো দেখুন : স > সাহাবী প্রসঙ্গ)
প্রথম বার তোমাদেরকে যেভাবে সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবেই আমার কাছে এসে গেছো :
একাকী ও নি:সঙ্গ অবস্থায় আল্লাহর নিকট হাজির হতে হবে :
হাশরের ময়দান : হাশরের ময়দান কি এ ভূ-পৃষ্ঠেই তৈরী করা হবে ?
জান্নাতীদের জন্য হাশরের ময়দানের কঠিন সময়টি কতটুকু হবে :
কিয়ামতের চরম ভীতিকর অবস্থায়ও মু’মিনরা একটুও পেরেশান হবে না :
অপরাধীদেরকে ঘেরাও করে আনা হবে :
আল্লাহর আয়াত অস্বীকারকারীদেরকে ঘেরাও করে আনা হবে :
ফেরেশতাদেরকে হাশরের ময়দানে দলে দলে নামিয়ে দেয়া হবে :
সর্বক্ষেত্রে হালাল হারামের বিধান দেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর :
হারাম : সম্মানিত : মসজিদুল হারাম : হারাম শহর : সম্মানিত শহর : মক্কা :
হালাল খাদ্য সমূহ :
পাক পবিত্র খাদ্যসমূহ খাওয়ার নির্দেশ : এবং এটা সৎকাজ কবুল হওয়ার শর্ত:
দুনিয়াবী আগুন তথা হালাল রিজিক্ব / আছবাব সংগ্রহ করতে গিয়ে মুসা আ: এর আখেরাতের পথের সন্ধান লাভ :
হালাল রিযিক্ব থেকে আল্লাহর পথে ব্যয় করো :
নিরূপায় হয়ে কি হারাম প্রানীর মাংস ভক্ষণ করা যাবে ?
হাত বগলের মধ্যে রাখার পর উজ্জল হয়ে যাওয়া :
একজন নবীর দোওয়ায় আরেকজনকে নবী বানানো হলো :
হাত পা বিপরীত দিক থেকে কেটে দেওয়া :
হাত পা কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে : দেখুন : প > পরকালীন বিচার ব্যবস্থার পদ্ধতি সমূহ :
জান্নাত ও জাহান্নাম কি মানুষের নিজ হাতের কামাই নাকি তাকদীরেই লেখা আছে ?
তাকদীরের কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে বলেই কি মানুষ জান্নাতে বা জাহান্নামে যাবে ?
অন্ধকারে যখন হাত দেখা যায়না : কাফেরদের কর্মের উপমা :
হাদীস অস্বীকারকারীদের প্রতি আল্লাহর বক্তব্য :
কুরআনের সরকারী ব্যাখ্যা দাতা হলেন রাসুল সা: : হাদীস হচ্ছে কুরআনের ব্যাখ্যা :
হাদীস অস্বীকারকারীদের বক্তব্য খন্ডন : কুরআনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়ের উল্লেখ রয়েছে :
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়ের উল্লেখ :
লাহওয়াল হাদীস / নাটক / গল্প কবিতা / গান বাজনা :
একাকী ও নি:সঙ্গ অবস্থায় আল্লাহর নিকট হাজির হতে হবে :
আইন, বিধান, নির্দেশ, পদ্ধতি, রাষ্ট্রপরিচালনা, বিচার ব্যবস্থা ইত্যাদি :
হেদায়েত / হিদায়াত : / সুপথ পাওয়া :
ওয়াল্লাজীনা যাহাদু ফীনা- লানাহদিয়ান্নাহুম সুবুলানা : যারা আমার জন্য সংগ্রাম- সাধনা করবে তাদেরকে আমি আমার পথ দেখাবো :
হেদায়েত লাভের জন্য কি জ্ঞানী গুনী ও বুদ্ধিমান হওয়া আবশ্যক ? না, বরং সত্যপ্রীতি আবশ্যক :
জ্ঞানী ও বুদ্ধিসচেতন লোকেরাও পথভ্রষ্ট হয় : জ্ঞান ও বুদ্ধির উপর হেদায়েত নির্ভর করেনা, হেদায়েত নির্ভর করে সত্যপ্রীতির উপর ও আল্লাহর তৌফিকের উপর :
কুরআন হচ্ছে হেদায়েত, কিন্তু কাদের জন্য কুরআন হেদায়েত? উত্তর : মুমিনদের জন্য, যারা কুরআন মেনে চলে : মু’মিনদেরকে রহমত লাভের জন্য ও সঠিক পথ লাভের জন্য কুরআনের কাছে যেতেহবে :
হেদায়েত সম্পর্কিত বক্তব্য সমূহ :
জিদ ও একগুঁয়েমিতা হেদায়েত লাভের পথে প্রধান প্রতিবন্ধক :
পথ দেখানোর জন্য আল্লাহই যথেষ্ট :
সঠিক পথ একমাত্র আল্লাহ্ দেখাতে পারেন :
হেদায়েত দান করার মালিক / সঠিক পথে নিয়ে আসার মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা:
যাকে আল্লাহ হেদায়েত / সঠিক পথ দেখান সেই সঠিক পথ পায় :
যাকে আল্লাহ হেদায়েত / সঠিক পথ দেখান না সে কখনো সঠিক পথ পায় না:
হে নবী তুমি মৃতদেরকে শুনাতে পারবেনা :
প্রকৃত পক্ষে কে হেদায়েত প্রাপ্ত আর কে আল্লাহবিরোধী পথে রয়েছে তা আল্লাহ ভালো করেই জানেন :
মানুষকে সঠিক পথ দেখাবার জন্যই আসমানী কিতাব সমূহ নাযিল করা হয়েছে :
সঠিক পথ দেখাবার দায়িত্ব আল্লাহর :
মুহাম্মদ সা: হেদায়েত দাতা নন, তিনি কেবলমাত্র সতর্ককারী :
আল্লাহ যদি চাইতেন তবে সমগ্র মানব জাতিকে হেদায়েত দিয়ে দিতে পারতেন, কিন্ত জোর করে হেদায়েত দেওয়া আল্লাহর নীতি নয় :
আল্লাহর অনুগ্রহেই হেদায়েত পাওয়া সম্ভব :
কোন ধরণের লোকদেরকে আল্লাহ হেদায়েত দান করেন না : সঠিক পথ দেখান না :
১।ঈমান ও জিহাদের চাইতে যদি অন্যান্য জিনিস প্রিয় হয় :
২। সত্য সুষ্পষ্ট রূপে প্রমাণিত হয়ে যাবার পরও যারা কুরআনকে মেনে নিতে অস্বীকার করে ও নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে , সেই সব জালেমদেরকে :
৩। যাদের বিবেক মরে গেছে, জ্ঞানের জগতে যারা অন্ধ বধির ও বোবা :
হেদায়েত / পথনির্দেশনা কি মূর্তির পক্ষে দেওয়া সম্ভব ? তাহলে মূর্তিপূজা কেন করা হবে ?
কোন ধরণের লোকদেরকে আল্লাহ হেদায়েত দান করে থাকেন ?
যারা আসলে হেদায়েত লাভ করতে চায় তাদেরকেই আল্লাহ হেদায়েত করেন :
কোন ধরণের লোকদেরকে আল্লাহ হেদায়েত দান করেন না ?
কুরআন কোন ধরণের লোকদের জন্য হেদায়েত স্বরূপ ? :
হেদায়েত/সৎপথ লাভের তৌফিক কেন ছিনিয়ে নেয়া হয় ?
হেদায়েত / সৎপথ লাভের তৌফিক কেন ছিনিয়ে নেয়া হয় ? কুরআনের বক্তব্য : আমি (আল্লাহ) তাদেরকে পথ দেখাই না, তাদেরকে অন্ধ করে দিয়েছি, তাদের অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছি ফলে তারা সত্যকে দেখতে পায়না – এ ধরণের কথার কারণ কি ?
হেদায়েত/ সঠিক পথ কিভাবে পাওয়া যাবে ?
১। যাদের অন্তর আল্লাহর আয়াতের প্রতি ঝুঁকে পড়ে হেদায়েত তথা সত্য সরল পথের সন্ধান তারাই পায়
রাসুলগণ চাইলেই কাউকে হেদায়েত দান করতে পারেন না, হেদায়েত দান করার মালিক আল্লাহ:
উম্মতের হেদায়েত প্রাপ্তির জন্য নবী মুহাম্মদ সা: এর পেরেশানী :
নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম হেদায়েতের মালিক নন :
মুমিনদের হেফাজত করা আল্লাহর দায়িত্ব :
কুরআনের হেফাজত কারী আল্লাহ নিজে :
আল্লাহর হুকুম ছাড়া গাছের পাতাও নড়েনা, শুতরাং, আল্লাহ চাইলে আমরা শিরক করতাম না :
নবীগণের প্রতি কাফেরদের /ইসলাম বিরোধীদের হুমকি :
কাফির /কাফের / ইসলাম বিরোধীদের প্রতি আল্লাহর হুশিয়ারী / হুমকি / সাবধান বানী :
কাফেররা যেন তোমাকে দুর্বল মনে না করে :
তোমার আজাবের হুমকি সত্য হলে আজাব নিয়ে আসোতো দেখি ?
কাফেরদের পক্ষ থেকে নবীকে চ্যালেঞ্জ :
n :
1| nZ¨v, 2| cyÎ mšÍvb nZ¨v, 3| Kb¨v mšÍvb nZ¨v, 4| wnËvZzb, 5| nvjvj, 6| nvjvj Lv`¨ mg~n, 7| nvivg, 8| nvivg Lv`¨ mg~n, 9| †n`v‡qZ,
10| ‡n`v‡qZ wKfv‡e cvIqv hv‡e , Avjøvn hv‡`i‡K †n`v‡qZ †`b bv 11| wnRiZ 12| 13| 14|
দেখুন : ব > বিচার ব্যবস্থা > কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন প্রকার বিচার ব্যবস্থা , বিচার প্রক্রিয়া ও শাস্তির ব্যবস্থা তথা হদ
(১৬:৪০) (এর সম্ভাবনার ব্যাপারে বলা যায়) কোনো জিনিসকে অস্তিত্বশীল করার জন্য এর চেয়ে বেশী কিছু করতে হয় না যে, তাকে হুকুম দিই “হয়ে যাও” এবং তা হয়ে যায়৷
(১৯:৩৫)...তিনি পবিত্র সত্তা৷ তিনি যখন কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন তখন বলেন, হয়ে যাও, অমনি তা হয়ে যায়৷
(১৯:৯) জবাব এলো, ”এমনটিই হবে” তোমার রব বলেন, এ (অর্থাৎ : বৃদ্ধা ও বন্ধ্যা দম্পতিকে সন্তান দান করা) তো আমার জন্য সামান্য ব্যাপার মাত্র, এর আগে আমি তোমাকে সৃষ্টি করেছি যখন তুমি কিছুই ছিলে না।
(১৯:২১) ফেরেশতা বললো, “এমনটিই হবে, তোমার রব বলেন, এমনটি করা (অর্থাৎ কোন পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই একজন মায়ের গর্ভে সন্তান দান করা) আমার জন্য অতি সহজ
(১৫:৫৫) তারা জবাব দিল, আমরা তোমাকে সত্য সংসংবাদ দিচ্ছি, তুমি নিরাশ হয়ো না৷৫৬) ইবরাহীম বললো, পথভ্রষ্ট লোকেরাই তো তাদের রবের রহমত থেকে নিরাশ হয়৷
(১২:৮৭) আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না৷ তাঁর রহমত থেকে তো একমাত্র কাফেররাই নিরাশ হয়৷”
(৩০-রূম: ৩৬) যখন লোকদের দয়ার স্বাদ আস্বাদন করাই তখন তারা তাতে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে এবং যখন তাদের নিজেদের কৃতকর্মের ফলে তাদের ওপর কোন বিপদ এসে পড়ে তখন সহসা তারা হতাশ হয়ে যেতে থাকে৷ ৫৫
৫৫ . ওপরের আয়াতে মানুষের মূর্খতা ও অজ্ঞতা , এবং তাঁর অকৃতজ্ঞতা ও বিশ্বাসঘাতকতার জন্য তাকে পাকড়াও করা হয়েছিল। এখানে মানুষের হীন প্রবৃত্তি ও তাঁর সংকীর্ণমনতাঁর জন্য তাকে পাকড়াও করা হয়েছে। এ হীনচেতা কাপুরুষটি যখন দুনিয়ায় কিছু ধন- সম্পদ , শক্তি ও মর্যাদা লাভ করে এবং দেখে তাঁর কাজ খুব ভালোভাবে চলছে তখন এ সবকিছু যে মহান আল্লাহর দান, একথা আর তাঁর একদম মনে থাকে না। তখন সে মনে করতে থাকে তাঁর মধ্যে এমন অসাধারণ কিছু আছে যার ফলে সে এমন কিছু লাভ করেছে যা থেকে অন্যেরা বঞ্চিত হয়েছে। এ বিভ্রান্তির মধ্যে অহংকার ও আত্মগরিমার নেশায় সে এমনই বিভোর হয়ে যায় যার ফলে সে আল্লাহ ও সৃষ্টি কাউকেও ধর্তব্যের মধ্যে গণ্য করে না।কিন্তু যখনই সৌভাগ্য মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে হিম্মত হারিয়ে ফেলে এবং দুর্ভাগ্যের একটিমাত্র আঘাতই তাঁর হৃদয়াবৃত্তি ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। তখন এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, হীনতম কাজ করতেও সে কুণ্ঠিত হয় না, এমন কি শেষ পর্যন্ত সে আত্মহত্যাও করে বসে।
(৩০-রূম: ১২) আর যখন সে সময়টি ১৪ সমাগত হবে, সেদিন অপরাধী বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে যাবে৷ ১৫
১৪ . অর্থাৎ আল্লাহর দিকে ফিরে যাবার এবং তাঁর সামনে উপস্থিত হবার সময়।
১৫ . মূল শব্দ হচ্ছে ---------এর অর্থ হচ্ছে চরম হতাশা ও দুঃখ- বেদনার কারণে কোন ব্যক্তির একেবারে হতবাক ও স্তব্ধ হয়ে যাওয়া । আশার সমস্ত পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে দেখে বিস্ময় বিমূঢ় হয়ে যাওয়া এবং কোন যুক্তি ও সমর্থন না পাওয়ার কারণে রুদ্ধশ্বাস হওয়া। এ শব্দটি যখন অপরাধীর জন্য ব্যবহার করা হয় তখন মনের পাতায় তাঁর যে ছবি ভেসে ওঠে তা হচ্ছে এই যে, এক ব্যক্তিকে অপরাধ করার সময় হাতে নাতে পাকড়াও করা হয়েছে। সে পালাবার কোন পথ পাচ্ছে না এবং নিজের সাফাই গাইবার জন্য কোন জিনিস পেশ করে বের হয়ে আসার আশাও রাখে না। তাই তাঁর কণ্ঠরুদ্ধ এবং চরম হতাশা ও মনমরা অবস্থায় সে অবাক বিস্ময়ে থ হয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত একথাটাও উপলব্ধি করতে হবে যে, এখানে অপরাধী বলতে কেবল দুনিয়ায় যারা হত্যা , চুরি, ডাকাতি ও এ ধরনের অন্যান্য অপরাধ করে তাদের কথা বলা হয়নি বরং এমন সব লোকের কথা এখানে বলা হয়েছে যারা আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে, তাঁর রসূলদের শিক্ষা ও পথনির্দেশ গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে এবং আখেরাতে জবাবদিহি করার কথা অস্বীকার করে অথবা সে ব্যাপারে নির্বিকার থেকে এবং দুনিয়ায় আল্লাহর পরিবর্তে অন্যদের অথবা নিজের প্রবৃত্তির দাসত্ব করতে থেকেছে। এ মূল ভ্রষ্টতার সাথে সাধারণ্যে অপরাধ বলা হয়ে থাকে এমন কাজ তারা করলেও বা না করলেও কিছু আসে যায় না। এ ছাড়াও এমনসব লোকও এর অন্তরভুক্ত হয়ে থাকে যারা আল্লাহকে মেনে নিয়ে তাঁর রসূলদের প্রতি ঈমান এনে আখেরাতকে স্বীকার করে নিয়ে তাঁরপর আবার জেনে বুঝে নিজেদের রবের নাফরমানী করেছে এবং জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজেদের বিদ্রোহীনীতিতে অবিচল থেকেছে । এরা নিজেদের প্রত্যাশার সম্পূর্ণ বিপরীতে আখেরাতের জগতে হঠাৎ করে জেগে উঠবে এবং দেখবে, সত্যিই তো এখানে সেই পরবর্তী জীবন শুরু হয়ে গেছে, যা অস্বীকার করে অথবা যাকে উপেক্ষা করে তারা দুনিয়ার কাজ করতো। তখন তাদের বুদ্ধিভ্রষ্ট হয়ে যাবে এবং তাদের ওপর এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়ে যাবে --------বাক্যংশে যার ছবি অংকন করা হয়েছে।
(৩০-রূম: ৪৯) অথচ তাঁর অবতরণের পূর্বে তারা হতাশ হয়ে যাচ্ছিল৷
৪:৬৬ (আল্লাহ যদি বলতেন তোমরা নিজেদের হত্যা কর ), ৬৭,৮৯,(কাফেরদের সহযোগিতা করে এমন মুনাফিকদের হত্যা কর), ৯২, ৯৩ (মুমিনকে হ্ত্যা করার পরিণাম), ইহুদীরা ঈসা আ: কে হত্যা করতে পারেনি ৪:১৫৭, ৫:৩০-৩১ (হাবিল কাবিলের ঘটনা) ৫:৪৫,
আল্লাহ যাকে হত্যা করা হারাম করে দিয়েছেন, সত্য ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করো না৷ আর যে ব্যক্তি মজলুম অবস্থায় নিহত হয়েছে তার অভিভাবককে আমি কিসাস দাবী করার অধিকার দান করেছি৷ কাজেই হত্যার ব্যাপারে তার সীমা অতিক্রম করা উচিত নয়, তাকে সাহায্য করা হবে৷- (১৭:৩৩)
(২৫.ফুরকান:৬৮) .....(রহমানের বান্দা তারাই যারা ) আল্লাহ যে প্রানকে হারাম করেছেন কোন সংগত কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না৷
(৩৩-আহযাব: ২৬) তারপর আহলি কিতাবদের মধ্য থেকে যারাই এর আক্রমণকারীদের সাথে সহযোগিতা করেছিল ৪০ তাদের দুর্গ থেকে আল্লাহ তাদেরকে নামিয়ে এনেছেন এবং তাদের অন্তরে তিনি এমন ভীতি সঞ্চার করেছেন যার ফলে আজ তাদের একটি দলকে তোমরা হত্যা করছো এবং অন্য একটি দলকে করছো বন্দী৷ ২৭) তিনি তোমাদেরকে তাদের জায়গা-জমি, ঘর-বাড়ি ও ধন-সম্পদের ওয়ারিস করে দিয়েছেন এবং এমন এলাকা তোমাদের দিয়েছেন যাকে তোমরা কখনো পদানত করোনি৷ আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতা সম্পন্ন৷
৪০. অর্থাৎ ইহুদি গোত্র বনী কুরাইযা।
(৩৩-আহযাব:৬০) যদি মুনাফিকরা এবং যাদের মনে গলদ ১১৩ আছে তারা আর যারা মদীনায় উত্তেজনাকর গুজব ছড়ায়, ১১৪ তারা নিজেদের তৎপরতা থেকে বিরত না হয়, তাহলে আমি তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবার জন্য তোমাকে উঠিয়ে দাঁড় করিয়ে দেবো; তারপর খুব কমই তারা এ নগরীতে তোমার সাথে থাকতে পারবে৷ ৬১) তাদের ওপর লানত বর্ষিত হবে চারদিক থেকে, যেখানেই পাওয়া যাবে তাদেরকে পাকড়াও করা হবে এবং নির্দয়ভাবে হত্যা করা হবে৷
১১৩. "মনের গলদ" বলতে এখানে দু'ধরনের গলদের কথা বলা হয়েছে। এক, মানুষ নিজেকে মুসলমানদের মধ্যে গণ্য করা সত্ত্বেও ইসলাম ও মুসলমানদের অশুভাকাংকী হয়। দুই, মানুষ অসৎ সংকল্প, লাস্পট্য ও অপরাধী মানসিকতার আশ্রয় নেয়। এবং তার পূতিগন্ধময় প্রবণতাগুলো তার উদ্যোগ, আচরণ ও কর্মকান্ড থেকে বিচ্ছুরিত হতে থাকে।
১১৪. এখানে এমন সব লোকের কথা বলা হয়েছে যারা মুসলমানদের মধ্যে ভীতি ও আতংক ছড়াবার এবং তাদের মনোবল ভেংগে দেবার জন্য সে সময় প্রতি দিন মদীনায় এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে বেড়াতো যে, অমুক জায়গায় মুসলমানরা খুব বেশী মার খেয়ে গেছে, অমুক জাগয়ায় মুলসমানদের বিরুদ্ধে বিপুল শক্তিশালী সমাবেশ ঘটছে এবং শিগগির মদীনার ওপর অতর্কিত হামলা হবে। এই সংগে তাদের আর একটি কাজ এও ছিল যে, তারা নবীর পরিবার ও শরীফ মুসলমানদের পারিবারিক জীবন সম্পর্কে বিভিন্ন প্রকার অলীক গল্প তৈরি করে সেগুলো ছড়াতে থাকতো, যাতে এর ফলে জনগণের মধ্যে কুধারণা সৃষ্টি হয় এবং মুসলমানদের নৈতিক প্রভাব ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
৪:৮৯ - কাফেরদের সহযোগিতা করে এমন মুনাফিকদের হত্যা কর
(১৮:২০) যদি কোনোক্রমে তারা আমাদের নাগাল পায় তাহলে হয় প্রস্তরাঘাতে হত্যা করবে অথবা আমাদের জোর করে তাদের ধর্মে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে এবং এমন হলে আমরা কখনো সফলকাম হতে পারবো না৷”
(মূর্তি পূজারী রোমান কাইজার ডিসিয়াসের সময়কার কয়েক জন যুবকের ঘটনা, যারা আসহাবে কাহাফ হিসেবে পরিচিত। বিস্তারিত দেখুন : গ > গুহাবাসী যুবক।)
২:৬১, ৮৭, ৯১, ৩:২১, ২২, ১১২, ১১৩, ১৮১, ১৮২, ৫:৭০, ৭১,
(১২:৯) চলো আমরা ইউসুফকে মেরে ফেলি অথবা তাকে কোথাও ফেলে দেই, যাতে আমাদের পিতার দৃষ্টি কেবল আমাদের দিকেই ফিরে আসে৷ এ কাজটি শেষ করে তারপর তোমরা ভালো লোক হয়ে যাবে।
(২৯-আনকাবুত:২৪) তারপর সেই জাতির জবাব এ ছাড়া আর কিছুই ছিল না যে, তারা বললো , “ একে হত্যা করো অথবা পুড়িয়ে ফেলো৷ ” ৩৮ শেষ পর্য্ন্ত আল্লাহ তাকে (হযরত ইব্রাহিম আ: কে ) আগুন থেকে রক্ষা করেন৷ অবশ্যই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে এমন লোকদের জন্য যারা ঈমান আনে৷
৩৮ . অর্থাৎ হযরত ইবরাহীমের ন্যায়সঙ্গত যুক্তির কোন জবাব তাদের কাছে ছিল না। তাদের যদি কোন জবাব থেকে থাকে তাহলে তা এই ছিল যে, হক কথা বলছে যে কণ্ঠটি সেটি স্তব্ধ করে দাও এবং যে ব্যক্তি আমাদের ভুল আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরছে এবং তা থেকে আমাদের বিরত থাকতে বলছে তাকে জীবন্ত রেখো না। "হত্যা করো ও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারো" শব্দাবলী থেকে একথা প্রকাশিত হচ্ছে যে, সমগ্র জনতা হযরত ইবরাহীমকে মেরে ফেলার ব্যাপারে একমত ছিল তবে মেরে ফেলার পদ্ধতির ব্যাপারে ছিল বিভিন্ন মত। কিছু লোকের মত ছিল , তাকে হত্যা করা হোক। আবার কিছু লোকের মত ছিল, জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হোক, এর ফলে ভবিষ্যতে যারা এ ভূখণ্ডে হক কথা বলার পাগলামী করতে চাইবে এটা তাদের জন্য একটা শিক্ষা হয়ে থাকবে।
আর (আল্লাহ বলেন) সেই সময়ের কথা স্মরণ করো যখন আমি ফেরাউনের লোকদের কবল থেকে তোমাদের মুক্তি দিয়েছিলাম, যারা তোমাদেরকে কঠোর শাস্তি দিতো, তোমাদের ছেলেদের হত্যা করতো এবং মেয়েদের জীবিত রাখতো-৭:১৪১,
(২৮-ক্বাছাছ:৪) প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, ফেরাউন পৃথিবীতে বিদ্রোহ করে এবং তার অধিবাসীদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে দেয়৷ তাদের মধ্য থেকে একটি দলকে সে লাঞ্ছিত করতো,তাদের ছেলেদের হত্যা করতো এবং মেয়েদের জীবিত রাখতো৷
( বাইবেলে এর নিম্নরুপ ব্যাখ্যা পাওয়া যায় : পরে মিশরের উপরে এক নতুন রাজা উঠিলেন, তিনি যোসেফকে জানিতেন না। তিনি আপন প্রজাদিগকে কহিলেন দেখ, আমাদের অপেক্ষা ঈসরায়েল সন্তানদের জাতি বহু সংখ্যক ও বলবান। আইস, আমরা তাহাদের সহিত বিবেচনা পূর্বক ব্যবহার করি। পাছে তাহারা বাড়িয়া উঠে এবং যুদ্ধ উপস্থিত হইলে তাহারাও শত্রুপক্ষে যেগ দিয়া আমাদের সহিত যুদ্ধ করে এবং এদেশ হইতে প্রস্থান করে। অতএব তাহারা ভার বহন দ্বারা উহাদিগকে দু:খ দিবার জন্য উহাদের উপরে কার্য শাসকদিগকে নিযুক্ত করিল। আর উহারা ফরৌনের নিমিত্ত ভান্ডারের নগর পিথোম ও রামিষেষ গাথিল। কিন্তু উহারা তাহাদের দ্বারা যত দু:খ পাইল ততই বৃদ্ধি পাইতে ও ব্যাপ্ত হইতে লাগিল। তাই ইস্রায়েল সন্তানদের বিষয়ে তাহারা অতিশয় উদ্বিগ্ন হইল। আর মিসরিয়রা নির্দয়তাপূর্বক ইস্রায়েল সন্তানদিগকে দাস্যকর্ম করাইল। তাহারা কর্দম, ইস্টক ও ক্ষেত্রের সমস্ত কার্যে কঠিন দাস্যকর্ম দ্বারা উহাদের প্রাণ তিক্ত করিতে লাগিল। তাহারা উহাদের দ্বারা যে দাস্যকর্ম করাইত সে সমস্ত নির্দয়তাপূর্বক করাইত। পরে মিশরের রাজা শিফ্রা ও পুয়া নামে দুই ইব্রিয়া ধাত্রিকে একথা কহিলেন, যে সময়ে তোমরা ইব্রীয় স্ত্রীলোকদেরকে ধাত্রী কার্য করিবে ও তাহাদিগকে প্রসব আধারে দেখিবে, যদি পুত্র সন্তান হয়, তাহাকে বধ করিবে; আর যদি কন্যা সন্তান হয়, তাহাকে জীবিত রাখিবে।(যাত্রাপুস্তক ১:৮-১৬)
এ থেকে জানা যায়, হযরত ইউসূফ আ: এর যুগ অতিক্রান্ত হবার পর মিসরে একটি জাতীয়তাবাদী বিপ্লব সাধিত হয়েছিল এবং কিবতীদের হাতে যখন পূণর্বার শাসন ক্ষমতা এসেছিল তখন নতুন জাতীয়তাবাদী সরকার বনী ঈসরাইলের শক্তি নির্মূল করার পূর্ণ প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। এ ব্যাপারে শুধুমাত্র বনী ঈসরাঈলকে লাঞ্ছিত ও পদদলিত এবং তাদেরকে নিকৃষ্ট ধরণের সেবাকর্ম নির্দিষ্ট করেই ক্ষান্ত থাকা হয়নি বরং এ থেকে আরো অগ্রসর হয়ে তাদের ছেলেদের হত্যা করে মেয়েদের জীবিত রাখার নীতি অবলম্বন করা হয়, যাতে করে তাদের মেয়েরা ধীরে ধীরে কিবতীদের অধীনে এসে যেতে থাকে এবং তাদের থেকে ইসরাঈলের পরিবর্তে কিবতীদের বংশ বিস্তার লাভ করে। তালমূদ এর আরো বিস্তারিত বিবরণ এভাবে দিয়েছে যে, হযরত ইউসূফ আ: এর ইন্তিকালের সময় থেকে একশতকের কিছু বেশি সময় অতিক্রান্ত হবার পর থেকে এ বিপ্লব আসে। সেখানে বলা হয়েছে, নতুন জাতীয়তাবদী সরকার প্রথমে বনী ইসরাঈলকে তাদের উর্বর কৃষিক্ষেত্র, বাসগৃহ ও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে। তারপর তাদেরকে বিভিন্ন সরকারী পদ থেকে বেদখল করে দেয়। এরপরও যখন কিবতী শাসকরা অনুভব করে যে, বনী ইসরাঈল ও তাদের সমধর্মবলম্বী মিশরীয়রা যথেষ্ট প্রভাবশালী তখন তারা ইসরাঈলীদেরকে লাঞ্ছিত ও হীনবল করতে থাকে এবং তাদের থেকে কঠিন পরিশ্রমের বিনিময়ে সামান্য পারিশ্রমিক বা বিনা পারিশ্রমিকেই কাজ আদায় করতে থাকে। কুরআনে এক জায়গায় বলা হয়েছে যে, "তারা মিসরের অধিবাসীদের একটি গোষ্ঠিকে লাঞ্ছিত ও হীনবল করতো" এ বক্তব্য সেই উক্তির ব্যাখ্যা বিবেচিত হতে পারে। আর সূরা আল বাকারায় আল্লাহ যে বলেছেন, েফরাউনের বংশধররা বনী ইসরাঈলদের কঠোর শাস্তি দিতো। **** এরও ব্যাখা এটিই।
কিন্তু বাইবেল ও কোরআনে এ ধরনের কোন আলোচনা নেই যাতে বলা হয়েছে যে, কোন জোতিষী ফেরাউনকে বলেছিল, বনী ইসরাঈলে একটি শিশু জন্ম নেবে, তার হাতে ফেরাউনী কর্তৃত্বের মৃত্যু ঘটবে এবং এ বিপদের পথ রোধ করার জন্য ফেরাউন ইসরাঈলীদের পুত্র সন্তানদের হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিল। অথবা ফেরাউন কোন ভয়ংকর স্বপ্ন দেখেছিল এবং তার তা'বীর এভাবে দেয়া হয়েছিল যে, বনী ইসরাঈলের মধ্যে এ ধরণের বিশেষ গুণ বিশিষ্ট শিশু জন্ম নেবে। তালমূদ ও অন্যান্য ইসরাঈলী বর্ণনা থেকে এ কাহিনী আমাদের মুফাসসিরগণ উদ্বৃত করেছেন। (দেখুন জুয়িশ ইনসাইক্লোপেডিয়া, নিবন্ধ "মুসা এবং The Talmud selections. P.123-24))
হারুন বললোঃ হে আমার সহোদর! এ লোকগুলো আমাকে দুর্বল করে ফেলেছিল এবং আমাকে হত্যা করার উপক্রম করেছিল -৭:১৫০,
দারিদ্রের আশংকায় নিজেদের সন্তান হত্যা করো না৷ আমি তাদেরকেও রিযিক দেবো এবং তোমাদেরকেও৷ আসলে তাদেরকে হত্যা করা একটি মহাপাপ৷-(১৭:৩১)
(১৮:৭৪) এরপর তারা দুজন চললো৷ চলতে চলতে তারা একটি বালকের দেখা পেলো এবং ঐ ব্যক্তি তাকে হত্যা করলো৷ মূসা বললো, “আপনি এক নিরপরাধকে হত্যা করলেন অথচ সে কাউকে হত্যা করেনি ? এটা তো বড়ই খারাপ কাজ করলেন৷”
(১৮:৮০) আর ঐ বালকটির ব্যাপার হচ্ছে এই যে, তার বাপ-মা ছিল মুমিন৷ আমাদের আশংকা হলো, এ বালক তার বিদ্রোহাত্মক আচরণ ও কুফরীর মাধ্যমে তাদেরকে বিব্রত করবে৷
(২৫.ফুরকান:৬৮) .....(রহমানের বান্দা তারাই যারা ) আল্লাহ যে প্রানকে হারাম করেছেন কোন সংগত কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না ।
(২৬.শুআরা:১৪) আর আমার বিরুদ্ধে তো তাদের একটি অভিযোগও আছে৷ তাই আমার আশংকা হয় তারা আমাকে হত্যা করে ফেলবে৷".....(২৬.শুআরা:১৯) এবং তারপর তুমি যে কর্মটি করেছ তাতো করেছোই; তুমি বড়ই অকৃতজ্ঞ৷"২০) মূসা জবাব দিল, "সে সময় অজ্ঞতার মধ্যে আমি সে কাজ করেছিলাম৷২১) তারপর তোমাদের ভয়ে আমি পালিয়ে গেলাম৷
(সূরা কাসাসের ২ রুকুতে যে ঘটনার কথা বলা হয়েছে এখানে সেদিকে ইংগিত করা হয়েছে। হযরত মূসা ফেরাউনের সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তিকে একজন ইসরাঈলীর সাথে লড়তে দেখে একটি ঘুঁষি মেরেছিলেন। এতে সে মারা গিয়েছিল। তারপর হযরত মূসা যখন জানতে পারলেন, এ ঘটনার খবর ফেরাউনের লোকেরা জানতে পেরেছে এবং তারা প্রতিশোধ নেবার প্রস্তুতি চালাচ্ছে তখন তিনি দেশ ছেড়ে মাদ্য়ানের দিকে পালিয়ে গেলেন। এখানে আট-দশ বছর আত্মগোপন করে থাকার পর যখন তাঁকে হুকুম দেয়া হলো তুমি রিসালাতের বার্তা নিয়ে সেই ফেরাউনের দরবারে চলে যাও, যার ওখানে আগে থেকেই তোমার বিরুদ্ধে হত্যার মামলা ঝুলছে, তখন যথার্থই হযরত মূসা আশংকা করলেন, বার্তা শুনাবার সুযোগ আসার আগেই তারা তাঁকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করে ফেলবে।
মূলে “দ্বোয়াল্লিন” বলা হয়েছে।অর্থাৎ "আমি তখন গোমরাহীর মধ্যে অবস্খান করছিলাম।" অথবা "আমি সে সময় এ কাজ করেছিলাম পথভ্রষ্ট থাকা অবস্থায়। " এ ................ শব্দটি অবশ্যই গোমরাহী বা পথভ্রষ্টতারই সমার্থক । বরং আরবী ভাষায় এ শব্দটি অজ্ঞতা , অজ্ঞানতা , ভুল , ভ্রান্তি, বিস্মৃতি ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়। সূরা কাসাসে যে ঘটনা বর্ণিত হয়েছে সে সম্পর্কে চিন্তা করলে এখানে ........ শব্দটিকে অজ্ঞতা অর্থে গ্রহণ করাই বেশী সঠিক হবে। মূসা সেই কিবতীকে একজন ইসরাঈলীর উপর জুলুম করতে দেখে শুধুমাত্র একটি ঘুঁষি মেরেছিলেন । সবাই জানে , ঘুঁষিতে সাধারণত মানুষ মরে না। আর তিনি হত্যা করার উদ্দেশ্যেও ঘুঁষি মারেননি। ঘটনাক্রমে এতেই সে মরে গিয়েছিল । তাই সঠিক এ ছিল যে , এটি ইচ্ছাকৃত হত্যা ছিল না বরং ছিল ভুলক্রমে হত্যা। হত্যা নিশ্চয়ই হয়েছে কিন্তু ইচ্ছা করে হত্যা করার সংকল্প করে হত্যা করা হয়নি। হত্যা করার জন্য যেসব অস্ত্র বা উপায় কায়দা ব্যবহার করা হয় অথবা যেগুলোর সাহায্যে হত্যাকার্য সংঘটিত হতে পারে তেমন কোন অস্ত্র , উপায় বা কায়দাও ব্যবহার করা হয়নি।)
(২৮-ক্বাছাছ : ১৫) .(একদিন) সে শহরে এমন সময় প্রবেশ করলো যখন শহরবাসী উদাসীন ছিল৷২০ সেখানে সে দেখলো দু'জন লোক লড়াই করছে৷ একজন তার নিজের সম্প্রদায়ের এবং অন্যজন তার শত্রু সম্প্রদায়ের৷ তার সম্প্রদায়ের লোকটি শত্রু সম্প্রদায়ের লোকটির বিরুদ্ধে তাকে সাহায্য করার জন্য ডাক দিল৷ মূসা তাকে একটি ঘুষি মারলো২১ এবং তাকে মেরে ফেললো৷ (এ কাণ্ড ঘটে যেতেই) মূসা বললো, "এটা শয়তানের কাজ, সে ভয়ংকর শত্রু এবং প্রকাশ্য পথভ্রষ্টকারী৷"২২ ১৬) তারপর সে বলতে লাগলো, "হে আমার রব! আমি নিজের ওপর জুলুম করেছি, আমাকে ক্ষমা করে দাও? "২৩ তখন আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন তিনি ক্ষমাশীল মেহেরবান৷ ২৪
(২০. হতে পারে এটা ছিলো একেবারে ভোর বেলা অথবা গরম কালের দুপুরের সময় কিংবা শীত কালে রাতের বেলা। মোটকথা, তখন সময়টা এমন ছিল যখন পথ ঘাট ছিল জন কোলাহল মুক্ত এবং সারা শহর ছিল নিরব নিঝুম।
"শহরে প্রবেশ করলো" এ শব্দ গুলো থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, রাজ প্রাসাদ সাধরন জনবসতি থেকে দূরে অবস্থিত ছিল। হযরত মুসা যেহেতু রাজপ্রাসাদে থাকতেন তাই শহরে বের হলেন, না বলে বলা হয়েছে, শহরে প্রবেশ করলেন।
২১. মূলে وكـز শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ চড় মারাও হতে পারে আবার ঘুষি মারাও হতে পারে। চড়ের তুলনায় ঘুষির আঘাতে মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশী। তাই আমি এখানে অনুবাদে ঘুষি শব্দ গ্রহণ করেছি।
২২. এ থেকে অনুমান করা যায়, ঘুঁষি খেয়ে মিসরীয়টি যখন পড়ে গেল এবং পড়ে গিয়ে মারা গেল তখন কী ভিষন লজ্জা ও শংকার মধ্যে হযরত মুসার মুখ থেকে কথা গুলো বের হয়ে গিয়ে খাকবে। হত্যা করার ইচ্ছা তাঁর ছিল না। হত্যা করার উদ্দেশ্যে ঘুঁষি মারাও হয়নি। কেও এটা আশাও করেনি, একটি ঘুঁষি খেয়েই একজন সুস্থ সবল লোক মারা যাবে। তাই হযরত মুসা বললেন, এটা শয়তানের কোন খারাপ পরিকল্পনা বলে মনে হচ্ছে। সে একটি বড় বিপর্যয় ঘটাবার জন্য আমার হাত দিয়ে একাজ করিয়েছে। ফলে আমার বিরুদ্ধে একজন ইসরাঈলীকে সাহায্য করার জন্য একজন কিবতীকে হত্যা করার অভিযোগ আসবে এবং শুধু আমার বিরুদ্ধে নয় বরং সমগ্র ইসরাঈলী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মিসরে একটি বিরাট হাংগামা সৃষ্টি হবে। এ ব্যাপারে বাইবেলের বর্ণনা কুরআন থেকে ভিন্ন। বাইবেল হযরত মূসার বিরুদ্ধে সেচ্চাকৃত হত্যার আভিযোগ এনেছে। তার বর্ণনা মতে মিসরীয় ও ইসরাঈলীকে লড়াই করতে দেখে হযরত মূসা "এদিক ওদিক চহিয়া কাহাকেও দেখিতে না পাওয়াতে ঐ মিস্রীয়কে বধ করিয়া বালির মধ্যে পুতিয়া রাখিলেন।" (যাহা পুস্তক ২:১২) তালমূদেও একথা বলা হয়েছে ।এখন বনী ইসরাঈল কিভাবে নিজেদের মনীষীদের চরিত্রে নিজেরাই কলংক লেপন করেছে এবং কুরআন কিতাবে তাঁদের ভূমিকা পরিচ্ছন্ন ও কলঙকমূক্ত করেছে তা যে কোন ব্যাক্তি বিচার করতে পারে। সাধারন বিবেক বুদ্ধিও এ কথা বলে, একজন জ্ঞানী, বুদ্ধিমান, বিচক্ষন ব্যাক্তি, পরবর্তীকালে যাঁকে হতে হবে একজন মহীমান্বিত পয়গম্বর এবং মানুষকে ইনসাফ ও ন্যায়নীতির একটি মর্যাদাশালী আইন ব্যাবস্থা দান করা হবে যাঁর দায়িত্ব, তিনি এমন একজন অন্ধ জাতীয়তাবাদী হতে পারেন না যে, নিজের জাতির একজনকে অন্য জাতীর কোন ব্যাক্তির সাথে মারামারি করতে দেখে ক্রোধে ক্ষিপ্ত হয়ে সেচ্ছায় বিপক্ষীয় ব্যাক্তিকে মেরে ফেলবেন। ইসরাইলীকে মিসরীয়দের কবজায় দেখে তাকে ছাড়িয়ে নেবার জন্য হত্যা করা যে, বৈধ হতে পারে না, তা বলাই নিস্প্রয়োজন।
২৩. মূল শব্দ হচ্ছে"মাগিফরাত" এর অর্থ ক্ষমা করা ও মাফ করে দেয়াও হয় আবার গোপনীয়তা রক্ষা করাও হয়। হযরত মূসা (আ:) দোয়ার অর্থ ছিল, আমার এ গোনাহ (যা তুমি জানো, আমি জেনে-বুঝে করিনি) তুমি মাফ করে দাও এবং এর ওপর আবরন দিয়ে ঢেকে দাও, যাতে শত্রুরা জানতে না পারে।
২৪. এরও দুই অর্থ এবং দুটিই এখানে প্রযোজ্য। অর্থাত আল্লাহ তাঁর এ ত্রুটি মাফ করে দেন এবং হজরত মূসার গোপনীয়তাও রক্ষা করেন। অর্থাত কিবতী জাতির কোন ব্যাক্তি এবং কিবতী সরকারের কোন লোকের সে সময় তাদের আশেপাশে বা ধারে কাছে গমনাগমন হয়নি। ফলে তারা কেউ এ হত্যাকান্ড দেখেনি। এভাবে হযরত মূসার পক্ষে নির্বিঘ্নে ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়ার সুযোগ ঘটে।)
(২৮-ক্বাছাছ : ২০) এরপর এক ব্যক্তি নগরীর দূর প্রান্ত থেকে ছুটে এলো ৩০ এবং বললো, "হে মূসা! সরদারদের মধ্যে তোমাকে হত্যা করার পরামর্শ চলছে৷ এখান থেকে বের হয়ে যাও৷ আমি তোমার মঙ্গলাকাংখী৷"
(৩০. অর্থাৎ এ দ্বিতীয় ঝগড়ার ফলে হত্যা রহস্য প্রকাশ হয়ে যাবার পর সংশ্লিষ্ট মিসরীয়টি যখন গিয়ে সরকারকে জানিয়ে দিল তখন এ পরামর্শের ঘটনা ঘটে।)
উত্তর: আলেমগণ এর বহুবিধ অর্থ বর্ণনা করেছেন। তবে সেগুলোর মধ্যে দুটি অর্থ বিশেষ ভাবে প্রণিধান যোগ্য । (১) রাসুল সা: যেভাবে বলেছেন- সাহাবীগণ সেভাবেই কুরআন সংরক্ষণ করেছেন। সুতরাং সুরার শুরুতে বিচ্ছিন্ন অক্ষরগুলোও সেভাবেই রেখে দেয়ো হয়েছে। সুতরাং, কুরআন যে এখনও অবিকৃত অবস্থায় সংরক্ষিত আছে এটি তার একটি অতিরিক্ত প্রমাণ। (তাফহীমুল কুরআন)।
(২) যেখানেই হুরুফে মুকাত্তাআত ব্যবহার করা হয়েছে তার বেশীর ভাগ স্থানেই সাথে সাথে কুরআনের গুণাবলী ও প্রশংসা, কুরআন অকাট্য হওয়া এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সত্য ভাবে নাযিল হওয়ার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ, এ বিচ্ছিন্ন অক্ষরগুলো হলো বর্ণমালার অংশ, আর বর্ণমালা দিয়েই কুরআন লেখা হয়েছে, কিন্তু যেহেতু এটি আসলেই আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত তাই এ কুরআন হচ্ছে একটি মু’জেযা এবং কুরআনে প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ থাকা সত্বেও এ পৃথিবীর বর্ণমালা ব্যবহারকারী মানুষের পক্ষে আজও সম্ভব হয়নি কুরআনের বানীর মতো একটি বাক্যও তৈরী করা। (ডা: জাকির নায়েক)।
(২-বাক্বারা : ১) আলিফ লাম মীম ৷ ১
১ . এগুলো বিচ্ছিন্ন হরফ । কুরআন মজীদের কোন কোন সূরার শুরুতে এগুলো দেখা যায় । কুরআন মজীদ নাযিলের যুগে সমকালীন আরবী সাহিত্যে এর ব্যবহার ছিল । বক্তার বক্তব্য প্রকাশের ক্ষেত্রে সাধারণত এর ব্যবহার প্রচলিত ছিল । বক্তা ও কবি উভয় গোষ্ঠীই এ পদ্ধতি আশ্রয় নিতেন । বর্তমানে জাহেলী যুগের কবিতার যেসব নমুনা সংরক্ষিত আছে তার মধ্যেও এর প্রমাণ পাওয়া যায় । সাধারণভাবে ব্যবহারের কারণে এ বিচ্ছিন্ন হরফগুলো কোন ধাঁধা হিসেবে চিহ্নিত হয়নি । এগুলো এমন ছিল না যে , কেবল বক্তাই এগুলোর অর্থ বুঝতো বরং শ্রোতারাও এর অর্থ বুঝতে পারতো । এ কারণে দেখা যায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সমকালীন বিরোধীদের একজনও এর বিরুদ্ধে আপত্তি জানায়নি । তাদের একজনও একথা বলেনি যে, বিভিন্ন সূরার শুরুতে আপনি যে কাটা কাটা হরফগুলো বলে যাচ্ছেন এগুলো কি৷ এ কারণেই সাহাবায়ে কেরাম ও নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এগুলোর অর্থ জানতে চেয়েছেন এ মর্মে কোন হাদীসও উদ্ধৃতি হতে দেখা যায়নি । পরবর্তীকালে আরবী ভাষায় এ বর্ণনা পদ্ধতি পরিত্যক্ত হতে চলেছে । ফলে কুরআন ব্যাখ্যাকারীদের জন্য এগুলোর অর্থ নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে একথা সুস্পষ্ট যে , কুরআন থেকে হিদায়াত লাভ করা এ শব্দগুলোর অর্থ বুঝার ওপর নির্ভরশীল নয় । অথবা এ হরফগুলোর মানে না বুঝলে কোন ব্যক্তির সরল সোজা পথ লাভের মধ্যে গলদ থেকে যাবে , এমন কোন কথাও নেই । কাজেই একজন সাধারণ পাঠকের জন্য এর অর্থ অনুসন্ধানে ব্যাকুল কোন প্রয়োজন নেই ।
আলিফ -লাম –রা – ১০:১,
আলিফ-লাম-র৷-১১:১,
আলিফ-লাম-র৷-১২:১,
আলিম লাম মীম র৷-১৩:১,
আলিফ লাম্ র৷-১৪:১,
আলিফ-লাম-র৷-১৫:১,
কা-ফ্ হা-ইয়া-আইন-সা-দ৷-১৯:১
ত্বা-হা৷-২০:১,
তা-সীন-মীম । এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত৷–(২৬.শুয়ারা:১-২)
ত্বা-সীন৷ এগুলো কুরআনের ও এক সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত (২৭-নমল:১)
তা-সীন-মীম৷ এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত৷ (২৮-ক্বাছাছ:১-২)
আলিম- লাম- মীম৷ লোকেরা কি মনে করে রেখেছে, “আমরা ঈমান এনেছি” কেবলমাত্র একথাটুকু বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে, আর পরীক্ষা করা হবে না? (২৯-আনকাবুত:১-২)
আলিফ-লাম-মীম৷ রোমানরা নিকটবর্তী দেশে পরাজিত হয়েছে এবং নিজেদের এ পরাজয়ের পর কয়েক বছরের মধ্যে তারা বিজয় লাভ করবে৷ (৩০-রূম: ১-২)
আলিফ লাম মীম৷ এগুলো জ্ঞানগর্ভ কিতাবের আয়াত৷(৩১-লুকমান : ১-২)
(৩২-আস-সিজদা: ১) আলিফ লাম মীম৷২) এ কিতাবটি রব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ , এতে কোন সন্দেহ নেই৷
বিস্তারিত দেখুন : আ > আইন, ব > বিচার ব্যবস্থা, স > সার্বভৌমত্ব।
(২৬.শুআরা:২১) তারপর তোমাদের ভয়ে আমি পালিয়ে গেলাম৷ এরপর আমার রব আমাকে "হুকম" দান করলেন এবং আমাকে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত করে নিলেন৷
(অর্থাৎ জ্ঞান ও প্রজ্ঞা এবং নবুওয়াতের পরোয়ানা। "হুকুম" অর্থ জ্ঞান ও প্রজ্ঞা হয় আবার আল্লাহর পক্ষ থেকে নবীকে কর্তৃত্ব করার অনুমতিও (Authority) হয়। এরি ভিত্তিতে তিনি ক্ষমতা সহকারে কথা বলেন।)
(বিস্তারিত দেখুন : ন > নবুওয়াত, আরো বিস্তারিত দেখুন : আ > আইন, ব > বিচার ব্যবস্থা, স > সার্বভৌমত্ব।
)
আরো বিস্তারিত দেখুন : ম > মসজিদ > মসজিদুল হারাম
(হাজ্ব:২৬) স্মরণ করো সে সময়ের কথা যখন আমি ইবরাহীমের জন্য এ ঘরের (কাবাঘর) জায়গা নির্ধারণ করেছিলাম (এ নির্দেশনা সহকারে) যে, আমার সাথে কোনো জিনিসকে শরীক করবে না এবং আমার ঘরকে তাওয়াফকারী ও রুকূ’-সিজদা-কিয়ামকারীদের জন্য পবিত্র রাখো ২৭) এবং লোকদেরকে হজ্জের জন্য সাধারণ হুকুম দিয়ে দাও, তারা প্রত্যেকে দূর-দূরান্ত থেকে পায়ে হেঁটে ও উটের পিঠে চড়ে৪৬ ২৮) তোমার কাছে আসবে, ৪৭ যাতে এখানে তাদের জন্য যে কল্যাণ রাখা হয়েছে তা তারা দেখতে পায় ৪৮ এবং তিনি তাদেরকে যেসব পশু দান করেছেন তার উপর কয়েকটি নির্ধারিত দিনে আল্লাহর নাম নেয়৪৯ নিজেরাও খাও এবং দুর্দশাগ্রস্ত অভাবীকেও খাওয়াও৷৫০ ২৯) তারপর নিজেদের ময়লা দূর করে,৫১ নিজেদের মানত পূর্ণ করে ৫২ এবং এ প্রাচীন গৃহের তাওয়াফ করে৷ ৫৩ ৩০) এ ছিল (কাবা নির্মাণের উদ্দেশ্য) এবং যে কেউ আল্লাহ প্রতিষ্ঠিত পবিত্রতর অনুষ্ঠানগুলোকে সম্মান করবে, তার রবের কাছে এ হবে তারই জন্য ভালো৷ ৫৪ আর তোমাদের জন্য গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু হালাল করে দেয়া হয়েছে৫৫ সেগুলো ছাড়া যেগুলো তোমাদের বলে দেয়া হয়েছে৷কাজেই মূর্তিসমূহের আবর্জনা থেকে বাঁচো, মিথ্যা কথা থেকে দূরে থাকো,
(৪৬. মূলে (আরবী) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এটি বিশেষ করে শীর্ণ ও ক্ষীণকায় উটের প্রতিশব্দ হিসেবে বলা হয়ে থাকে। এর উদ্দেশ্য এমন সব মুসাফিরের ছবি তুলে ধরা যারা দূর দূরান্ত থেকে চলে আসছে এবং পথে তাদের উটগুলো খাদ্য ও পানীয় না পাওয়ার কারণে শীর্ণকায় হয়ে গেছে।
৪৭. শুরুতে হযরত ইবরাহীমকে যে হুকুম দেয়া হয়েছিল এখানে তা শেষ হয়ে যাচ্ছে। সামনের দিকে যা বলা হয়েছে তা এর সাথে বাড়তি সংযোজন। অতিরিক্ত ব্যাখ্যা হিসেবে এ সংযোজন করা হয়েছে। আমাদের এ অভিমতের কারণ হচ্ছে এই যে, "এই প্রাচীন গৃহের তাওয়াফ করে" পর্যন্তই এই বক্তব্য শেষ হয়ে গেছে। এটি কাবাঘর নির্মাণের কাজ শেষ হবার সময় বলা হয়ে থাকবে। (হযরত ইবরাহীমের কাবাঘর নির্মাণ সংক্রান্ত আরো বিস্তারিত বিবরণ জানার জন্য দেখুন সূরা বাকারাহ ১২৫-১২৯, আলে ইমরান ৯৬-৯৭ এবং ইবরাহীম ৩৫-৪১ আয়াত)
৪৮. এখানে কেবলমাত্র দীনী কল্যাণের কথাই বলা হয়নি, এর সাথে পার্থিব কল্যাণও সংযুক্ত রয়েছে। এ কাবাঘর ও হজ্জের বরকতেই হযরত ইবরাহীমের (আ) যুগ থেকে নিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগ পর্যন্ত আড়াই হাজার বছর ধরে আরবরা একটি ঐক্যকেন্দ্র লাভ করেছে। এটিই তাদের আরবীয় অস্তিত্বকে গোত্রবাদের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যাবার হাত থেকে রক্ষা করেছে। কেন্দ্রের সাথে এর সংযুক্তি এবং হজ্জের জন্য প্রতি বছর দেশের সব এলাকা থেকে লোকদের এখানে আসা যাওয়ার কারণে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতি এক থাকে, তাদের মধ্যে আরব হবার অনুভূতি জাগ্রত থাকে এবং তারা চিন্তা ও তথ্য সরবরাহ এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পদ্ধতির প্রচার ও প্রসারের সুযোগ লাভ করে। তারপর এ হজ্জের বরকতেই আরবরে যাবতীয় সন্ত্রাস, বিশৃংখলা ও নিরাপত্তাহীনতা অন্তত চারমাসের জন্য স্থগিত হয়ে যেতো এবং সে সময় এমন ধরনের নিরাপত্তার লাভ করা যেতো যার মধ্যে দেশের সকল এলাকার লোকেরা সফর করতে পারতো এবং বাণিজ্য কাফেলাও নিরাপদে চলাফেরা করতে সক্ষম হতো। এজন্য আরবের অর্থনৈতিক জীবনের জন্যও হজ্জ একটি রহমত ছিল আরো বেশী ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, আলে ইমরান ৮০-৮১ এবং আল মায়েদাহ ১১৩ টীকা।
ইসলামের আগমনের পরে হজ্জের দীনী কল্যাণের সাথে সাথে পার্থিব কল্যাণও কয়েকগুণ বেশী হয়ে গেছে। প্রথমে তা ছিল কেবলমাত্র আরবের জন্য রহমত, এখন হয়ে গেছে সারা দুনিয়ার তাওহীদবাদীদের জন্য রহমত।
কা'বা শরীফের নক্সা
(চিত্র)
৪৯. পশু বলতে এখানে গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তুর কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ উট, গরু, ছাগল, ভেড়া, যেমন সূরা আন'আমের ১৪২-১৪৪ আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
তাদের উপর আল্লাহর নাম নেবার অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর নামে এবং তাঁর নাম উচ্চারণ করে তাদেরকে যবেহ করা যেমন পরবর্তী বাক্য নিজেই বলে দিচ্ছে। কুরআন মজীদে কুরবানীর জন্য সাধারণভাবে "পশুর উপর আল্লাহর নাম নেয়া"র পরিভাষাটি ব্যবহার করা হয়েছে এবং সব জায়গায়ই এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহর নামে পশু যবেহ করা। এভাবে যেন এ সত্যটির ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহর নাম না নিয়ে অথবা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশুযবেহ করা কাফের ও মুশরিকদের পদ্ধতি। মুসলমান যখনই পশু যবেহ করবে আল্লাহর নাম নিয়ে করবে এবং যখনই কুরবানী করবে আল্লাহর জন্য করবে।
কয়েকটি নির্ধারিত দিন বলতে কোন দিনের কথা বুঝনো হয়েছে৷ এ ব্যাপারে মতবিরোধ আছে। একটি মত হচ্ছে, এর অর্থ, যিলহজ্জের প্রথম দশটি দিন। ইবনে আব্বাস (রা) হাসান বসরী, ইবরাহীম নখঈ, কাতাদাহ এবং অন্যান্য বহু সাহাবী ও তাবেঈনের এ মত উদ্ধৃত হয়েছে। ইমাম আবু হানীফাও (র) এ মতের পক্ষে। ইমাম শাফেঈ (র) ও ইমাম আহমদেরও (র) একটি উক্তি এর সমর্থনে পাওয়া যায়। দ্বিতীয় মতটি হচ্ছে, এর অর্থ, ইয়াওমুন্ নাহর (অর্থাৎ ১০ যিলহজ্জ) এবং তার পরের তিন দিন। এর সমর্থনে ইবনে আব্বাস (রা), ইবনে উমর(রা), ইবরাহীম নখঈ, হাসান ও আতার উক্তি পেশ করা হয়। ইমাম শাফেঈ (র) ও ইমাম আহমদেরও (র) একটি উক্তি এর সমর্থনে পাওয়া যায়। তৃতীয় মতটি হচ্ছে, এর অর্থ তিন দিন তথা ইয়াওমুন্ নাহর (কুরবানীর ঈদের দিন) এবং এর পরের দু'দিন। এর সমর্থনে হযরত উমর (রা), আলী (রা), ইবনে উমর (রা) ইবনে আব্বাস (রা), আনাস ইবনে মালিক (রা), আবু হুরাইরাহ (রা) সাঈদ ইবনে মুসাইয়েব (রা) ও সাঈদ ইবনে জুবায়েরের (রা) উক্তি উদ্ধৃত হয়েছে। ফকীহগণের মধ্য থেকে সুফিয়ান সওরী (র), ইমাম মালেক (র), ইমাম আবু ইউসুফ (র) ও ঈমাম মুহাম্মাদ (র) এ মত গ্রহণ করেছেন। হানাফী ও মালেকী মাযহাবে এ মতের ভিত্তিতেই ফতোয়া দেয়া হয়েছে। এছাড়া কিছু একক উক্তি আছে। যেমন কেউ কুরবানীর দিনগুলোকে পহেলা মহররমের দিন পর্যন্ত দীর্ঘ করেছেন। কেউ শুধুমাত্র ইয়াওমুন্ নাহরের মধ্যেই তাকে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছেন। কেউ ইয়াওমুন নাহরের পরে মাত্র আর একদিন কুরবানীর দিন হিসেবে স্বীকার করেছেন। কিন্তু এগুলো দুর্বল উক্তি। এসবের পেছনে শক্তিশালী যুক্তি প্রমাণ নেই।
৫০. কেউ কেউ এ বক্তব্যের এ অর্থ গ্রহণ করেছেন যে, খাওয়া ও খাওয়ানো উভয়টিই ওয়াজিব। কারণ, এখানে আদেশ সূচক ক্রিয়াপদের মাধ্যমে হুকুম দেয়া হয়েছে। অন্য একটি দলের মতে, খাওয়া হচ্ছে মুস্তাহাব এবং খাওয়ানো ওয়াজিব। ইমাম মালিক (র) ও ইমাম শাফেঈ (র) এমত প্রকাশ করেছেন। তৃতীয় দল বলেন, খাওয়া ও খাওয়ানো দু'টোই মুস্তাহাব। খাওয়া মুস্তাহাব হবার কারণ হচ্ছে এই যে, জাহেলী যুগে লোকেরা নিজেদের কুরবানীর গোশত নিজেদের খাওয়া নিষেধ মনে করতো। আর খাওয়ানো এজন্য পছন্দনীয় যে, এর মাধ্যমে গরীবদের সাহায্য ও সহযোগিতা করা হয়। এটি ইমাম আবু হানীফার (র) মত। হাসান বসরী, আত, মুজাহিদ ও ইবরাহীম নাখঈ থেকে ইবনে জারীর এ উক্তি উদ্ধৃত করেছেন যে, (আরবী) এর মধ্যে আদেশসূচক ক্রিয়াপদ ব্যবহারের কারণে খাওয়া ওয়াজিব প্রমাণিত হয় না। এ হুকুমটি ঠিক তেমনি যেমন বলা হয়েছে (আরবী) "যখন তোমরা ইহরামের অবস্থা থেকে বের হয়ে আসো তখন আবার শিকার করো।" (আল-মায়েদাহঃ ২) এবং (আরবী) "তারপর যখন নামায শেষ হয়ে যায় তখন আবার পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে পড়ো ওয়াজিব। বরং এর অর্থ হচ্ছেঃ এরপর এসনটি করার পথে কোন বাধা নেই। অনুরূপভাবে এখানেও যেহেতু লোকেরা কুরবানীর গোশত নিজেদের খাওয়া নিষিদ্ধ মনে করতো তাই বলা হয়েছেঃ না, তা খাও অর্থাৎ এটা মোটেই নিষিদ্ধ নয়।
দুর্দশাগ্রস্ত অভাবীকে আহার করানোর ব্যাপারে যা বলা হয়েছে তার অর্থ এ নয় যে, সচ্ছল বা ধনী ব্যক্তিকে আহার করানো যেতে পারে না। বন্ধু, প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন অভাবী না হলেও তাদেরকে কুরবানীর গোশত দেওয়া জায়েয। এ বিষয়টি সাহাবায়ে কেরামের কার্যাবলী থেকে প্রমাণিত। আলকামা বলেন, হযরত আবুদল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) আমার হাতে কুরবানীর পশু পাঠান এবং নির্দেশ দেন, কুরবানীর দিন একে যবেহ করবে, নিজে খাবে, মিসকীনদেরকে দেবে এবং আমার ভাইয়ের ঘরে পাঠাবে। ইবনে উমরও (রা) একই কথা বলেছেন অর্থাৎ একটি অংশ খাও, একটি অংশ প্রতিবেশীদেরকে দাও এবং একটি অংশ মিসকীনদের মধ্যে বণ্টন করো।
৫১. অর্থাৎ ইয়াওমুন নাহরে (১০ যিলহজ্জ) কুরবানীর কাজ শেষ করার পর ইহরাম খুলে ফেলবে, ক্ষৌরকর্ম করবে, গোছল করবে, কাপড়-চোপড় ধুয়ে ফেলবে এবং ইহরাম অবস্থায় যেসব নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছিল সেগুলো খতম করে দেবে। (আরবী) এর আসল আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, সফরকালে যেসব ধূলো-ময়লা মানুষের গায়ে লেগে যায়। কিন্তু হজ্জ প্রসংগে যখন ধূলো-ময়লা দূর করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তখন এর সে একই অর্থ গ্রহণ করা হবে যা উপরে বর্ণনা করা হয়েছে। কারণ, হাজী যতক্ষণ পর্যন্ত হজ্জের আনুষ্ঠানিক কার্যাবলী ও কুরবানীর কাজ শেষ না করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি চুল ও নখ কাটতে পারবেন না এবং শরীরের অন্য কোন পরিচ্ছন্নতার কাজও করতে পারবেন না। (এ প্রসংগে এ কথা জেনে নেয়া উচিত যে, কুরবানীর কাজ শেষ করার পর অন্যান্য যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়ে যায় কিন্তু স্ত্রীর কাছে যাওয়া ততক্ষণ পর্যন্ত বৈধ না যতক্ষণ না "তাওয়াফে ইফাদাহ" শেষ করা হয়।)
৫২. অর্থাৎ এ সময়ের জন্য যে ব্যক্তি কোন মানত করে।
৫৩. কাবাঘরের জন্য (আরবী) শব্দ অত্যন্ত অর্থবহ। "আতীক" শব্দটি আরবী ভাষায় তিনটি অর্থে ব্যবহৃত হয়। একটি অর্থ হচ্ছে প্রাচীন। দ্বিতীয় অর্থ স্বাধীন, যার ওপর কারোর মালিকানা নেই। তৃতীয় অর্থ সম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ। এ তিনটি অর্থই এ পবিত্র ঘরটির বেলায় প্রযোজ্য।
তাওয়াফ বলতে "তাওয়াফে ইফাদাহ" অর্থাৎ তাওয়াফে যিয়ারত বুঝানো হয়েছে। ইয়াওমুন নাহরে (কুরবানীর দিন) কুরবানী করার ও ইহরাম খুলে ফেলার পর এ তাওয়াফ করা হয়। এটি হজ্জের রোকন তথা ফরযের অন্তরভুক্ত। আর যেহেতু ধূলা-ময়লা দূর করার হুকুমের সাথে সাথেই এর উল্লেখ করা হয়েছে তাই এ বক্তব্য একথা প্রকাশ করে যে, কুরবানী করার এবং ইহরাম খুলে গোসল করে নেবার পর এ তাওয়াফ করা উচিত।
৫৪. আপাতদৃষ্টিতে এটা একটা সাধারণ উপদেশ। আল্লাহ প্রতিষ্ঠিত সকল মর্যাদাশালী জিনিসের প্রতি মর্যাদা প্রদর্শনের জন্য একথা বলা হয়েছে। কিন্তু সমজিদে হারাম, হজ্জ, উমরাহ ও মক্কার হরমের যেসব মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে এ বক্তব্যে সেগুলোই প্রধানতম উদ্দেশ্য। তাছাড়া এর মধ্যে এ মর্মে একটি সূক্ষ্ম ইংগিতও রয়েছে যে, কুরাইশরা হারম থেকে মুসলমানদেরকে বের করে দিয়ে, তাদের জন্য হজ্জের পথ বন্ধ করে দিয়ে, হজ্জের কার্যক্রমের মধ্যে জাহেলী ও মুশরিকী রীতিনীতি অন্তভূক্ত করে এবং আল্লাহর ঘরকে শিরকের আবর্জনায় দূষিত, কলুষিত করে এমন বহু মর্যাদাশালী জিনিসের মর্যাদা বিনষ্ট করে দিয়েছে যেগুলোর মর্যাদা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের সময় থেকে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল।
৫৫. এ প্রসংগে গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তুর হালাল হওয়ার কথা উল্লেখ করা উদ্দেশ্য হচ্ছে দু'টি ভুল ধারণা দূর করা। প্রথমত কুরাইশ ও আরবের মুশরিকরা "বাহীরা" "সায়েবা", "অসীলা" ও "হাম"কেও আল্লাহর প্রতিষ্ঠিত মর্যাদাসমূহের মধ্যে গণ্য করতো। তাই বলা হয়েছে, এগুলো তাঁর প্রতিষ্ঠিত মর্যাদা নয়। বরং তিনি সমস্ত গৃহপালিত পশু হালাল করেছেন। দ্বিতীয়ত ইহরাম অবস্থায় যেভাবে শিকর করা হারাম তেমনিভাবে যেন একথা মনে না করা হয় যে, গৃহপালিত জন্তু যবেহ করা ও খাওয়াও হারাম। তাই বলা হয়েছে, এগুলো আল্লাহ প্রতিষ্ঠিত মর্যাদাসমূহের মধ্যে গণ্য নয়। )
(হাজ্ব:৩০) এ ছিল (কাবা নির্মাণের উদ্দেশ্য) এবং যে কেউ আল্লাহ প্রতিষ্ঠিত পবিত্রত অনুষ্ঠানগুলোকে সম্মান করবে, তার রবের কাছে এ হবে তারই জন্য ভালো৷
(হাজ্ব:৩২) এ হচ্ছে আসল ব্যাপার (এটি বুঝে নাও), আর যে ব্যক্তি আল্লাহ নির্ধারিত রীতিনীতির প্রতি সম্মান দেখায়, তার সে কাজ তার অন্তরের আল্লাহভীতির পরিচায়ক৷
বড় হজ্বের দিন ঘোষণা দেয়া হলো : মুশরিকদর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছে এবং তাদের সাথে কৃত সকল প্রকার চুক্তি বাতিল করা হয়েছে : ৯:১-৩,
( ছোট হজ্ব বলা হয় উমরাকে এবং বড় হজ্ব বলা হয় ১০ই জিলহজ্জ, ফরয হজ্জ আদায়ের তারিখকে)
ইহরাম বাধা অবস্থায় শিকার করা যাবে না : ৫:২, ৯৪, ৯৫, ৯৬, (সামুদ্রিক শিকার হালাল প্রয়োজনে )
ঘরের পেছন দিক থেকে প্র্রবেশ করা : ২:১৮৯,
(হাজ্ব:৩৩) একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদের ঐ সমস্ত (কুরবানীর পশু) থেকে উপকারলাভের অধিকার আছে৷ ৬২ তারপর ওগুলোর (কুরবানী করার) জায়গা এ প্রাচীন ঘরের নিকটেই৷
(৬২. পূর্বের আয়াতে আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের এবং তাকে মনের তাকওয়ার আলামত হিসেবে চিহ্নিত করার পর এ বাক্যটি একটি বিভ্রান্তি দূর করার জন্য বলা হয়েছে। হাজীদের সাথে আনা কুরবানীর পশুও আল্লাহর নিদর্শনাবলী অন্তরভুক্ত। যেমন আরববাসীরা স্বীকার করতো এবং কুরআন নিজেই পরবর্তী পর্যায়ে বলছেঃ
(আরবী)
"এবং এ সমস্ত কুরবানীর উটকে আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্তরভুক্ত করেছি।"
এখন প্রশ্ন দেখা দেয়, আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি সম্মান দেখানোর যে হুকুম উপরে দেয়া হয়েছে তার দাবী কি এ যে, কুরবানীর পশুগুলোকে যখন আল্লাহর ঘরের দিকে নিয়ে যাওয়া হয় তখন তাদেরকে কোনভাবে ব্যবহার করা যাবে না৷ তাদের পিঠে চড়া অথবা পিঠে জিনিসপত্র চাপিয়ে দেয়া কিংবা তাদের দুধ পান করা কি আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি সম্মান দেখাবার বিরোধী নয়৷ আরবের লোকেরা একথাই মনে করতো। তারা এ পশুগুলোকে একেবারেই আরোহীশূন্য অবস্থায় সুসজ্জিত করে নিয়ে যেতো। পথে তাদের থেকে কোন প্রকার লাভবান হওয়া তাদের দৃষ্টিতে ছিল পাপ। এ ভুল ধারণা দূর করার জন্য এখানে বলা হচ্ছে, কুরবানীর জায়গায় পৌঁছে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তোমরা এ পশুদের থেকে লাভবান হতে পারো। এটা আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বিরোধী নয়। এ কথাটিই এ সম্পর্কিত হযরত আবু হুরাইরা (রা) ও হযরত আনাস (রা) বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায়। সেখানে বলা হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখলেন এক ব্যক্তি উটের লাগাম ধরে পায়ে হেঁটে চলে যাচ্ছে এবং সে ভীষণ কষ্টের মধ্যে আছে। তিনি বললেন, "ওর পিঠে সওয়ার হয়ে যাও" সে বললো, এটা হজ্জের সময় কুরবানী করার জন্য নিয়ে যাওয়া উট। বললেন, "তাতে কি, সওয়ার হয়ে যাও।"
মুফাসসিরগণের মধ্যে ইবনে আব্বাস (রা), কাতাদাহ, মুজাহিদ, দ্বাহহাক ও আতা খোরাসানী এ মত পোষণ করেছেন যে, এ আয়াতে "একটি নির্দিষ্ট সময়" মানে হচ্ছে,"যতক্ষণ পর্যন্ত পশুকে কুরবানীর জন্য নির্বাচিত ও কুরবানীর পশু নামে আখ্যায়িত না করা হয়।" এ ব্যাখ্যা অনুযায়ী মানুষ এ পশুগুলো থেকে কেবলমাত্র ততক্ষণ পর্যন্ত লাভবান হতে পারে যতক্ষন তারা তাদেরকে কুরবানীর পশু নামে আখ্যায়িত করে না। যখনই তারা তাদেরকে কুরবানীর পশু বানিয়ে আল্লাহর ঘরে নিয়ে যাবার নিয়ত করে তখনই তাদের থেকে আর কোন প্রকার লাভবান হবার অধিকার তাদের থাকে না। কিন্তু এ ব্যাখ্যা মোটেই সঠিক বলে মনে হয় না। প্রথমত এ অবস্থায় ব্যবহার করার ও লাভবান হবার অনুমতি দেওয়াটাই অর্থহীন। কারণ কুরবানীর পশু ছাড়া অন্য পশুদের থেকে লাভবান হবার বা না হবার ব্যাপারে কবেই বা সন্দেহ দেখা দিয়েছিল যে, সু্স্পষ্ট অনুমতির মাধ্যমে তা দূর করার প্রয়োজন দেখা দেয়৷ তারপর আয়াত পরিষ্কার বলছে, এমন সবপশু ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে যাদের ওপর "আল্লাহর নিদর্শন" শব্দ প্রযুক্ত হয়। আর একথা সুস্পষ্ট যে, এটি কেবলমাত্র তখনই হতে পারে যখন তাদেরকে কুরবানীর পশু গণ্য করা হয়।
অন্য তাফসীরকারগণ যেমন উরওয়া ইবনে যুবাইর ও আতা ইবনে আবি রিবাহ বলেন, "নির্দিষ্ট সময়" অর্থ হচ্ছে "কুরবানীর সময়।" কুরবানীর পূর্বে এ কুরবানীর পশুগুলো সওয়ারির কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে, এদের দুধও পান করা যায়, এদের বাচ্চাও গ্রহণ করা যেতে পারে এবং এদের পশম ও চুল ইত্যাদিও কাটা যেতে পারে। ইমাম শাফেঈ এ ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছেন। হানাফীগণ যদিও প্রথম ব্যাখ্যাটির সমর্থক তবুও সেখানে এতটুকু অবকাশ বের করেছেন যে, প্রয়োজনের শর্তে লাভবান হওয়া জায়েয।)
বিস্তারিত দেখুন : আ > আরব জাতি ,
এসাথে আরো দেখতে পারেন : জ > জাতি সমূহ , ম > মসজিদ > মসজিদুল হারাম > হজ্বপালনকারীদের নিকট থেকে মক্কার বাড়ীঘরের ভাড়া আদায় করা কি বৈধ ?
বিস্তারিত দেখুন : ম > মসজিদ > মসজিদুল হারাম > হজ্বপালনকারীদের নিকট থেকে মক্কার বাড়ীঘরের ভাড়া আদায় করা কি বৈধ ?
বিস্তারিত দেখুন : ম > মসজিদ > মসজিদুল হারাম > মসজিদে হারামের চতুর্সীমায় যে কাজ গুলো হারাম।
(হাজ্ব:২৭)(হে ইব্রাহিম) .. এবং লোকদেরকে হজ্জের জন্য সাধারণ হুকুম দিয়ে দাও, তারা প্রত্যেকে দূর-দূরান্ত থেকে পায়ে হেঁটে ও উটের পিঠে চড়ে ৪৬ ২৮) তোমার কাছে আসবে, যাতে এখানে তাদের জন্য যে কল্যাণ রাখা হয়েছে তা তারা দেখতে পায়।
(৪৬. মূলে (আরবী) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এটি বিশেষ করে শীর্ণ ও ক্ষীণকায় উটের প্রতিশব্দ হিসেবে বলা হয়ে থাকে। এর উদ্দেশ্য এমন সব মুসাফিরের ছবি তুলে ধরা যারা দূর দূরান্ত থেকে চলে আসছে এবং পথে তাদের উটগুলো খাদ্য ও পানীয় না পাওয়ার কারণে শীর্ণকায় হয়ে গেছে।)
(১৭:৩৯) তোমার রব তোমাকে অহীর মাধ্যমে যে হিকমতের কথাগুলো বলেছেন এগুলো তার অন্তরভুক্ত৷
(এখানে ১৭:২৩ থেকে ১৭:৩৮ নং পর্যন্ত আয়াতগুলোকে বোঝানো হয়েছে। এ আয়াতগুলোতে আল্লাহর আদেশ তথা ইসলামী আইনের গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো বর্ণিত হয়েছে। আর এ আয়াতে ইসলামী আইন কানুনগুলোকে “হিকমত” হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এ বিষয়টি প্রকৃত সত্যের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ যে, ইসলামী আইন কানুন গুলো পরিপূর্ণ হিকমত দ্বারা প্রণয়ন করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য প্রকৃত পক্ষেই কল্যাণকর, যা মানব রচিত দুর্বল ও ভুলে ভরা আইন কানুন দ্বারা কখনোই সম্ভব না, মানব রচিত আইন কানুন দ্বারা মানুষের শুধু ক্ষতিই করা সম্ভব, যার বাস্তব অভিজ্ঞতা আমরা সবাই লাভ করছি। )
(১৮:১৯) ..এবং সে দেখুক সবচেয়ে ভালো খাবার কোথায় পাওয়া যায়৷ সেখান থেকে সে কিছু খাবার নিয়ে আসুক ; আর তাকে একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, আমাদের এখানে থাকার ব্যাপারটা সে যেন কাউকে জানিয়ে না দেয়৷
(১৯:১২) “হে ইয়াহইয়া! আল্লাহর কিতাবকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো”৷ আমি তাকে শৈশবেই “হুকুম” দান করেছি। ১৩) এবং নিজের পক্ষ থেকে হৃদয়ের কোমলতা ও পবিত্রতা দান করেছি, আর সে ছিল খুবই আল্লাহভীরু ১৪) এবং নিজের পিতামাতার অধিকার সচেতন, সে উদ্ধত ও নাফরমান ছিল না৷ ১৫) শান্তি তার প্রতি যেদিন সে জন্ম লাভ করে এবং যেদিন সে মৃত্যুবরণ করে আর যেদিন তাকে জীবিত করে উঠানো হবে৷
বিস্তারিত দেখুন : প > পরকাল সম্পর্কিত বর্ণনাসমূহ ও পরকালীন হিসাব নিকাশ ,
ও > ওজন, দ > দাড়িপাল্লা ।
(৩৩-আহযাব: ৩৯) (এ হচ্ছে আল্লাহর নিয়ম তাদের জন্য) যারা আল্লাহর বাণী পৌঁছিয়ে থাকে, তাঁকেই ভয় করে এবং এক আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ভয় করে না আর হিসেব গ্রহণের জন্য কেবলমাত্র আল্লাহই যথেষ্ট৷৭৬
৭৬. মূল শব্দগুলো হচ্ছে, ......আরবী ........ এর দু'টি অর্থ। এক, প্রত্যেকটি ভয় ও বিপদের মোকাবিলায় আল্লাহই যথেষ্টে। দুই, হিসেব নেবার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট। তাঁর ছাড়া আর কারো কাছে জবাবদিহির ভয় করার কোন প্রয়োজন নেই।
(২১:৪৯) যারা না দেখে তাদের রবকে ভয় করে এবং যারা (হিসেবে নিকেশের) সে সময়ের ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত৷
(১৩:২১) তাদের নীতি হয়, আল্লাহ যেসব সম্পর্ক ও বন্ধন অক্ষণ্ন রাখার হুকুম দিয়েছেন৷ সেগুলো তারা অক্ষুণ্ন রাখে, নিজেদের রবকে ভয় করে এবং তাদের থেকে কড়া হিসেব না নেয়া হয় এই ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকে৷
আর হিসেব নেয়া হলো আমার কাজ৷-১৩:৪০,
তাঁর হিসেব নিতে একটুও দেরী হয় না৷-১৩:৪১,
হিসেব নিতে আল্লাহর একটুও দেরী হয় না৷-১৪:৫১,
পড়ো, নিজের আমলনামা, আজ নিজের হিসেব করার জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ট৷ (১৭:১৪)
হিসাব গ্রহণকারী আল্লাহ – ৪:৮৬, ৬:৬২,
হিসাব নেওয়া হবে ইহকালীন কাজকর্মের : ৬:৬১,
(২১:১) মানুষের হিসেব-নিকেশের সময় কাছে এসে গেছে, অথচ সে গাফলতির মধ্যে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে আছে৷
(নূর:৩৯).....তিনি তার পূর্ণ হিসেব মিটিয়ে দিলেন এবং আল্লাহর হিসেব নিতে দেরী হয় না ৷
৪:৬৬, ৬৭, ৮৯, ৯৭, ৮৮, ৯৮, ১০০,
(১৬:৪১) যারা জুলুম সহ্য করার পর আল্লাহর খাতিরে হিজরত করে গেছে তাদেরকে আমি দুনিয়াতেই ভালো আবাস দেবো এবং আখেরাতের পুরস্কার তো অনেক বড়৷
(২৯-আনকাবুত:৪৬) আর ৮০ উত্তম পদ্ধতিতে ছাড়া আহলে কিতাবের সাথে বিতর্ক করো না, তবে তাদের মধ্যে যারা জালেম তাদেরকে বলে, “আমরা ঈমান এনেছি আমাদের প্রতি যা পাঠানো হয়েছে তার প্রতি এবং তোমাদের প্রতি যা পাঠানো হয়েছিল তার প্রতিও, আমাদের ইলাহ ও তোমাদের ইলাহ একজনই এবং আমরা তারই আদেশ পালনকারী” ৷
৮০ . উল্লেখ্য , সামনের দিকে অগ্রসর হয়ে এ সূরায় হিজরাত করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। সে সময় হাবশাই ছিল মুসলমানদের পক্ষে হিজরাত করে যাবার জন্য একমাত্র নিরাপদ জায়গা। আর হাবশায় সে সময় ছিল খৃষ্টানদের প্রাধান্য। তাই আহলে কিতাবের মুখোমুখি হলে দ্বীনের ব্যাপারে তাদের সাথে কোন ধরনের ও কিভাবে আলাপ আলোচনা করতে হবে আয়াতগুলোতে সেসব উপদেশ দেয়া হয়েছে।
(২৯-আনকাবুত:৫৬) হে আমার বান্দারা, যারা ঈমান এনেছো! আমার যমীন প্রশস্ত , কাজেই তোমরা আমারই বন্দেগী করো৷ ৯৪
৯৪ . এখানে হিজরতের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, যদি মক্কায় আল্লাহর বন্দেগী করা কঠিন হয়ে থাকে, তাহলে দেশ ছেড়ে অন্যত্র চলে যাও। আল্লাহর পৃথিবী সংকীর্ণ নয়। যেখানেই তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে বসবাস করতে পারো সেখানে চলে যাও। তোমাদের জাতি ও দেশের নয় বরং আল্লাহর বন্দেগী করা উচিত। এ থেকে জানা যায় , আসল জিনিস জাতি ও দেশ নয় বরং আল্লাহর বন্দেগী। যদি কখনো জাতি ও দেশ প্রেমের দাবী এবং আল্লাহর বন্দেগীর দাবীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে তাহলে সেটিই হয় মু'মিনের ঈমানের পরীক্ষার সময়। যে সাচ্চা মু'মিন হবে, সে আল্লাহর বন্দেগী করবে এবং দেশ ও জাতিকে পরিত্যাগ করবে। আর যে মিথ্যা ঈমানের দাবীদার হবে, সে ঈমান পরিত্যাগ করবে এবং নিজের দেশ ও জাতিকে আঁকড়ে ধরবে। এ আয়াতটি এ ব্যাপারে একেবারে সুস্পষ্ট যে, একজন সত্যিকার আল্লাহর অনুগত ব্যক্তি দেশ ও জাতি প্রেমিক হতে পারে কিন্তু দেশ ও জাতি পূজারী হতে পারে না। তার কাছে আল্লাহর বন্দেগী হয় সব জিনিসের চেয়ে প্রিয় এবং দুনিয়ার সমস্ত জিনিসকে সে এর কাছে বিকিয়ে দেয় কিন্তু দুনিয়ার কোন জিনিসের কাছে একে বিকিয়ে দেয় না।
(২৯-আনকাবুত:২৬) সে সময় লূত তাকে (ইব্রাহিম আ: কে) মেনে নেয়, এবং ইবরাহীমকে বলে, আমি আমার রবের দিকে হিজরাত করছি, ৪৫ তিনি পরাক্রমশালী ও জ্ঞানী৷ ৪৬
৪৫ . অর্থাৎ আমি আমার রবের জন্য হিজরত করছি। এখন আমার রব আমাকে যেখানে নিয়ে যাবেন আমি সেখানে যাব।
৪৬ . অর্থাৎ তিনি আমাকে সহায়তা দান ও হেফাজত করার ক্ষমতা রাখেন এবং আমার পক্ষে তিনি যে ফায়সালা করবেন তা বিজ্ঞজনোচিত হবে।
(২০:৭৭) আমি মূসার কাছে অহী পাঠালাম যে, এবার রাতারাতি আমার বান্দাদের নিয়ে বের হয়ে পড়ো এবং তাদের জন্য সাগরের বুকে শুকনা সড়ক বানিয়ে নাও৷ কেউ তোমাদের পিছু নেয় কিনা সে ব্যাপারে একটুও ভয় করো না৷ এবং (সাগরের সাঝখান দিয়ে পার হতে গিয়ে) শংকিত হয়ো না৷
(২৬.শুআরা:৫২) আমি মূসার কাছে ওহী পাঠিয়েছি এই মর্মেঃ "রাতারাতি আমার বান্দাদের নিয়ে বের হয়ে যাও, তোমাদের পিছু নেয়া হবে৷
(২৮-ক্বাছাছ : ২০) এরপর এক ব্যক্তি নগরীর দূর প্রান্ত থেকে ছুটে এলো এবং বললো, "হে মূসা! সরদারদের মধ্যে তোমাকে হত্যা করার পরামর্শ চলছে৷ এখান থেকে বের হয়ে যাও৷ আমি তোমার মঙ্গলাকাংখী৷২১) এ খবর শুনতেই মূসা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বেরিয়ে পড়লো এবং সে দোয়া করলো, "হে আমার রব! আমাকে জালেমদের হাত থেকে বাঁচাও৷২২) .(মিসর থেকে বের হয়ে) যখন মূসা মাদয়ানের দিকে রওয়ানা হলো তখন সে বললো, "আশা করি আমার রব আমাকে সঠিক পথে চালিত করবেন৷২৩) আর যখন সে মাদয়ানের কুয়ার কাছে পৌঁছুল,…………………………(২৮-ক্বাছাছ : ২৫) .....তার কাছে নিজের সমস্ত কাহিনী তাকে শুনালো তখন সে বললো, "ভয় করো না, এখন তুমি জালেমদের হাত থেকে বেঁচে গেছো৷"
(২৬.শুআরা:১৬৭) তারা বললো, “হে লূত! যদি তুমি এসব কথা থেকে বিরত না হও, তাহলে আমাদের জনপদগুলো থেকে যেসব লোককে বের করে দেয়া হয়েছে তুমিও নির্ঘাত তাদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে৷
(সূরা আ'রাফ ও সূরা নামলে বর্ণনা করা হয়েছে, হযরত লূতকে (আ) দেশ থেকে বের হয়ে যাবার এ নোটিশ দেবার আগে এ পাপাচারী জাতির লোকেরা নিজেদের মধ্যে ফয়সালা করে নিয়েছিলঃ
اخرجوا ال لُوطٍ من قريَتِكم اِنَّهُم انَاسٌ يَّتَطَهَّرُوْنَ-
"লূত ও তাঁর পরিবারের লোকদের এবং সাথীদেরকে জনপদ থেকে বের করে দাও। এরা বড়ই পবিত্রতার পরাকাষ্ঠা দেখাচ্ছে। এ 'নেককারদের'কে বাইরের পথ দেখিয়ে দাও।"
(আনফাল:৭৪) যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহর পথে বাড়ি-ঘর ত্যাগ করেছে এবং জিহাদ করেছে আর যারা আশ্রয় দিয়েছে এবং সাহায্য -সহায়তা করেছে তারাই সাচ্চা মুমিন৷ তাদের জন্যে রয়েছে ভূলের ক্ষমা ও সর্বোত্তম রিযিক৷
(আনফাল:৭২) যারা ঈমান এনেছে, হিজরাত করেছে এবং আল্লাহর পথে নিজের জানমালের ঝুকি নিয়ে জিহাদ করেছে আর যারা হিজরাতকারীদেরকে আশ্রয় দিয়েছে ও সাহায্য করেছে, আসলে তারাই পরস্পরের বন্ধু ও অভিভাবক৷ আর যারা ঈমান এনেছে ঠিকই কিন্তু হিজরাত করে (দারুল ইসলামে) আসেনি তারা হিজরাত করে না আসা পর্যন্ত তাদের সাথে তোমাদের বন্ধুত্বের ও অভিভাবকত্বের কোন সম্পর্ক নেই৷ তবে হাঁ দীনের ব্যাপারে যদি তারা তোমাদের কাছে সাহায্য চায় তাহলে তাদেরকে সাহায্য করা তোমাদের জন্য ফরয৷ কিন্তু এমন কোন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয় যাদের সাথে তোমাদের চুক্তি রয়েছে৷ তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তা দেখেন৷
( বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : র > রাষ্ট্র > ইসলামী রাষ্ট্র > ইসলামী রাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি > ভিন্ন দেশের মুসলমান সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হলে ইসলামী রাষ্ট্রের করনীয় কি ? )
প্রকৃত মু’মিন হওয়ার জন্য অর্থাৎ ঈমানের দাবীতে সত্যবাদী হওয়ার জন্য : ৮:৭৪ (যারা ঈমান এনেছে অত:পর হিজরত করে এবং জিহাদ করে তারাই প্রকৃত মু’মিন অর্থাৎ তারা তাদের ঈমানের দাবীতে সত্যবাদী, তাদের জন্যই রয়েছে ক্ষমা ও সম্মান জনক রিজিক্ব।
আর যারা পরবর্তীতে ঈমান আনবে এবং হিজরত করবে ও জিহাদ করবে তারাও নবী সা: এর সঙ্গী সাথীদের দলভুক্ত হিসেবে গণ্য হবে : ৮:৭৫ ।
আর যারা ঈমান এনেছে ঠিকই কিন্তু এখনও হিজরত করেনি তোমরা তাদের বন্ধু বা অভিভাবক নও :৮:৭২ (তবে দ্বীনের ব্যাপারে তারা যদি কোন সাহায্য চায় তবে তাদেরকে সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য, তবে কোন চুক্তিবদ্ধ জাতির বিরুদ্ধে গিয়ে নয় )।
যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং জানের বাজী রেখে জিহাদ করেছে তারাই পরস্পরের বন্ধু ও অভিভাবক :৮:৭২,
দারুল হরব ও দারুল কুফরে অবস্থিত মুসলমানদের সম্বন্ধে এবং যুদ্ধবন্দীদের সম্বন্ধে দারুল ইসলামে অবস্থিত মুসলমানদের জন্য পালনীয় বিধি বিধান : ৮:৭০-৭৩ (তোমরা যদি এই বিধিবিধান গুলো পালন না কর, তবে পৃথিবীতে ফিতনা ও বিপর্যয় সৃষ্টি হবে।
হে ঈমানদারেরা তোমরা যদি আল্লাহর রাসূলকে সহযোগিতা না করতে চাও তবে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট : ৯:৪০ (মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করার সময় প্রায় একাকী অবস্থায় নবীকে এক গুহার মধ্যে সহযোগিতা করেছেন আল্লাহ),
আরো দেখুন : মুহাম্মদ সা: এর হিজরত
(১৭:৭৬) আর এরা এ দেশ থেকে তোমাকে উৎখাত করার এবং এখান থেকে তোমাকে বের করে দেবার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছিল৷ কিন্তু যদি এরা এমনটি করে তাহলে তোমার পর এরা নিজেরাই এখানে বেশীক্ষণ থাকতে পারবে না।
(ব্যাখ্যা : এটি একটি সুস্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী । সে সময় এটি তো নিছক হুমকি মনে হচ্ছিল । কিন্তু দশ বারো বছরের মধ্যেই এর সত্যতা অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণ হয়ে গেলো । কাফেররা মুহাম্মদ সা: কে নিজের জন্মভূমি থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করলো এবং এরপর ৮ বছরের বেশী সময় অতিবাহিত হতে না হতেই তিনি বিজয়ীর বেশে মক্কা মুয়াযযমায় প্রবেশ করলেন । তারপর দু'বছরের মধ্যেই সমগ্র আরব ভূখণ্ড মুশরিক শূন্য করা হলো । এরপর যারাই এ দেশে বসবাস করেছে মুসলমান হিসেবেই বসবাস করেছে, মুশরিক হিসেবে কেউ সেখানে টিকতে পারেনি ।)
(১০:৯০) আর আমি বনী ইসরাঈলকে সাগর পার করে নিয়ে গেলাম৷
(১৬:১১০) পক্ষান্তরে যাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, (ঈমান আনার কারণে) যখন তারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা বাড়ি-ঘর ত্যাগ করেছে, হিজরাত করেছে, আল্লাহর পথে কষ্ট সহ্য করেছে এবং সবর করেছে, তাদের জন্য অবশ্যই তোমার রব ক্ষমাশীল ও করুণাময়৷
(হাজ্ব:৫৮) আর যারা আল্লাহর পথে হিজরত করেছে তারপর নিহত হয়েছে বা মারা গেছে, আল্লাহ তাদেরকে ভালো জীবিকা দেবেন এবং নিশ্চয়ই আল্লাহই সবচেয়ে ভালো রিযিকদাতা৷ ৫৯) তিনি তাদেরকে এমন জায়গায় পৌঁছিয়ে দেবেন যা তাদেরকে খুশী করে দেবে, নিসন্দেহে আল্লাহ সবকিছু জানেন ও পরম ধৈর্যশীল৷
(২১:৭১) আর আমি তাকে ( ইব্রাহিমকে) ও লূতকে বাঁচিয়ে এমন দেশের দিকে নিয়ে গেলাম যেখানে আমি দুনিয়াবাসীদের জন্য বরকত রেখেছিলাম৷ ৭২) আর তাকে আমি ইসহাক দান করলাম এবং এর ওপর অতিরিক্ত ইয়াকুব এবং প্রত্যেককে করলাম সৎকর্মশীল৷
(১৯:৪৯) অতপর যখন সে তাদের থেকে এবং তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ইবাদত করতো তাদের থেকে আলাদা হয়ে গেলো তখন আমি তাকে ইসহাক ও ইয়াকুবের মতো সন্তান দিলাম এবং প্রত্যেককে নবী করলাম৷৫০) আর তাদেরকে নিজের অনুগ্রহ দান করলাম এবং তাদেরকে দিলাম যথার্থ নাম-যশ৷
(যেসব মুহাজির গৃহত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন এগুলো তাদের জন্য সান্তনাবাণী। তাদেরকে বলা হচ্ছে, ইবরাহীম আলাইহিস সালাম যেমন তাঁর পরিবারবর্গ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ধ্বংস হয়ে যান নি বরং উল্টা উন্নতশির ও সফলকাম হয়েছিলেন ঠিক তেমনি তোমরাও ধ্বংস হয়ে যাবে না বরং তোমরা এমন মর্যাদালাভ করবে জাহেলিয়াতের অন্ধকার আবর্তে মুখ গুঁজে পড়ে থাকা কুরাইশ বংশীয় কাফেররা যার কল্পনাই করতে পারে না।)
(১৮:১৬) এখন যখন তোমরা এদের থেকে এবং আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে এরা পূজা করে তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছো তখন চলো অমুক গুহায় গিয়ে আশ্রয় নিই৷ তোমাদের রব তোমাদের ওপর তাঁর রহমতের ছায়া বিস্তার করবেন এবং তোমাদের কাজের উপযোগী সাজ সরঞ্জামের ব্যবস্থা করবেন৷
(বিস্তারিত দেখুন : গ > গুহাবাসীদের ঘটনা)
(১৯:২৪) ফেরেশতা পায়ের দিক থেকে তাকে (হযরত মরিয়মকে ) ডেকে বললো, “দুঃখ করো না, তোমার রব তোমার নীচে একটি নহর প্রবাহিত করেছেন, ২৫) এবং তুমি এ গাছের কাণ্ডটি একটু নাড়া দাও, তোমার ওপর তরতাজা খেজুর ঝরে পড়বে৷২৬) তারপর তুমি খাও, পান করো এবং নিজের চোখ জুড়াও৷ তারপর যদি তুমি মানুষের দেখা পাও তাহলে তাকে বলে দাও, আমি করুণাময়ের জন্য রোযার মানত মেনেছি, তাই আজ আমি কারোর সাথে কথা বলবো না”৷
(বিস্তারিত দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > ঈসা আ: এর কাহিনী)
(শুআরা:৬১) দু'দল যখন পরস্পরকে দেখতে পেলো তখন মূসার সাথীরা চিৎকার করে উঠলো, "আমরা তো পাকড়াও হয়ে গেলাম৷৬২) মূসা বললো, "কখ্খনো না, আমার সাথে আছেন আমার রব, তিনি নিশ্চয়ই আমাকে পথ দেখাবেন৷৬৩) আমি মূসাকে ওহীর মাধ্যমে হুকুম দিলাম, "মারো তোমার লাঠি সাগরের বুকে৷" সহসাই সাগর দীর্ণ হয়ে গেল এবং তার প্রত্যেকটি টুকরা হয়ে গেলো এক একটি বিশাল পাহাড়ের মতো৷....৬৫) মূসা ও তার সমস্ত লোককে যারা তার সঙ্গে ছিল আমি উদ্ধার করলাম ৬৬) এবং অন্যদেরকে ডুবিয়ে দিলাম৷
(২০:৭৭) আমি মূসার কাছে অহী পাঠালাম যে, এবার রাতারাতি আমার বান্দাদের নিয়ে বের হয়ে পড়ো এবং তাদের জন্য সাগরের বুকে শুকনা সড়ক বানিয়ে নাও৷ কেউ তোমাদের পিছু নেয় কিনা সে ব্যাপারে একটুও ভয় করো না৷ এবং (সাগরের সাঝখান দিয়ে পার হতে গিয়ে) শংকিত হয়ো না৷
(২৬.শুআরা:৬৩) আমি মূসাকে ওহীর মাধ্যমে হুকুম দিলাম, "মারো তোমার লাঠি সাগরের বুকে৷" সহসাই সাগর দীর্ণ হয়ে গেল এবং তার প্রত্যেকটি টুকরা হয়ে গেলো এক একটি বিশাল পাহাড়ের মতো৷
ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত মূসা আ: এর লাঠির আঘাতে সাগর দ্বিখন্ডিত হয়ে যাওয়ার প্রকৃত স্বরূপ কি ছিল ?
আরো দেখতে পারেন : ম > মু’জিযা > মূসা আ: এর মু’জিযা > লাঠির আঘাতে সাগর দ্বিখন্ডিত হওয়া।
(হাজ্ব:৪০) তাদেরকে নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে অন্যায়ভাবে বের করে দেয়া হয়েছে ৮০ শুধুমাত্র এ অপরাধে যে, তারা বলেছিল, “আল্লাহ আমাদের রব৷৮১
(৮১. এদের ওপর যে ধরনের অত্যাচার করে বের করে দেয়া হয় তা অনুমান করার জন্য নিম্নোক্ত কয়েকটি ঘটনা সামনে রাখতে হবেঃ
হযরত সোহাইব রুমী (রা) যখন হিজরত করতে থাকেন তখন কুরাইশ বংশীয় কাফেররা তাঁকে বলে, তুমি এখানে এসেছিলে খালি হাতে। এখন অনেক ধনী হয়ে গেছো।
যেতে চাইলে তুমি খালি হাতে যেতে পারো। নিজের ধন-সম্পদ নিয়ে যেতে পারবে না। অথচ তিনি নিজে পরিশ্রম করেই এ ধন-সম্পদ উপার্জন করেছিলেন। কারো দান তিনি খেতেন না। ফলে বেচারা হাত-পা ঝেড়ে উঠে দাঁড়ান এবং সবকিছু ঐ জালেমদের হাওয়ালা করে দিয়ে এমন অবস্থায় মদীনায় পৌঁছেন যে, নিজের পরণের কাপড়গুলো ছাড়া তাঁর কাছে আর কিছুই ছিল না।
হযরত উম্মে সালামাহ (রা) ও তাঁর স্বামী আবু সালামাহ (রা) নিজেদের দুধের বাচ্চাটিকে নিয়ে হিজরত করার জন্য বের হয়ে পড়েন। বনী মুগীরাহ (উম্মে সালামাহর পরিবারের লোকেরা) তাদের পথ রোধ করে দাঁড়ায়। তারা আবু সালামাহকে বলে, তোমার যেখানে ইচ্ছা যেতে পারো কিন্তু আমাদের মেয়েকে নিয়ে যেতে পারো না। বাধ্য হয়ে তিনি স্ত্রীকে রেখে দিয়ে চলে যান। এরপর বনী আবদুল আসাদ (আবু সালামাহর বংশের লোকেরা) এগিয়ে আসে এবং তারা বলে, শিশুটি আমাদের গোত্রের। তাকে আমাদের কাছে দিয়ে দাও। এভাবে মা ও বাপ উভয়ের কাছ থেকে শিশু সন্তানকেও ছিনিয়ে নেয়া হয়। প্রায় এক বছর পর্যন্ত হযরত উম্মে সলামাহ (রা) স্বামী ও সন্তাদের শোকে ছটফট করতে থাকেন এবং শেষ পর্যন্ত বড়ই কঠিন বিপদের মধ্যদিয়ে নিজের শিশু সন্তানটি পুনরুদ্ধার করে মক্কা থেকে এমন অবস্থায় বের হয়ে পড়েন যে, একজন নিসংগ স্ত্রীলোক কোলে একটি ছোট বাচ্চা নিয়ে উটের পিঠে বসে আছেন। এমন পথ দিয়ে তিনি চলছেন যেখান দিয়ে সশস্ত্র কাফেলা যেতে ভয় পেতো।
আইয়াশ ইবনে রাবীআহ আবু জেহেলের বৈপিত্রেয় ভাই ছিলেন। হযরত উমরের (রা) সাথে হিজরত করে মদীনায় পৌঁছে যান। পিছে পিছে আবু জেহেল নিজের এক ভাইকে সাথে নিয়ে সেখানে পৌঁছে যায়। সে মায়ের নামে মিথ্যা বানিয়ে বলে, আম্মাজান কসম খেয়েছেন আইয়াশের চেহারা না দেখা পর্যন্ত রোদ থেকে ছায়ায় যাবেন না এবং মাথায় চিরুনীও লাগাবেন না। কাজেই তুমি গিয়ে একবার শুধু তাঁকে চেহারা দেখিয়ে দাও তারপর চলে এসো। তিনি মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও মাতৃভক্তির আতিশয্যে তাদের সংগ নেন। পথে দুই ভাই মিলে তাকে বন্দী করে এবং তাকে নিয়ে মক্কায় এমন অবস্থায় প্রবেশ করে যখন তার আষ্টেপৃষ্ঠে দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল এবং দুই ভাই চিৎকার করে যাচ্ছিল, " হে মক্কাবাসীরা! নিজেদের নালায়েক ছেলেদেরকে এমনিভাবে শায়েস্থা করো যেমন আমরা করেছি।" দীর্ঘদিন পর্যন্ত তিনি বন্দী থাকেন এবং শেষ পর্যন্ত একজন দুঃসাহসী মুসলমান তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসতে সক্ষম হন।
মক্কা থেকে মদীনায় যারাই হিজরত করেন তাদের প্রায় সবাইকেই এ ধরনের জুলুম-নির্যাতনের শিকার হতে হয়। ঘর-বাড়ি ছেড়ে চলে আসার সময়ও জালেমরা তাদেরকে নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে বের হয়ে আসতে দেয়নি।)
(বিস্তারিত দেখুন : জ > জিহাদ > সশস্ত্র জিহাদ > সশস্ত্র যুদ্ধের অনুমতি দেওয়ার কারণ। )
(নূর:২২) তোমাদের মধ্য থেকে যারা প্রাচুর্য ও সামর্থের অধিকারী তারা যেন এ মর্মে কসম খেয়ে না বসে যে, তারা নিজেদের আত্মীয়-স্বজন, গরীব-মিসকীন ও আল্লাহর পথে গৃহত্যাগকারীদেরকে সাহায্য করবে না ৷
বিস্তারিত দেখুন : প > পর্দা > মহিলাদের পর্দার বিধান > হিজাব কেমন হবে ?
ঈসা আ: এর সাহাবীগণ : ৫:১১১-১১৫,
৫:২৭-৩২,
(২৮-ক্বাছাছ : ৬) পৃথিবীতে তাদেরকে কর্তৃত্ব দান করবো৷ এবং তাদের থেকে ফেরাউন, হামান৮ ও তার সৈন্যদেরকে সে সবকিছুই দেখিয়ে দেবো, যার আশংকা তারা করতো৷
(৮. পশ্চিমা প্রাচ্যবিদরা এ বিষয়টি নিয়ে বেশ ঠাট্টা বিদ্রুপ করেছেন যে, হামান তো ছিল ইরানের বাদশা আখসোবিরাস অর্থাৎ খাশিয়ারশার দরবারের একজন আমীর। আর এ বাদশাহর আমল হযরত মুসার শত শত বছর পরে খৃ: পূ: ৪৮৬ ও ৪৬৫ সালে শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোরআন তাকে মিসরে নিয়ে গিয়ে ফিরাউনের মন্ত্রী বানিয়ে দিয়েছে। তাদের বিবেক বুদ্ধি যদি বিদ্বেষের আবরণে আচ্ছাদিত না থাকতো তাহলে তারা নিজেরাই এ বিষয়টি ভেবে দেখতো। আখসোবিরাসের সভাসদ হামানের পূর্বে দুনিয়ায় এ নামে আর কোন ব্যক্তি কোথাও ছিল কিনা এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলার মত তাদের কাছে কি এমন ঐতিহাসিক প্রমাণ আছে৷ যে ফেরাউনের আলোচনা এখানে হচ্ছে যদি তার সমস্ত মন্ত্রী, আমীর-ওমরা ও সভাসদদের কোন পূর্ণাঙ্গ তালিকা একেবারে নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোন প্রাচ্যবিদ পেয়ে গিয়ে থাকেন, যাতে হামানের নাম নেই, তাহলে তিনি তা লুকিয়ে রেখেছেন কেন৷ এখনই তার ফটোকপি ছাপিয়ে দেওয়া উচিত। কারণ কোরআনকে মিথ্যা প্রমাণিত করার এর চেয়ে আর বড় প্রভাবশালী অস্ত্র তিনি আর পাবেন না।)
বিস্তারিত : ক > কিয়ামত, প > পরকাল।
আরো দেখুন : জ > জন্ম, মৃত্যু, পুনরুত্থান ।
আরো দেখুন : ফ > ফিরে যাওয়া।
(নূর:৪২) আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর রাজত্ব আল্লাহরই এবং তাঁরই দিকে সবাই ফিরে যেতে হবে ৷
(৩০-রূম: ৫৫) আর যখন সেই সময় শুরু হবে, যখন অপরাধীরা কসম খেয়ে খেয়ে বলবে , আমরা তো মুহূর্তকালের বেশি অবস্থান করিনি৷ এভাবে তারা দুনিয়ার জীবনে প্রতারিত হতো৷
(৩০-রূম: ৫৬) কিন্তু যাদেরকে ঈমান ও জ্ঞানের সম্পদ দান করা হয়েছিল তারা বলবে, তোমরা তো আল্লাহর লিখিত বিধানে হাশরের দিন পর্যন্ত অবস্থান করেছো, কাজেই এটিই সেই হাশরের দিন কিন্তু তোমরা জানতে না৷
যেদিন আমি তাদের সবাইকে এক সাথে (আমার আদালতে) একত্র করবো-১০:২৮,
তোমাদের সকলকে আল্লাহর নিকট সমবেত করা হবে : ৮:২৪,
(১৫:২৫) অবশ্যি তোমার রব তাদের সবাইকে একত্র করবেন৷
(১৯:৮৫) সেদিনটি অচিরেই আসবে যেদিন মুত্তাকীদেরকে মেহমান হিসেবে রহমানের সামনে পেশ করবো
(১৯:৯৩) পৃথিবী ও আকাশের মধ্যে যা কিছু আছে সবই তাঁর সামনে বান্দা হিসেবে উপস্থিত হবে৷
(মু’মিনুন:৭৯) তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং তাঁরই কাছে তোমরা একত্র হবে ৷
(১৮:৪৮) এবং সবাইকে তোমার রবের সামনে লাইনবন্দী করে পেশ করা হবে৷ নাও দেখে নাও, তোমরা এসে গেছো তো আমার কাছে ঠিক তেমনিভাবে যেমনটি আমি তোমাদের প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম৷ তোমরা তো মনে করেছিলে আমি তোমাদের জন্য কোনো প্রতিশ্রুত ক্ষণ নির্ধারিতই করিনি৷
৬:৯৪,
(১৯:৮০) সে সাজসরঞ্জাম ও জনবলের কথা এ ব্যক্তি বলছে তা সব আমার কাছেই থেকে যাবে এবং সে একাকী আমার সামনে হাযির হয়ে যাবে৷
(১৯:৯৫) সবাই কিয়ামতের দিন একাকী অবস্থায় তাঁর সামনে আসবে৷
( আরো দেখতে পারেন : এ > একাকী)
(১৭:১০৪) এবং এরপর বনী ইসরাঈলকে বললাম, এখন তোমরা পৃথিবীতে বসবাস করো, তারপর যখন আখেরাতের প্রতিশ্রুতির সময় এসে যাবে তখন আমি তোমাদের সবাইকে এক সাথে হাযির করবো৷
(১৮:৯৯) আর সে দিন আমি লোকদেরকে ছেড়ে দেবো, তারা (সাগর তরংগের মতো) পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবে আর শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে এবং আমি সব মানুষকে একত্র করবো৷
(১৮:৭) আসলে পৃথিবীতে এ যাকিছু সাজ সরঞ্জামই আছে এগুলো দিয়ে আমি পৃথিবীর সৌন্দর্য বিধান করেছি তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য যে, তাদের মধ্য থেকে কে ভালো কাজ করে৷ ৮) সবশেষে এসবকে আমি একটি বৃক্ষ-লতাহীন ময়দানে পরিণত করবো৷
(২০:১০৮) --সেদিন সবাই নকীবের আহবানে সোজা চলে আসবে, কেউ সামান্য দর্পিত ভংগীর প্রকাশ ঘটাতে পারবে না এবং করুণাময়ের সামনে সমস্ত আওয়াজ স্তব্ধ হয়ে যাবে, মৃদু খসখস শব্দ ছাড়া তুমি কিছুই শুনবে না৷
(ফুরকান:২৪) সে দিন যারা জান্নাতের অধিকারী হবে তারাই উৎকৃষ্ট স্থানে অবস্থান করবে এবং দুপুর কাটাবার জন্য চমৎকার জায়গা পাবে৷৩৮
(৩৮. অর্থাৎ হাশরের ময়দানে জান্নাতের হকদার লোকদের সাথে অপরাধীদের থেকে ভিন্নতর ব্যবহার করা হবে । তাদের সম্মানের সাথে বসানো হবে। হাশরের দিনের কঠিন দুপুর কাটাবার জন্য তাদের আরাম করার জায়গা দেয়া হবে। সেদিনের সব রকমের কষ্ট ও কঠোরতা হবে অপরাধীদের জন্য। সৎকর্মশীলদের জন্য নয়। যেমন হাদীসে বলা হয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন ,
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّهُ لَيُخَفَّفُ عَلَى الْمُؤْمِنِ حَتَّى يَكُونَ أَخَفَّ عَلَيْهِ مِنْ صَلَاةٍ مَكْتُوبَةٍ يُصَلِّيهَا فِيَّ الدُّنْيَا.
"সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ আবদ্ধ , কিয়ামতের মহা ও ভয়াবহ দিবস একজন মু'মিনের জন্য অনেক সহজ করে দেয়া হবে। এমনকি তা এতই সহজ করে দেয়া হবে , যেমন একটি ফরয নামায পড়ার সময়টি হয়।" (মুসনাদে আহমদ , আবু সাঈদ খুদরী কতৃক বর্ণিত)
(২১:১০৩) সেই চরম ভীতিকর অবস্থা তাদেরকে একটুও পেরেশান করবে না ৯৮ এবং ফেরেশতারা এগিয়ে এসে তাদেরকে সাদরে অভ্যর্থনা জানাবে এই বলে, “এ তোমাদের সেই দিন যার প্রতিশ্রুতি তোমাদের দেয়া হতো৷”
(৯৮. অর্থাৎ হাশরের দিন এবং আল্লাহর সামনে হাজির হবার সময়, যা সাধারণ লোকদের জন্য হবে চরম ভীতি ও পেরেশানীর সময়, নেক লোকেরা সে সময় একটি মানসিক নিশ্চিন্ততার মধ্যে অবস্থান করবে। কারণ, সবকিছু ঘটতে থাকবে তাদের আশা-আকাংখা ও কামনা-বাসনা অনুযায়ী। ঈমান ও সৎকাজের যে পুঁজি নিয়ে তারা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছিল তা সে সময় পর্যন্ত আল্লাহর মেহেরবানীতে তাদের মনোবল দৃঢ় করবে এবং ভয় ও দুঃখের পরিবর্তে তাদের মনে এ আশার সঞ্চার করবে যে, শীঘ্রই তারা নিজেদের প্রচেষ্টা ও তৎপরতার সুফল লাভ করবে।)
(২০:১০২) সেদিন যখন সিংগায় ফুঁক দেয়া হবে এবং আমি অপরাধীদেরকে এমনভাবে ঘেরাও করে আনবো যে, তাদের চোখ (আতংকে) দৃষ্টিহীন হয়ে যাবে৷
(২৭-নমল:৮৩) আর সেদির কথা একবার চিন্তা কর, যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্য থেকে এমন সব লোকদের এক একটি দল কে ঘেরাও করে আনবো যারা আমার আয়াত অস্বীকার করত৷ তারপর তাদের কে ( তাদের শ্রেণী অনুসারে স্তরে স্তরে ) বিন্যস্ত করা হবে৷৮৪) অবশেষে যখন সবাই এসে যাবে তখন ( তাদের রব তাদেরকে ) জিজ্ঞাস করবেন, “ তোমরা আমার আয়াত অস্বীকার করেছো অথচ তোমরা জ্ঞানগত ভাবে তা আয়ত্ব করো নি?১০২ যদি এ না হয়ে থাকে তাহলে তোমরা আর কি করেছিলে”৷
(ফুরকান:২৫) আকাশ ফুড়ে একটি মেঘমালার সেদিন উদয় হবে এবং ফেরেশাতাদের দলে দলে নামিয়ে দেয়া হবে৷
হে নবী! তাদেরকে বলো, তোমরা কি কখনো একথাও চিন্তা করেছো যে আল্লাহ তোমদের জন্য যে রিযিক অবতীর্ণ করেছিলেন তার মধ্য থেকে তোমরা নিজেরাই কোনটাকে হারাম ও কোনটাকে হালাল করে নিয়েছো? তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, আল্লাহ কি তোমাদেরকে এর অনুমতি দিয়েছিলেন? নাকি তোমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করছো? -১০:৫৯,
(ব্যাখ্যা : এখানে রিজিক্ব বলতে খাদ্যসামগ্রী, ধন দৌলত, সন্তান সন্ততি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় আমানত, সবকিছুই বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, আল্লাহ তোমাদেরকে যা কিছু দিয়েছেন ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় কতৃত্ব ও আমানত পর্যন্ত – সবকিছুতেই আদেশ ও নিষেধের বিধিবিধান তোমাদের মন মতো নয় বরং আল্লাহর কুরআনে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী হতে হবে। )
(১৫:১১৬) আর এই যে, তোমাদের কণ্ঠ ভুয়া হুকুম জারী করে বলতে থাকে এটি হালাল এবং ওটি হারাম, এভাবে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করো না৷ যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে তারা কখনোই সফলকাম হবে না৷
(২৭-নমল:৯১) (“হে মুহাম্মদ! তাদেরকে বল) আমাকেতো হুকুম দেয়া হয়েছে, আমি এ শহরের রবের বন্দেগী করবো, যিনি একে হারামে পরিণত করেছেন
বিস্তারিত দেখুন : ম > মসজিদে হারাম । ক > কাবাঘর ।
Drcvw`Z dmj wb‡R‡`i B”QvgZ LvI : 7:161,
7:156, fv‡jv I cweÎ wRwbm¸‡jv LvI : 7:160,
MYxg‡Zi gvj nvjvj I cweÎ : 8:69 (myZivs, ‡Zvgiv ‡h MYxg‡Zi gvj jvf K‡i‡Qv Zv LvI)
(১৬:১১৪) কাজেই হে লোকেরা! আল্লাহ তোমাদের যা কিছু পাক-পবিত্র ও হালাল রিযিক দিয়েছেন তা খাও এবং আল্লাহর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো
(২০:১৩১) .....তোমার রবের দেয়া হালাল রিযিকই উত্তম ও অধিকতর স্থায়ী৷
(মু’মিনুন:৫১) হে রসূল! পাক-পবিত্র জিনিস খাও এবং সৎকাজ করো৷ ৪৬ তোমারা যা কিছুই করো না কেন আমি তা ভালোভাবেই জানি ৷
(৪৬.পাক-পবিত্র জিনিস বলে এমন জিনিস বুঝানো হয়েছে যা নিজেও পাক-পবিত্র এবং হালাল পথে অর্জিতও হয়। পবিত্র জিনিস খাওয়ার নির্দেশ দিয়ে বৈরাগ্যবাদ ও ভোগবাদের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ মধ্যপন্থার দিকে ইংগিত করা হয়েছে। মুসলমান বৈরাগী ও যোগীর মতো পবিত্র জীবিকা থেকে যেমন নিজেকে বঞ্চিত করতে পারে না, তেমনি দুনিয়া পূজারী ও ভোগবাদীর মতো হালাল-হারামের পার্থক্য না করে সব জিনিসে মুখও লাগাতে পারে না।
সৎকাজ করার আগে পবিত্র ও হালাল জিনিস খাওয়ার নির্দেশের মধ্যে এদিকে পরিষ্কার ইংগিত রয়েছে যে, হারাম খেয়ে সৎকাজ করার কোন মানে হয় না। সৎকাজের জন্য প্রথম শর্ত হচ্ছে হালাল রিযিক খাওয়া। হাদীসে বলা হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ''হে লোকেরা! আল্লাহ নিজে পবিত্র, তাই তিনি পবিত্র জিনিসই পছন্দ করেন।'' তারপর তিনি এ আয়াতটি তেলাওয়াত করেন এবং তারপর বলেনঃ
----------
''এক ব্যক্তি আসে সুদীর্ঘ পথ সফল করে। দেহ ধূলি ধূসরিত। মাথার চুল এলোমেলো। আকাশের দিকে হাত তুলে প্রার্থনা করেঃ হে প্রভু ! হে প্রভু ! কিন্তু অবস্থা হচ্ছে এই যে, তার খাবার হারাম, পানীয় হারাম, কাপড় চোপড় হারাম এবং হারাম খাদ্যে তার দেহ প্রতিপালিত হয়েছে। এখন কিভাবে এমন ব্যক্তির দোয়া কবুল হবে।'' (মুসলিম, তিরমিযী ও আহমাদ, আবু হুরাইরা (রা:) থেকে)
(২০:১০) যখন সে একটি আগুন দেখলো৫ নিজের পরিবারের লোকদেরকে বললো, “একটু দাড়াও, আমি একটি আগুন দেখেছি, হয়তো তোমাদের জন্য এক আধটি অংগার আনতে পারবো অথবা এ আগুনের নিকট আমি পথের দিশা পাবো”
(৩২- আস-সাজদা : ১৬) ……………এবং যা কিছু রিযিক আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে৷ ২৮
২৮ . রিযিক বলতে বুঝায় হালাল রিযিক। হারাম ধন-সম্পদকে আল্লাহ তার প্রদত্ত সম্পদ হিসেবে বর্ণনা করেন না। কাজেই এ আয়াতের অর্থ হচ্ছে, যা সামান্য কিছু পবিত্র রিযিক আমি দিয়েছি তা থেকেই খরচ করে। তার সীমা অতিক্রম করে নিজের খরচপাতি পুরা করার জন্য হারাম সম্পদে হাত দেয় না।
(১৬:১১৫) আল্লাহ যাকিছু তোমাদের ওপর হারাম করেছেন তা হচ্ছে , মৃতদেহ, রক্ত, শূয়োরের গোশত এবং যে প্রাণীর ওপর আল্লাহ ছাড়া অন্য কারোর নাম নেয়া হয়েছে৷ তবে যদি কেউ আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধাচরণ করার ইচ্ছা পোষণ না করে অথবা প্রয়োজনের সীমা না ছাড়িয়ে ক্ষুধার জ্বালায় বাধ্য হয়ে এসব খেয়ে নেয় তাহলে নিশ্চিতই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়৷
(১৬:১১৮) ইতিপূর্বে আমি তোমাকে যেসব জিনিসের কথা বলেছি সেগুলো আমি বিশেষ করে ইহুদীদের জন্য হারাম করেছিলাম৷
(১৬:১১৫) ...... তবে যদি কেউ আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধাচরণ করার ইচ্ছা পোষণ না করে অথবা প্রয়োজনের সীমা না ছাড়িয়ে ক্ষুধার জ্বালায় বাধ্য হয়ে এসব খেয়ে নেয় তাহলে নিশ্চিতই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়৷
7:156,
ciKv‡j Kv‡di‡`i/Rvnvbœvgx‡`i Rb¨ hv nvivg n‡e : 7:50 (my‡cq cvwb I fv‡jv Lv`¨),
(১৯:৪) সে বললো, “হে আমার রব! আমার হাড়গুলো পর্যন্ত নরম হয়ে গেছে, মাথা বার্ধক্যে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে; হে পরোয়ারদিগার! আমি কখনো তোমার কাছে দোয়া চেয়ে ব্যর্থ হইনি৷
(মু’মিনুন:৩৫) সে কি তোমাদেরকে একথা জানায় যে, যখন তোমরা সবার পরে মাটিতে মিশে যাবে এবং হাড়গোড়ে পরিণত হবে তখন তোমাদেরকে (কবর থেকে) বের করা হবে?
.
(মু’মিনুন:৮২) তারা বলে, ‘‘যখন আমরা মরে মাটি হয়ে যাবো এবং অস্থি পঞ্জরে পরিণত হবো তখন কি আমাদের পুনরায় জীবিত করে উঠানো হবে ?
(বিস্তারিত দেখুন : প > পরকাল)
(মু’মিনুন:১২) আমি মানুষকে তৈরী করেছি মাটির উপাদান থেকে, ১৩) তারপর তাকে একটি সংরক্ষিত স্থানে টপ্কে পড়া ফোঁটায় পরিবর্তত করেছি, ১৪) এরপর সেই ফোঁটাকে জমাট রক্তপিন্ডে পরিণত করেছি, তারপর সেই রক্তপিন্ডকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি,এরপর মাংসপিন্ডে অস্থি-পিঞ্জর স্থাপন করেছি, তারপর অস্থি-পঞ্জরকে ঢেকে দিয়েছি গোশত দিয়ে, তারপর তাকে দাঁড় করেছি স্বতন্ত্র একটি সৃষ্টি রূপে৷ কাজেই আল্লাহ বড়ই বরকত সম্পন্ন, সকল কারিগরের চাইতে উত্তম কারিগর তিনি৷
(বিস্তারিত দেখুন : স > সৃষ্টি > মানুষ সৃষ্টি) ।
(২৬.শুআরা:১৩০) আর যখন কারো ওপর হাত ওঠাও প্রবল এক নায়ক হয়ে হাত ওঠাও৷
(২০:১৭) - আর হে মূসা! এ তোমার হাতে এটা কি?” (২০:১৮) মূসা জবাব দিল, ”এ আমার লাঠি৷ এর ওপর ভর দিয়ে আমি চলি, নিজের ছাগলগুলোর জন্য এর সাহায্যে পাতা পাড়ি এবং এর সাহায্যে আরো অনেক কাজ করি”
(২০:২২) আর (হে মূসা) তোমার হাতটি একটু বগলের মধ্যে রাখো, তা কোনপ্রকার ক্লেশ ছাড়াই উজ্জ্বল হয়ে বের হয়ে আসবে, এটা দ্বিতীয় নিদর্শন৷২৩) এজন্য যে, আমি তোমাকে নিজের বৃহৎ নিদর্শনগুলো দেখাবো৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৩২) তোমার হাত বগলে রাখো উজ্জল হয়ে বের হয়ে আসবে কোন প্রকার কষ্ট ছাড়াই৷ ৪৪ এবং ভীতিমুক্ত হবার জন্য নিজের হাত দু'টি চেপে ধরো৷ ৪৫ এ দু'টি উজ্জল নিদর্শন তোমার রবের পক্ষ থেকে ফেরাউন ও তার সভাসদদের সামনে পেশ করার জন্য, তারা বড়ই নাফরমান৷" ৪৬
৪৪. এ মু'জিযা দু'টি তখন মূসাকে দেখানোর কারণ হচ্ছে, প্রথমত যাতে তার মনে পূর্ণ বিশ্বাস জন্মে যে প্রকৃতপক্ষে যে সত্তা বিশ্ব-জাহানের সমগ্র ব্যবস্থার স্রষ্টা , অধিপতি , শাসক ও পরিচালক তিনিই তাঁর সাথে কথা বলছেন। দ্বিতীয়ত এ মু'জিযাগুলো দেখে তিনি এ মর্মে নিশ্চিন্ত হয়ে যাবেন যে, তাঁকে ফেরাউনের কাছে যে ভয়াবহ দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হচ্ছে সেখানে তিনি একেবারে খালি হাতে তার মুখোমুখি হবেন না বরং প্রচণ্ড শক্তিশালী অস্ত্র নিয়ে যাবেন।
(২০:৩১) তার মাধ্যমে আমার হাত মজবুত করো
(বিস্তারিত : ন > নবুওয়াত > দোয়া করার মাধ্যমে কি নবুওয়াত লাভ করার যায় ? )
(২০:৭১) ফেরাউন বললো, “তোমারা ঈমান আনলে, আমি তোমাদের অনুমতি দেবার আগেই” দেখছি, এ তোমাদের গুরু, এ-ই তোমাদের যাদুবিদ্যা শিখিয়েছিল৷ এখন আমি তোমাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে কাটাচ্ছি এবং খেজুর গাছের কাণ্ডে তোমাদের শুলিবিদ্ধ করছি এরপর তোমরা জানতে পারবে আমাদের দু’জনের মধ্যে কার শাস্তি কঠিন ও দীর্ঘস্থায়ী”৷ (অর্থাৎ আমি না মূসা, কে তোমাদের বেশী কঠিন শাস্তি দিতে পারে)৷
নাকি মানুষ তার কর্মের দ্বারা জান্নাতে বা জাহান্নামে যাবে এবং আল্লাহ আলেমুল গায়েব এ বিষয়টি পূর্বাহ্নে জানেন বলেই তাকদীরের কিতাবে লিখে রেখেছেন ? :
(হাজ্ব:১০) এ হচ্ছে তোমার ভবিষ্যত, যা তোমার হাত তোমার জন্য তৈরি করেছে, নয়তো আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি যুলুম করেন না৷
(নূর:৩৮) (আর তারা এসব কিছু এ জন্য করে) যাতে আল্লাহ তাদেরকে তাদের সর্বোত্তম কর্মের প্রতিদান দেন এবং তদুপরি নিজ অনুগ্রহ দান করেন ৷ আল্লাহ যাকে চান বেহিসেব দান করেন৷৬৯
(৬৯ . আল্লাহর আসল আলো উপলব্ধি ও তার ধারায় অবগাহন করার জন্য যেসব গুনের প্রয়োজন এখানে সেগুলোর ব্যাখ্যা করে দেয়া হয়েছ। আল্লাহ অন্ধ বন্টনকারী নন। যাকে ইচ্ছা এমনি বিনা কারণে তার পাত্র এমনভাবে ভরে দেবেন যে, উপচে পড়ে যেতে থাকবে আবার যাকে ইচ্ছ গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবেন, এটা আল্লাহর বন্টন নীতি নয়। তিনি যাকে দেন, দেখেশুনেই দেন। সত্যের নিয়ামত দান করার ব্যাপারে তিনি যা কিছু দেখেন তা হচ্ছেঃ মানুষের মনে তাঁর প্রতি ভালোবাসা, আগ্রহ, আকর্ষণ, ভয় এবং তাঁর পুরস্কার গ্রহনের আকাংখা ও ক্রোধ থেকে বাঁচার অভিলাষ আছে। সে পার্থিব স্বার্থ পূজায় নিজেকে বিলীন করে দেয়নি। বরং যাবতীয় কর্মব্যস্ততা সত্ত্বেও তার সমগ্র হৃদয়-মন আচ্ছন্ন করে থাকে তার মহান প্রতিপালকের স্মৃতি। সে রসাতলে যেতে চায় না বরং কার্যত এমন উচ্চমার্গে উন্নীত হতে চায় যেদিক তার মালিক তাকে পথ দেখাতে চায়। সে এ দু'দিনের জীবনের লাভ প্রত্যাশী হয় না বরং তার দৃষ্টি থাকে আখেরাতের চিরন্তন জীবনের ওপর। এসব কিছু দেখে মানুষকে আল্লাহর আলোয় অবগাহন করার সুযোগ দেবার ফায়সালা করা হয়। তারপর যখন আল্লাহ দেবার জন্য এগিয়ে আসে তখন এত বেশী দিয়ে দেন যে, মানুষে নিজের নেবার পাত্র সংকীর্ণ থাকলে তো ভিন্ন কথা, নয়তো তাঁর দেবার ব্যাপারে কোন সীমাবদ্ধতা এবং শেষ সীমানা নেই।)
(নূর:৪০) অথবা তার উপমা যেমন একটি গভীর সাগর বুকে অন্ধকার ৷ ওপরে ছেয়ে আছে একটি তরংগ, তার ওপরে আর একটি তরংগ আর তার ওপরে মেঘমালা অন্ধকারের ওপর অন্ধকার আচ্ছন্ন ৷ মানুষ নিজের হাত বের করলে তাও দেখতে পায় না ৷ যাকে আল্লাহ আলো দেন না তার জন্য আর কোন আলো নেই ৷
(১৬:৪৪) আগের রসূলদেরকেও আমি উজ্জ্বল নিদর্শন ও কিতাব দিয়ে পাঠিয়েছিলাম এবং এখন এ বাণী তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে তুমি লোকদের সামনে সেই শিক্ষার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে যেতে থাকো৷ যা তাদের জন্য অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং যাতে লোকেরা (নিজেরাও) চিন্তা-ভাবনা করে৷
(নুর:৫৬) নামায কায়েম করো, যাকাত দাও এবং রসূলের আনুগত্য করো,আশা করা যায়, তোমাদের প্রতি করুণা করা হবে ৷
(৩০-রূম: ১৭) কাজেই আল্লাহর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করো ২৩ যখন তোমাদের সন্ধ্যা হয় এবং যখন তোমাদের সকাল হয়৷১৮) আকাশসমূহে ও পৃথিবীতে তাঁর জন্যই প্রশংসা এবং (তাঁর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করো) তৃতীয় প্রহরে এবং যখন তোমাদের কাছে এসে যায় যোহরের সময়৷ ২৪
২৩ . আল্লাহর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করার অর্থ হচ্ছে এই যে, মুশরিকরা নিজেদের শিরক ও আখেরাত অস্বীকারের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি যেসব দোষ- ত্রুটি ও দুর্বলতা আরোপ করে থাকে সেই অনন্য মহামহিম সত্ত্বাকে তা থেকে পাক- পবিত্র ঘোষণা করা এবং একথা প্রকাশ করা। এ ঘোষণা ও প্রকাশের সর্বোত্তম পদ্ধতি হচ্ছে নামায। এরি ভিত্তিতে ইবনে আব্বাস, মুজাহিদ, কাতাদাহ, ইবনে যায়েদ ও অন্যান্য মুফাসসিরগণ বলেন, এখানে "তাসবীহ পাঠ" তথা মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করার অর্থ নামায পড়া। এ তাফসীরের স্বপক্ষে সুস্পষ্ট প্রমাণ কুরআনের এ আয়াতের মধ্যেই রয়ে গেছে অর্থাৎ এখানে আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করার জন্য কয়েকটি বিশেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। একথা সুস্পষ্ট, আল্লাহ সমস্ত দোষ- ত্রুটিমুক্ত - এ আকীদা পোষণ করাই যদি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, তাহলে এ জন্য আবার সকাল- সাঁঝে এবং দুপুরে(জোহর) ও রাতের (ঈশা) নামাযের সময় নির্ধারণের প্রশ্নই উঠতো না। কারণ এ আকীদা তো মুসলমানদের সবসময়ই পোষণ করতে হবে। এভাবে যদি শুধুমাত্র মুখেই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, তাহলেও এ সময়গুলো নির্ধারণ করার কোন অর্থ হয় না। কারণ মুসলমানকে তো সবসময় এ আকীদা প্রকাশ করতে হবে। এভাবে যদি নিছক কণ্ঠের মাধ্যমে আল্লাহর পবিত্রতা প্রকাশ করার উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলেও এসময়গুলো নির্ধারণ করা অর্থহীন হয়ে পড়ে। কারণ মুসলমানকে তো সর্বক্ষণ একথা প্রকাশ করতে হবে। তাই সময় নির্দিষ্ট করার মাধ্যমে আল্লাহর গুণ ও মহিমা প্রচার করার হুকুম নিসন্দেহে তাঁর একটি বিশেষ কার্যকর কাঠামোর প্রতিই ইঙ্গিত করে। আর এ কার্যকর কাঠামোটি নামায ছাড়া আর কিছুই নয়।
২৪ . এ আয়াতে চারটি সময়ের প্রতি ইশারা করা হয়েছেঃ ফজর , মাগরিব, আসর ও যোহর। এ ছাড়াও নামাযের ওয়াক্ত সম্পর্কে কুরআন মজিদে আরো যেসব ইশারা করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছেঃ
-------------------------------------
''নাম কায়েম করো সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত এবং ফজরের সময় কুরআন পাঠ করো।" (বনী ইসরাঈল ৭৮)
------------------------------------------
"আর নামায কায়েম করো দিনের দুই মাথায় এবং রাতের কিছু অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর।" (হুদ , ১১৪ আয়াত )
--------------------------------------------
"আর তোমার রবের প্রশংসা সহকারে তাঁর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করো সূর্য উদিত হবার আগে এবং তাঁর অস্ত যাবার আগে। আর রাতের কিছু সময়ও আল্লাহর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করো এবং দিনের প্রান্তভাগেও।" (ত্বাহা , ১৩০ আয়াত)
এর মধ্যে থেকে প্রথম আয়াতটি বলছেঃ নামাযের সময়সীমা হচ্ছে সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে ঈশা পর্যন্ত এবং এরপর হচ্ছে ফজরের সময়। দ্বিতীয় আয়াতে দিনের দুই প্রান্ত অর্থ ফজর ও মাগরিবের সময় এবং কিছু রাত অতিক্রান্ত হওয়ার পরের সময়টি হচ্ছে ঈশার ওয়াক্ত। তৃতীয় আয়াতে সূর্য উদিত হওয়ার পূর্বে অর্থ ফজরের সময় এবং অস্তমিত হওয়ার পূর্বে অর্থ আসরের সময়। রাতের সময়ের মধ্যে মাগরিব ও ঈশা উভয়ই অন্তরভুক্ত। আর দিনের প্রান্ত হচ্ছে তিনটিঃ এক, সকাল। দুই, সূর্য ঢলে পড়া এবং তিন, মাগরিব। এভাবে সারা দুনিয়ার মুসলমানরা আজ যে পাঁচটি সময়ে নামায পড়ে থাকে কুরআন মাজীদ বিভিন্ন স্থানে সে সময়গুলোর প্রতি ইঙ্গিত করেছে।কিন্তু একথা স্পষ্ট শুধুমাত্র এ আয়াতগুলো পাঠ করে কোন ব্যক্তিও নামাযের সময় নির্ধারণ করতে পারতো না। মহান আল্লাহর নিযুক্ত কুরআনের শিক্ষক মুহাম্মাদ (সা) নিজের কথা ও কাজের মাধ্যমে এ ব্যাপারে তাদেরকে পথনির্দেশনা না দিলে তাদের পক্ষে সঠিক পথের সন্ধান পাওয়া সম্ভবপর ছিল না।
এখানে একটু থেমে হাদীস অস্বীকারকারীদের ধৃষ্ঠতাঁর কথা ভাবুন। তারা "নামায পড়া" কে বিদ্রুপ করে এবং বলে, মুসলমানরা বর্তমানে যে নামায পড়ছে এটা আদতে সে জিনিসই নয় কুরআনে যার হুকুম দেয়া হয়েছে। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, কুরআন তো নামায কায়েম করার হুকুম দেয় এবং তাঁর অর্থ নামায পড়া নয় বরং "রবুবিয়াতের ব্যবস্থা" কায়েম করা। এখন তাদেরকে একটু জিজ্ঞেস করুন, রবুবিয়াতের এ অভিনব ব্যবস্থাটি কোন ধরনের যাকে সূর্য উদিত হবার পূর্বেই কায়েম করা যেতে পারে অথবা আবার সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে কিছু রাত অতিবাহিত হওয়া পর্যন্তও কায়েম করা যায় ৷ আর কোন ধরনের রবুবিয়াত ব্যবস্থা বিশেষ করে জুমার দিন কায়েম করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে ৷
----------------------------------------
আর বিশেষ ধরনের এমন কি রবুবিয়াত ব্যবস্থা আছে যা কায়েম করার জন্য মানুষ যখন অগ্রসর হয় তখন প্রথমে মুখমণ্ডল ও কনুই পর্যন্ত হাত ধুয়ে ফেলে গাঁট পর্যন্ত আর এই সাথে মাথাও মসেহ করে নেয়, অন্যথায় তাকে কায়েম করা যেতে পারে না৷
--------------------------------------
আর রবুবিয়াত ব্যবস্থার মধ্যে এমন কি বিশেষত্ব আছে, যার ফলে যদি মানুষ নাপাকির অবস্থায় থাকে, তাহলে যতক্ষণ গোসল না করে নেয় ততক্ষণ তাকে কায়েম করতে পারে না৷
--------------------
আর এটাই বা কেমন ব্যাপার, যদি কোন পুরুষ কোন নারীর সাথে মিলন করে এবং সেখানে পানি না পাওয়া যায় তাহলে এ অদ্ভুত রবুবিয়াত ব্যবস্থাকে কায়েম করার জন্য পাক- পবিত্র মাটিতে হাত ঘসে নিয়ে সেই হাত মুখমণ্ডলের ওপর ঘসতে হবে ৷
--------------------------------------
আর এ কেমন ধরনের অদ্ভুত রবুবিয়াত ব্যবস্থা যে, যদি কখনো সফর করতে হয় তাহলে মানুষ তাকে পুরোপুরি কায়েম করার পরিবর্তে অর্ধেকটাই কায়েম করে৷
---------------------------------
আর এটা কোন ধরনের কৌতুকপ্রদ ব্যাপার যে, যদি মুসলিম সেনাদল শত্রুর সাথে মুখোমুখি যুদ্ধে লিপ্ত থাকে, তাহলে সেনাদলের অর্ধেক সিপাহী অস্ত্র সজ্জিত হয়ে ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে " রবুবিয়াত ব্যবস্থা" কায়েম করতে থাকবে এবং বাকি অর্ধেক ময়দানে শত্রুর মোকাবিলা করতে থাকবে ৷ তাঁরপর যখন প্রথম দলটি ইমামের পেছনে রবুবিয়াত ব্যবস্থা কায়েম করতে গিয়ে একটি সিজদা করে নেবে তখন উঠে দাঁড়িয়ে শত্রুর মোকাবিলা করার জন্য চলে যাবে এবং দ্বিতীয় দলটি তাদের জায়গায় এসে ইমামের পেছনে "রবুবিয়াত ব্যবস্থা" কায়েম করতে থাকবে ৷
------------------------------------
কুরআন মাজীদের এ আয়াতগুলো একথা পরিষ্কার করে বলে দিচ্ছে যে নামায কায়েম করার অর্থ হচ্ছে এমন ধরনের নামায কায়েম করা যা সারা দুনিয়ার মুসলমানরা পড়ে থাকে।কিন্তু হাদীস অস্বীকারকারীদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা নিজেরা পরিবর্তিত না হয়ে ইসলামকে পরিবর্তিত করার জন্য চাপ দিয়ে চলছে। আসলে যতক্ষণ কোন ব্যক্তি মহান আল্লাহর মোকাবিলায় একেবারেই শংকাহীন ও নির্লজ্জ না হয়ে যায় ততক্ষণ সে তাঁর বাণীর সাথে এ বিদ্রুপাত্মক আচরণ করতে পারে না, যা এরা করছে । অথবা এমন এক ব্যক্তি কুরআনের সাথে এ তামাশা করতে পারে যে নিজের মনে কুরআনকে আল্লাহর কালাম বলে স্বীকৃতি দেয় না এবং নিছক ধোঁকা দেবার জন্য কুরআন কুরআন বলে চিৎকার করে মুসলমানদেরকে গোমরাহ করতে চায়।
(৩১-লোকমান: ৬) আর মানুষদেরই মধ্যে এমনও কেউ আছে, ৫ যে মনোমুগ্ধকর কথা ৬ কিনে আনে লোকদেরকে জ্ঞান ছাড়াই ৭ আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য এবং এ পথের আহ্বানকে হাসি-ঠাট্টা করে উড়িয়ে দেয়৷ ৮ এ ধরনের লোকদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব৷ ৯ ৭) তাকে যখন আমার আয়াত শুনানো হয় তখন সে বড়ই দর্পভরে এমনভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয় যেন সে তা শুনেইনি, যেন তার কান কালা৷ বেশ, সুখবর শুনিয়ে দাও তাকে একটি যন্ত্রণাদায়ক আযাবের৷
৫ . অর্থাৎ একদিকে তো আল্লাহর পক্ষ থেকে এ পথনির্দেশনা ও অনুগ্রহ এসেছে, যা থেকে কিছু লোক লাভবান হচ্ছে। অন্যদিকে ঐ সমস্ত সৌভাগ্যবান লোকদের পাশাপাশি এমন দুর্ভাগ্য লোকেরাও রয়ে গেছে যারা আল্লাহর আয়াতের মোকাবিলায় এ কর্মপদ্ধতি অবলম্বন করেছে।
৬ . আসল শব্দ হচ্ছে "লাহওয়াল হাদীস" অর্থাৎ এমন কথা যা মানুষকে আত্ম-সমাহিত করে অন্য প্রত্যেকটি জিনিস থেকে গাফিল করে দেয়। শাব্দিক অর্থের দিক দিয়ে এ শব্দগুলোর মধ্যে নিন্দার কোন বিষয় নেই। কিন্তু খারাপ, বাজে ও অর্থহীন কথা অর্থে শব্দটির ব্যবহার হয়। যেমন গালগল্প, পুরাকাহিনী, হাসি-ঠাট্টা, কথা-কাহিনী, গল্প, উপন্যাস, গান বাজনা এবং এ জাতীয় আরো অন্যান্য জিনিস।
'লাহওয়াল হাদীস' কিনে নেয়ার এ অর্থও হতে পারে যে, ঐ ব্যক্তি সত্য কথা বাদ দিয়ে মিথ্যা কথা গ্রহণ করে এবং সঠিক পথনির্দেশনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে এমন কথার প্রতি আগ্রহান্বিত হয় যার মাধ্যমে তার জন্য দুনিয়াতেও কোন মঙ্গল নেই এবং আখেরাতেও নেই। কিন্তু এটি এই বাক্যাংশটির রূপক অর্থ । এর প্রকৃত অর্থ এই যে, মানুষ তার নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে কোন বাজে জিনিস কিনে। এ ব্যাখ্যার সমর্থনে বহু হাদীসও রয়েছে। ইবনে হিশাম মুহাম্মদ ইবনে ইসহাকের হাদীস উদ্ধৃত করেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, মক্কার কাফেরদের সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও যখন এ দাওয়াত সম্প্রসারিত হয়েই চলছিল তখন নদ্বর ইবনে হারেস কুরাইশ নেতাদেরকে বললো, তোমরা যেভাবে এ ব্যক্তির মোকাবিলা করছো, তাতে কোন কাজ হবে না। এ ব্যক্তি তোমাদের মধ্যেই জীবন যাপন করে শৈশব থেকে প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছেছে। আজ পর্যন্ত নৈতিক চরিত্রের দিকে দিয়ে সে ছিল তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো, সবচেয়ে সত্যবাদী ও সবচেয়ে বিশ্বস্ত লোক। এখন তোমরা বলছো, সে গণক, যাদুকর, কবি, পাগল। একথা কে বিশ্বাস করবে ৷ যাদুকর কোন ধরনের তুকতাক কারবার চালায় তা কি লোকেরা জানে না ৷ গণকরা কি সব কথাবার্তা বলে তা কি লোকদের জানতে বাকি আছে ৷ লোকেরা কি কবি ও কবিতা চর্চার ব্যাপারে অনভিজ্ঞ। পাগলার কেমন কেমন করে তাকি লোকেরা জানে না ৷ এ দোষগুলো মধ্য থেকে কোনটি মুহাম্মদ (সা) এর ওপর প্রযোজ্য হয় যে, সেটি বিশ্বাস করার জন্য তোমরা লোকদেরকে আহ্বান জানাতে পারবে ৷ থামো, এ রোগের চিকিৎসা আমিই করবো। এরপর সে মক্কা থেকে ইরাক চলে গেলো। সেখান থেকে অনারব বাদশাহদের কিস্সা কাহিনী এবং রুস্তম ও ইসফিন্দিয়ারের গল্পকথা সংগ্রহ করে এনে গল্প বলার আসর জমিয়ে তুলতে লাগলো । তার উদ্দেশ্য ছিল, এভাবে লোকেরা কুরআনের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং এসব গল্প- কাহিনীর মধ্যে ডুবে যাবে। (সীরাতে ইবনে হিশাম, ১ম খণ্ড, ৩২০-৩২১পৃঃ) আসবাবুন নযুলের মধ্যে এ বর্ণনাটি ওয়াহেদী কালবী ও মুকাতিল থেকে উদ্ধৃত করেছেন। ইবনে আব্বাস (রা) এর ওপর আরো এতটুকু বৃদ্ধি করেছেন যে, নদ্বর এ উদ্দেশ্যে গায়িকা বাঁদীদেরকেও কিনে এনেছিল। কোন ব্যক্তি সম্পর্কে নবী (সা) এর কথায় প্রভাবিত হতে চলেছে বলে তার কাছে খবর এলেই সে তার জন্য নিজের একজন বাঁদী নিযুক্ত করতো এবং তাকে বলে দিতো ওকে খুব ভালো করে পানাহার করাও ও গান শুনাও এবং সবসময় তোমার সাথে জড়িয়ে রেখে ওদিক থেকে ওর মন ফিরিয়ে আনো। বিভিন্ন জাতির বড় বড় অপরাধীরা প্রত্যেক যুগে যেসব ধুর্তামী ও চালবাজীর আশ্রয় নিয়ে এসেছে এ প্রায় সে একই ধরনের চালবাজি ছিল। তারা জনগণকে খেল-তামাশা ও নাচগানে (কালচার) মশগুল করতে থাকে। এভাবে তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার প্রতি নজর দেবার চেতনাই থাকে না এবং এ অস্তিত্ব জগতের মধ্যে তারা একথা অনুভবই করতে পারে না যে, তাদেরকে এক ভয়াবহ ধ্বংসের দিকে ঠেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
লাহওয়াল হাদীসের এ ব্যাখ্যাই বিপুল সংখ্যক সাহাবী ও তাবেঈ থেকে উদ্ধৃত হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদকে (রা) জিজ্ঞেস করা হয়, এ আয়াতে যে লাহওয়াল হাদীস শব্দ এসেছে এর তাৎপর্য কি ৷ তিনি তিনবার জোর দিয়ে বলেন, "আল্লাহর কসম এর অর্থ হচ্ছে গান।" (ইবনে জারীর, ইবনে আবি শাইবাহ, হাকেম, বায়হাকী) প্রায় এ একই ধরনের উক্তি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) , জাবের ইবনে আবদুল্লাহ, মুজাহিদ, ইকরামাহ, সাঈদ ইবনে জুবাইর , হাসান বাসরী ও মাকহূল থেকে উদ্ধৃত হয়েছে। ইবনে জারীর, ইবনে আবি হাতেম ও তিরমিযী হযরত আবু উমামাহ বাহেলীর (রা) হাদীস উদ্ধৃত করেছেন । তাতে নবী (সা) বলেছেনঃ
----------------------------------------
" গায়িকা মেয়েদের কেনাবেচা ও তাদের ব্যবসায় করা হালাল নয় এবং তাদের দান নেয়াও হালাল নয়।"
অন্য একটি হাদীসে শেষ বাক্যটির শব্দাবলী হচ্ছেঃ ---------" তাদের মূল্য খাওয়া হারাম।" অন্য একটি হাদীসে একই আবু উমামাহ থেকে নিম্নোক্ত শব্দাবলী উদ্ধৃত হয়েছেঃ
-----------------------
'বাঁদীদেরকে গান-বাজনা করার শিক্ষা দেয়া এবং তাদের বেচা-কেনা করা হালাল নয় এবং তাদের দাম হারাম।"
এ তিনটি হাদীসে একথা সুস্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে যে, ----------আয়াতটি এ ব্যাপারেই নাযিল হয়। কাজী আবু বকর ইবনুল আরাবী 'আহকামুল কুরআনে' হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক ও ইমাম মালেকের বরাত দিয়ে হযরত আনাস (রা) একটি রেওয়ায়াত উদ্ধৃত করেছেন। তাতে বলা হয়েছে , নবী সাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম বলেছেনঃ
-------------------------
" যে ব্যক্তি গায়িকা বাঁদীর মাহফিলে বসে তার গান শুনবে, কিয়ামতের দিন তার কানে গরম শীসা ঢেলে দেয়া হবে। "
(এ প্রসঙ্গে একথা জেনে নেয়া উচিত যে, সে যুগে গান-বাজনার "সংস্কৃতি" বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বরং পুরোপুরি বাঁদীদের বদৌলতেই জীবিত ছিল। স্বাধীন ও সম্ভ্রান্ত মেয়েরা সেকালে "আর্টিষ্ট" হননি। তাই নবী (সা) গায়িকাদের কেনা-বেচার কথা বলেছেন, দাম শব্দের সাহায্যে তাদের "ফী" র ধারণা দিয়েছেন এবং গায়িকা মেয়েদের জন্য "কাইনা"শব্দ ব্যবহার করেছেন। আরবী ভাষায় বাঁদীদের জন্য এ শব্দটি বলা হয়। )
৭ . "জ্ঞান ছাড়াই" শব্দের সম্পর্কে "কিনে আনে" এর সাথেও হতে পারে আবার "বিচ্যুত করে" এর সাথেও হতে পারে। যদি প্রথম বাক্যাংশের সাথে এর সম্পর্ক মেনে নেয়া হয়, তাহলে এর অর্থ হবে, সেই মূর্খ অজ্ঞ লোক এই মনোমুগ্ধকর জিনিসটি কিনে নেয় এবং সে জানে না কেমন মূল্যবান জিনিস বাদ দিয়ে সে কেমন ধ্বংসকর জিনিস কিনে নিচ্ছে। একদিকে আছে জ্ঞান ও সঠিক পথনির্দেশনা সমৃদ্ধ আল্লাহর আয়াত। বিনামূল্যে সে তা লাভ করছে কিন্তু তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে রয়েছে সব অর্থহীন ও বাজে জিনিস। সেগুলো চিন্তা ও চরিত্রশক্তি ধ্বংস করে দেয়। নিজের টাকা পয়সা খরচ করে সে সেগুলো লাভ করছে। আর যদি একে দ্বিতীয় বাক্যাংশের সাথে সম্পর্কযুক্ত মনে করা হয় , তাহলে এর অর্থ হবে যে, সে জ্ঞান ছাড়াই লোকদের পথ দেখাচ্ছে এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার চেষ্টা করে সে যে নিজের ঘাড়ে কত বড় জুলুমের দায়ভাগ চালিয়ে নিচ্ছে, তা সে জানে না।
৮ . অর্থাৎ এ ব্যক্তি লোকদেরকে কিস্সা-কাহিনী গান-বাজনায় মুশগুল করে আল্লাহর আয়াতের প্রতি বিদ্রুপ করতে চায়। সে কুরআনের এ দাওয়াতকে ঠাট্টা-তামাশার মধ্যে উড়িয়ে দিতে চায় আল্লাহর দীনের সাথে লড়াই করার জন্য সে যুদ্ধের এমনসব নকশা তৈরি করতে চায় যেখানে একদিকে মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর আয়াত শোনাতে বের হবেন, অন্যদিকে কোন সুশ্রী ও সুকণ্ঠী গায়িকার মাহফিল গুলজার হতে থাকবে, আবার কোথাও কোন বাচাল কথক ইরান-তুরানের কাহিনী শুনাতে থাকবে এবং লোকেরা এসব সাংস্কৃতিক তৎপরতায় আকণ্ঠ ডুবে গিয়ে আল্লাহ, আখেরাত ও নৈতিক চরিত্রনীতির কথা শোনার মুডই হারিয়ে ফেলবে।
৯ . এ শাস্তি তাদের অপরাধের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই নির্ধারিত । তারা আল্লাহর দ্বীন, তার আয়াত ও তার রসূলকে লাঞ্ছিত করতে চায়। এর বদলায় আল্লাহ তাকে কঠিন লাঞ্ছনাকর আযাব দেবেন।
দেখুন : এ > একাকী ।
(১৬:১২০) প্রকৃতপক্ষে ইবরাহীম নিজেই ছিল একটি পরিপূর্ণ উম্মত, আল্লাহর হুকুমের অনুগত এবং একনিষ্ঠ৷ সে কখনো মুশরিক ছিল না৷
দেখুন : আ > আফসোস ।
(২১:৫৫) তারা বললো, তুমি কি আমাদের সামনে তোমার প্রকৃত মনের কথা বলছো, না নিছক কৌতুক করছো ?
(২৭.নামল:১৮) (একবার সে তাদের সাথে চলছিল) এমন কি যখন তারা সবাই পিঁপড়ের উপত্যকায় পৌঁছুল তখন একটি পিঁপড়ে বললো, “হে পিঁপেড়েরা! তোমাদের গর্তে ঢুকে পড়ো৷ যেন এমন না হয় যে, সুলাইমান ও তার সৈন্যরা তোমাদের পিশে ফেলবে এবং তারা টেরও পাবে না৷ ১৯) সুলাইমান তার কথায় মৃদু হাসলো এবং বললো- “হে আমার রব! আমাকে নিয়ন্ত্রণে রাখো, আমি যেন তোমার এ অনুগ্রহের শোকর আদায় করতে থাকি যা তুমি আমার প্রতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি করেছো এবং এমন সৎকাজ করি যা তুমি পছন্দ করো এবং নিজ অনুগ্রহে আমাকে তোমার সৎকর্মশীল বান্দাদের দলভুক্ত করো৷
(৩১-লোকমান: ৬) আর মানুষদেরই মধ্যে এমনও কেউ আছে, ৫ যে মনোমুগ্ধকর কথা ৬ কিনে আনে লোকদেরকে জ্ঞান ছাড়াই ৭ আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য এবং এ পথের আহ্বানকে হাসি-ঠাট্টা করে উড়িয়ে দেয়৷ ৮ এ ধরনের লোকদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব৷ ৯ ৭) তাকে যখন আমার আয়াত শুনানো হয় তখন সে বড়ই দর্পভরে এমনভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয় যেন সে তা শুনেইনি, যেন তার কান কালা৷ বেশ, সুখবর শুনিয়ে দাও তাকে একটি যন্ত্রণাদায়ক আযাবের৷
বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ল > লাহওয়াল হাদীস ।
হিত্তাতুন হিত্তাতুন বলতে বলতে শহরের দরজা দিয়ে প্রবেশ করো : ৭:১৬১
৭:৬৫
বিস্তারিত দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত হুদ আ: ।
তোমরা কি নিজেদের রবের হুকুমের অপেক্ষা করার মত এতটুকু সবরও করতে পারলে না? : ৭:১৫০,
বিস্তারিত দেখুন : আ > আইন , ব > বিচার ব্যবস্থা, র > রাষ্ট্রক্ষমতা, স > সার্বভৌমত্ব ।
আরো দেখুন : দ > দাওয়াত> দ্বীনের দাওয়াত পৌছানো আল্লাহর দায়িত্ব ।
আরো দেখুন : পথ (আল্লাহর পথ, সঠিক পথ)
(২৭-নমল:৪১) সুলাইমান বললো, “সে চিনতে না পারে এমনভাবে সিংহাসনটি তার সামনে রেখে দাও, দেখি সে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছে যায় কিনা অথবা যারা সঠিক পথ পায় না তাদের অর্ন্তভুক্ত হয়৷(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : স > সিংহাসন)
(২৯-আনকাবুত:৬৯) যারা আমার জন্য সংগ্রাম- সাধনা করবে তাদেরকে আমি আমার পথ দেখাবো৷ ১০৭ আর অবশ্যই আল্লাহ সৎকর্মশালীদেরই সাথে আছেন৷
১০৭ . "সংগ্রাম - সাধনার " ব্যাখ্যা সূরা আনকাবুতের ৮ টীকায় করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি সংগ্রাম- সাধনা করবে সে নিজের ভালোর জন্য করবে (৬ আয়াত)। এখানে এ নিশ্চিন্ততা দান করা হচ্ছে যে, যারা আল্লাহর পথে আন্তরিকতা সহকারে সারা দুনিয়ার সাথে সংঘর্ষের বিপদ মাথা পেতে নেয় তাদেরকে পথ দেখান এবং তার দিকে যাওয়ার পথ তাদের জন্য খুলে দেন। তারা তার সন্তুষ্টি কিভাবে লাভ করতে পারে তা তিনি প্রতি পদে পদে তাদেরকে জানিয়ে দেন। পথের প্রতিটি বাঁকে তিনি তাদেরকে আলো দেখান। যার ফলে কোনটা সঠিক পথ ও কোনটা ভুল পথ তা তারা দেখতে চায়। তাদের নিয়ত যতই সৎ ও সদিচ্ছা প্রসূত হয় ততই আল্লাহর সাহায্য , সুযোগ- সুবিধা প্রদান ও হিদায়াতও তাদের সহযোগি হয়।
(আরো অধিক ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : জ > জিহাদ > মুজাহাদা। )
(২৯-আনকাবুত:৩৮) আর আদ ও সামূদ কে আমি ধ্বংস করেছি ৷ তারা যেখানে থাকতো সেসব জায়গা তোমরা দেখেছো তাদের কার্যাবলীকে শয়তান তাদের জন্য সুদৃশ্য বানিয়ে দিল এবং তাদেরকে সোজা পথ থেকে বিচ্যুত করলো অথচ তারা ছিল বুদ্ধি সচেতন৷ ৬৬
৬৬ . অর্থাৎ অজ্ঞ ও মূর্খ ছিল না। তারা ছিল তদানীন্তন যুগের শ্রেষ্ঠ সুসভ্য ও প্রগতিশীল লোক। নিজেদের দুনিয়ার কার্যাবলী সম্পাদন করার ব্যাপারে তারা পূর্ণ জ্ঞান বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতার পরিচয় দিতো।তাই একথা বলা যাবে না যে, শয়তান তাদের চোখের ঠুলি বেঁধে দিয়ে বুদ্ধি বিনষ্ট করে দিয়ে নিজের পথে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। বরঞ্চ তারা ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে চিন্তে ও খোলা চোখে শয়তান যে পথে পাড়ি জমিয়েছিল এবং এমন পথ পরিহার করেছিল যা তাদের কাছে নীরস, বিস্বাদ এবং নৈতিক বিধি-নিষেধের বেড়াজালে আবদ্ধ হবার কারণে কষ্টকর মনে হচ্ছিল।
(৩৪-সাবা: ৬) হে নবী! জ্ঞানবানরা ভালো করেই জানে, যা কিছু তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে তা পুরোপুরি সত্য এবং তা পরাক্রমশালী ও প্রশংসিত আল্লাহর পথ দেখায়৷ ৯
৯. অর্থাৎ বিরোধিরা তোমার উপস্থাপিত সত্যকে মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য যতই জোর দিক না কেন তাদের এসব প্রচেষ্টা ও কৌশল সফলকাম হতে পারবে না। কারণ এসব কথার মাধ্যমে তারা কেবলমাত্র মূর্খদেরকেই প্রতারিত করতে পারবে। জ্ঞানবানরা তাদের প্রতারণারজালে পা দেবে না।
(২৭.নামল:৭৭) আর এ হচ্ছে পথ নির্দেশনা ও রহমত মুমিনদের জন্য৷৯৪
(৯৪. অর্থাৎ তাদের জন্য যারা এ কুরআনের দাওয়াত গ্রহণ করে এবং কুরআন যা পেশ করেছ তা মেনে নেয়। এ ধরণের লোকেরা তাদের জাতি যে গোমরাহীতে লিপ্ত রয়েছে তা থেকে রক্ষা পাবে। এ কুরআনের বদৌলতে তারা জীবনের সহজ সরল পথ লাভ করবে এবং তাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ বর্ষিত হবে। কুরাইশ বংশীয় কাফেররা এর কল্পনাও আজ করতে পারে না। এ অনুগ্রহের বারিধারাও মাত্র কয়েক বছর পরই দুনিয়াবাসী দেখে নিয়েছে। দুনিয়াবাসী দেখেছে, যেসব লোক আরব মরুর এক অখ্যাত অজ্ঞাত এলাকায় অবহেলিত জীবন যাপন করছিল এবং কুফুরী জীবনে বড়জোর একদল সফল নিশাচর দস্যু হতে পারতো তারাই এ কুরআনের প্রতি ঈমান আনার পর সহসাই সারা দুনিয়ার একটি বিশাল ভূখণ্ডের শাসনকর্তায় পরিণত হয়ে গেছে। )
(৩১-লোকমান:২) এগুলো জ্ঞানগর্ভ কিতাবের আয়াত৷ ৩) পথনির্দেশনা ও অনুগ্রহ সৎকর্মশীলদের জন্য ২
২ . অর্থাৎ এ আয়াতগুলো সঠিক পথনির্দেশক এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুগ্রহের রূপলাভ করে এসেছে। কিন্তু এ পথনির্দেশনা ও অনুগ্রহ থেকে লাভবান হয় একমাত্র তারাই যারা সৎকাজ করার পথ অবলম্বন করে, সৎ হতে চায়, কল্যাণ ও ন্যায়ের সন্ধান করে এবং অসৎকাজ সম্পর্কে যখনই সতর্ক করে দেয়া হয় তখনই তা পরিহার করে এবং কল্যাণ ও ন্যায়ের পথ যখনই সামনে খুলে রেখে দেয়া হয় তখনই সে পথে চলতে শুরু। আর যারা অসৎকাজ করে ও অসৎ মনোবৃত্তির অধিকারী তারা এ পথনির্দেশনা কে লাভবান হবে না এবং এ অনুগ্রহেরও কোন অংশ পাবে না।
(১৭:৯৭) যাকে আল্লাহ পথ দেখান সে-ই পথ লাভ করে এবং যাদেরকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন তাদের জন্য তুমি তাঁকে ছাড়া আর কোনো সহায়ক ও সাহায্যকারী পেতে পারো না৷
(২৭-নমল:৪৩) আল্লাহর পরিবর্তে যেসব উপাস্যের সে (সাবা সম্রাজ্যের রানী) পূজা করতো তাদের পূজাই তাকে ঈমান আনা থেকে ঠেকিয়ে রেখেছিল৷ কারণ সে ছিল একটি কাফের জাতির অর্ন্তভুক্ত৷
(৫৪. এ বাক্যাংশটি আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর অবস্থান সুস্পষ্ট করার জন্য বলা হয়েছে। অর্থাৎ তাঁর মধ্যে জিদ ও একগুয়েমী ছিল না। শুধুমাত্র কাফের জাতির মধ্যে জন্ম নেয়ার কারণেই তিনি কখনো পর্যন্ত কাফের ছিলেন। সচেতন বুদ্ধিবৃত্তির অধিকারী হবার পর থেকেই যে জিনিসের সামনে সিজদানত হবার অভ্যাস তাঁর মধ্যে গড়ে উঠেছিল সেটিই ছিল তাঁর পথের প্রতিবন্ধক। সুলাইমানের (আ) মুখোমুখি হবার পর যখন তার চোখ খুলে তখন এ প্রতিবন্ধক দূর হতে এক মুহূর্তও দেরী হয়নি।)
(২৫.ফুরকান:৩১) হে মুহাম্মাদ! আমি তো এভাবে অপরাধীদেরকে প্রত্যেক নবীর শক্রতে পরিণত করেছি এবং তোমার জন্য তোমার রবই পথ দেখানোর ও সাহায্য দানের জন্য যথেষ্ট ৷
(২৮-ক্বাছাছ : ২২) .(মিসর থেকে বের হয়ে) যখন মূসা মাদয়ানের দিকে রওয়ানা হলো তখন সে বললো, "আশা করি আমার রব আমাকে সঠিক পথে চালিত করবেন৷
(৩৪-সাবা: ২৪) (হে নবী) তাদেরকে জিজ্ঞেস কর, “কে তোমাদের আকাশ সমূহ ও পৃথিবী থেকে জীবিকা দান করে”? বল, “আল্লাহ,৪২ এখন অবশ্যই আমরা অথবা তোমরা সঠিক পথে অথবা সুষ্পষ্ট গোমরাহীর মধ্যে নিপতিত”৷ ৪৩
(৩৩-আহযাব: ৪)……তিনিই সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন৷
(১৮:১৭) .......যাকে আল্লাহ সঠিক পথ দেখান সে-ই সঠিক পথ পায় এবং যাকে আল্লাহ বিভ্রান্ত করেন তার জন্য তুমি কোনো পৃষ্ঠপোষক ও পথপ্রদর্শক পেতে পারো না৷
(নূর:৩৫) ....আল্লাহ যাকে চান নিজের আলোর দিকে পথনির্দেশ করেন ৷ তিনি উপমার সাহায্যে লোকদের কথা বুঝান৷ তিনি প্রত্যেকটি জিনিস খুব ভালো করেই জানেন ৷
(২৭-নমল:৯২) ..... এখন যে হেদায়াত অবলম্বন করবে সে নিজেরই ভালোর জন্য হেদায়েত অলম্বন করবে৷ এবং যে গোমরাহ হবে তাকে বলে দাও আমিতো কেবল মাত্র লোকজন সতর্ককারী৷
(নূর:৪০) ....যাকে আল্লাহ আলো দেন না তার জন্য আর কোন আলো নেই ৷
(৩০-রূম: ৫২) (হে নবী!) তুমি মৃতদেরকে শুনাতে পারো না, এমন বধিরদেরকেও নিজের আহ্বান শুনাতে পারো না যারা মুখ ফিরিয়ে চলে যাচ্ছে ৫৩) এবং অন্ধদেরকেও তাদের ভ্রষ্টতা থেকে বের করে সঠিক পথ দেখাতে পারো না৷ তুমি তো একমাত্র তাদেরকেই শুনাতে পারো যারা আমার আয়াতের প্রতি ঈমান আনে এবং আনুগত্যের শির নত করে৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৮৫) ....তাদেরকে বলে দাও, "আমার রব ভালো করেই জানেন কে হিদায়াত নিয়ে এসেছে এবং কে প্রকাশ্য গোমরাহীতে লিপ্ত রয়েছে৷"
(মু’মিনুন:৪৯) আর মুসাকে আমি কিতাব দান করেছি যাতে লোকেরা তার সাহায্যে পথের দিশা পায়৷
(১৬:৯) আর যেখানে বাঁকা পথও রয়েছে সেখানে সোজা পথ দেখাবার দায়িত্ব আল্লাহর ওপরই বর্তেছে৷
(৫৭:২৫) আমি আমার রসূলদের সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ এবং হিদায়াত দিয়ে পাঠিয়েছি৷ তাদের সাথে কিতাব ও মিযান নাযিল করেছি যাতে মানুষ ইনসাফের ওপর প্রতিষ্ঠিত হতে পারে৷
(৫৭:২৮) হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর রসুল (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ওপর ঈমান আনো৷ তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে দ্বিগুণ রহমত দান করবেন, তোমাদেরকে সেই জ্যোতি দান করবেন যার সাহায্যে তোমরা পথ চলবে এবং তোমাদের ত্রুটি -বিচ্যুতি মাফ করে দেবেন৷
(১৩:২৭) বলো, আল্লাহ যাকে চান গোমরাহ করে দেন এবং তিনি তাকেই তাঁর দিকে আসার পথ দেখান যে তাঁর দিকে রুজু করে৷
আরো দেখুন : দ > দাওয়াতী কাজ > প্রত্যেকের কাছে দ্বীনের দাওয়াত পৌছানোর দায়িত্ব আল্লাহর ।
(২৭-নমল:৯২) ..... এখন যে হেদায়াত অবলম্বন করবে সে নিজেরই ভালোর জন্য হেদায়েত অলম্বন করবে৷ এবং যে গোমরাহ হবে তাকে বলে দাও আমিতো কেবল মাত্র লোকজন সতর্ককারী৷
(৩০-রূম: ৫২) (হে নবী!) তুমি মৃতদেরকে শুনাতে পারো না, এমন বধিরদেরকেও নিজের আহ্বান শুনাতে পারো না যারা মুখ ফিরিয়ে চলে যাচ্ছে ৫৩) এবং অন্ধদেরকেও তাদের ভ্রষ্টতা থেকে বের করে সঠিক পথ দেখাতে পারো না৷ তুমি তো একমাত্র তাদেরকেই শুনাতে পারো যারা আমার আয়াতের প্রতি ঈমান আনে এবং আনুগত্যের শির নত করে৷
তাহলে ঈমানদাররা কি (এখানো পর্যন্ত কাফেরদের চাওয়ার জবাবে কোন নিদর্শন প্রকাশের আশায় বসে আছে এবং তারা একথা জেনে) হতাশ হয়ে যায়নি যে, যদি আল্লাহ চাইতেন তাহলে সমগ্র মানব জাতিকে হেয়াদাত দিয়ে দিতেন ?-১৩:৩১,
(১৬:৯) তিনি চাইলে তোমাদের সবাইকে সত্য-সোজা পথে পরিচালিত করতেন৷
(১৬:৩৬) প্রত্যেক জাতির মধ্যে আমি একজন রসূল পাঠিয়েছি এবং তার মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি যে, “আল্লাহর বন্দেগী করো এবং তাগূতের বন্দেগী পরিহার করো৷” এরপর তাদের মধ্য থেকে কাউকে আল্লাহ সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন এবং কারোর ওপর পথভ্রষ্টতা চেপে বসেছে৷
(১৬:৯৩) যদি (তোমাদের মধ্যে কোনো মতবিরোধ না হোক) এটাই আল্লাহর ইচ্ছা হতো তাহলে তিনি তোমাদের সবাইকে একই উম্মতে পরিণত করতেন৷ কিন্তু তিনি যাকে চান গোমরাহীর মধ্যে ঠেলে দেন এবং যাকে চান সরল সঠিক পথ দেখান৷ আর অবশ্যই তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷
(৩২- আস-সাজদা : ১৩) (জবাবে বলা হবে ) “ যদি আমি চাইতাম তাহলে পূর্বাহ্নেই প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার হিদায়াত দিয়ে দিতাম৷২৩
২৩ . অর্থাৎ এভাবে সত্যের সাথে সাক্ষাত ও বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে যদি লোকদেরকে পথ দেখানো আমার লক্ষ হতো তাহলে দুনিয়ার জীবনে এত বড় পরীক্ষার মধ্য দিয়ে তোমাদের এখানে আনার কি দরকার ছিল ৷ এ ধরনের পথের দিশা তো আমি তোমাদের কে আগেও দিতে পারতাম্ কিন্তু শুরু থেকেই তো তোমাদের জন্য আমার এ পরিকল্পনা ছিল না। আমি তো প্রকৃত সত্যকে দৃষ্টির অন্তরালে এবং ইন্দ্রিয়ের স্পর্শ ও অনুভবের বাইরে রেখে তোমাদের পরীক্ষা নিতে চাচ্ছিলাম। আমি দেখতে চাচ্ছিলাম, তোমরা সরাসরি তাকে আবরণমুক্ত দেখার পরিবর্তে বিশ্ব-জাহানে এবং স্বয়ং তোমাদের নিজেদের মধ্যে তার আলামতগুলো দেখে নিজের বুদ্ধির সাহায্যে তাকে চিনতে পারো কিনা, আমি নিজের নবীদের ও কিতাবসমূহের সাহায্যে এ সত্যকে চিনে নেবার ব্যাপারে তোমাদের যে সাহায্য করতে চাচ্ছি তা থেকে তোমরা ফায়দা হাসিল করছো কি না এবং সত্যকে জেনে নেবার পর নিজের প্রবৃত্তিকে এতটা নিয়ন্ত্রিত করতে পারো কিনা যার ফলে কামনা ও বাসনার দাসত্ব মুক্ত হয়ে তোমরা এ সত্যকে মেনে নেবে এবং এ অনুযায়ী নিজের জীবন ধারার সংস্কার সাধন করবে। এ পরীক্ষার সিলসিলা শুরু করায় লাভ কি ৷ দ্বিতীয় পরীক্ষাটি যদি এমনভাবে নেয়া হয় যে, তোমরা এখানে যা কিছু শুনেছো ও দেখেছো তা যদি সব মনেই থেকে যায়, তাহলে আদতে সেটা কোন পরীক্ষাই হবে না। আর যদি আগের মতো সকল চিন্তা-ভাবনা মুক্ত করে এবং সত্যকে দৃষ্টির অগোচরে রেখে তোমাদের আবার দুনিয়ায় সৃষ্টি করা যায় এবং প্রথম বারে যেমন নেয়া হয়েছিল ঠিক তেমনিভাবে একেবারে নতুন করে তোমাদের পরীক্ষা নেয়া হয়, তাহলে বিগত পরীক্ষার তুলনায় ফলাফল কিছুই ভিন্নতর হবে না। (আরো বেশি ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুর কুরআন , আল বাকারাহ, ২২৮; আল আন'আম , ৬ ও ১৪১; ইউনুস , ২৬ এবং আল মু'মিনুন, ৯১ টীকা।)
(১১:১১৯) এবং বিপথে যাওয়া থেকে একমাত্র তারাই বাঁচতে যাদের ওপর তোমার রব অনুগ্রহ করেন৷
(১৪:৪) তারপর আল্লাহ যাকে চান তাকে পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান হেদায়াত দান করেন৷
আল্লাহ যাকে হেদায়েত দেন সে-ই হেদায়েত পায় আর আল্লাহ যাকে হেদায়েত থেকে বঞ্চিত রাখেন সে-ই ক্ষতিগ্রস্থ হয় : ৭:১৭৮, ১৮৬, ১৬:৯৩, (﴿مَن يُضْلِلِ اللَّهُ فَلَا هَادِيَ لَهُ,
(১৬:৯৩) যদি (তোমাদের মধ্যে কোনো মতবিরোধ না হোক) এটাই আল্লাহর ইচ্ছা হতো তাহলে তিনি তোমাদের সবাইকে একই উম্মতে পরিণত করতেন৷ কিন্তু তিনি যাকে চান গোমরাহীর মধ্যে ঠেলে দেন এবং যাকে চান সরল সঠিক পথ দেখান৷ আর অবশ্যই তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷
(এটা পূর্ববর্তী বক্তব্যের আরো একটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা । এর অর্থ হচ্ছে, যদি কেউ নিজেকে আল্লাহর পক্ষের লোক মনে করে ভাল - মন্দ উভয় পদ্ধতিতে নিজের ধর্মের ( যাকে সে আল্লাহর প্রেরিত ধর্ম মনে করছে ) প্রসার এবং অন্যের ধর্মকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালায়, তাহলে তার এ প্রচেষ্টা হবে সরাসরি আল্লাহর ইচ্ছা ও উদ্দেশ্য বিরোধী । কারণ মানুষের ধর্মীয় মতবিরোধের ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে যদি সমস্ত মানুষকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় একটি ধর্মের মতবিরোধের ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে যদি সমস্ত মানুষকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় একটি ধর্মের অনুসারী বানানোই আল্লাহর উদ্দেশ্য হাতো তাহলে এ জন্য আল্লাহর নিজের " তথাকথিত " পক্ষের লোকের লেলিয়ে দেয়ার এবং তাদের নিকৃষ্ট অস্ত্রের সাহায্য নেবার কোন প্রয়োজন ছিল না । এ কাজ তো তিনি নিজের সৃজনী ক্ষমতার মাধ্যমে করতে পারতেন । তিনি সবাইকে মুমিন ও অনুগত হিসেবে সৃষ্টি করতেন এবং তাদের থেকে কুফরী ও গোনাহ করার ক্ষমতা ছিনিয়ে নিতেন । এরপর ঈমান ও আনুগত্যের পথ থেকে একচুল পরিমাণ সরে আসার ক্ষমতা কারো থাকতো না )
তোমাদের পিতা, সন্তান, ভাই, স্ত্রী, আত্নীয় স্বজন, উপর্জিত সম্পদ, ব্যবসা বাণিজ্য, বাসস্থান এ জিনিসগুলো যদি তোমাদের কাছে আল্লাহ, তার রাসূল ও আল্লাহর পথে জিহাদ করার চাইতে বেশী প্রিয় হয়, তাহলে আল্লাহর ফায়সালার জন্য অপেক্ষা কর, আল্লহ এ ধরণের ফাসেক লোকদেরকে কখনোই সৎপথের সন্ধান দেন না : ৯:২৪,
(২৮-ক্বাছাছ :৫০) এখন যদি তারা তোমার এ দাবী পূর্ণ না করে, তাহলে জেনে রাখো, তারা আসলে নিজেদর প্রবৃত্তির অনুসরণ করে৷ আর যে ব্যক্তি আল্লাহর হিদায়াত ছাড়াই নিছক নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে তার চেয়ে বড় পথভ্রষ্ট আর কে হবে? আল্লাহ এ ধরনের জালেমদেরকে কখনো হিদায়াত দান করেন না৷
(৩০-রূম: ৫২) (হে নবী!) তুমি মৃতদেরকে শুনাতে পারো না, এমন বধিরদেরকেও নিজের আহ্বান শুনাতে পারো না যারা মুখ ফিরিয়ে চলে যাচ্ছে ৫৩) এবং অন্ধদেরকেও তাদের ভ্রষ্টতা থেকে বের করে সঠিক পথ দেখাতে পারো না৷
মূসার অনুপস্থিতিতে তার জাতির লোকেরা নিজেদের অলংকার দিয়ে বাছুরের মুর্তি তৈরী করলো৷ তার মুখ দিয়ে গরুর মত হাম্বা রব বের হতো৷ তারা কি দেখতে পেতো না যে, ঐ বাছুর তাদের সাথে কথাও বলে না আর কোন ব্যাপারে তাদের কে পথনির্দেশনাও দেয় না? কিন্তু এরপর ও বাছুরের মুর্তিকে মাবুদে পরিণত করলো৷ বস্তুত তারা ছিল বড়ই জালেম৷-৭:১৪৮,
আবার একথাও সত্য, যারা ইমান আনে (অর্থৎ যারা এ কিতাবে পেশকৃত সত্যগুলো গ্রহণ করে) এবং সৎকাজ করতে থাকে, তাদেরকে তাদের রব তাদের ঈমানদের কারণে হেদায়েত দান করবেন তথা সোজা পথে চালাবেন৷ নিয়ামত ভরা জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত হবে -১০:৯,
হে মুহাম্মাদ! বলে দাও, হে লোকেরা! তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য এসে গেছে৷ এখন যারা সোজা পথ অবলম্বন করবে তাদের সোজা পথ অবলম্ব তাদের জন্যই কল্যাণকর হবে৷ এবং যারা ভুল পথ অবলম্বন করবে তাদের ভুল পথ অবলম্বন তাদের জন্যই ধ্বংস কর হবে৷ আর আমি তোমাদের ওপর হাবিলদার হয়ে আসিনি৷১০:১০৮।
(৩০-রূম: ৫২) ....তুমি তো একমাত্র তাদেরকেই শুনাতে পারো যারা আমার আয়াতের প্রতি ঈমান আনে এবং আনুগত্যের শির নত করে৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৬৪) তারপর তাদেরকে বলা হবে, এবার তোমরা যাদেরকে শরীক বানিয়েছিলে তাদেরকে ডাকো৷ এরা তাদেরকে ডাকবে কিন্তু তারা এদের কোন জবাব দেবে না এবং এরা আযাব দেখে নেবে৷ হায়! এরা যদি হিদায়াত গ্রহণকারী হতো!
যারা কুফরীর উপর কুফরী করতে থাকে, হারাম কে হালাল আবার হালালকে হারাম বানায় : ৯:৩৭,
লোকদেরকে হেদায়াত দান করার পর আবার গোমরাহীতে লিপ্ত করা আল্লাহর রীতি নয়, যতক্ষন না তিনি তাদেরকে কোন জিনিস থেকে সংযত হয়ে চলতে হবে তা পরিস্কার করে জানিয়ে দেন৷ আসলে আল্লাহ প্রত্যেকটি জিনিসের জ্ঞান রাখেন :৯:১১৫,
(১৬:১০৪) আসলে যারা আল্লাহর আয়াতসমূহ মানে না আল্লাহ কখনো তাদেরকে সঠিক সিদ্ধান্তে তথা সঠিক পথে পৌঁছার সুযোগ দেন না এবং এ ধরনের লোকদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব৷
(১৬:১০৭) এটা এজন্য যে, তারা আখেরাতের মুকাবিলায় দুনিয়ার জীবন পছন্দ করে নিয়েছে এবং আল্লাহর নিয়ম হলো, তিনি এমনসব লোককে মুক্তির পথ দেখান না যারা তাঁর নিয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়৷
(৩০-রূম: ৫২) (হে নবী!) তুমি মৃতদেরকে শুনাতে পারো না, এমন বধিরদেরকেও নিজের আহ্বান শুনাতে পারো না যারা মুখ ফিরিয়ে চলে যাচ্ছে ৫৩) এবং অন্ধদেরকেও তাদের ভ্রষ্টতা থেকে বের করে সঠিক পথ দেখাতে পারো না৷
আরো বিস্তারিত দেখুন: ক > কুরআন > কুরআন কোন ধরণের লোকদেরকে হেদায়েত দান করে ?
(১৬:৬৪) ...... এ কিতাব পথনির্দেশ ও রহমত হয়ে নাযিল হয়েছে তাদের জন্য যারা একে মেনে নেবে৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৩) আমি মূসা ও ফেরাউনের কিছু যথাযথ বৃত্তান্ত তোমাকে শুনাচ্ছি১ এমনসব লোকদের সুবিধার্থে যারা ঈমান আনে৷২
(২. অর্থাৎ যারা কথা মেনে নিতে প্রস্তুত নয় তাদেরকে কথা শুনানো তো অর্থহীন। তবে যারা মনের দুয়ারে একগুঁয়েমীর তালা ঝুলিয়ে রাখে না। এ আলোচনায় তাদেরকেই সম্বোধন করা হয়েছে। )
(২৮-ক্বাছাছ : ৫১) আর আমি তো অনবরত তাদের কাছে (উপদেশ বাণী) পৌঁছিয়ে দিয়েছি, যাতে তারা গাফলতি থেকে সজাগ হয়ে যায়৷৭১ ৫২) যাদেরকে আমি এর আগে কিতাব দিয়েছিলাম তারা এর (কুরআন ) প্রতি ঈমান আনে৷৭২
৭১. অর্থাৎ উপদেশের ব্যাপারে আমি কোন কসুর করিনি। এ কুরআনে আমি অনবরত উপদেশ বিতরন করে এসেছি। কিন্তু যে জিদ ও একগুয়েমি পরিহার করে হৃদয়কে বিদ্বেষমুক্ত রেখে সত্যকে সোজাসুজি গ্রহন করতে প্রস্তুত হয়ে যায় সে-ই একমাত্র হিদায়াত লাভ করতে পারে।
৭২. এর অর্থ এটা নয় যে, সমস্ত আহলি কিতাব (ইহুদী ও ঈসায়ী) এর প্রতি ঈমান আনে । বরং সূরা নাযিল হবার সময় যে ঘটনা ঘটেছিল এখানে আসলে সেদিকে ইশারা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মক্কাবাসীদেরকে এই মর্মে লজ্জা দেয়াই উদ্দেশ্য যে, তোমাদের নিজেদের গৃহে যে নিয়ামত এসেছে তাকে তোমরা প্রত্যাখ্যান করছো। অথচ দূর দেশ থেকে লোকেরা এর খবর শুনে আসছে এবং এর মূল্য অনুধাবন করে এ থেকে লাভবান হচ্ছে।
ইবনে হিশাম ও বাইহাকী এবং অন্যরা এ ঘটনাকে মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাকের বরাত দিয়ে নিন্মোক্তভাবে বর্ণনা করেছেন : আবিসিনিয়ায় হিজরাতের পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াত প্রাপ্তি এবং তার দাওয়াতের খবর যখন সেই দেশে ছড়িয়ে পড়লো তখন সেখান থেকে প্রায় ২০ জনের একটি খৃষ্টান প্রতিনিধি দল প্রকৃত অবস্থা অনুসন্ধানের জন্য মক্কা মু'আয্যামায় এলো। তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে মসজিদে হারামে সাক্ষাৎ করলো। কুরাইশদের বহু লোকও এ ব্যাপারে দেখে আশপাশে দাঁড়িয়ে গেলো। প্রতিনিধি দলের লোকেরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কিছু প্রশ্ন করলেন। তিনি সেগুলোর জবাব দিলেন। তারপর তিনি তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন এবং কুরআন মজীদের আয়াত তাদের সামনে পাঠ করলেন। কুরআন শুনে তাদের চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগলো। তারা একে আল্লাহর বাণী বলে অকুণ্ঠভাবে স্বীকার করলেন এবং নবীর (সা) প্রতি ঈমান আনলেন। মজলিস শেষ হবার পর আবু জেহেল ও তার কয়েকজন সাথী প্রতিনিধিদলের লোকদেরকে পথে ধরলো এবং তাদেরকে যাচ্ছে তাই বলে তিরস্কার করলো। তাদেরকে বললো, "তোমাদের সফরটাতো বৃথাই হলো। তোমাদের স্বধর্মীয়রা তোমাদেরকে এজন্য পাঠিয়েছিল যে, এ ব্যক্তির অবস্থা সম্পর্কে তোমরা যথাযথ অনুসন্ধান চালিয়ে প্রকৃত ও যথার্থ ঘটনা তাদেরকে জানাবে। কিন্তু তোমরা সবেমাত্র তার কাছে বসেছিলে আর এরি মধ্যেই নিজেদের ধর্ম ত্যাগ করে তার প্রতি ঈমান আনলে ৷ তোমাদের চেয়ে বেশী নির্বোধ কখনো আমরা দেখিনি।" একথায় তারা জবাব দিল , "ভাইয়েরা , তোমাদের প্রতি সালাম। আমরা তোমাদের সাথে জাহেলী বিতর্ক করতে চাই না। আমাদের পথে আমাদের চলতে দাও একং তোমাদের পথে চলতে থাকো। আমরা জেনেবুঝে কল্যাণ থেকে নিজেদেরকে বঞ্চিত করতে পারি না।" (সীরাতে ইবনে হিশাম, ২ খণ্ড, ৩২ পৃষ্ঠা এবং আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৩ খণ্ড , ৮২ পৃষ্ঠা। আরো বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা শূ'আরা, ১২৩ টীকা।)
(হেদায়েত সংক্রান্ত আরো ব্যাখ্যার জন্য দেখুন > ই > ইসলাম > সর্বযুগে ও সর্বকালে সব নবীদের ধর্মই কি “ইসলাম” ছিল ? আ > আহলে কিতবাগণ ইসলাম গ্রহণ করলে মূলত: তাদের আসল ও মূল ধর্মেই ফিরে আসল)
কোন প্রকার অধিকার ছাড়াই যারা পৃথিবীতে বড়াই করে বেড়ায়, শীঘ্রই আমার নিদর্শনসমূহ থেকে আমি তাদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেবো৷ তারা আমার যে কোন নিদর্শন দেখলেও তার প্রতি ঈমান আনবে না৷ তাদের সামনে যদি সোজা পথ এসে যায় তাহলে তারা তা গ্রহণ করবেনা৷ আর যদি বাঁকা পথ দেখতে পায় তাহলে তারা ওপর চলতে আরম্ভ করবে৷ কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা বলেছে এবং সেগুলোর ব্যাপারে বেপরোয়া থেকেছে৷ আমার নিদর্শনসমূহকে যারাই মিথ্যা বলছে এবং আখেরাতের সাক্ষাতের কথা অস্বীকার করেছে তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ড ব্যর্থ হয়ে গেছে ৷ যেমন কর্ম তেমন ফল- এ ছাড়া লোকেরা কি আর কোন প্রতিদান পেতে পারে? -৭:১৪৬-১৪৭
সত্য ও মিথ্যা সুষ্পষ্ট হয়ে যাবার পরও ক্রমাগত ভাবে নাফরমানীর পথ অবলম্বন করতে থাকার কারণে ঈমান আনার তৌফিক ছিনিয়ে নেয়া হয় :
(হে নবী! দেখো) এভাবে নাফরমানীর পথ অবলম্বনকারীদের ওপর তোমরা রবের কথা সত্য প্রতিপন্ন হয়েছে যে, তারা ঈমান আনবে না৷-১০:৩৩,
আসলে যারা সত্যের দাওয়াত মেনে নিতে অস্বীকার করেছে তাদের জন্য তাদের প্রতারণাসমূহকে সুসজ্জিত করে দেয়া হয়েছে এবং তাদেরকে সত্য-সঠিক পথ থেকে নিবৃত্ত করা হয়েছে৷ তারপর আল্লাহ যাকে গোমরাহীতে লিপ্ত করেন তাকে পথ দেখাবার কেউ নেই৷-১৩:৩৩,
উত্তর : উম্মী নবী মুহাম্মদ সা: এর উপর ঈমান আনো ও আল্লাহর প্রতি, আল্লাহর বানীর প্রতি ঈমান আনো ও আনুগত্য কর : ৭:১৫৮,
(হাজ্ব:৫৪) --এবং যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তারা জেনে নেয় যে, তোমার রবের পক্ষ থেকে এটা সত্য এবং তারা এর প্রতি ঈমান আনে এবং এর সামনে তাদের অন্তর ঝুঁকে পড়ে; যারা ঈমান আনে তাদেরকে অবশ্যই আল্লাহ চিরকাল সত্য-সরল পথ দেখিয়ে থাকেন৷
(১৬:৩৭) হে মুহাম্মাদ ! তুমি এদেরকে সঠিক পথের সন্ধান দেবার জন্য যতই আগ্রহী হও না কেন, আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তাকে আর সঠিক পথে পরিচালিত করেন না আর এ ধরনের লোকদের সাহায্য কেউ করতে পারে না৷
দেখুন : ম > মুহাম্মদ সা: > উম্মতের সঠিক পথ প্রাপ্তির জন্য নবী মুহাম্মদ সা: এর পেরেশানী।
(২৮-ক্বাছাছ : ৫৬) হে নবী! তুমি যাকে চাও তাকে হিদায়াত দান করতে পারো না কিন্তু আল্লাহ যাকে চান তাকে হিদায়াত দান করেন এবং যারা হিদায়াত গ্রহণ করে তাদেরকে তিনি খুব ভাল করেই জানেন৷
(বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনা অনুসারে এ আয়াতটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লামের চাচা আবু তালেবের প্রসঙ্গে নাযিল হয়। তাঁর শেষ সময় উপস্থিত হলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম নিজের সামর্থ মোতাবেক কালেমা লা-ইলাহা ইল্লালাহু-এর প্রতি তাঁর ঈমান আনবার জন্য চুড়ান্ত চেষ্টা চালান। তিনি চাচ্ছিলেন তাঁর চাচা ঈমানের মধ্য দিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করুন। কিন্তু চাচা তা গ্রহন না করে আব্দুল মুত্তালিবের অনুসৃত ধর্মের মধ্যে অবস্থান করে জীবন দেয়াকে অগ্রাধিকার দেন। এ ঘটনায় আল্লাহ বলেন ------------ "তুমি যাকে ভালবাসো তাকে হিদায়াত করতে পারো না" কিন্তু মুহাদ্দিস ও মুফাসসিরগণের পরিচিত পদ্ধতি হচ্ছে এই যে, একটি আয়াত নবীর যামানায় একটি বিশেষ ঘটনা বা ব্যাপারের সাথে সামঞ্জস্যশীল হয় তাকে তাঁরা আয়াতটির শানে নুযুল বা নাযিল হওয়ার উপলক্ষ ও কার্যকারণ হিসেবে বর্ণনা করেন। তাই এ হাদীসটি এবং এ বিষয়বস্তু সম্বলিত তিরমিযী ও মুসনাদে আহমদ ইত্যাদিতে আবু হুরাইরা (রাঃ) ইবনে আব্বাস (রা) ইবনে উমর (রা) প্রমুখ সাহাবীগণ বর্ণিত অন্যান্য হাদীসগুলো থেকে অনিবার্যভাবে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছা যায় না যে, সূরা আল কাসাসের এ আয়াতটি আবু তালেবের ইন্তেকালের সময় নাযিল হয়েছিল। বরং এ থেকে শুধুমাত্র এটুকু জানা যায় যে, এ আয়াতের বিষয়বস্তুর সত্যতা ও বাস্তবতা এ ঘটনার সময়ই সবচেয়ে বেশি প্রকাশিত হয়। যদিও আল্লাহর প্রত্যেকটি বান্দাকে সঠিক পথে নিয়ে আসা ছিল নবী করীমের (সা) আন্তরিক ইচ্ছা, তথাপি কোন ব্যক্তির কুফরীর উপর মৃত্যু বরণ করা যদি তার কাছে সবচেয়ে বেশি কষ্টকর হতো এবং ব্যক্তিগত ভালবাসা ও সম্পর্কের ভিত্তিতে যদি কোন ব্যক্তির হিদায়াত লাভ করার তিনি সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ও আকাংখা পোষন করতেন তাহলে তিনি ছিলেন আবু তালেব। কিন্তু তাঁকেই হিদায়াত দান করার শক্তি যখন তিনি লাভ করলেন না তখন একথা একেবারে সুস্পষ্ট হয়ে গেলো যে, কাউকে হিদায়াত দান করা বা কাউকে হিদায়াত বঞ্চিত করা নবীর কাজ নয়। এ বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর হাতে। আর আল্লাহর কাছ থেকে এ সম্পদটি কোন আত্নীয়তা ও পারিবারিক সম্পর্কের ভিত্তিতে নয় বরং মানুষের সত্যানুরাগ, সত্যপ্রীতি ও সত্যাগ্রহী মানসিকতার ভিত্তিতেই দান করা হয়।)
(৩০-রূম: ৫২) (হে নবী!) তুমি মৃতদেরকে শুনাতে পারো না, এমন বধিরদেরকেও নিজের আহ্বান শুনাতে পারো না যারা মুখ ফিরিয়ে চলে যাচ্ছে ৫৩) এবং অন্ধদেরকেও তাদের ভ্রষ্টতা থেকে বের করে সঠিক পথ দেখাতে পারো না৷
(১০:১০৩) তারপর (যখন এমন সময আসে তখন) আমি নিজের রসূলদের এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে রক্ষা করি৷ এটিই আমার রীতি৷ মুমিনদের রক্ষা করা আমার দায়িত্ব ৷
(১৫:৯) আর এ বাণী (জিকর) , একে তো আমিই অবতীর্ণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক৷
(একারণেই আজ দেড় সহস্রাব্দ পার হয়ে যাওয়ার পরও কুরআনের একটি নুকতারও কেউ পরিবর্তণ করতে পারেনি, কুরআন কেহ বিশ্বাস করুক বা না করুক সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার , কিন্তু মুহাম্মদ সা: এর উপর যে কুরআন নাযিল হয়েছে, সেটি সম্পূর্ন অবিকৃত অবস্থায় এখনো আমাদের কাছে, পৃথিবীর কাছে বিদ্যমান আছে, এটা অস্বীকার করার কোন উপায় কারো নেই, এটা কুরআনের একটি বাস্তব ও জ্বলন্ত মু’জেযা)
(আনআম:১৪৮) এ মুশরিকরা (তোমাদের এসব কথার জবাবে) নিশ্চয়ই বলবে, যদি আল্লাহ চাইতেন তাহলে আমরা শিরকও করতাম না, আমাদের বাপ-দাদারাও শিরক করতো না৷ আর আমরা কোন জিনিসকে হারামও গণ্য করতাম না৷এ ধরনের উদ্ভট কথা তৈরী করে করে এদের পূর্ববর্তী লোকেরাও সত্যকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, এভাবে তারা অবশেষে আমার আযাবের স্বাদ গ্রহণ করেছে৷ এদেরকে বলে দাও, তোমাদের কাছে কোন জ্ঞান আছে কি ? থাকলে আমার কাছে পেশ করো৷ তোমরা তো নিছক অনুমানের ওপর চলছো এবং শুধুমাত্র ধারণা ও এ আন্দাজ করা ছাড়া তোমাদের কাছে আর কিছুই নেই ৷
(১৬:৩৫) এ মুশরিকরা বলে, “আল্লাহ চাইলে তাঁর ছাড়া আর কারো ইবাদাত আমরাও করতাম না, আমাদের বাপ-দাদারাও করতো না এবং তাঁর হুকুম ছাড়া কোনো জিনিসকে হারামও গণ্য করতো না৷” এদের আগের লোকেরাও এমনি ধরনের বাহানাবাজীই চালিয়ে গেছে৷
(ব্যাখ্যা : এখানে প্রথম কথা বলা হয়েছে, নিজেদের অন্যায় কাজ ও গোমরাহীর জন্য আল্লাহর ইচ্ছাকে ওপর হিসেবে পেশ করা এবং এর বাহানা বানিয়ে সঠিক হেদায়াত ও পথনির্দেশ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানো অপরাধীদের প্রাচীন রীতি হিসেবে চলে আসছে। এর পরিণামে দেখা গেছে অবশেষ তারা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং সত্যের বিরুদ্ধে চলার অশুভ পরিণাম তারা স্বচক্ষে দেখে নিয়েছে। তারপর বলা হয়েছে, তোমরা যে ওযরটি পেশ করছো তার পেছনে প্রকৃত জ্ঞানগত ও তথ্যগত কোন ভিত্তি নেই। বরং আন্দাজ-অনুমানের ভিত্তিতে তোমরা এটি পেশ করছো। তোমরা নিছক কোথাও আল্লাহর ইচ্ছার কথা শুনতে পেয়েছো তারপর তার ওপর অনুমানের একটি বিরাট ইমারত দাঁড় করিয়ে দিয়েছো। মানুষের ব্যাপার আল্লাহর ইচ্ছা কি, একথা বুঝার চেষ্টাই তোমরা করোনি। তোমরা আল্লাহর ইচ্ছা বলতে মনে করছো, চোর যদি আল্লাহর ইচ্ছার অধীনে চুরি করেছে। অথচ মানুষের ব্যাপারে আল্লাহর ইচ্ছা হচ্ছে এই যে, সে কৃতজ্ঞতা ও কুফরী, হেদায়াত ও গোমরাহী এবং আনুগত্য ও অবাধ্যতার মধ্য থেকে যে পথটিই নিজের জন্য নির্বাচিত করবে, আল্লাহ তার জন্য সে পথটিই উন্মুক্ত করে দেবেন। তারপর মানুষ ন্যায়-অন্যায় ও ভুল-নির্ভুল যে কাজটিই করতে চাইবে, আল্লাহর নিজের বিশ্বব্যাপী কার্যক্রমের দৃষ্টিতে যতটুকু সংগত মনে করবেন তাকে সে কাজটি করার অনুমতি ও সুযোগ দান করবেন। কাজেই তোমরা ও তোমাদের বাপ-দাদারা আল্লাহর ইচ্ছার আওতাধীনে যদি শিরক ও পবিত্র জিনিসগুলোকে হারাম গণ্য করার সুযোগ লাভ করে থাকো তাহলে এর অর্থ কখনোই এ নয় যে, তোমরা নিজেদের এসব কাজের জন্য দায়ী নও এবং এর জন্য তোমাদের জওয়াবদিহি করতে হবে না। তোমরা নিজেরাই নিজেদের ভুল পথ নির্বাচন, ভুল সংকল্প গ্রহণ ও ভুল প্রচেষ্টার জন্য দায়ী।
সবশেষে একটি বাক্যের মধ্যে আসল কথাটি বলে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ বলা হয়েছে :
“যদি আল্লাহ চাইতেন তাহলে তোমাদের সবাইকে সঠিক পথ দেখাতেন৷”
নিজেদের ওযর পেশ করতে গিয়ে তোমরা এ মর্মে যে যুক্তিটির অবতারণা করেছো যে, "আল্লাহ চাইলে আমরা শির্ক করতাম না"। এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ কথাটি ব্যক্ত হয়নি। সম্পূর্ণ কথাটি বলতে হলে এভাবে বলো: "আল্লাহ চাইলে তোমাদের সবাইকে হেদায়াত দান করতেন"। অন্য কথায় তোমরা নিজেরা নিজেদের নির্বাচনের মাধ্যমে সঠিক পথ গ্রহণ করতে প্রস্তুত নও। বরং তোমরা চাও, আল্লাহ যেভাবে ফেরেশতাদেরকে জন্মগতভাবে সত্যানুসারী বানিয়েছেন সেভাবে তোমাদেরকেও বানাতেন। মানুষের ব্যাপারে আল্লাহ এ ইচ্ছা করলে অবশ্যি করতে পারতেন। কিন্তু এটি তাঁর ইচ্ছা নয়। কাজেই নিজেদের জন্য তোমরা নিজেরাই যে গোমরাহীটি পছন্দ করে নিয়েছো আল্লাহ তার মধ্যেই তোমাদের ফেলে রাখবেন।)
(১৬:৫০) ভয় করে নিজেদের রবকে যিনি তাদের ওপরে আছেন এবং যা কিছু হুকুম দেয়া হয় সেই অনুযায়ী কাজ করে৷
(১৯:৪৬) বাপ বললো, “ইবরাহীম! তুমি কি আমার মাবুদদের থেকে বিমুখ হয়েছো?যদি তুমি বিরত না হও তাহলে আমি পাথরের আঘাতে তোমাকে শেষ করে দেবো;ব্যস তুমি চিরদিনের জন্য আমার থেকে আলাদা হয়ে যাও”৷
(২৬.শুআরা:১১৬) তারা বললো, "হে নূহ! যদি তুমি বিরত না হও, তাহলে তুমি অবশ্যই বিপর্যস্ত লোকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে৷"
(মূল শব্দগুলো হচ্ছে, لتكوننَّ من المَرجومينَ -এর দু'টি অর্থ হতে পারে। একটি হচ্ছে, তোমাকে 'রজম' করা হবে। অর্থাৎ পাথর মেরে তোমাকে হত্যা করা হবে। আর দ্বিতীয় অর্থটি হচ্ছে, চারদিক থেকে তোমাকে গালাগালি করা হবে। যেখানেই যাবে, অভিশাপ দেয়া হবে এবং অপদস্ত করে তাড়িয়ে দেয়া হবে। আরবী বাগধারা অনুযায়ী এ শব্দগুলো থেকে এ দুটি অর্থ গ্রহণ করা যেতে পারে।)
(২৬.শুআরা:১৬৭) তারা বললো, “হে লূত! যদি তুমি এসব কথা থেকে বিরত না হও, তাহলে আমাদের জনপদগুলো থেকে যেসব লোককে বের করে দেয়া হয়েছে তুমিও নির্ঘাত তাদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে৷
(সূরা আ'রাফ ও সূরা নামলে বর্ণনা করা হয়েছে, হযরত লূতকে (আ) দেশ থেকে বের হয়ে যাবার এ নোটিশ দেবার আগে এ পাপাচারী জাতির লোকেরা নিজেদের মধ্যে ফয়সালা করে নিয়েছিলঃ
اخرجوا ال لُوطٍ من قريَتِكم اِنَّهُم انَاسٌ يَّتَطَهَّرُوْنَ-
"লূত ও তাঁর পরিবারের লোকদের এবং সাথীদেরকে জনপদ থেকে বের করে দাও। এরা বড়ই পবিত্রতার পরাকাষ্ঠা দেখাচ্ছে। এ 'নেককারদের'কে বাইরের পথ দেখিয়ে দাও।"
(১৭:৭৬) আর এরা এ দেশ থেকে তোমাকে উৎখাত করার এবং এখান থেকে তোমাকে বের করে দেবার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছিল৷ কিন্তু যদি এরা এমনটি করে তাহলে তোমার পর এরা নিজেরাই এখানে বেশীক্ষণ থাকতে পারবে না।
(ব্যাখ্যা : এটি একটি সুস্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী । সে সময় এটি তো নিছক হুমকি মনে হচ্ছিল । কিন্তু দশ বারো বছরের মধ্যেই এর সত্যতা অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণ হয়ে গেলো । কাফেররা মুহাম্মদ সা: কে নিজের জন্মভূমি থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করলো এবং এরপর ৮ বছরের বেশী সময় অতিবাহিত হতে না হতেই তিনি বিজয়ীর বেশে মক্কা মুয়াযযমায় প্রবেশ করলেন । তারপর দু'বছরের মধ্যেই সমগ্র আরব ভূখণ্ড মুশরিক শূন্য করা হলো । এরপর যারাই এ দেশে বসবাস করেছে মুসলমান হিসেবেই বসবাস করেছে, মুশরিক হিসেবে কেউ সেখানে টিকতে পারেনি ।)
(বিস্তারিত দেখুন : জ > জিহাদ > কাফির ও জিহাদ)
(৩০-রূম: ৪৭) আমি তোমার পূর্বে রসূলদেরকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠাই এবং তারা তাদের কাছে আসে উজ্জ্বল নিদর্শনাবলী নিয়ে৷ তারপর যারা অপরাধ করে তাদের থেকে আমি প্রতিশোধ নিই আর মুমিনদেরকে সাহায্য করা ছিল আমার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত৷
যুদ্ধের ময়দানে নিহত কাফেরদের রূহ ফেরেশতা কবয করার সময় তাদের পিঠে ও চেহারায় আঘাত করে এবং বলে নাও এবার জ্বালা পোড়ার শাস্তি ভোগ কর : ৮:৫০-৫২,
কাফেরদের (সত্য অস্বীকার কারী কুফরী কর্মপন্থা গ্রহণকারীদের) জন্য রয়েছ আযাব : ৮:৩৫
(২১:৭০) তারা চাচ্ছিল ইবরাহীমের ক্ষতি করতে কিন্তু আমি তাদেরকে ভীষণভাবে ব্যর্থ করে দিলাম৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৬) পৃথিবীতে তাদেরকে কর্তৃত্ব দান করবো৷ এবং তাদের থেকে ফেরাউন, হামান ও তার সৈন্যদেরকে সে সবকিছুই দেখিয়ে দেবো, যার আশংকা তারা করতো৷
(৩০-রূম: ৬০) কাজেই ( হে নবী!) সবর করো, অবশ্যই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং যারা বিশ্বাস করে না তারা যেন কখনোই তোমাকে গুরুত্বহীন মনে না করে৷ ৮৫
৮৫ . অর্থাৎ শত্রুরা যেন তোমাদের এতই দুর্বল না পায় যে, তাদের হৈ চৈ ও শোরগোলে তোমরা দমিত হবে অথবা তাদের মিথ্যাচার ও দোষারোপ করার অভিযান দেখে তোমরা ভীত হয়ে যাও কিংবা হাসি-তামাসা ও ঠাট্টা-বিদ্রুপবাণে বিদ্ধ হয়ে তোমরা হিম্মত হারিয়ে ফেলো অথবা তাদের হুমকি-ধমকি ও শক্তির প্রকাশে এবং জুলুম নির্যাতনে তোমরা ভীত হয়ে যাও কিংবা তাদের ফেলা লালসার টোপে তোমরা আটকা পড়ে যাও অথবা জাতীয় স্বার্থের নামে তারা তোমাদের কাছে যে আবেদন জানাচ্ছে তাঁর ভিত্তিতে তোমরা তাদের সাথে সমঝোতা করে নিতে উদ্যত হও। এর পরিবর্তে তারা তোমাকে নিজেদের উদ্দেশ্য সচেতনতায় এত বেশি সতর্ক এবং নিজেদের বিশ্বাস ও ঈমানে এত বেশি পাকাপোক্ত এবং এ সংকল্পে এত বেশি দৃঢ়চেতা এবং নিজেদের চরিত্রে এতবেশি মজবুত পাবে যে, কোন ভয়ে তোমাদের ভীত করা যাবে না, কোন মূল্যে তোমাদের কেনা যাবে না, কোন প্রতারণার জালে তোমাদের আবদ্ধ করা যাবে না, কোন ক্ষতি, কষ্ট বা বিপদে ফেলে তোমাদেরকে পথ থেকে সরানো যাবে না এবং দীনের ব্যাপারে কোন প্রকার আপোষ বা লেনদেনের কারবারও তোমাদের সাথে করা যেতে পারে না। " অবিশ্বাসীরা যেন তোমাকে গুরুত্বহীন মনে না করে"- আল্লাহর এ ছোট্ট একটি বাণীর আলংকারিক বাক্য-বিন্যাসের মধ্যেই এ সমস্ত বিষয়বস্তুলুকিয়ে রাখা হয়েছে। আল্লাহ তাঁর শেষ নবীকে যেমন শক্তিশালী ও গুরুত্ববহ দেখতে চাচ্ছিলেন তিনি ঠিক তেমনটি হতে পেরেছিলেন কিনা এখন ইতিহাসই তা প্রমাণ করবে। তাঁর সাথে যে ব্যক্তিই যে ময়দানে শক্তি পরীক্ষা করেছে সেই ময়দানেই সে হেরে গেছে। শেষ পর্যন্ত এ মহান ব্যক্তিত্ব এমন বিপ্লব সৃষ্টি করেন যার পথরোধ করার জন্য আরবের কাফের ও মুশরিক সমাজ তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ ও সমস্ত কলা-কৌশল প্রয়োগ করেও পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে গেছে।
(আরো দেখুন : ন > নবী, অ > অবকাশ, আ > আজাব)
(২৭.নামল:৭১) তারা বলে, “ যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তাহলে এ হুমকি কবে সত্য হবে?”