Published using Google Docs
27 TAA
Updated automatically every 5 minutes

ত:

CONTENTS

তরকারী :

তড়িৎ / তাড়াহুড়া :

আল্লাহ তাড়াহুড়া করেন না :

তাকওয়া :  আরো দেখুন : ভ > ভয় :

তাকওয়ার পোষক সর্বোত্তম :

আল্লাহ তাকওয়া অবলম্বনকারীদের সাথে আছেন :

তাকওয়া অর্জনের পদ্ধতি সমূহ :

১। নামাজ :

বিনয়ী লোকদের জন্য সুসংবাদ: আর বিনয়ী লোকদের পরিচয় হচ্ছে :

কুরবানীর পশুর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌছে না, পৌছে তোমাদের তাকওয়া :

কল্যাণ লাভ করার প্রধান শর্ত হচ্ছে : তাকওয়াবান হওয়া : আল্লাহকে ভয় করা :

ইবাদতকারীর মানসিক অবস্থা কিরূপ হওয়া উচিত ? অহমিকা নাকি নম্রতা ও ভয় ?

তাগুত / বিদ্রোহ : (এ সাথে আরো দেখুন : ব > বিদ্রোহ, ব > বাড়াবাড়ি, ত > তাগুত,  অ > অসৎ নেতা, প > আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করা  )

তাগুত সম্পর্কিত আয়াত :

ফেরাউন : তাগুতের গুরুত্বপূর্ণ উদাহারণ :

তাগুতের পরিণাম  / প্রতিফল / প্রতিদান :

তাগুত হচ্ছে জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী নেতা :

যারা কুরআন শোনে কিন্তু মানতে চায় না : এবং অপরকেও কুরআন শুনতে দিতে চায় না :

তাগুতি করা / বিদ্রোহ করা / বাড়াবাড়ি করা / সীমালংঘণ করা :

সাংস্কৃতিক তাগুত :

শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মাধ্যমেও মানুষকে ইসলামের পথ থেকে দুরে সরিয়ে রাখার প্রচেষ্টা করা হয়ে থাকে :

অসৎ নেতৃত্বের জবাবদিহিতা সাধারণ অপরাধীদের চেয়ে বেশী :

তাগুত :  এ সাথে দেখুন : যারা আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে :

তাগুতকে যারা সাহায্য করে তারা কাফের :

যারা তাগুতকে মানে তারাই ক্ষতিগ্রস্থ :

যারা আল্লাহ কে বাদ দিয়ে তাগুতকে অভিভাবক বানায়, তাদের ঘর মাকড়সার ঘরের মত দুর্বল:

তাকদীর :

সুষ্পষ্ট কিতাবে সবকিছুই লিপিবদ্ধ আছে :

তাকদীরের কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে বলেই কি মানুষ জান্নাতে বা জাহান্নামে যাবে ?

কর্মের প্রতিফল হিসেবেই মানুষ জাহান্নামের যোগ্য হয়ে পড়ে :

কর্মের প্রতিদান হিসেবে জান্নাত দেওয়া হবে :

যেমন কর্ম তেমন ফল :

ক্রমাগত ভাবে সত্য অস্বীকার করার কারণে হেদায়েত লাভের তৌফিক ছিনিয়ে নেয়া হয় ফলে পরকালীন শাস্তির যোগ্য হয়ে পড়ে :

আল্লাহর ফায়সালায় যারা সন্তুষ্ট থাকেনা তাদের প্রতি হুশিয়ারী :

ফলাফল কি কর্ম অনুযায়ী হয় ? না তাকদীর অনুযায়ী ?

তাইয়্যেবা :

কালিমায়ে তাইয়্যেবা ও কালিমায়ে খাবীসা  :

পবিত্র কথা : যেখানে এর অর্থ কালিমা তাইয়্যেবা :

তাজকিয়া : আত্মশুদ্ধি :

তারা / তারকা :

আকাশের তারকার মাধ্যমে দিক নির্ণয় ও পথ নির্দেশনা লাভ :

তাড়াহুড়া :

আযাব আসার জন্য তাড়াহুড়া করোনা :

অপরাধীদের অবকাশ দেবার কারণ কি ? আযাব আসতে দেরী হওয়ার কারণ কি ?

ত্বরাপ্রবণ :

তালুত এর ঘটনা :

তায়াম্মুম :

:তাসবীহ:

আকাশ ও পৃথিবীর সব কিছুই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছে :

তাহাজ্জুদ এর  নামাজ :

প্রকৃত ঈমানদারদের পরিচয় হচ্ছে তারা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে :

তামা :

গলিত লোহা ও তামার দ্বারা নির্মিত প্রাচীর :

হযরত সুলাইমান আ: এর জন্য ছিল গলিত তামার প্রস্রবন :  এর প্রকৃত অর্থ কি ?

তালাক সংক্রান্ত :

যিহার  / জিহার করা কি তালাক এর অনুরূপ ? যিহার করলেই কি তালাক হয়ে যাবে ?

তাখঈর :

১। তাখঈর এর ঘটনা :

স্ত্রীকে  স্বামীর সাথে থাকার বা আলাদা হয়ে যাবার মধ্য থেকে যে কোন একটিকে বাছাই করে নেবার ফায়সালা করার ইখতিয়ার দান করা :

ক্লিক করুন : ম > মুহাম্মদ সা: > মুহাম্মদ সা: এর পারিবারিক জীবন >
১। তাখঈর এর ঘটনা :

শ্পর্শ করা পূর্বেই তালাক দিলে ইদ্দত কি হবে ?

তাওয়াফ :

তলাবুল ইলম :

জ্ঞান প্রদানের জন্য শর্ত আরোপ :

তওরাত :

তওবা : (আরো দেখুন : “ক্ষমা” ও “ক্ষমা লাভ করার শর্ত”

তওবার শর্ত হলো  ১। ফিরে আসা, ২। ঈমান আনয়ন , ৩ । সৎকাজ :

তওবা কবুল হওয়ার শেষ সময় কোন পর্যন্ত ?/ কোন সময়কার তওবা গ্রহণযোগ্য হবে না? :

তওবা কবুল করা হবে কাদের ? এবং হবেনা কাদের ? আরে দেখুন : ক্ষ >  ক্ষমা লাভ করার শর্ত :

গুনাহ করার পর অহংকার না করে ভুল স্বীকার করে তওবা করতে হবে: তাহলে ক্ষমা পাওয়ার আশা রয়েছে:

তওবার গুণাগুণ ও প্রয়োজনীয়তা  :   দেখুন : ক্ষ > ক্ষমার প্রয়োজনীয়তা ।

কোন ধরণের মুনাফিকদের ক্ষমা করা হতে পারে ?

দেখুন : ম > মুনাফিক  > ক্লিক করুন :  কোন ধরণের মুনাফিকদের ক্ষমা করা হতে পারে ?

তেল :

জাহান্নামে এমন পানি পান করতে দেওয়া হবে যা হবে তেলের তলানীর মত :

তেল উৎপাদনকারী গাছ :

যে তেল আগুন ছাড়াই প্রজ্জলিত হয় :

তৌফিক :

তাওফীক দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ তাআলা :

আল্লাহ তাওফীক্ব দিলেই কেবল সৎকাজ করা সম্ভব :

মানুষ বড়ই ত্বরা প্রবণ :

তোমাদের স্থলে অন্যদেরকে মনোনীত করবেন :

তুর পর্বত :

তুওয়া উপত্যকা :

তুর পর্বত বা তুওয়া উপত্যকা কোথায় অবস্থিত ? যে পাহাড়ে মূসা আ: আগুন জ্বলতে দেখেছিলেন বর্তমানে এর অবস্থান কোথায় ?

Z :

1|  Zv¸Z 2| ZvK`xi 3| ZIivZ4| ZIev5| ZvKIqv

তরকারী :

(মু’মিনুন:২০) আর সিনাই পাহাড়ে যে গাছ জন্মায় তাও আমি সৃষ্টি করেছি   তা তেল উৎপাদন করে এবং আহারকারীদের জন্য তরকারীও৷

(আরো দেখুন : ফ > ফল , ব > বাগান, )

তড়িৎ / তাড়াহুড়া :

আল্লাহ তাড়াহুড়া করেন না :

আল্লাহ যদি  লোকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করার ব্যাপারে অতটাই তাড়াহুড়া করতেন যতটা দুনিয়ার ভালো চাওয়ার ব্যাপারে তারা তাড়াহুড়া করে থাকে, তাহলে তাদের কাজ করার অবকাশ কবেই খতম করে দেয়া হতো (কিন্তু আমার নিয়ম এটা নয়) তাই যারা আমার সাথে সাক্ষাৎ করার আশা পোষণ করে না তাদেরকে আমি তাদের অবাধ্যতার মধ্যে দিশেহারা হয়ে ঘুরে বেড়াবার জন্য ছেড়ে দেই  ১০:১১,

(২১:৩৬) ......এখনই আমি তোমাদের দেখিয়ে দিচ্ছি নিজের নিদর্শনাবলী, আমাকে তাড়াহুড়া করতে বলো না৷

(পরবর্তী ভাষণ পরিস্কার বলে দিচ্ছে এখানে "নিদর্শনাবলী" বলতে কি বুঝাচ্ছে। তারা যেসব কথা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতো তার মধ্যে আল্লাহর আযাব, কিয়ামত ও জাহান্নামের বিবরণও ছিল। তারা বলতো, এ ব্যক্তি প্রতিদিন আমাদের ভয় দেখায়, বলে আমাকে অস্বীকার করলে আল্লাহর আযাব আপতিত হবে, কিয়ামতে তোমাদের শাস্তি দেয়া হবে এবং তোমাদেরকে জাহান্নামের ইন্ধনে পরিণত করা হবে। কিন্তু আমরা প্রতিদিন অস্বীকার করছি এবং হেসে কুঁদে বেড়াচ্ছি, কোন আযাব আসেতে দেখা যাচ্ছে না এবং কোন কিয়ামতও হচ্ছে না। এ আয়াতগুলোয় এরই জবাব দেয়া হয়েছে।)

আরো দেখুন : ম > মানুষ > মানুষ দ্রুততা প্রবণ, অ > অবকাশ > অপরাধিদিগকে শাস্তি দিতে দেরী হওয়ার কারণ কি ? ।

তাকওয়া :  আরো দেখুন : ভ > ভয় :

তাকওয়ার পোষক সর্বোত্তম :

৭:২৬,  

তাকওয়ার পোষাকই সর্বোত্তম : ৭:২৬,

আল্লাহ তাকওয়া অবলম্বনকারীদের পছন্দ করেন : ৯:৪,

অবশ্য দিন  রাতের পরিবর্তনে এবং আল্লাহ আকাশমণ্ডলী  পৃথিবীতে যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তাতে নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা পরহেযগারীতা অর্জন করতে চায় অর্থাৎ, (ভূল দেখা  ভূল আচরণ করা থেকে) আত্মরক্ষা করতে চায় – ১০:০৬,

(১২:৫৭) আর যারা ঈমান এনেছে এবং তাওয়া সহকারে কাজ করতে থেকেছে আখেরাতের প্রতিদান তাদের জন্য আরো ভালো৷

নিশ্চিতভাবেই আখেরাতের আবাস তাদের জন্য আরো বেশী ভালো যারা (নবীর কথা মেনে নিয়ে) তাকওয়ার পথ অবলম্বন করেছে৷ এখনো কি তোমরা বুঝবে না ? (১২:১০৯)

(২৯-আনকাবুত:১৬) আর ইবরাহীমকে পাঠাই   যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলে, “আল্লাহর বন্দেগী করো এবং তাঁকে ভয় করো৷ ২৭   এটা তোমাদের জন্য ভালো যদি তোমরা জানো৷

(২৭ . অর্থাৎ তার সাথে কাউকে শরীক এবং তার নাফরমানী করতে ভয় করো। )

আল্লাহ তাকওয়া অবলম্বনকারীদের সাথে আছেন :

(১৬:১২৮) আল্লাহ তাদের সাথে আছেন যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যারা সৎকর্মপরায়ণ৷

তাকওয়া অর্জনের পদ্ধতি সমূহ :

১। নামাজ :

(২০:১৩২) নিজের পরিবার পরিজনকে নামায পড়ার হুকুম দাও এবং নিজেও তা নিয়মিত পালন করতে থাকো৷ আমি তোমার কাছে কোন রিযিক চাই না, রিযিক তো আমিই তোমাকে দিচ্ছি এবং শুভ পরিণাম তাকওয়ার জন্যই৷

বিনয়ী লোকদের জন্য সুসংবাদ: আর বিনয়ী লোকদের পরিচয় হচ্ছে :

(হাজ্ব:৩৫) যাদের অবস্থা এই যে, আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে তাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে, যে বিপদই তাদের ওপর আসে তার ওপর তারা সবর করে, নামায কায়েম করে এবং যাকিছু রিযিক তাদেরকে আমি দিয়েছি তা থেকে খরচ করে৷

বিস্তারিত দেখুন : ম > মু’মিন > প্রকৃত মু’মিনদের গুণাবলী, অ > অন্তর, ড > ডাকা > আল্লাহকে ডাকা।

কুরবানীর পশুর গোশত  রক্ত আল্লাহর কাছে পৌছে না, পৌছে তোমাদের তাকওয়া :

 (হাজ্ব:৩৭) তাদের গোশতও আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, তাদের রক্তও না৷ কিন্তু তাঁর কাছে পৌঁছে যায় তোমাদের তাকওয়া৷ তিনি তাদেরকে (অর্থাৎ গৃহপালিত পশুগুলিকে) তোমাদের জন্য এমনভাবে অনুগত করে দিয়েছেন যাতে তাঁর দেয়া পথনির্দেশনার ভিত্তিতে তোমরা তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো৷ আর হে নবী! সৎকর্মশীলদেরকে সুসংবাদ দিয়ে দাও৷

(একথাই হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে উদ্ধৃত হয়েছে। তিনি বলেছেনঃ 

"আল্লাহ তোমাদের চেহারা-সুরাত ও তোমাদের রঙ দেখেন না বরং তিনি দেখন তোমাদের মন ও কার্যকলাপ।")

কল্যাণ লাভ করার প্রধান শর্ত হচ্ছে : তাকওয়াবান হওয়া : আল্লাহকে ভয় করা :

(মু’মিনুন:৫৭) আসলে কল্যাণের দিকে দৌড়ে যাওয়া ও অগ্রসর হয়ে তা অর্জনকারী লোক  তো তারাই যারা নিজেদের রবের ভয়ে ভীত 

ইবাদতকারীর মানসিক অবস্থা কিরূপ হওয়া উচিত ? অহমিকা নাকি নম্রতা  ভয় ?

(মুমিনুন:৬০) এবং যাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, যা কিছুই দেয় এমন অবস্থায় দেয় যে,  ৬১) তাদের অন্তর এ চিন্তায় কাঁপতে থাকে যে, তাদেরকে তাদের রবের কাছে ফিরে যেতে হবে৷ ৫৪  

(৫৪ . আরবী ভাষায় ''দেয়া'' ----- শব্দটি শুধুমাত্র সম্পদ বা কোন বস্তু দেয়া অর্থেই ব্যবহার হয় না বরং বিমূর্ত জিনিস দেয়া অর্থেও বলা হয়। যেমন কোন ব্যক্তির আনুগত্য গ্রহণ করার জন্য বলা হয় ----- আবার কোন ব্যক্তির আনুগত্য অস্বীকার করার জন্য বলা হয় ----- কাজেই এ দেয়ার মানে শুধুমাত্র এই নয় যে, তারা আল্লাহর পথে অর্থ-সম্পদ দান করে বরং আল্লাহর দরবারে আনুগত্য ও বন্দেগী পেশ করাও এর অর্থের অন্তরভূক্ত।

এ অর্থের দৃষ্টিতে আয়াতের পুরোপুরি মর্ম এই দাঁড়ায় যে, আল্লাহর হুকুম পালনের ক্ষেত্রে যা কিছু সদাচার, সেবামূলক কাজ ও ত্যাগ করে সে জন্য একটুও অহংকার ও তাকওয়ার বড়াই করে না এবং আল্লাহর প্রিয়পাত্র হয়ে যাবার অহমিকায় লিপ্ত হয় না। বরং নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী সবকিছু করার পরও এ মর্মে আল্লাহর ভয়ে ভীত হতে থাকে যে, না জানি এসব তাঁর কাছে গৃহীত হবে কিনা এবং রবের কাছে মাগফেরাতের জন্য এগুলো যথেষ্ট হবে কিনা। ইমাম আহমাদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, হাকেম ও জারির বর্ণিত নিম্মোক্তা হাদীসটিই এ অর্থ প্রকাশ করে। এখানে হযরত আয়েশা (রা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করেনঃ 'হে আল্লাহর রসূল! এর অর্থ কি এই যে, এক ব্যক্তি চুরি, ব্যভিচার ও শরাব পান করার সময়ও আল্লাকে ভয় করবে৷'' এ প্রশ্ন থেকে জানা যায়, হযরত আয়েশা একে ---------- অর্থে গ্রহণ করছিলেন অর্থাৎ ''যা কিছু করে করেই যায়। জবাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

------------

''না, হে সিদ্দীকের মেয়ে! এর অর্থ হচ্ছে এমন লোক, যে নামায পড়ে, রোযা রাখে, যাকাতা দেয় এবং মহান আল্লাহকে ভয় করতে থাকে।''

এ জবাব থেকে জানা যায় যে, আয়াতের সঠিক পাঠ ----- নয় বরং ----- এবং এ ----- শুধু অর্থ-সম্পদ দান করার সীমিত অর্থে নয় বরং আনুগত্য করার ব্যাপক অর্থে।

একজন মু'মিন কোন্‌ ধরনের মানসিক অবস্থা সহকারে আল্লাহর বন্দেগী করে এ আয়াতটি তা বর্ণনা করে। হযরত উমরের (রা) অবস্থাই এর পূর্ণ চিত্র প্রকাশ করে। তিনি সারা জীবনের অতুলনীয় কার্যক্রমের পর যখন দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে থাকেন তখন আল্লাহর জবাবদিহির ভয়ে ভীত হতে থাকেন এবং যেতে থাকেন, যদি আখেরাতে সমান সমান হয়ে মুক্তি পেয়ে যাই তাহলেও বাঁচোয়া। হযরত হাসান বাসরী (র) বড়ই চমৎকার বলেছেনঃ মু'মিন আনুগত্য করে এরপরও ভয় করে এবং মুনাফিক গোনাহ করে তারপরও নির্ভীক ও বেপরোয়া থাকে।))

তাগুত / বিদ্রোহ : (এ সাথে আরো দেখুন : ব > বিদ্রোহ, ব > বাড়াবাড়ি, ত > তাগুত,  অ > অসৎ নেতা, প > আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করা  )

(যে সত্তা আল্লাহর মুকাবিলায় ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে এবং আল্লাহ ব্যতীত যার বন্দেগী করা হয়, বন্দেগীকারী ব্যক্তি তার প্রভাব প্রতাপে বাধ্য হয়ে করুক বা স্বেচ্ছায় সন্তুষ্টচিত্তে করুক, তাকেই বলা হয় তাগুত। সে মানুষ, শয়তান, প্রতীমা বা অন্য যাই কিছু হোক না কেন । (ইবনে জারীর, আত-ত্বাবারী-জামেউল বয়ান ফী তাফসীরুল কুরআন, ৩য় খন্ড:পৃষ্ঠা-১৩)  

তাগুত সম্পর্কিত আয়াত :

২:২৫৬, ২:২৫৭ (কাফেরদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত) ,  

৪:৫১ (যারা বলে ঈমানদারদের তুলনায় তারাই  নির্ভূল পথে),

৪:৬০ (যারা তাগুতের কাছে বিচার ফায়সালা চায় )

৪:৭৬ (কাফেররা লড়াই করে তাগুতের প্রতিষ্ঠার পথে )

(হাজ্ব:২৫) যারা কুফরী করেছে এবং যারা (আজ) আল্লাহর পথে চলতে বাধা দিচ্ছে আর সেই মসজিদে হারামের যিয়ারতে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে যাকে আমি তৈরি করেছি সব লোকের জন্য যাতে স্থানীয় বাসিন্দা ও বহিরাগতদের অধিকার সমান৷  (তাদের নীতি অবশ্যই শাস্তিযোগ্য) এখানে (মসজিদে হারামে) যে-ই সত্যতা থেকে সরে গিয়ে জুলুমের পথ অবলম্বন করবে  তাকেই আমি যন্ত্রণাদায়ক আযাবের স্বাদ আস্বাদান করাবো৷

(২৯-আনকাবুত:৩৬) ......যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী হয়ে বাড়াবাড়ি করে বেড়িও না৷”  

ফেরাউন : তাগুতের গুরুত্বপূর্ণ উদাহারণ :

(২৮-ক্বাছাছ : ৩৮) আর ফেরাউন বললো, "হে সভাসদবর্গ! তো আমি নিজেকে ছাড়া তোমাদের আর কোন প্রভু আছে বলে জানি না৷  ওহে হামান! আমার জন্য ইঁট পুড়িয়ে একটি উঁচু প্রাসাদ তৈরি করো, হয়তো তাতে উঠে আমি মূসার প্রভুকে দেখতে পাবো, আমিতো তাকে মিথ্যুক মনে করি৷"

(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : র > রাষ্ট > ফেরাউন রাজনৈতিক অর্থে নিজেকে “খোদা/রব” দাবী করেছিল। )

তাগুতের পরিণাম  / প্রতিফল / প্রতিদান :

(২৮-ক্বাছাছ : ৩৯) সে এবং তার সৈন্যরা পৃথিবীতে কোন সত্য ছাড়াই নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের অহংকার করলো৫৪ এবং মনে করলো তাদের কখনো আমার কাছে ফিরে আসতে হবে না৷৫৫ 

৫৪. অর্থাৎ এ বিশ্ব জাহানে একমাত্র আল্লাহ রব্বুল আলামীনই শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী। কিন্তু ফেরাউন এবং তার সৈন্যরা পৃথিবীর একটু ক্ষুদ্র অংশে সামান্য একটু কর্তৃত্বের অধিকারী হয়ে মনে করে বসলো এখনো একমাত্র তারাই শ্রেষ্ঠ এবং তাদেরই সর্বময় কর্তৃত্ব ও আধিপত্য বিরাজিত।

৫৫. অর্থাৎ, তারা নিজেদের ব্যাপারে মনে করলো তাদেরকে কোথাও জিজ্ঞাসিত হতে হবে না। আর তাদেরকে কারো কাছে জবাবদিহি করতে হবে না মনে করে তারা স্বেচ্ছাচারমূলক কাজ করতে লাগলো।

(২৮-ক্বাছাছ : ৪০) শেষে আমি তাকে ও তার সৈন্যদেরকে পাকড়াও করলাম এবং সাগরে নিক্ষেপ করলাম৷৫৬ এমন এ জালেমদের পরিণাম কি হয়েছে দেখে নাও৷  

৫৬. এ শব্দগুলোর মাধ্যমে মহান আল্লাহ্ তাদের মিথ্যা অহমিকার মোকাবেলায় তাদের নিকৃষ্টতা ও হীনতার চিত্র তুলে ধরেছেন। তারা নিজেদেরকে অনেক বড় কিছু মনে করে বসেছিল। কিন্তু সঠিক পথে আসার জন্য আল্লাহ্ তাদেরকে যে অবকাশ দিয়েছিলেন তা যখন খতম হয়ে গেলো তখন তাদেরকে এমনভাবে সাগরে নিক্ষেপ করা হলো যেমন খড়কুটা ও ময়লা-আবর্জনা নিক্ষেপ করা হয়।

(২৯-আনকাবুত:৩৬) ......যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী হয়ে বাড়াবাড়ি করে বেড়িও না৷”  ৩৭) কিন্তু তারা তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করলো৷   শেষে একটি প্রচণ্ড ভূমিকম্প তাদেরকে পাকড়াও করলো এবং তারা নিজেদের ঘরের মধ্যে   মরে পড়ে থাকলো৷

তাগুত হচ্ছে জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী নেতা :

(২৮-ক্বাছাছ : ৪১) তাদেরকে আমি জাহান্নামের দিকে আহবানকারী নেতা করেছিলাম৫৭ এবং কিয়ামতের দিন তারা কোথাও থেকে কোন সাহায্য লাভ করতে পারবে না৷৪২) এ দুনিয়ায় আমি তাদের পেছনে লাগিয়ে দিয়েছি অভিসম্পাত এবং কিয়ামতের দিন তারা হবে বড়ই ঘৃণার্হ ও ধিকৃত৷৫৮ 

৫৭. অর্থাৎ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তারা একটি দৃষ্টান্ত কায়েম করে গেছে। জুলুম কিভাবে করা হয় , সত্য অস্বীকার করে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার উপর কিভাবে অবিচল থাকা যায় এবং সত্যের মোকাবিলায় বাতিলের জন্য লোকেরা কেমন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, এসব তারা করে দেখিয়ে দিয়ে গেছে। দুনিয়াবাসীকে এসব পথ দেখিয়ে দিয়ে তারা জাহান্নামের দিকে এগিয়ে গেছে। এখন তাদের উত্তরসূরীরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে সেই মনযিলের দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।

৫৮. মূলে বলা হয়েছে, কিয়ামতের দিন তারা "মাকবূহীন"দের অন্তরভুক্ত হবে। এর কয়েকটি অর্থ হতে পারে। তারা হবে প্রত্যাখ্যাত ও বহিস্কৃত । আল্লাহর রহমত থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা হবে। তাদের অবস্থা বড়ই শোচনীয় করে দেয়া হবে। তাদের চেহারা বিকৃত করে দেয়া হবে।

যারা কুরআন শোনে কিন্তু মানতে চায় না : এবং অপরকেও কুরআন শুনতে দিতে চায় না :

 ৬:২৫-২৯, ১৫৭,

তাগুতি করা / বিদ্রোহ করা / বাড়াবাড়ি করা / সীমালংঘণ করা :

হে মানষ! তোমাদের  বিদ্রোহ উল্টা তোমাদের বিরুদ্ধেই চলে যাচ্ছে৷ দুনিয়ার কয়েকদিনের আরাম আয়েশ (ভোগ করে নাও), তারপর্ আমার দিকেই তোমাদের ফিরে আসতে হবে৷ তোমরা কি কাজে লিপ্ত ছিলে তা তখন তোমাদের আমি জানিয়ে দেবো৷ - ১০:২৩ 

(১১:১১২) কাজেই হে মুহাম্মদ৷ তুমিও তোমার সাথীরা যারা (কুফরী ও বিদ্রোহ থেকে ঈমান ও অনুগত্যের দিকে) ফিরে এসেছে সত্য সঠিক পথে অবিচল থাকো যেমন তোমাকে হুকুম দেয়া হয়েছে এবং বন্দেগীর সীমানা অতিক্রম করো না৷ তোমরা যা কিছু করছো তার ওপর তোমাদের রব দৃষ্টি রাখেন৷  

(১৭:৪) তারপর আমি নিজের কিতাবে   বনী ইসরাঈলকে এ মর্মে সতর্ক করে দিয়েছিলাম যে, তোমরা দুবার পৃথিবীতে বিরাট বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং ভীষণ বিদ্রোহাত্মক আচরণ করবে৷

(২০:৮১) --খাও আমার দেওয়া পবিত্র রিযিক এবং তা খেয়ে সীমালংঘন করো না (তাগুতি বা বিদ্রোহ করোনা), অন্যথায় তোমাদের ওপর আমার গযব আপতিত হবে৷ আর যার ওপর আমার গযব আপতিত হয়েছে তার পতন অবধারিত৷

(২১:৯) তারপর দেখে নাও আমি তাদের সাথে আমার প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছি এবং তাদেরকে ও যাকে যাকে আমি চেয়েছি রক্ষা করেছি এবং সীমালংঘনকারীদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি৷

(২৮-ক্বাছাছ:৪) প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, ফেরাউন পৃথিবীতে বিদ্রোহ করে

৩. মূলে عَلَا فِي الْأَرْضِ শব্দাবলী ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে , সে পৃথিবীতে মাথা উঠিয়েছে, বিদ্রোহাত্মক নীতি অবলম্বন করেছে, নিজের আসল মর্যাদা অর্থাৎ দাসত্বের স্থান থেকে উঠে স্বেচ্ছাচারী ও প্রভুর রূপ ধারণ করেছে, অধীন হয়ে থাকার পরিবর্তে প্রবল হয়ে গেছে এবং স্বৈরাচারী ও অহংকারী হয়ে জুলুম করতে শুরু করেছে।

    (এ সাথে আরো দেখুন : ব > বিদ্রোহ, ব > বাড়াবাড়ি, ত > তাগুত,  অ > অসৎ নেতা )

সাংস্কৃতিক তাগুত :

শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মাধ্যমেও মানুষকে ইসলামের পথ থেকে দুরে সরিয়ে রাখার প্রচেষ্টা করা হয়ে থাকে :

(৩১-লোকমান: ৬) আর মানুষদেরই মধ্যে এমনও কেউ আছে, ৫   যে মনোমুগ্ধকর কথা   কিনে আনে লোকদেরকে জ্ঞান ছাড়াই   আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য এবং এ পথের আহ্বানকে হাসি-ঠাট্টা করে উড়িয়ে দেয়৷   এ ধরনের লোকদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব৷ ৯  ৭) তাকে যখন আমার আয়াত শুনানো হয় তখন সে বড়ই দর্পভরে এমনভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয় যেন সে তা শুনেইনি, যেন তার কান কালা৷ বেশ, সুখবর শুনিয়ে দাও তাকে একটি যন্ত্রণাদায়ক আযাবের৷  

(বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ল > লাহওয়াল হাদীস) ।

অসৎ নেতৃত্বের জবাবদিহিতা সাধারণ অপরাধীদের চেয়ে বেশী :

(১৯:৬৮) তোমার রবের কসম আমি নিশ্চয়ই তাদেরকে এবং তাদের সাথে শয়তানদেরকেও ঘেরাও করে আনবো, তারপর তাদেরকে এনে জাহান্নামের চারদিকে নতজানু করে ফেলে দেবো৷  ৬৯) তারপর প্রত্যেক দলের মধ্যে যে ব্যক্তি করুণাময়ের বেশী অবাধ্য ও বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল তাকে ছেঁটে বের করে আনবো৷৭০) তারপর আমি জানি তাদের মধ্য থেকে কারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবার বেশী হকদার৷

তাগুত :  এ সাথে দেখুন : যারা আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে :

আল্লাহ তাদের অবাধ্যতার মধ্যে উদভ্রান্তের মত ঘুরে বেড়াবার জন্য ছেড়ে দেন : ৭:১৮৬,

(১৬:৩৬) প্রত্যেক জাতির মধ্যে আমি একজন রসূল পাঠিয়েছি এবং তার মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি যে, “আল্লাহর বন্দেগী করো এবং তাগূতের বন্দেগী পরিহার করো৷”

(১৬:৮৮) যারা নিজেরাই কুফরীর পথ অবলম্বন করেছে এবং অন্যদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়েছে তাদেরকে আমি আযাবের পর আযাব দেবো,  দুনিয়ায় তারা যে বিপর্যয় সৃষ্টি করতো তার বদলায়৷

(১৭:৬০) আমি এদেরকে অনবরত সতর্ক করে যাচ্ছি কিন্তু প্রতিটি সতর্ক সংকেত এদের অবাধ্যতা ও বাড়াবাড়ি আরো বাড়িয়ে চলছে৷

(২০:২৪) এখন তুমি যাও ফেরাউনের কাছে, সে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে  

(২০:৪৩) যাও, তোমরা দু’জন ফেরাউনের কাছে, সে বিদ্রোহী হয়ে গেছে৷

(এ সাথে আরো দেখুন : ব > বিদ্রোহ, ব > বাড়াবাড়ি, ত > তাগুত,  অ > অসৎ নেতা )

তাগুতকে যারা সাহায্য করে তারা কাফের :

(২৫.ফুরকান:৫৫)....কাফের নিজের রবের মোকাবিলায় প্রত্যেক বিদ্রোহীর সাহায্যকারী হয়ে আছে৷

(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ই > ইসলামী বিরোধী > ইসলাম বিরোধীদেরকে যারা সাহায্য করে তারা কাফের । )

যারা তাগুতকে মানে তারাই ক্ষতিগ্রস্থ :

(২৯-আনকাবুত:৫২)....যারা বাতিলকে মানে ও আল্লাহকে অমান্য করে তারাই ক্ষতিগ্রস্থ

যারা আল্লাহ কে বাদ দিয়ে তাগুতকে অভিভাবক বানায়, তাদের ঘর মাকড়সার ঘরের মত দুর্বল:

(২৯-আনকাবুত:৪১) যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে পৃষ্ঠপোষক বানিয়ে নিয়েছে তাদের দৃষ্টান্ত হলো মাকড়সা৷ সে নিজের একটি ঘর তৈরি করে এবং সব ঘরের চেয়ে বেশি দুর্বল হয় মাকড়সার ঘর৷ হায় যদি এরা জানতো! ৭৩  ৪২) এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যে জিনিসকেই ডাকে আল্লাহ তাকে খুব ভালোভাবেই জানেন এবং তিনিই পরাক্রান্ত ও জ্ঞানী৷

(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ম > মাকড়সা)

তাকদীর :

আরো দেখুন : ল > লাওহে মাহফুজ।

(ফুরকান:২)...যিনি প্রত্যেকটি জিনিস সৃষ্টি করেছেন তারপর তার একটি তাকদীর নির্ধারিত করে দিয়েছেন৷

তাকদীর : ৭:৩৭,

(হাজ্ব:৭০) ...সবকিছু একটি কিতাবে লিখিত আছে৷ আল্লাহর জন্য এটা মোটেই কঠিন নয়৷

প্রকৃত মু’মিনরা বলে “আল্লাহ আমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা ছাড়া আর কোন (ভাল বা মন্দ )কিছুই আমাদের হয় না৷ আল্লাহই আমাদের অভিভাবক  কার্যনির্বাহক এবং ঈমানদরদের তাঁর ওপরই ভরসা করা উচিত” – ৯:৫১ তবে আমাদের দুটি ভালোর মধ্যে একটি ভালো তো অবশ্যই হবে (জিহাদের ময়দানে ভালো বা মন্দ প্রসঙ্গে): ৯:৫২,

আকাশ  পৃথিবীর মধ্যে কোন অণুপরিমাণ বস্তুও এমন নেই, এবং তার চেয়ে ছোট বা বড় কোন জিনিস  নেই, যা তোমাদের রবের দৃষ্টিতে অগোচরে আছে এবং যা একটি সুষ্পষ্ট কিতাবে লেখা নেই৷-১০:৬১,

(৫৭:২২) পৃথিবীতে এবং তোমাদের নিজেদের ওপর যেসব মুসিবত আসে তার একটিও এমন নয় যে, তাকে আমি সৃষ্টি করার পূর্বে একটি গ্রন্থে লিখে রাখিনি৷ এমনটি করা আল্লাহর জন্য খুবই সহজ কাজ৷(৩) (এ সবই এজন্য) যাতে যে ক্ষতিই তোমাদের হয়ে থাকুক তাতে তোমরা মনক্ষুন্ন না হও৷ আর আল্লাহ তোমাদের যা দান করেছেন ৷ সেজন্য গর্বিত না হও৷  যারা নিজেরা নিজেদের বড় মনে করে এবং অহংকার করে,  (২৪) নিজেরাও কৃপণতা করে এবং মানুষকেও কৃপণতা করতে উৎসাহ দেয়  আল্লাহ তাদের পছন্দ করেন না৷ এরপর ও যদি কেউ মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে আল্লাহ অভাবশূন্য ও অতি প্রশংসিত৷

(১১:৬) ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নেই যার রিযিকের দায়িত্ব আল্লাহর ওপর বর্তায় না এবং যার সম্পর্কে তিনি জানেন না, কোথায় সে থাকে এবং কোথায় তাকে সোপর্দ করা হয়৷

(১১:৬) সবকিছুই একটি পরিষ্কার কিতাবে লেখা আছে৷

(১৩:৮)তাঁর কাছে প্রত্যেক জিনিসের জন্য একটি পরিমাণ নির্দিষ্ট রয়েছে৷

(১৫:২১) এমন কোনো জিনিস নেই যার ভাণ্ডার আমার কাছে নেই এবং আমি যে জিনিসই অবতীর্ণ করি একটি নির্ধারিত পরিমাণেই করে থাকি

(১৭:৫৮) আর এমন কোনো জনপদ নেই, যা আমি কিয়ামতের আগে ধ্বংস করে দেবো না  অথবা যাকে কঠোর শাস্তি দেবো না, আল্লাহর লিখনে এটা লেখা আছে৷ 

সুষ্পষ্ট কিতাবে সবকিছুই লিপিবদ্ধ আছে :

৬:৫৯,

(মু’মিনুন:৬২)....এবং আমার কাছে একটি কিতাব আছে যা (প্রত্যেকের অবস্থা) ঠিকমতো জানিয়ে দেয়

(২৭.নামল:৭৫) আকাশ ও পৃথিবীর এমন কোন গোপন জিনিস নাই যা একটি সুস্পষ্ট কিতাবে লিখিত আকারে নেই৷৯২ 

(৯২. এখানে কিতাব মানে কুরআন নয় বরং বরং মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহর রেকর্ড, যাতে ছোট বড় ও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সবকিছু রক্ষিত আছে।)

(আরো দেখুন : ল > লাওহে মাহফুজ)

(৩৪-সাবা: )......অণুর চেয়ে বড়ই হোক, কিংবা তা চেয়ে ছোটই হোক, সবকিছুই একটি সুস্পষ্ট কিতাবে লেখা আছে৷  

৭. আখেরাতের সম্ভাবনার সপক্ষে যেসব যুক্তি পেশ করা হয় এটি তার অন্যতম। যেমন সামনের দিকে ৭ আয়াতে আসছে। আখেরাত অস্বীকারকারীরা যেসব কারণে মৃত্যুর পরের জীবনকে যুক্তি বিরোধী মনে করতো তার মধ্যে একটি কথা ছিল এই যে, যখন সমস্ত মানুষ মরে মাটিতে মিশে যাবে এবং তাদের দেহের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ গুলোও চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে তখন এ অসংখ্য অংশের আবার কিভাবে একত্র হওয়া সম্ভব হবে এবং এগুলোকে এক সাথে জুড়ে আবার কেমন করে তাদেরকে সেই একই দেহাবয়বে সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। একথা বলে এ সন্দেহ নিরসন করা হয়েছে যে, আল্লাহর দপ্তরে এসব লিখিত আছে এবং আল্লাহ জানেন কোন জিনিসটি কোথায় গেছে। যখন তিনি পুনর্বার সৃষ্টি করার সংকল্প করবেন তখন তার পক্ষে প্রতিটি ব্যক্তির দেহের অংশগুলো একত্র করা মোটেই কষ্টকর হবে না।

তাকদীরের কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে বলেই কি মানুষ জান্নাতে বা জাহান্নামে যাবে ?

নাকি মানুষ তার কর্মের দ্বারা জান্নাতে বা জাহান্নামে যাবে এবং আল্লাহ আলেমুল গায়েব এ বিষয়টি পূর্বাহ্নে জানেন বলেই তাকদীরের কিতাবে লিখে রেখেছেন ? :  

কর্মের প্রতিফল হিসেবেই মানুষ জাহান্নামের যোগ্য হয়ে পড়ে :

 (হাজ্ব:৯) আল্লাহর ব্যাপারে বিতর্ক করে, যাতে লোকদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ভ্রষ্ট করা যায়৷  এমন ব্যক্তির জন্য রয়েছে দুনিয়ায় লাঞ্ছনা এবং কিয়ামতের দিন আমি তাকে আগুনের আযাবের জ্বালা আস্বাদন করাবো৷

(হাজ্ব:১০) এ হচ্ছে তোমার ভবিষ্যত, যা তোমার হাত তোমার জন্য তৈরি করেছে, নয়তো আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি যুলুম করেন না৷

কর্মের প্রতিদান হিসেবে জান্নাত দেওয়া হবে :

সে সময় আওয়াজ ধ্বনিত হবে : তোমাদেরকে এই যে জান্নাতের উত্তরাধিকারী বানানো হয়েছে, এটা তোমরা লাভ করেছো সেই সমস্ত কাজের প্রতিদানে যেগুলো তোমরা অব্যাহত ভাবে করতে”-৭:৪৩,

যেমন কর্ম তেমন ফল :

ক্রমাগত ভাবে সত্য অস্বীকার করার কারণে হেদায়েত লাভের তৌফিক ছিনিয়ে নেয়া হয় ফলে পরকালীন শাস্তির যোগ্য হয়ে পড়ে :

কোন প্রকার অধিকার ছাড়াই যারা পৃথিবীতে বড়াই করে বেড়ায়, শীঘ্রই আমার নিদর্শনসমূহ থেকে আমি তাদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেবো৷ তারা আমার যে কোন নিদর্শন দেখলেও তার প্রতি ঈমান আনবে না৷ তাদের সামনে যদি সোজা পথ এসে যায় তাহলে তারা তা গ্রহণ করবেনা৷ আর যদি বাঁকা পথ দেখতে পায় তাহলে তারা ওপর চলতে আরম্ভ করবে৷ কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা বলেছে এবং সেগুলোর ব্যাপারে বেপরোয়া থেকেছে৷  আমার নিদর্শনসমূহকে যারাই মিথ্যা বলছে এবং আখেরাতের সাক্ষাতের কথা অস্বীকার করেছে তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ড ব্যর্থ হয়ে গেছে ৷   যেমন কর্ম তেমন ফল- এ ছাড়া লোকেরা কি আর কোন প্রতিদান পেতে পারে?-৭:১৪৬-১৪৭,

(বিস্তারিত দেখুন : ক > কর্মফল,  ম > মোহর > মানুষের অন্তরে কেন আল্লাহ মোহর মেরে দেন ? )

আল্লাহর ফায়সালায় যারা সন্তুষ্ট থাকেনা তাদের প্রতি হুশিয়ারী :

(হাজ্ব:১৫) যে ব্যক্তি ধারণা করে, আল্লাহ দুনিয়ায় ও আখেরাতে তাকে কোনো সাহায্য করবেন না তার একটি রশির সাহায্যে আকাশে পৌঁছে গিয়ে ছিদ্র করা উচিত তারপর দেখা উচিত তার কৌশল এমন কোনো জিনিসকে (অর্থাৎ, আল্লাহর ফায়সালাকে) রদ করতে পারে কিনা যা তার বিরক্তি ও ক্ষোভের কারণ৷১৬) --এ ধরনেরই সুস্পষ্ট কথা সহযোগে আমি কুরআন নাযিল করেছি, আর আল্লাহ যাকে চান তাকে সৎপথ দেখান৷

(অর্থাৎ, মানুষের আসল কর্তব্য হচ্ছে ভালো মন্দ সর্বাবস্থায় সৎপথে অটল থাকা)

ফলাফল কি কর্ম অনুযায়ী হয় ? না তাকদীর অনুযায়ী ?

(নূর:৩৮) (আর তারা এসব কিছু এ জন্য করে) যাতে আল্লাহ তাদেরকে তাদের সর্বোত্তম কর্মের প্রতিদান দেন এবং তদুপরি নিজ অনুগ্রহ দান করেন ৷ আল্লাহ যাকে চান বেহিসেব দান করেন৷৬৯  

(৬৯ . আল্লাহর আসল আলো উপলব্ধি ও তার ধারায় অবগাহন করার জন্য যেসব গুনের প্রয়োজন এখানে সেগুলোর ব্যাখ্যা করে দেয়া হয়েছ। আল্লাহ অন্ধ বন্টনকারী নন। যাকে ইচ্ছা এমনি বিনা কারণে তার পাত্র এমনভাবে ভরে দেবেন যে, উপচে পড়ে যেতে থাকবে আবার যাকে ইচ্ছ গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবেন, এটা আল্লাহর বন্টন নীতি নয়। তিনি যাকে দেন, দেখেশুনেই দেন। সত্যের নিয়ামত দান করার ব্যাপারে তিনি যা কিছু দেখেন তা হচ্ছেঃ মানুষের মনে তাঁর প্রতি ভালোবাসা, আগ্রহ, আকর্ষণ, ভয় এবং তাঁর পুরস্কার গ্রহনের আকাংখা ও ক্রোধ থেকে বাঁচার অভিলাষ আছে। সে পার্থিব স্বার্থ পূজায় নিজেকে বিলীন করে দেয়নি। বরং যাবতীয় কর্মব্যস্ততা সত্ত্বেও তার সমগ্র হৃদয়-মন আচ্ছন্ন করে থাকে তার মহান প্রতিপালকের স্মৃতি। সে রসাতলে যেতে চায় না বরং কার্যত এমন উচ্চমার্গে উন্নীত হতে চায় যেদিক তার মালিক তাকে পথ দেখাতে চায়। সে এ দু'দিনের জীবনের লাভ প্রত্যাশী হয় না বরং তার দৃষ্টি থাকে আখেরাতের চিরন্তন জীবনের ওপর। এসব কিছু দেখে মানুষকে আল্লাহর আলোয় অবগাহন করার সুযোগ দেবার ফায়সালা করা হয়। তারপর যখন আল্লাহ দেবার জন্য এগিয়ে আসে তখন এত বেশী দিয়ে দেন যে, মানুষে নিজের নেবার পাত্র সংকীর্ণ থাকলে তো ভিন্ন কথা, নয়তো তাঁর দেবার ব্যাপারে কোন সীমাবদ্ধতা এবং শেষ সীমানা নেই।)

তাইয়্যেবা :

কালিমায়ে তাইয়্যেবা  কালিমায়ে খাবীসা  :

(১৪:২৪) তুমি কি দেখছো না আল্লাহ কালেমা তাইয়েবার  উপমা দিয়েছেন কোন্‌ জিনিসের সাহায্যে ? এর উপমা হচ্ছে যেমন একটি ভালো জাতের গাছ, যার শিকড় মাটির গভীরে প্রোথিত এবং শাখা-প্রশাখা আকাশে পৌঁছে গেছে৷২৫) প্রতি মুহূর্তে নিজের রবের হুকুমে সে ফলদান করে৷  এ উপমা আল্লাহ এ জন্য দেন যাতে লোকেরা এর সাহায্যে শিক্ষা লাভ করতে পারে৷২৬) অন্যদিকে অসৎ বাক্যের  (কালিমায়ে খাবীসা)উপমা হচ্ছে, একটি মন্দ গাছ, যাকে ভূপৃষ্ঠ থেকে উপড়ে দূরে নিক্ষেপ করা হয়, যার কোন স্থায়িত্ব নেই৷

পবিত্র কথা : যেখানে এর অর্থ কালিমা তাইয়্যেবা :

(হাজ্ব:২৪) তাদেরকে পবিত্র কথা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে  এবং তাদেরকে দেখানো হয়েছে শ্রেষ্ঠ গুণাবলী সম্পন্ন আল্লাহর পথ৷

(যদিও পবিত্র কথা শব্দের অর্থ ব্যাপক কিন্তু এখানে এর অর্থ হচ্ছে সে কালেমায়ে তাইয়েবা ও সৎ আকীদ-বিশ্বাস যা গ্রহণ করে সে মু'মিন হয়েছে।)

(আরো বিস্তারিত দেখুন : ক > কালিমা : কালেমা )

তাজকিয়া : আত্মশুদ্ধি :

৪:৪৯ (যারা আত্মশুদ্ধির বড়াই করে বেড়ায় ) ।

তারা / তারকা :

আকাশের তারকার মাধ্যমে দিক নির্ণয়  পথ নির্দেশনা লাভ :

(১৬:১৬) তিনি ভূপৃষ্ঠে পথনির্দেশক চিহ্নসমূহ রেখে দিয়েছেন  এবং তারকার সাহায্যেও মানুষ পথনির্দেশ পায়৷

আল্লাহ তারা সৃষ্টি করেছেন সমুদ্রের গভীর অন্ধকারে পথের দিশা জানার জন্য : ৬:৯৭,

(১৬:১৬) তিনি ভূপৃষ্ঠে পথনির্দেশক চিহ্নসমূহ রেখে দিয়েছেন এবং তারকার সাহায্যেও মানুষ পথনির্দেশ পায়

(অর্থাৎ আল্লাহ সমগ্র পৃথিবীটাকে একই ধারায় সৃষ্টি করেননি । বরং প্রত্যেকটি এলাকাকে বিভিন্ন বৈশিষ্ট দ্বারা চিহ্নিত করেছেন । এর অন্যান্য বিভিন্ন উপকারিতার মধ্যে একটি অন্যতম উপকারিতা হচ্ছে এই যে, মানুষ নিজের পথ ও গন্তব্য আলাদাভাবে চিনে নেয় । এ নিয়ামতের মর্যাদা মানুষ তখনই অনুধাবন করতে পারে যখন ঘটনাক্রমে এমন কোন বালুকাময় মরু প্রান্তরে তাকে যেতে হয় যেখানে এ ধরনের বৈশিষ্টমূলক চিহ্নের প্রায় কোন অস্তিত্বই থাকে না এবং মানুষ প্রতি মুহূর্তে পথ হারিয়ে ফেলার ভয় করতে থাকে । সামুদ্রিক সফরে মানুষ এর চেয়ে আরো বেশী মারাত্মকভাবে এ বিরাট নিয়ামতটি অনুভব করতে থাকে । কারণ সেখানে পথের নিশানী প্রায় একেবারেই থাকে না । কিন্তু মরুভূমি ও সমুদ্রের বুকেও আল্লাহ মানুষের পথ দেখাবার জন্য একটি প্রাকৃতিক ব্যবস্থা করে রেখেছেন । সেখানে প্রাচীনকাল থেকে নিয়ে আজ পর্যন্তও মানুষে তারকার সাহায্যে পথের সন্ধান করে আসছে । )

(এখানে আবার তাওহীদ ও রবুবীয়াতের যুক্তির মাঝখানে রিসালাতের যুক্তির দিকে একটি সূক্ষ্ম ইংগিত করা হয়েছে । এ স্থানটি পড়তে গিয়ে মন আপনা আপনি এই বিষয়বস্তুর প্রতি নিবিষ্ট হয়ে যায় যে, আল্লাহ তোমাদের বস্তুগত জীবনে পথনির্দেশনার জন্য এতসব ব্যবস্থা করে রেখেছেন তিনি কি তোমাদের নৈতিক জীবনের ব্যাপারে এতই বেপরোয়া হয়ে যেতে পারেন যে, এখানে তোমাদের পথ দেখাবার কোন ব্যবস্থাই করবেন না ৷ একথা সুস্পষ্ট, বস্তুগত জীবনে পথভ্রষ্ট হবার সবচেয়ে বড় ক্ষতি নৈতিক জীবনে পথভ্রষ্ট হবার ক্ষতির তুলনায় অতি সামান্যই বিবেচিত হয় । এ ক্ষেত্রে বলা যায়, মহান করুণাময় রব যখন আমাদের বৈষয়িক জীবনকে সহজ ও সফল করার জন্য পাহাড়ের মধ্যে আমাদের জন্য পথ তৈরী করেন, সমতল ক্ষেত্রে পথের চিহ্ন স্থাপন করেন, মরুভূমি ও সাগরের বুকে আমাদের দিকনির্দেশনার জন্য আকাশে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখেন তখন তাঁর সম্পর্কে আমরা কেমন করে এ কুধারণা পোষণ করতে পারি যে, তিনি আমাদের নৈতিক সাফল্য ও কল্যাণের জন্য কোন পথই তৈরী করেননি, সেই পথকে সুষ্পষ্ট করে করে তোলার জন্য কোন চিহ্নও দাঁড় করাননি এবং তাকে পরিষ্কারভঅবে দেখিয়ে দেবার জন্য কোন উজ্জ্বল প্রদীপও জ্বালাননি ৷ )

তাড়াহুড়া :

আযাব আসার জন্য তাড়াহুড়া করোনা :

(১৯:৮৪) বেশ তাহলে এখন এদের উপর আযাব নাযিল করার জন্য অস্থির হয়ো না, আমি এদের দিন গণনা করেছি৷

অপরাধীদের অবকাশ দেবার কারণ কি ? আযাব আসতে দেরী হওয়ার কারণ কি ?  

দেখুন : অ > অবকাশ

ত্বরাপ্রবণ :

মানুষ বড়ই ত্বরা প্রবণ, দেখুন ম > মানুষ ।

তালুত এর ঘটনা :

২:২৪৬-২৫২,

তায়াম্মুম :

৪:৪৩, ৫:৬ ।  

:তাসবীহ:

আকাশ  পৃথিবীর সব কিছুই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছে :

(১৭:৪৪) তাঁর পবিত্রতা তো বর্ণনা করছে সাত আকাশ ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে যা কিছু আছে সব জিনিসই৷  এমন কোনো জিনিস নেই যা তাঁর প্রশংসা সহকারে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছে না,  কিন্তু তোমরা তাদের পবিত্রতা ও মহিমা কীর্তন বুঝতে পারো না৷

তাহাজ্জুদ এর  নামাজ :

(১৭:৭৯) আর রাতে তাহাজ্জুদ পড়ো  এটি তোমার জন্য নফল৷  অচিরেই তোমার রব তোমাকে “প্রশংসিত স্থানে” প্রতিষ্ঠিত করবেন৷

মু’মিনগণ শেষ রাতে ক্ষমা প্রার্থনাকারী : ৩:১৭,

প্রকৃত ঈমানদারদের পরিচয় হচ্ছে তারা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে :

(৩২- আস-সাজদা : ১৬) তাদের পিঠ থাকে বিছানা থেকে আলাদা, নিজেদের রবকে ডাকে আশংকা ও আকাঙ্ক্ষা সহকারে ২৭   ১৭) তারপর কেউ জানে না তাদের কাজের পুরস্কার হিসেবে তাদের চোখের শীতলতার কি সরঞ্জাম লুকিয়ে রাখা হয়েছে৷ ২৯  

২৭ . অর্থাৎ আয়েশ-আরাম করে রাত কাটাবার পরিবর্তে তারা নিজেদের রবের ইবাদাত করে। তাদের অবস্থা এমনসব দুনিয়াপূজারীদের মতো নয় যাদের দিনের পরিশ্রমের কষ্ট দূর করার জন্য রাতে নাচ-গান , শরাব পান ও খেলা তামাশার মতো আমোদ প্রমোদের প্রয়োজন হয়। এর পরিবর্তে তাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, সারা দিন নিজেদের দায়িত্ব পালন করে কাজ শেষে এসে দাঁড়ায় তারা নিজেদের রবের সামনে । তাকে স্মরণ করে রাত কাটিয়ে দেয়। তার ভয়ে কাঁপতে থাকে এবং তার কাছেই নিজেদের সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা সমর্পণ করে।

২৯ . বুখারী, মুসলিম , তিরমিযী ও মুসনাদে আহমাদে বিভিন্ন সূত্রে হযরত আবু হুরাইরা (রা) বর্ণিত এই হাদীসে কুদসীটি উদ্ধৃত হয়েছে যে, নবী (সা ) বলেছেনঃ

----------------------------

" আল্লাহ বলেন, আমার সৎকর্মশীল বান্দাদের জন্য আমি এমনসব জিনিস সংগ্রহ করে রেখেছি যা কখনো কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেনি এবং কোন মানুষ কোনদিন তা কল্পনাও করতে পারে না।"

এ বিষয়বস্তু সামান্য শাব্দিক হেরফের করে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) , হযরত মুগীরাহ ইবনে শু'বা (রা) এবং হযরত সাহল ইবনে সা'আদ সায়েদী নবী করীম (সা) থেকে রেওয়াযাত করেছেন এবং মুসলিম, আহমাদ, ইবনে জারীর ও তিরমিযী সহীহ সনদ সহকারে তা উদ্ধৃত করেছেন।

তামা :

গলিত লোহা  তামার দ্বারা নির্মিত প্রাচীর :

(১৮:৯৬) আমাকে লোহার পাত এনে দাও৷” তারপর যখন দু পাহাড়ের মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা সে পূর্ণ করে দিল তখন লোকদের বললো, এবার আগুন জ্বালাও৷ এমনকি যখন এ (অগ্নি প্রাচীর) পুরোপুরি আগুনের মতো লাল হয়ে গেলো তখন সে বললো, “আনো, এবার আমি গলিত তামা এর উপর ঢেলে দেবো৷” ৯৭) (এ প্রাচীর এমন ছিল যে) ইয়াজুজ ও মাজুজ এটা অতিক্রম করেও আসতে পারতো না এবং এর গায়ে সুড়ংগ কাটাও তাদের জন্য আরো কঠিন ছিল৷ 

হযরত সুলাইমান : এর জন্য ছিল গলিত তামার প্রস্রবন :  এর প্রকৃত অর্থ কি ?

(৩৪-সাবা: ১২) আর সুলাইমানের জন্য ......  গলিত তামার প্রস্রবণ প্রবাহিত করেছিলাম  ৷১৮

১৮. কোন কোন প্রাচীন তাফসীরকার এর এ অর্থ গ্রহণ করেছেন যে, ভূগর্ভ থেকে হযরত সুলাইমানের জন্য একটি প্রস্রবণ প্রবাহিত হয়েছিল।তাতে পানির পরিবর্তে গলিত তামা প্রবাহিত হতো। কিন্তু আয়াতের অন্য ব্যাখ্যা এও হতে পারে যে, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের আমলে তামা গলাবার এবং তার সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার জিনিস তৈরি করার কাজ এত ব্যাপক আকারে চলতো যেন মনে হতো সেখানে তামার প্রস্রবণ প্রবাহিত রয়েছে।(বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, আল আম্বিয়া ৭৪-৭৫ টীকা )

তালাক সংক্রান্ত :

২:২২৬-২২৯, ২৩০-২৩২, ২৩৬, ২৩৭, ২৪০-২৪২, ৪:১২৯, ১৩০,

যিহার  / জিহার করা কি তালাক এর অনুরূপ ? যিহার করলেই কি তালাক হয়ে যাবে ?  

(৩৩-আহযাব: ৪) আল্লাহ কোন ব্যক্তির দেহাভ্যন্তরে দু’টি হৃদয় রাখেননি৷তোমাদের যেসব স্ত্রীকে তোমরা “যিহার” করো তাদেরকে আল্লাহ তোমাদের জননীও করেননিএবং তোমাদের পালক পুত্রদেরকেও তোমাদের প্রকৃত পুত্র করেননি৷এসব তো হচ্ছে এমন ধরনের কথা যা তোমরা সম্মুখে উচ্চারণ করো, কিন্তু আল্লাহ এমন কথা বলেন যা প্রকৃত সত্য এবং তিনিই সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন৷  

৬. "যিহার" আরবের একটি বিশেষ পরিভাষা। প্রাচীন কালে আরবের লোকেরা স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করতে করতে কখনো একথা বলে বসতো, "তোমার পিঠ আমার কাছে আমার মায়ের পিঠের মতো।" একথা কারো মুখ থেকে একবার বের হয়ে গেলেই মনে করা হতো, এ মহিলা এখন তার জন্য হারাম হয়ে গেছে। কারণ সে তাকে তার মায়ের সাথে তুলনা করেছে। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন, স্ত্রীকে মা বললে বা মায়ের সাথে তুলনা করলে সে মা হয়ে যায় না। মা তো গর্ভধারিনী জন্মদাত্রী। নিছক মুখে মা বলে দিলে প্রকৃত সত্য বদলে যায় না। এর ফলে যে স্ত্রী ছিল সে তোমাদের মুখের কথায় মা হয়ে যাবে না। (এখানে যিহার সম্পর্কিত শরীয়াতের বিধান বর্ণনা করা উদ্দেশ্য নয়। যিহার সম্পর্কিত আইন বর্ণনা করা হয়েছে সূরা মুজাদিলার ২-৪ আয়াতে)

তাখঈর :

বিস্তারিত দেখুন : >
১। তাখঈর এর ঘটনা :

১। তাখঈর এর ঘটনা : 

স্ত্রীকে  স্বামীর সাথে থাকার বা আলাদা হয়ে যাবার মধ্য থেকে যে কোন একটিকে বাছাই করে নেবার ফায়সালা করার ইখতিয়ার দান করা :

ক্লিক করুন : ম > মুহাম্মদ সা: > মুহাম্মদ সা: এর পারিবারিক জীবন >
১। তাখঈর এর ঘটনা : 

(৩৩-আহযাব: ২৮) (হে নবী)! তোমার স্ত্রীদেরকে বলো, যদি তোমরা দুনিয়া এবং তার ভূষণ চাও, তাহলে এসো আমি তোমাদের কিছু দিয়ে ভালোভাবে বিদায় করে দিই৷ ২৯) আর যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রসূল  আখেরাতের প্রত্যাশী হও, তাহলে জেনে রাখো তোমাদের মধ্যে যারা সৎকর্মশীল তাদের জন্য আল্লাহ মহা প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন৷

(  আয়াতটি নাযিল হবার সময় নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রী ছিল চারজন। তাঁরা ছিলেন হযরত সওদা (রা), হযরত আয়েশা (রা), হযরত হাফসা (রা) এবং হযরত উম্মে সালামাহ (রা) তখনো হযরত যয়নবের (রা) সাথে নবী করীমের (সা) বিয়ে হয়নি। (আহকামুল কুরআন, ইবনুল আরাবী, ১৯৫৮ সালে মিসর থেকে মুদ্রিত,  খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫১২-৫১৩)  আয়াত নাযিল হবার পর নবী করীম (সা) সর্বপ্রথম হযরত আয়েশার সাথে আলোচনা করেন এবং বলেন, "আমি তোমাকে একটি কথা বলছি, জবাব দেবার ব্যাপারে তাড়াহুড়া করো না। তোমার বাপ-মায়ের মতামত নাও এবং তারপর ফায়সালা করো।" তারপর তিনি তাঁকে বলেন, আল্লাহর পক্ষ থেকে  হুকুম এসেছে এবং তাঁকে  আয়াত শুনিয়ে দেন। হযরত আয়েশা বলেন, " ব্যাপারটি কি আমি আমার বাপ-মাকে জিজ্ঞেস করবো৷ আমি তো আল্লাহ, তাঁর রসূল  আখেরাতকে চাই।" এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক এক করে তাঁর অন্যান্য পবিত্র স্ত্রীদের প্রত্যেকের কাছে যান এবং তাঁদেরকে একই কথা বলেন। তারা প্রত্যেকে হযরত আয়েশার (রা) মতো একই জবাব দেন। (মুসনাদে আহমাদ, মুসলিম  নাসাঈ)

ইসলামী পরিভাষায় একে বলা হয় "তাখঈর" অর্থাৎ স্ত্রীকে তার স্বামীর থাকার বা আলাদা হয়ে যাবার মধ্য থেকে যে কোন একটিকে বাছাই করে নেবার ফায়সালা করার ইখতিয়ার দান করা। এই তাখঈর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর ওয়াজিব ছিল। কারণ আল্লাহ তাঁকে এর হুকুম দিয়েছিলেন। যদি তাঁর পবিত্র স্ত্রীগণের কেউ আলাদা হয়ে যাবার পথ অবলম্বন করতেন তাহলে তিনি আপনা আপনিই আলাদা হয়ে যেতেন না বরং নবী করীমের (সা) আলাদা করে দেবার কারণে আলাদা হয়ে যেতেন যেমন আয়াতের শব্দাবলী থেকে সুষ্পষ্ট হচ্ছেঃ "এসো আমি কিছু দিয়ে তোমাদের ভালোভাবে বিদায় করে দেই।" কিন্তু  অবস্থায় তাঁকে আলাদা করে দেয়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর ওয়াজিব ছিল। কারণ নিজের প্রতিশ্রুতি পালন না করা নবী হিসেবে তাঁর জন্য সমীচীন ছিল না। আলাদা হয়ে যাবার পর বহ্যত এটাই মনে হয়, মু'মিনের মাতার তালিকা থেকে তাঁর নাম কাটা যেতো এবং অন্য মুসলমানের সাথে তাঁর বিবাহ আর হারাম থাকতো না। কারণ তিনি দুনিয়া এবং তার সাজসজ্জার জন্যই তো রসূলে করীমের (সা) থেকে আলাদা হতেন এবং এর অধিকার তাঁকে দেয়া হয়েছিল। আর একথা সুষ্পষ্ট যে, অন্য কারো সাথে বিবাহ নিষিদ্ধ থাকলে তাঁর  উদ্দেশ্য পূর্ণ হতো না। অন্যদিকে আয়াতে এটিও একটি উদ্দেশ্য মনে হয়, নবী করীমের (সা) যে সকল স্ত্রী আল্লাহ, তাঁর রসূল  আখেরাতকে পছন্দ করে নিয়েছেন তাঁদেরকে তালাক দেবার ইখতিয়ার নবীর আর থাকেনি। কারণ তাখঈরের দু'টি দিক ছিল। এক, দুনিয়াকে গ্রহণ করলে তোমাদেরকে আলাদা করে দেয়া হবে। দুই, আল্লাহ, তাঁর রসূল  আখেরাতকে গ্রহণ করলে তোমাদের আলাদা করে দেয়া হবে না। এখন একথা সুষ্পষ্ট,  দু'টি দিকের মধ্য থেকে যে কোন একটি দিকই কোন মাহিমান্বিতা মহিলা গ্রহণ করলে দ্বিতীয় দিকটি স্বাভাবিকভাবেই তাঁর জন্য নিষিদ্ধ হয়ে যেতো। 

ইসলামী ফিকহে "তাখঈর" আসলে তালাকের ক্ষমতা অর্পণ করার পর্যায়ভুক্ত। অর্থাৎ স্বামী এর মাধ্যমে স্ত্রীকে  ক্ষমতা দেয় যে, সে চাইলে তার স্ত্রী হিসেবে থাকতে পারে এবং চাইলে আলাদা হয়ে যেতে পারে।  বিষয়টির ব্যাপারে কুরআন  সুন্নাহ থেকে ইজহিহাদের মাধ্যমে ফকীহগণ যে বিধান বর্ণনা করেছেন তার সংক্ষিপ্ত সার নিম্নরূপঃ

একঃ  ক্ষমতা একবার স্ত্রীকে দিয়ে দেবার পর স্বামী আর তা ফেরত নিতে পাবে না এবং স্ত্রীকে তা ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখতেও পারে না। তবে স্ত্রীর জন্য তা ব্যবহার করা অপরিহার্য হয়ে যায় না। সে চাইলে স্বামীর সাথে থাকতে সম্মত হতে পারে, চাইলে আলাদা হয়ে যাবার কথা ঘোষণা করতে পারে এবং চাইলে কোন কিছুর ঘোষণা না দিয়ে  ক্ষমতাকে এমনিই নষ্ট হয়ে যাবার সুযোগ দিতে পারে। 

দুইঃ  ক্ষমতাটি স্ত্রীর দিকে স্থানান্তরিত হবার জন্য দু'টি শর্ত রয়েছে। প্রথমত স্বামী কর্তৃক তাকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তালাকের ইখতিয়ার দান করা চাই, অথবা তালাকের কথা সুষ্পষ্ট ভাষায় না বললেও  ইখতিয়র দেবার নিয়ত তার থাকা চাই। যেমন, সে যদি বলে, "তোমার ইখতিয়ার আছে" বা "তোমার ব্যাপার তোমার হাতে আছে," তাহলে  ধরনের ইংগিতধর্মী কথার ক্ষেত্রে স্বামীর নিয়ত ছাড়া তালাকের ইখতিয়ার স্ত্রীর কাছে স্থানান্তরিত হবে না। যদি স্ত্রী এর দাবী করে এবং স্বামী হলফ সহকারে বিকৃতি দেয় যে, এর মাধ্যমে তালাকের ইখতিয়ার সোপর্দ করার উদ্দেশ্য তার ছিল না তাহলে স্বামীর কথা গ্রহণ করা হবে। তবে স্ত্রী যদি  মর্মে সাক্ষ্য হাজির করে যে, "অবনিবনা ঝগড়া বিবাদের পরিবেশে বা তালাকের কথাবার্তা চলার সময় একথা বলা হয়েছিল, তাহলে তখন তার দাবী বিবেচিত হবে। কারণ  প্রেক্ষাপটে ইখতিয়ার দেবার অর্থ এটাই বুঝা যাবে যে, স্বামীর তালাকের ইখতিয়ার দেবার নিয়ত ছিল। দ্বিতীয়ত স্ত্রীর জানতে হবে যে, তাকে  ইখতিয়ার দেয়া হয়েছে। যদি সে অনুস্থিত থাকে, তাহলে তার কাছে  খবর পৌঁছুতে হবে এবং যদি সে উপস্থিত থাকে, তাহলে  শব্দগুলো তার শুনতে হবে। যতক্ষণ সে নিজ কানে শুনবে না অথবা তার কাছে খবর পৌঁছুবে না ততক্ষণ ইখতিয়ার তার কাছে স্থানান্তরিত হবে না। 

তিনঃ যদি স্বামী কোন সময় নির্ধারণ করা ছাড়াই শর্তহীনভাবে স্ত্রীকে ইখতিয়ার দান করে, তাহলে স্ত্রী কতক্ষণ পর্যন্ত  ইখতিয়ার প্রয়োগ করতে পারে৷  ব্যাপারে ফকীহদের মধ্যে মতবিরোধ পাওয়া যায় একটি দল বলেন, যে বৈঠকে স্বামী একথা বললেই বৈঠকেই স্ত্রী তার ইখতিয়ার প্রয়োগ করতে পারে। যদি সে কোন জবাব না দিয়ে সেখান থেকে উঠে যায় অথবা এমন কাজে লিপ্ত হয় যা একথাই প্রমাণ করে যে, সে জবাব দিতে চায় না, তাহলে তার ইখতিয়ার বাতিল হয়ে যাবে।  মত পোষণ করেন হযরত উমর (রা), হযরত উসমান (রা), হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা), হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা), হযরত জাবের ইবনে যায়েদ, আতা (), মুজাহিদ (), শা'বী () ইবরাহীম নাখঈ (), ইমাম মালেক () ইমাম আবু হানীফা (), ইমাম শাফেঈ (), ইমাম আওযায়ী (), সুফিয়ান সওরী ()  আবু সওর () দ্বিতীয় দলগনের মতে, তার ইখতিয়ার  বৈঠক পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং তারপরও সে  ইখতিয়ার প্রয়োগ করতে পারবে।  মত পোষণ করেন হযরত হাসান বসরী (), কাতাদাহ  যুহরী। 

চারঃ স্বামী যদি সময় নির্ধারণ করে দেয়। যেমন, সে যদি বলে, এক মাস বা এক বছর পর্যন্ত তোমাকে ইখতিয়ার দিলাম অথবা  সময় পর্যন্ত তোমার বিষয় তোমার হাতে রইলো, তাহলে  সময় পর্যন্ত সে  ইখতিয়ার ভোগ করবে। তেব যদি সে বলে, তুমি যখন চাও  ইখতিয়ার ব্যবহার করতে পারো, তাহলে  অবস্থায় তার ইখতিয়ার হবে সীমাহীন

পাঁচঃ স্ত্রী যদি আলাদা হতে চায়, তাহেল তাকে সুষ্পষ্ট  চূড়ান্ত অর্থবোধক শব্দাবলীর মাধ্যমে তা প্রয়োগ করতে হবে। অস্পষ্ট শব্দাবলী, যার মাধ্যমে বক্তব্য সুস্পষ্ট হয় না, তা দ্বারা ইখতিয়ার প্রয়োগ কার্যকর হতে পারে না। 

ছয়ঃ আইনত স্বামীল পক্ষ থেকে স্ত্রীকে ইখতিয়ার দেবার জন্য তিনটি বাক্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এক, সে বলবৈ, "তোমার ব্যাপারটি তোমার হাতে রয়েছে।" দুই, সে বলবে, "তোমাকে ইখতিয়ার দেয়া হচ্ছে।" তিন, সে বলবে,"যদি তুমি চাও তাহলে তোমাকে তালাক দিলাম।" এর মধ্যে প্রত্যেকটির আইনগত ফলাফল হবে ভিন্ন রকমেরঃ

() "তোমার বিষয়টি তোমার হাতে রয়েছে"  শব্দগুলো যদি স্বামী বলে থাকে এবং স্ত্রী এর জবাবে এমন কোন স্পষ্ট কথা বলে যা থেকে বুঝা যায় যে, সে আলাদা হয়ে গেছে, তাহলে হানাফী মতে এক তালাক বায়েন হয়ে যাবে। অর্থাৎ এরপর স্বামী আর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবে না। কিন্তু ইদ্দত অতিবাহিত হবার পর উভয়ে আবার চাইলে পরস্পরকে বিয়ে কতে পারে। আর যদি স্বামী বলে থাকে, " এক তালাক পর্যন্ত তোমার বিষয়টি তোমার হাতে রয়েছে," তাহলে  অবস্থায় একটি 'রজঈ' তালাক অনুষ্ঠিত হবে। (অর্থাৎ ইদ্দতের মধ্যে স্বামী চাইলে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারে।) কিন্তু স্বামী যদি বিষয়টি স্ত্রীর হাতে সোপর্দ করতে গিয়ে তিন তালাকের নিয়ত করে থাকে অথবা একথা সুস্পষ্ট করে বলে থাকে, তাহলে সে সুস্পষ্ট ভাষায় নিজের ওপর তিন তালাক আরোপ করুক অথবা কবেলমাত্র একবার বলুক আমি আলাদা হয়ে গেলাম বা নিজেকে তালাক দিলাম,  অবস্থার স্ত্রীর ইখতিয়ার তালাকের সমার্থক হবে। 

() "তোমাকে ইখতিয়ার দিলাম" শব্দগুলোর সাথে যদি স্বামী স্ত্রীকে আলাদা হয়ে যাওয়ার ইখতিয়ার দিয়ে থাকে এবং স্ত্রী আলাদা হয়ে যাওয়ার কথা স্পষ্ট ভাষায় ব্যক্ত করে থাকে, তাহলে হানাফীর মতে স্বামীর তিন তালাকের ইখতিয়ার দেবার নিয়ত থাকলেও একটি বায়েন তালাকই অনুষ্ঠিত হবে। তবে যদি স্বামীর পক্ষ থেকে তিন তালাকের ইখতিয়ার দেবার কথা সুস্পষ্টভাবে বলা হয়ে থাকে, তাহলে স্ত্রীর তালাকের ইখতিয়ারের মাধ্যমে তিন তালাক অনুষ্ঠিত হয়ে যাবে। ইমাম শাফেঈর () মতে, যদি স্বামী ইখতিয়র দেবার সময় তালাকের নিয়ত করে থাকে এবং স্ত্রী আলাদা হয়ে যায়, তাহলে একটি রজঈ তালাক অনুষ্ঠিত হবে। ইমাম মালেকের () মতে, স্বামী যদি স্ত্রীর সাথে সহবাস করে থাকে তাহলে তিন তালাক অনুষ্ঠিত হবে আর যদি সহবাস না করে থাকে, তাহলে  অবস্থায় স্বামী এক তালাকের নিয়তের দাবী করলে তা মেনে নেয়া হবে। 

() "যদি তুমি চাও, তাহলে তোমাকে তালাক দিলাম" একথা বলার পর যদি স্ত্রী তালাকের ইখতিয়ার ব্যবহার করে, তাহলে বায়েন নয় বরং একটি রজঈ তালাক অনুষ্ঠিত হবে। 

সাতঃ যদি স্বামীর পক্ষ থেকে আলাদা হবার ইখতিয়ার দেবার পর স্ত্রী তার স্ত্রী হয়ে থাকার জন্য নিজের সম্মতি প্রকাশ করে, তাহলে কোন তালাক সংঘটিত হবে না।  মত পোষণ করেন হযরত উমর (রা), হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা), হযরত আয়েশা (রা), হযরত আবুদ দারদা (রা), হযর ইবনে আব্বাস (রা)  হযরত ইবনে উমর (রা) সংখ্যাগরিষ্ঠ ফকীহগণ  মতই অবলম্বন করেছেন। মাসরূক হযরত আয়েশাকে  সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তিনি জবাব দেনঃ

(আরবী)

"রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর স্ত্রীদেরকে ইখতিয়ার দিয়েছিলেন এবং তাঁরা রসূলূল্লাহরই সাথে থাকা পছন্দ করেছিলেন। একে কি তালাক বলে গণ্য করা হয়৷"

 ব্যাপারে একমাত্র হযরত আলীল (রা)  হযরত যায়েদ ইবনে সাবেতের (রা)  অভিমত উদ্ধৃত হয়েছে যে,  ক্ষেত্রে একটি রজঈ তালাক অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু  উভয় মনীষীর অন্য একটি বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, তাঁরাও  ক্ষেত্রে কোন তালাক সংঘটিত হবে না বলে মত প্রকাশ করেছেন।)

শ্পর্শ করা পূর্বেই তালাক দিলে ইদ্দত কি হবে ?

(৩৩-আহযাব:৪৯) হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা মুমিন নারীদেরকে বিয়ে করো এবং তারপর তাদেরকে স্পর্শ করার আগে তালাক দিয়ে দাও ৮৫ তখন তোমাদের পক্ষ থেকে তাদের জন্য কোনো ইদ্দত অপরিহার্য নয়, যা পুরা হবার দাবী তোমরা করতে পারো৷ কাজেই তাদেরকে কিছু অর্থ দাও এবং ভালোভাবে বিদায় করো৷৮৬ 

৮৬. এটি একটি একক আয়াত। সম্ভবত সে সময় তালাকের কোন সমস্যা সৃষ্টি হবার কারণে এটি নাযিল হয়েছিল। তাই পূর্ববর্তী বর্ণনা  পরবর্তী বর্ণনার ধারাবাহিকতার মধ্যে একে রেখে দেয়া হয়েছে।  বিন্যাসের ফলে একথা স্বতস্ফূর্তভাবেই পরিষ্কার হয়ে যায় যে, এটি পূর্ববর্তী ভাষণের পরে এবং পরবর্তী ভাষণের পূর্বে নাযিল হয়। 

 আয়াত থেকে যে আইনগত বিধান বের হয় তার সার সংক্ষেপ হচ্ছেঃ

একঃ আয়াতে যদিও "মু'মিন নারীরা" শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যা থেকে বাহ্যত অনুমান করা যেতে পারে যে, এখানে যে আইনের বর্ণনা দেয় হয়েছে কিতাবী (ইহুদী  খৃস্টান) নারীদের ব্যাপারে সে আইন কার্যকর নয়। কিন্তু উম্মাতের সকল উলামা  ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, পরোক্ষভাবে কিতাবী নারীদের জন্যও  একই হুকুম কার্যকার হবে। অর্থাৎ কোন আহলি কিতাব নারীকে যদি কোন মুসলমান বিয়ে করে তাহলে তার তালাক, সহর, ইদ্দত এবং তাকে তালাকের পরে কাপড়-চোপড় দেবার যাবতীয় বিধান একজন মু'মিন নারীকে বিয়ে করার অবস্থায় যা হয়ে থাকে তাই হবে। উলামা  ব্যাপারে একমত, আল্লাহ এখানে বিশেষভাবে যে কেবলমাত্র মু'মিন নারীদের কথা বলেছেন এর আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে কেবলমাত্র  বিষয়ের প্রতি ইংগিত করা যে, মুসলমানদের জন্য মু'মিন নারীরাই উপযোগী। ইহুদি  খৃস্টান নারীদেরকে বিয়ে করা অবশ্যই জায়েয কিন্তু তা সংগত  পছন্দীয় নয়। অন্যকথায় বলা যায়, কুরআনের  বর্ণনারীতি থেকে একথা সুস্পষ্ট হয়ে যে, মু'মিনগণ মু'মিন নারীদেরকে বিয়ে করবে আল্লাহ এটাই চান

দুইঃ "স্পর্শ করা বা হাত লাগানো।" এর আভিধানিক অর্থ তো হয় নিছক ছুঁয়ে দেয়া  কিন্তু এখানে  শব্দটি রূপক অর্থে সহবাসের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।  দিক দিয়ে আয়াতের বাহ্যিক অর্থের দাবী হচ্ছে এই যে, যদি স্বামী সহবাস না করে থাকে, তাহলে সে স্ত্রীর সাথে একান্তে (খালওয়াত) অবস্থান করলেও বরং তার গায়ে হাত লাগালেও  অবস্থায় তালাক দিলে ইদ্দত অপরিহার্য হবে না। কিন্তু ফকীহগণ সতর্কতামূলকভাবে  বিধান দিয়েছেন যে, যদি "খালওয়াতে সহীহা" তথা সঠিক অর্থে অকান্তে অবস্থান সম্পন্ন হয়ে গিয়ে থাকে (অর্থাৎ যে অবস্থায় স্ত্রী সংগম সম্ভব হয়ে থাকে) তাহলে এরপর তালাক দেয় হলে ইদ্দত অপরিহার্য হবে এবং একমাত্র এমন অবস্থায় ইদ্দত পালন করতে হবে না যখন খালওয়াতের (একান্তে অবস্থান ) পূর্বে তালাক দিয়ে দেয়া হবে। 

তিনঃ খালওয়াতের পূর্বে তালাক দিলে ইদ্দত নাকচ হয়ে যাবার অর্থ হচ্ছে,  অবস্থায় পুরুষের রুজু করার অর্থাৎ স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেবার অধিকার খতম হয়ে যায় এবং তালাকের পরপরই যাকে ইচ্ছা বিয়ে করার অধিকার নারীর থাকে। কিন্তু মনে রাখতে হবে,  বিধান শুধুমাত্র খালওয়াতের পূর্বে তালাক দেবার সাথে সংশ্লিষ্ট। যদি খালওয়াতের পূর্বে স্বামী মারা যায় তাহলে  অবস্থায় স্বামীর মৃত্যুর পর যে ইদ্দত পালন করতে হয় তা বাতিল হয়ে যাবে না বরং বিবাহিতা স্বামীর সাথে সহবাস করেছে এমন স্ত্রীর জন্য চারমাস দশ দিনের ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব হয় তাই তার জন্যও ওয়াজিব হবে। (ইদ্দত বলতে এমন সময়কাল বুঝায় যা অতিবাহিত হবার পূর্বে নারীর জন্য দ্বিতীয় বিবাহ জায়েয নয়)

চারঃ (আরবী) (তোমাদের জন্য তাদের ওপর কোন ইদ্দত অপরিহার্য হবে না।)  শব্দগুলো একথা প্রকাশ করে যে, ইদ্দত হচ্ছে স্ত্রীর ওপর স্বামীর অধিকার। কিন্তু এর  অর্থ নয় যে, এটা শুধুমাত্র পুরুষের অধিকার। আসলে এর মধ্যে রয়েছে আরো দু'টি অধিকার। একটি হচ্ছে সন্তানের অধিকার এবং অন্যটি আল্লাহর বা শরীয়াতের অধিকার। পুরুষের অধিকার হচ্ছে  জন্য যে,  অন্তরবর্তীকালে তার রুজু করার অধিকার থাকে। তাছাড়া আরো  জন্য যে, তার সন্তানের বংশ প্রমাণ ইদ্দত পালনকালে স্ত্রীর গর্ভবতী হওয়া বা না হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার ওপর নির্ভরশীল। সন্তানের অধিকার এর মধ্যে শামিল হবার কারণ হচ্ছে এই যে, পিতা থেকে পুত্রের বংশ-ধারা প্রমাণিত হওয়া তার আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবার জন্য জরুরী এবং তার নৈতিক মর্যাদাও তার বংশধারা সংশয়িত না হওয়ার ওপর নির্ভরশীল। তারপর এর মধ্যে আল্লাহর অধিকার (বা শরীয়াতের অধিকার)  জন্য শামিল হয়ে যায় যে, যদি লোকদের নিজেদের  নিজেদের সন্তানদের অধিকারের পরোয়া না- বা হয়ে তবুও আল্লাহর শরীয়াত  অধিকারগুলোর সংরক্ষণ জরুরী গণ্য করে।  কারণেই কোন স্বামী যদি স্ত্রীকে একথা লিখে দেয় যে, আমার মৃত্যুর পর অথবা আমার থেকে তালাক নেবার পর তোমার ওপর আমার পক্ষ থেকে কোন ইদ্দত ওয়াজিব হবে না তবুও শরীয়াত কোন অবস্থায়ই তা বাতিল করবে না

পাঁচঃ (আরবী) (এদেরকে কিছু সম্পদ দিয়ে ভালো মতো বিদায় করে দাও)  হুকুমটির উদ্দেশ্য পূর্ণ করতে হবে দু'টি পদ্ধতির মধ্য থেকে কোন একটি পদ্ধতিতে  যদি বিয়ের সময় মহর নির্ধারিত হয়ে থাকে এবং তারপর খালওয়াতের (স্বামী স্ত্রীর একান্ত অবস্থান) পূর্বে তালাক দেয়া হয়ে গিয়ে থাকে এবং তারপর খালওয়াতের (স্বামী স্ত্রীর একান্ত অবস্থান) পূর্বে তালাক দেয়া হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে  অবস্থায় অর্ধেক মহর দেয়া ওয়াজিব হয়ে যাবে যেমন সূরা বাকারার ২৩৭ আয়াতে বলা হয়েছে  বেশী আর কিছু দেয়া অপরিহার্য নয় কিন্তু মুস্তাহাব। যেমন এটা পছন্দনীয় যে, অর্ধেক মহর দেবার সাথে সাথে বিয়ের করে সাজাবার জন্য জন্য স্বামী তাকে যে কাপড় চোপড় দিয়ে ছিল তা তার কাছে থাকতে দেবে অথবা যদি আরো কিছু জিনিসপত্র বিয়ের সময় তাকে দেয়া হয়ে থাকে তাহলে সেগুলো ফেরত নেয়া হবে না। কিন্তু যদি বিয়ের সময় মহর নির্ধারিত না করা হয়ে থাকে তাহলে  অবস্থায় স্ত্রীকে কিছু না কিছু দিয়ে বিদায় করে দেয়া ওয়াজিব। আর  কিছু না কিছু হতে হবে মানুষের মর্যাদা  সমর্থ অনুযায়ী। যেমন সূরা বাকারার ২৩৬ আয়াতে বলা হয়েছে। আলেমগণের একটি দল  মতের প্রবক্তা যে, মহর নির্ধারিত থাকা বা না থাকা অবস্থায়ও অবশ্যই "মুতা--তালাক" দেয়া ওয়াজিব। (ইসলামী ফিকাহর পরিভাষায় মুতা--তালাক এমন সম্পদকে বলা হয় যা তালাক দিয়ে বিদায় করার সময় নারীকে দেয়া হয়।)

ছয়ঃ ভালোভাবে বিদায় করার অর্থ কেবল "কিছু না কিছু" দিয়ে বিদায় করা নয় বরং একথাও এর অন্তরভুক্ত যে, কোন প্রকার অপবাদ না দিয়ে এবং বেইজ্জত না করে ভদ্রভাবে আলাদা হয়ে যাওয়া। কোন ব্যক্তির যদি স্ত্রী পছন্দ না হয় অথবা অন্য কোন অভিযোগ দেখা দেয় যে কারণে সে স্ত্রীকে রাখতে চায় না, তাহলে ভালো লোকদের মতো সে তালাক দিয়ে বিদায় করে দেবে। এমন যেন না হয় যে, সে তার দোষ লোকদের সামনে বলে বেড়াতে থাকবে এবং তার বিরুদ্ধে এমনভাবে অভিযোগের দপ্তর খুলে বসবে যে অন্য কেউ আর তাকে বিয়ে করতে চাইবে না। কুরআনের  উক্তি থেকে একথা সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ হয়ে যায় যে, তালাকের প্রয়োগকে কোন পাঞ্চায়েত বা আদালতের অনুমতির সাথে সংশ্লিষ্ট করা আল্লাহর শরীয়াতের জ্ঞান  কল্যাণনীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। কারণ  অবস্থায় " ভালোভাবে বিদায় দেবার " কোন সম্ভাবনাই থাকে না। বরং স্বামী না চাইলেও অপমান, বেইজ্জতি  দুর্নামের ঝাক্কি পোহাতে হবেই। তাছাড়া পুরুষের তালাক দেবার ইখতিয়ার কোন পঞ্চায়েত বা আদালতের অনুমতি সাপেক্ষ হবার কোন অবকাশই আয়াতের শব্দাবলীতে নেই। আয়াত একদম স্পষ্টভাবে বিবাহকারী পুরুষকে তালাকের ইখতিয়ার দিচ্ছে এবং তার ওপরই দায়িত্ব আরোপ করছে, সে যদি হাত লাগাবার পূর্বে স্ত্রীকে ত্যাগ করতে চায় তাহলে অবশ্যই অর্ধেক মহর দিয়ে বা নিজের সামর্থ অনুযায়ী কিছু সম্পদ দিযে তাকে বিদায় করে দেবে।  থেকে পরিষ্কারভাবে আয়াতের  উদ্দেশ্য জানা যায় যে, তালাককে খেলায় পরিণত হওয়ার পথ রোধ করার জন্য পুরুষের ওপর আর্থিক দায়িত্বের একটি বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এর ফলে সে নিজের তালাকের ইখতিয়ার ভেবে চিন্তে ব্যাবহার করবে এবং পরিবারের আভ্যন্তরীণ ব্যপারে বাইরের কোন হস্তক্ষেপও হতে পারবে না। বরং স্বামী কেন স্ত্রীকে তালাক দিচ্ছে একথা কাউকে বলতে বাধ্য হবার কোন সুযোগই আসবে না

সাতঃ ইবনে আব্বাস (রা), সাঈদ ইবনুল মুসাইয়েব, হাসান বাসরী আলী ইবনুল হোসাইন (যয়নুল আবেদীণ) ইমাম শাফেঈ  ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল আয়াতের "যখন তোমরা বিয়ে করো এবং তারপর তালাক দিয়ে দাও" শব্দাবলী থেকে  বিধান নির্ণয় করেছেন যে, তালাক তখনই সংঘটিত হবে যখন তার পূর্বে বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে যায়। বিয়ের পূর্বে তালাক কার্যকর হয় না। কাজেই যদি কোন ব্যক্তি বলে, আমি অমুক মেয়েকে বা অমুক গোত্র বা জাতির মেয়েকে অথবা কোন মেয়েকে বিয়ে করলে তাকে তালাক " তাহলে তার  উক্তি অর্থহীন পেশ করা যায়, রসূলে করীম (সা) বলেছেনঃ আরবী......."ইবনে আদম যে জিনিসের মালিক নয় তার ব্যাপারে তালাকের ইখতিয়ার ব্যবহার করার অধিকার তার নেই। আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযি  ইবনে মাজাহ। তিনি আরো বলেছেনঃ............ "বিয়ের পূর্বে কোন তালাক নেই" (ইবনে মাজাহ) কিন্তু ফকীহদের একটি বড় দল বলেন,  আয়াত   হাদীসগুলো কেবলমাত্র এখনই প্রযুক্ত হবে যখন কোন ব্যক্তি তার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়নি এমন কোন মেয়েকে এভাবে বলে, তোমাকে তালাক অথবা আমি তোমাকে তালাক দিলাম।  উক্তি যদি সে এভাবে বলে, যদি আমি তোমাকে বিয়ে করি তাহলে তোমাকে তালাক", তাহলে এটা বিয়ে করার পূর্বে তালাক দেয়া নয় বরং আসলে সে  বিষয়ের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং ঘোষনা করছে যে, যখন সেই মেয়েটির সাথে তার বিয়ে হবে তখন তার ওপর তালাক অনুষ্ঠিত হবে।  উক্তি অর্থহীন, উদ্ভটও প্রভাবহীন হতে পারে না। বরং যখনই মেয়েটিকে সে বিয়ে করবে তখনই তার ওপর তালাক সংঘটিত হয়ে যাবে। যেসব ফকীহ  মত অবলম্বন করেছেন তাঁদের মধ্যে আবার  বিষয়ে মতবিরোধ হয়েছে যে,  ধরনের তালাকের প্রয়োগ সীমা কতখানি। 

ইমাম আবু হানীফা মুহাম্মাদ  ইমাম যুফার বলেন, কোন ব্যক্তি যদি কোন মেয়ে কোন জাতি বা কোন গোত্র নির্দেশ করে বলে অথবা উদাহরণ স্বরূপ সাধারণ কথায় এভাবে বলে, "যে মেয়েটিকেই আমি বিয়ে করবো তাকেই তালাক" তাহলে উভয় অবস্থায়ই তালাক সংঘটিত হয়ে যাবে। আবু বকর জাসসাস  একই অভিমত হযরত ওমর (রা) হযরত আবদুল্লাহ হয়ে যাবে। আবু বকর জাস্সাস  একই অভিমত হযরত ওমর (রা), হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা), ইবরাহীম নাখাঈ, মুজাহিদ  উমর ইবনে আবদুল আযীয রাহেমাহুমুল্লাহ থেকে উদ্ধৃত করেছেন। 

সুফিয়ান সওরী  উসমানুল বাত্তী বলেন, তালাক কেবলমাত্র তখনি হবে যখন বক্তা এভাবে বলবে, "যদি আমি অমুক মেয়েকে বিয়ে করি তাহলে তার ওপর তালাক সংগঠিত হবে।‍‍‍"

হাসান ইবনে সালেহ, লাইস ইবনে সা'  আমেরুশ শা'বী বলেন,  ধরনের তালাক সাধারণভাবেও সংঘটিত হতে পারে, তবে শর্ত এই যে, এর প্রয়োগক্ষেত্র সুনির্দিষ্ট হতে হবে। যেমন এক ব্যক্তি এভাবে বললোঃ "যদি আমি অমুক পরিবার, অমুক গোত্রে, অমুক শহর, অমুক দেশ বা অমুক জাতির মেয়ে বিয়ে করি, তাহলে তার ওপর তালাক কার্যকর হবে।"

ইবনে আবী লাইলা  ইমাম মালেক ওপরে উদ্ধৃত মতের সাথে দ্বিমত পোষণ করে অতিরিক্ত শর্ত আরোপ করেন এবং বলেন, এর মধ্যে সময়-কালও নির্ধারিত হতে হবে। যেমন, যদি এক ব্যক্তি এভাবে বলে, "যদি আমি  বছর বা আগামী দশ বছরের মধ্যে অমুক মেয়ে বা অমুক দলের মেয়েকে বিয়ে করি, তাহলে তার ওপর তালাক কার্যকর হবে অন্যথায় তালাক হবে না। বরং ইমাম মালেক এর ওপর আরো এতটুকু বৃদ্ধি করেন যে, যদি  সময়-কাল এতটা দীর্ঘ হয় যার মধ্যে  ব্যক্তির জীবিত থাকার আশা করা যায় না তাহলে তার উক্তি অকার্যকর হয়ে যাবে

তাওয়াফ :

(হাজ্ব:২৯) তারপর নিজেদের ময়লা দূর করে, নিজেদের মানত পূর্ণ করে এবং এ প্রাচীন গৃহের তাওয়াফ করে৷

বিস্তারিত দেখুন : হ > হজ্জ।

ম > মসজিদুল হারাম,

তলাবুল ইলম :

(১৮:৬৬) মূসা তাকে বললো, আমি কি আপনার সাথে থাকতে পারি, যাতে আপনাকে যে জ্ঞান শেখানো হয়েছে তা থেকে আমাকেও কিছু শেখাবেন ? 

জ্ঞান প্রদানের জন্য শর্ত আরোপ :

(১৮:৬৬) মূসা তাকে বললো, আমি কি আপনার সাথে থাকতে পারি, যাতে আপনাকে যে জ্ঞান শেখানো হয়েছে তা থেকে আমাকেও কিছু শেখাবেন ? 

(১৮:৭০) সে বললো, আচ্ছা, যদি আপনি আমার সাথে চলেন তাহলে আমাকে কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করবেন না যতক্ষণ না আমি নিজে সে সম্পর্কে আপনাকে বলি৷ 

তওরাত :

ZIivZ : (Avjøvni wKZve/Avmgvbx wKZve †`Lyb)

তওবা : (আরো দেখুন : “ক্ষমা “ক্ষমা লাভ করার শর্ত

বিস্তারিত দেখুন :  (ÿgv jvf Kivi kZ© †`Lyb ) :

২:১৬০, ২:৩৭, ৬:৫৪,

(নূর:৩১) ...হে মু’মিনগণ! তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর কাছে তাওবা করো,  আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে৷

আর যারা খারাপ কাজ করে তারপর তাওবা করে নেয় এবং ঈমান আনে, এ ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে এ তাওবা ও ঈমানের পর তোমার রব ক্ষমাশীল ও করুণাময়-৭:১৫৩,

(২৮-ক্বাছাছ : ৬৭) তবে যে ব্যক্তি আজ তওবা করেছে, ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে সে-ই সাফল্যলাভের আশা করতে পারে৷  

তওবার শর্ত হলো  ১। ফিরে আসা, ২। ঈমান আনয়ন ,   সৎকাজ :

(১৯:৬০) তবে যারা তাওবা করবে, ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের সমান্যতম অধিকারও ক্ষুন্ন হবে না৷  

(২৫.ফুরকান:৭০) তবে তারা ছাড়া যারা (ঐসব গোনাহের পর) তাওবা করেছে এবং ইমান এনে সৎকাজ করতে থেকেছে৷এ ধরনের লোকদের সৎ কাজগুলোকে আল্লাহ সৎকাজের দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন এবং আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও মেহেরবান ৷  ৭১) যে ব্যক্তি তাওবা করে সৎকাজের পথ অবলম্বন করে, সে তো আল্লাহর দিকে ফিরে আসার মতই ফিরে আসে৷

তওবা করে সুপথে ফিরে আসো, তবে তা তোমাদের জন্যই ভালো, আর যদি মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে জেনে রাখো তোমরা আল্লাহকে শক্তি সামর্থ্যহীন করতে পারবে না : ৯:৩,

আল্লাহই তার বান্দাদের তওবা কবুল করেন : ৯:১০৪,

 এরা কি দেখে না, প্রতি বছর এদেরকে দুএকটি পরীক্ষার মুখোমুখি করা হয়? কিন্তু এরপরও এরা তাওবাও করে না কোন শিক্ষাও গ্রহণ করে না =৯:১২৬,

(১৬:১১৯) তবে যারা অজ্ঞতার কারণে খারাপ কাজ করেছে এবং তারপর তাওবা করে নিজেদের কাজের সংশোধন করে নিয়েছে, নিশ্চিতভাবেই তোমার রব তাওবা ও সংশোধনের পর তাদের জন্য ক্ষমাশীল ও করুণাময়৷

(নূর:৫) তবে যারা এরপর তাওবা করে এবং শুধরে যায়, অবশ্যই আল্লাহ (তাদের পক্ষে) ক্ষমাশীল ও মেহেরবান৷

তওবা কবুল হওয়ার শেষ সময় কোন পর্যন্ত ?/ কোন সময়কার তওবা গ্রহণযোগ্য হবে না? :

(১৬:৮৪) (সেদিন কি ঘটবে, সে ব্যাপারে এদের কি কিছুমাত্র হুঁশও আছে) যেদিন আমি উম্মতের মধ্য থেকে একজন করে সাক্ষী  দাঁড় করাবোতারপর কাফেরদের যুক্তি-প্রমাণ ও সাফাই পেশ করার সুযোগও দেয়া হবে না৷  আর তাদের কাছে তাওবা ইসতিগফারেরও দাবী জানানো হবে না৷

(অর্থাৎ সে সময় তাদেরকে একথা বলা হবে না যে,এখন তোমরা তোমাদের রবের কাছে নিজেদের ভুল - ভ্রান্তি --- অপরাধগুলোর জন্য ক্ষমা চেয়ে নাও । কারণ সেটা হবে ফায়সালার সময় । ক্ষমা চাওয়ার সময় তার আগে শেষ হয়ে যাবে । কুরআন ও হাদীস উভয় সূত্রই একথা পরিস্কার জানিয়ে দিচ্ছে যে, এ দুনিয়াতেই তাওবা ও ইসতিগফার করতে হবে, আখেরাতে নয় । আবার দুনিয়াতেও এর সুযোগ শুধুমাত্র ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ মৃত্যুর চিহ্নগুলো ফুটে না ওঠে, যখন মানুষের নিশ্চিত বিশ্বাস জন্মে যে, তার শেষ সময় পৌঁছে গেছে । এ সময় তার তওবা গ্রহণীয় নয় । মৃত্যুর সীমান্তে পৌঁছার সাথে সাথেই মানুষের কর্মের অবকাশ খতম হয়ে যায় এবং তখন শুধুমাত্র পুরস্কার ও শাস্তি দানের পাট বাকি থেকে যায় ।)

(১৪:৪৪) হে মুহাম্মদ ! সেই দিন সম্পর্কে এদেরকে সতর্ক করো, যে দিন আযাব এসে এদেরকে ধরবে৷ সে সময় এ জালেমরা বলবে, “হে আমাদের রব! আমাদের একটুখানি অবকাশ দাও, আমরা তোমার ডাকে সাড়া দেবো এবং রসূলদের অনুসরণ করবো৷” (কিন্তু তাদেরকে পরিষ্কার জবাব দেয়া হবে : “তোমরা কি তারা নও যারা ইতিপূর্বে কসম খেয়ে খেয়ে বলতো, আমাদের কখনো পতন হবে না ?”  

(১০:৯৬) আসলে যাদের ব্যাপারে তোমার রবের কথা সত্য সাব্যস্ত হয়েছে ৯৭) তাদের সামনে যতই নিদর্শন এসে যাক না কেন তারা কখনই ঈমান আনবে না যতক্ষণ না যন্ত্রনাদায়ক আযাব চাক্ষুস দেখে নেবে৷  ৯৮) এমন কোন দৃষ্টান্ত আছে কি যে, একটি জনবসতি চাক্ষুস আযাব দেখে ঈমান এনেছে এবং তার ঈমান তার জন্য সুফলদায়ক প্রমাণিত হয়েছে? ইউনুসের কওম ছাড়া  (এর কোন নজির নেই) তারা যখন ঈমান এনেছিল তখন অবশ্যি আমি তাদের ওপর থেকে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনার আযাব হটিয়ে দিয়েছিলাম   এবং তাদেরকে একটি সময় পর্যন্ত জীবন উপভোগ করার সুযোগ দিয়েছিলাম৷

(১৬:৮৫) জালেমরা যখন একবার আযাব দেখে নেবে তখন তাদের আযাব আর হালকা করা হবে না এবং তাদেরকে এক মুহূর্তের জন্য বিরামও দেয়া হবে না৷

তওবা কবুল করা হবে কাদের ? এবং হবেনা কাদের ? আরে দেখুন : ক্ষ >  ক্ষমা লাভ করার শর্ত :

যারা ঈমান আনার পরে কুফরী করে ও কুফরীতে বৃদ্ধি ঘটায়: ৩:৯০,

৪:১৭, ১৮, ১২৯, ১৪৬,  

গুনাহ করার পর অহংকার না করে ভুল স্বীকার করে তওবা করতে হবে: তাহলে ক্ষমা পাওয়ার আশা রয়েছে: 

(২০:১২২) তারপর তার রব তাকে নির্বাচিত করলেন,  তার তাওবা কবুল করলেন এবং তাকে পথ নির্দেশনা দান করলেন৷

(অর্থাৎ শয়তানের মতো  আদম আ: কে আল্লাহ তার দরবার থেকে বহিষ্কৃত করেননি। আনুগত্যের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে যেখানে আদম আ: পড়ে গিয়েছিলেন সেখানে তাঁকে পড়ে থাকতে দেননি বরং উঠিয়ে আবার নিজের কাছে ডেকে নিয়েছিলেন এবং নিজের খেদমতের জন্য বাছাই করে নিয়েছিলেন। ইচ্ছাকৃতভাবে বিদ্রোহকারী এবং অহংকার ও দাম্ভিকতা প্রকাশকারী ভৃত্যের সাথে এক ধরনের আচরণ করা হয় না। শয়তান ছিল এ হকদার এবং এমন প্রত্যেক বান্দাও এর হকদার হয়ে পড়ে যে নিজের রবের নাফরমানী করে এবং তাঁকে অহংকার করে চ্যালেঞ্জ করে সামনে দাঁড়ায়। আর এক ধরনের আচরণ করা হয় এমন বিশ্বস্ত বন্দার সাথে যে নিছক "ভুল" ও "সংকল্পহীনতা"র কারণে অপরাধ করে বসে এবং তারপর সজাগ হবার সাথে সাথেই নিজের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হয়। হযরত আদম ও হাওয়ার সাথে এ আচরণ করা হয়েছিল। কারণ নিজেদের ভুলের অনুভূতি হবার সাথে সাথেই তারা বলে উঠেছিলেনঃ

"হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি এবং যদি তুমি আমাদের প্রতি করুণা না করো তাহলে আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো"। (আ'রাফঃ২৩) )

তওবার গুণাগুণ ও প্রয়োজনীয়তা  :   দেখুন : ক্ষ > ক্ষমার প্রয়োজনীয়তা  

কোন ধরণের মুনাফিকদের ক্ষমা করা হতে পারে ?

দেখুন : ম > মুনাফিক  > ক্লিক করুন :  কোন ধরণের মুনাফিকদের ক্ষমা করা হতে পারে ?

তেল :

জাহান্নামে এমন পানি পান করতে দেওয়া হবে যা হবে তেলের তলানীর মত :  

(১৮:২৯) ...  আমি (অস্বীকারকারী) জালেমদের জন্য একটি আগুন তৈরি করে রেখেছি যার শিখাগুলো তাদেরকে ঘেরাও করে ফেলেছে৷  সেখানে তারা পানি চাইলে এমন পানি দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করা হবে, যা হবে তেলের তলানির মতো৷ এবং যা তাদের চেহারা দগ্ধ করে দেবে৷ কত নিকৃষ্ট পানীয় এবং কি জঘন্য আবাস !

(বিস্তারিত দেখুন : জ > জাহান্নাম > জাহান্নাম কেমন হবে / জাহান্নামের শাস্তি কেমন হবে ? )

তেল উৎপাদনকারী গাছ :

(মু’মিনুন:২০) আর সিনাই পাহাড়ে যে গাছ জন্মায় তাও আমি সৃষ্টি করেছি   তা তেল উৎপাদন করে এবং আহারকারীদের জন্য তরকারীও৷

যে তেল আগুন ছাড়াই প্রজ্জলিত হয় :

(নূর:৩৫) আল্লাহ আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর আলো ৷ (বিশ্ব-জাহানে) তাঁর আলোর উপমা যেন একটি তাকে একটি প্রদীপ রাখা আছে, প্রদীপটি আছে একটি চিমনির মধ্যে, চিমনিটি দেখতে এমন যেন মুক্তোর মতো ঝকঝকে নক্ষত্র, আর এ প্রদীপটি যয়তুনের এমন একটি মুবারক গাছের তেল দিয়ে উজ্জল করা হয়, যা পূর্বেরও নয়, পশ্চিমেরও নয়৷ যার তেল আপনা আপনিই জ্বলে ওঠে, চাই আগুন তাকে স্পর্শ করুক বা না করুক ৷ (এভাবে ) আলোর ওপরে আলো (বৃদ্ধির সমস্ত উপকরণ একত্র হয়ে গেছে) আল্লাহ যাকে চান নিজের আলোর দিকে পথনির্দেশ করেন ৷ তিনি উপমার সাহায্যে লোকদের কথা বুঝান৷ তিনি প্রত্যেকটি জিনিস খুব ভালো করেই জানেন ৷

(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ম > মুতাশাবিহাত আয়াত)

তৌফিক :

তাওফীক দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ তাআলা :

وَمَا تَوْفِيقِي إِلَّا بِاللَّهِ

অর্থ : যাকিছু আমি করতে চাই তা সবই আল্লাহর তাওফীকের ওপর নির্ভর করি । (১১:৮৮)

আল্লাহ তাওফীক্ব দিলেই কেবল সৎকাজ করা সম্ভব :

(১৬:১২৭) হে মুহাম্মাদ! সবর অবলম্বন করো-আর তোমার এ সবর আল্লাহরই সুযোগ দানের ফলমাত্র-এদের কার্যকলাপে দুঃখ করো না এবং এদের চক্রান্তের কারণে মনঃক্ষুণ্ন হয়ো না৷১২৮) আল্লাহ তাদের সাথে আছেন যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যারা সৎকর্মপরায়ণ৷

মানুষ বড়ই ত্বরা প্রবণ :

(১৭:১১) ... মানুষ বড়ই দ্রুতকামী৷

তোমাদের স্থলে অন্যদেরকে মনোনীত করবেন :

(১১:৫৭) যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিতে চাও তাহলে ফিরিয়ে নাও, কিন্তু যে পয়গাম দিয়ে আমাকে তোমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল তা আমি তোমাদের কাছে পৌঁছিয়ে দিয়েছি৷ এখন আমার রব তোমাদের জায়গায় অন্য জাতিকে বসাবেন এবং তোমরা তাঁর কোনই ক্ষতি করতে পারবে না৷  অবশ্যি আমার রব প্রতিটি জিনিসের সংরক্ষক৷ 

তুর পর্বত :

২:৬৩, ৯৩, ৪:১৫৪,

(২০:৮০) হে বনী ইসরাঈল! আমি তোমাদের শত্রুদের হাত থেকে তোমাদের মুক্তি দিয়েছি, এবং তূরের ডান পাশে  তোমাদের উপস্থিতির জন্য সময় নির্ধারণ করেছি আর তোমাদের প্রতি মান্না ও সালওয়া অবতীর্ণ করেছি

তুওয়া উপত্যকা :

(২০:১১) সেখানে পৌঁছলে তাকে ডেকে বলা হলো, “হে মূসা! আমিই তোমার রব, জুতো, খুলে ফেলো ১২) তুমি পবিত্র ‘তুওয়া’ উপত্যকায় আছো৷

(২৮-ক্বাছাছ : ৩০) সেখানে পৌঁছার পর উপত্যকার ডান কিনারায়  পবিত্র ভূখণ্ডে  একটি বৃক্ষ থেকে আহ্বান এলো, "হে মূসা! আমিই আল্লাহ৷ সমগ্র বিশ্বের অধিপতি৷"

তুর পর্বত বা তুওয়া উপত্যকা কোথায় অবস্থিত ? যে পাহাড়ে মূসা : আগুন জ্বলতে দেখেছিলেন বর্তমানে এর অবস্থান কোথায় ?

বিস্তারিত দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত মূসা আ: > তুর পর্বত বা তুওয়া উপত্যকা কোথায় অবস্থিত ? যে পাহাড়ে মূসা : আগুন জ্বলতে দেখেছিলেন বর্তমানে এর অবস্থান কোথায় ?