জ:
আল্লাহর নাম নিয়ে জবেহ না করলে সেই প্রাণীর গোস্ত খাওয়া হারাম :
পশু জবেহ করার পর প্রাণবায়ু পুরোপুরি বের হয়ে যাওয়ার পর গোস্ত ছাড়াতে হবে:
উট কুরবানী দেওয়ার / জবেহ করার নিয়ম :
জয়তুন : (আরো দেখুন : ফল (বিভিন্ন প্রকার ফল))
জনপদ : আরো দেখুন : জ > জাতি, দ > দল ।
ইসলামী রাষ্ট্রে জিম্মীদের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার কতটুকু ?
জীবন ও মৃত্যু সৃষ্টি করা হয়েছে, এটা দেখার জন্য যে, কে কতটুকু সৎকাজ করে :
জীবন ও মৃত্যু পরীক্ষা স্বরূপ :
জীবিত থেকে মৃত: এবং মৃত: থেকে জীবিত বের করেন আল্লাহ :-
জীবন মৃত্যু , আকাশ পৃথিবী ইত্যাদি আল্লাহ খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করেননি :
চিরন্তন জীবন লাভ করতে চাওয়া মানুষের একটি স্বভাবজাত বাসনা :
জীবন ও মৃত্যুর মধ্যবর্তী অবস্থা জাহান্নামে :
কুরআন হচ্ছে বাস্তবসম্মত জীবন ঘনিষ্ঠ কিতাব : যার মধ্যে মানুষের কথাই বলা হয়েছে :
অপরাধীদের জীবনের করুন পরিণতি :
অপরাধী হওয়ার পরও জীবন উপভোগের সুযোগ পাওয়া এক ধরণের পরীক্ষা :
জাক্কুম : দেখুন : য > যাক্কুম । জ > জাহান্নাম।
জাতি / জাতীয়তা বাদ / জাতি সমূহ / জাতিসমূহ : (আরে দেখুন : দ > দল)
বিভিন্ন জাতির উত্থান পতনে আল্লাহর সরাসরি হস্তক্ষেপ রয়েছে :
বিভিন্ন জাতির নাম ও পরিচয় যেগুলি কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে :
আপাত দৃষ্টিতে অনেকগুলি জাতি থাকলেও, কুরআনের দৃষ্টিতে দল আসলে দুটি :
তাদের অন্তর্ভূক্ত হয়ো না যারা দ্বীনের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে :
আল্লাহ একদলকে আরেক দলের দ্বারা প্রতিহত করেন :
কোন জাতি ঈমান না আনলে, তারা অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাবে :
কোন জাতিকে ধ্বংস করার পূর্বে তাদেরকে ইতিপূর্বে ধ্বংস প্রাপ্ত জাতির দৃষ্টান্ত দিয়ে বুঝানো হয় :
একটি সমগ্র জাতিকেও কি পরীক্ষায় নিক্ষেপ করা হতে পারে ?
সমগ্র মুসলমানগণ এক জাতি : এর বিপরীতে যে কোন জাতীয়তাবাদ বা মতভেদ হারাম :
তোমরা সকলে একই উম্মত : অতএব দ্বীনকে টুকরা টুকরা করোনা :
একই উম্মত : অর্থাৎ সকল নবীর উম্মত গণ একই উম্মত : একই জাতি তথা মুসলিম জাতি :
কিন্তু এরপরেও বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী / ধর্মের ভিত্তিতে বিভিন্ন জাতি সৃষ্টি হওয়ার কারণ কি ?:
সকল মানুষ একই জাতির অন্তর্ভূক্ত ছিল :
অসভ্য জাতি : (আরো দেখুন : অ > অসভ্য জাতি, জ > জাহেলিয়াত)
জাব্বারিন : প্রবল পরাক্রান্ত একনায়কতান্ত্রিক জাতি :
প্রত্যেক জাতি / জনগোষ্ঠীর জন্য রয়েছে একজন পথপ্রদর্শক : প্রত্যেক জাতির জন্য রয়েছে সতর্ককারী :
ভিন্ন ভিন্ন জাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য :
আল্লাহ চাইলে সবাইকে এক জাতিতে পরিণত করতে পারতেন :
এক জাতির পরিবর্তে অন্য জাতি , এক দলের পরিবর্তে অন্য দল প্রতিষ্ঠিত করা :
জাতি সমূহের উত্থান পতন:ঈমান আনয়ন ও সৎকাজের ভিত্তিতেই কি জাতিসমূহের উত্থান পতন হয় ?
এক ব্যক্তি একাই একটি জাতি : হযরত ইব্রাহিম আ:
পূর্ববর্তী বিভিন্ন জাতির বর্ণনাসমূহ : (যারা সত্য অস্বীকার করেছিল)
আল্লাহ কোন জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ তারা নিজেরাই নিজেদের গুণাবলী পরিবর্তণ করে ফেলে :
পূর্ববর্তী জাতিদের পরিণাম থেকে শিক্ষা নিতে হবে :
জাতির পিতা কে ? জাতির পিতার আদর্শ বলতে কি বুঝায় ?
কত জাতিকে তাদের নাফরমানীর কারণে ধ্বংস করা হয়েছে : বর্তমানে তাদের ক্ষীণতম আওয়াজ শুনতে পাওকি?
মক্কার মসজিদুল হারাম ও এর চতুর্সীমানার উপর কি আরব ও অনারব সকল মু’মিনদের অধিকার সমান ?
জাতি: পূর্ববর্তী বিভিন্ন জাতির বর্ণনা :
জামায়াত : (বিস্তারিত দেখুন : দ > দল)
তোমরা জামায়াত বদ্ধ হয়ে থাকো, জামায়াত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ো না :
জামিন : বিচার ব্যবস্থায় জামিন নীতি :
আরো দেখুন : পরকাল > জিজ্ঞাসা >
কিয়ামতের দিন আল্লাহর জিজ্ঞাসা সমূহ :
ফাজকুরুনী আজকুরকুম : তোমরা আমাকে স্মরণ কর আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব
আল্লাহর জিকির কারীগণই রাসুল সা: এর আদর্শকে অনুসরণ করে চলতে পারে :
সকাল সন্ধ্যায় জিকির বলতে কি বুঝানো হয়েছে ? ২৪ ঘন্টার সার্বক্ষণিক ইবাদতকে বুঝানো হয়েছে :
১। দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ তথা দাওয়াত, হিজরত, জিহাদ ইত্যাদি কাজকে আল্লাহর জিকর বলা হয়েছে:
৪। জিকর অর্থ হচ্ছে আদেশ, উপদেশ, কুরআন, হুকুম ইত্যাদি :
৫। আহলে কিতাব তথা ইহুদী খ্রিষ্টানসহ কিতাবধারী সম্প্রদায়কে আহলে জিকর বলা হয়েছে :
৭। জিকর অর্থ উপদেশ গ্রহণ করা, সচেতন হওয়া :
জিকর এর শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি হচ্ছে নামাজ, বরং, জিকর এর জন্য নামাজ পড়তে হবে :
পাচ ওয়াক্ত নামাজের কথা কুরআনে ইঙ্গিতে বলা হয়েছে : হামদ ও তসবীহ দ্বারা নামাজ বুঝানো হয়েছে:
আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলাই হচ্ছে আল্লাহর জিকর :
কিতাবধারীদেরকে আহলে জিকর বলা হয়েছে : আহলে কিতাবদেরকে আহলে জিকর বলা হয়েছে :
রিয়াদুস সালেহীন : আত্মসমালোচনা অধ্যায় ::
জিহাদ / মুজাহাদা শব্দের অর্থ কি ? জিহাদ করার প্রয়োজন কি ?
মুখে মুখে ঈমান আনলেই তোমাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে ? তোমাদেরকে কি পরীক্ষা করা হবে না?
দাওয়াতী কাজের ক্ষেত্রে বিনয়ের নীতি অবলম্বন করার সীমা কোন পর্যন্ত ? :
ইসলাম বিরোধীরা সব সময় ইসলামপন্থীদের ভয়ে ভীত ও তাদের চিন্তায় পেরেশান থাকে :
একা এক ব্যক্তির জিহাদ : শক্তিশালী সম্রাজ্যোর রাজার বিরুদ্ধে :
প্রত্যেক নবীর জন্যই শত্রু রয়েছে, আর তারা হচ্ছে অপরাধী সম্প্রদায় :
ইসলামী নেতৃত্বের আনুগত্য ফরজ : নেতার অনুমতি ছাড়া ময়দান ত্যাগ করা যাবে না:
জিহাদ করো জিহাদের হক আদায় করে :
সমগ্র মানবজাতির মধ্য থেকে মু’মিনদেরকেই জিহাদের জন্য আল্লাহ বাছাই করে নিয়েছেন :
ইসলামের বিরুদ্ধে সমস্ত বাতিল শক্তি একজোট হয়ে যায় :
জিহাদ, দাওয়াতী কাজ, হিজরত ইত্যাদি কাজকে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা ও আল্লাহর জিকর বলা হয়েছে:
বিভিন্ন যুদ্ধ সংক্রান্ত বর্ণনা সমূহ : (বিস্তারিত দেখুন : য > যুদ্ধ)
জিহাদ কেন দেওয়া হলো বা জিহাদের প্রয়োজন কি ?
জিহাদ অর্থ শুধুমাত্র যুদ্ধ নয়, বরং, শান্তি প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা :
যারা লড়াই করে তাগুতের প্রতিষ্ঠার পথে:
তোমাদের কি ধারণা তোমরা এত সহজে জান্নাতে প্রবশ করতে চাও ?
অন্যান্য নবী এবং তাদের সাথে তাদের সাহাবীরাও জিহাদ যুদ্ধ করেছেন এবং দু:খ কষ্ট ভোগ করেছেন:
আল্লাহ কাফেরদের মনে ভীতি সঞ্চার করে জিহাদে মু’মিনদের সহায়তা করেন :
জয় পরাজয় পালাক্রম আবর্তিত হয় : তবে মু’মিনরাই বিজয়ী হবে শেষ পযন্ত:
কুরআনের দাওয়াত তথা কুরআনের মাধ্যমে দাওয়াত প্রচার করা বড় জিহাদ :
কুরআনের মা্ধ্যমেই দাওয়াতী কাজ করতে হবে যদিও অস্বীকারকারীদের বাধার মুখে পড়তে হয় তবুও:
সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ ও ধৈর্য :
সশস্ত্র যুদ্ধের অনুমতি দেওয়ার কারণ:
২। আল্লাহ একদলকে আরেক দলের দ্বারা প্রতিহত করেন :
৩। সত্যের প্রতিষ্ঠা করার জন্য যারা শেষ পর্যন্ত শস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তারা আল্লাহর সাহায্যকারী :
সশস্ত্র যুদ্ধের ক্ষেত্রে মুমিনের হুংকার :
জীবন ও মৃত্যু তো পরীক্ষা স্বরূপ :
সশস্ত্র যুদ্ধের ক্ষেত্রে একটি কাফের জাতির নিজস্ব অনুভূতি :
বনী কুরাইযার বিরুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় :
শহীদ ও জিহাদ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ দারস :
শহীদ , জিহাদ, সশস্ত্র জিহাদ, ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধকারী, আল্লাহর পথে খরচ না করা ইত্যাদি :
মুনাফিক চিহ্নিত করা, তাদেরকে শাস্তি প্রদান করা :
ঈমানে দাবীতে কারা সত্যবাদী তা খুঁজে বের করা , প্রকৃত ঈমানদারদের খুঁজে বের করা :
যুদ্ধের মাধ্যমে শহীদ হিসেবে কিছু লোককে আল্লাহ গ্রহণ করতে চান এবং এটা ঈমানের পরীক্ষা :
আল্লাহ তার বানী সমূহের সাহায্যে সত্যকে সত্য রূপে প্রকাশ করে দেখিয়ে দেবেন :
বৃহত্তম জিহাদ ও সর্বাত্মক জিহাদ বলতে কি বুঝানো হয়েছে ? : জিহাদের প্রকারভেদ :
যারা মৃত্যুর ভয়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল :
কাফেরদের বলে দিন: তোমরা শীঘ্র্ই পরাজিত হবে, দোজখের দিকে হাকিয়ে নীত হবে :
যুদ্ধের সময় সৈনিকদের নিজেদের সংখ্যার চেয়ে বেশী দেখা :
যুদ্ধ থেকে পিছপা হওয়ার কারণ : মানুষকে ভয় করছে আল্লাহর চেয়ে বেশী :
জিহাদে উদ্ধুদ্ধ করা নবী/ রাসুলদের দায়িত্বের অন্তর্ভূক্ত :
আহলে কিতাবগণ তোমাদের সাথে যুদ্ধকরলে তারা পশ্চাদপসরণ করবে :
জিহাদে মু’মিনদের কাম্য থাকবে শুধু আখিরাত :
জিহাদে সেনাপতির আনুগত্য করা ফরজ / আনুগত্য না করার কুফল :
মুমিনদের পক্ষ থেকে লড়াই করার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হয়ে গেছেন :
জিহাদের ময়দানে প্রধান সাহায্যকারী হলেন আল্লাহ :
কাফের ও মুনাফিকদের নিকট দমিত হয়ো না, তাদেরকে পরোয়া করোনা : ভরসা কর আল্লাহর প্রতি, তিনিই যথেষ্ট :
মু’মিনদের সাহায্য করা আল্লাহর দায়িত্ব :
বিভিন্ন নবীদেরকে জিহাদের ময়দানে আল্লাহর সাহায্য সমূহ :
হযরত মূসা আ: কে আল্লাহর সাহায্য :
১। হযরত হারূন আ: কে মূসা আ: এর দোয়ায় নবী বানিয়ে তার সহযোগীতায় নিয়োজিত করা হয়েছে :
২। বিভিন্ন মু’জেযা দান করা হয়েছে:
জিহাদের মধ্যে তন্দ্রা দ্বারা আল্লাহ মু’মিনদেরকে প্রশান্তি দিলেন :
যখন যুদ্ধে সাহস হারাবার উপক্রম হয় তখন কি ব্যবস্থা নেয়া হল :
জিহাদের ময়দানে / যুদ্ধের মধ্যে আল্লাহ মু’মিনদের অন্তরে সাহস সঞ্চার করলেন : জিহাদের ময়দানে মনোবল :
অন্তর মজবুত ও দৃঢ় করে দেয়া / ঈমান মজবুত করে দেয়া :
জিহাদের ময়দানে দৃঢ়তা , আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করার জন্য প্রয়োজনে শহীদ হয়ে যাওয়া :
কাফেরদের অন্তরে ভীতির সৃষ্টি করে দেয়া:
জিহাদের ময়দানে আল্লাহর সান্তনা / সাহায্য / বিজয় লাভের শর্ত :
ফেরেশতা প্রেরণ করে জিহাদ/যুদ্ধে আল্লাহর সহযোগিতা :
ধুলি ঝড়ের মাধ্যমে জিহাদের ময়দানে আল্লাহর সাহায্য: অদৃশ্য সেনাদল দিয়ে আল্লাহর সাহায্য :
মৃত্যুর ভয়ে জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা বা মিথ্যা বাহানা দিয়ে ছুটি চাওয়া মুনাফিকদের কাজ :
যুদ্ধে শামিল হওয়ার ক্ষেত্রে মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার রক্ষা করেনি :
জিহাদের ময়দানে নবীগণের প্রতি আল্লাহর সান্তনা বানী : ভয় ও দুশ্চিন্তা করোনা :
জালিম শাসকের সামনে সত্যকথা ষ্পষ্ট ভাবে বলে দেয়া জিহাদ :
ধনী লোক ও দরিদ্র লোক, নেতা-সরকার ও সাধারণ মানুষ এর মধ্যে ইসলাম ও ঈমানের প্রশ্নে চিরন্তন লড়াই :
জিহাদের ময়দান থেকে ফিরে আসা / পালিয়ে আসার কুফল :
জুলুমের সমপরিমাণ প্রতিশোধ নেয়ার বৈধতা : তবে প্রতিশোধপরায়ণ মানসিকতা লালন করা ভালো নয় :
নিজেরাই নিজেদের উপর জুলুম করা :
কাফের ও মুনাফিকদের নিকট দমিত হয়ো না, তাদেরকে পরোয়া করোনা : ভরসা কর আল্লাহর প্রতি, তিনিই যথেষ্ট :
জিহাদ সম্বন্ধে মুনাফিকদের ধারণা :
জিহাদে গিয়ে মুত্যুবরণ করলে – তখন একথা বলা : তারা ঘরে বসে থাকলে মরতোনা :
যারা বলে বলে জিহাদের হুকুম আরো পরে দিলেনা কেন ? আমাদেরকে অবকাশ দিলেনা কেন ?
মুনাফিকরা অপেক্ষা করে আছে কোন দল বিজয়ী হয় :
জিহাদের ময়দানে বন্ধু ও শত্রু :
যারা আল্লাহ রাসুল ও ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাদর বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে :
কাফির তথা ইসলামবিরোধী ও জিহাদ :
কাফেরদের কৌশল নিতান্তই দুর্বল :
জিহাদের ময়দানে বন্ধু ও শত্রু :
ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীগণের প্রতি আল্লাহর সতর্কবানী :
জিহাদের সেনাপতির প্রতি আল্লাহর গুরুত্বপূর্ণ নসীহ সমুহ :
জিহাদের নেতৃত্বের আনুগত্য : ইসলামী নেতৃত্বের আনুগত্য ফরজ : অনুমতি ছাড়া ময়দান ত্যাগ করা যাবে না :
জিহাদ ও সেনাবাহিনী / সৈন্য সমাবেশ :
নবী রাসুলগণের জিহাদ সংক্রান্ত ঘটনাবলী :
মুসা আ: এর প্রতিপক্ষ ফেরাউনের সৈন্য সমাবেশ :
মুসা আ: এর উম্মতের জিহাদের ময়দানে ভীরুতা প্রদর্শন সংক্রান্ত :
জিহাদ কারীদের দোয়া : বিস্তারিত দেখুন : দ > দোয়া > আল কুরআনে বর্ণিত দোয়া সমূহ :
জিহাদ শব্দটি পবিত্র কুরআনে : ৪১ বার উল্লেখ হয়েছে
জিহাদের ময়দানে মুমিনদের জন্য নসীহত সমূহ :
জিহাদের ময়দান থেকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করোনা :
সীদ্ধান্ত গ্রহণ করার পর তার উপরে অটল থাকো : আরো দেখুন : স > সীদ্ধান্ত
জিহাদে নেতৃত্বের গুণাবলী, দায়িত্ব ও কর্তব্য সমূহ :
জিহাদ থেকে মানুষকে বিরত রাখে ৮টি জিনিস :
বিজয়ের পূর্বে খরচ করা আর বিজয়ের পরে খরচ করা এক নয় :
জিহাদকারীদের জন্য সু-সংবাদ সমূহ :
১। তোমাদেরকে রাষ্ট্রক্ষমতা দেয়া হবে :
২। মাকামে মাহমুদ দান করা হবে :
জিহাদে যোগদান থেকে অব্যহতি পেতে পারে কারা ?
জিহাদে মু’মিনদের মনে বিভিন্ন পদ্ধতিতে সাহস যেগানো :
ঈমানদারদের রক্ষাকারী আল্লাহ নিজে :
ঈমানদারদের প্রকৃত সাহায্যকারী হলেন আল্লাহ :
আল্লাহ সর্বোৎকৃষ্ট অভিভাবক ও সাহায্যকারী :
জিহাদের ময়দানে কাফেরদের বিরুদ্ধে আল্লাহ যা কিছু করবেন :
জিহাদ সম্পর্কে মু’মিনদের প্রতি আল্লাহর নসীহত সমূহ :
জিহাদ সম্পর্কে মুনাফিকদের দৃষ্টিভঙ্গি ও বক্তব্য :
কোন ধরণের মুনাফিকদের ক্ষমা করা হতে পারে ?
জিহাদ থেকে অব্যাহতি চাওয়া প্রসঙ্গে :
অবশ্যম্ভাবী জিহাদ/সশস্ত্র যুদ্ধের নির্দেশ :
অবশ্যম্ভাবী জিহাদ/সশস্ত্র যুদ্ধের নির্দেশ :
সশস্ত্র যুদ্ধের কিছু ঘটনার বর্ণনা :
জিহাদ কেন দেওয়া হলো ? জিহাদের প্রয়োজন কি ?
জিহাদের মাধ্যমে মু’মিনরা আল্লাহ ও রাসূলকে সহযোগিতা করে থাকেন :
জিহাদ সংগ্রাম কাদের বিরুদ্ধে করার প্রয়োজন নেই :
জিহ্বার জড়তা দুর করার জন্য আল্লাহর নিকট দোওয়া করা :
নবীগণ নবুওয়াত পাওয়ার পূর্বপর্যন্ত জীবনের দীর্ঘকাল তার জাতির সাথেই কাটিয়েছিলেন :
কঠোর নির্যাতনের কারণে জীবন বাচানোর জন্য কুফরী বাক্য উচ্চারণ করা কি জায়েজ ?
নিজের জীবন বাচানোর চিন্তায় মশগুল :
ইসলামের বিরুদ্ধে সমস্ত বাতিল শক্তি একজোট হয়ে যায় :
জাহান্নামে ইহুদীদের কয়েকদিন থাকার অলীক দাবী :
জাহান্নামের জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর :
জাহান্নাম বাসীদের যা কিছু বলা হবে / জিজ্ঞেস করা হবে :
জাহান্নামের অধিবাসী কোন ধরণের লোক হবে :
যারা জিহাদের ময়দান থেকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে
দাড়িপাল্লার ওজনে যাদের নেক আমলের পাল্লা হালকা হবে :
জাহান্নামের থাকবে সাতটি দরজা :
জাহান্নামের উপরে থাকবে পুলছিরাত যা সকলকেই অতিক্রম করতে হবে :
জাহান্নামে উৎপন্ন যাক্কুম বৃক্ষও অনেকের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ :
জাহান্নামের আযাবের / শাস্তির স্বরূপ ও প্রকার সমূহ :
জাহান্নামের আগুন জাহান্নামীদের মুখের চামড়া জ্বালিয়ে দেবে এবং তাদের চোয়াল বাইরে বের হয়ে আসবে:
আযাবের তীব্রতার কারণে জাহান্নামের অধিবাসীরা মৃত্যু কামনা করবে : কিন্তু তাদের মৃত্যু হবে না :
অধোমুখে আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে :
জাহান্নামীদের জন্য যা কিছু হারাম হবে:
অসৎ নেতৃত্ব কিয়ামতের দিন তার অনুসারীদের নেতৃত্ব দিয়ে জাহান্নামে নিয়ে যাবে :
অসৎ নেতৃত্বের জন্য জাহান্নাম :
জান্নাত ও জাহান্নামকে হাশরের ময়দানে উন্মুক্তভাবে প্রদর্শন করা হবে :
তোমরা এত সহজে জান্নাতে চলে যাবে ?
জান্নাত কেমন হবে ? জান্নাতের সুখ-স্বাচ্ছন্দের স্বরূপ :
কিয়ামতের চরম ভীতিকর অবস্থায়ও মু’মিনরা একটুও পেরেশান হবে না :
জান্নাতীদের জন্য হাশরের ময়দানের কঠিন সময়টি কতটুকু হবে :
ফেরেশতারা জান্নাতীদেরকে অভ্যর্থনা করবে :
জান্নাতের অবস্থান কোথায় হবে ? এ দুনিয়াটাকেই কি জান্নাতে পরিণত করা হবে ?
জান্নাতে পরিবার পরিজন সহ থাকতে পারবে, তবে পরিবারের সদস্য যারা সতকর্মশীল :
জান্নাত দেওয়া হবে মানুষকে তার কর্মফল এর পুরস্কার স্বরূপ :
জান্নাতুল ফেরদাউস কারা পাবে ? ফেরদাউস শব্দের অর্থ কি ?
জান্নাতে প্রবেশ করার পর জান্নাত বাসীরা যা বলবে :
জান্নাতে প্রবেশ করার পর জান্নাত বাসীদেরকে যা বলা হবে :
জান্নাতে প্রবেশ করবে না কারা : :
জান্নাতে প্রবেশ করা এমনই অসম্ভব যেমন সূচের ছিদ্র দিয়ে উটের প্রবেশ করা অসম্ভব : ৭:৪০,
জান্নাত কেমন হবে ? / জান্নাতের নিয়ামত সমূহ :
জান্নাতে কি মানুষ চিরকাল অবস্থান করবে ?
জান্নাতের ওয়ারিশ / উত্তরাধীকারী :
জান্নাতে পারস্পরিক মনোমালিন্য দুর করে জান্নাতীদেরকে ভাই ভাইয়ে পরিণত করা হবে :
জান্নাতে চিরকাল অবস্থান করবে : দেখুন : জ > জান্নাত কেমন হবে?/জান্নাতের নিয়ামত সমূহ:
জান্নাত ও জাহান্নামবাসীদের মধ্যে কথোপকথন :
পরকালীন জান্নাতের ঘর তো তাদের জন্যই যাদের ভিতর অহংকার/বড়াই নেই :
জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য ঈমান এর সাথে সাথে সৎকাজ (ঈমান ও আমলে সালেহ) করাও জরুরী :
জান্নাতীদেরকে জান্নাতে যা কিছু বলা হবে :
জান্নাতীদের অভ্যর্থনা জানানো হবে শান্তি ও নিরাপত্তার মোবারকবাদ দ্বারা :
জান্নাতবাসীদেরকে অভ্যর্থনা করা হবে সালাম এর মাধ্যমে :
চিরন্তন জীবন লাভ করতে চাওয়া মানুষের একটি স্বভাবজাত বাসনা :
জান্নাত থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর হযরত আদম আ: কী ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হবেন?
জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝখানে থাকবে আ’রাফ :
জুলকারনাইন এর ঘটনা : ( দেখুন : য > যুলকারনাইনের ঘটনা )
পরকালীন বিচারের ক্ষেত্রে আল্লাহ কারো উপরে জুলুম করবেন না :
নিজেরাই নিজেদের উপর জুলুম করা :
যারা জুলুমের স্বীকার হয়েও সহ্য করেছে :
জুলুমের সমপরিমাণ প্রতিশোধ নেয়ার বৈধতা : তবে প্রতিশোধপরায়ণ মানসিকতা লালন করা ভালো নয় :
আল্লাহর মু’জেযার প্রতি জুলুম :
তাকদীরের কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে বলেই কি মানুষ জান্নাতে বা জাহান্নামে যাবে ?
মজলুম মুসলমানদেরকে যুদ্ধের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল :
হিজরতকারী মুসলমানগণ হিজরত করার সময় কি ধরণের জুলুমের শিকার হয়েছিল:
যারা আল্লাহর আয়াত (কুরাআনের আয়াত / নিদর্শন সমূহ) অস্বীকার করে তারাই জালেম :
জালিমদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য হযরত মূসা আ: এর দোয়া :
যারা আল্লাহর পক্ষ থেকে সুষ্পষ্ট নিদর্শন দেখার পরও সঠিক পথে ফির আসেনা, বরং মিথ্যারোপ করে তারা জালেম :
আল্লাহ কারো উপর জুলুম করেন না :
বিশ্বজাহানের প্রতি আল্লাহ জালেম নন :
আল্লাহ ও রাসুলের বিধান অনুযায়ী যারা বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করেনা তারা মুনাফিক ও জালিম :
জালিমরা দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানে পথভ্রষ্ট :
জালেমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই:
জালেমদের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়ার কারণে শুকরিয়া আদায়ের নির্দেশ হযরত নূহ আ: কে :
জালিমরা তাদের জুলুমের কারণে আযাবের শিকার হবে:
জালেমদের জন্য কোন সুপারিশ কবুল করা হবে না :
জালেমদেরকে ক্ষমার জন্য আহ্বান করা হবে না :
নবীগণের জন্য জুলুম শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে : এর অর্থ ভুলে যাওয়া বা সংকল্পের দৃঢ়তা না থাকা :
জিনরাও তাদের অপরাধের কারণে জাহান্নামে যাবে :
জ্বিন শয়তানেরা কি গায়েবের সংবাদ বলতে পারে?
হযরত সোলায়মান আ: এর অনুগত জিনদের সম্পর্কিত বর্ণনা :
সুলায়মান আ: এর সৈন্যদের মধ্যে কি জ্বিনেরা অন্তর্ভূক্ত ছিল :
জ্বিনা / জিনা / জেনা / যেনা : (ব্যভিচার) :
যারা জিনা থেকে দুরে থাকে তারাই সফলকাম :
জ্বিনা থেকে বেচে থাকার পদ্ধতি : জ্বিনা বন্ধের উপায় সমূহ :
১। অশ্লীলতা ও নির্লজ্জতা থেকে দুরে থাকার নির্দেশ :
৩। পুরুষদের দৃষ্টি নত রাখা ও লজ্জাস্থানের হেফাজত করার নির্দেশ :
৪। মহিলাদের দৃষ্টি নত রাখা, লজ্জাস্থানের হেফাজত করা ও পর্দা করার নির্দেশ, হিজাব পড়ার নির্দেশ :
৫। জ্বিনার পথ উন্মুক্তকরা ও অশ্লীলতার প্রচার ও প্রসার কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ :
৬। বিবাহ যোগ্যাদের দ্রুত বিয়ে করিয়ে দাও :
৭। পতিতালয় প্রতিষ্ঠা করা অবৈধ : এমনকি দাসীদের দ্বারাও পতিতালয় কায়েম করা যাবেনা :
৮। নামায কায়েম করো, নামায অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে :
জ্বিনার আহ্বান এবং তা প্রত্যাখ্যান করার পদ্ধতি : (হযরত ইউসুফ আ: এর ঘটনা):
জিনা করতে রাজী না হওয়ার কারণে কারাগারে প্রেরণ :
হযরত মরিয়ম আ: এর প্রতি জ্বিনার অপবাদ :
হযরত আয়শা রা: এর প্রতি অপবাদ :
১। একশত বেত্রাঘাত ২। রজম ৩। চরিত্রবান নারী বা পুরুষেরা কোন জ্বেনাকারী নারী বা পুরুষকে বিয়ে করবে না।
লূত আ: জাতির কর্মের শরীয়াত বিহিত শাস্তি :
জাব্বারিন : প্রবল পরাক্রান্ত একনায়কতান্ত্রিক জাতির কর্মকান্ড :
আরো দেখুন : ক > কুরবানী ।
৫:৪, ১০৩, ৬:১১৮, ১১৯, ১২১, ৬:১৪৫,
(১৬:১১৫) আল্লাহ যাকিছু তোমাদের ওপর হারাম করেছেন তা হচ্ছে , মৃতদেহ, রক্ত, শূয়োরের গোশত এবং যে প্রাণীর ওপর আল্লাহ ছাড়া অন্য কারোর নাম নেয়া হয়েছে৷
(হাজ্ব:২৮) তোমার কাছে আসবে, যাতে এখানে তাদের জন্য যে কল্যাণ রাখা হয়েছে তা তারা দেখতে পায় এবং তিনি তাদেরকে যেসব পশু দান করেছেন তার উপর কয়েকটি নির্ধারিত দিনে আল্লাহর নাম নেয় (অর্থাৎ, আল্লাহর নামে জবেহ করে) , নিজেরাও খাও এবং দুর্দশাগ্রস্ত অভাবীকেও খাওয়াও৷
(হাজ্ব:৩৪) প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি কুরবানীর একটি নিয়ম ঠিক করে দিয়েছি, যাতে (সে উম্মতের) লোকেরা সে পশুদের ওপর আল্লাহর নাম নেয় যেগুলো তিনি তাদেরকে দিয়েছেন৷৬৪
(৬৫. এ আয়াত থেকে জানা গেছে, আল্লাহর নামে কুরবানী করাই হচ্ছে আসল জিনিস। কুরবানী কখন করা হবে, কোথায় করা হবে, কিভাবে করা হবে-এ নিয়মটির এ বিস্তারিত নিয়মাবলী মোটেই কোন মৌলিক বিষয় নয়। বিভিন্ন যুগের, জাতির ও দেশের নবীদের শরীয়াতে অবস্থার প্রেক্ষিতে এ বিস্তারিত বিষয়াবলীতে পার্থক্য ছিল। কিন্তু সবার মূল প্রাণশক্তি ও উদ্দেশ্য একই রয়েছে।)
(হাজ্ব:৩৬) .... কাজেই তাদেরকে (উটগুলিকে) দাঁড় করিয়ে দিয়ে তাদের ওপর আল্লাহর নাম নাও৷ ৭০
(৭০. এ বাক্যটি আবার একথা প্রমাণ করছে যে, আল্লাহর নাম উচ্চারণ না করে যবেহ করলে কোন পশু হালাল হয় না। তাই আল্লাহ "তাদেরকে যবেহ করো" না বলে বলছেন "তাদের ওপর আল্লাহর নাম নাও" এবং এর অর্থ হচ্ছে, পশু যবেহ করো। এ থেকে একথা আপনা আপনিই বের হয়ে আসে যে, ইসলামী শরীয়াতে আল্লাহর নাম না নিয়ে পশু যবেহ করার কোন অবকাশ নেই।
যবেহ করার সময় (আরবী) বলার পদ্ধতি এখান থেকেই গৃহীত হয়েছে। ৩৬ আয়াতে বলা হয়েছে (আরবী) "যাতে আল্লাহ প্রদত্ত হিদায়াতের ভিত্তিতে তোমরা তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করো।"
হাদীসে কুরবানী করার সময় নাম উচ্চারণ করার বিভিন্ন পদ্ধতি উদ্ধৃত হয়েছে। যেমন
(১) "আল্লাহর নামে এবং আল্লাহ সবচেয়ে বড়, হে আল্লাহ! তোমরাই সম্পদে এবং তোমারই জন্য হাজির।"
(২) "আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, হে আল্লাহ! তোমারই সম্পদ এবং তোমারই জন্য হাজির।"
(৩) "আমি একনিষ্ঠ হয়ে আমার চেহারা এমন সত্তার দিকে ফিরিয়ে নিয়েছি যিনি আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, আর আমি মুশরিকদের দলভুক্ত নই। অবশ্যই আমার নামায ও কুরবানী এবং আমার বাঁচা ও মরা সবই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য। তাঁর কোন শরীক নেই। আমাকে এরই হুকুম দেয়া হয়েছে এবং আমি আনুগত্যের শির নতকারীদের অন্তরভুক্ত। হে আল্লাহ! তোমারই সম্পদ এবং তোমারই জন্য হাজির।")
(হাজ্ব:৩৬) .... আর যখন (কুরবানীর পরে) তাদের পিঠ মাটির সাথে লেগে যায় ৭১ তখন তা থেকে নিজেরাও খাও এবং তাদেরকেও খাওয়াও যারা পরিতুষ্ট হয়ে বসে আছে এবং তাদেরকেও যারা নিজেদের অভাব পেশ করে৷
(৭১. লেগে যাওয়ার মানে শুধু এতটুকু নয় যে, তারা মাটিতে পড়ে যায় বরং এ অর্থও এর অন্তরবুক্ত যে, তারা পড়ে গিয়ে স্থির হয়ে যায় অর্থাৎ তড়পানো বন্ধ করে দেয় এবং প্রাণবায়ু পুরোপুরি বের হয়ে যায়। আবু দাউদ, তিরমিযী ও মুসনাদে আহমদে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ বাণী উদ্ধৃত হয়েছে যে,
(আরবী)
"এখনো জীবিত আছে এমন পশুর যে গোশত কেটে নেয়া হয় তা মৃত পশুর গোশত (এবং হারাম)।")
(হাজ্ব:৩৬) .... কাজেই তাদেরকে (উটগুলিকে) দাঁড় করিয়ে দিয়ে ৬৯ তাদের ওপর আল্লাহর নাম নাও৷
(৬৯. উল্লেখ করা যেতে পারে, উটকে দাঁড় করিয়ে যবেহ করা হয়। তার একটি পা বেঁধে দেয়া হয় তারপর কণ্ঠনালীতে সজোরে বল্লম মারা হয়। সেখান থেকে রক্তের একটি ধারা প্রবাহিত হতে থাকে। তারপর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে গেলে উট মাটির ওপর পড়ে যায়। 'সাওয়াফ' বা দাঁড় করিয়ে রাখা বলতে এটিই বুঝানো হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা) মুজাহিদ, দ্বাহহাক প্রমুখ ব্যাখ্যাতাগণ এর এ ব্যাখ্যাই করেছেন। বরং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকেও একথাই উদ্ধৃত হয়েছে। মুসলিম ও বুখারী হাদীস বর্ণনা করেছেন, ইবনে উমর (রা) এক ব্যক্তিকে তার উটকে বসিয়ে রেখে কুরবানী করতে দেখেন। এ দৃশ্য দেখে তিনি বলেন,
(আরবী)
"পা বেঁধে তাকে দাঁড় করিয়ে দাও। এটা হচ্ছে আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত।"
আবু দাউদ জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে হাদীস উদ্ধৃত করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ উটের বাম পা বেঁধে রেখে বাকি তিন পায়ের ওপর তাকে দাঁড় করিয়ে দিতেন। তারপর তার হলকুমে বর্শা নিক্ষেপ করতেন। কুরআন নিজেও এ অর্থের প্রতি ইংগিত করেছেঃ (আরবী) "যখন তাদের পিঠ জমিতে ঠেকে যায়।" একথা এমন অবস্থায় বলা হয় যখন পশু দাঁড়িয়ে থাকে এবং তারপর জমির ওপর পড়ে যায়। অন্যথায় শুইয়ে দিয়ে কুরবানী দিয়ে কুরবানী করা অবস্থায় পিঠ তো আগে থেকেই জমির সাথে লেগে থাকে।)
দেখুন : ক > কৈফিয়ত, প > প্রশ্ন, হ > হিসাব নিকাশ
(১৬:১১) এ পানির সাহায্যে তিনি শস্য উৎপন্ন করেন এবং জয়তুন, খেজুর, আংগুর ও আরো নানাবিধ ফল জন্মান৷ এর মধ্যে যারা চিন্তা-ভাবনা করে তাদের জন্য রয়েছে একটি বড় নিদর্শন৷
(নূর:৩৫) আল্লাহ আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর আলো ৷ (বিশ্ব-জাহানে) তাঁর আলোর উপমা যেন একটি তাকে একটি প্রদীপ রাখা আছে, প্রদীপটি আছে একটি চিমনির মধ্যে, চিমনিটি দেখতে এমন যেন মুক্তোর মতো ঝকঝকে নক্ষত্র, আর এ প্রদীপটি যয়তুনের এমন একটি মুবারক গাছের তেল দিয়ে উজ্জল করা হয়, যা পূর্বেরও নয়, পশ্চিমেরও নয়৷ যার তেল আপনা আপনিই জ্বলে ওঠে, চাই আগুন তাকে স্পর্শ করুক বা না করুক ৷ (এভাবে ) আলোর ওপরে আলো (বৃদ্ধির সমস্ত উপকরণ একত্র হয়ে গেছে) আল্লাহ যাকে চান নিজের আলোর দিকে পথনির্দেশ করেন ৷ তিনি উপমার সাহায্যে লোকদের কথা বুঝান৷ তিনি প্রত্যেকটি জিনিস খুব ভালো করেই জানেন ৷
(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ম > মুতাশাবিহাত আয়াত)
(১১:১০০) এগুলো কতক জনপদের খবর, যা আমি তোমাকে শুনাচ্ছি৷ এদের কোনটা এখনো দাঁড়িয়ে আছে আবার কোনটার ফসল কাটা হয়ে গেছে৷ ১০১) আমি তাদের প্রতি জুলুম করিনি, তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর অত্যাচার করেছে আর যখন আল্লাহর হুকুম এসে গেলো তখন আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা নিজেদের যেসব মাবুদকে ডাকতো তারা তাদের কোন কাজে লাগলো না এবং তারা ধ্বংস ছাড়া তাদের আর কোন উপকার করতে পারলো না৷
(১৭:৫৮) আর এমন কোনো জনপদ নেই, যা আমি কিয়ামতের আগে ধ্বংস করে দেবো না অথবা যাকে কঠোর শাস্তি দেবো না, আল্লাহর লিখনে এটা লেখা আছে৷
(১৮:৫৯) এ শাস্তিপ্রাপ্ত জনপদগুলো তোমাদের সামনে আছে, এরা জুলুম করলে আমি এদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলাম এবং এদের প্রত্যেকের ধ্বংসের জন্য আমি সময় নির্দিষ্ট করে রেখেছিলাম৷
(১৮:৮৯) তারপর সে (আর একটি অভিযানের) প্রস্তুতি নিল৷ ৯০) এমন কি সে সূর্যোদয়ের সীমানায় গিয়ে পৌঁছুলো৷ সেখানে সে দেখলো, সূর্য এমন এক জাতির ওপর উদিত হচ্ছে যার জন্য রোদ থেকে বাঁচার কোনো ব্যবস্থা আমি করিনি৷
উপরে যান :
(১৮:৩৪) এবং সে খুব লাভবান হয়েছিল৷ এসব কিছু পেয়ে একদিন সে তার প্রতিবেশীর সাথে কথা প্রসংগে বললো, “আমি তোমার চেয়ে বেশী ধনশালী এবং আমার জনশক্তি তোমার চেয়ে বেশী৷”
(১৭:৩১) দারিদ্রের আশংকায় নিজেদের সন্তান হত্যা করো না৷ আমি তাদেরকেও রিযিক দেবো এবং তোমাদেরকেও৷ আসলে তাদেরকে হত্যা করা একটি মহাপাপ৷
(ব্যাখ্যা: যেসব অর্থনৈতিক চিন্তাধারার ভিত্তিতে প্রাচীনকাল থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত যুগে যুগে জন্মনিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন আন্দোলন দানা বেঁধেছে, এ আয়াতটি তার ভিত পুরোপুরি ধ্বসিয়ে দিয়েছে । প্রাচীন যুগে দারিদ্র্য ভীতি শিশু হত্যা ও গর্ভপাতের কারণ হতো । আর আজ তা দুনিয়াবাসীকে তৃতীয় আর একটি কৌশল অর্থাৎ গর্ভনিরোধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে । কিন্তু ইসলামের ঘোষণাপত্রের এ ধারাটি তাকে অন্নগ্রহণকারীদের সংখ্যা কামাবার ধ্বংসাত্মক প্রচেষ্টা ত্যাগ করে এমনসব গঠনমূলক কাজে নিজের শক্তি ও যোগ্যতা নিয়োগ করার র্নিদেশ দিচ্ছে যেগুলোর মাধ্যমে আল্লাহর তৈরী প্রাকৃতিক বিধান অনুযায়ী রিযিক বৃদ্ধি হয়ে থাকে । এ ধারাটির দৃষ্টিতে অর্থনৈতিক উপায় - উপকরনের স্বল্পতার আশংকায় মানুষের বারবার সন্তান উৎপাদনের সিলসিলা বন্ধ করে দিতে উদ্যত হওয়া তার বৃহত্তম ভুলগুলোর অন্যতম হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে । এ ধারাটি মানুষকে এ বলে সাবধান করে দিচ্ছে যে, রিযিক পৌঁছাবার ব্যবস্থাপনা তোমার আয়ত্বাধীন নয় বরং এটি এমন এক আল্লাহর আয়ত্বাধীন যিনি তোমাকে এ যমীনে আবাদ করেছেন । পূর্বে আগমনকারীদেরকে তিনি যেভাবে রুজি দিয়ে এসেছেন তেমনিভাবে তোমাদেরকেও দেবেন । ইতিহাসের অভিজ্ঞতাও একথাই বলে, দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে জনসংখ্যা যতই বৃদ্ধি হতে থেকেছে ঠিক সেই পরিমাণে বরং বহুসময় তার চেয়ে অনেক বেশী পরিমাণে অর্থনৈতিক উপায় উপকরণ বেড়ে গিয়েছে । কাজেই আল্লাহর সৃষ্টি ব্যবস্থাপনায় মানুষের অযথা হস্তক্ষেপ নির্বুদ্ধিতা ছাড়া আর কিছুই নয় ।
এ শিক্ষার ফলেই কুরআন নাযিলের যুগ থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত কোন যুগে মুসলমানদের মধ্যে জন্ম শাসনের কোন ব্যাপক ভাবধারা জন্ম লাভ করতে পারেনি ।
(৩৪-সাবা: ১৯) কিন্তু তারা বলল হে, আমাদের রব! আমাদের ভ্রমণের দূরত্ব দীর্ঘায়িত করো৷৩২ তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছে৷ শেষ পর্যন্ত আমি তাদেরকে কাহিনী বানিয়ে রেখে দিয়েছি এবং তাদেরকে একদম ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছি৷ ৩৩. নিশ্চিতভাবেই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে বেশী বেশী সবরকারী ও বেশী বেশী কৃতজ্ঞ প্রতিটি ব্যক্তির জন্য। ৩৪
(৩২. তারা যে মুখে এ দোয়া উচ্চারণ করেছিল, এমনটি অপরিহার্য নয়। আসলে যে ব্যক্তিই আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞ হয় সে যেন তার অবস্থা ও কর্মকান্ডের মাধ্যমে একথা বলে, হে আল্লাহ আমি এ নিয়ামতগুলোর যোগ্য নই। অনুরূপভাবে যে জাতি আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে অযথা সুবিধা লাভ করে সে যেন নিজের রবের কাছে দোয়া করে, হে আমাদের বর! এ অনুগ্রহগুলো আমাদের থেকে ছিনিয়ে নাও, কারণ আমরা এর যোগ্য নই ।
করে সে যেন নিজের রবের এছাড়া (যে আল্লাহ! আমাদের সফর দীর্ঘায়িত করে দাও) এ শব্দগুলো থেকে কিছুটা একথাও প্রতীয়মান হয় যে, সম্ভবত সাবা জাতির চোখে তাদের বিপুল জনসংখ্যা বিরক্তিকর মনে হয়েছিল এবং অন্যান্য জাতির মতো তারাও নিজেদের বর্ধিত জনসংখ্যাকে সংকট মনে করে জন্ম নিয়্ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়েছিল।)
(১৯:১৫) শান্তি তার প্রতি যেদিন সে জন্ম লাভ করে এবং যেদিন সে মৃত্যুবরণ করে আর যেদিন তাকে জীবিত করে উঠানো হবে৷
(১৯:৩৩) শান্তি আমার প্রতি যখন আমি জন্ম নিয়েছি ও যখন আমি মরবো এবং যখন আমাকে জীবিত করে উঠানো হবে”৷
(২০:৫৫) এ মাটি থেকেই আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এরি মধ্যে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবো এবং এ থেকেই আবার তোমাদেরকে বের করবো৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৪) প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, ফেরাউন পৃথিবীতে বিদ্রোহ করে এবং তার অধিবাসীদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে দেয়৷ তাদের মধ্য থেকে একটি দলকে সে লাঞ্ছিত করতো।
(অর্থাৎ, তার রাজ্য শাসনের নীতি অনুযায়ী আইনের চোখে দেশের সকল অধিবাসী সমান থাকেনি এবং সবাইকে সমান অধিকারও দেয়া হয়নি। বরং সে সভ্যতা- সংস্কৃতি ও রাজনীতির এমন পদ্ধতি অবলম্বন করেছে যার মাধ্যমে রাজ্যের অধিবাসীদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে দেয়া হয়। একদলকে সুযোগ সুবিধা ও বিশেষ অধিকার দিয়ে শাসক দলে পরিণত করা হয় এবং অন্যদলকে অধীন করে পদানত, পর্যুদস্ত , নিষ্পেষিত ও ছিন্নবিচ্ছিন্ন করা হয়।)
এখানে কারো এ ধরনের সন্দেহ করার অবকাশ নেই যে, ইসলামী রাষ্ট্রেও তো মুসলিম ও জিম্মীর মধ্যে ফারাক করা হয় এবং তাদের অধিকার ও ক্ষমতাও সকল দিক দিয়ে সমান রাখা হয়নি। এ সন্দেহ এজন্য সঠিক নয় যে, ফেরাউনী বিধানে যেমন বংশ, বর্ণ , ভাষা বা শ্রেণীগত বিভেদের উপর বৈষম্যের ভিত্ রাখা হয়েছে ইসলামী বিধানে ঠিক তেমনটি নয়। বরং ইসলামী বিধানে নীতি ও মতবাদের উপর এর ভিত রাখা হয়েছে। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জিম্মী ও মুসলমানের মধ্যে আইনগত অধিকারের ক্ষেত্রে মোটেই কোন ফারাক নেই ।সকল পার্থক্য একমাত্র রাজনৈতিক অধিকারের ক্ষেত্রে। আর এ পার্থক্যের কারণ এ ছাড়া আর কিছুই নয় যে, একটি আদর্শিক রাষ্ট্রে শাসকদল একমাত্র তারাই হতে পারে যারা হবে রাষ্ট্রের মূলনীতির সমর্থক। এ দলে এমন প্রত্যেক ব্যক্তি শামিল হতে পারে যে এ মূলনীতি মেনে মেবে না। এ পার্থক্য ও ফেরাউনী ধরনের পার্থক্যের মধ্যে কোন মিল নেই। কারণ , ফেরাউনী পার্থক্যের ভিত্তিতে পরাধীন প্রজন্মের কোন ব্যক্তি কখনো শাসক দলে শামিল হতে পারে না। সেখানে পরাধীন প্রজন্মের লোকেরা রাজনৈতিক ও আইনগত অধিকার তো দূরের কথা মৌলিক মানবিক অধিকারও লাভ করে না। এমনকি জীবিত থাকার অধিকারও তাদের থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়। সেখানে কখনো পরাধীনদের জন্য কোন অধিকারের জামানত দেয়া হয় না। সব ধরনের স্বার্থ , মুনাফা, সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা একমাত্র শাসক সমাজের জন্য নির্দিষ্ট থাকে এবং এ বিশেষ অধিকার একমাত্র জাতির মধ্যে জন্মলাভকারী ব্যক্তিই লাভ করে। )
যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি সঠিক ভাবে ঈমান আনেনা, আল্লাহ রাসূলের হারামকৃত জিনিসকে হারাম মনে করেনা ও সত্য দ্বীনকে নিজেদের দ্বীন বানায়না, সেই সমস্ত আহলে কিতাবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো যতক্ষণ না তারা জিযিয়া প্রদানে সম্ত হয় ও পদানত হয়ে থাকে : ৯:২৯,
(১৮:৯৪) তারা বললো, “হে যুলকারনাইন! ইয়াজুজ ও মাজুজ এ দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে৷ আমরা কি তোমাকে এ কাজের জন্য কোনো কর দেবো, তুমি আমাদের ও তাদের মাঝখানে একটি প্রাচীর নির্মাণ করে দেবে ?
মীকাইল ফেরেশতার শত্রু : ২:৯৮,
যারা জিবরাইলের শত্রু : ২:৯৭, ৯৮,
রুহুল কুদ্দুস – ২:২৫৩,
বিস্তারিত দেখুন : ফ > ফেরেশতা ।
জিহাদ ঈমানদারদিগকে জীবন দান করে : ৮:২৪,
জীবনকাল একটি নির্দ্দিষ্ট সময়ের জন্য : ৬:২, ৬১,
জীবনের প্রতি সবচেয়ে বেশী লোভী ইহুদীরা : ২:৯৫,
সুরা মুলক : ১-৪।
(২০:১৫) কিয়ামত অবশ্যই আসবে, আমি তার সময়টা গোপন রাখতে চাই, যাতে প্রত্যেকটি প্রাণসত্তা তার প্রচেষ্টা অনুযায়ী প্রতিদান লাভ করতে পারে৷
তিনিই আকাশ ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, -যখন এর আগে তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল,- যাতে তোমাদের পরীক্ষা করে দেখেন তোমাদের মধ্যে কে ভালো কাজ করে৷ এখন যদি হে মুহাম্মদ! তুমি বলো, হে লোকেরা, মরার পর তোমাদের পুনরুজ্জীবিত করা হবে, তাহলে অস্বীকারকারীরা সংগে সংগেই বলে উঠবে৷ এতো সুস্পষ্ট যাদু৷-১১:৭,
(২১:৩৪) আর (হে মুহাম্মাদ!) অনন্ত জীবন তো আমি তোমার পূর্বেও কোনো মানুষকে দেইনি ; যদি তুমি মরে যাও তাহলে এরা কি চিরকাল বেঁচে থাকবে ? ৩৫) প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে৷ আর আমি ভালো ও মন্দ অবস্থার মধ্যে ফেলে তোমাদের সবাইকে পরীক্ষা করছি, শেষ পর্যন্ত তোমাদের আমার দিকে ফিরে আসতে হবে৷
( যে সমস্ত হুকমি ধমকি, বদদোয়া ও হত্যার ষড়যন্ত্রের সাহায্যে সর্বক্ষণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বাগত জানানো হতো এ হচ্ছে তার সংক্ষিপ্ত জবাব। একদিকে ছিল কুরাইশ নেতারা। তারা প্রতিদিন তাঁর এই প্রচার কার্যের জন্য তাকে হুকমি দিতে থাকতো এবং তাদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক বিরোধী আবার বসে বসে যে কোনভাবে তাঁকে খতম করে দেবার কথাও ভাবতো। অন্যদিকে যে গৃহের কোন একজন ইসলাম গ্রহণ করতো সে গৃহের সবাই তার শত্রু হয়ে যেতো। মেয়েরা দাঁতে দাঁত পিশে তাঁকে অভিশাপ দিতো এবং বদদোয়া করতো। আর গৃহের পুরুষরা তাঁকে ভয় দেখাতো। বিশেষ করে হাবশায় হিজরাতের পরে মক্কার ঘরে ঘরে বিলাপ শুরু হয়ে গিয়েছিল। কারণ এমন একটি বাড়ি পাওয়াও কঠিন ছিল যেখান থেকে একজন পুরুষ বা মেয়ে হিজরাত করেনি। এরা সবাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামে অভিযোগ করে বলতো, এ লোকটি আমাদের পরিবার ধ্বংস করে দিয়েছে। এসব কথার জবাব এ আয়াতে দেয়া হয়েছে এবং একই সংগে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেও উপদেশ দেয়া হয়েছে যে, ওদের কোন পরোয়া না করে তুমি নির্ভয়ে নিজের কাজ করে যাও।
অর্থাৎ দুঃখ-আনন্দ, দারিদ্র-ধনাঢ্যতা, জয়-পরাজয়, শক্তিমত্তা-দুর্বলতা, সুস্থতা-রুগ্নতা ইত্যাদি সকল অবস্থায় তোমাদেরকে পরীক্ষা করা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে, ভালো অবস্থায় তোমরা অহংকারী, জালেম, আল্লাহ বিস্মৃত ও প্রবৃত্তির দাস হয়ে যাও কিনা। খারাপ অবস্থায় হিম্মত ও সাহস কমে যাওয়ায় নিম্নমানের ও অবমাননাকর পদ্ধতি এবং অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে বসো কি না। কাজেই কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তির এ রকমারি অবস্থা বুঝার ব্যাপারে ভুল করা উচিত নয়। সে যে অবস্থারই সম্মুখীন হোক, তাকে অবশ্যই পরীক্ষার এ দিকটি সামনে রাখতে হবে এবং সাফল্যের সাথে একে অতিক্রম করতে হবে। কেবলমাত্র একজন বোকা ও সংকীর্ণমনা লোকই ভাল অবস্থায় ফেরাউনে পরিণত হয় এবং খারাপ অবস্থা দেখা দিলে মাটিতে নাক-খত দিতে থাকে। )
তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, …… কে প্রাণহীন থেকে সজীবকে এবং সজীব থেকে প্রাণহীনকে বের করে? ……..তারা নিশ্চয়ই বলবে, আল্লাহ৷ বলো, তবুও কি তোমরা (সত্যের বিরোধী পথে চলার ব্যাপারে৷)সতর্ক হচ্ছো না?-১০:৩১
(৩০-রূম: ১৯) তিনি জীবিত থেকে মৃত্যুকে বের করেন এবং মৃত থেকে জীবিত কে বের করে আনেন এবং ভূমিকে তাঁর মৃত্যুর পর জীবন দান করেন৷ ২৫ অনুরূপভাবে তোমাদেরও (মৃত অবস্থা থেকে ) বের করে নিয়ে যাওয়া হবে৷
২৫ . অর্থাৎ যে আল্লাহ প্রতিমূহুর্তে তোমাদের সামনে একাজ করছেন তিনি মানুষের মৃত্যুর পর তাকে পুনরুজ্জীবিত করতে অক্ষম হতে পারেন কেমন করে ৷ তিনি সবসময় জীবিত মানুষ ও জন্ম- জানোয়ারদের মধ্য থেকে বর্জ্য পদার্থ (waste Matter) বের করছেন যেগুলোর মধ্যে জীবনের সামান্যতম গন্ধ নেই । তিনি প্রতি মুহূর্তে নিষ্প্রাণ বস্তুর (Dead Matter) মধ্যে জীবন সঞ্চার করে অসংখ্য পশু, উদ্ভিদ ও মানুষ সৃষ্টি করে চলছেন। অথচ যেসব উপাদান থেকে এ জীবন্ত সত্তাগুলোর শরীর গঠিত হচ্ছে তাদের মধ্যে সামান্যতমও জীবনের চিহ্ন নেই। তিনি প্রতি মুহূর্তে তোমাদের এ দৃশ্য দেখিয়ে চলছেন যে, অনুর্বর ,অনুন্নত , অনাবাদি পতিত জমিতে বৃষ্টির পানি পড়ার সাথে সাথেই সহসা সেখানে প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবনের বিপুল সমারোহ দেখা যায়। এ সবকিছু দেখার পরও যদি কোন ব্যক্তি মনে করে সৃষ্টির এ কারখানা পরিচালনাকারী আল্লাহ মানুষের মৃত্যুর পর তাকে পুনরায় জীবিত করতে অক্ষম, তাহলে আসলে তাঁর বুদ্ধি ভ্রষ্ট হয়ে গেছে। তাঁর বাইরের চোখ দুটি যে বাহ্যিক দৃশ্যাবলী দেখে থাকে, তাঁর বুদ্ধির চোখ তাঁর মধ্যে দৃশ্যমান উজ্জ্বল সত্য দেখতে পায় না।
(২১:১৬) এ আকাশ ও পৃথিবী এবং এদের মধ্যে যা কিছুই আছে এগুলো আমি খেলাচ্ছলে তৈরি করিনি৷৷ ১৭) যদি আমি কোনো খেলনা তৈরি করতে চাইতাম এবং এমনি ধরনের কিছু আমাকে করতে হতো তাহলে নিজেরই কাছ থেকে করে নিতাম৷১৮) কিন্তু আমি তো মিথ্যার ওপর সত্যের আঘাত হানি, যা মিথ্যার মাথা গুঁড়িয়ে দেয় এবং সে দেখতে দেখতে নিশ্চিহ্ন হয়৷ আর তোমাদের জন্য ধ্বংস! যেসব কথা তোমরা তৈরি করো সেগুলোর বদৌলতে৷
(জীবন সম্পর্কে যে দৃষ্টিভংগীর কারণে তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাওয়াতের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করতো না এটি হচ্ছে সেই সমগ্র দৃষ্টিভংগীর ওপর মন্তব্য। তাদের ধারণা ছিল, মানুষকে দুনিয়ায় এমনটিই স্বাধীন ছেড়ে দেয়া হয়েছে। নিজের যা ইচ্ছা সে করবে। যেভাবে চাইবে করবে। তার কোন কাজের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করার কেউ নেই। কারো কাছে তাকে হিসেব দিতে হবে না। ভালো-মন্দ কয়েক দিনের এই জীবন যাপন করে সবাইকে ব্যস এমনিই ধ্বংস হয়ে যেতে হবে। পরবর্তী কোন জীবন নেই, যেখানে ভালো কাজের পুরস্কার ও খারাপ কাজের শাস্তি দেয়া হবে। এসব ধারণা ও চিন্তা-ভাবনা আসলে একথাই ব্যক্ত করছিল যে, বিশ্ব-জাহানের এ সমগ্র ব্যবস্থা নিছক একজন খেলোয়াড়ের খেলা ছাড়া আর কিছুই নয়, কোন গুরুগম্ভীর ও সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও লক্ষ একে পরিচালিত করছে না। আর এ ধরনের চিন্তা-ভাবনাই তাদের নবীর দাওয়াত অবহেলা করার আসল কারণ ছিল। )
(হাজ্ব:৬৬) তিনিই তোমাদের জীবন দান করেছেন, তিনিই তোমাদের মৃত্যু দান করেন এবং তিনিই আবার তোমাদের জীবিত করবেন;
(মু’মিনুন:৮০) তিনিই জীবন দান করেন এবং তিনিই মৃত্যু দেন ।
(৩০-রূম: ৪০) আল্লাহই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, তাঁরপর তোমাদের রিযিক দিয়েছেন৷ তাঁরপর তিনি তো তোমাদের মৃত্যু দান করেন, এরপর তিনি তোমাদের জীবিত করবেন৷ তোমাদের বানানো শরীকদের মধ্যে কি এমন কেউ আছে যে এ কাজও করে ? পাক-পবিত্র তিনি এবং এরা যে শিরক করে তাঁর বহু উর্ধ্বে তাঁর অবস্থান৷
(২৯-আনকাবুত:৫৭) প্রত্যেক জীবকেই মৃত্যুর স্বাদ পেতে হবে৷ তারপর তোমাদের সবাইকে আমার দিকে ফিরিয়ে আনা হবে ৯৫
৯৫ . অর্থাৎ প্রাণের কথা ভেবো না। এ তো কখনো না কখনো চলে যাবেই। চিরকাল থাকার জন্য কেউই দুনিয়ায় আসেনি। কাজেই এ দুনিয়ায় কিভাবে প্রাণ বাঁচিয়ে চলতে হবে এটা তোমাদের জন্য কোন চিন্তাযোগ্য বিষয় নয়। বরং আসল চিন্তাযোগ্য বিষয় হচ্ছে, ঈমান কেমন করে বাঁচানো যাবে এবং আল্লাহর আনুগত্যের দাবী কিভাবে পূরণ করা যাবে। শেষ পর্যন্ত তোমাদের ফিরে আমার দিকে আসতে হবে। যদি দুনিয়ায় প্রাণ বাঁচাবার জন্য ঈমান হারিয়ে চলে আসো তাহলে এর ফল হবে ভিন্ন কিছু। আর ঈমান বাঁচাবার জন্য যদি প্রাণ হারিয়ে চলে আসো তাহলে এর পরিণাম হবে অন্য রকম। কাজেই আমার কাছে যখন ফিরে আসবে তখন কি নিয়ে ফিরে আসবে, কেবল একথাটিই চিন্তা করো। প্রাণের জন্য উৎসর্গীত ঈমান, না ঈমানের জন্য উৎসর্গীত প্রাণ নিয়ে ৷
(দেখুন > ম > মৃত্যু > প্রত্যেক জীবকেই মৃত্যুর স্বাদ পেতে হবে। )
(২০:১২০) কিন্তু শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দিল, বলতে থাকলো, “হে আদম! তোমাকে কি এমন গাছের কথা বলে দেবো যা থেকে অনন্ত জীবন ও অক্ষয় রাজ্য লাভ করা যায়?
(২০:৭৪) –প্রকৃতপক্ষে যে ব্যক্তি অপরাধী হয়ে নিজের রবের সামনে হাযির হবে তার জন্য আছে জাহান্নাম, যার মধ্যে সে না জীবিত থাকবে, না মরবে৷
(২১:১০) হে লোকেরা ! আমি তোমাদের প্রতি এমন একটি কিতাব অবতীর্ণ করেছি যার মধ্যে তোমাদেরই কথা আছে, তোমরা কি বুঝ না ?
(২১:১৪) বলতে লাগলো, “হায়, আমাদের দুর্ভাগ্য! নিশ্চয়ই আমরা অপরাধী ছিলাম৷” ১৫) আর তারা এ আর্তনাদ করতেই থাকে যতক্ষণ আমি তাদেরকে কাটা শস্যে পরিণত না করি, জীবনের একটি স্ফুলিংগও তাদের মধ্যে থাকেনি৷
(২১:৪৪) আসল কথা হচ্ছে, তাদেরকে ও তাদের পূর্বপুরুষদেরকে আমি জীবনের উপায়-উপকরণ দিয়েই এসেছি৷ এমনকি তারা দিন পেয়ে গেছে৷ কিন্তু তারা কি দেখে না, আমি বিভিন্ন দিক থেকে পৃথিবীকে সংকুচিত করে আনছি ? তবুও কি তারা বিজয়ী হবে ?
(২১:১১১) আমিতো মনে করি, হয়তো এটা (আযাব আসার বিলম্ব) তোমাদের জন্য এটা পরীক্ষা ১০৩ এবং একটা বিশেষ সময় পর্যন্ত তোমাদের জীবন উপভোগ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে :
(১০৩. অর্থাৎ এ বিলম্বের কারণে তোমরা পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছো। তোমাদের সামলে ওঠার জন্য যথেষ্ট অবকাশ দেবার এবং দ্রুততা অবলম্বন করে সংগে সংগেই পাকড়াও না করার উদ্দেশ্যে বিলম্ব করা হচ্ছে। কিন্তু এর ফলে তোমরা বিভ্রান্তির শিকার হয়ে গেছো। তোমরা মনে করছো, নবীর সব কথা মিথ্যা। নয়তো ইনি যদি সত্য নবীই হতেন এবং যথার্থ আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসতেন, তাহলে একে মিথ্যা বলার ও অমান্য করার পর আমরা কবেই পাকড়াও হয়ে যেতাম।)
(মু’মিনুন:১৬) তারপর কিয়ামতের দিন নিশ্চিতভাবেই তোমাদের পুনরুজ্জীবিত করা হবে৷
(আরো বিস্তারিত দেখুন: দ > দল )
(নূর:৩৪) আমি দ্ব্যর্থহীন পথনির্দেশক আয়াত তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি, তোমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত জাতিদের শিক্ষণীয় দৃষ্টান্তও তোমাদের সামনে উপস্থাপন করেছি এবং মুত্তাকীদের জন্য উপদেশও দিয়েছি৷
(মু’মিনুন:৪২) তারপর আমি তাদের পরে অন্য জাতিদের উঠিয়েছি ৷৪৩) কোন জাতি তার সময়ের পূর্বে শেষ হয়নি এবং তার পরে টিকে থাকতে পারেনি৷ ৪৪) তারপর আমি একের পর এক নিজের রসূল পাঠিয়েছি ৷ যে জাতির কাছেই তার রসূল এসেছে সে-ই তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে,আর আমি একের পর এক জাতিকে ধ্বংস করে গেছি এমনকি তাদেরকে স্রেফ কাহিনীই বানিয়ে ছেড়েছি, --অভিসম্পাত তাদের প্রতি যারা ঈমান আনে না ৷
(১৯:৭৪) অথচ এদের আগে আমি এমন কত জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছি যারা এদের চাইতে বেশী সাজ-সরঞ্জামের অধিকারী ছিল এরা বাহ্যিক শান শওকতের দিক দিয়েও ছিল এদের চেয়ে বেশী অগ্রসর৷
(১৯:১১) কাজেই সে মিহরাব থেকে বের হয়ে নিজের সম্প্রদায়ের সামনে এলো এবং ইশারায় তাদেরকে সাঁঝে আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করার নির্দেশ দিল৷
(২০:১২৮) তাহলে কি এদের (ইতিহাসের এ শিক্ষা থেকে) কোন পথ নির্দেশ মেলেনি যে, এদের পূর্বে আমি কত জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, যাদের (ধ্বংসপ্রাপ্ত বসতিগুলোতে আজ এরা চলাফেরা করে? আসলে যারা ভারসাম্যপূর্ণ বুদ্ধি-বিবেকের অধিকারী তাদের জন্য রয়েছে এর মধ্যে বহু নিদর্শন৷
(মু’মিনুন:২৭) ...এবং জালেমদের ব্যাপারে আমাকে কোন সুপারিশ করো না, তারা এখন ডুবতে যাচ্ছে৷ (মু’মিনুন:৩১) তাদের পরে আমি অন্য এক যুগের জাতির উত্থান ঘটালাম৷
(৩০-রূম: ৯) ....তারা এদের চেয়ে বেশি শক্তিশালী ছিল, তারা জমি কর্ষণ করেছিল খুব ভালো করে ৯ এবং এত বেশি আবাদ করেছিল যতটা এরা করেনি৷ ১০
৯ . মূল শব্দ হচ্ছে ''আসারুল আরদ'' কৃষিকাজ করার জন্য লাঙ্গল দেয়া অর্থেও এ শব্দের ব্যবহার হতে পারে আবার মাটি খুঁড়ে ভূগর্ভ থেকে পানি উঠানো, খাল খনন এবং খনিজ পদার্থ ইত্যাদি বের করাও হয়।
১০ . যারা নিছক বস্তুগত উন্নতিকে একটি জাতির সৎ হবার আলামত মনে করে এখানে তাদের যুক্তির জবাব রয়েছে। তারা বলে যারা পৃথিবীর উপায়- উপকরণকে এত বিপুল পরিমাণে ব্যবহার (Exploit) করেছে তারা দুনিয়ার বিরাট উন্নয়নমূলক কাজ করেছে এবং একটি মহিমান্বিত সভ্যতাঁর জন্ম দিয়েছে। কাজেই মহান আল্লাহ তাদেরকে জাহান্নামের ইন্ধনে পরিণত করবেন এটা কেমন করে সম্ভব ! কুরআন এর জবাব এভাবে দিয়েছে "এমন উন্নয়নমূলক কাজ" পূর্বেও বহু জাতি বিরাট আকারে করেছে। তাঁরপর কি তোমরা দেখনি সে জাতিগুলো তাদের নিজেদের সভ্যতা- সংস্কৃতি সহকারে ধূলায় মিশে গেছে এবং তাদের "উন্নয়নের" আকাশচুম্বি প্রাসাদ ভুলুণ্ঠিত হয়েছে ৷ যে আল্লাহর আইন ইহজগতে সত্যের প্রতি বিশ্বাস ও সৎ চারিত্রিক গুণাবলী ছাড়া নিছক বস্তুগত নির্মাণের এরূপ মূল্য দিয়েছে সে একই আল্লাহর আইন কি কারণে পারলৌকিক জগতে তাকে জাহান্নামে স্থান দেবে না ৷
(৩৪-সাবা: ১৭)এ ছিল তাদের কুফরীর প্রতিদান যা আমি তাদেরকে দিয়েছি এবং অকৃতজ্ঞ মানুষ ছাড়া অন্য কাউকে আমি এহেন প্রতিদান দেই না৷ ৩৭.
বিস্তারিত দেখুন : স > সাবা জাতি > সাবা জাতির ইতিহাস।ক্লিক করুন : ৩৭.
(হাজ্ব:১৭) যারা ঈমান এনেছে ২৩ ও যারা ইহুদী হয়েছে ২৪ এবং সাবেয়ী, ২৫ খৃস্টান ২৬ ও অগ্নি পূজারীরা ২৭ আর যারা শির্ক করেছে২৮ তাদের সবার মধ্যে আল্লাহ কিয়ামতের দিন ফায়সালা করবেন৷২৯ সব জিনিসই আল্লাহর দৃষ্টিতে আছে৷
(২৩. অর্থাৎ "মুসলমান", যারা আপন আপন যুগে আল্লাহর সকল নবীকে ও তাঁর কিতাবসমূহকে মেনে নিয়েছে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে যারা পূর্ববর্তী নবীদের সাথে তাঁর প্রতিও ঈমান এনেছে। তাদের মধ্যে সাচ্চা ঈমানদাররাও ছিল এবং তারাও ছিল যারা ঈমানদারদের মধ্যে শামিল হয়ে যেতো ঠিকই কিন্তু "কিনারায়" অবস্থান করে বন্দেগী করতো এবং কুফর ও ঈমানের মাঝখানে দোদুল্যমান ছিলো।
২৪. এরাও মুসলমানই ছিল, হযরত মূসা আ: এর উম্মত, কিন্তু পরবর্তীকালে নিজেদের নাম পরিবর্তন করে ও ধর্মের মধ্যে বিকৃতি সৃষ্টি করে ইহুদী হয়েই রয়ে গেছে। যেমন : সুরা নেসার ৪৬ আয়াতে বলা হয়েছে : যারা ইহুদী হয়ে গেছে। অর্থাৎ : 'যারা ইহুদী' না বলে বলা হয়েছে, 'যারা ইহুদী হয়েছে'। এর কারণ প্রথম তারাও মুসলমানই ছিল, যেমন প্রত্যেক নবীর উম্মাত আসলে মুসলমান হয়। কিন্তু পরে তারা কেবলমাত্র ইহুদী হয়েই রয়ে গেছে।
২৫. প্রাচীন যুগে সাবেয়ী নামে দু'টি সম্প্রদায় সর্বজন পরিচিত ছিল। এদের একটি ছিল হযরত ইয়াহ্ইয়া আলাহিস সালামের অনুসারী। তারা ইরাকের উচ্চভূমিতে (অর্থাৎ আল জাযীরা) বিপুল সংখ্যায় বসবাস করতো। হযরত ইয়াহ্ইয়া আলাইহিস সালামের অনুগামী হিসেবে তারা মাথায় পানি ছিটিয়ে ধর্মান্তরিত হবার পদ্ধতি মেনে চলতো। তারকা পূজারী দ্বিতীয় দলের লোকেরা নিজেদের হযরত শীশ ও হযরত ইদরিস আলাইহিমাস সালামের অনুসারী বলে দাবী করতো। তারা মৌলিক পদার্থের ওপর গ্রহের এবং গ্রহের ওপর ফেরেশতাদের শাসনের প্রবক্তা চিল। হারান ছিল তাদের কেন্দ্র। ইরাকের বিভিন্ন এলাকায় তাদের শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে ছিল। এ দ্বিতীয় দলটি নিজেদের দর্শন, বিজ্ঞান ও চিকিৎসা বিদ্যায় পারদর্শিতার কারণে বেশী খ্যাতি অর্জন করে। কিন্তু এখানে প্রথম দলটি কথা বলা হয়েছে। এ সম্ভাবনাই প্রবল। কারণ সম্ভবত কুরআন নাযিলের সময় দ্বিতীয় দলটি এ নামে অভিহিত ছিল না।
২৬. অনেকে মনে করেন নাসার (---) শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে হযরত ঈসার জন্মভূমির নাম 'নাসেরা' (----) থেকে। কিন্তু এ ধারণা ভুল। আসলে নাসারা শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে 'নুসরাত'(--) থেকে। ঈসা আলাইহিস সালামের উক্তি ------(আল্লাহর পথে কে আমার সাহায্যকারী হবে৷) এর জবাবে তাঁর হাওয়ারীগণ ----- (আমরা হবো আল্লাহর কাজে সাহায্যকারী ) বলে বক্তব্য পেশ করেছিলেন। সেখান থেকেই এর উৎপত্তি । খৃস্টান লেখকরা নিছক সাহ্যিক সাদৃশ্য দেখে এ বিভ্রান্তির শিকার হয়েছেন যে, খৃস্টবাদের ইতিহাসের প্রথম যুগে নাসেরীয়া (Nazarenes) নামে একটি সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব ছিল, তাদেরকে তাচ্ছিল্যের সাথে নাসেরী ও ইবূনী বলা হতো এবং কুরআন দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে ঘোষণা করছে যে, তারা নিজেরাই বলেছিলঃ 'আমরা নাসার' । আর একথাও সুস্পষ্ট যে, খৃস্টানরা নিজেরা কখনো নিজেদেরকে নাসেরী বলে পরিচয় দেয়নি।
এ প্রসংগে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম কখনো নিজের অনুসারীদেরকে 'ঈসায়ী' বা 'মসীহী' নামে আখ্যায়িত করেননি। কারণ তিনি নিজের নামে কোন নতুন ধর্মের ভিত্তি স্থাপন করতে আসেননি। হযরত মূসা আলাইহিস সালাম এবং তাঁর আগের ও পরের নবীগণ যে দীনের দাওয়াত দিয়েছিলেন তারই পুনরুজ্জীবন ছিল তাঁর দাওয়াতের লক্ষ। তাই তিনি সাধারণ বনী ইসরাঈলদের এবং মূসার শরীয়াতের অনুসারীদের থেকে আলাদা কোন দল গঠন করেননি এবং তাদের কোন আলাদা নামও রাখেননি। তাঁর প্রাথমিক যুগের অনুসারীরা নিজেদেরকে ইসরাঈলী মিল্লাত থেকে আলাদা মনে করতেন না এবং নিজেরা কোন স্বতন্ত্র দল হিসেবেও সংগঠিত হননি। নিজেদের পরিচিতির জন্য তারা কোন বৈশিষ্টমূলক নাম ও চিহৃ গ্রহণ করেননি। তারা ইহুদীদের সাথে বাইতুল মাকদিসের হাইকেলেই(ধর্মধাম) ইবাদাত করতে যেতেন এবং মূসার শরীয়াতের বিধিবিধান মেনে চলাকেই নিজেদের কর্তব্য মনে করতেন। (দেখুন বাইবেল, প্রেরিতদের কার্য বিবরণ পুস্তক ৩ : ১-১০, ৫:২১-২৫ )।
পরবর্তী সময়ে উভয় পক্ষ থেকেই বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একদিকে হযরত ঈসার (আ) অনুসারীদের মধ্য থেকে সেন্টপল ঘোষণা করেন যে, শরীয়াতের বিধান অনুসরণের আর প্রয়োজন নেই। কেবলমাত্র ঈসার ওপর ঈমান আনাই নাজাতের তথা পরকালীন মুক্তির জন্য যথেষ্ট । আবার অন্যদিকে ইহুদী আলেমগণও হযরত ঈসার অনুসারীদেরকে একটি পথভ্রষ্ট সম্প্রদায় বলে ঘোষণা করে তাদেরকে সাধারণ বনী ইসরাঈলদের থেকে বিচ্ছিন্ন করেন। কিন্তু এ বিচ্ছিন্নতা সত্ত্বেও শুরুতে এ নতুন সম্প্রদায়ের কোন পৃথক নাম ছিল না। হযরত ঈসার অনুসারীরা নিজেদেরকে কখনো 'শিষ্য' বলে উল্লেখ করতেন, কখনো 'ভ্রাতৃগণ' (ইখওয়ান), 'বিশ্বাসী' (মুমিন), 'যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে' (আল্লাযীন আমানূ) আবার কখনো 'পবিত্রগণ' বলেও উল্লেখ করেছেন (প্রেরিতদের কার্যবিবরণ পুস্তক, ২:৪৪, ৪:৩২, ৯:২৬, ১১:২৯, ১৩:৫২, ১৫:১ ও ২৩, রোমীয় ১৫:২৫, কলসীয় ১:১২) । অন্যদিকে ইহুদীরা এদেরকে কখনো 'গালীলী', কখনো 'নাসেরী' বা 'নাসরতী' আবার কখনো 'বেদাতী সম্প্রদায়' বলে অভিহিত করতো (প্রেরিতদের কার্য বিবরণ ২৪:৫, লুক ১৩:২ )। নিছক নিন্দা ও বিদ্রূপচ্ছলে হযরত ঈসার অনুসারীদেরকে এ নামে ডাকার কারণ ছিল এই যে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মভূমি ছিল নাসেরা এবং তা ছিল ফিলিস্তিনের গালীল জেলার অন্তর্গত। কিন্তু তাদের এ বিদ্রূপাত্মক শব্দগুলো খুব বেশী প্রচলিত হতে পারেনি। ফলে এগুলো হযরত ঈসার অনুসরীদের নামে পরিণত হতে সক্ষম হয়নি।
এ দলের বর্তমান নাম ''খৃস্টান'' (Christian) সর্বপ্রথম আন্তাকিয়াতে ( ) প্রদত্ত হয়। সেখানে ৪৩ বা ৪৪ খৃস্টাব্দে কতিপয় মুশরিক অধিবাসী হযরত ঈসার অনুসরীদেরকে এ নামে অভিহিত করে। সে সময় সেন্টপল ও বার্নাবাস সেখানে পৌঁছে ধর্ম প্রচারের কাজে নিয়োজিত হন। (প্রেরিতদে কার্য ১১:২৬) । এ নামটিও মূলত বিরোধীদের পক্ষ থেকেই ঠাট্টা-বিদ্রূপচ্ছলেই রাখা হয়েছিল। ঈসার অনুসরীরা নিজেরাও এটাকে তাদের নাম হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু তাদের শক্ররা যখন তাদেরকে ঐ নামে ডাকতে শুরু করলো তখন তাদের নেতারা বললেন, যদি তোমাদেরকে খৃস্টের সাথে যুক্ত করে খৃস্টান বলে ডাকা হয়। তাহলে তাতে তোমাদের লজ্জা পাবার কি কারণ থাকতে পারে ৷ (১-পিতর ৪:১৬) এভাবে তারা নিজেরাই ধীরে ধীরে শত্রুদের বিদ্রূপচ্ছলে দেয়া এ নাম নিজদেরকে আখ্যায়িত করতে থাকে। অবশেষে তাদের মধ্যে এ অনুভূতিই খতম হয়ে যায় যে, এটি আসলে একটি খারাপ নাম এবং তাদেরকে শক্ররা বিদ্রূপচ্ছলে এ নাম দিয়েছিল।
কুরআন এ কারণেই খৃস্টের অনুসারীদের ঈসায়ী, মসীহী বা খৃস্টান নাম আখ্যায়িত করেনি। বরং তাদেকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, তোমরা আসলে সেসব লোকদের অন্তর্গত যাদেরকে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম 'মান আনসারী ইলাল্লাহ (কে আল্লাহর পথে আমাকে সাহায্য করবে৷) বলে আহবান জানিয়েছিলেন এবং এর জবাবে সেই লোকেরা বলেছিল 'নাহ্নু আনসারুল্লাহ (আমরা আল্লাহর সাহায্যকারী)। তাই তোমরা নিজেদের প্রাথমিক ও মৌলিক তাৎপর্যের দিক দিয়ে নাসার বা আনসার। কিন্তু আজকের খৃষ্টীয় মিশনারীরা এ বিস্মৃত বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেবার কারণে কুরআনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার পরিবর্তে উলটো অভিযোগ জানাচ্ছে যে, কুরআন তাদেরকে খৃস্টান না বলে নাসারা বলছে কেন৷
২৭. অর্থাৎ ইরানের অগ্নি উপাসকগণ, যারা আলোক ও অনধারের দু'জন ইলাহর প্রবক্তা ছিল এবং নিজেদেরকে যরদ্শতের অনুসারী দাবী করতো। মায্দাকের ভ্রষ্টতা তাদের ধর্ম নৈতিক চরিত্রকে সাংঘাতিকভাবে বিকৃত করে দিয়েছিল। এমন কি তদের মধ্যে সহোদর বোনের সাথে বিয়ের প্রথাও প্রচলিত ছিল।
২৮. অর্থাৎ আরব ও অন্যান্য দেশের মুশরিকবৃন্দ, যারা ওপরের বিভিন্ন দলীয় নামের মতো কোন নামে আখ্যায়িত ছিল না। কুরআন মজীদ তাদেরকে অন্যান্য দল থেকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার জন্য "মুশরিক" ও "যারা শিরক করেছে" ধরনের পারিভাষিক নামে স্মরণ করেছে। অবশ্য মু'মিনদের দল ছাড়া বাকি সবার আকীদা ও কর্মধারায় শির্ক অনুপ্রবেশ করেছিল।
২৯. অর্থাৎ মানুষদের বিভিন্ন দলের মধ্যে আল্লাহ সম্পর্কে যে মত বিরোধ ও বিবাদ রয়েছে এ দুনিয়ায় তার কোন ফায়সালা হবে না। তার ফায়সালা হবে কিয়ামতের দিন। সেখানে তাদের মধ্যে কারা সত্যপন্থী এবং কারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে তার চূড়ান্ত মীমাংসা করে দেয়া হবে। যদিও এক অর্থে দুনিয়ায় আল্লাহর কিতাবগুলোও এ ফায়সালা করে, কিন্তু এখানে ফায়সালা শব্দটি "বিবাদ মিটানো" এবং দুই পক্ষের মধ্যে ন্যায় সংগত বিচার করার অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, যেখানে এক দলের পক্ষে এবং অন্য দলের বিপক্ষে যথারীতি ডিক্রি জারী করা হবে।)
(আরো দেখুন : আ > আহলে কিতাব > আহলে কিতাব প্রসঙ্গ সমূহ )
(হাজ্ব:৪২) হে নবী! যদি তারা তোমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, তাহলে ইতিপূর্বে নূহের জাতি, আদ, সামূদ, ইবরাহীমের জাতি, লূতের জাতি ও মাদয়ানবাসীরাও মিথ্যা আরোপ করেছিল ৪৩) এবং মূসার প্রতিও মিথ্যা আরোপ করা হয়েছিল৷
(২৫.ফুরকান:৩৮) এভাবে আদ ও সামূদ এবং আসহাবুর রাস্৫২ ও মাঝখানের শতাব্দীগুলোর বহু লোককে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে৷
(৫২. আসহাবুর রস্ কারা ছিল, এ সম্পর্কে অনুসন্ধান করা সম্ভব হয়নি। তাফসীরকারগণ এ সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনার উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তাদের কোন বর্ণনাই সন্তোষজনক নয়। বড় জোর এতটুকু বলা যেতে পারে, তারা এমন এক সম্প্রদায় ছিল যারা তাদের নবীকে কূয়ার মধ্যে ফেলে দিয়ে বা ঝুলিয়ে রেখে হত্যা করেছিল। আরবী ভাষায় "রাস্স" বলা হয় পুরাতন বা অন্ধ কূপকে।)
(হাজ্ব:১৯) এ দুটি পক্ষ, এদের মধ্যে রয়েছে এদের রবের ব্যাপারে বিরোধ৷
(এখানে আল্লাহ সম্পর্কে বিরোধকারী সমস্ত দলগুলোকে তাদের সংখ্যাধিক্য সত্ত্বেও দু'টি পক্ষে বিভক্ত করা হয়েছে। একটি পক্ষ নবীদের কথা মেনে নিয়ে আল্লাহর সঠিক বন্দেগীর পথ অবলম্বন করে। দ্বিতীয় পক্ষ নবীদের কথা মানে না এবং তারা কুফরীর পথ অবলম্বন করে। তাদের মধ্যে বহু মতবিরোধ রয়েছে এবং তাদের কুফরী বিভিন্ন বিচিত্র রূপও পরিগ্রহ করেছে। )
(৩০-রূম: ৩১).............এমন মুশরিকদের অন্তরভুক্ত হয়ে যেয়ো না, (৩০-রূম: ৩২) যারা নিজেদের আলাদা আলাদা দীন তৈরি করে নিয়েছে আর বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে ৷ প্রত্যেক দলের কাছে যা আছে তাতেই তারা মশগুল হয়ে আছে৷
(হাজ্ব:৪০) .........যদি আল্লাহ লোকদেরকে একের মাধ্যমে অন্যকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা না করতেন, তাহলে যেখানে আল্লাহর নাম বেশী করে উচ্চারণ করা হয় সেসব আশ্রম, গীর্জা, ইবাদাতখানা ৮২ ও মসজিদ ধ্বংস করে দেয়া হতো৷৮৩
(৮২. মূলে (আরবী) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। (আরবী) ও (আরবী) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। (আরবী) এমন জায়গাকে বলা হয় যেখানে খৃষ্টান রাহেব যোগী, সন্ন্যাসী, সংসার বিরাগী সাধুরা থাকেন। (আরবী) শব্দটি আরবী ভাষায় খৃষ্টানদের ইবাদাতগাহের জন্য ব্যবহার করা হয়। (আরবী) শব্দের অর্থ হচ্ছে ইহুদীদের নামায পড়ার জায়গা। ইহুদীরা নিজেদের ভাষায় একে বলে (আরবী) "সালওয়াতা"। এটি আরামীয় ভাষার শব্দ। বিচিত্র নয় যে, ইংরেজী ভাষার (Salute ও Salutation) শব্দ এর থেকে বের হয়ে প্রথম ল্যাটিন ও পরে ইংরেজী ভাষায় পৌঁছে গেছে।
৮৩. অর্থাৎ আল্লাহ কোন একটি গোত্র বা জাতিকে স্থায়ী কর্তৃত্ব দান কেরননি, এটি তাঁর বিরাট অনুগ্রহ। বরং বিভিন্ন সময় দুনিয়ায় একটি দলকে দিয়ে তিনি অন্য একটি দলকে প্রতিহত করতে থেকেছেন। নয়তো কোন একটি নির্দিষ্ট দল যদি কোথাও স্থায়ী কর্তৃত্ব লাভ করতো তাহলে শুধু দূর্গ, প্রাসাদ এবং রাজনীতি, শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানই ধ্বংস করে দেয়া হতো না বরং ইবাদাতগাহগুলোও বিধ্বস্ত হওয়ার হাত থেকে রেহাই পেতো না। সূরা বাকারায় এ বিষয়বস্তুকে এভাবে বলা হয়েছেঃ
"যদি আল্লাহ লোকদেরকে একজনের সাহায্যে অন্যজনকে প্রতিহত না করতে থাকতেন তাহলে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়ে যেতো। কিন্তু আল্লাহ দুনিয়াবাসীদের প্রতি বড়ই করুণাময়।" (২৫১ আয়াত)
(বিস্তারিত দেখুন : জ > জিহাদ > সশস্ত্র যুদ্ধের অনুমতি দেওয়ার কারণ)
আরো দেখুন : ধ > ধ্বংস।
(২১:৬) অথচ এদের আগে আমি যেসব জনবসতিকে ধ্বংস করেছি, তাদের কেউ ঈমান আনেনি৷ এখন কি এরা ঈমান আনবে ?
(বিস্তারিত: ঈ > ঈমান)
(২১:১১) কত অত্যাচারী জনবসতিকে আমি বিধ্বস্ত করে দিয়েছি এবং তাদের পর উঠিয়েছি অন্য জাতিকে৷ ১২) যখন তারা আমার আযাব অনুভব করলো, পালাতে লাগলো সেখান থেকে৷ ১৩) (বলা হলো) “পালায়ো না, চলে যাও তোমাদের গৃহে ও ভোগ্য সামগ্রীর মধ্যে, যেগুলোর মধ্যে তোমরা আরাম করছিলে, হয়তো তোমাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷১৪) বলতে লাগলো, “হায়, আমাদের দুর্ভাগ্য! নিশ্চয়ই আমরা অপরাধী ছিলাম৷” ১৫) আর তারা এ আর্তনাদ করতেই থাকে যতক্ষণ আমি তাদেরকে কাটা শস্যে পরিণত না করি, জীবনের একটি স্ফুলিংগও তাদের মধ্যে থাকেনি৷
(২১:৯৫) আর যে জনপদকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি তার অধিবাসিরা আবার ফিরে আসবে, এটা সম্ভব নয়৷৯২
(৯২. এ আয়াতটির তিনটি অর্থ হয়ঃ
একঃ যে জাতি একবার আল্লাহর আযাবের মুখোমুখি হয়েছে সে আর কখনো উঠে দাঁড়াতে পারেনি। তার পুনরুত্থান ও নব জীবন লাভ সম্ভব নয়।
দুইঃ ধ্বংস হয়ে যাবার পর আবার তার এই দুনিয়ায় ফিরে আসা ও এবং পুনরায় পরীক্ষার সুযোগ লাভ করা তার পক্ষে অসম্ভব। এরপর তো আল্লাহর আদালতেই তার শুনানি হবে।
তিনঃ যে জাতি অন্যায় আচরণ, ব্যাভিচার, বাড়াবাড়ি ও সত্যের পথ নির্দেশনা থেকে দিনের পর দিন মুখ ফিরিয়ে নেয়া এত বেশী বেড়ে যায় যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে তাকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত হয়ে যায়, তাকে আবার ফিরে আসার ও তাওবা করার সুযোগ দেয়া হয় না। গোমরাহী থেকে হেদায়াতের দিকে ফিরে আসা তারা পক্ষে আর সম্ভব হতে পারে না।)
(২৫.ফুরকান:৩৮) এভাবে আদ ও সামূদ এবং আসহাবুর রস্ ও মাঝখানের শতাব্দীগুলোর বহু লোককে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে৷ (২৫.ফুরকান:৩৯) তাদের প্রত্যেককে আমি (পূর্বে ধ্বংস প্রাপ্তদের) দৃষ্টান্ত দিয়ে দিয়ে বুঝিয়েছি এবং শেষ পর্যন্ত প্রত্যেককে ধ্বংস করে দিয়েছি৷
আরো দেখুন : ধ > ধ্বংস ।
(২০:৮৫) তিনি বললেন, “ভালো কথা, তাহলে শোনো, আমি তোমার পেছনে তোমার সম্প্রদায়কে পরীক্ষায় ফেলে দিয়েছি এবং সামেরী তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে দিয়েছে”৷
(বিস্তারিত: প > পরীক্ষা )
(২১:৯২) তোমাদের এ উম্মত আসলে একই উম্মত৷ আর আমি তোমাদের রব৷ কাজেই তোমরা আমার ইবাদাত করো৷ ৯৩) কিন্তু (নিজেদের কার্যকলাপের মাধ্যমে) লোকেরা পরস্পরের মধ্যে নিজেদের দীনকে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে৷ সবাইকে আমার দিকে ফিরে আসতে হবে৷
(আরো দেখুন : দ > দ্বীন > দ্বীনকে টুকরা টুকরা করা)
(২৫.ফুরকান:৫১) যদি আমি চাইতাম তাহলে এক একটি জনবসতিতে এক একজন ভীতিপ্রদর্শনকারী পাঠাতে পারতাম৷”
(বরং, তা না করে সারা দুনিয়ার জন্য সর্বশেষ মাত্র একজন রাসুল মুহাম্মদ সা: কে প্রেরণ করেছি)
(মু’মিনুন:৫২) আর তোমাদের এ উম্মত হচ্ছে একই উম্মত এবং আমি তোমাদের রব, কাজেই আমাকেই তোমরা ভয় করো ৷ ৪৭
(৪৭ . ''তোমাদের উম্মত একই উম্মত'' – অর্থাৎ তোমরা একই দলের লোক। ''উম্মত'' শব্দটি এমন ব্যক্তি সমষ্টির জন্য বলা হয় যারা কোন সম্মিলিত মৌলিক বিষয়ের জন্য একতাবদ্ধ হয়। নবীগণ যেহেতু স্থান-কালেরর বিভিন্নত সত্ত্বেও একই বিশ্বাস, একই জীবন বিধান ও একই দাওয়াতের ওপর একতাবদ্ধ ছিলেন, তাই বলা হয়েছে, তাঁদের সবাই একই উম্মত। পরবর্তী বাক্য নিজেই সে মৌলিক বিষয়ের কথা বলে দিচ্ছে যার ওপর সকল নবী একতাবদ্ধ ও একমত ছিলেন। (অতিরিক্ত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন সূরা আল বাকারাহ, ১৩০ থেকে ১৩৩; আলে ইমরান, ১৯, ২০, ৩৩, ৩৪, ৬৪ ও ৭৯ থেকে ৮৫; আন নিসা, ১৫০ থেকে ১৫২; আল আ'রাফ, ৫৯, ৬৫, ৭৩, ৮৫; ইউসুফ, ৩৭ থেকে ৪০; মার্য়াম, ৪৯ থেকে ৫৯এবং আল আম্বিয়া, ৭১ থেকে ৯৩ আয়াত।))
(মু’মিনুন:৫৩) কিন্তু পরে লোকেরা নিজেদের দীনকে পরস্পরের মধ্যে টুকরো করে নিয়েছে ৷ প্রত্যেক দলের কাছে যা কিছু আছে তার মধ্যেই নিমগ্ন হয়ে গেছে৷ ৪৮
(৪৮ . এটা নিছক ঘটনার বর্ণনা নয় বরং সূরার শুরু থেকে যে যুক্তিধারা চলে আসছে তার একটি পর্যায়। যুক্তির সারসংক্ষেপ হচ্ছে, নূহ আলাইহিস সালাম থেকে নিয়ে ঈসা আলাইহিস সালাম পর্যন্ত সকল নবী যখন এ তাওহীদ ও আখেরাত বিশ্বাসের শিক্ষা দিয়ে এসেছেন তখন অনিবার্যভাবে এ থেকে প্রমাণ হয়, এ ইসলামই মানব জাতির আসল দীন বা ধর্ম। অন্যান্য যেসব ধর্মের অস্তিত্ব আজ দুনিয়ার বুকে পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো এ দীনেরই বিকৃত রূপ। এর কোন কোন নির্ভূল অংশের চেহারা বিকৃত করে এবং তার মধ্যে অনেক মনগড়া কথা বাড়িয়ে দিয়ে সেগুলো তৈরী করা হয়েছে। এখন যারা এসব ধর্মের উক্ত-অনুরক্ত তারাই ভ্রষ্টতার মধ্যে অবস্থান করছে। অন্যদিকে যারা এগুলো ত্যাগ করে আসল দীনের দিকে আহবান জানাচ্ছে তারা মোটেই বিভ্রান্তি ও ভ্রষ্টতার মধ্যে অবস্থান করছে না।)
২:২১৩,
(১৮:৮৫) সে (প্রথমে পশ্চিমে এক অভিযানের) সাজ-সরঞ্জাম করলো৷ ৮৬) এমন কি যখন সে সূর্যাস্তের সীমানায় পৌঁছে গেলো তখন সূর্যকে ডুবতে দেখলো একটি কালো জলাশয়ে এবং সেখানে সে একটি জাতির দেখা পেলো৷
(১৮:৯২) আবার সে (যুলকারনাইন) (আর একটি অভিযানের) আয়োজন করলো৷ ৯৩) এমনকি যখন দু পাহাড়ের মধ্যখানে পৌঁছুলো তখন সেখানে এক জাতির সাক্ষাত পেলো৷ যারা খুব কমই কোনো কথা বুঝতে পারতো৷
(২৬.শুআরা:১৩০) আর যখন কারো ওপর হাত ওঠাও প্রবল এক নায়ক হয়ে হাত ওঠাও৷
(বিস্তারিত : ন > নবীদের জীবনের ঘটনা বলী > হযরত হুদ আ: (আদ জাতি) )
প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর জন্য রয়েছে একজন পথপ্রদর্শক৷-(১৩:৭)
(১৬:৬৩) আল্লাহর কসম, হে মুহাম্মাদ ! তোমার আগেও বহু জাতির মধ্যে আমি রসূল পাঠিয়েছি৷
(মু’মিনুন:৪৪) তারপর আমি একের পর এক নিজের রসূল পাঠিয়েছি ৷ যে জাতির কাছেই তার রসূল এসেছে সে-ই তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে,আর আমি একের পর এক জাতিকে ধ্বংস করে গেছি এমনকি তাদেরকে স্রেফ কাহিনীই বানিয়ে ছেড়েছি, --অভিসম্পাত তাদের প্রতি যারা ঈমান আনে না ৷
(২৬.শুআরা:২০৮) (দেখো) আমি কখনো কোন জনপদকে তার জন্য উপদেশ ২০৯) দেয়ার যোগ্য সতর্ককারী না পাঠিয়ে ধ্বংস করিনি এবং আমি জালেম ছিলাম না৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৪৭) (আর আমি এজন্য করেছি যাতে) এমনটি যেন না হয় যে, তাদের নিজেদের কৃতকর্মের বদৌলতে কোন বিপদ তাদের ওপর এসে যায়, আর তারা বলে, "হে আমাদের রব! তুমি কেন আমাদের কাছে কোন রসূল পাঠাওনি? তাহলে তো আমরা তোমার আয়াত মেনে চলতাম এবং ঈমানদারদের অন্তর্ভুক্ত হতাম৷৬৬
৬৬. এ জিনিসটিকেই কুরআন মজীদ বিভিন্ন স্থানে রসূল পাঠাবার কারণ হিসেবে বর্ণনা করেছে। কিন্তু এ থেকে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সঠিক হবে না যে, এ উদ্দেশ্যে সব সময় প্রত্যেক জায়গায় একজন রসূল আসা উচিত। যতক্ষণ পর্যন্ত দুনিয়ায় একজন রসূলের পয়গাম তার সঠিক আকৃতিতে বিদ্যমান থাকে এবং লোকদের কাছে তা পৌঁছে যাবার মাধ্যমও অপরিবর্তিত থাকে ততক্ষণ কোন নতুন রসূলের প্রয়োজন হয় না। তবে যদি আগের নবীর আনীত শরীয়াতের মধ্যে কোন কিছু বৃদ্ধি করার এবং কোন নতুন বিধান দেবার প্রয়োজন হয়, তাহলে নতুন রসূল আসেন। অবশ্যই যখন নবীদের পয়গাম বিলুপ্ত হয়ে যায় অথবা গোমরাহীর মধ্যে এমনভাবে মিশ্রিত হয়ে যায় যে, তা থেকে হেদায়াত লাভের কোন উপায় থাকে না। তখন লোকদের জন্য এ ওজর পেশ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়ে যায যে, আমাদের হক ও বাতিলের পার্থক্য সম্পর্কে সচেতন করার ও সঠিক পথ দেখাবার কোন ব্যবস্থাই আদতে ছিল না, এ অবস্থায় আমরা কেমন করে হেদায়াত লাভ করতে পারতাম! এ অজুহাত দেখানোর পথ বন্ধ করার জন্য মহান আল্লাহ্ এ ধরনের অবস্থায় নবী পাঠান, যাতে এর পর যে ব্যক্তিই ভুল পথে চলবে তাকে সে জন্য দায়ী করা সম্ভব না হয়।
(২৮-ক্বাছাছ : ৫৯) আর তোমার রব জনপদগুলো ধ্বংস করেন না যতক্ষণ না তাদের কেন্দ্রে একজন রসূল পাঠান, যে তাদের কাছে আমার আয়াত শুনায়৷ আর আমি জনপদগুলো ধ্বংস করি না যতক্ষণ না সেগুলোর বাসিন্দারা জালেম হয়ে যায়৷
(১৬:৯৩) যদি (তোমাদের মধ্যে কোনো মতবিরোধ না হোক) এটাই আল্লাহর ইচ্ছা হতো তাহলে তিনি তোমাদের সবাইকে একই উম্মতে পরিণত করতেন৷ কিন্তু তিনি যাকে চান গোমরাহীর মধ্যে ঠেলে দেন এবং যাকে চান সরল সঠিক পথ দেখান৷ আর অবশ্যই তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷
(এটা পূর্ববর্তী বক্তব্যের আরো একটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা । এর অর্থ হচ্ছে, যদি কেউ নিজেকে আল্লাহর পক্ষের লোক মনে করে ভাল - মন্দ উভয় পদ্ধতিতে নিজের ধর্মের ( যাকে সে আল্লাহর প্রেরিত ধর্ম মনে করছে ) প্রসার এবং অন্যের ধর্মকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালায়, তাহলে তার এ প্রচেষ্টা হবে সরাসরি আল্লাহর ইচ্ছা ও উদ্দেশ্য বিরোধী । কারণ মানুষের ধর্মীয় মতবিরোধের ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে যদি সমস্ত মানুষকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় একটি ধর্মের মতবিরোধের ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে যদি সমস্ত মানুষকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় একটি ধর্মের অনুসারী বানানোই আল্লাহর উদ্দেশ্য হাতো তাহলে এ জন্য আল্লাহর নিজের " তথাকথিত " পক্ষের লোকের লেলিয়ে দেয়ার এবং তাদের নিকৃষ্ট অস্ত্রের সাহায্য নেবার কোন প্রয়োজন ছিল না । এ কাজ তো তিনি নিজের সৃজনী ক্ষমতার মাধ্যমে করতে পারতেন । তিনি সবাইকে মুমিন ও অনুগত হিসেবে সৃষ্টি করতেন এবং তাদের থেকে কুফরী ও গোনাহ করার ক্ষমতা ছিনিয়ে নিতেন । এরপর ঈমান ও আনুগত্যের পথ থেকে একচুল পরিমাণ সরে আসার ক্ষমতা কারো থাকতো না )
হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী। (Al-Maaida: 54)
তিনি চাইলে তোমাদের নিয়ে যান এবং একটি নতুন সৃষ্টি তোমাদের স্থলাভিসিক্ত হয়৷ ২০) এমনটি করা তাঁর জন্য মোটেই কঠিন নয়৷ -14:19-20,
একজাতির সাথে অপর জাতির অঙ্গীকার ভঙ্গ :
(১৬:৯২) তোমরা নিজেদের কসমকে পারস্পরিক ব্যাপারে ধোঁকা ও প্রতারণার হাতিয়ারে পরিণত করে থাকো, যাতে এক দল অন্য দলের তুলনায় বেশী ফায়দা হাসিল করতে পারো৷ অথচ আল্লাহ এ অংগীকারের মাধ্যমে তোমাদেরকে পরীক্ষার মুখোমুখি করেন৷
(এখানে বিশেষ করে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ধরনের অংগীকার ভংগের নিন্দা করা হয়েছে । এ ধরনের অংগীকার ভংগ দুনিয়ায় বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় । উচ্চ পর্যায়ের বড় বড় লোকেরাও একে সৎ কাজ মনে করে এবং এর মাধ্যমে নিজেদের জাতি ও সম্পদায়ের কাছ থেকে বাহবা কুড়ায় । জাতি ও দলের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় সংঘাতের ক্ষেত্রে প্রায়ই এমনটি হতে দেখা যায় । এক জাতির নেতা এক সময় অন্য জাতির সাথে একটি চুক্তি করে এবং অন্য সময় শুধুমাত্র নিজের জাতীয় স্বার্থের খাতিরে তা প্রকাশ্যে ভংগ করে অথবা পর্দান্তরালে তার বিরুদ্ধাচরণ করে অবৈধ স্বার্থ উদ্ধার করে । নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনে খুবই সত্যনিষ্ঠ বলে যারা পরিচিত, তারাই সচরাচর এমনি ধরনের কাজ করে থাকে । তাদের এসব কাজের বিরুদ্ধে শুধু যে সমগ্র জাতির মধ্য থেকে কোন নিন্দাবাদের ধ্বনি ওঠে না তা নয় বরং সব দিক থেকে তাদেরকে বাহবা দেয়া হয় এবং এ ধরনের ঠগবাজী ও ধুর্তামীকে পাকাপোক্ত ডিপ্লোমেসী মনে করা হয় । আল্লাহ এ ব্যাপারে চরিত্র ও বিশ্বস্ততার পরীক্ষা স্বরূপ । যারা এ পরীক্ষায় ব্যর্থ হবে তারা আল্লাহর আদালতে জবাবদিহির হাত থেকে বাঁচতে পারবে না । )
(১১:৫৭) যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিতে চাও তাহলে ফিরিয়ে নাও, কিন্তু যে পয়গাম দিয়ে আমাকে তোমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল তা আমি তোমাদের কাছে পৌঁছিয়ে দিয়েছি৷ এখন আমার রব তোমাদের জায়গায় অন্য জাতিকে বসাবেন এবং তোমরা তাঁর কোনই ক্ষতি করতে পারবে না৷ অবশ্যি আমার রব প্রতিটি জিনিসের সংরক্ষক৷
শুরুতে সমস্ত মানুষ ছিল একই জাতি৷ পরবর্তীকালে তারা বিভিন্ন আকীদা-বিশ্বাস ও মত পথ তৈরী করে নেয়-১০:১৯, (এখানে ভাষা বর্ণ বা ভূখন্ড ভিত্তিক একই জাতি বুঝানো হয়নি, বরং নৈতিক বিধিবিধান, আদর্শ, ধর্মীয় রীতিনীতি ও বিশ্বাসের দিক থেকে একই জাতি বা একই মিল্লাতের কথা বলা হয়েছে)।
(১১:১১৮) অবশ্যি তোমার রব চাইলে সমগ্র মানব জাতিকে একই গোষ্ঠীভুক্ত করতে পারতেন, কিন্তু এখন তারা বিভিন্ন পথেই চলতে থাকবে৷
(১৬:১২০) প্রকৃতপক্ষে ইবরাহীম নিজেই ছিল একটি পরিপূর্ণ উম্মত, আল্লাহর হুকুমের অনুগত এবং একনিষ্ঠ৷ সে কখনো মুশরিক ছিল না৷১২১) সে ছিল আল্লাহর নিয়ামতের শোকরকারী৷
(হাজ্ব:৪২) হে নবী! যদি তারা তোমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, তাহলে ইতিপূর্বে নূহের জাতি, আদ, সামূদ, ইবরাহীমের জাতি, লূতের জাতি ও মাদয়ানবাসীরাও মিথ্যা আরোপ করেছিল ৪৩) এবং মূসার প্রতিও মিথ্যা আরোপ করা হয়েছিল৷
(১৪:৯) তোমাদের কাছে কি তোমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত জাতিগুলোর বৃত্তান্ত পৌঁছেনি ? নূহের জাতি, আদ, সামূদ এবং তাদের পরে আগমনকারী বহু জাতি, যাদের সংখ্যা একমাত্র আল্লাহ জানেন ? তাদের রসূলরা যখন তাদের কাছে দ্ব্যর্থহীন কথা ও সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আসেন তখন তারা নিজেদের মুখে হাত চাপা দেয় এবং বলে, “যে বার্তা সহকারে তোমাদের তোমাদের পাঠানো হয়েছে আমরা তা মানি না এবং তোমরা আমাদের যে জিনিসের দাওয়াত দিচ্ছে তার ব্যাপারে আমরা যুগপৎ উদ্বেগ ও সংশয়ের মধ্যে আছি৷”১০) তাদের রসূলরা বলে, আল্লাহর ব্যাপারে কি সন্দেহ আছে, যিনি আকাশ ও পৃথিবীর স্রষ্টা ? তিনি তোমাদের ডাকছেন তোমাদের গুনাহ মাফ করার এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদের অবকাশ দেয়ার জন্য৷” তারা জবাব দেয়, “তোমরা আমাদের মতো মানুষ ছাড়া আর কিছুই নও৷ বাপ-দাদাদের থেকে যাদের ইবাদাত চলে আসছে তোমরা তাদের ইবাদাত থেকে আমাদের ফেরাতে চাও৷ ঠিক আছে তাহলে আনো কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ৷১১) তাদের রসূলুরা তাদেরকে বলে, “যথার্থই আমরা তোমাদের মতো মানুষ ছাড়া আর কিছুই নই৷ কিন্তু আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন৷ আর তোমাদের কোন প্রমাণ এনে দেবো, এ ক্ষমতা আমাদের নেই৷ প্রমাণ তো আল্লাহরই অনুমতিক্রমে আসতে পারে এবং ঈমানদারদের আল্লাহরই ওপর ভরসা রাখা উচিত৷ ১২) আর আমরা আল্লাহরই ওপর ভরসা করবো না কেন, যখন আমাদের জীবনের পথে তিনি আমাদের পথ দেখিয়েছেন ? তোমরা আমাদের যে যন্ত্রণা দিচ্ছো তার ওপর আমরা সবর করবো এবং ভরসাকারীদের ভরসা আল্লাহরই ওপর হওয়া উচিত৷”১৪) এবং এদের পর পৃথিবীতে তোমাদের প্রতিষ্ঠিত করবো৷ এটা হচ্ছে তার পুরস্কার, যে আমার সামনে জবাবদিহি করার ভয় করে এবং আমার শাস্তির ভয়ে ভীত৷১৫) তারা ফায়সালা চেয়েছিল (ফলে এভাবে তাদের ফায়সালা হলো) এবং প্রত্যেক উদ্ধত সত্যের দুশমন ব্যর্থ মনোরথ হলো৷,১৬) এরপর সামনে তার জন্য রয়েছে জাহান্নাম৷ সেখানে তাকে পান করতে দেয়া হবে গলিত পুঁজের মতো পানি, ১৭) যা সে জবরদস্তি গলা দিয়ে নামাবার চেষ্টা করবে এবং বড় কষ্টে নামাতে পারবে৷ মৃত্যু সকল দিক দিয়ে তার ওপর ছেয়ে থাকবে কিন্তু তার মৃত্যু হবে না এবং সামনের দিকে একটি কঠোর শাস্তি তাকে ভোগ করতে হবে৷
বিভিন্ন জাতির সত্য অস্বীকারের ফলাফল – যাদের উপর আল্লাহ জুলুম করেননি – বরং তারা নিজেরাই নিজেদের উপর জুলুম করেছিল : ৯:৭০,
হে মানব জাতি! তোমাদের আগের জাতিদেরকে (যারা তাদের নিজেদের যুগে উন্নতির উচ্চ শিখরে আরোহণ করেছিল) আমি ধ্বংস করে দিয়েছি -যখন তারা জুলুমের নীতি অবলম্বন করলো এবং তাদের রসূলগণ তাদের কাছে সুষ্পষ্ট নিশানী নিয়ে এলেন, কিন্তু তারা আদৌ ঈমান আনলো না৷এভাবে আমি অপরাধীদেরকে তাদের অপরাধের প্রতিফল দিয়ে থাকি- ১০:১৩,
(মু’মিনুন:২৩) .....সে বললো, ‘‘হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা ! আল্লাহর বন্দেগী করো, তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন মাবুদ নেই, তোমরা কি ভয় করো না?
আসলে আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত কোন জাতির অবস্থা বদলান না যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের গুণাবলী বদলে ফেলে৷ আর আল্লাহ যখন কোন জাতিকে দুর্ভাগ্য কবলিত করার ফায়সালা করে ফেলেন তখন কারো রদ করায় তা রদ হতে পারে না এবং আল্লাহর মোকাবিলায় এমন জাতির কোন সহায় ও সাহায্যকারী হতে পারে না৷-১৩:১১,
(১৪:৪৫) অথচ তোমরা সেই সব জাতির আবাস ভূমীতে বসবাস করেছিলে যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছিল এবং আমি তাদের সাথে কি ব্যবহার করেছি তা দেখেও ছিলে আর তাদের দৃষ্টান্ত দিয়ে দিয়ে আমি তোমাদের বুঝিয়েও ছিলাম৷
(১৪:৪৬) তারা তাদের সব রকমের চক্রান্ত করে দেখেছে কিন্তু তাদের প্রত্যেকটি চক্রান্তের জবাব আল্লাহর কাছে ছিল, যদিও তাদের চক্রান্তগুলো এমন পর্যায়ের ছিল যাতে পাহাড় টলে যেতো৷
(অর্থাৎ তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিগুলো আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধাচরণের পরিণাম থেকে নিষ্কৃতি লাভের এবং নবীগণের দাওয়াতকে ব্যর্থ করার জন্য কেমন সব শক্তিশালী কৌশল অবলম্বন করেছিল তোমরা তাও দেখেছো। আবার আল্লাহর একটি মাত্র কৌশলের কাছে তারা কিভাবে পরাজয় বরণ করে নিয়েছিল। তাও দেখেছো। কিন্তু তবুও তোমরা হকের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা থেকে বিরত থাকছো না এবং তোমরা মনে করে আসছো তোমাদের চক্রান্ত নিশ্চয়ই সফল হবে।)
(৩২- আস-সাজদা : ২৬) আর এরা কি (এসব ঐতিহাসিক ঘটনা থেকে ) কোন পথনির্দেশ পায়নি যে, এদের পূর্বে কত জাতিকে আমি ধ্বংস করেছি , যাদের আবাসভূমি তে আজ এরা চলাফেরা করছে ? ৩৯ এর মধ্যে রয়েছে বিরাট নিদর্শনাবলী , এরা কি শুনবে না ?
৩৯ . যে জাতির মধ্যেই নবী এসেছে তার ভাগ্যের ফায়সালা সেই নবীর ব্যাপারে সে যে নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করেছে তার ভিত্তিতেই হয়ে গেছে। রসূলকে প্রত্যাখ্যান করার পর আর কোন জাতি ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচতে পারেনি। তাদের মধ্যে থেকে যারা ঈমান এনেছে একমাত্র তারাই টিকে গেছে। প্রত্যাখ্যান কারীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি লাভ করে চিরকালের জন্য শিক্ষণীয় বস্তুতে পরিণত হয়ে গেছে। ইতিহাসের এ ধারাবাহিক অভিজ্ঞতা থেকে তারা কি কোন শিক্ষা লাভ করেনি ৷
(হাজ্ব:৭৮) ....তোমাদের পিতা ইবরাহীমের মিল্লাতের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাও৷
(যদিও ইসলামকে ইবরাহীমের মিল্লাতের ন্যায় নূহের মিল্লাত, মূসার মিল্লাত ও ঈসার মিল্লাত বলা যেতে পারে কিন্তু কুরআন মজীদে বার বার একে ইবরাহীমের মিল্লাত বলে তিনটি কারণে এর অনুসরণ করার দাওয়াত দেয়া হয়েছে। এক কুরআনের বক্তব্যের প্রথম লক্ষ ছিল আরবরা, আর তারা ইবরাহীমের সাথে যেভাবে পরিচিত ছিল তেমনটি আর কারো সাথে ছিল না। তাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আকীদা-বিশ্বাস যার ব্যক্তিত্বের প্রভাব সর্বব্যাপী ছিল তিনি ছিলেন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। দুই, হযরত ইবরাহীমই এমন এক ব্যক্তি ছিলেন যাঁর উন্নত চরিত্রের ব্যাপারে ইহুদী, খৃষ্টান, মুসলমান, আরবীয় মুশরিক ও মধ্যপ্রাচ্যের সাবেয়ী তথা নক্ষত্রপূজারীরা সবাই একমত ছিল। নবীদের মধ্যে দ্বিতীয় এমন কেউ ছিলেন না এবং নেই যার ব্যাপারে সবাই একমত হতে পারে। তিন, হযরত ইবরাহীম এসব মিল্লাতের জন্মের পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছেন। ইহুদীবাদ, খৃষ্টবাদ ও সাবেয়বাদ সম্পর্কে তো সবই জানে যে, এগুলো পরবর্তীকালে উদ্ভাবিত হয়েছে আর আরবীয় মুশরিকদের ব্যাপারে বলা যায়। তারা নিজেরাও একথা স্বীকার করতো যে, তাদের সমাজে মূর্তি পূজা শুরু হয় আমর ইবনে লুহাই থেকে। সে ছিল বনী খুযা'আর সরদার। মাআব (মাওয়াব) এলাকা থেকে সে 'হুবুল' নামক মূর্তি নিয়ে এসেছিল। তার সময়টা ছিল বড় জোর ঈসা আলাইহিস সালামের পাঁচ-ছ'শ' বছর আগের। কাজেই এ মিল্লাতটিও হযরত ইবরাহীমের শত শত বছর পরে তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় কুরআন যখন বলে এ মিল্লাতগুলো পরিবর্তে ইবরাহীমের মিল্লাত গ্রহণ করো তখন সে আসলে এ সত্যটি জানিয়ে দেয় যে, যদি হযরত ইবরাহীম সত্য ও হিদায়াতের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে থাকেন এবং এ মিল্লাতগুলোর মধ্য থেকে কোনটিরই অনুসারী না থেকে থাকেন তাহলে নিশ্চিতভাবেই তাঁর মিল্লাতই প্রকৃত সত্য মিল্লাত। পরবর্তীকালের মিল্লাতগুলো সত্য নয়। আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মিল্লাতের দিকেই দাওয়াত দিচ্ছেন। আরো বেশী ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা বাকারা ১৩৪-১৩৫, সূরা আলে ইমরান, ৫৮,৭৯ এবং সূরা আন নহল, ১২০ টীকা।)
(১৯:৯৮) এদের পূর্বে আমি কত জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছি৷ আজ কি কোথাও তাদের নাম-নিশানা দেখতে পাও অথবা কোথাও শুনতে পাও তাদের ক্ষীণতম আওয়াজ?
(হাজ্ব:৪৫) কত দুষ্কৃতকারী জনপদ আমি ধ্বংস করে দিয়েছি এবং আজ তারা নিজেদের ছাদের ওপর উলটে পড়ে আছে, কত কূয়া অচল এবং কত প্রাসাদ ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে৷
(মু’মিনুন:৪৪) তারপর আমি একের পর এক নিজের রসূল পাঠিয়েছি ৷ যে জাতির কাছেই তার রসূল এসেছে সে-ই তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে, আর আমি একের পর এক জাতিকে ধ্বংস করে গেছি এমনকি তাদেরকে স্রেফ কাহিনীই বানিয়ে ছেড়েছি, --অভিসম্পাত তাদের প্রতি যারা ঈমান আনে না ৷
(৩২- আস-সাজদা : ২৬) আর এরা কি (এসব ঐতিহাসিক ঘটনা থেকে ) কোন পথনির্দেশ পায়নি যে, এদের পূর্বে কত জাতিকে আমি ধ্বংস করেছি , যাদের আবাসভূমি তে আজ এরা চলাফেরা করছে ? ৩৯ এর মধ্যে রয়েছে বিরাট নিদর্শনাবলী , এরা কি শুনবে না ?
৩৯ . যে জাতির মধ্যেই নবী এসেছে তার ভাগ্যের ফায়সালা সেই নবীর ব্যাপারে সে যে নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করেছে তার ভিত্তিতেই হয়ে গেছে। রসূলকে প্রত্যাখ্যান করার পর আর কোন জাতি ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচতে পারেনি। তাদের মধ্যে থেকে যারা ঈমান এনেছে একমাত্র তারাই টিকে গেছে। প্রত্যাখ্যান কারীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি লাভ করে চিরকালের জন্য শিক্ষণীয় বস্তুতে পরিণত হয়ে গেছে। ইতিহাসের এ ধারাবাহিক অভিজ্ঞতা থেকে তারা কি কোন শিক্ষা লাভ করেনি ৷
(মু’মিনুন:৪৩) কোন জাতি তার সময়ের পূর্বে শেষ হয়নি এবং তার পরে টিকে থাকতে পারেনি৷
বিস্তারিত দেখুন : ম > মসজিদ > মসজিদুল হারাম > হজ্বপালনকারীদের নিকট থেকে মক্কার বাড়ীঘরের ভাড়া আদায় করা কি বৈধ ?
(১৫:৭৮) আর আইকাবাসীরা জালেম ছিল৷ ৭৯) কাজেই দেখে নাও আমিও তাদের ওপর প্রতিশোধ নিয়েছি৷ আর এ উভয় সম্প্রদায়ের বিরাণ এলাকা প্রকাশ্য পথের ধারে অবস্থিত৷
(ব্যাখ্যা: অর্থাৎ হযরত শো' আয়েবের (আ) সম্প্রদায়ের লোক । এ সম্প্রদায়টির নাম ছিল বনী মাদইয়ান । তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় শহরেরও নাম ছিল মাদইয়ান এবং সমগ্র এলাকটিকেও মাদইয়ান বলা হতো । আর " আইকা" ছিল তাবুকের প্রাচীন নাম । এ শব্দটির শাব্দিক অর্থ হচ্ছে ঘন জংগল । বর্তমানে একটি পাহাড়ী ঝরণার নাম আইকা । এটি জাবালে নূরে উৎপন্ন হয়ে আফাল উপত্যকায় এসে পড়ছে । -তাফহীমুল কুরআন( ব্যাখ্যার জন্য সূরা শূ'আরার ১১৫ টীকা দেখুন )
(১৫:৮০) হিজ্রবাসীরাও রসূলদের প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছিল৷ ৮১) আমি তাদের কাছে আমার নিদর্শন পাঠাই, নিশানী দেখাই কিন্তু তারা সবকিছু উপেক্ষা করতে থাকে৷৮২) তারা পাহাড় কেটে কেটে গৃহ নির্মাণ করতো এবং নিজেদের বাসস্থানে একেবারেই নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত ছিল৷৮৩) শেষ পর্যন্ত প্রভাত হতেই একটি প্রচণ্ড বিষ্ফোরণ তাদেরকে আঘাত হানলো ৮৪) এবং তাদের উপার্জন তাদের কোনো কাজে লাগলো না৷
(৩০-রূম: ১৪) যেদিন সেই সময়টি সমাগত হবে সেদিন (সমস্ত মানুষ) পৃথক পৃথক দলে বিভক্ত হয়ে যাবে৷ ১৮
(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : দ > দল)
(১৬:৭৮) আল্লাহ তোমাদের মায়ের পেট থেকে তোমাদের বের করেছেন এমন অবস্থায় যখন তোমরা কিছুই জানতে না৷ তিনি তোমাদের কান দিয়েছেন, চোখ দিয়েছেন, চিন্তা-ভাবনা করার মতো হৃদয় দিয়েছেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো৷
আরো দেখুন : গ > গোপন ও প্রকাশ্য সবই আল্লাহ জানেন ।
(১৯:৭৩) এদেরকে যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াত শুনানো হয় তখন অস্বীকারকারীরা ঈমানদারদেরকে বলে, ”বলো, আমাদের দু’দলের মধ্যে কে ভালো অবস্থায় আছে এবং কার মজলিসগুলো বেশী জাঁকালো। ৭৪) অথচ এদের আগে আমি এমন কত জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছি যারা এদের চাইতে বেশী সাজ-সরঞ্জামের অধিকারী ছিল এরা বাহ্যিক শান শওকতের দিক দিয়েও ছিল এদের চেয়ে বেশী অগ্রসর৷
(১২:১৮) তারা ইউসূফের জামায় মিথ্যা রক্ত লাগিয়ে নিয়ে এসেছিল৷ একথা শুনে তাদের বাপ বললো, “বরং তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি বড় কাজকে সহজ করে দিয়েছে৷ ঠিক আছে, আমি সবর করবো এবং খুব ভালো করেই সবর করবো৷ তোমরা যে কথা সাজাচ্ছো তার ওপর একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাওয়া যেতে পারে৷
আল্লাহর রজ্জুকে শক্ত করে ধর : ৩:১০৩,
জামায়াতের সাথে নামাজ আদায় কর : ২:৪৩,
জামায়াত বদ্ধ হয়ে দাওয়াতী কাজ : ৩:১০৪, ১০৫
জামায়াতের সাথে নামাজ আদায় করার হুকুম : ২:৪৩,
বিস্তারিত দেখুন :
১। অ > অনুমতি
২। জ > জিহাদে নেতৃত্বের আনুগত্য
৩। ন > নেতা
৪। আ > আনুগত্য
৫। দ > দল
৬। স > সামাজিকতা
(১২:৭৮) তারা বললো, “হে ক্ষমাতাসীন সরদার (আযীয)! এর বাপ অত্যন্ত বৃদ্ধ, এর জায়গায় আপনি আমাদের কাউকে রেখে দিন৷ আমরা আপনাকে বড়ই সদাচারী ব্যক্তি হিসেবে পেয়েছি৷” ৭৯) ইউসুফ বললেন, “আল্লাহর পানাহ! অন্য কাউকে আমরা কেমন করে রাখতে পারি ? যার কাছে আমরা নিজেদের জিনিস পেয়েছি তাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য কাউকে রাখলে আমরা জালেম হয়ে যাবো৷”
(১১:৮৭) তারা জবাব দিল : “হে শো’আয়েব! তোমার নামায কি তোমাকে একথা শেখায় যে, আমরা এমন সমস্ত মাবুদকে পরিত্যাগ করবো যাদেরকে আমাদের বাপ-দাদারা পূজা করতো ? অথবা নিজেদের ধন-সম্পদ থেকে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী খরচ করার ইখতিয়ার আমাদের থাকবে না ? ব্যস, শুধু তুমিই রয়ে গেছো একমাত্র উচ্চ হৃদয়ের অধিকারী ও সদাচারী!”
(ব্যাখ্যা : এ বক্তব্যটি ইসলামের মোকাবিলায় জাহেলী মতবাদের পূর্ণ পরিচয় তুলে ধরছে। ইসলামের দৃষ্টিভংগী হচ্ছে, আল্লাহর বন্দেগী ছাড়া বাকি অন্যান্য যাবতীয় পদ্ধতিই ভুল। এগুলো অনুসরণ করা উচিত নয়। কারণ অন্য কোন পদ্ধতির পক্ষে বুদ্ধি, জ্ঞান ও আসমানী কিতাবসমূহে কোন যুক্তি-প্রমাণ নেই। আর তাছাড়া শুধুমাত্র একটি সীমিত ধর্মীয় গণ্ডীর মধ্যে আল্লাহর বন্দেগী হওয়া উচিত নয় বরং তামাদ্দুনিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক তথা জীবনের সকল বিভাগেই হওয়া উচিত। কারণ দুনিয়ায় মানুষের কাছে যা কিছু আছে সব আল্লাহর মালিকানাধীন। আল্লাহর ইচ্ছার গণ্ডী ভেদ করে স্বাধীনভাবে কোন একটি জিনিসও মানুষ ব্যবহার করার অধিকার রাখে না। এর মোকাবিলায় জাহেলী মতবাদ হয়েছে, বাপ-দাদা থেকে যে পদ্ধতি চলে আসছে মানুষের তারই অনুসারী হওয়া উচিত। এর অনুসরণের জন্য এ ছাড়া আর অতিরিক্ত কোন যুক্তি প্রমাণের প্রয়োজন নেই যে, এটা বাপ-দাদাদের পদ্ধতি। তাছাড়া শুধুমাত্র পূজা-অর্চনার সাথে দীন ও ধর্মের সম্পর্ক রয়েছে। আর আমাদের জীবনের সাধারণ পার্থিব বিষয়াবলীর ব্যাপারে আমাদের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকা দরকার, যেভাবে ইচ্ছা আমরা সেভাবে কাজ করতে পারি।
এ থেকে একথাও আন্দাজ করা যেতে পারে যে, জীবনকে ধর্মীয় ও পার্থিব এ দু'ভাগে ভাগ করার চিন্তা আজকের কোন নতুন চিন্তা নয় বরং আজ থেকে তিন সাড়ে তিন হাজার বছর আগে হযরত শো'আয়েব আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ও এ বিভক্তির ওপর ঠিক তেমনিই জোর দিয়েছিল যেমন আজকের যুগে পাশ্চাত্যবাসীরা এবং তাদের পাচ্যদেশীয় শাগরিদবৃন্দ জোর দিচ্ছেন। এটা আসলে কোন "নতুন আলো" বা "প্রগতি" নয় যা "মানসিক উন্নয়নে"র কারণে মানুষ আজ লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। বরং এটা সেই একই পুরাতন অন্ধকার ও পশ্চাতপদ চিন্তা যা হাজার হাজার বছর আগের জাহেলিয়াতের মধ্যেও আজকের মতো একই আকারে বিরাজমান ছিল। এর সাথে ইসলামের সংঘাত আজকের নয়, অনেক পুরাতন।)
(আরো দেখুন : ক > কুসংস্কার)
দেখুন : ফ > ফেরেশতা
আরো দেখুন : র > রূহ > রূহ : হযরত জিবরাঈল আ:
আরো দেখুন : প > প্রাণী ।
জমিনের মধ্যে বিচরণশীলদের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব হলো তারাই যারা সত্যকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে এবং তারপর আর কোন মতেই তা গ্রহণ করতে প্রস্তুত হয় না : ৮:৫৫,
(৩১-লোকমান: ১০)..তিনি সব ধরনের জীব-জন্তু পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন৷
২:১০৮, ৪:৭০,
যথার্থ সত্য জানার জন্য আল্লাহর জ্ঞান যথেষ্ট : ৪:৭০,
(১৭:৬৯) আর তোমাদের কি এ ধরনের কোনো আশংকা নেই যে, আল্লাহ আবার কোনো সময় তোমাদের সাগরে নিয়ে যাবেন এবং তোমাদের অকৃতজ্ঞতার দরুন তোমাদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ঘূর্ণি পাঠিয়ে তোমাদের ডুবিয়ে দেবেন এবং তোমরা এমন কাউকে পাবে না যে, তাঁর কাছে তোমাদের এ পরিণতির জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে ?
(১৮:১৯) আর এমনি বিস্ময়করভাবে আমি তাদেরকে উঠিয়ে বসালাম যাতে তারা পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে৷ তাদের একজন জিজ্ঞেস করলোঃ “বলোতো, কতক্ষণ এ অবস্থায় থেকেছো ?” অন্যেরা বললো, “হয়তো একদিন বা এর থেকে কিছু কম সময় হবে৷”
(১৮:২২) তাদের সম্পর্কে কাউকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদও করো না৷
(১৬:৯৩) ........আর অবশ্যই তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷
(১৫:৯২) তোমার রবের কসম, আমি অবশ্যি তাদের সবাইকে জিজ্ঞেস করবো, ৯৩) তোমরা কি কাজে নিয়োজিত ছিলে ?
এমন কোনো জিনিসের পেছনে লেগে যেয়ো না সে সম্পর্কে তোমার জ্ঞান নেই৷ নিশ্চিতভাবেই চোখ, কান ও দিল সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷ – (১৭:৩৬)
(১৮:২২) কিছু লোক বলবে, তারা ছিল তিনজন আর চতুর্থজন ছিল তাদের কুকুরটি৷ আবার অন্য কিছু লোক বলবে, তারা পাঁচজন ছিল এবং তাদের কুকুরটি ছিল ষষ্ঠ, এরা সব আন্দাজে কথা বলে৷ অন্যকিছু লোক বলে, তারা ছিল সাতজন এবং অষ্টমটি তাদের কুকুর৷ বলো, আমার রবই ভালো জানেন তারা কজন ছিল, অল্প লোকই তাদের সঠিক সংখ্যা জানে৷ কাজেই তুমি সাধারণ কথা ছাড়া তাদের সংখ্যা নিয়ে লোকদের সাথে বিতর্ক করো না এবং তাদের সম্পর্কে কাউকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদও করো না৷
৬:২২, ৩০,
৬:১২৮, ১৩০,
৭:৬,
(২৭-নমল:৮৩) আর সেদিনের কথা একবার চিন্তা কর, যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্য থেকে এমন সব লোকদের এক একটি দল কে ঘেরাও করে আনবো যারা আমার আয়াত অস্বীকার করত৷ তারপর তাদের কে ( তাদের শ্রেণী অনুসারে স্তরে স্তরে ) বিন্যস্ত করা হবে৷৮৪) অবশেষে যখন সবাই এসে যাবে তখন ( তাদের রব তাদেরকে ) জিজ্ঞাস করবেন, “ তোমরা আমার আয়াত অস্বীকার করেছো অথচ তোমরা জ্ঞানগত ভাবে তা আয়ত্ব করো নি? যদি এ না হয়ে থাকে তাহলে তোমরা আর কি করেছিলে”৷
(২৯-আনকাবুত:৪৫)......আর আল্লাহর স্মরণ এর চাইতেও বড় জিনিস৷ ৭৯ আল্লাহ জানেন তোমরা যা কিছু করো৷
৭৯ . এর কয়েকটি অর্থ হতে পারে। একঃ আল্লাহর যিকির (অর্থাৎ নামায) এর চেয়ে বড়। এর প্রভাব কেবল নেতিবাচকই নয়। শুধুমাত্র অসৎকাজ থেকে বিরত রেখেই সে ক্ষেত্রে অগ্রবর্তী হবার জন্য মানুষকে উদ্যোগী করে। দ্বিতীয় অর্থঃ আল্লাহর স্মরণ নিজেই অনেক বড় জিনিস , সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ। মানুষের কোন কাজ এর চেয়ে বেশি ভালো নয়। এর তৃতীয় অর্থঃ তোমার আল্লাহকে স্মরণ করার চাইতে আল্লাহর তোমাকে স্মরণ করা অনেক বেশি বড় জিনিস। কুরআনে মহান আল্লাহ বলেনঃ----------- "তোমরা আমাকে স্মরণ করো আমি তোমাদের স্মরণ করবো।" (আল বাকারাহ ১৫২) কাজেই বান্দা যখন নামাযে আল্লাহকে স্মরণ করার তুলনায় আল্লাহর বান্দাকে স্মরণ করা অনেক বেশি উচ্চমানের। এ তিনটি অর্থ ছাড়া আরো একটি সূক্ষ্ণ অর্থও এখানে হয় । হযরত আবু দারদা (রা) এর সম্মানিতা স্ত্রী এ অর্থটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহর স্মরণ নামায পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয় বরং তার সীমানা এর চাইতেও বহুদূর বিস্তৃত। যখন মানুষ রোযা রাখে, যাকাত দেয় বা অন্য কোন সৎকাজ করে তখন অবশ্যই সে আল্লাহকে স্মরণই করে , তবেই তো তার দ্বারা ঐ কাজটি সম্পাদিত হয়। অনুরূপভাবে যখন কোন ব্যক্তি কোন অসৎকাজ করার সুযোগ পাওয়ার পর তা থেকে দূরে থাকে তখন এটাও হয় আল্লাহর স্মরণেরই ফল। এ জন্য আল্লাহর স্মরণ একজন মুমিনের সমগ্র জীবনে পরিব্যাপ্ত হয়।
তোমরা আমাকে স্মরণ কর আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব : ২:১৫২,
আল্লাহর জিকর : ৬:৫২,
(৩৩-আহযাব: ২১) আসলে তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে ছিল একটি উত্তম আদর্শ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে আল্লাহ ও শেষ দিনের আকাঙ্ক্ষী এবং বেশী করে আল্লাহকে স্মরণ করে৷৩৫
৩৫. অর্থাৎ যে, ব্যক্তি আল্লাহ থেকে গাফিল তার জন্য এ জীবন আদর্শ নয়। কিন্তু তার জন্য অবশ্যই আদর্শ যে, কখনো ঘটনাক্রমে আল্লাহর নাম নেয় না বরং বেশী করে তাঁকে স্মরণ করে ও স্মরন রাখে। অনুরূরপভাবে এ জীবন এমন ব্যক্তির জন্যও কোন আদর্শ নয় যে আল্লাহর কাছ থেকেও কিছু আশা করে না এবং আখেরাতের আগমনেরও প্রত্যাশা করে না। কিন্তু এমন ব্যক্তির জন্য তার অবশ্যই আদর্শ যে, আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দান আশা করে এবং যে একথা চিন্তা করে যে, একদিন আখেরাতের জীবন শুরু হবে যেখানে দুনিয়ার জীবন তার মনোভাব ও নীতি আল্লাহর রসূলের (সা) মনোভার ও নীতির কতটুকু নিকটতর আছে তার ওপরই তার সমস্ত কল্যাণ নির্ভর করবে।
(বিস্তারিত দেখুন : চ > চরিত্র)
(নূর:৩৬) (তাঁর আলোর পথ অবলম্বনকারী )ঐ সব ঘরে পাওয়া যায়, যেগুলোকে উন্নত করার ও যেগুলোর মধ্যে নিজের নাম স্মরণ করার হুকুম আল্লাহ দিয়েছেন ৷ সেগুলোতে এমন সব লোক সকাল সাঁঝে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে৷
(উল্লেখ্য যে, লোকেরা শুধু সকাল আর সন্ধ্যায়ই মসজিদে যায়না, বরং দিনে রাতে পাচবার মসজিদে যাতায়াত করে, তাই এখানে সকাল সন্ধ্যা বলতে সার্বক্ষণিক সময়কে বুঝানো হয়েছে। )
(৩৩-আহযাব: ৩৫) একথা সুনিশ্চিত যে, যে পুরুষ ও নারী মুসলিম, মুমিন, হুকুমের অনুগত, সত্যবাদী, সবরকারী, আল্লাহর সামনে বিনত, সাদকাদানকারী, রোযা পালনকারী, নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী এবং আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণকারী৬৩ আল্লাহ তাদের জন্য মাগফিরাত এবং প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন৷
৬৩. আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণ করার অর্থ হচ্ছে, জীবনের সকল কাজেকর্মে সমস্ত ব্যাপারেই সবসময় যেন মানুষের মুখে আল্লাহর নাম এসে যায়। মানুষের মনে আল্লাহর চিন্তা পুরোপুরি ও সর্বব্যাপী আসন গেঁড়ে না বসা পর্যন্ত এ ধরনের অবস্থা তার মধ্যে সৃষ্টি হয় না। মানুসের চেতনার জগত অতিক্রম করে যখন অচেতন মনের গভীরদেশেও এ চিন্তা বিস্তৃত হয়ে যায় তখনই তার অবস্থা এমন হয় যে, সে কোন কথা বললে বা কোন কাজ করলে তার মধ্যে আল্লাহর নাম অবশ্যই এসে যাবে। আহার করলে "বিসমিল্লাহ" বলে শুরু করবে। আহার শেষ করবে 'আলহামদুলিল্লাহ' বলে। আল্লাহকে স্মরণ করে ঘুমাবে এবং ঘুম ভাঙবে আল্লাহর নাম নিতে নিতে। কথাবার্তায় তার মুখে বারবার বিসমিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, ইনশাআল্লাহ, মাশাআল্লাহ এবং এ ধরনের অন্য শব্দ ও বাক্য বারবার উচ্চারিত হতে থাকবে। প্রত্যেক ব্যাপারে বারবার সে আল্লাহর সাহায্য চাইবে। প্রত্যেকটি নিয়ামত লাভ করার পর আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। প্রত্যেকটি বিপদ আসার পর তার রহমতের প্রত্যাশী হবে। প্রত্যেক সংকটে তার দিকে মুখ ফিরাবে। কোন খারাপ কাজের সুযোগ এল তাঁকে ভয় করবে। কোন ভুল বা অপরাধ করলে তাঁর কাছে মাফ চাইবে। প্রত্যেকটি প্রয়োজন ও অভাবের মুহূহর্তে তাঁর কাছে প্রার্থনা করবে। মোটকথা উঠতে বসতে এবং দুনিয়ার সমস্ত কাজকর্মে আল্লাহর স্মরণ হয়ে থাকবে তার কণ্ঠলগ্ন্ এ জিনিসটি আসলে ইসলামী জীবনের প্রাণ । অন্য যে কোন ইবাদাতের জন্য কোন না কোন সময় নির্ধাতির থাকে এবং তখনই তা পালন করা হয়ে থাকে এবং তা পালন করার পর মানুষ তা থেকে আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু এ ইবাদাতটি সর্বক্ষণ জারী থাকে এবং এটিই আল্লাহ ও তাঁর বন্দেগীর সাথে মানুষের জীবনের স্থায়ী সম্পর্ক জুড়ে রাখে। মানুষের মন কেবলমাত্র এসব বিশেষ কাজের সময়েই নয় বরং সর্বক্ষণ আল্লাহর প্রতি আকৃষ্ট এবং তার কণ্ঠ সর্বক্ষণ তাঁর স্মরণে সিক্ত থাকলেই এরি মাধ্যমেই ইবাদাত ও অন্যান্য দীনী কাজে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় । মানুষের মধ্যে যদি এ অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাহলে তার জীবনে ইবাদাত ও দীনী কাজ ঠিক তেমনিভাবে বুদ্ধি ও বিকাশ লাভ করে যেমন একটি চারাগাছকে তার প্রকৃতির অনুকূল আবহাওয়ায় রোপণ করা হলে তা বেড়ে উঠে । পক্ষান্তরে যে জীব্ন আল্লাহর এ সার্বক্ষণিক স্মরণ শূন্য থাকে সেখানে নিছক বিশেষ সময়ে অথবা বিশেষ সুযোগে অনুষ্ঠিত ইবাদাত ও দীনী কাজের দৃষ্টান্ত এমন একটি চারাগাছের মতো যাকে তার প্রকৃতির প্রতিকূল আবহাওয়ায় রোপণ করা হয় এবং নিছক বাগানের মালির বিশেষ তত্ত্বাবধানের কারণ এ বেঁচে থাকে। একথাটিই নবী (সাঃ) একটি হাদীসে এভাবে বর্ণনা করেছেন।
(আরবী)
"মু'আয ইবনে আনাস জুহানী বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রসূল! জিহাদকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিদান লাভ করবে কে৷ জবাব দিলেন, যে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী আল্লাহকে স্মরণ করবে। তিনি নিবেদন করেন, রোযা পালনকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রতিদান পাবে কে৷ জবাব দিলেন, যে তাদের মধ্যে আল্লাহকে সবচেয়ে বেশী স্মরণ করবে। আবার তিনি একই ভাবে নামায, যাকাত, হ্জ্জ ও সাদকা আদায়কারীদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। জাবাবে নবী করীম (সাঃ) বলেণ, " যে আল্লাহকে সবচেয়ে বেশী স্মরণ করে।" (মুসনাদে আহমাদ)
(৩৩-আহযাব: ৪১) হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে বেশী করে স্মরণ করো ৪২) এবং সকাল সাঁঝে তাঁর মহিমা ঘোষণা করতে থাকো৷৭৮
৭৮. মুসলমানদেরকে এ উপদেশ দেয়াই এর উদ্দেশ্য যে, যখন শত্রুদের পক্ষ থেকে আল্লাহর রসূলের প্রতি ব্যাপকভাবে বিদ্রুপ ও নিন্দাবাদ করা হয় এবং আল্লাহর সত্য দীনকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য রসূলের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের তুফান সৃষ্টি করা হয় তখন নিশ্চিন্তে এসব বাজে খিস্তি খেউড় শুনতে থাকা, নিজেই শত্রুদের ছাড়নো সন্দেহ সংশয়ে জড়িয়ে পড়া এবং জবাবে তাদেরকেও গালাগালি করতে থাকা মু'মিনদের কাজ নয়। বরং তাদের কাজ হচ্ছে, সাধারণ দিনগুলোর তুলনায় এসব দিনে বিশেষভাবে আল্লাহকে আরো বেশী করে স্মরণ করা। আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণ করার অর্থ ৬৩ টীকায় বর্ণনা করা হয়েছে। সকাল সাঝ আল্লাহ মহিমা ঘোষণা করার অর্থ হচ্ছে সর্বক্ষণ তাঁর তাসবীহ করা । আর তাসবীহ করা মানে আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করা, নিছক তাসবীহর দানা হাতে নিয়ে গুণতে থাকা নয়।
(২০:২৪) এখন তুমি যাও ফেরাউনের কাছে, সে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে”৷...... (২০:৩৩)(এর জবাবে হযরত মুসা আ: বক্ষ প্রশস্ত করে দেওয়ার জন্য ও হারুন আ: কে নবী বানিয়ে তার সহযোগী করে দেওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করলেন এবং পরিশেষে আল্লাহর কাছে তৌফিক চাইলেন-) যাতে আমরা খুব বেশী করে তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করতে পারি, ৩৪) এবং খুব বেশী করে তোমার চর্চা করি৷ ৩৫) তুমি সব সময় আমাদের অবস্থার পর্যবেক্ষক”৷
(২০:৪২) যাও, তুমি ও তোমার ভাই আমার নিদর্শনগুলোসহ এবং দেখো আমার স্মরণে ভুল করো না৷৪৩) যাও, তোমরা দু’জন ফেরাউনের কাছে, সে বিদ্রোহী হয়ে গেছে৷
জিকর করা / আল্লাহকে ডাকার নিয়ম/ইবাদত করার নিয়ম:
আল্লাহকে ডাকতে হবে অনুচ্চ ও কান্নাজড়িত কন্ঠে, চুপে চুপে, ভীতি বিহ্বল চিত্তে :৭:৫৫(৫৫) তোমাদের রবকে ডাকো কান্নাজড়িত কণ্ঠে ও চুপে চুপে) ৭:৫৬, ৭:২০৫, (তোমার রবকে স্মারণ করো সকাল-সাঁঝে মনে মনে কান্নাজড়িত স্বরে ও ভীতি বিহ্বল চিত্তে এবং অনুচ্চ কণ্ঠে)
(২০:৯৯) ... এবং আমি বিশেষ করে নিজের কাছ থেকে তোমাকে একটি ‘যিকির’(উপদেশমালা) দান করেছি৷১০০) যে ব্যক্তি এ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে সে কিয়ামতের দিন কঠিন গোনাহের বোঝা উঠাবে৷১০১) আর এ ধরনের লোকেরা চিরকাল এ দুর্ভাগ্য পীড়িত থাকবে এবং কিয়ামতের দিন তাদের জন্য (এই অপরাধের দায়ভার) বড়ই কষ্টকর বোঝা হবে৷
(১৫:৯) আর এ বাণী, একে তো আমিই অবতীর্ণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক৷
(১৫:৬) এরা বলে, “ওহে যার প্রতি বাণী অবতীর্ণ হয়েছে, তুমি নিশ্চয়ই উন্মাদ !
("যিকির" বা বাণী শব্দটি পারিভাষিক অর্থে কুরআন মজীদে আল্লাহর বাণীর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে । আর এ বাণী হচ্ছে আগাগোড়া উপদেশমালায় পরিপূর্ণ । পূর্ববর্তী নবীদের ওপর যেগুলো কিতাব নাযিল হয়েছিল সেগুলো সবই "যিকির" ছিল এবং এ কুরআন মজীদও যিকির । যিকিরের আসল মানে হচ্ছে স্মরণ করিয়ে দেয়া , সতর্ক করা এবং উপদেশ দেয়া ।)
(২০:১২৪) আর যে ব্যক্তি আমার “যিকির (উপদেশমালা) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তার জন্য হবে দুনিয়ায় সংকীর্ণ জীবন এবং কিয়ামতের দিন আমি তাকে উঠাবো অন্ধ করে৷১২৫) -সে বলবে, “হে আমার রব! দুনিয়ায় তো আমি চক্ষুষ্মান ছিলাম কিন্তু এখানে আমাকে অন্ধ করে উঠালে কেন? ১২৬) আল্লাহ বললেন, “হাঁ, এভাবেই তো৷ আমার আয়াত যখন তোমার কাছে এসেছিল, তুমি তাকে ভুলে গিয়েছিলে এবং সেভাবেই আজ তোমাকেও ভুলে যাওয়া হচ্ছে৷
(২১:৫০) আর এখন এ বরকত সম্পন্ন “যিকির” আমি (তোমাদের জন্য) নাযিল করেছি৷ তবুও কি তোমরা একে মেনে নিতে অস্বীকার করো ?
(২১:১) তাদের কাছে তাদের রবের পক্ষ থেকে যে উপদেশ আসে, তা তারা দ্বিধাগ্রস্তভাবে শোনে এবং খেলার মধ্যে ডুবে থাকে ৩) তাদের মন (অন্য চিন্তায়) আচ্ছন্ন.......৷
(২১:৭) আর হে মুহাম্মাদ! তোমার পূর্বেও আমি মানুষদেরকেই রসূল বানিয়ে পাঠিয়েছিলাম, যাদের কাছে আমি অহী পাঠাতাম৷ তোমরা যদি না জেনে থাকো তাহলে আহলে কিতাবদেরকে জিজ্ঞেস করো৷
৬। জিকর : আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলা :
(২১:৪২) হে মুহাম্মাদ! ওদেরকে বলে দাও, কে তোমাদের রাতে ও দিনে রহমানের হাত থেকে বাঁচাতে পারে ? কিন্তু তারা নিজেদের রবের উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে৷
বিস্তারিত দেখুন : ক্ষ > ক্ষমা > ক্ষমা লাভের আশায় যারা গুণাহ করতে থাকে।
(২১:৪৮) পূর্বে আমি মূসা ও হারুনকে দিয়েছিলাম ফুরকান, জ্যোতি ও ‘যিকির’ এমনসব মুত্তাকীদের কল্যাণার্থে।
(মু’মিনুন:৮৪) তাদেরকে জিজ্ঞেস করোঃ যদি তোমরা জানো তাহলে বলো এ পৃথিবী এবং এর মধ্যে যারা বাস করে তারা কার ? ৮৫) তারা নিশ্চয় বলবে, আল্লাহর ৷ বলো, তাহলে তোমরা সচেতন হচ্ছো না কেন ?
(২১:৩৬) এ সত্য অস্বীকারকারীরা যখন তোমাকে দেখে, তোমাকে বিদ্রূপের পাত্রে পরিণত করে৷ বলে, “এ কি সেই ব্যক্তি যে তোমাদের দেবদেবীদের সমালোচনা করে ?” অথচ তাদের (কাফেরদের) নিজেদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা (কাফেররা) করুণাময়ের যিকরের অস্বীকারকারী৷
(২০:১৪) আমিই আল্লাহ, আমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, কাজেই তুমি আমার ইবাদত করো এবং আমাকে স্মরণ করার জন্য নামায কায়েম করো৷
(ব্যাখ্যা : এখানে নামাযের মূল উদ্দেশ্যের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। মানুষ যেন আল্লাহ থেকে গাফেল না হয়ে যায়। দুনিয়ার চোখ ধাঁধানো দৃশ্যাবলী যেন তাকে এ সত্য বিমুখ না করে দেয় যে, সে কারো বান্দা এবং সে স্বাধীন ক্ষমতা সম্পন্ন নয়। এ চিন্তাকে জীবন্ত ও তরতাজা রাখার এবং আল্লাহর সাথে মানুষের সম্পর্ক জড়িত করার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হচ্ছে নামায। প্রতিদিন কয়েকবার মানুষকে দুনিয়ার কাজকারবার থেকে সরিয়ে নামায তাকে আল্লাহর দিকে নিয়ে যায়।
কেউ কেউ এর এ অর্থও নিয়েছেন যে, নামায কায়েম করো যাতে আমি তোমাকে স্মরণ করতে পারি, যেমন অন্যত্র বলা হয়েছেঃ (……….) "আমাকে স্মরণ করো আমি তোমাকে স্মরণে রাখবো"।
অনুসংগিকভাবে এ আয়াত থেকে এ বিধানটিও বের হয় যে, যে ব্যক্তি ভুলে যায় তার যখনই মনে পড়বে তখনই নামায পড়ে নেয়া উচিত। হাদীসে হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণনা করা হয়েছেঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
--------------------------
"কোন ব্যক্তি কোন সময় নামায পড়তে ভুলে গিয়ে থাকলে যখন তার মনে পড়ে যায় তখনই নামায পড়ে নেয়া উচিত। এছাড়া এর আর কোন কাফ্ফারা নেই"। (বুখারী, মুসলিম, আহমদ )
এ অর্থে হযরত আবু হুরাইরার (রা) একটি হাদীসও বর্ণিত হয়েছে। মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ প্রমুখ মুহাদ্দিসগণ এটি তাঁদের হাদীসগ্রন্থে উদ্ধৃত করেছেন। আবু কাতাদাহ (রা) বর্ণিত একটি হদীসে বলা হয়েছেঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হয়, যদি আমরা নামাযের সময় ঘুমিয়ে থাকি তাহলে কি করবো" জবাবে তিনি বলেন, "ঘুমের মধ্যে কোন দোষ নেই। দোষের সম্পর্ক তো জেগে থাকা অবস্থার সাথে। কাজেই যখন তোমাদের মধ্যে কেউ ভুলে যাবে অথবা ঘুমিয়ে পড়বে তখন জেগে উঠলে বা মনে পড়লে তৎক্ষণাত নামায পড়ে নেবে"। (তিরমিযী, নাসাঈ, আবু দাউদ)
(৭:২০৫) হে নবী!তোমার রবকে স্মারণ করো সকাল-সাঁঝে মনে মনে কান্নাজড়িত স্বরে ও ভীতি বিহ্বল চিত্তে এবং অনুচ্চ কণ্ঠে৷ তুমি তাদের অন্তরভুক্ত হয়ো না যারা গাফলতির মধ্যে ডুবে আছে৷
(স্মরণ করা অর্থ নামাযও এবং অন্যান্য ধরনের স্মরণ করাও। চাই মুখে মুখে বা মনে মনে যে কোনভাবেই তা হোক না কেন। সকাল -সাঝ বলতে নির্দিষ্টভাবে এ দুটি সময়ও বুঝানো হয়ে থাকতে পারে। আর এ দু সময়ে আল্লাহর স্মরণ বলতে বুঝানো হয়েছে নামাযকে। পক্ষান্তরে সকাল সাঁঝ কথাটা সর্বক্ষণ অর্থেও ব্যবহৃত হয়এবং তখন এর অর্থ হয় সবসময় আল্লাহর স্মরণে মশগুল থাকা। এ ভাষণটির উপসংহারে সর্বশেষ উপদেশ হিসেবে এটা বলা হয়েছে । এর উদ্দেশ্য বর্ণনা প্রসংগে বলা হয়েছে তোমাদের অবস্থা যেন গাফেলদের মত না হয়ে যায়। দুনিয়ায় যা কিছু গোমরাহী ছড়িয়েছে এবং মানুষের নৈতিক চরিত্রে ও কর্মকাণ্ডে যে বিপর্যয়ই সৃষ্টি হয়েছে তার একমাত্র কারণ হচ্ছে,মানুষ ভুলে যায় , আল্লাহ তার রব সে আল্লাহর বান্দা , দুনিয়ায় তাকে পরীক্ষা করার জন্যে পাঠানো হয়েছে এবং দুনিয়ার জীবন শেষ হবার পর তাকে তার রবের কাছে হিসেব দিতে হবে।কাজেই যে ব্যক্তি নিজেও সঠিক পথে চলতে চায় এবং দুনিয়ার অন্যান্য মানুষকেও তদনুসারে চালাতে চায় সে নিজে যেন কখনো এ ধরনের ভুল না করে, এ ব্যাপারে তাকে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এ জন্যেই নামায ও আল্লাহর যিকিরের মাধ্যমে সব সময় স্থায়ীভাবে আল্লাহর প্রতি আকৃষ্ট থাকার ও তাঁর সাথে সম্পর্ক রাখার জন্যে বার বার তাকীদ করা হয়েছে।)
(২০:১৩০) কাজেই হে মুহাম্মাদ! এরা যেসব কথা বলে তাতে সবর করো এবং নিজের রবের প্রশংসা ও গুণকীর্তন সহকারে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো সূর্য উদয়ের আগে ও তার অস্ত যাবার আগে, আর রাত্রিকালেও প্রশংসা ও মহিমা ঘোষণা করো এবং দিনের প্রান্তগুলোতেও৷হয়তো এতে তুমি সন্তুষ্ট হয়ে যাবে৷
(বিস্তারিত দেখুন : ন > নামাজ > যে সব শব্দ দ্বারা নামাজকে বুঝানো হয়েছে)
(২০:১২৪) আর যে ব্যক্তি আমার “যিকির (উপদেশমালা) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তার জন্য হবে দুনিয়ায় সংকীর্ণ জীবন এবং কিয়ামতের দিন আমি তাকে উঠাবো অন্ধ করে৷১২৫) -সে বলবে, “হে আমার রব! দুনিয়ায় তো আমি চক্ষুষ্মান ছিলাম কিন্তু এখানে আমাকে অন্ধ করে উঠালে কেন? ১২৬) আল্লাহ বললেন, “হাঁ, এভাবেই তো৷ আমার আয়াত যখন তোমার কাছে এসেছিল, তুমি তাকে ভুলে গিয়েছিলে এবং সেভাবেই আজ তোমাকেও ভুলে যাওয়া হচ্ছে৷১২৭) -এভাবেই আমি সীমা লংঘনকারী এবং নিজের রবের আয়াত অমান্যকারীকে (দুনিয়ায়) প্রতিফল দিয়ে থাকি এবং আখেরাতের আযাব বেশী কঠিন এবং বেশীক্ষণ স্থায়ী৷
(২৬.শুআরা:২২৭) তারা ছাড়া যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরন করে তারা তাদের প্রতি জুলুম করা হলে শুধুমাত্র প্রতিশোধ নেয়৷ আর জুলুমকারীরা শীঘ্রই জানবে তাদের পরিণাম কি
(১৬:৪৩) হে মুহাম্মাদ ! তোমার আগে আমি যখনই রসূল পাঠিয়েছি, মানুষই পাঠিয়েছি, যাদের কাছে আমি নিজের অহী প্রেরণ করতাম৷ যদি তোমরা নিজেরা না জেনে থাকো তাহলে বাণীওয়ালাদেরকে জিজ্ঞেস করো৷
(জিহাদের একটি অর্থ চেষ্টা প্রচেষ্টা, এর পূর্ণাঙ্গ অর্থ কোন উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য সর্বাত্নক প্রচেষ্টা, মৌখিক ও লেখনির মাধ্যমে দাওয়াত দেওয়া থেকে শুরু করে, জান মাল ব্যয় করে প্রয়োজন দেখা দিলে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে এ ইসলামকে প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে - - এ পূর্নাঙ্গ কাজটির নামই জিহাদ, , দেখুন : চ > চেষ্টা )
(২০:২) আমি এ কুরআন তোমার প্রতি এজন্য নাযিল কিরিনি যে, তুমি বিপদে পড়বে৷
আরো দেখুন : ই > ইসলাম বিরোধী ।
বই ১ :: হাদিস ৬২
হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বর্ণনা করেনঃ আমি একদিন রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে (কোন জানোয়ারের পিঠে) বসা ছিলাম। তখন তিনি আমায় বললেনঃ হে বৎস! আমি তোমায় কয়েকটি (গুরুত্বপূর্ণ) কথা শিখিয়ে দিচ্ছি। (খুব মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করো)। আল্লাহর নির্দেশাবলীর হেফাজত ও অনুসরণ করো, আল্লাহও তোমায় হেফাজত করবেন। আল্লাহর হক (সঠিকভাবে) আদায় করো। তাহলে তাঁকেও তোমার সঙ্গে পাবে। কখনও কোন জিনিস চাইতে হলে আল্লাহর কাছেই চাইবে। কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হলেও আল্লাহরই কাছে চাইবে। জেনে রাখো, সমগ্র সৃষ্টিকূল এক সঙ্গে মিলেও যদি তোমার উপকার করতে চায় তবে আল্লাহ তোমার ভাগ্যে যা নির্ধারণ করে রেখেছেন, তারা তার বেশি কোনো উপকার করতে পারবে না। পক্ষান্তরে তারা যদি এক সঙ্গে মিলে তোমার কোন ক্ষতি (বা অপকার) করতে চায়, তবে আল্লাহ তোমার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখেছেন, তার বেশি কোনো অপকার তারা করতে পারবে না। (জেনে রাখো কলম তুলে রাখা হয়েছে এবং কিতাবাদি শুকিয়ে গেছে। অর্থ্যাৎ তকদীর চুড়ান্তভাবে নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে। তাতে আর কোনো পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের অবকাশ নেই।)
ইমাম তিরমিযী এ হাদীসটিকে সহীহ ও হাসান হাদীসরূপে আখ্যায়িত করেছেন। তিরমিযী ছাড়া অন্যান্য হাদীসগ্রন্থে এই বক্তব্যের সাথে আরো সংযুক্ত হয়েছেঃ আল্লাহর অধিকার হেফাজত করো, তাহলে তাঁকে পাবে নিজের সামনে। সুদিনে আল্লাহকে স্মরন রাখো, তাহলে দুর্দিনে তিনি তোমায় স্মরণ করবেন। জেনে রাখো, যে জিনিস তুমি পাওনি, তা (মূলত) তোমার জন্য নয়। আরো জেনে রাখো, আল্লাহর মদদ রয়েছে সবরের সাথে। আর প্রত্যেক দুঃখের সাথে আছে সুখ।
(২৯-আনকাবুত:৬) যে ব্যক্তিই প্রচেষ্টা- সংগ্রাম করবে সে নিজের ভালোর জন্যই করবে৷ ৮ আল্লাহ অবশ্যই বিশ্ববাসীদের প্রতি মুখাপেক্ষিতাহীন৷ ৯
৮ . ''মুজাহাদা" শব্দটির মূল অর্থ হচ্ছে, কোন বিরোধী শক্তির মোকাবিলায় দ্বন্দ্ব, সংগ্রাম, প্রচেষ্টা ও সাধনা করা। আর যখন কোন বিশেষ বিরোধী শক্তি চিহ্নিত করা হয় না বরং সাধারণভাবে "মুজাহাদা " শব্দ ব্যবহার করা হয় তখন এর অর্থ হয় একটি সর্বাত্মক ও সর্বব্যাপী দ্বন্দ্ব- সংঘাত। মু'মিনকে এ দুনিয়ায় যে দ্বন্দ্ব- সংগ্রাম করতে হয় তা হচ্ছে এ ধরনের। তাকে শয়তানের সাথেও লড়াই করতে হয়, যে তাকে সর্বক্ষণ সৎকাজের ক্ষতির ভয় দেখায় এবং অসৎকাজের লাভ ও স্বাদ উপভোগের লোভ দেখিয়ে বেড়ায়। তাকে নিজের নফসের বা কুপ্রবৃত্তির সাথেও লড়তে হয়, যে তাকে সর্বক্ষণ নিজের খারাপ ইচ্ছা- আকাঙ্ক্ষার দাসে পরিণত করে রাখার জন্য জোর দিতে থাকে। নিজের গৃহ থেকে নিয়ে বিশ্ব-সংসারের এমন সকল মানুষের সাথে তাকে লড়তে হয় যাদের আদর্শ , মতবাদ, মানসিক প্রবণতা, চারিত্রিক নীতি, রসম- রেওয়াজ, সাংস্কৃতিক ধারা এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিধান সত্য দ্বীনের সাথে সংঘর্ষশীল। তাকে এমন রাষ্ট্রের সাথেও লড়তে হয় যে আল্লাহর আনুগত্যমুক্ত থেকে নিজের ফরমান জারী করে এবং সততার পরিবর্তে অসততাকে বিকশিত করার জন্য শক্তি নিয়োগ করে। এ প্রচেষ্টা- সংগ্রাম এক- দু'দিনের নয়, সারাজীবনের। দিন- রাতের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে প্রতি মুহূর্তের। কোন একটি ময়দানে নয় বরং জীবনের প্রত্যেকটি ময়দানের ও প্রতিটি দিকে। এ সম্পর্কেই হযরত হাসান বাসরী (র) বলেনঃ
---------------------------------------------
"মানুষ যুদ্ধ করে চলে, যদিও কখনো একবারও তাকে তলোয়ার চালাতে হয় না।"
৯ . অর্থাৎ আল্লাহ এ জন্য তোমাদের কাছে এ দ্বন্দ্ব- সংগ্রামের দাবী করছেন না যে, নিজের সার্বভৌম কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করার ও প্রতিষ্ঠিত রাখার জন্য তোমাদের সাহায্যের প্রয়োজন এবং তোমাদের এ যুদ্ধ ছাড়া তার ইলাহী শাসন চলবে না, বরং এটিই তোমাদের উন্নতি ও অগ্রগতির পথ, তাই তিনি তোমাদের এ দ্বন্দ্ব-সংগ্রামে লিপ্ত হবার নির্দেশ দিচ্ছেন। এ পথেই তোমরা দুষ্কৃতি ও ভ্রষ্টতার ঘূর্ণাবর্ত থেকে বের হয়ে সৎকর্মশীলতা ও সত্যতার পথে চলতে পারবে। এ পথে অগ্রসর হয়ে তোমরা এমন শক্তির অধিকারী হতে পারো যার ফলে দুনিয়ায় তোমরা কল্যাণ ও সুকৃতির ধারক এবং পরকালে আল্লাহর জান্নাতের অধিকারী হবে। এ সংগ্রাম ও যুদ্ধ চালিয়ে তোমরা আল্লাহর কোন উপকার করবে না বরং তোমরা নিজেরাই উপকৃত হবে।
(২৯-আনকাবুত: ২) লোকেরা কি মনে করে রেখেছে, “আমরা ঈমান এনেছি” কেবলমাত্র একথাটুকু বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে, আর পরীক্ষা করা হবে না? ৩) অথচ আমি তাদের পূর্ববর্তীদের সবাইকে পরীক্ষা করে নিয়েছি আল্লাহ অবশ্যই দেখবেন কে সত্যবাদী এবং কে মিথ্যুক৷
(বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : প > পরীক্ষা)
(২৯-আনকাবুত:৪৬) আর উত্তম পদ্ধতিতে ছাড়া আহলে কিতাবের সাথে বিতর্ক করো না, তবে তাদের মধ্যে যারা জালেম ৮২ তাদেরকে বলে, “আমরা ঈমান এনেছি আমাদের প্রতি যা পাঠানো হয়েছে তার প্রতি এবং তোমাদের প্রতি যা পাঠানো হয়েছিল তার প্রতিও, আমাদের ইলাহ ও তোমাদের ইলাহ একজনই এবং আমরা তারই আদেশ পালনকারী” ৷
৮২ . অর্থাৎ যারা জুলুমের নীতি অবলম্বন করে তাদের সাথে তাদের জুলুমের প্রকৃতি বিবেচনা করে ভিন্ন নীতিও অবলম্বন করা যেতে পারে। এর অর্থ হচ্ছে, সবসময় সব অবস্থায় সব ধরনের লোকদের মোকাবিলায় নরম ও সুমিষ্ট স্বভাবের হয়ে থাকলে চলবে না। যেন মানুষ সত্যের আহ্বায়কের ভদ্রতাকে দুর্বলতা ও অসহায়তা মনে না করে বসে। ইসলাম তার অনুসারীদেরকে অবশ্যই ভদ্রতা , বিনয়, শালীনতা যুক্তিবাদিতার শিক্ষা দেয় কিন্তুহীনতা ও দীনতার শিক্ষা দেয় না। তাদেরকে প্রত্যেক জালেমের জুলূমের সহজ শিকারে পরিণত হবার শিক্ষা দেয় না।
(৩৩-আহযাব: ১৯) ……তারা কখনো ঈমান আনেনি, তাই আল্লাহ তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ড ধ্বংস করে দিয়েছেন ৩২ এবং এমনটি করা আল্লাহর জন্য অত্যন্ত সহজ৷৩৩
৩২. অর্থাৎ ইসলাম গ্রহণ করার পর তারা যেসব নামায পড়েছে, রোযা রেখেছে, যাকাত দিয়েছে এবং বাহ্যত যেসব সৎকাজ করেছে সবকিছুকে মহান আল্লাহ নাকচ করে দেবেন এবং সেগুলোর কোন প্রতিদান তাদেরকে দেবেন না। কারণ আল্লাহর দরবারে কাজের বাহ্যিক চেহারার ভিত্তিতে ফায়সালা করা হয় না বরং এ বাহ্য চেহারার গভীরতম প্রদেশে বিশ্বাস ও আন্তরিকতা আছে কিনা তার ভিত্তিতে ফায়সালা করা হয়। যখন এ জিনিস আদতে তাদের মধ্যে নেই তখন এ লোক দেখানো কাজ একেবারেই অর্থহীন। এখানে এ বিষয়টি গভীরভাবে প্রণিধানযোগ্য যে, যেসব লোক আল্লাহ ও রসূলকে স্বীকৃতি দিয়েছিল, নামায পড়ছিল, রোযা রাখছিল, যাকাতও দিচ্ছিল এবং মুসলমানদের সাথে তাদের অন্যান্য সৎকাজে শামিলও হচ্ছিল, তাদের সম্পর্কে পরিষ্কার ফায়সালা শুনিয়ে দেয়া হলো যে, তারা আদতে ঈমানই আনেনি। আর এ ফায়সালা কেবলমাত্র এরি ভিত্তিতে করা হলো যে, কুফর ও ইসলামের দ্বন্দে যখন কঠিন পরীক্ষার সময় এলো তখন তারা দোমনা হবার প্রমাণ দিল, দীনের স্বার্থের ওপর নিজের স্বার্থের প্রার্ধন্য প্রতিষ্ঠিত করলো এবং ইসলামের হেফাজতের জন্য নিজের প্রাণ, ধন-সম্পদ ও শ্রম নিয়োজিত করতে অস্বীকৃতি জানালো। এ থেকে জানা গেলো, ফায়সালার আসল ভিত্তি এসব বাহ্যিক কাজ-কর্ম নয়। বরং মানুষের বিশ্বস্ততা কার সাথে সম্পর্কিত তারি ভিত্তিতে এর ফায়সালা সূচিত হয়। যেখানে আল্লাহ ও তাঁর দীনের প্রতি বিশ্বস্ততা নেই সেখানে ঈমানের স্বীকৃতি এবং ইবাদাত ও অন্যান্য সৎকাজের কোন মূল্য নেই।
৩৩. অর্থাৎ তাদের কার্যাবলীর কোন গুরুত্ব ও মূল্য নেই। ফলে সেগুলো নষ্ট করে দেয়া আল্লাহর কাছে মোটেই কষ্টকর হবে না। তাছাড়া তারা এমন কোন শক্তিই রাখে না যার ফলে তাদের কার্যাবলী ধ্বংস করে দেয়া তার জন্য কঠিন হতে পারে।
(বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ম > মুনাফিক ও জিহাদ। য > যুদ্ধ > আহযাব এর যুদ্ধ। )
(২৫.ফুরকান:৪১) তারা যখন তোমাকে দেখে, তোমাকে বিদ্রুপের পাত্রে পরিণত করে৷ (বলে), “এ লোককে আল্লাহ রসূল করে পাঠিয়েছেন? ৪২) এতো আমাদের পথভ্রষ্ট করে নিজেদের দেবতাদের থেকেই সরিয়ে দিতো যদি না আমরা তাদের প্রতি অঠল বিশ্বাসী হয়ে থাকতাম৷৫৫ বেশ, সে সময় দূরে নয় যখন শাস্তি দেখে তারা নিজেরাই জানবে ভ্রষ্টতায় কে দূরে চলে গিয়েছিল৷
(৫৫. কাফেরদের এ দু'টি কথা পরস্পর বিরোধী। প্রথম কথাটি থেকে জানা যায়, তারা নবীকে (সা) তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করছে এবং তাঁকে বিদ্রুপ করে তাঁর মর্যাদা হ্রাস করতে চাচ্ছে। তারা যেন বলতে চাচ্ছে, নবী (সা) তাঁর মর্যাদার চাইতে অনেক বেশী বড় দাবী করেছেন। দ্বিতীয় কথা জানা যায়, তারা তাঁর যুক্তির শক্তি ও ব্যক্তিত্বের মতা মেনে নিচ্ছে এবং স্বতস্ফূর্তভাবে স্বীকার করে নিচ্ছে যে, তারা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও হঠকারিতার আশ্রয় নিয়ে নিজেদের আরাধ্য দেবতাদের বন্দনায় অবিচল না থাকলে এ ব্যক্তি তাদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরিয়ে নিতেন। ইসলামী আন্দোলন তাদেরকে কি পরিমাণ আতংকিত করে তুলছিল এই পরস্পর বিরোধী কথা থেকে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বেহায়ার মতো যখন তামাশা-বিদ্রুপ করতো তখন হীনমন্যতা বোধের পীড়নে অনিচ্ছাকৃতভাবে তাদের মুখ থেকে এমন সব কথা বের হয়ে যেতো যা থেকে এ শক্তিটি তাদের মনে কি পরিমাণ আতংক সৃষ্টি করেছে তা স্পষ্ট বুঝা যেতো।)
(২৮-ক্বাছাছ : ৩২) তোমার হাত বগলে রাখো উজ্জল হয়ে বের হয়ে আসবে কোন প্রকার কষ্ট ছাড়াই৷ ৪৪ এবং ভীতিমুক্ত হবার জন্য নিজের হাত দু'টি চেপে ধরো৷ ৪৫ এ দু'টি উজ্জল নিদর্শন তোমার রবের পক্ষ থেকে ফেরাউন ও তার সভাসদদের সামনে পেশ করার জন্য, তারা বড়ই নাফরমান৷" ৪৬
৪৪. এ মু'জিযা দু'টি তখন মূসাকে দেখানোর কারণ হচ্ছে, প্রথমত যাতে তার মনে পূর্ণ বিশ্বাস জন্মে যে প্রকৃতপক্ষে যে সত্তা বিশ্ব-জাহানের সমগ্র ব্যবস্থার স্রষ্টা , অধিপতি , শাসক ও পরিচালক তিনিই তাঁর সাথে কথা বলছেন। দ্বিতীয়ত এ মু'জিযাগুলো দেখে তিনি এ মর্মে নিশ্চিন্ত হয়ে যাবেন যে, তাঁকে ফেরাউনের কাছে যে ভয়াবহ দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হচ্ছে সেখানে তিনি একেবারে খালি হাতে তার মুখোমুখি হবেন না বরং প্রচণ্ড শক্তিশালী অস্ত্র নিয়ে যাবেন।
৪৫. অর্থাৎ যখন কোন ভয়াবহ মুহূর্ত আসে, যার ফলে তোমার মনে ভীতির সঞ্চার হয় তখন নিজের বাহু চেপে ধরো। এর ফলে তোমার মন শক্তিশালী হবে এবং ভীতি ও আশংকার কোন রেশই তোমার মধ্যে থাকবে না।
বাহু বা হাত বলতে সম্ভবত ডান হাত বুঝানো হয়েছে। কারন সাধারনভাবে হাত বললে ডান হাতই বুঝানো হয়। চেপে ধরা দু'রকম হতে পারে। এক, হাত পার্শ্বদেশের সাথে লাপিয়ে চাপ দেওয়া। দুই, এক হাতকে অন্য হাতের বগলের মধ্যে রেখে চাপ দেয়া। এখানে প্রথম অবস্থাটি প্রযোজ্য হবার সম্ভাবনা বেশি। কারন এ অবস্থায় অন্য কোন ব্যক্তি অনুভব করতে পারবে না যে, এ ব্যক্তি মনের ভয় দূর করার জন্য কোন বিশেষ কাজ করছে।
হযরত মূসাকে যেহেতু একটি জালেম সরকারের মোকাবিলা করার জন্য কোন সৈন্য সামন্ত ও পার্থিব সাজ-সরঞ্জাম ছাড়াই পাঠানো হচ্ছিলো তাই তাকে এ ব্যবস্থা অবলম্বন করতে বলা হয়। বার বার এমন ভয়ানক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছিলো যাতে একজন মহান দৃঢ়চেতা নবীও আতংকমুক্ত থাকতে পারতেন না। মহান আল্লাহ বলেন, এ ধরনের কোন অবস্থা দেখা দিলে তুমি স্রেফ এ কাজটি করো, ফেরাউন তার সমগ্র রাষ্ট্রশক্তি ব্যবহার করেও তোমার মনের জোর শিথিল করতে পারবে না।
৪৬. এ শব্দগুলোর মধ্যে এ বক্তব্য নিহিত রয়েছে যে, এ নিদর্শনগুলো নিয়ে ফেরাউনের কাছে যাও এবং আল্লাহর রসূল হিসেবে নিজেকে পেশ করে তাকে ও তার রাষ্ট্রীয় প্রশাসকবৃন্দকে আল্লাহ রব্বুল আলামীনের আনুগত্য ও বন্দেগীর দিকে আহবান জানাও। তাই এখানে তাঁর ও নিযুক্তির বিষয়টি সুস্পষ্ট ও বিস্তারিত বলা হয়নি। তবে কুরআনের অন্যান্য স্থানে এ বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন সূরা ত্ব-হা ও সূরা নাযি'আতে বলা হয়েছে -------------------- ফেরাউনের কাছে যাও, সে বিদ্রোহী হয়ে গেছে"
সূরা আশ শূরায় বলা হয়েছে :
"যখন তোমার রব মূসাকে ডেকে বললেন, যাও জালেম জাতির কাছে, ফেরাউনের জাতির কাছে।"
(২৮-ক্বাছাছ : ৩৩) মূসা নিবেদন করলো, "হে আমার প্রভু! আমি যে তাদের একজন লোককে হত্যা করে ফেলেছি, ভয় হচ্ছে, তারা আমাকে মেরে ফেলবে৷ ৪৭ ৩৪)................. আমার ভয় হচ্ছে, তারা আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করবে৷"
৪৭. এর অর্থ এ ছিল না যে, এ ভয়ে আমি সেখানে যেতে চাই না। বরং অর্থ ছিল, আপনার পক্ষ থেকে এমন কোন ব্যবস্থা থাকা দরকার যার ফলে আমার সেখানে পৌঁছার সাথে সাথেই কোন প্রকার কথাবার্তা ও রিসালাতের দায়িত্বপালন করার আগেই তারা যেন আমাকে হত্যার অপরাধে গ্রেফতার করে না নেয়। কারণ এ অবস্থায় তো আমাকে যে উদ্দেশ্যে এ অভিযানে সেখানে পাঠানো হচ্ছে তা ব্যর্থ হয়ে যাবে । পরবর্তী ইবারত থেকে একথ স্বত:স্ফূতভাবে সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, মূসার এ আবেদনের উদ্দেশ্য মোটেই এরূপ ছিল না যে, তিনি ভয়ে নবুওয়াতের দায়িত্ব গ্রহণ এবং ফেরাউনের কাছে যেতে অস্বীকার করতে চাচ্ছিলেন।
(২৭-নমল:৩৫) (সাবা সম্রাজ্যের সূর্যপূজারী কাফের রাণী বললো) আমি তাদের কাছে (সুলাইমান আ: এর কাছে) একটি উপঢৌকন পাঠাচ্ছি তারপর দেখছি তোমার দূত কি জবাব নিয়ে ফেরে৷” ৩৬) যখন সে (রাণীর দূত) সুলাইমানের কাছে পৌঁছুলো, সে বললো, তোমরা কি অর্থ দিয়ে আমাকে সাহায্য করতে চাও? আল্লাহ আমাকে যা কিছু দিয়েছেন তা তোমাদের যা কিছু দিয়েছেন তার চেয়ে অনেক বেশী৷ তোমাদের উপঢৌকন নিয়ে তোমরাই খুশি থাকো৷ ৩৭) (হে দূত!) ফিরে যাও নিজের প্রেরণকারীদের কাছে আমি তাদের বিরুদ্ধে এমন সেনাদল নিয়ে আসবো যাদের তারা মোকাবিলা করতে পারবে না এবং আমি তাদেরকে এমন লাঞ্ছিত করে সেখান থেকে বিতাড়িত করবো যে, তারা ধিকৃত ও অপমানিত হবে৷”
(অহংকার ও দাম্ভীকতার প্রকাশ এ কথার উদ্দেশ্য নয়। আসল বক্তব্য হচ্ছে, তোমাদের অর্থ-সম্পদ আমার লক্ষ্য নয় বরং তোমরা ঈমান আনো এটাই আমার কাম্য। অথবা কমপক্ষে যে জিনিস আমি চাই তা হচ্ছে, তোমরা একটি সৎজীবন ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার অনুসারী হয়ে যাও। এ দু'টি জিনিসের মধ্যে কোন একটিই যদি তোমরা না চাও, তাহলে ধন-সম্পদের উতকোচ গ্রহণ করে তোমাদেরকে এই শির্ক ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারী নোংরা জীবন ব্যবস্থার ব্যাপারে স্বাধীন ছেড়ে দেয়া আমার পে সম্ভব নয়। তোমাদের সম্পদের তুলনায় আমার রব আমাকে যা কিছু দিয়েছেন তা ঢের বেশী। কাজেই তোমাদের সম্পদের প্রতি আমার লোভাতুর হওয়ার প্রশ্নই উঠে না।)
(প্রথম বাক্য এবং পরবর্তী বাক্যটির মধ্যে একটি সূক্ষ্ম ফাঁক রয়ে গেছে। বক্তব্যটি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে এটি আপনা আপনিই অনুধাবন করা যায়। অর্থাৎ পুরো বক্তব্যটি এমনঃ হে দূত এ উপহার এর প্রেরকের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যাও। তাকে হয় আমার প্রথম কথাটি মেনে নিতে হবে অর্থাৎ মুসলিম হয়ে আমার কাছে হাজির হয়ে যেতে হবে আর নয়তো আমি সেনাদল নিয়ে তার ওপর আক্রমণ করবো।)
(২৫.ফুরকান:৩১) হে মুহাম্মাদ! আমি তো এভাবে অপরাধীদেরকে প্রত্যেক নবীর শক্রতে পরিণত করেছি এবং তোমার জন্য তোমার রবই পথ দেখানোর ও সাহায্য দানের জন্য যথেষ্ট ৷
(নুর:৬২) মু’মিন তো আসলে তারাই যারা অন্তর থেকে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে মানে এবং যখন কোন সামষ্টিক কাজে রসূলের সাথে থাকে তখন তার অনুমতি ছাড়া চলে যায় না ৷ যারা তোমার কাছে অনুমতি চায় তারাই আল্লাহ ও তাঁর রসূলে বিশ্বাসী৷ কাজেই তারা যখন তাদের কোন কাজের জন্য তোমার কাছে অনুমতি চায় তখন যাকে চাও তুমি অনুমতি দিয়ে দাও এবং এ ধরনের লোকদের জন্য আল্লাহর কাছে মাগফিরাতের দোয়া করো৷ আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমাশীল ও করুণাময়৷
(হাজ্ব:৭৮) আল্লাহর পথে জিহাদ করো যেমন জিহাদ করলে তার হক আদায় হয়৷
(জিহাদ মানে নিছক রক্তপাত বা যুদ্ধ নয় বরং এ শব্দটি প্রচেষ্টা, সংগ্রাম, দ্বন্দ্ব এবং চূড়ান্ত চেষ্টা চালানো অর্থেও ব্যবহৃত হয়। আবার জিহাদ ও মুজাহিদের মধ্যে এ অর্থও রয়েছে যে, বাধা দেবার মতো কিছু শক্তি আছে যেগুলোর মোকাবিলায় এই প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম কাম্য। এই সংগে "ফিল্লাহ" (আল্লাহর পথে) শব্দ এ বিষয়টি নির্ধারিত করে দেয় যে, বাধাদানকারী শক্তিগুলো হচ্ছে এমনসব শক্তি যেগুলো আল্লাহর বন্দেগী, তার সন্তুষ্টি লাভ ও তাঁর পথে চলার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং প্রচেষ্টা ও সংগ্রামের উদ্দেশ্য হয় তাদের বাধা ও প্রতিবন্ধকতাকে প্রতিহত করে মানুষ নিজেও আল্লাহর যথাযথ বন্দেগী করবে এবং দুনিয়াতেও তাঁর কালেমাকে বুলন্দ এবং কুফর ও নাস্তিক্যবাদের কালেমাকে নিম্নগামী করার জন্য প্রাণপাত করবে। মানুষের নিজের "নফসে আম্মারা" তথা বৈষয়িক ভোগলিপ্সু ইন্দ্রিয়ের বিরুদ্ধে এ মুজাহাদা ও প্রচেষ্টা প্রথম অভিযান পরিচালিত হয়। এ নফসে আম্মারাই সব সময় আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে এবং মানুষকে ঈমান ও আনুগত্যের পথ থেকে সরিয়ে দেবার প্রচেষ্টা চালায়। তাকে নিয়ন্ত্রিত ও বিজিত না করা পর্যন্ত বাইরে কোন প্রচেষ্টা ও সংগ্রামের সম্ভাবনা নেই। তাই এক যুদ্ধ ফেরত গাজীদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
"তোমরা ছোট জিহাদ থেকে বড় জিহাদের দিকে এসে গেছো।"
আরো বলেন,
"মানুষের নিজের প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম।"
এরপর সারা দুনিয়াই হচ্ছে জিহাদের ব্যাপকতর ক্ষেত্র। সেখানে কর্মরত সকল প্রকার বিদ্রোহাত্মক, বিদ্রোহদ্দীপক ও বিদ্রোহোৎপাদক শক্তির বিরুদ্ধে মন, মস্তিষ্ক, শরীর ও সম্পদের সমগ্র শক্তি সহকারে প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম চালানোই হচ্ছে জিহাদের হক আদায় করা, যার দাবী এখানে করা হচ্ছে।)
(হাজ্ব:৭৮) আল্লাহর পথে জিহাদ করো যেমন জিহাদ করলে তার হক আদায় হয়৷তিনি নিজের কাজের জন্য তোমাদেরকে বাছাই করে নিয়েছেন
(২০:৬৪) আজ নিজেদের সমস্ত কলাকৌশল একত্র করে নাও এবং একজোট হয়ে ময়দানে এসো৷ ব্যস, জেনে রাখো, আজকে যে প্রাধান্য লাভ করবে সেই জিতে গেছে”৷
(২০:৪৫) (মূসা ও হারুন ) উভয়েই বললো, "হে আমাদের রব! আমাদের ভয় হয়, সে (ফেরাউন) আমাদের সাথে বাড়াবাড়ি করবে অথবা আমাদের ওপর চড়াও হবে”৷৪৬) আল্লাহ বললেন, “ভয় করো না, আমি তোমাদের সাথে আছি, সবকিছু শুনছি ও দেখছি৷
(২০:৪৫) (মূসা ও হারুন ) উভয়েই বললো, "হে আমাদের রব! আমাদের ভয় হয়, সে (ফেরাউন) আমাদের সাথে বাড়াবাড়ি করবে অথবা আমাদের ওপর চড়াও হবে”৷৪৬) আল্লাহ বললেন, “ভয় করো না, আমি তোমাদের সাথে আছি, সবকিছু শুনছি ও দেখছি৷
(২০:২৪) এখন তুমি যাও ফেরাউনের কাছে, সে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে”৷...... (২০:৩৩)(এর জবাবে হযরত মুসা আ: বক্ষ প্রশস্ত করে দেওয়ার জন্য ও হারুন আ: কে নবী বানিয়ে তার সহযোগী করে দেওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করলেন এবং পরিশেষে বললেন – হে আল্লাহ, আমার এ দোয়াগুলো কবুল করো-) যাতে আমরা খুব বেশী করে তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করতে পারি, ৩৪) এবং খুব বেশী করে তোমার চর্চা করি৷
(২০:৪২) যাও, তুমি ও তোমার ভাই আমার নিদর্শনগুলোসহ এবং দেখো আমার স্মরণে ভুল করো না৷৪৩) যাও, তোমরা দু’জন ফেরাউনের কাছে, সে বিদ্রোহী হয়ে গেছে৷
১। ওহুদ যুদ্ধের বর্ণনা সমূহ: ৩:১২১-১২৮, ৩:১৩৮-১৫৭,
১। জানমালের ক্ষতির পরীক্ষা : ২:১৫৫,
২। জিহাদকারীদের পরীক্ষা : ২:২৪৯, ২৫০
৩। শহীদ হিসাবে জীবন দেওয়ার পরীক্ষা : ৩:১৪০, ১৫৪,
একদলকে অপর দল দ্বারা পরীক্ষা : ৫:৯৪, ৬:৫৩, ৬:১৬৫,
( আরো দেখুন : প > পরীক্ষা)
(২৯-আনকাবুত:১১) আর আল্লাহ তো অবশ্যই দেখবেন কারা ঈমান এনেছে এবং কারা মুনাফিক৷ ১৬
১৬ . অর্থাৎ মু'মিনদের ঈমান ও মুনাফিকদের মুনাফিকির অবস্থা যাতে উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং যার মধ্যে যা কিছু লূকিয়ে আছে সব সামনে এসে যায় সে জন্য আল্লাহ বারবার পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। একথাটিই সূরা আলে ইমরানে বলা হয়েছেঃ
------------------------------------
"আল্লাহ মু'মিনদেরকে কখনো এমন অবস্থায় থাকতে দেবেন না , যে অবস্থায় এখন তোমরা আছো (অর্থাৎ সাচ্চা ঈমানদার ও মুনাফিক সবাই মিশ্রিত হয়ে আছো।) তিনি পবিত্র লোকদেরকে অপবিত্র লোকদের থেকে সুস্পষ্ট ভাবে আলাদা করে দেবেন।"(আয়াতঃ১৭৯)
কোনো মুশরিক যদি তোমাদের কাছ নিরাপত্তা চায়, তাহলে তাকে তা দেবে, যেন সে আল্লাহর বাণী শোনার সুযোগ পায়। তারপর তাকে একটা নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাবে। আসলে তারা এমন একটা জাতি, যাদের জ্ঞান নেই। [আত-তাওবাহ ৯:৬]
…যদি অমুসলিম আক্রমণকারিরা নিজেদেরকে উঠিয়ে নেয়, আর যুদ্ধ না করে, তোমাদের সাথে শান্তি করতে চায়, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে কোনোই সুযোগ দেননি তাদের বিরুদ্ধে কিছু করার। [আন-নিসা ৪:৯০]
অমুসলিমরা যা বলে, তা ধৈর্য ধরে শোনো। … [ত্বাহা ২০:১৩০]
ধর্মের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। সত্য পথ মিথ্যা থেকে স্পষ্ট হয়ে গেছে।… [আল-বাক্বারাহ ২:২৫৬]
৩:৫২,
৪:৭৬
অথচ তোমরা জিহাদে অংশগ্রহণ করে জীবন বাজী রাখোনি: আল্লাহ পরীক্ষ গ্রহণ করেননি : ৩:১৪২,
৩:১৪৬,
৩:১৫১
৩:১৪৬, ১৪০, ৫:২,
(হাজ্ব:৭২) আর যখন তাদেরকে আমার পরিষ্কার আয়াত শুনিয়ে দেয়া হয় তখন তোমরা দেখো সত্য অস্বীকারকারীদের চেহারা বিকৃত হয়ে যাচ্ছে এবং মনে হতে থাকে এ-ই বুঝি যারা তাদেরকে আমার আয়াত শুনায় তাদের ওপর তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে৷ তাদেরকে বলো, “আমি কি তোমাদের বলবো, এর চেয়ে খারাপ জিনিস কি? আগুন৷ আল্লাহ এরি প্রতিশ্রুতি তাদের জন্য দিয়ে রেখেছেন, যারা সত্য গ্রহণ করতে অস্বীকার করে এবং তা বড়ই খারাপ আবাস৷
আরো দেখুন : ধ > ধৈর্য । ই > ইস্তেক্বামাত । দ > দৃঢ়তা।
(৩০-রূম: ৬০) কাজেই ( হে নবী!) সবর করো, অবশ্যই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং যারা বিশ্বাস করে না তারা যেন কখনোই তোমাকে গুরুত্বহীন মনে না করে৷ ৮৫
৮৫ . অর্থাৎ শত্রুরা যেন তোমাদের এতই দুর্বল না পায় যে, তাদের হৈ চৈ ও শোরগোলে তোমরা দমিত হবে অথবা তাদের মিথ্যাচার ও দোষারোপ করার অভিযান দেখে তোমরা ভীত হয়ে যাও কিংবা হাসি-তামাসা ও ঠাট্টা-বিদ্রুপবাণে বিদ্ধ হয়ে তোমরা হিম্মত হারিয়ে ফেলো অথবা তাদের হুমকি-ধমকি ও শক্তির প্রকাশে এবং জুলুম নির্যাতনে তোমরা ভীত হয়ে যাও কিংবা তাদের ফেলা লালসার টোপে তোমরা আটকা পড়ে যাও অথবা জাতীয় স্বার্থের নামে তারা তোমাদের কাছে যে আবেদন জানাচ্ছে তাঁর ভিত্তিতে তোমরা তাদের সাথে সমঝোতা করে নিতে উদ্যত হও। এর পরিবর্তে তারা তোমাকে নিজেদের উদ্দেশ্য সচেতনতায় এত বেশি সতর্ক এবং নিজেদের বিশ্বাস ও ঈমানে এত বেশি পাকাপোক্ত এবং এ সংকল্পে এত বেশি দৃঢ়চেতা এবং নিজেদের চরিত্রে এতবেশি মজবুত পাবে যে, কোন ভয়ে তোমাদের ভীত করা যাবে না, কোন মূল্যে তোমাদের কেনা যাবে না, কোন প্রতারণার জালে তোমাদের আবদ্ধ করা যাবে না, কোন ক্ষতি, কষ্ট বা বিপদে ফেলে তোমাদেরকে পথ থেকে সরানো যাবে না এবং দীনের ব্যাপারে কোন প্রকার আপোষ বা লেনদেনের কারবারও তোমাদের সাথে করা যেতে পারে না। " অবিশ্বাসীরা যেন তোমাকে গুরুত্বহীন মনে না করে"- আল্লাহর এ ছোট্ট একটি বাণীর আলংকারিক বাক্য-বিন্যাসের মধ্যেই এ সমস্ত বিষয়বস্তুলুকিয়ে রাখা হয়েছে। আল্লাহ তাঁর শেষ নবীকে যেমন শক্তিশালী ও গুরুত্ববহ দেখতে চাচ্ছিলেন তিনি ঠিক তেমনটি হতে পেরেছিলেন কিনা এখন ইতিহাসই তা প্রমাণ করবে। তাঁর সাথে যে ব্যক্তিই যে ময়দানে শক্তি পরীক্ষা করেছে সেই ময়দানেই সে হেরে গেছে। শেষ পর্যন্ত এ মহান ব্যক্তিত্ব এমন বিপ্লব সৃষ্টি করেন যার পথরোধ করার জন্য আরবের কাফের ও মুশরিক সমাজ তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ ও সমস্ত কলা-কৌশল প্রয়োগ করেও পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে গেছে।
(৩১-লোকমান: ১৭) হে পুত্র! নামায কায়েম করো, সৎকাজের হুকুম দাও, খারাপ কাজে নিষেধ করো এবং যা কিছু বিপদই আসুক সে জন্য সবর করো৷ ২৯ একথাগুলোর জন্য বড়ই তাকিদ করা হয়েছে৷ ৩০
২৯ . এর মধ্যে এদিকে একটি সূক্ষ্ণ ইঙ্গিত রয়েছে যে, সৎকাজের হুকুম দেয়া এবং অসৎকাজে নিষেধ করার দায়িত্ব যে ব্যক্তিই পালন করবে তাকে অনিবার্যভাবে বিপদ আপদের মুখোমুখি হতে হবে। এ ধরনের লোকের পেছনে দুনিয়া কোমর বেঁধে লেগে যাবে এবং সব ধরনের কষ্টের সম্মুখীন তাকে হতেই হবে।
৩০ . এর দ্বিতীয় অর্থ হতে পারে, এটি বড়ই হিম্মতের কাজ। মানবতার সংশোধন এবং তার সংকট উত্তরণে সাহায্য করার কাজ কম হিম্মতের অধিকারী লোকদের পক্ষে সম্ভব নয়। এসব কাজ করার জন্য শক্ত বুকের পাটা দরকার।
(হাজ্ব:১১) আর মানুষের মধ্যে এমনও কেউ আছে, যে এক কিনারায় দাঁড়িয়ে আল্লাহর বন্দেগী করে,১৫ যদি তাতে তার উপকার হয় তাহলে নিশ্চিন্ত হয়ে যায় আর যদি কোনো বিপদ আসে তাহলে পিছনের দিকে ফিরে যায় ১৬ তার দুনিয়াও গেলো এবং আখেরাতও৷ এ হচ্ছে সুস্পষ্ট ক্ষতি৷১৭ ১২) তারপর সে আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদেরকে ডাকে যারা তার না ক্ষতি করতে পারে, না উপকার, এ হচ্ছে ভ্রষ্টতার চূড়ান্ত৷১৩) সে তাদেরকে ডাকে যাদের ক্ষতি তাদের উপকারের চাইতে নিকটতর১৮ নিকৃষ্ট তার অভিভাবক এবং নিকৃষ্ট তার সহযোগী৷১৯ ১৪) (পক্ষান্তরে) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে ২০ আল্লাহ তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত হবে; আল্লাহ যা চান তাই করেন৷২১
(১৫. অর্থাৎ দীনী বৃত্তের মধ্যখানে নয় বরং তার এক প্রান্তে বা কিনারায় অথবা অন্য কথায় কুফর ও ইসলামের সীমান্তে দাঁড়িয়ে বন্দেগী করে। যেমন কোন দো-মনা ব্যক্তি কোন সেনাবাহিনীর এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকে। যদি দেখে সেনাদল বিজয়লাভ করছে তাহলে তাদের সাথে মিলে যায় আর যদি দেখে পরাজিত হচ্ছে তাহলে আস্তে আস্তে কেটে পড়ে।
১৬. এখানে এমন সব লোকের কথা বলা হয়েছে যাদের মানসিক গঠন অপরিপক্ক, আকীদা-বিশ্বাস নড়বড়ে এবং যারা প্রবৃত্তির পূজা করে। তারা ইসলাম গ্রহণ করে লাভের শর্তে। তাদের ঈমান এ শর্তের সাথে জড়িত হয় যে, তাদের আকাংখা পূর্ণ হতে হবে, সব ধরণের নিশ্চিন্ততা অর্জিত হতে হবে, আল্লাহর দীন তাদের কাছে কোন স্বার্থ ত্যাগ দাবী করতে পারবে না এবং দুনিয়াতে তাদের কোন ইচ্ছা ও আশা অপূর্ণ থাকতে পারবে না। এসব হলে তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট এবং তার দীন তাদের কাছে খুবই ভালো। কিন্তু যখনই কোন আপদ বলাই নেমে আসে অথবা আল্লাহর পথে কোন বিপদ, কষ্ট ও ক্ষতির শিকার হতে হয় কিংবা কোন আকাংখা পূর্ণ হয় না তখনই আর আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা, রসূলের রিসালাত ও দীনের সত্যতা কোনটাই ওপরই তারা নিশ্চিন্ত থাকে না। এরপর তারা এমন প্রতিটি বেদীমূলে মাথা নোয়াতে উদ্যেগী হয় যেখানে তাদের লাভের আশা ও লোকসান থেকে বেঁচে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
১৭. এখানে একটি অনেক বড় সত্যকে কয়েকটি কথায় প্রকাশ করে দেয়া হয়েছে। আসলে দো-মনা মুসলমানের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হয়। কাফের যখন নিজের রবের মুখাপেক্ষী না হয়ে এবং পরকাল থেকে বেপরোয়া ও আল্লাহর আইনের অনুগত্য মুক্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে বস্তুগত স্বার্থের পেচনে দৌঁড়াতে থাকে তখন সে নিজের পরকাল হারালেও দুনিয়ার স্বার্থ কিছু না কিছু হাসিল করেই নেয়। আর মু'মিন যখন পূর্ণ ধৈর্য, অবিচলতা, দৃঢ় সংকল্প ও স্থৈর্য সহকারে আল্লাহর দীনের আনুগত্য করে তখন যদিও পার্থিব সাফল্য শেষ পর্যন্ত তার পদ-চুম্বন করেই থাকে, তবুও যদি দুনিয়া একেবারেই তার নাগালের বাইরে চলে যেতেই থাকে, আখেরাতে তার সাফল্য সুনিশ্চিত হয়। কিন্তু এ দো-মনা মুসলমান নিজের দুনিয়ার স্বার্থ লাভ করতে পারে না এবং আখেরাতেও তার সাফল্যের কোন সম্ভবনা থাকে না। তার মন ও মস্তিষ্কের কোন এক প্রকোষ্ঠ আল্লাহ ও আখেরাতের অস্তিত্বের যে ধারণা রয়েছে এবং ইসলামের সাথে সম্পর্ক তার মধ্যে নৈতিক সীমারেখা কিছু না কিছু মেনে চলার যে প্রবণতা সৃষ্টি করেছে, দুনিয়ার দিকে দৌড়াতে থাকলে এগুলো তার হাত টেনে ধরে। ফলে নিছক দুনিয়াবী ও বৈষয়িক স্বার্থ অন্বেষার জন্য যে ধরনের দৃঢ়তা ও একনিষ্ঠতার প্রয়োজন তা একজন কাফেরের মতো তার মধ্যে সৃষ্টি হয় না। আখেরাতের কথা চিন্তা করলে দুনিয়ার লাভ ও স্বার্থের লোভ, ক্ষতির ভয় এবং প্রবৃত্তির কামনা বাসনাকে বিধিনিষেধের শৃংখলে বেঁধে রাখার ব্যাপারে মানসিক অস্বীকৃতি সেদিকে যেতে দেয় না বরং বৈষয়িক স্বার্থ পূজা তার বিশ্বাস ও কর্মকে এমনভাবে বিকৃত করে দেয় যে, আখেরাতে তার শাস্তি থেকে নিষ্কৃতিলাভের সম্ভাবনা থাকে না। এভাবে সে দুনিয়া ও আখেরাত দুটোই হারায়।
১৮. প্রথম আয়াতে আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য মাবুদদের উপকার ও ক্ষতি করার ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করা হয়েছে। কারণ, মূলত ও যথার্থই তাদের উপকার ও ক্ষতি করার কোন ক্ষমতা নেই। দ্বিতীয় আয়াতে তাদের ক্ষতিকে উপকারের চেয়ে নিকটতর বলা হয়েছে। কারণ, তাদের কাছে দোয়া চেয়ে এবং অভাব ও প্রয়োজন পূরণের জন্য তাদের সামনে হাত পাতার মাধ্যমে সে নিজের ঈমান সংগে সংগেই ও নিশ্চিতভাবেই হারিয়ে বসে। তবে যে লাভের আশায় সে তাদেরকে ডেকেছিল তা অর্জিত হবার ব্যাপারে বলা যায়, প্রকৃত সত্যের কথা বাদ দিলেও প্রকাশ্য অবস্থার দৃষ্টিতে সে নিজেও একথা স্বীকার করবে যে, তা অর্জিত হওয়াটা নিশ্চিত নয় এবং বাস্তবে তা সংঘটিত হবার নিকটতর সম্ভাবনাও নেই । হতে পারে, আল্লাহ তাতে আরো বেশী পরিক্ষার সম্মুখীন করার জন্য কোন আস্তানায় তার মনোবাঞ্চনা পূর্ণ করেছেন। আবার এও হতে পারে যে, সে আস্তানায় সে নিজের ঈমানও বিকিয়ে দিয়ে এসেছে এবং মনোবাঞ্চনা পূর্ণ হয়নি।
১৯. অর্থাৎ মানুষ বা শয়তান যে-ই হোক না কেন, যে তাকে এ পথে এনেছে সে নিকৃষ্টতম কর্মসম্পাদক ও অভিভাবক এবং নিকৃষ্টতম বন্ধু ও সাথী।
২০. অর্থাৎ যাদের অবস্থা উল্লেখিত মতলবী, ধান্দাবাজ, দো-মনা ও দৃঢ় বিশ্বাসহীন মুসলমানের মতো নয় বরং যারা ঠান্ডা মাথায় খুব ভালোভাবে ভেবে চিন্তে আল্লাহ, রসূল ও আখেরাতকে মেনে নেবার ফায়সালা করে তারপর ভালো মন্দ যে কোন অবস্থার সম্মুখীন হতে হোক এবং বিপদের পাহাড় মাথায় ভেঙে পড়ুক বা বৃষ্টিধারার মতো পুরস্কার ঝড়ে পড়ুক সবাবস্থায় দৃঢ়পদে সত্যের পথে এগিয়ে চলে।
২১. অর্থাৎ আল্লাহ ক্ষমতা অসীম। দুনিয়ায় বা আখেরাতে অথবা উভয় স্থানে তিনি যাকে যা চান দিয়ে দেন এবং যার থেকে যা চান চিনিয়ে নেন। তিনি দিতে চাইলে বাধা দেবার কেউ নেই। না দিতে চাইলে আদায় করার ও কেউ নেই।)
২:১৮০, ১৯১, ১৯২, ১৯৩, ২১৬, ২১৭, ২১৮, ২৪৪, ২৪৬-২৫২, ২৫৩
৩:১৩, ১২১, ১৪১, ১৪২-১৪৭, ১৫২, ১৬৬,
৪:৭১-৮০, ৮৪, ৮৯-৯১, ৯৫, ১০৪, ১৪১, ৫:৩৩,
(হাজ্ব:৩৯) অনুমতি দেয়া হলো তাদেরকে (অর্থাৎ মুসলমানদেরকে) যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হচ্ছে, কেননা তারা (অর্থাৎ মুসলমানেরা) মজলুম এবং আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে সাহায্য করার ক্ষমতা রাখেন৷৪০) তাদেরকে নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে অন্যায়ভাবে বের করে দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র এ অপরাধে যে, তারা বলেছিল, “আল্লাহ আমাদের রব৷” ........ আল্লাহ বড়ই শক্তিশালী ও পরাক্রান্ত৷১
(উল্যেখ্য যে, আল্লাহর পথে যুদ্ধ করা সম্পর্কে অবতীর্ণ এটিই সর্ব প্রথম আয়াত।আরো দেখুন হ > হিজরত)
(১. অর্থাৎ, এই মুসলমানেরা মাত্র মুষ্টিমেয় কয়েকজন লোক, এ সত্ত্বেও আল্লাহ এদেরকে আরবের সমগ্র মুশরিক সমাজের ওপর বিজয়ী করতে পারেন। একথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, যখন এ অস্ত্রধারণ করার অনুমতি দেয়া হচ্ছিল তখন মুসলমানদের সমস্ত শক্তি কেবলমাত্র মদীনার একটি মামূলী ছোট শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। সে সময় মুহাজির ও আনসারদের মিলিত শক্তি সর্বসাকুল্যে এক হাজারও ছিল না। এ অবস্থায় কুরাইশদেরকে চ্যালেঞ্জ দেয়া হচ্ছিল। আর কুরাইশরা একা ছিল না বরং আরবের অন্যান্য মুশরিক গোত্রগুলোও তাদের পেছনে ছিল। পরে ইহুদীরাও তাদের সাথে যোগ দেয়। এসময় "আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে" একথা বলা অত্যন্ত সময়োপযোগী ছিল। এর ফলে এমনসব মুসলমানদের মনেও সাহসের সঞ্চার হয়েছে যাদেরকে সমগ্র আরব শক্তির বিরুদ্ধে তলোয়ার হাতে মোকাবিলার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এবং কাফেরদেরকেও সতর্ক করে দেয়া হয়েছে এই মর্মে যে, তোমাদের মোকবিলা আসলে আল্লাহর সাথে, ঐ মুষ্টিমেয় মুসলমানদের সাথে নয়। কাজেই যদি আল্লাহর মোকাবিলা করার সাহস থাকে তাহলে সামনে এসো।)
(আরো বিস্তারিত দেখুন : হ > হিজরত > হিজরতকারী মুসলমানগণ হিজরত করার সময় কি ধরণের জুলুমের শিকার হয়েছিল:
মুসলমানদের ওপর যে ধরনের অত্যাচার করে বের করে দেয়া হয় তা অনুমান করার জন্য নিম্নোক্ত কয়েকটি ঘটনা সামনে রাখতে হবেঃ
হযরত সোহাইব রুমী (রা) যখন হিজরত করতে থাকেন তখন কুরাইশ বংশীয় কাফেররা তাঁকে বলে, তুমি এখানে এসেছিলে খালি হাতে। এখন অনেক ধনী হয়ে গেছো।
যেতে চাইলে তুমি খালি হাতে যেতে পারো। নিজের ধন-সম্পদ নিয়ে যেতে পারবে না। অথচ তিনি নিজে পরিশ্রম করেই এ ধন-সম্পদ উপার্জন করেছিলেন। কারো দান তিনি খেতেন না। ফলে বেচারা হাত-পা ঝেড়ে উঠে দাঁড়ান এবং সবকিছু ঐ জালেমদের হাওয়ালা করে দিয়ে এমন অবস্থায় মদীনায় পৌঁছেন যে, নিজের পরণের কাপড়গুলো ছাড়া তাঁর কাছে আর কিছুই ছিল না।
হযরত উম্মে সালামাহ (রা) ও তাঁর স্বামী আবু সালামাহ (রা) নিজেদের দুধের বাচ্চাটিকে নিয়ে হিজরত করার জন্য বের হয়ে পড়েন। বনী মুগীরাহ (উম্মে সালামাহর পরিবারের লোকেরা) তাদের পথ রোধ করে দাঁড়ায়। তারা আবু সালামাহকে বলে, তোমার যেখানে ইচ্ছা যেতে পারো কিন্তু আমাদের মেয়েকে নিয়ে যেতে পারো না। বাধ্য হয়ে তিনি স্ত্রীকে রেখে দিয়ে চলে যান। এরপর বনী আবদুল আসাদ (আবু সালামাহর বংশের লোকেরা) এগিয়ে আসে এবং তারা বলে, শিশুটি আমাদের গোত্রের। তাকে আমাদের কাছে দিয়ে দাও। এভাবে মা ও বাপ উভয়ের কাছ থেকে শিশু সন্তানকেও ছিনিয়ে নেয়া হয়। প্রায় এক বছর পর্যন্ত হযরত উম্মে সলামাহ (রা) স্বামী ও সন্তাদের শোকে ছটফট করতে থাকেন এবং শেষ পর্যন্ত বড়ই কঠিন বিপদের মধ্যদিয়ে নিজের শিশু সন্তানটি পুনরুদ্ধার করে মক্কা থেকে এমন অবস্থায় বের হয়ে পড়েন যে, একজন নিসংগ স্ত্রীলোক কোলে একটি ছোট বাচ্চা নিয়ে উটের পিঠে বসে আছেন। এমন পথ দিয়ে তিনি চলছেন যেখান দিয়ে সশস্ত্র কাফেলা যেতে ভয় পেতো।
আইয়াশ ইবনে রাবীআহ আবু জেহেলের বৈপিত্রেয় ভাই ছিলেন। হযরত উমরের (রা) সাথে হিজরত করে মদীনায় পৌঁছে যান। পিছে পিছে আবু জেহেল নিজের এক ভাইকে সাথে নিয়ে সেখানে পৌঁছে যায়। সে মায়ের নামে মিথ্যা বানিয়ে বলে, আম্মাজান কসম খেয়েছেন আইয়াশের চেহারা না দেখা পর্যন্ত রোদ থেকে ছায়ায় যাবেন না এবং মাথায় চিরুনীও লাগাবেন না। কাজেই তুমি গিয়ে একবার শুধু তাঁকে চেহারা দেখিয়ে দাও তারপর চলে এসো। তিনি মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও মাতৃভক্তির আতিশয্যে তাদের সংগ নেন। পথে দুই ভাই মিলে তাকে বন্দী করে এবং তাকে নিয়ে মক্কায় এমন অবস্থায় প্রবেশ করে যখন তার আষ্টেপৃষ্ঠে দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল এবং দুই ভাই চিৎকার করে যাচ্ছিল, " হে মক্কাবাসীরা! নিজেদের নালায়েক ছেলেদেরকে এমনিভাবে শায়েস্থা করো যেমন আমরা করেছি।" দীর্ঘদিন পর্যন্ত তিনি বন্দী থাকেন এবং শেষ পর্যন্ত একজন দুঃসাহসী মুসলমান তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসতে সক্ষম হন।
মক্কা থেকে মদীনায় যারাই হিজরত করেন তাদের প্রায় সবাইকেই এ ধরনের জুলুম-নির্যাতনের শিকার হতে হয়। ঘর-বাড়ি ছেড়ে চলে আসার সময়ও জালেমরা তাদেরকে নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে বের হয়ে আসতে দেয়নি।)
(হাজ্ব:৪০) .........যদি আল্লাহ লোকদেরকে একের মাধ্যমে অন্যকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা না করতেন, তাহলে যেখানে আল্লাহর নাম বেশী করে উচ্চারণ করা হয় সেসব আশ্রম, গীর্জা, ইবাদাতখানা ৮২ ও মসজিদ ধ্বংস করে দেয়া হতো৷৮৩
(৮২. মূলে (আরবী) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। (আরবী) ও (আরবী) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। (আরবী) এমন জায়গাকে বলা হয় যেখানে খৃষ্টান রাহেব যোগী, সন্ন্যাসী, সংসার বিরাগী সাধুরা থাকেন। (আরবী) শব্দটি আরবী ভাষায় খৃষ্টানদের ইবাদাতগাহের জন্য ব্যবহার করা হয়। (আরবী) শব্দের অর্থ হচ্ছে ইহুদীদের নামায পড়ার জায়গা। ইহুদীরা নিজেদের ভাষায় একে বলে (আরবী) "সালওয়াতা"। এটি আরামীয় ভাষার শব্দ। বিচিত্র নয় যে, ইংরেজী ভাষার (Salute ও Salutation) শব্দ এর থেকে বের হয়ে প্রথম ল্যাটিন ও পরে ইংরেজী ভাষায় পৌঁছে গেছে।
৮৩. অর্থাৎ আল্লাহ কোন একটি গোত্র বা জাতিকে স্থায়ী কর্তৃত্ব দান কেরননি, এটি তাঁর বিরাট অনুগ্রহ। বরং বিভিন্ন সময় দুনিয়ায় একটি দলকে দিয়ে তিনি অন্য একটি দলকে প্রতিহত করতে থেকেছেন। নয়তো কোন এটি নির্দিষ্ট দল যদি কোথাও স্থায়ী কর্তৃত্ব লাভ করতো তাহলে শুধু দূর্গ, প্রাসাদ এবং রাজনীতি, শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানই ধ্বংস করে দেয়া হতো না বরং ইবাদাতগাহগুলোও বিধ্বস্ত হওয়ার হাত থেকে রেহাই পেতো না। সূরা বাকারায় এ বিষয়বস্তুকে এভাবে বলা হয়েছেঃ
"যদি আল্লাহ লোকদেরকে একজনের সাহায্যে অন্যজনকে প্রতিহত না করতে থাকতেন তাহলে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়ে যেতো। কিন্তু আল্লাহ দুনিয়াবাসীদের প্রতি বড়ই করুণাময়।" (২৫১ আয়াত)
(হাজ্ব:৪০) ....আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন যারা তাঁকে সাহায্য করবে৷ আল্লাহ বড়ই শক্তিশালী ও পরাক্রান্ত৷
(এ বক্তব্যটি কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় উপস্থাপিত হয়েছে। বলা হয়েছে, যারা আল্লাহর বান্দাদেরকে তাওহীদের দিকে আহ্বান করে এবং সত্য দীন কায়েম ও মন্দের জায়গায় ভালোকে বিকশিত করার জন্য প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম চালায় তারা আসলে আল্লাহর সাহায্যকারী। কারণ এটি আল্লাহর কাজ। এ কাজটি করার জন্য তারা আল্লাহর সাথে সহযোগিতা করে। আরো বেশী ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন সূরা আলে ইমরান ৫০ টীকা।)
২:১৯৪, ১৯১, ২:২৪৯, ৩:১২১, ১৪১, ১৪৪,
৩:৫২, ১৫৩, ১৫৭, ১৫৯,
৪:৭১, ৭৭, (হাতগুটিয়ে রাখো) , ৪:৯৫,
৫:৮. ৬৪,
(২৭-নমল:৩৭) (হে দূত!) ফিরে যাও নিজের প্রেরণকারীদের কাছে আমি তাদের বিরুদ্ধে এমন সেনাদল নিয়ে আসবো ৪২ যাদের তারা মোকাবিলা করতে পারবে না এবং আমি তাদেরকে এমন লাঞ্ছিত করে সেখান থেকে বিতাড়িত করবো যে, তারা ধিকৃত ও অপমানিত হবে৷”
(অর্থাৎ পুরো বক্তব্যটি এমনঃ হে দূত এ উপহার এর প্রেরকের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যাও। তাকে হয় আমার প্রথম কথাটি মেনে নিতে হবে অর্থাৎ মুসলিম হয়ে আমার কাছে হাজির হয়ে যেতে হবে আর নয়তো আমি সেনাদল নিয়ে তার ওপর আক্রমণ করবো।)
যারা নিজের জীবনকে আল্লাহর রাস্তায় বিলীন কর দেয় : ২:২০৭, ১৪১,
৩:১৪০, ১৫৭ (আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ করা), ৩:১৬৯ (তোমরা তাদেরকে মৃত বলোনা, তারা জীবিত)
৪:১৭৪,
(২১:৩৪) আর (হে মুহাম্মাদ!) অনন্ত জীবন তো আমি তোমার পূর্বেও কোনো মানুষকে দেইনি ; যদি তুমি মরে যাও তাহলে এরা কি চিরকাল বেঁচে থাকবে ? ৩৫) প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে৷ আর আমি ভালো ও মন্দ অবস্থার মধ্যে ফেলে তোমাদের সবাইকে পরীক্ষা করছি, শেষ পর্যন্ত তোমাদের আমার দিকে ফিরে আসতে হবে৷
( যে সমস্ত হুকমি ধমকি, বদদোয়া ও হত্যার ষড়যন্ত্রের সাহায্যে সর্বক্ষণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বাগত জানানো হতো এ হচ্ছে তার সংক্ষিপ্ত জবাব। একদিকে ছিল কুরাইশ নেতারা। তারা প্রতিদিন তাঁর এই প্রচার কার্যের জন্য তাকে হুকমি দিতে থাকতো এবং তাদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক বিরোধী আবার বসে বসে যে কোনভাবে তাঁকে খতম করে দেবার কথাও ভাবতো। অন্যদিকে যে গৃহের কোন একজন ইসলাম গ্রহণ করতো সে গৃহের সবাই তার শত্রু হয়ে যেতো। মেয়েরা দাঁতে দাঁত পিশে তাঁকে অভিশাপ দিতো এবং বদদোয়া করতো। আর গৃহের পুরুষরা তাঁকে ভয় দেখাতো। বিশেষ করে হাবশায় হিজরাতের পরে মক্কার ঘরে ঘরে বিলাপ শুরু হয়ে গিয়েছিল। কারণ এমন একটি বাড়ি পাওয়াও কঠিন ছিল যেখান থেকে একজন পুরুষ বা মেয়ে হিজরাত করেনি। এরা সবাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামে অভিযোগ করে বলতো, এ লোকটি আমাদের পরিবার ধ্বংস করে দিয়েছে। এসব কথার জবাব এ আয়াতে দেয়া হয়েছে এবং একই সংগে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেও উপদেশ দেয়া হয়েছে যে, ওদের কোন পরোয়া না করে তুমি নির্ভয়ে নিজের কাজ করে যাও।
অর্থাৎ দুঃখ-আনন্দ, দারিদ্র-ধনাঢ্যতা, জয়-পরাজয়, শক্তিমত্তা-দুর্বলতা, সুস্থতা-রুগ্নতা ইত্যাদি সকল অবস্থায় তোমাদেরকে পরীক্ষা করা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে, ভালো অবস্থায় তোমরা অহংকারী, জালেম, আল্লাহ বিস্মৃত ও প্রবৃত্তির দাস হয়ে যাও কিনা। খারাপ অবস্থায় হিম্মত ও সাহস কমে যাওয়ায় নিম্নমানের ও অবমাননাকর পদ্ধতি এবং অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে বসো কি না। কাজেই কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তির এ রকমারি অবস্থা বুঝার ব্যাপারে ভুল করা উচিত নয়। সে যে অবস্থারই সম্মুখীন হোক, তাকে অবশ্যই পরীক্ষার এ দিকটি সামনে রাখতে হবে এবং সাফল্যের সাথে একে অতিক্রম করতে হবে। কেবলমাত্র একজন বোকা ও সংকীর্ণমনা লোকই ভাল অবস্থায় ফেরাউনে পরিণত হয় এবং খারাপ অবস্থা দেখা দিলে মাটিতে নাক-খত দিতে থাকে। )
আরো দেখুন : ম > মৃত্যু।
(২১:৮০) আর আমি তাকে তোমাদের উপকারার্থে বর্ম নির্মাণ শিল্প শিখিয়েছিলাম, যাতে তোমাদেরকে পরস্পরের আঘাত থেকে রক্ষা করে, তাহলে কি তোমরা কৃতজ্ঞ হবে।
(বিস্তারিত দেখুন : জ > জিহাদ > সশস্ত্র জিহাদ)
(২৭-নমল:৩৩) তারা (রাজ সভার মন্ত্রী বর্গ রানীকে) জবাব দিল, “আমরা শক্তিশালী ও যোদ্ধা জাতি, তবে সিদ্ধান্ত আপনার হাতে, আপনি নিজেই ভেবে দেখুন আপনার কি আদেশ দেয়া উচিত৷
(হযরত সুলাইমান আ: এর ঘটনায় তার বিরুদ্ধে রানী বিলকিসের সভাসদদের উক্তি)
(৩৩-আহযাব: ২৬) তারপর আহলি কিতাবদের মধ্য থেকে যারাই এর আক্রমণকারীদের সাথে সহযোগিতা করেছিল ৪০ তাদের দুর্গ থেকে আল্লাহ তাদেরকে নামিয়ে এনেছেন এবং তাদের অন্তরে তিনি এমন ভীতি সঞ্চার করেছেন যার ফলে আজ তাদের একটি দলকে তোমরা হত্যা করছো এবং অন্য একটি দলকে করছো বন্দী৷ ২৭) তিনি তোমাদেরকে তাদের জায়গা-জমি, ঘর-বাড়ি ও ধন-সম্পদের ওয়ারিস করে দিয়েছেন এবং এমন এলাকা তোমাদের দিয়েছেন যাকে তোমরা কখনো পদানত করোনি৷ আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতা সম্পন্ন৷
৪০. অর্থাৎ ইহুদি গোত্র বনী কুরাইযা।
(২০:৭২) যাদুকররা জবাব দিল, “সেই সত্তার কসম! যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন, উজ্জ্বল সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী সামনে এসে যাওয়ার পরও আমরা (সত্যের ওপর) তোমাকে প্রাধান্য দেবো, এটা কখনো হতে পারে না৷ তুমি যা কিছু করতে চাও করো৷ তুমি বড় জোর এ দুনিয়ার জীবনের ফায়সালা করতে পারো ।
(২৬.শুআরা:৪৯) ফেরাউন বললো, "তোমরা মূসার কথা মেনে নিলে আমি তোমাদের অনুমতি দেবার আগেই! নিশ্চয়ই এ তোমাদের প্রধান, যে তোমাদের যাদু শিখিয়েছে৷ বেশ, এখনই তোমরা জানবে৷ আমি তোমাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে কর্তন করাবো এবং তোমাদের সবাইকে শূলবিদ্ধ করবো৷"৫০) তারা বলল, "কোন পরোয়া নেই, আমরা নিজেদের রবের কাছে পৌঁছে যাবো৷৫১) আর আমরা আশা করি আমাদের রব আমাদের গোনাহ্ মাফ করে দেবেন, কেননা, সবার আগে আমরা ঈমান এনেছি”
(এ প্রসংগে এ বিষয়টিও বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য যে, মাত্র কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ঈমানের স্ফলিংগ যাদুকরদের চরিত্রের কি বিরাট পরিবর্তন সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল।মাত্র কিছুক্ষণ আগেই এ যাদুকরদের কী দাপট ছিল! নিজেদের পৈতৃক ধর্মের সাহায্যার্থে তারা নিজ নিজ গৃহ থেকে বের হয়ে এসেছিল। তারা ফেরাউনকে জিজ্ঞেস করছিল,আমরা যদি মূসার আক্রমণ থেকে নিজেদের ধর্মেকে রক্ষা করতে পারি তাহলে সরকারে আমাদের পুরস্কৃত করবে তো৷ আর এখন ঈমানের নিয়ামত লাভ করার পর তাদেরই সত্যপ্রীতি, সত্য নিষ্ঠা ও দৃঢ়ত এমন পর্যায়ে পৌছে গিয়েছিল যে, মাত্র কিছুক্ষণ আগে যে বাদশাহর সামনে তারা লোভীর মত দুহাত পেতে দিয়েছিল এখন তার প্রতাপ প্রতিপত্তি ও দর্পকে নির্ভয়ে পদাঘাত করতে লাগলো। সে যে ভয়াবহ শাস্তি দেবার হুমকি দিচ্ছিল তা বরদাশত করার জন্যে তারা তৈরী হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু যে সত্যের দরজা তাদের সামনে উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছিল প্রাণের বিনিময়ে ও তাকে পরিত্যাগ করতে তারা প্রস্তুত ছিল না।)
(২৫.ফুরকান:৫২) কাজেই হে নবী, কাফেরদের কথা কখনো মেনে নিয়ো না এবং এ কুরআন নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বৃহত্তম জিহাদ করো৷
(১৯:১৬৮) এরা নিজেরা বসে থাকলো এবং এদের ভাই –বন্ধু যারা লড়াই করতে গিয়ে মারা গিয়েছিল, তাদের সম্পর্কে বলেছিলঃ যদি তারা আমাদের কথা মেনে নিতো, তাহলে মারা যেতো না ৷ ওদের বলে দাও, তোমরা নিজেদের একথায় যদি সত্যবাদী হয়ে থাকো, তাহলে তোমাদের নিজেদের মৃত্যু যখন আসবে তখন তা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করে দেখাও৷ ১৬৯) যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত মনে করো না৷ তারা আসলে জীবিত ৷ নিজেদের রবের কাছ থেকে তারা জীবিকা লাভ করছে৷ ১৭০) আল্লাহ নিজের অনুগ্রহ থেকে তাদেরকে যা কিছু দিয়েছেন তাতেই তারা আনন্দিত ও পরিতৃপ্ত এবং যেসব ঈমানদার লোক তাদের পরে এ দুনিয়ায় রয়ে গেছে এবং এখনো সেখানে পৌঁছেনি, তাদের জন্যও কোন ভয় ও দুঃখের কারণ নেই, একথা জেনে তারা নিশ্চিন্ত হতে পেরেছে৷ ১৭১) তারা আল্লাহর পুরস্কার ও অনুগ্রহ লাভে আনন্দিত ও উল্লসিত এবং তারা জানতে পেরেছে যে, আল্লাহ মুমিনদের প্রতিদান নষ্ট করেন না৷ ১৭২) আহত হবার পরও যারা আল্লাহ ও রসূলের আহবানে সাড়া দিয়েছে, তাদের মধ্যে যারা সৎ-নেককার ও মুত্তাকী তাদের জন্য রয়েছে বিরাট প্রতিদান৷ আর যাদেরকে ১৭৩) লোকেরা বললোঃ তোমাদের বিরুদ্ধে বিরাট সেনা সমাবেশ ঘটেছে৷ তাদেরকে ভয় করো, তা শুনে তাদের ঈমান আরো বেড়ে গেছে এবং তারা জবাবে বলেছেঃ আমাদের জন্য আল্লাহ যথেষ্ট এবং তিনি সবচেয়ে ভালো কার্য উদ্ধারকারী৷ ১৭৫) এখন তোমরা জেনে ফেলেছো, সে আসলে শয়তান ছিল, তার বন্ধুদের অনর্থক ভয় দেখাচ্ছিলে ৷ কাজেই আগামীতে তোমরা মানুষকে ভয় করো না, আমাকে ভয় করো, যদি তোমরা যথার্থ ঈমানদার হয়ে থাকো৷১৭৬) ( হে নবী !) যারা আজ কুফরীর পথে খুব বেশী দৌড়াদৌড়ি করছে তাদের তৎপরতা যেন তোমাকে মলিন বদন না করে৷ এরা আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না৷ আল্লাহ আখেরাতে এদের কোন অংশ দিতে চান না৷ আর সবশেষে তারা কঠোর শাস্তি পাবে৷ ১৭৭) যারা ঈমানকে ছেড়ে দিয়ে কুফরী কিনে নিয়েছে তারা নিসন্দেহে আল্লাহর কোন ক্ষতি করছে না৷ তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রয়েছে৷ ১৭৮) কাফেরদের আমি যে ঢিল দিয়ে চলছি এটাকে যেন তারা নিজেদের জন্য ভালো মনে না করে ৷ আমি তাদেরকে এ জন্য ঢিল দিচ্ছি, যাতে তারা গোনাহের বোঝা ভারী করে নেয়, তারপর তাদের জন্য রয়েছে কঠিন অপমানকর শাস্তি৷ ১৭৯) তোমরা বর্তমানে যে অবস্থায় আছো আল্লাহ মুমিনদের কখনো সেই অবস্থায় থাকতে দেবেন না৷ পাক –পবিত্র লোকেদেরকে তিনি নাপাক ও অপবিত্র লোকদের থেকে আলাদা করেই ছাড়বেন৷ কিন্তু তোমাদেরকে গায়েবের খবর জানিয়ে দেয়া আল্লাহর রীতি নয়৷গায়েবের খবর জানাবার জন্য তিনি নিজের রসূলদের মধ্য থেকে যাকে চান বাছাই করে নেন৷ কাজেই ( গায়েবের ব্যাপারে) আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ওপর ঈমান রাখো ৷ যদি তোমরা ঈমান ও আল্লাহকে ভয় করার নীতি অবলম্বন করো তাহলে বিরাট প্রতিদান পাবে৷ ১৮০) আল্লাহ যাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং তারপরও তারা কার্পণ্য করে, তারা যেন এই কৃপণতাকে নিজেদের জন্য ভালো মনে না করে ৷ না, এটা তাদের জন্য অত্যন্ত খারাপ ৷ কৃপণতা করে তারা যাকিছু জমাচ্ছে তাই কিয়ামতের দিন তাদের গলার বেড়ি হবে৷ পৃথিবী ও আকাশের স্বত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহরই ৷ আর তোমরা যা কিছু করছো, আল্লাহ তা সবই জানেন৷
৪:৬৬,
(৩৩-আহযাব: ২৪) (এসব কিছু হলো এজন্য) যাতে আল্লাহ সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যতার পুরস্কার দেন এবং মুনাফিকদেরকে চাইলে শাস্তি দেন এবং চাইলে তাদের তাওবা কবুল করে নেন৷ অবশ্যই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়৷
(৩৩-আহযাব: ২৩) ঈমানদারদের মধ্যে এমন লোক আছে যারা আল্লাহর সাথে কৃত অংগীকার পূর্ণ করে দেখালো৷ তাদের কেউ নিজের নজরানা পূর্ণ করেছে এবং কেউ সময় আসার প্রতীক্ষায় আছে৷ ৩৯ তারা তাদের নীতি পরিবর্তন করেনি৷
৩৯. অর্থাৎ কেউ আল্লাহর পথে প্রাণ উৎসর্গ করে দিয়েছে এবং কেউ তাঁর দীনের খাতিরে নিজের খুনের নজরানা পেশ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে রয়েছে।
৩:১৪০, ৩:১৬৯, ১৭০, ১৭১,
৮:৭
আল্লাহর সাহায্য কবে আসব ? : ২:২১৪,
৩:৫২, ১৫০-১৫৭, ৩:১৭২, ১৭৩ (তোমাদের সাথে মোকোবেলা করার জন্য অনেক লোক সমবেত হয়েছে, এ চ্যালেঞ্জ এর ফলে ঈমানদারদের ঈমান আরো বেড়ে যায়)
তোমাদের কি হয়েছে ? – ৪:৭৫, ৫:৩৫,
(২৫.ফুরকান:৫২) কাজেই হে নবী, কাফেরদের কথা কখনো মেনে নিয়ো না এবং এ কুরআন নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বৃহত্তম জিহাদ করো৷
(বৃহত্তম জিহাদের তিনটি অর্থ। এক, চূড়ান্ত প্রচেষ্টা, অর্থাং চেষ্টা ও প্রাণপাত করার ব্যাপারে মানুষের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছে যাওয়া। দুই, বড় আকারের প্রচেষ্টা। অর্থাং নিজের সমস্ত উপায়-উপকরণ তার মধ্যে নিয়োজিত করা। তিন, ব্যাপক প্রচেষ্টা। অর্থাং এক্ষেত্রে প্রচেষ্টার কোন দিক এবং মোকাবিলার কোন ময়দান ছেড়ে না দেয়া। প্রতিপক্ষের শক্তি যেসব ময়দানে কাজ করছে সেসব ময়দানে নিজের শক্তি নিয়োজিত করা এবং সত্যের শির উঁচু করার জন্য যেসব দিক থেকে কাজ করার প্রয়োজন হয় সেসব দিক থেকে কাজ করা। কণ্ঠ ও কলমের জিহাদ, ধন ও প্রাণের জিহাদ এবং বন্দুক ও কামানের যুদ্ধ সবই এর অন্তর্ভুক্ত।)
২:২৪৩, ৩:১৫৬, ১৫৮, ১৬৮,
৩:১২, ১৩, ৪:৮৪,
৩:১৩, ৪:৭৭
মানুষকে ভয় করছে আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিত বা তার চেয়েও বেশী : ৪:৭৭,
৪:৮৪,
৩:৫৫, ১৩৯, ৪:৮৪, ৫:৫২, ৫৬,
৩:১১, ৪:৭৬,
৩:১৫২, ৪:৭৭,
৩:১৫৩, ৪:৮৩,
(৩০-রূম:৫) আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী ও মেহেরবান৷
(৩৩-আহযাব: ২৫) আল্লাহ কাফেরদের মুখ ফিরিয়ে দিয়েছেন, তারা বিফল হয়ে নিজেদের অন্তরজ্বালা সহকারে এমনিই ফিরে গেছে এবং মুমিনদের পক্ষ থেকে লড়াই করার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হয়ে গেছেন৷ আল্লাহ বড়ই শক্তিশালী ও পরাক্রান্ত৷
৩:১৫৪ (শোকের পর শান্তি) , ১৭৪, ৪:৪৫
(২৬.শুআরা:৬৩) আমি মূসাকে ওহীর মাধ্যমে হুকুম দিলাম, "মারো তোমার লাঠি সাগরের বুকে৷" সহসাই সাগর দীর্ণ হয়ে গেল এবং তার প্রত্যেকটি টুকরা হয়ে গেলো এক একটি বিশাল পাহাড়ের মতো৷
(২৬.শুআরা:৬৭) এ ঘটনার মধ্যে আছে একটি নিদর্শন৷ কিন্তু এদের অধিকাংশ মান্যকারী নয়৷
(অর্থাৎ কুরাইশদের জন্য রয়েছে এর মধ্যে শিক্ষা । এ শিক্ষাটি হচ্ছেঃ হঠকারী লোকেরা প্রকাশ্য ও সুস্পষ্ট মু'জিযা সমূহ দেখেও কিভাবে ঈমান আনতে অস্বীকার করে যেতে থাকে এবং তারপর এ হঠকারিতার ফল কেমন ভয়াবহ হয়। ফেরাউন ও তার জাতির সমস্ত সরদার ও হাজার হাজার সেনার চোখে এমন পট্টি বাঁধা ছিল যে, বছরের পর বছর ধরে যেসব নিদর্শন তাদেরকে দেখিয়ে আসা হয়েছে সেগুলো তারা উপেক্ষা করে এসেছে , সবশেষে পানিতে ডুবে যাবার সময়ও তারা একথা বুঝলো না যে, সমুদ্র ঐ কাফেলার জন্য ফাঁক হয়ে গেছে , পানি পাহাড়ের মতো দু'দিকে খাড়া হয়ে আছে এবং মাঝখানে শুকনা রাস্তা তৈরী হয়ে গেছে। এ সুস্পষ্ট নিদর্শন দেখেও তাদের জ্ঞানোদয় হলো না যে, মূসা আলাইহিস সালামের সাথে আল্লাহর সাহায্য রয়েছে এবং এহেন শক্তির সাথে তারা লড়াই করতে যাচ্ছে। তাদের চেতনা জাগ্রত হলো এমন এক সময় যখন পানি দু'দিক থেকে তাদেরকে চেপে ধরেছিল এবং তারা আল্লাহর গযবের মধ্যে ঘেরাও হয়ে গিয়েছিল। সে সময় ফেরাউন চিৎকার করে উঠলঃ
-----------------------------------------
"আমি ঈমান আনলান এই মর্মে যে,বনী ইসরাইল যে আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং আমি মুসলমানদের অন্তরভুক্ত ।"(ইউনুস ৯০ আয়াত)
অন্যদিকে ঈমানদারদের জন্যও এর মধ্যে রয়েছে নিদর্শন। সেটি হচ্ছে, জুলুম ও তার শক্তিগুলো বাহ্যত যতই সর্বব্যাপী ও সর্বগ্রাসী হয়ে দেখা দিক না কেন শেষ পর্যন্ত আল্লাহর সাহায্য-সহায়তায় সত্য এভাবেই বিজয়ী এবং মিথ্যার শির এভাবেই নত হয়ে যায়।)
(২৮-ক্বাছাছ : ৮৫) হে নবী! নিশ্চিত জেনো, যিনি এ কুরআন তোমার ওপর ন্যস্ত করেছেন তিনি তোমাকে একটি উত্তম পরিণতিতে পৌঁছিয়ে দেবেন৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৮৭) আর এমনটি যেন কখনো না হয় যে, আল্লাহর আয়াত যখন তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয় তখন কাফেররা তোমাকে তা থেকে বিরত রাখে৷
৩:১৬০,
(৩৩-আহযাব: ১৭) তাদেরকে বলো, কে তোমাদের রক্ষা করতে পারে আল্লাহর হাত থেকে যদি তিনি তোমাদের ক্ষতি করতে চান ? আর কে তাঁর রহমতকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে যদি তিনি চান তোমাদের প্রতি মেহেরবাণী করতে ? আল্লাহর মুকাবিলায় তো তারা কোনো পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী লাভ করতে পারে না৷
(৩৩-আহযাব:৪৮) আর কখনো দমিত হয়ো না কাফের ও মুনাফিকদের কাছে, পরোয়া করো না তাদের পীড়নের এবং ভরসা করো আল্লাহর প্রতি৷ আল্লাহই যথেষ্ট এজন্য যে, মানুষ তাঁর হাতে তার যাবতীয় বিষয় সোপর্দ করে দেবে৷
(৩৩-আহযাব:৪৮) আর কখনো দমিত হয়ো না কাফের ও মুনাফিকদের কাছে, পরোয়া করো না তাদের পীড়নের এবং ভরসা করো আল্লাহর প্রতি৷ আল্লাহই যথেষ্ট এজন্য যে, মানুষ তাঁর হাতে তার যাবতীয় বিষয় সোপর্দ করে দেবে৷
(৩০-রূম: ৪৭) আমি তোমার পূর্বে রসূলদেরকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠাই এবং তারা তাদের কাছে আসে উজ্জ্বল নিদর্শনাবলী নিয়ে৷ তারপর যারা অপরাধ করে তাদের থেকে আমি প্রতিশোধ নিই আর মুমিনদেরকে সাহায্য করা ছিল আমার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৩৪) আর আমার ভাই হারূন আমার চেয় বেশী বাকপটু, তাকে সাহায্যকারী হিসেবে আমার সাথে পাঠাও, যাতে সে আমাকে সমর্থন দেয়, আমার ভয় হচ্ছে, তারা আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করবে৷" ৩৫) বললেন, তোমার ভাইয়ের সাহায্যে আমি তোমার শক্তি বৃদ্ধি করবো এবং তোমাদের দু'জনকে এমনই প্রতিপত্তি দান করবো যে, তারা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না৷ আমার নিদর্শনগুলোর জোরে তোমার ও তোমাদের অনুসারীরাই বিজয় লাভ করবে৷
বিস্তারিত দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত মূসা আ: ।
বিস্তারিত দেখুন : ম > মু’জেযা > হযরত মূসা আ: এর মু’জিযা সমূহ।
জিহাদের ময়দানে আল্লাহর দেয়া শান্তনা : প্রশান্তি সমূহ : জিহাদের ময়দানে তন্দ্রা দ্বারা আল্লাহ মু’মিনদেরকে প্রশান্তি দিলেন : ৩:১৫৪,
৩:১২২-১২৮, ৪:৭৬,
৩:১২২-১২৮, ১৩৯, ১৪০, ১৪৬, ১৫০, ১৫৪, ৪:১৪১,
(২০:৪৫) (মূসা ও হারুন ) উভয়েই বললো, "হে আমাদের রব! আমাদের ভয় হয়, সে (ফেরাউন) আমাদের সাথে বাড়াবাড়ি করবে অথবা আমাদের ওপর চড়াও হবে”৷৪৬) আল্লাহ বললেন, “ভয় করো না, আমি তোমাদের সাথে আছি, সবকিছু শুনছি ও দেখছি৷
(২০:৬৭) এবং মূসার মনে ভীতির সঞ্চার হলো । ৬৮) আমি বললাম, “ভয় পেয়ো না, তুমিই প্রাধান্য লাভ করবে৷
(২৬.শুআরা:৬১) দু'দল যখন পরস্পরকে দেখতে পেলো তখন মূসার সাথীরা চিৎকার করে উঠলো, "আমরা তো পাকড়াও হয়ে গেলাম৷" ৬২) মূসা বললো, "কখ্খনো না, আমার সাথে আছেন আমার রব, তিনি নিশ্চয়ই আমাকে পথ দেখাবেন৷" (বিস্তারিত দেখুন : স > সাথে থাকা )
(১৮:১৪) আমি সে সময় তাদের চিত্ত দৃঢ় করে দিলাম যখন তারা উঠলো এবং ঘোষণা করলোঃ “আমাদের রব তো কেবল তিনিই যিনি পৃথিবী ও আকাশের রব৷ আমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কোনো মাবুদকে ডাকবো না৷ যদি আমরা তাই করি তাহলে তা হবে একেবারেই অনর্থক৷”
(১২:১৮) তারা ইউসূফের জামায় মিথ্যা রক্ত লাগিয়ে নিয়ে এসেছিল৷ একথা শুনে তাদের বাপ বললো, “বরং তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি বড় কাজকে সহজ করে দিয়েছে৷ ঠিক আছে, আমি সবর করবো এবং খুব ভালো করেই সবর করবো৷ তোমরা যে কথা সাজাচ্ছো তার ওপর একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাওয়া যেতে পারে৷
(২৮-ক্বাছাছ : ১০) ওদিকে মূসার মায়ের মন অস্থির হয়ে পড়েছিল৷ সে তার রহস্য প্রকাশ করে দিতো যদি আমি তার মন সুদৃঢ় না করে দিতাম, যাতে সে (আমার অংগীকারের প্রতি) বিশ্বাস স্থাপনকারীদের একজন হয়৷
(৩৩-আহযাব : ২৩) ঈমানদারদের মধ্যে এমন লোক আছে যারা আল্লাহর সাথে কৃত অংগীকার পূর্ণ করে দেখালো৷ তাদের কেউ নিজের নজরানা পূর্ণ করেছে এবং কেউ সময় আসার প্রতীক্ষায় আছে৷ ৩৯ তারা তাদের নীতি পরিবর্তন করেনি৷
৩৯. অর্থাৎ কেউ আল্লাহর পথে প্রাণ উৎসর্গ করে দিয়েছে এবং কেউ তাঁর দীনের খাতিরে নিজের খুনের নজরানা পেশ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে রয়েছে।
(৩৩-আহযাব: ২৬) তারপর আহলি কিতাবদের মধ্য থেকে যারাই এর আক্রমণকারীদের সাথে সহযোগিতা করেছিল ৪০ তাদের দুর্গ থেকে আল্লাহ তাদেরকে নামিয়ে এনেছেন এবং তাদের অন্তরে তিনি এমন ভীতি সঞ্চার করেছেন যার ফলে আজ তাদের একটি দলকে তোমরা হত্যা করছো এবং অন্য একটি দলকে করছো বন্দী৷ ২৭) তিনি তোমাদেরকে তাদের জায়গা-জমি, ঘর-বাড়ি ও ধন-সম্পদের ওয়ারিস করে দিয়েছেন এবং এমন এলাকা তোমাদের দিয়েছেন যাকে তোমরা কখনো পদানত করোনি৷ আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতা সম্পন্ন৷
৪০. অর্থাৎ ইহুদি গোত্র বনী কুরাইযা।
৩:১২৫, ৩:১৩৯ (নিরাশ হয়োনা, দু:খ করোনা, তোমরা বিজয়ী হবে যদি তোমরা মু’মিন হও), ৩:১৪৬,
(৩০-রূম: ৬০) কাজেই ( হে নবী!) সবর করো, অবশ্যই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং যারা বিশ্বাস করে না তারা যেন কখনোই তোমাকে গুরুত্বহীন মনে না করে৷ ৮৫
৮৫ . অর্থাৎ শত্রুরা যেন তোমাদের এতই দুর্বল না পায় যে, তাদের হৈ চৈ ও শোরগোলে তোমরা দমিত হবে অথবা তাদের মিথ্যাচার ও দোষারোপ করার অভিযান দেখে তোমরা ভীত হয়ে যাও কিংবা হাসি-তামাসা ও ঠাট্টা-বিদ্রুপবাণে বিদ্ধ হয়ে তোমরা হিম্মত হারিয়ে ফেলো অথবা তাদের হুমকি-ধমকি ও শক্তির প্রকাশে এবং জুলুম নির্যাতনে তোমরা ভীত হয়ে যাও কিংবা তাদের ফেলা লালসার টোপে তোমরা আটকা পড়ে যাও অথবা জাতীয় স্বার্থের নামে তারা তোমাদের কাছে যে আবেদন জানাচ্ছে তাঁর ভিত্তিতে তোমরা তাদের সাথে সমঝোতা করে নিতে উদ্যত হও। এর পরিবর্তে তারা তোমাকে নিজেদের উদ্দেশ্য সচেতনতায় এত বেশি সতর্ক এবং নিজেদের বিশ্বাস ও ঈমানে এত বেশি পাকাপোক্ত এবং এ সংকল্পে এত বেশি দৃঢ়চেতা এবং নিজেদের চরিত্রে এতবেশি মজবুত পাবে যে, কোন ভয়ে তোমাদের ভীত করা যাবে না, কোন মূল্যে তোমাদের কেনা যাবে না, কোন প্রতারণার জালে তোমাদের আবদ্ধ করা যাবে না, কোন ক্ষতি, কষ্ট বা বিপদে ফেলে তোমাদেরকে পথ থেকে সরানো যাবে না এবং দীনের ব্যাপারে কোন প্রকার আপোষ বা লেনদেনের কারবারও তোমাদের সাথে করা যেতে পারে না। " অবিশ্বাসীরা যেন তোমাকে গুরুত্বহীন মনে না করে"- আল্লাহর এ ছোট্ট একটি বাণীর আলংকারিক বাক্য-বিন্যাসের মধ্যেই এ সমস্ত বিষয়বস্তুলুকিয়ে রাখা হয়েছে। আল্লাহ তাঁর শেষ নবীকে যেমন শক্তিশালী ও গুরুত্ববহ দেখতে চাচ্ছিলেন তিনি ঠিক তেমনটি হতে পেরেছিলেন কিনা এখন ইতিহাসই তা প্রমাণ করবে। তাঁর সাথে যে ব্যক্তিই যে ময়দানে শক্তি পরীক্ষা করেছে সেই ময়দানেই সে হেরে গেছে। শেষ পর্যন্ত এ মহান ব্যক্তিত্ব এমন বিপ্লব সৃষ্টি করেন যার পথরোধ করার জন্য আরবের কাফের ও মুশরিক সমাজ তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ ও সমস্ত কলা-কৌশল প্রয়োগ করেও পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে গেছে।
৩:১২৪, ১২৫ (তিন হাজার ও পাচ হাজার ফেরেশতা দ্বারা আল্লাহ সহযোগিতা করবেন), ৩:১৫১,
(৩৩-আহযাব: ৯) হে ঈমানদাগণ স্বরণ করো আল্লাহর অনুগ্রহ, যা তিনি করলেন তোমাদের প্রতি, যখন সেনাদল তোমাদের ওপর চড়াও হলো আমি পাঠালাম তাদের বিরুদ্ধে প্রচন্ড ধুলিঝড় এবং এমন সেনাবাহিনী রওয়ানা করলাম যা তোমরা দেখোনি৷ তোমরা তখন যা কিছু করছিলে আল্লাহ তা সব দেখছিলেন৷১০)
(৩৩-আহযাব: ৯) হে ঈমানদাগণ স্বরণ করো আল্লাহর অনুগ্রহ, যা তিনি করলেন তোমাদের প্রতি, যখন সেনাদল তোমাদের ওপর চড়াও হলো আমি পাঠালাম তাদের বিরুদ্ধে প্রচন্ড ধুলিঝড় এবং এমন সেনাবাহিনী রওয়ানা করলাম যা তোমরা দেখোনি৷তোমরা তখন যা কিছু করছিলে আল্লাহ তা সব দেখছিলেন৷১০) যখন তারা ওপর ও নিচে থেকে তোমাদের ওপর চড়াও হলো, যখন ভয়ে চোখ বিস্ফারিত হয়ে গিয়েছিল, প্রাণ হয়ে পড়েছিল ওষ্ঠাগত এবং তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে নানা প্রকার ধারণা পোষণ করতে শুরু করেছিলে ১১) তখন মু’মিনদেরকে নিদারুণ পরীক্ষা করা হলো এবং ভীষণভাবে নাড়িয়ে দেয়া হলো৷১২) স্মরণ করো যখন মুনাফিকরা এবং যাদের অন্তরে রোগ ছিল তারা পরিস্কার বলছিল, আল্লাহ ও তাঁর রসূল আমাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই ছিল না৷
(বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : য > যুদ্ধ > আহযাব এর যুদ্ধ)
(৩৩-আহযাব: ১০) যখন তারা ওপর ও নিচে থেকে তোমাদের ওপর চড়াও হলো, যখন ভয়ে চোখ বিস্ফারিত হয়ে গিয়েছিল, প্রাণ হয়ে পড়েছিল ওষ্ঠাগত এবং তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে নানা প্রকার ধারণা পোষণ করতে শুরু করেছিলে।
ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : য > যুদ্ধ > আহযাব এর যুদ্ধ।
(৩৩-আহযাব: ১১) তখন মু’মিনদেরকে নিদারুণ পরীক্ষা করা হলো এবং ভীষণভাবে নাড়িয়ে দেয়া হলো৷২১
২১. এখানে মুমিন তাদেরকে বলা হয়েছে যারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রসূল বলে মেনে নিয়ে নিজেকে তাঁর অনুসারীদের অন্তরভুক্ত করেছিলেন এদের মধ্যে সাচ্চা ঈমানদার ও মুনাফিক উভয়ই ছিল। এ প্যারাগ্রাফে মুসলমানদের দলের উল্লেখ করেছেন সামগ্রিকভাবে, এরপরের তিনটি প্যারাগ্রাফে মুনাফিকদের নীতির ওপর মন্তব্য করা হয়েছে। তারপর শেষ দুটি প্যারাগ্রাফে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাচ্চা মুমিনদের সম্পর্কে বলা হয়েছে।
বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ম > মুনাফিক ও জিহাদ।
(৩৩-আহযাব: ১৩) যখন তাদের মধ্য থেকে একটি দল বললো, হে ইয়াসরিববাসীরা! তোমাদের জন্য এখন অবস্থান করার কোন সুযোগ নেই, ফিরে চলো৷২৩ যখন তাদের একপক্ষ নবীর কাছে এই বলে ছুটি চাচ্ছিল যে, আমাদের গৃহ বিপদাপন্ন,২৪ অথচ তা বিপদাপন্ন ছিল না২৫ আসলে তারা (যুদ্ধক্ষেত্র থেকে) পালাতে চাচ্ছিল৷
বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ম > মুনাফিক ও জিহাদ।
(৩৩-আহযাব: ১৬) হে নবী! তাদেরকে বলো, যদি তোমরা মৃত্যু বা হত্যা থেকে পলায়ন করো, তাহলে এ পলায়নে তোমাদের কোনো লাভ হবে না৷ এরপর জীবন উপভোগ করার সামান্য সুযোগই তোমরা পাবে৷২৮
২৮. অর্থাৎ এভাবে পলায়ন করার ফলে তোমাদের আয়ু বেড়ে যাবে না। এর ফলে কখনোই তোমরা কিয়ামত পর্যন্ত বেঁচে থাকতে এবং সারা দুনিয়া জাহানের ধন-দৌলত হস্তগত করতে পারবে না। পালিয়ে বাঁচলে বড় জোর কয়েক বছরই বাঁচবে এবং তোমাদের জন্য যতটুকু নির্ধারিত হয়ে আছে ততটুকুই জীবনের আয়েশ-আরাম ভোগ করতে পারবে।
(৩৩-আহযাব: ১৭) তাদেরকে বলো, কে তোমাদের রক্ষা করতে পারে আল্লাহর হাত থেকে যদি তিনি তোমাদের ক্ষতি করতে চান ? আর কে তাঁর রহমতকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে যদি তিনি চান তোমাদের প্রতি মেহেরবাণী করতে ? আল্লাহর মুকাবিলায় তো তারা কোনো পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী লাভ করতে পারে না৷
(৩৩-আহযাব: ১৪) যদি শহরের বিভিন্ন দিক থেকে শত্রুরা ঢুকে পড়তো এবং সেসময় তাদেরকে ফিতনা সৃষ্টি করার জন্য আহবান জানানো হতো, ২৬ তাহলে তারা তাতেই লিপ্ত হয়ে যেতো এবং ফিতনায় শরীক হবার ব্যাপারে তারা খুব কমই ইতস্তত করতো৷
২৬. অর্থাৎ যদি নগরে প্রবেশ করে কাফেররা বিজয়ীর বেশে এ মুনাফিকদেরকে এই বলে আহবান জানাতো, এসো আমাদের সাথে মিলে মুসলমানদেরকে খতম করো।
(৩৩-আহযাব: ১৫) তারা ইতিপূর্বে আল্লাহর সাথে অংগীকার করেছিল যে, তারা পৃষ্টপ্রদর্শন করবে না এবং আল্লাহর সাথে করা অংগীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা তো হবেই৷২৭
২৭. অর্থাৎ ওহোদ যুদ্ধের সময় তারা যে দুর্বলতা দেখিয়েছিল তারপর লজ্জা ও অনুতাপ প্রকাশ করে তারা আল্লাহর কাছে অংগীকার করেছিল যে, এবার যদি পরীক্ষার কোন সুযোগ আসে তাহলে তারা নিজেদের এ ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করবে। কিন্তু আল্লাহকে নিছক কথা দিয়ে প্রতারণা করা যেতে পারে না। যে ব্যক্তিই তাঁর সাথে কোন অংগীকার করে তাঁর সামনে তিনি পরীক্ষার কোন না কোন সুযোগ এনে দেন। এর মাধ্যমে তার সত্য ও মিথ্যা যাচাই হয়ে যায়। তাই ওহোদ যুদ্ধের মাত্র দু'বছর পরেই তিনি তার চাইতেও বেশী বড় বিপদ সামনে নিয়ে এলেন এবং এভাবে তারা তাঁর সাথে কেমন ও কতটুকু সাচ্চা অংগীকার করেছিল তা যাচাই করে নিলেন।
(২৯-আনকাবুত:৩৩) তারপর যখন আমার প্রেরিতগণ লূতের কাছে পৌঁছলো তাদের আগমনে সে অত্যন্ত বিব্রত ও সংকুচিত হৃদয় হয়ে পড়লো৷ ৫৭ তারা বললো, “ ভয় করো না এবং দুঃখও করো না৷ ৫৮
৫৭ . এ বিব্রতবোধ ও সংকুচিত হৃদয় হবার কারণ এই ছিল যে, ফেরেশতারা উঠতি বয়সের সুন্দর ও সুঠাম দেহের অধিকারী রূপ ধরে এসেছিলেন। হযরত লূত নিজের জাতির চারিত্রিক ও নৈতিক প্রবণতা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। তাই তাদের আসা মাত্রই পেরেশান হয়ে পড়েছিলেন এ জন্য যে, তিনি যদি এ মেহমানদেরকে অবস্থান করতে দেন তাহলে ঐ ব্যভিচারী জাতির হাত থেকে তাদেরকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে আর যদি অবস্থান করতে না দেন তাহলে সেটা হবে বড়ই অভদ্র আচরণ। তাছাড়া এ আশংকাও আছে,তিনি যদি এ মুসাফিরদেরকে আশ্রয় না দেন তাহলে অন্য কোথাও তাদের রাত কাটাতে হবে এবং এর অর্থ হবে যেন তিনি নিজেই তাদেরকে নেকড়ের মুখে ঠেলে দিলেন। এর পরের ঘটনা আর এখানে বর্ণনা করা হয়নি। সূরা হূদ ও কামারে এর বিস্তারিত বিবরণ এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, এ কিশোরদের আগমন সংবাদ শুনে শহরের বহু লোক হযরত লূতের গৃহে এসে ভীড় জমালো। তারা ব্যভিচার কর্মে লিপ্ত হবার উদ্দেশ্যে মেহমানদেরকে তাদের হাতে সোপর্দ করার জন্য চাপ দিতে লাগলো।
৫৮ . অর্থাৎ আমাদের ব্যাপারে। এরা আমাদের কোন ক্ষতি করবে এ ভয়ও করো না এবং এদের হাত থেকে কিভাবে আমাদের বাঁচাবে সে চিন্তাও করো না। এ সময়ই ফেরেশতারা হযরত লূতের কাছে এ রহস্য ফাঁস করেন যে, তারা মানুষ নন বরং ফেরেশতা এবং এ জাতির ওপর আযাব নাযিল করার জন্য তাদেরকে পাঠানো হয়েছে। সূরা হূদে এর বিস্তারিত বিবরণ এভাবে দেয়া হয়েছে, লোকেরা যখন একনাগাড়ে লূতের গৃহে প্রবেশ করে চলছিল এবং তিনি অনুভব করছিলেন এখন আর কোন ক্রমেই নিজের মেহমানদেরকে তাদের হাত থেকে বাঁচাতে পারবেন না তখন তিনি পেরেশান হয়ে চিৎকার করে বলেনঃ
----------------
"হায়! আমার যদি শক্তি থাকতো তোমাদের সোজা করে দেবার অথবা কোন শক্তিশালী সহায়তা আমি লাভ করতে পারতাম।"
এ সময় ফেরেশতারা বলেনঃ
--------------
"হে লূত !আমরা তোমার রবের প্রেরিত ফেরেশতা। এরা কখ্খনো তোমার কাছে পৌঁছতে পারবে না।"
তার সম্প্রদায়ের স্বঘোষিত প্রতাপশালী নেতারা দুর্বল শ্রেনীর মুমিনদেরকে বললোঃ “তোমরা কি সত্যি জানো, সালেহ ও তার রবের প্রেরিত নবী? ” তারা জবাব দিলোঃ “নিশ্চয়ই, যে বাণী সহকারে তাঁকে পাঠানো হয়েছে আমরা তা বিশ্বাস করি৷” ৭:৭৫
তোমাদের হাত -পা আমি কেটে ফেলবো বিপরীত দিক থেকে এবং তারপর তোমাদের সবাইকে শূলে চড়িয়ে হত্যা করবো৷” তারা জবাব দিলোঃ “সে যাই হোক আমাদের রবের দিকেই তো আমাদের ফিরতে হবে৷ তুমি যে ব্যাপারে আমাদের ওপর প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছো, তা এ ছাড়া আর কিছুই নয় যে , আমাদের রবের নিদর্শসমূহ যখন আমাদের সামনে এসেছে তখন আমরা তা মেনে নিয়েছি-7:124-126,
তারপর তারা জিজ্ঞেস করে যে, তুমি যা বলছো তা কি যথার্থই সত্য? বলো, “আমার রবের কসম, এটা যথার্থই সত্য এবং এর প্রকাশ হবার পথে বাধা দেবার মতো শক্তি তোমাদের নেই”৷ -১০:৫৩,
(২০:৭২) যাদুকররা জবাব দিল, “সেই সত্তার কসম! যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন, উজ্জ্বল সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী সামনে এসে যাওয়ার পরও আমরা (সত্যের ওপর) তোমাকে প্রাধান্য দেবো, এটা কখনো হতে পারে না৷ তুমি যা কিছু করতে চাও করো৷ তুমি বড় জোর এ দুনিয়ার জীবনের ফায়সালা করতে পারো ।
(২০:৭১) ফেরাউন বললো, “তোমারা ঈমান আনলে, আমি তোমাদের অনুমতি দেবার আগেই” দেখছি, এ তোমাদের গুরু, এ-ই তোমাদের যাদুবিদ্যা শিখিয়েছিল৷ এখন আমি তোমাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে কাটাচ্ছি এবং খেজুর গাছের কাণ্ডে তোমাদের শুলিবিদ্ধ করছি এরপর তোমরা জানতে পারবে আমাদের দু’জনের মধ্যে কার শাস্তি কঠিন ও দীর্ঘস্থায়ী”৷ (অর্থাৎ আমি না মূসা, কে তোমাদের বেশী কঠিন শাস্তি দিতে পারে)৷
..... ঐ শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদাররা বললো , “তোমরা যা বিশ্বাস কর আমরা তা অস্বীকার করি৷7:75-76,
৩:১৫৫, ৫:২২-২৬ (হা-হুনা ক্বায়েদুন, ৪০ বছর উদভ্রান্তের মত ঘুর বেড়ানো)
৫:৫২, ৫৪,
হে আমাদের রব! আমাদের সবর দান করোএবং তোমার আনুগত্য থাকা অবস্থায় আমাদের দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নাও-৭:১২৩-১২৬,
২:২৫০, ২৮৬,
৩:১৪৭ (আমাদের কাজের বাড়াবাড়ি মাফ করে দাও),
৫:২৪-২৬,
(হাজ্ব:৬০) এতো হচ্ছে তাদের অবস্থা, আর যে ব্যক্তি প্রতিশোধ নেয় ঠিক যেমন তার সাথে করা হয়েছে তেমনি এবং তারপর তার ওপর বাড়াবাড়িও করা হয়েছে, সে ক্ষেত্রে আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন, ১০৪ আল্লাহ গোনাহমাফকারী ও ক্ষমাশীল৷১০৫
(১০৪. প্রথমে এমন মজলুমদের কথা বলা হয়েছিল যারা জুলুমের জবাবে কোন পালটা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। আর এখানে এমন মজলুমদের কথা বলা হচ্ছে যারা জুলুমের জবাবে শক্তি ব্যবহার করে।
ইমাম শাফেঈ এ আয়াত থেকে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, জুলুমের কিসাস সেভাবেই লওয়া হবে যেভাবে জুলুম করেছে। যেমন কোন ব্যক্তি একজনকে পানিতে ডুবিয়ে মেরেছে এ অবস্থায় তাকেও পানিতে ডুবিয়ে মারা হবে। আবার কোন ব্যক্তি একজনকে পুড়িয়ে মেরেছে জবাবে তাকেও পুড়িয়ে মারা হবে। কিন্তু হানাফীয়াদের মতে হত্যাকারী যেভাবেই হত্যা করুক না কেন তার থেকে একই পরিচিতি পদ্ধতিতেই কিসাস গ্রহণ করা হবে।
১০৫. এ আয়াতের দু'টি অর্থ হতে পারে এবং সম্ভবত দু'টি অর্থই এখানে প্রযোজ্য। এক, জুলুমের জবাবে যে রক্তপাত করা হবে আল্লাহর কাছে তা ক্ষমাযোগ্য, যদিও রক্তপাত মূলত ভালো জিনিস নয়। দুই, তোমরা যে আল্লাহর বান্দা তিনি ভুল ত্রুটি মার্জনা করেন ও গোনাহ মাফ করে দেন। তাই তোমাদেরও সামর্থ অনুযায়ী মানুষের ভুলত্রুটি ও অপরাধ মার্জনা করা উচিত। মু'মিনরা ক্ষমাশীল, উদার হৃদয় ও ধৈর্যশীল, এগুলো তাদের চরিত্রের ভূষণ। প্রতিশোধ নেবার অধিকার অবশ্যই তাদের আছে। কিন্তু নিছক প্রতিশোধ স্পৃহা ও প্রতিশোধে গ্রহণের মানসিকতা লালন করা তাদের জন্য শোভনীয় নয়।)
(৩০-রূম: ৯)....তাঁরপর আল্লাহ তাদের প্রতি জুলূমকারী ছিলেন না কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করছিল৷
(৩৪-সাবা: ১৯) কিন্তু তারা বলল হে, আমাদের রব! আমাদের ভ্রমণের দূরত্ব দীর্ঘায়িত করো৷৩২ তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছে৷
(৩৩-আহযাব:৪৮) আর কখনো দমিত হয়ো না কাফের ও মুনাফিকদের কাছে, পরোয়া করো না তাদের পীড়নের এবং ভরসা করো আল্লাহর প্রতি৷ আল্লাহই যথেষ্ট এজন্য যে, মানুষ তাঁর হাতে তার যাবতীয় বিষয় সোপর্দ করে দেবে৷
জুমুআর দিনর গুরুত্বপূর্ণ আমল! 38টি পয়েন্ট
এখানে দেয়া আছে সহিহ দলিল দিয়ে।
১) জুম’আর দিন গোসল করা। যাদের
উপর জুম’আ ফরজ তাদের জন্য এ
দিনে গোসল করাকে রাসুল (সাঃ)
ওয়াজিব করেছেন(বুখারীঃ ৮৭৭,
৮৭৮, ৮৮০, ৮৯৭, ৮৯৮)। পরিচ্ছন্নতার
অংশ হিসাবে সেদিন নখ ও চুল
কাটা একটি ভাল কাজ।
২) জুম’আর সালাতের জন্য
সুগন্ধি ব্যবহার করা। (বুখারীঃ ৮৮০)
৩) মিস্ওয়াক করা।
(ইবনে মাজাহঃ ১০৯৮, বুখারীঃ৮৮৭,
ইঃফাঃ৮৪৩)
৪) গায়ে তেল ব্যবহার করা।
(বুখারীঃ৮৮৩)
৫) উত্তম পোশাক পরিধান করে জুম’আ
আদায় করা। (ইবনে মাজাহঃ১০৯৭)
৬) মুসুল্লীদের ইমামের দিকে মুখ
করে বসা। (তিরমিযীঃ৫০৯,
ইবনে মাজাহঃ১১৩৬)
৭) মনোযোগ সহ খুৎবা শোনা ও চুপ
থাকা- এটা ওয়াজিব। (বুখারীঃ ৯৩৪,
মুসলিমঃ৮৫৭, আবু দাউদঃ১১১৩,
আহমাদঃ১/২৩০)
৮) আগে ভাগে মসজিদে যাওয়া।
(বুখারীঃ৮৮১, মুসলিমঃ৮৫০)
৯) পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন। (আবু
দাউদঃ ৩৪৫)
১০) জুম’আর দিন ফজরের নামাজে ১ম
রাক’আতে সূরা সাজদা (সূরা নং-৩২)
আর ২য় রাকা’আতে সূরা ইনসান(দাহর)
(সূরা নং-৭৬) পড়া। (বুখারীঃ৮৯১,
মুসলিমঃ৮৭৯)
১১) সূরা জুম’আ ও সূরা মুনাফিকুন
দিয়ে জুম’আর সালাত আদায় করা।
অথবা সূরা আলা ও
সূরা গাশিয়া দিয়ে জুম’আ আদায় করা।
(মুসলিমঃ৮৭৭, ৮৭৮)
১২) জুম’আর দিন ও জুম’আর
রাতে বেশী বেশী দুরুদ পাঠ। (আবু
দাউদঃ ১০৪৭)
১৩) এ দিন বেশী বেশী দোয়া করা।।
(বুখারীঃ ৯৩৫)
১৪) মুসুল্লীদের ফাঁক
করে মসজিদে সামনের
দিকে এগিয়ে না যাওয়া।
(বুখারীঃ৯১০, ৮৮৩)
১৫) মুসুল্লীদের ঘাড়
ডিঙ্গিয়ে সামনের
কাতারে আগানোর চেষ্টা না করা।
(আবু দাউদঃ ৩৪৩, ৩৪৭)
১৬)
কাউকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে বসার
চেষ্টা না করা। (বুখারীঃ৯১১,
মুসলিমঃ২১৭৭, ২১৭৮)
১৭) খুৎবা চলাকালীন
সময়ে মসজিদে প্রবেশ করলে তখনও
দু’রাকা’আত ‘তাহিয়্যাতুল মাসজিদ’
সালাত আদায় করা ছাড়া না বসা।
(বুখারীঃ ৯৩০)
১৮) জুম’আর দিন জুম’আর
পূর্বে মসজিদে জিকর বা কোন
শিক্ষামুলক হালকা না করা। অর্থাৎ
ভাগ ভাগ হয়ে, গোল গোল
হয়ে না বসা, যদিও এটা কোন
শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান হোক না কেন।
(আবু দাউদঃ ১০৮৯)
১৯) কেউ কথা বললে ‘চুপ করুন’ এটুকুও
না বলা। (নাসায়ীঃ ৭১৪,
বুখারীঃ ৯৩৪)
২০) মসজিদে যাওয়ার
আগে কাঁচা পেয়াজ, রসুন
না খাওয়া ও ধুমপান না করা।
(বুখারীঃ ৮৫৩)
২১) ঘুমের ভাব বা তন্দ্রাচ্ছন্ন
হলে বসার জায়গা বদল করে বসা। (আবু
দাউদঃ ১১১৯)
২২) ইমামের খুৎবা দেওয়া অবস্থায় দুই
হাঁটু উঠিয়ে না বসা। (আবু
দাউদঃ ১১১০, ইবনে মাজাহঃ ১১৩৪)
২৩) খুৎবার সময় ইমামের
কাছাকাছি বসা।
জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত হলেও
ইমাম
থেকে দূরে উপবেশনকারীরা বিলম্বে জান্নাতে প্রবেশ
করবে। (আবু দাউদঃ ১১০৮)
২৪) জুম’আর দিন সূরা কাহফ পড়া।
এতে পাঠকের জন্য আল্লাহ
তায়ালা দুই জুম’আর
মধ্যবর্তী সময়কে আলোকিত
করে দেন। (হাকেমঃ ২/৩৬৮,
বায়হাকীঃ ৩/২৪৯)
২৫) জুম’আর আযান দেওয়া। অর্থাৎ
ইমাম মিম্বরে বসার পর যে আযান
দেওয়া হয় তা।(বুখারীঃ ৯১২)
২৬) জুম’আর ফরজ নামাজ আদায়ের পর
মসজিদে ৪ রাকা’আত সুন্নাত সালাত
আদায় করা। (বুখারীঃ ১৮২,
মুসলিমঃ ৮৮১, আবু দাউদঃ ১১৩০)
২৭) উযর ছাড়া একই গ্রাম ও মহল্লায়
একাধিক জুম’আ চালু না করা। আর উযর
হল এলাকাটি খুব বড় হওয়া, বা প্রচুর
জনবসতি থাকা, বা মসজিদ দূরে হওয়া,
বা মসজিদে জায়গা না পাওয়া,
বা কোন ফিতনা ফাসাদের ভয়
থাকা। (মুগনি লিবনি কুদামাঃ ৩/২১২,
ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহঃ ২৪/২০৮)
২৮) ওজু ভেঙ্গে গেলে মসজিদ
থেকে বের হয়ে যাওয়া। অতঃপর
আবার ওজু করে মসজিদে প্রবেশ করা।
(আবু দাউদঃ ১১১৪)
২৯) একান্ত উযর না থাকলে দুই
পিলারে মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গায়
সালাত আদায় না করা।
(হাকেমঃ ১/১২৮)
৩০) সালাতের জন্য কোন
একটা জায়গাকে নির্দিষ্ট
করে না রাখা, যেখানে যখন
জায়গা পাওয়া যায় সেখানেই
সালাত আদায় করা (আবু দাউদঃ৮৬২)।
অর্থাৎ আগে থেকেই নামাজের
বিছানা বিছিয়ে জায়গা দখল
করে না রাখা বরং যে আগে আসবে সেই
আগে বসবে।
৩১) কোন নামাজীর
সামনে দিয়ে না হাঁটা অর্থাৎ
মুসুল্লী ও সুতরার
মধ্যবর্তী জায়গা দিয়ে না হাঁটা।
(বুখারীঃ৫১০)
৩২) এতটুকু জোরে আওয়াজ করে কোন
কিছু না পড়া, যাতে অন্যের সালাত
ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন
ঘটে। (আবু দাউদঃ ১৩৩২)
৩৩) পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়ার
ফযীলত অন্তরে জাগরূক রাখা।
৩৪) হাঁটার আদব মেনে মসজিদে গমন
করা।
৩৫) খুৎবার সময় খতীবের কোন কথার
সাড়া দেওয়া বা তার প্রশ্নের জবাব
দানে শরীক হওয়া জায়েজ।
(বুখারীঃ ১০২৯, মুসলিমঃ ৮৯৭)
৩৬) হানাফী আলেমগন বলেছেন যে,
ভিড় প্রচণ্ড হলে সামনের মুসুল্লীর
পিঠের উপর সিজদা দেওয়া জায়েজ
(আহমাদঃ১/৩২)। দরকার হলে পায়ের
উপর ও দিতে পারে (আর রাউদুল
মুরবী)
৩৭) যেখানে জুম’আর ফরজ আদায়
করেছে, উত্তম হল ঐ একই
স্থানে সুন্নাত না পড়া। অথবা কোন
কথা না বলে এখান
থেকে গিয়ে পরবর্তী সুন্নাত
সালাত আদায় করা। (মুসলিমঃ ৭১০,
বুখারীঃ ৮৪৮)
৩৮) ইমাম সাহেব
মিম্বরে এসে হাজির হওয়ার পূর্ব
পর্যন্ত তাসবীহ-তাহলীল, তাওবা-
ইস্তিগফার ও কুরআন তিলাওয়াতে রত
থাকা।
লেখকঃ অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম
সূত্রঃ বই-প্রশ্নোত্তরে জুমু’আ ও খুৎবা
পরিমার্জনেঃ ডঃ মোহাম্মদ
মনজুরে ইলাহী,
ডঃ আবু বকর মুহাম্মদ
জাকারিয়া মজুমদার,
ডঃ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
৩:১৪৫, ১৫৪, ১৫৬, ১৬৮ (মুনাফিকীর লক্ষণ), ১৬৭, ৪:৭২, ৭৩,
৫:৫২,
৪:৭৭, ৭৮, ৮১, ৮৩, ৮৮-৯০, ৯১, ১৪১
৪:১৪১
৪:৯৪,
৫:৩৩, ৩৪,
৩:১৬৭, ৪:৭২, ৭৩, ৪: ৭৭, ১৪১,
জিহাদের ময়দানে : ৮:১৩
৪:৭৬ ,
৪:৯৪,
(হাজ্ব:৩৮) ....নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো বিশ্বাসঘাতক কৃতঘ্নকে পছন্দ করেন না৷
(ব্যাখ্যা :হকপন্থী মু’মিন ও কাফেরদের এ সংঘাতে আল্লাহ কেন হকপন্থীদের সাথে একটি পক্ষ হন এটি হচ্ছে তার কারণ। এর কারণ হচ্ছে, হকের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত দ্বিতীয় পক্ষটি বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞ এবং নিয়মাত অস্বীকারকারী। আল্লাহ তার কাছে যেসব আমানত সোপর্দ করেছেন তার প্রত্যেকটিতে সে খেয়ানত করেছে এবং তাকে যেসব নিয়মাত দান করেছেন অকৃতজ্ঞতা, অস্বীকৃতি ও নেমকহারামির মাধ্যমে তার প্রত্যেকটির জবাব দিয়ে চলছে।কাজেই আল্লাহ তাকে অপছন্দ করেন এবং তার বিরুদ্ধে সংগ্রামরত হক-পন্থীদেরকে সাহায্য-সহায়তা দান করেন।)
আরো বিস্তারিত দেখুন : ই > ইসলাম > ইসলাম বিরোধী।
৩:১৫৯ ( আপনার অনুগামীদের প্রতি কোমল হৃদয় হন, এবং তাদের ক্ষমা করুন ও তাদের জন্য ক্ষমা চান )
৪:৮৩,
(আরো দেখুন : ন > নেতা, অ > অনুমতি)
বিস্তারিত দেখুন : অ > অনুমতি
(১৮:৮৯) তারপর সে (যুলকারনাইন) (আর একটি অভিযানের) প্রস্তুতি নিল৷ ৯০) এমন কি সে সূর্যোদয়ের সীমানায় গিয়ে পৌঁছুলো৷ সেখানে সে দেখলো, সূর্য এমন এক জাতির ওপর উদিত হচ্ছে যার জন্য রোদ থেকে বাঁচার কোনো ব্যবস্থা আমি করিনি৷
(১৮:৯২) আবার সে (যুলকারনাইন) (আর একটি অভিযানের) আয়োজন করলো৷ ৯৩) এমনকি যখন দু পাহাড়ের মধ্যখানে পৌঁছুলো তখন সেখানে এক জাতির সাক্ষাত পেলো৷ যারা খুব কমই কোনো কথা বুঝতে পারতো৷
৪:৯৪
দেখুন : স > সেনাবাহিনী । (বিস্তারিত দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত সুলায়মান আ: > সুলায়মান আ: এর সৈন্যদের মধ্যে কি জ্বিনেরা অন্তর্ভূক্ত ছিল ? এবং আরো দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত সুলায়মান আ: এর অনুগত জ্বিনদের সম্পর্কে বর্ণনা)
দেখুন : স > সেনাবাহিনী।
৫:২০-২৬, ৩:১৪৬,
২:২৫০, ২৮৬,
আমাদের কাজের বাড়াবাড়ি মাফ করে দাও : ৩:১৪৭,
(1) فَلَا تُطِعِ الْكَافِرِينَ وَجَاهِدْهُم بِهِ جِهَادًا كَبِيرًا ﴿الفرقان: ٥٢﴾
অতএব অবিশ্বাসীদের আজ্ঞানুসরণ করো না, বরং তুমি এর সাহায্যে তাদের সঙ্গে জিহাদ করো কঠোর জিহাদে। (২৫: ৫২)
(2) وَمَن جَاهَدَ فَإِنَّمَا يُجَاهِدُ لِنَفْسِهِ إِنَّ اللَّهَ لَغَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ ﴿العنكبوت: ٦﴾
আর যে কেউ জিহাদ করে, সে তাহলে নিশ্চয়ই সংগ্রাম করে তার নিজেরই জন্যে। আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ বিশ্বজগতের উপরে অনন্য- নির্ভর। (২৯: ৬)
(3) وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتَّىٰ نَعْلَمَ الْمُجَاهِدِينَ مِنكُمْ وَالصَّابِرِينَ وَنَبْلُوَ أَخْبَارَكُمْ ﴿محمد: ٣١﴾
আর আমরা নিশ্চয়ই তোমাদের যাচাই করব যতক্ষণ না আমরা জানতে পারি তোমাদের মধ্যের কঠোর সংগ্রামশীলদের ও অধ্যবসায়ীদের, আর তোমাদের খবর আমরা পরীক্ষা করেছি। (৪৭: ৩১)
(4) لَّا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ عَلَى الْقَاعِدِينَ دَرَجَةً وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَىٰ وَفَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ عَلَى الْقَاعِدِينَ أَجْرًا عَظِيمًا ﴿النساء: ٩٥﴾
তাঁর কাছ থেকে বহু পদমর্যাদায় আর পরিত্রাণে এবং করুণাধারায়। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা। (৪: ৯৫)
(5) وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا وَإِنَّ اللَّهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِينَ ﴿العنكبوت: ٦٩﴾
পক্ষান্তরে যারা আমাদের জন্য সংগ্রাম করে, আমরা অবশ্যই তাদের পরিচালিত করব আমাদের পথগুলোয়। আর আল্লাহ্ নিশ্চয়ই সৎকর্মীদের সাথেই রয়েছেন। (২৯: ৬৯)
(6) تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ﴿الصف: ١١﴾
তোমরা আল্লাহ্তে ও তাঁর রসূলে বিশ্বাস করবে, আর আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করবে তোমাদের সম্পদ ও তোমাদের জীবন দিয়ে। এইটিই হচ্ছে তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা জানতে! (৬১: ১১)
(7) يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَابْتَغُوا إِلَيْهِ الْوَسِيلَةَ وَجَاهِدُوا فِي سَبِيلِهِ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ﴿المائدة: ٣٥﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আল্লাহ্কে ভয়-শ্রদ্ধা করো, আর তাঁর দিকে অছিলা অন্বেষণ করো, আর তাঁর পথে জিহাদ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। (৫: ৩৫)
(8) انفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالًا وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ﴿التوبة: ٤١﴾
বেরিয়ে পড় হাল্কাভাবে ও ভারী হয়ে আর তোমাদের ধনসম্পদ ও তোমাদের জানপ্রাণ দিয়ে আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করো। এটিই তোমাদের জন্য ভালো যদি তোমরা জানতে। (৯: ৪১)
(9) إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَالَّذِينَ هَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُولَٰئِكَ يَرْجُونَ رَحْمَتَ اللَّهِ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ ﴿البقرة: ٢١٨﴾
নিঃসন্দেহ যারা ঈমান এনেছিল ও যারা হিজরত করেছিল, এবং আল্লাহ্র রাস্তায় কঠোর সংগ্রাম করেছিল, -- এরাই আশা রাখে আল্লাহ্র করুণার। আর আল্লাহ্ ত্রাণকর্তা, অফুরন্ত ফলদাতা। (২: ২১৮)
(10) أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَ ﴿آلعمران: ١٤٢﴾
তোমরা কি বিবেচনা করছো যে তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করবে, অথচ আল্লাহ্ এখনো অবধারণ করেন নি তোমাদের মধ্যে কারা সংগ্রাম করেছে, আর যাচাই করেন নি কারা ধৈর্যশীল? (৩: ১৪২)
(11) لَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَن يُجَاهِدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِالْمُتَّقِينَ ﴿التوبة: ٤٤﴾
যারা আল্লাহ্তেও ও আখেরাতের দিনে আস্থা রাখে তারা তোমার কাছে অনুমতি চায় না তাদের ধনসম্পদ ও তাদের জানপ্রাণ দিয়ে সংগ্রাম করা থেকে। আর আল্লাহ্ ধর্মপরায়ণদের সম্পর্কে সর্বজ্ঞাতা। (৯: ৪৪)
(12) الَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ أَعْظَمُ دَرَجَةً عِندَ اللَّهِ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ ﴿التوبة: ٢٠﴾
যারা ঈমান এনেছে ও হিজরত করেছে, আর আল্লাহ্র পথে তাদের ধনদৌলত ও তাদের জানপ্রাণ দিয়ে সংগ্রাম করেছে, তারা আল্লাহ্র কাছে মর্যাদায় উন্নততর। আর এরা নিজেরাই সফলকাম। (৯: ২০)
(13) وَإِذَا أُنزِلَتْ سُورَةٌ أَنْ آمِنُوا بِاللَّهِ وَجَاهِدُوا مَعَ رَسُولِهِ اسْتَأْذَنَكَ أُولُو الطَّوْلِ مِنْهُمْ وَقَالُوا ذَرْنَا نَكُن مَّعَ الْقَاعِدِينَ ﴿التوبة: ٨٦﴾
আর যখন কোনো সূরা অবতীর্ণ হয় এই মর্মে -- 'আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনো ও তাঁর রসূলের সঙ্গী হয়ে সংগ্রাম করো’, তাদের মধ্যের শক্তি- সামর্থের অধিকারীরা তোমার কাছে অব্যাহতি চায় ও বলে -- ''আমাদের রেহাই দিন, আমরা বসে-থাকা-লোকদের সঙ্গে ই থাকবো।’’ (৯: ৮৬)
(14) وَالَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ آوَوا وَّنَصَرُوا أُولَٰئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا لَّهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ ﴿الأنفال: ٧٤﴾
আর যারা ঈমান এনেছে ও হিজরত করেছে ও আল্লাহ্র পথে জিহাদ করেছে, আর যারা আশ্রয় দিয়েছে ও সাহায্য করেছে, -- এরা নিজেরাই হচ্ছে প্রকৃত মুমিন। এদের জন্যেই রয়েছে পরিত্রাণ ও মহৎ জীবিকা। (৮: ৭৪)
(15) ثُمَّ إِنَّ رَبَّكَ لِلَّذِينَ هَاجَرُوا مِن بَعْدِ مَا فُتِنُوا ثُمَّ جَاهَدُوا وَصَبَرُوا إِنَّ رَبَّكَ مِن بَعْدِهَا لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ ﴿النحل: ١١٠﴾
তারপর তোমার প্রভু নিশ্চয়ই -- যারা হিজরত করে নির্যাতিত হবার পরে, তারপর জিহাদ করে ও অধ্যবসায় চালায় -- নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু এর পরে অবশ্যই পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা। (১৬: ১১০)
(16) إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُولَٰئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ ﴿الحجرات: ١٥﴾
নিঃসন্দেহ মুমিন তারাই যারা আল্লাহ্তে ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, তারপরে তারা সন্দেহ পোষণ করেনা, আর তাদের ধনসম্পদ ও তাদের জানপ্রাণ দিয়ে আল্লাহ্র পথে জিহাদ করে। এরাই খোদ সত্যনিষ্ঠ। (৪৯: ১৫)
(17) لَٰكِنِ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ جَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ وَأُولَٰئِكَ لَهُمُ الْخَيْرَاتُ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ ﴿التوبة: ٨٨﴾
কিন্তু রসূল এবং যারা তাঁর সঙ্গে ঈমান এনেছে তারা সংগ্রাম করে তাদের ধনদৌলত ও তাদের জানপ্রাণ দিয়ে। আর এরাই -- এদের জন্যেই রয়েছে কল্যাণ, আর এরা নিজেরাই হচ্ছে সফলকাম। (৯: ৮৮)
(18) وَالَّذِينَ آمَنُوا مِن بَعْدُ وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا مَعَكُمْ فَأُولَٰئِكَ مِنكُمْ وَأُولُو الْأَرْحَامِ بَعْضُهُمْ أَوْلَىٰ بِبَعْضٍ فِي كِتَابِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ ﴿الأنفال: ٧٥﴾
আর যারা পরে ঈমান এনেছে এবং গৃহত্যাগ করেছে ও তোমাদের সঙ্গে থেকে সংগ্রাম করেছে, তারাও তোমাদের মধ্যেকার। আর রক্তসম্পর্কের লোকেরা -- তারা আল্লাহ্র বিধানে পরস্পর পরস্পরের অধিকতর নিকটাত্মীয়। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞাতা। (৮: ৭৫)
(19) يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ ﴿التحريم: ٩﴾
হে প্রিয় নবী! জিহাদ করো অবিশ্বাসীদের ও মুনাফিকদের সঙ্গে, আর তাদের প্রতি কঠোর হও। আর তাদের আবাসস্থল হচ্ছে জাহান্নাম, আর মন্দ সেই গন্তব্যস্থান! (৬৬: ৯)
(20) يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ ﴿التوبة: ٧٣﴾
হে প্রিয় নবী! অবিশ্বাসীদের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করো, আর তাদের প্রতি কঠোর হও। আর তাদের আবাসস্থল জাহান্নাম। আর মন্দ সেই গন্তব্যস্থান। (৯: ৭৩)
(21) وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا وَإِن جَاهَدَاكَ لِتُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ ﴿العنكبوت: ٨﴾
আর আমরা মানুষকে তার পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু তারা যদি তোমার সঙ্গে জেদ করে যেন তুমি আমার সাথে এমন কিছু শরিক কর যার সন্বন্ধে তোমার কাছে কোনো জ্ঞান নেই, তাহলে তুমি তাদের আজ্ঞাপালন করো না। আমারই কাছে তোমাদের প্রত্যাবর্তন, তখন আমি তোমাদের জানিয়ে দেব যা কিছু তোমরা করছিলে। (২৯: ৮)
(22) الَّذِينَ يَلْمِزُونَ الْمُطَّوِّعِينَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ فِي الصَّدَقَاتِ وَالَّذِينَ لَا يَجِدُونَ إِلَّا جُهْدَهُمْ فَيَسْخَرُونَ مِنْهُمْ سَخِرَ اللَّهُ مِنْهُمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ﴿التوبة: ٧٩﴾
যারা বিদ্রূপ করে মুমিনদের মধ্যের তাদের যারা দানদক্ষিণায় বদান্য আর তাদের যারা কিছুই পায় না নিজেদের কায়িক শ্রম ব্যতীত, অথচ এদের তারা অবজ্ঞা করে, -- আল্লাহ্ তাদের অবজ্ঞা করবেন, আর তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি। (৯: ৭৯)
(23) وَجَاهِدُوا فِي اللَّهِ حَقَّ جِهَادِهِ هُوَ اجْتَبَاكُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ مِّلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ هُوَ سَمَّاكُمُ الْمُسْلِمِينَ مِن قَبْلُ وَفِي هَٰذَا لِيَكُونَ الرَّسُولُ شَهِيدًا عَلَيْكُمْ وَتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ فَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَاعْتَصِمُوا بِاللَّهِ هُوَ مَوْلَاكُمْ فَنِعْمَ الْمَوْلَىٰ وَنِعْمَ النَّصِيرُ ﴿الحج: ٧٨﴾
আর আল্লাহ্র পথে জিহাদ করো যেভাবে তাঁর পথে জিহাদ করা কর্তব্য। তিনি তোমাদের মনোনীত করেছেন, তবে তিনি তোমাদের উপরে ধর্মের ব্যাপারে কোনো কাঠিন্য আরোপ করেন নি। তোমাদের পিতৃপুরুষ ইব্রাহীমের ধর্মমত। তিনি তোমাদের নামকরণ করেছেন 'মুসলিম’, -- এর আগেই আর এতেও, যেন এই রসূল তোমাদের জন্য একজন সাক্ষী হতে পারেন এবং তোমরাও জনগণের জন্য সাক্ষী হতে পার। অতএব তোমরা নামায কায়েম করবে ও যাকাত আদায় করবে এবং আল্লাহ্কে শক্ত ক’রে ধরে থাকবে। তিনিই তোমাদের অভিভাবক, সুতরাং কত উত্তম এই অভিভাবক এবং কত উত্তম এই সাহায্যকারী! (২২: ৭৮)
(24) فَرِحَ الْمُخَلَّفُونَ بِمَقْعَدِهِمْ خِلَافَ رَسُولِ اللَّهِ وَكَرِهُوا أَن يُجَاهِدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَقَالُوا لَا تَنفِرُوا فِي الْحَرِّ قُلْ نَارُ جَهَنَّمَ أَشَدُّ حَرًّا لَّوْ كَانُوا يَفْقَهُونَ ﴿التوبة: ٨١﴾
যারা পেছনে রয়ে গিয়েছিল তারা আল্লাহ্র রসূলের পশ্চাতে তাদের বসে থাকাতেই আনন্দবোধ করলো, আর তাদের ধনদৌলত ও তাদের জানপ্রাণ দিয়ে আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করতে তারা বিমুখ ছিল, আর তারা বলেছিল -- ''এই গরমের মধ্যে বেরিয়ো না।’’ তুমি বলো -- ''জাহান্নামের আগুন আরো বেশী গরম।’’ যদি তারা বুঝতে পারতো! (৯: ৮১)
(25) أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تُتْرَكُوا وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنكُمْ وَلَمْ يَتَّخِذُوا مِن دُونِ اللَّهِ وَلَا رَسُولِهِ وَلَا الْمُؤْمِنِينَ وَلِيجَةً وَاللَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ ﴿التوبة: ١٦﴾
তোমরা কি মনে করো যে তোমাদের ছেড়ে দেয়া হবে, অথচ আল্লাহ্ জেনে নেন নি যে তোমাদের মধ্যের কারা সংগ্রাম করছে, আর কারা আল্লাহ্কে ছেড়ে দিয়ে বা তাঁর রসূলকে বাদ দিয়ে বা মুমিনদের ব্যতীত কোনো অন্তরঙ্গ বন্ধু গ্রহণ করে নি? আর তোমরা যা করো আল্লাহ্ সে-সন্বন্ধে পূর্ণ-ওয়াকিফহাল। (৯: ১৬)
(26) وَإِن جَاهَدَاكَ عَلَىٰ أَن تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ ﴿لقمان: ١٥﴾
''কিন্তু যদি তারা তোমার সঙ্গে পীড়া-পীড়ি করে যেন তুমি আমার সাথে অংশী দাঁড় করাও যে সন্বন্ধে তোমার কাছে কোনো জ্ঞান নেই, তাহলে তাদের উভয়ের আজ্ঞাপালন করো না, তবে তাদের সঙ্গে এই দুনিয়াতে সদ্ভাবে বসবাস করো। আর তার পথ অবলন্বন করো যে আমার প্রতি বিনয়াবনত হয়েছে, অতঃপর আমারই কাছে তোমাদের প্রত্যাবর্তনস্থান, তখন আমি তোমাদের জানিয়ে দেব যা তোমরা করে যাচ্ছিলে।’’ (৩১: ১৫)
(27) أَجَعَلْتُمْ سِقَايَةَ الْحَاجِّ وَعِمَارَةَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ كَمَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَجَاهَدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ لَا يَسْتَوُونَ عِندَ اللَّهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ ﴿التوبة: ١٩﴾
তোমরা কি হজযাত্রীদের পানি সরবরাহ করা ও পবিত্র মসজিদের দেখাশোনা করাকে তুল্যজ্ঞান করো তার সাথে যে আল্লাহ্র প্রতি ও পরকালের প্রতি আস্থা রেখেছে আর আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করছে? আল্লাহ্র কাছে ওরা সমতুল্য নয়। আর আল্লাহ্ অন্যায়কারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালন করেন না। (৯: ১৯)
(28) وَأَقْسَمُوا بِاللَّهِ جَهْدَ أَيْمَانِهِمْ لَا يَبْعَثُ اللَّهُ مَن يَمُوتُ بَلَىٰ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ ﴿النحل: ٣٨﴾
আর তাদের জোরালো শপথের দ্বারা তারা আল্লাহ্র নামে শপথ করে -- ''আল্লাহ্ তাকে পুনরুত্থিত করবেন না যে মারা গেছে।’’ না, এটি তাঁর উপরে নিয়োজিত পরম সত্য ওয়াদা, কিন্তু অধিকাংশ লোকেই জানে না, -- (১৬: ৩৮)
(29) وَأَقْسَمُوا بِاللَّهِ جَهْدَ أَيْمَانِهِمْ لَئِنْ أَمَرْتَهُمْ لَيَخْرُجُنَّ قُل لَّا تُقْسِمُوا طَاعَةٌ مَّعْرُوفَةٌ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ ﴿النور: ٥٣﴾
আর তারা তাদের সুদৃঢ় আস্থার সাথে আল্লাহ্র নামে কসম খায় যে যদি তুমি তাদের আদেশ করতে তাহলে তারা আলবৎ বেরিয়ে পড়ত। তুমি বলো, ''শপথ করো না, আনুগত্য তো জানাই আছে! তোমরা যা কর আল্লাহ্ নিশ্চয়ই সে-বিষয়ে ওয়াকিফহাল।’’ (২৪: ৫৩)
(30) وَيَقُولُ الَّذِينَ آمَنُوا أَهَٰؤُلَاءِ الَّذِينَ أَقْسَمُوا بِاللَّهِ جَهْدَ أَيْمَانِهِمْ إِنَّهُمْ لَمَعَكُمْ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فَأَصْبَحُوا خَاسِرِينَ ﴿المائدة: ٥٣﴾
আর যারা ঈমান এনেছে তারা বলবে -- ''এরাই কি তারা যারা আল্লাহ্র নামে তাদের জোরালো আস্থার সাথে শপথ গ্রহণ করেছিল যে তারা সুনিশ্চিত তোমাদের সঙ্গে?’’ তাদের ক্রিয়াকলাপ বৃথা গেল, কাজেই পরমুহূর্তে তারা হলো ক্ষতিগ্রস্ত। (৫: ৫৩)
(31) يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَن يَرْتَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ ﴿المائدة: ٥٤﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের মধ্যে থেকে যে কেউ তার ধর্ম থেকে ফিরে যায়, আল্লাহ্ তবে শীঘ্রই নিয়ে আসবেন একটি সম্প্রদায় -- তাদের তিনি ভালোবাসবেন ও তারা তাঁকে ভালোবাসবে, মুমিনদের প্রতি বিনীত, অবিশ্বাসীদের প্রতি কঠোর, তারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করবে, আর ভয় করবে না কোনো নিন্দুকের নিন্দা। এই হচ্ছে আল্লাহ্র এক আশিস -- তিনি তা প্রদান করেন যাকে তিনি ইচ্ছে করেন। আর আল্লাহ্ পরম বদান্য, সর্বজ্ঞাতা। (৫: ৫৪)
(32) وَأَقْسَمُوا بِاللَّهِ جَهْدَ أَيْمَانِهِمْ لَئِن جَاءَهُمْ نَذِيرٌ لَّيَكُونُنَّ أَهْدَىٰ مِنْ إِحْدَى الْأُمَمِ فَلَمَّا جَاءَهُمْ نَذِيرٌ مَّا زَادَهُمْ إِلَّا نُفُورًا ﴿فاطر: ٤٢﴾
আর তারা আল্লাহ্র নামে শপথ খায় তাদের সব চাইতে জোরালো শপথের দ্বারা যে যদি তাদের কাছে একজন সতর্ককারী আসতেন তাহলে তারা নিশ্চয়ই অন্যান্য সম্প্রদায়ের যে কোনোটির চেয়ে অধিকতর সৎপথাবলন্বী হতো। কিন্তু যখন তাদের কাছে একজন সতর্ককারী এলেন তখন তাতে বিতৃষ্ণা ব্যতীত তাদের আর কিছুই বাড়লো না, -- (৩৫: ৪২)
(33) وَأَقْسَمُوا بِاللَّهِ جَهْدَ أَيْمَانِهِمْ لَئِن جَاءَتْهُمْ آيَةٌ لَّيُؤْمِنُنَّ بِهَا قُلْ إِنَّمَا الْآيَاتُ عِندَ اللَّهِ وَمَا يُشْعِرُكُمْ أَنَّهَا إِذَا جَاءَتْ لَا يُؤْمِنُونَ ﴿الأنعام: ١٠٩﴾
আর তারা আল্লাহ্র নামে কসম খায় তাদের জোরালো শপথের দ্বারা যে যদি কোনো নিদর্শন তাদের কাছে আসতো তবে তারা নিশ্চয়ই তাতে বিশ্বাস করতো। বলো -- ''নিঃসন্দেহ নিদর্শনসমূহ আল্লাহ্র কাছেই রয়েছে। আর কেমন ক’রে তোমাদের জানানো যাবে যে যখন তা আসবে তারা বিশ্বাস করবে না?’’ (৬: ১০৯)
(34) إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالَّذِينَ آوَوا وَّنَصَرُوا أُولَٰئِكَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ وَالَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يُهَاجِرُوا مَا لَكُم مِّن وَلَايَتِهِم مِّن شَيْءٍ حَتَّىٰ يُهَاجِرُوا وَإِنِ اسْتَنصَرُوكُمْ فِي الدِّينِ فَعَلَيْكُمُ النَّصْرُ إِلَّا عَلَىٰ قَوْمٍ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُم مِّيثَاقٌ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ ﴿الأنفال: ٧٢﴾
নিঃসন্দেহ যারা ঈমান এনেছে ও হিজরত করেছে, আর তাদের ধনদৌলত ও তাদের জান-প্রাণ দিয়ে আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করেছে, আর যারা আশ্রয় দান করেছে ও সাহায্য করেছে, -- এরাই হচ্ছে পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। আর যারা ঈমান এনেছে, অথচ হিজরত করে নি, তাদের অভিভাবকত্ব কোনোভাবেই তোমাদের দায়িত্ব নয় যে পর্যন্ত না তারাও হিজরত করে। কিন্তু যদি তারা তোমাদের কাছে ধর্মের ব্যাপারে সাহায্য প্রার্থনা করে তবে সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য, অবশ্য সে-সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ছাড়া যাদের মধ্যে চুক্তি রয়েছে। আর তোমরা যা করো আল্লাহ্ তার সম্যক দ্রষ্টা। (৮: ৭২)
(35) قُلْ إِن كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُم مِّنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّىٰ يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ ﴿التوبة: ٢٤﴾
বলো, ''যদি তোমাদের পিতারা ও তোমাদের পুত্রেরা, আর তোমাদের ভাইয়েরা ও তোমাদের পরিবাররা, আর তোমাদের আত্মীয়স্বজন, আর মাল-আসবাব যা তোমরা অর্জন করেছ, আর ব্যবসা-বাণিজ্য যার অচলাবস্থা তোমরা আশঙ্কা করো, আর বাড়িঘর যা তোমরা ভালোবাসো -- তোমাদের কাছে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের ও তাঁর পথে সংগ্রামের চেয়ে অধিকতর প্রিয় হয় তবে অপেক্ষা করো যে পর্যন্ত না আল্লাহ্ নিয়ে আসেন তাঁর আদেশ।’’ আর আল্লাহ্ দুষ্কৃতিকারী সম্প্রদায়কে সৎপথ প্রদর্শন করেন না। (৯: ২৪)
(36) بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ تُلْقُونَ إِلَيْهِم بِالْمَوَدَّةِ وَقَدْ كَفَرُوا بِمَا جَاءَكُم مِّنَ الْحَقِّ يُخْرِجُونَ الرَّسُولَ وَإِيَّاكُمْ أَن تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ رَبِّكُمْ إِن كُنتُمْ خَرَجْتُمْ جِهَادًا فِي سَبِيلِي وَابْتِغَاءَ مَرْضَاتِي تُسِرُّونَ إِلَيْهِم بِالْمَوَدَّةِ وَأَنَا أَعْلَمُ بِمَا أَخْفَيْتُمْ وَمَا أَعْلَنتُمْ وَمَن يَفْعَلْهُ مِنكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَوَاءَ السَّبِيلِ ﴿الممتحنة: ١﴾
ওহে যারা ঈমান এনেছ! আমার শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, তোমরা কি তাদের প্রতি বন্ধুত্বের প্রস্তাব করবে, অথচ সত্যের যা-কিছু তোমাদের কাছে এসেছে তাতে তারা অবিশ্বাস করেছে, তারা রসূলকে ও তোমাদের বহিস্কার করে দিয়েছে যেহেতু তোমরা তোমাদের প্রভু আল্লাহ্তে বিশ্বাস কর। যদি তোমরা বেরিয়ে থাক আমার পথে সংগ্রাম করতে ও আমার প্রসন্নতা লাভের প্রত্যাশায়, তবে কি তোমরা তাদের প্রতি গোপনভাবেও বন্ধুত্ব দেখাবে, অথচ আমি ভাল জানি যা তোমরা গোপন রেখেছ এবং যা তোমরা প্রকাশ করছ? আর তোমাদের মধ্যে যে কেউ এটি করে সে তো তবে সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। (৬০: ১)
(১১:৫৪) আমরা তো মনে করি তোমার ওপর আমাদের কোন দেবতার অভিশাপ পড়েছে৷” হূদ বললোঃ “আমি আল্লাহর সাক্ষ পেশ করছি৷ আর তোমরা সাক্ষী থাকো তোমরা আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতায় আল্লাহকে ছাড়া যে অন্যদেরকে শরীক করে রেখেছো তা থেকে আমি মুক্ত৷
(১১:৫৫) তোমরা সবাই মিলে আমার বিরুদ্ধে যা করার করো, তাতে কোন ত্রুটি রেখো না এবং আমাকে একটুও অবকাশ দিয়ো না৷
জিহাদে যাওয়াকে যারা মনে করেছিল তাদেরকে মৃত্যুর দিকে হাকিয়ে নেওয়া হচ্ছে : ৮:৬,
হযরত আয়েশা (রা) বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মক্কা বিজয়ের পর আর হিজরত করার অবকাশ নেই। তবে জিহাদ ও নিয়্যাত অব্যাহত রয়েছে। তোমাদেরকে যখন জিহাদের জন্য ডাক দেয়া হবে, তখন তোমরা অবশ্যই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়বে। (বুখারী ও মুসলিম)
এ হাদীসের তাৎপর্য এই যে, এখন আর মক্কা মুয়াজ্জমা থেকে হিজরত করার কোন প্রয়োজন নেই। এই কারণে যে, মক্কা এখন দারুল ইসলামে পরিণত হয়েছে।
(রিয়াদুস সালেহীন : বই ১ :: হাদিস ৩)
বই ১ :: হাদিস ৮
হযরত আবু মুসা আশ’আরী (রা) বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলোঃ এক ব্যক্তি শৌর্য-বীর্য প্রদর্শনের জন্য, এক ব্যক্তি আত্মগৌরব ও বংশীয় মর্যাদার জন্য এবং অপর এক ব্যক্তি লোক দেখানের জন্য লড়াই করে। এদের মধ্যে কে আল্লাহর পথে জিহাদ করে? রাসূলে আকরাম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি কেবল আল্লাহর কালেমাকে বুলন্দ করার জন্য লড়াই করে সে-ই আল্লাহর পথে রয়েছে। (বুখারী ও মুসলিম)
৮:১৫, যারা জিহাদের ময়দান থেকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব, তবে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে পিছু হটা ভিন্ন কথা : ৮:১৬,
জিহাদ ঈমানদারদিগকে জীবন দান করে : ৮:২৪,
তোমাদেরকে যুদ্ধের জন্য বের হতে বললে মাটি কামড়ে পড়ে থাকো কেন? তোমরা কি আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিচ্ছো ? – ৯:৩৮,
(১৬:৯৪) ......কোনো পদক্ষেপ একবার দৃঢ় হবার পর আবার যেন পিছলে না যায় ..।
জিহাদে যু্দ্ধবন্দী : আরো দেখুন : য > যুদ্ধবন্দী ।
wRnv‡` hy×e›`x‡`i m¤úwK©Z ûKzg AvnKvg: hy×e›`x :
cÖ_‡g kÎæ‡`i kw³ fv‡jvfv‡e PyY© K‡i w`‡Z n‡e Zvi ci e›`x Kivi K_v wPšÍv Ki‡Z n‡e, : 8:67 (kÎæ‡`i‡K fv‡jvfv‡e chy©`¯Í bv Kiv ch©šÍ hy×e›`x‡`i wb‡Ri Kv‡Q ivLv bexi c‡ÿ DwPZ bq, KviY †Zvgiv PvI `ywbqvi ¯^v_© Avi Avjøvni mvg‡b i‡q‡Q Av‡LivZ),
hy×e›`x‡`i cÖwZ Avjøvni bmxnZ : 8:69-70 (hw` †Zvgiv mwVK c‡_ wd‡i Av‡mv, Zvn‡j ‡Zvgiv hv nvwi‡q‡Qv Zvi †P‡q †ekx cv‡e Ges Avjøvn †Zvg‡`i ÿgv Ki‡eb, Avi hw` wek¦vm NvZKZv Ki, Zvn‡j Gi c~‡e©I †Zv wek¦vm NvZKZv K‡i‡Qv Ges Gi mvRv ¯^iƒc gymjgvb‡`i nv‡Z ew›` n‡q‡Qv)|
gy¯Ívwgb ev wbivcËv cÖv_x© msµvšÍ ûKzg :
hw` gyk‡iK‡`i †KD †Zvgv‡`i Kv‡Q AvkÖq Pvq Z‡e Zv‡`i‡K AvkÖq `vI Ges KziAvb †kvbvi my‡hvM `vI, Ges Zv‡K wbivc` RvqMvq †cŠwQ‡q `vI- Zviv AÁ e‡jB GgbwU Kiv DwPZ : 9:6,
জিহাদে নেতৃত্বের গুণাবলী, দায়িত্ব ও কর্তব্য : সমূহ :
মু’মিনদেরকে সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য উদ্ধুদ্ধ করা :৮:৬৫,
জিহাদে নেতৃত্বের আনুগত্য :
মদীনাবাসী ও তাদের আশপাশে বেদুইনদের জন্য আল্লাহর রসূলকে ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে থাকা এবং তার ব্যাপারে বেপরোয়া হয়ে নিজেদের জীবনের চিন্তায় মশগুল হয়ে যাওয়া কোনক্রমেই সমীচীন ছিল না৷ কারণ আল্লাহর পথে তারা যখনই ক্ষুধা-তৃষ্ণা ও শারীরিক কষ্ট ভোগ করবে, যখনই এমন পথ অবলম্বন করবে যা সত্য অমান্যকারীদের কাছে অসহনীয় এবং যখনই কোন দুশমনের ওপর (সত্যের প্রতি দুশমনির) প্রতিশোধ নেবে তৎক্ষনাৎ তার বদলে তাদের জন্য একটি সৎকাজ লেখা হবেই৷ এর ব্যতিক্রম কখনো হবে না৷ অবশ্যি আল্লাহর দরবারে সৎ কর্মশীলদের পরিশ্রম বিফল যায় না – ৯:১২০,
wRnv` , kvwšÍ Pzw³ , mwÜ :
wRnv`/hy× Hme RvwZi mv‡_ Kivi wewaweavb hviv kvwšÍPzw³i Aax‡b i‡q‡Q :
‡`Lyb : KVWŠÍ PZW³ :8:56-57 |
hw` kÎæcÿ mwÜ I kvwšÍ Pvq Z‡e †ZvgivI mwÜ Ki : 8:61, hw` Zviv cÖZvwiZ K‡i Z‡e Avjøvn †Zvgv‡`i mv‡_ i‡q‡Qb :8:62,
‡h wRwbm¸‡jv gvbyl‡K wRnv` ‡_‡K weiZ iv‡L :
পিতা, সন্তান, ভাই, স্ত্রী, আত্নীয় স্বজন, উপার্জিত সম্পদ, ব্যবসা-বাণিজ্য, বাসস্থান এ জিনিসগুলো যদি তোমাদের কাছে আল্লাহ, তার রাসূল ও আল্লাহর পথে জিহাদ করার চাইতে বেশী প্রিয় হয়, তাহলে আল্লাহর ফায়সালার জন্য অপেক্ষা করা, আল্লাহ এ ধরণের ফাসেক লোকদেরকে কখনোই সৎপথের সন্ধান দেন না : ৯:২৪,
ধনসম্পদ ও সন্তান সন্ততি আসলে পরীক্ষার সামগ্রী, কারণ আল্লাহর কাছে দেবার মত অনেক কিছুই আছে : ৮:২৮,
‡n Cgvb`viiv hw` †Zvgv‡`i wcZv I åvZvI Cgv‡bi Dci Kzdix‡K cÖvavb¨ †`q, Z‡e Zviv ‡Zvgv‡`i eÜz bq, Zv‡`i‡K eÜz wn‡m‡e MÖnY K‡ivbv : 9:23,
‡Zvgiv hv wKQz LiP Ki‡e Zvi cÖwZ`vb Aek¨B †Zvgiv cv‡e :8:60,
কি ব্যাপার যে, তোমরা আল্লাহর পথে খরচ করছো না, অথচ যমীন ও আসমানের উত্তরাধিকার তাঁরই৷ তোমাদের মধ্যে যারা বিজয়ের পরে অর্থ ব্যয় করবে ও জিহাদ করবে তারা কখনো সেসব বিজয়ের সমকক্ষ হতে পারে না যারা বিজয়ের পূর্বে ব্যয় করেছে ও জিহাদ করেছে৷ বিজয়ের পরে ব্যয়কারী ও জিহাদকারীদের তুলনায় তাদের মর্যাদা অনেক বেশী৷ যদিও আল্লাহ উভয়কে ভাল প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ তোমরা যা করছো আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত -৫৭:১০,
“শীঘ্রই তোমাদের রব তোমাদের শত্রুকে ধ্বংস করে দেবেন এবং পৃথিবীতে তোমাদের খলীফা করবেন, তারপর তোমরা কেমন কাজ করো তা তিনি দেখবেন৷”৭:১২৯,
(১৭:৭৯) আর রাতে তাহাজ্জুদ পড়ো এটি তোমার জন্য নফল৷ অচিরেই তোমার রব তোমাকে “প্রশংসিত স্থানে” প্রতিষ্ঠিত করবেন৷
(ব্যাখ্যা : অর্থাৎ দুনিয়ায় ও আখেরাতে তোমাদেরকে এমন মার্যাদায় পৌঁছে দেবেন যেখানে তোমরা মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়ে থাকবে । তোমাদের অস্তিত্ব দুনিয়ায় একটি প্রশংসণীয় অস্তিত্বে পরিণত হবে । আজ তোমাদের বিরোধীরা গালাগালি ও নিন্দাবাদের মাধ্যমে তোমাদের অভ্যর্থনা করছে এবং সারাদেশে তোমাদের বদনাম করার জন্য তোমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদের তুফান সৃষ্টি করে রেখেছে । কিন্তু সে সময় দূরে নয় যখন সারা দুনিয়ায় তোমাদের প্রশংসা শ্রুত হবে এবং আখেরাতেও তোমরা সমগ্র সৃষ্টির প্রশংসার অধিকারী হবে । কিয়ামতের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শাফায়াতকারীর মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হওয়াও এ প্রশংসনীয় মর্যাদারই একটি অংশ ।)
আল্লাহ তাঁর সাহায্য দ্বারা শক্তিশালী করবেন, উত্তম জীবনোপকরন দান করবেন : ৮:২৬, রাসূল সা: ও তাঁর ঈমানদার সাথীরা যারা জানপ্রাণ দিয়ে জিহাদ করেছে তাদের জন্যই রয়েছে সমস্ত কল্যাণ ও সাফল্য এবং পরকালীন নেয়ামতে ভরা জান্নাত : ৯:৮৮, ৮৯,
“শীঘ্রই তোমাদের রব তোমাদের শত্রুকে ধ্বংস করে দেবেন এবং পৃথিবীতে তোমাদের খলীফা করবেন, তারপর তোমরা কেমন কাজ করো তা তিনি দেখবেন৷”৭:১২৯,
অনুরূপভাবে তারা যখনই (আল্লাহর পথে) কম বা বেশী কিছু সম্পদ ব্যয় করবে এবং (সংগ্রাম সাধনায়) যখনই কোন উপত্যকা অতিক্রম করবে, অমনি তা তাদের নামে লেখা হয়ে যাবে, যাতে আল্লাহ তাদেরকে তাদের এ ভাল কাজের পুরস্কার দান করেন-৯:১২১,
আল্লাহর পথে মু’মিনরা যখনই ক্ষুধা-তৃষ্ণা ও শারীরিক কষ্ট ভোগ করবে, যখনই এমন পথ অবলম্বন করবে যা সত্য অমান্যকারীদের কাছে অসহনীয় এবং যখনই কোন দুশমনের ওপর (সত্যের প্রতি দুশমনির) প্রতিশোধ নেবে তৎক্ষনাৎ তার বদলে তাদের জন্য একটি সৎকাজ লেখা হবেই৷ এর ব্যতিক্রম কখনো হবে না৷ অবশ্যি আল্লাহর দরবারে সৎ কর্মশীলদের পরিশ্রম বিফল যায় না – ৯:১২০,
সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অনাচারের কারণে যে আযাব আসে তা শুধু গোনাহগারদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না : ৮:২৫, ৭:১৬৩-১৬৬
তোমরা যদি জিহাদে বের না হও তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে য্ন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেবেন : ৯:৩৯,
তোমাদের জায়গায় অন্য লোকদের দিয়ে এ কাজ করাবেন : ৯:৩৯,
হে ঈমানদারেরা তোমরা যদি আল্লাহর রাসূলকে সহযোগিতা না করতে চাও তবে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট : ৯:৪০ (মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করার সময় প্রায় একাকী অবস্থায় নবীকে এক গুহার মধ্যে সহযোগিতা করেছেন আল্লাহ),
যখনই জিহাদের হুকুম নাযিল হয়েছে তখনই মুনাফিকরা ঘরে বসে থাকা মহিলাদের সাথে শামিল হয়ে ঘরে বসে থাকতে চেয়েছে, তাই আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন, তাই কাফের অবস্থায় মৃত্যবরণ করা আল্লাহ তাদের জন্য অবধারিত করে দিয়েছেন, আর তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তদ শাস্তি: ৯:৮৬-৮৭,
১। রুগ্ন ২। দুর্বল ৩। জিহাদে যোগদান করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নেই, ৪। প্রয়োজনীয় বাহন নেই, ৫। কিন্তু তারা যুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী সেনাপতির কাছে যুদ্ধে যাবার জন্য বাহন চায়, ৬। তারা আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি আন্তরিক ভাবে বিশ্বস্ত ৭। যুদ্ধে যাবার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে, ৮। জিহাদে যেতে না পেরে তাদের অন্তরে কষ্ট পায় এবং নয়ন অশ্রুসিক্ত হয় – এ ধরণের লোক জিহাদের অংশগ্রহণ না করতে পারলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন অবকাশ নেই : ৯:৯১-৯২,
Z›`ªvi gva¨‡g, e„wócv‡Zi gva¨‡g, †d‡ikZv †cÖi‡Yi gva¨‡g : 8:9-11,
Kv‡di‡`i ˆmb¨ msL¨v Kg †`wL‡q gyÕwgb †hv×v‡`i mvnm e„w×i gva¨‡g: 8:43 (e`i hy‡×i c~e©g~û‡Z© ivm~j mv:‡K ¯^‡cœi gva¨‡g Kv‡di‡`i ˆmb¨ msL¨v Kg †`Lv‡bv nq), 8:44,
wRnv‡` Avjøvn gyÕwgb‡`i mv‡_ i‡q‡Qb, Kv‡di‡`i mv‡_ †bB, eis Avjøvn Kv‡di‡`i weiæ‡× i‡q‡Qb : 8:19
wRnv‡` mvnm nvwi‡q †djvi gZ Ae¯’v †_‡K Avjøvn gyÕwgb‡`i iÿv K‡i‡Qb :8:43,
gyÕwgb‡`i wekRb meiKvix †hv×v Kv‡di‡`i `yÕk R‡bi Dci Rq n‡e Avi gyÕwgb‡`i meiKvix GKkRb †hv×v Kv‡di‡`i GKnvRvi R‡bi Dci Rqx n‡e : 8:65,
gyÕwgb‡`i 100Rb meiKvix †hv×v Kv‡di‡`i 200 R‡bi Dci Rq n‡e Avi gyÕwgb‡`i meiKvix 1000 †hv×v Kv‡di‡`i 2000 R‡bi Dci Rqx n‡e : 8:66 (‡h‡nZz GLbI †Zvgv‡`i g‡a¨ `ye©jZv Av‡Q Ges ˆbwZK gvb GLbI c~Y©Zv jvf K‡iwb, ZvB Avjøvn †Zvgv‡`i †evSv nvjKv K‡i w`‡jb|)
‡Zvgiv wK gvbyl‡K fq Ki? A_P †Zvgiv hw` gyÕwgb n‡q _v‡Kv Z‡e Avjøvn‡KB †ekx fq Kiv DwPZ - 9:13,
প্রকৃত মু’মিনরা বলে ““আল্লাহ আমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা ছাড়া আর কোন (ভাল বা মন্দ )কিছুই আমাদের হয় না৷ আল্লাহই আমাদের অভিভাবক ও কার্যনির্বাহক এবং ঈমানদরদের তাঁর ওপরই ভরসা করা উচিত” – ৯:৫১ (জিহাদের ময়দানে ভালো বা মন্দ প্রসঙ্গে) তবে আমাদের দুটি ভালোর মধ্যে একটি ভালো তো অবশ্যই হবে : ৯:৫২,
(২১:৯) তারপর দেখে নাও আমি তাদের সাথে আমার প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছি এবং তাদেরকে ও যাকে যাকে আমি চেয়েছি রক্ষা করেছি এবং সীমালংঘনকারীদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি৷
(হাজ্ব:৩৮) নিশ্চয়ই আল্লাহ ঈমানদারদের সংরক্ষণ করেন।
(ব্যাখ্যা : মূলে (আরবী) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর উৎপত্তি হয়েছে (আরবী) থেকে। এ শব্দটির আসল মানে হচ্ছে, কোন জিসিকে হটিয়ে দেয়া ও সরিয়ে দেয়া। কিন্তু যখন "দফা" করার পরিবের্ত "মুদাফা'আত" করার কথা বলা হবে তখন এর মধ্যে আরো দু'টি অর্থ শামিল হয়ে যাবে। এক কোন শত্রুশক্তি আক্রমণ চালাচ্ছে এবং প্রতিরক্ষাকারীতার মোকাবিলা করছে। দুই, এ মোকাবিলা শুধুমাত্র একবারেই শেষ হয়ে যায়নি বরং যখনই আক্রমণকারী আক্রমণ করে তখনই এ প্রতিরক্ষাকারী তার মোকাবিলা করে। এ দু'টি অর্থ সামনে রেখে বিচার করলে মু'মিনদের পক্ষ থেকে আল্লাহর 'মুদাফা'আত' করার অর্থ এই বুঝা যায় যে, কুফর ও ঈমানে সংঘাতে মু'মিনরা একা ও নিসংগ হয় না বরং আল্লাহ নিজেই তাদের সাথে এক পক্ষ হয়ে দাঁড়ান। তিনি তাদেরকে সমর্থন দান করেন। তাদের বিরুদ্ধে শত্রুদের কৌশল ব্যর্থ করে দেন। অনিষ্টকারকদের অনিষ্টকে তাদের থেকে দূরে সরিয়ে দিতে থাকেন। কাজেই এ আয়াতটি আসলে হক পন্থীদের জন্য একটি বড় রকমের সুসংবাদ। তাদের মনকে সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করার জন্য এর চেয়ে বড় আর কোন জিনিস হতে পারে না।)
জিহাদে ফেলেশতাদের মাধ্যমে আল্লাহ সাহায্য করেন, একথা আল্লাহ বললেন তোমাদের অন্তরে যেন নিশ্চিন্ততা আসে, নয়তো সাহায্য যখন আসে আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে, আল্লাহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে মু’মিনদের সাহায্য করেন : ৮:১০, ৯:২৬,
তন্দ্রার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য :৮:১১, আকাশ থেকে পানি বর্ষণের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য :৮:১১,
জিহাদে ফেরেশতা দ্বারা আল্লাহ সাহায্য করে থাকেন: ৮:৯, ১২, ৯:২৬,
মু’মিনদের কদম মজবুত রাখার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য : ৮:১১
মু’মিনদের অন্তর পরস্পরের সাথে জুড়ে দেওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য : ৮:৬৩ (তুমি সারা দুনিয়ার সমস্ত সম্পদ ব্যয় করলেও তাদের অন্ত পরস্পরের সাথে জোড়া দিতে পারতে না),
যারা ঈমান এনেছে, হিজরাত করেছে এবং জানের বাজী রেখে জিহাদ করেছে, তরাই পরস্পরের বন্ধু ও অভিভাবক :৮:৭২ , (আরো দেখুন : বন্ধু ও অভিভাবক)
দারুল হরব ও দারুল কুফরে অবস্থিত মুসলমানদের সম্বন্ধে এবং যুদ্ধবন্দীদের সম্বন্ধে দারুল ইসলামে অবস্থিত মুসলমানদের জন্য পালনীয় বিধি বিধান :৮:৭০-৭৩ (তোমরা যদি এ বিধিবিধান গুলো পালন না কর, তবে পৃথিবীতে ফিতনা ও বিপর্যয় সৃষ্টি হবে।)
কাফেরদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য : ৮:১২,
মু’মিনদের মনে যুদ্ধের ময়দানে “ছাকীনা” (শান্তি) নাযিল করার মা্ধ্যমে আল্লাহর সাহায্য :৯:২৬,
জিহাদের ময়দানে আল্লাহ সরাসরি সাহায্য করেন :৮:১৭ (তোমরা তাদেরকে হত্যা করনি, বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন),
ঈমানদারদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট :৮:৬৪,
আল্লাহ মু’মিনদের কার্যনির্বাহী এবং কাফেরদের বিরুদ্ধে তিনিই তাদের কাজে সাহায্য করবেন :৮:৪০, نِعْمَ الْمَوْلَىٰ وَنِعْمَ النَّصِيرُ﴾ নি’মাল মাওলা ওয়া নি’মান নাসীর )
হে নবী তোমাকে সহায়তা করেছেন আল্লাহ নিজের সাহায্য দ্বারা এবং মু’মিনদের দ্বারা :৮:৬৩,
(১৭:৬) এরপর আমি তোমাদেরকে তাদের ওপর বিজয় লাভের সুযোগ করে দিয়েছি এবং তোমাদেরকে সাহায্য করেছি অর্থ ও সন্তানের সাহায্যে আর তোমাদের সংখ্যা আগের চেয়ে বাড়িয়ে দিয়েছি৷
(হাজ্ব:৭৮) ...তিনি তোমাদের অভিভাবক, বড়ই ভালো অভিভাবক তিনি, বড়ই ভালো সাহায্যকারী তিনি৷
(১৭:৬) এরপর আমি তোমাদেরকে তাদের ওপর বিজয় লাভের সুযোগ করে দিয়েছি এবং তোমাদেরকে সাহায্য করেছি অর্থ ও সন্তানের সাহায্যে আর তোমাদের সংখ্যা আগের চেয়ে বাড়িয়ে দিয়েছি৷
Kv‡di‡`i g‡b AvZ¼ m„wói K‡i †`‡eb : 8:12,
Kv‡di‡`i †KŠkj¸‡jv Avjøvn `ye©j K‡i †`‡eb:8:17,
Kv‡di‡`i `„wó‡Z gymjgvb‡`i ˆmb¨ msL¨v Kg K‡i †`Lv‡jb (hv‡Z Zviv hy‡× AMÖmi nq ) :8:44 (e`i hy‡×i mgq),
A½xKvi f½Kvix Kv‡di gykwiK hviv Avjøvni ivmyj‡K †`k †_‡K ewn¯‹v‡ii Pµv‡šÍ kvwgj n‡qwQj Zv‡`i‡K Avjøvn gyÕwgb‡`i Øviv hy‡×i gva¨‡g Zv‡`i‡K kvw¯Í cÖ`vb Ki‡eb, jvwÃZ Ki‡eb I gyÕwgb‡`i g‡bi R¡vjv Ryov‡eb : 9:14,
wRnv` m¤ú‡K© Kv‡di m¤úª`vq‡K Avjøvni e³e¨ :
wRnv‡` Kv‡diiv †n‡i hvIqvi ci Avjøvn e‡jb : GLb hw` ÿvšÍ nI Z‡e fv‡jv bB‡j Bmjv‡gi weiæ‡× jvM‡Z †M‡j G Ae¯’vB n‡e: 8:19,
Kv‡di‡`i `jej hZ †ekxB †nvK bv †Kb, Zv Zv‡`i †Kvb Kv‡R Avm‡e bv : 8:19,
wRnv‡` Avjøvn gyÕwgb‡`i mv‡_ i‡q‡Qb, †Zvgv‡`i mv‡_ †bB, eis Avjøvn †Zvgv‡`i weiæ‡× i‡q‡Qb : 8:19
kqZvb Kv‡di‡`i‡K gymjgvb‡`i weiæ‡× hy‡× D‡¯‹ †`q Ges e‡j †ZvgivB weRqx n‡e Ges Avwg †Zvgv‡`i mv‡_ AvwQ, wKš‘ hLb m¤§yL mgi ïiæ nq ZLb kqZvb cvwj‡q hvq : 8:48 (kqZvb ZLb e‡j: ‡Zvgiv Kv‡di‡`i mv‡_ Avgvi †Kvb m¤úK© †bB, Avwg Ggb wKQz †`LwQ, hv †Zvgiv †`Lbv, Avwg Avjøvn‡K fq cvw”Q),
hy‡×i gq`v‡b wbnZ Kv‡di‡`i iƒn †d‡ikZv Keh Kivi mgq Zv‡`i wc‡V I †Pnvivq AvNvZ K‡i Ges e‡j bvI Gevi R¡vjv †cvovi kvw¯Í †fvM Ki: 8:50-52,
gynv¤§` mv: Gi weiæ‡× hy×Kvix‡`i †divDb I G ai‡Yi c~e©eZx©‡jvK‡`i gZ GKB fvM¨ eiY K‡i wb‡Z n‡q‡Q : 8:52,
Kv‡di/mZ¨A¯^xKvi Kvixiv †hb GK_v g‡b bv K‡i †h, Zviv wR‡Z †M‡Q, eis Zviv Avwg Avjøvn‡K nviv‡Z cvi‡ebv : 8:58,
Zviv (Bmjvg we‡ivaxiv) Ggb ai‡Yi †jvK hv‡`i †evakw³ †bB : 8:65,
‡Zvgiv Avjøvn‡K Aÿg I kw³ nxb Ki‡Z cvi‡e bv Avi mZ¨ A¯^xKviKvix‡`i‡K Avjøvn Aek¨B jvwÃZ Ki‡eb : 9:2-3,
‡Zvgv‡`i‡K Avjøvn gyÕwgb‡`i Øviv hy‡×i gva¨‡g kvw¯Í cÖ`vb Ki‡eb, jvwÃZ Ki‡eb I gyÕwgb‡`i g‡bi R¡vjv Ryov‡eb : 9:14-15 (GgbI n‡Z cv‡i Gi d‡j †Kvb †Kvb Kvwdi ev gykwi‡Ki ZIev Kivi my‡hvM bmxe nq‡Zv n‡q †h‡Z cv‡i),
আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন৷ তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে এবং মারে ও মরে : ৯:১১১,
আল্লাহ ছাড়া তোমাদের আর কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী নেই, জীবন মৃত্যু তাঁরই আয়ত্বাধীন : ৯:১১৬,
মদীনাবাসী ও তাদের আশপাশে বেদুইনদের জন্য আল্লাহর রসূলকে ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে থাকা এবং তার ব্যাপারে বেপরোয়া হয়ে নিজেদের জীবনের চিন্তায় মশগুল হয়ে যাওয়া কোনক্রমেই সমীচীন ছিল না-৯:১২০,
আল্লাহর পথে মু’মিনরা যখনই ক্ষুধা-তৃষ্ণা ও শারীরিক কষ্ট ভোগ করবে, যখনই এমন পথ অবলম্বন করবে যা সত্য অমান্যকারীদের কাছে অসহনীয় এবং যখনই কোন দুশমনের ওপর (সত্যের প্রতি দুশমনির) প্রতিশোধ নেবে তৎক্ষনাৎ তার বদলে তাদের জন্য একটি সৎকাজ লেখা হবেই৷ এর ব্যতিক্রম কখনো হবে না৷ অবশ্যি আল্লাহর দরবারে সৎ কর্মশীলদের পরিশ্রম বিফল যায় না – ৯:১২০,
অবশ্যি আল্লাহর দরবারে সৎ কর্মশীলদের পরিশ্রম বিফল যায় না – ৯:১২০,
gymjgvb‡`i ag©B gymjgvb‡`i gv_v weM‡o w`‡q‡Q, (ZvB Zviv wRnv` K‡i Ges mvg‡b g„Zz¨¸nv †`‡LI hy‡× Svwc‡q c‡o) :8:49 (e`i hy‡×i mgq g`xbvi gybvwdK‡`i e³e¨),
যুদ্ধে যদি সহজ ভাবে কিছু লাভ করার সম্ভাবনা থাকতো এবং ভ্রমন যদি সহজ হতো তাহলেই শুধুমাত্র মুনাফিকরা জিহাদে যোগদান করতো : ৯:৪২,
মুনাফিকদের জন্য জিহাদের পথ বড়ই কঠিন : ৯:৪২ (তারা নিজেরাই নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে),
মুনাফিকেরা কসম করে বলে যদি আমরা চলতে পারতাম তবে অবশ্যই মু’মিনদের সাথে জিহাদে বের হতাম: ৯:৪২ (যদি আমরা চলতে পারতাম তবে অবশ্যই তোমাদের সাথে চলতাম),
মুনাফিকেরা মিথ্যাবাদী আল্লাহ তা জানেন : ৯:৪২,
মুনাফিকেরা জিহাদে যাওয়া থেকে অব্যাহতি চাইলে আল্লাহর রাসূল সা; তাদেরকে অব্যাহতি কেন দিলেন – আল্লাহর প্রশ্ন : ৯:৪৩ (যদি অব্যহতি না দিতেন তাহলে মুনাফিকদের মিথ্যা ঈমানের দাবী প্রমাণিত হয়ে যেত),
মু’মিনদের বক্তব্য : আমরা তোমাদের ব্যাপারে যে জিনিসের অপেক্ষায় আছি তা হচ্চে এই যে আল্লাহ হয় নিজেই তোমাদের শাস্তি দেবেন, না হয় আমাদের হাত দিয়ে দেয়াবেন (জিহাদ যুদ্ধের মাধ্যমে), তাহলে এখন তোমরা অপেক্ষা করোএবং আমরা ও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় থাকছি”-৯:৫২,
মু’মিনদের বক্তব্য “তোমরা আমাদের ব্যাপারে যে জিনিসের অপেক্ষায় আছো তা দু’টি ভালোর মধ্যে একটি ভালো ছাড়া আর কি ? “ – ৯:৫২,
(ব্যাখ্যা : মুনাফিকরা তাদের অভাস অনুযায়ী এ সময়ও কুফর ও ইসলামের সংঘাতে অংশ না নিয়ে নিজেরা চরম বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিচ্ছে বলে মনে করেছিল।এ সংঘাতের পরিণামে রসূল ও তার সাহাবীরা বিজয়ীর বেশে ফিরে আসেন , না রোমীদের সামরিক শক্তির সাথে সংঘর্ষে ছিন্নভিন্ন হয়ে যান, দূরে বসে তারা তা দেখতে চাচ্ছিল। এখানে তাদের প্রত্যাশার জবাব দেয়া হয়েছিল। বলা হয়েছে , দুটি ফলাফলের মধ্যে তোমরা একটির প্রকাশের অপেক্ষা করছো। অথচ ঈমানদারদের জন্য উভয় ফলাফলই যথার্থ ভাল ও কল্যাণ ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা বিজয়ী হলে, এটা যে তাদের জন্য ভাল একথা সবার জানা । কিন্তু নিজেদের উদ্দেশ্য সম্পাদনের পথে প্রাণ দান করে যদি তারা মাটিতে বিলীন হয়ে যায়, তাহলে দুনিয়াবাসীরা তাদের চরম ব্যর্থ বলে মনে করলেও প্রকৃতপক্ষে এটিও আর এক রকমের সাফল্য। কারণ মুমিন একটি দেশ জয় করলো কি করলো না অথবা কোন সরকার প্রতিষ্ঠিত করলো কি না, এটা তার সাফল্য ও ব্যর্থতার মাপকাঠি নয়। বরং মুমিন তার আল্লাহর কালেমা বুলন্দ করার জন্য নিজের মন, মস্তিস্ক ,দেহ ও প্রাণের সমুদয় শক্তি নিয়োজিত করেছে কিনা, এটাই তার মাপকাঠি । এ কাজ যদি সে করে থাকে তাহলে দুনিয়ার বিচারে তার ফলাফল শূণ্য হলেও আসলে সে সফলকাম )
যুদ্ধে যেতে এবং ধন-প্রাণ দিয়ে জিহাদ করতে অস্বীকার করে মুনাফিকরা: ৯:৮১,
মু’মিনদের সাথে যুদ্ধে না গিয়ে আনন্দ করে মুনাফিকরা : ৯:৮১,
মুনাফিকরা মু’মিনদেরকে যুদ্ধে যেতে অনুৎসাহিত করে : ৯:৮১ (তারা লোকদেরকে বললো, “এ প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বের হয়ো না”৷ তাদেরকে বলে দাও,জাহান্নামের আগুন এর চেয়েও বেশী গরম , হায়! যদি তাদের সেই চেতনা থাকতো! )
যারা প্রকৃত পক্ষেই আহাম্মক প্রকৃতির লোক, দুনিয়ার কোন জিনিসেরই যাদের কাছে কোন গুরুত্ব নেই, সেই ধরণের ভাঁড় ও আহাম্মক প্রকৃতির মুনাফিকদের হয়ত আল্লাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন, আর যারা প্রকৃত পক্ষে মুনাফিক ইসলাম কে জেনে বুঝে শুধুমাত্র স্বার্থ রক্ষার জন্য ঈমান আনে আর জেনে বুঝে শুধুমাত্র মুসলমানদের জিহাদি জযবা কে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ইসলামেরসাথে ঠাট্টা করে সেই ধরণের মুনাফিকদের আল্লাহ কখনোই মাফ করবেন না : ৯:৬৬,
মুনাফিকেরা জিহাদে যাওয়া থেকে অব্যাহতি চাইলে আল্লাহর রাসূল সা; তাদেরকে অব্যাহতি কেন দিলেন – আল্লাহর প্রশ্ন : ৯:৪৩ (যদি অব্যহতি না দিতেন তাহলে মুনাফিকদের মিথ্যা ঈমানের দাবী প্রমাণিত হয়ে যেত),
যারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে তারা কখনো জান মাল বিসর্জন দিয়ে জিহাদ/যুদ্ধ থেকে অব্যহতি চাইতে পারেনা : ৯:৪৪,
জিহাদ / যুদ্ধ থেকে তো অব্যহতি চায় তারাই যারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখেনা, বরং সন্দেহ পোষণ করে : ৯:৪৫
জিহাদে যেতে ইচ্ছুক কিনা তা বোঝা যাবে ব্যক্তির প্রস্ততি দেখে : ৯:৪৬,
যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী নয় বরং সন্দেহ পোষণ করে এবং মিথ্যা ঈমানের দাবী করে ও জিহাদে যেতে মোটেও ইচ্ছুক নয়, আল্লাহ শেষ পর্যন্ত এ ধরণের লোকদের থেকে জিহাদে যাবার তৌফিক ছিনিয়ে নেন : ৯:৪৬ (বসে থাকো, যারা বসে আছে তাদের সাথে ),
আসলে মুনাফিকদেরকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে যুদ্ধে নেয়া উচিত নয়, তাহলে তারা বরং আরো মু’মিনদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করবে : ৯:৪৭ (আল্লাহ জালিমদের ভালোভাবেই চিনেন)।
ইতিপূর্বেও মুনাফিকরা যুদ্ধ সম্পর্কিত ফিতনা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল : ৯:৪৮ (কিন্তু আল্লাহ তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন),
মুনাফিকরা জিহাদ থেকে অব্যাহতি চাওয়ার জন্য বলে যে, “আমাকে পাপের ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন না” - ৯:৪৯ ( শুনে রাখো, এরা তো ঝুঁকির মধ্যেই পড়ে আছে এবং জাহান্নাম এ কাফেরদের ঘিরে রেখেছে৷)
মু’মিনদের কোন কল্যাণ হলে মুনাফিকরা কষ্ট পায় আর মু’মিনদের উপর কোন বিপদ এলে বা কোন বিপরযয় এলে মুনাফিকেরা বলে আমরা যুদ্ধে না গিয়ে ভালোই করেছি : ৯:৫০ (“ভালোই হয়েছে” আমরা তো আগেই আমাদের ব্যাপার সেরে নিয়েছি )
wRnv` Kv‡`i weiæ‡× Ki‡Z n‡e :
hviv Avjøvn I ivm~‡ji weiæ‡× we‡`ªvn †NvlYv K‡i : 8:13, 14,
‡hme RvwZ kvwšÍ Pzw³ f½ K‡i Zv‡`i weiæ‡× hy× cwiPvjbv Ki‡Z †Kvb evav †bB : 8:56-57 (G ai‡Yi †jvK‡`i hw` hy‡×i gq`v‡b cvI Z‡e Ggbfv‡e gvi †`‡e hv‡Z Ggwb ai‡Yi cieZx© AvPiYKvixivI w`kv nvwi‡q †d‡j),
‡Kvb RvwZi wewfbœ AvPiY Øviv hw` G AvksKv `„pZi nq †h, Zviv kvwšÍ Pzw³ f½ K‡i †dj‡e, Zvn‡j Zv‡`i c~‡e©B gymjgvbiv kvwšÍ Pzw³ f½ K‡i †dj‡Z cvi‡e, Zv‡Z †Kvb †`vl n‡ebv : 8:58,
gyk‡iK‡`i‡K †`qv Pvigv‡mi AeKvk †kl n‡q †M‡j Pzw³ f½Kvix gyk‡iK‡`i‡K †hLv‡b cvI nZ¨v Ki, Zv‡`i ai, †NivI Ki Ges cÖ‡Z¨K NvuwU‡Z Zv‡`i Rb¨ IuZ †c‡Z e‡m _v‡K: 9:5,
‡n Cgvb`viiv hw` †Zvgv‡`i wcZv I åvZvI Cgv‡bi Dci Kzdix‡K cÖvavb¨ †`q, Z‡e Zviv ‡Zvgv‡`i eÜz bq, Zv‡`i‡K eÜz wn‡m‡e MÖnY K‡ivbv : 9:23,
hy‡×i K‡Vvi wb‡`©k : 9:13-15 (‡Zvgiv wK jovB Ki‡e bv Ggb †jvK‡`i weiæ‡× hviv A½xKvi f½ K‡i‡Q, ivm~j mv: †K †`k †_‡K ewn¯‹vi Kivi PµvšÍ K‡iwQj Ges evovevwoi m~Pbv ZvivB K‡i‡Q ? )
hviv Avjøvn I ciKv‡ji cÖwZ mwVK fv‡e Cgvb Av‡bbv, Avjøvn I ivm~‡ji nvivgK…Z wRwbm‡K nvivg g‡b K‡ibv I mZ¨ Øxb‡K wb‡R‡`i Øxb evbvqbv, †mB mg¯Í Avn‡j wKZve‡`i weiæ‡× hy× K‡iv hZÿY bv Zviv wRwhqv cÖ`v‡b m¤§Z nq I c`vbZ n‡q _v‡K: 9:29,
gykwiKiv †hgb GK‡RvU n‡q †Zvgv‡`i mv‡_ jovB K‡i †Zgwb †ZvgivI GK‡RvU n‡q Zv‡`i weiæ‡× jovB K‡iv : 9:36,
যারা আল্লাহ এবং রাসূলের মোকাবিলা করে তাদের জন্য রয়েছে চিরকালীন জাহান্নামের আগুন, যা বিরাট লাঞ্ছনার ব্যাপার : ৯:৬৩,
wRnv‡` mvdj¨ jv‡fi kZv©ejx mg~n :
wRnv‡` msL¨vwaK¨ †Kvb Kv‡R Av‡mbv hw` bv Avjøvn mvnvh¨ bv K‡ib : 9:25-27 (ûbv‡qb hy‡×i NUbv),
wRnv‡`i gq`v‡b mk¯¿ hy‡×i c×wZ mg~n :
একটি সশস্ত্র সেনাবাহিনী (STANDING ARMY) সদা প্রস্তুত থাকতে হবে : ৮:৬০ (সর্বাধিক পরিমাণ শক্তি ও সদা প্রস্তুত ঘোড়া তাদের মোকাবিলার জন্য যোগাড় করে রাখো) ।
বিরোধী দলকে ভীত সন্ত্রস্থ করে তোল : ৮:৬০ (যুদ্ধ সরঞ্জাম সদাপ্রস্তুত রাখো এবং ভীত সন্ত্রস্থ করো তোল আল্লাহর শত্রুকে তোমাদের শত্রুকে এবং অন্যান্য অচেনা শত্রুদেরকে)
GKwU mk¯¿ †mbvevwnbx (STANDING ARMY) m`vcÖ¯ÍZ _vK‡Z n‡e : 8:60 ( mev©waK cwigvY kw³ I m`vcÖ¯ÍZ‡Nvov Zv‡`i †gvKvwejvi Rb¨ †hvMvo K‡i iv‡Lv)
we‡ivax `j‡K fxZ mš¿¯’ K‡i †Zvj : 8:60 (hy× miÄvg m`vcÖ¯ÍZ iv‡Lv Ges fxZ mš¿¯’ K‡i †Zvj Avjøvni kÎæ‡K, †Zvgv‡`i kÎæ‡`i‡K Ges Ab¨vb¨ A‡Pbv kÎæ‡`i‡K)|
তাদের ঘাড়ে আঘাত করো ও প্রতিটি জোড়ে ও সন্ধিতে ঘা মারো : ৮:১২,
যখন কোন দলের সাথে তোমাদের মোকাবিলা হয় তখন দৃঢ়পদ থাকো এবং আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণ করতে থাকো, আশা করা যায়, তোমরা সফলকাম হবে : ৮:৪৫,
Zv‡`i Nv‡o AvNvZ K‡iv I cÖwZwU †Rv‡o I mw܇Z Nv gv‡iv : 8:12,
hLb †Kvb `‡ji mv‡_ †Zvgv‡`i †gvKvwejv nq ZLb `„pc` _v‡Kv Ges Avjøvn‡K †ekx †ekx ¯§ib Ki‡Z _v‡Kv, Avkv Kiv hvq †Zvgiv mdjKvg n‡e : 8:45,
wb‡R‡`i g‡a¨ weev` K‡iv bv, Zvn‡j †Zvgiv `ye©j wPË n‡q co‡e Ges †Zvgv‡`i cÖfve cÖwZcwË †kl n‡q hv‡e : 8:46,
me‡ii c_ Aej¤^b Ki, wbðqB Avjøvn meiKvix‡`i mv‡_ i‡q‡Qb : 8:46,
AnsKvi K‡iv bv : 8:47,
wb‡R‡`i gvnvZœ¨/Avùvjb †`wLIbv, †jvK cÖ`k©bx / wiqv K‡ivbv : 8:47,
Avjøvni Dci fimv Ki, wbðqB Avjøvn gnvcivµvšÍ Ges Ávbx : 8:49,
kvwšÍPzw³i Aax‡b hviv i‡q‡Q Zviv hw` Pzw³ f½ K‡i hy‡×i gq`v‡b Av‡m Ges G ai‡Yi †jvK‡`i hw` hy‡×i gq`v‡b cvI Z‡e Ggbfv‡e gvi †`‡e hv‡Z Ggwb ai‡Yi cieZx© AvPiYKvixivI w`kv nvwi‡q †d‡j-8:56-57
gyk‡iK‡`i‡K †`qv Pvigv‡mi AeKvk †kl n‡q †M‡j Pzw³ f½Kvix gyk‡iK‡`i‡K †hLv‡b cvI nZ¨v Ki, Zv‡`i ai, †NivI Ki Ges cÖ‡Z¨K NvuwU‡Z Zv‡`i Rb¨ IuZ †c‡Z e‡m _v‡K: 9:5, Z‡e †hme gykwiKiv GLbI Pzw³ f½ K‡iwb Ges Pzw³i kZv©ejx h_vh_ fv‡e cvjb Ki‡Q Zv‡`i Qvov: 9:4
‡hme Kv‡di gyk‡iKiv A½xKvi f½ K‡i I †Zvgv‡`i `x‡bi Dci evovevwo K‡i Zv‡`i weiæ‡× hy× Ki : 9:12,
(১৬:৮১) .... আবার এমন কিছু অন্যান্য পোশাক তোমাদের দিয়েছেন যা পারস্পরিক যুদ্ধে তোমাদের হেফাজত করে৷ এভাবে তিনি তোমাদের প্রতি তাঁর নিয়ামতসমূহ সম্পূর্ণ করেন, হয়তো তোমরা অনুগত হবে৷
(দেখুন : য > যুদ্ধ > যোদ্ধা )
gyÕwgb‡`i `„wó‡Z Kv‡di‡`i ˆmb¨ msL¨v Kg Ges Kv‡di‡`i `„wó‡Z gyÕwgb‡`i ˆmb¨ msL¨v Avjøvn Kg ‡`Lv‡jb, hv‡Z cÖ‡qvRbxq hy×wU msNwUZ nq : 8:44 (e`i hy‡×i NUbv),
gyk‡iK‡`i‡K †`qv Pvigv‡mi AeKvk †kl n‡q †M‡j Pzw³ f½Kvix gyk‡iK‡`i‡K †hLv‡b cvI nZ¨v Ki, Zv‡`i ai, †NivI Ki Ges cÖ‡Z¨K NvuwU‡Z Zv‡`i Rb¨ IuZ †c‡Z e‡m _v‡K: 9:5, Z‡e †hme gykwiKiv GLbI Pzw³ f½ K‡iwb Ges Pzw³i kZv©ejx h_vh_ fv‡e cvjb Ki‡Q Zv‡`i Qvov: 9:4
Avjøvn I ivm~‡ji cÿ †_‡K gyk‡iK‡`i Rb¨ †Kvb wbivcËvi A½xKvi †bB, Z‡e gymjgvb‡`i mv‡_ Pzw³e× gyk‡iKiv hviv Pzw³i A½xKvi h_vh_fv‡e cvjb Ki‡Q Zv‡`i K_v ¯^Zš¿ : 9:7-8,
Kzd‡ii cZvKvevnx‡`i weiæ‡× hy× Ki : 9:12(‡hme Kv‡di gyk‡iKiv A½xKvi f½ K‡i I †Zvgv‡`i `x‡bi Dci evovevwo K‡i, nq‡Zv G‡Z Zviv _vg‡e, KviY Zv‡`i Kmg wek¦vm †hvM¨ bq ),
9:13-15 (‡Zvgiv wK jovB Ki‡e bv Ggb †jvK‡`i weiæ‡× hviv A½xKvi f½ K‡i‡Q, ivm~j mv: †K †`k †_‡K ewn¯‹vi Kivi PµvšÍ K‡iwQj Ges evovevwoi m~Pbv ZvivB K‡i‡Q ? )
‡Zvgiv wK gvbyl‡K fq Ki? A_P †Zvgiv hw` gyÕwgb n‡q _v‡Kv Z‡e Avjøvn‡KB †ekx fq Kiv DwPZ - 9:13,
যুদ্ধের জন্য রওয়ানা হয়ে যাও, বের হয়ে পড়, তোমাদের কাছে যুদ্ধের সাজ সরঞ্জাম কম থাকুক অথবা বেশী থাকুক, তোমাদের আর্থিক ও শারীরিক অবস্থা অনুকূলে থাকুক বা প্রতিকূলে থাকুক : ৯:৪২ (আল্লাহর পথে জান মাল দিয়ে যুদ্ধ করো),
পূর্ণ শক্তি দিয়ে কাফের ও মুনাফিক উভয়ের মোকাবিল করো এবং তাদের প্রতি কঠোর হও-৯:৭৩,
আল্লাহকে মেনে চলো এবং তাঁর রসূলের সহযোগী হয়ে জিহাদ করো -৯:৮৬,
আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন৷ তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে এবং মারে ও মরে : ৯:১১১,
হে ঈমানদারগণ! সত্য অস্বীকারকারীদের মধ্যে যারা তোমাদের নিকটবর্তী তাদের সাথে যুদ্ধ করো৷তারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখতে পায়৷ জেনে রাখো আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন – ৯:১২৩,
(১৭:৫) শেষ পর্যন্ত যখন এদের মধ্য থেকে প্রথম বিদ্রোহের সময়টি এলো তখন হে বনী ইসরাঈল! আমি তোমাদের মুকাবিলায় নিজের এমন একদল বান্দার আবির্ভাব ঘটালাম, যারা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী এবং তারা তোমাদের দেশে প্রবেশ করে সবদিকে ছড়িয়ে পড়ে৷ এক একটি প্রতিশ্রুতি ছিল, যা পূর্ণ হওয়াই ছিল অবধারিত৷
(১৬:৭) ..... তারপর যখন পরবর্তী প্রতিশ্রুতির সময় এসেছে তখন আমি অন্য শত্রুদেরকে তোমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছি, যাতে তারা তোমাদের চেহারা বিকৃত করে দেয় এবং (বায়তুল মাকদিসের) মসজিদে এমনভাবে ঢুকে পড়ে যেমন প্রথমবার শত্রুরা ঢুকে পড়েছিল আর যে জিনিসের ওপরই তাদের হাত পড়ে তাকে ধ্বংস করে রেখে দেয়৷
wRnv‡` weRq jvf :
`ywU `‡ji g‡a¨ †Zvgiv GKwU‡K †c‡q hv‡e (Ges weRq jvf Ki‡Z cvi‡e) : 8:7,
`ye©j / mej `j :
we‡ivax `j (Bmjv‡gi kÎæ) `ye©j †nvK A_ev mej †nvK, Avjøvni Av‡`k †c‡j †Zvgiv wRnv‡` Svwc‡q co, Avjøvn PvB‡j weRq jvf Ki‡Z cvi‡e : 8:7,
wRnv` †Kb †`Iqv n‡jv ev wRnv‡`i cÖ‡qvRb wK ?
mZ¨ I wg_¨v‡K Avjv`v Kiv : 8:7-8 (mZ¨‡K mZ¨ iƒ‡c †`wL‡q †`qv Ges wg_¨v‡K wg_¨v iƒ‡c †`wL‡q †`qv),
cvK †_‡K bvcvK †K c„_K Kiv : 8:11,
Kv‡di‡`i‡K (Bmjvg we‡ivax‡`i‡K) kvw¯Í †`Iqvi Rb¨ : 8:13-14, 9:26, ৯:৫২,
wRnv` gyÕwgb‡`i Rb¨ cixÿv ¯^iƒc : 8:17 ( G cixÿvq gyÕwgb‡`i‡K mdjZvi mv‡_ Avjøvn cvi Kwi‡q wb‡eb),
wRnv`/msMÖvg Gi D‡Ïk¨ : †Mvgivnx I wek„sLjv `~i Kiv, mvgwMÖK fv‡e Avjøvni Øxb cÖwZwôZ nIqv : 8:39,
kqZvb KZ©„K m„ó bvcvKx/‡bvsivgx `~i Kiv : 8:11,
cÖK…Z gyÕwgb nIqvi Rb¨ A_v©r Cgv‡bi `vex‡Z mZ¨ev`x nIqvi Rb¨ : 8:74 (hviv Cgvb G‡b‡Q AZ:ci wnRiZ K‡i Ges wRnv` K‡i ZvivB cÖK…Z gyÕwgb A_v©r Zviv Zv‡`i Cgv‡bi `vex‡Z mZ¨ev`x, Zv‡`i Rb¨B i‡q‡Q ÿgv I m¤§vbRbK wiwRK¡),
Avi hviv cieZx©‡Z Cgvb Avb‡e Ges wnRiZ Ki‡e I wRnv` Ki‡e ZvivI bex mv: Gi m½x mv_x‡`i `jfy³ wn‡m‡e MY¨ n‡e :8:75
‡Zvgiv wK g‡b K‡i‡Qv Cgvb G‡bwQ GK_v ej‡jB †Zvgv‡`i‡K †Q‡o †`qv n‡e? †Zvgv‡`i‡K wK wRnv` hy‡×i gva¨‡g cixÿv Kiv n‡e bv ? : 9:16 (Ges Kviv Avjøvn ivm~j I gyÕwgb‡`i Qvov Avi KvD‡K AšÍi½ eÜz iƒ‡c MÖnY K‡i bv?)
Zviv (Kv‡diiv/Bmjvg we‡ivaxiv) Pvq gy‡Li dz w`‡qB Bmjv‡gi Av‡jv wbwf‡q †`‡e, wKš‘ Avjøvn Zvi Av‡jv‡K cwic~Y©Zv `vb Ki‡ebB : 9:32,
Avjøvn Zvi ivmyj‡K c_wb‡`©k I mZ¨ `xb mnKv‡i cvwV‡q‡Qb, hv‡Z wZwb Acivci Øx‡bi Dci G‡K weRqx K‡ib, Kv‡di/gykwiK‡`i Kv‡Q Zv hZB AcQ›`bxq †nvK bv †Kb : 9:33,
মু’মিনদের বক্তব্য : আমরা তোমাদের ব্যাপারে যে জিনিসের অপেক্ষায় আছি তা হচ্চে এই যে আল্লাহ হয় নিজেই তোমাদের শাস্তি দেবেন, না হয় আমাদের হাত দিয়ে দেয়াবেন (জিহাদ যুদ্ধের মাধ্যমে), তাহলে এখন তোমরা অপেক্ষা করোএবং আমরা ও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় থাকছি”-৯:৫২,
মু’মিনদের বক্তব্য “তোমরা আমাদের ব্যাপারে যে জিনিসের অপেক্ষায় আছো তা দু’টি ভালোর মধ্যে একটি ভালো ছাড়া আর কি ? “ – ৯:৫২,
(ব্যাখ্যা : মুনাফিকরা তাদের অভাস অনুযায়ী এ সময়ও কুফর ও ইসলামের সংঘাতে অংশ না নিয়ে নিজেরা চরম বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিচ্ছে বলে মনে করেছিল।এ সংঘাতের পরিণামে রসূল ও তার সাহাবীরা বিজয়ীর বেশে ফিরে আসেন , না রোমীদের সামরিক শক্তির সাথে সংঘর্ষে ছিন্নভিন্ন হয়ে যান, দূরে বসে তারা তা দেখতে চাচ্ছিল। এখানে তাদের প্রত্যাশার জবাব দেয়া হয়েছিল। বলা হয়েছে , দুটি ফলাফলের মধ্যে তোমরা একটির প্রকাশের অপেক্ষা করছো। অথচ ঈমানদারদের জন্য উভয় ফলাফলই যথার্থ ভাল ও কল্যাণ ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা বিজয়ী হলে, এটা যে তাদের জন্য ভাল একথা সবার জানা । কিন্তু নিজেদের উদ্দেশ্য সম্পাদনের পথে প্রাণ দান করে যদি তারা মাটিতে বিলীন হয়ে যায়, তাহলে দুনিয়াবাসীরা তাদের চরম ব্যর্থ বলে মনে করলেও প্রকৃতপক্ষে এটিও আর এক রকমের সাফল্য। কারণ মুমিন একটি দেশ জয় করলো কি করলো না অথবা কোন সরকার প্রতিষ্ঠিত করলো কি না, এটা তার সাফল্য ও ব্যর্থতার মাপকাঠি নয়। বরং মুমিন তার আল্লাহর কালেমা বুলন্দ করার জন্য নিজের মন, মস্তিস্ক ,দেহ ও প্রাণের সমুদয় শক্তি নিয়োজিত করেছে কিনা, এটাই তার মাপকাঠি । এ কাজ যদি সে করে থাকে তাহলে দুনিয়ার বিচারে তার ফলাফল শূণ্য হলেও আসলে সে সফলকাম )
হে ঈমানদারেরা তোমরা যদি আল্লাহর রাসূলকে সহযোগিতা না করতে চাও তবে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট : ৯:৪০ (মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করার সময় নবীকে এক গুহার মধ্যে সহযোগিতা করেছেন আল্লাহ),
wRnv`/msMÖvg/mk¯¿ msMÖvg Kv‡`i weiæ‡× Kivi cÖ‡qvRb †bB :
hviv †Mvgivnx I wek„sLjvi cÖmvi NUvq bv Ges Bmjv‡gi we‡ivaxZv Z_v mvgwMÖK fv‡e wdZbv †_‡K weiZ _v‡K : 8:40,
Z‡e †hme gykwiKiv GLbI Pzw³ f½ K‡iwb Ges Pzw³i kZv©ejx h_vh_ fv‡e cvjb Ki‡Q Zv‡`i Qvov: 9:4, Avi hviv ZIev K‡i, bvgvh Kv‡qg K‡i I hvKvZ †`q Zv‡`i Qvov : 9:5,11,
(২০:২৮) এবং আমার জিভের জড়তা দূর করে দাও, যাতে লোকেরা আমার কথা বুঝতে পারে৷
তিনিই জীবন দেন, তিনিই মৃত্যু দেন এবং তারই দিকে সবাইকে ফিরে যেতে হবে৷-১০:৫৬, তিনিই জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান-৫৭:২,
(১৫:২৩) জীবন ও মৃত্যু আমিই দান করি এবং আমিই হবো সবার উত্তরাধিকারী৷
আমি তো এর আগে তোমাদের মধ্যে জীবনের দীর্ঘকাল অতিবাহিত করেছি, তবুও কি তোমরা বুদ্ধি -বিবেচনা করে কাজ করতে পার না?-১০:১৬,
(১৪:১২) আর আমরা আল্লাহরই ওপর ভরসা করবো না কেন, যখন আমাদের জীবনের পথে তিনি আমাদের পথ দেখিয়েছেন ?
(১৬:১০৬) যে ব্যক্তি ঈমান আনার পর কুফরী করে, (তাকে যদি) বাধ্য করা হয় এবং তার অন্তর ঈমানের ওপর নিশ্চিন্ত থাকে (তাহলে তো ভালো কথা), কিন্তু যে ব্যক্তি পূর্ণ মানসিক তৃপ্তিবোধ ও নিশ্চিন্ততা সহকারে কুফরীকে গ্রহণ করে নিয়েছে তার ওপর আল্লাহর গযব আপতিত হয় এবং এ ধরনের সব লোকদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি৷
(১৬:১১১) (এদের সবার ফায়সালা সেদিন হবে) যেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি আত্মরক্ষার চিন্তায় মগ্ন থাকবে এবং প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের প্রতিদান পুরোপুরি দেয়া হবে আর কারো প্রতি সামান্যতমও জুলুম হবে না৷
hy‡×i wbwl× gvm :
Avjøvn hLb †_‡K c„w_ex I AvKvk m„wó K‡i‡Qb ZLb †_‡KB gv‡mi msL¨v ev‡iv P‡j Avm‡Q, Ges nvivg gv‡mi msL¨v 4 wU (wRjK¡`, wRjnR¡, gniig I iRe gv‡m hy× Kiv mvaviYZ: wbwl×) : 9:36, 2:194, nvivg gvmmg~n‡K (bvmx-‡K) wcwQ‡q †`qv Kzdixi Ici Av‡iKwU Kzdix :9:37,
(১৭:৮) ...আর নিয়ামত অস্বীকারকারীদের জন্য আমি জাহান্নামকে কয়েদখানা বানিয়ে রেখেছি৷
বর্তমানে যেমন স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী কোন ব্যক্তিকে জেলে পুরে রাখে তার সত্যের দাওয়াত থেকে বিরত রাখার জন্য তেমনি প্রাচীন কালের শাসক গোস্ঠী দেশ থেকে সত্যের দাওয়াত প্রচারকারীদের দেশান্তর করে দিত বা দেশান্তরের ভয় দেখাত, দেশত্যাগে বাধ্য করতো :
(২৭.নমল:৫৬) কিন্তু সে জাতির এ ছাড়া আর কোন জবাব ছিলনা যে, তারা বলল “লূতের পরিবার বর্গকে তাদের নিজেদের জনপদ থেকে বের করে দাও, এরা বড় পাক পবিত্র সাজতে চাচ্ছে”৷
(১৪:১৩) শেষ পর্যন্ত অস্বীকারকারীরা তাদের রসূলদের বলে দিল, “হয় তোমাদের ফিরে আসতে হবে আমাদের মিল্লাতে আর নয়তো আমরা তোমাদের বের করে দেবো আমাদের দেশ থেকে৷
এ ছাড়াও শাসক গোষ্ঠী জেলখানায়ও কয়েদ করে রাখতো: যেমন ইউসুফ আ: কে কয়েদ করে রাখা হয়েছিল। ইউসুফ আ: সত্যের উপর ছিলেন। কিন্তু তারপরও মহিলাদের চরিত্রহীনতার কারণে মহিলাদেরকে সাবধান করতে না পেরে ইউসুফ আ: কে জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।
‡Rvov:
bvix cyiæ‡li †Rvov m„wói KviY : 7:189 (cÖkvwšÍ jvf Kivi Rb¨),
(১১:৪০) অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে গেলো এবং চুলা উথলে উঠলো তখন আমি বললাম, “সব ধরনের প্রাণীর এক এক জোড়া নৌকায় তুলে নাও৷ নিজের পরিবারবর্গকেও- তবে তাদের ছাড়া যাদেরকে আগেই চিহ্নিত করা হয়েছে  - এতে তুলে নাও এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে এতে বসাও৷ তবে সামান্য সংখ্যক লোকই নূহের সাথে ঈমান এনেছিল৷
(২০:৬৪) আজ নিজেদের সমস্ত কলাকৌশল একত্র করে নাও এবং একজোট হয়ে ময়দানে এসো৷ ব্যস, জেনে রাখো, আজকে যে প্রাধান্য লাভ করবে সেই জিতে গেছে”৷
RxebKvj :
Rxe‡bi AeKvk Kvj :
Rxe‡bi AeKvk Kvj Nwb‡q Avm‡Q, †Zvgiv G e¨vcv‡i wPš‘v Ki : 7:185,
RbcÖwZwbwa wbev©wPZ Kiv :
জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করা :
আর মূসা (তার সাথে) আমার নির্ধারিত সময়ে হাযির হবার জন্যে নিজের জাতির সত্তর জন লোককে নির্বাচিত করলো-৭:১৫৫
RvwZ mg~n :
AZxZ RvwZ mg~‡ni BwZnvm †_‡K wkÿv MÖnY Kiv DwPZ :
অতীত ক্ষমতাসীনদের পতন থেকে শিক্ষা নেয়া ফরয :
পৃথিবীর পূর্ববর্তী অধিবাসীদের পর যারা তার উত্তরাধিকারী হয়, তারা কি এ বাস্তবতা থেকে ততটুকুও শেখেনি যে আমি চাইলে তাদের অপরাধের দরুন তাদেরকে পাকড়াও করতে পারি৷৭:১০০।
(নুর:৫৭) যারা কুফরী করছে তাদের সম্পর্কে এ ভুল ধারণা পোষণ করো না যে, তারা পৃথিবীতে আল্লাহকে অক্ষম করে দেবে ৷ তাদের আশ্রয়স্থল জাহান্নাম এবং তা বড়ই নিকৃষ্ট আশ্রয় ৷
(২১:২৯) আর তাদের মধ্যে যে বলবে, আল্লাহ ছাড়া আমিও একজন ইলাহ, তাকে আমি জাহান্নামের শাস্তি দান করবো, আমার এখানে এটিই জালেমদের প্রতিফল৷
(১৮:১০০) আর সেদিন আমি জাহান্নামকে সেই কাফেরদের সামনে আনবো,
(১৯:৮৬) এবং অপরাধীদেরকে পিপাসার্ত পশুর মতো জাহান্নামর দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবো৷
(১১:১১৯)আর তোমার রবের একথা পূর্ণ হয়ে গেছে যা তিনি বলেছিলেন- “আমি জাহান্নামকে জিন ও মানুষ উভয়কে দিয়ে ভরে দেবো৷”
(১৭:৯৭)এদের আবাস জাহান্নাম৷ যখনই তার আগুন স্তিমিত হতে থাকবে আমি তাকে আরো জোরে জ্বালিয়ে দেবো৷
.
(১৮:১০০) আর সেদিন আমি জাহান্নামকে সেই কাফেরদের সামনে আনবো, ১০১) যারা আমার উপদেশের ব্যাপারে অন্ধ হয়েছিল এবং কিছু শুনতে প্রস্তুতই ছিল না৷
(১৮:১০২) তাহলে কি যারা কুফরী অবলম্বন করেছে তারা একথা মনে করে যে, আমাকে বাদ দিয়ে আমার বান্দাদেরকে নিজেদের কর্মসম্পাদনকারী হিসেবে গ্রহণ করে নেবে ? এ ধরনের কাফেরদের আপ্যায়নের জন্য আমি জাহান্নাম তৈরি করে রেখেছি৷
(৩২- আস-সাজদা : ২০) আর যারা ফাসেকীর পথ অবলম্বন করেছে তাদের আবাস হচ্ছে জাহান্নাম৷ যখনই তারা তা থেকে বের হতে চাইবে তার মধ্যেই ঠেলে দেয়া হবে এবং তাদেরকে বলা হবে, আস্বাদন করো এখন সেই আগুনের শাস্তির স্বাদ যাকে তোমরা মিথ্যা বলতে৷
(২৯-আনকাবুত:৫৪) এরা তোমার কাছে আযাব দ্রুত আনার দাবী করছে অথচ জাহান্নাম এ কাফেরদেরকে ঘেরাও করে নিয়েছে ।
(বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : আ > আযাব > অভিযোগ / কাফিরগণের চ্যালেঞ্জ : (১) তোমার আযাবের হুমকি সত্য হলে আযাব নিয়ে আসোতো(বিস্তারিত)
২:৮০,
২:২৪, ৩:১০,
জাহান্নাম সৃষ্টি করা হয়েছে কাফরদের জন্য : ৩:১৩১
মুনাফিক ও কাফেররা জাহান্নামে একই স্থানে থাকবে : ৪:৫৬, ১৪০,
মুনাফিকেরা জাহান্নামের সর্বনিম্নস্তরে থাকবে : ৪৪:১৪৫, ১৪৪, ১৬৯,
ফুটন্ত পানি পান করানো হবে : ৬:৭০, ৫:১০, ৮৬, ৭:১৮ ।
(২৬.শুআরা:৯২) আর তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে, "আল্লাহকে বাদ দিয়ে তোমরা যাদের ইবাদাত করতে তারা এখন কোথায়? ৯৩) তারা কি এখন তোমাদের কিছু সাহায্য করছে অথবা আত্মরক্ষা করতে পারে? "৯৪) তারপর সেই উপাস্যদেরকে এবং ৯৫) এই পথভ্রষ্টদেরকে আর ইবলীসের বাহিনীর সবাইকে তার মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে৷৯৬) সেখানে এরা সবাই পরস্পর ঝগড়া করবে এবং পথভ্রষ্টরা (নিজেদের উপাস্যদেরকে) বলবে, ৯৭) "আল্লাহর কসম আমরা তো স্পষ্ট ভ্রষ্টতার মধ্যে ছিলাম,৯৮) যখন তোমাদের দিচ্ছিলাম রাব্বুল আলামীনের সমকক্ষের মর্যাদা৷
২:৩৯, ৮১,
৩:১১, ১২, ৮৬-৮৮,
৭:১৮
(২৬.শুআরা:৯১) এবং জাহান্নাম পথভ্রষ্টদের সামনে খুলে দেয়া হবে৷
(হাজ্ব:৫১) আর যারা আমার আয়াতকে খাটো করার চেষ্টা করবে তারা হবে জাহান্নামের অধিবাসী৷
(হাজ্ব:৫৭) আর যারা কুফরী করে থাকবে এবং আমার আয়াতকে মিথ্যা বলে থাকবে তাদের জন্য হবে লাঞ্ছনাকর শাস্তি৷
(১৮:১০৬) যে কুফরী তারা করেছে তার প্রতিফল স্বরূপ এবং আমার নিদর্শনাবলী ও রসূলদের সাথে যে বিদ্রূপ তারা করতো তার প্রতিফল হিসেবে তাদের প্রতিদান জাহান্নাম৷
(১৭:৩৯)আর দেখো, আল্লাহর সাথে অন্য কোনো মাবুদ স্থির করে নিয়ো না, অন্যথায় তোমাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে নিন্দিত এবং সব রকমের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত অবস্থায়৷
যে কেউ আশু লাভের আকাঙ্ক্ষা করে, তাকে আমি এখানেই যাকিছু দিতে চাই দিয়ে দেই, তারপর তার ভাগে জাহান্নাম লিখে দেই, যার উত্তাপ সে ভুগবে নিন্দিত ও ধিকৃত হয়ে৷- (১৭:১৮)
(১৫:৪২) অবশ্যি যারা আমার প্রকৃত বান্দা হবে তাদের ওপর তোমার কোনো জোর খাটবে না৷ তোমার জোর খাটবে শুধুমাত্র এমন বিপথগামীদের ওপর যারা তোমার অনুসরণ করবে৪৩) এবং তাদের সবার জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তির অংগীকার৷
(৫৭:১৫) অতএব, তোমাদের নিকট থেকে আর কোন বিনিময় গ্রহণ করা হবে না৷ আর তাদের নিকট থেকেও গ্রহণ করা হবে না যারা সুস্পষ্টভাবে কুফরীরতে লিপ্ত ছিল৷ তোমাদের ঠিকানা জাহান্নাম ৷ সে (জাহান্নাম) তোমাদের খোঁজ খবর নেবে৷ এটা অত্যন্ত নিকৃষ্ট পরিণতি৷
আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতকে অস্বীকার করেছে তারাই দোযখের বাসিন্দা৷ -৫৭:১৯,
(১৩:৫) এখন যদি তুমি বিস্মিত হও, তাহলে লোকদের একথাটিই বিস্ময়কর : “মরে মাটিতে মিশে যাবার পর কি আমাদের আবার নতুন করে পয়দা করা হবে ? এরা এমনসব লোক যারা নিজেদের রবের সাথে কুফরী করেছে৷ এরা এমনসব লোক যাদের গলায় শেকল পরানো আছে৷ এরা জাহান্নামী এবং চিরকাল জাহান্নামেই থাকবে৷
(১৩:১৮) যারা নিজেদের রবের দাওয়াত গ্রহণ করেছে তাদের জন্য কল্যাণ রয়েছে আর যারা তা গ্রহণ করেনি তারা যদি পৃথিবীর সমস্ত সম্পদের মালিক হয়ে যায় এবং এ পরিমাণ আরো সংগ্রহ করে নেয় তাহলেও তারা আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাচাঁর জন্য এ সমস্তকে মুক্তিপণ হিসেবে দিয়ে দিতে তৈরী হয়ে যাবে৷ এদের হিসেব নেয়া হবে নিকৃষ্টভাবে এবং এদের আবাস হয়ে জাহান্নাম, বড়ই নিকৃষ্ট আবাস৷
(১৩:২৫) আর যারা আল্লাহর অংগীকারে মজবুতভাবে আবদ্ধ হবার পর তা ভেঙে ফেলে, আল্লাহ যেসব সম্পর্ক জোড়া দেবার হুকুম দিয়েছেন সেগুলো ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে তারা লানতের অধিকারী এবং তাদের জন্য রয়েছে আখেরাতে বড়ই খারাপ আবাস৷
যারা আল্লাহর আয়াত সমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, এবং এর প্রতি বিদ্রোহাত্মক আচরণ করে : ৭:৩৬,
যাদের অন্তর আছে কিন্তু উপলব্ধি করে না, চোখ আছে কিন্তু দেখেনা, কান আছে কিন্তু শুনেনা, তারা পশুর ন্যায় বরং তার চেয়েও নিকৃষ্ট : ৭:১৭৯ ।
যারা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে : মুশরিকরা যখন নিজেরাই কুফরীর সাক্ষ্য দিচ্ছে সুতরাং মসজিদুল হারামের খাদেম হয়ে তাদের কোন লাভ নেই : ৯:১৭ (অর্থাৎ, ঈমান গ্রহণ না করে রাসূল সা: এর পথে না চললে কা’বা ঘরের খাদেম হয়েও কোন লাভ নেই, সমস্তআমলই বরবাদ হয়ে যাবে এবং চিরকাল জাহান্নামে থাকতে হবে) ।
(মু’মিনুন:১০২) সে সময় যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই সফলকাম হবে ৷১০৩) আর যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই হবে এমনসব লোক যারা নিজেদেরকে ক্ষতির মধ্যে নিক্ষেপ করেছে ৷ তারা জাহান্নামে থাকবে চিরকাল৷
যারা আল্লাহ এবং রাসূলের মোকাবিলা করে তাদের জন্য রয়েছে চিরকালীন জাহান্নামের আগুন, যা বিরাট লাঞ্ছনার ব্যাপার : ৯:৬৩,
মুনাফিক ও কাফেরদের জন্য রয়েছে চিরকালীন জাহান্নামের আগুন : ৯:৬৮, ৭৩,
নবী ও যারা ঈমান এনেছে তাদের পক্ষে মুশরিকদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা, সংগত নয়, তারা তাদের আত্মীয়-স্বজন হলেই বা কি এসে যায়, যখন একথা সুষ্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামেরই উপযুক্ত : ৯:১১৩,
অন্যদিকে সত্য অমান্যকারীদের পরিণাম হচ্ছে জাহান্নামের আগুন৷ -১৩:৩৫,
কাফের / সত্য অস্বীকারকারী / আল্লাহ ও রাসূলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণাকারীদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম: ৮:১৪
যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করে তারা পান করে ফুটন্ত পানি এবং ভোগ করে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি নিজেদের সত্য অস্বীকৃতির প্রতিফল হিসেবে-১০:০৪,
আর আমার নিদর্শনসমূহ থেকে গাফেল, তাদের শেষ আবাস হবে জাহান্নাম, এমন সব অসৎকাজের কর্মফল হিসেবে যেগুলো তারা (নিজেদের ভুল আকীদা ও ভূল কার্যধারার কারণে) ক্রমাগতভাবে আহরণ করতো:১০:৭-৮,
(১১:১৫) যারা শুধুমাত্র এ দুনিয়ার জীবন এবং এর শোভা-সৌন্দর্য কামনা করে তাদের কৃতকর্মের সমুদয় ফল আমি এখানেই তাদেরকে দিয়ে দেই এবং এ ব্যাপারে তাদেরকে কম দেয়া হয় না৷ (১১: ১৬) কিন্তু এ ধরনের লোকদের জন্য আখেরাতে আগুন ছাড়া আর কিছুই নেই৷ (সেখানে তারা জানতে পারবে) যা কিছু তারা দুনিয়ায় বানিয়েছে সব বরবাদ হয়ে গেছে এবং এখন তাদের সমস্ত কৃতকর্ম ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে৷
আর মানব গোষ্ঠীর মধ্য থেকে যে-ই একে (এ কুরআনকে) অস্বীকার করে তার জন্য যে জায়গার ওয়াদা করা হয়েছে তা হচ্ছে দোযখ৷ কাজেই হে নবী! তুমি এ জিনিসের ব্যাপারে কোন প্রকার সন্দেহে পড়ে যেয়ো না, এতো তোমার রবের পক্ষ থেকে পাঠানো সত্য৷ তবে বেশীর ভাগ লোক তা স্বীকার করে না৷ (১১:১৭)
যে সব ঈমানের দাবীদাররা জিহাদের ময়দান থেকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব : ৮:১৪-১৬ ।
(মু’মিনুন:১০২) সে সময় যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই সফলকাম হবে ৷১০৩) আর যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই হবে এমনসব লোক যারা নিজেদেরকে ক্ষতির মধ্যে নিক্ষেপ করেছে ৷ তারা জাহান্নামে থাকবে চিরকাল৷
উপরে যান :
(১৫:৪৪) এ জাহান্নাম (ইবলীসের অনুসারীদের জন্য যার শাস্তির অংগীকার করা হয়েছে) সাতটি দরজা বিশিষ্ট৷ প্রত্যেকটি দরজার জন্য তাদের মধ্য থেকে একটি অংশ নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছে৷
(ব্যাখ্যা : যেসব গোমরাহী ও গোনাহের পথ পাড়ি দিয়ে মানুষ নিজের জন্য জাহান্নামের পথের দরজা খুলে নেয় সেগুলোর প্রেক্ষিতে জাহান্নামের এ দরজাগুলো নির্ধারিত হয়েছে । যেমন কেউ নাস্তিক্যবাদের পথ পাড়ি দিয়ে জাহান্নামের দিকে যায় । কেউ যার শিরকের পথ পাড়ি দিয়ে , কেউ মুনাফিকীর পথ ধরে , কেউ প্রবৃত্তি পূজা , কেউ অশ্লীলতা ও ফাসেকী , কেউ জুলুম, নিপীড়ন ও নিগ্রহ , আবার কেউ ভ্রষ্টতার প্রচার ও কুফরীর প্রতিষ্ঠা এবং কেউ অশ্লীলতা ও নৈতিকতা বিরোধী কার্যকলাপের প্রচারের পথ ধরে জাহান্নামের দিকে যায় । - তাফহীমুল কুরআন, সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী)
(১৮:২৯) ... আমি (অস্বীকারকারী) জালেমদের জন্য একটি আগুন তৈরি করে রেখেছি যার শিখাগুলো তাদেরকে ঘেরাও করে ফেলেছে৷ সেখানে তারা পানি চাইলে এমন পানি দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করা হবে, যা হবে তেলের তলানির মতো৷ এবং যা তাদের চেহারা দগ্ধ করে দেবে৷ কত নিকৃষ্ট পানীয় এবং কি জঘন্য আবাস !
জাহান্নাম অত্যন্ত নিকৃষ্টতম আবাসস্থল : ৯:৭৪,
ফিরে যাবার জন্য জাহান্নাম অত্যন্ত খারাপ জায়গা : ৮:১৬,
বিছানাও হবে জাহান্নামের এবং ছাদও হবে জাহান্নামের : ৭:৪০
জাহান্নামে প্রবেশকারী প্রতিটি দল তার অনুসরণকৃত পূর্ববর্তী দলের উপর অভিশাপ করতে করতে জাহান্নামে প্রবেশ করবে : ৭:৩৮,
জাহান্নাম হচ্ছে কয়েদ খানা : (১৭:৮) ...আর নিয়ামত অস্বীকারকারীদের জন্য আমি জাহান্নামকে কয়েদখানা বানিয়ে রেখেছি৷
(হাজ্ব:২০) তাদের মাথায় ফুটন্ত পানি ঢেলে দেয়া হবে, যার ফলে শুধু তাদের চামড়াই নয়, পেটের ভেতরের অংশও গলে যাবে৷২১) আর তাদের শাস্তি দেবার জন্য থাকবে লোহার মুগুর৷২২) যখনই তারা কাতর হয়ে জাহান্নাম থেকে বের হবার চেষ্টা করবে তখনই আবার তার মধ্যে তাদেরকে ঠেলে দেয়া হবে, বলা হবে, এবার দহন জ্বালার স্বাদ নাও৷
(১১:১০৬) হতভাগ্যরা জাহান্নামে যাবে (যেখানে অত্যধিক গরমে ও পিপাসায়) তারা হাঁপাতে ও আর্তচীৎকার করতে থাকবে৷ ১০৭) আর এ অবস্থায় তারা চিরকাল থাকবে যতদিন আকাশ ও পৃথিবী প্রতিষ্ঠিত থাকবে, তবে যদি তোমার রব অন্য কিছু করতে চান৷ অবশ্যি তোমার রব যা চান তা করার পূর্ণ ইখতিয়ার রাখেন৷
(১৯:৭১) তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যে জাহান্নাম অতিক্রম করবে না৷ এতো একটা স্থিরীকৃত ব্যাপার, যা সম্পন্ন করা তোমার রবের দায়িত্ব৷
(১৭:৬০)**কুরআনে অভিশপ্ত গাছকে আমি এদের জন্য একটি ফিতনা বানিয়ে রেখে দিয়েছি৷
(** অর্থাৎ যাক্কুম বৃক্ষ, যা জাহান্নামীদের খাদ্য হবে এবং এ বৃক্ষটি জাহান্নামের তলদেশে উৎপন্ন হবে। কিন্তু আল্লাহর ক্ষমতায় অবিশ্বাসী কাফেররা বলতো, আগুনে আবার বৃক্ষ জন্মায় কিভাবে?)
(মু’মিনুন:১০৪) আগুন তাদের মুখের চামড়া জ্বালিয়ে দেবে এবং তাদের চোয়াল বাইরে বের হয়ে আসবে ৷ ৯৭
(৯৭ . মূলে-----শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। ----- আরবী ভায়ায় এমন চেহারাকে বলা হয় যার চামড়া আলাদা হয়ে গেছে এবং দাঁত বাইরে বের হয়ে এসেছে । যেমন খাশির ভুনা মাথা । আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদকে (রা) এক ব্যক্তি ''কালেহ''-এর অর্থ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন :---------------অর্থাৎ ''তুমি কি ভুনা খাশির কল্লা দেখোনি৷'')
(২১:৩৯) হায়! যদি এ কাফেরদের সেই সময়ের কিছু জ্ঞান থাকতো যখন এরা নিজেদের মুখ ও পিঠ আগুন থেকে বাঁচাতে পারবে না এবং এদেরকে কোথাও থেকে সাহায্যও করা হবে না৷
(১৪:১৬) এরপর সামনে তার জন্য রয়েছে জাহান্নাম৷ সেখানে তাকে পান করতে দেয়া হবে গলিত পুঁজের মতো পানি১৭) যা সে জবরদস্তি গলা দিয়ে নামাবার চেষ্টা করবে এবং বড় কষ্টে নামাতে পারবে৷ মৃত্যু সকল দিক দিয়ে তার ওপর ছেয়ে থাকবে কিন্তু তার মৃত্যু হবে না এবং সামনের দিকে একটি কঠোর শাস্তি তাকে ভোগ করতে হবে৷
যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করে তারা পান করে ফুটন্ত পানি এবং ভোগ করে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি নিজেদের সত্য অস্বীকৃতির প্রতিফল হিসেবে-১০:০৪,
(২০:৭৪) –প্রকৃতপক্ষে যে ব্যক্তি অপরাধী হয়ে নিজের রবের সামনে হাযির হবে তার জন্য আছে জাহান্নাম, যার মধ্যে সে না জীবিত থাকবে, না মরবে৷
(২১:১০০) সেখানে তারা হাঁসফাঁস করতে থাকবে এবং তাদের অবস্থা এমন হবে যে, তারা কোনো কথা শুনতে পাবে না৷
(হাঁসফাঁস : ভয়ংকর গরম, পরিশ্রম ও ক্লান্তিকর অবস্থায় মানুষ যখন টানা টানা শ্বাস নিয়ে তাকে সাপের ফোঁসফোঁসানির মতো করে নাক দিয়ে মুখ দিয়ে বের করে তখন তাকে "যাফীর" বলা হয়। )
(হাজ্ব:১৯) ..... এদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য আগুনের পোশাক কাটা হয়ে গেছে,
(আগুনের পোশাক বলতে সম্ভবত এমন জিনিস বুঝানো হয়েছে যাকে সূরা ইবরাহীমের ৫০ আয়াতে (আরবী) বলা হয়েছে : (ইব্রাহিম:৫০) তারা আলকাতরার পোশাক পরে থাকবে এবং আগুনের শিখা তাদের চেহারা ডেলে ফেলতে থাকবে৷ কোন কোন অনুবাদক ও ব্যাখ্যাতা “কাতেরান” শব্দের অর্থ করেছেন গন্ধক আবার কেউ কেউ করেছেন গলিত তামা। কিন্তু আসলে আরবী ভাষায় "কাতেরান" শব্দটি আলকাতরা, গালা ইত্যাদির প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।)
(ইব্রাহিম:৫০) তারা আলকাতরার পোশাক পরে থাকবে এবং আগুনের শিখা তাদের চেহারা ডেলে ফেলতে থাকবে৷
(হাজ্ব:২০) তাদের মাথায় ফুটন্ত পানি ঢেলে দেয়া হবে, যার ফলে শুধু তাদের চামড়াই নয়, পেটের ভেতরের অংশও গলে যাবে৷২১) আর তাদের শাস্তি দেবার জন্য থাকবে লোহার মুগুর৷২২) যখনই তারা কাতর হয়ে জাহান্নাম থেকে বের হবার চেষ্টা করবে তখনই আবার তার মধ্যে তাদেরকে ঠেলে দেয়া হবে, বলা হবে, এবার দহন জ্বালার স্বাদ নাও৷
(ফুরকান:১৩) আর যখন এরা শৃংখলিত অবস্থায় জাহান্নামের মধ্যে একটি সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষিপ্ত হবে তখন নিজেদের মৃত্যুকে ডাকতে থাকবে৷১৪) (তখন তাদের বলা হবে) আজ একটি মৃত্যুকে নয় বরং বহু মৃত্যুকে ডাকো৷
(২৭-নমল:৯০) আর যারা অসৎ কাজ নিয়ে আসবে, তাদের সবাইকে অধোমুখে আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে৷ তোমরা কি যেমন কর্ম তেমন ফল - ছাড়া অন্য কোন প্রতিদান পেতে পার?
পরকালে কাফেরদের / জাহান্নামীদের জন্য যা হারাম হবে -৭:৫০ ( সুপেয় পানি ও ভালো খাদ্য),
লাঞ্ছনা তাদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে৷ আল্লাহর হাত থেকে তাদেরকে বাঁচাবার কেউ থাকবে না৷ তাদের চেহারা যেন আধার রাতের কালো আবরণে আচ্ছাদিত হবে৷ তারা দোজখের হকদার, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে৷-১০:২৭,
(ব্যাখ্যা : অর্থাৎ নেককারদের মোকাবিলায় বদকারদের সাথে যে ব্যবহার করা হবে তা হচ্ছে এই যে, তারা যে পরিমাণ খারাপ কাজ করেছে তাদেরকে সেই পরিমাণ শাস্তি দেয়া হবে।অপরাধের চাইতে একটু সামান্য পরিমাণ বেশী শাস্তিও তাদেরকে দেয়া হবে না।)
তারপর জালেমদেরকে বলা , হবে এখন অনন্ত আযাবের স্বাদ আস্বাদন করো, তোমরা যা কিছু উপার্জন করতে তার শাস্তি ছাড়া তোমাদের আর কি বিনিময় দেয়া যেতে পারে?-১০:৫২,
.
জাহান্নাম বাসীদের দোয়া :
হে রব , যারা আমাদেরকে অপরাধী হতে সাহায্য করেছে, তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দাও : ৭:৩৮-৩৯ (অংশবিশেষ)
(১১:৯৭) কিন্তু তারা ফেরাউনের নির্দেশ মেনে চললো৷ অথচ ফেরাউনের নির্দেশ সত্যাশ্রয়ী ছিল না৷(১১:৯৮) কিয়ামতের দিন সে নিজের কওমের অগ্রবর্তী হবে এবং নিজের নেতৃত্বে তাদেরকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাবে৷ অবস্থানের জন্য কেমন নিকৃষ্ট স্থান সেটা৷
(১৭:৬৩) আল্লাহ বললেন, ঠিক আছে, তুমি যাও, এদের মধ্য থেকে যারাই তোমার অনুসরণ করবে তুমিসহ তাদের সবার জন্য জাহান্নামই হবে পূর্ণ প্রতিদান৷
(১৯:৬৮) তোমার রবের কসম আমি নিশ্চয়ই তাদেরকে এবং তাদের সাথে শয়তানদেরকেও ঘেরাও করে আনবো, তারপর তাদেরকে এনে জাহান্নামের চারদিকে নতজানু করে ফেলে দেবো৷ ৬৯) তারপর প্রত্যেক দলের মধ্যে যে ব্যক্তি করুণাময়ের বেশী অবাধ্য ও বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল তাকে ছেঁটে বের করে আনবো৷ ৭০) তারপর আমি জানি তাদের মধ্য থেকে কারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবার বেশী হকদার৷
(২৬.শুআরা:৯২) আর তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে, "আল্লাহকে বাদ দিয়ে তোমরা যাদের ইবাদাত করতে তারা এখন কোথায়? ৯৩) তারা কি এখন তোমাদের কিছু সাহায্য করছে অথবা আত্মরক্ষা করতে পারে? "৯৪) তারপর সেই উপাস্যদেরকে এবং ৯৫) এই পথভ্রষ্টদেরকে আর ইবলীসের বাহিনীর সবাইকে তার মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে৷৯৬) সেখানে এরা সবাই পরস্পর ঝগড়া করবে এবং পথভ্রষ্টরা (নিজেদের উপাস্যদেরকে) বলবে, ৯৭) "আল্লাহর কসম আমরা তো স্পষ্ট ভ্রষ্টতার মধ্যে ছিলাম,৯৮) যখন তোমাদের দিচ্ছিলাম রাব্বুল আলামীনের সমকক্ষের মর্যাদা৷৯৯) আর এ অপরাধীরাই আমাদেরকে ভ্রষ্টতায় লিপ্ত করেছে৷ ১০০) এখন আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই,১০১) এবং কোন অন্তরংগ বন্ধুও নেই৷১০২) হায় যদি আমাদের আবার একবার ফিরে যাওয়ার সুযোগ মিলতো, তাহলে আমরা মুমিন হয়ে যেতাম৷"১০৩) নিঃসন্দেহে এর মধ্যে একটি বড় নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু এদের অধিকাংশ মুমিন নয়৷১০৪) আর প্রকৃতপক্ষে তোমার রব পরাক্রমশালীও এবং করুণাময়ও৷
(২৬.শুআরা:৯৯) আর এ অপরাধীরাই আমাদেরকে ভ্রষ্টতায় লিপ্ত করেছে৷১০০) এখন আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই, ১০১) এবং কোন অন্তরংগ বন্ধুও নেই৷১০২) হায় যদি আমাদের আবার একবার ফিরে যাওয়ার সুযোগ মিলতো, তাহলে আমরা মুমিন হয়ে যেতাম৷"১০৩) নিঃসন্দেহে এর মধ্যে একটি বড় নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু এদের অধিকাংশ মুমিন নয়৷১০৪) আর প্রকৃতপক্ষে তোমার রব পরাক্রমশালীও এবং করুণাময়ও৷
(আরো দেখুন : প > পরকাল) (ন>নেতা)
(হাজ্ব:৩) কতক লোক এমন আছে যারা জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহর ব্যাপারে বিতর্ক করে এবং প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানের অনুসরণ করতে থাকে৷ (হাজ্ব:৪) অথচ তার ভাগ্যেই তো এটা লেখা আছে যে, যে ব্যক্তি শয়তানের সাথে বন্ধুত্ব করবে তাকে সে পথভ্রষ্ট করে ছাড়বে এবং জাহান্নামের আযাবের পথ দেখিয়ে দেবে৷
(১৯:৬০) তবে যারা তাওবা করবে, ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের সমান্যতম অধিকারও ক্ষুন্ন হবে না৷ ৬১) তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী জান্নাত, যার প্রতিশ্রুতি করুণাময় নিজের বান্দাদের কাছে অদৃশ্য পন্থায় দিয়ে রেখেছেন৷আর অবশ্যই এ প্রতিশ্রুতি পালিত হবেই৷
(১৯:৮৫) সেদিনটি অচিরেই আসবে যেদিন মুত্তাকীদেরকে মেহমান হিসেবে রহমানের সামনে পেশ করবো
(২৬.শুআরা:৯০) --(সেদিন ) জান্নাত মুত্তাকীদের কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে ৯১) এবং জাহান্নাম পথভ্রষ্টদের সামনে খুলে দেয়া হবে।
(অর্থাৎ একদিকে মুত্তাকিরা জান্নাতে প্রবেশ করার আগেই দেখতে থাকবে, আল্লাহর মেহেরবানীতে কেমন নিয়ামতে পরিপূর্ণ জায়গায় তারা যাবে। অন্যদিকে পথভ্রষ্টরা তখনো হাশরের ময়দানেই অবস্থান করবে। যে জাহান্নামে তাদের গিয়ে থাকতে হবে তার ভয়াবহ দৃশ্য তাদের সামনে উপস্থাপিত করা হবে।)
২:২১৪,
৩:১৫, ৩:১৩৩-১৩৯
২:২২৫, ৮২,
(২০:৭৫) আর যারা তার সামনে মু’মিন হিসেবে সৎকাজ করে হাযির হবে তাদের জন্য রয়েছে সুমহান মর্যাদা, ৭৬) চির হরিৎ উদ্যান, যার পাদদেশে প্রবাহিত হবে নদী, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল৷ এ হচ্ছে পুরস্কার সেই ব্যক্তির যে পবিত্রতা অবলম্বন করে৷
(৫৭:২১) দৌড়াও এবং একে অপরের চেয়ে অগ্রগামী হওয়ার চেষ্টা করো, তোমার রবের মাগফিরাতের দিকে এবং সে জান্নাতের দিকে যার বিস্তৃতি আসমান ও যমীনের মত৷ তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে সে লোকদের জন্য যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলদের প্রতি ঈমান এনেছে৷ এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ৷ যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন৷ আল্লাহ বড়ই অনুগ্রহশীল৷
(১৩:৩৫) যারা আল্লাহকে ভয় করে তাদের জন্য যে জান্নাতের ওয়াদা করা হয়েছে তার অবস্থা হচ্ছে এই যে, তার পাদদেশে নদী প্রবাহিত হচ্ছে, তার ফলসমূহ চিরস্থায়ী এবং তার ছায়ার বিনাশ নেই৷ এ হচ্ছে মুত্তাকীদের পরিণাম৷
(১৬:৩১) চিরন্তন অবস্থানের জান্নাত, যার মধ্যে তারা প্রবেশ করবে, পাদদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে নদী এবং সবকিছুই সেখানে তাদের কামনা অনুযায়ী থাকবে৷ এ পুরস্কার দেন আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে৷
(২১:১০১) তবে যাদের ব্যাপারে আমার পক্ষ থেকে পূর্বাহ্নেই কল্যাণের ফায়সালা হয়ে গিয়েছে তাদেরকে অবশ্যি এ থেকে দূরে রাখা হবে ১০২) তারা সামান্যতম খস্খসানিও তারা শুনবে না এবং তারা চিরকাল নিজেদের মন মতো জিনিসের মধ্যে অবস্থান করবে৷
(৩১-লোকমান: ৮) তবে যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাত, ১০
১০ . তাদের জন্য জান্নাতের নিয়ামতসমূহ রয়েছে, একথা বলেননি। বরং বলেছেন, তাদের জন্য রয়েছে নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাত। যদি প্রথম কথাটি বলা হতো, তাহলে এর অর্থ হতো, তারা এ নিয়ামতসমূহ উপভোগ করবে ঠিকই কিন্তু এ জান্নাতগুলো তাদের নিজেদের হবে না। এর পরিবর্তে " তাদের জন্য রয়েছে নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাতসমূহ" একথা বলায় আপনা-আপনি একথা প্রকাশ হয়ে গেছে যে, জান্নাত পুরোটাই তাদের হাওয়ালা করে দেয়া হবে এবং তারা তার নিয়ামতসমুহ এমনভাবে ভোগ করতে থাকবে যেমন একজন মালিক তার মালিকানাধীন জিনিস ভোগ করে থাকে। মালিকানা অধিকার ছাড়াই কাউকে কোন জিনিস থেকে নিছক লাভবান হবার সুযোগ দিলে যেভাবে তা ভোগ করা হয় সেভাবে নয়।
(২১:১০৩) সেই চরম ভীতিকর অবস্থা তাদেরকে একটুও পেরেশান করবে না ৯৮ এবং ফেরেশতারা এগিয়ে এসে তাদেরকে সাদরে অভ্যর্থনা জানাবে এই বলে, “এ তোমাদের সেই দিন যার প্রতিশ্রুতি তোমাদের দেয়া হতো৷”
(৯৮. অর্থাৎ হাশরের দিন এবং আল্লাহর সামনে হাজির হবার সময়, যা সাধারণ লোকদের জন্য হবে চরম ভীতি ও পেরেশানীর সময়, নেক লোকেরা সে সময় একটি মানসিক নিশ্চিন্ততার মধ্যে অবস্থান করবে। কারণ, সবকিছু ঘটতে থাকবে তাদের আশা-আকাংখা ও কামনা-বাসনা অনুযায়ী। ঈমান ও সৎকাজের যে পুঁজি নিয়ে তারা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছিল তা সে সময় পর্যন্ত আল্লাহর মেহেরবানীতে তাদের মনোবল দৃঢ় করবে এবং ভয় ও দুঃখের পরিবর্তে তাদের মনে এ আশার সঞ্চার করবে যে, শীঘ্রই তারা নিজেদের প্রচেষ্টা ও তৎপরতার সুফল লাভ করবে।)
(ফুরকান:২৪) সে দিন যারা জান্নাতের অধিকারী হবে তারাই উৎকৃষ্ট স্থানে অবস্থান করবে এবং দুপুর কাটাবার জন্য চমৎকার জায়গা পাবে৷৩৮
(৩৮. অর্থাৎ হাশরের ময়দানে জান্নাতের হকদার লোকদের সাথে অপরাধীদের থেকে ভিন্নতর ব্যবহার করা হবে । তাদের সম্মানের সাথে বসানো হবে। হাশরের দিনের কঠিন দুপুর কাটাবার জন্য তাদের আরাম করার জায়গা দেয়া হবে। সেদিনের সব রকমের কষ্ট ও কঠোরতা হবে অপরাধীদের জন্য। সৎকর্মশীলদের জন্য নয়। যেমন হাদীসে বলা হয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন ,
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّهُ لَيُخَفَّفُ عَلَى الْمُؤْمِنِ حَتَّى يَكُونَ أَخَفَّ عَلَيْهِ مِنْ صَلَاةٍ مَكْتُوبَةٍ يُصَلِّيهَا فِيَّ الدُّنْيَا.
"সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ আবদ্ধ , কিয়ামতের মহা ও ভয়াবহ দিবস একজন মু'মিনের জন্য অনেক সহজ করে দেয়া হবে। এমনকি তা এতই সহজ করে দেয়া হবে , যেমন একটি ফরয নামায পড়ার সময়টি হয়।" (মুসনাদে আহমদ , আবু সাঈদ খুদরী কতৃক বর্ণিত)
(২১:১০৩) সেই চরম ভীতিকর অবস্থা তাদেরকে একটুও পেরেশান করবে না এবং ফেরেশতারা এগিয়ে এসে তাদেরকে সাদরে অভ্যর্থনা জানাবে এই বলে, “এ তোমাদের সেই দিন যার প্রতিশ্রুতি তোমাদের দেয়া হতো৷”
(২০:১০৫) -এ লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, সেদিন এ পাহাড়গুলো কোথায় চলে যাবে? বলো, আমার রব তাদেরকে ধূলি বানিয়ে উড়িয়ে দেবেন১০৬) এবং যমীনকে এমন সমতল প্রান্তরে পরিণত করে দেবেন যে, ১০৭) তার মধ্যে তোমরা কোন উঁচু নিচু ও ভাঁজ দেখতে পাবে না৷
(১৮:৭) আসলে পৃথিবীতে এ যাকিছু সাজ সরঞ্জামই আছে এগুলো দিয়ে আমি পৃথিবীর সৌন্দর্য বিধান করেছি তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য যে, তাদের মধ্য থেকে কে ভালো কাজ করে৷ ৮) সবশেষে এসবকে আমি একটি বৃক্ষ-লতাহীন ময়দানে পরিণত করবো৷
( পরকালীন জগতে পৃথিবী যে নতুন রূপ নেবে কুরআন মজীদের বিভিন্ন জায়গায় তা বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা ইনশিকাকে বলা হয়েছে ()"যখন পৃথিবী বিস্তৃত করে দেয়া হবে"। সূরা ইনফিতারের বলা হয়েছে () "যখন সাগর চিরে ফেলা হবে"। এর অর্থ সম্ভবত এই যে, সমুদ্রের তলদেশ ফেটি যাবে এবং সমস্ত পানি পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগে চলে যাবে। সূরা তাকবীররে বলা হয়েছেঃ ()"যখন সমুদ্র ভরে দেয়া হবে বা সমান করে দেয়া হবে"। এখানে বলা হচ্ছে যে, পাহাড়গুলো ভেংগে গুঁড়ো গুঁড়ো করে সারা পৃথিবীকে একটি সমতল প্রান্তরে পরিণত করা হবে। মনের পাতায় এর যে আকৃতি গড়ে উঠে তা হচ্ছে এই যে, পরকালীন দুনিয়ায় সমস্ত সমুদ্র ভরাট করে, পাহাড়গুলো ভেংগে উঁচু নীচু সমান করে, বন-জংগল সাফ করে পুরোপুরি একটি বলের গাত্রাবরণের মতো সমান ও মসৃন করে দেয়া হবে। এ আকৃতি সম্পর্কে সূরা ইবরাহীমের ৪৮আয়াতে বলা হয়েছে () "এমন দিন যখন পৃথিবীকে পরিবর্তিত করে ভিন্ন কিছু করে দেয়া হবে"। এ আকৃতির পৃথিবীর ওপর হাশর প্রতিষ্ঠিত হবে এবং আল্লাহ সেখানে আদালত তথা ন্যায়বিচার কায়েম করবেন। তারপর সবশেষে তাকে যে আকৃতি দান করা হবে সূরা যুমারের ৭৪ আয়াতে তা এভাবে বলা হয়েছেঃ
---------------------
অর্থাৎ মুত্তাকীরা "বলবে, সেই আল্লাহর শোকর যিনি আমাদের দ্বারা তাঁর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন এবং আমাদের পৃথিবীর উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিয়েছেন। আমরা এ জান্নাতে যেখানে ইচ্ছা নিজেদের জায়গা বানিয়ে নিতে পারি। কাজেই সৎকর্মশীলদের জন্য রয়েছে সর্বোত্তম প্রতিদান"।
এ থেকে জানা যায়, সবশেষে এ সমগ্র পৃথিবীটিকেই জান্নাতে পরিণত করা হবে এবং আল্লাহর মুত্তাকী ও সৎকর্মশীল বান্দারা হবে এর উত্তরাধিকারী। সে সময় সারা পৃথিবী একটি দেশে পরিণত হবে। পাহাড়-পর্বত, সাগর, নদী, মরুভূমি আজ পৃথিবীকে অসংখ্য দেশে বিভক্ত করে রেখেছে এবং এ সাথে বিশ্বমানবতাকেও বিভক্ত করে দিয়েছে। এগুলোর সেদিন কোন অস্তিত্বই থাকবে না। (উল্লেখ্য, সাহাবা ও তাবেঈদের মধ্যে ইবনে আব্বাস (রা) ও কাতাদাহও এ মত পোষন করতেন যে জান্নাত এ পৃথিবীতেই প্রতিষ্ঠিত হবে। সূরা নাজম এর () আয়াতের ব্যাখ্যা তারা এভাবে করেন যে, এখানে এমন জান্নাতের কথা বলা হয়েছে যেখানে এখন শহীদদের রূহ রাখা হয়। )
(১৩:২৩) তারা নিজেরা তার মধ্যে প্রবেশ করবে এবং তাদের বাপ-দাদারা ও স্ত্রী-সন্তানদের মধ্য থেকে যারা সৎকর্মশীল হবে তারাও তাদের সাথে সেখানে যাবে৷ ফেরেশতারা সব দিক থেকে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাবার জন্য আসবে।
(ফুরকান:১৫) এদের বলো, এ পরিণাম ভলো অথবা সেই চিরন্তন জান্নাত যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছ মুত্তাকীদেরকে? সেটি হবে তাদের কর্মফল এবং তাদের সফরের শেষ মনযিল৷ ১৬) সেখানে তাদের প্রত্যেকটি ইচ্ছা পূর্ণ হবে৷ তার মধ্যে তারা থাকবে চিরকাল তা প্রদান করা হবে তোমার রবের দায়িত্বের অন্তরভুক্ত একটি অবশ্য পালনীয় প্রতিশ্রুতি৷
.
(৩২- আস-সাজদা : ১৯) যারা ঈমান এনেছে এবং যারা সৎকাজ করেছে তাদের জন্য তো রয়েছে জান্নাতের বাসস্থান , আপ্যায়নের জন্য তাদের কাজের প্রতিদানস্বরূপ৷
(১৮:১০৭) তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের আপ্যায়নের জন্য থাকবে ফেরদৌসের বাগান৷১০৮) সেখানে তারা চিরকাল থাকবে এবং কখনো সে স্থান ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে তাদের মন চাইবে না৷
(মু’মিনুন:১) নিশ্চিতভাবে সফলকাম হয়েছে মু’মিনরা, ২) যারাঃ নিজেদের নামাযে বিনয়াবনত হয়, ৩) বাজে কাজ থেকে দূরে থাকে, ৪) যাকাতের পথে সক্রিয় থাকে, ৫) নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে, ৬) নিজেদের স্ত্রীদের ও অধিকারভুক্ত বাঁদীদের ছাড়া, এদের কাছে (হেফাজত না করলে) তারা তিরষ্কৃত হবে না, ৭) তবে যারা এর বাইরে আরো কিছু চাইবে তারাই হবে সীমালংঘনকারী, ৮) নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, ৯) এবং নিজেদের নামাযগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে, ১০) তারাই এমন ধরনের উত্তরাধিকারী যারা নিজেদের উত্তরাধিকার হিসেবে ফিরদাউস লাভ করবে, ১১) এবং সেখানে তারা থাকবে চিরকাল৷
( ফিরদৌস জান্নাতের সবচেয়ে বেশী পরিচিত প্রতিশব্দ । মানব জাতির প্রায় সমস্ত ভাষায়ই এ শব্দটি পাওয়া যায় । সংস্কৃতে বলা হয় পরদেষা, প্রাচীন কুলদানী ভাষায় পরদেসা, প্রাচীন ইরানী (যিন্দা) ভাষায় পিরীদাইজা,হিব্রু ভাষায় পারদেস, আর্মেনীয় ভাষায় পারদেজ , সুরিয়ানী ভাষায় ফারদেসো, গ্রীক ভাষায় পারাডাইসোস , ল্যাটিন ভাষায় প্যারাডাইস এবং আরবী ভাষায় ফিরদৌস । এ শব্দটি এসব ভাষায় এমন একটি বাগানের জন্য বলা হয়ে থাকে যার চারদিকে পাচিল দেয়া থাকে, বাগানটি বিস্তৃত হয় , মানুষের আবাসগৃহের সাথে সংযুক্ত হয় এবং সেখানে সব ধরনের ফল বিশেষ করে আংগুর পাওয়া যায় ।বরং কোন ভাষায় এর অর্থের মধ্যে একথাও বুঝা যায় যে , এখানে বাছাই করা গৃহপালিত পশু-পাখিও পাওয়া যায়। কুরআনের পূর্বে আরবদের জাহেলী যুগের ভাষায় ও ফিরদৌস শব্দের ব্যবহার ছিল। কুরআনে বিভিন্ন বাগানের সমষ্টিকে ফিরদৌস বলা হয়েছে। যেমন সূরা কাহফে বলা হয়েছে: --------------- তাদের আপ্যায়নের জন্য ফিরদৌসের বাগানগুলো আছে। এ থেকে মনের মধ্যে যে ধারণা জন্মে তা হচ্ছে এই যে, ফিরদৌস একটি বড় জায়গা, যেখানে অসংখ্য বাগ- বাগিচা – উদ্যান রয়েছে। )
আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন৷ তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে এবং মারে ও মরে : ৯:১১১,
তারা বলবেঃ “প্রশংসা সব আল্লাহরই জন্য, যিনি আমাদের এ পথ দেখিয়েছেন-৭:৪৩, সেখানে তাদের ধ্বনি হবে “পবিত্র তুমি যে আল্লাহ” ! তাদের দোয়া হবে, “শান্তি ও নিরাপত্তা হোক”! এবং তাদের সবকথার শেষ হবে এভাবে, “সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব -জাহানের রব আল্লাহর জন্য” عَالَمِينَ﴾رَبِّ لِلَّهِ الْحَمْدُ أَنِ دَعْوَاهُمْ وَآخِرُ الْ) -১০:১০,
সে সময় আওয়াজ ধ্বনিত হবেঃ “তোমাদেরকে এই যে জান্নাতের উত্তরাধিকারী বানানো হয়েছে, এটা তোমরা লাভ করেছো সেই সমস্ত কাজের প্রতিদানে যেগুলো তোমরা অব্যাহতভাবে করতে৷”- ৭:৪৩
ফেরেশতারা সব দিক থেকে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাবার জন্য আসবে ২৪) এবং তাদেরকে বলবে : “তোমাদের প্রতি শান্তি৷ তোমরা দুনিয়ায় যেভাবে সবর করে এসেছো তার বিনিময়ে আজ তোমরা এর অধিকারী হয়েছো৷”- কাজেই কতই চমৎকার এ আখেরাতের গৃহ! (১৩;২৩-২৪)
(১৬:৩২) এমন মুত্তাকীদেরকে, যাদের পবিত্র থাকা অবস্থায় ফেরেশতারা যখন মৃত্যু ঘটায় তখন বলে, “তোমাদের প্রতি শান্তি, যাও নিজেদের কর্মকাণ্ডের বদৌলতে জান্নাতে প্রবেশ করো৷”
জান্নাতের প্রশস্ততা আসমান ও জমীন ব্যাপী : ৩:১৩৩,
(১৮:৩০) তবে যারা মেনে নেবে এবং সৎকাজ করবে, সেসব সৎকর্মশীলদের প্রতিদান আমি কখনো নষ্ট করি না৷ ৩১) তাদের জন্য রয়েছে চির বসন্তের জান্নাত, যার পাদদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে নদী, সেখানে তাদেরকে সোনার কাঁকনে সজ্জিত করা হবে, সূক্ষ্ম ও পুরু রেশম ও কিংখাবের সবুজ বস্ত্র পরিধান করবে এবং উপবেশন করবে উঁচু আসনে বালিশে হেলান দিয়ে, চমৎকার পুরস্কার এবং সর্বোত্তম আবাস !
মুমিনদেরকে আল্রাহ এমন বাগান দান করবেন যার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহমান হবে এবং তারা তার মধ্যে চিরকাল বাস করবে৷ এসব চির সবুজ বাগানে তাদের জন্য থাকবে বাসগৃহ এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে৷ এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য : ৯:৭২, ৯:১০০ (মুহাজির ও আনসারদের জন্য প্রবাহমান ঝরণাধারা সম্বলিত চিরকালীন জান্নাত রয়েছে, তাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং আল্লাহও তাদের প্রতি সন্তুষ্ট)
নিয়ামত ভরা জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত হবে-১০:০৯,
(১৯:৬২) সেখানে তারা কোন বাজে কথা শুনবে না, যা কিছুই শুনবে ঠিকই শুনবে৷আর সকাল সন্ধ্যায় তারা অনবরত নিজেদের রিযিক লাভ করতে থাকবে৷
( মূলে "সালাম" শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এর মানে হচ্ছে দোষ-ত্রুটিমুক্ত। জান্নাতে মানুষ যে সমস্ত নিয়ামত লাভ করবে তার মধ্যে একটি বড় নিয়ামত হবে এই যে, সেখানে কোন আজেবাজে অর্থহীন ও কটু কথা শোনা যাবে না। সেখানকার সমগ্র সমাজ হবে পাক-পবিত্র, পরিচ্ছন্ন ও ক্লেদমুক্ত। প্রত্যেক ব্যক্তির প্রকৃতিই হবে ভারসাম্যপূর্ণ। সেখানকার বাসিন্দারা পরনিন্দা, পরচর্চা, গালি-গালাজ, অশ্লীল গান ও অন্যান্য অশালীন ধ্বনি একেবারেই শুনবে না। সেখানে মানুষ শুধুমাত্র ভালো, ন্যায়সংগত ও যথার্থ কথাই শুনবে। এ দুনিয়ায় যে ব্যক্তি একটি যথার্থ পরিচ্ছন্ন ও শালীন, রুচির অধিকারী একমাত্র সে-ই এ নিয়ামতের কদর বুঝতে পারে। কারণ একমাত্র সে-ই অনুভব করতে পারে যে মানুষের জন্য এমন একটি পূতিগন্ধময় সমাজে বাস করা কত বড় বিপদ যেখানে কোন মুহূর্তেই তার কান মিথ্যা, পরনিন্দা, ফিতনা, ফাসাদ, অশ্লীল অশালীন ও যৌন উত্তেজক কথাবার্তা থেকে সংরক্ষিত থাকে না।)
জান্নাতে মানুষ চিরকাল অবস্থান করবে: ৭:৪১,
(৩১-লোকমান: ৯) যেখানে তারা থাকবে চিরকাল৷ এ হচ্ছে আল্লাহর অকাট্য প্রতিশ্রুতি এবং তিনি পরাক্রমশালী ও জ্ঞানময়৷
(আরো দেখুন : চ > চিরকাল)
(৩২- আস-সাজদা : ১৯) যারা ঈমান এনেছে এবং যারা সৎকাজ করেছে তাদের জন্য তো রয়েছে জান্নাতের বাসস্থান , ৩২ আপ্যায়নের জন্য তাদের কাজের প্রতিদানস্বরূপ৷
৩২ . অর্থাৎ সেই জান্নাতগুলো নিছক তাদের প্রমোদ উদ্যান হবে না বরং সেখানেই হবে তাদের আবাস। চিরকাল তারা সেখানে বসবাস করবে।
(১৯:৬৩) এ হচ্ছে সেই জান্নাত, যার উত্তরাধিকারী করবো আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে মুত্তাকীদেরকে৷
(১৫:৪৭) তাদের মনে যে সামান্য কিছু মনোমালিন্য থাকবে তা আমি বের করে দেবো, তারা পরস্পর ভাই ভাইয়ে পরিণত হয়ে মুখোমুখি আসনে বসবে৷৪৮) সেখানে তাদের না কোনো পরিশ্রম করতে হবে আর না তারা সেখান থেকে বহিষ্কৃত হবে৷
কলংক কালিমা বা লাঞ্ছনা তাদের চেহারাকে আবৃত করবে না৷ তারা জান্নাতের হকদার, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল -১০:২৬,
(১১:১০৮) আর যারা ভাগ্যবান হবে, তারা জান্নাতে যাবে এবং সেখানে চিরকাল থাকবে, যতদিন পৃথিবী ও আকাশ প্রতিষ্ঠিত থাকবে, তবে যদি তোমার রব অন্য কিছু করতে চান৷ এমন পুরস্কার তারা পাবে যার ধারাবাহিকতা কখনো ছিন্ন হবে না৷
(১৮:২) ..এবং ঈমান এনে যারা সৎকাজ করে তাদেরকে সুখবর দিয়ে দেয় এ মর্মে যে, তাদের জন্য রয়েছে ভালো প্রতিদান৷ ৩) সেখানে তারা থাকবে চিরকাল৷
(১৫:৪৭) তাদের মনে যে সামান্য কিছু মনোমালিন্য থাকবে তা আমি বের করে দেবো, তারা পরস্পর ভাই ভাইয়ে পরিণত হয়ে মুখোমুখি আসনে বসবে৷
(১৮:২) ..এবং ঈমান এনে যারা সৎকাজ করে তাদেরকে সুখবর দিয়ে দেয় এ মর্মে যে, তাদের জন্য রয়েছে ভালো প্রতিদান৷ ৩) সেখানে তারা থাকবে চিরকাল৷
আর জাহান্নামবাসীরা জান্নাতবাসীদেরকে ডেকে বলবেঃ “সামান্য একটু পানি আমাদের উপর ঢেলে দাও না৷ অথবা আল্লাহ তোমাদের যে রিযিক দান করেছেন তা থেকেই কিছু ফেলে দাও না৷” তারা জবাবে বলবেঃ “আল্লাহ এ দুটি জিনিসই সত্য অস্বীকারকারীদের জন্য হারাম করেছেন -৭:৪৪, ৪৫, ৫০
৩:১৩৩-১৩৯,
জান্নাত সৃষ্টি করা হয়েছে মুত্তাকীদের জন্য : ৩:১৩৩, শুআরা:৯০,
৪:৫৭,
জান্নাতের সাথী : ৪:৬৯, ১২২,
৫:১২, ১১৯
৭:১৯
(১৮:৩০) তবে যারা মেনে নেবে এবং সৎকাজ করবে, সেসব সৎকর্মশীলদের প্রতিদান আমি কখনো নষ্ট করি না৷
যারা সবার আগে ঈমানের দাওয়াত গ্রহণ করে অগ্রনী হয়েছে এবং যারা পরে ঈমান গ্রহণ করেছে সেই সমস্ত মুহাজির ও আনসার তাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট :৯:১০০ (عَنْهُ وَرَضُوا عَنْهُمْ اللَّهُ رَّضِيَ) তাদের জন্য রয়েছে চিরকালীন জান্নাত,
আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন৷ তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে এবং মারে ও মরে : ৯:১১১,
আবার একথাও সত্য, যারা ইমান আনে (অর্থৎ যারা এ কিতাবে পেশকৃত সত্যগুলো গ্রহণ করে) এবং সৎকাজ করতে থাকে, তাদেরকে তাদের রব তাদের ঈমানদের কারণে সোজা পথে চালাবেন৷ নিয়ামত ভরা জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত হবে-১০:০৯,
(৫৭:২১) দৌড়াও এবং একে অপরের চেয়ে অগ্রগামী হওয়ার চেষ্টা করো, তোমার রবের মাগফিরাতের দিকে এবং সে জান্নাতের দিকে যার বিস্তৃতি আসমান ও যমীনের মত৷ তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে সে লোকদের জন্য যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলদের প্রতি ঈমান এনেছে৷ এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ৷ যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন৷ আল্লাহ বড়ই অনুগ্রহশীল৷
(১১:২৩) তবে যারা ঈমান আনে, সৎকাজ করে এবং নিজের রবের একনিষ্ঠ অনুগত বান্দা হয়ে থাকে, তারা নিশ্চিত জান্নাতের অধিবাসী এবং জান্নাতে তারা চিরকাল থাকবে৷
(১৩:২০) আর তাদের কর্মপদ্ধতি এমন হয় যে, তারা আল্লাহকে প্রদত্ত নিজেদের অংগীকার পালন করে এবং তাকে মজতুব করে বাঁধার পর ভেঙ্গে ফেলে না৷২১) তাদের নীতি হয়, আল্লাহ যেসব সম্পর্ক ও বন্ধন অক্ষণ্ন রাখার হুকুম দিয়েছেন৷ সেগুলো তারা অক্ষুণ্ন রাখে, নিজেদের রবকে ভয় করে এবং তাদের থেকে কড়া হিসেব না নেয়া হয় এই ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকে৷২২) তাদের অবস্থা হয় এই যে, নিজেদের রবের সন্তুষ্টির জন্য তারা সবর করে, নামায কায়েম করে, আমার দেয়া রিযিক থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে খচর করে এবং ভালো দিয়ে মন্দ দূরীভূত করে৷ আখেরাতের গৃহ হচ্ছে তাদের জন্যই৷ অর্থাৎ এমন সব বাগান যা হবে তাদের চিরস্থায়ী আবাস৷
(১৮:১০৭) তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের আপ্যায়নের জন্য থাকবে ফেরদৌসের বাগান৷
৭:৪১ – যারা আমার আয়াত সমূহকে মেনে নেবে এবং সৎকাজ করবে
৯:৭২- যারা প্রকৃত মু’মিন।
(১৫:৪৫) অন্যদিকে মুত্তাকীরা থাকবে বাগানে ও নির্ঝরিণীসমূহে ।
(হাজ্ব:২৩) (অন্যদিকে) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত হতে থাকবে৷ সেখানে তাদেরকে সোনার কাঁকন ও মুক্তো দিয়ে সাজানো হবে এবং তাদের পোশাক হবে রেশমের৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৮৩) সে আখেরাতের১০৩ গৃহ তো আমি তাদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেবো যারা পৃথিবীতে নিজেদের বড়াই চায় না১০৪ এবং চায় না বিপর্যয় সৃষ্টি করতে৷১০৫ আর শুভ পরিণাম রয়েছে মুত্তাকীদের জন্যই৷১০৬
১০৩. এখানে জান্নাতের কথা বলা হয়েছে, যা প্রকৃত সাফল্যের স্থান হিসেবে চিহ্নিত।
১০৪. অর্থাৎ, যারা আল্লাহর যমীনে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশী নয়। যারা বিদ্রোহী, স্বৈরাচারী ও দাম্ভিক হয়ে নয় বরং বান্দা হয়ে থাকে এবং আল্লাহর বান্দাদেরকে নিজেদের বান্দা করে রাখার চেষ্টা করে না।
১০৫. 'ফাসাদ' বা বিপর্যয় হচ্ছে মানব জীবন ব্যবস্থার এমন একটি বিকৃতি যা সত্য বিচ্যুত হবার ফলে অনিবার্যভাবে দেখা দেয়। আল্লাহর বন্দেগী এবং তাঁর আইন কানুনের আনুগত্যের সীমানা অতিক্রম করে মানুষ যা কিছুই করে সবই হয় প্রথম থেকে শেষ পর্যন্তই বিপর্যয়। এর একটি অংশ হচ্ছে এমন ধরনের বিপর্যয়, যা হারাম পথে ধন আহরণ এবং হারাম পথে তা ব্যয় করার ফলে সৃষ্টি হয়।
১০৬. অর্থাৎ, তাদের জন্য যারা আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর নাফরমানী করা থেকে দূরে থাকে।
(১৪:২৩) অপরদিকে যারা দুনিয়ায় ঈমান এনেছে এবং যারা সৎ কাজ করেছে তাদেরকে এমন বাগীচার প্রবেশ করানো হবে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত হবে৷ সেখানে তারা তাদের রবের অনুমতিক্রমে চিরকাল বসবাস করবে৷
(ঈমান না আনাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় অসৎ কাজ, এরপর অন্যান্য অসৎকাজতো আছেই )
(হাজ্ব:৫৬) সেদিন বাদশাহী হবে আল্লাহর এবং তিনি তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেবেন৷ যারা ঈমানদার ও সৎকর্মশীল হবে তারা যাবে নিয়ামত পরিপূর্ণ জান্নাতে ।
(১৪:২৩) সেখানে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানানো হবে শান্তি ও নিরাপত্তার মোবারকবাদ সহকারে৷
(১৫:৪৬) এবং তাদেরকে বলা হবে, তোমরা এগুলোতে প্রবেশ করো শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে৷
(২৫.ফুরকান:৭৫) (এরাই নিজেদের সবরের ফল উন্নত মনজিলের আকারে পাবে৷ অভিবাদন ও সালাম সহকারে তাদের সেখানে অভ্যর্থনা করা হবে৷৭৬) তারা সেখানে থাকবে চিরকাল৷ কী চমৎকার সেই আশ্রয় এবং সেই আবাস!
যাতে যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদেরকে পূর্ণ ইনসাফ সহকারে প্রতিদান দেয়া যায় -১০:০৪,
(২০:১২০) কিন্তু শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দিল, বলতে থাকলো, “হে আদম! তোমাকে কি এমন গাছের কথা বলে দেবো যা থেকে অনন্ত জীবন ও অক্ষয় রাজ্য লাভ করা যায়?
(২০:১১৭) এ ঘটনায় আমি আদমকে বললাম, “দেখো, এ তোমার ও তোমার স্ত্রীর, শত্রু, এমন যেন না হয় যে, এ তোমাদেরকে জান্নাত থেকে বের করে দেয় এবং তোমরা বিপদে পড়ে যাও৷ ১১৮) এখানে তো তুমি এ সুবিধে পাচ্ছো যে, তুমি না অভুক্ত ও উলংগ থাকছো ১১৯) এবং না পিপাসার্ত ও রৌদ্রক্লান্ত হচ্ছো৷*
(ব্যাখ্যা : *জান্নাত থেকে বের হবার পর মানুষকে যে বিপদের মুখোমুখি হতে হবে তার বিবরণ এখানে দেয়া হয়েছে। এ সময় জান্নাতের বড় বড় পূর্ণাংগ ও শ্রেষ্ঠ নিয়ামতগুলো উল্লেখ করার পরিবর্তে তার চারটি মৌলিক নিয়ামতের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ এখানে তোমাদের জন্য খাদ্য, পানীয়, পোশাক ও গৃহের ব্যবস্থা সরকারীভাবে করা হচ্ছে। এর কোন একটি অর্জন করার জন্য তোমাদের পরিশ্রম করতে ও প্রচেষ্টা চালাতে হচ্ছে না। এ থেকে আপনাআপনি একথা আদম ও হাওয়া আলাইহিমাস সালামের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, যদি তারা শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে সরকারী নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তাহলে জান্নাত থেকে বের হয়ে তারা এখানকার বড় বড় নিয়াতম তো দূরের কথা মৌলিক জীবন উপকরণও লাভ করবে না। নিজেদের প্রাথমিক প্রয়োজনের জন্যও তারা প্রচেষ্টা চালাতে এবং জীবনপাত করতে বাধ্য হবে। মাথার ঘাম পায়ে না ফেলা পর্যন্ত একবেলার আহারেরও সংস্থান করতে পারবে না। দুবেলা দু'মোঠো আহারের চিন্তা তাদের মনোযোগ, সময় ও শক্তির এমন বৃহত্তম অংশ টেনে বের করে নিয়ে যাবে যে, কোন উন্নতর উদ্দেশ্যের জন্য কিছু করার অবকাশ ও শক্তি তাদের থাকবে না।)
RvbœvZ I Rvnvbœv‡gi gvSLv‡b _vK‡e AvÕivd : 7:46 (AvÕivd evmx Kviv n‡e), RvbœvZ evmx I AvÕivd evmx‡`i g‡a¨ K_vevZ©v: 7:47-50,
Rvnvbœvg evmx I AvÕivd evmx‡`i g‡a¨ K_vevZv©: 7:47-50 (“দেখলে তো তোমরা, আজ তোমাদের দলবলও তোমাদের কোন কাজে লাগলো না৷ আর তোমাদের যেই সাজ-সরঞ্জামকে তোমরা অনেক বড় মনে করতে তাও কোন উপকারে আসলো না ৷)
AvÕivd evmx‡`i †`vqv : 7:47 (“হে আমাদের রব! এ জালেমের সাথে আমাদের শামিল করো না৷”)
আরো কিছু লোক আছে, যারা নিজেদের ভুল স্বীকার করে নিয়েছে৷ তাদের কাজকর্ম মিশ্র ধরনের কিছু ভাল, কিছু মন্দ৷ অসম্ভব নয়, আল্লাহ তাদের প্রতি আবার মেহেরবান হয়ে যাবেন৷ কারণ , তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়-৯:১০২,
(২০:১১) সেখানে পৌঁছলে তাকে ডেকে বলা হলো, “হে মূসা! আমিই তোমার রব, জুতো, খুলে ফেলো,
(ব্যাখ্যা: সম্ভবত এ ঘটনার কারণে ইহুদীরা তাদের শরীযাতের এ বিধান তৈরী করে নিয়েছে যে, জুতা পায়ে দিয়ে নামায পড়া জায়েয নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম এ বিভ্রান্তিটি দূর করার জন্য বলেনঃ
"ইহুদীদের বিপরীত কাজ করো। কারণ তারা জুতা ও চামড়ার মোজা পরে নামায পড়ে না। " (আবু দাউদ)
এর অর্থ এ নয় যে, জুতা পরেই নামায পড়তে হবে। বরং এর অর্থ হচ্ছে, এমনটি করা জায়েয। কাজেই উভয়বিধ কাজ করা। আবু দাউদে আমর ইবনে আসের (রা) রেওয়ায়াত উদ্ধৃত হয়েছে।। তাতে বলা হয়েছে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উভয় অবস্থায় নামায পড়তে দেখেছেন। মুসনাদে আহমদ ও আবু দাউদে আবু সাঈদ খূদরীর (রা) রেওয়ায়াত বর্ণিত হয়েছে। তাতে নবী (সা) বলেছেনঃ "যখন তোমাদের কেউ মসজিদে আসে, সে যেন তার জুতা পরীক্ষা করে দেখে নেয়। যদি কোন নাপাকী লেগে থাকে তাহলে মাটিতে ঘসে পরিস্কার করো এবং সে জুতা পরে নামায পড়ে নাও। " আবু হুরাইরার (রা) রেওয়ায়াতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একথাগুলো আছেঃ "যদি তোমাদের কেউ জুতা দিয়ে নাপকী মাড়িয়ে থাকে হাহলে মাটি তাকে পাক করে দেবার জন্য যথেষ্ট। " আর হযরত উম্মে সালমাহ (রা) বর্ণিত রেওয়ায়াতে বলা হয়েছে (……….) অর্থাৎ "এক জায়াগায় নাপাকী লেগে থাকলে অন্য জায়গায় যেতে যেতে মাটি নিজে নিজেই তাকে পাক করে দেবে।" এ বিপুল সংখ্যক হাদীসের কারণে ইমাম আবু হানীফা, ইমাম আবু ইউসুফ, ইমাম আওযায়ী ও ইসহাক ইবনে রাহাওয়াইয়াহ প্রমুখ ফকীহগণ এমত পোষণ করেন যে, জুতা সর্বাবস্থায় যমীনের মাটির সাহায্যে পাক হয়ে যায়। ইমাম আহমদ ও ইমাম শাফেঈর একটি উক্তিও এর সমর্থনে রয়েছে। কিন্তু ইমাম শাফেঈর সর্বজন পরিচিত উক্তি এর বিরোধী। সম্ভবত তিনি জুতা পরে নামায পড়া আদবের বিরোধী মনে করে তা করতে নিষেধ করেন। যদিও একথা মনে করা হয়েছে যে, তাঁর মতে জুতা মাটিতে ঘসলে পাক হয় না। (এ প্রসংগে উল্লেখ্য, মসজিদে নববীতে চাটাইয়ের বিছানাও ছিল না বরং কাঁকর বিছানো ছিল। কাজেই এসব হাদীসের প্রমাণের ভিত্তিতে যদি কোন ব্যক্তি আজ মসজিদের বিছানার ওপর জুতা পায়ে উঠতে চায় তাহলে তা সঠিক হবে না। তবে ঘাসের ওপর বা খোলা ময়দানে জুতা পায়ে নামায পড়তে পারে। তবে যারা মাঠে-ময়দানে জানাযার নামায পড়ার সময়ও পা থেকে জুতা খুলে ফেলার ওপর জোর দিতে থাকে তারা আসলে শরীয়াতের বিধান জানে না। )
(১১:৪৪) হুকুম হলো, “হে পৃথিবী! তোমার সমস্ত পানি গিলে ফেলো এবং হে আকাশ৷ থেমে যাও৷” সে মতে পানি ভূগর্ভে বিলীন হয়ে গেলো, ফায়সালা চূড়ান্ত করে দেয়া হলো এবং নৌকা জুদীর ওপর থেমে গেলো তারপর বলে দেয়া হলো, জালেম সম্প্রদায় দূর হয়ে গেলো!
বিস্তারিত দেখুন : য > যুলকারনাইনের ঘটনা, ন > নবী রাসুলদের কাহিনী ।
(ফুরকান:১৯) ..... এবং তোমাদের মধ্য থেকে যে-ই জুলুম করবে তাকে আমি কঠিন শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাবো৷
(১৭:৭১) ..সেদিন যাদের আমলনামা তাদের ডান হাতে দেয়া হবে তারা নিজেদের কার্যকলাপ পাঠ করবে এবং তাদের ওপর সামান্যতমও জুলুম করা হবে না।
(১৮:৪৯) ..তাদের যে যা কিছু করেছিল সবই নিজের সামনে উপস্থিত পাবে এবং তোমার রব কারোর প্রতি জুলুম করবেন না৷
(১৮:৫৯) এ শাস্তিপ্রাপ্ত জনপদগুলো তোমাদের সামনে আছে, এরা জুলুম করলে আমি এদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলাম এবং এদের প্রত্যেকের ধ্বংসের জন্য আমি সময় নির্দিষ্ট করে রেখেছিলাম৷
(মু’মিনুন:৬২)....আর কোনক্রমেই লোকদের প্রতি জুলুম করা হবে না ৷
Zviv Avjøvni Dci Ryjyg K‡iwb eis wb‡RivB wb‡R‡`i Dci Ryjyg K‡i‡Q :7:160, আল্লাহ তাদের উপর জুলুম করেননি বরং তারা নিজেরাই নিজেদের উপর জুলুম করেছিল : ৯:৭০ (পূর্ববর্তী যে সমস্ত জাতিকে আল্লাহ ধ্বংস করে দিয়েছেন), যারা নিজেরা নিজেদের উপর জুলুম করে এবং তওবা না করে পূর্ববর্তী জাতিদের মতো তাদেরকে আল্লাহ ধ্বংস করে দেবেন : ৯:৭০, আসলে আল্লাহ মানুষের প্রতি জুলুম করেন না, মানুষ নিজেই নিজের প্রতি জুলুম করে -১০:৪৪,
(১১:১০১) আমি তাদের প্রতি জুলুম করিনি, তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর অত্যাচার করেছে আর যখন আল্লাহর হুকুম এসে গেলো তখন আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা নিজেদের যেসব মাবুদকে ডাকতো তারা তাদের কোন কাজে লাগলো না এবং তারা ধ্বংস ছাড়া তাদের আর কোন উপকার করতে পারলো না৷
(১৬:২৮) হ্যাঁ, এমন কাফেরদের জন্য, যারা নিজেদের ওপর জুলুম করতে থাকা অবস্থায় যখন ফেরেশতাদের হাতে পাকড়াও হয় তখন সাথে সাথেই (অবাধ্যতা ত্যাগ করে) আত্মসমর্পণ করে এবং বলে, “আমরা তো কোনো দোষ করছিলাম না৷” ফেরেশতারা জবাব দেয়, “কেমন করে দোষ করছিলে না ! তোমাদের কার্যকলাপ আল্লাহ খুব ভালো করেই জানেন৷
(১৬:৩৩) হে মুহাম্মদ ! এখন যে এরা অপেক্ষা করছে, এ ক্ষেত্রে এখন ফেরেশতাদের এসে যাওয়া অথবা তোমার রবের ফায়সালা প্রকাশিত হওয়া ছাড়া আর কী বাকি রয়ে গেছে ? এ ধরনের হঠকারিতা এদের আগে আরো অনেক লোক করেছে৷ তারপর তাদের সাথে যা কিছু হয়েছে তা তাদের ওপর আল্লাহর জুলুম ছিল না বরং তাদের নিজেদেরই জুলুম ছিল যা তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর করেছিল৷ ৩৪) তাদের কৃতকর্মের অনিষ্ঠকারিতা শেষ পর্যন্ত তাদের ওপরই আপতিত হয়েছে এবং যেসব জিনিসকে তারা ঠাট্টা করতো সেগুলোই তাদের ওপর চেপে বসেছে৷
(১৬:১১৮) ইতিপূর্বে আমি তোমাকে যেসব জিনিসের কথা বলেছি সেগুলো আমি বিশেষ করে ইহুদীদের জন্য হারাম করেছিলাম৷ আর এটা তাদের প্রতি আমার জুলুম ছিল না বরং তাদের নিজেদেরই জুলুম ছিল, যা তারা নিজেদের ওপর করছিল৷
(১৬:৪১) যারা জুলুম সহ্য করার পর আল্লাহর খাতিরে হিজরত করে গেছে তাদেরকে আমি দুনিয়াতেই ভালো আবাস দেবো এবং আখেরাতের পুরস্কার তো অনেক বড়৷-৪২) হায় ! যে মজলুমরা সবর করেছে এবং যারা নিজেদের রবের ওপর ভরসা করে কাজ করছে তারা যদি জানতো (কেমন চমৎকার পরিণাম তাদের জন্য অপেক্ষা করছে)৷
(২৬.শুআরা:২২৭) তারা ছাড়া যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরন করে তারা তাদের প্রতি জুলুম করা হলে শুধুমাত্র প্রতিশোধ নেয়৷ আর জুলুমকারীরা শীঘ্রই জানবে তাদের পরিণাম কি
(হাজ্ব:৬০) এতো হচ্ছে তাদের অবস্থা, আর যে ব্যক্তি প্রতিশোধ নেয় ঠিক যেমন তার সাথে করা হয়েছে তেমনি এবং তারপর তার ওপর বাড়াবাড়িও করা হয়েছে, সে ক্ষেত্রে আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন, ১০৪ আল্লাহ গোনাহমাফকারী ও ক্ষমাশীল৷১০৫
(১০৪. প্রথমে এমন মজলুমদের কথা বলা হয়েছিল যারা জুলুমের জবাবে কোন পালটা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। আর এখানে এমন মজলুমদের কথা বলা হচ্ছে যারা জুলুমের জবাবে শক্তি ব্যবহার করে।
ইমাম শাফেঈ এ আয়াত থেকে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, জুলুমের কিসাস সেভাবেই লওয়া হবে যেভাবে জুলুম করেছে। যেমন কোন ব্যক্তি একজনকে পানিতে ডুবিয়ে মেরেছে এ অবস্থায় তাকেও পানিতে ডুবিয়ে মারা হবে। আবার কোন ব্যক্তি একজনকে পুড়িয়ে মেরেছে জবাবে তাকেও পুড়িয়ে মারা হবে। কিন্তু হানাফীয়াদের মতে হত্যাকারী যেভাবেই হত্যা করুক না কেন তার থেকে একই পরিচিতি পদ্ধতিতেই কিসাস গ্রহণ করা হবে।
১০৫. এ আয়াতের দু'টি অর্থ হতে পারে এবং সম্ভবত দু'টি অর্থই এখানে প্রযোজ্য। এক, জুলুমের জবাবে যে রক্তপাত করা হবে আল্লাহর কাছে তা ক্ষমাযোগ্য, যদিও রক্তপাত মূলত ভালো জিনিস নয়। দুই, তোমরা যে আল্লাহর বান্দা তিনি ভুল ত্রুটি মার্জনা করেন ও গোনাহ মাফ করে দেন। তাই তোমাদেরও সামর্থ অনুযায়ী মানুষের ভুলত্রুটি ও অপরাধ মার্জনা করা উচিত। মু'মিনরা ক্ষমাশীল, উদার হৃদয় ও ধৈর্যশীল, এগুলো তাদের চরিত্রের ভূষণ। প্রতিশোধ নেবার অধিকার অবশ্যই তাদের আছে। কিন্তু নিছক প্রতিশোধ স্পৃহা ও প্রতিশোধে গ্রহণের মানসিকতা লালন করা তাদের জন্য শোভনীয় নয়।)
(১৭:৫৯) আর এদের পূর্ববর্তী লোকেরা নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করেছে বলেই তো আমি নিদর্শন পাঠানো থেকে বিরত রয়েছি৷ (যেমন দেখে নাও) সামূদকে আমি প্রকাশ্যে উটনী এনে দিলাম এবং তারা তার ওপর জুলুম করলো৷ আমি নিদর্শন তো এজন্য পাঠাই যাতে লোকেরা তা দেখে ভয় পায়৷
নাকি মানুষ তার কর্মের দ্বারা জান্নাতে বা জাহান্নামে যাবে এবং আল্লাহ আলেমুল গায়েব এ বিষয়টি পূর্বাহ্নে জানেন বলেই তাকদীরের কিতাবে লিখে রেখেছেন ? :
(হাজ্ব:১০) এ হচ্ছে তোমার ভবিষ্যত, যা তোমার হাত তোমার জন্য তৈরি করেছে, নয়তো আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি যুলুম করেন না৷
(হাজ্ব:৩৯) অনুমতি দেয়া হলো তাদেরকে যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হচ্ছে, কেননা তারা মজলুম।
(বিস্তারিত দেখুন : জিহাদ > সশস্ত্র জিহাদ > সশস্ত্র যুদ্ধ করার অনুমতি প্রদান, এবং হ > হিজরত > হিজরতকারী মুসলমানগণ হিজরত করার সময় কি ধরণের জুলুমের শিকার হয়েছিল)
(বিস্তারিত দেখুন : হ > হিজরত > হিজরতকারী মুসলমানগণ হিজরত করার সময় কি ধরণের জুলুমের শিকার হয়েছিল)
(৩০-রূম: ২৯) কিন্তু এ জালেমরা না জেনে বুঝে নিজেদের চিন্তা-ধারণার পেছনে ছুটে চলছে৷ এখন আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেছেন কে তাকে পথ দেখাতে পারে? এ ধরনের লোকদের কোন সাহায্যকারী হতে পারে না৷
(২৮-ক্বাছাছ : ২৫) ....... মূসা যখন তার কাছে পৌঁছুল এবং নিজের সমস্ত কাহিনী তাকে শুনালো তখন সে বললো, "ভয় করো না, এখন তুমি জালেমদের হাত থেকে বেঁচে গেছো৷"
(হাজ্ব:৫৩)......এ জালেমরা শত্রুতায় অনেক দূরে পৌঁছে গেছে।
(২১:২৯) আর তাদের মধ্যে যে বলবে, আল্লাহ ছাড়া আমিও একজন ইলাহ, তাকে আমি জাহান্নামের শাস্তি দান করবো, আমার এখানে এটিই জালেমদের প্রতিফল৷
(১৮:৫০) ...এখন কি তোমরা আমাকে বাদ দিয়ে তাকে (ইবলসি শয়তানকে ) এবং তার বংশধরদেরকে নিজেদের অভিভাবক বানিয়ে নিচ্ছো অথচ তারা তোমাদের দুশমন ? বড়ই খারাপ বিনিময় জালেমরা গ্রহণ করছে।
(১৪:৪২) এখন এ জালেমরা যা কিছু করছে আল্লাহকে তোমরা তা থেকে গাফেল মনে করো না৷ আল্লাহ তো তাদেরকে সময় দিচ্ছেন সেই দিন পর্যন্ত যখন তাদের চক্ষু বিস্ফরিত হয়ে যাবে, ৪৩) তারা মাথা তুলে পালাতে থাকবে, দৃষ্টি ওপরের দিকে স্থির হয়ে থাকবে এবং মন উড়তে থাকবে৷
(নূহ আ: বললেন ) আর আমি একথাও বলতে পারি না যে, তোমরা যাদেরকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখো তাদেরকে আল্লাহ কখনো কোন কল্যাণ দান করবেন না৷ তাদের মনের অবস্থা আল্লাহই ভালো জানেন৷ যদি আমি এমনটি বলি তাহলে আমি হবো জালেম” (১১:৩১)
“আল্লাহর লানত সেই জালেমদের ওপর , যারা মানুষকে আল্লাহর পথে চলতে বাধা দিতো এবং তাকে বাঁকা করে দিতে চাইতো আর তারা ছিল আখেরাত অস্বীকারকারী-৭:৪৫,
(১১:১১৩) এ জালেমদের দিকে মোটেই ঝুঁকবে না, অন্যথায় জাহান্নামের গ্রাসে পরিণত হবে এবং তোমরা এমন কোন পৃষ্ঠপোষক পাবে না যে আল্লাহর হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করতে পারে আর কোথাও থেকে তোমাদের কাছে কোন সাহায্য পৌঁছুবে না৷
(১৯:৩৮) যখন তারা আমার সামনে হাযির হবে সেদিন তাদের কানও খুব স্পষ্ট শুনবে এবং তাদের চোখও খুন স্পষ্ট দেখবে কিন্তু আজ এই জালেমরা স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে লিপ্ত৷
(২৯-আনকাবুত:৪৯ ) ...... এবং জালেমরা ছাড়া আর কেউ আমার আয়াত অস্বীকার করে না৷
(২৮-ক্বাছাছ : ২১) এ খবর শুনতেই মূসা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বেরিয়ে পড়লো এবং সে দোয়া করলো, "হে আমার রব! আমাকে জালেমদের হাত থেকে বাঁচাও৷"
৬:২১, ৬:৯৩,
৭:৯৯,
(৩২- আস-সাজদা : ২২) আর তার চেয়ে বড় জালেম কে হবে যাকে তার রবের আয়াতের সাহায্যে উপদেশ দেয়া হয় এবং সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় ? ৩৪ এ ধরনের অপরাধীদের থেকে তো আমি প্রতিশোধ নেবোই ৷
৩৪ . "রবের আয়াত" অর্থাৎ তার নিদর্শনাবলী , এ শব্দগুলো বড়ই ব্যাপক অর্থবোধক। সব ধরনের নিদর্শন এর অন্তরভুক্ত হয়ে যায়। কুরআন মজীদের সমস্ত বর্ণনা দৃষ্টি সমক্ষে রাখলে জানা যায়, এ নিদর্শনাবলী নিম্নোক্ত ছয় প্রকারেরঃ
একঃ যে নিদর্শনাবলী পৃথিবী থেকে নিয়ে আকাশ পর্যন্ত প্রত্যেকটি জিনিসের এবং বিশ্ব-জাহানের সামগ্রিক ব্যবস্থার মধ্যে পাওয়া যায়।
দুইঃ যে নিদর্শনগুলো মানুষের নিজের জন্ম এবং তার গঠনাকৃতি ও অস্তিত্বের মধ্যে পাওয়া যায়।
তিনঃ যে নিদর্শনাবলী মানুষের স্বতস্ফুর্ত অনুভূতিতে , তার অচেতন ও অবচেতন মনে এবং তার নৈতিক চিন্তাধারায় পাওয়া যায়।
চারঃ যে নিদর্শনাবলী পাওয়া যায় মানুষের ইতিহাসের ধারাবাহিক অভিজ্ঞতায়।
পাঁচঃ যে নিদর্শনাবলী মানুষের প্রতি অবতীর্ণ পার্থিব আপদ-বিপদ ও আসমানী বালা-মুসিবতের মধ্যে পাওয়া যায়।
ছয়ঃ আর এসবের পরে আল্লাহ তার নবীগণের মাধ্যমে যেসব আয়াত পাঠান ওপরে বর্ণিত নিদর্শনগুলো যেসব সত্যের প্রতি ইঙ্গিত করেছে এ আয়াতগুলোর সাহায্যে যুক্তি-সঙ্গত পদ্ধতিতে মানুষকে সেসব সত্যের জ্ঞান দান করাই কাম্য।
এ সমস্ত নিদর্শন পূর্ণ একাত্মতা সহকারে সোচ্চার কণ্ঠে মানুষকে একথা বলে যাচ্ছে যে, তুমি আল্লাহ নও এবং বহু সংখ্যক আল্লাহর বান্দা নও বরং তোমার আল্লাহ মাত্র একজন। তার ইবাদাত ও আনুগতত্য ছাড়া তোমার দ্বিতীয় কোন পথ নেই। তোমাকে এ জগতে স্বাধীন , স্বেচ্ছাচারী ও দায়িত্বহীন করে পাঠানো হয়নি। বরং নিজের জীবনের সমস্ত কাজ শেষ করার পর তোমাকে তোমার আল্লাহর সামনে হাজির হয়ে জবাবদিহি করতে এবং নিজের কাজের প্রেক্ষিতে পুরস্কার ও শাস্তি পেতে হবে। কাজেই তোমার আল্লাহ তোমাকে সঠিক পথ দেখাবার জন্য নিজের নবী ও কিতাবসমূহের মাধ্যমে যে পথ-নির্দেশনা পাঠিয়েছেন তা মেনে চলো এবং স্বেচ্ছাচারী নীতি অবলম্বন করা থেকে বিরত থাকো। এখন একথা সুস্পষ্ট , যে মানুষকে এত বিভিন্নভাবে বুঝানো হয়েছে, যাকে উপদেশ দেবার ও পরিচালনা করার জন্য এমন অগণিত নিদর্শনাবলীর সমাবেশ ঘটানো হয়েছে এবং যাকে দেখার জন্য চোখ , শোনার জন্য কান এবং চিন্তা করার জন্য অন্তরের নিয়ামত দান করা হয়েছে, সে যদি সমস্ত নিদর্শনাবলীর দিক থেকে চোখ বন্ধ করে নেয়, যারা বুঝাচ্ছে তাদের কথা ও উপদেশের জন্যও নিজের কানের ছিদ্র বন্ধ করে নেয় এবং নিজের মন-মস্তিষ্ক দিয়েও উল্টা দর্শনই তৈরি করার কাজে আত্ননিয়োগ করে, তাহলে তার চেয়ে বড় জালেম আর কেউ হতে পারে না। এরপর সে দুনিয়ায় নিজের পরীক্ষার মেয়াদ খতম করার পর যখন তার আল্লাহর সামনে গিয়ে দাঁড়াবে তখন বিদ্রোহের পূর্ণ শাস্তি লাভ করার যোগ্যই হবে।
৩:১১৭, ১৩৫, ৪:৩০, ৪০,
(৩:১১৭) তারা তাদের এই দুনিয়ার জীবনে যা কিছু ব্যয় করছে তার উপমা হচ্ছে এমন বাতাস যার মধ্যে আছে তূষার কণা৷ যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছে তাদের শস্যক্ষেতের ওপর দিয়ে এই বাতাস প্রবাহিত হয় এবং তাকে ধ্বংস করে দেয়৷ আল্লাহ তাদের ওপর জুলুম করেননি৷ বরং প্রকৃতপক্ষে এরা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছে৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৩৬) তারপর মূসা যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনগুলো নিয়ে পৌঁছুলো তখন তারা বললো, এসব বানোয়াট যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়৷ আর এসব কথা তো আমরা আমাদের বাপ দাদার কালে কখনো শুনিনি৷ (২৮-ক্বাছাছ : ৩৭) মূসা জবাব দিল, "আমার রব তার অবস্থা ভালো জানেন, যে তার পক্ষ থেকে পথ নির্দেশনা নিয়ে এসেছে এবং কার শেষ পরিণতি ভালো হবে তাও তিনিই ভালো জানেন, আসলে জালেম কখনো সফলকাম হয় না৷"
(৩১-লোকমান: ১১) আসল কথা হচ্ছে এ জালেমরা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত রয়েছে৷
(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : স > সৃষ্টি > শরীকরা সৃষ্টির ক্ষেত্রে কোন অংশীদারিত্ব রাখেনা )
(২৮-ক্বাছাছ : ৩৭).......আসলে জালেম কখনো সফলকাম হয় না৷"
৪:৩০, ৪০,
(৩:১১৭) ……আল্লাহ তাদের ওপর জুলুম করেননি৷
তারপর যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বানিয়ে তাকে আল্লাহর কথা বলে প্রচার করে অথবা আল্লাহর যথার্থ আয়াতকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে, তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হতে পারে?-১০:১৭, ৭:৩৭,
(১১:১৮) আর যে ব্যক্তি আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা করে তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হবে ? এ ধরনের লোকদের তাদের রবের সামনে উপস্থিত করা হবে এবং সাক্ষীরা সাক্ষ দেবে, এরাই নিজেদের রবের বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা করেছিল৷ শোনো, জালেমদের ওপর আল্লাহর লানত (১১:১৯) এমন জালেমদের ওপর যারা আল্লাহর পথে যেতে মানুষকে বাধা দেয়, সেই পথকে বাঁকা করে দিতে চায় এবং আখেরাত অস্বীকার করে৷
মূসার অনুপস্থিতিতে তার জাতির লোকেরা নিজেদের অলংকার দিয়ে বাছুরের মুর্তি তৈরী করলো৷ তার মুখ দিয়ে গরুর মত হাম্বা রব বের হতো৷ তারা কি দেখতে পেতো না যে, ঐ বাছুর তাদের সাথে কথাও বলে না আর কোন ব্যাপারে তাদের কে পথনির্দেশনাও দেয় না? কিন্তু এরপর ও বাছুরের মুর্তিকে মাবুদে পরিণত করলো৷ বস্তুত তারা ছিল বড়ই জালেম৷-৭:১৪৮,
(১৮:১৫) ..যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হতে পারে ?
(২৮-ক্বাছাছ : ৪০) শেষে আমি তাকে ও তার সৈন্যদেরকে পাকড়াও করলাম এবং সাগরে নিক্ষেপ করলাম৷৫৬ এমন এ জালেমদের পরিণাম কি হয়েছে দেখে নাও৷
৫৬. এ শব্দগুলোর মাধ্যমে মহান আল্লাহ্ তাদের মিথ্যা অহমিকার মোকাবেলায় তাদের নিকৃষ্টতা ও হীনতার চিত্র তুলে ধরেছেন। তারা নিজেদেরকে অনেক বড় কিছু মনে করে বসেছিল। কিন্তু সঠিক পথে আসার জন্য আল্লাহ্ তাদেরকে যে অবকাশ দিয়েছিলেন তা যখন খতম হয়ে গেলো তখন তাদেরকে এমনভাবে সাগরে নিক্ষেপ করা হলো যেমন খড়কুটা ও ময়লা-আবর্জনা নিক্ষেপ করা হয়।
(আরো দেখুন : ত > তাগুত > তাগুতের প্রতিফল/পরিণাম। )
(২৮-ক্বাছাছ :৫০) এখন যদি তারা তোমার এ দাবী পূর্ণ না করে, তাহলে জেনে রাখো, তারা আসলে নিজেদর প্রবৃত্তির অনুসরণ করে৷ আর যে ব্যক্তি আল্লাহর হিদায়াত ছাড়াই নিছক নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে তার চেয়ে বড় পথভ্রষ্ট আর কে হবে? আল্লাহ এ ধরনের জালেমদেরকে কখনো হিদায়াত দান করেন না৷
( বিস্তারিত দেখুন : হ > হেদয়েত > কোন ধরণের লোকদেরকে আল্লাহ হেদায়েত দান করেন না : সঠিক পথ দেখান না । )
৩:১০৮,
(নুর:৪৮) যখন তাদেরকে ডাকা হয় আল্লাহ ও তাঁর রসূলের দিকে, যাতে রসূল তাদের পরস্পররে মোকদ্দমার ফায়সালা করে দেন তখন তাদের মধ্যকার একটি দল পাশ কাটিয়ে যায় ৷৪৯) তবে যদি সত্য তাদের অনুকূল থাকে, তাহলে বড়ই বিনীত হয়ে রসূলের কাছে আসে ৷৫০) তাদের মনে কি (মুনাফিকীর ) রোগ আছে ? না তারা সন্দেহের শিকার হয়েছে ? না তারা ভয় করছে আল্লাহ ও তাঁর রসূল তাদের প্রতি যুলুম করবেন ? আসলে তারা নিজেরাই যালেম ৷
(মু’মিনুন:৯৩) হে মুহাম্মাদ (সা) ! দোয়া করো, ‘‘হে আমার রব! এদেরকে যে আযাবের হুমকি দেয়া হচ্ছে, তুমি যদি আমার উপস্থিতিতে সে আযাব আনো ৯৪) তাহলে হে পরওয়ারদিগার ! আমাকে এ জালেমদের অন্তরভুক্ত করো না ৷
(১৪:২৭) ঈমানদারদেরকে আল্লাহ একটি শাশ্বত বাণীর (আল্লাহর একত্তবাদ ও কালিমায়ে তায়্যিবার) ভিত্তিতে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানে প্রতিষ্ঠা দান করেন৷ আর জালেমদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন৷ আল্লাহ যা চান তাই করেন৷
(হাজ্ব:৭১) ....এ জালেমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৫৯) আর তোমার রব জনপদগুলো ধ্বংস করেন না যতক্ষণ না তাদের কেন্দ্রে একজন রসূল পাঠান, যে তাদের কাছে আমার আয়াত শুনায়৷ আর আমি জনপদগুলো ধ্বংস করি না যতক্ষণ না সেগুলোর বাসিন্দারা জালেম হয়ে যায়৷
আকাশ থেকে আযাব বর্ষণ করা : ৭:১৬২ (কথা পরিবর্তন করে দেয়ার শাস্তি)
জনপদ উল্টে দেওয়া : ৯:৭০ (পূর্ববর্তী জাতি সমূহ যারা নিজেরাই নিজেদের উপর জুলুম করেছিল),
শনিবারের বিধান লংঘণ করার কারণ ঘৃণিত বান হয়ে যাওয়া : ৭:১৬৪, ১৬৫,
এ ধরনের জালেমদের কে আল্লাহ কখনো সোজা পথ দেখান না- ৯:১০৯,
কাজেই দেখো জালেমদের পরিনাম কী হয়েছে!:১০:৩৯,
(১১:৩৭) এবং আমার তত্ত্বাবধানে আমার অহী অনুযায়ী একটি নৌকা বানানো শুরু করে দাও৷ আর দেখো যারা জুলুম করেছে তাদের জন্য আমার কাছে কোন সুপারিশ করো না, এরা সবাই এখন ডুবে যাবে৷
(১৩:৪১) এরা কি দেখে না আমি এ ভূখণ্ডের ওপর এগিয়ে চলছি এবং এর গণ্ডী চতুরদিক থেকে সংকুচিত করে আনছি ? আল্লাহ রাজত্ব করছেন, তাঁর সিদ্ধান্ত পুনরবিবেচনা করার কেউ নেই
তখন তাদের রব তাদের কাছে অহী পাঠালেন, “আমি এ জালেমদের ধ্বংস করে দেবো৷-১৪:১৩,
(১৮:৮৭) সে বললো, “তাদের মধ্য থেকে যে জুলুম করবে আমরা তাকে শাস্তি দেবো তারপর তাকে তার রবের দিকে ফিরিয়ে নেয়া হবে এবং তিনি তাকে অধিক কঠিন শাস্তি দেবেন৷
(মু’মিনুন:২৮) তারপর যখন তুমি নিজের সাথীদের নিয়ে নৌকায় আরোহণ করবে তখন বলবে, আল্লাহর শোকর, যিনি আমাদের উদ্ধার করেছেন জালেমদের হাত থেকে৷
তারপর জালেমদেরকে বলা হবে, এখন অনন্ত আযাবের স্বাদ আস্বাদন করো, তোমরা যা কিছু উপার্জন করতে তার শাস্তি ছাড়া তোমাদের আর কি বিনিময় দেয়া যেতে পারে?-১০:৫২,
(১৮:২৯) ... আমি (অস্বীকারকারী) জালেমদের জন্য একটি আগুন তৈরি করে রেখেছি যার শিখাগুলো তাদেরকে ঘেরাও করে ফেলেছে৷ সেখানে তারা পানি চাইলে এমন পানি দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করা হবে, যা হবে তেলের তলানির মতো৷ এবং যা তাদের চেহারা দগ্ধ করে দেবে৷ কত নিকৃষ্ট পানীয় এবং কি জঘন্য আবাস !
(মু’মিনুন:১০৪) আগুন তাদের মুখের চামড়া জ্বালিয়ে দেবে এবং তাদের চোয়াল বাইরে বের হয়ে আসবে ৷
(মু’মিনুন:১০৬) তারা বলবে, ‘‘হে আমাদের রব !আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের ওপর ছেয়ে গিয়েছিল,আমরা সত্যিই ছিলাম বিভ্রান্ত সম্প্রদায়৷১০৭) হে পরওয়ারদিগার ! এখন আমাদের এখান থেকে বের করে দাও,আমরা যদি আবার এ ধরনের অপরাধ করি তাহলে আমরা জালেম হবো ৷
(২৭-নমল:৮৫) আর তাদের জুলুমের কারণে আজাবের প্রতিশ্রুতি তাদের উপর পূর্ন হয়ে যাবে, তখন তারা কিছুই বলতে পারবে না৷
(মু’মিনুন:২৭) ...তাদের ছাড়া যাদের বিরুদ্ধে আগেই ফায়সালা হয়ে গেছে এবং জালেমদের ব্যাপারে আমাকে কিছুই বলো না, তারা এখন ডুবতে যাচ্ছে৷
(৩০-রূম: ৫৭) কাজেই সেদিন জালেমদের কোন ওজর- আপত্তি কাজে লাগবে না এবং তাদেরকে ক্ষমা চাইতেও বলা হবে না৷ ৮৩
৮৩ . এর অন্য অনুবাদ এও হতে পারে যে, তাদের কাছে চাওয়া হবে না যে, তোমাদের রবকে সন্তুষ্ট করো" কারণ তাওবা, ঈমান ও সৎকাজের দিকে ফিরে আসার সকল সুযোগই তারা হারিয়ে বসবে এবং পরীক্ষার সময় পার হয়ে গিয়ে এখনি ফল প্রকাশের সময় সমাগত হবে।
وَذَا النُّونِ إِذ ذَّهَبَ مُغَاضِبًا فَظَنَّ أَن لَّن نَّقْدِرَ عَلَيْهِ فَنَادَىٰ فِي الظُّلُمَاتِ أَن لَّا إِلَٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ ﴿الأنبياء: ٨٧﴾
আর যুন-নূন (মাছওয়ালা নবী), -- স্মরণ করো, তিনি চলে গিয়েছিলেন রেগেমেগে, আর তিনি ভেবেছিলেন যে আমরা কখনো তাঁর উপরে ক্ষমতা চালাব না, তখন সেই সংকটে তিনি আহ্বান করলেন যে ''তুমি ছাড়া অন্য উপাস্য নেই, তোমারই সব মহিমা, আমি নিশ্চয়ই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছি।’’ (২১: ৮৭)
قَالَا رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ ﴿الأعراف: ٢٣﴾
তারা (আদম ও হাওয়া আ: ) বললো -- ''আমাদের প্রভু! আমরা আমাদের নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছি, আর যদি তুমি আমাদের পরিত্রাণ না করো ও আমাদের তুমি দয়া করো তাহলে আমরা নিশ্চয়ই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো।’’ (৭: ২৩)
(২০:১১৫) এর আগে আদমকে একটি হুকুম দিয়েছিলাম কিন্তু সে ভুলে গিয়েছে এবং আমি তার মধ্যে দৃঢ় সংকল্প পাইনি৷
(২০:১২১)........আদম নিজের রবের নাফরমানী করলো এবং সে সঠিক পথ থেকে সরে গেল৷
(এখানেও “নাফরমানী” শব্দের অর্থ হলো “সে ভুলে গিয়েছে এবং আমি তার মধ্যে দৃঢ় সংকল্প পাইনি৷”)
(বিস্তারিত দেখুন : ম > মানুষ > চিরন্তন জীবন লাভ করতে চাওয়া মানুষের একটি স্বভাবজাত বাসনা)
২:২১৯, ৫:৯০, ৯১
লোকেরা জিনদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক কর : ৬:১০০,
অসৎ কাজে জিনদেরকে ব্যবহার করা : ৬:১২৮, ১২৯, ১৩০,
মানুষকে সিজদা করতে বলায়, সে বললো, আমি আগুণ থেকে এবং মানুষ মাটি থেকে সৃষ্ট, সুতরাং, আমি কেন তাকে সিজদা করবো ? : ৭:১২,
(১৭:৮৮) বলে দাও, যদি মানুষ ও জিন সবাই মিলে কুরআনের মতো কোনো একটি জিনিস আনার চেষ্টা করে তাহলে তারা আনতে পারবে না, তারা পরস্পরের সাহায্যকারী হয়ে গেলেও৷
(১১:১১৯)আর তোমার রবের একথা পূর্ণ হয়ে গেছে যা তিনি বলেছিলেন- “আমি জাহান্নামকে জিন ও মানুষ উভয়কে দিয়ে ভরে দেবো৷”
৭:৩৮,
(১১:১১৯)আর তোমার রবের একথা পূর্ণ হয়ে গেছে যা তিনি বলেছিলেন- “আমি জাহান্নামকে জিন ও মানুষ উভয়কে দিয়ে ভরে দেবো৷”
(৩৪-সাবা: ১২)......তাদের মধ্য থেকে যে আমার হুকুম অমান্য করে তাকে আমি আস্বাদন করাই জলন্ত আগুনের স্বাদ৷
(১৫:১৭) এবং প্রত্যেক অভিশপ্ত শয়তান থেকে সেগুলোকে সংরক্ষণ করেছি৷ কোনো শয়তান সেখানে অনুপ্রবেশ করতে পারে না৷১৮) তবে আড়ি পেতে বা চুরি করে কিছু শুনতে পারে৷ আর যখন সে চুরি করে শোনার চেষ্টা করে তখন একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা তাকে ধাওয়া করে৷
(৩৪-সাবা: ১৪) তারপর যখন সুলাইমানের ওপর আমি মৃত্যুর ফায়সালা প্রয়োগ করলাম তখন জিনদেরকে তার মৃত্যুর খবর দেবার মতো সেই ঘুণ ছাড়া আর কোন জিনিস ছিল না যা তার লাঠিকে খেয়ে চলছিল৷ এভাবে যখন সুলাইমান পড়ে গেলো, জিনদের কাছে একথা পরিষ্কার হয়ে গেলো ২৩ যে, যদি তারা অদৃশ্যের কথা জানতো তাহলে এ লাঞ্জনাকর শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না৷ ২৪
২৩) মূল শব্দ হচ্ছে, تبينت الجن --এ ব্যাক্যাংশের একটি অনুবাদ আমি ওপরে করেছি। এর আরেকটি অনুবাদ এও হতে পারেঃ জিনদের অবস্থা পরিষ্কার হয়ে গেলো অথবা উন্মুক্ত হয়ে গেলো। প্রথম অবস্থায় এর অর্থ হবে, খোদ জিনেরাই জানতে পারবে যে, অদৃশ্য বিষয় জানার ব্যাপারে তাদের ধারণা ভুল। দ্বিতীয় অবস্থায় এর অর্থ হবে, সাধারণ মানুষেরা যারা জিনদেরকে অদৃশ্যজ্ঞানী মনে করতো তাদের কাছে একথা পরিষ্কার হয়ে গেল যে, জিনেরা কোন অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখে না।
২৪) বর্তমান যুগের কোন কোন মুফাসসির এর ব্যাখ্যা এভাবে করেছেনঃ হযরত সুলাইমানের (আ) ছেলে রাহুব্’আম যেহেতু ছিলেন অযোগ্য, বিলাশী ও তোষামোদকারী মোসাহেব পরিবৃত, তাই নিজের মহিমান্বিত পিতার ইন্তেকালের পর তার ওপর যে মহান দায়িত্ব এসে পড়েছিল তা পালন করতে তিনি সক্ষম হননি। তার ক্ষমতা গ্রহণের কিছুদিন পরেই রাষ্ট্রব্যবস্থা পতনমুখী হয় এবং আশপাশের সীমান্ত এলাকার যেসব উপজাতিকে (অর্থাৎ জিন) হযরত সুলাইমান (আ) তাঁর প্রবল পরাক্রমের মাধ্যমে নিজের দাসে পরিণত করে রেখেছিলেন তারা সবাই নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে যায়। কিন্তু এ ব্যাখ্যা কোনক্রমেই কুরআনের শব্দাবলীর সাথে সামঞ্জস্যশীল নয়। কুরআনের শব্দাবলী আমাদের সামনে যে নকশা পেশ করছে তা হচ্ছে এই যে, হযরত সুলাইমান এমন সময় মৃত্যবরণ করেন যখন তিনি একটি লাঠিতে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে বা বসে ছিলেন। এ লাঠির কারণে তাঁর নিষ্প্রাণ দেহ স্বস্থানে প্রতিষ্ঠিত ছিল এবং তিনি জীবিত আছেন মনে করেই জিনেরা তাঁর কাজ করে চলছিল। শেষে যখন লাঠিতে ঘূন ধরে গেল এবং তা ভেতর থেকে অন্তসারশূন্য হয়ে গেল তখন তাঁর মরদেহ মাটিতে গড়িয়ে পড়লো এবং জিনেরা জানতে পারলো তিনি মারা গেছেন। এই পরিষ্কার ও দ্ব্যর্থহীন ঘটনা বর্ণনার গায়ে এ ধরনের অর্থের প্রলেপ লাগাবার কি যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে যে, ঘূন অর্থ হচ্ছে হযরত সুলাইমানের ছেলের অযোগ্যতা, লাঠি অর্থ হচ্ছে তাঁর কর্তৃত্ব ক্ষমতা এবং তাঁর মৃতদেহ পড়ে যাবার মানে হচ্ছে তাঁর রাজ্য টুকরো হয়ে যাওয়া? এ বিষয়টি বর্ণনা করাই যদি আল্লাহর উদ্দেশ্য হতো তাহলে কি এজন্য সাবলীল আরবী ভাষায় শব্দের আকাল হয়ে গিয়েছিল? এভাবে হেরফের করে তা বর্ণনা করার কি কোন প্রয়োজন ছিল? এ ধরনের হেঁয়ালি ও ধাঁধার ভাষা কুরআনের কোথায় ব্যবহার হয়েছে? আর এ বাণী প্রথমে সে যুগের সাধারণ আরবদের সামনে যখন নাযিল হয় তখন তারা কিভাবে এ ধাঁধার মর্মোদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিলেন?
তারপর এ ব্যাখ্যার সবচেয়ে বেশী অদ্ভুত বিষয়টি হচ্ছে এই যে, এখানে জিন বলতে বুঝানো হয়েছে সীমান্ত উপজাতিগুলোকে, যাদেরকে হযরত সুলাইমান নিজের সেবাকর্মে নিযুক্ত করে রেখেছিলন। প্রশ্ন হচ্ছে, এ উপজাতিগুলোর মধ্যে কে অদৃশ্যজ্ঞানের দাবীদার ছিল এবং মুশরিকরা কাকে অদৃশ্য জ্ঞানী মনে করতো? আয়াতের শেষের শব্দগুলো একটু মনোযোগ সহকারে পড়লে যে কোন ব্যক্তি নিজেই দেখতে পারে, জিন বলতে এখানে অবশ্যই এমন কোন দল বুঝানো হয়েছে যারা নিজেরাই অদৃশ্যজ্ঞানের দাবীদার ছিল অথবা লোকেরা তাদেরকে অদৃশ্যজ্ঞানী মনের করতো এবং তাদের অদৃশ্য বিষয়ক অজ্ঞতার রহস্য এ ঘটনাটিই উদঘাটন করে দিয়েছে যে, তারা হযরত সুলাইমানকে জীবিত মনে করেই তাঁর খেদমতে নিযুক্ত থাকে অথচ তাঁর ইন্তেকাল হয়ে গিয়েছিল। কুরআনের এই সুস্পষ্ট বর্ণনা দেবার পর জিন বলতে সীমান্ত উপজাতিদেরকে বুঝানো হয়েছে এই মতটি পুনরবিবেচনা করা একজন ঈমানদার ব্যক্তির জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু বস্তুবাদী দুনিয়ার সামনে জিন নামের একটি অদৃশ্য সৃষ্টির অস্তিত্ব মেনে নিতে যারা লজ্জা অনুভব করছিলেন তারা এ কুরআনের এ সুস্পষ্ট বর্ণনার পর নিজেদের জটিল মনগড়া ব্যাখ্যার ওপরই জোর দিতে থাকেন।
কুরআনের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ বলেছেন, আরবের মুশকিরা জিনদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক করতো, তাদেরকে আল্লাহর সন্তান মনে করতো এবং তাদের কাছে আশ্রয় চাইতঃ
وَجَعَلُوا لِلَّهِ شُرَكَاءَ الْجِنَّ وَخَلَقَهُمْ
“আর তারা জিনদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক করে নিয়েছে অথচ তিনি তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন।” (আল আন’আম, ১০০)
وَجَعَلُوا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجِنَّةِ نَسَبًا
“আর তারা আল্লাহ ও জিনদের মধ্যে বংশগত সম্পর্ক কল্পনা করে নিয়েছে।”
(আস সাফফত, ১৫৮)
وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِنَ الْإِنْسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِنَ الْجِنِّ
“আর ব্যাপার হচ্ছে, মানবজাতির মধ্য থেকে কিছু লোক জিনদের মধ্য থেকে কিছু লোকের কাছে আশ্রয় চাইতো।” (আল জিন, ৬)
তাদের এসব বিশ্বাসের মধ্যে একটি বিশ্বাস এও ছিল যে, তারা জিনদেরকে অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান সম্পন্ন মনে করতো এবং অদৃশ্য বিষয় জানার জন্য জিনদের শরণাপন্ন হতো। এ বিশ্বাসটির অসারতা প্রমাণ করার জন্য আল্লাহ এখানে এ ঘটনাটি শুনাচ্ছেন এবং এর উদ্দেশ্য হচ্ছে আরবের কাফেরদের মধ্যে এ অনুভূতি সৃষ্টি করা যে, তোমরা অনর্থক জাহেলিয়াতের মিথ্যা বিশ্বাসের ওপর জোর দিয়ে চলছো অথচ তোমাদের এ বিশ্বাসগুলো একেবারেই ভিত্তিহীন। (আরো বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য সামনের দিকে ৬৩ টীকা দেখুন)
(২১:৮২) আর শয়তানের মধ্য থেকে এমন অনেককে আমি তার অনুগত করে দিয়েছিলাম যারা তার জন্য ডুবুরীর কাজ করতো এবং এছাড়া অন্য কাজও করতো, আমিই ছিলাম এদের সবার তত্ত্বাবধায়ক৷
(৩৪-সাবা: ১২)...এবং এমন সব জিনকে তার অধীন করে দিয়েছে যারা তাদের রবের হুকুমে তার সামনে কাজ করতো৷১৯ তাদের মধ্য থেকে যে আমার হুকুম অমান্য করে তাকে আমি আস্বাদন করাই জলন্ত আগুনের স্বাদ৷ ১৩) তারা তার জন্য তৈরি করতো যা কিছু সে চাইতো, উঁচু উঁচু ইমারত, ছবি, ২০ বড় বড় পুকুর সদৃশ থালা এবং অনড় বৃহদাকার ডেগসমূহ৷২১ - হে দাউদের পরিবার! কাজ করো কৃতজ্ঞতার পদ্ধতিতে৷ আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পই কৃতজ্ঞ৷২২
১৯. যেসব জিনকে হযরত সুলাইমানের অধীন করে দেয়া হয়েছিল তারা গ্রামীণ ও পাহাড় পর্বতে বসবাসকারী মানব গোষ্ঠী ছিল, না সত্যিকার জিন ছিল, যারা সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে একটি অদৃশ্য সৃষ্টি হিসেবে পরিচিত সে ব্যাপারে সূরা আম্বিয়া ও সূরা নামলের ব্যাখ্যায় আমি বিস্তারিত আলোচনা করেছি। দেখুন তাফহীমূল কুরআন, আল আম্বিয়া, ৭৫ এবং আন নামল,২৩, ৪৫ ও ৫২ টীকা)
(বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত সুলায়মান আ: > সুলায়মান আ: এর অনুগত জ্বিনদের সম্পর্কিত বর্ণনা )
(২৭.নামল:১৭) সুলাইমানের জন্য জিন, মানুষ ও পাখিদের সৈন্য সমবেত করা হয়েছিল এবং তাদেরকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা হতো৷
(জ্বীনেরা যে হযরত সুলাইমানের সেনাবাহিনীর অংশ ছিল এবং তিনি তাদের কাজে নিয়োগ করতেন, বাইবেল একথারও উল্লেখ নেই। কিন্তু তালমূদে ও রাব্বীদের বর্ণনায় এর বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। (জুয়িশ ইনসাইকোপেডিয়া, ১১ খণ্ড, ৪৪০ পৃষ্ঠা।)
(বিস্তারিত দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত সুলায়মান আ: > সুলায়মান আ: এর সৈন্যদের মধ্যে কি জ্বিনেরা অন্তর্ভূক্ত ছিল ? )
অশ্লীল কাজ : ৭:২৮,
(মু’মিনুন:১) নিশ্চিতভাবে সফলকাম হয়েছে মু’মিনরা... (মু’মিনুন:৫) (যারা ) নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে, ৬) নিজেদের স্ত্রীদের ও অধিকারভুক্ত বাঁদীদের ছাড়া, এদের কাছে (হেফাজত না করলে) তারা তিরষ্কৃত হবে না, ৭) তবে যারা এর বাইরে আরো কিছু চাইবে তারাই হবে সীমালংঘনকারী।
(১৬:৯০) আল্লাহ ন্যায়-নীতি, পরোপকার ও আত্মীয়-স্বজনদের দান করার হুকুম দেন এবং অশ্লীল-নির্লজ্জতা ও দুষ্কৃতি এবং অত্যাচার-বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন৷ তিনি তোমাদের উপদেশ দেন, যাতে তোমরা শিক্ষালাভ করতে পারো৷
বিস্তারিত দেখুন : অ > অশ্লীলতা।
যিনার কাছেও যেয়ো না, ওটা অত্যন্ত খারাপ কাজ এবং খুবই জঘন্য পথ৷ –(১৭:৩২)
("যিনার কাছেও যেয়ো না" এ হুকুম ব্যক্তির জন্য এবং সামগ্রিকভাবে সমগ্র সমাজের জন্যও । ব্যক্তির জন্য এ হুকুমের মানে হচ্ছে, সে নিছক যিনার কাজ থেকে দূরে থেকেই ক্ষান্ত হবে না বরং এ পথের দিকে টেনে নিয়ে যায় যিনার এমন সব সূচনাকারী এবং প্রাথমিক উদ্যোগ ও আকর্ষণ সৃষ্টিকারী বিষয় থেকেও দূরে থাকবে । আর সমাজের ব্যাপারে বলা যায়, এ হুকুমের প্রেক্ষিতে সমাজ জীবনে যিনা, যিনার উদ্যোগ আকর্ষণ এবং তার কারণসমূহের পথ বন্ধ করে দেয়া সমাজের জন্য ফরয় হয়ে যাবে । এ উদ্দেশ্যে সে আইন প্রণয়ন, শিক্ষা ও অনুশীলন দান, সামাজিক পরিবেশের সংস্কার সাধন, সমাজ জীবনের যথাযোগ্য বিন্যাস এবং অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যবস্থা অবলম্বন করবে ।
এ ধারাটি শেষ পর্যন্ত ইসলামী জীবন ব্যবস্থার একটি বৃহত্তম অধ্যায়ের বুনিয়াদে পরিণত হয় । এর অভিপ্রায় অনুযায়ী যিনা ও যিনার অপবাদকে ফৌজদারী অপরাধ গণ্য করা হয় । পর্দার বিধান জারী করা হয় । অশ্লীলতা ও নির্লজ্জতার প্রচার কঠোরভাবে বন্ধ করে দেয়া হয় । মদ্যপান, নাচ, গান ও ছবির (যা যিনার নিকটতম আত্মীয়) ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয় । আর এ সংগে এমন একটি দাম্পত্য আইন প্রণয়ন করা হয় যার ফলে বিবাহ সহজ হয়ে যায় এবং এ যিনার সামাজিক কারণসমূহের শিকড় কেটে যায় । )
(নূর:৩০) নবী ! মু’মিন পুরুষদের বলে দাও তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি সংযত করে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাজত করে ৷ এটি তাদের জন্য বেশী পবিত্র পদ্ধতি ৷ যা কিছু তারা করে আল্লাহ তা জানেন ৷
(নিজের স্ত্রী বা মুহাররাম নারীদের ছাড়া কাউকে নজর ভরে দেখা মানুষের জন্য জায়েয নয় । একবার হঠাৎ নজর পড়ে গেলে ক্ষমাযোগ্য। কিন্তু প্রথম দৃষ্টিতে আকর্ষণীয় মনে হলে সেখানে আবার দৃষ্টিপাত করা ক্ষমারযোগ্য নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ধরনের দেখাকে চোখের যিনা বলেছেন । তিনি বলেছেনঃ মানুষ তার সমগ্র ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে যিনা করে। দেখা হচ্ছে চোখের যিনা, ফুসলানো কন্ঠের যিনা, তৃপ্তির সাথে কথা শোনা কানের যিনা, হাত লাগানো ও অবৈধ উদ্দেশ্য নিয়া চলা হাত ও পায়ের যিনা । ব্যভিচারের এ যাবতীয় ভূমিকা যখন পুরোপুরি পালিত হয় তখন লজ্জাস্থানগুলো তাকে পূর্ণতা দান করে অথবা পূর্ণতা দান থেকে বিরত থাকে । (বুখারী, মুসলিম ও আবু দাউদ ) হযরত বুরাইদাহ বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলীকে (রা) বলেনঃ ----------''হে আলী! এক নজরের পর দ্বিতীয় নজর দিয়ো না । প্রথম নজর তো ক্ষমাপ্রাপ্ত কিন্তু দ্বিতীয় নজরের ক্ষমা নেই।''(আহমাদ,তিরমিযী, আবু দাউদ, দারেমী)
হযরত জারীর ইবনে আবদুল্লাহ বাজালী বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, হঠাৎ চোখ পড়ে গেলে কি করবো৷ বললেন, চোখ ফিরিয়ে নাও অথবা নামিয়ে নাও। (মুসলিম, আহমাদ, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসাঈ) আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়ালাহু আনহু রেওয়ায়াত করেছেন, নবী (সা) আল্লাহর উক্তি বর্ণনা করেছেনঃ
''দৃষ্টি হচ্ছে ইবলীসের বিষাক্ত তীরগুলোর মধ্য থেকে একটি তীর, যে ব্যক্তি আমাকে ভয় করে তা ত্যাগ করবে আমি তার বদলে তাকে এমন ঈমান দান করবো যার মিষ্টি সে নিজের হৃদয়ে অনুভব করবে''। (তাবারানী)
আবু উমামাহ রেওয়ায়াত করেছেন, নবী (সা) বলেনঃ
'' যে মুসলমানের দৃষ্টি কোন মেয়ের সৌন্দর্যের ওপর পড়ে এবং এ দৃষ্টি সরিয়ে নেয়, এ অবস্থায় আল্লাহ তার ইবাদাতে বিশেষ স্বাদ সৃষ্টি করে দেন।'' (মুসনাদে আহমাদ) )
(নূর:৩১) আর হে নবী! মু’মিন মহিলাদের বলে দাও তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানগুলোর হেফাজত করে আর তাদের সাজসজ্জা না দেখায়, যা নিজে নিজে প্রকাশ হয়ে যায় তা ছাড়া ৷আর তারা যেন তাদের ওড়নার আঁচল দিয়ে তাদের বুক ঢেকে রাখে৷ তারা যেন তাদের সাজসজ্জা প্রকাশ না করে, তবে নিম্নোক্তদের সামনে ছাড়া স্বামী,বাপ,স্বামীর বাপ, নিজের ছেলে, স্বামীর ছেলে,ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে,নিজের মেলামেশার মেয়েদের, নিজের মালিকানাধীনদের, অধীনস্থ পুরুষদের যাদের অন্য কোন রকম উদ্দেশ্য নেই এবং এমন শিশুদের সামনে ছাড়া যারা মেয়েদের গোপন বিষয় সম্পর্কে এখনো অজ্ঞ ৷ তারা যেন নিজেদের যে সৌন্দর্য তারা লুকিয়ে রেখেছে তা লোকদের সামনে প্রকাশ করে দেবার উদ্দেশ্য সজোরে পদক্ষেপ না করে৷ হে মু’মিনগণ! তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর কাছে তাওবা করো, আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে৷
(ইমাম গায্যালী ও ইবনে হাজার আসকালানীও মহিলাদের পুরুষদেরকে দেখা সংক্রান্ত হাদীসগুলো থেকে প্রায় এ ধরনের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। শাওকানী নাইলুল আওতারে ইবনে হাজারের এ উক্তি উদ্ধৃত করেছেন যে, ''এ থেকেও বৈধতার প্রতি সমর্থন পাওয়া যায় যে, মেয়েদের বাইরে বের হবার ব্যাপারে সবসময় বৈধতাকেই কার্যকর করা হয়েছে। মসজিদে, বাজারে এবং সফরে মেয়েরা তো মুখে নেকাব দিয়ে যেতো, যাতে পুরুষরা তাদেরকে না দেখে। কিন্তু পুরুষদেরকে কখনো এ হুকুম দেয়া হয়না যে, তোমরাও নেকার পরো, যাতে মেয়েরা তোমাদেরকে না দেখে। এ থেকে জানা যায়, উভয়ের ব্যাপারে হুকুমের মধ্যে বিভিন্নতা রয়েছে।'' (৬ষ্ঠ খণ্ড, ১০১ পৃষ্ঠা) তবুও মেয়েরা নিশ্চিন্ত পুরুষদেরকে দেখবে এবং তাদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকবে, এটা কোনক্রমেই জায়েয নয়।)
(আরো বিস্তারিত দেখুন : প > পর্দা, হিজাব কেমন হবে ? )
(নূর:১৯) যারা চায় মু’মিনদের সমাজে অশ্লীলতার প্রসার ঘটুক তারা দুনিয়ায় ও আখেরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ভোগ করবে৷১৬ আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জানো না ৷
(১৬ . পরিবেশ ও পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আয়াতের প্রত্যক্ষ অর্থ হচ্ছে, যারা এ ধরনের অপবাদ তৈরী করে ও তা প্রচার করে মুসলিম সমাজে চরিত্রহীনতার প্রসার ঘটাবার এবং উম্মত মুসলিমার চরিত্র হননের চেষ্টা করছে তারা শাস্তিলাভের যোগ্য। কিন্তু আয়াতের শব্দাবলী অশ্লীলতা ছড়াবার যাবতীয় অবস্থার অর্থবোধক। কার্যত ব্যভিচারে আড্ডা কায়েম করার ওপরও এগুলো প্রযুক্ত হয়। আবার চরিত্রহীনতাকে উৎসাহিত করা এবং সে জন্য আবেগ-অনুভূতিকে উদ্দীপিত ও উত্তেজিতকারী কিস্সা-কাহিনী, কবিতা, গান, ছবি ও খেলাধূলার ওপরও প্রযুক্ত হয়। তাছাড়া এমন ধরনের ক্লাব, হোটেল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও এর আওতায় এসে যায় যেখানে নারী-পুরুষের মিলিত নৃত্য ও মিলিত আমোদ ফূর্তির ব্যবস্থা করা হয়। কুরআন পরিষ্কার বলছে, এরা সবাই অপরাধী। কেবল আখেরাতেই নয়, দুনিয়ায়ও এদের শাস্তি পাওয়া উচিত। কাজেই অশ্লীলতার এসব উপায় উপকরণের পথ রোধ করা একটি ইসলামী রাষ্ট্রের অপরিহার্য কর্তব্যের অন্তরভূক্ত। কুরআন এখানে যে সমস্ত কাজকে জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ গণ্য করছে এবং যেগুলো সম্পাদনকারীকে শাস্তিলাভের যোগ্য বলে ফায়সালা দিচ্ছে ইসলামী রাষ্ট্রের দণ্ডবিধি আইনে সে সমস্ত কাজ শাস্তিযোগ্য ও পুলিশের হস্তক্ষেপ লাভের উপযোগী হতে হবে।)
(নূর:৩২) তোমাদের মধ্যে যারা একা ও নিসংগ এবং তোমাদের গোলাম ও বাঁদীদের মধ্যে যারা সৎ ও বিয়ের যোগ্য তাদের বিয়ে দাও ৷
(বিস্তারিত দেখুন : ব > বিবাহ)
(নূর:৩)...আর তোমাদের বাঁদীরা যখন নিজেরাই সতী সাধ্বী থাকতে চায় তখন দুনিয়াবী স্বার্থলাভের উদ্দেশ্যে তাদেরকে দেহ বিক্রয়ে বাধ্য করো না ৷আর যে তাদেরকে বাধ্য করে, তবে এ জোর-জবরদস্তির পর আল্লাহ তাদের জন্য ক্ষমাশীল ও করুণাময় ৷
(এর অর্থ এ নয় যে, বাঁদীরা নিজেরা যদি সতীসাধ্বী না থাকতে চায়,তাহলে তাদেরকে বেশ্যাবৃত্তি গ্রহণে বাধ্য করা যেতে পারে। বরং এর অর্থ হচ্ছে, বাঁদী যদি স্বেচ্ছায় ব্যভিচারের লিপ্ত হয়, তাহলে নিজের অপরাধের জন্য সে নিজেই দায়ী, তার অপরাধের জন্য আইন তাকেই পাকড়াও করবে। কিন্তু যদি তার মালিক জোর করে তাকে এ পেশায় নিয়োগ করে, তাহলে এ জন্য মালিক দায়ী হবে এবং সে পাকড়াও হবে। আর একথা সুস্পষ্ট যে, জোর করার প্রশ্ন তখনই দেখা দেয় যখন কাউকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন কাজ করতে বাধ্য করা হয়। আর ''দুনিয়াবী স্বার্থ উদ্ধারের উদ্দেশ্য'' বাক্যাংশটি দ্বারা এ কথা বুঝানো হয়নি যে, যদি মালিক তার উপার্জন না খায় তাহলে বাঁদীকে দেহ বিক্রয়ে ব্যধ্য করার কারণে সে অপরাধী হবে না বরং বুঝানো হয়েছে যে, এ অবৈধ বল প্রয়োগের মাধ্যমে অর্জিত উপার্জনও হারামের শামিল।
কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞাটির পূর্ণ উদ্দেশ্য নিছক এর শব্দাবলী ও পূর্বাপর আলোচনা থেকে বুঝা যেতে পারে না । একে ভালোভাবে বুঝতে হলে যে পরিস্থিতিতে এ হুকুমটি নাযিল হয় সেগুলোও সামনে রাখা জরুরী । সেকালে আরব দেশে দু'ধরনের পতিতাবৃত্তির প্রচলন ছিল । এক, ঘরোয়া পরিবেশে গোপন বেশ্যাবৃত্তি এবং দুই, যথারীতি বেশ্যাপাড়ায় বসে বেশ্যাবৃত্তি।
ঘরোয়া বেশ্যাবৃত্তিতে লিপ্ত থাকতো বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাঁদীরা, যাদের কোন পৃষ্ঠপোষক ছিল না। অথবা এমন ধরনের স্বাধীন মেয়েরা, কোন পরিবার বা গোত্র যাদের পৃষ্ঠপোষক ছিল না । তারা কোন গৃহে অবস্থান করতো এবং একই সংগে কয়েকজন পুরুষের সাথে তাদের এ মর্মে চুক্তি হয়ে যেতো যে, তারা তাকে সাহায্য করবে ও তার ব্যয়ভার বহন করবে এবং এর বিনিময়ে পুরুষরা নিজেদের প্রয়োজন পূরণ করতে থাকবে । সন্তান জন্ম নিলে মেয়েরা যে পুরুষ সম্পর্কে বলে দিত যে, এ সন্তান অমুকের। সে-ই সন্তানের পিতা হিসেবে স্বীকৃত হতো । এটি যেন ছিল জাহেলী সমাজের একটি স্বীকৃত প্রথা। জাহেলিয়াতের যুগে লোকেরা একে এক ধরনের 'বিয়ে' মনে করতো । ইসলাম এসে বিয়ের জন্য 'এক মেয়ের এক স্বামী' এ একমাত্র পদ্ধতিকেই চালু করলো । এ ছাড়া বাদবাদী সমস্ত পদ্ধতি আপনা আপনিই যিনা হিসেবে গণ্য হয়ে অপরাধে পরিণত হয়ে গেলো। (আবু দাউদ, বাবুন ফী অজুহিন নিকাহ আল্লাতী কানা ইয়াতানাকিহু আহলুল জাহেলিয়াহ)।
দ্বিতীয় অবস্থাটি অর্থাৎ প্রকাশ্য বেশ্যাবৃত্তিতে নিয়োগ করা হতো বাঁদীদেরকেই । এর দু'টি পদ্ধতি ছিল। প্রথমত লোকেরা নিজেদের যুবতী বাঁদীদের ওপর একটি নির্দিষ্ট অংক চাপিয়ে দিতো। অর্থাৎ প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে তাদেরকে দিতে হবে । ফলে তারা দেহ বিক্রয় করে তাদের এ দাবী পূর্ণ করতো । এ ছাড়া অন্য কোন পথে তারা এ পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতেও পারতো না। আর তারা কোন পবিত্র উপায়ে এ পরিমাণ অর্থ উপর্জন করে এনেছে বলে তাদের মালিকরাও মনে করতো না। যুবতী বাঁদীদের ওপর সাধারণ মজুরদের তুলনায় কয়েকগুন বেশী রোজগার করার বোঝা চাপিয়ে দেবার এ ছাড়া আর কোন যুক্তিসংগত কারণ ছিল না। দ্বিতীয় পদ্ধতি ছিল, লোকেরা নিজেদের সুন্দরী যুবতী বাঁদীদেরকে আলাদা ঘরে বসিয়ে রাখতো এবং তাদের দরজায় ঝান্ডা গেড়ে দিতো । এ চিহ্ন দেখে দূর থেকেই "ক্ষুধার্তরা" বুঝতে পারতো কোথায় তাদের ক্ষুধা নিবৃত্ত করতে হবে। এ মেয়েদেরকে বলা হতো ''কালীকীয়াত''এবং এদের গৃহগুলো ''মাওয়াখীর'' নামে পরিচিত ছিল। বড় বড় গণ্যমান্য সমাজপতিরা এ ধরনের বেশ্যালয় পরিচালনা করতো । স্বয়ং আবদুল্লাহ ইবনে উবাই ( মুনাফিক প্রধান, যাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের পূর্বে মদীনাবাসীরা নিজেদের বাদশাহ করার সিদ্ধান্ত করে ফেলছিল এবং যে হযরত আয়েশার বিরুদ্ধে অপবাদ রটানোর কাজে সবার আগে ছিল) মদীনায় এ ধরনের একটি বেশ্যালয়ের মালিক ছিল। সেখানে ছিল ছয়জন সুন্দরী বাঁদী । তাদের মাধ্যমে সে কেবলমাত্র অর্থই উপার্জন করতো না বরং আরবের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নামী দামী মেহমানদের আদর আপ্যায়নও তাদের দিয়েই করাতো। তাদের অবৈধ সন্তানদের সাহায্য সে নিজের পাইক, বরকন্দাজ ও লাঠিয়ালের সংখ্যা বাড়াতো। এ বাঁদীদেরই একজনের নাম ছিল মু'আযাহ । সে মুসলমান হয়ে গিয়েছিল এবং এ পেশা থেকে তাওবা করতে চাচ্ছিল। ইবনে উবাই তার ওপর জোর জবরদস্তি করলো সে গিয়ে হযরত আবু বকরের (রা) কাছে নালিশ করলো। তিনি ব্যাপারটি রসূলের (সা) কাছে পৌঁছে দিলেন ।(ইবনে জারীর, ১৮ খন্ড, ৫৫-৫৮ এবং ১০৩-১০৪ পৃষ্ঠা, আল ইসতি'আব লি ইবনি আবদিল বার, ২ খন্ড, ৭৬২ পৃষ্ঠা, ইবনে কাসীর, ৩ খন্ড, ২৮৮-২৮৯ পৃষ্ঠা)। এ সময়েই আল্লাহর পক্ষ থেকে এ আয়াত নাযিল হয়। এ পটভূমি দৃষ্টি সমক্ষে রাখলে পরিষ্কার জানা যাবে, শুধুমাত্র বাঁদীদেরকে যিনার অপরাধে জড়িত হতে বাধ্য করার পথে বাধা সৃষ্টি করাই নয় বরং ইসলামী রাষ্ট্রের সীমানার মধ্যে বেশ্যাবৃত্তির (Prostitution) ব্যবসায়ে সম্পূর্ণরুপে আইন বিরোধী গণ্য করা এবং একই সংগে যেসব মেয়েকে জোর জবরদস্তি এ ব্যবসায়ে নিয়োগ করা হয় তাদের জন্য ক্ষমা ঘোষণাও এখানে এর মূল উদ্দেশ্য।
আল্লাহর পক্ষ থেকে এ ফরমান এসে যাবার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন ----- ''ইসলামে বেশ্যাবৃত্তির কোন অবকাশই নেই।'' (আবু দাউদ, ইবনে আব্বাসের রেওয়ায়াতের মাধ্যমে, বাবুন ফী ইদ্দিআয়ে ওয়ালাদিয যিনা) দ্বিতীয় যে হুকুমটি তিনি দেন সেটি ছিল এই যে, যিনার মাধ্যমে অর্জিত অর্থ হারাম, নাপাক ও পুরোপুরি নিষিদ্ধ। রাফে' ইবন খাদীজের রেওয়ায়াত হচ্ছে, নবী করীম (সা) -----অর্থাৎ যিনার বিনিময়ে অর্জিত অর্থকে নষ্ট, সর্বাধিক অকল্যাণমূলক উপার্জন, অপবিত্র ও নিকৃষ্টতম আয় গণ্য করেন । (আবু দাউদ, তিরমিযি ও নাসাঈ) আবু হুজাইফা (রা) বলেন, রসূলুল্লাহ (সা) -----অর্থাৎ দেহ বিক্রয়লব্ধ অর্থকে হারাম গণ্য করেছেন। (বুখারী, মুসলিম, আহমাদ ) আবু মাস'উদ উকবাহ ইবনে আমরের রেওয়ায়াত হচ্ছে,রসূলুল্লাহ (সা) ----- তথা যিনার মাধ্যমে উপার্জিত অর্থের লেনদেনকে নিষিদ্ধ গণ্য করেছেন । (সিহাহে সিত্তা ও আহমদ) তৃতীয় যে হুকুমটি তিনি দিয়েছিলেন তা ছিল এই যে, বাঁদীর কাছে থেকে বৈধ পন্থায় কেবলমাত্র হাত ও পায়ের শ্রম গ্রহণ করা যেতে পারে এবং মনিব তার ওপর এমন পরিমাণ কোন অর্থ চাপিয়ে দিতে বা তার কাছ থেকে আদায় করতে পারে না যে সম্পর্কে সে জানে না অর্থ সে কোথা থেকে ও কিভাবে উপার্জন করে। রাফে' ইবনে খাদীজ বলেনঃ
------------
''রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাঁদীর মাধ্যমে কোন উপার্জন নিষিদ্ধ গণ্য করেন যতক্ষণ না একথা জানা যায় যে, এ অর্থ কোথা থেকে অর্জিত হয়।'' (আবু দাউদ, কিতাবুল ইজারাহ)
রাফে' ইবনে রিফা'আহ আনসারীর বর্ণনায় এর চাইতেও সুস্পষ্ট হুকুম পাওয়া যায় । সেখানে বলা হয়েছেঃ
---------------
''আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাঁদীর সাহায্যে অর্থোপর্জন করতে আমাদের নিষেধ করেছেন, তবে হাতের সাহায্যে পরিশ্রম করে সে যা কিছু কামাই করে তা ছাড়া। এবং তিনি হাতের ইশারা করে দেখান যেমন এভাবে রুটি তৈরী করা, সূতা কাটা বা উল ও তুলা ধোনা। ''(মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ,কিতাবুল ইজারাহ)
একই বক্তব্য সম্বলিত একটি হাদীস আবু দাউদ ও মুসনাদে আহমাদে হযরত আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তাতে----- (বাঁদীর কামাই) ও ----- (ব্যভিচারের উপার্জন) গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে । এভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরআনের এ আয়াতের উদ্দেশ্য অনুযায়ী সেকালে আরবে প্রচলিত বেশ্যাবৃত্তির সকল পদ্ধতিকে ধর্মীয় দিক দিয়ে অবৈধ ও আইনগত দিক দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন । বরং আরো অগ্রসর হয়ে আবদুল্লাহ ইবনে উবাই-এর বাঁদী মু'আযার ব্যাপারে যা কিছু সিদ্ধান্ত তিনি দেন তা থেকে জানা যায়, যে বাঁদীকে তার মালিক জোর করে এ পেশায় নিয়োগ করে তার ওপর থেকে তার মালিকের মালিকানা সত্বও খতম হয়ে যায় । এটি ইমাম যুহরীর রেওয়ায়াত । ইবনে কাসীর মুসনাদে আবদুর রাযযাকের বরাত দিয়ে তাঁর গ্রন্থে এটি উদ্ধৃত করেছেন।)
(২৯-আনকাবুত:৪৫) (হে নবী !) তোমার প্রতি অহির মাধ্যমে যে কিতাব পাঠানো হয়েছে তা তেলাওয়াত করো এবং নামায কায়েম করো, ৭৭ নিশ্চিতভাবেই নামায অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে৷ ৭৮ আর আল্লাহর স্মরণ এর চাইতেও বড় জিনিস৷ ৭৯ আল্লাহ জানেন তোমরা যা কিছু করো৷
(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ন > নামায > নামায অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে, কিভাবে ?
(১২:২৩) যে মহিলাটির ঘরে সে ছিল সে তাকে নিজের দিকে আকর্ষণ করতে থাকলো এবং একদিন সে দরজা বন্ধ করে দিয়ে বললো, “চলে এসো”৷ ইউসুফ বললো, “আমি আল্লাহর আশ্রয় নিচ্ছি, আমার রব তো আমাকে ভালই মর্যাদা দিয়েছেন (আর আমি এ কাজ করবো!)৷ এ ধরনের জালেমরা কখনো কল্যাণ লাভ করতে পারে না৷২৪) মহিলাটি তার দিকে এগিয়ে এলো এবং ইউসুফও তার দিকে এগিয়ে যেতো যদি না তার রবের জ্বলন্ত প্রমাণ প্রত্যক্ষ করতো৷ এমনটিই হলো, যাতে আমি তার থেকে অসৎবৃত্তি ও অশ্লীলতা দূর করে দিতে পারি৷ আসলে সে ছিল আমার নির্বাচিত বান্দাদের অন্তরভুক্ত৷ ২৫) শেষ পর্যন্ত ইউসুফ ও সে আগেপিছে দরজার দিকে দৌড়ে গেলো এবং সে পেছন থেকে ইউসুফের জামা (টেনে ধরে) ছিঁড়ে ফেললো৷ উভয়েই দরজার ওপর তার ওপর তার স্বামীকে উপস্থিত পেলো৷ তাকে দেখতেই মহিলাটি বলতে লাগলো, “তোমার পরিবারের প্রতি যে অসৎ কামনা পোষণ করে তার কি শাস্তি হতে পারে ? তাকে কারগারে প্রেরণ করা অথবা কঠোর শাস্তি দেয়া ছাড়া আর কি শাস্তি দেয়া যেতে পারে ?” ২৬) ইউসুফ বললো, “ সে-ই আমাকে ফাঁসাবার চেষ্টা করছিল৷” “মহিলাটির নিজের পরিবারের একজন (পদ্ধতিগত) সাক্ষ দিল, “যদি ইউসুফের জামা সামনের দিক থেকে ছেঁড়া থাকে তাহলে মহিলাটি সত্য কথা বলেছে এবং সে মিথ্যুক ২৭) আর যদি তার জামা পেছনের দিক থেকে ছেঁড়া থাকে তাহলে মহিলাটি মিথ্যা কথা বলেছে এবং সে সত্যবাদী৷২৮) স্বামী যখন দেখলো ইউসুফের জামা পেছনের দিক থেকে ছেঁড়া তখন বললো, “এসব তোমাদের মেয়েলোকদের ছলনা৷ সত্যিই বড়ই ভয়ানক তোমাদের ছলনা! ২৯) হে ইউসুফ! এ ব্যাপারটি উপেক্ষা করো৷ আর হে নারী! তুমি নিজের অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো, তুমিই আসল অপরাধী
(১২:৩২) আযীযের স্ত্রী বললো, “দেখলে তো! এ হলো সেই ব্যক্তি যার ব্যাপারে তোমরা আমার বিরুদ্ধে নিন্দাবাদ করতে৷ অবশ্যই আমি তাকে প্ররোচিত করার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু সে নিজেকে রক্ষা করেছে৷ যদি সে আমার কথা না মেনে নেয় তাহলে কারারুদ্ধ হবে এবং নিদারুণভাবে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে৷”
দেখুন : অ> অপবাদ।
দেখুন : অ > অপবাদ।
(১৯:১৮) মারয়াম অকস্মাত বলে উঠলো, ”তুমি যদি আল্লাহকে ভয় করে থাকো তাহলে আমি তোমার হাত থেকে করুণাময়ের আশ্রয় চাচ্ছি”৷
(নূর:২) ব্যভিচারিনী ও ব্যভিচারী উভয়ের প্রত্যেককে এক শত বেত্রাঘাত করো৷২ আর আল্লাহর দীনের ব্যাপারে তাদের প্রতি কোন মমত্ববোধ ও করুণা যেন তোমাদের মধ্যে না জাগে যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান আনো ৷ আর তাদেরকে শাস্তি দেবার সময় মু’মিনদের একটি দল যেন উপস্থিত থাকে ৷৩) ব্যভিচারী যেন ব্যভিচারিনী বা মুশরিক নারী ছাড়া কাউকে বিয়ে না করে এবং ব্যভিচারিনীকে যেন ব্যভিচারী বা মুশরিক ছাড়া আর কেউ বিয়ে না করে ৷ আর এটা হারাম করে দেয়া হয়েছে মু’মিনদের জন্য৷
(২. এটা হচ্ছে অবিবাহিত জেনাকারীদের শাস্তি। আর বিবাহিতের যিনার শাস্তি কি , একথা কুরআন মজীদ থেকে নয় বরং হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি । অসংখ্য নির্ভরযোগ্য হাদীস থেকে প্রমানিত , নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেবল মুখেই এর শাস্তি রজম (প্রস্তরঘাতে মৃত্যু ) বর্ণনা করেননি বরং কার্যত বহু সংখ্যক মোকদ্দমায় তিনি এ শাস্তি জারিও করেন । তাঁর পরে চার খোলাফায়ে রাশেদীনও নিজ নিজ যুগে এ শাস্তি জারি করেন এবং আইনগত শাস্তি হিসেবে বারবার এরি ঘোষনা দেন। সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেঈগণ ছিলেন এ বিষয়ে সম্পূর্ণ একমত । কোন এক ব্যাক্তিও এমন একটি উক্তি পাওয়া যায় না যা থেকে একথা প্রমাণ হতে পারে যে, প্রথম যুগে এর প্রমাণিত শরয়ী' হুকুম হবার ব্যাপারে কোন সন্দেহ ছিল । তাঁদের পরে সকল যুগের ও দেশের ইসলামী ফকীহগণ এর একটি প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত সুন্নাত হবার ব্যাপারে একমত ছিলেন । কারণ এর নির্ভুলতার সপক্ষে এত বিপুল সংখ্যক ও শক্তিশালী প্রমাণ রয়েছে যার উপস্থিতিতে কোন তত্বজ্ঞানী একথা অস্বীকার করতে পারেনা । উম্মতে মুসলিমরা সমগ্র ইতিহাসে খারেজী ও কোন কোন মুতাজিলী ছাড়া কেউই একথা অস্বীকার করেননি । খারেজী ও মুতাজিলাদের অস্বীকৃতির কারণ এটা নয় যে, তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এর প্রমাণের ক্ষেত্রে কোন প্রকার দুর্বলতা চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন। বরং তারা একে কুরআন বিরোধী গণ্য করতেন । অথচ এটি ছিল তাঁদের নিজেদের কুরআন অনুধাবনের ত্রুটি । তাঁরা বলতেন, কুরআন ---------- এর একচ্ছত্র শর্তহীন শব্দ ব্যবহার করে এর শাস্তি বর্ণনা করে একশ' বেত্রাঘাত । কাজেই কুরআনের দৃষ্টিতে সকল প্রকার ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিনীর শাস্তি এটিই এবং এ থেকে বিবাহিত ব্যভিচারীকে পৃথক করে তার জন্য কোন ভিন্ন শাস্তির ব্যবস্থা করা আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধাচরণ ছাড়া আর কিছুই নয় । কিন্তু তাঁরা এ কথা চিন্তা করেননি যে, কুরআনের শব্দাবলীর যে আইনগত গুরুত্ব রয়েছে সে একই গুরুত্বের অধিকারী হচ্ছে তাদের উদ্ধৃত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যাখ্যাও । তবে এখানে শর্ত শুধু হচ্ছে এই যে, এ ব্যাখ্যা যে তাঁরই একথা প্রামাণিত হতে হবে । কুরআন এ ধরনের ব্যাপক ও একচ্ছত্র অর্থবোধক শব্দের মাধ্যমে ------------ তথা পুরুষ চোর ও মেয়ে চোরের শাস্তি হিসেবে হাত কাটার বিধান দিয়েছেন । এ বিধানকেও যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রমাণিত ব্যাখ্যাসমূহের নিয়ন্ত্রণাধীন না করা হয় তাহলে এর শব্দাবলীর ব্যাপকতার দাবী হচ্ছে এই যে, কোন ব্যক্তি সামান্য একটু সুঁই বা কুল চুরি করলেও তাকে চোর আখ্যা দিয়ে তার হাতটি একেবারে কাঁধের কাছ থেকে কেটে দেয়া হবে । অন্যদিকে লাখ লাখ টাকা চুরি করার পরও যদি এক ব্যক্তি পাকড়াও হয়ে বলে , আমি নিজেকে সংশোধন করে নিয়েছি এবং ভবিষ্যতে আমি আর চুরি করবো না , চুরি থেকে আমি তাওবা করে নিলাম তাহলে এ ক্ষেত্রে তাকে অবশ্যি ছেড়ে দিতে হবে । কারণ কুরআন বলছেঃ
---------------
''যে ব্যক্তি জুলুম করার পরে তাওবা করে এবং নিজেকে সংশোধন করে নেয় , আল্লাহ তার তাওবা কবুল করে নেন ।'' (মায়েদাহ, ৩৯)
এভাবে কুরআন শুধুমাত্র দুধ-মা ও বোনকে বিয়ে করা হারাম ঘোষণা করেছে, দুধ-কন্যাকে বিয়ে এ যুক্তির প্রেক্ষিতে কুরআন বিরোধী হওয়া উচিত। কুরআন কেবলমাত্র দুই বোনকে এক সংগে বিয়ে করা নিষেধ করেছে । খালা-ভাগনী এবং ফুফী –ভাইঝিকে একত্রে বিয়ে করাকে যে ব্যক্তি হারাম বলে তার বিরুদ্ধে কুরআন বিরোধী হুকুম দিচ্ছে বলে অভিযোগ আনতে হবে । কুরআন সৎ-মেয়েকে বিয়ে করা শুধুমাত্র তখনই হারাম করে যখন সে তার সৎ-পিতার ঘরে প্রতিপালিত হয় । শর্তহীন ও এচ্ছত্রভাবে এর হারাম হওয়ার বিষয়টি কুরআন বিরোধী গণ্য হওয়া উচিত । কুরআন শুধুমাত্র এমন অবস্থায় রেহেন' রাখার অনুমতি দেয় যখন মানুষ বিদেশে সফররত থাকে এবং ঋণ সংক্রান্ত দলিলপত্র লেখার লোক পাওয়া না যায় । দেশে অবস্থানকালে এবং দলিলপত্র লেখার লোক পাওয়া গেলে এ অবস্থায় রেহেন রাখার বৈধতা কুরআন বিরোধী হওয়া উচিত । কুরআন সাধারণ ও ব্যাপক অর্থবোধক শব্দের মাধ্যমে হুকুম দেয়ঃ --------------- (অর্থাৎ পরস্পরের মধ্যে কেনাবেচা করার সময় সাক্ষী রাখো )
এ প্রেক্ষিতে আমাদের হাটে-বাজারে-দোকানে দিনরাত বিনা সাক্ষী প্রামাণে যেসব কেনাবেচা হচ্ছে সেসবই অবৈধ হওয়া উচিত । এখানে গুটিকয় মাত্র দৃষ্টান্ত পেশ করলাম । এগুলোর ওপর চোখ বুলালে রজম তথা প্রস্তরঘাতে মৃত্যুদণ্ডকে যারা কুরআন বিরোধী বলেন, তাদের যুক্তির গলদ চোখের সামনে ভেসে উঠবে ।)
বিস্তারিত দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত লুত আ: > লূত আ: জাতির কর্মের শরীয়াত বিহিত শাস্তি ।
(৩৩-আহযাব: ৩০) হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ কোনো সুস্পষ্ট অশ্লীল কাজ করবে তাকে দ্বিগুন শাস্তিদেয়া হবে৷ ৪৩ আল্লাহর জন্য এটা খুবই সহজ কাজ৷ ৪৪
৪৩. এর অর্থ এ নয় যে, নাউযুবিল্লাহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র স্ত্রীদের থেকে কোন অশ্লীল কাজের আশংকা ছিল। বরং এর মাধ্যমে নবীর স্ত্রীগণকে এ অনুভূতি দান করাই উদ্দেশ্য ছিল যে, ইসলামী সমাজে তাঁরা মেন উচ্চ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত আছেন সেই অনুযায়ী তাঁদের দায়িত্বও অনেক কঠিন। তাই তাঁদের নৈতিক চালচলন হতে হবে অত্যন্ত পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন। এটা ঠিক তেমনি যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবী)" যদি তুমি শিরক করো তাহলে তোমার সমস্ত কৃতকর্ম বরবাদ হয়ে যাবে।" (আয যুমারঃ ৬৫) এর অর্থ এ নয় যে, নাউযুবিল্লাহ নবী করীম (সা) থেকে কোন শিরকের আশংকা ছিল বরং নবী করীমকে এবং তাঁর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে শিরক কত ভয়াবহ অপরপাধ এবং তাকে কঠোরভাবে এড়িয়ে চলা অপরিহার্য, সে কথা বুঝানোই ছিল উদ্দেশ্য।
৪৪. অর্থাৎ তোমরা এ ভুলের মধ্যে অবস্থান করো না যে, নবীর স্ত্রী হওয়ার কারণে তোমরা আল্লাহর পাকড়াও থেকে বেঁচে যাবে অথবা তোমাদের মর্যাদা এত বেশী উন্নত যে, সে কারণে তোমাদেরকে পাকড়াও করা আল্লাহর জন্য কঠিন হয়ে যেতে পারবে।
(১২:৮২) আমরা যে পল্লীতে ছিলাম সেখানকার লোকজনদেরকে জিজ্ঞেস করে দেখুন এবং যে কাফেলার সাথে আমরা ছিলাম তাকে জিজ্ঞেস করে দেখুন, আমরা যা বলছি৷”
(২৬.শুআরা:১৩০) আর যখন কারো ওপর হাত ওঠাও প্রবল এক নায়ক হয়ে হাত ওঠাও৷
(বিস্তারিত : ন > নবীদের জীবনের ঘটনা বলী > হযরত হুদ আ: (আদ জাতি) )