Published using Google Docs
5 ROSHSHO U.doc
Updated automatically every 5 minutes

উ :

Contents


উত্তরাধিকার : (আরো দেখুন: ওয়ারিশ).. 3

সবকিছুর ওয়ারিশ/ উত্তরাধিকারীহচ্ছেন আল্লাহ : 4

জমিনের উত্তরাধীকারী হবে মু�মিন বান্দাগণ :. 4

অসৎ রাষ্ট্র নায়কদের রাষ্ট্রক্ষমতা আল্লাহর পক্ষ� থেকে প্রদত্ত �  কথার অর্থ কি ?. 4

যার যার হক (অধিকার) দিয়ে দাও : 4

নবী  তার বংশধরদের নির্বাচিত করা হয়েছে :. 4

জান্নাতের ওয়ারিশ / উত্তরাধীকারী :. 4

উঁকি দেওয়া : 5

উচ্চকন্ঠ : 5

উত্তেজনা : (রাগ:). 5

উম্মী নবী : 6

উদ্ভিদ :� (আরো দেখুন : ফ > ফসল ).. 6

উধাও : 6

উট : 7

সালেহ : এর উট ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে নিদর্শন : 7

উট হচ্ছে একটি নিদর্শন �: 7

উট কুরবানী দেওয়ার / জবেহ করার নিয়ম : 8

প্রাচীন কাল থেকেই যানবাহন হিসেবে উট ব্যবহৃতহয়ে আসছে : 9

উপমা : 9

ফলদানকারী বৃক্ষের সাথে কালিমায়ে তাইয়্যেবার উপমা :. 11

আল্লাহর নিয়ামত অস্বীকারকারী জনপদের উপমা : 11

মাছির উপমা �:. 11

উপহাস : আরো দেখুন বিদ্রূপ :. 12

রাসুলগণকে কাফেররা উপহাস/বিদ্রুপ করতো :. 12

কাফেররা উপহাস করতো : 12

এমন কোন নবী নেই , যাকে উপহাস/বিদ্রূপ করা হয় নাই : ইসলামের দাওয়াত দানকারীদের বিদ্রূপ করা হয়: 12

এর প্রতিকার : 13

উপকার করা : 13

অন্যের উপকার করা : 13

যে তোমার দুর্দিনে তোমার উপকার না করেছে : 13

শরীক বা মূর্তিদের কারো কোন উপকার বা ক্ষতি করার কোন ক্ষমতা নেই : 13

উপস্থিত : 13

তুমি তো তখন উপস্থিত ছিলে না: 13

উপার্জন : 14

উম্মত : 14

উত্তম উম্মত : 14

উম্মতের সঠিক পথ প্রাপ্তির জন্য নবী মুহাম্মদ সা: এর পেরেশানী :. 14

প্রত্যেক উম্মতের জন্যই রাসুল রয়েছেন : 14

প্রত্যেক উম্মতের মধ্য থেকে সাক্ষী দাঁড় করানো হবে : 15

আল্লাহ চাইলে সবাইকে এক জাতিতে পরিণত করতে পারতেন : ভিন্ন ভিন্ন জাতি সৃষ্টি করাই আল্লাহর উদ্দেশ্য :� 16

তোমরা সকলে একই উম্মত : অতএব দ্বীনকে টুকরা টুকরা করোনা :. 16

উল্কা পিন্ড : 16

জ্বিন শয়তানেরা কি গায়েবের সংবাদ বলতে পারে? না, পারেনা, বরং উল্কাপিন্ডের তাড়া খায়:. 16

উহ্ : 17

উচ্চারণ: : 18

ইসলাম বিরোধীদের কঠোর নির্যাতনের কারণে জীবন বাচানোর জন্য কুফরী বাক্য উচ্চারণ করা কি জায়েজ ?. 18

উদারতা :. 18

সকল� ক্ষেত্রে উদারতা মোটেও কাম্য নয় :. 18

মসজিদের গোপন কক্ষে আল্লাহর ইবাদতে রত একাকিনী একটি মেয়েও রাতের বেলা সুদর্শন পুরুষের আগমনে সন্দেহ মুক্ত থাকতে পারেনি, এবং এটাই স্বাভাবিক এবং কাম্য: 18

উদ্ধার : 19

জালেমদের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়ার কারণে শুকরিয়া আদায়ের নির্দেশ হযরত নূহ : কে : 19

উলুল আমর : বিস্তারিত দেখুন :  > আনুগত্য : 19

উন্নত : 19

উসীলা : দেখুন : ওসীলা... 19

উন্নতি : 19

 

 

 

উত্তরাধিকার : (আরো দেখুন: ওয়ারিশ)


 

সম্পত্তির ওয়ারিশ সম্পর্কিত বিধান : ৮:৭৫ (রক্ত সম্পর্কিত নিকটাত্মীয়গই একে অপরের সম্পত্তির ওয়ারিশ হতে পারবে। )

আল্লাহ যাকে হত্যা করা হারাম করে দিয়েছেন,  সত্য ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করো না৷ আর যে ব্যক্তি মজলুম অবস্থায় নিহত হয়েছে তার অভিভাবককে আমি কিসাস দাবী করার অধিকার দান করেছি৷ কাজেই হত্যার ব্যাপারে তার সীমা অতিক্রম করা উচিত নয়,  তাকে সাহায্য করা হবে৷- (১৭:৩৩)

(১৯:৪০) শেষ পর্যন্ত আমিই হবো পৃথিবী ও তার সমস্ত জিনিসের উত্তরাধিকারী এবং সব কিছু আমারই দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে৷

ওছিয়ত : ২:১৮০, ১৮১, ১৮২,

সম্পত্তির ওয়ারিশদের মধ্যে সম্পদ বন্টনের নীতিমালা : ৪:৭, ৮, ৯, ১১, ১২, ১৪, ৩৩ (রক্ত সম্পর্ক ব্যতীত আর কেউ ওয়রিশ হতে পারে না), ৪:১৭৬ (কালালার সম্পত্তি বন্টনের নিয়ম), ৫:১০৬-১০৮,

 

শেষপর্যন্ত সবকিছুর ওয়ারিশ/ উত্তরাধিকারীহচ্ছেন আল্লাহ :


কি ব্যাপার যে, তোমরা আল্লাহর পথে খরচ করছো না, অথচ যমীন ও আসমানের উত্তরাধিকার তাঁরই৷-৫৭:১০,

(১৫:২৩)আমিই হবো সবার উত্তরাধিকারী৷

(১৯:৪০) শেষ পর্যন্ত আমিই হবো পৃথিবী ও তার সমস্ত জিনিসের উত্তরাধিকারী এবং সব কিছু আমারই দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে৷

(২৮-ক্বাসাস : ৫৮) আর এমন কত জনপদ আমি ধ্বংস করে দিয়েছি যেখানকার লোকেরা তাদের সম্পদ-সম্পত্তির দম্ভ করতো৷ কাজেই দেখে নাও, ঐসব তাদের ঘরবাড়ি পড়ে আছে, যেগুলোর মধ্যে তাদের পরে কদাচিত কেউ বসবাস করেছে, শেষ পর্যন্ত আমিই হয়েছি উত্তরাধিকারী৷৮২ 

 

৮২. এটি তাদের আপত্তির দ্বিতীয় জবাব। এর অর্থ হচ্ছে, যে ধনদৌলত  সমৃদ্ধির জন্য তোমরা অহংকারী হয়ে উঠেছো এবং যার বিলুপ্ত হয়ে যাবার আশংকায় বাতিলের উপরে টিকে থাকতে  সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে চাচ্ছো সেই জিনিসই এক সময় আদ, সামূদ, সাবা, মাদয়ান  লূতের জাতির লোকদের দেয়া হয়েছিল।  জিনিস কি তাদেরকে ধ্বংস থেকে রক্ষা করতে পেরেছিল  মোট কথা জীবন যাপনের উন্নত মানই তো একমাত্র কাম্যবস্তু নয়, যে মানুষ সত্য-মিথ্যার পরোয়া না করে শুধুমাত্র তারই পেছনে পড়ে থাকবে এবং সঠিক পথ অবলম্বন করলে  ইপ্সিত মুক্তোখণ্ডটি হস্তচ্যুত হয়ে যাবার আশংকা রয়েছে বলেই তা অবলম্বন করতে অস্বীকার করবে। যেসব অসৎ  ভ্রষ্টতামূলক কাজ অতীতের সমৃদ্ধিশালী জাতিগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে তার উপর টিকে থাকার প্রচেষ্টা চালিয়ে তোমরা রক্ষা পেয়ে যাবে এবং তাদের মতো তোমাদের উপর কখনো ধ্বংস নেমে আসবে না এর কোন গ্যারাণ্টি কি তোমাদের কাছে আছে 

 

 

জমিনের উত্তরাধীকারী হবে মুমিন বান্দাগণ :

অসৎ রাষ্ট্র নায়কদের রাষ্ট্রক্ষমতা আল্লাহর পক্ষথেকে প্রদত্ত �  কথার অর্থ কি ?


 

(২১:১০৫) আর যবুরে আমি উপদেশের পর একথা লিখে দিয়েছি যে, যমীনের উত্তরাধিকারী হবে আমার নেক বান্দারা৷ ১০৬) এর মধ্যে একটি বড় খবর আছে ইবাদাতকারী লোকদের জন্য৷

 

(দেখুন : র > রাষ্ট্রক্ষমতা > রাষ্ট্রনায়ক)

 

 

যার যার হক (অধিকার) দিয়ে দাও :


৪:৩৩,

 

নবী  তার বংশধরদের নির্বাচিত করা হয়েছে :


৩:৩৩, ৩৪, ৬:৮৬, ৮৭, ৮৮,

জান্নাতের ওয়ারিশ / উত্তরাধীকারী :


(১৯:৬৩) এ হচ্ছে সেই জান্নাত, যার উত্তরাধিকারী করবো আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে মুত্তাকীদেরকে৷

নবীগণের পরিত্যক্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকার কি উম্মতগণ হতে পারে ?


বিস্তারিত দেখুন : ও > ওয়ারিশ।

 

উঁকি দেওয়া :


(১৮:১৮) তোমরা তাদেরকে দেখে মনে করতে তারা জেগে আছে, অথচ তারা ঘুমুচ্ছিল৷ আমি তাদের ডাইনে বাঁয়ে পার্শ্ব পরিবর্তন করাচ্ছিলাম৷ এবং তাদের কুকুর গুহা মুখে সামনের দু পা ছড়িয়ে বসেছিল৷ যদি তুমি কখনো উঁকি দিয়ে তাদেরকে দেখতে তাহলে পিছন ফিরে পালাতে থাকতে এবং তাদের দৃশ্য তোমাকে আতংকিত করতো৷

 

 

D :

1| D��Rbv ��2|�� 3|�� 4|��� 5|�� 6|�� we�kl AvqvZ mg~n 7|� 8|��

 

উচ্চকন্ঠ :


(১৭:১১০) আর নিজের নামায খুব বেশী উচ্চ কণ্ঠেও পড়বে না, বেশী ক্ষীণ কণ্ঠেও না, বরং এ দুয়ের মাঝামাঝি মধ্যম পর্যায়ের কণ্ঠস্বর অবলম্বন করবে৷

(২০:৭) তুমি যদি নিজের কথা উচ্চকন্ঠে বলো, তবে তিনি তো চুপিসারে বলা কথা বরং তার চাইতেও গোপনে বলা কথাও জানেন৷

(২১:১১০) আল্লাহ সে কথাও জানেন যা সোচ্চার কণ্ঠে বলা হয় এবং তাও যা তোমরা গোপনে করো৷

 

উত্তেজনা : (রাগ:)


D��Rbv : ivM :

kqZvb hw` �Zvgv�K D��wRZ K�i Z�e Avj�vni Kv�Q Avk�q PvI : 7:200,�

 

 

we�kl AvqvZ mg~n :

﴿وَأُمْلِي لَهُمْ ۚ إِنَّ كَيْدِي مَتِينٌ﴾

7:183) আমি তাদেরকে ঢিল দিচ্ছি৷ আমার কৌশল অব্যর্থ৷  

 

উম্মী নবী :


উম্মী নবী: ৭:১৫৭, ১৫৮, �

উদ্ভিদ :� (আরো দেখুন : ফ > ফসল )


(২০:৫৩) --তিনিই  তোমাদের জন্য যমীনের বিছানা বিছিয়েছেন, তার মধ্যে তোমাদের চলার পথ তৈরী করেছেন এবং উপর থেকে পানি বর্ষণ করেছেন, তারপর তার মাধ্যমে আমি বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ উৎপন্ন করি৷৫৪) খাও এবং তোমাদের পশুও চরাও৷ অবশ্যি এর মধ্যে রয়েছে বুদ্ধিমানদের জন্য নিদর্শনাবলী৷

(�তিনিই  তোমাদের জন্য যমীনের বিছানা বিছিয়েছেন, তার মধ্যে তোমাদের চলার পথ তৈরী করেছেন� � এ বিষয়টির মাহাত্ন এতটুকু চিন্তা করলেই যথেষ্ট বুঝা যাবে যে, যদি সারা পৃথিবী দুর্গম ও মারাত্মক ধরণের পাহাড় পর্বতের এবং মারাত্মক ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ সমুদ্রের সমষ্টি হতো তাহলে কেমন হতো। আমাদের কল্যাণের জন্যই আল্লাহ সারা পৃথিবীকে জমীনের মতো বিছিয়ে দিয়েছেন এবং এমন ব্যবস্থা করেছেন যাতে মানুষ সহজে যাতায়াত ও চলাচল করতে পারে)�

 

(২৬.শুআরা:৭) আর তারা কি কখনো পৃথিবীর প্রতি দৃষ্টিপাত করেনি? আমি কত রকমের কত বিপুল পরিমাণ উৎকৃষ্ট উদ্ভিদ তার মধ্যে সৃষ্টি করেছি? ৮) নিশ্চয়ই তার মধ্যে একটি নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু'মিন নয়৷

 

উধাও :


কাফেরদের রচিত মিথ্যা কিয়ামতের দিন ‍উধাও হয়ে যাবে : ৭:৫৩,

(১১:২১) তারা এমন লোক যারা নিজেরাই নিজেদেরকে ক্ষতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে এবং তাদের মনগড়া সবকিছুই তাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে৷

(ব্যাখ্যা: তারা আল্লাহ, বিশ্ব-জগত এবং নিজেদের অস্তিত্ব সম্পর্কে যেসব মতবাদ তৈরী করে নিয়েছিল তা সবই ভিত্তিহীন হয়ে গিয়েছিল। নিজেদের উপাস্য, সুপারিশকারী ও পৃষ্ঠপোষকদের ওপর যেসব আস্থা স্থাপন করেছিল সেগুলোও মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছিল। আর মৃত্যুর পরের জীবন সম্পর্কে যেসব চিন্তা-অনুমান করে রেখেছিল তাও ভুল প্রমাণিত হয়েছিল।)

(১৬:৮৭) সে সময় এরা সবাই আল্লাহর সামনে ঝুঁকে পড়বে এবং এদের সমস্ত মিথ্যা উদ্ভাবন হাওয়া হয়ে যাবে, যা এরা দুনিয়ায় করে বেড়াতো৷

(২৮-ক্বাসাস : ৭৫) .... সেসময় তারা জানবে,সত্য রয়েছে আল্লাহর কাছে এবং তারা যা কিছু মিথ্যা বানিয়ে রেখেছিল তা সবই উধাও হয়ে যাবে৷  

 

উট :


সূঁচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ যেমন অসম্ভব তেমনি যারা আল্লাহর আয়াত সমূহকে যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তাদের জান্নাতে প্রবেশ করা তেমনি অসম্ভব : ২:৪০,

 

সালেহ : এর উট ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে নিদর্শন :


(৭:৭৩)� �

(১১:৬৪) আর হে আমার কওমের লোকরা! দেখো, এ আল্লাহর উটনীটি তোমাদের জন্য একটি নিদর্শন৷ একে আল্লাহর যমীনে স্বাধীনভাবে চরে চেড়াবার জন্য ছেড়ে দাও৷ একে পীড়া দিয়ো না৷ অন্যথায় তোমাদের ওপর আল্লাহর আযাব আসতে বেশী দেরী হবে না৷� 

(১৭:৫৯) আর এদের পূর্ববর্তী লোকেরা নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করেছে বলেই তো আমি নিদর্শন পাঠানো থেকে বিরত রয়েছি৷ (যেমন দেখে নাও) সামূদকে আমি প্রকাশ্যে উটনী এনে দিলাম এবং তারা তার ওপর জুলুম করলো৷ আমি নিদর্শন তো এজন্য পাঠাই যাতে লোকেরা তা দেখে ভয় পায়৷

সালেহ আ: এর উট সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত সালেহ আ: >� সালেহ : এর উট সম্পর্কিত বর্ণনা :

 

পশুদের মধ্যে উট হচ্ছে একটি নিদর্শন �:


 

(হাজ্ব:৩৬) আর কুরবানীর উটকেআমি করেছি তোমাদের জন্য আল্লাহর নিদর্শনগুলোর অন্তরভুক্ত; তোমাদের জন্য রয়েছে তার মধ্যে কল্যাণ৷ ...... এ পশুগুলোকে আমি এভাবেই তোমাদের জন্য বশীভূত করেছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো৷

 

(�উটকেআমি করেছি তোমাদের জন্য আল্লাহর নিদর্শনগুলোর অন্তরভুক্ত� � অর্থাৎ তোমরা তা থেকে ব্যাপক হারে কল্যাণ লাভ করে থাকো। তোমাদের সেগুলো কেন করতে হবে সেদিকে এখানে ইংগিত করা হয়েছে। মানুষ আল্লাহ প্রদত্ত যেসব জিনিস থেকে লাভবান হয় তার মধ্য থেকে প্রত্যেকটিই আল্লাহর নামে কুরবানী করা উচিত, শুধুমাত্র নিয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য নয় বরং আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও মালিকানার স্বীকৃতি দেবার জন্যও, যাতে মানুষ মনে মনে ও কার্যত একথা স্বীকার করে যে, আল্লাহ আমাকে যাকিছু দিয়েছেন এ সবই তাঁর। ঈমান ও ইসলাম হচ্ছে আত্মত্যাগের নাম। নামায ও রোযা হচ্ছে দেহ ও তার শক্তিসমূহের কুরবানীর নাম। যাকাত হচ্ছে আল্লাহ আমাদের বিভিন্নভাবে যেসব সম্পদ দিয়েছেন সেগুলোর কুরবানী। জিহাদ সময় এবং মানসিক ও শারীরিক যোগ্যতাসমূহের কুরবানী। আল্লাহর পথে যুদ্ধ প্রাণের কুরবানী। এসব এক এক প্রকার নিয়ামত এবং এক একটি দানের জন্য কৃতজ্ঞতা। এভাবে পশু কুরবানী করার দায়িত্বও আমাদের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে, যাতে আমরা আল্লাহর এ বিরাট নিয়মাতের জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এবং তার শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নেই। কারণ, তিনি তাঁর সৃষ্টি বহু প্রাণীকে আমাদের জন্য বশীভূত করে দিয়েছেন। আমরা তাদের পিঠে চড়ি। তাদের সাহায্যে চাষাবাদ ও মাল পরিবহন করি। তাদের গোশত খাই, দুধ পান করি এবং তাদের চামড়া, লোম, পশম, রক্ত, হাড় ইত্যাদি প্রত্যেকটি জিনিস নানাভাবে ব্যবহার করি।)

 

উট কুরবানী দেওয়ার / জবেহ করার �নিয়ম :


 

(হাজ্ব:৩৬) ....� কাজেই তাদেরকে (উটগুলিকে) দাঁড় করিয়ে দিয়ে ৬৯ তাদের ওপর আল্লাহর নাম নাও৷

(৬৯. উল্লেখ করা যেতে পারে, উটকে দাঁড় করিয়ে যবেহ করা হয়। তার একটি পা বেঁধে দেয়া হয় তারপর কণ্ঠনালীতে সজোরে বল্লম মারা হয়। সেখান থেকে রক্তের একটি ধারা প্রবাহিত হতে থাকে। তারপর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে গেলে উট মাটির ওপর পড়ে যায়। 'সাওয়াফ' বা দাঁড় করিয়ে রাখা বলতে এটিই বুঝানো হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা) মুজাহিদ, দ্বাহহাক প্রমুখ ব্যাখ্যাতাগণ এর এ ব্যাখ্যাই করেছেন। বরং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকেও একথাই উদ্ধৃত হয়েছে। মুসলিম ও বুখারী হাদীস বর্ণনা করেছেন, ইবনে উমর (রা) এক ব্যক্তিকে তার উটকে বসিয়ে রেখে কুরবানী করতে দেখেন। এ দৃশ্য দেখে তিনি বলেন,

(আরবী)

"পা বেঁধে তাকে দাঁড় করিয়ে দাও। এটা হচ্ছে আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত।"

আবু দাউদ জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে হাদীস উদ্ধৃত করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ উটের বাম পা বেঁধে রেখে বাকি তিন পায়ের ওপর তাকে দাঁড় করিয়ে দিতেন। তারপর তার হলকুমে বর্শা নিক্ষেপ করতেন। কুরআন নিজেও এ অর্থের প্রতি ইংগিত করেছেঃ (আরবী) "যখন তাদের পিঠ জমিতে ঠেকে যায়।" একথা এমন অবস্থায় বলা হয় যখন পশু দাঁড়িয়ে থাকে এবং তারপর জমির ওপর পড়ে যায়। অন্যথায় শুইয়ে দিয়ে কুরবানী দিয়ে কুরবানী করা অবস্থায় পিঠ তো আগে থেকেই জমির সাথে লেগে থাকে।)

 

(বিস্তারিত দেখুন : জ > জবেহ > জবেহ করার মাছআলাহ )

 

 

প্রাচীন কাল থেকেই যানবাহন হিসেবে উট ব্যবহৃতহয়ে আসছে :


এছাড়াও মানুষ পায়ে হেঁটে হজ্জ করতে আসতো :

 

(হাজ্ব:২৭)(হে ইব্রাহিম) .. এবং লোকদেরকে হজ্জের জন্য সাধারণ হুকুম দিয়ে দাও, তারা প্রত্যেকে দূর-দূরান্ত থেকে পায়ে হেঁটে ও উটের পিঠে চড়ে ৪৬ ২৮) তোমার কাছে আসবে,  যাতে এখানে তাদের জন্য যে কল্যাণ রাখা হয়েছে তা তারা দেখতে পায়।

(৪৬. মূলে (আরবী) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এটি বিশেষ করে শীর্ণ ও ক্ষীণকায় উটের প্রতিশব্দ হিসেবে বলা হয়ে থাকে। এর উদ্দেশ্য এমন সব মুসাফিরের ছবি তুলে ধরা যারা দূর দূরান্ত থেকে চলে আসছে এবং পথে তাদের উটগুলো খাদ্য ও পানীয় না পাওয়ার কারণে শীর্ণকায় হয়ে গেছে।)

 

 

 

উপমা :


(নূর:৩৫) .... তিনি উপমার সাহায্যে লোকদের কথা বুঝান৷ তিনি প্রত্যেকটি জিনিস খুব ভালো করেই জানেন ৷

 

উদাহারণ আল্লাহ ব্যবহার করেন : ২:২৬,

(১৮:৪৫) আর হে নবী! দুনিয়ার জীবনের তাৎপর্য তাদেরকে এ উপমার মাধ্যমে বুঝাও যে, আজ আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করলাম, ফলে ভূ-পৃষ্ঠের উদ্ভিদ খুব ঘন হয়ে গেলো আবার কাল ও উদ্ভিদগুলোই শুকনো ভূষিতে পরিণত হলো, যাকে বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যায়৷

 

(১৮:৩২) হে মুহাম্মাদ! এদের সামনে একটি দৃষ্টান্ত পেশ করে দাও৷ দু ব্যক্তি ছিল৷ তাদের একজনকে আমি দুটি আংগুর বাগান দিয়েছিলাম এবং সেগুলোর চারদিকে খেজুর গাছের বেড়া দিয়েছিলাম আর তার মাঝখানে রেখেছিলাম কৃষি ক্ষেত৷৩৩) দুটি বাগানই ভালো ফলদান করতো এবং ফল উৎপাদনের ক্ষেত্রে তারা সামান্যও ত্রুটি করতো না৷ এ বাগান দুটির মধ্যে আমি একটি নহর প্রবাহিত করেছিলাম ৩৪) এবং সে খুব লাভবান হয়েছিল৷ এসব কিছু পেয়ে একদিন সে তার প্রতিবেশীর সাথে কথা প্রসংগে বললো, �আমি তোমার চেয়ে বেশী ধনশালী এবং আমার জনশক্তি তোমার চেয়ে বেশী৷� ৩৫) তারপর সে তার বাগানে প্রবেশ করলো  এবং নিজের প্রতি জালেম হয়ে বলতে লাগলোঃ আমি মনে করি না এ সম্পদ কোনো দিন ধ্বংস হয়ে যাবে৷৩৬) এবং আমি আশা করি না কিয়ামতের সময় কখনো আসবে৷ তবুও যদি আমাকে কখনো আমার রবের সামনে ফিরিয়ে নেয়া হয় তাহলে নিশ্চয়ই আমি এর চেয়েও বেশী জাঁকালো জায়গা পাবো৷৩৭) তার প্রতিবেশী কথাবার্তার মধ্যে তাকে বললো, �তুমি কি কুফরী করছো সেই সত্তার যিনি তোমাকে মাটি থেকে তারপর শুক্র থেকে পয়দা করেছেন এবং তোমাকে একটি পূর্ণাবয়ব মানুষ বানিয়ে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন ? ৩৮) আর আমার ব্যাপারে বলবো, আমার রব তো সেই আল্লাহই এবং আমি তার সাথে কাউকে শরীক করি না৷ ৩৯) আর যখন তুমি নিজের বাগানে প্রবেশ করছিলে তখন তুমি কেন বললে না, �আল্লাহ যা চান তাই হয়, তাঁর প্রদত্ত শক্তি ছাড়া আর কোনো শক্তি নেই ? যদি তুমি সম্পদ ও সন্তানের দিক দিয়ে আমাকে তোমার চেয়ে কম পেয়ে থাকো ৪০) তাহলে অসম্ভব নয় আমার রব আমাকে তোমার বাগানের চেয়ে ভালো কিছু দেবেন এবং তোমার বাগানের ওপর আকাশ থেকে কোনো আপদ পাঠাবেন যার ফলে তা বৃক্ষলতাহীন প্রান্তরে পরিণত হবে৷ ৪১) অথবা তার পানি ভূগর্ভে নেমে যাবে এবং তুমি তাকে কোনোক্রমেই উঠাতে পারবে না৷ ৪২) শেষ পর্যন্ত তার সমস্ত ফসল বিনষ্ট হলো এবং সে নিজের আংগুর বাগান মাচানের ওপর লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে থাকতে দেখে নিজের নিয়োজিত পুঁজির জন্য আফসোস করতে থাকলো এবং বলতে লাগলো, �হায়! যদি আমি আমার রবের সাথে কাউকে শরীক না করতাম ৪৩) সে সময় আল্লাহ ছাড়া তাকে সাহায্য করার মতো কোনো গোষ্ঠীও ছিল না, আর সে নিজেও এ বিপদের মুকাবিলা করতে সক্ষম ছিল না৷ ৪৪) তখন জানা গেলো, কর্মসম্পাদনের ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর হাতে ন্যস্ত, যিনি সত্য৷ আর পুরষ্কার সেটাই ভালো, যা তিনি দান করেন এবং পরিণতি সেটাই শ্রেয়, যা তিনি দেখান৷

 

(১১:২৪) এ দল দুটির উপমা হচ্ছেঃ যেমন একজন লোক অন্ধ ও বধির এবং অন্যজন চক্ষুষ্মান ও শ্রবণ শক্তি সম্পন্ন৷ এরা দুজন কি সমান হতে পারে ?  তোমরা (এ উপমা থেকে) কি কোন শিক্ষা গ্রহণ করো না

(ব্যাখ্যা :� অর্থাৎ এ দু'জনের কাজের ধারা এবং সবশেষে এদের পরিণাম কি এক রকম হতে পারে৷ যে ব্যক্তি নিজেই পথ দেখে না এবং এমন কোন লোকের কথাও শোনে না যে তাকে পথের কথা বলছে, সে নিশ্চয়ই কোথাও ধাক্কা খাবে এবং মারাত্মক ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি নিজে পথ দেখতে পাচ্ছে এবং কোন পথের সন্ধান জানা লোকের পথনিদের্শনারও সাহায্য গ্রহণ করেছে সে নিশ্চয়ই নিরাপদে নিজের মনযিলে পৌঁছে যাবে। উল্লেখিত দু'জন লোকের মধ্যেও এ একই পর্যায়ের পার্থক্য রয়েছে। তাদের একজন স্বচক্ষেও বিশ্ব-জগতে মহা সত্যের নিদর্শনসমূহ প্রত্যক্ষ করে এবং আল্লাহর পাঠানো পথপ্রদর্শকদের কথাও শোনে আর অন্য জন আল্লাহর নিদর্শনসমূহ দেখার জন্য নিজের চোখ খোলা রাখে না এবং নবীদের কথাও শোনে না। জীবনক্ষেত্রে এদের উভয়ের কার্যধারা এক রকম হবে কেমন করে৷ তারপর তাদের পরিণামের মধ্যে পার্থক্যই বা হবে না কেন৷)

কোন জাতিকে ধ্বংস করার পূর্বে তাদেরকে ইতিপূর্বে ধ্বংস প্রাপ্ত জাতির দৃষ্টান্ত দিয়ে বুঝানো হয় :


(২৫.ফুরকান:৩৮) এভাবে আদ ও সামূদ এবং আসহাবুর রস্ ও মাঝখানের শতাব্দীগুলোর বহু লোককে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে৷ (২৫.ফুরকান:৩৯) তাদের প্রত্যেককে আমি (পূর্বে ধ্বংস প্রাপ্তদের) দৃষ্টান্ত দিয়ে দিয়ে বুঝিয়েছি এবং শেষ পর্যন্ত প্রত্যেককে ধ্বংস করে দিয়েছি৷

আরো দেখুন : ধ > ধ্বংস ।

 

ফলদানকারী বৃক্ষের সাথে কালিমায়ে তাইয়্যেবার উপমা :


(১৪:২৪) তুমি কি দেখছো না আল্লাহ কালেমা তাইয়েবার উপমা দিয়েছেন কোন্‌ জিনিসের সাহায্যে ? এর উপমা হচ্ছে যেমন একটি ভালো জাতের গাছ, যার শিকড় মাটির গভীরে প্রোথিত এবং শাখা-প্রশাখা আকাশে পৌঁছে গেছে৷২৫) প্রতি মুহূর্তে নিজের রবের হুকুমে সে ফলদান করে৷  এ উপমা আল্লাহ এ জন্য দেন যাতে লোকেরা এর সাহায্যে শিক্ষা লাভ করতে পারে৷২৬) অন্যদিকে অসৎ বাক্যের (কালিমায়ে খাবীসার)উপমা হচ্ছে, একটি মন্দ গাছ, যাকে ভূপৃষ্ঠ থেকে উপড়ে দূরে নিক্ষেপ করা হয়, যার কোন স্থায়িত্ব নেই৷

 

(১৬:৭৫) আল্লাহ একটি উপমা দিচ্ছেন৷ একজন হচ্ছে গোলাম, যে অন্যের অধিকারভুক্ত এবং নিজেও কোনো ক্ষমতা রাখে না৷ দ্বিতীয়জন এমন এক ব্যক্তি যাকে আমি নিজের পক্ষ থেকে ভালো রিযিক দান করেছি এবং সে তা থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে খুব খরচ করে৷ বলো, এরা দুজন কি সমান ?-আলহামদুলিল্লাহ,  কিন্তু অধিকাংশ লোক (এ সোজা কথাটি) জানে না৷

 

(১৭:৭৬) আল্লাহ আর একটি উপমা দিচ্ছেন৷ দুজন লোক৷ একজন বধির ও বোবা, কোনো কাজ করতে পারে না৷ নিজের প্রভুর ঘাড়ে বোঝা হয়ে চেপে আছে৷ যেদিকেই তাকে পাঠায় কোনো ভালো কাজ তার দ্বারা হয়ে ওঠে না৷ দ্বিতীয়জন ইনসাফের হুকুম দেয় এবং নিজে সত্য সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত আছে৷ বলো, এরা দুজন কি সমান ?

আল্লাহর নিয়ামত অস্বীকারকারী জনপদের উপমা :


(১৬:১১২) আল্লাহ একটি জনপদের দৃষ্টান্ত দেন৷ সেটি শান্তি ও নিরাপত্তার জীবন যাপন করছিল এবং সবদিক দিয়ে সেখানে আসছিল ব্যাপক রিযিক, এ সময় তাঁর অধিবাসীরা আল্লাহর নিয়ামতসমূহ অস্বীকার করলো৷ তখন আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের স্বাদ আস্বাদন করালেন এভাবে যে, ক্ষুধা ও ভীতি তাদেরকে গ্রাস করলো৷১১৩) তাদের কাছে তাদের নিজেদের সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে একজন রসূল এলো৷ কিন্তু তারা তাকে অমান্য করলো৷ শেষ পর্যন্ত আযাব তাদেরকে পাকড়াও করলো, যখন তারা জালেম হয়ে গিয়েছিল৷

মাছির উপমা �:


(হাজ্ব:৭৩) হে লোকেরা! একটি উপমা দেয়া হচ্ছে, মনোযোগ দিয়ে শোনো৷ আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব উপাস্যকে তোমরা ডাকো তারা সবাই মিলে একটি মাছি সৃষ্টি করতে চাইলেও করতে পারবে না৷ বরং যদি মাছি তাদের কাছ থেকে কোনো জিনিস ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাহলে তারা তা ছাড়িয়েও নিতে পারবে না৷ সাহায্য প্রার্থীও দুর্বল এবং যার কাছে সাহায্য চাওয়া হচ্ছে সেও দুর্বল৷

সূঁচের ছিদ্র দিয়ে ‍উট প্রবেশ করার উপমা :


সূঁচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ যেমন অসম্ভব তেমনি যারা আল্লাহর আয়াত সমূহকে যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তাদের জান্নাতে প্রবেশ করা তেমনি অসম্ভব : ২:৪০,

 

কাফেরদের কর্মের উপমা : মরীচিকা :


(নূর:৩৯) কিন্তু যারা কুফরী করে তাদের কর্মের উপমা হলো পানিহীন মরুপ্রান্তরে মরীচিকা, তৃঞ্চাতুর পথিক তাকে পানি মনে করেছিল, কিন্তু যখন সে সেখানে পৌঁছুলো কিছুই পেলো না বরং সেখানে সে আল্লাহকে উপস্থিত পেলো, যিনি তার পূর্ণ হিসেব মিটিয়ে দিলেন এবং আল্লাহর হিসেব নিতে দেরী হয় না ৷

 

কাফেরদের কর্মের উপমা : গভীর সাগরের বুকে অন্ধকার :


(নূর:৪০) অথবা তার উপমা যেমন একটি গভীর সাগর বুকে অন্ধকার ৷ ওপরে ছেয়ে আছে একটি তরংগ, তার ওপরে আর একটি তরংগ আর তার ওপরে মেঘমালা অন্ধকারের ওপর অন্ধকার আচ্ছন্ন ৷ মানুষ নিজের হাত বের করলে তাও দেখতে পায় না ৷ যাকে আল্লাহ আলো দেন না তার জন্য আর কোন আলো নেই ৷

 

আল্লাহর ‍নুরের উপমা :


(নূর:৩৫) আল্লাহ আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর আলো ৷ (বিশ্ব-জাহানে) তাঁর আলোর উপমা যেন একটি তাকে একটি প্রদীপ রাখা আছে, প্রদীপটি আছে একটি চিমনির মধ্যে, চিমনিটি দেখতে এমন যেন মুক্তোর মতো ঝকঝকে নক্ষত্র, আর এ প্রদীপটি যয়তুনের এমন একটি মুবারক গাছের তেল দিয়ে উজ্জল করা হয়, যা পূর্বেরও নয়, পশ্চিমেরও নয়৷ যার তেল আপনা আপনিই জ্বলে ওঠে, চাই আগুন তাকে স্পর্শ করুক বা না করুক ৷ (এভাবে ) আলোর ওপরে আলো (বৃদ্ধির সমস্ত উপকরণ একত্র হয়ে গেছে) আল্লাহ যাকে চান নিজের আলোর দিকে পথনির্দেশ করেন ৷ তিনি উপমার সাহায্যে লোকদের কথা বুঝান৷ তিনি প্রত্যেকটি জিনিস খুব ভালো করেই জানেন ৷

 

উপহাস : আরো দেখুন বিদ্রূপ : �


 

২:৬৭, ২:১৪, ৫:৫৭, ৫৮

রাসুলগণকে কাফেররা উপহাস/বিদ্রুপ করতো : �


কাফেররা উপহাস করতো :


 

আরো দেখুন : উপহাস :

 

(১১:৩৮) নূহ যখন নৌকা র্নিমাণ করছিল তখন তার কওমের সরদারদের মধ্যে থেকে যারাই তার কাছ দিয়ে যেতো তারাই তাকে উপহাস করতো৷ সে বললো, �যদি তোমরা আমাকে উপহাস করো তাহলে আমিও তোমাদের উপহাস করছি৷ 

 

(১৫:১০) হে মুহাম্মাদ ! তোমার পূর্বে আমি অতীতের অনেক সম্প্রদায়ের মধ্যে রসূল পাঠিয়েছিলাম৷  ১১) তাদের কাছে কোনো রসূল এসেছে এবং তারা তাকে বিদ্রূপ করেনি, এমনটি কখনো হয়নি৷

 

(১৩:৩২) তোমার আগেও অনেক রসূলকে বিদ্রূপ করা হয়েছে৷

 

এমন কোন নবী নেই , যাকে উপহাস/বিদ্রূপ করা হয় নাই : ইসলামের দাওয়াত দানকারীদের বিদ্রূপ করা হয়:


 

(১৫:৯৭) আমি জানি, এরা তোমার সম্বন্ধে যেসব কথা বানিয়ে বলে তাতে তুমি মনে ভীষণ ব্যথা পাও৷

 

(১৫:১০) হে মুহাম্মাদ ! তোমার পূর্বে আমি অতীতের অনেক সম্প্রদায়ের মধ্যে রসূল পাঠিয়েছিলাম৷  ১১) তাদের কাছে কোনো রসূল এসেছে এবং তারা তাকে বিদ্রূপ করেনি, এমনটি কখনো হয়নি৷

 

 

(১৫:৯৫) যেসব বিদ্রূপকারী আল্লাহর সাথে অন্য কাউকেও ইলাহ বলে গণ্য করে৯৬) তোমাদের পক্ষ থেকে তাদের ব্যবস্থা করার জন্য আমিই যথেষ্ট৷ শীঘ্রই তারা জানতে পারবে৷

 

 

এর প্রতিকার :


 

(১৫:৯৬) তোমাদের পক্ষ থেকে তাদের ব্যবস্থা করার জন্য আমিই যথেষ্ট৷ শীঘ্রই তারা জানতে পারবে৷

(১৫:৯৮) এর প্রতিকার এই যে, তুমি নিজের রবের প্রশংসা সহকারে তাঁর পবিত্রতা  মহিমা বর্ণনা করতে থাকো, তাঁর সকাশে সিজ্দাবনত হও৯৯) এবং যে চূড়ান্ত সময়টি আসা অবধারিত সেই সময় পর্যন্ত নিজের রবের বন্দেগী করে যেতে থাকো৷

উপহার :


কাফেরদের কাছ থেকে কি উপহার / উপঢৌকন নেয়া জায়েয ? না, যদি তা ইসলামের দাওয়াতের ব্যাপারে আপোষ বা শিথিলতার জন্য হয় তবেতো একেবারেই নেয়া যাবে না :


 

(২৭-নমল:৩৫) (সাবা সম্রাজ্যের সূর্যপূজারী কাফের রাণী বললো) আমি তাদের কাছে (সুলাইমান আ: এর কাছে) একটি উপঢৌকন পাঠাচ্ছি তারপর দেখছি তোমার দূত কি জবাব নিয়ে ফেরে৷� ৩৬) যখন সে (রাণীর দূত) সুলাইমানের কাছে পৌঁছুলো, সে বললো, তোমরা কি অর্থ দিয়ে আমাকে সাহায্য করতে চাও? আল্লাহ আমাকে যা কিছু দিয়েছেন তা তোমাদের যা কিছু দিয়েছেন তার চেয়ে অনেক বেশী৷ তোমাদের উপঢৌকন নিয়ে তোমরাই খুশি থাকো৷ ৩৭) (হে দূত!) ফিরে যাও নিজের প্রেরণকারীদের কাছে আমি তাদের বিরুদ্ধে এমন সেনাদল নিয়ে আসবো যাদের তারা মোকাবিলা করতে পারবে না এবং আমি তাদেরকে এমন লাঞ্ছিত করে সেখান থেকে বিতাড়িত করবো যে, তারা ধিকৃত ও অপমানিত হবে৷� 

(অহংকার ও দাম্ভীকতার প্রকাশ এ কথার উদ্দেশ্য নয়। আসল বক্তব্য হচ্ছে, তোমাদের অর্থ-সম্পদ আমার লক্ষ্য নয় বরং তোমরা ঈমান আনো এটাই আমার কাম্য। অথবা কমপক্ষে যে জিনিস আমি চাই তা হচ্ছে, তোমরা একটি সৎজীবন ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার অনুসারী হয়ে যাও। এ দু'টি জিনিসের মধ্যে কোন একটিই যদি তোমরা না চাও, তাহলে ধন-সম্পদের উতকোচ গ্রহণ করে তোমাদেরকে এই শির্ক ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারী নোংরা জীবন ব্যবস্থার ব্যাপারে স্বাধীন ছেড়ে দেয়া আমার পে সম্ভব নয়। তোমাদের সম্পদের তুলনায় আমার রব আমাকে যা কিছু দিয়েছেন তা ঢের বেশী। কাজেই তোমাদের সম্পদের প্রতি আমার লোভাতুর হওয়ার প্রশ্নই উঠে না।)

(প্রথম বাক্য এবং এ বাক্যটির মধ্যে একটি সূক্ষ্ম ফাঁক রয়ে গেছে। বক্তব্যটি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে এটি আপনা আপনিই অনুধাবন করা যায়। অর্থাৎ পুরো বক্তব্যটি এমনঃ হে দূত এ উপহার এর প্রেরকের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যাও। তাকে হয় আমার প্রথম কথাটি মেনে নিতে হবে অর্থাৎ মুসলিম হয়ে আমার কাছে হাজির হয়ে যেতে হবে আর নয়তো আমি সেনাদল নিয়ে তার ওপর আক্রমণ করবো।)

উপকার করা :


অন্যের উপকার করা :



যে তোমার দুর্দিনে তোমার উপকার না করেছে :


(১৮:৭৭) তারপর তারা সামনের দিকে চললো৷ চলতে চলতে একটি জনবসতিতে প্রবেশ করলো এবং সেখানে লোকদের কাছে খাবার চাইলো৷ কিন্তু তারা তাদের দুজনের মেহমানদারী করতে অস্বীকৃতি জানালো৷ সেখানে তারা একটি দেয়াল দেখলো, সেটি পড়ে যাবার উপক্রম হয়েছিল৷ সে দেয়ালটি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে দিল৷ মূসা বললো, �আপনি চাইলেএ কাজের পারিশ্রমিক নিতে পারতেন৷� 

 

শরীক বা মূর্তিদের কারো কোন উপকার বা ক্ষতি করার কোন ক্ষমতা নেই :


(২০:৮৯) তারা কি দেখছিল না যে, সে (বাছুরের মূর্তি) তাদের কথারও জবাব দেয় না৷ এবং তাদের উপকার ও ক্ষতি করার কোন ক্ষমতাও রাখে না?

(২৫.ফুরকান:৫৫) এক আল্লাহকে বাদ দিয়ে লোকেরা এমন সব সত্তার পূজা করছে যারা না তাদের উপকার করতে পারে, না অপকার৷ আবার অতিরিক্ত হচ্ছে এই যে, কাফের নিজের রবের মোকাবিলায় প্রত্যেক বিদ্রোহীর সাহায্যকারী হয়ে আছে৷

আরো দেখুন : ক্ষ > ক্ষতি, শ > শিরক > শিরক করা উচিত নয় কেন ?

 

উপস্থিত :


তুমি তো তখন উপস্থিত ছিলে না:


(১২:১০২) হে মুহাম্মদ!  কাহিনী অদৃশ্যলোকের খবরের অন্তরভুক্ত, যা আমি তোমাকে অহীর মাধ্যমে জানাচ্ছি৷ নয়তো, তুমি তখন উপস্থিত ছিলে না যখন ইউসুফের ভাইয়েরা একজোট হয়ে যড়যন্ত্র করেছিল৷  

 

 

উপদেশ :� (আরো দেখুন: জ > জিকর, দ > দাওয়াত)


আনুষাঙ্গিক জ্ঞাতব্য : ও > ওয়াজ ।

 

(নূর:১৭) আল্লাহ তোমাদের উপদেশ দেন, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো,  

 

(নূর:৩৪) আমি দ্ব্যর্থহীন পথনির্দেশক আয়াত তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি, তোমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত জাতিদের শিক্ষণীয় দৃষ্টান্তও তোমাদের সামনে উপস্থাপন করেছি এবং মুত্তাকীদের জন্য উপদেশও দিয়েছি৷

(২৮-ক্বাসাস : ৫১) আর আমি তো অনবরত তাদের কাছে (উপদেশ বাণী) পৌঁছিয়ে দিয়েছি, যাতে তারা গাফলতি থেকে সজাগ হয়ে যায়৷৭১ 

 

৭১. অর্থাৎ উপদেশের ব্যাপারে আমি কোন কসুর করিনি।  কুরআনে আমি অনবরত উপদেশ বিতরন করে এসেছি। কিন্তু যে জিদ  একগুয়েমি পরিহার করে হৃদয়কে বিদ্বেষমুক্ত রেখে সত্যকে সোজাসুজি গ্রহন করতে প্রস্তুত হয়ে যায় সে- একমাত্র হিদায়াত লাভ করতে পারে।

 

.

উপার্জন :


����������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������� আরো দেখুন� : অর্জন

তোমাদের উপার্জন সম্বন্ধে আল্লাহ জানেন : ৬:৩,

(১৩:৩৩) তবে কি যিনি প্রত্যেক ব্যক্তির উপার্জনের প্রতি নজর রাখেন  (তাঁরা মোকাবিলায় এ দুঃসাহস করা হচ্ছে যে) লোকেরা তাঁর কিছু শরীক ঠিক করে রেখেছে ?

(১৩:৪২) তিনি জানেন কে কি উপার্জন করছে এবং শীঘ্রই এ সত্য অস্বীকারকারীরা দেখে নেবে কার পরিণাম ভালো হয়৷  

 

(১৫:৮২) তারা পাহাড় কেটে কেটে গৃহ নির্মাণ করতো এবং নিজেদের বাসস্থানে একেবারেই নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত ছিল৷ ৮৩) শেষ পর্যন্ত প্রভাত হতেই একটি প্রচণ্ড বিষ্ফোরণ তাদেরকে আঘাত হানলো  ৮৪) এবং তাদের উপার্জন তাদের কোনো কাজে লাগলো না৷

 

 

উদাহরণ / দৃষ্টান্ত :


কোন জাতিকে ধ্বংস করার পূর্বে তাদেরকে ইতিপূর্বে ধ্বংস প্রাপ্ত জাতির দৃষ্টান্ত দিয়ে বুঝানো হয় :


(২৫.ফুরকান:৩৮) এভাবে আদ ও সামূদ এবং আসহাবুর রস্ ও মাঝখানের শতাব্দীগুলোর বহু লোককে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে৷ (২৫.ফুরকান:৩৯) তাদের প্রত্যেককে আমি (পূর্বে ধ্বংস প্রাপ্তদের) দৃষ্টান্ত দিয়ে দিয়ে বুঝিয়েছি এবং শেষ পর্যন্ত প্রত্যেককে ধ্বংস করে দিয়েছি৷

আরো দেখুন : দ > দৃষ্টান্ত, উ > উপমা ।

 

উম্মত :


 

আরো দেখুন : জ > জাতি ।

উত্তম উম্মত :


উত্তম উম্মত মুসলমান গণ কেন ?- ৩:১১৩,

 

একই উম্মত : অর্থাৎ সকল নবীর উম্মত গণ একই উম্মত : একই জাতি তথা মুসলিম জাতি :


 

(মুমিনুন:৫২) আর তোমাদের এ উম্মত হচ্ছে একই উম্মত এবং আমি তোমাদের রব, কাজেই আমাকেই তোমরা ভয় করো ৷ ৪৭  

(৪৭ . ''তোমাদের উম্মত একই উম্মত'' � অর্থাৎ তোমরা একই দলের লোক। ''উম্মত'' শব্দটি এমন ব্যক্তি সমষ্টির জন্য বলা হয় যারা কোন সম্মিলিত মৌলিক বিষয়ের জন্য একতাবদ্ধ হয়। নবীগণ যেহেতু স্থান-কালেরর বিভিন্নত সত্ত্বেও একই বিশ্বাস, একই জীবন বিধান ও একই দাওয়াতের ওপর একতাবদ্ধ ছিলেন, তাই বলা হয়েছে, তাঁদের সবাই একই উম্মত। পরবর্তী বাক্য নিজেই সে মৌলিক বিষয়ের কথা বলে দিচ্ছে যার ওপর সকল নবী একতাবদ্ধ ও একমত ছিলেন। (অতিরিক্ত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন সূরা আল বাকারাহ, ১৩০ থেকে ১৩৩; আলে ইমরান, ১৯, ২০, ৩৩, ৩৪, ৬৪ ও ৭৯ থেকে ৮৫; আন নিসা, ১৫০ থেকে ১৫২; আল আ'রাফ, ৫৯, ৬৫, ৭৩, ৮৫; ইউসুফ, ৩৭ থেকে ৪০; মার্‌য়াম, ৪৯ থেকে ৫৯এবং আল আম্বিয়া, ৭১ থেকে ৯৩ আয়াত।))

 

 

উম্মতের সঠিক পথ প্রাপ্তির জন্য নবীদের পেরেশানী :


আরো দেখুন : ম > মুহাম্মদ সা: > উম্মতের সঠিক পথ প্রাপ্তির জন্য নবী মুহাম্মদ সা: এর পেরেশানী।

 

(২৬.শুআরা:১৬৮) সে বললো, �তোমাদের এসব কৃত কর্মের জন্য যারা দুঃখবোধ করে আমি তাদের অন্তর্ভূক্ত৷

(হযরত লুত আ: এর আক্ষেপ)

প্রত্যেক উম্মতের জন্যই রাসুল রয়েছেন :


প্রত্যেক উম্মতের জন্য একজন রসূল রয়েছে � -১০:৪৭,

 

(১৫:১০) হে মুহাম্মাদ ! তোমার পূর্বে আমি অতীতের অনেক সম্প্রদায়ের মধ্যে রসূল পাঠিয়েছিলাম৷

 

(আরো দেখুন : রাসুলদের দায়িত্ব  কর্তব্য, প্রত্যেক� উম্মতের জন্য রাসুল রয়েছেন,)

প্রত্যেক উম্মতের জন্য একজন রসূল রয়েছে � -১০:৪৭,

(১৫:১০) হে মুহাম্মাদ ! তোমার পূর্বে আমি অতীতের অনেক সম্প্রদায়ের মধ্যে রসূল পাঠিয়েছিলাম৷

 

প্রত্যেক উম্মতের জন্য একজন রসূল রয়েছে যখন কোন উম্মতের কাছে তাদের রসূল এসে যায় তখন পূর্ণ ইনসাফ সহকারে তাদের বিষয়ের ফায়সালা করে দেয়া হয় এবং তাদের প্রতি সামান্য পরিমাণও জুলুম করা হয় না-১০:৪৭,

(ব্যাখ্যা:এর অর্থ হচ্ছে , রসূলের দাওয়াত কোন মানব গোষ্ঠীর কাছে পৌছে যাওয়ার পর ধরে নিতে হবে যে, সেই গোষ্ঠীর হেদায়াতের জন্য আল্লাহর যা কিছু করণীয় ছিল, তা করা হয়ে গেছে। এরপর কেবল ফায়সালা করাই বাকি থেকে যায়। অতিরিক্ত কোন যুক্তি বা সাক্ষ -প্রমাণের অবকাশ থাকে না। আর চূড়ান্ত ইনসাফ সহকারে  ফায়সালা করা হয়ে থাকে। যারা রসূলের কথা মেনে নেয় এবং নিজেদের নীতি  মনোভাব পরিবর্তন করে তারা আল্লাহর রহমত লাভের অধিকারী হয়। আর যারা তার কথা মেনে নেয় না তারা শাস্তি লাভের যোগ্য হয়। তাদেরকে  শাস্তি দুনিয়া  আখেরাত উভয় জায়গায় দেয়া যেতে পারে বা এক জায়গায়।)

প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর জন্য রয়েছে একজন পথপ্রদর্শক৷-(১৩:৭)

 

(১৬:৩৬) প্রত্যেক জাতির মধ্যে আমি একজন রসূল পাঠিয়েছি এবং তার মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি যে, �আল্লাহর বন্দেগী করো এবং তাগূতের বন্দেগী পরিহার করো৷

 

প্রত্যেক উম্মতের মধ্য থেকে সাক্ষী দাঁড় করানো হবে :


(১৬:৮৪) (সেদিন কি ঘটবে, সে ব্যাপারে এদের কি কিছুমাত্র হুঁশও আছে) যেদিন আমি উম্মতের মধ্য থেকে একজন করে সাক্ষী  দাঁড় করাবো।

(অর্থাৎ সেই উম্মতের নবী বা এমন কোন ব্যক্তি নবীর তিরোধানের পর যিনি সেই উম্মতের তাওহীদ ও আল্লাহর আনুগত্যের দাওয়াত দিয়েছিলেন, তাদেরকে শিরক ও মুশরিকী চিন্তা - ভাবনা, ভ্রষ্টাচার ও কুসংস্কার সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন এবং কিয়ামতের ময়দানে জবাবদিহি করার ব্যাপারে সজাগ করে দিয়েছিলেন । তিনি এ মর্মে সাক্ষ দেবেন যে, তিনি তাদের কাছে সত্যের বাণী পৌঁছিয়ে দিয়েছিলেন । কাজেই যাকিছু তারা করেছে তা অজ্ঞতার কারণে নয় বরং জেনে বুঝেই করেছে ।)

(১৬:৮৯) (হে মুহাম্মাদ! এদেরকে সেই দিন সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে দাও) যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে একজন সাক্ষী দাঁড় করিয়ে দেবো, যে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ দেবে এবং এদের বিরুদ্ধে সাক্ষ দেবার জন্য আমি তোমাকে নিয়ে আসবো৷ (আর এ সাক্ষ্যের প্রস্তুতি হিসেবে) আমি এ কিতাব তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যা সব জিনিস পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে এবং যা সঠিক পথনির্দেশনা, রহমত ও সুসংবাদ বহন করে তাদের জন্য যারা আনুগত্যের শির নত করে দিয়েছে৷

আল্লাহ চাইলে সবাইকে এক জাতিতে পরিণত করতে পারতেন : ভিন্ন ভিন্ন জাতি সৃষ্টি করাই আল্লাহর উদ্দেশ্য :


(১৬:৯৩) যদি (তোমাদের মধ্যে কোনো মতবিরোধ না হোক) এটাই আল্লাহর ইচ্ছা হতো তাহলে তিনি তোমাদের সবাইকে একই উম্মতে পরিণত করতেন৷ কিন্তু তিনি যাকে চান গোমরাহীর মধ্যে ঠেলে দেন এবং যাকে চান সরল সঠিক পথ দেখান৷ আর অবশ্যই তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷

(এটা পূর্ববর্তী বক্তব্যের আরো একটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা । এর অর্থ হচ্ছে, যদি কেউ নিজেকে আল্লাহর পক্ষের লোক মনে করে ভাল - মন্দ উভয় পদ্ধতিতে নিজের ধর্মের ( যাকে সে আল্লাহর প্রেরিত ধর্ম মনে করছে ) প্রসার এবং অন্যের ধর্মকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালায়, তাহলে তার এ প্রচেষ্টা হবে সরাসরি আল্লাহর ইচ্ছা ও উদ্দেশ্য বিরোধী । কারণ মানুষের ধর্মীয় মতবিরোধের ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে যদি সমস্ত মানুষকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় একটি ধর্মের মতবিরোধের ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে যদি সমস্ত মানুষকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় একটি ধর্মের অনুসারী বানানোই আল্লাহর উদ্দেশ্য হাতো তাহলে এ জন্য আল্লাহর নিজের " তথাকথিত " পক্ষের লোকের লেলিয়ে দেয়ার এবং তাদের নিকৃষ্ট অস্ত্রের সাহায্য নেবার কোন প্রয়োজন ছিল না । এ কাজ তো তিনি নিজের সৃজনী ক্ষমতার মাধ্যমে করতে পারতেন । তিনি সবাইকে মুমিন ও অনুগত হিসেবে সৃষ্টি করতেন এবং তাদের থেকে কুফরী ও গোনাহ করার ক্ষমতা ছিনিয়ে নিতেন । এরপর ঈমান ও আনুগত্যের পথ থেকে একচুল পরিমাণ সরে আসার ক্ষমতা কারো থাকতো না )

 

(১৬:১২০) প্রকৃতপক্ষে ইবরাহীম নিজেই ছিল একটি পরিপূর্ণ উম্মত, আল্লাহর হুকুমের অনুগত এবং একনিষ্ঠ৷ সে কখনো মুশরিক ছিল না৷

 

পূর্ববর্তী উম্মত : আরো দেখুন : আ > আসমানী কিতাব > পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব সমূহ ।

 

তোমরা সকলে একই উম্মত : অতএব দ্বীনকে টুকরা টুকরা করোনা :


(২১:৯২) তোমাদের এ উম্মত আসলে একই উম্মত৷ আর আমি তোমাদের রব৷ কাজেই তোমরা আমার ইবাদাত করো৷ ৯৩) কিন্তু (নিজেদের কার্যকলাপের মাধ্যমে) লোকেরা পরস্পরের মধ্যে নিজেদের দীনকে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে৷ সবাইকে আমার দিকে ফিরে আসতে হবে৷ 

 

উল্কা পিন্ড :


জ্বিন শয়তানেরা কি গায়েবের সংবাদ বলতে পারে? না, পারেনা, বরং উল্কাপিন্ডের তাড়া খায়:


(১৫:১৭) এবং প্রত্যেক অভিশপ্ত শয়তান থেকে সেগুলোকে সংরক্ষণ করেছি৷ কোনো শয়তান সেখানে অনুপ্রবেশ করতে পারে না৷১৮) তবে আড়ি পেতে বা চুরি করে কিছু শুনতে পারে৷ আর যখন সে চুরি করে শোনার চেষ্টা করে তখন একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা তাকে ধাওয়া করে৷

 

((আরবী --------) এর আভিধানিক অর্থ উজ্জ্বল আগুনের শিখা । কুরআনের অন্য জায়গায় এজন্য ( আরবী ----------) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে । এর অর্থ হচ্ছে , অন্ধকার বিদীর্ণকারী অগ্নি- স্ফুলিংগ । এর মানে যে , আকাশ থেকে নিক্ষিপ্ত জ্বলন্ত নক্ষত্র হতে হবে , যাকে আমাদের পরিভাষায় " উলকা পিণ্ড " বলা হয় , তেমন কোন কথা নেই । এটা হয়তো অন্য কোন ধরনের রশ্মি হতে পারে । যেমন মহাজাগতিক রশ্মি (........) অথবা এর চেয়েও তীব্র ধরনের অন্য কিছু , যা এখনো আমাদের জ্ঞানের আওতার বাইরে রয়ে গেছে । আবার এ উল্কা পিণ্ডও হতে পারে , যাকে আমরা মাঝে মধ্যে আকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসতে দেখি । বর্তমানকালের পর্যবেক্ষণ থেকে জানা যায় , দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে মহাশূন্য থেকে পৃথিবীর দিকে যেসব উলকা ছুটে আসতে দেখা যায় তার সংখ্যা হবে প্রতিদিন এক লক্ষ কোটি । এর মধ্যে থেকে প্রায় ২ কোটি প্রতিদিন পৃথিবীর মধ্যাকার্ষণ এলাকার মধ্যে প্রবেশ করে পৃথিবীর দিকে ধাবিত হয় । তার মধ্য থেকে কোন রকমে একটা ভু-পৃষ্ঠে পৌঁছে । মহাশূন্যে এদর গতি হয় কমবেশী প্রতি সেকেণ্ডে ২৬ মাইল এবং কখনো তা প্রতি সেকেণ্ডে ৫০ মাইলেও পৌঁছে যায় । অনেক সময় খালি চোখেও অস্বাভাবিক উলকা বৃষ্টি দেখা যায় । পুরাতন রেকর্ড থেকে জানা যায় , ১৮৩৩ খৃষ্টাব্দের ১৩ নভেম্বর উত্তর আমেরিকার পূর্ব এলাকায় শুধুমাত্র একটিস্থানে মধ্য রাত্র থেকে প্রভাত পর্যন্ত ২ লক্ষ উলকা পিণ্ড নিক্ষিপ্ত হতে দেখা গিয়েছিল । ( ইনসাই - ক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা ১৯৪৬, ১৫ খণ্ড , ৩৩৭ - ৩৯ পৃঃ) হয়তো এই উলকা বৃষ্টিই উর্ধ জগতের দিকে শয়তানদের উড্ডয়নের পথে বাধার সৃষ্টি করে । কারণ পৃথিবীর উর্ধ সীমানা পার হয়ে মহাশূন্যে প্রতিদিন এক লক্ষ কোটি উলকাপাত তাদের জন্য মহাশূন্যের ঐ এলাকাকে সম্পূর্ণরূপে অনতিক্রম্য বানিয়ে দিয়ে থাকবে ।

এখানে উপরে যে সংরক্ষিত দূর্গগুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলোর ধরন সম্পর্কে কিছুটা অনুমান করা যেতে পারে । আপাত দৃষ্টিতে মহাশূন্য একেবারে পরিস্কার । এর মধ্যে কোথাও কোন দেয়াল বা ছাদ দেখা যায় না । কিন্তু আল্লাহ এ মাহশূন্যের বিভিন্ন অংশকে এমন কিছু অদৃশ্য দেয়াল দিয়ে ঘিরে রেখেছেন যা এ অংশের বিপদ ও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে অন্য অংশকে সংরক্ষিত করে রাখে । এ দেয়ালগুলোর বদৌলতেই প্রতিদিন গড়ে যে এক লক্ষ কোটি উলকা পিণ্ড পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে তা সব পথেই জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং মাত্র একটি এসে পৃথিবী পৃষ্ঠে পড়তে সক্ষম হয় । পৃথিবীতে উলকা পিণ্ডের যেসব নমুনা দুনিয়ার বিভিন্ন যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড়টির ওজন ৬৪৫ পাউণ্ড । এ পাথরটি ওপর থেকে পড়ে মাটির মধ্যে ১১ ফুট গভীরে প্রেথিত হয়ে গিয়েছিল । এ ছাড়াও এক জায়গায় ৩৬ ১/২ টনের একটি লোহার স্তূপ পাওয়া গেছে । বৈজ্ঞানিকদের মতে আকাশ থেকে এ লোহা নিক্ষিপ্ত হয়েছে । এ ছাড়া সেখানে এর স্তূপাকার অস্তিত্বের কোন কারণই তারা খুঁজে পাননি । চিন্তা করুন পৃথিবীর উর্ধ সীমানাকে যদি মজবুত দেয়ালের মাধ্যমে সংরক্ষিত না করা হতো তাহলে এসব উলকাপাতে পৃথিবীর কী অবস্থা হতো ! এ দেয়ালগুলোকেই কুরআনে বুরুজ (সংরক্ষিত দূর্গ) বলা হয়েছে । )

 

 

উহ্ :


 

..পিতামাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো৷ যদি তোমাদের কাছে তাদের কোনো একজন বা উভয় বৃদ্ধ অবস্থায় থাকে, তাহলে তাদেরকে উহ্‌পর্যন্তও বলো না এবং তাদেরকে ধমকের সুরে জবাব দিয়ো না বরং তাদের সাথে মর্যাদা সহকারে কথা বলো। - (১৭:২৩)

 

উচ্চারণ: :


ইসলাম বিরোধীদের কঠোর নির্যাতনের কারণে জীবন বাচানোর জন্য কুফরী বাক্য উচ্চারণ করা কি জায়েজ ?


(১৬:১০৬) যে ব্যক্তি ঈমান আনার পর কুফরী করে, (তাকে যদি) বাধ্য করা হয় এবং তার অন্তর ঈমানের ওপর নিশ্চিন্ত থাকে (তাহলে তো ভালো কথা), কিন্তু যে ব্যক্তি পূর্ণ মানসিক তৃপ্তিবোধ ও নিশ্চিন্ততা সহকারে কুফরীকে গ্রহণ করে নিয়েছে তার ওপর আল্লাহর গযব আপতিত হয় এবং এ ধরনের সব লোকদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি৷

(১৬:১১০) পক্ষান্তরে যাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, (ঈমান আনার কারণে) যখন তারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা বাড়ি-ঘর ত্যাগ করেছে, হিজরাত করেছে, আল্লাহর পথে কষ্ট সহ্য করেছে এবং সবর করেছেতাদের জন্য অবশ্যই তোমার রব ক্ষমাশীল ও করুণাময়৷  

 

উদারতা :


সকল� ক্ষেত্রে উদারতা মোটেও কাম্য নয় :



মসজিদের গোপন কক্ষে আল্লাহর ইবাদতে রত একাকিনী একটি মেয়েও রাতের বেলা সুদর্শন পুরুষের আগমনে সন্দেহ মুক্ত থাকতে পারেনি, এবং এটাই স্বাভাবিক এবং কাম্য:


�(১৯:১৬) আর(হে মুহাম্মাদ)!এই কিতাবে মারয়ামের অবস্থা বর্ণনা করো৷যখন সে নিজের লোকদের থেকে আলাদা হয়ে পূর্ব দিকে নির্জনবাসী হয়ে গিয়েছিল (১৯:১৭) এবং পর্দা টেনে তাদের থেকে নিজেকে আড়াল করে নিয়েছিল৷এ অবস্থায় আমি তার কাছে নিজের রূহকে অর্থাৎ(ফেরেশতাকে)পাঠালাম এবং সে তার সামনে একটি পূর্ণ মানবিক কায়া নিয়ে হাযির হলো৷ (১৯:১৮) মারয়াম অকস্মাত বলে উঠলো, �তুমি যদি আল্লাহকে ভয় করে থাকো তাহলে আমি তোমার হাত থেকে করুণাময়ের আশ্রয় চাচ্ছি  

 

উদ্ধার :


জালেমদের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়ার কারণে শুকরিয়া আদায়ের নির্দেশ হযরত নূহ : কে :


(মুমিনুন:২৮) তারপর যখন তুমি নিজের সাথীদের নিয়ে নৌকায় আরোহণ করবে তখন বলবে, আল্লাহর শোকর, যিনি আমাদের উদ্ধার করেছেন জালেমদের হাত থেকে৷

 

 

উত্থান পতন :


 

বিভিন্ন জাতির ‍উত্থান পতনে আল্লাহর সরাসরি হস্তক্ষেপ রয়েছে :


(মুমিনুন:২৭) ...এবং জালেমদের ব্যাপারে আমাকে কোন সুপারিশ করো না, তারা এখন ডুবতে যাচ্ছে৷ (মুমিনুন:৩১) তাদের পরে আমি অন্য এক যুগের জাতির উত্থান ঘটালাম৷

 

 

উলুল আমর : বিস্তারিত দেখুন :  > আনুগত্য : �


উলুল আমর এর আনুগত্য কর : ৪:৫৯,

 

উন্নত :


(১৯:৫৬) আর এ কিতাবে ইদরিসের কথা স্মরণ করো৷ সে একজন সত্যনিষ্ঠ মানুষ এবং একজন নবী৷৫৭) আর তাকে আমি উঠিয়েছিলাম উন্নত স্থানে৷

 

উসীলা : দেখুন : ওসীলা


 

 

উন্নতি :


(১৯:৭৬) বিপরীত পক্ষে যারা সত্য-সঠিক পথ অবলস্বন করে আল্লাহ তাদেরকে সঠিক পথে চলার ক্ষেত্রে উন্নতি দান করেন  এবং স্থায়িত্বলাভকারী সৎজাগুলোই তোমার রবের প্রতিদান ও পরিণামের দিক দিয়ে ভালো৷

 

 

উন্নতি ও অবনতি তথা সাফল্য  ব্যর্থতার আসল মাপকাঠি কি ?


 

(মুমিনুন:৫৪) ----বেশ, তাহলে ছেড়ে দাও তাদেরকে, ডুবে থাকুক নিজেদের গাফিলতির মধ্যে একটি বিশেষ সময় পর্যন্ত৷৫৫) তারা কি মনে করে, আমি যে তাদেরকে অর্থ ও সন্তান দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছি,  ৫৬) তা দ্বারা আমি তাদেরকে কল্যাণ দানে তৎপর রয়েছি ? না, আসল ব্যাপার সম্পর্কে তাদের কোন চেতনাই নেই৷৫০  

(৫০ . এখানে এসে সূরার সূচনা পর্বের আয়াতগুলোর ওপর আর একবার নজর বুলিয়ে নিন । সে একই বিষয়বস্তুকে আবার অন্যভাবে এখানে বর্ণনা করা হচ্ছে । তারা '' কল্যাণ '', ''ভালো'' ''সমৃদ্ধি'' একটি সীমিত বস্তুবাদী ধারণা রাখতো। তাদের মতে, যে ব্যক্তি ভালো খাবার , ভাল পোশাক , ও ভালো ঘর-বাড়ী লাভ করছে , যাকে অর্থ সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দান করা হয়েছে এবং সমাজে যে খ্যাতি ও প্রভাব প্রতিপত্তি অর্জন করতে পেরেছে সে সাফল্য লাভ করছে । আর যে ব্যক্তি এসব থেকে বঞ্চিত হয়েছে সে ব্যর্থ হয়ে গেছে । এ মৌলিক বিভ্রান্তির ফলে তারা আবার এর চেয়ে অনেক বড় আর একটি বিভ্রান্তির শিকার হয়েছে । সেটি ছিল এই যে, এ অর্থে যে ব্যক্তি কল্যাণ ও সাফল্য লাভ করেছে সে নিশ্চয়ই সঠিক পথে রয়েছে বরং সে আল্লাহর প্রিয় বান্দা, নয়তো এসব সাফল্য লাভ করা তার পক্ষে কেমন করে সম্ভব হলো। পক্ষান্তরে এ সাফল্য থেকে যাদেরকে আমরা প্রকাশ্যে বঞ্চিত দেখছি তারা নিশ্চয়ই বিশ্বাস ও কর্মের ক্ষেত্রে ভুল পথে রয়েছে এবং তারা খোদা বা খোদাদের গযবের শিকার হয়েছে। এ বিভ্রান্তিটি আসলে বস্তুবাদী দৃষ্টিভংগীর অধিকারী লোকদের ভ্রষ্টতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোর অন্যতম। একে কুরআনের বিভিন্ন স্থানে বর্ণনা করা হয়েছে, বিভিন্ন পদ্ধতিতে একে খণ্ডন করা হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে প্রকৃত সত্য কি তা বলে দেয়া হয়েছে। (দৃষ্টান্ত স্বরূপ দেখুন সূরা আল বাকারাহ, ১২৬ ও ২১২; আল আ'রাফ, ৩২: আত্‌ তাওবাহ, ৫৫, ৬৯ ও ৮৫;ইউনুস, ১৭; হূদ, , ২৭ থেকে ৩১, ৩৮ ও ৩৯; আর রাআদ, ২৬; আল কাহ্‌ফ, ২৮, ৩২, থেকে ৪৩ ও ১০৩ থেকে ১০৫; মার্‌য়াম, ৭৭ থেকে ৮০; ত্বা-হা, ১৩১ ও ১৩২ ও আল আম্বিয়া, ৪৪ আয়াত এবং এই সংগে টীকাগুলো)।

এ ক্ষেত্রে এমন পর্যায়ের কয়েকটি গুরত্বপূর্ণ সত্য রয়েছে যেগুলো ভালোভাবে অনুধাবন না করলে চিন্তা ও মন-মানস কখনোই পরিচ্ছন্ন হতে পারে না।

একঃ '' মানুষের সাফল্য''কে কোন ব্যক্তি , দল বা জাতির নিছক বস্তুবাদী সমৃদ্ধি ও সাময়িক সাফল্য অর্থে গ্রহণ করার চাইতে তা অনেক বেশী ব্যাপক ও উন্নত পর্যায়ের জিনিস।

দুইঃ সাফল্যকে এ সীমিত অর্থে গ্রহণ করার পর যদি তাকেই সত্য ও মিথ্যা এবং ভালো ও মন্দের মানদন্ড গণ্য করা হয় তাহলে তা এমন একটি মৌলিক ভ্রষ্টতায় পরিণত হয় যার মধ্য থেকে বাইরে বের না হওয়া পর্যন্ত কোন মানুষ কখনো বিশ্বাস, চিন্তা, নৈতিকতা ও চারিত্রিক ক্ষেত্রে সঠিক পথ লাভ করতেই পারে না।

তিনঃ দুনিয়াটা আসলে প্রতিদান দেবার জায়গা নয় বরং পরীক্ষাগৃহ। এখানে নৈতিক শাস্তি ও পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকলেও তা বড়ই সীমিত পর্যায়ের ও অসম্পূর্ণ ধরণের এবং তার মধ্যেও পরীক্ষার দিকটি রয়েছে। এ সত্যটি এড়িয়ে গিয়ে একথা মনে করা যে, এখানে যে ব্যক্তি যে নিয়ামতই লাভ করছে তা লাভ করছে ''পুরস্কার'' হিসেবেই এবং সেটি লাভ করা পুরস্কার লাভকারীর সত্য, সৎ ও আল্লাহর প্রিয় হবার প্রমাণ আর যার ওপর যে বিপদও আসছে তা হচ্ছে তার 'শাস্তি'' এবং তা একথাই প্রমাণ করছে যে, শাস্তি লাভকারী মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত, সে অসৎ ও আল্লাহর কাছে অপ্রিয়। আসলে এসব কিছু একটি বিভ্রান্তি বরং নির্বুদ্ধিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। সম্ভবত আমাদের সত্য সম্পর্কিত ধারণা ও নৈতিকতার মানদণ্ডকে বিকৃত করার ক্ষেত্রে এর চেয়ে বড় আর কোন জিনিস নেই। একজন সত্যসন্ধানীকে প্রথম পদক্ষেপেই একথা অনুধাবন করতে হবে যে, এ দুনিয়াটি মূলত একটি পরীক্ষাগৃহ এবং এখানে অসংখ্য বিভিন্ন পদ্ধতিতে ব্যক্তিদের, জাতিদের ও সমগ্র বিশ্বমানবতার পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। এ পরীক্ষার মাঝাখানে লোকেরা যে বিভিন্ন অবস্থার সম্মুখীন হয় সেগুলো পুরস্কার ও শাস্তির শেষ পর্যায় নয়। কাজেই সেগুলোকে মতবাদ, চিন্তাধারা, নৈতিকতা ও কর্মকাণ্ডের সঠিক ও বেঠিক হওয়ার মানদণ্ডে পরিণত করা এবং আল্লাহর কাছে প্রিয় ও অপ্রিয় হবার আলামত গণ্য করা যাবে না।

চারঃ সাফল্যের প্রান্ত নিশ্চিতভাবেই সত্য সৎকর্মের সাথে বাঁধা আছে এবং মিথ্যা ও অসৎকর্মের পরিণাম ক্ষতি এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু এ দুনিয়ায় যেহেতু মিথ্যা ও অসৎকর্মের সাথে সাময়িক ও বাহ্যিক সাফল্য এবং অনুরূপভাবে সত্য ও সৎকর্মের সথে প্রকাশ্য ও সাময়িক ক্ষতি সম্ভবপর আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ জিনিসটি ধোঁকা বলে প্রমাণিত হয়েছে, তাই সত্য-মিথ্যা ও সৎ-অসৎ যাচাই করার জন্য একটি স্থায়ী ও স্বতন্ত্র মানদণ্ডের প্রয়োজন, যার মধ্যে প্রতারণার ভয় থাকবে না। নবীগণের শিক্ষা ও আসমানী কিতাবসমূহ আমাদের এ মানদণ্ড সরবরাহ করে। মানুষের সাধারণ জ্ঞান (Common sense)-এর সঠিক হওয়ার সত্যতা বিধান করে এবং ''মারূফ'' ''মুন্‌কার'' তথা সৎ কাজ ও অসৎকাজ সম্পর্কিত মানব জাতির সম্মিলিত মানসিক চিন্তা-অনভুতি এর সত্যতার সাক্ষ্য দেয়।

পাঁচঃ যখন কোন ব্যক্তি বা জাতি একদিকে সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং ফাসেকী, অশ্লীল কার্যকলাপ, জুলুম ও সীমালংঘন করতে থাকে এবং অন্যদিকে তা ওপর অনুগ্রহ বর্ষিত হতে থাকে তখন বুজতে হবে, বুদ্ধি ও কুরআন উভয় দৃষ্টিতে আল্লাহ তাকে কঠিনতর পরীক্ষার সম্মুখীন করেছেন এবং তার ওপর আল আল্লাহর করুণা নয় বরং তাঁর ক্রোধ চেপে বসেছে। ভুলের কারণে যদি তার ওপর আঘাত আসতো তাহলে এর এই অর্থ হতো যে, আল্লাহ এখনো তার প্রতি অনুগ্রহশীল আছেন, তাকে সতর্ক করছেন এবং সংশোধিত হবার সুযোগ দিচ্ছেন। কিন্তু ভুলের জন্য ''পুরস্কার'' এ অর্থ প্রকাশ করে যে, তাকে কঠিন শাস্তি দেবার ফায়সালা হয়ে গেছে এবং পেট ভরে পানি নিয়ে ডুবে যাওয়ার জন্য তার নৌকাটি ভাসছে। পক্ষান্তরে যেখানে একদিকে থাকে আল্লাহর প্রতি সত্যিকার আনুগত্য, চারিত্রক পবিত্রতা, পরিচ্ছন্ন লেনদেন, আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি সদাচার, দয়া, স্নেহ ও মমতা এবং অন্যদিকে তার প্রতি বিপদ-আপদ ও কাঠিন্যের অবিরাম ধারা বর্ষিত হতে থাকে এবং আঘাতের পর আঘাতে সে হতে থাকে জর্জরিত সেখানে তা আল্লাহর ক্রোধের নয় বরং হয় তাঁর অনুগ্রহেরই আলামত। স্বর্ণকার স্বর্ণকে খুব বেশী উত্তপ্ত করতে থাকে যাতে তা খুব বেশী ঝকঝকে তকতকে হয় যায় এবং দুনিয়াবাসীর সামনে তার পূর্ণনিখাদ হওয়া প্রমাণ হয়ে যায়। দুনিয়ার বাজারে তার দাম না বাড়লে কিছু আসে যায় না। স্বর্ণকার নিজেই তার দাম দেবে। বরং নিজের অনুগ্রহে বেশী দিয়ে দেবে। তার বিপদ-আপদে যদি ক্রোধের দিক থেকে থাকে তাহলে তা তার নিজের জন্য নয় বরং তার শত্রুদের জন্য অথবা যে সমাজে সৎকর্মশীলরআ উৎপীড়িত হয় এবং আল্লাহর নাফরমানরা হয় অনুগৃহীত সে সমাজের জন্য।)