স:
Contents
সকাল সন্ধ্যায় জিকির বলতে সার্বক্ষণিক ইবাদতকে বুঝানো হয়েছে : 25
সালাত / স্বলাত শব্দের অর্থ কি ? 26
ভালো ব্যবহার / ভালো আচরণ �: 26
পিতা মাতা শিরক করার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে তাদের কথা মানা যাবেনা, তবে তাদের সাথে ভালো ব্যবহার অক্ষুন্ন রাখতে হবে : অর্থাৎ, এমনকি পিতা মাতা যদি মুশরিকও হয় তবুও তাদের সাথে ভালো আচরণ করতে হবে: 26
পিতা মাতা যদি মুশরিকও হয়, তবুও তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে : তবে তাদের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করা যাবে না : 26
দিন কি দীর্ঘতর হয়ে গেল ? অর্থাৎ, তোমরা কি ধৈর্যহারা হয়ে গেলে ? 27
সময়ের প্রকৃত সংরক্ষক� একমাত্র আল্লাহ তাআলা : 28
�সময়�-কে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন : আল্লাহর নিকট অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ সবই একসমান : 28
নির্দ্দিষ্ট সময় : ফলাফল দেওয়ার নির্দ্দিষ্ট সময়: 28
প্রত্যেকের জন্য, প্রত্যেক জাতির জন্য অবকাশের যেমন, তেমনি সমাপ্তি ও ধ্বংসের একটি নির্দ্দিষ্ট সময় রয়েছে : 29
শিংগায় ফুঁক দেওয়ার নির্দ্দিষ্ট সময় : 29
আখিরাতে পুনর্জীবিত হওয়ার পর অবিশ্বাসীদের দুনিয়ার জীবন সম্পর্কে সময়ের ধারণা পাল্টে যাবে : 29
তুমি ও তোমার আমল � কোন কিছুই আল্লাহর কাছে গোপন নেই : 30
কোন জিনিস যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয়, আর তা থাকে পাথরের মধ্যে, তবে আল্লাহ তাও বের করে নিয়ে আসবেন :� আল্লাহর কাছে কোন কিছুই গোপন থাকেনা : 30
মজলিশে উপবিষ্ট থেকে অশ্লীল কাজে লিপ্ত� হতো লূত আ: জাতির লোকেরা : যেমনটি এখনও কোন কোন জাতির লোকদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়, আধুনিকতার নামে তারা এমনটি করে : 33
দেখুন : ম > মাজার নির্মাণ । 33
সম্মান : (আরো দেখুন : ম > মর্যাদা) : 33
হিযরতের পুরস্কার স্বরূপ দুনিয়াতে সম্মানিত করা হবে : 33
সম্মান ও মর্যাদা দান করার মালিক আল্লাহ : 34
সমস্ত সৃষ্টি জগতের উপর আল্লাহ বনী আদমকে সম্মানিত করেছেন : 34
আল্লাহ যাকে লাঞ্ছিত ও হেয় করেন তার সম্মান দাতা কেউ নেই। 34
পরকালীন সম্মান ও মর্যাদা সৎকর্মশীল মু�মিনদের জন্যই নির্ধারিত : 34
ধনাঢ্যতা নয়, কর্মের সৌন্দরযই সম্মানের মাপকাঠি : 34
শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা কমবেশী দেওয়ার উপমা : শিরক এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রমাণ : 35
নবীগণকে একজনের উপর আরেকজনকে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে : 35
সম্মান জানানো : �(আরো দেখুন : ব > বিনয় ) : 35
আনুষ্ঠানিক ইবাদত সমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে : 35
সংস্কৃতি / সাংস্কৃতি / সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড : 36
শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মাধ্যমেও মানুষকে ইসলামের পথ থেকে দুরে সরিয়ে রাখার প্রচেষ্টা করা হয়ে থাকে : 36
সব সময়� অনুমান বা সন্দেহ দুষনীয় নয়: 36
মসজিদের গোপন কক্ষে আল্লাহর ইবাদতে রত একাকিনী একটি মেয়েও রাতের বেলা একজন পুরুষের আগমনে সন্দেহ মুক্ত থাকতে পারেনি, এবং এটাই স্বাভাবিক এবং কাম্য: 36
মুহাম্মদ সা: হেদায়েত দাতা নন, তিনি কেবলমাত্র সতর্ককারী : 37
সত্য� / সত্যবাদিতা / সত্যতা� : 37
ঈমানের সত্যতার প্রমাণ হলো আল্লাহর পথে জীবনোৎসর্গের জন্য সদা প্রস্তুত থাকা : 37
মানুষ বড়ই সত্য অস্বীকারকারী :� (আরো দেখুন : ম > মানুষ) 38
বিস্তারিত দেখুন : ক > কুরআন ও বিজ্ঞান > বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে আল্লাহর অস্তিত্ব ও আখিরাতের সত্যতার প্রমাণ । 39
আল কুরআন হচ্ছে সত্য এবং তা �সত্যতার সাথে অবতীর্ণ হয়েছে : 39
আহলে কিতাবগণ জেনেশুনে সত্য গোপন করে এবং সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করে : 39
আল্লাহ সর্বদা সত্য বলেন:� বরং আল্লাহ যা বলেন তা-ই হচ্ছে প্রকৃত সত্য : 39
কোন জাতিকে ধ্বংসের ফায়সালাকে �সত্য� বলা হয়েছে : 40
ঈমানের দাবীতে কে সত্যবাদী আর কে মিথ্যাবাদী তা আল্লাহ অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখবেন : 40
�সত্য� প্রতিষ্ঠিত ও উদ্ভাসিত হয় আর �মিথ্যা� দূরীভূত ও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় : 41
আকাশ ও পৃথিবী ��সত্য� এর উপর তথা সত্যতার সাথে সৃষ্টি করা হয়েছে : 41
সত্যকে চিনতে পেরেও ফেরাউন কেন মুসা আ: কে মেনে নেয়নি ? 42
হে নবী নিশ্চয়ই আপনি সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত আছেন : 42
সন্দেহ / সন্দেহ পোষণকারী :� আরো দেখুন : অ > অনুমান, ধ > ধারণা , স >� সতর্কতা. 43
এ কুরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত এতে কোন সন্দেহ নেই : 43
মু�মিনদের প্রতি সু-ধারণা রাখা অবশ্য কর্তব্য : 45
মুশরিকদের দেব দেবতাদের সম্পর্কে মু�মিনদের সন্দেহে নিপতিত হওয়ার কোন অবকাশই নেই : 45
আল্লাহর আযাব আসার ব্যাপারে যাদের সন্দেহ ছিল (বিশ্বাস করতনা), তাদের পরিণাম : 45
যাদের ঈমান সন্দেহ যুক্ত তাদেরকেই ইবলিস ধোকা দেয় : 46
সব সময় সন্দেহ বা অনুমান দুষনীয় নয়: মসজিদের গোপন কক্ষে আল্লাহর ইবাদতে রত একাকিনী একটি মেয়েও রাতের বেলা সুদর্শন পুরুষের আগমনে সন্দেহ মুক্ত থাকতে পারেনি, এবং এটাই স্বাভাবিক এবং কাম্য: 47
ঈমানদারদের জন্যই আল্লাহর দেয়া আইন কানুন সমূহ সহজ : 47
কাজ সহজ করে দেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা : 47
কুরআনকে বুঝার জন্য সহজ করে নাযিল করা হয়েছে : 47
মুনাফিকদের নামাজ রোজা সহ অন্যান্য সওয়াব সমূহ নষ্ট করে দেওয়া আল্লাহর জন্য সহজ : 48
সাংবাদিক / সংবাদকর্মীদের জন্য দিকনির্দেশনা: 48
সংবাদ পৌছানো/পরিবেশন করার ক্ষেত্রে নিজের বিশ্বাসের বিষয়টিও পরিস্কার করে দেওয়া উচিত : 48
সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে স্বাক্ষীর তলব : 48
গায়েবের সংবাদ : জ্বিন শয়তানেরা কি গায়েবের সংবাদ বলতে পারে? 49
অহংকারী ব্যক্তি আসলে সংকীর্ণমনা : 49
স্বপ্ন দ্বারা কি শরীয়তের প্রয়োজন পূর্ণ হয় ? স্বপ্ন দ্বারা আদিষ্ট হয়ে কোন ব্যক্তি কি শরীয়তের বিধিবিধান বর্ণনা করতে পারে ? 51
হযরত ইউসুফ আ: এর স্বপ্ন সত্য হওয়ার স্বরূপ : 51
ইউসুফ আ: এর সাথে কারাগারে অবস্থানরত দুই ব্যক্তির স্বপ্ন : 51
মিশরের বাদশার স্বপ্ন : (ইউসুফ আ:� এর সময়কালীন) : 52
নিজের স্বপ্নের কথা/বর্ণনা যাকে তাকে বলা উচিৎ নয় : 52
নিজের স্বপ্নের কথা/বর্ণনা শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য ও জ্ঞানী ব্যক্তিকে বলা উচিৎ� : 52
রাসুল সা: এর মি�রাজ কি� স্বপ্নে হয়েছিল, নাকি চাক্ষুষ হয়েছিল ? 52
হযরত ইয়াকুব আ:এর তাবীর বর্ণনা : (হযরত ইউসুফ আ: এর স্বপ্নের তাবীর) : 53
হযরত ইউসুফ আ: এর তাবীর বর্ণনা : (দুই ভৃত্যের স্বপ্রের) : 53
হযরত ইউসুফ আ: এর স্বপ্নের তাবীর বর্ণনা : (মিশরের বাদশার স্বপ্নের) : 53
নবীগণের স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান নবুওতী জ্ঞান হতে উৎসারিত : 53
তোমার� স্বর্ণ নির্মিত ঘর থাকবে : নবীর কাছে কাফেরদের মুজেযা দাবী : 54
জান্নাতীদের স্বর্ণ খচিত পোষাক পরিধান করানো হবে : 54
স্বাদের ভিন্নতা আল্লাহর দান : 54
স্তন / সন্তানকে� স্তন্যপান করানো : 54
ধাত্রী প্রথা / স্তন্যপান করানোর জন্য সন্তান অন্য মহিলার নিকট সোপর্দ করা : 54
কিয়ামতের দিনের ভয়বহতায় মা� তার দুধপানরত শিশুকে ভুলে যাবে : 55
স্থলাভিষিক্ত করা /পরিবর্তে প্রতিষ্ঠা করা : 55
এক জাতির পরিবর্তে অন্য জাতি , এক দলের পরিবর্তে অন্য দল প্রতিষ্ঠিত করা : 55
পাপের বোঝা : (আরো দেখুন : পরকাল) 56
একজনের বোঝা আরেকজন বহন করবে না : একজনের শাস্তি অন্যজনকে দেওয়া হবে না : 56
তবে : কাউকে পথভ্রষ্ট করে থাকলে ঐ ব্যক্তির পাপের বোঝাও বহন করতে হবে : তাই বলে তার পাপ কমবে না: 56
পরকালে আল্লাহর চিরকালীন সন্তুষ্টি পাবে কারা : 56
আনসার ও মুহাজিরদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট: 57
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য নবীর প্রচেষ্টা : 57
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ ও নিজে সন্তুষ্ট হওয়ার নিয়ামক হচ্ছে নামাজ 57
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কি কি করা প্রয়োজন ? 57
সফলকাম� / সফলতা �/ সফল / সাফল্য : 58
সফলতা লাভের অর্থ কি ? সাফল্যের কুরআনিক ধারণা : 58
সম্পদ ও সন্তানের প্রাচুর্যই কি ভালো অবস্থা ও সাফল্যের� মাপকাঠি ?� তাহলে সাফল্য ও ব্যর্থতার আসল মাপকাঠি কি ? 59
ধনসম্পদ ও রিযিক্বের �প্রাচুর্য আল্লাহর প্রিয়পাত্র হবার বা সফলতার মাপকাঠি নয় : 62
ইহকালীন ও পরকালীন সাফল্য সৎকর্মশীল মু�মিনদের জন্যই নির্ধারিত: 65
প্রকৃত মু�মিনদের পুরস্কার : তারা সর্বাবস্থায় সফলকাম : 65
সফলতা লাভ করতে পারবে না কারা ? 66
১। জালেমরা কখনও সফলকাম হয়না : 66
২। কাফেররা কখনো সফলকাম হয় না : 66
সমুদ্রের পানি যদি কালি হয়, তবুও আল্লাহর কথা শেষ করতে পারবে না : 67
সাগরের লোনা পানি ও মিঠা পানির মধ্যে অদৃশ্য আড় রয়েছে, যা এ দুটিকে পৃথক করে রাখে: 68
সাগরের পানির মধ্যে সুড়ংগ পথ তৈরী : 69
সাগর চিরে রাস্তা হয়ে গেলো : 69
হযরত মূসা আ: এর লাঠির আঘাতে সাগর দ্বিখন্ডিত হয়ে যাওয়ার প্রকৃত স্বরূপ� কি ছিল ? 69
মিথ্যা ইলাহকে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া এবং হযরত মূসা আ: এর শরীয়তে শিরক করার শাস্তি : 69
কাফেরদের কর্মের উপমা : গভীর সাগরের বুকে অন্ধকার : 69
জমীনে ও সাগরে মানুষের কৃতকর্মের জন্য বিপর্যয় দেখা দেয় : 69
সমুদ্রে যখন নৌযান জাহাজ ইত্যাদি ডুবতে শুরু করে তখন কট্টর মুশরিকও বুঝে ফেলে আল্লাহ মাত্র একজনই: 70
সাগরের পানির মধ্যে সুড়ংগ পথ তৈরী : 70
দ্বীন প্রতিষ্ঠায় ধীরে ধীরে ক্রম অনুসারে সহজ থেকে কঠিন বিভিন্ন ধাপের অনুসরণ : 71
আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে হলে নামাজ পড়তে হবে ও যাকাত আদায় করতে হবে : 78
পারস্পারিক সম্পর্কের ভিত্তি যখন মূর্তি : 79
মু�মিনদের পারস্পরিক সম্পর্ক : 80
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে অসাল্লাম এর� সাথে মু�মিনদের সম্পর্ক : 80
১। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে অসাল্লাম �মু�মিনদের নিকট তাদের নিজেদের চাইতেও বেশী প্রিয় ও উপকারী বন্ধু : 80
২। মুহাম্মদ সা: এর �স্ত্রীগণ মু�মিনদের মা : 80
সম্পত্তি : (দেখুন : ধ > ধন-সম্পদ) 81
দুনিয়ার সৌন্দর্য পরীক্ষা স্বরূপ : 81
সন্তান লাভের অহংকার : আল্লাহর নাফরমান হওয়া সত্বেও যে ব্যক্তি বলে, আমি তো সম্পদ ও সন্তান পেতেই থাকবো : 83
নবীদের সন্তান সন্ততি / বংশধর : 83
ওলী বুযুর্গ ও নবীরা কাউকে সন্তান দিতে পারেন না, বরং তারাই সন্তান লাভের জন্য আল্লাহর নিকট হাত পাতেন : 84
শয়তানের সন্তান সন্ততি / বংশধর : 84
সম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে শয়তানের শরীকানা : 84
ধাত্রী প্রথা / স্তন্যপান করানোর জন্য সন্তান অন্য মহিলার নিকট সোপর্দ করা : 85
পুত্র সন্তান হত্যা ও কন্যা সন্তান জীবিত রাখা : 86
কন্যা সন্তান লাভের সংবাদ কি দু:সংবাদ ? 86
সন্তান সন্ততিকে আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী পরিচালনা : 86
সন্তান ও সম্পদের মালিক হয়েই গর্ব করোনা : 87
পুত্র সন্তান :� আরো দেখুন : প > পুত্র সন্তান 87
আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেন না,�� এ থেকে তিনি পবিত্র : 87
আল্লাহর জন্য কন্যা সন্তান ? � এটাতো নির্জলা মিথ্যা ও শিরক : 88
আল্লাহ কাউকে পুত্র সন্তান হিসেবেও গ্রহণ করেননি : 88
সন্তানদের মধ্যে ভালোবাসায় তারতম্য : 90
সন্তান ঈমানদার না হলে নবীর পুত্র হলেও কোন কাজ হবেনা �: 90
সন্তান যেন মূর্তিপূজা থেকে বেচে থাকে সেজন্য দোয়া : 90
সন্তান লাভের জন্য দোয়া : আরো দেখুন : দ > দোয়া : 91
সৎ সন্তান লাভের জন্য দোয়া : 91
কোন পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই� আল্লাহর ইশারায় একজন মহিলার সন্তান হওয়া সম্ভব : 92
সামেরীর শাস্তি : ধর্ম ব্যবসার শাস্তি : 92
কোন পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই� আল্লাহর ইশারায় একজন মহিলার সন্তান হওয়া সম্ভব : 92
ইহুদী ও মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক : 93
মু�মিনদের প্রতি সু-ধারণা রাখা অবশ্য কর্তব্য : 93
মু�মিনদেরকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখা যাবে না : 93
সাহায্য / সহায়তা / সহযোগিতা : আরো দেখুন : জ > জিহাদে আল্লাহর সাহায্য : 93
আল্লাহ কারো ক্ষতি করতে চাইলে কেউ তার উপকার করতে পারবে না, আর আল্লাহ কারো সাহায্য / উপকার করতে চাইলে কে্উ তার ক্ষতি করতে পারবে না : 94
মু�মিনদের সাহায্য করা আল্লাহর দায়িত্ব : 94
ঈমানদারদের প্রকৃত সাহায্যকারী হলেন আল্লাহ : 94
কাফেররা হচ্ছে বিদ্রোহীদের সাহায্যকারী : 95
কোন মু�মিন অপরাধী ও জালিমদের সাহায্যকারী� হতে পারেনা : 95
কিবতীকে ভুলক্রমে হত্যার পর মূসা আ: এর ভবিষ্যতে কোন অপরাধীকে সাহায্য না করা শপথের প্রকৃত স্বরূপ :� 95
আল্লাহ সর্বোৎকৃষ্ট অভিভাবক ও সাহায্যকারী �: 96
যিনি কিতাব নাযিল করেছেন, সাহায্যকারী তিনিই : 96
সত্যের প্রতিষ্ঠা করার জন্য যারা শেষ পর্যন্ত� সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তারা আল্লাহর সাহায্যকারী : 97
আসল সাহায্যকারী আল্লাহ, যারা তাঁর সাহায্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাদের প্রতি হুশিয়ারী : 97
আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ডেকোনা, কারণ ডাকে সাড়া দেবার ক্ষমতা তাদের নেই: এবং আল্লাহর মালিকানায় তাদের কোন অংশীদারিত্বও �নেই : তারা আল্লাহর সাহায্যকারীও নয় : 97
আল্লাহর সাহায্য লাভের শর্ত : কেবলমাত্র হকপন্থীদেরকেই আল্লাহ সাহায্য করেন : 97
তোমরা যেসব কথা (মিথ্যা অভিযোগ) তৈরী করছো, তার মোকাবিলায় দয়াময় আল্লাহই আমার সাহায্যকারী : 98
যারা কোথাও থেকে সাহায্য পাবে না : 98
আল্লাহ যখন কোন অপরাধীকে শাস্তি দেন তখন তারা কোথাও থেকে সাহায্য পায়না : 99
কুরআনের আয়াত শুনে যারা পিছনে ফিরে কেটে পড়ে তাদেরকে সাহায্য করা হবেনা : 99
শিরক : সাহায্যপ্রার্থী ও সাহায্যকারী উভয়ই দুর্বল যেখানে� : 99
জালেমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই: 100
জিহাদের ময়দানে / যুদ্ধের মধ্যে আল্লাহ মু�মিনদের অন্তরে সাহস সঞ্চার করলেন : 100
সাহাবা / সাহাবায়ে আযামাঈন : 100
সাহাবাদের সম্পর্কে কুরআনের বর্ণনা : 100
সাহবায়ে কেরামের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভ্রান্তি : তারা ছিলেন বাছাইকৃত মানুষ: 103
সময় দেয়া, ঢিল দেয়া, ছেড়ে দেয়া : 103
নবীগণের প্রতি আল্লাহর শান্তনা বানী : ভয় ও দুশ্চিন্তা করোনা : 103
জিহাদের ময়দানে আল্লাহর সান্তনা / সাহায্য / বিজয় লাভের শর্ত : 104
সমাজ / সামাজিকতা / সামাজিক নিয়ম কানুন : 105
অন্যের গৃহে প্রবেশ করার জন্য অনুমতি / সম্মতি নিতে হবে : 105
তিনটি সময়ে ঘরে প্রবেশ করার সময় অনুমতি নিতে হবে : 105
নিজেদের গৃহে প্রবেশ করার সময় সালাম দিবে : 105
অন্যের গৃহে খাওয়ার নিয়ম কানুন : 105
সমাজের অসৎ নিয়ম নীতি ও অভ্যাসের ছোয়া থেকে বেঁচে থাকার জন্য লূত আ: এর দোয়া : 106
অমুসলিমদের সাথে মুসলমানদের আচরণের রীতি : 107
ইসলাম শান্তি চায়, যুদ্ধ হলেও তাও শেষ অবলম্বন হিসেবে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই যুদ্ধ : 107
জিহাদ অর্থ শুধুমাত্র যুদ্ধ নয়, বরং, শান্তি প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা : 107
সামুদ জাতির ঘটনা বিস্তারিত দেখুন :� ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত সালেহ আ: 107
সামেরীর শাস্তি : ধর্ম ব্যবসার শাস্তি : 110
পবিত্র কুরআনে সাম্রাজ্যবাদ এর ধারণা : 111
গৃহে প্রবেশ করার সময় সালাম দিবে : 112
জান্নাতবাসীদেরকে অভ্যর্থনা করা সালাম এর মাধ্যমে : 112
সাক্ষী দাঁড় করানো হবে কিয়ামতের দিন : 113
রাসুলগণ সাক্ষী মু�মিনগণের উপর আর মু�মিনগণ সাক্ষী সাধারণ লোকদের উপর : 114
মুহাম্মদ সা: কে প্রেরণ করা হয়েছে ১। সাক্ষী ২। সুসংবাদদাতা ৩। ভয় প্রদর্শনকারী ৪। আল্লাহর দিকে আহ্বনকারী ৪। সিরাজাম মুনীরা - উজ্জ্বল প্রদীপ হিসেবে : 114
মুহাম্মদ সা: এর সাক্ষী হওয়ার অর্থ কি ?.. 114
রহমানের বান্দা তারাই যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না : 117
কিয়ামতের ময়দানে শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ হাত পা অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে : 117
ইসলামী বিচারব্যবস্থায় সাক্ষ্যদান পদ্ধতি : (বিস্তারিত দেখুন : ব > বিচার ব্যবস্থা) 118
মিথ্যা সাক্ষ্য থেকে দূরে থাকো : 118
কাদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয় ? 119
অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর সাথে সাক্ষাতে বিশ্বাস করেনা : 120
যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আশা পোষণ করেনা : 120
পরকালের দিনের সাক্ষাতকারকে ভুলে গিয়েছিলে, এখন মজা ভোগ কর : 120
যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আশা পোষণ করে :. 120
নবীগণের সহিত আল্লাহর সাক্ষাৎ : 121
তোমরা যেখানেই থাকো আল্লাহ তোমাদের সাথে আছেন : 122
আল্লাহ তাকওয়া অবলম্বনকারীদের সাথে আছেন : 122
লাঠির সাপ হয়ে যাওয়া :� তা কেমন সাপ ছিল ? 122
সাবা : সুলাইমান আ: এর আমলে সূর্যপূজারী রানীর সাম্রাজ্য : 123
সাব জাতির অবস্থান কোথায় ছিল ? সাবা জাতির প্রকৃত ইতিহাস, একটি সমৃদ্ধশালী জাতিকে তাদের অকৃতজ্ঞতার কারণে যেভাবে নি:শেষ করে দেওয়া হল।: 123
সৃষ্টিকর্তা হচ্ছেন একমাত্র আল্লাহ : 124
তোমাদের সবাইকে সৃষ্টি করা একটি মাত্র প্রাণী সৃষ্টি করার মতই : 125
আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা মানার পরও মুশরিকরা শিরকে লিপ্ত হয় : 125
সৃষ্টিকর্তার গুরুত্ব : যে সৃষ্টি করে আর যে সৃষ্টি করেনা � উভয়ে কি সমান ? 126
অন্যান্য শরীকরা (আল্লাহকে বাদ দিয়ে মানুষ যাদের পূজা করে তারা) সৃষ্টির ক্ষেত্রে কোন অংশীদারিত্ব রাখেনা, একমাত্র আল্লাহই সবকিছু সৃষ্টি করেছেন , সুতরাং, ইবাদত একমাত্র আল্লাহই পেতে পারেন, অন্য কোন শরীক নয় : 126
আল্লাহর সৃষ্টি নিখুঁত, তাতে খুঁত ধরা সম্ভব নয় : 127
প্রথম জীবনের সৃষ্টি কি� আল্লাহ করেছেন ? নাকি প্রথম জীবনের সৃষ্টি এ বিশ্বজগতের একটি দুর্ঘটনা মাত্র ? 127
আল্লাহর এ মহান সৃষ্টিকর্ম অনর্থক নয় : 128
সৃষ্টির সেরা জাতি কে ? উত্তর : মানুষ : 129
আল্লাহর তৈরী সৃষ্টি কাঠামো পরিবর্তন করা যেতে পারে না : 129
আল্লাহর সৃষ্ট মূল প্রকৃতির উপর অটল থাকো,� দ্বীনের উপর অটল থাকো :. 129
সৃষ্টি আল্লাহ খেলাচ্ছলে করেননি, বরং সবকিছু উদ্দেশ্যমূলক ভাবে এবং সত্য সহকারে �সৃষ্টি করেছেন : 131
রাত দিন চন্দ্র সূর্য সৃষ্টি করা হয়েছে তোমাদের কল্যাণের জন্যই : 131
এমন অনেক সৃষ্টি রয়েছে যা আমরা জানিনা : 131
এক সৃষ্টির পরিবর্তে অন্য সৃষ্টি স্থলাভিষিক্ত করা : 131
আকাশের দুর্গ/বুরুজ/স্তম্ভ/বিশেষ অঞ্চল : 132
আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি : (আরো দেখুন : আ > আকাশ সৃষ্টি, আ > আসমান-জমীন) : 133
আল্লাহ ছয় দিনে এ বিশ্বজগত সৃষ্টি করেছেন এরপর আরশে সমাসীন হয়েছেন : এ কথার প্রকৃত অর্থ কি ? 134
ছয় দিনে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করা হয়েছে : 134
প্রাণী সৃষ্টি : সমস্ত প্রাণী পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ : 134
পৃথিবী সৃষ্টি : দেখুন আ> আকাশ ও �পৃথিবী সৃষ্টি : 134
মানব সৃষ্টি সংক্রান্ত : মানুষ সৃষ্টির উপাদান পানি, মাটি ,বীর্য : 135
বিস্তারিত দেখুন : ক > কুরআন ও বিজ্ঞান > বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে আল্লাহর অস্তিত্ব ও আখিরাতের সত্যতার প্রমাণ ।� 137
মানব সৃষ্টির মূল কারণ : দ্বিতীয়বার সৃষ্টির কারণ : আখিরাতের প্রয়োজনীয়তা : 140
সৃষ্টির পুনরাবৃত্তি তথা পরকাল অবশ্যই সংঘটিত হবে : 140
সৃষ্টির পুনরাবৃত্তি তথা পরকাল সংঘটিত হবেই : এটা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি ও দায়িত্ব 140
বায়ুমন্ডলের অদৃশ্য কঠিন স্তর� : 141
ভূ পৃষ্ঠকে ঘিরে আছে একটি কঠিন বায়ুমন্ডলীয় ও ওজোন স্তর, যা বিভিন্ন মহাজাগতিক রশ্মি ও ক্ষতিকর বস্তু থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করছে :. 141
সৎকাজ / সৎকর্ম / সৎকর্মশীল / সৎ লোক / সৎ সন্তান / সৎপথ/ সততা : 142
ঈমান ও সৎকাজ অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত : 142
যারা ঈমান আনে ও সৎকর্মশীল হয়, তার তো আঁকড়ে ধরলো একটি শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল : 143
�ঈমান ও সৎকাজ� এর অর্থ কি ? সৎকাজের পুরস্কার কয়েকগুন দেয়া হবে - এর অর্থ কি ? 144
সৎকাজ বলতে কি বুঝায় ? সৎকর্মশীল কারা ? সৎকাজ ও সৎকর্মশীলতার কুরআনিক ধারণা, ঘটনাক্রমে সৎকাজ করা আর সৎকর্মশীল হওয়া কি এক জিনিস ? �: 145
কাফেরদের সৎকাজ ধর্তব্যের মধ্যে গণ্য হবে না, কারণ কুফরীই সবচেয়ে বড় অসৎকাজ, এরপরে অন্যকোন সৎকাজ বা অসৎকাজ বলা যায়, মূল্যহীন : 146
সততার দুনিয়াবী পুরস্কার : আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রকৃত হিকমত ও জ্ঞান লাভ করা যায় : 146
ইহকালীন ও পরকালীন সাফল্য সৎকর্মশীল মু�মিনদের জন্যই নির্ধারিত: 147
পরকালীন সম্মান ও মর্যাদা সৎকর্মশীল মু�মিনদের জন্যই নির্ধারিত : 148
সৎকর্মশীল হওয়ার জন্য হালাল ও পবিত্র খাদ্য ভক্ষণ করা প্রধান শর্ত : 148
সৎকর্মশীল হওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করা : 149
আল্লাহ বেপরোয়া, কেউ অকৃতজ্ঞ হলে/সৎপথ অবলম্বন না করলে আল্লাহ তার ধার ধারেন না� : 149
অসৎকাজে লিপ্ত আছে, অথচ মনে করছে সৎকাজ করছে : তারাই সবচেয়ে বড় হতভাগা ও� ক্ষতিগ্রস্থ: 150
সৎকর্মশীল বান্দারাই আল্লাহর অনুগ্রহ প্রাপ্ত : আর নবীগণের বড় গুণ হল তারা ছিলেন ছিলেন সৎকর্মশীল : 151
নবীদের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল: তারা ছিলেন ঈমানদার ও সাথে সাথে সৎকর্মশীলও : 151
আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীল লোকদের নিকবর্তী : 151
সৎলোকদের পরস্পরের মধ্যে আল্লাহ ভালোবাসা সৃ্ষ্টি করে দেবেন : 151
মুসা আ: এর জাতির মধ্যে সত্যপন্থী একটি দলও ছিল 152
সৎ সন্তান লাভের জন্য দোয়া : 152
সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভূক্ত হওয়া ক্ষমা লাভ করার শর্ত : 152
সৎ লোকদের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার জন্য এবং সৎকাজ করার তৌফিক লাভের জন্য দোয়া : 152
ঈমানদার ও সৎকর্মশীলদের জন্যই আল্লাহর দেয়া আইন কানুন সমূহ সহজ : 153
সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া : 153
সৎ লোকদের অন্যায় ভাবে কারাগারে প্রেরণ করা অসৎ নেতৃত্বের একটি প্রাচীনতম রীতি : 153
সৎকর্মশীলদের প্রতিদান নষ্ট হয় না : 153
সৎকাজের সুফল� / পুরস্কার সমূহ :: 154
সৎকাজের দুনিয়াবী পুরস্কার : 154
সৎকাজের আখিরাতের পুরস্কার : 154
সৎকাজ কে� কে করে এ পরীক্ষা নেওয়ার জন্যই জীবন ও মৃত্যু সৃষ্টি করা হয়েছে : 154
অসৎকাজের প্রতিদান অসৎকাজের সমপরিমাণ হবে : 155
সৎকাজ থেকে গাফেল হওয়ার একটি শয়তানি চিন্তা : 155
সৎকাজ-এর প্রতিদান দেবার ক্ষেত্রে নারী পুরুষে কোন পার্থক্য করা হবে না : 156
আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথে আছেন : 156
আল্লাহর নৈকট্য অন্বেষণকারীদের সৎকাজ করতে হবে, এবং অবশ্যই থাকতে হবে শিরকমুক্ত ঈমান : 156
সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ : 156
সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ না করার কুফল সমূহ: 157
সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ করার সুফল সমূহ: 157
যারা অসৎকাজে নিষেধকারী থাকে তাদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্টকারীদের পাপ পথ থেকে বাচিয়ে দেন : 158
সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ ও ধৈর্য : 159
সৎ পথ / সঠিক পথ (আরো দেখুন: হ > হেদায়েত,� আ > আখিরাত অস্বীকার করার কুফল-সৎ পথে থাকা অসম্ভব) : 159
অসৎপথে থাকার পরও যারা মনে করে সৎপথে আছে : 160
(১) মানুষের ইচ্ছাশক্তির প্রয়োজন : 160
(২) মানুষের চেষ্টার প্রয়োজন : 160
(৩)ভালো মন্দ সর্বাবস্থায় সৎপথে অটল থাকা, আল্লাহর ফায়সালায় সন্তুষ্ট থাকা : 160
(৪) অবশ্যই আসমানী কিতাব সমূহের স্মরনাপন্ন হতে হবে : 161
(৫) সৎপথ ও সঠিক পথ লাভের প্রধান শর্ত হচ্ছে : আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করা. 161
মানুষকে সঠিক পথ / সৎ পথ লাভের জন্য আল্লাহর প্রচেষ্টা : 161
মানুষকে বিপদে আপদে বা দু:খ দুর্দশায় ও দুর্ভিক্ষে নিক্ষেপ করা হয় যাতে তারা বিনম্র হয়ে সঠিক পথে ফিরে আসে �: 161
সংখ্যাগরিষ্ঠের অনুসরণই কি সঠিক ? সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকদের অনুসরণ : 167
সার্বভৌমত্বের মালিক একমাত্র আল্লাহ, এতদ্বতীত আর কেউই সার্বভৌমত্বের অধিকারী নয় �: 168
সার্বভৌমত্ব ক্ষমতায় আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে শরীক করা হলো কর্মগত শিরক : 173
ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ : একটি শয়তানী চক্রান্ত 174
আল্লাহর নিকট সুপারিশের স্বরূপ : 175
সুপারিশ সংক্রান্ত ভুল ধারণায় লিপ্ত ছিল আরবের লোকেরা, তাদের জবাবে আল্লাহ যা বলছেন : 179
ওলী/বুযুর্গ দেরকে সুপারিশ করার অবাধ অনুমতি কেন দেয়া হবে না ? 179
রাসুল সা: এর যুগের কাফেরগণ নাস্তিক ছিলনা, তার দেবদেবীদের পূজা করত আল্লাহর নিকট সুপারিশ লাভের আশায় : 180
সুপারিশ লাভ করার ভ্রান্ত আকীদা থেকেই শিরকের উৎপত্তি ঘটেছে : 180
অথচ শরীকরা তাদের অনুসারীদের ব্যাপারে যে কোন ধরণের সুপারিশ করতে অস্বীকার করবে অথবা সুপারিশ করার ক্ষমতাই পাবে না : 181
ফেরেশতারা কি আল্লাহর নিকট সুপারিশ করার অধিকার রাখে? 182
জালেমদের জন্য কোন সুপারিশ কবুল করা হবে না : 183
পরকালে হাশরের ময়দানে কোন আত্মীয়তা কাজে আসবে না : 183
ঈমান না আনলে নবীর পুত্র হলেও কোন কাজ হবেনা : 183
আল্লাহকে ভয় করো এবং সেদিনকে ভয় করো যেদিন পিতা পুত্রের এবং পুত্র পিতার কোন কাজে আসবে না :� 184
ঈমান না আনলে নবীর স্ত্রী হলেও কাজ �হবে না : 184
নবীর স্ত্রীও যদি অশ্লীল কাজ করে তবে তাদেরকেও কোন ছাড় দেওয়া হবেনা, বরং তাদের জন্য রয়েছে দ্বিগুণ� শাস্তি : 185
ঈমান না আনলে �স্বয়ং নবীও �সুপারিশ স্বরূপ �ক্ষমা প্রার্থনা করলেও মুক্তি পাওয়া যাবে না: 186
স্বয়ং নবীও যদি সৎপথ অবলম্বন না করে দুষ্কৃতিকারীদের অনুসরণ করেন তবে তাকেও শাস্তি পেতে হবে : 186
ঈমান না আনলে মুহাম্মদ সা: এর আত্মীয়দেরকেও আত্মীয়তার ভিত্তিতে কোনরূপ সুপারিশ লাভের সুবিধা দেওয়া হয়নি :� 186
আযাব অবধারিত হয়ে যাবার পর নবীর সুপারিশও কোন কাজে লাগবে না : 186
যারা কোথাও থেকে সাহায্য পাবে না: 186
সুবিচার : (দেখুন : ই > ইনসাফ ) 187
আল্লাহর সুন্নাতে (রীতিনীতিতে) কোন পরিবর্তন নেই : 187
হেদায়াত ও পথভ্রষ্টতা তথা সৎপথ ও অসৎপথ �সুষ্পষ্ট : 188
আরো দেখুন : ক >� কুরানের বক্তব্য সুষ্পষ্ট,� মুহাকামাত আয়াত, মুতাশাবিহাত আয়াত� : 188
মু�মিনদের প্রতি সু-ধারণা রাখা অবশ্য কর্তব্য : 189
সূর্যকে আকষ্মিক মাথার উপর না উঠিয়ে ধীরে ধীরে উদয় অস্ত করানো আল্লাহর এক বিরাট বৈজ্ঞানিক কর্মকুশলতা: 190
নামাজের সময় নির্ধারণের আসল ঘড়ি হচ্ছে সূর্য� এবং �. 190
সূর্য উদয় হয় ও অস্ত যায় শয়তানের দুই শিং এর মধ্য দিয়ে : হাদীসে একথা বলা হয়েছে সূর্যপূজারীদের জন্য : 190
পাচ ওয়াক্ত নামাজের কথা কুরআনে ইঙ্গিতে বলা হয়েছে : হামদ ও তসবীহ দ্বারা নামাজ বুঝানো হয়েছে: 191
সূর্য নিজ ইচ্ছায় নয় আল্লাহর ইচ্ছায় চলে : 191
১। বিনয়ের নীতি অবলম্বন কারীদেরকে সুসংবাদ দাও : 193
২। সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ দাও : 193
সাগরের পানির মধ্যে সুড়ংগ পথ তৈরী : 193
আল্লাহর সাহায্য : আরো� দেখুন : জিহাদে আল্লাহর সাহায্য : 194
সাহাবীদের ন্যায় ঈমান আনার তাগিদ : 194
সাহাবীগণকে আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন : 194
রাসুল সা: এবং সাহাবীগণ সঠিক পথে রয়েছেন : 195
সকল সাহাবীগণেই কি আদল এর গুণে গুণান্বিত ছিলেন ? 195
১। কয়েকজন সাহাবী হযরত আয়শা রা: এর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ আরোপের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন :� 195
২। কোন কোন মহিলা সাহাবীদের স্বামীরা এ অভিযোগ করেছিল যে, তারা (উক্ত মহিলারা) পরপুরুষের সাথে জ্বিনায় লিপ্ত হয়েছে :. 196
তোমরা যেখানেই থাক আল্লাহ তোমাদের সাথেই আছেন : 198
�সিজদা� শব্দের অর্থ সমূহ : 200
১। আল্লাহকে সিজদা করছে� সৃষ্টিজগতের সবকিছু : এর অর্থ : আদেশ পালন করা ও পুরোপুরি মেনে নিয়ে মাথা নত করা : 200
২। ফেরেশতা কর্তৃক আদম আ: কে সিজদা করার অর্থ বিজিত হয়ে যাওয়া, যেহেতু এ পৃথিবীতে আদম ও তার বংশধরদের খিদমতে ফেরেশতাদেরকে কাজে লাগানো হবে : 200
৩। �সিজদা কারী� অর্থাৎ নামাজী : আর সিজদাকারী হওয়া মু�মিনদের প্রধান গুণ : 201
ইউসুফ আ:� কে চাঁদ ও সূর্যের সিজদা করার স্বপ্ন দেখার স্বরূপ : 201
কাফেররাও কি আল্লাহকে সিজদা করছে ? 201
ফেরাউনের যাদুকরেরা ঈমান আনলো ও সিজদায় পড়ে গেল : 202
ইবলীস শয়তান আদমকে কেন সিজদা করেনি ? 202
নেক বান্দাগণের চরিত্র �হচ্ছে : তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে. 202
যেসব মানুষ সিজদাকারী হচ্ছেনা, এর কারণ কি ? 203
কিয়ামতের দিন সকল ব্যক্তির মাথা আল্লাহর নিকট নুয়ে পড়বে : 203
প্রকৃত ঈমানদারদের পরিচয় হচ্ছে তারা আল্লাহর কুরআন শুনে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে : 203
সিজদার আয়াত সমূহ : (যে সব আয়াত পাঠ করলে সাথে সাথে সিজদা করতে হয় ) : 203
সাবার রানীর সিংহাসন : (হযরত সুলাইমান আ: এর ঘটনায় বর্ণিত সিংহাসন) 208
সীরাতাল মুস্তাক্বীম : সরল পথ : সঠিক পথ : (আরো দেখুন : পথ) 210
সীরাতাল মুস্তাকীমে তারাই অটল থাকতে পারে যাদের অন্তর ইসলাম ও কুরআনের উপর ঝুঁকে পড়ে : 211
সীরাতাল মুস্তাক্বীম লাভ করা কুরানের অনুসরণ ও� আল্লাহর অনুগ্রহের উপর নির্ভর করে : 211
নবী রাসুলগণ সীরাতল মুস্তাক্বীমের উপর অটল ছিলেন, এটা আল্লাহর অনুগ্রহের ফলেই সম্ভব হয়েছে : �আরো দেখুন : দ > দৃঢ়তা,� ন > নবীগণ । 211
নবীগণ সীরাতাল মুস্তাক্বীমের দিকে আহ্বান জানিয়েছেন : 212
সঠিক পথ লাভ করতে হলে : নবীগণের� অনুসরণ করতে হবে : 212
সামান্য দু:খ কষ্টে বা বিপদে আপদে পড়লেই যারা আল্লাহর পথ থেকে দুরে সরে যায় �:ইবাদতের ক্ষেত্রে যারা ইস্তেক্বামাত / দৃঢ়তা অবলম্বন করে না : তাদের দুনিয়া আখিরাত উভয়ই বরবাদ : 212
সীরাতাল মুস্তাক্বীম হলো সীরাতাল হামীদ : 214
আল্লাহর পথে অটল থাকার জন্য নামাজ জরুরী কেন ? সীরাতাল মুস্তাক্বিমে টিকে থাকার জন্য �প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কার্যকারিতা কি? : 214
নিজের চেহারা দ্বীনের দিকে স্থির নিবদ্ধ রাখো : দ্বীনের উপর অটল থাকো : 215
সীদ্ধান্ত গ্রহণ করার পর তার উপরে অটল থাকো : 216
অপরাধীদের সীদ্ধান্ত গ্রহণ ভুল হয় : যা পরিণামের তাদের নিজেদেরই ক্ষতির কারণ হয় : 217
হযরত ইউসুফ আ: এর ভাইদের অপরাধের� স্বীকারোক্তি : 217
আযাবের সম্মুখীন হওয়ার পর অপরাধীদের স্বীকারোক্তি : 218
স্থান : স্থান, এলাকা ও অবস্থান সম্পর্কিত আয়াত সমূহ : 218
১। লূত জাতির ধ্বংসের স্থান : 218
২। আইকাবাসীদের ধ্বংসের স্থান : 218
৩। হিজর বাসীর এলাকা : সামুদ জাতির কেন্দ্রীয় শহর 219
৪। উপত্যকায় উপত্যকায় কারা উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়ায় ? 219
সুলায়মান আ: এর সৈন্য সমাবেশ : 220
সুলায়মান আ: এর সেনাবাহিনীতে পাখিরাও অন্তর্ভূক্ত ছিল : 221
সন্ধি :
(৩৩-আহযাব:৪৮) আর কখনো দমিত হয়ো না কাফের ও মুনাফিকদের কাছে, পরোয়া করো না তাদের পীড়নের এবং ভরসা করো আল্লাহর প্রতি৷ আল্লাহই যথেষ্ট এজন্য যে, মানুষ তাঁর হাতে তার যাবতীয় বিষয় সোপর্দ করে দেবে৷
.
সকাল সন্ধ্যা :
(১৬:৬) তাদের মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য সৌন্দর্য যখন সকালে তোমরা তাদেরকে চারণ ভূমিতে পাঠাও এবং সন্ধ্যায় তাদেরকে ফিরিয়ে আনো।
(১৮:২৮) আর নিজের অন্তরকে তাদের সংগ লাভে নিশ্চিন্ত করো যারা নিজেদের রবের সন্তুষ্টির সন্ধানে সকাল-ঝাঁঝে তাঁকে ডাকে এবং কখনো তাদের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরাবে না৷ তুমি কি পার্থিব সৌন্দর্য পছন্দ করো ? এমন কোনো লোকের আনুগত্য করো না যার অন্তরকে আমি আমার স্মরণ থেকে গাফেল করে দিয়েছি, যে নিজের প্রবৃত্তির কামনা বাসনার অনুসরণ করেছে এবং যার কর্মপদ্ধতি কখনো উগ্র, কখনো উদাসীন৷
(১৩:১৫) আল্লহাকে সিজ্দা করছে পৃথিবী ও আকাশের প্রত্যেকটি বস্তু ইচ্ছায় ও অনিচ্ছায় এবং প্রত্যেক বস্তুর ছায়া সকাল-সাঁঝে তাঁর সামনে নত হয়৷ ৷
(১৯:১১) কাজেই সে মিহরাব থেকে বের হয়ে নিজের সম্প্রদায়ের সামনে এলো এবং ইশারায় তাদেরকে সাঁঝে আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করার নির্দেশ দিল৷
(১৯:৬২) সেখানে তারা কোন বাজে কথা শুনবে না, যা কিছুই শুনবে ঠিকই শুনবে৷ আর সকাল সন্ধ্যায় তারা অনবরত নিজেদের রিযিক লাভ করতে থাকবে৷
সকাল সন্ধ্যায় জিকির বলতে সার্বক্ষণিক ইবাদতকে বুঝানো হয়েছে :
(নূর:৩৬) (তাঁর আলোর পথ অবলম্বনকারী )ঐ সব ঘরে পাওয়া যায়, যেগুলোকে উন্নত করার ও যেগুলোর মধ্যে নিজের নাম স্মরণ করার হুকুম আল্লাহ দিয়েছেন ৷ সেগুলোতে এমন সব লোক সকাল সাঁঝে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে৷
(উল্লেখ্য যে, লোকেরা শুধু সকাল আর সন্ধ্যায়ই মসজিদে যায়না, বরং দিনে রাতে পাচবার মসজিদে যাতায়াত করে, তাই এখানে সকাল সন্ধ্যা বলতে সার্বক্ষণিক সময়কে বুঝানো হয়েছে। )
বিস্তারিত দেখুন : জ > জিকর > সকাল সন্ধ্যায় জিকির বলতে �কি বুঝানো হয়েছে ? ২৪ ঘন্টার সার্বক্ষণিক �ইবাদতকে বুঝানো হয়েছে
সালাত / স্বলাত শব্দের অর্থ কি ?
هُوَ ٱلَّذِى يُصَلِّى عَلَيْكُمْ وَمَلَـٰٓئِكَتُهُۥ لِيُخْرِجَكُم مِّنَ ٱلظُّلُمَـٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ ۚ وَكَانَ بِٱلْمُؤْمِنِينَ رَحِيمًۭا [٣٣:٤٣]
(৩৩-আহযাব: ৪৩) তিনিই তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফেরেশতারা তোমাদের জন্য দোয়া করে, যাতে তিনি তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোকের মধ্যে নিয়ে আসেন, তিনি মুমিনদের প্রতি বড়ই মেহেরবান৷৭৯
৭৯) মুসলমানদের মনে এ অনুভূতি সৃষ্টি করাই এর উদ্দেশ্য যে, কাফের ও মুনাফিকদের মনের সমস্ত জ্বালা ও আক্রোশের কারণ হচ্ছে আল্লাহর রহমত, যা তাঁর রসূলের বদৌলতে তোমাদের ওপর বর্ষিত হয়েছে। এরই মাধ্যমে তোমরা ঈমানী সম্পদ লাভ করেছো, কুফরী ও জাহেলিয়াতের অন্ধকার ভেদ করে ইসলামের আলোকে চলে এসেছো এবং তোমাদের মধ্যে এমন উন্নত নৈতিক বৃত্তি ও গুণাবলীর সৃষ্টি হয়েছে যেগুলোর কারণে অন্যদের থেকে তোমাদের সুস্পষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিভাত হচ্ছে। হিংসুটেরা রসূলের ওপর এরই ঝাল ঝাড়ছে। এ অবস্থায় এমন কোন নীতি অবলম্বন করো না যার ফলে তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়ে যাও।
অনুগ্রহের ভাব প্রকাশ করার জন্য মূলে সালাত (يصلى-صلوة) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। �সালাত� শব্দটি যখন আরো (على) অব্যয় সহকারে আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাদের জন্য ব্যবহার করা হয় তখন এর অর্থ হয় রহমত, অনুগ্রহ, করুণা ও স্নেহশীষ। আর যখন এটি ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে মানুষের জন্য ব্যবহৃত হয় তখন এর অর্থ হয় রহমতের দোয়া করা। অর্থাৎ ফেরেশতারা আল্লাহর কাছে মানুষের জন্য এই মর্মে দোয়া করে যে, হে আল্লাহ, তুমি এদের প্রতি অনুগ্রহ করো এবং তোমার দানে এদেরকে আপ্লুত করে দাও। এভাবে يُصَلِّي عَلَيْكُمْএর অর্থ এও হয় যে, يشيع عنكم الذكر الجميل فى عباد الله অর্থাৎ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে তোমাদেরকে খ্যাতি দান করেন এবং এমন পর্যায়ে উন্নীত করেন যার ফলে আল্লাহর সমুদয় সৃষ্টি তোমাদের প্রশংসা করতে থাকে এবং ফেরেশতারা তোমাদের প্রশংসা ও সুনামের আলোচনা করতে থাকে।
সদাচার :
ভালো ব্যবহার / ভালো আচরণ �:
পিতা মাতা শিরক করার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে তাদের কথা মানা যাবেনা, তবে তাদের সাথে ভালো ব্যবহার অক্ষুন্ন রাখতে হবে : অর্থাৎ, এমনকি পিতা মাতা যদি মুশরিকও হয় তবুও তাদের সাথে ভালো আচরণ করতে হবে:
দেখুন : শ > শিরক > শিরক ও পিতা মাতা।� অথবা, প > পিতা মাতা ।
পিতা মাতা যদি মুশরিকও হয়, তবুও তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে : তবে তাদের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করা যাবে না :
(১৯: ৪৭) ইবরাহীম বললো, �আপনাকে সালাম৷ আমি আমার রবের কাছে আপনাকে মাফ করে দেবার জন্য দোয়া করবো৷ আমার রব আমার প্রতি বড়ই মেহেরবান৷
(বিস্তারিত দেখুন : ক্ষ > ক্ষমা > ইব্রাহিম আ: এর তার পিতার জন্য ক্ষমা চাওয়ার স্বরূপ)
সমাজ :
দেখুন : স >� সামাজিকতা
সবর : আরো দেখুন : ধৈর্য :
(১৬:৪২) হায় ! যে মজলুমরা সবর করেছে এবং যারা নিজেদের রবের ওপর ভরসা করে কাজ করছে তারা যদি জানতো (কেমন চমৎকার পরিণাম তাদের জন্য অপেক্ষা করছে)৷
দিন কি দীর্ঘতর হয়ে গেল ? অর্থাৎ, তোমরা কি ধৈর্যহারা হয়ে গেলে ?
(২০:৮৬) ভীষণ ক্রোধ ও মর্মজ্বালা নিয়ে মূসা তার সম্প্রদায়ের কাছে ফিরে এলো৷ সে বললো, �হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা! তোমাদের রব কি তোমাদের সাথে ভালো ভালো ওয়াদা করেননি? তোমাদের কি দিনগুলো দীর্ঘতর মনে হয়েছে?অথবা তোমরা নিজেদের রবের গযবই নিজেদের ওপর আনতে চাচ্ছিলে, যে কারণে তোমরা আমার সাথে ওয়াদা ভংগ করলে?
সফর :
সফরে বের হওয়ার দোয়া :
(১৭:৮০) আর দোয়া করোঃ হে আমার পরওয়ারদিগার ! আমাকে যেখানেই তুমি নিয়ে যাও সত্যতার সাথে নিয়ে যাও এবং যেখান থেকেই বের করো সত্যতার সাথে বের করো৷ এবং তোমার পক্ষ থেকে একটি কর্তৃত্বশীল পরাক্রান্ত শক্তিকে আমার সাহায্যকারী বানিয়ে দাও৷
সবুজ :
(১২:৪৩) একদিন বাদশাহ বললো, �আমি স্বপ্ন দেখেছি, সাতটি মোটা গাভীকে সাতটি পাতলা গাভী খেয়ে ফেলছে এবং সাতটি সবুজ শীষ ও সাতটি শুকনো শীষ৷
(১৮:৩১) তাদের জন্য রয়েছে চির বসন্তের জান্নাত, যার পাদদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে নদী, সেখানে তাদেরকে সোনার কাঁকনে সজ্জিত করা হবে, সূক্ষ্ম ও পুরু রেশম ও কিংখাবের সবুজ বস্ত্র পরিধান করবে এবং উপবেশন করবে উঁচু আসনে বালিশে হেলান দিয়ে, চমৎকার পুরস্কার এবং সর্বোত্তম আবাস
সময় :
(১৮:১৯) আর এমনি বিস্ময়করভাবে আমি তাদেরকে উঠিয়ে বসালাম �যাতে তারা পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে৷ তাদের একজন জিজ্ঞেস করলোঃ �বলোতো, কতক্ষণ এ অবস্থায় থেকেছো ?� অন্যেরা বললো, �হয়তো একদিন বা এর থেকে কিছু কম সময় হবে৷� তারপর তারা বললো, �আল্লাহই ভালো জানেন আমাদের কতটা সময় এ অবস্থায় অতিবাহিত হয়েছে৷
প্রতিশ্রুত সময় :
(১৮:৫৯) এ শাস্তিপ্রাপ্ত জনপদগুলো তোমাদের সামনে আছে, এরা জুলুম করলে আমি এদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছিলাম এবং এদের প্রত্যেকের ধ্বংসের জন্য আমি সময় নির্দিষ্ট করে রেখেছিলাম৷
(১৮:৫৮) তোমার রব বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়ালু৷ তিনি তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদেরকে পাকড়াও করতে চাইলে দ্রুত আযাব পাঠিয়ে দিতেন৷ কিন্তু তাদের জন্য রয়েছে একটি প্রতিশ্রুত মুহূর্ত, তা থেকে পালিয়ে যাবার কোনো পথই তারা যাবে না৷
�সময়�-কে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন : আল্লাহর নিকট অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ সবই একসমান :
(১৫:২৪) তোমাদের পূর্বে যারা গত হয়েছে তাদেরকে আমি দেখে রেখেছি এবং পরবর্তী আগমনকারীরাও আমার দৃষ্টি সমক্ষে আছে৷
(আল্লাহ সময়ের দাস নন, বরং সময় আল্লাহর দাস, অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত আল্লাহরই সৃষ্টি )
নির্দ্দিষ্ট সময় : ফলাফল দেওয়ার নির্দ্দিষ্ট সময়:
আর যদি আমি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাদের শাস্তি পিছিয়ে দেই তাহলে তারা বলতে থাকে, কোন্ জিনিস শাস্তিটাকে আটকে রেখেছে ? শোনো! যেদিন সেই শাস্তির সময় এসে যাবে সেদিন কারো ফিরানোর প্রচেষ্টা তাকে ফিরাতে পারবে না এবং যা নিয়ে তারা বিদ্রূপ করছে তা-ই তাদেরকে ঘেরাও করে ফেলবে৷ ১১:৮।
প্রত্যেকের জন্য, প্রত্যেক জাতির জন্য অবকাশের যেমন, তেমনি সমাপ্তি ও ধ্বংসের একটি নির্দ্দিষ্ট সময় রয়েছে :
(মু�মিনুন:৪৩) কোন জাতি তার সময়ের পূর্বে শেষ হয়নি এবং তার পরে টিকে থাকতে পারেনি৷
পরকালীন নির্দিষ্ট সময় :
(১৭:৯৯) তিনি তাদের হাশরের জন্য একটি সময় নির্ধারণ করে রেখেছেন, যার আগমন অবধারিত৷ কিন্তু জালেমরা জিদ ধরেছে যে তারা তা অস্বীকারই করে যাবে৷
(১৭:১০৪) এবং এরপর বনী ইসরাঈলকে বললাম, এখন তোমরা পৃথিবীতে বসবাস করো, �তারপর যখন আখেরাতের প্রতিশ্রুতির সময় এসে যাবে তখন আমি তোমাদের সবাইকে এক সাথে হাযির করবো৷
(১৮:৪৮) এবং সবাইকে তোমার রবের সামনে লাইনবন্দী করে পেশ করা হবে৷ নাও দেখে নাও, তোমরা এসে গেছো তো আমার কাছে ঠিক তেমনিভাবে যেমনটি আমি তোমাদের প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম৷ �তোমরা তো মনে করেছিলে আমি তোমাদের জন্য কোনো প্রতিশ্রুত ক্ষণ নির্ধারিতই করিনি৷
শিংগায় ফুঁক দেওয়ার নির্দ্দিষ্ট সময় :
(১৮:৯৯) আর সে দিন আমি লোকদেরকে ছেড়ে দেবো, তারা (সাগর তরংগের মতো) পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবে আর শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে এবং আমি সব মানুষকে একত্র করবো৷
আখিরাতে পুনর্জীবিত হওয়ার পর অবিশ্বাসীদের দুনিয়ার জীবন সম্পর্কে সময়ের ধারণা পাল্টে যাবে :
বিস্তারিত দেখুন : �দ >� দুনিয়ার জীবন > দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং তার স্বরূপ ।
সমকাম :
(২১:৭৪) আর লূতকে আমি প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দান করেছিলাম এবং তাকে এমন জনপদ থেকে উদ্ধার করেছিলাম যার অধিবাসীরা বদ কাজে লিপ্ত ছিল-আসলে তারা ছিল বড়ই দুরাচারী পাপিষ্ঠ জাতি
সরিষার দানা :
�����তাহা একটা সরিষা দানার তুল্য; সেই বীজ ভূমিতে বুনিবার সময় ভূমির সকল বীজের মধ্যে অতি ক্ষুদ্র বটে, কিন্তু বুনা হইলে তাহা অঙ্কুরিত হইয়া সকল শাক ইহতে বড় হইয়া ওঠে । এবং বড় বড় ডাল ফেলে; তাহাতে আকাশের পক্ষিগণ তাহার ছায়ার নীচে বাস করিতে পারে । " ( মার্ক, অধ্যায়, ৪, শ্লোক, ২৬ থেকে ৩২; এই বক্তৃতার শেষাংশ মথি লিখিত সুসমাচারের ১৩ অধ্যায়ের ৩১ ও ৩২ শ্লোকেও বর্ণিত হয়েছে)
তুমি ও তোমার আমল � কোন কিছুই আল্লাহর কাছে গোপন নেই :
কোন জিনিস যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয়, আর তা থাকে পাথরের মধ্যে, তবে আল্লাহ তাও বের করে নিয়ে আসবেন :� আল্লাহর কাছে কোন কিছুই গোপন থাকেনা :
(৩১-লোকমান: ১৬) (আর লুকমান বলেছিল ) � হে পুত্র! কোন জিনিস যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয় এবং তা লুকিয়ে থাকে পাথরের মধ্যে , আকাশে বা পৃথিবীতে কোথাও , তাহলে আল্লাহ তা বের করে নিয়ে আসবেন৷ ২৮ তিনি সূক্ষ্মদর্শী এবং সবকিছু জানেন৷
২৮ . অর্থাৎ আল্লাহর জ্ঞান ও তার পাকড়াও এর বাইরে কেউ যেতে পারে না। পাথরের মধ্যে ছোট্ট একটি কণা দৃষ্টির অগোচরে থাকতে পারে কিন্তু তার কাছে তা সুস্পষ্ট । আকাশ মণ্ডলে একটি ক্ষুদ্রতম কণিকা তোমার থেকে বহু দূরবর্তী হতে পারে কিন্তু তা আল্লাহর বহু নিকটতর। ভূমির বহু নিম্ন স্তরে পতিত কোন জিনিস তোমার কাছে গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত । কিন্তু তার কাছে তা রয়েছে উজ্জ্বল আলোর মধ্যে। কাজেই তুমি কোথাও কোন অবস্থায়ও এমন কোন সৎ বা অসৎ কাজ করতে পারো না যা আল্লাহর অগোচরে থেকে যায়। তিনি কেবল তা জানেন তাই নয় বরং যখন হিসেব-নিকেশের সময় আসবে তখন তিনি তোমাদের প্রত্যেকটি কাজের ও নড়াচড়ার রেকর্ড সামনে নিয়ে আসবেন।
এরা আর এরা কি সমান ? :
(১৬:৭৫) .... এবং সে তা থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে খুব খরচ করে৷ বলো, এরা দুজন কি সমান ?
(১৭:৭৬) ...এবং দ্বিতীয়জন ইনসাফের হুকুম দেয় এবং নিজে সত্য সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত আছে৷ বলো, এরা দুজন কি সমান ?
কিন্ত তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বললো ও তাকে হত্যা করল, সেজন্য তাদের প্রভু তাদের পাপের জন্যে তাদের উপরে বিধ্বংসী আঘাত হানলেন, ফলে তাদের এক সমান করে দিলেন; (৯১:১৪)
''তোমরা কি লক্ষ্য কর নি কিভাবে আল্লাহ্ সাত আসমানকে সৃষ্টি করেছেন সুবিন্যস্তভাবে, (৭১: ১৫)
তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর অথবা তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা নাই কর -- এ তাদের জন্য একসমান। আল্লাহ্ কখনো তাদের ক্ষমা করবেন না। নিশ্চয় সত্যত্যাগী লোকদলকে আল্লাহ্ সৎপথে চালান না। (৬৩:৬)
আগুনের বাসিন্দারা ও জান্নাতের বাসিন্দারা একসমান নয়। জান্নাতের অধিবাসীরাই স্বয়ং সফলকাম। (৫৯:২০)
যারা দুস্কর্ম করেছে তারা কি ভাবে যে আমরা তাদের বানিয়ে দেব তাদের মতো যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করছে -- তাদের জীবন ও তাদের মরণ কি এক সমান? কত নিকৃষ্ট যা তারা সিদ্ধান্ত করে!(৪৫:২১)
আর ভাল জিনিস ও মন্দ জিনিস একসমান হতে পারে না। প্রতিহত করো তাই দিয়ে যা অধিকতর উৎকৃষ্ট, ফলে দেখো! তোমার মধ্যে ও তার মধ্যে শত্রুতা থাকলেও সে যেন ছিল অন্তরঙ্গ বন্ধু।(৪১:৩৪)
যে কেউ মন্দ কাজ করে তাকে তবে প্রতিদান দেওয়া হবে না তার সমান-সমান ব্যতীত, আর যে কেউ ভাল কাজ করে -- সে পুরুষ হোক বা নারী, আর সে মুমিন হয় -- তাহলে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে, সেখানে তাদের বেহিসাব রিযেক দেওয়া হবে।(৪০:৪০)
আর যারা অন্যায়াচরণ করছিল তাদের জন্য যদি পৃথিবীতে যা আছে সে-সবটাই থাকত এবং তার সঙ্গে এর সমান আরও, তারা এর দ্বারা পরিত্রাণ পেতে চাইত কিয়ামতের দিনের শাস্তির ভীষণতা থেকে। আর আল্লাহ্র কাছ থেকে এমন তাদের সামনে পরিস্ফুট হবে যা তারা কখনো হিসেব করে দেখে নি।(৩৯:৪৭)
আল্লাহ্ একটি দৃষ্টান্ত ছোড়ে মারছেন -- একজন লোক, তার সঙ্গে রয়েছে অনেক অংশী-দেবতা, পরস্পরের সঙ্গে বিবাদ-রত, আর একজন লোক, একজনের সঙ্গেই অনুরক্ত। এদের দু�জন কি অবস্থার ক্ষেত্রে একসমান? সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র, কিন্তু তাদের অনেকেই জানে না।(৩৯:২৯)
সে কি যে রাতের প্রহরগুলোতে সিজদাবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে আনুগত্য করে, পরকাল সন্বন্ধে সাবধানতা অবলন্বন করে এবং তার প্রভুর অনুগ্রহ কামনা করে? বলো -- ''যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি একসমান? নিঃসন্দেহ বোধশক্তিসম্পন্ন লোকেরাই শুধু মনোযোগ দেয়।(৩৯:৯)
আর জীবন্ত এবং মৃতও একসমান নয়। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে শুনিয়ে থাকেন, আর যারা কবরে রয়েছে তাদের তুমি শোনাতে সক্ষম নও।(৩৫:২২)
আর অন্ধ ও চক্ষুষ্মান একসমান নয়, (৩৫:১৯)
আর দুটি সাগর একসমান নয়, এই একটি বিশুদ্ধ, তৃষ্ণানিবারক, যার পানকরণ সুমিষ্ট, আর এইটি লোনা, বিস্বাদ। তবুও তাদের প্রত্যেকটি থেকে তোমরা টাটকা মাংস খাও, আর বের করে আনো অলংকার যা তোমরা পরো। আর তুমি দেখতে পাও জাহাজগুলো তাতে বুকচিরে চলছে যেন তোমরা তাঁর করুণাভান্ডার থেকে রোজগার করতে পারো, আর যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো।(৩৫:১২)
তিনি তোমাদের কাছে তোমাদের মধ্যে থেকেই একটি দৃষ্টান্ত ছুড়ঁছেন -- তোমাদের ডান হাত যাদের ধরে রেখেছে তাদের মধ্যে থেকে কি তোমাদের জন্য অংশীদার রয়েছে আমরা তোমাদের যা জীবনোপকরণ দিয়েছি তাতে, -- ফলে তোমরা এতে একসমান, আর তাদের ক্ষেত্রে তোমরা ভাবনা-চিন্তা কর তোমার নিজেদের সন্বন্ধে তোমাদের ভাবনা-চিন্তার ন্যায়? এইভাবেই আমরা নির্দেশাবলী ব্যাখ্যা করি সেই লোকদের জন্য যারা বুদ্ধিশুদ্ধি রাখে।(৩০:২৮)
তারা বললে -- ''তুমি উপদেশ দাও অথবা উপদেশদাতাদের মধ্যে তুমি নাই-বা হও আমাদের কাছে সবই সমান।(২৬:১৩৬)
আর আল্লাহ্ তোমাদের কাউকে অন্য কারও উপরে জীবনোপকরণের ব্যাপারে প্রাধান্য দিয়েছেন। তারপর যাদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে তারা তাদের জীবনোপকরণ দিয়ে দেয় না তাদের ডান হাত যাদের ধরে রেখেছে, যেন এরা এ বিষয়ে সমান হয়ে যায়। তবে কি আল্লাহ্র অনুগ্রহকে তারা অস্বীকার করে? (১৬:৭১)
তারা বলবে -- ''আল্লাহ্ যদি আমাদের সৎপথে চালিত করতেন তবে আমরাও তোমাদের সৎপথে চালিত করতাম। আমরা অসহিষ্ণুতা দেখাই বা ধৈর্যধারণ করি আমাদের জন্য সবই সমান, আমাদের জন্য কোনো নিষ্কৃতি নেই।�� (১৪:২১)
...বলো -- ''অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি এক-সমান অথবা অন্ধকার আর আলোক কি সমান-সমান? অথবা তারা কি আল্লাহ্র এমন অংশী দাঁড় করিয়েছে যারা তাঁর সৃষ্টির মত সৃষ্টি করেছে�. (১৩:১৬)
একসমান তোমাদের মধ্যে যে কথা লুকোয় ও যে তা খুলে বলে, আর যে রাত্রিবেলায় আত্মগোপন করে আর দিনের বেলায় বিচরণ করে।(১৩:১০)
দল দুটির উপমা হচ্ছে অন্ধ ও বধিরের এবং চক্ষুষ্মান ও শ্রবণশক্তিমানের মতো, -- উভয় কি তুলনায় সমান-সমান? তবুও কি তোমরা মনোনিবেশ করবে না?� (১১:২৪)
আর যদি তোমরা তাদের আহ্বান করো সৎপথের প্রতি, তারা তোমাদের অনুসরণ করবে না। তোমরা তাদের আহ্বান করো অথবা তোমরা চুপচাপ থাকো, তোমাদের জন্যে সমান।(৭:১৯৩)
বলো -- ''অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি একসমান? তোমরা কি তবু অনুধাবন করবে না?�� (৬:৫০)
.....পুরুষের জন্য হচ্ছে দুইজন স্ত্রীলোকের সমান অংশ। আল্লাহ্ তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট করে দিচ্ছেন পাছে তোমরা পথভ্রষ্ট হও। আর আল্লাহ্ সব-কিছু সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।(৪:১৭৬)
এক বেটাছেলের জন্য দুই মেয়েছেলের সমান অংশ।....(৪:১১)
যদি কোনো আঘাত তোমাদের পীড়া দিয়ে থাকে তবে তার সমান আঘাত পীড়া দিয়েছে দলকে। আর এইসব দিনগুলো আমরা লোকদের কাছে পালাক্রমে এনে থাকি যাতে আল্লাহ্ অবধারণ করতে পারেন তাদের যারা ঈমান এনেছে (৩:১৪০)
অবশ্যই যারা অবিশ্বাস পোষণ করে, তাদের তুমি সতর্ক কর বা তাদের সতর্ক নাই কর তাদের কাছে সবই সমান, ওরা ঈমান আনবে না।(২:৬)
সভা :
দেখুন : ম > মজলিশ।
মজলিশে উপবিষ্ট থেকে অশ্লীল কাজে লিপ্ত� হতো লূত আ: জাতির লোকেরা : যেমনটি এখনও কোন কোন জাতির লোকদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়, আধুনিকতার নামে তারা এমনটি করে :
দেখুন ম > মজলিশ।
সমাধিসৌধ :
দেখুন : ম > মাজার নির্মাণ ।
সম্মান : (আরো দেখুন : ম > মর্যাদা) :
�
হিযরতের পুরস্কার স্বরূপ দুনিয়াতে সম্মানিত করা হবে :
(১৯:৫০) আর তাদেরকে নিজের অনুগ্রহ দান করলাম এবং তাদেরকে দিলাম যথার্থ নাম-যশ৷ (হিজরত করার পুরস্কার স্বরূপ হযরত ইব্রাহিম আ: এর বংশধরদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ, বিস্তারিত দেখুন : হ > হিজরত > হিজরত করার দুনিয়াবী পুরস্কার ) ।
সম্মান ও মর্যাদা দান করার মালিক আল্লাহ :
সমস্ত মর্যাদা আল্লাহর হাতে এবং তিনি সবকিছু শোনেন ও জানেন৷ �(১০:৬৫), যাকে চাই তার মর্তবা আমি বুলন্দ করে দেই �(১২:৭৬)
কিন্তু দেখো, দুনিয়াতেই আমি একটি দলকে অন্য একটির ওপর কেমন শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে রেখেছি এবং আখেরাতে তার মর্যাদা আরো অনেক বেশী হবে এবং তার শ্রেষ্ঠত্বও আরো অধিক হবে৷- (১৭:২১)
সমস্ত সৃষ্টি জগতের উপর আল্লাহ বনী আদমকে সম্মানিত করেছেন :
(১৭:৭০) এতো আমার অনুগ্রহ, আমি বনী আদমকে মর্যাদা দিয়েছি এবং তাদেরকে জলে স্থলে সওয়ারী দান করেছি, তাদেরকে পাক-পবিত্র জিনিস থেকে রিযিক দিয়েছি এবং নিজের বহু সৃষ্টির ওপর তাদেরকে সুস্পষ্ট প্রাধান্য দিয়েছি৷
আল্লাহ যাকে লাঞ্ছিত ও হেয় করেন তার সম্মান দাতা কেউ নেই।
(হাজ্ব:১৮) ...আর যাকে আল্লাহ লাঞ্ছিত ও হেয় করেন তার সম্মান দাতা কেউ নেই।
পরকালীন সম্মান ও মর্যাদা সৎকর্মশীল মু�মিনদের জন্যই নির্ধারিত :
(২০:৭৫) আর যারা তার সামনে মু�মিন হিসেবে সৎকাজ করে হাযির হবে তাদের জন্য রয়েছে সুমহান মর্যাদা।
ধনাঢ্যতা নয়, কর্মের সৌন্দরযই সম্মানের মাপকাঠি :
(১৩:২৬) আল্লাহ যাকে ইচ্ছা রিযিক সম্প্রসারিত করেন এবং যাকে চান মাপাজোকো রিযিক দান করেন৷এরা দুনিয়ার জীবনে উল্লসিত, অথচ দুনিয়ার জীবন আখেরাতের তুলনায় সামান্য সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়৷
( এ আয়াতের পটভূমি হচ্ছে, সাধারণ মূর্খ ও অজ্ঞদের মতো মক্কার কাফেররাও বিশ্বাস ও কর্মের সৌন্দর্য বা কদর্যতা দেখার পরিবর্তে ধনাঢ্যতা বা দারিদ্রের দৃষ্টিতে মানুষের মূল্য ও মর্যাদা নিরূপণ করতো। তাদের ধারণা ছিল, যারা দুনিয়ায় প্রচুর পরিমাণ আরাম আয়েশের সামগ্রী লাভ করছে তারা যতই পথভ্রষ্ট ও অসৎকর্মশীল হোক না কেন তারা আল্লাহর প্রিয়। আর অভাবী ও দারিদ্র পীড়িতরা যতই সৎ হোক না কেন তারা আল্লাহর অভিশপ্ত। এ নীতির ভিত্তিতে তারা কুরাইশ সরদারদেরকে নবী (সা) এর গরীব সাথীদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করতো এবং বলতো, আল্লাহর তার সাথে আছেন তোমরা দেখে নাও। এ ব্যাপারে তাদেরকে সতর্ক করে বলা হচ্ছে, রিযিক কমবেশী হবার ব্যাপারটা আল্লাহর অন্য আইনের সাথে সংশ্লিষ্ট। সেখানে অন্যান্য অসংখ্য প্রয়োজন ও কল্যাণ-অকল্যাণের প্রেক্ষিতে কাউকে বেশী ও কাউকে কম দেয়া হয়। এটা এমন কোন মানদণ্ড নয় যার ভিত্তিতে মানুষের নৈতিক ও মানসিক সৌন্দর্য ও কদর্যতার ফায়সালা করা যেতে পারে। মানুষের মধ্যে কে চিন্তা ও কর্মের সঠিক পথ অবলম্বন করেছে এবং কে ভুল পথ, কে উন্নত ও সৎগুণাবলী অর্জন করেছে এবং কে অসৎগুণাবলী-এরি ভিত্তিতে মানুষে মানুষে মর্যাদার মূল পার্থক্য নির্ণীত হয় এবং তাদের সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের আসল মানদণ্ড ও এটিই। কিন্তু মূর্খরা এর পরিবর্তে দেখে, কাকে ধন-দৌলত বেশী এবং কম দেয়া হয়েছে।)
শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা কমবেশী দেওয়ার উপমা : শিরক এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রমাণ :
(১৬:৭১) আর দেখো, আল্লাহ তোমাদের একজনকে আর একজনের ওপর রিযিকের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন৷ তারপর যাদেরকে এ শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে তারা এমন নয় যে নিজেদের রিযিক নিজেদের গোলামদের দিকে ফিরিয়ে দিয়ে থাকে, যাতে উভয় এ রিযিকে সমান অংশীদার হয়ে যায়৷ তাহলে কি এরা শুধু আল্লাহরই অনুগ্রহ মেনে নিতে অস্বীকার করে ?
নবীগণকে একজনের উপর আরেকজনকে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে :
(১৭:৫৫) আমি কতক নবীকে কতক নবীর ওপর মর্যাদা দিয়েছি।
সম্মান জানানো : �(আরো দেখুন : ব > বিনয় ) :
(২০:৬৫) যাদুকররা বললো, �হে মূসা! তুমি নিক্ষেপ করবে, না কি আমরাই আগে নিক্ষেপ করবো?�মূসা বললো, �না তোমরাই নিক্ষেপ করো�৷
( কোন কোন তাফসীরবিদ এর মতে যাদুকরেরা মুসা আ: এর শানে এ সম্মান টুকু জানানোর কারণেই হয়তো আল্লাহ পরবর্তীতে তাদের ঈমান আনার তৌফিক দান করেন) ।�
আনুষ্ঠানিক ইবাদত সমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে :
(হাজ্ব:৩০) এ ছিল (কাবা নির্মাণের উদ্দেশ্য) এবং যে কেউ আল্লাহ প্রতিষ্ঠিত পবিত্র �অনুষ্ঠানগুলোকে সম্মান করবে, তার রবের কাছে এ হবে তারই জন্য ভালো৷
(হাজ্ব:৩২) এ হচ্ছে আসল ব্যাপার (এটি বুঝে নাও), আর যে ব্যক্তি আল্লাহ নির্ধারিত রীতিনীতির প্রতি সম্মান দেখায়, তার সে কাজ তার অন্তরের আল্লাহভীতির পরিচায়ক৷
সংস্কৃতি / সাংস্কৃতি / সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড :
শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মাধ্যমেও মানুষকে ইসলামের পথ থেকে দুরে সরিয়ে রাখার প্রচেষ্টা করা হয়ে থাকে :
(৩১-লোকমান: ৬) আর মানুষদেরই মধ্যে এমনও কেউ আছে, ৫ যে মনোমুগ্ধকর কথা ৬ কিনে আনে লোকদেরকে জ্ঞান ছাড়াই ৭ আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য এবং এ পথের আহ্বানকে হাসি-ঠাট্টা করে উড়িয়ে দেয়৷ ৮ এ ধরনের লোকদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব৷ ৯ ৭) তাকে যখন আমার আয়াত শুনানো হয় তখন সে বড়ই দর্পভরে এমনভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয় যেন সে তা শুনেইনি, যেন তার কান কালা৷ বেশ, সুখবর শুনিয়ে দাও তাকে একটি যন্ত্রণাদায়ক আযাবের৷
(বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ল > লাহওয়াল হাদীস) ।
সমালোচনা :
(২১:৩৬) এ সত্য অস্বীকারকারীরা যখন তোমাকে দেখে, তোমাকে বিদ্রূপের পাত্রে পরিণত করে৷ বলে, �এ কি সেই ব্যক্তি যে তোমাদের দেবদেবীদের সমালোচনা করে ?�� অথচ তাদের (কাফেরদের) নিজেদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা (কাফেররা) করুণাময়ের যিকরের অস্বীকারকারী৷
সতর্কতা :
সব সময়� অনুমান বা সন্দেহ দুষনীয় নয়:
মসজিদের গোপন কক্ষে আল্লাহর ইবাদতে রত একাকিনী একটি মেয়েও রাতের বেলা একজন পুরুষের আগমনে সন্দেহ মুক্ত থাকতে পারেনি, এবং এটাই স্বাভাবিক এবং কাম্য:
�(১৯:১৬) আর(হে মুহাম্মাদ)!এই কিতাবে মারয়ামের অবস্থা বর্ণনা করো৷যখন সে নিজের লোকদের থেকে আলাদা হয়ে পূর্ব দিকে নির্জনবাসী হয়ে গিয়েছিল (১৯:১৭) এবং পর্দা টেনে তাদের থেকে নিজেকে আড়াল করে নিয়েছিল৷এ অবস্থায় আমি তার কাছে নিজের রূহকে অর্থাৎ(ফেরেশতাকে)পাঠালাম এবং সে তার সামনে একটি পূর্ণ মানবিক কায়া নিয়ে হাযির হলো৷ (১৯:১৮) মারয়াম অকস্মাত বলে উঠলো, �তুমি যদি আল্লাহকে ভয় করে থাকো তাহলে আমি তোমার হাত থেকে করুণাময়ের আশ্রয় চাচ্ছি�৷
সতর্ক কারী :
নবীগণ সুষ্পষ্ট সতর্ককারী :
(২৬.শুআরা:১১৫) আমি তো মূলত একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী৷
(বিস্তারিত দেখুন : ন > নবী > নবীগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য)
মুহাম্মদ সা: হেদায়েত দাতা নন, তিনি কেবলমাত্র সতর্ককারী :
(২৭-নমল:৯২) ..... এখন যে হেদায়াত অবলম্বন করবে সে নিজেরই ভালোর জন্য হেদায়েত অলম্বন করবে৷ এবং যে গোমরাহ হবে তাকে বলে দাও আমিতো কেবল মাত্র লোকজন সতর্ককারী৷
�
সত্য� / সত্যবাদিতা / সত্যতা� :
(২৭-নমল:২৭) সুলাইমান বললো: �এখনই আমি দেখছি তুমি সত্য বলছো অথবা মিথ্যাবাদীদের অন্তরভুক্ত৷
(৩৩-আহযাব: ৮) যাতে সত্যবাদীদেরকে (তাদের রব) তাদের সত্যবাদিতা সম্বন্ধে প্রশ্ন করেন১৬এবং কাফেরদের জন্য তো তিনি যন্ত্রণাদায়ক আযাব প্রস্তুত করেই রেখেছেন৷
১৬. অর্থাৎ আল্লাহ্ কেবলমাত্র অংগীকার নিয়েই ক্ষান্ত হননি বরং এ অংগীকার কতটুকু পালন করা হয়েছে সে সম্পর্কে তিনি প্রশ্ন করবেন। তারপর যারা নিষ্ঠা সহকারে আল্লাহর সাথে করা অংগীকার পালন করে থাকবে তারাই অংগীকার পালনকারী গণ্য হবে।
ঈমানের সত্যতার প্রমাণ হলো আল্লাহর পথে জীবনোৎসর্গের জন্য সদা প্রস্তুত থাকা :�
(৩৩-আহযাব: ২৩) ঈমানদারদের মধ্যে এমন লোক আছে যারা আল্লাহর সাথে কৃত অংগীকার পূর্ণ করে দেখালো৷ তাদের কেউ নিজের নজরানা পূর্ণ করেছে এবং কেউ সময় আসার প্রতীক্ষায় আছে৷ ৩৯ তারা তাদের নীতি পরিবর্তন করেনি৷ (২৪) (এসব কিছু হলো এজন্য) যাতে আল্লাহ সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যতার পুরস্কার দেন এবং মুনাফিকদেরকে চাইলে শাস্তি দেন এবং চাইলে তাদের তাওবা কবুল করে নেন৷ অবশ্যই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়৷
৩৯. অর্থাৎ কেউ আল্লাহর পথে প্রাণ উৎসর্গ করে দিয়েছে এবং কেউ তাঁর দীনের খাতিরে নিজের খুনের নজরানা পেশ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে রয়েছে।
মানুষ বড়ই সত্য অস্বীকারকারী :� (আরো দেখুন : ম > মানুষ)
(হাজ্ব:৬৬) ...সত্য বলতে কি, মানুষ বড়ই সত্য অস্বীকারকারী৷
�(১৯:৮৩) তুমি কি দেখো না আমি এ সত্য অস্বীকারকারীদের উপর শয়তানদের ছেড়ে রেখেছি, যারা এদেরকে (সত্য বিরোধিতায়) খুব বেশী করে প্ররোচনা দিচ্ছে? ৮৪) বেশ তাহলে এখন এদের উপর আযাব নাযিল করার জন্য অস্থির হয়ো না, আমি এদের দিন গণনা করেছি৷
(মু�মিনুন:৯০) যা সত্য তা আমি তাদের সামনে এনেছি এবং এরা যে মিথ্যেবাদী এতে কোন সন্দেহ নেই ৷
আল্লাহই সত্য :
(হাজ্ব:৬) এসব কিছু এজন্য যে, আল্লাহ সত্য, ৮ তিনি মৃতদেরকে জীবিত করেন এবং তিনি সব জিনিসের ওপর শক্তিশালী৷
(৮. এ ধারাবাহিক বক্তব্যের মধ্যে এ বাক্যাংশটি তিনটি অর্থ হয়। এক, আল্লাহই সত্য এবং মৃত্যুর পর পুনরায় জীবনদানের কোন সম্ভাবনা নেই, --তোমাদের এ ধারণা ডাহা মিথ্যা। দুই, আল্লাহর অস্তিত্ব নিছক কাল্পনিক নয়। কতিপয় বুদ্ধিবৃত্তিক জটিলতা দূর করার জন্য এ ধারণা গ্রহণ করা হয়নি। তিনি নিছক দার্শনিকদের চিন্তার আবিস্কার, অনিবার্য সত্তার ও সকল কার্যকারণের প্রথম কারণই (First Cause) নয় বরং তিনি প্রকৃত স্বাধীন ক্ষমতা সম্পন্ন কর্তা, যিনি প্রতি মুহূর্তে নিজের শক্তিমত্তা, সংকল্প, জ্ঞান ও কলা-কৌশলের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্ব-জাহান ও এর প্রতিটি বস্তু পরিচালনা করছেন। তিন, তিনি কোন খেলোয়াড় নন যে, নিছক মন ভুলাবার জন্য খেলনা তৈরি করেন এবং তারপর অযথা তা ভেঙে চুরে মাটির সাথে মিশিয়ে দেন। বরং তিনি সত্য তাঁর যাবতীয় কাজ গুরুত্বপূর্ণ, উদ্দেশ্যমূলক ও বিজ্ঞানময়।)
(৩১-লোকমান: ৩০) এ সবকিছু এ কারণে যে, আল্লাহই হচ্ছেন সত্য ৫২ এবং তাকে বাদ দিয়ে অন্য যেসব জিনিসকে এরা ডাকে তা সবই মিথ্যা, ৫৩ আর ( এ কারণে যে, ) আল্লাহই সমুচ্চ ও শ্রেষ্ঠ৷ ৫৪
৫২ . অর্থাৎ প্রকৃত সার্বভৌম ক্ষমতাধর কর্তা , সৃষ্টি ও পরিচালনা ব্যবস্থাপনার আসল ও একচ্ছত্র মালিক।
৫৩ . অর্থাৎ তারা সবাই নিছক তোমাদের কাল্পনিক খোদা। তোমরা কল্পনার জগতে বসে ধারণা করে নিয়েছো যে, অমুকজন আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতার অংশীদার এবং অমুক মহাত্মা সংকট নিরসন ও অভাব মোচন করার ক্ষমতা রাখেন। অথচ প্রকৃতপক্ষে তাদের কেউ কোন কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না।
৫৪ . অর্থাৎ প্রত্যেকটি জিনিসের উর্ধে এবং সবার শ্রেষ্ঠ । তার সামনে সব জিনিসই নিচু। প্রত্যেকের চেয়ে তিনি বড় এবং সবাই তার সামনে ছোট।
বিস্তারিত দেখুন : ক > কুরআন ও বিজ্ঞান > বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে আল্লাহর অস্তিত্ব ও আখিরাতের সত্যতার প্রমাণ ।
(হাজ্ব:৬২) এসব এজন্য যে, আল্লাহই সত্য এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে এরা যাদেরকে ডাকে তারা সবাই মিথ্যা৷
(১৭:১০৫) এ কুরআনকে আমি সত্য সহকারে নাযিল করেছি এবং সত্য সহকারেই এটি নাযিল হয়েছে৷
(১৭:৮১) আর ঘোষণা করে দাও, �সত্য এসে গেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়ে গেছে, মিথ্যার তো বিলুপ্ত হবারই কথা�
(৩৪-সাবা: ৬) হে নবী! জ্ঞানবানরা ভালো করেই জানে, যা কিছু তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে তা পুরোপুরি সত্য।
আহলে কিতাবগণ জেনেশুনে সত্য গোপন করে এবং সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করে :
৩:৭১, ৯৯,
আল্লাহ সর্বদা সত্য বলেন:� বরং আল্লাহ যা বলেন তা-ই হচ্ছে প্রকৃত সত্য :
২:১৪৭,
৩:৫৯, ৯৫,
৪:৭০,
তারপর তারা জিজ্ঞেস করে যে, তুমি যা বলছো তা কি যথার্থই সত্য? বলো, �আমার রবের কসম, এটা যথার্থই সত্য এবং এর (আল্লাহর রাসূল এবং কুরআনকে মেনে না নেবার আযাবের ) �প্রকাশ হবার পথে বাধা দেবার মতো শক্তি তোমাদের নেই�৷ -১০:৫৩,
�আর অপরাধীদের কাছে যতই বিরক্তিকর হোক না কেন আল্লাহ তার ফরমানের সাহায্যে সত্যকে সত্য করেই দেখিয়ে দেন৷-১০:৮২,
(৩৩-আহযাব: ৪)��.আল্লাহ এমন কথা বলেন যা প্রকৃত সত্য।
কোন জাতিকে ধ্বংসের ফায়সালাকে �সত্য� বলা হয়েছে :
(১৫:৬৪) আমরা তোমাকে যথার্থই বলছি, আমরা সত্য সহকারে তোমার কাছে এসেছি৷ ৬৫) কাজেই এখন তুমি কিছু রাত থাকতে নিজের পরিবারবর্গকে নিয়ে বের হয়ে যাও এবং তুমি তাদের পেছনে পেছনে চলো৷ তোমাদের কেউ যেন পেছন ফিরে না তাকায়৷ ব্যাস, সোজা চলে যাও যেদিকে যাবার জন্য তোমাদের হুকুম দেয়া হচ্ছে৷ ৬৬) আর তাকে আমি এ ফায়সালা পৌঁছিয়ে দিলাম যে, সকাল হতে হতেই এদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দেয়া হবে৷
�সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য :
(১৩:১৭) আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন এবং প্রত্যেক নদী-নালা নিজের সাধ্য অনুযায়ী তা নিয়ে প্রবাহিত হয়৷ তারপর যখন প্লাবন আসে তখন ফেনা পানির ওপরে ভাসতে থাকে৷ আর লোকেরা অলংকার ও তৈজসপত্রাদি নির্মাণের জন্য যেসব ধাতু গরম করে তার ওপরও ঠিক এমনি ফেনা ভেসে ওঠে৷ এ উপমার সাহায্যে আল্লাহ হক ও বাতিলের বিষয়টি সুস্পষ্ট করে দেন৷ ফেনারাশি উড়ে যায় এবং যে বস্তুটি মানুষের জন্য উপকারী হয় তা যমীনে থেকে যায়৷ এভাবে আল্লাহ উপমার সাহায্যে নিজের কথা বুঝিয়ে থাকেন৷
ঈমানের দাবীতে কে সত্যবাদী আর কে মিথ্যাবাদী তা আল্লাহ অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখবেন :
(২৯-আনকাবুত: ২) লোকেরা কি মনে করে রেখেছে, �আমরা ঈমান এনেছি� কেবলমাত্র একথাটুকু বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে, আর পরীক্ষা করা হবে না? �৩) অথচ আমি তাদের পূর্ববর্তীদের সবাইকে পরীক্ষা করে নিয়েছি� আল্লাহ অবশ্যই দেখবেন� কে সত্যবাদী এবং কে মিথ্যুক৷
(বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : প > পরীক্ষা)
�সত্য� প্রতিষ্ঠিত ও উদ্ভাসিত হয় আর �মিথ্যা� দূরীভূত ও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় :
(২১:১৬) এ আকাশ ও পৃথিবী এবং এদের মধ্যে যা কিছুই আছে এগুলো আমি খেলাচ্ছলে তৈরি করিনি৷১৭) যদি আমি কোনো খেলনা তৈরি করতে চাইতাম এবং এমনি ধরনের কিছু আমাকে করতে হতো তাহলে নিজেরই কাছ থেকে করে নিতাম৷১৮) কিন্তু আমি তো মিথ্যার ওপর সত্যের আঘাত হানি, যা মিথ্যার মাথা গুঁড়িয়ে দেয় এবং সে দেখতে দেখতে নিশ্চিহ্ন হয়৷ আর তোমাদের জন্য ধ্বংস! যেসব কথা তোমরা তৈরি করো সেগুলোর বদৌলতে৷
আকাশ ও পৃথিবী ��সত্য� এর উপর তথা সত্যতার সাথে সৃষ্টি করা হয়েছে :
বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : আ > আসমান জমীন সত্যতার ভিত্তিতে / সত্যতার উপর সৃষ্টি করা হয়েছে। ক্লিক করুন : আসমান ও জমীন সত্যতার সাথে / সত্যতার উপর সৃষ্টি করা হয়েছে
(১৪:১৯) তুমি কি দেখছো না, আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকে সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছেন ? তিনি চাইলে তোমাদের নিয়ে যান এবং একটি নতুন সৃষ্টি তোমাদের স্থলাভিসিক্ত হয়৷
(১৫:৮৫) আমি পৃথিবী ও আকাশকে এবং তাদের মধ্যকার সকল জিনিসকে সত্য ছাড়া অন্য কিছুর ভিত্তিতে সৃষ্টি করিনি
(১৬:৩)�� তিনি আকাশ ও পৃথিবীকে সত্য সহকারে সৃষ্টি করেছেন৷
(১৭:৮০) আর দোয়া করোঃ হে আমার পরওয়ারদিগার ! আমাকে যেখানেই তুমি নিয়ে যাও সত্যতার সাথে নিয়ে যাও এবং যেখান থেকেই বের করো সত্যতার সাথে বের করো৷
(২৯-আনকাবুত:৪৪) আল্লাহ আসমান ও যমীনকে সত্য-ভিত্তিতে সৃষ্টি করেছেন, ৭৫ প্রকৃতপক্ষে এর মধ্যে একটি নিদর্শন রয়েছে মু�মিনদের জন্য৷
কিয়ামত হচ্ছে �সত্য� :
(২১:৯৭) এবং সত্য ওয়াদা পুরা হবার সময় কাছে এসে যাবে
সত্যকে চিনতে পেরেও ফেরাউন কেন মুসা আ: কে মেনে নেয়নি ?
বিস্তারিত দেখূন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত মূসা: আ: > সত্যকে চিনতে পেরেও ফেরাউন কেন মূসা আ: কে মেনে নেয়নি।
হে নবী নিশ্চয়ই আপনি সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত আছেন :
(২৭-নমল:৭৯) কাজেই হে নবী! আল্লাহর উপর ভরসা করো, নিশ্চয় তুমি সুস্পষ্ট সত্তের উপর প্রতিষ্ঠিত আছ৷
সন্দেহ / সন্দেহ পোষণকারী :� আরো দেখুন : অ > অনুমান, ধ > ধারণা , স >� সতর্কতা
(১৯:৩৪) এ হচ্ছে মারয়ামের পুত্র ঈসা এবং এ হচ্ছে তার সম্পর্কে সত্য কথা, যে ব্যাপারে লোকেরা সন্দেহ করছে৷
(হাজ্ব:৫৫) অস্বীকারকারীরা তো তার পক্ষ থেকে সন্দেহের মধ্যেই পড়ে থাকবে যতক্ষণ না তাদের ওপর কিয়ামত এসে পড়বে অকস্মাত অথবা নাযিল হয়ে যাবে একটি ভাগ্যাহত দিনের শাস্তি৷
এ কুরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত এতে কোন সন্দেহ নেই :
(২-বাক্বারা: ২) এটি আল্লাহর কিতাব, এর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই ৷ ২
২ . এর একটা সরল অর্থ এভাবে করা যায় "নিসন্দেহে এটা আল্লাহর কিতাব । " কিন্তু এর একটা অর্থ এও হতে পারে যে , ওটা এমন একটা কিতাব যাতে সন্দেহের কোন লেশ নেই । দুনিয়ায় যতগুলো গ্রন্থে অতিপ্রাকৃত এবং মানুষের বুদ্ধি-জ্ঞান বহির্ভূত বিষয়বলী নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো সবই কল্পনা, ধারণা ও আন্দাজ �অনুমানের ভিত্তিতে লিখিত হয়েছে । তাই এ গ্রন্থগুলোর লেখকরাও নিজেদের রচনাবলীর নির্ভূলতা সম্পর্কে যতই প্রত্যয় প্রকাশ করুক না কেন তাদের নির্ভুলতা সন্দেহ মুক্ত হতে পারে না। কিন্তু এ কুরআন মজীদ এমন একটি গ্রন্থ যা আগাগোড়া নির্ভূল সত্য জ্ঞানে সমৃদ্ধ । এর রচয়িতা হচ্ছেন এমন এক মহান সত্তা যিনি সমস্ত তত্ব ও সত্যের জ্ঞান রাখেন । কাজেই এর মধ্যে সন্দেহের কোন অবকাশই নেই । মানুষ নিজের অজ্ঞতার কারণে এর মধ্যে সন্দেহ পোষণ করলে সেটা অবশ্য সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র কথা এবং সে জন্য এ কিতাব দায়ী নয় ।
(৩২-আস-সিজদা: ১) আলিফ লাম মীম৷২) এ কিতাবটি রব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ , এতে কোন সন্দেহ নেই৷ (ব্যাখ্যার জন্য দেখুন :� হ > হুরুফে মুকাত্তাআত কি ? ) ১
১ . কুরআন মজীদের অনেকগুলো সূরা এ ধরনের কোন না কোন পরিচিতিমূলক বক্তব্য দিয়ে শুরু হয়েছে। এ বাণী কোথায় থেকে আসছে সূরার শুরুতেই তা জানিয়ে দেয়াই হয় এর উদ্দেশ্য । রেডিও ঘোষক প্রোগ্রাম শুরু করার সূচনাতেই যেমন ঘোষণা করে দেন, আমি অমুক স্টেশন থেকে বলছি , এটা বাহ্যত তেমনি ধরনের একটা ভূমিকাসূচক বক্তব্য। কিন্তু রেডিওর এমনি ধরনের একটা মামুলি ঘোষণার বিপরীতে কুরআন মজীদের কোন সূরার সূচনা যখন এ ধরনের একটা অসাধারণ ঘোষণার মাধ্যমে শুরু হয় , যাতে বলা হয়, এ বাণী আসছে বিশ্ব- জাহানের শাসনকর্তার পক্ষ থেকে তখন এটা শুধমাত্র বাণীর উৎস বর্ণনা করাই হয় না বরং এই সঙ্গে এর মধ্যে শামিল হয়ে যায় একটা বিরাট বড় দাবী, একটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ এবং একটা কঠোর ভীতি প্রদর্শনও। কারণ কথা শুরু করেই সে ঝট করে এত বড় একটা খবর দিয়ে দিচ্ছে যে, এটা মানুষের সামনে এ দাবী স্বীকার করা না করার কোন প্রশ্ন উত্থাপন করে। স্বীকার করলে চিরকালের জন্য তার সামনে আনুগত্যের শির নত করে দিতে হবে, তারপর তার মোকাবিলায় মানুষের আর কোন স্বাধীনতা থাকতে পারে না। আর স্বীকার না করলে নিশ্চিতভাবেই তাকে একটা ভয়াবহ আশঙ্কার মুখোমুখি হতে হবে। অর্থাৎ যদি সত্যিই এটা বিশ্ব-জাহানের প্রভুর বাণী হয়ে থাকে তাহলে একে প্রত্যাখ্যান করার ফল স্বরূপ তাকে চিরন্তন দুভার্গ্যের শিকার হতে হবে। এ জন্য এ ভূমিকাসূচক বাক্যটির শুধুমাত্র নিজের এই প্রকৃতিগত অসাধারণত্বেরই কারণে মানুষকে কান লাগিয়ে চূড়ান্ত মনোনিবেশ সহকারে এ বাণী শোনার এবং একে আল্লাহর বাণী হিসেবে স্বীকার করার বা না করার ফায়সালা করতে বাধ্য করে ।
এ কিতাব রব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে নাযিল করা হয়েছে, শুধুমাত্র এতটুকু কথা বলেই এখানে শেষ করা হয়নি। বরং এর পরেও পূর্ণ জোরেশোরে বলা হয়েছে অর্থাৎ এটা আল্লাহর কিতাব এবং আল্লাহর কাছ থেকে এর অবতীর্ণ হবার ব্যাপারে আদৌ কোন সন্দেহের অবকাশই নেই। এ তাগিদসূচক বাক্যাংশ টিকে যদি কুরআন নাযিলের ঘটনামূলক পটভূমি এবং খোদ কুরআনের নিজের পূর্বাপর বক্তব্যের আলোকে দেখা হয় তাহলে পরিষ্কার অনুভব করা যাবে যে, তার মধ্যে দাবীর সাথে যুক্তি-প্রমাণও নিহিত রয়েছে এবং এ যুক্তি-প্রমাণ মক্কা মু'আযযামার যেসব অধিবাসীর সামনে এ দাবী পেশ করা হচ্ছিল তাদের কাছে গোপন ছিল না। এ কিতাব উপস্থাপনকারীর সমগ্র জীবন তাদের সামনে ছিল। কিতাব উপস্থাপন করার আগেরও এবং পরেরও। তারা জানতো, যিনি এ দাবী সহকারে এ কিতাব পেশ করছেন তিনি আমাদের জাতির সবচেয়ে সত্যাবাদী, দায়িত্বশীল ও সৎ চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তি। তারা এও জানতো যে, নবুওয়াত দাবী করার একদিন আগে পর্যন্তও কেউ তার মুখ থেকে কখনো সেসব কথা শোনেননি যেগুলো নবুওয়াত দাবী করার পরপরই তিনি সহসাই বলতে শুরু করে দিয়েছিলেন। তারা এ কিতাবের ভাষা ও বর্ণনাভঙ্গি এবং মুহাম্মদ (সা) এর ভাষা ও বর্ণনাভঙ্গির মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য দেখতে পেতো। তারা পরিষ্কারভাবে একথাও জানতো যে, একই ব্যক্তি কখনো এত বেশি সুস্পষ্ট পার্থক্য সহকারে দু'টি ভিন্ন স্টাইলের অধিকারী হতে পারে না। তারা এ কিতাবের একান্ত অসাধারণ সাহিত্য অলংকারও দেখছিল এবং আরবী ভাষাভাষি হিসেবে তারা নিজেরাই জানতো যে, তাদের সকল কবি ও সাহিত্যিক এর নজির পেশ করতে অক্ষম হয়েছে। তাদের জাতির কবি, গণক ও বাগ্নীদের বাণী এবং এ বাণীর মধ্যে কত বড় ফারাক রয়েছে এবং এ বাণীর মধ্যে যে পবিত্র-পরিচ্ছন্ন বিষয়বস্তু বর্ণিত হয়েছে কত উন্নতমানের তাও তাদের অজানা ছিল না। তারা এ কিতাব ও এর উপস্থাপকের দাওয়াতের মধ্যে কোথাও দূরবর্তী এমন কোন স্বার্থপরতার সামান্যতম চিহ্নও দেখতে পেতো না যা থেকে কোন মিথ্যা দাবীদারের কথা ও কাজ কখনো মুক্ত হতে পারে না। নবুওয়াতের দাবী করে মুহাম্মদ (সা) নিজের , নিজের পরিবার অথবা নিজের গোত্র ও জাতির জন্য কি অর্জন করতে চাচ্ছিলেন এবং এ কাজের মধ্যে তার নিজের কোন স্বার্থটি নিহিত রয়েছে তা তারা অণুবীক্ষণ যন্ত্র লাগিয়েও চিহ্নিত করতে পারতো না। তারপর এ দাওয়াতের দিকে তার জাতির কেমন ধরনের লোকেরা আকৃষ্ট হয়ে চলছে এবং তার সাথে সম্পৃক্ত তাদের জীবনে কতবড় বিপ্লব সাধিত হচ্ছে তাও তারা দেখছিল। এ সমস্ত বিষয় মিলে মিশে দাবীর স্বপক্ষে যুক্তি হিসেবে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। তাই এ পটভূমিতে একথা বলা একদম যথেষ্ঠ ছিল যে, এ কিতাবের রব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত হওয়াটা সকল প্রকার সন্দেহ- সংশয়ের উর্ধ্বে। এর পাশে আরো কোন যুক্তি বসিয়ে যুক্তির বহর বৃদ্ধি করার কোন প্রয়োজন ছিল না।
মু�মিনদের প্রতি সু-ধারণা রাখা অবশ্য কর্তব্য :
(নূর:১২) যখন তোমরা এটা শুনেছিলে তখনই কেন মু�মিন পুরুষ ও মু�মিন নারীরা নিজেদের সম্পর্কে সুধারণা করেনি এবং কেন বলে দাওনি এটা সুস্পষ্ট মিথ্যা দোষারোপ?
(অর্থাৎ, হযরত আয়শা রা: এর প্রতি মিথ্যা অপবাদের অভিযোগ তথা ইফকের ঘটনা)
কল্পনা :
২:৭৮,
মুশরিকদের দেব দেবতাদের সম্পর্কে মু�মিনদের সন্দেহে নিপতিত হওয়ার কোন অবকাশই নেই :
(১১:১০৯) কাজেই হে নবী! এরা যেসব মাবুদের ইবাদাত কাছে তাদের ব্যাপারে তুমি কোন প্রকার সন্দেহের মধ্যে থেকো না৷ এরা তো (নিছক গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে চলেছে৷) ঠিক তেমনিভাবে পূজা-অর্চনা করে যাচ্ছে যেমন পূর্বে এদের বাপ-দাদারা করতো৷ আর আমি কিছু কাটাছাঁটা না করেই তাদের অংশ তাদেরকে পুরোপুরি দিয়ে দোবো৷
আল্লাহর আযাব আসার ব্যাপারে যাদের সন্দেহ ছিল (বিশ্বাস করতনা), তাদের পরিণাম :
(১৫:৬১) প্রেরিতরা যখন লূতের পরিবারের কাছে পৌঁছুলো ৬২) তখন সে বললো, আপনারা অপরিচিত মনে হচ্ছে৷৬৩) তারা জবাব দিল, না, বরং আমরা তাই এনেছি যার আসার ব্যাপারে এরা সন্দেহ করছিলো৷
(১৫:৬৬) আর তাকে আমি এ ফায়সালা পৌঁছিয়ে দিলাম যে, সকাল হতে হতেই এদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দেয়া হবে৷
(আরো দেখুন: অ > অনুমান)
(১০: ৯৫) কাজেই তুমি সন্দেহকারীদের অন্তরভূক্ত হয়ো না এবং যারা আল্লাহর আয়াতকে মিথ্যা বলেছে তাদের মধ্যেও শামিল হয়ো না, তাহলে তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের দলভুক্ত হবে৷ (কুরআনের সত্যতার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করোনা, কুরআন হচ্ছে মহা সত্য, প্রয়োজনে পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব গুলো পড়ে দেখো),
(১১:৬২) তুমি যে পথের দিকে আমাদের ডাকছো সে ব্যাপারে আমাদের ভীষণ সন্দেহ, যা আমাদের পেরেশানির মধ্যে ফেলে দিয়েছে৷�
সন্দেহ যুক্ত ঈমান :
(৫৭:১৪) তারা ঈমানদারদের ডেকে ডেকে বলবে আমরা কি তোমাদের সাথে ছিলাম না? �ঈমানদাররা জওয়াব দেবে হাঁ, তবে তোমরা নিজেরাই নিজেদেরকে ফিতনার মধ্যে নিক্ষেপ করেছিলে , সুযোগের সন্ধানে ছিলে, সন্দেহে নিপতিত ছিলে এবং মিথ্যা আশা-আকাংখা তোমাদেরকে প্রতারিত করেছিলো৷ শেষ পর্যন্ত আল্লাহর ফায়সালা এসে হাজির হলো এবং শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত সে বড় প্রতারক� আল্লাহর ব্যাপারে প্রতারণা করে চললো৷ (৫৭: ১৫) অতএব, তোমাদের নিকট থেকে আর কোন বিনিময় গ্রহণ করা হবে না৷ আর তাদের নিকট থেকেও গ্রহণ করা হবে না যারা সুস্পষ্টভাবে কুফরীরতে লিপ্ত ছিল৷ তোমাদের ঠিকানা জাহান্নাম ৷ সে (জাহান্নাম) তোমাদের খোঁজ খবর নেবে৷ এটা অত্যন্ত নিকৃষ্ট পরিণতি৷
(১১:১১০) আমি এরা আগে মূসাকেও কিতাব দিয়েছি এবং সে সম্পর্কে মতভেদ করা হয়েছিল (যেমন আজ তোমাদের এই যে কিতাব দেয়া হয়েছে এ সম্পর্কে করা হচ্ছে) ৷যদি তোমার রবের পক্ষ থেকে একটি কথা প্রথমেই স্থির করে না দেয়া হতো তাহলে এ মতভেদকারীদের মধ্যে কবেই ফায়সালা করে দেয়া হয়ে যেতো৷ একথা সত্যি যে, এরা তার ব্যাপারে সন্দেহ ও পেরেশানীর মধ্যে পড়ে রয়েছে৷
যাদের ঈমান সন্দেহ যুক্ত তাদেরকেই ইবলিস ধোকা দেয় :
�(৩৪-সাবা: ২১) তাদের ওপর ইবলিসের কোন কর্তৃত্ব ছিল না৷ কিন্তু যা কিছু হয়েছে যে, আমি দেখতে চাচ্ছিলাম কে পরকাল মান্যকারী এবং কে সে ব্যাপারে সন্ধিহান৷ ৩৬. তোমার রব সব জিনিসের তত্ত্বাবাধায়ক৷
সব সময় সন্দেহ বা অনুমান দুষনীয় নয়: মসজিদের গোপন কক্ষে আল্লাহর ইবাদতে রত একাকিনী একটি মেয়েও রাতের বেলা সুদর্শন পুরুষের আগমনে সন্দেহ মুক্ত থাকতে পারেনি, এবং এটাই স্বাভাবিক এবং কাম্য:
�(১৯:১৬) আর(হে মুহাম্মাদ)!এই কিতাবে মারয়ামের অবস্থা বর্ণনা করো৷যখন সে নিজের লোকদের থেকে আলাদা হয়ে পূর্ব দিকে নির্জনবাসী হয়ে গিয়েছিল (১৯:১৭) এবং পর্দা টেনে তাদের থেকে নিজেকে আড়াল করে নিয়েছিল৷এ অবস্থায় আমি তার কাছে নিজের রূহকে অর্থাৎ(ফেরেশতাকে)পাঠালাম এবং সে তার সামনে একটি পূর্ণ মানবিক কায়া নিয়ে হাযির হলো৷ (১৯:১৮) মারয়াম অকস্মাত বলে উঠলো, �তুমি যদি আল্লাহকে ভয় করে থাকো তাহলে আমি তোমার হাত থেকে করুণাময়ের আশ্রয় চাচ্ছি�৷
সহজ :
(১২:১৮) তারা ইউসূফের জামায় মিথ্যা রক্ত লাগিয়ে নিয়ে এসেছিল৷ একথা শুনে তাদের বাপ বললো, �বরং তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি বড় কাজকে সহজ করে দিয়েছে৷ ঠিক আছে, আমি সবর করবো এবং খুব ভালো করেই সবর করবো৷ তোমরা যে কথা সাজাচ্ছো তার ওপর একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাওয়া যেতে পারে৷
ঈমানদারদের জন্যই আল্লাহর দেয়া আইন কানুন সমূহ সহজ :
(১৮:৮৮) আর তাদের মধ্য থেকে যে ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তার জন্য আছে ভালো প্রতিদান এবং আমরা তাকে সহজ বিধান দেবো৷�
কাজ সহজ করে দেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা :
(২০:২৭)� (হে আল্লাহ)� আমার কাজ আমার জন্য সহজ করে দাও
কুরআনকে বুঝার জন্য সহজ করে নাযিল করা হয়েছে : �
(১৮:৮৮) আর তাদের মধ্য থেকে যে ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তার জন্য আছে ভালো প্রতিদান এবং আমরা তাকে সহজ বিধান দেবো৷�
(১৯:৯৭) বস্তুত হে মুহাম্মাদ! এ বাণীকে আমি সহজ করে তোমার ভাষায় এজন্য নাযিল করেছি যাতে তুমি মুত্তাকীদেরকে সুখবর দিতে ও হঠকারীদেরকে ভয় দেখাতে পারো৷
মুনাফিকদের নামাজ রোজা সহ অন্যান্য সওয়াব সমূহ নষ্ট করে দেওয়া আল্লাহর জন্য সহজ :
(৩৩-আহযাব: ১৯) ��তারা কখনো ঈমান আনেনি, তাই আল্লাহ তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ড ধ্বংস করে দিয়েছেন ৩২ এবং এমনটি করা আল্লাহর জন্য অত্যন্ত সহজ৷৩৩
�(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ক > কর্ম > কর্ম ব্যর্থ কাদের ? )
সংবাদ :
সাংবাদিক / সংবাদকর্মীদের জন্য দিকনির্দেশনা:
(১২:৮১) তোমরা তোমাদের বাপের কাছে ফিরে গিয়ে বলো, �আব্বাজান, আপনার ছেলে চুরি করেছে, আমরা তাকে চুরি করতে দেখিনি, যতটুকু আমরা জেনেছি শুধু ততটুকুই বর্ণনা করছি এবং অদৃশ্যেরই রক্ষণাবেক্ষণ করা তো আমাদের পক্ষে সম্ভবপর ছিল না৷
সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে স্বাক্ষীর তলব :
(১২:৮২) আমরা যে পল্লীতে ছিলাম সেখানকার লোকজনদেরকে জিজ্ঞেস করে দেখুন এবং যে কাফেলার সাথে আমরা ছিলাম তাকে জিজ্ঞেস করে দেখুন, আমরা যা বলছি৷�
গায়েবের সংবাদ : জ্বিন শয়তানেরা কি গায়েবের সংবাদ বলতে পারে?
(১৫:১৭) এবং প্রত্যেক অভিশপ্ত শয়তান থেকে সেগুলোকে সংরক্ষণ করেছি৷ কোনো শয়তান সেখানে অনুপ্রবেশ করতে পারে না৷১৮) তবে আড়ি পেতে বা চুরি করে কিছু শুনতে পারে৷ আর যখন সে চুরি করে শোনার চেষ্টা করে তখন একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা তাকে ধাওয়া করে৷
সংকীর্ণতা� / সংকীর্ণ :
(হাজ্ব:৭৮) .....এবং দীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোনো সংকীর্ণতা আরোপ করেননি৷
(অর্থাৎ পূর্ববর্তী উম্মতদের ফকীহ, ফরিশী ও পাদরীরা তাদের ওপর যেসব অপ্রয়োজনীয় ও অযথা নীতি-নিয়ম চাপিয়ে দিয়েছিল সেগুলো থেকে তোমাদেরকে মুক্ত করে দিয়েছেন। এখানে চিন্তা-গবেষণার ওপর এমন কোন বাধা নিষেধ আরোপ করা হয়নি যা তাত্ত্বিক উন্নয়নে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। আবার বাস্তবে কর্মজীবনেও এমন বিধি নিষেধের পাহাড় দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়নি যা সমাজ ও সংস্কৃতির উন্নয়নের পথ রুদ্ধ করে দেয়। তোমাদেরকে দেয়া হয়েছে একটি সহজ সরল বিশ্বাস ও আইন। এ নিয়ে তোমরা যতদূর এগিয়ে যেতে চাও এগিয়ে যেতে পারো। এখানে যে বিষয়বস্তুটিকে ইতিবাচক ভংগীতে বর্ণনা করা হয়েছে সেটি আবার অন্যত্র উপস্থাপিত হয়েছে নেতিবাচক ভংগীতে। যেমন-
(আরবী)
"এ রসূল তাদেরকে পরিচিত সৎকাজের হুকুম দেয় এবং এমন সব অসৎ কাজ করতে তাদেরকে নিষেধ করেন যেগুলো করতে মানবিক প্রকৃতি অস্বীকার করে আর এমন সব জিনিস তাদের জন্য হালাল করে যেগুলো পাক পবিত্র এবং এমন সব জিনিস হারাম করে যেগুলো নাপাক ও অপবিত্র আর তাদের ওপর থেকে এমন ভারী বোঝা নামিয়ে দেয়, যা তাদের ওপর চাপানো ছিল এবং এমন সব শৃংখল থেকে তাদেরকে মুক্ত করে যেগুলোয় তারা আটকে ছিল।" (আ'রাফঃ১৫৭)
অহংকারী ব্যক্তি আসলে সংকীর্ণমনা :
(৩০-রূম: ৩৬) যখন লোকদের দয়ার স্বাদ আস্বাদন করাই তখন তারা তাতে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে এবং যখন তাদের নিজেদের কৃতকর্মের ফলে তাদের ওপর কোন বিপদ এসে পড়ে তখন সহসা তারা হতাশ হয়ে যেতে থাকে৷ ৫৫
৫৫ . ওপরের আয়াতে মানুষের মূর্খতা ও অজ্ঞতা , এবং তাঁর অকৃতজ্ঞতা ও বিশ্বাসঘাতকতার জন্য তাকে পাকড়াও করা হয়েছিল। এ মানুষের হীন প্রবৃত্তি ও তাঁর সংকীর্ণমনতাঁর জন্য তাকে পাকড়াও করা হয়েছে। এ হীনচেতা কাপুরুষটি যখন দুনিয়ায় কিছু ধন- সম্পদ , শক্তি ও মর্যাদা লাভ করে এবং দেখে তাঁর কাজ খুব ভালোভাবে চলছে তখন এ সবকিছু যে মহান আল্লাহর দান, একথা আর তাঁর একদম মনে থাকে না। তখন সে মনে করতে থাকে তাঁর মধ্যে এমন অসাধারণ কিছু আছে যার ফলে সে এমন কিছু লাভ করেছে যা থেকে অন্যেরা বঞ্চিত হয়েছে। এ বিভ্রান্তির মধ্যে অহংকার ও আত্মগরিমার নেশায় সে এমনই বিভোর হয়ে যায় যার ফলে সে আল্লাহ ও সৃষ্টি কাউকেও ধর্তব্যের মধ্যে গণ্য করে না।কিন্তু যখনই সৌভাগ্য মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে হিম্মত হারিয়ে ফেলে এবং দুর্ভাগ্যের একটিমাত্র আঘাতই তাঁর হৃদয়াবৃত্তি ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। তখন এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, হীনতম কাজ করতেও সে কুণ্ঠিত হয় না, এমন কি শেষ পর্যন্ত সে আত্মহত্যাও করে বসে।
স্বপ্ন :
স্বপ্ন দ্বারা কি শরীয়তের প্রয়োজন পূর্ণ হয় ? স্বপ্ন দ্বারা আদিষ্ট হয়ে কোন ব্যক্তি কি শরীয়তের বিধিবিধান বর্ণনা করতে পারে ?�
(২১:৫) তারা বলে, �বরং এসব বিক্ষিপ্ত স্বপ্ন, বরং এসব তার মনগড়া বরং এ ব্যক্তি কবি৷ নয়তো সে আনুক একটি নিদর্শন যেমন পূর্ববর্তীকালের নবীদেরকে পাঠানো হয়েছিল নিদর্শন সহকারে৷�
(১২:৪) এটা সেই সময়ের কথা, যখন ইউসুফ তার বাপকে বললো : �আব্বাজান! আমি স্বপ্ন দেখেছি, এগারটি তারকা এবং সূর্য ও চাঁদ আমাকে সিজদা করছে৷�
হযরত ইউসুফ আ: এর স্বপ্ন সত্য হওয়ার স্বরূপ :
(১২:১০০) (শহরে প্রবেশ করার পর) সে নিজের বাপ-মাকে উঠিয়ে নিজের পাশে সিংহাসনে বসালো এবং সবাই তার সামনে স্বতস্ফূর্তভাবে সিজদায় ঝুঁকে পড়লো৷ ইউসুফ বললো, �আব্বাজান! আমি ইতিপুর্বে যে স্বপ্ন দেখেছিলাম এ হচ্ছে তার তা�বীর৷ আমার রব তাকে সত্য পরিণত করেছেন ৷ আমার প্রতি তাঁর অনুগ্রহ হিসেবে তিনি আমাকে কারাগার থেকে বের করেছেন এবং আপনাদেরকে মরু অঞ্চল থেকে এনে আমার সাথে মিলিয়ে দিয়েছেন৷ আসলে আমার রব অননুভূত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তাঁর ইচ্ছা পূর্ণ করেন৷ নিসন্দেহে তিনি সবকিছু জানেন ও সুগভীর প্রজ্ঞার অধিকারী৷
ইউসুফ আ: এর সাথে কারাগারে অবস্থানরত দুই ব্যক্তির স্বপ্ন :
(১২:৩৬) কারাগারে তার সাথে আরো দু�টি ভৃত্যও প্রবেশ করলো৷ একদিন তাদের একজন তাকে বললো, �আমি স্বপ্নে দেখেছি আমি মদ তৈরী করছি৷� অন্যজন বললো, �আমি দেখলাম আমার মাথায় রুটি রাখা আছে এবং পাখিরা তা খাচ্ছে৷�
মিশরের বাদশার স্বপ্ন : (ইউসুফ আ:� এর সময়কালীন) :
(১২:৪৩) একদিন বাদশাহ বললো, �আমি স্বপ্ন দেখেছি, সাতটি মোটা গাভীকে সাতটি পাতলা গাভী খেয়ে ফেলছে এবং সাতটি সবুজ শীষ ও সাতটি শুকনো শীষ৷
নিজের স্বপ্নের কথা/বর্ণনা যাকে তাকে বলা উচিৎ নয় :
(১২:৫) জবাবে তার বাপ বললো : �হে পুত্র! তোমার এ স্বপ্ন তোমার ভাইদেরকে শুনাবে না ; শুনালে তারা তোমার ক্ষতি করার জন্য পেছনে লাগবে৷ আসলে শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু ।
(১২:৪৩)হে সভাসদবৃন্দ! আমাকে এ স্বপ্নের তা�বীর বলে দাও, যদি তোমরা স্বপ্নের মানে বুঝে থাকো৷ (১২:৪৪)৪৪) লোকেরা বললা, �এসব তো অর্থহীন স্বপ্ন, আর আমরা এ ধরনের স্বপ্নের মানে জানি না৷�
নিজের স্বপ্নের কথা/বর্ণনা শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য ও জ্ঞানী ব্যক্তিকে বলা উচিৎ� :
(১২:৪) এটা সেই সময়ের কথা, যখন ইউসুফ তার বাপকে বললো : �আব্বাজান! আমি স্বপ্ন দেখেছি, এগারটি তারকা এবং সূর্য ও চাঁদ আমাকে সিজদা করছে৷�
(১২:৩৬) তারা উভয়ে বললো, �আমাদের এর তা�বীর বলে দিন৷ আমরা আপনাকে সৎকর্মশীল হিসেবে পেয়েছি৷�
(১২:৪৫) সেই দু�জন কয়েদীর মধ্য থেকে যে বেঁচে গিয়েছিল এবং দীর্ঘকাল পরে এখন যার মনে পড়েছিল, সে বললো, �আমি আপনাদের এর তা�বীর বলে দিচ্ছি, আমাকে একটু (কারাগারে ইউসুফের কাছে) পাঠিয়ে দিন৷৪৬) সে গিয়ে বললো, �হে সত্যবাদিতার প্রতীক ইউসুফ! আমাকে এ স্বপ্নের অর্থ বলে দাও : সাতটি মোটা গাভীকে সাতটি পাতলা গাভী খেয়ে ফেলছে এবং সাতটি শীষ সবুজ ও সাতটি শীর্ষ শুকনো সম্ভবত আমি লোকদের কাছে ফিরে যেতে পারবো এবং তারা জানতে পারবে৷
রাসুল সা: এর মি�রাজ কি� স্বপ্নে হয়েছিল, নাকি চাক্ষুষ হয়েছিল ?
(১৭:৬০) স্মরণ করো হে মুহাম্মাদ! আমি তোমাকে বলে দিয়েছিলাম, তোমার রব এ লোকদেরকে ঘিরে রেখেছেন৷ আর এই যাকিছু এখনই আমি তোমাকে দেখিয়েছি �একে এবং কুরআনে অভিশপ্ত গাছকে আমি এদের জন্য একটি ফিতনা বানিয়ে রেখে দিয়েছি৷ আমি এদেরকে অনবরত সতর্ক করে যাচ্ছি কিন্তু প্রতিটি সতর্ক সংকেত এদের অবাধ্যতা বাড়িয়ে চলছে৷
(ব্যাখ্যা: এখানে মি'রাজের দিকে ইংগিত করা হয়েছে । তাই এখানে রু'ইয়া শব্দটি ব্যবহৃত হলেও এর মানে এখানে স্বপ্ন নয় বরং এখানে এর মানে হচ্ছে চোখ দেখা । এটা নিছক স্বপ্ন হলে এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফেরদের সামনে এটাকে স্বপ্ন হিসেবেই বর্ণনা করলে এটা তাদের জন্য ফিতনা হবার কোন কারণই ছিল না । একটার চাইতে একটা বেশী অদ্ভুত স্বপ্ন দেখা হয় এবং লোকদের সামনে বর্ণনাও করা হয় কিন্তু তা কখনো কারো জন্য এমন সমস্যা হয়ে দেখা দেয় না যে, লোকেরা এ জন্য যে স্বপ্ন দেখেছে তাকে বিদ্রূপ করতে থেকেছে এবং তার প্রতি মিথ্যাচার ও পাগলপনার অপবাদ দিয়েছে ।)
স্বপ্নের তাবীর বর্ণনা :
হযরত ইয়াকুব আ:এর তাবীর বর্ণনা : (হযরত ইউসুফ আ: এর স্বপ্নের তাবীর) :
(১২:৬) এবং ঠিক এমনটিই হবে (যেমনটি তুমি স্বপ্নে দেখেছো যে,) তোমার রব তোমাকে (তাঁর কাজের জন্য) নির্বাচিত �করবেন এবং তোমাকে কথার মর্মমূলে পৌঁছানো শেখাবেন �আর তোমার প্রতি ও ইয়াকূবের পরিবারের প্রতি তাঁর নিয়ামত ঠিক তেমনিভাবে পূর্ণ করবেন যেমন এর আগে তিনি তোমার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম ও ইসহাকের প্রতি করেছেন৷ নিসন্দেহে তোমার রব সর্বজ্ঞ ও বিজ্ঞানময়৷�
হযরত ইউসুফ আ: এর তাবীর বর্ণনা : (দুই ভৃত্যের স্বপ্রের) :
(১২:৩৭) ইউসুফ বললো : �এখানে তোমরা যে খাবার পাও তা আসার আগেই আমি তোমাদের এ স্বপ্নগুলোর অর্থ বলে দেবো৷
(১২:৪১) হে জেলখানার সাথীরা! তোমাদের স্বপ্নের তা�বীর হচ্ছে, তোমাদের একজন তার নিজের প্রভুকে (মিসর রাজ) মদ পান করাবে আর দ্বিতীয় জনকে শূলবিদ্ধ করা হবে এবং পাখি তার মাথা ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবে৷ তোমরা যে কথা জিজ্ঞেস করছিলে তার ফায়সালা হয়ে গেছে৷
হযরত ইউসুফ আ: এর স্বপ্নের তাবীর বর্ণনা : (মিশরের বাদশার স্বপ্নের) :
(১২:৪৭) ইউসুফ বললো, �তোমরা সাত বছর পর্যন্ত লাগাতার চাষাবাদ করতে থাকবে৷ এ সময় তোমরা যে ফসল কাটবে তা থেকে সামান্য পরিমাণ তোমাদের আহারের প্রয়োজনে বের করে নেবে এবং বাদবাকি সব শীষ সমেত রেখে দেবে৷৪৮) তারপর সাতটি বছর আসছে বড়ই কঠিন৷ এ সময়ের জন্য তোমরা যে শস্য জমা করবে তা সমস্ত এ সময়ে খেয়ে ফেলা হবে৷ যদি কিছু বেঁচে যায় তাহলে তা হবে কেবলমাত্র সেটুকুই যা তোমরা সংরক্ষণ করবে৷৪৯) এরপর আবার এক বছর এমন আসবে যখন রহমতের বৃষ্টি ধারার মাধ্যমে মানুষের আবেদন পূর্ণ করা হবে এবং তারা রস নিংড়াবে৷
নবীগণের স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান নবুওতী জ্ঞান হতে উৎসারিত :
(১২:৩৭)আমার রব আমাকে যা দান করেছেন এ জ্ঞান তারই অন্তরভূক্ত৷আসল ব্যাপার হচ্ছে, যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে না এবং আখেরাত অস্বীকার করে তাদের পথ পরিহার করে৷
স্বর্ণ :
তোমার� স্বর্ণ নির্মিত ঘর থাকবে : নবীর কাছে কাফেরদের মুজেযা দাবী :
(১৭:৯৩) অথবা তোমার জন্য সোনার একটি ঘর তৈরি হবে৷
জান্নাতীদের স্বর্ণ খচিত পোষাক পরিধান করানো হবে :
(১৮:৩১) তাদের জন্য রয়েছে চির বসন্তের জান্নাত, যার পাদদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে নদী, সেখানে তাদেরকে সোনার কাঁকনে সজ্জিত করা হবে, সূক্ষ্ম ও পুরু রেশম ও কিংখাবের সবুজ বস্ত্র পরিধান করবে এবং উপবেশন করবে উঁচু আসনে বালিশে হেলান দিয়ে, চমৎকার পুরস্কার এবং সর্বোত্তম আবাস।
(বিস্তারিত দেখুন: জ > জান্নাত > জান্নাত কেমন� হবে ? )
(হাজ্ব:২৩) (অন্যদিকে) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত হতে থাকবে৷ সেখানে তাদেরকে সোনার কাঁকন ও মুক্তো দিয়ে সাজানো হবে এবং তাদের পোশাক হবে রেশমের৷
স্বাদের ভিন্নতা আল্লাহর দান :
(১৩:৪) রয়েছে আংগুর বাগান, শস্যক্ষেত, খেজুর গাছ- কিছু একাধিক কাণ্ডবিশিষ্ট আবার কিছু এক কাণ্ড বিশিষ্ট, �সবাই সিঞ্চিত একই পানিতে কিন্তু স্বাদের ক্ষেত্রে আমি করে দেই তাদের কোনটাকে বেশী ভালো এবং কোনটাকে কম ভালো৷
স্তন / সন্তানকে� স্তন্যপান করানো :
ধাত্রী প্রথা / স্তন্যপান করানোর জন্য সন্তান অন্য মহিলার নিকট সোপর্দ করা :
দেখুন : দ >দুধ >বুকের দুধ।
বুকের দুধ খাওয়ানোর নিয়ম :
দেখুন : দ >দুধ >বুকের দুধ।
গবাদী পশুর দুধ :
দেখুন : দ >দুধ > গবাদি পশুর মধ্যে দুধের সৃষ্টি।
কিয়ামতের দিনের ভয়বহতায় মা� তার দুধপানরত শিশুকে ভুলে যাবে :
দেখুন : দ >দুধ >বুকের দুধ।
�স্থলাভিষিক্ত করা /পরিবর্তে প্রতিষ্ঠা করা :
এক জাতির পরিবর্তে অন্য জাতি , এক দলের পরিবর্তে অন্য দল প্রতিষ্ঠিত করা :
হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী। (Al-Maaida: 54)
তিনি চাইলে তোমাদের নিয়ে যান এবং একটি নতুন সৃষ্টি তোমাদের স্থলাভিসিক্ত হয়৷ ২০) এমনটি করা তাঁর জন্য মোটেই কঠিন নয়৷� -14:19-20,
পাপের বোঝা : (আরো দেখুন : পরকাল)
একজনের বোঝা আরেকজন বহন করবে না : একজনের শাস্তি অন্যজনকে দেওয়া হবে না :
তবে : কাউকে পথভ্রষ্ট করে থাকলে ঐ ব্যক্তির পাপের বোঝাও বহন করতে হবে : তাই বলে তার পাপ কমবে না:
(১৬:২৫) এসব কথা তারা এজন্য বলছে যে, কিয়ামতের দিন তারা নিজেদের বোঝা পুরোপুরি উঠাবে আবার সাথে সাথে তাদের বোঝাও কিছু উঠাবে যাদেরকে তারা অজ্ঞতার কারণে পথভ্রষ্ট করছে৷ দেখো, কেমন কঠিন দায়িত্ব, যা তারা নিজেদের মাথায় নিয়ে নিচ্ছে৷
সত্যবাদিতা :
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের� অন্তর্ভূক্ত ও সহযোগি হও :৯:১১৯,
সিদ্দিক :
(১৯:৫৬) আর এ কিতাবে ইদরিসের কথা স্মরণ করো৷ সে একজন সত্যনিষ্ঠ মানুষ এবং একজন নবী৷৫৭) আর তাকে আমি উঠিয়েছিলাম উন্নত স্থানে৷
সন্তুষ্টি� / সন্তুষ্ট :
পরকালে আল্লাহর চিরকালীন সন্তুষ্টি পাবে কারা :
যাদের মধ্যে প্রকৃত মু�মিনদের গুণাবলী রয়েছে অর্থাৎ যে সমস্ত প্রকৃত মু�মিনরা জান্নাত লাভ করবে তারাই আল্লাহর চিরকালীন সন্তুষ্টি লাভ করতে পারবে আর এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় সাফল্য : ৯:৭১-৭২,
যারা সবার আগে ঈমানের দাওয়াত গ্রহণ করে অগ্রনী হয়েছে এবং যারা পরে ঈমান গ্রহণ করেছে সেই সমস্ত মুহাজির ও আনসার তাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট :৯:১০০ (عَنْهُ وَرَضُوا عَنْهُمْ اللَّهُ رَّضِيَ) তাদের জন্য রয়েছে চিরকালীন জান্নাত, �
যারা আল্লাহ ভীতি ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উপর নিজের ইমারতের ভীত্তি স্থাপন করলো � ৯:১০৯,
আনসার ও মুহাজিরদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট:
তাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট, এবং তাদের জন্য রয়েছে চিরকালীন জান্নাত :৯:১০০ (عَنْهُ وَرَضُوا عَنْهُمْ اللَّهُ رَّضِيَ) ,
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য নবীর প্রচেষ্টা :
(২০:৮৩) আর কোন জিনিসটি তোমাকে তোমার সম্প্রদায়ের আগে নিয়ে এলো হে মূসা,৮৪) সে বললো, �তারা তো ব্যস আমার পেছনে এসেই যাচ্ছে৷ আমি দ্রুত তোমার সামনে এসে গেছি, হে আমার রব! যাতে তুমি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাও�৷
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ ও নিজে সন্তুষ্ট হওয়ার নিয়ামক হচ্ছে নামাজ
(২০:১৩০) কাজেই হে মুহাম্মাদ! এরা যেসব কথা বলে তাতে সবর করো এবং নিজের রবের প্রশংসা ও গুণকীর্তন সহকারে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো সূর্য উদয়ের আগে ও তার অস্ত যাবার আগে, আর রাত্রিকালেও প্রশংসা ও মহিমা ঘোষণা করো এবং দিনের প্রান্তগুলোতেও৷হয়তো এতে তুমি সন্তুষ্ট হয়ে যাবে৷
(বিস্তারিত দেখুন : ন > নামাজ)
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কি কি করা প্রয়োজন ?
(৩০-রূম: ৩৮) কাজেই (হে মুমিন!) আত্মীয়দেরকে তাদের অধিকার দাও এবং মিসকীন ও মুসাফির কে (দাও তাদের অধিকার)৷ এ পদ্ধতি এমন লোকদের জন্য ভালো যারা চায় আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং তারাই সফলকাম হবে৷ ৫৮
৫৮ . এর দ্বারা একথা বুঝানো হচ্ছে না যে, কেবলমাত্র মিসকীন, মুসাফির ও আত্মীয়-স্বজনদের অধিকার দিয়ে দিলেই সাফল্য লাভ করা যাবে এবং এ ছাড়া সাফল্য লাভ করার জন্য আর কোন জিনিসের প্রয়োজন নেই। বরং এর অর্থ হচ্ছে, যেসব লোক এ অধিকারগুলো জানে না এবং এ অধিকারগুলো প্রদান করে না তারা সাফল্য লাভ করবে না। বরং সাফল্য লাভ করবে এমনসব লোক যারা একান্তভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য অধিকার গুলো জানে এবং এগুলো প্রদান করে।
(৩০-রূম: ৩৯) ...... আর যে যাকাত তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে দিয়ে থাকো, তা প্রদানকারী আসলে নিজের সম্পদ বৃদ্ধি করে৷
�
সফলকাম� / সফলতা �/ সফল / সাফল্য :
সবচেয়ে বড় সফলতা কি ?
পরকালে জান্নাত লাভ করা : ৯:৭২ (যারা প্রকৃত মু�মিন হবে এবং পরকালে আল্লাহর চিরকালীন জান্নাত ও চিরকালীন সন্তুষ্ট লাভ করতে পারবে, এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা),
যারা ঈমান আনে ও আল্লাহকে ভয় করে চলে, তারাই আল্লাহর বন্ধু, দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ আর সুসংবাদ, আর এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য:১০:৬১-৬৪,�
প্রকৃত ব্যাপার এই যে, আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন৷ তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে এবং মারে ও মরে৷ তাদের প্রতি তাওরাত ,ইনজীল ও কুরআনে(জান্নাতের ওয়াদা) আল্লাহর জিম্মায় একটি পাকাপোক্ত ওয়াদা বিশেষ৷ আর আল্লাহর চাইতে বেশী নিজের ওয়াদা পূরণকারী আর কে আছে? কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে যে কেনা-বেচা করছো সে জন্য আনন্দ করো৷ এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য :৯:১১১,
(মু�মিনুন:১১১) আজ তাদের সে সবের ফল আমি এই দিয়েছি যে,�� (যাদের প্রতি বিদ্রুপ করা হয়েছে) �তারাই সফলকাম ৷
সফলতা লাভের অর্থ কি ? সাফল্যের কুরআনিক ধারণা :
(মু�মিনুন:১) নিশ্চিতভাবে সফলকাম হয়েছে মু�মিনরা ।
(মূল শব্দ হচ্ছে 'ফালাহ' । ফালাহ মানে সাফল্য ও সমৃদ্ধি । এটি ক্ষতি, ঘাটতি , লোকসান ও ব্যর্থতার বিপরীত অর্থবোধক শব্দ।যেমন---------- মানে হচ্ছে , অমুক ব্যক্তি সফল হয়েছে, নিজেদের লক্ষে পৌঁছে গেছে, প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ ও সমৃদ্ধিশালী হয়ে গেছে, তার প্রচেষ্টা ফলবতী হয়েছে, তার অবস্থা ভালো হয়ে গেছে।
---------- "নিশ্চিতভাবেই সফলতা লাভ করেছে"। এ শব্দগুলো দিয়ে বাক্য শুরু করার গুঢ় তাৎপর্য বুঝতে হলে যে পরিবেশে এ ভাষণ দেয়া হচ্ছিল তা চোখের সামনে রাখা অপরিহার্য । তখন একদিকে ছিল ইসলামী দাওয়াত বিরোধী সরদারবৃন্দ । তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নতির পর্যায়ে ছিল। তাদের কাছে ছিল প্রচুর ধন-দওলত । বৈষয়িক সমৃদ্ধির যাবতীয় উপাদান তাদের হাতের মুঠোয় ছিল । আর অন্যদিকে ছিল ইসলামী দাওয়াতের অনুসারীরা । তাদের অধিকাংশ তো আগে থেকেই ছিল গরীব ও দুর্দশাগ্রস্ত । কয়েকজনের অবস্থা সচ্ছল থাকলেও অথবা কাজ - কারবারের ক্ষেত্রে তারা আগে থেকেই সফলকাম থাকলেও সর্বব্যাপী বিরোধীতার কারণে তাদের অবস্থাও এখন খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। এ অবস্থায় যখন ''নিশ্চিতভাবেই মু'মিনরা সফলকাম হয়েছে'' বাক্যাংশ দিয়ে বক্তব্য শুরু করা হয়েছে তখন এ থেকে আপনা আপনি এ অর্থ বের হয়ে এসেছে যে, তোমাদের সাফল্য ও ক্ষতির মানদন্ড ভুল, তোমাদের অনুমান ত্রুটিপূর্ণ, তোমাদের দৃষ্টি দূরপ্রসারী নয়, তোমাদের নিজেদের যে সাময়িক ও সীমিত সমৃদ্ধিকে সাফল্য মনে করছো তা আসল সাফল্য নয়, তা হচ্ছে ক্ষতি এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যে অনুসারীদেরকে তোমরা ব্যর্থ ও অসফল মনে করছো তারাই আসলে সফলকাম ও সার্থক । এ সত্যের দাওয়াত গ্রহণ করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বরং তারা এমন জিনিস লাভ করেছে যা তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জায়গায় স্থায়ী সমৃদ্ধি দান করবে। আর ওকে প্রত্যাখান করে তোমরা আসলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর খারাপ পরিণতি তোমরা এখানেও দেখবে এবং দুনিয়ার জীবনকাল শেষ করে পরবর্তী জীবনেও দেখতে থাকবে।)
(৩১-লোকমান:৫) এরাই তাদের রবের পক্ষ থেকে সঠিক পথে রয়েছে এবং এরাই সাফল্য লাভ করবে৷ ৪
৪ . যে সময় এ আয়াত নাযিল হয় তখন মক্কার কাফেররা মনে করতো এবং প্রকাশ্যে বলতো যে, মুহাম্মাদ (সা) এবং তাঁর এ দাওয়াত গ্রহনকারী লোকেরা নিজেদের জীবন ধ্বংস করে চলছে। তাই একেবারে নির্দিষ্ট করে এবং পুরোপুরি জোর দিয়ে বলা হয়েছে, " এরাই সফলকাম হবে॥" অর্থাৎ এরা ধ্বংস হবে না, যেমন বাজে ও উদ্ভট চিন্তার মাধ্যমে তোমরা মনে করে বসেছো। বরং এরাই আসলে সফলকাম হবে এবং যারা এপথ অবলম্বন করতে অস্বীকার করেছে তারাই হবে অকৃতকার্য।
এখানে যে ব্যক্তি সাফল্যকে শুধুমাত্র এ দুনিয়ার চৌহদ্দির মধ্যেই সীমাবদ্ধ এবং তাও আবার বৈষয়িক প্রাচুর্য ও সমৃদ্ধি অর্থে গ্রহণ করবে, কুরআনের প্রকৃত অর্থ অনুধাবন করার ব্যাপারে সেও মারাত্মক ভুল করবে। সাফল্যের কুরআনী ধারণা জানার জন্য নিম্নলিখিত আয়াতগুলো তাফহীমুল কুরআনের ব্যাখ্যা সহকারে গভীরভাবে অধ্যয়ন করা উচিত। আল বাকারা, ২-৫; আল ইমরান, ১০৩, ১৩০ ও ২০০; আল মায়েদাহ, ৩৫ ও ৯০; আল আন'আম, ২১; আল আরাফ, ৭-৮ ও ১৫৭; আত তাওবাহ, ৮৮; ইউনুস, ১৭; আন নাহল, ১১৬; আল হাজ্জ, ৭৭; আল মু'মিনুন, ১ ও ১১৭; আন নূর, ৫১; এবং আর রূম, ৪৮ আয়াত।
সম্পদ ও সন্তানের প্রাচুর্যই কি ভালো অবস্থা ও সাফল্যের� মাপকাঠি ?� তাহলে সাফল্য ও ব্যর্থতার আসল মাপকাঠি কি ?
(মু�মিনুন:৫৪) ----বেশ, তাহলে ছেড়ে দাও তাদেরকে, ডুবে থাকুক নিজেদের গাফিলতির মধ্যে একটি বিশেষ সময় পর্যন্ত৷৫৫) তারা কি মনে করে, আমি যে তাদেরকে অর্থ ও সন্তান দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছি, ৫৬) তা দ্বারা আমি তাদেরকে কল্যাণ দানে তৎপর রয়েছি ? না, আসল ব্যাপার সম্পর্কে তাদের কোন চেতনাই নেই৷৫০ ............৬৪) অবশেষে যখন আমি তাদের বিলাসপ্রিয়দেরকে আযাবের মাধ্যমে পাকড়াও করবো তখন তারা আবার চিৎকার করতে থাকবে৬৫) ---এখন বন্ধ করো � তোমাদের আর্তচিৎকার আমার পক্ষ থেকে এখন কোন সাহায্য দেয়া হবে না ৷৬৬) আমার আয়াত তোমাদের শোনানো হতো, তোমরা তো (রসূলের আওয়াজ শুনতেই ) পিছন ফিরে কেটে পড়তে,৬৭) অহংকারের সাথে তা অগ্রাহ্য করতে, নিজেদের আড্ডায় বসে তার সম্পর্কে গল্প দিতে ও আজেবাজে কথা বলতে ৷
(৫০ . এখানে এসে সূরার সূচনা পর্বের আয়াতগুলোর ওপর আর একবার নজর বুলিয়ে নিন । সে একই বিষয়বস্তুকে আবার অন্যভাবে এখানে বর্ণনা করা হচ্ছে । তারা '' কল্যাণ '', ''ভালো'' ও ''সমৃদ্ধি''র একটি সীমিত বস্তুবাদী ধারণা রাখতো। তাদের মতে, যে ব্যক্তি ভালো খাবার , ভাল পোশাক , ও ভালো ঘর-বাড়ী লাভ করছে , যাকে অর্থ �সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দান করা হয়েছে এবং সমাজে যে খ্যাতি ও প্রভাব � প্রতিপত্তি অর্জন করতে পেরেছে সে সাফল্য লাভ করছে । আর যে ব্যক্তি এসব থেকে বঞ্চিত হয়েছে সে ব্যর্থ হয়ে গেছে । এ মৌলিক বিভ্রান্তির ফলে তারা আবার এর চেয়ে অনেক বড় আর একটি বিভ্রান্তির শিকার হয়েছে । সেটি ছিল এই যে, এ অর্থে যে ব্যক্তি কল্যাণ ও সাফল্য লাভ করেছে সে নিশ্চয়ই সঠিক পথে রয়েছে বরং সে আল্লাহর প্রিয় বান্দা, নয়তো এসব সাফল্য লাভ করা তার পক্ষে কেমন করে সম্ভব হলো। পক্ষান্তরে এ সাফল্য থেকে যাদেরকে আমরা প্রকাশ্যে বঞ্চিত দেখছি তারা নিশ্চয়ই বিশ্বাস ও কর্মের ক্ষেত্রে ভুল পথে রয়েছে এবং তারা খোদা বা খোদাদের গযবের শিকার হয়েছে। এ বিভ্রান্তিটি আসলে বস্তুবাদী দৃষ্টিভংগীর অধিকারী লোকদের ভ্রষ্টতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোর অন্যতম। একে কুরআনের বিভিন্ন স্থানে বর্ণনা করা হয়েছে, বিভিন্ন পদ্ধতিতে একে খণ্ডন করা হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে প্রকৃত সত্য কি তা বলে দেয়া হয়েছে। (দৃষ্টান্ত স্বরূপ দেখুন সূরা আল বাকারাহ, ১২৬ ও ২১২; আল আ'রাফ, ৩২: আত্ তাওবাহ, ৫৫, ৬৯ ও ৮৫;ইউনুস, ১৭; হূদ, ৩, ২৭ থেকে ৩১, ৩৮ ও ৩৯; আর রাআদ, ২৬; আল কাহ্ফ, ২৮, ৩২, থেকে ৪৩ ও ১০৩ থেকে ১০৫; মার্য়াম, ৭৭ থেকে ৮০; ত্বা-হা, ১৩১ ও ১৩২ ও আল আম্বিয়া, ৪৪ আয়াত এবং এই সংগে টীকাগুলো)।
এ ক্ষেত্রে এমন পর্যায়ের কয়েকটি গুরত্বপূর্ণ সত্য রয়েছে যেগুলো ভালোভাবে অনুধাবন না করলে চিন্তা ও মন-মানস কখনোই পরিচ্ছন্ন হতে পারে না।
একঃ '' মানুষের সাফল্য''কে কোন ব্যক্তি , দল বা জাতির নিছক বস্তুবাদী সমৃদ্ধি ও সাময়িক সাফল্য অর্থে গ্রহণ করার চাইতে তা অনেক বেশী ব্যাপক ও উন্নত পর্যায়ের জিনিস।
দুইঃ সাফল্যকে এ সীমিত অর্থে গ্রহণ করার পর যদি তাকেই সত্য ও মিথ্যা এবং ভালো ও মন্দের মানদন্ড গণ্য করা হয় তাহলে তা এমন একটি মৌলিক ভ্রষ্টতায় পরিণত হয় যার মধ্য থেকে বাইরে বের না হওয়া পর্যন্ত কোন মানুষ কখনো বিশ্বাস, চিন্তা, নৈতিকতা ও চারিত্রিক ক্ষেত্রে সঠিক পথ লাভ করতেই পারে না।
তিনঃ দুনিয়াটা আসলে প্রতিদান দেবার জায়গা নয় বরং পরীক্ষাগৃহ। এখানে নৈতিক শাস্তি ও পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকলেও তা বড়ই সীমিত পর্যায়ের ও অসম্পূর্ণ ধরণের এবং তার মধ্যেও পরীক্ষার দিকটি রয়েছে। এ সত্যটি এড়িয়ে গিয়ে একথা মনে করা যে, এখানে যে ব্যক্তি যে নিয়ামতই লাভ করছে তা লাভ করছে ''পুরস্কার'' হিসেবেই এবং সেটি লাভ করা পুরস্কার লাভকারীর সত্য, সৎ ও আল্লাহর প্রিয় হবার প্রমাণ আর যার ওপর যে বিপদও আসছে তা হচ্ছে তার 'শাস্তি'' এবং তা একথাই প্রমাণ করছে যে, শাস্তি লাভকারী মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত, সে অসৎ ও আল্লাহর কাছে অপ্রিয়। আসলে এসব কিছু একটি বিভ্রান্তি বরং নির্বুদ্ধিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। সম্ভবত আমাদের সত্য সম্পর্কিত ধারণা ও নৈতিকতার মানদণ্ডকে বিকৃত করার ক্ষেত্রে এর চেয়ে বড় আর কোন জিনিস নেই। একজন সত্যসন্ধানীকে প্রথম পদক্ষেপেই একথা অনুধাবন করতে হবে যে, এ দুনিয়াটি মূলত একটি পরীক্ষাগৃহ এবং এখানে অসংখ্য বিভিন্ন পদ্ধতিতে ব্যক্তিদের, জাতিদের ও সমগ্র বিশ্বমানবতার পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। এ পরীক্ষার মাঝাখানে লোকেরা যে বিভিন্ন অবস্থার সম্মুখীন হয় সেগুলো পুরস্কার ও শাস্তির শেষ পর্যায় নয়। কাজেই সেগুলোকে মতবাদ, চিন্তাধারা, নৈতিকতা ও কর্মকাণ্ডের সঠিক ও বেঠিক হওয়ার মানদণ্ডে পরিণত করা এবং আল্লাহর কাছে প্রিয় ও অপ্রিয় হবার আলামত গণ্য করা যাবে না।
চারঃ সাফল্যের প্রান্ত নিশ্চিতভাবেই সত্য সৎকর্মের সাথে বাঁধা আছে এবং মিথ্যা ও অসৎকর্মের পরিণাম ক্ষতি এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু এ দুনিয়ায় যেহেতু মিথ্যা ও অসৎকর্মের সাথে সাময়িক ও বাহ্যিক সাফল্য এবং অনুরূপভাবে সত্য ও সৎকর্মের সথে প্রকাশ্য ও সাময়িক ক্ষতি সম্ভবপর আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ জিনিসটি ধোঁকা বলে প্রমাণিত হয়েছে, তাই সত্য-মিথ্যা ও সৎ-অসৎ যাচাই করার জন্য একটি স্থায়ী ও স্বতন্ত্র মানদণ্ডের প্রয়োজন, যার মধ্যে প্রতারণার ভয় থাকবে না। নবীগণের শিক্ষা ও আসমানী কিতাবসমূহ আমাদের এ মানদণ্ড সরবরাহ করে। মানুষের সাধারণ জ্ঞান (Common sense)-এর সঠিক হওয়ার সত্যতা বিধান করে এবং ''মারূফ'' ও ''মুন্কার'' তথা সৎ কাজ ও অসৎকাজ সম্পর্কিত মানব জাতির সম্মিলিত মানসিক চিন্তা-অনভুতি এর সত্যতার সাক্ষ্য দেয়।
পাঁচঃ যখন কোন ব্যক্তি বা জাতি একদিকে সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং ফাসেকী, অশ্লীল কার্যকলাপ, জুলুম ও সীমালংঘন করতে থাকে এবং অন্যদিকে তা ওপর অনুগ্রহ বর্ষিত হতে থাকে তখন বুজতে হবে, বুদ্ধি ও কুরআন উভয় দৃষ্টিতে আল্লাহ তাকে কঠিনতর পরীক্ষার সম্মুখীন করেছেন এবং তার ওপর আল আল্লাহর করুণা নয় বরং তাঁর ক্রোধ চেপে বসেছে। ভুলের কারণে যদি তার ওপর আঘাত আসতো তাহলে এর এই অর্থ হতো যে, আল্লাহ এখনো তার প্রতি অনুগ্রহশীল আছেন, তাকে সতর্ক করছেন এবং সংশোধিত হবার সুযোগ দিচ্ছেন। কিন্তু ভুলের জন্য ''পুরস্কার'' এ অর্থ প্রকাশ করে যে, তাকে কঠিন শাস্তি দেবার ফায়সালা হয়ে গেছে এবং পেট ভরে পানি নিয়ে ডুবে যাওয়ার জন্য তার নৌকাটি ভাসছে। পক্ষান্তরে যেখানে একদিকে থাকে আল্লাহর প্রতি সত্যিকার আনুগত্য, চারিত্রক পবিত্রতা, পরিচ্ছন্ন লেনদেন, আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি সদাচার, দয়া, স্নেহ ও মমতা এবং অন্যদিকে তার প্রতি বিপদ-আপদ ও কাঠিন্যের অবিরাম ধারা বর্ষিত হতে থাকে এবং আঘাতের পর আঘাতে সে হতে থাকে জর্জরিত সেখানে তা আল্লাহর ক্রোধের নয় বরং হয় তাঁর অনুগ্রহেরই আলামত। স্বর্ণকার স্বর্ণকে খুব বেশী উত্তপ্ত করতে থাকে যাতে তা খুব বেশী ঝকঝকে তকতকে হয় যায় এবং দুনিয়াবাসীর সামনে তার পূর্ণনিখাদ হওয়া প্রমাণ হয়ে যায়। দুনিয়ার বাজারে তার দাম না বাড়লে কিছু আসে যায় না। স্বর্ণকার নিজেই তার দাম দেবে। বরং নিজের অনুগ্রহে বেশী দিয়ে দেবে। তার বিপদ-আপদে যদি ক্রোধের দিক থেকে থাকে তাহলে তা তার নিজের জন্য নয় বরং তার শত্রুদের জন্য অথবা যে সমাজে সৎকর্মশীলরআ উৎপীড়িত হয় এবং আল্লাহর নাফরমানরা হয় অনুগৃহীত সে সমাজের জন্য।)
আরো দেখুন : স > সাফল্য ।
ধনসম্পদ ও রিযিক্বের �প্রাচুর্য আল্লাহর প্রিয়পাত্র হবার বা সফলতার মাপকাঠি নয় :
�(২৮-ক্বাছাছ : ৮১) শেষ পর্যন্ত আমি তাকে ও তার গৃহকে ভূগর্ভে পুতে ফেললাম৷ তখন আল্লাহর মোকাবিলায় তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসার মতো সাহায্যকারীদের কোন দল ছিল না এবং সে নিজেও নিজেকে সাহায্য করতে পারলো না৷ ৮২) যারা আগের দিন তার মতো মর্যাদালাভের আকাংখা পোষণ করছিল তারা বলতে লাগলো, "আফসোস, আমরা ভুলে গিয়েছিলাম যে, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা তার রিযিক প্রসারিত করেন এবং যাকে ইচ্ছা তাকে সীমিত রিযিক দেন৷১০১
১০১. অর্থাৎ আল্লাহর পক্ষ থেকে রিযিক প্রসারিত বা সংকুচিত করা যেটাই ঘটুক না কেন তা ঘটে তাঁর ইচ্ছাক্রমেই । এ ইচ্ছার মধ্যে তাঁর ভিন্নতর উদ্দেশ্য সক্রিয় থাকে। কাউকে বেশী রিযিক দেবার অর্থ নিশ্চিত ভাবে এ নয় যে, আল্লাহ তার প্রতি খুবই সন্তুষ্ট তাই তাকে পুরষ্কার দিচ্ছেন। অনেক সময় কোন ব্যক্তি হয় আল্লাহর কাছে বড়ই ঘৃণিত ও অভিশপ্ত কিন্তু তিনি তাকে বিপুল পরিমাণ ধন-দৌলত দিয়ে যেতে থাকেন। এমনকি এ ধন শেষ পর্যন্ত তার উপর আল্লাহর কঠিন আযাব নিয়ে আসে। পক্ষান্তরে যদি কারো রিযিক সংকুচিত হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবে তার এ অর্থ হয় না যে, আল্লাহ তার প্রতি নারাজ হয়ে গেছেন এবং তাকে শাস্তি দিচ্ছেন। অধিকাংশ সৎলোক আল্লাহর প্রিয়পাত্র হওয়া সত্ত্বেও আর্থিক অভাব অনটনের মধ্যে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় এ অভাব অনটন তাঁদের জন্য আল্লাহর রহমতে পরিণত হয়েছে। এ সত্যটি না বোঝার ফলে যারা আসলে আল্লাহর গযবের অধিকারী হয় তাদের সমৃদ্ধিকে মানুষ ঈর্ষার দৃষ্টিতে দেখে।
১০২. "অর্থাৎ আমাদের এ ভুল ধারনা ছিল যে, পার্থিব সমৃদ্ধি ও ধনাঢ্যতাই সফলতা। এ কারনে আমরা মনে করে বসেছিলাম কারূন বড়ই সাফল্য অর্জন করে চলছে। কিন্তু এখন বুঝলাম, আসল সাফল্য অন্য কোন জিনিসের নাম এবং তা কাফেরদের ভাগ্যে জোটে না। কারূনের ঘটনার এ শিক্ষনীয় দিকটি কেবলমাত্র কুরআনেই বর্নিত হয়েছে। বাইবেলে ও তালমূদে এর কোন উল্লেখ নেই। তবে এ দু'টি কিতাবে যে বিস্তারিত বিবরণ এসেছে তা থেকে জানা যায়, বনী ইসরাঈল যখন মিশর থেকে বের হয় তখন এ ব্যক্তিও নিজের দলবল সহ তাদের সাথে বের হয়। তারপর সে হযরত মূসা ও হারূনের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র করে। আড়াইশ' লোক এ ষড়যন্ত্রে তার সাথে শরীক ছিল। শেষ পর্যন্ত তার উপর আল্লাহর গযব নাযিল হয় এবং সে নিজ গৃহ ও ধন-সম্পদসহ মাটির মধ্যে প্রোথিত হয়ে যায়।"
বিস্তারিত দেখুন : ক > কারূন ।
(৩০-রূম: ৩৬) যখন লোকদের দয়ার স্বাদ আস্বাদন করাই তখন তারা তাতে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে এবং যখন তাদের নিজেদের কৃতকর্মের ফলে তাদের ওপর কোন বিপদ এসে পড়ে তখন সহসা তারা হতাশ হয়ে যেতে থাকে৷ ৫৫ ৩৭) এরা কি দেখে না আল্লাহই যাকে চান তাঁর রিযিক সম্প্রসারিত করেন এবং সংকীর্ণ করেন (যাকে চান ? ) অবশ্যই এর মধ্যে রয়েছে বহু নিদর্শনাবলী এমন লোকদের জন্য যারা ঈমান আনে৷
৫৫ . ওপরের আয়াতে মানুষের মূর্খতা ও অজ্ঞতা , এবং তাঁর অকৃতজ্ঞতা ও বিশ্বাসঘাতকতার জন্য তাকে পাকড়াও করা হয়েছিল। এ মানুষের হীন প্রবৃত্তি ও তাঁর সংকীর্ণমনতাঁর জন্য তাকে পাকড়াও করা হয়েছে। এ হীনচেতা কাপুরুষটি যখন দুনিয়ায় কিছু ধন- সম্পদ , শক্তি ও মর্যাদা লাভ করে এবং দেখে তাঁর কাজ খুব ভালোভাবে চলছে তখন এ সবকিছু যে মহান আল্লাহর দান, একথা আর তাঁর একদম মনে থাকে না। তখন সে মনে করতে থাকে তাঁর মধ্যে এমন অসাধারণ কিছু আছে যার ফলে সে এমন কিছু লাভ করেছে যা থেকে অন্যেরা বঞ্চিত হয়েছে। এ বিভ্রান্তির মধ্যে অহংকার ও আত্মগরিমার নেশায় সে এমনই বিভোর হয়ে যায় যার ফলে সে আল্লাহ ও সৃষ্টি কাউকেও ধর্তব্যের মধ্যে গণ্য করে না।কিন্তু যখনই সৌভাগ্য মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে হিম্মত হারিয়ে ফেলে এবং দুর্ভাগ্যের একটিমাত্র আঘাতই তাঁর হৃদয়াবৃত্তি ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। তখন এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, হীনতম কাজ করতেও সে কুণ্ঠিত হয় না, এমন কি শেষ পর্যন্ত সে আত্মহত্যাও করে বসে।
সফলকাম হতে পারবেনা কারা ?
নিসন্দেহে অপরাধী কোনদিন সফলকাম হতে পারে না � ১০:১৭,
(১৮:২০) যদি কোনোক্রমে তারা আমাদের নাগাল পায় তাহলে হয় প্রস্তরাঘাতে হত্যা করবে অথবা আমাদের জোর করে তাদের ধর্মে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে এবং এমন হলে আমরা কখনো সফলকাম হতে পারবো না৷� (হিজরতের গুরুত্ব বুঝানো হয়েছে, বিস্তারিত : গ > গুহাবাসী যুবক)
(মু�মিনুন:১১৭) এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য কোন মাবুদকে ডাকে, যার পক্ষে তার কাছে কোন যুক্তি প্রমাণ নেই, তার হিসেব রয়েছে তার রবের কাছে৷ এ ধরনের কাফের কখনো সফলকাম হতে পারে না ৷
সফলকাম হতে পারবে কারা ?
সফলতা লাভ করার শর্তাবলী :
(২৮-ক্বাছাছ : ৬৭) তবে যে ব্যক্তি আজ তওবা করেছে, ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে সে-ই সাফল্যলাভের আশা করতে পারে৷
(নুর:৫১) মু�মিনদের কাজই হচ্ছে, যখন তাদেরকে আল্লাহ ও রসূলের দিকে ডাকা হয়, যাতে রসূল তাদের মোকদ্দমার ফায়সালা করেন, তখন তারা বলেন, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম৷ এ ধরনের লোকেরাই সফলকাম হবে ৷৫২) আর সফলকাম তারাই যারা আল্লাহ ও রসূলের হুকুম মেনে চলে এবং আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর নাফরমানী করা থেকে দূরে থাকে ৷
(নূর:৩১)... হে মু�মিনগণ! তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর কাছে তাওবা করো, আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে৷
(হাজ্ব:৭৭) হে ঈমানদারগণ! রুকূ� ও সিজদা করো, নিজের রবের বন্দেগী করো এবং নেক কাজ করো, হয়তো তোমাদের ভাগ্যে সফলতা আসবে৷
(মু�মিনুন:১) নিশ্চিতভাবে সফলকাম হয়েছে মু�মিনরা, ২) যারাঃ নিজেদের নামাযে বিনয়াবনত হয়, ৩) বাজে কাজ থেকে দূরে থাকে, ৪) যাকাতের পথে সক্রিয় থাকে, ৫) নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে, ৬) নিজেদের স্ত্রীদের ও অধিকারভুক্ত বাঁদীদের ছাড়া, এদের কাছে (হেফাজত না করলে) তারা তিরষ্কৃত হবে না, ৭) তবে যারা এর বাইরে আরো কিছু চাইবে তারাই হবে সীমালংঘনকারী, ৮) নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, ৯) এবং নিজেদের নামাযগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে, ১০) তারাই এমন ধরনের উত্তরাধিকারী যারা নিজেদের উত্তরাধিকার হিসেবে ফিরদাউস লাভ করবে, ১১) এবং সেখানে তারা থাকবে চিরকাল৷
(মু�মিনুন:৫৭) আসলে কল্যাণের দিকে দৌড়ে যাওয়া ও অগ্রসর হয়ে তা অর্জনকারী লোক� তো তারাই যারা নিজেদের রবের ভয়ে ভীত,৫৮) যারা নিজেদের রবের আয়াতের প্রতি ঈমান আনে,৫৯) যারা নিজেদের রবের সাথে কাউকে শরীক করে না৬০) এবং যাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, যা কিছুই দেয় এমন অবস্থায় দেয় যে, ৬১) তাদের অন্তর এ চিন্তায় কাঁপতে থাকে যে, তাদেরকে তাদের রবের কাছে ফিরে যেতে হবে৷৬২) আমি কোন ব্যক্তির ওপর, তার সাধ্যের বাইরে কোন দায়িত্ব অর্পণ করি না এবং আমার কাছে একটি কিতাব আছে যা (প্রত্যেকের অবস্থা) ঠিকমতো জানিয়ে দেয় আর কোনক্রমেই লোকদের প্রতি জুলুম করা হবে না ৷
(৩০-রূম: ৩৮) কাজেই (হে মুমিন!) আত্মীয়দেরকে তাদের অধিকার দাও এবং মিসকীন ও মুসাফির কে (দাও তাদের অধিকার)৷ এ পদ্ধতি এমন লোকদের জন্য ভালো যারা চায় আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং তারাই সফলকাম হবে৷ ৫৮
৫৮ . এর দ্বারা একথা বুঝানো হচ্ছে না যে, কেবলমাত্র মিসকীন, মুসাফির ও আত্মীয়-স্বজনদের অধিকার দিয়ে দিলেই সাফল্য লাভ করা যাবে এবং এ ছাড়া সাফল্য লাভ করার জন্য আর কোন জিনিসের প্রয়োজন নেই। বরং এর অর্থ হচ্ছে, যেসব লোক এ অধিকারগুলো জানে না এবং এ অধিকারগুলো প্রদান করে না তারা সাফল্য লাভ করবে না। বরং সাফল্য লাভ করবে এমনসব লোক যারা একান্তভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য অধিকার গুলো জানে এবং এগুলো প্রদান করে।
(৩৩-আহযাব:৭১).......যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে সে বড় সাফল্য অর্জন করে৷
ইহকালীন ও পরকালীন সাফল্য সৎকর্মশীল মু�মিনদের জন্যই নির্ধারিত:
(হাজ্ব:৭৭) হে ঈমানদারগণ! রুকূ� ও সিজদা করো, নিজের রবের বন্দেগী করো এবং নেক কাজ করো, হয়তো তোমাদের ভাগ্যে সফলতা আসবে৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৬৭) তবে যে ব্যক্তি আজ তওবা করেছে, ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে সে-ই সাফল্যলাভের আশা করতে পারে৷
(৩১-লোকমান: ৩) ........... অনুগ্রহ সৎকর্মশীলদের জন্য ৪) যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আখেরাতে বিশ্বাস করে৷৫) এরাই তাদের রবের পক্ষ থেকে সঠিক পথে রয়েছে এবং এরাই সাফল্য লাভ করবে৷ ৪
৪ . যে সময় এ আয়াত নাযিল হয় তখন মক্কার কাফেররা মনে করতো এবং প্রকাশ্যে বলতো যে, মুহাম্মাদ (সা) এবং তাঁর এ দাওয়াত গ্রহনকারী লোকেরা নিজেদের জীবন ধ্বংস করে চলছে। তাই একেবারে নির্দিষ্ট করে এবং পুরোপুরি জোর দিয়ে বলা হয়েছে, " এরাই সফলকাম হবে॥" অর্থাৎ এরা ধ্বংস হবে না, যেমন বাজে ও উদ্ভট চিন্তার মাধ্যমে তোমরা মনে করে বসেছো। বরং এরাই আসলে সফলকাম হবে এবং যারা এপথ অবলম্বন করতে অস্বীকার করেছে তারাই হবে অকৃতকার্য।
এখানে যে ব্যক্তি সাফল্যকে শুধুমাত্র এ দুনিয়ার চৌহদ্দির মধ্যেই সীমাবদ্ধ এবং তাও আবার বৈষয়িক প্রাচুর্য ও সমৃদ্ধি অর্থে গ্রহণ করবে, কুরআনের প্রকৃত অর্থ অনুধাবন করার ব্যাপারে সেও মারাত্মক ভুল করবে। সাফল্যের কুরআনী ধারণা জানার জন্য নিম্নলিখিত আয়াতগুলো তাফহীমুল কুরআনের ব্যাখ্যা সহকারে গভীরভাবে অধ্যয়ন করা উচিত। আল বাকারা, ২-৫; আল ইমরান, ১০৩, ১৩০ ও ২০০; আল মায়েদাহ, ৩৫ ও ৯০; আল আন'আম, ২১; আল আরাফ, ৭-৮ ও ১৫৭; আত তাওবাহ, ৮৮; ইউনুস, ১৭; আন নাহল, ১১৬; আল হাজ্জ, ৭৭; আল মু'মিনুন, ১ ও ১১৭; আন নূর, ৫১; এবং আর রূম, ৪৮ আয়াত।
প্রকৃত মু�মিনদের পুরস্কার : তারা সর্বাবস্থায় সফলকাম :
মু�মিনদের বক্তব্য �তোমরা আমাদের ব্যাপারে যে জিনিসের অপেক্ষায় আছো তা দু�টি ভালোর মধ্যে একটি ভালো ছাড়া আর কি ? � � ৯:৫২,
(ব্যাখ্যা : মুনাফিকরা তাদের অভাস অনুযায়ী এ সময়ও কুফর ও ইসলামের সংঘাতে অংশ না নিয়ে নিজেরা চরম বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিচ্ছে বলে মনে করেছিল।এ সংঘাতের পরিণামে রসূল ও তার সাহাবীরা বিজয়ীর বেশে ফিরে আসেন , না রোমীদের সামরিক শক্তির সাথে সংঘর্ষে ছিন্নভিন্ন হয়ে যান, দূরে বসে তারা তা দেখতে চাচ্ছিল। এখানে তাদের প্রত্যাশার জবাব দেয়া হয়েছিল। বলা হয়েছে , দুটি ফলাফলের মধ্যে তোমরা একটির প্রকাশের অপেক্ষা করছো। অথচ ঈমানদারদের জন্য উভয় ফলাফলই যথার্থ ভাল ও কল্যাণ ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা বিজয়ী হলে, এটা যে তাদের জন্য ভাল একথা সবার জানা । কিন্তু নিজেদের উদ্দেশ্য সম্পাদনের পথে প্রাণ দান করে যদি তারা মাটিতে বিলীন হয়ে যায়, তাহলে দুনিয়াবাসীরা তাদের চরম ব্যর্থ বলে মনে করলেও প্রকৃতপক্ষে এটিও আর এক রকমের সাফল্য। কারণ মুমিন একটি দেশ জয় করলো কি করলো না অথবা কোন সরকার প্রতিষ্ঠিত করলো কি না, এটা তার সাফল্য ও ব্যর্থতার মাপকাঠি নয়। বরং মুমিন তার আল্লাহর কালেমা বুলন্দ করার জন্য নিজের মন, মস্তিস্ক ,দেহ ও প্রাণের সমুদয় শক্তি নিয়োজিত করেছে কিনা, এটাই তার মাপকাঠি । এ কাজ যদি সে করে থাকে তাহলে দুনিয়ার বিচারে তার ফলাফল শূণ্য হলেও আসলে সে সফলকাম ) ��
সফলতা লাভ করতে পারবে না কারা ?
১। জালেমরা কখনও সফলকাম হয়না :
(২৮-ক্বাছাছ : ৩৭).......আসলে জালেম কখনো সফলকাম হয় না৷"
২। কাফেররা কখনো সফলকাম হয় না :
(২৮-ক্বাছাছ : ৮২) ..........আফসোস, আমাদের মনে ছিল না, কাফেররা সফলকাম হয় না"
সোনা � রূপা :
যারা সোনারূপা জমা করে রাখে আল্লাহর পথে খরচ করেনা, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও: ৯:৩৪, একদিন এই সোনা রূপা উত্তপ্ত করে তাদের কপালে ও পৃষ্ঠদেশে দাগ দেয়া হবে এবং বলা হবে তোমাদের জমাকৃত সোনারূপার স্বাদ গ্রহণ কর :৯:৩৫।
সমুদ্র / সাগর :
(হাজ্ব:৬৫)তিনিই নৌযানকে নিয়মের অধীন করেছেন যার ফলে তাঁর হুকুমে তা সমুদ্রে বিচরণ করে
(১৮:৬০) (এদেরকে সেই ঘটনাটি একটু শুনিয়ে দাও যা মূসার সাথে ঘটেছিল) যখন মূসা তার খাদেমকে বলেছিল, দুই দরিয়ার সংগমস্থলে না পৌঁছা পর্যন্ত আমি সফর শেষ করবো না, অন্যথায় আমি দীর্ঘকাল ধরে চলতেই থাকবো৷
সমূহকে তোমাদের জন্য বশীভূত করে দিয়েছেন৷-১৪:৩২,
(১৭:৬৬) তোমাদের (আসল) রব তো তিনিই যিনি সমুদ্রে তোমাদের নৌযান পরিচালনা করেন, যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ তালাশ করতে পারো৷
(১৭:৬৯) আর তোমাদের কি এ ধরনের কোনো আশংকা নেই যে, আল্লাহ আবার কোনো সময় তোমাদের সাগরে নিয়ে যাবেন এবং তোমাদের অকৃতজ্ঞতার দরুন তোমাদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ঘূর্ণি পাঠিয়ে তোমাদের ডুবিয়ে দেবেন এবং তোমরা এমন কাউকে পাবে না যে, তাঁর কাছে তোমাদের এ পরিণতির জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে ?
(১৭:৬৮) আচ্ছা, তাহলে তোমরা কি এ ব্যাপারে একেবারেই নির্ভীক যে, আল্লাহ কখনো স্থলদেশেই তোমাদেরকে যমীনের মধ্যে প্রোথিত করে দেবেন না অথবা তোমাদের ওপর পাথর বর্ষণকারী ঘূর্ণি পাঠাবেন না এবং তোমরা তার হাত থেকে বাঁচার জন্য কোনো সহায়ক পাবে না ?
সমুদ্রের পানি যদি কালি হয়, তবুও আল্লাহর কথা শেষ করতে পারবে না :�
(১৮:১০৯) হে মুহাম্মাদ! বলো, যদি আমার রবের কথা লেখার জন্য সমুদ্র কালিতে পরিণত হয় তাহলে সেই সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে কিন্তু আমার রবের কথা শেষ হবে না৷ বরং যদি এ পরিমাণ কালি আবারও আনি তাহলে তাও যথেষ্ট হবে না৷
(৩১-লোকমান: ২৭) পৃথিবীতে যত গাছ আছে তা সবই যদি কলম হয়ে যায় এবং সমুদ্র (দোয়াত হয়ে যায়) , তাকে আরো সাতটি সমুদ্র কালি সরবরাহ করে তবুও আল্লাহর কথা (লেখা) শেষ হবে না৷ ৪৮ অবশ্যই আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও জ্ঞানী৷
৪৮ . "আল্লাহর কথা" মানে তার সৃষ্টিকর্ম এবং তার শক্তি ও জ্ঞানের নিদর্শন। এ বিষয়বস্তুটি সূরা আল কাহফের ১০৯ আয়াতে এর থেকে আরো একটু ভিন্ন ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে এক ব্যক্তি ধারণা করবে, বোধ হয় এ বক্তব্যে বাড়াবাড়ি বা অতিকথন আছে। কিন্তু সামান্য চিন্তা করলে এক ব্যক্তি অনুভব করবে , এর মধ্যে তিল পরিমাণও অতিকথা নেই। এ পৃথিবীর গাছগুলো কেটে যতগুলো কলম তৈরি করা যেতে পারে এবং পৃথিবীর বর্তমান সাগরের পানির সাথে আরো তেমনি সাতটি সাগরের পানিকে কালিতে পরিণত করলে তা দিয়ে আল্লাহর শক্তি, জ্ঞান ও সৃষ্টির কথা লিখে শেষ করা তো দূরের কথা হয়তো পৃথিবীতে যেসব জিনিস আছে সেগুলোর তালিকা তৈরি করাই সম্ভবপর হবে না। শুধুমাত্র এ পৃথিবীতেই যেসব জিনিসের অস্তিত্ব রয়েছে সেগুলোই গণনা করা কঠিন, তার ওপর আবার এই অথৈ মহাবিশ্বের সৃষ্টির বিবরণ লেখার তো কোন প্রশ্নই উঠতে পারে না।
এ বর্ণনা থেকে আসলে এ ধরনের একটি ধারণা দেয়াই উদ্দেশ্য যে, এত বড় বিশ্ব-জাহানকে যে আল্লাহ অস্তিত্ব দান করেছেন এবং আদি থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত এর যাবতীয় আইন্তশৃঙ্খলা ব্যবস্থা পরিচালনা করে চলেছেন তার সার্বভৌম কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে তোমরা যেসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সত্তাকে উপাস্যে পরিণত করে বসেছো তাদের গুরুত্ব ও মর্যাদাই বা কি । এই বিরাট -বিশাল সাম্রাজ্য পরিচালনায় হস্তক্ষেপ করা তো দূরের কথা এর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান এবং নিছক জ্ঞানটুকু পর্যন্ত লাভ করার ক্ষমতা কোন সৃষ্টির নেই। তাহলে কেমন করে এ ধারণা করা যেতে পারে যে, সৃষ্টিকুলেরর মধ্য থেকে কেউ এখানে আল্লাহর সার্বভৌম কর্তৃত্ব ক্ষমতার কোন অংশও লাভ করতে পারে, যার ভিত্তিতে সে ভাগ্য ভাঙা গড়ার ক্ষমতার অধিকারী হয়ে বসে ।
সাগরের লোনা পানি ও মিঠা পানির মধ্যে অদৃশ্য আড় রয়েছে, যা এ দুটিকে পৃথক করে রাখে:
(২৫.ফুরকান:৫৩) আর তিনিই দুই সাগরকে মিলিত করেছেন৷ একটি সুস্বাদু ও মিষ্ট এবং অন্যটি লোনা ও খার৷ আর দু�য়ের মাঝে একটি অন্তরাল রয়েছে, একটি বাধা তাদের একাকার হবার পথে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করে রেখেছে।
(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ক > কুরআন ও বিজ্ঞান )
সমুদ্র তীরের জনপদ :
সমুদ্র তীরের যে জনপদটি শনিবারের বিধান লংঘন করেছিল : ৭:১৬৩, �
(১৬:১৪) তিনিই তোমাদের জন্য সাগরকে করায়ত্ব করে রেখেছেন, যাতে তোমরা তা থেকে তরতাজা গোশত নিয়ে খাও এবং তা থেকে এমন সব সৌন্দর্য সামগ্রী আহরণ করো যা তোমরা অংগের ভূষণরূপে পরিধান করে থাকো৷ তোমরা দেখছো, সমুদ্রের বুক চিরে নৌযান চলাচল করে৷ এসব এজন্য, যাতে তোমরা তোমাদের রবের অনুগ্রহ সন্ধান করতে পারো �এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকো৷
দুই সাগরের মিলনস্থল :
(১৮:৬০) (এদেরকে সেই ঘটনাটি একটু শুনিয়ে দাও যা মূসার সাথে ঘটেছিল) যখন মূসা তার খাদেমকে বলেছিল, দুই দরিয়ার সংগমস্থলে না পৌঁছা পর্যন্ত আমি সফর শেষ করবো না, অন্যথায় আমি দীর্ঘকাল ধরে চলতেই থাকবো৷
সাগরের পানির মধ্যে সুড়ংগ পথ তৈরী :
(১৮:৬১) সে অনুসারে যখন তারা তাদের সংগমস্থলে পৌঁছে গেলো তখন নিজেদের মাছের ব্যাপারে গাফেল হয়ে গেলো এবং সেটি বের হয়ে সুড়ংগের মতো পথ তৈরি করে দরিয়ার মধ্যে চলে গেলো৷
সাগর চিরে রাস্তা হয়ে গেলো :
(২০:৭৭) আমি মূসার কাছে অহী পাঠালাম যে, এবার রাতারাতি আমার বান্দাদের নিয়ে বের হয়ে পড়ো এবং তাদের জন্য সাগরের বুকে শুকনা সড়ক বানিয়ে নাও৷ কেউ তোমাদের পিছু নেয় কিনা সে ব্যাপারে একটুও ভয় করো না৷ এবং (সাগরের সাঝখান দিয়ে পার হতে গিয়ে) শংকিত হয়ো না৷
(২৬.শুআরা:৬৩) আমি মূসাকে ওহীর মাধ্যমে হুকুম দিলাম, "মারো তোমার লাঠি সাগরের বুকে৷" সহসাই সাগর দীর্ণ হয়ে গেল এবং তার প্রত্যেকটি টুকরা হয়ে গেলো এক একটি বিশাল পাহাড়ের মতো৷
(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ম > মু�জিযা > মূসা আ: এর মু�জিযা > লাঠির আঘাতে সাগর দ্বিখন্ডিত হওয়া)
হযরত মূসা আ: এর লাঠির আঘাতে সাগর দ্বিখন্ডিত হয়ে যাওয়ার প্রকৃত স্বরূপ� কি ছিল ?
দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত মূসা আ: এর লাঠির আঘাতে সাগর দ্বিখন্ডিত হয়ে যাওয়ার প্রকৃত স্বরূপ� কি ছিল ?
�
মিথ্যা ইলাহকে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া এবং হযরত মূসা আ: এর শরীয়তে শিরক করার শাস্তি :
(২০:৯৭) মূসা বললো, �বেশ, তুই দুর হয়ে যা, এখন জীবনভর তুই শুধু একথাই বলতে থাকবি, আমাকে ছুঁয়ো না৷ আর তোর জন্য জবাবদিহির একটি সময় নির্ধারিত রয়েছে যা কখনোই তোর থেকে দূরে সরে যাবে না৷ আর দেখ, তোর এই ইলাহর প্রতি, যার পূজায় তুই মত্ত ছিলি, এখন আমরা তাকে জ্বালিয়ে দেবো এবং তার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশগুলো সাগরে ভাসিয়ে দেবো৷
কাফেরদের কর্মের উপমা : গভীর সাগরের বুকে অন্ধকার :
(নূর:৪০) অথবা তার উপমা যেমন একটি গভীর সাগর বুকে অন্ধকার ৷ ওপরে ছেয়ে আছে একটি তরংগ, তার ওপরে আর একটি তরংগ আর তার ওপরে মেঘমালা অন্ধকারের ওপর অন্ধকার আচ্ছন্ন ৷ মানুষ নিজের হাত বের করলে তাও দেখতে পায় না ৷ যাকে আল্লাহ আলো দেন না তার জন্য আর কোন আলো নেই ৷
জমীনে ও সাগরে মানুষের কৃতকর্মের জন্য বিপর্যয় দেখা দেয় :
(৩০-রূম: ৪১) মানুষের কৃতকর্মের দরুন জলে-স্থলে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, যার ফলে তাদেরকে তাদের কিছু কৃতকর্মের স্বাদ আস্বাদন করানো যায়, হয়তো তারা বিরত হবে৷
(বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ব > বিপর্যয় > জমীনে ও সাগরে বিপর্যয় �মানুষের দুই হাতের উপার্জন। )
সমুদ্রে যখন নৌযান জাহাজ ইত্যাদি ডুবতে শুরু করে তখন কট্টর মুশরিকও বুঝে ফেলে আল্লাহ মাত্র একজনই:
�(৩১-লোকমান: ৩১) তুমি কি দেখো না সমুদ্রে নৌযান চলে আল্লাহর অনুগ্রহে , যাতে তিনি তোমাদের দেখাতে পারেন তার কিছু নিদর্শন৷
৫৫ . অর্থাৎ এমন নিদর্শনাবলী দেখাতে চান যা থেকে জানা যায় একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহই সমস্ত ক্ষমতার মালিক। মানুষ যতই বিপুল ক্ষমতাসম্পন্ন ও সমুদ্র যাত্রার উপযোগী জাহাজ নির্মাণ করুক এবং জাহাজ পরিচালনা বিদ্যা ও তার সাথে সম্পর্কিত তথ্য জ্ঞান্তঅভিজ্ঞতায় যতই যতই পারদর্শী হোক না কেন সমুদ্রে তাকে যেসব ভয়ংকর শক্তির সম্মুখীন হতে হয় আল্লাহর অনুগ্রহ ছাড়া সেগুলোর মোকাবিলায় সে একা নিজের দক্ষতা ও কৌশলের ভিত্তিতে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে সফর করতে পারে না। তার অনুগ্রহ দৃষ্টি সরে যাবার সাথে সাথেই মানুষ জানতে পারে তার উপায়-উপকরণ ও কারিগরী পারদর্শিতা কতটা অর্থহীন ও অকেজো । অনুরূপভাবে নিরাপদ ও নিশ্চিত অবস্থায় মানুষ যতই কট্টর নাস্তিক ও মুশরিক হোক না কেন, সমুদ্রে তুফানে যখন তার নৌযান ডুবে যেতে থাকে তখন নাস্তিকও জানতে পারে আল্লাহ আছেন এবং মুশরিকও জেনে ফেলে আল্লাহ মাত্র একজনই।
সুড়ংগ :
দেয়ালের মধ্যে� সুড়ংগ :
(১৮:৯৭) (এ প্রাচীর এমন ছিল যে) ইয়াজুজ ও মাজুজ এটা অতিক্রম করেও আসতে পারতো না এবং এর গায়ে সুড়ংগ কাটাও তাদের জন্য আরো কঠিন ছিল৷
সাগরের পানির মধ্যে সুড়ংগ পথ তৈরী :
(১৮:৬১) সে অনুসারে যখন তারা তাদের সংগমস্থলে পৌঁছে গেলো তখন নিজেদের মাছের ব্যাপারে গাফেল হয়ে গেলো এবং সেটি বের হয়ে সুড়ংগের মতো পথ তৈরি করে দরিয়ার মধ্যে চলে গেলো৷
সুদ :
দ্বীন প্রতিষ্ঠায় ধীরে ধীরে ক্রম অনুসারে সহজ থেকে কঠিন বিভিন্ন ধাপের অনুসরণ :
(৩০-রূম: ৩৯) যে সূদ তোমরা দিয়ে থাকো, যাতে মানুষের সম্পদের সাথে মিশে তা বেড়ে যায়, আল্লাহর কাছে তা বাড়ে না ৷ ৫৯ আর যে যাকাত তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে দিয়ে থাকো, তা প্রদানকারী আসলে নিজের সম্পদ বৃদ্ধি করে৷ ৬০
৫৯ . সুদের প্রতি নিন্দা জ্ঞাপনসূচক এটিই প্রথম আয়াত। এখানে শুধুমাত্র এতটুকু কথা বলা হয়েছে যে, তোমরা তো একথা মনে করে সুদ দিয়ে থাকো যে, যাকে আমি এ অতিরিক্ত সম্পদ দিচ্ছি তাঁর ধন- দৌলত বেড়ে যাবে।কিন্তু আসলে আল্লাহর কাছে সুদের মাধ্যমে ধন- দৌলত বৃদ্ধি হয় না বরং যাকাতের মাধ্যমে বৃদ্ধি হয়। সামনের দিকে এগিয়ে যখন মদিনা তাইয়েবায় সুদ হারাম হবার হুকুম নাযিল করা হয তখন সেখানে অতিরিক্ত একথা বলা হয় ------------------" আল্লাহ সুদকে ক্ষতিগ্রস্ত করেন এবং সাদকাকে বিকশিত করেন।" (পরবর্তী বিধানের জন্য দেখুন সূরা আলে ইমরান , ১৩০ আয়াত এবং আল বাকারাহ ২৭৫ আয়াত থেকে ২৮১ আয়াত।
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণ দু'দলে বিভক্ত হয়ে গেছেন। একদল বলেন, এখানে রিবা শব্দের এমন সুদের কথা বলা হয়নি যাকে শরীয়াতের দৃষ্টিতে হারাম করা হয়েছে বরং এমন ধরনের দান, তোহফা ও হাদিয়াকে সুদ বলা হয়েছে যা গ্রহীতা পরবর্তীকালে ফেরত দেবার সময় তা বর্ধিত আকারে ফেরত দেবে, এরূপ সংকল্প সহকারে দেয়া হয়। অথবা একথা মনে করে দেয়া হয় যে, তা দাতাঁর কোন ভাল কাজে লাগবে অথবা তাঁর আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করা দাতাঁর নিজের জন্য ভালো হবে। এটি ইবনে আব্বাস (রা), মুজাহিদ (রা), দ্বাহহাক (রা), কাতাদাহ, ইকরামাহ, মুহাম্মদ ইবনে কা'ব আল কুরাযী ও শা'বীর উক্তি। আর সম্ভবত তারা এ ব্যাখ্যা এ জন্য করেছেন যে, আয়াতে এ কর্মের ফল হিসেবে কেবলমাত্র এতটুকু বলা হয়েছে যে, আল্লাহর কাছে ব্যাপারটি তাঁর সাথে সংশ্লিষ্ট হতো তাহলে ইতিবাচকভাবে বলা হতো, আল্লাহর দরবারে তাকে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
দ্বিতীয় দলটি বলেন, না, শরীয়াত যে রিবাকে হারাম গণ্য করেছে এখানে তাঁর কথাই বলা হয়েছে। এ মত প্রকাশ করেছেন হযরত হাসান বাসরী ও সুদ্দী এবং আল্লামা আলূসীর মতে আয়াতের বাহ্যিক অর্থ এটিই । কারণ আরবী ভাষায় রিবা শব্দটি এ অর্থেই ব্যবহৃত হয়। মুফাসসির নিশাপুরীও এ ব্যাখ্যাটি গ্রহণ করেছেন।
আমার মতে এ দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটিই সঠিক। কারণ পরিচিত অর্থ পরিত্যাগ করার জন্য ওপরে প্রথম ব্যাখ্যার স্বপক্ষে যে যুক্তি দেখানো হয়েছে তা যথেষ্ঠ নয়। সূরা রুম যে সময় নাযিল হয় সে সময় কুরআন মজীদ সুদ হারাম হওয়ার কথা ঘোষণা করেনি। তাঁর কয়েক বছর পর একথা ঘোষিত হয়। এ জন্য সে পূর্ব থেকেই মন- মানসিকতা তৈরি করার কাজে লিপ্ত হয়। মদের ব্যাপারেও পূর্বে শুধুমাত্র এতটুকু বলা হয়েছিল যে, এটা পবিত্র রিযিক নয় (আন নাহল ,৬৭ আয়াত) তাঁরপর বলা হয়, এর ক্ষতি এর লাভের চেয়ে বেশি। ( আল বাকারাহ ,২১৯) এরপর হুকুম দেয়া হয়, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাযের ধারে কাছে যেয়ো না। (আন নিসা ,৪৩) তাঁরপর এটিকে পুরোপুরি হারাম করার ঘোষণা দেয়া হয়। অনুরূপভাবে এখানে সুদের ব্যাপারেও কেবলমাত্র এতটুকু বলেই থেমে যাওয়া হয়েছে যে, এটা এমন জিনিস নয় যার মাধ্যমে সম্পদ বৃদ্ধি বরং সম্পদ প্রকৃতপক্ষে বৃদ্ধি হয় যাকাতের মাধ্যমে। এরপর চক্রবৃদ্ধি হারে সুদকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে (আল ইমরান, ১৩০ ) এবং সবশেষে সুদকেই চূড়ান্তভাবে হারাম বলে ঘোষণা করা হয়েছে (আল বাকারাহ ,২৭৫)
৬০ . এ বুদ্ধির কোন সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। যে ধরনের ঐকান্তিক সংকল্প, গভীর ত্যাগের অনুভূতি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের প্রবল আকাঙ্ক্ষা সহকারে কোন ব্যক্তি আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয় করবে অনুরূপভাবেই আল্লাহ তাকে বেশি বেশি প্রতিদানও দেবেন। তাই একটি সহীহ হাদীসে বলা হয়েছে, যদি কোন ব্যক্তি আল্লাহর পথে একটি খেজুরও দান করে তাহলে আল্লাহ তাকে বাড়িয়ে ওহোদ পাহাড়ের সমান করে দেন।
(আলে ইমরান : ১৩০) হে ঈমানদারগণ ! এ চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খাওয়া বন্ধ করো৯৮ এবং আল্লাহকে ভয় করো, আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে ৷
৯৮ . ওহোদ যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের একটা বড় কারণ এই ছিল যে, ঠিক বিজয়ের মুহূর্তেই ধন-সম্পদের লোভ তাঁদের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে বসে এবং নিজেদের কাজে পূর্ণরূপে শেষ করার পরিবর্তে তারা গনীমাতের মাল লুট করতে শুরু করে দেন। তাই মহাজ্ঞানী আল্লাহ এই অবস্থার সংশোধনের জন্য অর্থশিপ্সার উৎস মুখে বাঁধ বাঁধা অপরিহার্য গণ্য করেছেন এবং সুদ খাওয়া পরিহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই সুদের ব্যবসায়ে মানুষ দিন-রাত কেবল নিজের লাভ ও লাভ বৃদ্ধির হিসেবেই ব্যস্ত থাকে এবং এই কারণে মানুষের মধ্যে অর্থ লালসা ব্যাপক ও সীমাহীন হারে বেড়ে যেতে থাকে।
(বাক্বারা : ২৭৫) কিন্তু যারা সুদ খায় ৩১৫ তাদের অবস্থা হয় ঠিক সেই লোকটির মতো যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল করে দিয়েছে৷ ৩১৬ তাদের এই অবস্থায় উপনীত হবার কারণ হচ্ছে এই যে, তারা বলেঃ � ব্যবসা তো সুদেরই মতো ৷� ৩১৭ অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করে দিয়েছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম ৷ ৩১৮ কাজেই যে ব্যক্তির কাছে তার রবের পক্ষ থেকে এই নসীহত পৌছে যায় এবং ভবিষ্যতে সুদখোরী থেকে সে বিরত হয়, সে ক্ষেত্রে যা কিছু সে খেয়েছে তাতো খেয়ে ফেলেছেই এবং এ ব্যাপারটি আল্লাহর কাছে সোপর্দ হয়ে গেছে ৷ ৩১৯ আর এই নির্দেশের পরও যে ব্যক্তি আবার এই কাজ করে , সে জাহান্নামের অধিবাসী ৷ সেখানে সে থাকবে চিরকাল ৷২৭৬) আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দানকে বর্ধিত ও বিকশিত করেন ৷ ৩২০ আর আল্লাহ অকৃতজ্ঞ দুষ্কৃতকারীকে পছন্দ করেন না ৷ ৩২১
৩১৫ . মূল শব্দটি হচ্ছে 'রিবা'। আরবী ভাষায় এর অর্থ বৃদ্ধি। পারিভাষিক অর্থে আরবরা এ শব্দটি ব্যবহার করে এমন এক বর্ধিত অংকের অর্থের জন্য, যা ঋণদাতা ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে একটি স্থিরীকৃত হার অনুযায়ী মূল অর্থের বাইরে আদায় করে থাকে। আমাদের ভাষায় একেই বলা হয় সুদ। কুরআন নাযিলের সময় যেসব ধরনের সুদী লেনদেনের প্রচলন ছিল সেগুলোকে নিম্নোক্তভাবে উপস্থাপন করা যায়। যেমন, এক ব্যক্তি অন্য এক ব্যক্তির হাতের কোন জিনিস বিক্রি করতো এবং দাম আদায়ের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে দিতো। সময়সীমা অতিক্রম করার পর যদি দাম আদায় না হতো, তাহলে তাকে আবার বাড়তি সময় দিতো এবং দাম বাড়িয়ে দিতো। অথবা যেমন, একজন অন্য একজনকে ঋণ দিত। ঋণদাতার সাথে চুক্তি হতো, উমুক সময়ের মধ্যে আসল থেকে এই পরিমাণ অর্থ বেশী দিতে হবে। অথবা যেমন, ঋণদাতা ও ঋনগ্রহীতার মধ্যে একটি বিশেষ সময়সীমার জন্য একটি বিশেষ হার স্থিরিকৃত হয়ে যেতো। ঐ সময়সীমার মধ্যে বর্ধিত অর্থসহ আসল অর্থ আদায় না হলে আগের থেকে বর্ধিত হারে অতিরিক্ত সময় দেয়া হত। এই ধরনের লেনদেনর ব্যাপারে এখানে বর্ণনা করা হয়েছে।
৩১৬ . আরবরা পাগল ও দেওয়ানাকে বলতো, 'মজনূন' (অর্থাৎ জিন বা প্রেতগ্রস্ত)। কোন ব্যক্তি পাগল হয়ে গেছে, একথা বলার প্রয়োজন দেখা দিলে দ্বারা বলতো, উমুককে জিনে ধরেছে। এই প্রবাদটি ব্যবহার করে কুরআন সুদখোরকে এমন এক ব্যক্তির সাথে তুলনা করেছে যার বুদ্ধিভ্রষ্ট হয়ে গেছে। অর্থাৎ বুদ্ধিভ্রষ্ট ব্যক্তি যেমন ভারসাম্যহীন কথা বলতে ও কাজ করতে শুরু করে, অনুরূপভাবে সুদখোরও টাকার পেছনে পাগলের মতো ছুটো ভারসাম্যহীন কথা ও কাজের মহড়া দেয়। নিজের স্বার্থপর মনোবৃত্তির চাপে পাগলের মতো সে কোন কিছুরই পরোয়া করে না। তার সুদখোরীর কারণে কোন্ কোন্ পর্যায় মানবিক প্রেম-প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব ও সহানুভূতির শিকড় কেটে গেলো, সামষ্টিক কল্যানের ওপর কোন ধরণের ধ্বংসকর প্রভাব পড়লো এবং কতগুলো লেকের দুরবস্থার বিনিময়ে সে নিজের প্রাচুর্যের ব্যবস্থা করলো-এসব বিষয়ে তার কোন মাথা ব্যাথাই থাকে না। দুনিয়াতে তার এই পাগলপারা অবস্থা। আর যেহেতু মানুষকে আখেরাতের সেই অবস্থায় ওঠানো হবে যে অবস্থায় সে এই দুনিয়ায় মারা গিয়েছিলেন, তাই কিয়ামতের দিন সুদখোর ব্যক্তি একজন পাগল ও বুদ্ধিভ্রষ্ট লোকের চেহারায় আত্মপ্রকাশ করবে।
৩১৭ . অর্থাৎ তাদের মতবাদের গলদ হচ্ছে এই যে, ব্যবসায়ে যে মুলধন খাটানো হয়, তার ওপর যে মুনাফা আসে সেই মুনাফালব্ধ অর্থ ও সুদের মধ্যে তারা কোন পার্থক্য করে না। এই উভয় অর্থকে একই পর্যায়ভূক্ত মনে করে তারা যুক্তি পেশ করে থাকে যে, ব্যবসায়ে খাটানো অর্থের মুনাফা যখন বৈধ তখন এই ঋণবাবদ প্রদত্ত অর্থের মুনাফা অবৈধ হবে কেন৷ বর্তমান যুগের সুদখোররাও সুদের স্বপক্ষে এই একই যুক্তি পেশ করে থাকে। তারা বলে, এক ব্যক্তি যে অর্থ থেকে লাভবান হতে পারতো, তাকে সে ঋণ বাবদ দ্বিতীয় ব্যক্তির হাতে তুলে দিচ্ছে। আর ঐ দ্বিতীয় ব্যক্তি নিসন্দেহে তা থেকে লাভবানই হচ্ছে। তাহলে এ ক্ষেত্রে ঋণদাতার যে অর্থ থেকে ঋণগ্রহীতা লাভবান হচ্ছে তার একটি অংশ সে ঋণদাতাকে দেবে না কেন৷ কিন্তু তারা একথাটি চিন্তা করে না যে, দুনিয়ায় যত ধরনের কারবার আছে, ব্যবাসায়,বাণিজ্য, শিল্প, কারিগরী, কৃষি- যাই হোক না কেন, যেখানে মানুষে কেবলমাত্র শ্রম খাটায় অথবা শ্রম ও অর্থ উভয়টিই খাটায়, সেখানে কোন একটি কারবার্ এমন নেই যাতে মানুষকে ক্ষতির ঝুঁকি (Risk) নিতে হয় না। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ মুনাফা বাবদ অর্জিত হবার গ্যারান্টিও কোথাও থাকে না। তাহলে সারা দৃনিয়ার সমস্ত ব্যবসায় সংগঠনের মধ্যে একমাত্র ঋণদাতা পুঁজিপতি বা কেন ক্ষতির ঝুঁকিমুক্ত থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মুনাফা লাভের হকদার হবে। অলাভজনক উদ্দেশ্য ঋণ গ্রহণ করার বিষয়টি কিছুক্ষণের জন্য না হয় দুরে সরিয়ে রাখুন এবং সুদের হারের কম বেশীর বিষয়টিও স্থগিত রাখুন। লাভজনক ও উৎপাদনশীল ঋণের ব্যাপারেই আসা যাক এবং হারও ধরা যাক কম। প্রশ্ন হচ্ছে, যারা রাতদিন নিজেদের কারবারে সময়, শ্রম, যোগ্যতা ও পুঁজি খাটিয়ে চলছে এবং যাদের প্রচেষ্টা ও সাধনার ওপরই এই কারবার ফলপ্রসূ হওয়া নির্ভর করছে তাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট অংকের মুনাফা হাসিল করতে থাকবে, এটি কোন্ ধরনের বুদ্ধিসম্মত ও যুক্তিসংগত কথা, ন্যায়, ইনসাফ ও অর্থনীতির কোন্ মানদণ্ডের বিচারে একে ন্যায়সংগত বলা যেতে পারে। আবার এক ব্যক্তি একজন কারখানাদারকে বিশ বছরের জন্য একটি নির্দিষ্ট অংকের অর্থ ঋণ দিল এবং ঋণ দেয়ার সময়ই সেখানে স্থিরিকৃত হলো যে, আজ থেকেই সে বছরের শতকরা পাঁচ টাকা হিসেবে নিজের মুনাফা গ্রহনের অধিকারী হবে। অথচ কেউ জানে না, এই কারখানা যে পণ্য উৎপাদন করছে আগামী বিশ বছরে বাজারে তার দামের মধ্যে কি পরিমাণ ওঠানামা হবে৷ ও এই এ পদ্ধতি কেমন করে সঠিক হতে পারে৷ একটি জাতির সকল শ্রেণী একটি যুদ্ধে বিপদ, ক্ষতি ও ত্যাগ স্বীকার করবে কিন্তু সমগ্র জাতির মধ্যে একমাত্র ঋণদাতা পুঁজিপতি গোষ্ঠীই তাদের জাতিকে প্রদত্ত যুদ্ধঋণের সুদ উসূল করতে থাকবে শত শত বছর পরও, এটাকে কেমন করে সঠিক ও ন্যায়সংগত বলা যেতে পারে৷
৩১৮ . ব্যবসা ও সুদের মধ্যে নীতিগত পার্থক্য রয়েছে। এই পার্থক্যের কারণে উভয়ের অর্থনৈতিক ও নৈতিক মর্যাদা একই পর্যায়ভুক্ত হতে পারে না। এই পার্থক্য নিম্নরূপঃ
(ক) ব্যবসায়ে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে মুনাফার সমান বিনিময় হয়। কারণ বিক্রেতার কাছ থেকে একটি পণ্য কিনে ক্রেতা তা থেকে মুনাফা অর্জন করে। অন্যদিকে ক্রেতার জন্য ঐ পণ্যটি যোগাড় করার ব্যাপারে বিক্রেতা নিজের যে বুদ্ধি শ্রম ও সময় ব্যয় করেছিল তার মূল্য গ্রহন করে । বিপরীতপক্ষে সুদী লেনদেনের ব্যাপারে মুনাফার সমান বিনিময় হয় না। সুদ গ্রহণকারী অর্থের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্রহণ করে। এটি তার জন্য নিশ্চিতভাবে লাভজনক। কিন্তু অন্যদিকে সুদ প্রদানকারী কেবলমাত্র 'সময়' লাভ করে, যার লাভজনক হওয়া নিশ্চিত নয়। নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যয় করার জন্য যদি সে ঐ ঋণ বাবদ অর্থ গ্রহণ করে থাকে, তাহলে নিসন্দেহে বলা যায়, ঐ 'সময়' তার জন্য যেমন লাভ আনবে তেমনি ক্ষতিও আনবে, দু'টোরই সম্ভাবনা সমান। কাজেই সুদের ব্যাপারটির ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয় একটি দলের লাভ ও অন্য দলের লোকসানের ওপর অথবা একটি দলের নিশ্চিত ও নির্ধারিত লাভ ও অন্য দলের অনিশ্চিত ও অনির্ধারিত লাভের ওপর।
(খ) ব্যবসায়ে বিক্রেতা ক্রেতার কাছ থেকে যত বেশী লাভ গ্রহণ করুক না কেন, সে মাত্র একবারই তা গ্রহণ করে। কিন্তু সুদের ক্ষেত্রে অর্থ প্রদানকারী নিজের অর্থের জন্য অনবরত মুনাফা নিতে থাকে। আবার সময়ের গতির সাথে সাথে তার মুনাফাও বেড়ে যেতে থাকে। ঋণগ্রহীতা তার অর্থ থেকে যতই লাভবান হোক না কেন তা একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আবদ্ধ থাকে। কিন্তু ঋণদাতা এই লাভ থেকে যে মুনাফা অর্জন করে তার কোন সীমা নেই। এমনও হতে পারে, সে ঋণগ্রহীতার সমস্ত উপার্জন, তার সমস্ত অর্থনৈতিক উপকরণ এমনকি তার পরনের কাপড়-চোপড় ও ঘরের বাসন-কোসনও উদরস্থ করে ফেলতে পারে এবং এরপরও তার দাবী অপূর্ণ থেকে যাবে।
(গ) ব্যবসায়ে পণ্যের সাথে তার মূল্যের বিনিময় হবার সাথে সাথেই লেনদেন শেষ হয়ে যায়। এরপর ক্রেতাকে আর কোন জিনিস বিক্রেতার হাতে ফেরত দিতে হয় না। গৃহ, জমি বা মালপত্রের ভাড়ার ব্যাপারে আসল যে বস্তুটি যার ব্যবহারের জন্য মূল্য দিতে হয়, তা ব্যয়িত হয় না বরং অবিকৃত থাকে এবং
৩১৯ . একথা বলা হয়নি যে, যা কিছু সে খেয়ে ফেলেছে, আল্লাহ তা মাফ করে দেবেন। বরং বলা হচ্ছে তার ব্যাপারটি আল্লাহর হাতে থাকছে। এই বাক্য থেকে জানা যায়, ''যা কিছু সে খেয়েছে তাতো খেয়ে ফেলেছেই'' বাক্যের অর্থ এ নয় যে, যা কিছু ইতিপূর্বে খেয়ে ফেলেছে তা মাফ করে দেয়া হয়েছে বরং এখানে শুধুমাত্র আইনগত সুবিধের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ ইতিপূর্বে যে সুদ সে খেয়ে ফেলেছে আইনগতভাবে তা ফেরত দেয়ার দাবী করা হবে না। কারণ তা ফেরত দেয়ার দাবী করা হলে মামলা-মোকদ্দামার এমন একটা ধারাবাহিকতা চক্র শুরু হযে যাবে যা আর শেষ হবে না। তবে সুদী কারবারে মাধ্যমে যে ব্যক্তি অর্থ-সম্পদ সংগ্রহ করেছে নৈতিক দিক দিয়ে তার অপবিত্রতা পূর্ববহ প্রতিষ্ঠিত থাকবে। যদি তার মনে যথার্থাই আল্লাহর ভীতি স্থান লাভ করে থাকে এবং ইসলাম গ্রহণ করার পর তার অর্থনৈতিক ও নৈতিক দৃষ্টিভংগি যদি সত্যিই পরিবর্তিত হয়ে গিয়ে থাকে,তাহলে, সে নিজেই এই হারাম পথে উপার্জিত ধন-সম্পদ নিজের জন্য ব্যয়করা থেকে বিরত থাকবে এবং যাদের অর্থ-সম্পদ তার কাছে আছে তাদের সন্ধান লাভ করার জন্য নিজস্ব পর্যায়ে যথাসাথ্য প্রচেষ্ট চালাতে থাকবে। হকদারদের সন্ধান পাবার পর তাদের হক ফিরিয়ে দেবে। আর যেসব হকদারের সন্ধান পাবে না তাদের সম্পদগুলো সমাজসেবা ও জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করার ব্যবস্থা করবে। এই কার্যক্রম তাকে আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচাতে সাহায্য করবে। তবে যে ব্যক্তি তার পূর্বেকার সুদলব্ধ অর্থ যথারীতি ভোগ করতে থাকে, সে যদি তার এই হারাম খাওয়ার শাস্তি লাভ করেই যায়, তাহলে তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই।
.
৩২০ . এই আয়াতে এমন একটি অকাট্য সত্যের ঘোষণা দেয়া হয়েছে, যা নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে যেমন সত্য তেমনি অর্থনৈতিক ও তামাদ্দুনিক দিক দিয়েও সত্য। যদিও আপাতদৃষ্টিতে দেখা যায়, সুদের মাধ্যমে অর্থ বৃদ্ধি হচ্ছে এবং দান-খয়রাতের মাধ্যমে অর্থ-সম্পদ কমে যাচ্ছে তবুও আসল ব্যাপার এর সম্পূর্ণ বিপরীত । আল্লাহর প্রাকৃতিক বিধান হচ্ছে এই যে, সুদ নৈতিক, আধ্যাত্মিক, অর্থনৈতিক ও তামাদ্দুনিক উন্নতির কেবল প্রতিবন্ধকতাই নয় বরং অবনতির সহায়ক । বিপরীতপক্ষে দান-খয়রাতের (করযা-ই-হাসানা বা উত্তম ঋণ) মাধ্যমে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বৃত্তি এবং তামাদ্দুন ও অর্থনীতি সবকিছুই উন্নতি ও বিকাশ লাভ করে।
নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে বিচার করলে একথা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, সুদ আসলে স্বার্থপরতা, কৃপণতা, সংকীর্ণতা, নির্মমতা ইত্যাকার অসৎ গুনাবলীর ফল এবং এই গুণগুলোই সে মানুষের মধ্যে বিকশিত করে। অন্যদিকে দানশীলতা, সহানুভূতি, উদারতা ও মহানুভবতা ইত্যাকার গুণাবলীই দান-খয়রাতের জন্ম দেয় এবং দান-খয়রাতের মাধ্যমে আর নিয়মিত দান-খয়রাত করতে থাকলে এই গুণগুলো মানুষের মধ্যে লালিত ও বিকশিত হতেও থাকে। এমন কে আছে যে, এই উভয় ধরনের নৈতিক গুণাবলীর মধ্য থেকে প্রথমগুলোকে নিকৃষ্ট ও শেষেরগুলোকে উৎকৃষ্ট বলবে না ৷
তামাদ্দুনিক দিক দিয়ে বিচার করলে প্রত্যেক ব্যক্তি নিসন্দেহে একথা বুঝতে সক্ষম হবে যে, যে সমাজের লোকেরা পরস্পরের সাথে স্বার্থবাদী আচরণ করে, নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ ও লাভ ছাড়া নিস্বার্থভাবে অন্যের কোন কাজ করে না, একজনের প্রয়োজন ও অভাবকে অন্যজন নিজের মুনাফা লুণ্ঠনের সুযোগ মনে করে তা থেকে পুরোপুরি লাভবান হয় এবং ধনীদের স্বার্থ সাধারণ মানুষের স্বার্থের বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে, সে সমাজ কখনো শক্তিশালী হতে পারে না । সে সমাজের লোকদের মধ্যে পারস্পারিক প্রীতির সম্পর্কের পরিবর্তে হিংসা, বিদ্বেষ, নিষ্ঠুরতা ও অনাগ্রহ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে । আর বিভিন্ন অংশ হামেশা বিশৃংখলা ও নৈরাজ্যের দিকে এগিয়ে যাবে। অন্যান্য কারণগুলো যদি এই অবস্থার সহায়ক হয়ে দাঁড়ায় তাহলে এহেন সমাজের বিভিন্ন অংশের পরস্পরের সাথে সংঘাতে লিপ্ত হয়ে যাওয়াটাও মোটেই কঠিন ব্যাপার নয়। অন্যদিকে যে সমাজের সামষ্টিক ব্যবস্থাপনা পরস্পরের প্রতি সাহায্য �সহানুভূতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত যার সদস্যরা পরস্পরের সাথে ঔদার্যপূর্ণ আচরণ করে, যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তি অন্যের প্রয়োজন ও অভাবের সময় আন্তরিকতার সাথে ও প্রশস্তমনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় এবং একজন সামর্থ ও সক্ষম ব্যক্তি তার একজন অক্ষম ও অসমর্থ ভাইকে সাহায্য অথবা কমপক্ষে ন্যায়সংগত সহায়তার নীতি অবলম্বন করে, সেখানে স্বাভাবিকভাবেই পারস্পারিক প্রীতি, কল্যাণাকাংখা ও আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে । এ ধরনের সমাজে অংশগুলো একটি অন্যটির সাথে সংযুক্ত ও সম্পর্কিত থাকবে। সেখানে আভ্যন্তরীণ কোন্দল, বিরোধ ও সংঘাত মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার কোন সুযোগই পাবে না। পারস্পারিক শুভেচ্ছা ও সাহায্য সহযোগীতার কারণে সেখানে উন্নিতর গতিধারা প্রথম ধরনের সমাজের তুলনায় অনেক বেশী দ্রুত হবে।
এবার অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বিচার করা যাক । অর্থনৈতিক বিচারে সুদী লেনদেন দুই ধরনের হয়। এক, অভাবীরা নিজেদের ব্যক্তিগত ব্যয়ভার বহন করার জন্য বাধ্য হয়ে যে ঋণ গ্রহণ করে। দুই, পেশাদার লোকেরা নিজেদের ব্যবসায় �বাণিজ্য, শিল্প, কারিগরী, কৃষি ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করার জন্য যে ঋণ গ্রহণ করে । এর মধ্যে প্রথম ধরনের ঋণটি সম্পর্কে সবাই জানে, এর ওপর সুদ আদায় করার পদ্ধতি মারাত্মক ধ্বংসকর। দুনিয়ায় এমন কোন দেশ নেই যেখানে মহাজনরা ও মহাজনী সংস্থাগুলো এই পদ্ধতিতে গরীব , শ্রমিক, মজুর ,কৃষক ও স্বল্প আয়ের লোকদের রক্ত চুষে চলছে না। সুদের কারণে এই ধরণের ঋণ আদায় করা তাদের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন বরং অনেক সময় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তারপর এক ঋণ আদায় করার জন্য দ্বিতীয় ঋণ এবং তারপর তৃতীয় ঋণ, এভাবে ঋণের পর ঋণ নিতে থাকে । ঋণের মূল অংকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশী সুদ আদায় করার পরও মূল অংক যেখানকার সেখানেই থেকে যায়। শ্রমিকদের আয়ের বৃহত্তম অংশ মহাজনের পেটে যায়। তার নিজের মাথা ঘাম পায়ে ফেলে উপার্জিত অর্থ দিনান্তে তার নিজের ও সন্তান-পরিজনদের পেটের আহার যোগাতে সক্ষম হয় না। এ অবস্থায় কাজের প্রতি শ্রমিক ও কর্মচারীদের আগ্রহ ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে এবং একদিন তা শূণ্যে পর্যায়ে এসে দাঁড়ায়। কারণ তাদের মেহনতের ফল যদি অন্যেরা নিয়ে যেতে থাকে , তাহলে তারা কোনদিন মন দিয়ে ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে পারে না। তারপর সুদী ঋণের জালে আবদ্ধ লোকরা সর্বক্ষন এমন দুর্ভাবনা ও পেরেশানির মধ্যে জীবন কাটায় এবং অভাবের কারণে তাদের জন্য সঠিক খাদ্য ও চিকিৎসা এমনই দুর্লভ হয়ে পড়ে, যার ফলে তাদের স্বাস্থ্য কখনো ভালো থাকে না। প্রায়ই তারা রোগ-পীড়ায় জর্জরিত থাকে। এভাবে সুদী ঋনের নীট ফল এই দাঁড়ায়ঃ গুটিকয় লোক লাখো লোকের রক্ত চুষে মোটা হতে থাকে কিন্তু সামগ্রিকভাবে সমগ্র জাতির অর্থ উৎপাদন সম্ভাব্য পরিমাণ থেকে অনেক কমে যায়। পরিনামে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ত চোষোরাও নিষ্কৃতি পায় না। কারণ তাদের স্বার্থগৃধ্নুতায় সাধারণ দরিদ্র শ্রেণীকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। ধনিক সমাজের বিরুদ্ধে তাদের মনে ক্ষোভ, ঘৃণা ও ক্রোধ লালিত হতে থাকে। তারপর একদিন কোন বিপ্লবের তরংগাভিঘাতে ক্ষোভের আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ ঘটে। তখন এই জালেম ধনিক সমাজকে তাদের অর্থ-সম্পদের সাথে সাথে প্রাণ সম্পদও বিসর্জন দিতে হয়।
আর দ্বিতীয় ধরনের সুদী ঋণ সম্পর্কে বলা যায, ব্যবসায় খাটাবার জন্য একটি নির্দিষ্ট সুদের হারে এই ঋণ গ্রহণকরার ফলে যে অসংখ্য ক্ষতি হয় তার মধ্যে উল্লেখ্য কয়েকটি এখানে বিবৃত করছি।
একঃ যে কাজটি প্রচলিত সুদের হারের সমান লাভ উৎপাদনের সক্ষম নয়, তা দেশ ও জাতির জন্য যতই প্রয়োজনীয় ও উপকারী হোক না কেন,তাতে খাটাবার জন্য অর্থ পাওয়া যায় না। আবার দেশের সমস্ত অর্থনৈতিক উপকরণ একযোগে এমন সব কাজের দিকে দৌড়ে আসে, যেগুলো বাজারে প্রচলিত সুদের হারের সমান বা তার চাইতে বেশী উৎপাদন করতে পারে, সামগ্রিক দিয়ে তাদের প্রয়োজন বা উপকারী ক্ষমতা অনেক কম অথবা একবারে শূন্যের কোঠায় থাকলেও।
দুইঃ ব্যবসায়, শিল্প বা কৃষি সংক্রান্ত যেসব কাজের জন্য সুদে টাকা পাওয়া যায়, তাদের কোন একটিতেও এ ধরনের কোন গ্যারান্টি নেই যে,সবসময় সব অবস্থায় তার মুনাফা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ যেন শতকরা পাঁচ, ছয় বা দশ অথবা তার ওপরে থাকবে এবং এর নীচে কখনো নামবে না। মুনাফার এই হারের গ্যারান্টি তো দূরের থাক সেখানে অবশ্যি মুনাফা হবে, কখনো লোকসান হবে না, এর কোন নিশ্চয়তা নেই। কাজেই যে ব্যবসায়ে এমন ধরনের পূঁজি খাটানো হয় যাতে পূঁজিপতিকে একটি নির্ধারিত হার অনুযায়ী মুনাফা দেয়ার নিশ্চয়তা দান করা হয়ে তাকে, তা কখনো ক্ষতি ও আশংকা মুক্ত হতে পারে না।
তিনঃ যেহেতু মুল ঋণদাতা ব্যবসায়ের লাভ লোকসানে অংশীদার হয় না, কেবলমাত্র মুনাফার অংশীদার হয় এবং তাও আবার একটি নির্দিষ্ট হারে মুনাফার নিশ্চয়তা দেয়ার ভিত্তিতে মূলধন দেয়, তাই ব্যবসায়ের ভালো-মন্দের ব্যাপারে তার কোন আগ্রহ থাকে না। সে চরম স্বার্থপরতা সহকারে কেবলমাত্র নিজের মুনাফার ওপর নজর রাখে। যখনই বাজারে সামান্য মন্দাভাব দেখা দেয়ার আশংকা হয় তখনই সে সবার আগে নিজের টাকাটা টেনে নেয়ার চিন্তা করে। এভাবে কখনো কখনো নিছক তার স্বার্থপরতা সুলভ আশংকার কারণে সত্যি সত্যিই বাজারে মন্দাভাব সৃষ্টি হয়। কখনো অন্য কোন কারণে বাজারে মন্দাভাব সৃষ্টি হয়ে গেলে পুঁজিপতির স্বার্থপরতা তাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়ে চুড়ান্ত ধ্বংসের সূচনা করে।
সুদের এ তিনটি ক্ষতি অত্যন্ত সুস্পষ্ট। অর্থনীতির সাথে সমান্যতম সম্পর্ক রাখে এমন কোন ব্যক্তি এগুলো অস্বীকার করতে পারবেন না। এরপর একথা মেনে নেয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই যে, যথার্থই সুদ অর্থনৈতিক সম্পদ বাড়ায় না বরং কমায়।
এবার দান-খয়রাতের অর্থনৈতিক প্রভাব ও ফলাফলের কথায় আসা যাক। সমাজের সচ্ছল লোকেরা যদি নিজেদের অবস্থা ও মর্যাদা অনুসারে নিসংকোচে নিজের ও নিজের পরিবার পরিজনদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নেয় এরপর তাদের কাছে যে পরিমণ টাকা উদ্ধৃত্ত থাকে তা গরীবদের মধ্যে বিলি করে দেয়,যাতে তারাও নিজেদের প্রয়োজনের জিনিসপত্র কিনতে পারে, তারপরও যে টাকা বাড়তি থেকে যায় তা ব্যবসায়ীদের বিনা সুদে ঋণ দেয় অথবা অংশীদারী নীতির ভিত্তিতে তাদের সাথে লাভ লোকসানের শরীক হয়ে যায় অথবা সমাজ ও সমষ্টির সেবায় বিনিয়োগ করার জন্য সরকারের হাতে সোপর্দ করে দেয়, তাহলে এহেন সমাজে শিল্প, বাণিজ্য, কৃষি ইত্যাদি চরম উন্নতি লাভ করবে, সমাজের সাধারণ লোকদের সচ্ছলতা বেড়ে যেতে থাকবে এবং সুদী অর্থ ব্যবস্থা ভিত্তিক সমাজের তুলনায় সেখানে সামগ্রিকভাবে অর্থ উৎপাদান কয়েকগুণ বেড়ে যাবে, একথা যে কেউ সামান্য চিন্তা-ভাবনা করলে সহজেই বুঝতে পারবে।
৩২১ . অর্থ বন্টনের ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি তার মৌলিক প্রয়োজনের চাইতে বেশী অংশ পেয়েছে একমাত্র সেই ব্যক্তিই সুদে টাকা খাটাতে পারে। কোন ব্যক্তি তার প্রয়োজের অতিরিক্ত এই যে অংশটা পায় কুরআনের পরিভাষায় একে বলা হয় আল্লাহর দান। আর আল্লাহর এই দানের জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পদ্ধতি হচ্ছে এই যে, আল্লাহ যেভাবে তাঁর বান্দাকে দান করেছেন বান্দাও ঠিক সেভাবে আল্লাহর অন্য বান্দাদেরকে তা দান করবে। যদি সে এমনটি না করে বরং এর বিপরীতপক্ষে আল্লাহর এই দানকে এমনভাবে ব্যবহার করে যার ফলে অর্থ বন্টনের ক্ষেত্রে আল্লাহর যেসব বান্দা প্রয়োজনের কম অংশ পেয়েছে তাদের এই কম অংশ থেকেও নিজের অর্থের জোরে এক একটি অংশ নিজের দিকে টেনে নিতে থাকে, তাহলে আসলে সে এক দিকে যেমন হবে অকৃতজ্ঞ তেমনি অন্য দিকে হবে জালেম, নিষ্ঠুর, শোষক ও দুশ্চরিত্র।
সম্পর্ক :
(১৩:২১) তাদের নীতি হয়, আল্লাহ যেসব সম্পর্ক ও বন্ধন অক্ষণ্ন রাখার হুকুম দিয়েছেন৷ সেগুলো তারা অক্ষুণ্ন রাখে, নিজেদের রবকে ভয় করে এবং তাদের থেকে কড়া হিসেব না নেয়া হয় এই ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকে৷
(১৩:২৫)--আল্লাহ যেসব সম্পর্ক জোড়া দেবার হুকুম দিয়েছেন সেগুলো ছিন্ন করে --তারা লানতের অধিকারী ।
আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে হলে নামাজ পড়তে হবে ও যাকাত আদায় করতে হবে :
(হাজ্ব:৭৮) ..কাজেই নামায কায়েম করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যাও৷
(অথবা অন্য কথায় মজবুতভাবে আল্লাহকে আঁকড়ে ধরো। পথ নির্দেশনা ও জীবন যাপনের বিধান তাঁর কাছ থেকেই নাও। তাঁরই আনুগত্য করো। তাঁকেই ভয় করো। আশা-আকাংখা তাঁরই সাথে বিজড়িত করো। সাহায্যের জন্য তাঁরই কাছে হাত পাতো। তাঁরই সত্তার ওপর নির্ভর করে তাওয়াক্কুল ও আস্থার বুনিয়াদ গড়ে তোলো।)
পারস্পারিক সম্পর্কের ভিত্তি যখন মূর্তি :
(২৯-আনকাবুত:২৫) আর সে বললো ,� � তোমরা দুনিয়ার জীবনের তো আল্লাহকে বাদ দিয়ে মূর্তিগুলোকে নিজেদের মধ্যে প্রীতি- ভালোবাসার মাধ্যমে পরিণত করে নিয়েছো৷ ৪২ কিন্তু কিয়ামতের দিন তোমরা পরস্পরকে অস্বীকার এবং পরস্পরের প্রতি অভিসম্পাত করবে ৪৩ আর আগুন তোমাদের আবাস হবে এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী হবে না৷�
৪২ . অর্থাৎ তোমরা আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের পরিবর্তে মূর্তিপূজার ভিত্তিতে নিজেদের সামাজিক জীবন গড়ে তুলেছো। এ ব্যবস্থা দুনিয়ার জীবনের সীমানা পর্যন্ত তোমাদের জাতীয় সত্ত্বাকে একত্র করে রাখতে পারে। কারণ এখানে সত্য-মিথ্যা নির্বিশেষে যে কোন আকীদার ভিত্তিতে লোকেরা একত্র হতে পারে। আর যত বড় মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর আকীদার ভিত্তিতেই যে কোন ঐক্য ও সমাজ গড়ে উঠুক না কেন তা পারস্পরিক বন্ধত্ব, আত্মীয়তা , ভ্রাতৃত্ব ও অন্যান্য সকল ধর্মীয়, সামাজিক, তামাদ্দুনিক , অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার মাধ্যম হতে পারে।
৪৩ . অর্থাৎ মিথ্যা আকীদার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত তোমাদের এ সামাজিক কাঠামোর আখেরাতে প্রতিষ্ঠিত থাকতে পারে না। সেখানে পারস্পরিক প্রীতি-ভালোবাসা , সহযোগিতা, আত্মীয়তা এবং আকীদা-বিশ্বাস ও কামনা-বাসনার কেবলমাত্র এমন ধরনের সম্পর্ক বজায় থাকতে পারে যা দুনিয়ায় এক আল্লাহর বন্দেগী এবং সৎকর্মশীলতা ও আল্লাহভীতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়। কুফরী ও শিরক এবং ভুল পথ ও কুপথের সাথে জড়িত যাবতীয় সম্পর্ক সেখানে ছিন্ন হয়ে যাবে। সকল ভালোবাসা শত্রুতায় পরিণত হবে। সমস্ত শ্রদ্ধা-ভক্তি ঘৃণায় রুপান্তরিত হবে। পিতা-পুত্র, স্বামী-স্ত্রী, পীর-মুরীদ পর্যন্ত একে অন্যেও ওপর লানত বর্ষণ করবে এবং প্রত্যেকে নিজের গোমরাহীর দায়-দায়িত্ব অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে বলবে, এই জালেম আমাকে ধ্বংস করেছে, কাজেই একে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হোক। একথা কুরআনের বিভিন্ন স্থানে বলা হয়েছে। যেমন সূরা যুখরুফে বলা হয়েছেঃ
----------------
"বন্ধুরা সেদিন পরস্পরের শত্রু হয়ে যাবে, মুত্তাকীরা ছাড়া।"
সূরা আ'রাফে বলা হয়েছেঃ
------------------
"প্রত্যেকটি দল যখন জাহান্নামে প্রবেশ করবে তখন তার কাছের দলের প্রতি লানত বর্ষণ করতে করতে প্রবেশ করবে, এমনকি শেষ পর্যন্ত যখন সবাই সেখানে একত্র হয়ে যাবে তখন প্রত্যেক পরবর্তী দল পূর্ববর্তী দলের পক্ষে বলবেঃ হে আমাদের রব! এ লোকেরাই আমাদের পথভ্রষ্ট করে , কাজেই এদেরকে দ্বিগুণ আগুনের শাস্তি দিন।" (আয়াতঃ৩৮)
সূরা আহযাবে বলা হয়েছেঃ
---------------
"আর তারা বলবে , হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের সরদারদেরও বড়দের আনুগত্য করেছি এবং তারা আমাদের বিপথগামী করেছে। হে আমাদের রব! তুমি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দাও এবং তাদের ওপর বড় রকমের লানত বর্ষণ করো। "
মু�মিনদের পারস্পরিক সম্পর্ক :
(৩৩-আহযাব: ৬) ��..কিন্তু আল্লাহর কিতাবের দৃষ্টিতে সাধারণ মু�মিন ও মুহাজিরদের তুলনায় আত্মীয়রা পরস্পরের বেশি হকদার৷ তবে নিজেদের বন্ধুবান্ধবদের সাথে কোন সদ্ব্যবহার (করতে চাইলে তা) তোমরা করতে পারো৷১৪ আল্লাহর কিতাবে এ বিধান লেখা আছে৷
১৪. এ আয়াতে বলা হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে তো মুসলমানদের সম্পর্কের ধরন ছিল সবকিছু থেকে আলাদা। কিন্তু সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এমন নীতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হবে যার ফলে আত্বীয়দের অধিকার পরস্পরের ওপর সাধারণ লোকদের তুলনায় অগ্রগণ্য হয়। নিজের মা -বাপ, সন্তান - সন্ততি ও ভাইবোনদের প্রয়োজন পূর্ণ না করে বাইরে দান -খয়রাত করে বেড়ালে তা সঠিক গণ্য হবে না। যাকাতের মাধ্যমে প্রথমে নিজের গরীব আত্বীয় স্বজনদেরকে সাহায্য করতে হবে এবং তারপর অন্যান্য হকদারকে দিতে হবে। মীরাস অপরিহার্যভাবে তারাই লাভ করবে যারা হবে মৃত ব্যক্তির নিকটতম আত্মীয়। অন্যদেরকে সে চাইলে (জীবিতাবস্থায়) হেবা, ওয়াকফ বা অসিয়াতের মাধ্যমে নিজের সম্পদ দান করতে পারে। কিন্তু এও ওয়ারিসদেরকে বঞ্চিত করে সে সবকিছু অন্যদেরকে দিয়ে যেতে পারে না। হিজরাতের পর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে ভ্রাতৃ সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য যে পদ্ধতি অবলম্বিত হয়েছিল, যার প্রেক্ষিতে নিছক দীনী ভ্রাতৃত্বের সম্পর্কের ভিত্তিতে মুহাজির ও আনসারগণ পরস্পরের ওয়ারিস হতেন, এ হুকুমের মাধ্যমে তাও রহিত হয়ে যায়। আল্লাহ পরিস্কার বলে দেন, মীরাস বন্টন হবে আত্মীয়তার ভিত্তিতে। তবে হাঁ কোন ব্যক্তি চাইলে হাদীয়া, তোহ্ফা,উপটোকন বা অসিয়াতের মাধ্যমে নিজের কোন দীনী ভাইকে সাহায্য করতে পারেন।
.
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে অসাল্লাম এর� সাথে মু�মিনদের সম্পর্ক :
১। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে অসাল্লাম �মু�মিনদের নিকট তাদের নিজেদের চাইতেও বেশী প্রিয় ও উপকারী বন্ধু :
বিস্তারিত দেখুন : ম > মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে অসাল্লাম।
২। মুহাম্মদ সা: এর �স্ত্রীগণ মু�মিনদের মা :
বিস্তারিত দেখুন : ম > মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে অসাল্লাম।
সম্পত্তি : (দেখুন : ধ > ধন-সম্পদ)
সম্পদ :
দেখুন : ধ > ধন-সম্পদ ।
সৌন্দর্য :
�দুনিয়ার সৌন্দর্য পরীক্ষা স্বরূপ :
(১৮:৪৬) এ ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের একটি সাময়িক সৌন্দর্য-শোভা মাত্র৷ আসলে তো স্থায়িত্ব লাভকারী সৎকাজগুলোই তোমার রবের কাছে ফলাফলের দিক দিয়ে উত্তম এবং এগুলোই উত্তম আশা-আকাঙ্ক্ষা সফল হবার মাধ্যম৷
(১৮:৭) আসলে পৃথিবীতে এ যাকিছু সাজ সরঞ্জামই আছে এগুলো দিয়ে আমি পৃথিবীর সৌন্দর্য বিধান করেছি তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য যে, তাদের মধ্য থেকে কে ভালো কাজ করে৷৮) সবশেষে এসবকে আমি একটি বৃক্ষ-লতাহীন ময়দানে পরিণত করবো৷
(১৬:৬) তাদের মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য সৌন্দর্য যখন সকালে তোমরা তাদেরকে চারণ ভূমিতে পাঠাও এবং সন্ধ্যায় তাদেরকে ফিরিয়ে আনো।
(১০: ৮৮) মুসা� দোয়া করলো, হে আমাদের রব! তুমি ফেরাউন ও তার সরদারদেরকে দুনিয়ার জীবনের শোভা -সৌন্দর্য� ও ধন-সম্পদ দান করেছো৷ হে আমাদের রব! একি এ জন্য যে, তারা মনুষকে তোমার পথ থেকে বিপথে সরিয়ে দেবে? হে আমাদের রব! এদের ধন-সম্পদ ধ্বংস করে দাও এবং এদের অন্তরে এমনভাবে মোহর মেরে দাও যাতে মর্মন্তুদ শাস্তি ভোগ না করা পর্যন্ত যেন এরা ঈমান না আনে ,
(১৬:৮) তোমাদের আরোহণ করার এবং তোমাদের জীবনের শোভা-সৌন্দর্য সৃষ্টির জন্য তিনি ঘোড়া, খচ্চর এবং গাধা সৃষ্টি করেছেন৷ তিনি (তোমাদের উপকারার্থে) আরো অনেক জিনিস সৃষ্টি করেছেন, যেগুলো তোমরা জানোই না৷
(১৬:১৪) তিনিই তোমাদের জন্য সাগরকে করায়ত্ব করে রেখেছেন, যাতে তোমরা তা থেকে তরতাজা গোশত নিয়ে খাও এবং তা থেকে এমন সব সৌন্দর্য সামগ্রী আহরণ করো যা তোমরা অংগের ভূষণরূপে পরিধান করে থাকো৷
mw�, wRnv` , kvw�� Pzw� :
wRnv`/hy� Hme RvwZi mv�_ Kivi wewaweavb hviv kvw��Pzw�i Aax�b i�q�Q :
�`Lyb : kvw�� Pzw� �:8:56-57 |
hw` k��c� mw� I kvw�� Pvq Z�e �ZvgivI mw� Ki : 8:61, hw` Zviv c�ZvwiZ K�i Z�e Avj�vn �Zvgv�`i mv�_ i�q�Qb :8:62,�
mei� (�ah��) :
me�ii c_ Aej�^b Ki, wb�qB Avj�vn meiKvix�`i mv�_ i�q�Qb : 8:46,
সন্তান :
(২৬.শুআরা:১৩২) তাকে ভয় করো যিনি এমন কিছু তোমাদের দিয়েছেন যা তোমরা জানো৷১৩৩) (তিনি) তোমাদের দিয়েছেন পশু, ১৩৪) সন্তান-সন্ততি, উদ্যান ও পানির প্রস্রবনসমূহ৷১৩৫) আমি ভয় করছি তোমাদের ওপর একটি বড় দিনের আযাবের৷
(১৯:৩৫) কাউকে সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহর কাজ নয়৷ তিনি পবিত্র সত্তা৷ তিনি যখন কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন তখন বলেন, হয়ে যাও, অমনি তা হয়ে যায়৷
(১৮:৪৬) এ ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের একটি সাময়িক সৌন্দর্য-শোভা মাত্র৷ আসলে তো স্থায়িত্ব লাভকারী সৎকাজগুলোই তোমার রবের কাছে ফলাফলের দিক দিয়ে উত্তম এবং এগুলোই উত্তম আশা-আকাঙ্ক্ষা সফল হবার মাধ্যম৷
(১৭:৩) তোমরা তাদের আওলাদ যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় উঠিয়েছিলাম ...।
(১৭:৬) এরপর আমি তোমাদেরকে তাদের ওপর বিজয় লাভের সুযোগ করে দিয়েছি এবং তোমাদেরকে সাহায্য করেছি অর্থ ও সন্তানের সাহায্যে আর তোমাদের সংখ্যা আগের চেয়ে বাড়িয়ে দিয়েছি৷
সন্তান লাভের অহংকার : আল্লাহর নাফরমান হওয়া সত্বেও যে ব্যক্তি বলে, আমি তো সম্পদ ও সন্তান পেতেই থাকবো :
(১৯:৭৭) তারপর তুমি কি দেখেছো সে লোককে যে আমার আয়াতসমূহ মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং বলে আমাকে তো ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দান করা হতে থাকবেই ? ৭৮) সে কি গায়েবের খবর জেনে গেছে অথবা সে রহমানের থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়ে রেখেছে? ৭৯) -কখখনো নয়, সে যা কিছু বলছে তা আমি লিখে নেবো৷এবং তার জন্য আযাবের পসরা আরো বাড়িয়ে দেবো৷৮০) সে সাজসরঞ্জাম ও জনবলের কথা এ ব্যক্তি বলছে তা সব আমার কাছেই থেকে যাবে এবং সে একাকী আমার সামনে হাযির হয়ে যাবে৷৮১) এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে নিজেদের কিছু খোদা বানিয়ে রেখেছে, যাতে যারা এদের পৃষ্ঠপোষক হয়৷৮২) কেউ পৃষ্ঠপোষক হবে না৷ তারা সবাই এদের ইবাদতের কথা অস্বীকার করবে এবং উল্টো এদের বিরোধী হয়ে পড়বে৷৮৩) তুমি কি দেখো না আমি এ সত্য অস্বীকারকারীদের উপর শয়তানদের ছেড়ে রেখেছি, যারা এদেরকে (সত্য বিরোধিতায়) খুব বেশী করে প্ররোচনা দিচ্ছে?৮৪) বেশ তাহলে এখন এদের উপর আযাব নাযিল করার জন্য অস্থির হয়ো না, আমি এদের দিন গণনা করেছি৷
নবীদের সন্তান সন্ততি / বংশধর :
(১৯:৫৮) এরা হচ্ছে, এমন সব নবী, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছিলেন আদম সন্তানদের মধ্য থেকে এবং যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় আরোহণ করিয়েছিলাম, তাদের বংশধরদের থেকে, আর ইবরাহীমের বংশধরদের থেকে ও ইসরাঈলের বংশধরদের থেকে, আর এরা ছিল তাদের মধ্য থেকে যাদেরকে আমি সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছিলাম এবং বাছাই করে নিয়েছিলাম৷ এদের অবস্থা এই ছিল যে, যখন করুণাময়ের আয়াত এদেরকে শুনানো হতো তখন কান্নারত অবস্থায় সিজদায় লুটিয়ে পড়তো৷
ওলী বুযুর্গ ও নবীরা কাউকে সন্তান দিতে পারেন না, বরং তারাই সন্তান লাভের জন্য আল্লাহর নিকট হাত পাতেন :
(২১:৯০) ......আমাকে ডাকতো আশা ও ভীতি সহকারে এবং আমার সামনে ছিল অবনত হয়ে৷
(এই প্রেক্ষাপটে যে উদ্দেশ্যে নবীদের উল্লেখ করা হয়েছে তা আবার স্মৃতিপটে জাগিয়ে তুলুন। হযরত যাকারিয়ার (আ) ঘটনা উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে একথা হৃদয়ংগম করানো যে, এসকল নবীই ছিলেন নিছক বান্দা ও মানুষ ইলাহী সার্বভৌমত্বের সামান্যতম গন্ধও তাদের মধ্যে ছিল না। তারা অন্যদেরকে সন্তান দান করতেন না বরং নিজেরাই আল্লাহর সামনে সন্তানের জন্য হাত পাততেন। হযরত ইউনুসের কথা এ জন্য বলা হয়েছে যে, একজন মহিমান্বিত নবী হওয়া সত্ত্বেও যখন তিনি ভুল করে বসলেন তখন তাকে পাকড়াও করা হলো এবং যখন তিনি নিজের রবের সামনে অবনত হলেন তখন তাঁর প্রতি অনুগ্রহও এমনভাবে করা হয়েছে যে, মাছের পেট থেকে তাঁকে জীবিত বের করে আনা হয়েছে। হযরত আইয়ুবের উল্লেখ এ জন্য করা হয়েছে যে, নবীর বিপদে পড়া কোন অভিনব ব্যাপার নয় এবং নবীও যখন বিপদে পড়েন তখন একমাত্র আল্লাহরই সামনে ত্রাণের জন্য হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি অন্যের ত্রাণকারী নন বরং আল্লাহর কাছে ত্রাণ ভিক্ষাকারী। তারপর এসব কথার সাথে সাথে একদিকে এ সত্যটি মনে বদ্ধমূল করতে চাওয়া হয়েছে যে, এ সকল নবীই ছিলেন তাওহীদের প্রবক্তা এবং নিজেদের প্রয়োজন তাঁরা এক আল্লাহ ছাড়া আর কারো সামনে পেশ করতেন না আবার অন্যদিকে একথাও বুঝিয়ে দেয়া কাম্য যে, আল্লাহ হামেশা অস্বাভাবিকভাবে নিজের নবীদেরকে সাহায্য করতে থেকেছেন। শুরুতে তাঁর যতই পরীক্ষার সম্মুখীন হোন না কেন শেষ পর্যন্ত অলৌকিক পদ্ধতিতে তাঁদের প্রার্থনা পূর্ণ হয়েছে।)
শয়তানের সন্তান সন্ততি / বংশধর :
(১৮:৫০) ...এখন কি তোমরা আমাকে বাদ দিয়ে তাকে (ইবলসি শয়তানকে ) এবং তার বংশধরদেরকে নিজেদের অভিভাবক বানিয়ে নিচ্ছো অথচ তারা তোমাদের দুশমন ? বড়ই খারাপ বিনিময় জালেমরা গ্রহণ করছে।
সম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে শয়তানের শরীকানা :
(১৭:৬৪) ....ধন-সম্পদে ও সন্তান-সন্ততিতে তাদের সাথে শরীক হয়ে যাও
সন্তান লাভের সুসংবাদ :
(১১:৭১) ইবরাহীমের স্ত্রীও দাঁড়িয়ে ছিল, সে একথা শুনে হেসে ফেললো৷ �তারপর আমি তাকে ইসহাকের এবং ইসহাকের পরে ইয়াকুবের সুখবর দিলাম৷৭২) সে বললোঃ হায়, আমার পোড়া কপাল! এখন আমার সন্তান হবে নাকি, যখন আমি হয়ে গেছি খুনখুনে বুড়ী আর আমার স্বামীও হয়ে গেছে বুড়ো ? এ তো বড় আশ্চর্য ব্যাপার!�৭৩) ফেরেশতারা বললোঃ �আল্লাহর হুকুমের ব্যাপারে অবাক হচ্ছো? হে ইবরাহীমের গৃহবাসীরা! তোমাদের প্রতি তো রয়েছে আল্লাহর রহমত ও বরকত, আর অবশ্যি আল্লাহ অত্যন্ত প্রশংসাই এবং বড়ই শান শওকতের অধিকারী৷�৭৪) তারপর যখন ইবরাহীমের আশংকা দূর হলো এবং (সন্তানের সুসংবাদে) তার মন খুশীতে ভরে গেলো তখন সে লূতের সম্প্রদায়ের ব্যাপারে আমার সাথে বাদানুবাদ শুরু করলো৷
(১৫:৫৩) তারা জবাব দিল, ভয় পেয়ো না, আমরা তোমাকে এক পরিণত জ্ঞান সম্পন্ন পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি৷৫৪) ইবরাহীম বললো, তোমরা কি বার্ধক্যবস্থায় আমাকে সন্তানের সুসংবাদ দিচ্ছো ? একটু ভেবে দেখো তো এ কোন্ ধরনের সুসংবাদ তোমরা আমাকে দিচ্ছো ? ৫৫) তারা জবাব দিল, আমরা তোমাকে সত্য সংসংবাদ দিচ্ছি, তুমি নিরাশ হয়ো না৷
(১৯:৭) (জবাব দেয়া হলো) �হে যাকারিয়া! আমি তোমাকে একটি পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি, যার নাম হবে ইয়াহইয়া, এ নামে কোন লোক আমি এর আগে সৃষ্টি করিনি৷
(আরো দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > মূসা আ: > মূসা আ: এর শৈশব কাল)
সন্তানকে স্তন্য পান কৎৎ
(২৮-ক্বাছাছ : ১২) আর আমি পূর্বেই শিশুর জন্য স্তন্য দানকারিনীদের স্তন পান হারাম করে রেখেছিলাম৷১৪ (এ অবস্থা দেখে) সে মেয়েটি তাদেরকে বললো, "আমি তোমাদের এমন পরিবারের সন্ধান দেবো যারা এর প্রতিপালনের দায়িত্ব নেবে এবং এর কল্যাণকামী হবে?"১৫
(১৪. অর্থাৎ ফেরাউনের স্ত্রী যে ধাত্রীকে স্তন্যদান করার জন্য ডাকতেন শিশু তার স্তনে মুখ লাগাতো না।
১৫. এ থেকে জানা যায়, ভাই ফেরাউনের মহলে পৌছে যাবার পর বোন ঘরে বসে থাকে নি। বরং সে একই প্রকার সতর্কতা ও বুদ্ধিমত্তা সহকারে মহলের আশে পাশে চক্কর দিতে থাকে। তারপর যখন জানতে পারে শিশু কারো স্তন মুখে নিচ্ছে না এবং বাদশাহ-বেগম শিশুর পছন্দনীয় ধাত্রীর সন্ধান লাভের জন্য পেরেশান হয়ে পড়েছে তখন সেই বুদ্ধিমতি মেয়ে সোজা রাজমহলে পৌছে যায়। সে ঘটনাস্থালে গিয়ে বলে আমি একজন ভাল ধাত্রীর সন্ধান দিতে পারি, যে বড়ই স্নেহ ও মমতা সহকারে এই শিশুর লালন-পালন করতে পারবে।
এ প্রসংগে এ কথাও বুঝে নিতে হবে, প্রাচিন কালে বড় ও অভিজাত বংশীয় লোকেরা নিজেদের শিশু সন্তান নিজেদের কাছে রেখেই তাদের লালন পালন করার পরিবর্তে সাধারণত ধত্রীদের হাতে সোপর্দ করে দিতো এবং তারাই নিজেদের কাছে রেখেই তাদের লালন পালন করত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন কাহিনী এ কথার উল্লেখ আছে যে, মক্কার আসে পাশে মহিলারা মাঝে মাঝে মক্কায় আসতো ধনীর সেবা দান করার জন্য এবং সরদারদের সন্তানদেরকে মোটা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে দুধ পান করাবার জন্য নিয়ে যেতো। নবী সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও হালীমা সাদীয়ার গৃহে মরুভূমির বুকে প্রতিপালিত হয়েছেন। মিসরেও ছিল এই একই রেওয়াজ। একারনে হযরত মূসার বোন একথা বলেননি, "আমি একজন ভালো ধাত্রী এনে দিচ্ছি বরং বলেন, এমন গৃহের সন্ধান দিচ্ছি যার অধিবাসীরা এর প্রতিপালনের দায়িত্ব নেবে এবং তারা কল্যাণকামিতার সাথে একে লালন পালন করবে।")
পুত্র সন্তান হত্যা ও কন্যা সন্তান জীবিত রাখা :
আর (আল্লাহ বলেন) সেই সময়ের কথা স্মরণ করো যখন আমি ফেরাউনের লোকদের কবল থেকে তোমাদের মুক্তি দিয়েছিলাম, যারা তোমাদেরকে কঠোর শাস্তি দিতো, তোমাদের ছেলেদের হত্যা করতো এবং মেয়েদের জীবিত রাখতো৷ আর এর মধ্যে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য ছিল মহা পরীক্ষা-৭:১৪১, �
(১৭:৪০) কেমন অদ্ভূত কথা, তোমাদের রব তোমাদের পুত্র সন্তান দিয়ে অনুগৃহীত করেছেন এবং নিজের জন্য ফেরেশতাদেরকে কন্যা সন্তান বানিয়ে নিয়েছেন ?
কন্যা সন্তান লাভের সংবাদ কি দু:সংবাদ ?
(১৬:৫৮) যখন এদের কাউকে কন্যা সন্তান জন্মের সুখবর দেয়া হয় তখন তার চেহারা কালো হয়ে যায় এবং সে ভিতরে ভিতরে গুমরে মরতে থাকে৷ (১৬:৫৯) লোকদের থেকে লুকিয়ে ফিরতে থাকে, কারণ এ দুঃসংবাদের পর সে লোকদের মুখ দেখাবে কেমন করে৷ ভাবতে থাকে, অবমাননার সাথে মেয়েকে রেখে দেবে, না তাকে মাটিতে পুঁতে ফেলবে ? দেখো, কেমন খারাপ কথা যা এরা আল্লাহর ওপর আরোপ করে৷৬০) যারা আখেরাত বিশ্বাস করে না তারাই তো খারাপ গুণের অধিকারী হবার যোগ্য৷ আর আল্লাহর জন্য তো রয়েছে মহত্তম গুণাবলী, তিনিই তো সবার ওপর পরাক্রমশালী এবং জ্ঞানের দিক দিয়ে পূর্ণতার অধিকারী৷
সন্তান সন্ততিকে আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী পরিচালনা :
(১৪:৩৭) হে আমাদের রব! আমি একটি তৃণ পানিহীন উপত্যকায় নিজের বংশধরদের একটি অংশকে তোমার পবিত্র গৃহের কাছে এনে বসবাস করিয়েছি৷ পরওয়ারদিগার! এটা আমি এ জন্য করেছি যে, এরা এখানে নামায কায়েম করবে৷ কাজেই তুমি লোকদের মনকে এদের প্রতি আকৃষ্ট করো এবং ফলাদি দিয়ে এদের আহারের ব্যবস্থা করো, �হয়তো এরা শোকরগুজার হবে৷
(১৪:৩৯) �শোকর সেই আল্লাহর, যিনি এ বৃদ্ধ বয়সে আমাকে ইসমাঈল ও ইসহাকের মতো পুত্র দিয়েছেন৷ আসলে আমার রব নিশ্চয়ই দোয়া শোনেন৷
সন্তান ও সম্পদের মালিক হয়েই গর্ব করোনা :
তোমাদের আচরণ যদি পূর্ববর্তী পথভ্রষ্টদের ন্যায় হয় তাহলে তোমরা পূর্ববর্তীদের ন্যায় একই শাস্তি লাভ করবে : ৯:৬৯ (তোমাদের আচরণ তোমাদের পূর্ববর্তীদের মতোই৷ তারা ছিল তোমাদের চাইতে বেশী শক্তিশালী এবং তোমাদের চাইতে বেশী সম্পদ ও সন্তানের মালিক৷ তারপর তারা দুনিয়ায় নিজেদের অংশের স্বাদ উপভোগ করেছে এবং তোমরাও একইভাবে নিজেদের অংশের স্বাদ উপভোগ করেছো৷ যেমন তারা করেছিল এবং তারা যেমন অনর্থক বিতর্কে লিপ্ত ছিল তেমনি বিতর্কে তোমরাও লিপ্ত রয়েছো৷ কাজেই তাদের পরিণতি হয়েছে এই যে, দুনিয়ায় ও আখেরাতে তাদের সমস্ত কাজকর্ম পণ্ড হয়ে গেছে এবং তারাই ক্ষতিগ্রস্ত),
কাফের ও মুনাফিকদের যে ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততি দেয়া হয়েছে তোমরা মু�মিনরা সেদিকে তাকিয়েও দেখোনা, কারণ এগুলো তাদেরকে দেয়া হয়েছে শাস্তি স্বরূপ : ৯:৫৫, ৮৪-৮৫,
পুত্র সন্তান :� আরো দেখুন : প > পুত্র সন্তান
(১০:৬৮) লোকেরা বলে, আল্লাহ কাউকে পুত্র বানিয়েছেন৷ সুবহানাল্লাহ -তিনি মহান-পবিত্র! তিনি তো অভাবমুক্ত৷ আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তার মালিকানাধীন৷ একথার সপক্ষে তোমাদের কাছে কি প্রমাণ আছে? তোমরা কি আল্লাহর সপক্ষে এমন সব কথা বলো যা তোমাদের জানা নেই?
(১৭:১১১) আর বলো, সেই আল্লাহর প্রশংসা, যিনি কোনো পুত্রও গ্রহণ করেননি৷ তাঁর বাদশাহীতে কেউ শরীকও হয়নি এবং তিনি এমন অক্ষমও নন যে, কেউ তাঁর সাহায্যকারী ও নির্ভর হবে
আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেন না,�� এ থেকে তিনি পবিত্র :
(১৭:১১১) আর বলো, সেই আল্লাহর প্রশংসা, যিনি কোনো পুত্রও গ্রহণ করেননি৷ তাঁর বাদশাহীতে কেউ শরীকও হয়নি এবং তিনি এমন অক্ষমও নন যে, কেউ তাঁর সাহায্যকারী ও নির্ভর হবে
(১০:৬৮) লোকেরা বলে, আল্লাহ কাউকে পুত্র বানিয়েছেন৷ সুবহানাল্লাহ -তিনি মহান-পবিত্র! তিনি তো অভাবমুক্ত৷
(১৮:৪) আর যারা বলে, আল্লাহ কাউকে সন্তানরূপে গ্রহণ করেছেন, তাদেরকে (এ কুরআন) ভয় দেখায়৷
(১৯:৮৮) তারা বলে, রহমান কাউকে পুত্র গ্রহণ করেছেন-৮৯) মারাত্মক বাজে কথা যা তোমরা তৈরী করে এনেছো৷
(১৯:৯০) আকাশ ফেটে পড়ার, পৃথিবী বিদীর্ণ হবার এবং পাহাড় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে ৯১) এজন্য যে, লোকেরা রহমানের জন্য সন্তান থাকার দাবী করেছে! ৯২) কাউকে সন্তান গ্রহণ করা রহমানের জন্য শোভন নয়৷
(২১:২৬) এরা বলে, �করুণাময় সন্তান গ্রহণ করেন৷� সুবহানাল্লাহ! তারা তো মর্যাদাশালী বান্দা৷
(এখানে আবার ফেরেশতাদেরই কথা বলা হয়েছে। আরবের মুশরিকরা তাদেরকে আল্লাহর মেয়ে গণ্য করতো। পরবর্তী ভাষণ থেকে একথা স্বতস্ফূর্তভাবে প্রকাশ হয়ে যায়।)
(মু�মিনুন:৯১) আল্লাহ কাউকে নিজের সন্তানে পরিণত করেননি এবং তাঁর সাথে অন্য কোন ইলাহও নেই৷ যদি থাকতো তাহলে প্রত্যেক ইলাহ নিজের সৃষ্টি নিয়ে আলাদা হয়ে যেতো ৷এবং তারপর একজন অন্যজনের ওপর চড়াও হতো৷� এরা যেসব কথা তৈরী করে তা থেকে আল্লাহ পাক-পবিত্র৷
আল্লাহর জন্য কন্যা সন্তান ? � এটাতো নির্জলা মিথ্যা ও শিরক :
(১৬:৫৭) এরা আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করে কন্যা সন্তান, সুবহানাল্লাহ ! এবং নিজেদের জন্য নির্ধারণ করে তাদের কাছে যা কাংখিত।
(১৬:৫৮) যখন এদের কাউকে কন্যা সন্তান জন্মের সুখবর দেয়া হয় তখন তার চেহারা কালো হয়ে যায় এবং সে ভিতরে ভিতরে গুমরে মরতে থাকে৷ (১৬:৫৯) লোকদের থেকে লুকিয়ে ফিরতে থাকে, কারণ এ দুঃসংবাদের পর সে লোকদের মুখ দেখাবে কেমন করে৷ ভাবতে থাকে, অবমাননার সাথে মেয়েকে রেখে দেবে, না তাকে মাটিতে পুঁতে ফেলবে ? দেখো, কেমন খারাপ কথা যা এরা আল্লাহর ওপর আরোপ করে৷
(১৭:৪০) কেমন অদ্ভূত কথা, তোমাদের রব তোমাদের পুত্র সন্তান দিয়ে অনুগৃহীত করেছেন এবং নিজের জন্য ফেরেশতাদেরকে কন্যা সন্তান বানিয়ে নিয়েছেন ?
(২১:২৬) এরা বলে, �করুণাময় সন্তান গ্রহণ করেন৷� সুবহানাল্লাহ! তারা তো মর্যাদাশালী বান্দা৷
(এখানে আবার ফেরেশতাদেরই কথা বলা হয়েছে। আরবের মুশরিকরা তাদেরকে আল্লাহর মেয়ে গণ্য করতো। পরবর্তী ভাষণ থেকে একথা স্বতস্ফূর্তভাবে প্রকাশ হয়ে যায়।)
আল্লাহ কাউকে পুত্র সন্তান হিসেবেও গ্রহণ করেননি :
(ফুরকান:২) যিনি পৃথিবী ও আকাশের রাজত্বের মালিক, যিনি কাউকে পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেননি, যাঁর সাথে রাজত্বে কেউ শরীক নেই, যিনি প্রত্যেকটি জিনিস সৃষ্টি করেছেন তারপর তার একটি তাকদীর নির্ধারিত করে দিয়েছেন৷
সন্তান হত্যা :
দারিদ্রের আশংকায় নিজেদের সন্তান হত্যা করো না৷ আমি তাদেরকেও রিযিক দেবো এবং তোমাদেরকেও৷ আসলে তাদেরকে হত্যা করা একটি মহাপাপ৷-(১৭:৩১)
(১৮:৮০) আর ঐ বালকটির ব্যাপার হচ্ছে এই যে, তার বাপ-মা ছিল মুমিন৷ আমাদের আশংকা হলো, এ বালক তার বিদ্রোহাত্মক আচরণ ও কুফরীর মাধ্যমে তাদেরকে বিব্রত করবে৷
(১৮:৭৪) এরপর তারা দুজন চললো৷ চলতে চলতে তারা একটি বালকের দেখা পেলো এবং ঐ ব্যক্তি তাকে হত্যা করলো৷ মূসা বললো, �আপনি এক নিরপরাধকে হত্যা করলেন অথচ সে কাউকে হত্যা করেনি ? এটা তো বড়ই খারাপ কাজ করলেন৷�
সু-সন্তান :
(১৮:৭৪) এরপর তারা দুজন চললো৷ চলতে চলতে তারা একটি বালকের দেখা পেলো এবং ঐ ব্যক্তি তাকে হত্যা করলো৷ মূসা বললো, �আপনি এক নিরপরাধকে হত্যা করলেন অথচ সে কাউকে হত্যা করেনি ? এটা তো বড়ই খারাপ কাজ করলেন৷� .. (১৮:৮০) আর ঐ বালকটির ব্যাপার হচ্ছে এই যে, তার বাপ-মা ছিল মুমিন৷ আমাদের আশংকা হলো, এ বালক তার বিদ্রোহাত্মক আচরণ ও কুফরীর মাধ্যমে তাদেরকে বিব্রত করবে৷৮১) তাই আমরা চাইলাম তাদের রব তার বদলে তাদেরকে যেন এমন একটি সন্তান দেন যে চরিত্রের দিক দিয়েও তার চেয়ে ভালো হবে এবং যার কাছ তেকে সদয় আচরণও বেশী আশা করা যাবে৷
সন্তানদের মধ্যে ভালোবাসায় তারতম্য :
(১২:৮) এ ঘটনা এভাবে শুরু হয় : তার ভাইয়েরা পরস্পর বলাবলি করলো, �এ ইউসুফ ও তার ভাই, �এরা দু�জন আমাদের বাপের কাছে আমাদের সবার চাইতে বেশী প্রিয়, অথচ আমরা একটি পূর্ণ সংঘবদ্ধ দল৷ সত্যি বলতে কি আমাদের পিতা একেবারেই বিভ্রান্ত হয়ে গেছেন৷
(এ বাক্যটির মর্ম উপলব্ধি করার জন্য বেদুইনদের গোত্রীয় জীবনের অবস্থার প্রতি দৃষ্টিপাত করতে হবে। সেখানে কোন রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা থাকে না। স্বাধীন উপজাতিরা পরস্পর পাশাপাশি বসবাস করে । সেখানে কোন ব্যক্তির বিপুল সংখ্যক ছেলে, নাতি-পুতি, ভাই ভাতিজা ইত্যাদির ওপর তার ক্ষমতা নির্ভর করে। তার ধন-প্রাণ, ইজ্জত-আবরু রক্ষার প্রয়োজনে তারা তাকে সাহায্য করে। এ ধরনের অবস্থায় মেয়েদের ও শিশুদের তুলনায় স্বাভাবিকভাবে জোয়ান ছেলেরাই মানুষের কাছে বেশী প্রিয় হয়। কারণ দুশমনের সাথে মোকাবিলায় তারা সাহায্য করতে পারে। এ কারণে ইউসুফের ভাইয়েরা বললো, বুড়ো বয়সে আমাদের বাপ দিশেহারা হয়েছে। আমাদের মতো দলবদ্ধ এ যুবক ছেলেরা, যারা খারাপ সময়ে তাঁর কাজে লাগতে পারে, তাঁর কাছে ততটা প্রিয় নয় যতোটা এ ছোট ছেলে দু'টি যারা তাঁর কোন কাজে লাগতে পারে না বরং উলটো তাদেরকেই হেফাজত করতে হবে।)
সন্তান ঈমানদার না হলে নবীর পুত্র হলেও কোন কাজ হবেনা �:
(১১:৪২) নৌকা তাদেরকে নিয়ে পর্বত প্রমাণ ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে ভেসে চলতে লাগলো৷ নূহের ছেলে ছিল তাদের থেকে দূরে৷ নূহ চীৎকার করে তাকে বললো, � হে আমার পুত্র! আমাদের সাথে আরোহণ করো, কাফেরদের সাথে থেকো না৷� ৪৩) সে পালটা জবাব দিল, �আমি এখনই একটি পাহাড়ে চড়ে বসছি৷ তা আমাকে পানি থেকে বাঁচাবে৷� নূহ বললো, �আজ আল্লাহর হুকুম থেকে বাঁচাবার কেউ নেই, তবে যার প্রতি আল্লাহ রহমত করেন সে ছাড়া৷� এমন সময় একটি তরংগ উভয়ের মধ্যে আড়াল হয়ে গেলো এবং সেও নিমজ্জিতদের দলে শামিল হলো৷
(১১:৪৫) নূহ তার রবকে ডাকলো৷ বললো, � হে আমার রব! আমার ছেলে আমার পরিবারভুক্ত এবং তোমার প্রতিশ্রুতি সত্য আর তুমি সমস্ত শাসকদের মধ্যে সবেচেয়ে বড় ও উত্তম শাসক৷৪৬) জবাবে বলা হলো, �হে নূহ! সে তোমার পরিবারভুক্ত নয়৷ সে তো অসৎ কর্মপরায়ণ৷ কাজেই তুমি আমার কাছে এমন বিষয়ের আবেদন করো না যার প্রকৃত তত্ত্ব তোমার জানা নেই৷ আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি, নিজেকে অজ্ঞদের মতো বানিয়ে ফেলো না�৷৪৭) নূহ তখনই বললো, �হে আমার রব! যে জিনিসের ব্যাপারে আমার জ্ঞান নেই তা তোমার কাছে চাইবো- এ থেকে আমি তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি৷ যদি তুমি আমাকে মাফ না করো এবং আমার প্রতি রহমত না করো তাহলে আমি ধ্বংস হয়ে যাবো৷
সন্তান যেন মূর্তিপূজা থেকে বেচে থাকে সেজন্য দোয়া :
(১৪:৩৫) স্মরণ কর সেই সময়ের কথা যখন ইবরাহীম দোয়া করছিল, �হে আমার রব! এ শহরকে নিরাপত্তার শহরে পরিণত করো এবং আমার ও আমার সন্তানদেরকে মূর্তিপূজা থেকে বাঁচাও৷
সন্তান লাভের জন্য দোয়া : আরো দেখুন : দ > দোয়া :
(১৯:৫) আমি আমার পর নিজের স্বভাব-স্বগোত্রীয়দের অসদাচরণের আশংকা করি এবং আমার স্ত্রী বন্ধ্যা৷ (তথাপি) তুমি নিজের বিশেষ অনুগ্রহ বলে আমাকে একজন উত্তরাধিকারী দান করো,
সৎ সন্তান লাভের জন্য দোয়া :
(১৯:৬) যে আমার উত্তরাধিকরী হবে এবং ইয়াকুব বংশেরও উত্তরাধিকারী হবে৷ আর হে পরোয়ারদিগার! তাকে একজন পছন্দনীয় মানুষে পরিণত করো�৷
(২১:৮৯) আর যাকারিয়ার কথা (স্মরণ করো), যখন সে তার রবকে ডেকে বলেছিল : �হে আমার প্রতিপালক! আমাকে একাকী ছেড়ে দিয়ো না এবং সবচেয়ে ভালো উত্তরাধিকারী তো তুমিই৷� ৯০) কাজেই আমি তার দোয়া কবুল করেছিলাম এবং তাকে ইয়াহ্ইয়া দান করেছিলাম, আর তার স্ত্রীকে তার জন্য যোগ্য করে দিয়েছিলাম৷ ৮৬ তারা সৎকাজে আপ্রাণ চেষ্টা করতো, আমাকে ডাকতো আশা ও ভীতি সহকারে এবং আমার সামনে ছিল অবনত হয়ে৷৮৭
(৮৬. ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা আলে ইমরান ৩৭ থেকে ৪১ আয়াত টীকা সহ, সূরা মার্য়াম ২ থেকে ১৫ আয়াত টীকাসহ। স্ত্রীকে যোগ্য করে দেয়ার অর্থ হচ্ছে, তার বন্ধ্যাত্ব দূর করে দেয়া এবং বার্ধক্য সত্ত্বেও তাকে গর্ভধারণের উপযোগী করা। "সবচেয়ে ভালো উত্তরাধিকারী তুমিই" মানে হচ্ছে, তুমি সন্তান না দিলে কোন দুঃখ নেই। তোমার পবিত্র সত্তা-উত্তরাধিকারী হবার জন্য যথেষ্ট।
৮৭. এই প্রেক্ষাপটে যে উদ্দেশ্যে নবীদের উল্লেখ করা হয়েছে তা আবার স্মৃতিপটে জাগিয়ে তুলুন। হযরত যাকারিয়ার (আ) ঘটনা উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে একথা হৃদয়ংগম করানো যে, এসকল নবীই ছিলেন নিছক বান্দা ও মানুষ ইলাহী সার্বভৌমত্বের সামান্যতম গন্ধও তাদের মধ্যে ছিল না। তারা অন্যদেরকে সন্তান দান করতেন না বরং নিজেরাই আল্লাহর সামনে সন্তানের জন্য হাত পাততেন। হযরত ইউনুসের কথা এ জন্য বলা হয়েছে যে, একজন মহিমান্বিত নবী হওয়া সত্ত্বেও যখন তিনি ভুল করে বসলেন তখন তাকে পাকড়াও করা হলো এবং যখন তিনি নিজের রবের সামনে অবনত হলেন তখন তাঁর প্রতি অনুগ্রহও এমনভাবে করা হয়েছে যে, মাছের পেট থেকে তাঁকে জীবিত বের করে আনা হয়েছে। হযরত আইয়ুবের উল্লেখ এ জন্য করা হয়েছে যে, নবীর বিপদে পড়া কোন অভিনব ব্যাপার নয় এবং নবীও যখন বিপদে পড়েন তখন একমাত্র আল্লাহরই সামনে ত্রাণের জন্য হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি অন্যের ত্রাণকারী নন বরং আল্লাহর কাছে ত্রাণ ভিক্ষাকারী। তারপর এসব কথার সাথে সাথে একদিকে এ সত্যটি মনে বদ্ধমূল করতে চাওয়া হয়েছে যে, এ সকল নবীই ছিলেন তাওহীদের প্রবক্তা এবং নিজেদের প্রয়োজন তাঁরা এক আল্লাহ ছাড়া আর কারো সামনে পেশ করতেন না আবার অন্যদিকে একথাও বুঝিয়ে দেয়া কাম্য যে, আল্লাহ হামেশা অস্বাভাবিকভাবে নিজের নবীদেরকে সাহায্য করতে থেকেছেন। শুরুতে তাঁর যতই পরীক্ষার সম্মুখীন হোন না কেন শেষ পর্যন্ত অলৌকিক পদ্ধতিতে তাঁদের প্রার্থনা পূর্ণ হয়েছে।)
কোন পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই� আল্লাহর ইশারায় একজন মহিলার সন্তান হওয়া সম্ভব :
(১৯:২০) মারয়াম বললো, �আমার পুত্র হবে কেমন করে যখন কোন পুরুষ আমাকে স্পর্শও করেনি এবং আমি ব্যভিচারিনীও নই?� ২১) ফেরেশতা বললো, �এমনটিই হবে, তোমার রব বলেন, এমনটি করা আমার জন্য অতি সহজ আর আমি এটা এ জন্য করবো যে, এই ছেলেকে আমি লোকদের জন্য একটি নির্দশন ও নিজের পক্ষ থেকে একটি অনুগ্রহে পরিণত করবো এবং এ কাজটি হবেই।
স্পর্শ : ছোঁয়া :
সামেরীর শাস্তি : ধর্ম ব্যবসার শাস্তি :
(২০:৯৭) মূসা বললো, �বেশ, তুই দুর হয়ে যা, এখন জীবনভর তুই শুধু একথাই বলতে থাকবি, আমাকে ছুঁয়ো না৷� আর তোর জন্য জবাবদিহির একটি সময় নির্ধারিত রয়েছে যা কখনোই তোর থেকে দূরে সরে যাবে না৷ আর দেখ, তোর এই ইলাহর প্রতি, যার পূজায় তুই মত্ত ছিলি, এখন আমরা তাকে জ্বালিয়ে দেবো এবং তার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশগুলো সাগরে ভাসিয়ে দেবো৷
কোন পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই� আল্লাহর ইশারায় একজন মহিলার সন্তান হওয়া সম্ভব :
(১৯:২০) মারয়াম বললো, �আমার পুত্র হবে কেমন করে যখন কোন পুরুষ আমাকে স্পর্শও করেনি এবং আমি ব্যভিচারিনীও নই?� ২১) ফেরেশতা বললো, �এমনটিই হবে, তোমার রব বলেন, এমনটি করা আমার জন্য অতি সহজ আর আমি এটা এ জন্য করবো যে, এই ছেলেকে আমি লোকদের জন্য একটি নির্দশন ও নিজের পক্ষ থেকে একটি অনুগ্রহে পরিণত করবো এবং এ কাজটি হবেই।
সম্পর্ক :
পারস্পারিক সম্পর্ক
তোমরা পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সদ্ভাব বজায় রাখো : ৮:১, �
ইহুদী ও মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক :
মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছে এবং তাদের সাথে কৃত সকল প্রকার চুক্তি বাতিল করা হয়েছে : ৯:১,
মু�মিনদের প্রতি সু-ধারণা রাখা অবশ্য কর্তব্য :
(নূর:১২) যখন তোমরা এটা শুনেছিলে তখনই কেন মু�মিন পুরুষ ও মু�মিন নারীরা নিজেদের সম্পর্কে সুধারণা করেনি এবং কেন বলে দাওনি এটা সুস্পষ্ট মিথ্যা দোষারোপ?
(অর্থাৎ, হযরত আয়শা রা: এর প্রতি মিথ্যা অপবাদের অভিযোগ তথা ইফকের ঘটনা)
মু�মিনদেরকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখা যাবে না :
আর আমি একথাও বলতে পারি না যে, তোমরা যাদেরকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখো তাদেরকে আল্লাহ কখনো কোন কল্যাণ দান করবেন না৷ তাদের মনের অবস্থা আল্লাহই ভালো জানেন৷ যদি আমি এমনটি বলি তাহলে আমি হবো জালেম� (১১:৩১),
সাহায্য / সহায়তা / সহযোগিতা : আরো দেখুন : জ > জিহাদে আল্লাহর সাহায্য :
(২৯-আনকাবুত:২৫) ......কিন্তু কিয়ামতের দিন তোমরা পরস্পরকে অস্বীকার এবং পরস্পরের প্রতি অভিসম্পাত করবে ��আর আগুন তোমাদের আবাস হবে এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী হবে না৷�
(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ব > বন্ধুত্ব > পরকালে বন্ধুত্ব কি থাকবে ? )
(২৮-ক্বাছাছ : ২৩) আর যখন সে মাদয়ানের কুয়ার কাছে পৌঁছুল, সে দেখলো, অনেক লোক তাদের পশুদের পানি পান করাচ্ছে এবং তাদের থেকে আলাদা হয়ে একদিকে দু'টি মেয়ে নিজেদের পশুগুলো আগলে রাখছে৷ মূসা মেয়ে দু'টিকে জিজ্ঞেস করলো, "তোমাদের সমস্যা কি?" তারা বললো, "আমরা আমাদের জানোয়ারগুলোকে পানি পান করাতে পারি না যতক্ষণ না এ রাখালেরা তাদের জানোয়ারগুলো সরিয়ে নিয়ে যায়, আর আমাদের পিতা একজন অতি বৃদ্ধ ব্যক্তি৷" ২৪) একথা শুনে মূসা তাদের জানোয়ারগুলোকে পানি পান করিয়ে দিল৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৩৪) আর আমার ভাই হারূন আমার চেয় বেশী বাকপটু, তাকে সাহায্যকারী হিসেবে আমার সাথে পাঠাও, যাতে সে আমাকে সমর্থন দেয়, আমার ভয় হচ্ছে, তারা আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করবে৷" ৩৫) বললেন, তোমার ভাইয়ের সাহায্যে আমি তোমার শক্তি বৃদ্ধি করবো এবং তোমাদের দু'জনকে এমনই প্রতিপত্তি দান করবো যে, তারা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না৷ আমার নিদর্শনগুলোর জোরে তোমার ও তোমাদের অনুসারীরাই বিজয় লাভ করবে৷
শরীকরা তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারেনা, এমনকি নিজেরাও নিজেদের সাহায্য করতে পারে না : ৭:১৯৭,
শরীকরা তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারেনা, এমনকি নিজেরাও নিজেদেরকে সাহায্য করতে পারে না : ৭:১৯৭,
আল্লাহ ছাড়া তোমাদের আর কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী নেই, জীবন মৃত্যু তাঁরই আয়ত্বাধীন : ৯:১১৬,
আল্লাহ কারো ক্ষতি করতে চাইলে কেউ তার উপকার করতে পারবে না, আর আল্লাহ কারো সাহায্য / উপকার করতে চাইলে কে্উ তার ক্ষতি করতে পারবে না :
(৩৩-আহযাব: ১৭) তাদেরকে বলো, কে তোমাদের রক্ষা করতে পারে আল্লাহর হাত থেকে যদি তিনি তোমাদের ক্ষতি করতে চান ? আর কে তাঁর রহমতকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে যদি তিনি চান তোমাদের প্রতি মেহেরবাণী করতে ? আল্লাহর মুকাবিলায় তো তারা কোনো পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী লাভ করতে পারে না৷
মু�মিনদের সাহায্য করা আল্লাহর দায়িত্ব :
(৩০-রূম: ৪৭) আমি তোমার পূর্বে রসূলদেরকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠাই এবং তারা তাদের কাছে আসে উজ্জ্বল নিদর্শনাবলী নিয়ে৷� তারপর যারা অপরাধ করে �তাদের থেকে আমি প্রতিশোধ নিই আর মুমিনদেরকে সাহায্য করা ছিল আমার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত৷
ঈমানদারদের প্রকৃত সাহায্যকারী হলেন আল্লাহ :
বিস্তারিত দেখুন : জ > জিহাদ > ঈমানদারদের প্রকৃত সাহায্যকারী হলেন আল্লাহ।�
আরো দেখুন : জ > জিহাদ > ঈমানদারদের রক্ষাকারী আল্লাহ নিজে ।
(হাজ্ব:৩৯) ......এবং আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে(অর্থাৎ, ঈমানদারদেরকে)� সাহায্য করার ক্ষমতা রাখেন৷
(মু�মিনুন:২৬) নূহ বললো, ��হে পরওয়ারদিগার ! এরা যে আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করছে এ জন্য তুমিই আমাকে সাহায্য করো৷��
কাফেররা হচ্ছে বিদ্রোহীদের সাহায্যকারী :
(২৫.ফুরকান:৫৫)....কাফের নিজের রবের মোকাবিলায় প্রত্যেক বিদ্রোহীর সাহায্যকারী হয়ে আছে৷
(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ই > ইসলামী বিরোধী > ইসলাম বিরোধীদেরকে যারা সাহায্য করে তারা কাফের । )
কোন মু�মিন অপরাধী ও জালিমদের সাহায্যকারী� হতে পারেনা :
কিবতীকে ভুলক্রমে হত্যার পর মূসা আ: এর ভবিষ্যতে কোন অপরাধীকে সাহায্য না করা শপথের প্রকৃত স্বরূপ :
(২৮-ক্বাছাছ : ১৭) মূসা শপথ করলো, "হে আমার রব! তুমি আমার প্রতি এই যে অনুগ্রহ করেছো২৫ এরপর আমি আর অপরাধীদের সাহায্যকারী হবো না৷"২৬
(২৫. অর্থাৎ আমার কাজটি যে গোপন থাকতে পেরেছে, শত্রু জাতির কোন ব্যক্তি যে আমাকে দেখতে পায়নি এবং আমার সরে যাওয়ার যে সুযোগ ঘটেছে, এই অনুগ্রহ।
২৬. মূসার এ অংগীকার অত্যন্ত ব্যাপক অর্থবোধক শব্দাবলীর মাধ্যমে সাধিত হয়েছে। এর অর্থ কেবল এই নয় যে, আমি কোন অপরাধীর সহায়ক হবো না বরং এর অর্থ এটাও হয় যে, আমার সাহায্য-সহায়তা কখনো এমন লোকদের পক্ষে থাকবে না যারা দুনিয়ায় জুলুম ও নিপীড়ণ চালায় । ইবনে জারীর এবং অন্য কয়েকজন তাফসীরকারক এভাবে এর একেবারে সঠিক অর্থ নিয়েছেন যে, সেই দিনই মূসা ফেরাউন ও তার সরকারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার অংগীকার করেন।কারণ ফেরাউনের সরকার ছিল একটি জালেম সরকার এবং সে আল্লাহর এ সরযমীনে একটি অপরাধমূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করে রেখেছিল। তিনি অনুভব করেন, কোন ঈমানদার ব্যক্তি একটি জালেম সরকারের হাতিয়ারে পরিণত হতে এবং তার শক্তি ও পরাক্রান্ত বৃদ্ধির কাজে সহায়তা করতে পারে না।
মুসলিম আলেমগণ সাধারণভাবে মূসার এ অংগীকার থেকে একথা প্রমাণ করেছেন যে, একজন মু'মিনের কোন জালেমকে সাহায্য করা থেকে পুরোপুরি দূরে থাকা উচিত। সে জালেম কোন ব্যক্তি , দল, সরকার বা রাষ্ট্র যেই হোক না কেন । প্রখ্যাত তাবেঈ আতা ইবনে আবী রাবাহর কাছে এক ব্যক্তি বলে, আমার ভাই বনী উমাইয়া সরকারের অধীনে কূফার গভর্ণরের কাতিব (সচিব) , বিভিন্ন বিষয়ের ফায়সালা করা তার কাজ নয়, তবে যেসব ফায়সালা করা হয় সেগুলো তার কলমের সাহায্যেই জারী হয়। এ চাকুরী না করলে সে ভাতে মারা যাবে। আতা জবাবে এ আয়াতটি পাঠ করেন এবং বলেন, তোমার ভাইয়ের নিজের কলম ছুঁড়ে ফেলে দেয়া উচিত , রিযিকদাতা হচ্ছেন আল্লাহ । আর একজন কাতিব 'আমের শা'বীকে জিজ্ঞেস করেন, "হে আবু 'আমর! আমি শুধুমাত্র হুকুমনামা লিখে তা জারী করার দায়িত্ব পালন করি মূল ফায়সালা করার দায়িত্ব আমার নয়। এ জীবিকা কি আমার জন্য বৈধ ৷ " তিনি জবাব দেন , "হতে পারে কোন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে হত্যার ফায়সালা করা হয়েছে এবং তোমার কলম দিয়ে তা জারী হবে। হতে পারে, কোন সম্পদ নাহক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অথবা কারো গৃহ ধ্বসানোর হুকুম দেয়া হয়েছে এবং তা তোমার কলম দিয়ে জারী হচ্ছে" । তারপর ইমাম এ আয়াতটি পাঠ করেন। আয়াতটি শুনেই কাতিব বলে ওঠেন, "আজকের পর থেকে আমার কলম বনী উমাইয়ার হুকুমনামা জারী হবার কাজে ব্যবহৃত হবে না।" ইমাম বললেন, "তাহলে আল্লাহও তোমাকে রিযিক থেকে বঞ্চিত করবেন না।"
আবদুর রহমান ইবনে মুসলিম যাহ্হাককে শুধুমাত্র বুখারায় গিয়ে সেখানকার লোকদের বেতন বণ্টন করে দেবার কাজে পাঠাতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি সে দায়িত্ব গ্রহণ করতেও অস্বীকার করেন। তাঁর বন্ধুরা বলেন, এতে ক্ষতি কি ৷ তিনি বলেন, আমি জালেমদের কোন কাজেও সাহায্যকারী হতে চাই না।@
ইমাম আবু হানীফার একটি ঘটনা তাঁর নির্ভরযোগ্য জীবনীকারগণ আল মুওয়াফ্ফাক আল মক্কী, ইবনুল বায্যার আল কারওয়ারী, মুল্লা আলী কারী প্রমূখ সবাই তাঁদের গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। বলা হয়েছে , তারই পরামর্শক্রমে বাদশাহ মনসূরের প্রধান সেনাপতি হাসান ইবনে কাহ্তুবাহ একথা বলে নিজের পদ থেকে ইস্তফা দেন যে, আজ পর্যন্ত এতটুকুই যথেষ্ট। কিন্তু এ যদি জুলুমের পথে হয়ে থাকে তাহলে আমার আমল নামায় আমি আর কোন অপরাধের সংখ্যা বাড়াতে চাই না। )
আল্লাহ সর্বোৎকৃষ্ট অভিভাবক ও সাহায্যকারী �:
(হাজ্ব:৭৮) ...তিনি তোমাদের অভিভাবক, বড়ই ভালো অভিভাবক তিনি, বড়ই ভালো সাহায্যকারী তিনি৷
যিনি কিতাব নাযিল করেছেন, সাহায্যকারী তিনিই :
যিনি (আল্লাহ) কিতাব নাযিল করেছেন, সাহায্যকারী তিনিই : ৭:১৯৬,
�সত্যের প্রতিষ্ঠা করার জন্য যারা শেষ পর্যন্ত� সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তারা আল্লাহর সাহায্যকারী :
(হাজ্ব:৪০) ....আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন যারা তাঁকে সাহায্য করবে৷ আল্লাহ বড়ই শক্তিশালী ও পরাক্রান্ত৷
(এ বক্তব্যটি কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় উপস্থাপিত হয়েছে। বলা হয়েছে, যারা আল্লাহর বান্দাদেরকে তাওহীদের দিকে আহ্বান করে এবং সত্য দীন কায়েম ও মন্দের জায়গায় ভালোকে বিকশিত করার জন্য প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম চালায় তারা আসলে আল্লাহর সাহায্যকারী। কারণ এটি আল্লাহর কাজ। এ কাজটি করার জন্য তারা আল্লাহর সাথে সহযোগিতা করে। আরো বেশী ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন সূরা আলে ইমরান ৫০ টীকা।)
(বিস্তারিত দেখুন : জ > জিহাদ > সশস্ত্র যুদ্ধের অনুমতি দেওয়ার কারণ)
আসল সাহায্যকারী আল্লাহ, যারা তাঁর সাহায্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাদের প্রতি হুশিয়ারী :
(হাজ্ব:১৫) যে ব্যক্তি ধারণা করে, আল্লাহ দুনিয়ায় ও আখেরাতে তাকে কোনো সাহায্য করবেন না তার একটি রশির সাহায্যে আকাশে পৌঁছে গিয়ে ছিদ্র করা উচিত তারপর দেখা উচিত তার কৌশল এমন কোনো জিনিসকে (অর্থাৎ, আল্লাহর ফায়সালাকে) রদ করতে পারে কিনা যা তার বিরক্তি ও ক্ষোভের কারণ৷
(৩০-রূম: ৫) আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী ও মেহেরবান৷
আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ডেকোনা, কারণ ডাকে সাড়া দেবার ক্ষমতা তাদের নেই: এবং আল্লাহর মালিকানায় তাদের কোন অংশীদারিত্বও �নেই : তারা আল্লাহর সাহায্যকারীও নয় : �
(৩৪-সাবা: ২২) (হে নবী! এ মুশরিকদেরকে) বল, আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব মাবুদকে তোমরা নিজেদের উপাস্য মনে করে নিয়েছ তাদেরকে ডেকে দেখ৷ তারা না আকাশে কোন অনু পরিমাণ জিনিসের মালিক, না পৃথিবীতে৷ আকাশ ও পৃথিবীর মালিকানায় তারা শরীকও নয়৷ তাদের কেউ আল্লাহর সাহায্যকারীও নয়৷
আরো বিস্তারিত দেখুন : কারণ : কারণ : দোয়ায় সাড়া দেয়ার ক্ষমতা শরীকদের নেই
আল্লাহর সাহায্য লাভের শর্ত : কেবলমাত্র হকপন্থীদেরকেই আল্লাহ সাহায্য করেন :
(হাজ্ব:৩৮) ....নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো বিশ্বাসঘাতক কৃতঘ্নকে পছন্দ করেন না৷
(ব্যাখ্যা :হকপন্থী মু�মিন ও কাফেরদের এ সংঘাতে আল্লাহ কেন হকপন্থীদের সাথে একটি পক্ষ হন এটি হচ্ছে তার কারণ। এর কারণ হচ্ছে, হকের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত দ্বিতীয় পক্ষটি বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞ এবং নিয়মাত অস্বীকারকারী। আল্লাহ তার কাছে যেসব আমানত সোপর্দ করেছেন তার প্রত্যেকটিতে সে খেয়ানত করেছে এবং তাকে যেসব নিয়মাত দান করেছেন অকৃতজ্ঞতা, অস্বীকৃতি ও নেমকহারামির মাধ্যমে তার প্রত্যেকটির জবাব দিয়ে চলছে।কাজেই আল্লাহ তাকে অপছন্দ করেন এবং তার বিরুদ্ধে সংগ্রামরত হক-পন্থীদেরকে সাহায্য-সহায়তা দান করেন।)
তোমরা যেসব কথা (মিথ্যা অভিযোগ) তৈরী করছো, তার মোকাবিলায় দয়াময় আল্লাহই আমার সাহায্যকারী :
(২১:১১২) (শেষে) রসূল বললো : হে আমার রব! তুমি ন্যায়ের সাথে ফায়সালা করে দাও৷ আর হে লোকেরা ! তোমরা যেসব কথা তৈরি করছো তার মুকাবিলায় আমাদের দয়াময় রবই আমাদের সাহায্যকারী সহায়ক৷�
যারা কোথাও থেকে সাহায্য পাবে না :
(২১:৩৯) হায়! যদি এ কাফেরদের সেই সময়ের কিছু জ্ঞান থাকতো যখন এরা নিজেদের মুখ ও পিঠ আগুন থেকে বাঁচাতে পারবে না এবং এদেরকে কোথাও থেকে সাহায্যও করা হবে না৷
(বিস্তারিত দেখুন : জ > জাহান্নাম > জাহান্নামের আযাবের স্বরূপ। এবং,� অ > অবকাশ > অবকাশের মেয়াদ কোন পর্যন্ত ?)
(২১:৪৩) তাদের কাছে কি এমন কিছু ইলাহ আছে যারা আমার মুকাবিলায় তাদেরকে রক্ষা করবে ? তারা না নিজেদেরকে সাহায্য করতে পারে, না আমার সমর্থন লাভ করে৷
(মু�মিনুন:৬৫) ---এখন বন্ধ করো � তোমাদের আর্তচিৎকার আমার পক্ষ থেকে এখন কোন সাহায্য দেয়া হবে না ৷
(বিস্তারিত দেখুন : স > সাফল্য ও ব্যর্থতার আসল মাপকাঠি কি ?)
(ফুরকান:১৯) এভাবে মিথ্যা সাব্যস্ত করবে তারা (তোমাদের উপাস্যরা) তোমাদের কথাগুলোকে যা আজ তোমরা বলছো, তারপর না তোমরা নিজেদের দুর্ভাগ্যকে ঠেকাতে পারবে , না পারবে কোথাও থেকে সাহায্য লাভ করতে এবং তোমাদের মধ্য থেকে যে-ই জুলুম করবে তাকে আমি কঠিন শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাবো৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৪১) তাদেরকে আমি জাহান্নামের দিকে আহবানকারী নেতা করেছিলাম৫৭ এবং কিয়ামতের দিন তারা কোথাও থেকে কোন সাহায্য লাভ করতে পারবে না৷৪২) এ দুনিয়ায় আমি তাদের পেছনে লাগিয়ে দিয়েছি অভিসম্পাত এবং কিয়ামতের দিন তারা হবে বড়ই ঘৃণার্হ ও ধিকৃত৷৫৮ (ব্যাখ্যার জন্য দেখূন : ত > তাগুত > তাগুত হচ্ছে জাহা্ন্নামের দিকে আহ্বানকারী নেতা)
(৩৩-আহযাব: ৬৪) মোটকথা এ বিষয়টি নিশ্চিত যে, আল্লাহ কাফেরদেরকে অভিসপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য উৎক্ষিপ্ত আগুনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, ৬৫) যার মধ্যে তারা থাকবে চিরকাল, কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না৷
আল্লাহ যখন কোন অপরাধীকে শাস্তি দেন তখন তারা কোথাও থেকে সাহায্য পায়না :
�(২৮-ক্বাছাছ : ৮১) শেষ পর্যন্ত আমি তাকে ও তার গৃহকে ভূগর্ভে পুতে ফেললাম৷ তখন আল্লাহর মোকাবিলায় তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসার মতো সাহায্যকারীদের কোন দল ছিল না এবং সে নিজেও নিজেকে সাহায্য করতে পারলো না৷
(বিস্তারিত : ক > কারূন)
কুরআনের আয়াত শুনে যারা পিছনে ফিরে কেটে পড়ে তাদেরকে সাহায্য করা হবেনা :
(মু�মিনুন:৬৬) আমার আয়াত তোমাদের শোনানো হতো, তোমরা তো (রসূলের আওয়াজ শুনতেই ) পিছন ফিরে কেটে পড়তে।
(মু�মিনুন:৬৪) অবশেষে যখন আমি তাদের বিলাসপ্রিয়দেরকে আযাবের মাধ্যমে পাকড়াও করবো� তখন তারা আবার চিৎকার করতে থাকবে৬৫) ---এখন বন্ধ করো তোমাদের আর্তচিৎকার আমার পক্ষ থেকে এখন কোন সাহায্য দেয়া হবে না ৷
(মু�মিনুন:৬৭) অহংকারের সাথে তা অগ্রাহ্য করতে, নিজেদের আড্ডায় বসে তার সম্পর্কে গল্প দিতে ও আজেবাজে কথা বলতে ৷
শিরক : সাহায্যপ্রার্থী ও সাহায্যকারী উভয়ই দুর্বল যেখানে� :
মাছির উপমা:
(হাজ্ব:৭৩) হে লোকেরা! একটি উপমা দেয়া হচ্ছে, মনোযোগ দিয়ে শোনো৷ আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব উপাস্যকে তোমরা ডাকো তারা সবাই মিলে একটি মাছি সৃষ্টি করতে চাইলেও করতে পারবে না৷ বরং যদি মাছি তাদের কাছ থেকে কোনো জিনিস ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাহলে তারা তা ছাড়িয়েও নিতে পারবে না৷ সাহায্য প্রার্থীও দুর্বল এবং যার কাছে সাহায্য চাওয়া হচ্ছে সেও দুর্বল৷
জালেমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই:
(হাজ্ব:৭১) ....এ জালেমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই৷
(৩০-রূম: ২৯) কিন্তু এ জালেমরা না জেনে বুঝে নিজেদের চিন্তা-ধারণার পেছনে ছুটে চলছে৷ এখন আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেছেন কে তাকে পথ দেখাতে পারে? ৪১ এ ধরনের লোকদের কোন সাহায্যকারী হতে পারে না৷
৪১ . অর্থাৎ যখন কোন ব্যক্তি সহজ- সরল বুদ্ধির কথা নিজেও চিন্তা করে না এবং অন্যের বুঝাবার পরও বুঝতে চায় না তখন তাঁর বুদ্ধির ওপর আল্লাহর লানত বর্ষিত হয়। এরপর এমন প্রত্যেকটি জিনিস, যা কোন নিষ্ঠাবান ও বিবেকবান ব্যক্তিকে সত্যকথা পর্যন্ত পৌঁছাতে সাহায্য করে, তা এ হঠকারী মূর্খতাপ্রিয় ব্যক্তিকে আরো বেশি গোমরাহীতে লিপ্ত করতে থাকে। এ অবস্থাটিকেই প্রকাশ করা হয়েছে "পথ ভ্রষ্টতা" শব্দের মাধ্যমে। সত্যপ্রিয় মানুষ যখন আল্লাহর কাছে সঠিক পথনির্দেশ লাভের সুযোগ চায় তখন আল্লাহ তাঁর সত্য আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী তাঁর জন্য বেশি করে সঠিক পথনির্দেশের কার্যকারণসমূহ সৃষ্টি করে দেন। আর গোমরাহী প্রিয় মানুষ যখন গোমরাহীর ওপর টিকে থাকার জন্য জোর দিতে থাকে তখন আল্লাহ তাঁর জন্য আবার এমন সব কার্যকারণ সৃষ্টি করে যেতে থাকেন যা তাকে বিপথগামী করে দিনের পর দিন সত্য থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যেতে থাকে।
সাহস :
জিহাদের ময়দানে / যুদ্ধের মধ্যে আল্লাহ মু�মিনদের অন্তরে সাহস সঞ্চার করলেন :
৩:১২২-১২৮, ১৩৯, ১৪০, ১৪৬, ১৫০, ১৫৪, ৪:১৪১,
(২০:৪৫) (মূসা ও হারুন ) উভয়েই বললো, "হে আমাদের রব! আমাদের ভয় হয়, সে (ফেরাউন) আমাদের সাথে বাড়াবাড়ি করবে অথবা আমাদের ওপর চড়াও হবে�৷৪৬) আল্লাহ বললেন, �ভয় করো না, আমি তোমাদের সাথে আছি, সবকিছু শুনছি ও দেখছি৷
(বিস্তারিত দেখুন : জ > জিহাদ)
সাহাবা / সাহাবায়ে আযামাঈন :
সাহাবাদের সম্পর্কে কুরআনের বর্ণনা :
(৪৮: ২৯) মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল৷ আর যারা তাঁর সাথে আছে তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে আপোষহীন* এবং নিজেরা পরস্পর দয়া পরবশ৷** তোমরা যখনই দেখবে তখন তাদেরকে চেহারায় সিজদার চিহ্ন*** বর্তমান যা দিয়ে তাদেরকে আলাদা চিনে নেয়া যায়৷ তাদের এ পরিচয় তাওরাতে ****দেয়া হয়েছে৷ আর ইনযীলে তাদের উপমা পেশ করা হয়েছে এই বলে যে, একটি শস্যক্ষেত যা প্রথমে অঙ্কুরোদগম ঘটালো৷ পরে তাকে শক্তি যোগালো তারপর তা শক্ত ও মজবুত হয়ে স্বীয় কাণ্ডে ভর করে দাঁড়ালো৷ যা কৃষককে খুশী করে কিন্তু কাফের তার পরিপুষ্টি লাভ দেখে মনোকষ্ট পায়৷ এ শ্রেণীর লোক যারা ঈমান আনয়ন করছে এবং সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ও বড় পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷
(*মূল আয়াতাংশ হচ্ছে ( ) । আরবী ভাষায় বলা হয় নিজের উদ্দেশ্য সিদ্ধি করা তার জন্য কঠিন । কাফেরদের প্রতি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীদের কঠোর হওয়ার অর্থ এ নয় যে, তারা কাফেরদের সাথে রূঢ় এবং ক্রুদ্ধ আচরণ করেন, বরং এর অর্থ হচ্ছে, তারা তাদের ঈমানের পরিপক্কতা, নীতির দৃঢ়তার চারিত্রিক শক্তি এবং ঈমানী দূরদর্শিতার কারণে কাফেরদের মোকাবিলায় মজবুত পাথরের মত অনমনীয় ও আপোষহীন । তারা চপল বা অস্থিরমনা নন যে, কাফেররা তাদেরকে যেদিকে ইচ্ছা ঘুরিয়ে দেবে । তারা নরম ঘাস নন যে, কাফেররা অতি সহজেই তাদেরকে চিবিয়ে পিষে ফেলবে । কোন প্রকার ভয় দেখিয়ে তাদেরকে স্তব্ধ করা যায় না । কোন লোভ দেখিয়ে তাদের কেনা যায় না । যে মহত উদ্দেশ্যে তারা জীবন বাজি রেখে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত হয়েছেন তা থেকে তাদের বিচ্যুত করার ক্ষমতা কাফেরদের নেই ।
**অর্থাৎ তাদের মধ্যে যতটুকু কঠোরতা আছে তা কাফেরদের জন্য, ঈমানদারদের জন্য নয় । ঈমানদারদের কাছে তারা বিনম্র, দয়া, পরবশ, স্নেহশীল, সমব্যাথী ও দুঃখের সাথী । নীতি ও উদ্দেশ্যের ঐক্য তাদের মধ্যে পরস্পরের জন্য ভালবাসা, সাযুজ্য ও গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি করে দিয়েছে ।
*** সিজদা করতে করতে কোন কোন নামাযীর কপালে যে দাগ পড়ে তা এখানে বুঝানো হয়নি । এর দ্বারা বুঝানো হয়েছে আল্লাহভীরুতা, হৃদয়ের বিশালতা , মর্যাদা এবং মহৎ নৈতিক চরিত্রের প্রভাব যা আল্লাহর সামনে মাথা নত করার কারণে স্বাভাবিকভাবেই কোন মানুষের চেহারায় ফুটে ওঠে । মানুষের চেহারা একখানা খোলা গ্রন্থের মত যার পাতায় পাতায় মানুষের মনোজগতের অবস্থা সহজেই অবলোকন করা যেতে পারে । একজন অহংকারী মানুষের চেহারা একজন বিনম্র ও কোমল স্বভাব মানুষের চেহারা ভিন্ন হয়ে থাকে । একজন দুশ্চিরিত্র মানুষের চেহারা একজন সচ্চরিত্র ও সৎমনা মানুষের চেহারা থেকে আলাদা করে সহজে চেনা যায় । একজন গুণ্ডা ও দুশ্চরিত্রের চেহারা -আকৃতি এবং একজন সম্ভ্রান্ত ও পবিত্র ব্যক্তির চেহারা -আকৃতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য থাকে । আল্লাহ তা'আলার এ উক্তির উদ্দেশ্য হচ্ছে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এসব সংগী-সাথী এমন যে, কেউ তাদের একবার দেখা মাত্রই অনুধাবন করতে পারবে তারা সৃষ্টির সেরা । কারণ তাদের চেহারায় আল্লাহ ভীরুতার দীপ্তি সমুজ্জল । এ বিষয়টি সম্পর্কে ইমাম মালেক ( র) বলেন, সাহাবীদের সেনাদল যে সময় সিরীয় ভূখন্ডে প্রবেশ করে তখন সিরীয়ার খৃষ্টানরা বলেছিলোঃ ঈসার ( আ) হওয়ারীদের চালচলন সম্পর্কে আমরা যা যা শুনে আসছি এদের চালচলন দেখছি ঠিক তাই ।
৫৫. সম্ভবত 'এখানে বাইবেলের' দ্বিতীয় বিবরণ পুস্তকের ৩৩ অধ্যায়ের ২ ও ৩ শ্লোকের প্রতি ইংগিত দেয়া হয়েছে । যেখানে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে কল্যাণময় শুভ আগমের কথা বলতে গিয়ে তার সাহাবীদের জন্য "পবিত্রদের"শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে । এটি ছাড়া সাহাবায়ে কিরামের আর কোন গুণ বা পরিচয় যদি তাওরাতে বর্ণিত হয়ে থাকে তাহলে তা এখান এ বিকৃত তাওরাতে নেই ।
৫৬. হযরত ঈসা আলাইহি ওয়া সালামের একটি বক্তৃতায় এ উপমাটি বর্ণিত হয়েছে এবং বাইবেলের 'নুতন নিয়মে' তা উদ্ধৃত হয়েছে এভাবেঃ "তিনি আরো কহিলেন, ইশ্বরের রাজ্য এইরূপ । কোন ব্যক্তি যেন ভূমিতে বীজ বুনে; পরে রাত দিন নিদ্রা যায় ও উঠে, ইতিমধ্যে যে বীজ অঙ্কৃরিত হইয়া বাড়িয়া উঠে, কিরূপে তাহা সে জানে না । ভূমি আপনা আপনি ফল উৎপন্ন করে;প্রথমে অঙ্কুর পরে শীষে তাহার পর শীষের মধ্যে পূর্ণ শস্য । কিন্তু ফল পাকিলে সে তৎক্ষণাৎ কাস্তে লাগায় । কেননা শস্য কাটিবার সময় উপস্থিত । �����তাহা একটা সরিষা দানার তুল্য; সেই বীজ ভূমিতে বুনিবার সময় ভূমির সকল বীজের মধ্যে অতি ক্ষুদ্র বটে, কিন্তু বুনা হইলে তাহা অঙ্কুরিত হইয়া সকল শাক ইহতে বড় হইয়া ওঠে । এবং বড় বড় ডাল ফেলে; তাহাতে আকাশের পক্ষিগণ তাহার ছায়ার নীচে বাস করিতে পারে । " ( মার্ক, অধ্যায়, ৪, শ্লোক, ২৬ থেকে ৩২; এই বক্তৃতার শেষাংশ মথি লিখিত সুসমাচারের ১৩ অধ্যায়ের ৩১ ও ৩২ শ্লোকেও বর্ণিত হয়েছে)
৫৭. একদল এ আয়াতে ব্যবহৃত ( ) ও মিন শব্দটিকে ( ) অর্থে (অর্থাৎ তাদের কিছু সংখ্যক লোককে বুঝাতে) ব্যবহার করে আয়াতের অনুবাদ করেন, "তাদের মধ্যে যারা ঈমান গ্রহণ এবং নেক কাজ করেছে তাদেরকে ক্ষমা ও বড় পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । " এভাবে তারা সাহাবায়ে কিরামের ( রা) প্রতি দোষারোপের সুযোগ সৃষ্টি করে এবং দাবী করে যে, এ আয়াত অনুসারে সাহাবীদের ( রা) মধ্যে অনেকেই মু'মিন ও নেককার ছিলেন না । কিন্তু এ ব্যাখ্যা এ সূরারই ৪, ৫, ১৮ এবং ২৬ আয়াতের পরিপন্থী এবং এ আয়াতের প্রথমাংশের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় । যারা হুদাইবিয়াতে নবীর ( সা) সাথে ছিলেন ৪ও ৫ আয়াতের আল্লাহ তা'আলা তাদের মনে প্রশান্তি নাযিল করা ও তাদের ঈমান বৃদ্ধি করার কথা উল্লেখ করেছেন এবং কোন ব্যতিক্রম ছাড়াই তাদের সবাইকে জান্নাতে প্রবেশ করার কথা সুখবর দান করেছেন । আর যারা গাছের নীচে নবীর ( সা) কাছে বাইয়াত হয়েছিলেন ১৮ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা তাদের সবার জন্য তার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন । এ ক্ষেত্রেও কোন ব্যতিক্রমের উল্লেখ নেই । ২৬ আয়াতেও নবীর ( সা) সমস্ত সংগী-সাথীর জন্য মু'মিনীন, শব্দ ব্যবহার করেছেন, তাদের প্রতি তাঁর প্রশান্তি নাযিলের খবর দিয়েছেন এবং বলেছেন যে এসব লোক তাকওয়ার নীতি অনুসরণের অধিক যোগ্য ও অধিকারী । এখানেও একথা বলা হয়নি যে, তাদের মধ্যে যারা মু'মিন কেবল তাদের জন্যই এ সুসংবাদ দেয়া হচ্ছে । তাছাড়া এ আয়াতেও প্রথমাংশে যে প্রশংসা বাক্য বলা হয়েছে তা তাদের সবার জন্যে বলা হয়েছে যারা আল্লাহর রসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলেন । কথাটি হচ্ছে যারাই আপনার সাথে আছে এরূপ এবং এরূপ । এরপর আয়াতের শেষাংশে পৌছে একথা বলার এমন কি অবকাশ থাকতে পারে যে, তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক ঈমানদার ও নেককার ছিলেন এবং কিছু সংখ্যক লোক তা ছিলো না । তাই এখানে মিন শব্দটিকে ( ) অর্থে গ্রহণ করা বাক্য বিন্যাসের পরিপন্থী । প্রকৃতপক্ষে এখানে মিন শব্দটিকে স্পষ্ট করে বর্ণনা করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে, যেমন ( ) (মুর্তিসমূহের অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকো) । আয়াতে ( ) অর্থে ব্যবহৃত না হয়ে সুস্পষ্টরূপে বর্ণনার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে । তা না হলে আয়াতের অর্থ দাঁড়াবে মূর্তিসমূহের যেগুলো অপবিত্র সেগুলো থেকে দূরে থাকো । এর অর্থ হবে এই যে, কিছু মূর্তিকে পবিত্র বলেও ধরে নিতে হবে । আর সেগুলোর পূজা থেকে বিরত থাকা আবশ্যিক হবে না ।)
সাহবায়ে কেরামের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভ্রান্তি : তারা ছিলেন বাছাইকৃত মানুষ:
(হাজ্ব:৭৮) আল্লাহর পথে জিহাদ করো যেমন জিহাদ করলে তার হক আদায় হয়৷ তিনি নিজের কাজের জন্য তোমাদেরকে বাছাই করে নিয়েছেন।
(অর্থাৎ উপরে যে খিদমতের কথা বলা হয়েছে সমগ্র মানব জাতির মধ্য থেকে তোমাদেরকে তা সম্পাদন করার জন্য বাছাই করে নেয়া হয়েছে। এ বিষয়বস্তটি কুরআনের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন সূরা বাকারায় (১৪৩ আয়াত) এবং সরা আলে ইমরানে (১১০ আয়াত)বলা হয়েছে। ��এখানে একথাটিও জানিয়ে দেয়া সংগত মনে করি যে, সাহাবায়ে কেরামের মর্যাদা যেসব আয়াতের মাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং যেসব আয়াতের মাধ্যমে সাহাবায়ে কেরামের বিরুদ্ধে বিদ্রূপ ও দোষারোপকারীদের ভ্রান্তি প্রমাণিত হয় এ আয়াতটি সেগুলোর অন্তরভুক্ত। একথা সুস্পষ্ট যে, এ আয়াতে সরাসরি সাহাবায়ে কেরামকে সম্বোধন করা হয়েছে, অন্যলোকদের প্রতি সম্বোধন মূলত তাঁদেরই মাধ্যমে করা হয়েছে।�তাফহীমুল কুরআন)
সময় দেয়া, ঢিল দেয়া, ছেড়ে দেয়া :
আল্লাহ সময় দিয়ে যাচ্ছেন ঢিল দিয়ে যাচ্ছেন কারণ আল্লাহর� কৌশল অব্যর্থ : ৭:১৮৩, ১৮৬,� আল্লাহ তাদের অবাধ্যতার মধ্যে উদভ্রান্তের মত ঘুরে বেড়াবার জন্য ছেড়ে দেন।
সান্তনা :
(১২:১৫) এভাবে চাপ দিয়ে যখন তারা তাকে নিয়ে গেলো এবং সিদ্ধান্ত করলো তাকে একটি অন্ধ কূপে ফেলে দেবে তখন আমি ইউসুফকে অহীর মাধ্যমে জানিয়ে দিলাম, �এক সময় আসবে যখন তুমি তাদের এ কৃতকর্মের কথা স্মরণ করিয়ে দেবে৷ তাদের কাজের ফলাফল সম্পর্কে তারা জানে না৷
নবীগণের প্রতি আল্লাহর শান্তনা বানী : ভয় ও দুশ্চিন্তা করোনা :
(২৯-আনকাবুত:৩৩) তারপর যখন আমার প্রেরিতগণ লূতের কাছে পৌঁছলো তাদের আগমনে সে অত্যন্ত বিব্রত ও সংকুচিত হৃদয় হয়ে পড়লো৷ ৫৭ তারা বললো, � ভয় করো না এবং দুঃখও করো না৷ ৫৮
৫৭ . এ বিব্রতবোধ ও সংকুচিত হৃদয় হবার কারণ এই ছিল যে, ফেরেশতারা উঠতি বয়সের সুন্দর ও সুঠাম দেহের অধিকারী রূপ ধরে এসেছিলেন। হযরত লূত নিজের জাতির চারিত্রিক ও নৈতিক প্রবণতা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। তাই তাদের আসা মাত্রই পেরেশান হয়ে পড়েছিলেন এ জন্য যে, তিনি যদি এ মেহমানদেরকে অবস্থান করতে দেন তাহলে ঐ ব্যভিচারী জাতির হাত থেকে তাদেরকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে আর যদি অবস্থান করতে না দেন তাহলে সেটা হবে বড়ই অভদ্র আচরণ। তাছাড়া এ আশংকাও আছে,তিনি যদি এ মুসাফিরদেরকে আশ্রয় না দেন তাহলে অন্য কোথাও তাদের রাত কাটাতে হবে এবং এর অর্থ হবে যেন তিনি নিজেই তাদেরকে নেকড়ের মুখে ঠেলে দিলেন। এর পরের ঘটনা আর এখানে বর্ণনা করা হয়নি। সূরা হূদ ও কামারে এর বিস্তারিত বিবরণ এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, এ কিশোরদের আগমন সংবাদ শুনে শহরের বহু লোক হযরত লূতের গৃহে এসে ভীড় জমালো। তারা ব্যভিচার কর্মে লিপ্ত হবার উদ্দেশ্যে মেহমানদেরকে তাদের হাতে সোপর্দ করার জন্য চাপ দিতে লাগলো।
৫৮ . অর্থাৎ আমাদের ব্যাপারে। এরা আমাদের কোন ক্ষতি করবে এ ভয়ও করো না এবং এদের হাত থেকে কিভাবে আমাদের বাঁচাবে সে চিন্তাও করো না। এ সময়ই ফেরেশতারা হযরত লূতের কাছে এ রহস্য ফাঁস করেন যে, তারা মানুষ নন বরং ফেরেশতা এবং এ জাতির ওপর আযাব নাযিল করার জন্য তাদেরকে পাঠানো হয়েছে। সূরা হূদে এর বিস্তারিত বিবরণ এভাবে দেয়া হয়েছে, লোকেরা যখন একনাগাড়ে লূতের গৃহে প্রবেশ করে চলছিল এবং তিনি অনুভব করছিলেন এখন আর কোন ক্রমেই নিজের মেহমানদেরকে তাদের হাত থেকে বাঁচাতে পারবেন না তখন তিনি পেরেশান হয়ে চিৎকার করে বলেনঃ
----------------
"হায়! আমার যদি শক্তি থাকতো তোমাদের সোজা করে দেবার অথবা কোন শক্তিশালী সহায়তা আমি লাভ করতে পারতাম।"
এ সময় ফেরেশতারা বলেনঃ
--------------
"হে লূত !আমরা তোমার রবের প্রেরিত ফেরেশতা। এরা কখ্খনো তোমার কাছে পৌঁছতে পারবে না।"
আরো দেখুন : জ > জিহাদ > জিহাদের ময়দানে সান্তনা।
জিহাদের ময়দানে আল্লাহর সান্তনা / সাহায্য / বিজয় লাভের শর্ত :
৩:১২৫, ৩:১৩৯ (নিরাশ হয়োনা, দু:খ করোনা, তোমরা বিজয়ী হবে যদি তোমরা মু�মিন হও), ৩:১৪৬,
স্বাস্থ্য / �সুস্থতা :
(২৮-ক্বাছাছ : ২৬) মেয়ে দু'জনের একজন তার পিতাকে বললো, "আব্বাজান! একে চাকরিতে নিয়োগ করো, কর্মচারী হিসেবে ব্যক্তিই উত্তম হতে পারে যে বলশালী ও আমানতদার৷" ৩৭
৩৭. হযরত মূসার সাথে প্রথম সাক্ষাতের সময় মেয়েটি তার বাপকে একথা বলেছিল কিনা এটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে বেশির ভাগ সম্ভবনা এটাই যে, তার বাপ পরিচিত মুসাফিরকে দু-একদিন নিজের কাছে রেখে থাকবেন এবং এ সময়ের মধ্যে কথনো মেয়ে তার বাপকে এ পরামর্শ দিয়ে থাকবে। এ পরামর্শের অর্থ ছিল, আপনার বার্ধক্যের কারণে বাধ্য হয়ে আমাদের মেয়েদের বিভিন্ন কাজে বাইরে বের হতে হয়। বাইরের কাজ করার জন্য আমাদের কোন ভাই নেই। আপনি এ ব্যক্তিকে কর্মচারী নিযুক্ত করুন। সুঠাম দেহের অধিকারী বলশালী লোক। সবরকমের পরিশ্রমের কাজ করতে পারবে। আবার নির্ভরযোগ্যও । নিছক নিজের ভদ্রতা ও আভিজাত্যের কারণে সে আমাদের মতো মেয়েদেরকে অসহায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আমাদের সাহায্য করেছে এবং আমাদের দিকে কখনো চোখ তুলে তাকায়ওনি।
�
সমাজ / সামাজিকতা / সামাজিক নিয়ম কানুন :
অন্যের গৃহে প্রবেশ করার জন্য অনুমতি / সম্মতি নিতে হবে :
দেখুন : অ > অনুমতি ।
তিনটি সময়ে ঘরে প্রবেশ করার সময় অনুমতি নিতে হবে :
দেখুন : অ > অনুমতি ।
নিজেদের গৃহে প্রবেশ করার সময় সালাম দিবে :
দেখুন : অ > অনুমতি ।
অন্যের গৃহে খাওয়ার নিয়ম কানুন :
(নুর:৬১) কোন অন্ধ, খঞ্জ বা রুগ্ন (যদি কারোর গৃহে খেয়ে নেয় তাহলে) কোন ক্ষতি নেই, আর তোমাদের কোন ক্ষতি নেই নিজেদের গৃহে খেলে অথবা নিজেদের বাপ-দাদার গৃহে, নিজেদের মা-নানীর গৃহে, নিজেদের ভাইয়ের গৃহে, নিজেদের বোনের গৃহে, নিজেদের চাচার গৃহে, নিজেদের ফুফুর গৃহে, নিজেদের মামার গৃহে, নিজেদের খালার গৃহে অথবা এমন সব গৃহে যার চাবি তোমাদের হাতে সোপর্দ করে দেয়া হয়েছে কিংবা নিজেদের বন্ধুদের গৃহে ৷৯৫ তোমরা এক সাথে খাও বা আলাদা আলাদা , তাতে কোন ক্ষতি নেই৷৯৬
(৯৫ . এ আয়াতটি বুঝতে হলে তিনটি কথা বুঝে নেয়া প্রয়োজন । প্রথমত এ আয়াতটির দু'টি অংশ । প্রথম অংশটি রুগ্ন, খঞ্জ, অন্ধ ও অনুরূপ অন্যান্য অক্ষমদের ব্যাপারে এবং দ্বিতীয় অংশটি সাধারণ লোকদের ব্যাপারে বলা হয়েছে । দ্বিতীয়ত কুরআনের নৈতিক শিক্ষাবলীর মাধ্যমে আরববাসীদের মন-মানসে যে বিরাট বিপ্লব সাধিত হয়েছিল সে কারণে হালাল-হারাম ও জায়েয-নাজায়েযের পার্থক্যের ব্যাপারে তাদের অনুভূতি হয়ে উঠেছিল চরম সংবেদশীল । ইবনে আব্বাসের উক্তি অনুযায়ী আল্লাহ যখন তাদের হুকুম দিলেনঃ ---------- (একে অন্যের সম্পদ নাজায়েয পথে খেয়ো না) তখন লোকেরা একে অন্যের বাড়িতে খাবার ব্যাপারেও খুব বেশী সতর্কতা অবলম্বন করতে লাগলো । এমনকি যতক্ষণ গৃহ মালিকের দাওয়াত ও অনুমতি একেবারে আইনগত শর্ত অনুযায়ী না হতো ততক্ষণ তারা মনে করতো কোন আত্মীয় ও বন্ধুর বাড়ীতে খাওয়াও জায়েয নয় । তৃতীয়ত এখানে নিজেদের গৃহে খাবার যে কথা বলা হয়েছে তা অনুমতি দেবার জন্য নয় বরং একথা মনের মধ্যে বসিয়ে দেবার জন্য যে, নিজের আত্মীয় ও বন্ধুর বাড়িতে খাওয়াও ঠিক তেমন যেমন নিজের বাড়িতে খাওয়া। অন্যথায় একথা সবাই জানে, নিজের বাড়িতে খাবার জন্য করোর অনুমিত নেবার প্রয়োজন ছিল না । এ তিনটি কথা বুঝে নেয়ার পর আয়াতের এ অর্থ সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, অক্ষম ব্যক্তি নিজের ক্ষুধা নিবারণ করার জন্য প্রত্যেক গৃহে ও প্রত্যেক জায়গায় খেতে পারে । তার অক্ষমতাই সমগ্র সমাজে তার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে দেয় । তাই যেখান থেকেই সে খাবার জিনিস পাবে তা তার জন্য জায়েয হবে। আর সাধারণ লোকের বলা হয় যায়, তাদের জন্য তাদের নিজেদের গৃহ এবং যাদের কথা হয়েছে তাদের গৃহ সমান। তার মধ্যে যেখানেই তারা খাক না কেন সে জন্য গৃহস্বামীর যথারীতি অনুমতি পেলে তবে খাবে, অন্যথায় তা অবিশ্বস্ততা ও আত্মসাত বলে গণ্য হবে, এ ধরনের কোন শর্তের প্রয়োজন নেই। লোকেরা যদি তাদের মধ্য থেকে কারোর গৃহে যায়, সেখানে গৃহস্বামী উপস্থিত না থাকে এবং তার স্ত্রী-ছেলেমেয়েরা কিছু খাবার নিয়ে আসে তাহলে তারা নিসংকোচে তা খেতে পারে।
যেসব আত্মীয়-পরিজনের নাম এখানে উল্লেখ করা হয়েছে তাদের মধ্যে সন্তানদের উল্লেখ এ জন্য করা হয়নি যে, সন্তানদের গৃহ নিজেরই গৃহ হয়ে থাকে।
বন্ধুদের ব্যাপারে মনে রাখতে হবে, অন্তরঙ্গ বন্ধুদের কথা বলা হয়েছে, যাদের অনুপস্থিতিতে অতিথি বন্ধুরা যদি তাদের সবকিছু খেয়েও চলে যায় তাহলে তারা নারাজ হওয়া তো দূরের কথা উলটো আরো খুশিই হবে ।
৯৬ . প্রাচীন আরবের কোন কোন গোত্রের আচার ও রীতিনীতি এই ছিল যে, তারা প্রত্যেকে নিজের খাবার নিয়ে আলাদা বসে খেতো । তারা সবাই মিলে এক জায়গায় বসে খাওয়াটা খারাপ মনে করতো । যেমন হিন্দুরা আজো এটা খারাপ মনে করে। অন্য দিকে কোন কোন গোত্র আবার একাকী খাওয়া খারাপ মনে করতো । এমন কি সাথে কেউ খেতে না বসলে তারা অভুক্ত থাকতো । এ আয়াতটি এ ধরনের বিধি-নিষেধ খতম করার জন্য নাযিল করা হয়েছে।)
সমাজের অসৎ নিয়ম নীতি ও অভ্যাসের ছোয়া থেকে বেঁচে থাকার জন্য লূত আ: এর দোয়া :
(২৬.শুআরা:১৬৯) হে আমার রব! আমাকে ও আমার পরিবার পরিজন কে এদের কুকর্ম থেকে মুক্তি দাও৷
(এর এ অর্থও হতে পারে, তাদের খারাপ কাজের পরিণাম থেকে আমাদের বাঁচাও। আবার এ অর্থও হতে পারে, এই অসৎ লোকদের জনপদে যেসব নৈতিক আবর্জনা ছড়িয়ে রয়েছে আমাদের সন্তান-সন্ততিদের গায়ে যেন সেগুলোর স্পর্শ লেগে না যায়। ঈমানদারদের নিজেদের বংশধররা যেন নোংরা পরিবেশে প্রভাবিত না হয়ে পড়ে। কাজেই হে আমাদের রব! এ কলুষিত সমাজে জীবন যাপন করার ফলে আমরা যে সার্বক্ষণিক আযাবে লিপ্ত হচ্ছি তার হাত থেকে আমাদের বাঁচাও।)
(আরো দেখুন : দ >
অমুসলিমদের সাথে মুসলমানদের আচরণের রীতি :
ইসলাম শান্তি চায়, যুদ্ধ হলেও তাও শেষ অবলম্বন হিসেবে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই যুদ্ধ :
কোনো মুশরিক যদি তোমাদের কাছ নিরাপত্তা চায়, তাহলে তাকে তা দেবে, যেন সে আল্লাহর বাণী শোনার সুযোগ পায়। তারপর তাকে একটা নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাবে। আসলে তারা এমন একটা জাতি, যাদের জ্ঞান নেই। [আত-তাওবাহ ৯:৬]
�যদি অমুসলিম আক্রমণকারিরা নিজেদেরকে উঠিয়ে নেয়, আর যুদ্ধ না করে, তোমাদের সাথে শান্তি করতে চায়, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে কোনোই সুযোগ দেননি তাদের বিরুদ্ধে কিছু করার। [আন-নিসা ৪:৯০]
অমুসলিমরা যা বলে, তা ধৈর্য ধরে শোনো। � [ত্বাহা ২০:১৩০]
ধর্মের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। সত্য পথ মিথ্যা থেকে স্পষ্ট হয়ে গেছে।� [আল-বাক্বারাহ ২:২৫৬]
সামুদ জাতি :
সামুদ জাতির ঘটনা বিস্তারিত দেখুন :� ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত সালেহ আ:
সামেরী :
(২০:৮৫) তিনি বললেন, �ভালো কথা, তাহলে শোনো, আমি তোমার পেছনে তোমার সম্প্রদায়কে পরীক্ষায় ফেলে দিয়েছি এবং সামেরী তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে দিয়েছে�৷
( এটা ঐ ব্যক্তির নাম নয়। বরং শব্দের শেষে সম্বন্ধসূচক ইয়া () ব্যবহারের সুস্পষ্ট আলামত থেকে একথা জানা যায় যে, এটা গোত্র, বংশ বা স্থানের সাথে সম্পর্কিত কোন শব্দ। তারপর আবার কুরআন যেভাবে আসসামেরী বলে তার উল্লেখ করছে তা থেকে একথাও অনুমান করা যায় যে, সে সময় সামেরী গোত্র, বংশ বা স্থানের বহুলোক ছিল এবং তাদের এক বিশেষ ব্যক্তি ছিল বনী ইসরাঈলের মধ্যে স্বর্ণ নির্মিত গো-বৎস পূজার প্রচলনকারী এ সামেরী। কুরআনের এ জায়গার ব্যাখ্যার জন্য প্রকৃতপক্ষে এর চাইতে বেশী কিছু বর্ণনার দরকার নেই। কিন্তু এ জায়গায় যা বলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে খৃস্টান মিশনারীরা বিশেষ করে পাশ্চাত্যের প্রাচ্যবিদরা কুরআনের বিরুদ্ধে ব্যাপক আপত্তি উত্থাপন করেছেন। তারা বলেন, (নাউযুবিল্লাহ) এটা কুরআন রচয়িতার মারাত্মক অজ্ঞতার প্রমাণ। কারণ এ ঘটনার কয়েকশ' বছর পর খৃস্টপূর্ব ৯২৫ অব্দের কাছাকাছি সময় ইসরাঈলী সাম্রাজ্যের রাজধানী "সামেরীয়া" নির্মিত হয়। তারপর এরও কয়েকশ' বছর পর ইসরাঈলী ও অইসরাঈলীদের সমন্বয়ে শংকর প্রজন্মের উদ্ভব হয়, যারা "সামেরী" নামে পরিচিত হয়। তাদের মতে এই সামেরীদের মধ্যে অন্যান্য মুশরিকী বিদআতের সাথে সাথে সোনালী বাছুর পূজার রেওয়াজও ছিল এবং ইহুদীদের মাধ্যমে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লামের একথা শুনে নিয়ে থাকবেন, তাই তিনি একে নিয়ে হযরত মূসার যুগের সাথে জুড়ে দিয়েছেন এবং এ কাহিনী তৈরী করেছেন যে, সেখানে সোনার বাছুর পূজার প্রচলনকারী সামেরী নামে এক ব্যক্তি ছিল। এ ধরনের কথা এরা হামানের ব্যাপারেও বলেছে। কুরআন এই হামানকে ফেরাউনের মন্ত্রী হিসেবে পেশ করেছে। অন্যদিকে খৃস্টান মিশনারী ও প্রাচ্যবিদরা তাকে ইরানের বাদশাহ আখসোয়ার্সের সভাসদ ও উমরাহ "হামান" এর সাথে মিলিয়ে দিয়ে বলেন, এটা কুরআন রচয়িতার অজ্ঞতার আর একটা প্রমাণ। সম্ভবত এ জ্ঞান ও গবেষণার দাবীদারদের ধারণা প্রাচীন যুগে এক নামের একজন লোক, একটি গোত্র অথবা একটি স্থানই হতো এবং এক নামের দুজন লোক, গোত্র বা দুটি স্থান হবার আদৌ কোন সম্ভাবনাই ছিল না। অথচ প্রাচীনকালের একটি অতি পরিচিত জাতি ছিল সুমেরী। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের যুগে ইরাক ও তার আশপাশের এলাকায় এ জাতিটি বসবাস করতো। আর এ জাতির বা এর কোন শাখার লোকদেরকে মিসরে সামেরী বলা হতে পারে এর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তারপর এই সামেরীয়ার মূলের দিকেও নজর দিন। এরি সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতেই তো পরবর্তীকালে উত্তর ফিলিস্তীনের লোকদেরকে সামেরী বলা হতে থাকে। বাইবেলের বর্ণনা মতে ইসরাঈল রাজ্যের শাসক উমরী "সামেরী" (বা শেমর) নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি পাহাড় কিনেছিলেন যার ওপর পরে তিনি নিজের রাজধানী স্থাপন করেছিলেন। যেহেতু পাহাড়ের সাবেক মালিকের নাম সামর ছিল তাই এ শহরের নাম রাখা হয় সামেরিয়া(বা শামরিয়া) (১-রাজাবলী ১৬-২৪) এ থেকে পরিস্কার জানা যায়, সামেরিয়ার অস্তিত্বলাভের পূর্বে "সামর" নামক লোকের অস্তিত্ব ছিল এবং তার সাথে সম্পর্কিত হয়ে তার বংশ বা গোত্রের নাম সামেরী এবং স্থানের নাম সামেরীয়া হওয়া অবশ্যই সম্ভবপর ছিল।)
সামেরীর ধর্মব্যবসা :
(২০:৮৮) এবং আমরা স্রেফ সেগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলাম৷ তারপর� এভাবে সামেরীও কিছু ছুঁড়ে ফেললো এবং তাদের একটি বাছুরের মূর্তি বানিয়ে নিয়ে এলো, যার মধ্যে থেকে গরুর মতো আওয়াজ বের হতো৷ লোকেরা বলে উঠলো, �এ-ই তোমাদের ইলাহ এবং মূসারও ইলাহ, মূসা একে ভুলে গিয়েছে�৷৮৯) তারা কি দেখছিল না যে, সে তাদের কথারও জবাব দেয় না৷ এবং তাদের উপকার ও ক্ষতি করার কোন ক্ষমতাও রাখে না?
(সামেরী ছিল একজন পাকা ধর্মব্যবসায়ী, সে নবীর বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়ে লোকদের ধর্মীয় অনুভূতি (ইলাহর ইবাদত করতে হবে), এ অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে তাদেরকে বিপথে চালিত করলো এবং নিজে নেতা সেজে বসল)।
(২০:৯৫) মূসা বললো, �আর হে সামেরী তোমার কি ব্যাপার? ৯৬) সে জবাব দিল, �আমি এমন জিনিস দেখেছি যা এরা দেখেনি, কাজেই আমি রসূলের পদাংক থেকে এক মুঠো তুলে নিয়েছি এবং তা নিক্ষেপ করেছি, আমার মন আমাকে এমনি ধারাই কিছু বুঝিয়েছে৷
( এ আয়াতের ব্যাখ্যায় দুটি দলের পক্ষ থেকে অদ্ভুত ধরনের টানা হেঁচড়া করা হয়েছে।
একটি দলে আছেন প্রাচীন তাফসীরকারগণ এবং প্রাচীন পদ্ধতিতে তাফসীরকারীদের বৃহত্তম অংশ। তারা এর অর্থ বর্ণনা করেন, "সামেরী রসূল অর্থাৎ জিব্রীলকে যেতে দেখে নিয়েছিল এবং তাঁর পদাংক থেকে এক মুঠো মাটি উঠিয়ে নিয়েছিল। আর এই মাটি যখন বাছুরের মূর্তির মধ্যে রাখা হয়েছিল তখন তার অলৌকিক মহিমায় তার মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছিল প্রাণ স্পন্দন এবং একটি জীবন্ত বাছুরের মত হাম্বা রব তার মুখ থেকে বের হতে শুরু হয়েছিল"। অথচ সত্যিই যে এমনটি হয়েছিল তা অবশ্যি কুরআন বলছে না। কুরআন স্রেফ এতটুকু বলছে যে, হযরত মূসার প্রশ্নের জবাবে সামেরী একথা বানিয়ে বলেছিল। এ অবস্থায় আমরা বুঝতে পারছি না, মুফাসিরগণ কেমন করে একে একটি সত্য ঘটনা এবং কুরআন বর্ণিত যথার্থ সত্য মনে করে বসলেন।
দ্বিতীয় দলটি সামেরীর কথার অন্য একটি অর্থ করেন। তাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী সামেরী আসলে বলেছিল, "আমি রসুল অর্থাৎ মূসার দীনের মধ্যে এমন দুর্বলতা দেখেছিলাম যা অন্যেরা দেখতে পায়নি। তাই আমি একদিক থেকে তাঁর পদাংক অনুসরণ করেছিলাম কিন্তু পরে তা ত্যাগ করেছিলাম"। এ ব্যাখ্যাটি সম্ভবত সর্বপ্রথম করেন আবু মুসলিম ইসফাহানী। তারপর ইমাম রাযী একে নিজের তাফসীরে উদ্ধৃত করে এর প্রতি নিজের সমর্থন প্রকাশ করেন। বর্তমানে আধুনিক তাফসীরকারদের অধিকাংশই এ অর্থটিকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। কিন্তু তারা এ কথা ভুলে গেছেন যে, কুরআন ধাঁ ধাঁ ও হেঁয়ালির ভাষায় নাযিল হয়নি। বরং পরিস্কার ও সাধারণের বোধগম্য সহজ সরল আরবী ভাষায় নাযিল হয়েছে। একজন সাধারণ আরববাসী নিজের ভাষায় প্রচলিত স্বাভাবিক বাগধারা অনুযায়ী এর বক্তব্য বুঝতে সক্ষম। আরবী ভাষায় সাধারণ প্রচলিত বাকরীতি ও দৈনন্দিন কথোপকথনের শব্দাবলী সম্পর্কে অবগত কোন ব্যক্তি কখনো একথা মেনে নিতে পারে না যে, সামেরীর এ সামেরীর এ মনোভাব প্রকাশ করার জন্য সহজ সরল আরবী ভাষায় এমন সব শব্দ ব্যবহার করা হবে যা এ আয়াতের তাফসীরকারগণ বলেছেন। অথবা একজন সাধারণ আরবীয় একথাগুলো শুনে কখনো এমন অর্থ গহণ করতে পারে না যা এ তাফসীরকারগণ বর্ণনা করেছেন। অভিধান গ্রন্থ থেকে কোন একটি শব্দের এমন একাধিক অর্থ গ্রহণ করা যা বিভিন্ন প্রবাদে ব্যবহৃত হয়ে থাকে এবং তার মধ্য থেকে কোন একটি অর্থ নিয়ে এমন একটি বাক্যের সাথে সম্পৃক্ত করে দেয়া যেখানে একজন সাধারণ আরব কখনোই এ শব্দটিকে এ অর্থে ব্যবহার করে না-এটাতো ভাষাজ্ঞান হতে পারে না, তবে বাগাড়ম্বর হিসেবে মেনে নিতে আপত্তি নেই। 'ফরহংগে আসেফীয়া' নামক উর্দু অভিধান খানি অথবা 'অক্সফোর্ড ডিকশনারী' হাতে নিয়ে যদি কোন ব্যক্তি যথাক্রমে তাদের উর্দু ও ইংরেজী রচনাগুলো মধ্যে এ ধরনের কৃতিত্ব ফলাতে থাকেন, তাহলে সম্ভবত নিজেদের কথার দু-চারটি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ শুনেই তাদের লেখকরা চিৎকার করে উঠবেন। সাধারণত কুরআনের এ ধরনের ব্যাখ্যা এমন সময় করা হয় যখন এক ব্যক্তি কোন আয়াতের সহজ সরল অর্থ দেখে নিজে নিজেই একথা মনে করে থাকে যে, এখানে তো আল্লাহ তা'আলা বড়ই অসাবধান হয়ে গেছেন, এসো আমি তাঁর কথা এমনভাবে পেশ করে দিই যার ফলে তাঁর ভুলের পরদা ঢেকে যাবে এবং তাঁর বক্তব্য নিয়ে লোকদের হাসাহাসি করার সুযোগ থাকবে না।
এ বিবৃত চিন্তা পরিহার করে যে ব্যক্তিই এ বক্তব্য পরম্পরায় এ আয়াতটি পড়বে সে সহজে বুঝতে পারবে যে, সামেরী ছিল একজন ফিতনাবাজ ব্যক্তি। সে ভালোভাবে ভেবেচিন্তে ধোকা ও প্রতারণার একটি বিরাট পরিকল্পনা তৈরী করেছিল। সে কেবল একটি সোনার বাছুর তৈরী করে যে কোন কৌশলে তার মধ্যে গো-বৎসের হামবা রব সৃষ্টি করে দেয়নি এবং সমগ্র জাতি অজ্ঞ ও নির্বোধ লোকদের প্রতারিত করেনি বরং সে আরো দুঃসাহসী হয়ে খোদ হযরত মূসা আলাইহিস সালামকেও এমটি প্রতারণাপূর্ণ গল্প শুনিয়ে দিল। সে দাবী করলো, আমি এমন কিছু দেখেছি যা অন্যেরা দেখেনি। সাথে সাথে এ গল্পও শুনিয়ে দিল যে, রসুলের পদাংকের এক মুঠো মাটিই এ কেরামতি দেখিয়েছে। রসূল বলে সে জিব্রীলকেও নির্দেশ করতে পরে, যেমন প্রাচীন তাফসীরকারগণ মনে করেছেন। কিন্তু যদি একথা মনে করা হয় যে, রসূল শব্দটি বলে সে হযরত মূসাকে নির্দেশ করেছে, তাহলে এটা তার আর একটা প্রতারণা। সে এভাবে হযরত মূসাকে মানসিক উৎকোচ দিতে চাচ্ছিল, যাতে তিনি এটাকে তাঁর নিজের পদাংকের অলৌকিকতা মনে করে গর্বিত হন এবং নিজের অন্যান্য কেরামতির প্রচারণার জন্য সামেরীর প্রতারণা হিসেবেই পেশ করছে, নিজের পক্ষ থেকে প্রকৃত ঘটনা হিসেবে পেশ করছে না। তাই এতে এমন দুষনীয় কিছু ঘটেনি যে, তা প্রক্ষালনের জন্য অভিধান গ্রন্থগুলোর সাহায্যে অযথা বাগাড়ম্বর করার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। বরং পরবর্তী বাক্যগুলোতে হযরত মূসা যেভাবে তাকে ধিক্কার ও অভিশাপ দিয়েছেন এবং তার জন্য শাস্তি নির্ধারণ করেছেন তা থেকে পরিস্কার প্রতীয়মান হয় যে, তার বানানো এ প্রতারণাপূর্ণ গল্প শোনার সাথে সাথেই তিনি তা তার মুখের উপর ছুঁড়ে মেরেছিলেন।)
সামেরীর শাস্তি : ধর্ম ব্যবসার শাস্তি :
(২০:৯৭) মূসা বললো, �বেশ, তুই দুর হয়ে যা, এখন জীবনভর তুই শুধু একথাই বলতে থাকবি, আমাকে ছুঁয়ো না৷� আর তোর জন্য জবাবদিহির একটি সময় নির্ধারিত রয়েছে যা কখনোই তোর থেকে দূরে সরে যাবে না৷ আর দেখ, তোর এই ইলাহর প্রতি, যার পূজায় তুই মত্ত ছিলি, এখন আমরা তাকে জ্বালিয়ে দেবো এবং তার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশগুলো সাগরে ভাসিয়ে দেবো৷
সাম্রাজ্যবাদ :
আরো দেখুন : র > রাষ্ট্র > রাজনীতি।
পবিত্র কুরআনে সাম্রাজ্যবাদ এর ধারণা :
(২৭-নমল:২৯) (সূর্যপূজারী কাফের ) রাণী বললো, �হে দরবারীরা! আমার প্রতি একটি বড় গুরুত্বপূর্ণ পত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে৷৩০) তা সুলাইমানের পক্ষ থেকে এবং আল্লাহ্ রহমানুর রহীমের নামে শুরু করা হয়েছে৷� ৩১) বিষয়বস্তু হচ্ছে: �আমার অবাধ্য হয়ো না এবং মুসলিম হয়ে আমার কাছে হাজির হয়ে যাও৷
(২৭-নমল:৩৫) (সাবা সম্রাজ্যের সূর্যপূজারী কাফের রাণী বললো) আমি তাদের কাছে (সুলাইমান আ: এর কাছে) একটি উপঢৌকন পাঠাচ্ছি তারপর দেখছি তোমার দূত কি জবাব নিয়ে ফেরে৷� ৩৬) যখন সে (রাণীর দূত) সুলাইমানের কাছে পৌঁছুলো, সে বললো, তোমরা কি অর্থ দিয়ে আমাকে সাহায্য করতে চাও? আল্লাহ আমাকে যা কিছু দিয়েছেন তা তোমাদের যা কিছু দিয়েছেন তার চেয়ে অনেক বেশী৷ তোমাদের উপঢৌকন নিয়ে তোমরাই খুশি থাকো৷ ৩৭) (হে দূত!) ফিরে যাও নিজের প্রেরণকারীদের কাছে আমি তাদের বিরুদ্ধে এমন সেনাদল নিয়ে আসবো যাদের তারা মোকাবিলা করতে পারবে না এবং আমি তাদেরকে এমন লাঞ্ছিত করে সেখান থেকে বিতাড়িত করবো যে, তারা ধিকৃত ও অপমানিত হবে৷�
(অহংকার ও দাম্ভীকতার প্রকাশ এ কথার উদ্দেশ্য নয়। আসল বক্তব্য হচ্ছে, তোমাদের অর্থ-সম্পদ আমার লক্ষ্য নয় বরং তোমরা ঈমান আনো এটাই আমার কাম্য। অথবা কমপক্ষে যে জিনিস আমি চাই তা হচ্ছে, তোমরা একটি সৎজীবন ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার অনুসারী হয়ে যাও। এ দু'টি জিনিসের মধ্যে কোন একটিই যদি তোমরা না চাও, তাহলে ধন-সম্পদের উতকোচ গ্রহণ করে তোমাদেরকে এই শির্ক ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারী নোংরা জীবন ব্যবস্থার ব্যাপারে স্বাধীন ছেড়ে দেয়া আমার পে সম্ভব নয়। তোমাদের সম্পদের তুলনায় আমার রব আমাকে যা কিছু দিয়েছেন তা ঢের বেশী। কাজেই তোমাদের সম্পদের প্রতি আমার লোভাতুর হওয়ার প্রশ্নই উঠে না।)
(প্রথম বাক্য এবং পরবর্তী বাক্যটির মধ্যে একটি সূক্ষ্ম ফাঁক রয়ে গেছে। বক্তব্যটি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে এটি আপনা আপনিই অনুধাবন করা যায়। অর্থাৎ পুরো বক্তব্যটি এমনঃ হে দূত এ উপহার এর প্রেরকের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যাও। তাকে হয় আমার প্রথম কথাটি মেনে নিতে হবে অর্থাৎ মুসলিম হয়ে আমার কাছে হাজির হয়ে যেতে হবে আর নয়তো আমি সেনাদল নিয়ে তার ওপর আক্রমণ করবো।)
সালাম :
(১৯:৪৭) ইবরাহীম বললো, �আপনাকে সালাম৷ আমি আমার রবের কাছে আপনাকে মাফ করে দেবার জন্য দোয়া করবো৷ আমার রব আমার প্রতি বড়ই মেহেরবান৷ �
(নূর:২৭) হে ঈমানদাগণ ! নিজেদের গৃহ ছাড়া অন্যের গৃহে প্রবেশ করো না যতক্ষণ না গৃহবাসীদের সম্মতি লাভ করো এবং তাদেরকে সালাম করো ৷
(বিস্তারিত দেখুন : স > সামাজিকতা )
গৃহে প্রবেশ করার সময় সালাম দিবে :
(নুর:৬১) ....তবে গৃহে প্রবেশ করার সময় তোমরা নিজেদের লোকদের সালাম করো, আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত হয়েছে কল্যাণের দোয়া, বড়ই বরকতপূর্ণ ও পবিত্র ৷
জান্নাতবাসীদেরকে অভ্যর্থনা করা সালাম এর মাধ্যমে :
(২৫.ফুরকান:৭৫) (এরাই নিজেদের সবরের �ফল উন্নত মনজিলের আকারে পাবে৷ অভিবাদন ও সালাম সহকারে তাদের সেখানে অভ্যর্থনা করা হবে৷৭৬) তারা সেখানে থাকবে চিরকাল৷ কী চমৎকার সেই আশ্রয় এবং সেই আবাস!
تَحِيَّتُهُمْ يَوْمَ يَلْقَوْنَهُۥ سَلَـٰمٌۭ ۚ وَأَعَدَّ لَهُمْ أَجْرًۭا كَرِيمًۭا [٣٣:٤٤]
যেদিন তারা তাঁর সঙ্গে মোলাকাত করবে সেদিন তাদের সম্ভাষণ হবে ''সালাম��! আর তাদের জন্য তিনি তৈরী রেখেছেন এক মহান প্রতিদান।��� (৩৩-আহযাব: ৪৪)
মূলে বলা হয়েছেঃ تَحِيَّتُهُمْ يَوْمَ يَلْقَوْنَهُ سَلَامٌ �তার সাথে মোলাকাতের সময় সেদিন তাদের অভ্যর্থনা হবে সালাম� এর তিনটি অর্থ হতে পারে। এক, আল্লাহ নিজেই �আসসালামু আলাইকুম� বলে তাদেরকে অভ্যর্থনা করবেন। যেমন সূরা ইয়াসীন--এর ৫৮ আয়াত বলা হয়েছেঃ
سَلَامٌ قَوْلًا مِنْ رَبٍّ رَحِيمٍ
দুই, ফেরেশতারা তাদেরকে সালাম করবে। যেমন সূরা নাহলে বলা হয়েছেঃ
الَّذِينَ تَتَوَفَّاهُمُ الْمَلَائِكَةُ طَيِّبِينَ يَقُولُونَ سَلَامٌ عَلَيْكُمُ ادْخُلُوا الْجَنَّةَ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ
�ফেরেশতারা যাদের রূহ কবয করবে এমন অবস্থায় যখন তারা পবিত্র লোক ছিল, তাদেরকে তারা বলবে, শান্তি ও নিরাপত্তা হোক তোমাদের প্রতি, প্রবেশ করো জান্নাতে তোমাদের সৎকাজসমূহের বদৌলতে, যা তোমরা দুনিয়ায় করতে।�
(৩২ আয়াত)
তিন, তারা নিজেরাই পরস্পরকে সালাম করবে। সূরা ইউনুসে বলা হয়েছেঃ
دَعْوَاهُمْ فِيهَا سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَتَحِيَّتُهُمْ فِيهَا سَلَامٌ وَآخِرُ دَعْوَاهُمْ أَنِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
�সেখানে তাদের আওয়াজ হবে, হে আল্লাহ! পবিত্র তোমার সত্তা, তাদের অভ্যর্থনা হবে �সালাম� এবং তাদের কথা শেষ হবে এ বাক্য দিয়ে যে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ রব্বুল আলামিনের জন্যই।� (১০ আয়াত)
নবীগণের প্রতি সালাম :
(২৭.নমল:৫৯) (হে নবী!) বলো, প্রশংসা আল্লাহর জন্য এবং সালাম তার এমন সব বান্দাদের প্রতি যাদেরকে তিনি নির্বাচিত করেছেন৷
সাক্ষ্য� / শাহাদাত
(২১:৫৬) সে জবাব দিল, �না, বরং আসলে তোমাদের রব তিনিই যিনি পৃথিবী ও আকাশের রব এবং এদের স্রষ্টা৷ এর স্বপক্ষে আমি তোমাদের সামনে সাক্ষ দিচ্ছি৷
(১১:৪৩) বলো, �আমার ও তোমাদের মধ্যে আল্লাহর সাক্ষ যথেষ্ট এবং তারপর আসমানী কিতাবের জ্ঞান রাখে এমন প্রত্যেক ব্যক্তির সাক্ষ৷
(১৭:৯৬) হে মুহাম্মদ ! তাদেরকে বলে দাও, আমারও তোমাদের শুধু একমাত্র আল্লাহর সাক্ষই যথেষ্ট৷ তিনি নিজের বান্দাদের অবস্থা জানেন এবং সবকিছু দেখছেন৷
(২৯-আনকাবুত:৫২) (হে নবী ! ) বলো, �আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষ্যের জন্য আল্লাহই যথেষ্ঠ ৷
সাক্ষী দাঁড় করানো হবে কিয়ামতের দিন :
(১৬:৮৪) (সেদিন কি ঘটবে, সে ব্যাপারে এদের কি কিছুমাত্র হুঁশও আছে) যেদিন আমি উম্মতের মধ্য থেকে একজন করে সাক্ষী দাঁড় করাবো।
(অর্থাৎ সেই উম্মতের নবী বা এমন কোন ব্যক্তি নবীর তিরোধানের পর যিনি সেই উম্মতের তাওহীদ ও আল্লাহর আনুগত্যের দাওয়াত দিয়েছিলেন, তাদেরকে শিরক ও মুশরিকী চিন্তা - ভাবনা, ভ্রষ্টাচার ও কুসংস্কার সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন এবং কিয়ামতের ময়দানে জবাবদিহি করার ব্যাপারে সজাগ করে দিয়েছিলেন । তিনি এ মর্মে সাক্ষ দেবেন যে, তিনি তাদের কাছে সত্যের বাণী পৌঁছিয়ে দিয়েছিলেন । কাজেই যাকিছু তারা করেছে তা অজ্ঞতার কারণে নয় বরং জেনে বুঝেই করেছে ।)
(১৬:৮৯) (হে মুহাম্মাদ! এদেরকে সেই দিন সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে দাও) যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে একজন সাক্ষী দাঁড় করিয়ে দেবো, যে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ দেবে এবং এদের বিরুদ্ধে সাক্ষ দেবার জন্য আমি তোমাকে নিয়ে আসবো৷ (আর এ সাক্ষ্যের প্রস্তুতি হিসেবে) আমি এ কিতাব তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যা সব জিনিস পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে এবং যা সঠিক পথনির্দেশনা, রহমত ও সুসংবাদ বহন করে তাদের জন্য যারা আনুগত্যের শির নত করে দিয়েছে৷
(১৬:৯১) আল্লাহর অংগীকার পূর্ণ করো যখনই তোমরা তাঁর সাথে কোনো অংগীকার করো এবং নিজেদের কসম দৃঢ় করার পর আবার তা ভেঙে ফেলো না যখন তোমরা আল্লাহকে নিজের ওপর সাক্ষী বানিয়ে নিয়েছো৷ আল্লাহ তোমাদের সমস্ত কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৭৫) আর আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্য থেকে একজন সাক্ষী বের করে আনবো৯২
৯২. অর্থাৎ নবী, যিনি সংশ্লিষ্ট উম্মতকে সতর্ক করেছিলেন। অথবা নবীদের অনুসারীদের মধ্য থেকে এমন কোন হিদায়াত প্রাপ্ত ব্যক্তি যিনি সংশ্লিষ্ট উম্মতের মধ্যে সত্য প্রচারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিংবা কোন প্রচার মাধ্যম যার সাহায্যে সংশ্লিষ্ট উম্মতের কাছে সত্যের পয়গাম পৌঁছেছিল।
রাসুলগণ সাক্ষী মু�মিনগণের উপর আর মু�মিনগণ সাক্ষী সাধারণ লোকদের উপর :
(হাজ্ব:৭৮) ..যাতে রসূল তোমাদের ওপর সাক্ষী হন এবং তোমরা সাক্ষী হও লোকদের ওপর৷
(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, আল বাকারাহ, ১৪৪ টীকা। এর চাইতেও বিস্তারিত আকারে এ বিষয়টি আমার "সত্যের সাক্ষ" বইতে আলোচনা করেছি।�সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী)
মুহাম্মদ সা: কে প্রেরণ করা হয়েছে ১। সাক্ষী ২। সুসংবাদদাতা ৩। ভয় প্রদর্শনকারী ৪। আল্লাহর দিকে আহ্বনকারী ৪। সিরাজাম মুনীরা - উজ্জ্বল প্রদীপ হিসেবে :
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ إِنَّآ أَرْسَلْنَـٰكَ شَـٰهِدًۭا وَمُبَشِّرًۭا وَنَذِيرًۭا [٣٣:٤٥]وَدَاعِيًا إِلَى ٱللَّهِ بِإِذْنِهِۦ وَسِرَاجًۭا مُّنِيرًۭا [٣٣:٤٦]
(৩৩-আহযাব: ৪৫) হে নবী! ৮১ আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী বানিয়ে, ৮২ ৪৬) সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী করে ৮৩ আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারীরূপে ৮৪ এবং উজ্জ্বল প্রদীপ হিসেবে৷
(বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ম > মুহাম্মদ সা: এর জীবনী� > মুহাম্মদ সা: এর ৫ টি বৈশিষ্ট্য ।)
মুহাম্মদ সা: এর সাক্ষী হওয়ার অর্থ কি ?
(৩৩-আহযাব: ৪৫) হে নবী! আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী বানিয়ে, ৮২
৮২. নবীকে সাক্ষী করার অত্যন্ত ব্যাপক অর্থবোধক। তিন ধরনের সাক্ষ প্রদান এর অন্তরভুক্তঃ
একঃ মৌখিক সাক্ষদান। অর্থাৎ আল্লাহর দীন যেসব সত্য ও মূলনীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত নবী তার সত্যতার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে যাবেন এবং দুনিয়াবাসীকে পরিষ্কার বলে দেবেন, এটিই সত্য এবং এর বিরুদ্ধে যা কিছু আছে সবই মিথ্যা। আল্লাহর অস্তিত্ব ও তাঁর একত্ব, ফেরেশতাদের অস্তিত্ব, অহী নাযিল হওয়া, মৃত্যু পরবর্তী জীবনের অনিবার্যতা এবং জান্নাত ও জাহান্নামের প্রকাশ, দুনিয়া বাসীদের কাছে যতই অদ্ভুত মনে হোক না কেন এবং তারা একথাগুলোর বক্তাকে যতই বিদ্রুপ করুক বা তাকে পাগল বলুক না কেন, নবী কারো পরোয়া না করেই দাঁড়িয়ে যাবেন এবং সোচ্চার কন্ঠে বলে দেবেন, এসব কিছুই সত্য এবং যারা এসব মানে না তারা পথভ্রষ্ট। এভাবে নৈতিকতা ও সভ্যতা-সংস্কৃতির যে ধারণা, মূল্যবোধ, মূলনীতি ও বিধান আল্লাহ তাঁর সামনে সুস্পষ্ট করেছেন সেগুলোকে সারা দুনিয়ার মানুষ মিথ্যা বললেও এবং তারা তার বিপরীত পথে চললেও নবীর কাজ হচ্ছে সেগুলোকেই প্রকাশ্য জনসমক্ষে পেশ করবেন এবং দুনিয়ায় প্রচলিত তার বিরোধী যাবতীয় পদ্ধতিকে ভ্রান্ত ঘোষণা করবেন। অনুরূপভাবে আল্লাহর শরীয়াতে যা কিছু হালাল সারা দুনিয়া তাকে হারাম মনে করলেও নবী তাকে হালালই বলবেন। আর আল্লাহর শরীয়াতে যা হারাম সারা দুনিয়া তাকে হালাল ও ভালো গণ্য করলেও নবী তাকে হারামই বলবেন।
দুইঃ কর্মের সাক্ষ। অর্থাৎ দুনিয়ার সামনে যে মতবাদ পেশ করার জন্য নবীর আবির্ভাব হয়েছে তিনি নিজের জীবনের সমগ্র কার্মকান্ডের মাধ্যমে তার প্রদর্শনী করবেন। যে জিনিসকে তিনি মন্দ বলেন তাঁর জীবন তার সকল প্রকার গন্ধমুক্ত হবে। যে জিনিসকে তিনি ভালো বলেন তাঁর চরিত্রে তা পূর্ণমাত্রায় দেদীপ্যমান হবে। যে জিনিসকে তিনি ফরয কলেন তা পালন করার ক্ষেত্রে তিনি সবচেয়ে অগ্রণী হবেন। যে জিনিসকে তিনি গোনাহ বলেন তা থেকে দূরো থাকার ব্যাপারে কেউ তাঁর সমান হবে না। যে জীবন বিধানকে তিনি আল্লাহ প্রদত্ত জীবন বিধান বলেন তাকে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে তিনি কোন প্রচেষ্টার ত্রুটি করবেন না। তিনি নিজের দাওয়াতে ব্যাপারে কতটা সত্যনিষ্ঠ ও আন্তরিকতা তাঁর নিজের চরিত্র ও কার্যধারণাই সাক্ষ দেবে। তাঁর সত্তা তাঁর শিক্ষর এমন মুর্তিমান আদর্শ হবে, যা দেখে প্রত্যেক ব্যক্তি জানবে, যে দীনের দিকে তিনি দুনিয়াবাসীকে আহবান জানাচ্ছেন তা কোন মানের মানুষ তৈরি করতে চায়, কোন ধরনের চরিত্র সৃষ্টি তার লক্ষ্য এবং তার সাহায্যে সে কোন ধরনের জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা করে।
তিনঃ পরকালীন সাক্ষ। অর্থাৎ আখেরাতে যখন আল্লাহর আদালত প্রতিষ্ঠিত হবে তখন নবী এ মর্মে সাক্ষ দেবেন, তাঁকে যে পয়গাম দেয়া হয়েছিল তা তিনি কোন প্রকার কাটছাঁট ও কমবেশী না করে হুবহু মানুষের কাছে পৌঁছিয়ে দিয়েছেন এবং তাদের সামনে নিজের কথা ও কর্মের মাধ্যমে সত্যকে সুস্পষ্ট করে তুলে ধরার ব্যাপারে সামান্যতম ত্রুটি করেননি। এ সাক্ষের ভিত্তিতে তার বানী মান্যকারী কি পুরস্কার পাবে এবং অমান্যকারী কোন ধরনের শাস্তির অধিকারী হবে তার ফায়সালা করা হবে।
এ থেকে অনুমান করা যেতে পারে, নবী (সাঃ) কে সাক্ষদানের পর্যায়ে দাঁড় করিয়ে দিয়ে আল্লাহ তাঁর প্রতি কবত বড় দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন এবং এত উচ্চ স্থানে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য কত মহান ব্যক্তিত্বের প্রয়োজন। একথা স্পষ্ট, কথা ও কর্মের মাধ্যমে আল্লাহর সত্য দীনের সাক্ষ প্রদান করার ক্ষেত্রে নবী (সাঃ) এর তিল পরিমাণও ত্রুটি হয়নি। তবেই তো তিনি আখেরাতে এই মর্মে সাক্ষ দিতে পারবেন, আমি লোকদের সামনে সত্যকে পুরোপুরি সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছিলাম। আর তবেই তো আল্লাহর প্রমাণ (হুজ্জাত) লোকদের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। অন্যথায় যদি সাক্ষ দেবার ব্যাপারে এখানে নাউযুবিল্লাহ তাঁর কোন ত্রুটি থেকে যায়, তাহলে না তিনি আখেরাতে তাদের জন্য সাক্ষী হতে পারবেন আর না সত্য অমান্যকারীদের অপরাধ সত্য প্রমাণিত হতে পারবে।
কেউ কেউ এ সাক্ষদানকে এ অর্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন যে, নবী (সাঃ) আখেরাতে লোকদের কাজের ওপর সাক্ষ দেবেন এবং এ থেকে তারা একথা প্রমাণ করেন যে, নবী করীম (সা) সকল মানুষের কার্যক্রম দেখছেন অন্যথায় না দেখে কেমন করে সাক্ষ দিতে পারবেন৷ কিন্তু কুরআন মজীদের দৃষ্টিতে এ ব্যাখ্যা একবারেই ভ্রান্ত। কুরআন আমাদের বলে, লোকদের কার্যক্রমের ওপর সাক্ষ কায়েম করার জন্য তো আল্লাহ অন্য একটি ব্যবস্থা করেছেন। এ উদ্দেশ্যে তাঁর ফেরেশতারা প্রত্যেক ব্যক্তির আমলনামা তৈরি করছে। দেখুন সূরা কাফ ১৭-১৮ আয়াত এবং আল কাহ্ফ ১৪৯ আয়াত) আর এ জন্য তিনি মানুষের নিজের অংগ প্র্রত্যংগেরও সাক্ষ নেবেন। (সূরা ইয়াসীন, ৬৫; হা মীম আস সাজদাহ, ২০-২১) বাকী রইলো নবীগণের ব্যাপার। আসলে নবীগণের কাজ বান্দাদের কার্যক্রমের ওপর সাক্ষ দেয়া নয় বরং বান্দাদের কাছে যে সত্য পৌঁছিয়ে দেয়া হয়েছিল, সে বিষয়ে তারা সাক্ষ দেবেন। কুরআন পরিষ্কার বলেঃ "যেদিন আল্লাহ সমস্ত রসূলকে সমবেত করবেন তারপর জিজ্ঞেস করবেন; তোমাদের দাওয়অতের কি জবাব দেয়া হয়েছিল৷ তখন তারা বলবে, আমাদের কিছুই জানা নেই। সমস্ত অজ্ঞাত ও অজানা কথাতো একমাত্র তুমিই জানো।' (আল মা-য়েদাহ, ১০৯)
আর এ প্রসংগে হযরত ঈসা (আঃ) সম্পর্কে কুরআন বলে, যখন তাঁকে ঈসায়ীদের গোমরাহী সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে তখন তিনি বলবেনঃ
(আরবী)
"আমি যতদিন তাদের মধ্যে ছিলাম ততদিন পর্যন্ত তাদের ওপর সাক্ষী ছিলাম। যখন আপনি আমাকে উঠিয়ে নিয়েছেন তখন আপনিই তাদের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন।" (আল মা-য়েদাহ, ১১৭)
নবীগন যে মানুষের কাজের ব্যাপারে সাক্ষী হবে না এ সম্পর্কে এ আয়াতটি স্পষ্ট । তাহলে তারা সাক্ষী হবেন কোন জিনিসের ৷ এর পরিষ্কার জবাব কুরআন এভাবে দিয়েছেঃ
--------------------
"আর হে মুসলমানগণ! এভাবে আমি তোমাদেরকে করেছি একটি মধ্যপন্থী উম্মাত, যাতে কোমরা লোকদের ওপর সাক্ষী হবে এবং রসূল তোমাদের ওপর সাক্ষী হন।" (আল বাকারাহ, ১৪৩)
------------
"আর যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যে তাদেরই মধ্যে থেকে একজন সাক্ষী উঠিয়ে দাঁড়া করিয়ে দেবো, যে তাদের ওপর সাক্ষ দেবে এবং (হে মাহাম্মাদ ) তোমাকে এদের ওপর সাক্ষী হিসেবে নিয়ে আসবো।"(আন নাহল, ৮৯)
এ থেকে জানা যায় কিয়ামতের দিন নবী (সাঃ) এর উম্মাতকে এবং প্রত্যেক উম্মাতের ওপর সাক্ষদানকারী সাক্ষীদেরকে যে ধরনের সাক্ষদান করার জন্য ডাকা হবে নবী (সাঃ) এর সাক্ষ তা থেকে ভিন্ন ধরনের হবে না। একথা সুস্পষ্ট যে, এটা যদি কার্যাবলীর সাক্ষদান হয়ে থাকে, তাহলে সে সবের উপস্থিত ও দৃশ্যমান হওয়াও অপরিহার্য হয়ে দাঁড়ায়। আর মানুষের কাছে তার স্রষ্টার পয়গাম পৌঁছে গিয়েছিল কিনা কেবল এ বিষয়ের সাক্ষ দেয়ার জন্য যদি এ সাক্ষীদেরকে ডাকা হয়, তাহলে অবশ্যই নবী করীমকে (সা)ও এ উদ্দেশ্যেই পেশ করা হবে। বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ ও ইমাম আহমাদ প্রমুখগণ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস, আবুদ দারদা, আনাস ইবনে মালেক ও অন্যান্য বহু সাহাবা থেকে যে হাদসিগুলো উদ্ধৃত করেছেন সেগুলোও এ বিষয়বস্তুর সমর্থক সেগুলোর সম্মিলিত বিষয়বস্তু হচ্ছেঃ নবী (সাঃ) কিয়ামতের দিন দেখবেন তাঁর কিছু সাহাবীকে আনা হচ্ছে কিন্তু তারা তাঁর দিকে না এসে অন্যদিকে যাচ্ছে অথবা তাদেরকে ধাক্কা দিয়ে অন্য দিকে নিয়ে যাওয়া হবে।নবী করীম (সা) তাদেরকে দেখে নিবেদন করবেন, হে আল্লাহ ! এরা তো আমার সাহাবী। একথায় আল্লাহ বলবেন, তুমি জানো না তোমার পর এরা কি সব কাজ করেছে। এ বিষয়বস্তুটি এত বিপুল সংখ্যক সাহাবী থেকে এত বিপুল সংখ্যক সনদ সহকারে বর্ণিত হয়েছে যে, এর নির্ভুলতায় সন্দেহ পোষণ করার কোন অবকাশ নেই। আর এ থেকে একথাও সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, নবী (সাঃ) নিজের উম্মাতের প্রত্যেক ব্যক্তির এবং তার প্রত্যেকটি কাজের দর্শক মোটেই নন। তবে যে হাদীসে বলা হয়েছে যে, নবী (সা) এর সামনে তাঁর উম্মাতের কার্যাবলী পেশ করা হয়ে থাকে সেটি কোনক্রমেই এর সাথে সংঘর্ষশীল নয়। কারণ তার মূল বক্তব্য শুধুমাত্র এতটুকু যে, মহান আল্লাহ নবী করীমকে (সা) তাঁর উম্মাতের কার্যাবলী সম্পর্কে অবহিত রাখেন। তার এ অর্থ কোথা থেকে পাওয়া যায় যে, তিনি প্রত্যেক ব্যক্তির কার্যকলাপ চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করছেন ৷
সাক্ষ্য / সাক্ষী :
রহমানের বান্দা তারাই যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না :
(২৫.ফুরকান:৭২) (আর রহমানের বান্দা হচ্ছে তারা) যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না।
(বিস্তারিত: র > রহমান > রহমানের বান্দা কারা ? )
কিয়ামতের ময়দানে শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ হাত পা অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে :
দেখুন : প > পরকাল > সাক্ষী।
ইসলামী বিচারব্যবস্থায় সাক্ষ্যদান পদ্ধতি : (বিস্তারিত দেখুন : ব > বিচার ব্যবস্থা)
(১২:২৬) ইউসুফ বললো, � সে-ই আমাকে ফাঁসাবার চেষ্টা করছিল৷� �মহিলাটির নিজের পরিবারের একজন (পদ্ধতিগত) সাক্ষ দিল,�যদি ইউসুফের জামা সামনের দিক থেকে ছেঁড়া থাকে তাহলে মহিলাটি সত্য কথা বলেছে এবং সে মিথ্যুক ২৭) আর যদি তার জামা পেছনের দিক থেকে ছেঁড়া থাকে তাহলে মহিলাটি মিথ্যা কথা বলেছে এবং সে সত্যবাদী৷�২৮) স্বামী যখন দেখলো ইউসুফের জামা পেছনের দিক থেকে ছেঁড়া তখন বললো, �এসব তোমাদের মেয়েলোকদের ছলনা৷ সত্যিই বড়ই ভয়ানক তোমাদের ছলনা! ২৯) হে ইউসুফ! এ ব্যাপারটি উপেক্ষা করো৷ আর হে নারী! তুমি নিজের অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো, তুমিই আসল অপরাধী�
মিথ্যা সাক্ষ্য:
(১২:২৫) উভয়েই দরজার ওপর তার ওপর তার স্বামীকে উপস্থিত পেলো৷ তাকে দেখতেই মহিলাটি বলতে লাগলো, �তোমার পরিবারের প্রতি যে অসৎ কামনা পোষণ করে তার কি শাস্তি হতে পারে ? তাকে কারগারে প্রেরণ করা অথবা কঠোর শাস্তি দেয়া ছাড়া আর কি শাস্তি দেয়া যেতে পারে ?�
মিথ্যা সাক্ষ্য থেকে দূরে থাকো :
(হাজ্ব:৩০)......মিথ্যা কথা থেকে দূরে থাকো।
(যদিও শব্দগুলো এখানে ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে এবং এ থেকে প্রত্যেকটি মিথ্যা, অপবাদ ও মিথ্যা সাক্ষের হারাম হওয়া প্রমাণ হয় তবুও এ সূরার এ পর্যায়ের আলোচনায় বিশেষভাবে এমনসব বাতিল আকিদা-বিশ্বাস বিধি-বিধান, রীতি-রেওয়াজ ও কল্পনা-কুসংস্কারের প্রতি ইংগিত করা হয়েছে যেগুলোর ওপর কুফরী ও শিরকের ভিত গড়ে উঠেছে। আল্লাহর সাথে অন্যদেরকে শরীক করা এবং তাঁর সত্তা, গুণাবলী, ক্ষমতা ও অধিকারে তাঁর বান্দাদেরকে অংশীদার করা সবচেয়ে বড় মিথ্যা। এ থেকে এখানে নিষেধ করা হয়েছে। আবার আরবের মুশরিকরা যে মিথ্যার ভিত্তিতে "বাহীরা", "সায়েবা" ও "হাম" ইত্যাদিকে হারাম গণ্য করতো তাও এ ফরমানের সরাসরি আওতাধীনে এসে যায়। যেমন সূরা আন্ নাহল-এ বলা হয়েছেঃ
(আরবী)
"আর তোমাদের কন্ঠ যে মিথ্যা বিধান দিয়ে থাকে যে, এটা হলাল এবং এটা হারাম, এ ধরনের বিধান দিয়ে আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপ করো না।" (১১৬ আয়াত)
এ সংগে মিথ্যা সাক্ষ ও মিথ্যা কসমও একই বিধানের আওতায় আসে। যেমন বিভিন্ন সহীহ হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে উদ্ধৃত হয়েছে। তিনি বলেছেনঃ
(আরবী)
"মিথ্যা সাক্ষ দেওয়াকে আল্লাহর সাথে শিরক করার সমান পর্যায়ে রাখা হয়েছে।"
এরপর তিনি প্রমাণ হিসেবে এ আয়াতটি পেশ করছেন। ইসলামী আইনে এ অপরাধটি শাস্তিযোগ্য। ইমাম আবু ইউসুফ (র) ও ইমাম মুহাম্মাদের (র) ফতোয়া হচ্ছে, যে ব্যক্তি আদালতে মিথ্যা সাক্ষদাতা প্রমাণিত হয়ে যাবে তার নাম চারদিকে প্রচার করে দিতে হবে এবং তাকে দীর্ঘ কাল অন্তরীণ রাখার শাস্তি দিতে হবে। হযরত উমর ও (রা) একথাই বলেছেন এবং কার্যত এ পদক্ষেপই নিয়েছেন। মাকহূলের বর্ণনা হচ্ছে, হযরত উমর (রা) বলেছেন এবং কার্যত এ পদক্ষেপই নিয়েছেন। মাকহূলের বর্ণনা হচ্ছে, হযরত উমর (রা) বলেন,
(আরবী)
"তার পিঠে চাবুক মারতে হবে, মাথা ন্যাড়া করে দিতে হবে, মুখ কালো করে দিতে হবে এবং দীর্ঘকাল অন্তরীণ রাখার শাস্তি দিতে হবে।"
আবদুল্লাহ ইবনে আমের নিজের পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেনঃ হযরত উমরের (রা) আদালতে এক ব্যক্তি সাক্ষ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ফলে তিনি তাকে একদিন প্রকাশ্য জনসমাগমের স্থানে দাঁড় করিয়ে রাখেন এবং ঘোষণা করে দেন যে, এ ব্যক্তি হচ্ছে ওমুকের ছেলে ওমুক এ মিথ্যা সাক্ষ দিয়েছে, একে চিনে রাখো। তারপর তাকে কারাগারে আটক করেন। বর্তমান কালে এ ধরনের লোকের নাম খবরের কাগজে ছেপে দিলেই ব্যাপক প্রচারের উদ্দেশ্য হাসিল হতে পারে।)
কাদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয় ?
(নূর:৪) আর যারা সতী-সাধ্বী নারীর ওপর অপবাদ লাগায়, তারপর চারজন সাক্ষী আনে না , তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করো এবং তাদের সাক্ষ্য কখনো গ্রহণ করো না ৷ তারা নিজেরাই ফাসেক ৷
সাক্ষাৎ� / সাক্ষাত :
আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ :
�অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর সাথে সাক্ষাতে বিশ্বাস করেনা :
(৩০-রূম: ৮) .....কিন্তু অনেকেই তাদের রবের সাক্ষাতে বিশ্বাস করে না৷ ৭
৭ . অর্থাৎ মৃত্যুর পর নিজের রবের সামনে হাজির হতে হবে, একথা বিশ্বাস করে না।
যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আশা পোষণ করেনা :
যারা আমার সাথে সাক্ষাৎ করার আশা পোষণ করে না তাদেরকে আমি তাদের অবাধ্যতার মধ্যে দিশেহারা হয়ে ঘুরে বেড়াবার জন্য ছেড়ে দেই :১০:১১,
তিনি নিদর্শনাবলী খুলে খুলে বর্ণনা করেন, সম্ভবত তোমরা নিজের রবের সাথে সাক্ষাতের ব্যাপারটি নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করবে৷-১৩:২,
(২৯-আনকাবুত:২৩) যারা আল্লাহর আয়াত এবং তার সাথে সাক্ষাত অস্বীকার করে , তারা আমার রহমত থেকে নিরাশ হয়ে গেছে �এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি৷
পরকালের দিনের সাক্ষাতকারকে ভুলে গিয়েছিলে, এখন মজা ভোগ কর :
(৩২- আস-সাজদা : ১৪) কাজেই আজকের দিনের এ সাক্ষাতকারের কথা ভুলে গিয়ে তোমরা যে কাজ করেছো এখন তার মজা ভোগ কর৷ ২৫ আমিও এখন তোমাদের ভুলে গিয়েছি, নিজেদের কর্মফল হিসেবে চিরন্তন আযাবের স্বাদ আস্বাদন করতে থাকো৷ �
২৫ . অর্থাৎ একদিন যে নিজের রবের সামনে যেতে হবে একথা দুনিয়ায় আয়েশ- আরামে মত্ত হয়ে একদম ভুলে গেছো ।
যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আশা পোষণ করে :
(১৮:১১০) হে মুহাম্মাদ! বলো, আমি তো একজন মানুষ তোমাদেরই মতো, আমার প্রতি অহী করা হয় এ মর্মে যে, এক আল্লাহ তোমাদের ইলাহ, কাজেই যে তার রবের সাক্ষাতের প্রত্যাশী তার সৎকাজ করা উচিত এবং বন্দেগীর ক্ষেত্রে নিজের রবের সাথে কাউকে শরীক করা উচিত নয়৷
(২৯-আনকাবুত:৫) যে কেউ আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করার আশা করে (তার জানা উচিত) , আল্লাহর নির্ধারিত সময় আসবেই৷� আর আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও জানেন৷
(তাই ইসলাম বিরোধীদের মোকাবেলায় মু�মিনদের হতাশ না হয়ে আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ ভরসা রাখা� উচিত)
নবীগণের সহিত আল্লাহর সাক্ষাৎ :
(১৯:৫২) আমি তাকে তূরের ডান দিক থেকে ডাকলাম এবং গোপন আলাপের মাধ্যমে তাকে নৈকট্য দান করলাম৷
সাহায্য :
(১৮:৫২) তাহলে সেদিন এরা কি করবে যেদিন এদের রব এদেরকে বলবে, ডাকো সেই সব সত্তাকে যাদেরকে তোমরা আমার শরীক মনে করে বসেছিলে ? এরা তাদেরকে ডাকবে কিন্তু তারা এদেরকে সাহায্য করতে আসবে না এবং আমি তাদের মাঝখানে একটি মাত্র ধ্বংস গহ্বর তাদের সবার জন্য বানিয়ে দেবো৷
(১৮:৪৩) সে সময় আল্লাহ ছাড়া তাকে সাহায্য করার মতো কোনো গোষ্ঠীও ছিল না, আর সে নিজেও এ বিপদের মুকাবিলা করতে সক্ষম ছিল না৷
আল্লাহ ব্যতীত আর কোন বন্ধু ও সাহায্যকারী নেই : ২:১০৭,�
আর লোহা নাযিল করেছি যার মধ্যে বিরাট শক্তি এবং মানুষের জন্য বহুবিধ কল্যাণ রয়েছে৷ এটা করা হয়েছে এজন্য যে, আল্লাহ জেনে নিতে চান কে তাঁকে না দেখেই তাঁকে ও তাঁর রসূলদেরকে সাহায্য করে৷ নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ অত্যন্ত শক্তিধর ও মহাপরাক্রমশালী৷-৫৭:২৫,
(১২:১৮) তারা ইউসূফের জামায় মিথ্যা রক্ত লাগিয়ে নিয়ে এসেছিল৷ একথা শুনে তাদের বাপ বললো, �বরং তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি বড় কাজকে সহজ করে দিয়েছে৷ ঠিক আছে, আমি সবর করবো এবং খুব ভালো করেই সবর করবো৷ তোমরা যে কথা সাজাচ্ছো তার ওপর একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাওয়া যেতে পারে৷
আর আল্লাহ যখন কোন জাতিকে দুর্ভাগ্য কবলিত করার ফায়সালা করে ফেলেন তখন কারো রদ করায় তা রদ হতে পারে না এবং আল্লাহর মোকাবিলায় এমন জাতির কোন সহায় ও সাহায্যকারী হতে পারে না-১৩:১১৷
(১৭:৬৮) আচ্ছা, তাহলে তোমরা কি এ ব্যাপারে একেবারেই নির্ভীক যে, আল্লাহ কখনো স্থলদেশেই তোমাদেরকে যমীনের মধ্যে প্রোথিত করে দেবেন না অথবা তোমাদের ওপর পাথর বর্ষণকারী ঘূর্ণি পাঠাবেন না এবং তোমরা তার হাত থেকে বাঁচার জন্য কোনো সহায়ক পাবে না ?
আল্লাহর সাহায্যকারী :
(১৮:৫১)� ....পথভ্রষ্টকারীদেরকে নিজের সাহায্যকারী করা আমার রীতি নয়৷
সাথে থাকা :
তোমরা যেখানেই থাকো আল্লাহ তোমাদের সাথে আছেন :
তোমরা যেখানেই থাক তিনি তোমাদের সাথে আছেন৷ তোমরা যা করছো আল্লাহ তা দেখছেন-৫৭:৫,
আল্লাহ তাকওয়া অবলম্বনকারীদের সাথে আছেন :
(১৬:১২৮) আল্লাহ তাদের সাথে আছেন যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যারা সৎকর্মপরায়ণ৷
আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন :
(২৬.শুআরা:৬১) দু'দল যখন পরস্পরকে দেখতে পেলো তখন মূসার সাথীরা চিৎকার করে উঠলো, "আমরা তো পাকড়াও হয়ে গেলাম৷" ৬২) মূসা বললো, "কখ্খনো না, আমার সাথে আছেন আমার রব, তিনি নিশ্চয়ই আমাকে পথ দেখাবেন৷"
সাপ �/ সর্প :
লাঠির সাপ হয়ে যাওয়া :� তা কেমন সাপ ছিল ?
(২০:১৭) - আর হে মূসা! এ তোমার হাতে এটা কি?� (২০:১৮) মূসা জবাব দিল, �এ আমার লাঠি৷ এর ওপর ভর দিয়ে আমি চলি, নিজের ছাগলগুলোর জন্য এর সাহায্যে পাতা পাড়ি এবং এর সাহায্যে আরো অনেক কাজ করি�(২০:১৯) (আল্লাহ ) বললেন, একে (তোমার হাতের লাঠিটিকে ) ছুঁড়ে দাও হে মূসা�! ২০) সে ছূঁড়ে দিল এবং অকস্মাত সেটা হয়ে গেলো একটা সাপ, যা দৌড়াচ্ছিল৷ ২১) বললেন, �ধরে ফেলো ওটা এবং ভয় করো না, আমি ওকে আবার ঠিক তেমনটিই করে দেবা যেমনটি সে আগে ছিল৷
(২০:৬৬) অকস্মাত তাদের যাদুর প্রভাবে তাদের দড়িদড়া ও লাঠিগুলো ছুটাছুটি করছে বলে মূসার মনে হতে লাগলো ৬৭) এবং মূসার মনে ভীতির সঞ্চার হলো।
(২০:৬৯) ছুঁড়ে দাও তোমার হাতে যাকিছু আছে, এখনি এদের সব বানোয়াট জিনিসগুলোকে গ্রাস করে ফেলবে, এরা যাকিছু বানিয়ে এনেছে এতো যাদুকরের প্রতারণা এবং যাদুকর যেভাবেই আসুক না কেন কখনো সফল হতে পারে না�৷
(২৭.নামল:১০) এবং তুমি তোমার লাঠিটি একটু ছুঁড়ে দাও৷� যখনই মূসা দেখলো লাঠি সাপের মত মোচড় খাচ্ছে �তখনই পেছন ফিরে ছুটতে লাগলো এবং পেছন দিকে ফিরেও দেখলো না৷ � হে মূসা! ভয় পেয়ো না, আমার সামনে রাসূলরা ভয় পায় না৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৩১) আর (হুকুম দেয়া হলো) ছুঁড়ে দাও তোমার লাঠিটি৷ যখনই মূসা দেখলো লাঠিটি সাপের মতো মোচড় খাচ্ছে তখনই সে পেছন ফিরে ছুটতে লাগলো এবং একবার ফিরেও তাকালো না৷ বলা হলো,"হে মূসা! ফিরে এসো এবং ভয় করো না, তুমি সম্পূর্ন নিরাপদ৷ (বিস্তারিত দেখুন : ভ > ভয় > নবীগন কি ভয় পান ? )
(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ন > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত মূসা আ: > লাঠি সাপ হয়ে গেল, তা কেমন সাপ ছিল ? )
পেটে ভর দিয়ে চলা :
(নুর:৪৫) ..তাদের মধ্য থেকে কেউ চলেছে পেটে ভর দিয়ে, কেউ চলেছে দু�পায়ে হেঁটে আবার কেউ চারপায়ে ভর দিয়ে। যা কিছু তিনি চান পয়দা করেন, তিনি প্রত্যেক জিনিসের ওপর শক্তিশালী ৷
.
সাবা : সুলাইমান আ: এর আমলে সূর্যপূজারী রানীর সাম্রাজ্য :
দেখুন :� ক্লিক করুন : সাবা জাতি �
সাব জাতির অবস্থান কোথায় ছিল ? সাবা জাতির প্রকৃত ইতিহাস, একটি সমৃদ্ধশালী জাতিকে তাদের অকৃতজ্ঞতার কারণে যেভাবে নি:শেষ করে দেওয়া হল।:
সাবা জাতি �:� ক্লিক করুন:� টিকা নং : ২৫ থেকে ৩৭. �পর্যন্ত।
স্বাধীনতা :
(১১:১১৯: এ (নির্বাচন ও ইখতিয়ারের স্বাধীনতার) জন্যই তো তিনি তাদের পয়দা করেছিলেন৷
সৃষ্টি :
(মু�মিনুন:১৪) ....কাজেই আল্লাহ বড়ই বরকত সম্পন্ন,� সকল কারিগরের চাইতে উত্তম কারিগর তিনি৷
(৩১-লোকমান: ১০) তিনি �আকাশসমূহ সৃষ্টি করেছেন স্তম্ভ ছাড়াই , যা তোমরা দেখতে পাও৷ �তিনি পৃথিবীতে পাহাড় গেড়ে দিয়েছেন, যাতে তা তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে৷ তিনি সব ধরনের জীব-জন্তু পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন৷ আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করি এবং জমিতে নানা ধরনের উত্তম জিনিস উৎপন্ন করি৷১১) এতো হচ্ছে আল্লাহর সৃষ্টি , এখন আমাকে একটু দেখাও তো দেখি অন্যেরা কি সৃষ্টি করেছে ?� আসল কথা হচ্ছে এ জালেমরা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত রয়েছে৷
সৃষ্টিকর্তা হচ্ছেন একমাত্র আল্লাহ :
�(ফুরকান:২)...যিনি প্রত্যেকটি জিনিস সৃষ্টি করেছেন তারপর তার একটি তাকদীর নির্ধারিত করে দিয়েছেন৷
(২১:১৯) পৃথিবী ও আকাশের মধ্যে যে সৃষ্টিই আছে তা আল্লাহরই৷
(১৮:৫১) আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করার সময় আমি তাদেরকে ডাকিনি এবং তাদের নিজেদের সৃষ্টিতেও তাদেরকে শরীক করিনি৷ �পথভ্রষ্টকারীদেরকে নিজের সাহায্যকারী করা আমার রীতি নয়৷
তিনিই তোমাদেরকে যমীন থেকে পয়দা করেছেন (১১:৬১),
যদি এমন না হয়, তাহলে তাদের বানানো শরীকরাও কি আল্লাহর মতো কিছু সৃষ্টি করেছে, যে কারণে তারাও সৃষ্টি ক্ষমতার অধিকারী বলে সন্দেহ হয়েছে ?� বলো, প্রত্যেকটি জিনিসের স্রষ্টা একমাত্র আল্লাহ৷(১৩:১৬)
(১৬:৭০) আর দেখো, আল্লাহ তোমাদের সৃষ্টি করেছেন তারপর তিনি তোমাদের মৃত্যুদান করেন। আবার তোমাদের কাউকে নিকৃষ্টতম বয়সে পৌঁছিয়ে দেয়া হয়, যখন সবকিছু জানার পরেও যেন কিছুই জানে না৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৬৮) তোমার রব যা চান সৃষ্টি করেন এবং (তিনি নিজেই নিজের কাজের জন্য যাকে চান) নির্বাচিত করে নেন৷ এ নির্বাচন তাদের কাজ নয়৷ আল্লাহ পবিত্র এবং তারা যে শিরক করে তার অনেক ঊর্ধ্বে৷
(৩০-রূম: ৪০) আল্লাহই ��তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, তাঁরপর তোমাদের রিযিক দিয়েছেন৷তাঁরপর তিনি তো তোমাদের মৃত্যু দান করেন, এরপর তিনি তোমাদের জীবিত করবেন৷ তোমাদের বানানো শরীকদের মধ্যে কি এমন কেউ আছে যে এ কাজও করে ?� পাক-পবিত্র তিনি এবং এরা যে শিরক করে তাঁর বহু উর্ধ্বে তাঁর অবস্থান।
তোমাদের সবাইকে সৃষ্টি করা একটি মাত্র প্রাণী সৃষ্টি করার মতই :
(৩১-লোকমান: ২৮) তোমাদের সমগ্র মানবজাতিকে সৃষ্টি করা এবং তারপর পুনর্বার তাদেরকে জীবিত করা (তার জন্য) নিছক একটিমাত্র প্রাণী (সৃষ্টি করা এবং তাকে পুনরুজ্জীবিত ) করার মতই ব্যাপার৷ আসলে আল্লাহ সবকিছুই শোনেন ও দেখেন৷ ৪৯
৪৯ . অর্থাৎ তিনি একই সময় সমগ্র বিশ্ব-জাহানের আওয়াজ আলাদা আলাদাভাবে শুনছেন এবং কোন আওয়াজ তার শ্রবণেন্দ্রিয়কে এমনভাবে দখল করে বসে না যার ফলে একটি শুনতে গিয়ে অন্যগুলো শুনতে না পারেন। অনুরূপভাবে তিনি একই সময় সমগ্র বিশ্ব-জাহানকে তার প্রত্যেকটি জিনিস ও ঘটনা সহকারে বিস্তারিত আকারেও দেখছেন এবং কোন জিনিস দেখার ব্যাপারে তার দর্শনেন্দ্রিয় এমনভাবে ব্যস্ত হয়ে পড়ে না যে, একটিকে দেখতে গিয়ে তিনি অন্যগুলো দেখতে অপারগ হয়ে পড়েন। মানবকুলের সৃষ্টি এবং তাদের পুনরুজ্জীবনের ব্যাপারটিও ঠিক এই একই পর্যায়ের । সৃষ্টির প্রারম্ভকাল থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত যতগুলো মানুষ জন্ম নিয়েছে এবং আগামীতে কিয়ামত পর্যন্ত জন্ম নেবে তাদের সবাইকে তিনি আবার মাত্র এক মুহূর্তেই সৃষ্টি করতে পারেন। তার সৃষ্টিক্ষমতা একটি মানুষের সৃষ্টিতে এমনভাবে লিপ্ত হয়ে পড়ে না যে, সে একই সময়ে তিনি অন্য মানুষদের সৃষ্টি করতে অপরাগ হয়ে পড়েন। একজন মানুষ সৃষ্টি করা বা কোটি কোটি মানুষ সৃষ্টি করা দু' টোই তার জন্য সমান।
আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা মানার পরও মুশরিকরা শিরকে লিপ্ত হয় :
(৩১-লোকমান: ২৫) যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলী কে সৃষ্টি করেছেন, তাহলে তারা নিশ্চয়ই বলবে আল্লাহ৷
(অর্থাৎ তোমরা যে এতটুকু কথা জানো ও স্বীকার করো এ জন্য তোমাদের ধন্যবাদ। কিন্তু এটাই যখন প্রকৃত সত্য তখন প্রশংসা সমস্তই একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত হওয়া উচিত । বিশ্ব-জাহানের সৃষ্টিতে যখন অন্য কোন সত্তার কোন অংশ নেই তখন সে প্রশংসার হকদার হতে পারে কেমন করে ৷ অধিকাংশ লোক জানে না যে, যদি আল্লাহকে বিশ্ব-জাহানের স্রষ্টা বলে না মেনে নেয়া হয় তাহলে এর অনিবার্য ফল ও দাবী কি হয় এবং কোন কথাগুলো এর বিরুদ্ধে চলে যায়। যখন এক ব্যক্তি একথা মেনে নেয় যে, একমাত্র আল্লাহই পৃথিবী ও আকাশের স্রষ্টা তখন অনিবার্যভাবে তাকে একথাও মেনে নিতে হবে যে, ইলাহ ও রবও একমাত্র আল্লাহই । ইবাদত ও আনুগত্যের হকদারও একমাত্র তিনিই । একমাত্র তারই পবিত্রতা ঘোষণা করতে এবং তারই প্রশংসাবাণী উচ্চারণ করতে হবে। তিনি ছাড়া আর কারো কাছে প্রার্থনা করা যেতে পারে না। নিজের সৃষ্টির জন্য আইন প্রণেতা ও শাসক তিনি ছাড়া আর কেউ হতে পারে না। একজন স্রষ্টা অন্যজন হবেন মাবুদ, এটা সম্পূর্ণ বুদ্ধি বিরোধী ও বিপরীতমুখী কথা। মূর্খতার মধ্যে আকণ্ঠ ডুবে আছে একমাত্র এমন ব্যক্তিই একথা বলতে পারে। তেমনিভাবে একজনকে স্রষ্টা বলে মেনে নেয়া এবং তারপর অন্য বিভিন্ন সত্তার মধ্য থেকে একজনকে প্রয়োজন পূর্ণকারী ও সংকট নিরসনকারী, অন্যজনের সামনে ষষ্ঠাংগ প্রণিপাত হওয়া এবং তৃতীয় একজনকে ক্ষমতাসীন শাসকের স্বীকৃতি দেয়া ও তার আনুগত্য করা- এসব পরস্পর বিরোধী কথা। কোন জ্ঞানী ব্যক্তি এসব কথা মেনে নিতে পারে না।)
সৃষ্টিকর্তার গুরুত্ব : যে সৃষ্টি করে আর যে সৃষ্টি করেনা � উভয়ে কি সমান ?
(১৬:১৭) তাহলে ভেবে দেখতো যিনি সৃষ্টি করেন এবং যে কিছুই সৃষ্টি করে না তারা উভয় কি সমান ? তোমরা কি সজাগ হবে না ?
(১৬:২০) আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য যেসব সত্তাকে লোকেরা ডাকে, তারা কোনো একটি জিনিসেরও স্রষ্টা নয় বরং তারা নিজেরাই সৃষ্টি৷২১) তারা মৃত, জীবিত নয় এবং তারা কিছুই জানে না তাদেরকে কবে (পুনর্বার জীবিত করে) উঠানো হবে৷
অন্যান্য শরীকরা (আল্লাহকে বাদ দিয়ে মানুষ যাদের পূজা করে তারা) সৃষ্টির ক্ষেত্রে কোন অংশীদারিত্ব রাখেনা, একমাত্র আল্লাহই সবকিছু সৃষ্টি করেছেন , সুতরাং, ইবাদত একমাত্র আল্লাহই পেতে পারেন, অন্য কোন শরীক নয় :
(৩১-লোকমান: ১১) এতো হচ্ছে আল্লাহর সৃষ্টি , এখন আমাকে একটু দেখাও তো দেখি অন্যেরা কি সৃষ্টি করেছে ? ১৫ - আসল কথা হচ্ছে এ জালেমরা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত রয়েছে৷
১৬ . অর্থাৎ যখন এরা এ বিশ্ব-জাহানে আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোন সৃষ্টি চিহ্নিত করতে পারেনি এবং একথা সুস্পষ্ট যে, তারা তা করতে পারে না তখন তাদের যারা স্রষ্টা নয় এমন সত্ত্বাকে আল্লাহর একচ্ছত্র ও সার্বভৌম কর্তৃত্বে শরীক করা, তাদের সামনে আনুগত্যের শির নত করা এবং তাদের কাছে প্রার্থনা করা ও অভাব মোচন করার জন্য আবেদন জানানোকে সুস্পষ্ট নির্বুদ্ধিতা ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে। যতক্ষণ কোন ব্যক্তি একেবারেই উন্মাদ হয়ে না যায় ততক্ষণ সে এত বড় নির্বুদ্ধিতা করতে পারে না যে, সে কারো সামনে নিজেই নিজের উপাস্যদেরকে সৃষ্টিকর্মে অক্ষম বলে এবং একমাত্র আল্লাহকে স্রষ্টা বলে স্বীকার করে নেবার পরও তাদেরকে উপাস্য বলে মেনে নেবার জন্য জিদ ধরবে। যার ঘাটে একটুখানিও বুদ্ধি আছে সে কখনো চিন্তা করবে না, কোন জিনিস সৃষ্টি করার ক্ষমতাই যার নেই এবং পৃথিবী ও আকাশের কোন জিনিসের সৃষ্টিতে যার নামমাত্র অংশও নেই সে কেন আমাদের উপাস্য হবে ৷ কেন আমরা তার সামনে সিজদানত হবো ৷ অথবা তার পদচুম্বন করবো এবং তার আস্তানায় গিয়ে ষষ্ঠাংগ প্রণিপাত করবো ৷ আমাদের ফরিয়াদ শোনার এবং আমাদের অভাব পূরণ করার কী ক্ষমতা তার আছে ৷ তর্কের খাতিরে মেনে নিলাম, সে আমাদের প্রার্থনা শুনছে কিন্তু তার জবাবে সে নিজে কি পদক্ষেপ নিতে পারে, যখন তার নিজের কিছু করার ক্ষমতা নেই ৷ যে কিছু করতে পারে সে-ই তো কিছু ভেঙ্গে যাওয়া জিনিস গড়তে পারে কিন্তু যার আদতে করারই কোন ক্ষমতা নেই সে আবার কেমন করে ভেঙ্গে যাওয়া জিনিস গড়তে পারবে।
অনরূপ সৃষ্টি করা :
(১৭:৯৯) তারা কি খেয়াল করেনি, যে আল্লাহ পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলী সৃষ্টি করেছেন তিনি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করার অবশ্যই ক্ষমতা রাখেন ?
আল্লাহর সৃষ্টি নিখুঁত, তাতে খুঁত ধরা সম্ভব নয় :
(৩২- আস-সাজদা : ৭) যে জিনিসই তিনি সৃষ্টি করেছেন উত্তম রূপে সৃষ্টি করেছেন৷ ১৩
১৩ . এ মহাবিশ্বে তিনি অসংখ্য ও অগণিত জিনিস সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু এর মধ্যে কোন একটি জিনিসও অসুন্দর, সৌষ্ঠবহীন ও বেখাপ্পা নয়। প্রত্যেকটি জিনিসের নিজস্ব একটি আলাদা সৌন্দর্য আছে। প্রত্যেকটি জিনিস তার নিজের জায়গায় সুসামঞ্জস্য ও উপযোগী। যে কাজের জন্য যে জিনিসই তিনি তৈরি করেছেন সবচেয়ে উপযোগী আকৃতিতে সর্বাধিক কার্যকর গুণাবলী সহকারে তৈরি করেছেন। দেখার জন্য চোখ ও শোনার জন্য কানের যে আকৃতি তিনি দিয়েছেন এর চেয়ে ভালো ও উপযোগী কোন আকৃতির কল্পনাও এ জন্য করা যেতে পারে না। হাওয়া ও পানি যেসব উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে তাদের জন্য হাওয়া ঠিক তেমনি যেমন হওয়া উচিত এবং পানি ঠিক তেমনি গুণাবলী সম্পন্ন যেমন তার হওয়া উচিত। আল্লাহ তৈরি করা কোন জিনিসের নকশার মধ্যে কোন রকমের খুঁত বা ত্রুটি চিহ্নিত করা সম্ভবই নয় এবং তার মধ্যে কোন প্রকার সংস্কার সাধনের প্রস্তাব দেয়াও অসম্ভব।
প্রথম জীবনের সৃষ্টি কি� আল্লাহ করেছেন ? নাকি প্রথম জীবনের সৃষ্টি এ বিশ্বজগতের একটি দুর্ঘটনা মাত্র ?
আল্লাহ তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি মাত্র প্রাণ থেকে : ৭:১৮৯,
(৩২- আস-সাজদা : ৭) যে জিনিসই তিনি সৃষ্টি করেছেন উত্তম রূপে সৃষ্টি করেছেন৷� তিনি মানুষ সৃষ্টির সূচনা করেছেন কাদামাটি থেকে, ৮) তারপর তার বংশ উৎপাদন করেছেন এমন সূত্র থেকে যা তুচ্ছ পানির মতো৷ ১৪
১৪ . অর্থাৎ প্রথমে তিনি নিজের প্রত্যক্ষ সৃষ্টিকর্মের (direct creation) মাধ্যমে মানুষ সৃষ্টি করেন এবং তারপর সেই মানুষের মধ্যেই বংশ বিস্তারের এমন শক্তি সৃষ্টি করে দেন যার ফলে তার শুক্র থেকে তারই মতো মানুষের জন্ম হতে থাকে। এ ক্ষেত্রে ভূমির সারবস্তু একত্র করে একটি সৃষ্টি-নির্দেশের মাধ্যমে তার মধ্যে এমন জীবন, চেতনা ও বৃদ্ধিবৃত্তি সৃষ্টি করে দেন যার সাহায্যে মানুষের মতো একটি আশ্চর্য সৃষ্টি অস্তিত্ব লাভ করে, এটি ছিল একটি কর্মকুশলতা। আবার দ্বিতীয় কর্মকুশলতা হচ্ছে, আগামীতে আরো মানুষ তৈরি করার জন্য এমন একটি অদ্ভূত যন্ত্র মানুষের নিজের কাঠামোতেই রেখে দেন যার গঠন প্রকৃতি ও কার্যধারা দেখে মানবীয় বিবেক-বুদ্ধি বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে যায়। কুরআন মজীদের যেসব আয়াত থেকে প্রথম মানুষের প্রত্যক্ষ সৃষ্টির কথা সুস্পষ্ট হয় এটি তার অন্যতম। ডারউইনের যুগ থেকে বিজ্ঞানীগণ এ চিন্তাধারার ব্যাপারে নাসিকা কুঞ্চন করে আসছেন এবং একটি অবৈজ্ঞানিক মতবাদ গণ্য করে অত্যন্ত তাচ্ছিল্যভরে একে প্রায় ঠেলে ফেলে দিয়ে থাকেন। কিন্তু মানুষের ও জীবের সমস্ত প্রজাতির না হোক অন্ততপক্ষে সর্বপ্রথম জীবন কোষের সরাসরি সৃষ্টি থেকে তো তারা নিজেদের চিন্তাকে কোনক্রমেই মুক্ত করতে পারবেন না। এ সৃষ্টিকে মেনে না নেয়া হলে এ ধরনের একদম বাজে কথা মেনে নিতে হবে যে, জীবনের সূচনা হয় নিছক একটি দুর্ঘটনাক্রমে। অথচ শুধুমাত্র এক কোষসম্পন্ন (cell) জীবের মধ্যে জীবনের সবচেয়ে সহজ অবস্থাও এতটা জটিল ও সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক কারুকাজে পরিপূর্ণ, যাকে একটি দুর্ঘটনার ফল গণ্য করা একেবারেই অযৌক্তিক। এটা ক্রমবিবর্তন মতবাদের প্রবক্তারা সৃষ্টি মতবাদকে যতটা অবৈজ্ঞানিক গণ্য করেন তার চেয়ে লাখো গুণ বেশি অবৈজ্ঞানিক। আর মানুষ যদি একবার একথা মেনে নেয় যে, জীবনের প্রথম কোষটি সরাসরি সৃষ্টির মাধ্যমে অস্তিত্বলাভ করেছিল, তাহলে এরপর আর একথা মেনে নিতে দোষ কি যে, জীবের প্রত্যেক প্রজাতির প্রথমজন স্রষ্টার সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে অস্তিত্বলাভ করে এবং তারপর তার বংশধারা প্রজনন প্রক্রিয়ার(procreation) বিভিন্ন ধারার মাধ্যমে চলে আসছে। একথা মেনে নেবার ফলে এমন অনেক জটিল সমস্যার সমাধান হয়ে যায় ডারউইনবাদের পতাকাবাহীদের সকল বৈজ্ঞানিক কাব্য চর্চা সত্ত্বেও তাদের ক্রমবিবর্তন মতবাদে যেগুলোর কোন সমাধান হয়নি। (আরো বেশি ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, সূরা আল ইমরান,৩৫ ; আন নিসা, ১ ; আল আন'আম ৬৩ ; আল আ'রাফ ১০ ও ১৪৫ ; আল হিজর , ১৭ ; আল হাজ্জ , ৫ ; এবং আল মু'মিনুন , ১২-১৩ টীকা। )
.
আল্লাহর এ মহান সৃষ্টিকর্ম অনর্থক নয় :
(মু�মিনুন:১১৫) তোমরা কি মনে করেছিলে আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের কখনো আমার দিকে ফিরে আসতে হবে না?��
সৃষ্টির সেরা জাতি কে ? উত্তর : মানুষ :
(১৭:৭০) এতো আমার অনুগ্রহ, আমি বনী আদমকে মর্যাদা দিয়েছি এবং তাদেরকে জলে স্থলে সওয়ারী দান করেছি, তাদেরকে পাক-পবিত্র জিনিস থেকে রিযিক দিয়েছি এবং নিজের বহু সৃষ্টির ওপর তাদেরকে সুস্পষ্ট প্রাধান্য দিয়েছি৷
আল্লাহর তৈরী সৃষ্টি কাঠামো পরিবর্তন করা যেতে পারে না :
�আল্লাহর সৃষ্ট মূল প্রকৃতির উপর অটল থাকো,� দ্বীনের উপর অটল থাকো :
(৩০-রূম: ৩০) কাজেই ( হে নবী এবং নবীর অনুসারীবৃন্দ ) একনিষ্ঠ হয়ে নিজের চেহারা এ দীনের� দিকে স্থির নিবদ্ধ করে দাও৷ আল্লাহ মানুষকে যে প্রকৃতির ওপর সৃষ্টি করেছেন তাঁর ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাও৷ ৪৫ আল্লাহর তৈরি সৃষ্টি কাঠামো পরিবর্তন করা যেতে পারে না৷ ৪৬ এটিই পুরোপুরি সঠিক ও যথার্থ দীন৷ ৪৭ কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না৷
৪৫ . অর্থাৎ সমগ্র মানব জাতিকে এ প্রকৃতির ওপর সৃষ্টি করা হয়েছে যে, এক আল্লাহ ছাড়া তাদের আর কোন স্রষ্টা , রব, মাবুদ ও আনুগত্য গ্রহণকারী নেই। এ প্রকৃতির ওপর তোমাদের প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়া উচিত। যদি স্বেচ্ছাচারীভাবে চলার নীতি অবলম্বন করো তাহলে প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরণ করবে। আর যদি অন্যের বন্দেগীর শিকল নিজের গলায় পরে নাও তাহলেও নিজের প্রকৃতির বিরুদ্ধে কাজ করবে। এ বিষয়টি নবী (সা) বহু হাদীসে সুস্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন। যেমনঃ
--------------------------
" মাতৃগর্ভ থেকে জন্মলাভকারী প্রত্যেকটি শিশু আসলে মানবিক প্রকৃতির ওপরই জন্ম লাভ করে। তাঁরপর তাঁর মা-বাপই তাকে পরবর্তীকালে ইহুদী, খৃষ্টান ও অগ্নিপূজারী হিসেবে গড়ে তোলে।"
এর দৃষ্টান্ত হচ্ছে, যেমন প্রত্যেকটি পশুর পেট থেকে পুরোপুরি নিখুঁত ও সুস্থ পশুই বের হয়ে আসে। কোন একটা বাচ্চাও কান কাটা অবস্থায় বের হয়ে আসে না। পরে মুশরিকরা নিজেদের জাহিলী কুসংস্কারের কারণে তাঁর কান কেটে দেয়।
মুসনাদে আহমাদ ও নাসায়ীতে আর একটি হাদীস আছে, তাতে বলা হয়েছেঃ এক যুদ্ধে মুসলমানরা শত্রুদের শিশু সন্তানদেরকেও হত্যা করে। নবী (সা) এর কাছে এ খবর পৌঁছে যায়। তিনি ভীষণ অসন্তুষ্ট হন এবং বলেনঃ
--------------------------
" লোকদের কি হয়ে গেছে, আজ তারা সীমা ছাড়িয়ে গেছে এবং শিশুদেরকেও হত্যা করেছে ৷ "
একজন জিজ্ঞেস করলো, এরা কি মুশরিকদের সন্তান ছিল না। জবাবে তিনি বলেনঃ
-----------------------------------------
"তোমাদের সর্বোত্ততম লোকেরা তো মুশরিকদেরই আওলাদ।" তাঁরপর বলেনঃ
-----------------------
" প্রত্যেক প্রাণসত্তা প্রকৃতির ওপর জন্ম নেয়, এমনকি যখন কথা বলতে শেখে তখন তাঁর বাপ- মা তাকে ইহুদী খৃষ্টানে পরিণত করে।"
অন্য একটি হাদীসে ইমাম আহমাদ (রা) ঈযায ইবনে হিমার আল মুজাশি'য়ী থেকে উদ্ধৃত করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, একদিন নবী (সা) নিজের ভাষণের মাঝখানে বলেনঃ
-------------------------------------
" আমার রব বলেন, আমার সমস্ত বান্দাদেরকে আমি একনিষ্ঠ সত্যপথাশ্রয়ী করে সৃষ্টি করেছিলাম, তাঁরপর শয়তানরা এসে তাদেরকে দ্বীন থেকে বিপথগামী করে এবং তাদের জন্য আমি যা কিছু হালাল করে দিয়েছিলাম সেগুলোকে হারাম করে নেয় এবং তাদেরকে হুকুম দেয়, আমার সাথে এ জিনিসগুলোকে শরীক গণ্য করো , যেগুলোকে শরীক করার জন্য আমি কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করিনি। "
৪৬ . অর্থাৎ আল্লাহ মানুষকে নিজের বান্দায় পরিণত করেছেন। কেউ চাইলেও এ কাঠামোয় কোন পরিবর্তন সাধন করতে পারে না। মানুষ বান্দা থেকে অ- বান্দা হতে পারে না এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ইলাহ বানিয়ে নিলেও প্রকৃতপক্ষে সে মানুষের ইলাহ হতে পারে না। মানুষ নিজের জন্য যতগুলো উপাস্য তৈরি করে নিক না কেন, মানুষ যে, এক আল্লাহ ছাড়া আর কারো বান্দা নয় এ বাস্তব সত্যটি অকাট্য ও অবিচল রয়ে গেছে। মানুষ নিজের মূর্খতা ও অজ্ঞতাঁর কারণে যাকে ইচ্ছা আল্লাহর গুণাবলী ও ক্ষমতাঁর ধারক গণ্য করতে পারে এবং যাকে চায় তাকে নিজের ভাগ্য ভাঙা- গড়ার মালিক মনে করতে পারে।কিন্তু প্রকৃত ও বাস্তব সত্য এটিই যে, সার্বভৌম কর্তৃত্বের গুণাবলীর অধিকারী একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নয়। কেউ তাঁর মতো ক্ষমতাঁর অধিকারী নয় এবং মানুষের ভাগ্য ভাঙা-গড়ার শক্তিও আল্লাহ ছাড়া কারো নেই।
এ আয়াতটির আর একটি অনুবাদ এও হতে পারেঃ " আল্লাহর তৈরি কাঠামোয় পরিবর্তন করা যাবে না।" অর্থাৎ আল্লাহ যে প্রকৃতির ওপর মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাকে বিকৃত করা ও ভেঙ্গে ফেলা উচিত নয়।
৪৭ . অর্থাৎ শান্ত সমাহিত ভারসাম্যপূর্ণ প্রকৃতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকাই সঠিক ও সহজ পথ।
সৃষ্টি আল্লাহ খেলাচ্ছলে করেননি, বরং সবকিছু উদ্দেশ্যমূলক ভাবে এবং সত্য সহকারে �সৃষ্টি করেছেন :
আল্লাহ এসব কিছু (খেলাচ্ছলে নয় বরং )উদ্দেশ্যমূলকভাবেই সৃষ্টি করেছেন্ তিনি নিজের নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে পেশ করেছেন যারা জ্ঞানবান তাদের জন্য -১০:০৫,
(১৬:৩)�� তিনি আকাশ ও পৃথিবীকে সত্য সহকারে সৃষ্টি করেছেন৷
রাত দিন চন্দ্র সূর্য সৃষ্টি করা হয়েছে তোমাদের কল্যাণের জন্যই :
(১৬:১২) তিনি তোমাদের কল্যাণের জন্য রাত ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে বশীভূত করে রেখেছেন এবং সমস্ত তারকাও তাঁরই হুকুমে বশীভূত রয়েছে৷ যারা বুদ্ধিবৃত্তিকে কাজে লাগায় তাদের জন্য রয়েছে এর মধ্যে প্রচুর নিদর্শন৷
(১৬:১৩) আর এই যে বহু রং বেরংয়ের জিনিস তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীতে সৃষ্টি করে রেখেছেন এগুলোর মধ্যেও অবশ্যি নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা শিক্ষাগ্রহণ করে৷
এমন অনেক সৃষ্টি রয়েছে যা আমরা জানিনা :
(১৫:১৯) জীবিকার উপকরণাদি সরবরাহ করেছি তোমাদের জন্যও এবং এমন বহু সৃষ্টির জন্যও যাদের আহারদাতা তোমরা নও৷
(১৬:৮) তিনি (তোমাদের উপকারার্থে) আরো অনেক জিনিস সৃষ্টি করেছেন, যেগুলো তোমরা জানোই না৷
এক সৃষ্টির পরিবর্তে অন্য সৃষ্টি স্থলাভিষিক্ত করা :
�আরো দেখূন : এক জাতির পরিবর্তে অন্য জাতি, এক দলের পরিবর্তে অন্য দল প্রতিষ্ঠা করা ।
তিনি চাইলে তোমাদের নিয়ে যান এবং একটি নতুন সৃষ্টি তোমাদের স্থলাভিসিক্ত হয়৷ ২০) এমনটি করা তাঁর জন্য মোটেই কঠিন নয়৷� -14:19-20,
পশু সৃষ্টি :
(১৬:৫) তিনি পশু সৃষ্টি করেছেন৷ তাদের মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য পোশাক, খাদ্য এবং অন্যান্য নানাবিধ উপকারিতাও৷
(১৬:৮) তোমাদের আরোহণ করার এবং তোমাদের জীবনের শোভা-সৌন্দর্য সৃষ্টির জন্য তিনি ঘোড়া, খচ্চর এবং গাধা সৃষ্টি করেছেন৷
উদ্ভিদ সৃষ্টি :
(২৬.শুআরা:৭) আর তারা কি কখনো পৃথিবীর প্রতি দৃষ্টিপাত করেনি? আমি কত রকমের কত বিপুল পরিমাণ উৎকৃষ্ট উদ্ভিদ তার মধ্যে সৃষ্টি করেছি? ৮) নিশ্চয়ই তার মধ্যে একটি নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু'মিন নয়৷
মহাকাশ সৃষ্টি প্রসঙ্গ :
আরো দেখুন : ক > কুরআন ও বিজ্ঞান > মহাকাশ বিজ্ঞান, আ > আকাশ সৃষ্টি ।
আকাশের দুর্গ/বুরুজ/স্তম্ভ/বিশেষ অঞ্চল :
(১৫:১৬) আকাশে আমি অনেক মজবুত দুর্গ নির্মাণ করেছি, দর্শকদের জন্য সেগুলো সুসজ্জিত করেছি৷
(আরবী ভাষায় দূর্গ , প্রাসাদ ও মজবুত ইমারতকে বুরুজ বলা হয় । প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যায় সূর্যের পরিভ্রমণ পথকে যে বারটি স্তরে বা রাশিচক্রে বিভক্ত করা হয়েছিল 'বুরুজ' শব্দটিকে পারিভাষিক অর্থে সেই বারটি স্তরের জন্য ব্যবহার করা হতো । এ কারণে কুরআন ঐ বুরুজগুলোর দিকে ইংগিত করেছে বলে কোন কোন মুফাসসির মনে করেছেন । আবার কোন কোন মুফাসসির এটিকে গ্রহ অর্থে গ্রহণ করেছেন । কিন্তু পরবর্তী বক্তব্য সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে মনে হবে , এর অর্থ সম্ভবত উর্ধ জগতের এমন সব অংশ যার মধ্যকার প্রত্যেকটি অংশকে অত্যন্ত শক্তিশালী সীমান্ত অন্যান্য অংশ থেকে আলাদা করে রেখেছে । যদিও এ সীমান্তরেখা মহাশূন্যে অদৃশ্যভাবে অংকিত হয়ে আছে তবুও সেগুলো অতিক্রম করে কোন জিনিসের এক অংশ থেকে অন্য অংশে যাওয়া খুবই কঠিন । এ অর্থের প্রেক্ষিতে আমি বুরুজ শব্দটিকে সংরক্ষিত অঞ্চলসমূহ ( ......................) অর্থে গ্রহণ করা অধিকতর নির্ভুল বলে মনে করি ।
অর্থাৎ প্রত্যেক অঞ্চলে কোন না কোন উজ্জ্বল গ্রহ বা তারকা রেখে দিয়েছেন এবং এভাবে সমগ্র জগত ঝলমলিয়ে উঠেছে । অন্য কথায় , আমি দৃশ্যত কুলকিনারাহীন এ বিশ্ব জগতকে একটি বিশাল পরিত্যক্ত ভূতুড়ে বাড়ি বানিয়ে রেখে দেইনি । বরং তাকে এমন একটি সুন্দর সুসজ্জিত জগত বানিয়ে রেখেছি যার মধ্যে সর্বত্র সব দিকে নয়নাভিরাম দীপ্তি ছাড়িয়ে রয়েছে । এ শিল্পকর্মে শুধুমাত্র একজন মহান কারিগরের অতুলনীয় শিল্প নৈপুণ্য এবং একজন মহাবিজ্ঞানীর অনুপম বৈজ্ঞানিক কুশলতাই দৃষ্টিগোচর হয় না এই সংগে একজন অতীব পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রুচির অধিকারী শিল্পীর শিল্পও সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে । এ বিষয়বস্তুটিই অন্য এক স্থানে এভাবে বলা হয়েছে : ( আরবী ---------------) ( আল্লাহ , যে জিনিসই বানিয়েছেন , চমৎকার বানিয়েছেন । ) আস - সাজদাহঃ ৭ � তাফহীমুল কুরআন)
(মু�মিনুন:১৭) আর তোমাদের ওপর আমি সাতটি পথ নির্মান করেছি, ১৫ সৃষ্টিকর্ম আমার মোটেই অজানা ছিল না৷
(১৫ . মূলে ----- শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর মানে পথও হয় আবার স্তরও হয়। যদি প্রথম অর্থটি গ্রহণ করা হয় তাহলে সম্ভবত এর অর্থ হবে সাতটি গ্রহের আবর্তন পথ। আর যেহেতু সে যুগে মানুষ সাতটি গ্রহ সম্পর্কেই জানতো তাই সাতটি পথের কথা বলা হয়েছে। এর মানে অবশ্যই এ নয় যে এগুলো ছাড়া আর কোন পথ নেই। আর যদি দ্বিতীয় অর্থটি গ্রহণ করা হয় তাহলে ----- এর অর্থ তাই হবে যা ----- (সাতটি আকাশ স্তরে স্তরে) এর অর্থ হয়। আর এই সংগে যে বলা হয়েছে ''তোমাদের ওপর'' আমি সাতটি পথ নির্মাণ করেছি, এর একটি সহজ সরল অর্থ হবে তাই যা এর বাহ্যিক শব্দগুলো থেকে বুঝা যায়। আর দ্বিতীয় অর্থটি হবে, তোমাদের চাইতে বড় জিনিস আমি নির্মাণ করেছি এ আকাশ। যেমন অন্যত্র বলা হয়েছে:
----------
''আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করা মানুষ সৃষ্টি করার চাইতে অনেক বড় কাজ।''
(আল মুমিন, ৫৭ আয়াত) )
আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি : (আরো দেখুন : আ > আকাশ সৃষ্টি, আ > আসমান-জমীন) :
(১৩:২) আল্লাহই আকাশসমূহ স্থাপন করেছেন এমন কোন স্তম্ভ ছাড়াই যা তোমরা দেখতে পাও৷
(হাজ্ব:৬৫)....তিনিই আকাশকে এমনভাবে ধরে রেখেছেন যার ফলে তাঁর হুকুম ছাড়া তা পৃথিবীর ওপর পতিত হতে পারে না৷
''আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করা মানুষ সৃষ্টি করার চাইতে অনেক বড় কাজ।'' (আল মুমিন, ৫৭ আয়াত)
আসলে তোমাদের রব সেই আল্লাহই , যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে তারপর শাসন কর্তৃত্বের আসনে অধিষ্টিত হয়েছেন এবং বিশ্ব -জগতের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করেছেন -১০:০৩,
�অবশ্য দিন ও রাতের পরিবর্তনে এবং আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তাতে নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা (ভূল দেখা ও ভূল আচরণ করা থেকে) আত্মরক্ষা করতে চায় � ১০:০৬,
�(২১:৩০) যারা (নবীর কথা মেনে নিতে) অস্বীকার করেছে তারা কি চিন্তা করে না যে, এসব আকাশ ও পৃথিবী এক সাথে মিশে ছিল, তারপর আমি তাদেরকে আলাদা করলাম �এবং পানি থেকে সৃষ্টি করলাম প্রত্যেকটি প্রাণীকে৷ তারা কি (আমার এ সৃষ্টি ক্ষমতাকে) মানে না ?
আল্লাহ ছয় দিনে এ বিশ্বজগত সৃষ্টি করেছেন এরপর আরশে সমাসীন হয়েছেন : এ কথার প্রকৃত অর্থ কি ?
বিস্তরিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : আ > আরশ।
ছয় দিনে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করা হয়েছে :
তিনিই আকাশ ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, -যখন এর আগে তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল,- যাতে তোমাদের পরীক্ষা করে দেখেন তোমাদের মধ্যে কে ভালো কাজ করে৷ এখন যদি হে মুহাম্মদ! তুমি বলো, হে লোকেরা, মরার পর তোমাদের পুনরুজ্জীবিত করা হবে, তাহলে অস্বীকারকারীরা সংগে সংগেই বলে উঠবে৷ এতো সুস্পষ্ট যাদু৷-১১:৭,
(২৫.ফুরকান:৫৯) তিনিই ছয়দিনে আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবী এবং তাদের মাঝখানে যা কিছু আছে সব তৈরি করে রেখে দিয়েছেন, তারপর তিনিই (বিশ্ব-জাহানের সিংহাসন) আরশে সমাসীন হয়েছেন,৭২ তিনিই রহমান, যে জানে তাকে জিজ্ঞেস করো তাঁর আবস্থা সম্পর্কে৷
(৭২. মহান আল্লাহর আরশের ওপর সমাসীন হবার বিষয়টি ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা আল আরাফ ৪১-৪২, ইউনুস ৪ এবং হূদ ৭ টীকা।
পৃথিবী ও আকাশমন্ডলী ছ'দিনে তৈরি করার বিষয়টি মুতাশাবিহাতের অন্তরভূক্ত। এর অর্থ নির্ধারণ করা কঠিন। হতে পারে একদিন অর্থ একটি যুগ, আবার এও হতে পারে, দুনিয়ায় আমরা একদিন বলতে যে সময়টুকু বুঝি একদিন অর্থ সেই পরিমাণ সময়। (বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন সূরা হা-মীম-আস্ সাজদাহ ১১-১৫ টীকা)।)
প্রাণী সৃষ্টি : সমস্ত প্রাণী পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ :
(২১:৩০) ...এবং পানি থেকে সৃষ্টি করলাম প্রত্যেকটি প্রাণীকে৷
�
পৃথিবী সৃষ্টি : দেখুন আ> আকাশ ও �পৃথিবী সৃষ্টি :
(১৬:১৩) আর এই যে বহু রং বেরংয়ের জিনিস তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীতে সৃষ্টি করে রেখেছেন এগুলোর মধ্যেও অবশ্যি নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা শিক্ষাগ্রহণ করে৷ (৫৭:১৭) খুব ভাল করে জেনে নাও, আল্লাহ ভূ-পৃষ্ঠকে মৃত হয়ে যাওয়ার পর জীবন দান করেন৷ আমরা তোমাদেরকে স্পষ্টভাবে নির্দশনসমূহ দেখিয়ে দিয়েছি যাতে তোমরা বিবেক-বুদ্ধি কাজে লাগাও
চন্দ্র সূর্য সৃষ্টি :
�তিনিই সূর্যকে করেছেন দীপ্তিশালী ও চন্দ্রকে আলোকময়, এবং তার মনযিলেও ঠিকমত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন যাতে তোমরা তার সাহায্যে বছর গণনা ও তারিখ হিসেব করতে পারো৷ আল্লাহ এসব কিছু (খেলাচ্ছলে নয় বরং )উদ্দেশ্যমূলকভাবেই সৃষ্টি করেছেন্ তিনি নিজের নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে পেশ করেছেন যারা জ্ঞানবান তাদের জন্য -১০:০৫,
(২১:৩৩) আর আল্লাহই রাত ও দিন তৈরি করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্র সৃষ্টি করেছেন, প্রত্যেকেই এক একটি কক্ষপথে সাঁতার কাটছে৷
(২৫.ফুরকান:৬১) অসীম বরকত সম্পন্ন তিনি যিনি আকাশে বুরুজ নির্মাণ করেছেন এবং তার মধ্যে একটি প্রদীপ ও একটি আলোকময় চাঁদ উজ্জ্বল করেছেন৷
বিস্তারিত দেখুন :� ক > কুরআন ও বিজ্ঞান > মহাকাশ বিজ্ঞান।
(২৯-আনকাবুত:৬১) যদি� তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করো পৃথিবী ও আকাশসমূহ কে সৃষ্টি করেছেন এবং চন্দ্র ও সূর্যকে কে নিয়ন্ত্রিত করে রেখেছেন তাহলে অবশ্যই তারা বলবে আল্লাহ, এরপর এরা প্রতারিত হচ্ছে কোন দিক থেকে?
মানব সৃষ্টি সংক্রান্ত : মানুষ সৃষ্টির উপাদান পানি, মাটি ,বীর্য :
(৩২- আস-সাজদা : ৭) যে জিনিসই তিনি সৃষ্টি করেছেন উত্তম রূপে সৃষ্টি করেছেন৷� তিনি মানুষ সৃষ্টির সূচনা করেছেন কাদামাটি থেকে, ৮) তারপর তার বংশ উৎপাদন করেছেন এমন সূত্র থেকে যা তুচ্ছ পানির মতো৷ ৯) তারপর তাকে সর্বাঙ্গ সুন্দর করেছেন এবং তার মধ্যে নিজের রূহ ফুঁকে দিয়েছেন , আর তোমাদের কান, চোখ ও হৃদয় দিয়েছেন,� তোমরা খুব কমই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো৷
(১৫:২৬) আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি শুকনো ঠন্ঠনে পচা মাটি থেকে৷
(১৫:২৮) তারপর তখনকার কথা স্মরণ করো যখন তোমার রব ফেরেশতাদের বললেন, আমি শুকনো ঠন্ঠনে পচা মাটি থেকে একটি মানুষ সৃষ্টি করছি৷(১৫:২৯) যখন আমি তাকে পূর্ণ অবয়ব দান করবো এবং তার মধ্যে আমার রূহ থেকে কিছু ফুঁক দেবো৷
(১৮:৩৭) তার প্রতিবেশী কথাবার্তার মধ্যে তাকে বললো, �তুমি কি কুফরী করছো সেই সত্তার যিনি তোমাকে মাটি থেকে তারপর শুক্র থেকে পয়দা করেছেন এবং তোমাকে একটি পূর্ণাবয়ব মানুষ বানিয়ে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন ?
(হাজ্ব:৫) হে লোকেরা! যদি তোমাদের মৃত্যু পরের জীবনের ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকে, তাহলে তোমরা জেনে রাখো, আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি মাটি থেকে, তারপর শুক্র থেকে, তারপর রক্তপিণ্ড থেকে, তারপর গোশতের টুকরা থেকে, যা আকৃতি বিশিষ্টও হয় এবং আকৃতিহীনও৷ (এ আমি বলছি) তোমাদের কাছে সত্যকে সুস্পষ্ট করার জন্য৷ আমি যে শুক্রকে চাই একটি বিশেষ সময় পর্যন্ত গর্ভাশয়ে স্থিত রাখি, তারপর একটি শিশুর আকারে তোমাদের বের করে আনি, (তারপর তোমাদের প্রতিপালন করি) যাতে তোমরা নিজেদের পূর্ণ যৌবনে পৌঁছে যাও৷ আর তোমাদের কাউকে কাউকে তার পূর্বেই ডেকে ফিরিয়ে নেয়া হয় এবং কাউকে হীনতম বয়সের দিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়, যাতে সবকিছু জানার পর আবার কিছুই না জানে৷আর তোমরা দেখছো যমীন বিশুষ্ক পড়ে আছে তারপর যখনই আমি তার ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করেছি তখনই সে সবুজ শ্যামল হয়েছে, স্ফীত হয়ে উঠেছে এবং সব রকমের সুদৃশ্য উদ্ভিদ উদগত করতে শুরু করেছে৷
"মানুষের সৃষ্টি শুরু করেন মাটি থেকে তারপর তার বংশ-ধারা চালান একটি নির্যাস থেকে যা বের হয় তুচ্ছ পানির আকারে।" (আস সাজদাহ, ৭-৮ আয়াত)
(১৬:৪) তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন ছোট্ট একটি ফোঁটা থেকে৷ তারপর দেখতে দেখতে সে এক কলহপ্রিয় ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে৷
(মু�মিনুন:১২) আমি মানুষকে তৈরী করেছি মাটির উপাদান থেকে, ১৩) তারপর তাকে একটি সংরক্ষিত স্থানে টপ্কে পড়া ফোঁটায় পরিবর্তত করেছি, ১৪) এরপর সেই ফোঁটাকে জমাট রক্তপিন্ডে পরিণত করেছি, তারপর সেই রক্তপিন্ডকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি,এরপর মাংসপিন্ডে অস্থি-পিঞ্জর স্থাপন করেছি, তারপর অস্থি-পঞ্জরকে ঢেকে দিয়েছি গোশত দিয়ে, তারপর তাকে দাঁড় করেছি স্বতন্ত্র একটি সৃষ্টি রূপে৷ কাজেই আল্লাহ বড়ই বরকত সম্পন্ন, সকল কারিগরের চাইতে উত্তম কারিগর তিনি৷
(২৫.ফুরকান:৫৪) আর তিনিই পানি থেকে একটি মানুষ তৈরি করেছেন, আবার তার থেকে বংশীয় ও শ্বশুরালয়ের দু�টি আলাদা ধারা চালিয়েছেন৷ তোমার রব বড়ই শক্তি সম্পন্ন৷
(৩০-রূম: ২০) তাঁর� নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে, তিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে তাঁরপর সহসা তোমরা হলে মানুষ, (পৃথিবীর বুকে) ছড়িয়ে পড়ছো৷
বিস্তারিত দেখুন : ক > কুরআন ও বিজ্ঞান > বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে আল্লাহর অস্তিত্ব ও আখিরাতের সত্যতার প্রমাণ ।
নারী সৃষ্টি :
(৩০-রূম: ২১) আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে , তিনি তোমাদের জন্য তোমাদেরই জাতি থেকে সৃষ্টি করেছেন স্ত্রীগণকে, ২৮ যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ করো ২৯ এবং তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন৷ ৩০ অবশ্যই এর মধ্যে বহু নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা চিন্তা- ভাবনা করে৷
২৮ . অর্থাৎ স্রষ্টার প্রজ্ঞার পূর্ণতা হচ্ছে এই যে, তিনি মানুষকে শুধুমাত্র একটি জাতি (sexes) সৃষ্টি করেননি বরং তাকে দুটি জাতির আকারে সৃষ্টি করেছেন। মানবিকতাঁর দিক দিয়ে তারা একই পর্যায়ভুক্ত। তাদের সৃষ্টির মূল ফরমুলাও এক।কিন্তু তারা উভয়ই পরস্পর থেকে ভিন্ন শারীরিক আকৃতি, মানসিক ও আত্মিক গুণাবলী এবং আবেগ- অনুভূতি ও উদ্যোগ নিয়ে জন্মলাভ করে। আবার তাদের মধ্যে এমন বিস্ময়কর সম্বন্ধ ও সামঞ্জস্য সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে যার ফলে তারা প্রত্যেকে পুরোপুরি অন্যের জোড়ায় পরিণত হয়েছে। প্রত্যেকের শরীর এবং প্রবৃত্তি ও উদ্যোগসমূহ অন্যের শারীরিক ও প্রবৃত্তির দাবীসমূহের পরিপূর্ণ জবাব। এ ছাড়াও সেই প্রাজ্ঞ স্রষ্টা ও উভয় জাতির লোকদেরকে সৃষ্টির সূচনা থেকেই বরাবর ও আনুপাতিক হারে সৃষ্টি করে চলবেন। আজ পর্যন্ত কখনো দুনিয়ার কোন জাতির মধ্যে বা কোন এলাকায় কেবলমাত্র পুত্র সন্তানই জন্মলাভ করে চলছে এমন কথাও শোনা যায় নি। এটা এমন একটা জিনিস যার মধ্যে কোন মানুষের হস্তক্ষেপ বা বুদ্ধি- কৌশল প্রয়োগের সামান্যতম অবকাশই নেই। মানুষ এ ব্যাপারে সামান্যতমও প্রভাব বিস্তার করতে পারে না যে, মেয়েরা অনবরত এমনি মেয়েলী বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মলাভ করতে থাকবে এবং ছেলেরা অনবরত এমন পুরুষালী বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মলাভ করতে থাকবে যা তাদের পরস্পরকে যথার্থ জোড়ায় পরিণত করবে। আর নারী ও পুরুষের জন্ম এমনি ধারাবাহিকভাবে একটি আনুপাতিক হারে হয়ে যেতে থাকবে , এ ব্যাপারে প্রভাব বিস্তার করার কোন মাধ্যম তাঁর নেই। হাজার হাজার বছর থেকে কোটি কোটি মানুষের জন্মলাভ এ কৌশল ও ব্যবস্থার এমনই সুসামঞ্জস্য পদ্ধতিতে কার্যকর থাকা কখনো নিছক আকস্মিক ঘটনা হতে পারে না আবার বহু ইলাহর সম্মিলিত ব্যবস্থাপনার ফলও এটা নয়। এ জিনিসটি সুস্পষ্টভাবে একথা প্রমাণ করে যে, একজন বিজ্ঞানী আর শুধুমাত্র একজন মহা বিজ্ঞানী স্রষ্টাই তাঁর পরিপূর্ণ জ্ঞান ও শক্তির মাধ্যমে শুরুতে পুরুষ ও নারীর একটি সর্বাধিক উপযোগী ডিজাইন তৈরি করেন। তাঁরপর তিনি এ ডিজাইন অনুযায়ী অসংখ্য পুরুষ ও অসংখ্য নারীর তাদের পৃথক ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য সহকারে সারা দুনিয়ায় একটি আনুপাতিক হারে জন্মলাভ করার ব্যবস্থা করেন।
২৯ . অর্থাৎ এটা কোন অপরিকল্পিত ব্যবস্থা নয়। বরং স্রষ্টা নিজেই পরিকল্পিতভাবে এ ব্যবস্থা করেছেন যার ফলে পুরুষ তাঁর প্রাকৃতিক দাবী নারীর কাছে এবং নারী তাঁর প্রাকৃতিক চাহিদা পুরুষের কাছে লাভ করবে এবং তারা উভয়ে পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত থেকেই প্রশান্তি ও সুখ লাভ করবে। এ বিজ্ঞানময় ব্যবস্থাপনাকে স্রষ্টা একদিকে মানব বংশধারা অব্যাহত থাকার এবং অন্যদিকে মানবিক সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে অস্তিত্ব দান করার মাধ্যমে পরিণত করেছেন। যদি এ দুটি জাতিকে নিছক দুটি পৃথক ডিজাইনে তৈরি করা হতো এবং তাদের মধ্যে এমন অস্থিরতা সৃষ্টি না করা হতো , যা তাদের পারস্পরিক সংযোগ ও সম্পর্ক ছাড়া প্রশান্তিতে পরিণত হতে পারতো না, তাহলে সম্ভবত ছাগল ভেড়ার মতো মানুষের বংশধারাও এগিয়ে যেতো কিন্তু তাদের সাহায্যে কোন সভ্যতা ও সংস্কৃতির অস্তিত্ব লাভ করার কোন সম্ভাবনাই থাকতো না। স্রষ্টা নিজের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সাহায্যে পুরুষ ও নারীর জন্য এমন পরস্পরের চাহিদা, তৃষ্ণা ও অস্থিরতাঁর অবস্থা সৃষ্টি করে রেখেছেন যার ফলে তারা উভয়ে মিলে একসাথে না থাকলে শান্তি ও সুখ লাভ করতে পারে না। সমগ্র প্রাণীজগতের বিপরীতে মানব জাতির মধ্যে এটিই হচ্ছে সভ্যতা ও সংস্কৃতির উন্মেষ ও বিকাশ লাভের মৌলিক কারণ। এ শান্তির অন্বেষায় তাদেরকে একত্রে ঘর বাঁধতে বাধ্য করে। এরি বদৌলতে পরিবার ও গোত্র অস্তিত্ব লাভ করে। এর ফলে মানুষের জীবনে সাংস্কৃতিক বিকাশ ঘটে। এ বিকাশে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক যোগ্যতা অবশ্যই সহায়ক হয়েছে।কিন্তু তা তাঁর আসল উদ্যোক্তা নয়। আসল উদ্যোক্তা হচ্ছে এ অস্থিরতা, যাকে পুরুষ ও নারীর অস্তিত্বের মধ্যে সংস্থাপিত করে তাদেরকে 'ঘর' বাঁধতে বাধ্য করা হয়েছে। কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তি এ কথা ভাবতে পারেন যে , এ বিপুল প্রজ্ঞা প্রকৃতির অন্ধ শক্তিসমূহ থেকে হঠাৎ এমনিই সৃষ্টি হয়ে গেছে ৷ অথবা বহু সংখ্যক ইলাহ কি এমনি ধরনের একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারতো, যার ফলে তারা এ গভীর জ্ঞানময় উদ্দেশ্য সামনে রেখে হাজার হাজার বছর থেকে অনবরত অসংখ্য পুরুষ ও নারীকে এ বিশেষ অস্থিরতা সহকারে সৃষ্টি করে যেতে থাকতো ৷ এ তো একজন জ্ঞানীর এবং মাত্র একজন জ্ঞানীরই প্রজ্ঞার সুস্পষ্ট নিদর্শন। কেবলমাত্র বুদ্ধিভ্রষ্ট ব্যক্তিই এটি দেখতে অস্বীকার করতে পারে।
৩০ . ভালোবাসা বলতে এখানে কামশক্তি ভালোবাসার (sexual love ) কথা বলা হয়েছে । নারী ও পুরুষের মধ্যে এটি আকর্ষণের প্রাথমিক উদ্যোক্তায় পরিণত হয়। তাঁরপর তাদেরকে পরস্পরের সাথে সংলগ্ন করে রাখে। আর 'রহমত' তথা দয়া মানে হচ্ছে এমন একটি আত্মিক সম্পর্ক , যা স্বামী- স্ত্রীর জীবনে পর্যায়ক্রমে বিকাশ লাভ করে। এর বদৌলতে তারা দু'জনে দু'জনার কল্যাণকাংখী , দু'জনের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং উভয়ের সুখে দুঃখে শরীক হয়ে যায়। এমনকি এমন এক সময় আসে যখন কামসিক্ত ভালোবাসা পিছনে পড়ে থাকে এবং বার্ধক্যে এ জীবনসাথী যৌবনকালের চাইতে অনেক বেশি অগ্রসর হয়ে পরস্পরের জন্য দয়া, স্নেহ ও মমতাঁর পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করতে থাকে। মানুষের মধ্যে শুরুতেই যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল তাকে সাহায্য করার জন্য স্রষ্টা মানুষের মধ্যে এ দুটি ইতিবাচক শক্তি সৃষ্টি করে দেন। এ অস্থিরতা তো শুধুমাত্র শান্তির প্রত্যাশী এবং এর সন্ধানে সে নারী ও পুরুষকে পরস্পরের দিকে নিয়ে যায়। এরপর এ দুটি শক্তি অগ্রসর হয়ে তাদের মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্বের এমন একটি সম্পর্ক জুড়ে দেয় যা দুটি পৃথক পরিবেশে লালিত আগন্তুকদেরকে একসাথে মিলিয়ে গভীরভাবে সংযুক্ত করে দেয়।এ সংযোগের ফলে সারা জীবনে তারা মাঝ দরিয়ায় নিজেদের নৌকা একসাথে চালাতে থাকে। একথা সুস্পষ্ট , কোটি কোটি মানুষ তাদের জীবনে এই যে ভালোবাসা ও দয়ার অভিজ্ঞতা লাভ করছে এগুলো কোন নিরেট বস্তুনয়। এগুলোকে ওজন ও পরিমাপ করা যেতে পারে না। মানুষের শারীরিক গঠনে যেসব উপাদানের সমাবেশ ঘটানো হয়েছে তাদের মধ্যে কোথাও এদের উৎস চিহ্নিত করা যেতে পারে না। কোন ল্যাবরেটরীতেও এদের জন্ম ও বিকাশ সাধনের কারণসমূহ অনুসন্ধান করা যেতে পারে না। এ ছাড়া এর আর কোন ব্যাখ্যাই করা যেতে পারে না যে, একজন প্রাজ্ঞ স্রষ্টা স্বেচ্ছাকৃতভাবে একটি উদ্দেশ্য সামনে রেখে পূর্ণ সামঞ্জস্য সহকারে মানুষের মধ্যে তা সংস্থাপন করে দিয়েছেন।
বৃদ্ধ অবস্থায় মানুষ :
(হাজ্ব:৫) ......এবং কাউকে হীনতম বয়সের দিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়, যাতে সবকিছু জানার পর আবার কিছুই না জানে৷
(অর্থাৎ এমন বৃদ্ধাবস্থা যখন মানুষের নিজের শরীরের ও অংগ-প্রত্যংগের কোন খোঁজ-খবর থাকে না। যে ব্যক্তি অন্যদেরকে জ্ঞান দিতো বুড়ো হয়ে সে এমন অবস্থায় পৌঁছে যায়, যাকে শিশুদের অবস্থার সাথে তুলনা করা যায়। যে জ্ঞান, জানা শোনা, অভিজ্ঞাতা ও দুরদর্শিতা ছিল তার গর্বের বস্তু তা এমনই অজ্ঞতায় পরিবর্তিত হয়ে যায় যে, একটি ছোট ছেলেও তার কথায় হাসতে থাকে।)
শৈশব , যৌবন , বৃদ্ধ :
(৩০-রূম: ৫৪) আল্লাহই দুর্বল অবস্থা থেকে তোমাদের সৃষ্টি করেন তাঁরপর এ দুর্বলতাঁর পরে তোমাদের শক্তি দান করেন, এ শক্তির পরে তোমাদেরকে আবার দুর্বল ও বৃদ্ধ করে দেন, তিনি যা চান সৃষ্টি করেন৷ ৭৯ আর তিনি সবকিছু জানেন, সব জিনিসের ওপর তিনি শক্তিশালী৷
৭৯ . অর্থাৎ শৈশব, যৌবন ও বার্ধক্য। এসব অবস্থা তাঁরই সৃষ্ট। তিনি যাকে চান দুর্বল করে সৃষ্টি করেন, যাকে চান তাকে শক্তিশালী করেন, যাকে চান তাকে শৈশব থেকে যৌবনে পদার্পণ করতে দেন না, যাকে চান তাকে যৌবনে মৃত্যু দান করেন, যাকে চান তাকে দীর্ঘ বয়স দান করার পরও সুস্থ সবল রাখেন, যাকে চান তাকে গৌরবান্বিত যৌবনকালের পরে বার্ধক্যে এমন কষ্টকর পরিণতির দান করেন যার ফলে দুনিয়াবাসী শিক্ষালাভ করে, এসবই তাঁর ইচ্ছা। মানুষ নিজের জায়গায় বসে যতই অহংকারে মত্ত হয়ে উঠুক না কেন আল্লাহর শক্তির শৃঙ্খলে সে এমনভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা যে, আল্লাহ তাকে যে অবস্থায়ই রাখুন না কেন তাঁর মধ্যে কোন পরিবর্তন আনা তাঁর পক্ষে কোনক্রমেই সম্ভবপর নয়।
আদম আ: এর� সৃষ্টি
দেখুন : আদম আ: এর সৃষ্টি কাহিনী,�
২:৩০-৩৯, ৭:১১,
মানব সৃষ্টির মূল কারণ : দ্বিতীয়বার সৃষ্টির কারণ : আখিরাতের প্রয়োজনীয়তা :
নিসন্দেহে সৃষ্টির সূচনা তিনিই করেন তারপর তিনিই দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করবেন,� যাতে যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদেরকে পূর্ণ ইনসাফ সহকারে প্রতিদান দেয়া যায় এবং যারা কুফরীর পথ অবলম্বন করে তারা পান করে ফুটন্ত পানি এবং ভোগ করে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি নিজেদের সত্য অস্বীকৃতির প্রতিফল হিসেবে � ১০:০৪,
জিন জাতির সৃষ্টি :
(১৫:২৭) আর এর আগে জিনদের সৃষ্টি করেছি আগুনের শিখা থেকে৷
শয়তানের সৃষ্টি কাহিনী :
দেখুন : ১। আদম আ: এর সৃষ্টি কাহিনী �
২। শয়তানের সৃষ্টি কাহিনী
জাহান্নাম সৃষ্টি :
জাহান্নাম সৃষ্টি করা হয়েছে কাদের জন্য :
যাদের অন্তর আছে কিন্তু উপলিদ্ধি করেনা, চোখ আছে কিন্তু দেখেনা, কান আছে কিন্তু শুনেনা, তারা পশুর ন্যায়, বরং তার চেয়েও নিকৃষ্ট : ৭:১৭৯,
সৃষ্টির পুনরাবৃত্তি তথা পরকাল অবশ্যই সংঘটিত হবে :
সৃষ্টির পুনরাবৃত্তি তথা পরকাল সংঘটিত হবেই : এটা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি ও দায়িত্ব
(২১:১০৪) সেদিন, যখন আকাশকে আমি এমনভাবে গুটিয়ে ফেলবো যেমন বাণ্ডিলের মধ্যে গুটিয়ে রাখা হয় লিখিত কাগজ, যেভাবে আমি প্রথমে সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম ঠিক তেমনিভাবে আবার তার পুনরাবৃত্তি করবো, এ একটি প্রতিশ্রুতি, যা আমার দায়িত্বের অন্তরভুক্ত এবং এ কাজ আমাকে অবশ্যই করতে হবে৷
� বায়ুমন্ডল এর সৃষ্টি :
বায়ুমন্ডলের অদৃশ্য কঠিন স্তর� :
ভূ পৃষ্ঠকে ঘিরে আছে একটি কঠিন বায়ুমন্ডলীয় ও ওজোন স্তর, যা বিভিন্ন মহাজাগতিক রশ্মি ও ক্ষতিকর বস্তু থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করছে :
(২১:৩২) আর আমি আকাশকে করেছি একটি সুরক্ষিত ছাদ, কিন্তু তারা এমন যে, এ নিদর্শনাবলীর প্রতি দৃষ্টিই দেয় না৷
(বর্তমানকালের পর্যবেক্ষণ থেকে জানা যায় , দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে মহাশূন্য থেকে পৃথিবীর দিকে যেসব উলকা ছুটে আসতে দেখা যায় তার সংখ্যা হবে প্রতিদিন এক লক্ষ কোটি । এর মধ্যে থেকে প্রায় ২ কোটি প্রতিদিন পৃথিবীর মধ্যাকার্ষণ এলাকার মধ্যে প্রবেশ করে পৃথিবীর দিকে ধাবিত হয় । তার মধ্য থেকে কোন রকমে একটা ভু-পৃষ্ঠে পৌঁছে । মহাশূন্যে এদর গতি হয় কমবেশী প্রতি সেকেণ্ডে ২৬ মাইল এবং কখনো তা প্রতি সেকেণ্ডে ৫০ মাইলেও পৌঁছে যায় । অনেক সময় খালি চোখেও অস্বাভাবিক উলকা বৃষ্টি দেখা যায় । পুরাতন রেকর্ড থেকে জানা যায় , ১৮৩৩ খৃষ্টাব্দের ১৩ নভেম্বর উত্তর আমেরিকার পূর্ব এলাকায় শুধুমাত্র একটিস্থানে মধ্য রাত্র থেকে প্রভাত পর্যন্ত ২ লক্ষ উলকা পিণ্ড নিক্ষিপ্ত হতে দেখা গিয়েছিল । ( ইনসাই - ক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা ১৯৪৬, ১৫ খণ্ড , ৩৩৭ - ৩৯ পৃঃ) হয়তো এই উলকা বৃষ্টিই উর্ধ জগতের দিকে শয়তানদের উড্ডয়নের পথে বাধার সৃষ্টি করে । কারণ পৃথিবীর উর্ধ সীমানা পার হয়ে মহাশূন্যে প্রতিদিন এক লক্ষ কোটি উলকাপাত তাদের জন্য মহাশূন্যের ঐ এলাকাকে সম্পূর্ণরূপে অনতিক্রম্য বানিয়ে দিয়ে থাকবে ।
এখানে উপরে যে সংরক্ষিত দূর্গগুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলোর ধরন সম্পর্কে কিছুটা অনুমান করা যেতে পারে । আপাত দৃষ্টিতে মহাশূন্য একেবারে পরিস্কার । এর মধ্যে কোথাও কোন দেয়াল বা ছাদ দেখা যায় না । কিন্তু আল্লাহ এ মাহশূন্যের বিভিন্ন অংশকে এমন কিছু অদৃশ্য দেয়াল দিয়ে ঘিরে রেখেছেন যা এ অংশের বিপদ ও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে অন্য অংশকে সংরক্ষিত করে রাখে । এ দেয়ালগুলোর বদৌলতেই প্রতিদিন গড়ে যে এক লক্ষ কোটি উলকা পিণ্ড পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে তা সব পথেই জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং মাত্র একটি এসে পৃথিবী পৃষ্ঠে পড়তে সক্ষম হয় । পৃথিবীতে উলকা পিণ্ডের যেসব নমুনা দুনিয়ার বিভিন্ন যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড়টির ওজন ৬৪৫ পাউণ্ড । এ পাথরটি ওপর থেকে পড়ে মাটির মধ্যে ১১ ফুট গভীরে প্রেথিত হয়ে গিয়েছিল । এ ছাড়াও এক জায়গায় ৩৬ ১/২ টনের একটি লোহার স্তূপ পাওয়া গেছে । বৈজ্ঞানিকদের মতে আকাশ থেকে এ লোহা নিক্ষিপ্ত হয়েছে । এ ছাড়া সেখানে এর স্তূপাকার অস্তিত্বের কোন কারণই তারা খুঁজে পাননি । চিন্তা করুন পৃথিবীর উর্ধ সীমানাকে যদি মজবুত দেয়ালের মাধ্যমে সংরক্ষিত না করা হতো তাহলে এসব উলকাপাতে পৃথিবীর কী অবস্থা হতো ! এ দেয়ালগুলোকেই কুরআনে বুরুজ (সংরক্ষিত দূর্গ) বলা হয়েছে ।)
সৎকাজ / সৎকর্ম / সৎকর্মশীল / সৎ লোক / সৎ সন্তান / সৎপথ/ সততা :
(হাজ্ব:৩৭) ...আর হে নবী! সৎকর্মশীলদেরকে সুসংবাদ দিয়ে দাও৷
�(১৮:৪৬) এ ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের একটি সাময়িক সৌন্দর্য-শোভা মাত্র৷ আসলে তো স্থায়িত্ব লাভকারী সৎকাজগুলোই তোমার রবের কাছে ফলাফলের দিক দিয়ে উত্তম এবং এগুলোই উত্তম আশা-আকাঙ্ক্ষা সফল হবার মাধ্যম৷
(১৯:৪৯) অতপর যখন সে তাদের থেকে এবং তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ইবাদত করতো তাদের থেকে আলাদা হয়ে গেলো তখন আমি তাকে ইসহাক ও ইয়াকুবের মতো সন্তান দিলাম এবং প্রত্যেককে নবী করলাম৷
ঈমান ও সৎকাজ অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত :
(৩০-রূম: ৪৫) যাতে যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদেরকে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে পুরষ্কৃত করেন৷ অবশ্যই তিনি কাফেরদেরকে পছন্দ করেন না৷
(হাজ্ব:২৩) (অন্যদিকে) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত হতে থাকবে৷ সেখানে তাদেরকে সোনার কাঁকন ও মুক্তো দিয়ে সাজানো হবে �এবং তাদের পোশাক হবে রেশমের৷
(২১:৭৩) আর আমি তাদেরকে নেতা বানিয়ে দিলাম, তারা আমার নির্দেশ অনুসারে পথনির্দেশা দিতো এবং আমি তাদেরকে অহীর মাধ্যমে সৎকাজের, নামায কায়েম করার ও যাকাত দেবার নির্দেশ দিয়েছিলাম এবং তারা আমার ইবাদাত করতো৷
(১১:২৩) তবে যারা ঈমান আনে, সৎকাজ করে এবং নিজের রবের একনিষ্ঠ অনুগত বান্দা হয়ে থাকে, তারা নিশ্চিত জান্নাতের অধিবাসী এবং জান্নাতে তারা চিরকাল থাকবে৷
(২০:৭৫) আর যারা তার সামনে মু�মিন হিসেবে সৎকাজ করে হাযির হবে তাদের জন্য রয়েছে সুমহান মর্যাদা,
(২০:৮২) তবে যে তাওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তারপর সোজা-সঠিক পথে চলতে থাকে তার জন্য আমি অনেক বেশী ক্ষমাশীল৷
(২০:১১২) আর যে ব্যক্তি সৎকাজ করবে এবং সেই সংগে সংগে সে মুমিনও হবে তার প্রতি কোন জুলুম বা অধিকার হরণের আশংকা নেই৷
(২১:৯৪) কাজেই যে ব্যক্তি মুমিন থাকা অবস্থায় সৎকাজ করে, তার কাজের অমর্যাদা করা হবে না এবং আমি তা লিখে রাখছি৷
(হাজ্ব:১৪) (পক্ষান্তরে) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত হবে; আল্লাহ যা চান তাই করেন৷
(হাজ্ব:৫৬) সেদিন বাদশাহী হবে আল্লাহর এবং তিনি তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেবেন৷ যারা ঈমানদার ও সৎকর্মশীল হবে তারা যাবে নিয়ামত পরিপূর্ণ জান্নাতে ।
(৩০-রূম: ১৫) যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তারা একটি বাগানে ১৯ আনন্দে থাকবে৷
(৩২- আস-সাজদা : ১৯) যারা ঈমান এনেছে এবং যারা সৎকাজ করেছে তাদের জন্য তো রয়েছে জান্নাতের বাসস্থান , ৩২ আপ্যায়নের জন্য তাদের কাজের প্রতিদানস্বরূপ৷
�
৩২ . অর্থাৎ সেই জান্নাতগুলো নিছক তাদের প্রমোদ উদ্যান হবে না বরং সেখানেই হবে তাদের আবাস। চিরকাল তারা সেখানে বসবাস করবে।
(৩৩-আহযাব: ৩১) আর তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে এবং সৎকাজ করবে তাকে আমি দুবার প্রতিদান দেবো ৪৫ এবং আমি তার জন্য সম্মানজনক রিযিকের ব্যবস্থা করে রেখেছি৷
৪৫. ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : শ > শাস্তি > দুবার শাস্তি ও দুবার পুরস্কারের তাৎপর্য কি ?
যারা ঈমান আনে ও সৎকর্মশীল হয়, তার তো আঁকড়ে ধরলো একটি শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল :
(৩১-লোকমান: ২২) যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে ৪০ এবং কার্যত সে সৎকর্মশীল, ৪১ সে তো বাস্তবিকই শক্ত করে আঁকড়ে ধরে একটি নির্ভরযোগ্য আশ্রয়৷ আর যাবতীয় বিষয়ের শেষ ফায়সালা রয়েছে আল্লাহরই হাতে৷
৪০ . অর্থাৎ নিজেকে পুরোপুরি আল্লাহর বন্দেগীতে নিয়োজিত করে। নিজের কোন জিনিসকে আল্লাহর বন্দেগীর বাইরে রাখে না। নিজের সমস্ত বিষয় আল্লাহর হাতে সোপর্দ করে দেয় এবং তার প্রদত্ত পথনির্দেশকে নিজের সারা জীবনের আইনে পরিণত করে।
৪১ . অর্থাৎ নিজেকে আল্লাহর হাতে সোপর্দ করার ঘোষণা দেয়া হবে কিন্তু কার্যত আল্লাহর অনুগত বান্দার নীতি অবলম্বন করা হবে না, এমনটি যেন না হয়।
�ঈমান ও সৎকাজ� এর অর্থ কি ? সৎকাজের পুরস্কার কয়েকগুন দেয়া হবে - এর অর্থ কি ?
(২৯-আনকাবুত:৭) আর যারা ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তাদের দুষ্কৃতিগুলো আমি তাদের থেকে দূর করে দেবো এবং তাদেরকে তাদের সর্বোত্তম কাজগুলোর প্রতিদান দেবো৷ ১০
১০ . ঈমান অর্থ এমন সব জিনিসকে আন্তরিকভাবে মেনে নেয়া, যেগুলো মেনে নেবার জন্য আল্লাহ, তার রসূল ও তার কিতাব দাওয়াত দিয়েছে। আর সৎকাজ হচ্ছে, আল্লাহ ও তার রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করা। মানুষের চিন্তাধারা, ধারণা- কল্পনা ও ইচ্ছার পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতাই হচ্ছে মন ও মস্তিষ্কেও সৎকাজ। খারাপ কথা না বলা এবং হক-ইনসাফ ও সত্য-সততা অনুযায়ী সব কথা বলাই হচ্ছে কণ্ঠের সৎকাজ। আর মানুষের সমগ্র জীবন আল্লাহর আনুগত্য ও বন্দেগীর মধ্যে এবং তার বিধানসমূহ মেনে চলে অতিবাহিত করাই হচ্ছে অঙ্গ -প্রত্যঙ্গ ও ইন্দ্রিয়ের সৎকাজ। এ ঈমান ও সৎকাজের দুটি ফল বর্ণনা করা হয়েছে।
একঃ মানুষের দুষ্কৃতি ও পাপগুলো তার থেকে দূর করে দেয়া হবে।
দুইঃ তার সর্বোত্তম কাজসমূহের সর্বোত্তম পুরস্কার তাকে দেয়া হবে।
পাপ ও দুষ্কৃতির কয়েকটি অর্থ হয়। একটি অর্থ হচ্ছে ঈমান আনার আগে মানুষ যতই পাপ করে থাকুক না কেন ঈমান আনার সাথে সাথেই তা সব মাফ হয়ে যাবে। দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে , ঈমান আনার পর মানুষ বিদ্রোহ প্রবণতা সহকারে নয় বরং মানবিক দুর্বলতা বশত যেসব ভুল-ত্রুটি করে থাকে, তার সৎকাজের প্রতি নজর রেখে সেগুলো উপেক্ষা করা হবে। তৃতীয় অর্থ হচ্ছে , ঈমান ও সৎকর্মশীলতার জীবন অবলম্বন করার কারণে আপনা-আপনিই মানুষের নফসের সংশোধন হয়ে যাবে এবং তার অনেকগুলো দুর্বলতা দূর হয়ে যাবে। ঈমান ও সৎকাজের প্রতিদান সম্পর্কে যে কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছেঃ
"লা নাজ্ঝা ইয়ান্নাহুম আহসানাল্লাযী কানু ইয়া'মালুন।"
এর দুটি অর্থ হয়। একটি হচ্ছেঃ মানুষের সৎকাজগুলোর মধ্যে যেটি হবে সবচেয়ে ভালো সৎকাজ, তাকে সামনে রেখে তার জন্য প্রতিদান ও পুরস্কার নির্ধারণ করা হবে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, মানুষ তার কার্যাবলীর দৃষ্টিতে যতটা পুরস্কারের অধিকারী হবে তার চেয়ে বেশি ভালো পুরস্কার তাকে দেয়া হবে। একথাটি কুরআনের অন্যান্য স্থানেও বলা হয়েছেঃ
-----------------------
"যে ব্যক্তি সৎকাজ নিয়ে আসবে তাকে তার থেকে দশগুণ বেশি দেয়া হবে।" (আনআমঃ১৬০ আয়াত)
সূরা আল কাসাসে বলা হয়েছেঃ
--------------------------
" যে ব্যক্তি সৎকাজ নিয়ে আসবে তাকে তার চেয়ে উত্তম প্রতিদান দেয়া হবে।"
সূরা নিসায় বলা হয়েছেঃ
-----------------------------------
আল্লাহ তো কণামাত্র ও জুলুম করেন না এবং সৎকাজ হলে তাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেন।"
সৎকাজ বলতে কি বুঝায় ? সৎকর্মশীল কারা ? সৎকাজ ও সৎকর্মশীলতার কুরআনিক ধারণা, ঘটনাক্রমে সৎকাজ করা আর সৎকর্মশীল হওয়া কি এক জিনিস ? �:
(৩১-লোকমান:২) এগুলো জ্ঞানগর্ভ কিতাবের আয়াত৷ ৩) পথনির্দেশনা ও অনুগ্রহ সৎকর্মশীলদের জন্য ২ ৪) যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আখেরাতে বিশ্বাস করে৷৩ ৫) এরাই তাদের রবের পক্ষ থেকে সঠিক পথে রয়েছে এবং এরাই সাফল্য লাভ করবে৷
২ . অর্থাৎ এ আয়াতগুলো সঠিক পথনির্দেশক এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুগ্রহের রূপলাভ করে এসেছে। কিন্তু এ পথনির্দেশনা ও অনুগ্রহ থেকে লাভবান হয় একমাত্র তারাই যারা সৎকাজ করার পথ অবলম্বন করে, সৎ হতে চায়, কল্যাণ ও ন্যায়ের সন্ধান করে এবং অসৎকাজ সম্পর্কে যখনই সতর্ক করে দেয়া হয় তখনই তা পরিহার করে এবং কল্যাণ ও ন্যায়ের পথ যখনই সামনে খুলে রেখে দেয়া হয় তখনই সে পথে চলতে শুরু করে। আর যারা অসৎকাজ করে ও অসৎ মনোবৃত্তির অধিকারী তারা এ পথনির্দেশনা থেকে লাভবান হবে না এবং এ অনুগ্রহেরও কোন অংশ পাবে না।
৩ . যাদেরকে সৎকর্মশীল বলা হয়েছে তারা কেবলমাত্র এ তিনটি গুণাবলীর অধিকারী, একথা বলা হয়নি। আসলে প্রথমে 'সৎকর্মশীল' শব্দটি ব্যাপক অর্থে বর্ণনা করে এদিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, এ কিতাব যেসব অপকর্মে বাধা দেয় এ সৎকর্মশীলরা সেসব থেকে বিরত থাকে, আর এ কিতাব যেসব কাজ করতে আদেশ করে ও উৎসাহ দেয় এ সৎকর্মশীলরা সেসবগুলোই যত্নসহকারে ও আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সম্পন্ন করে। তারপর এ "সৎকর্মশীলদের " তিনটি গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলী বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একথা প্রকাশ করাই উদ্দেশ্য যে, বাদবাকি সমস্ত সৎকাজ কিন্তু এ তিনটি সদগুণের ওপরই নির্ভর করবে। তারা নামায কায়েম করে। এর ফলে আল্লাহর হুকুম মেনে চলা ও আল্লাহর ভয়ে ভীত হওয়া তাদের স্থায়ী অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। তারা যাকাত দেয়। এর ফলে আত্মত্যাগের প্রবণতা তাদের মধ্যে সুদৃঢ় ও শক্তিশালী হয়, পার্থিব সম্পদের প্রতি মোহ প্রদমিত হয় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের আকাঙ্ক্ষা জেগে ওঠে। তারা আখেরাতে বিশ্বাস করে। এর ফলে তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ ও জবাবদিহি করার অনুভূতি জাগে। এর বদৌলতে তারা এমন জন্তু-জানোয়ারের মতো হয় না যারা চারণক্ষেত্রে বাঁধনহারা হৃদয়ে এদিক ওদিক চরে বেড়ায়। বরং তারা এমন মানুষদের মতো হয়ে যায় যারা নিজেদেরকে স্বেচ্ছাচারী মনে করে না। মনে করে, তারা কোন প্রভুর গোলাম এবং নিজেদের সমস্ত কাজের জন্য প্রভুর সামনে জবাবদিহি করতে বাধ্য। এ তিনটি বিশেষত্বের কারণে এ 'সৎকর্মশীলরা' ঠিক তেমনি ধরনের সৎকর্মশীল থাকে না যারা ঘটনাক্রমে কোন সৎকাজ করে বসে এবং তাদের অসৎকাজও তেমনি সৎকাজের মতো একই ধারায় অনুষ্ঠিত হতে পারে। পক্ষান্তরে এ বিশেষত্বগুলো তাদের মধ্যে একটি চিন্তা ও নৈতিক ব্যবস্থার জন্ম দেয় যার ফলে তাদের সৎকাজগুলো একটি ধরা বাঁধা নিয়মানুসারে অনুষ্ঠিত হতে থাকে এবং অসৎকাজ যদি কখনো হয়ে যায়ই তাহলে তা হয় ঘটনাক্রমে। তাদের কোন গভীর চিন্তা ও নৈতিক উদ্যোগ তাদেরকে নিজেদের প্রাকৃতিক চাহিদা অনুসারে অসৎপথে নিয়ে যায় না।
কাফেরদের সৎকাজ ধর্তব্যের মধ্যে গণ্য হবে না, কারণ কুফরীই সবচেয়ে বড় অসৎকাজ, এরপরে অন্যকোন সৎকাজ বা অসৎকাজ বলা যায়, মূল্যহীন :
(৩০-রূম: ১৬) আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার নিদর্শনাবলী ও পরলোকের সাক্ষাতকারকে মিথ্যা বলেছে ২১ তাদেরকে আযাবে হাজির রাখা হবে৷
২১ . একথাটি অবশ্যই প্রণিধানযোগ্য যে, ঈমানের সাথে সৎকাজের কথা বলা হয়েছে, যার ফলে মানুষ মহান মর্যাদা সম্পন্ন পরিণামফল ভোগ করবে।কিন্তু কুফরীর অশুভ পরিণাম বর্ণনা প্রসঙ্গে অসৎকাজের কোন বর্ণনা দেয়া হয়নি। এ থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয় যে, মানুষের পরিণাম নষ্ট করার জন্য কুফরীই যথেষ্ঠ। অসৎকাজের সাথে তাঁর শামিল হওয়ায় বা না হওয়ায় কিছু যায় আসে না।
সততার দুনিয়াবী পুরস্কার : আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রকৃত হিকমত ও জ্ঞান লাভ করা যায় :
(২৮-ক্বাছাছ : ১৪) মূসা যখন পূর্ণ যৌবনে পৌঁছে গেলো এবং তার বিকাশ পূর্ণতা লাভ করলো১৮ তখন আমি তাকে হুকুম ও জ্ঞান দান করলাম,১৯ সৎলোকদেরকে আমি এ ধরনেরই প্রতিদান দিয়ে থাকে৷
(১৮. অর্থাৎ যখন তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সর্ম্পূণ হয়ে গেলো। ইহুদী বিবরন সমূহে এ সময় হযরত মূসার বিভিন্ন বয়সের কথা বলা হয়েছে। কোথাও ১৮,কোথাও ২০ আবার কোথাও ৪০ বছরো বলা হয়েছে। বাইবেলের নূতন নিয়মে ৪০বছর বলা হয়েছে(প্রেরিতদের কার্য বিবরন ৭:২৩)কিন্তু কোরআন কোন বয়স নির্দেশ করেনি। যে উদ্দেশ্যে কাহীনি বর্ণনা করা হয়েছে সেজন্য কেবল মাত্র এতটুকু জেনে নেয়াই যতেষ্ঠ যে, সামনের দিকে যে ঘটনার কথা বলা হচ্ছে তা এমন এক সময়ের, যখন হযরত মূসা আলাহিসসালাম পূর্ণ যৌবনে পৌছে গিয়েছিলেন।
১৯. হুকুম অর্থ হিকমত, বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা, ধী-শক্তি ও বিচারবুদ্ধি। আর জ্ঞান বলতে বুঝানো হয়েছে দ্বীনী ও দুনিয়াবী উভয় ধরনের তত্ত্বজ্ঞান। কারণ নিজের পিতামাতার সাথে সম্পর্ক-সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠিত থাকার কারণে তিনি নিজের বাপ-দাদা তথা ইউসুফ, ইয়াকুব ও ইসহাক আলাইহিমুস সালামের শিক্ষার সাথে পরিচিত হতে পেরেছিলেন। আবার তদানীন্তন বাদশাহর পরিবারে প্রতিপালিত হবার কারণে সমকালীন মিসরবাসীদের মধ্যে প্রচলিত জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এ হুকুম ও জ্ঞানদান অর্থ নবুওয়াত দান নয়। কারণ নবুওয়াত তো মূসাকে এর কয়েক বছর পরে দান করা হয়। সামনের দিকে একথা বর্ণনা করা হয়েছে। ইতিপূর্বে সূরা শু'আরায়ও (২১ আয়াত) এ বর্ণনা এসেছে।)
�
ইহকালীন ও পরকালীন সাফল্য সৎকর্মশীল মু�মিনদের জন্যই নির্ধারিত:
�(হাজ্ব:৭৭) হে ঈমানদারগণ! রুকূ� ও সিজদা করো, নিজের রবের বন্দেগী করো এবং নেক কাজ করো, হয়তো তোমাদের ভাগ্যে সফলতা আসবে৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৬৭) তবে যে ব্যক্তি আজ তওবা করেছে, ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে সে-ই সাফল্যলাভের আশা করতে পারে৷
(৩১-লোকমান: ৩) ........... অনুগ্রহ সৎকর্মশীলদের জন্য ৪) যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আখেরাতে বিশ্বাস করে৷৫) এরাই তাদের রবের পক্ষ থেকে সঠিক পথে রয়েছে এবং এরাই সাফল্য লাভ করবে৷ ৪
৪ . যে সময় এ আয়াত নাযিল হয় তখন মক্কার কাফেররা মনে করতো এবং প্রকাশ্যে বলতো যে, মুহাম্মাদ (সা) এবং তাঁর এ দাওয়াত গ্রহনকারী লোকেরা নিজেদের জীবন ধ্বংস করে চলছে। তাই একেবারে নির্দিষ্ট করে এবং পুরোপুরি জোর দিয়ে বলা হয়েছে, " এরাই সফলকাম হবে॥" অর্থাৎ এরা ধ্বংস হবে না, যেমন বাজে ও উদ্ভট চিন্তার মাধ্যমে তোমরা মনে করে বসেছো। বরং এরাই আসলে সফলকাম হবে এবং যারা এপথ অবলম্বন করতে অস্বীকার করেছে তারাই হবে অকৃতকার্য।
এখানে যে ব্যক্তি সাফল্যকে শুধুমাত্র এ দুনিয়ার চৌহদ্দির মধ্যেই সীমাবদ্ধ এবং তাও আবার বৈষয়িক প্রাচুর্য ও সমৃদ্ধি অর্থে গ্রহণ করবে, কুরআনের প্রকৃত অর্থ অনুধাবন করার ব্যাপারে সেও মারাত্মক ভুল করবে। সাফল্যের কুরআনী ধারণা জানার জন্য নিম্নলিখিত আয়াতগুলো তাফহীমুল কুরআনের ব্যাখ্যা সহকারে গভীরভাবে অধ্যয়ন করা উচিত। আল বাকারা, ২-৫; আল ইমরান, ১০৩, ১৩০ ও ২০০; আল মায়েদাহ, ৩৫ ও ৯০; আল আন'আম, ২১; আল আরাফ, ৭-৮ ও ১৫৭; আত তাওবাহ, ৮৮; ইউনুস, ১৭; আন নাহল, ১১৬; আল হাজ্জ, ৭৭; আল মু'মিনুন, ১ ও ১১৭; আন নূর, ৫১; এবং আর রূম, ৪৮ আয়াত।
(মু�মিনুন:১) নিশ্চিতভাবে সফলকাম হয়েছে মু�মিনরা ।
(মূল শব্দ হচ্ছে 'ফালাহ' । ফালাহ মানে সাফল্য ও সমৃদ্ধি । এটি ক্ষতি, ঘাটতি , লোকসান ও ব্যর্থতার বিপরীত অর্থবোধক শব্দ।যেমন---------- মানে হচ্ছে , অমুক ব্যক্তি সফল হয়েছে, নিজেদের লক্ষে পৌঁছে গেছে, প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ ও সমৃদ্ধিশালী হয়ে গেছে, তার প্রচেষ্টা ফলবতী হয়েছে, তার অবস্থা ভালো হয়ে গেছে।
---------- "নিশ্চিতভাবেই সফলতা লাভ করেছে"। এ শব্দগুলো দিয়ে বাক্য শুরু করার গুঢ় তাৎপর্য বুঝতে হলে যে পরিবেশে এ ভাষণ দেয়া হচ্ছিল তা চোখের সামনে রাখা অপরিহার্য । তখন একদিকে ছিল ইসলামী দাওয়াত বিরোধী সরদারবৃন্দ । তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নতির পর্যায়ে ছিল। তাদের কাছে ছিল প্রচুর ধন-দওলত । বৈষয়িক সমৃদ্ধির যাবতীয় উপাদান তাদের হাতের মুঠোয় ছিল । আর অন্যদিকে ছিল ইসলামী দাওয়াতের অনুসারীরা । তাদের অধিকাংশ তো আগে থেকেই ছিল গরীব ও দুর্দশাগ্রস্ত । কয়েকজনের অবস্থা সচ্ছল থাকলেও অথবা কাজ - কারবারের ক্ষেত্রে তারা আগে থেকেই সফলকাম থাকলেও সর্বব্যাপী বিরোধীতার কারণে তাদের অবস্থাও এখন খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। এ অবস্থায় যখন ''নিশ্চিতভাবেই মু'মিনরা সফলকাম হয়েছে'' বাক্যাংশ দিয়ে বক্তব্য শুরু করা হয়েছে তখন এ থেকে আপনা আপনি এ অর্থ বের হয়ে এসেছে যে, তোমাদের সাফল্য ও ক্ষতির মানদন্ড ভুল, তোমাদের অনুমান ত্রুটিপূর্ণ, তোমাদের দৃষ্টি দূরপ্রসারী নয়, তোমাদের নিজেদের যে সাময়িক ও সীমিত সমৃদ্ধিকে সাফল্য মনে করছো তা আসল সাফল্য নয়, তা হচ্ছে ক্ষতি এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যে অনুসারীদেরকে তোমরা ব্যর্থ ও অসফল মনে করছো তারাই আসলে সফলকাম ও সার্থক । এ সত্যের দাওয়াত গ্রহণ করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বরং তারা এমন জিনিস লাভ করেছে যা তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জায়গায় স্থায়ী সমৃদ্ধি দান করবে। আর ওকে প্রত্যাখান করে তোমরা আসলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর খারাপ পরিণতি তোমরা এখানেও দেখবে এবং দুনিয়ার জীবনকাল শেষ করে পরবর্তী জীবনেও দেখতে থাকবে।)
(আরো বিস্তারিত দেখুন : স > সফলতা)
পরকালীন সম্মান ও মর্যাদা সৎকর্মশীল মু�মিনদের জন্যই নির্ধারিত :
(২০:৭৫) আর যারা তার সামনে মু�মিন হিসেবে সৎকাজ করে হাযির হবে তাদের জন্য রয়েছে সুমহান মর্যাদা।
সৎকর্মশীল হওয়ার জন্য হালাল ও পবিত্র খাদ্য ভক্ষণ করা প্রধান শর্ত :
�(মু�মিনুন:৫১) হে রসূল! পাক-পবিত্র জিনিস খাও এবং সৎকাজ করো৷ ৪৬ তোমারা যা কিছুই করো না কেন আমি তা ভালোভাবেই জানি ৷
(৪৬.পাক-পবিত্র জিনিস বলে এমন জিনিস বুঝানো হয়েছে যা নিজেও পাক-পবিত্র এবং হালাল পথে অর্জিতও হয়। পবিত্র জিনিস খাওয়ার নির্দেশ দিয়ে বৈরাগ্যবাদ ও ভোগবাদের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ মধ্যপন্থার দিকে ইংগিত করা হয়েছে। মুসলমান বৈরাগী ও যোগীর মতো পবিত্র জীবিকা থেকে যেমন নিজেকে বঞ্চিত করতে পারে না, তেমনি দুনিয়া পূজারী ও ভোগবাদীর মতো হালাল-হারামের পার্থক্য না করে সব জিনিসে মুখও লাগাতে পারে না।
সৎকাজ করার আগে পবিত্র ও হালাল জিনিস খাওয়ার নির্দেশের মধ্যে এদিকে পরিষ্কার ইংগিত রয়েছে যে, হারাম খেয়ে সৎকাজ করার কোন মানে হয় না। সৎকাজের জন্য প্রথম শর্ত হচ্ছে হালাল রিযিক খাওয়া। হাদীসে বলা হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ''হে লোকেরা! আল্লাহ নিজে পবিত্র, তাই তিনি পবিত্র জিনিসই পছন্দ করেন।'' তারপর তিনি এ আয়াতটি তেলাওয়াত করেন এবং তারপর বলেনঃ
----------
''এক ব্যক্তি আসে সুদীর্ঘ পথ সফল করে। দেহ ধূলি ধূসরিত। মাথার চুল এলোমেলো। আকাশের দিকে হাত তুলে প্রার্থনা করেঃ হে প্রভু ! হে প্রভু ! কিন্তু অবস্থা হচ্ছে এই যে, তার খাবার হারাম, পানীয় হারাম, কাপড় চোপড় হারাম এবং হারাম খাদ্যে তার দেহ প্রতিপালিত হয়েছে। এখন কিভাবে এমন ব্যক্তির দোয়া কবুল হবে।'' (মুসলিম, তিরমিযী ও আহমাদ, আবু হুরাইরা (রা:) থেকে)
সৎকর্মশীল হওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করা :
(২৭.নামল:১৯)---- �হে আমার রব! ......নিজ অনুগ্রহে আমাকে তোমার সৎকর্মশীল বান্দাদের দলভুক্ত করো৷
আল্লাহ বেপরোয়া, কেউ অকৃতজ্ঞ হলে/সৎপথ অবলম্বন না করলে আল্লাহ তার ধার ধারেন না� :
(২৭-নমল:৪০)....আর যে ব্যক্তি শোকরগুযারী করে তার শোকর তার নিজের জন্যই উপকারী৷ অন্যথায় কেউ অকৃতজ্ঞ হলে, আমার রব করো ধার ধারে না এবং তিনি আপন সত্তায় আপনি মহীয়ান৷৪৯
�
(৪৯. অর্থাৎ তিনি কারো কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মুখাপেক্ষী নন। কারো কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ফলে তাঁর সার্বভৌম কর্তৃত্ব সামান্য পরিমাণও বৃদ্ধি পায় না আবার কারো অকৃতজ্ঞতার ফলে তাতে এক চুল পরিমাণ কমতিও হয় না। তিনি নিজস্ব শক্তি বলে সর্বময় কর্তৃত্ব প্রয়োগ করে যাচ্ছেন। বান্দাদের মানা না মানার উপর তাঁর কর্তৃত্ব নির্ভরশীল নয়। কুরআন মজীদে একথাটিই এক জায়গায় মূসার মুখ দিয়ে উদ্ধৃত করা হয়েছেঃ
إِنْ تَكْفُرُوا أَنْتُمْ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا فَإِنَّ اللَّهَ لَغَنِيٌّ حَمِيدٌ-
"যদি তোমরা এবং সারা দুনিয়াবাসীরা মিলে কুফরী করো তাহলেও তাতে আল্লাহর কিছু এসে যায় না এবং আপন সত্তায় আপনি প্রশংসিত।" (ইবরাহীম, ৮)
"সহীহ মুসলিমের নিম্নোক্ত হাদীসে কুদসীতেও এ একই বিষয়বস্তুর অবতারণা করা হয়েছেঃ
يقول الله تعالى يا عبادى لو انَّ اَوَّلكم وأخركم واِنْسكم وجنَّكم كانوا على اتقى قلب رجلٍ منكم مازاد ذالك فى ملكى شيئا � يا عبادى لو انَّ اَوَّلكم وأخركم واِنْسكم وجنَّكم كانوا على افجر قلب رجلٍ منكم ما نقص ذالك فى ملكى شيئا � يا عبادى انَّما هى اعمالكم احصيهالكم ثُمَّ اُوَفِّكم ايَّاها - فمن وجد خيرا فليحمد الله ومن وجد غير ذالك فلا يتلو منَّ الا نفسه -
"মহান আল্লাহ বলেন, হে আমার বান্দারা যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তোমরা সকল মানুষ ও জিন তোমাদের মধ্যকার সবচেয়ে বেশী মুত্তাকী ব্যক্তির হৃদয়ের মতো হয়ে যাও, তাহলে তার ফলে আমার বাদশাহী ও শাসন কর্তৃত্বে কিছুমাত্র বৃদ্ধি ঘটে না। হে আমার বান্দারা! যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তোমরা সকল মানুষ ও জিন তোমাদের মধ্যকার সবচেয়ে বেশী বদকার ব্যক্তিটির হৃদয়ের মতো হয়ে যাও, তাহলে এর ফলে আমার বাদশাহীতে কোন কমতি দেখা যাবে না। হে আমার বান্দারা ! এগুলো তোমাদের নিজেদেরই কর্ম, তোমাদের হিসেবের খাতায় আমি এগুলে গণনা করি, তারপর এগুলোর পুরোপুরি প্রতিদান আমি তোমাদের দিয়ে থাকি। কাজেই যারা ভাগ্যে কিছু কল্যাণ এসেছে তার আলাহর শোকরগুজারী করা উচিত এবং যে অন্যকিছু লাভ করেছে তার নিজেকে ভৎসনা করা উচিত।")
অসৎকাজে লিপ্ত আছে, অথচ মনে করছে সৎকাজ করছে : তারাই সবচেয়ে বড় হতভাগা ও� ক্ষতিগ্রস্থ:
কাহাফ : ১০৩-১০৫,
(কাহাফ:১০৩) হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলো, আমি কি তোমাদের বলবো নিজেদের কর্মের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশী ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত কারা ? ১০৪) তারাই, যাদের দুনিয়ার জীবনের সমস্ত প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম সবসময় সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত থাকতো এবং যারা মনে করতো যে, তারা সবকিছু সঠিক করে যাচ্ছে৷ ১০৫) এরা এমন সব লোক যারা নিজেদের রবের নিদর্শনাবলী মেনে নিতে অস্বীকার করেছে এবং তাঁর সামনে হাযির হবার ব্যাপারটি বিশ্বাস করেনি৷ তাই তাদের সমস্ত কর্ম নষ্ট হয়ে গেছে, কিয়ামতের দিন তাদেরকে কোনো গুরুত্ব দেবো না৷১
(১. অর্থাৎ এ ধরনের লোকেরা দুনিয়ায় যতই বড় বড় কৃতিত্ব দেখাক না কেন, দুনিয়া শেষ হবার সাথে সাথে সেগুলোও শেষ হয়ে যাবে । নিজেদের সুরম্য অট্টালিকা ও প্রাসাদ, নিজেদের বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ও সুবিশাল লাইব্রেরী, নিজেদের সুবিস্তৃত রাজপথ ও রেলগাড়ী, নিজেদের আবিস্কার ও উদ্ভাবনসমূহ, নিজেদের শিল্প ও কলকারখানা নিজেদের জ্ঞান বিজ্ঞান ও আর্ট গ্যালারী এবং আরো অন্যান্য যেসব জিনিস নিয়ে তারা গর্ভ করে তার মধ্য থেকে কোন জিনিসও তারা আল্লাহর তুলাদণ্ডে ওজন করার জন্য নিজেদের সাথে নিয়ে আল্লাহর দরবারে হাযির হতে পারবে না । সেখানে থাকবে শুধুমাত্র কর্মের উদ্দেশ্য এবং তার তার ফলাফল । যদি কারো সমস্ত কাজের উদ্দেশ্য দুনিয়ার জীবন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থেকে থাকে, ফলাফলও সে দুনিয়াতেই চেয়ে থাকে এবং দুনিয়ায় নিজের কাজের ফল দেখেও থাকে, তাহলে তার সমস্ত কার্যকলাপ এ ধ্বংসশীল দুনিয়ার সাথেই ধবংস হয়ে গেছে । আখেরাতে যা পেশ করে সে কিছু ওজন পেতে পারে তা অবশ্যি এমন কোন কর্মকাণ্ড হতে হবে, যা সে আল্লাহকে সন্তুষ্টি করার জন্য করেছে, তাঁর হুকুম মোতাবেক করেছে এবং যেসব ফলাফল আখেরাতে প্রকাশিত হয় সেগুলোকে উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহণ করে করেছে । এ ধরনের কোন কাজ যদি তার হিসেবের খাতায় না থাকে তাহলে দুনিয়ায় সে যা করেছিলৎ সবই নিসন্দেহে বৃথা যাবে ।)
সৎকর্মশীল বান্দারাই আল্লাহর অনুগ্রহ প্রাপ্ত : আর নবীগণের বড় গুণ হল তারা ছিলেন ছিলেন সৎকর্মশীল :
(২১:৮৬) এবং এদেরকে আমি নিজের অনুগ্রহের মধ্যে প্রবেশ করিয়েছিলাম, তারা ছিল সৎকর্মশীল৷
নবীদের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল: তারা ছিলেন ঈমানদার ও সাথে সাথে সৎকর্মশীলও :
(২১:৭২) ..... এবং প্রত্যেককে করলাম সৎকর্মশীল৷
(২১:৭৫) আর লূতকে আমি নিজের রহমতের আওতায় নিয়ে নিয়েছিলাম, সে ছিল সৎকর্মশীলদের অন্তরভুক্ত৷
আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীল লোকদের নিকবর্তী :
(৭:৫৬)......নিশ্চিতভাবেই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীল লোকদের নিকবর্তী৷
সৎলোকদের পরস্পরের মধ্যে আল্লাহ ভালোবাসা সৃ্ষ্টি করে দেবেন :
(১৯:৯৬) নিসন্দেহে যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে শ্রীঘ্রই রহমান তাদের জন্য অন্তরে ভালোবাসা সৃষ্টি করে দেবেন৷
মুসা আ: এর জাতির মধ্যে সত্যপন্থী একটি দলও ছিল
মুসা আ: এর জাতির মধ্যে সত্যপন্থী একটি দলও ছিল : ৭:১৫৯,
সৎ সন্তান লাভের জন্য দোয়া :
(১৯:৬) ... আর হে পরোয়ারদিগার! আমার সন্তানকে একজন পছন্দনীয় মানুষে পরিণত করো�৷
সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভূক্ত হওয়া ক্ষমা লাভ করার শর্ত :
যদি তোমরা সৎকর্মশীল হয়ে জীবন যাপন করো, তাহলে তিনি এমন লোকদের প্রতি ক্ষমাশীল যারা নিজেদের ভুলের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে বন্দেগীর নীতি অবলম্বন করার দিক ফিরে আসে৷- (১৭:২৫)
(আরো দেখুন : ক্ষমা লাভ করার শর্তসমূহ)
সৎ লোকদের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার জন্য এবং সৎকাজ করার তৌফিক লাভের জন্য দোয়া :
(২৭.নামল:১৯)---- �হে আমার রব!আমাক নিয়ন্ত্রণে রাখো, .....এবং আমাকে তৌফিক দাও যেন এমন সৎকাজ করি যা তুমি পছন্দ করো এবং নিজ অনুগ্রহে আমাকে তোমার সৎকর্মশীল বান্দাদের দলভুক্ত করো৷
(মূল শব্দ হচ্ছে رَبِّ أَوْزِعْنِي এখানে আরবী ভাষায় وزعٌ এর অর্থ হচ্ছে রুখে দেয়া। এ সময় হযরত সুলাইমানের একথা বলা اوْ زعنى ان اشكر نعملتك (আমাকে রুখে দাও, আমি তোমার অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো)। আমাদের কাছে আসলে এ অর্থ প্রকাশ করে যে, হে আমার রব! তুমি আমাকে যে বিরাট শক্তি ও যোগ্যতা দান করেছো তা এমন যে, যদি আমি সামান্য গাফিল হয়ে যাই তাহলে নাজানি বন্দেগীর সীমানা থেকে বের হয়ে আমি নিজের অহংকারে মত্ত হয়ে কোথা থেকে কোথায় চলে যাই। তাই হে আমার পরওয়ারদিগার! তুমি আমাকে নিয়ন্ত্রণে রাখো, যাতে আমি অনুগ্রহ অস্বীকারকারীর পরিবর্তে অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারীতে পরিণত হতে পারি।
২৬. সৎকর্মশীল বান্দাদের দলভূক্ত করার অর্থ সম্ভবত এ হবে যে, আখেরাতে আমার পরিণতি যেন সৎকর্মশীল লোকদের সাথে হয় এবং আমি যেন তাদের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। কারণ মানুষ যখন সতকাজ করবে তখন সৎকর্মশীল তো সে আপনা আপনিই হয়ে যাবে। তবে আখেরাতে কারো জান্নাতে প্রবেশ করা নিছক তার সতকর্মের ভিত্তিতে হতে পারে না বরং এটি আল্লাহর রহমতের ওপর নির্ভর করে। হাদীসে বলা হয়েছে, একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, لن يدخل احدكم الجنَّة عمله "তোমাদের কারো নিছক আমল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে না।" বলা হলো, ولا انت يا رسول الله "আপনার বেলায়ও কি একথা খাটে৷" জবাব দিলেন, ولا انا الا ان يتغمدنى الله تعالى برحمته "হ্যাঁ, আমিও নিছক আমার আমলের জোরে জান্নাতে প্রবেশ করবো না, যতণ না আল্লাহ তাঁর রহমত দিয়ে আমাকে ঢেকে নেবেন।")
(বিস্তারিত দেখুন :দ > দোয়া > আল কুরআনে বর্ণিত দোয়া সমূহ > হযরত সুলায়মান আ: দোয়া সমূহ। )
ঈমানদার ও সৎকর্মশীলদের জন্যই আল্লাহর দেয়া আইন কানুন সমূহ সহজ :
(১৮:৮৮) আর তাদের মধ্য থেকে যে ঈমান আনবে ও সৎকাজ করবে তার জন্য আছে ভালো প্রতিদান এবং আমরা তাকে সহজ বিধান দেবো৷�
(১৯:৯৭) বস্তুত হে মুহাম্মাদ! এ বাণীকে আমি সহজ করে তোমার ভাষায় এজন্য নাযিল করেছি যাতে তুমি মুত্তাকীদেরকে সুখবর দিতে ও হঠকারীদেরকে ভয় দেখাতে পারো৷
সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া :
ইসলামের ওপর আমাকে মৃত্যু দান করো এবং পরিণামে আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তরভূক্ত করো৷-১২:১০১,
সৎ লোকদের অন্যায় ভাবে কারাগারে প্রেরণ করা অসৎ নেতৃত্বের একটি প্রাচীনতম রীতি :
(১২:৩৫) তারপর তারা মনে করলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাকে কারারুদ্ধ করতে হবে, অথচ তারা (তার নিষ্কুলুষতা এবং নিজেদের স্ত্রীদের অসতিপনার) সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী দেখে নিয়েছিল৷ (ইউসুফ আ: কে কারাগারে প্রেরণ করা হলো)।
সৎকর্মশীলদের প্রতিদান নষ্ট হয় না :
(১৮:৩০) তবে যারা মেনে নেবে এবং সৎকাজ করবে, সেসব সৎকর্মশীলদের প্রতিদান আমি কখনো নষ্ট করি না৷
(২১:৯৪) কাজেই যে ব্যক্তি মুমিন থাকা অবস্থায় সৎকাজ করে, তার কাজের অমর্যাদা করা হবে না এবং আমি তা লিখে রাখছি৷
সৎকাজের সুফল� / পুরস্কার সমূহ ::
সৎকাজের দুনিয়াবী পুরস্কার :
নোট : সৎকাজ অবশ্যই ঈমান সহ সৎকাজ হতে হবে। কেননা ঈমান গ্রহণই হচ্ছে সবচেয়ে বড় সৎকাজ। কেননা কোন ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যযন্ত তার সৃষ্টি কর্তাকে বিশ্বাস করলো না , তাকে অস্বীকার করলো ও তার নাফরমাণী করলো, এতবড় অসৎকাজের পরে তার আর কোন সৎকাজটি ধর্তব্যের মধ্যে গণ্য হবে ?� কেননা আল্লাহর সন্তুষ্টি, সাওয়াব লাভ ও পরকালীণ কল্যাণ লাভ করার উদ্দেশ্য ব্যতীত কোন সৎকাজই প্রকৃত পক্ষে সৎকাজ নয়। কোন সৎকাজের পেছনে যতক্ষণ পর্যন্ত এ তিনটি নিয়ামক উদ্দেশ্য হিসেবে না থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত যে কোন সৎকাজের পেছনে আসলে এমন উদ্দেশ্য থাকে যা শেষ পর্যযন্ত সৎকাজকে কলুষিত করে দেয়।
(১৩:২৯)তারপর যারা সত্যের দাওয়াত মেনে নিয়েছে এবং সৎকাজ করেছে তারা সৌভাগ্যবান এবং তাদের জন্য রয়েছে শুভ পরিণাম৷
বিস্তারিত দেখুন : প > পুরস্কার > সৎকাজের দুনিয়াবী পুরস্কার,� আখিরাতের পুরস্কার । ক্লিক করুন: সৎকাজের দুনিয়াবী� পুরস্কার
সৎকাজের আখিরাতের পুরস্কার :
বিস্তারিত দেখুন : প > পুরস্কার > সৎকাজের আখিরাতের পুরস্কার । ক্লিক করুন : সৎকাজের আখিরাতের পুরস্কার
সৎকাজ কে� কে করে এ পরীক্ষা নেওয়ার জন্যই জীবন ও মৃত্যু সৃষ্টি করা হয়েছে :
সুরা মুলক : ১-৪।
(২০:১৫) কিয়ামত অবশ্যই আসবে, আমি তার সময়টা গোপন রাখতে চাই, যাতে প্রত্যেকটি প্রাণসত্তা তার প্রচেষ্টা অনুযায়ী প্রতিদান লাভ করতে পারে৷
তিনিই আকাশ ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, -যখন এর আগে তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল,- যাতে তোমাদের পরীক্ষা করে দেখেন তোমাদের মধ্যে কে ভালো কাজ করে৷ এখন যদি হে মুহাম্মদ! তুমি বলো, হে লোকেরা, মরার পর তোমাদের পুনরুজ্জীবিত করা হবে, তাহলে অস্বীকারকারীরা সংগে সংগেই বলে উঠবে৷ এতো সুস্পষ্ট যাদু৷-১১:৭,
অসৎকাজের প্রতিদান অসৎকাজের সমপরিমাণ হবে :
আর যারা খারাপ কাজ করেছে, তারা তাদের খারাপ কাজ অনুযায়ীই প্রতিফল পাবে � ১০:২৭, যখন তারা এ আযাব দেখবে তখন তারা মনে মনে পস্তাতে থাকবে৷ কিন্তু তাদের মধ্যে পূর্ণ ইনসাফ সহকারে ফায়সালা করা হবে,তাদের প্রতি কোন জুলুম হবে না৷-১০:৫৪,
(২৭-নমল:৯০) আর যারা অসৎ কাজ নিয়ে আসবে, তাদের সবাইকে অধোমুখে আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে৷ তোমরা কি যেমন কর্ম তেমন ফল - ছাড়া অন্য কোন প্রতিদান পেতে পার?১০৯(ক)
(১০৯(ক). কুরআন মজীদের বহু জায়গায় একথা সুস্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে যে, আখেরাতে অসত কাজের প্রতিদান ঠিক ততটাই দেয়া হবে যতটা কেউ অসত কাজ করেছে এবং সতকাজের প্রতিদান আল্লাহ মানুষের প্রকৃত কাজের তুলনায় অনেক বেশী দেবেন। এ সম্পর্কিত আরো বেশী দৃষ্টান্তের জন্য দেখুন সূরা ইউনুস ২৬-২৭, আল কাসাস-৮৪, আনকাবুত-৭, সাবা-৩৭-৩৮ এবং আল মু'মিন ৪০ আয়াত। )
(২৮-ক্বাছাছ : ৮৪) ...... যে কেউ খারাপ কাজ নিয়ে আসে তার জানা উচিৎ যে, অসৎ কর্মশীলরা যেমন কাজ করতো তেমনটিই প্রতিদান পাবে৷
সৎকাজ থেকে গাফেল হওয়ার একটি শয়তানি চিন্তা :
(১২:৯) চলো আমরা ইউসুফকে মেরে ফেলি অথবা তাকে কোথাও ফেলে দেই, যাতে আমাদের পিতার দৃষ্টি কেবল আমাদের দিকেই ফিরে আসে৷ এ কাজটি শেষ করে তারপর তোমরা ভালো লোক হয়ে যাবে৷
(অর্থাৎ এ একটি মাত্র খারাপ কাজ করেই তো আমি ভালো হয়ে যাবো, এ ধরণের শয়তানি চিন্তার আশ্রয় নিয়ে মানুষ অসৎ পথে পা বাড়াচ্ছে, এবং এ শয়তানি চিন্তার কারণেই সমাজে অসৎকাজের পরিমাণ শেষ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে)
সৎকাজ-এর প্রতিদান দেবার ক্ষেত্রে নারী পুরুষে কোন পার্থক্য করা হবে না :
(১৬:৯৭) পুরুষ বা নারী যে-ই সৎকাজ করবে, সে যদি মুমিন হয়, তাহলে তাকে আমি দুনিয়ায় পবিত্র-পরিচ্ছন্ন জীবন দান করবে এবং (আখেরাতে) তাদের প্রতিদান দেবো তাদের সর্বোত্তম কাজ অনুসারে৷
আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথে আছেন :
(১৬:১২৮) আল্লাহ তাদের সাথে আছেন যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যারা সৎকর্মপরায়ণ৷
আল্লাহর নৈকট্য অন্বেষণকারীদের সৎকাজ করতে হবে, এবং অবশ্যই থাকতে হবে শিরকমুক্ত ঈমান :
(১৮:১১০) ...কাজেই যে তার রবের সাক্ষাতের প্রত্যাশী তার সৎকাজ করা উচিত এবং বন্দেগীর ক্ষেত্রে নিজের রবের সাথে কাউকে শরীক করা উচিত নয়৷
সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ :
সৎকাজের আদেশ :
সৎকাজের উপদেশ দিতে থাকো : ৭:১৯৯,
মুনাফিকেরা অসৎ কাজের আদেশ দেয় ও সৎ কাজে নিষেধ করে :৯:৬৭
মুনাফিকেরা কল্যাণকর কাজ থেকে নিজেদের হাত গুটিয়ে রাখে : ৯:৬৭,
(১১:১১৬) তাহলে তোমাদের পূর্বে যেসব জাতি অতিক্রান্ত হয়েছে তাদের মধ্যে এমন সব লোক থাকলো না কেন যারা লোকদেরকে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টিতে বাধা দিতো ? এমন লোক থাকলেও অতি সামান্য সংখ্যক ছিল৷ তাদেরকে আমি ঐ জাতিদের থেকে বাঁচিয়ে নিয়েছি৷ নয়তো জালেমরা তো এমনি সব সুখৈশ্বর্যের পেছনে দৌঁড়াতে থেকেছে, যার সরঞ্জাম তাদেরকে প্রচুর পরিমাণে দেয়া হয়েছিল এবং তারা অপরাধী হয়েই গিয়েছিল৷
(১১:১১৯) এবং বিপথে যাওয়া থেকে একমাত্র তারাই বাঁচতে যাদের ওপর তোমার রব অনুগ্রহ করেন৷ এ (নির্বাচন ও ইখতিয়ারের স্বাধীনতার) জন্যই তো তিনি তাদের পয়দা করেছিলেন৷ আর তোমার রবের একথা পূর্ণ হয়ে গেছে যা তিনি বলেছিলেন- �আমি জাহান্নামকে জিন ও মানুষ উভয়কে দিয়ে ভরে দেবো৷�
সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ না করার কুফল সমূহ:
�
mvgvwRK I iv�xq AbvPv�ii Kvi�Y �h Avhve Av�m Zv�Z �ay �MvbvnMviivB mxgve� _v�K bv : 8:25, 7:163-166,
সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ করার সুফল সমূহ:
mrKv�Ri Av�`k I AmrKv�Ri wb�la Kivi mydj mg~n :
`vIqvZx KvR I wRnv` Kivi mydj mg~n :
Avj�vn Zvui mvnvh� �viv kw�kvjx Ki�eb, D�g Rxe�bvcKib `vb Ki�eb: 8:26,��
(১১:১১৭) তোমার রব এমন নন যে, তিনি জনবসতিসমূহ অন্যায়ভাবে ধ্বংস করবেন, অথচ তার অধিবাসীরা সংশোধনকারী৷
( এ আয়াতের আগের ছ'টি রুকূতে যেসব জাতির ইতিহাস বর্ণনা করা হযেছে এ আয়াতগুলোতে অত্যন্ত শিক্ষণীয় পদ্ধতিতে তাদের ধ্বংসের মূল কারণের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। এ ইতিহাসের ওপর মন্তব্য করে বলা হচ্ছে, শুধুমাত্র এ জাতিগুলোকেই নয় বরং মানব জাতির অতীত ইতিহাসে যতগুলো জাতিই ধ্বংস হয়েছে তাদের সবাইকে যে জিনিসটি অধপতিত করেছে তা হচ্ছে এই যে, যখন আল্লাহ নিজের নিয়ামতের দ্বারা তাদেরকে সমৃদ্ধ করেছেন তখন নিজেদের প্রাচুর্য ও সমৃদ্ধির নেশায় মত্ত হয়ে তারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টিতে তৎপর হয়েছে এবং তাদের সামষ্টিক প্রকৃতি এমন পর্যায়ে বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে, তাদেরকে অসৎকাজ থেকে বিরত রাখার মতো সৎ লোক তাদের মধ্যে ছিলই না অথবা যদি এমনি ধরনের কিছু লোক থেকেও থাকে তাহলে তাদের সংখ্যা এত কম ছিল এবং তাদের আওয়াজ এতই দুর্বল ছিল যে, অসৎকাজ থেকে তারা বিরত রাখার চেষ্টা করলেও বিপর্যয় ঠেকাতে পারেনি। এ কারণেই শেষ পর্যন্ত এ জাতিগুলো আল্লাহর গযবের শিকার হয়েছে। নয়তো নিজের বান্দাদের সাথে আল্লাহর কোন শত্রুতা নেই। তারা ভালো কাজ করে যেতে থাকলেও আল্লাহ অযথা তাদেরকে শাস্তি দেন না। আল্লাহর এ বক্তব্যের মূল উদ্দেশ্য এখানে তিনটি কথা মনের মধ্যে গেঁথে দেয়া
একঃ প্রত্যেক সমাজ ব্যবস্থায় ভালো কাজের দিকে আহবানকারী ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখার মতো সৎলোকের উপস্থিতি অপরিহার্য। কারণ সৎবৃত্তিই আল্লাহর কাছে কাংখিত। আর মানুষের অসৎকাজ যদি আল্লাহ বরদাশত করে থাকেন তাহলে তার শুধুমাত্র তাদের মধ্যকার এ সৎবৃত্তির কারণেই করে থাকেন এবং ততক্ষণ পর্যন্ত করে থাকেন যতক্ষণ তাদের মধ্যে সৎ প্রবণতার কিছুটা সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু কোন মানব গোষ্ঠী যখন একেবারেই সৎলোক শূন্য হয়ে পড়ে এবং তাদের মধ্যে শুধু অসৎলোকই বর্তমান থাকে অথবা সৎলোক বর্তমান থাকলেও তাদের কথা কেউ শোনে না এবং সমগ্র জাতিই একসাথে নৈতিক বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে তখন আল্লাহর আযাব তাদের মথার ওপর এমনভাবে ঘুরতে থাকে যেমন পূর্ণ গর্ভবতী নারী, যার গর্ভকাল একেবারে টায় টায় পূর্ণ হয়ে গেছে, কেউ বলতে পারে না কোন মুহূর্তে সে সন্তান প্রসব করে বসবে।
দুইঃ যে জাতি নিজের মধ্যে সবকিছু বরদাশত করতে পারে কিন্তু শুধুমাত্র এমন গুটিকয় হাতে গোনা লোককে বরদাশত করতে পারে না যারা তাকে অসৎকাজ থেকে বিরত রাখার ও সৎকাজ করার দাওয়াত দেয়, সে জাতির ব্যাপারে একথা জেনে নাও যে, তার দুর্দিন কাছে এসে গেছে। কারণ এখন সে নিজেই নিজের প্রাণের শত্রু হয়ে গেছে। যেসব জিনিস তার ধ্বংসের কারণ সেগুলো তার অতি প্রিয় এবং শুধুমাত্র একটি জিনিসই সে একদম বরদাশত করতে প্রস্তুত নয় যা তার জীবনের ধারক ও বাহক।
তিনঃ একটি জাতির মধ্যে সৎকাজ করার আহবানে সাড়া দেবার মতো লোক কি পরিমাণ আছে তার ওপর নির্ভর করে তার আযাবে লিপ্ত হওয়ার ও না হওয়ার ব্যাপারটির শেষ ফায়সালা। যদি তার মধ্যে বিপর্যয় খতম করে কল্যাণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার লোকের সংখ্যা এমন পর্যায়ে থাকে যা এ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য যথেষ্ট হয়ে থাকে তাহলে তার ওপর সাধারণ আযাব পাঠানো হয় না। বরং ঐ সৎলোকদেরকেই অবস্থার সংশোধনের সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু লাগাতার প্রচেষ্টা ও সাধনা করার পরও যদি তার মধ্যে সংষ্কার সাধনের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ লোক না পাওয়া যায় এবং এ জাতি তার অংগন থেকে কয়েকটা হীরে বাইরে ছুঁড়ে ফেলার পর নিজের কার্যধারা থেকে একথা প্রমাণ করে দেয় যে, এখন তার কাছে শুধু কয়লা ছাড়া আর কিছুই নেই, তাহলে এরপর আর বেশী সময় হাতে থাকে না। এরপর শুধুমাত্র কুণ্ডে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয় যে, যা কয়লাগুলোকে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। (অধিক ব্যাখ্যার জন্য দেখুন যারিয়াত ৩৪ টীকা)
যারা অসৎকাজে নিষেধকারী থাকে তাদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্টকারীদের পাপ পথ থেকে বাচিয়ে দেন :
(১১:১১৬) তাহলে তোমাদের পূর্বে যেসব জাতি অতিক্রান্ত হয়েছে তাদের মধ্যে এমন সব লোক থাকলো না কেন যারা লোকদেরকে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টিতে বাধা দিতো ? এমন লোক থাকলেও অতি সামান্য সংখ্যক ছিল৷ তাদেরকে আমি ঐ জাতিদের থেকে বাঁচিয়ে নিয়েছি৷
সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ ও ধৈর্য :
(৩১-লোকমান: ১৭) হে পুত্র! নামায কায়েম করো, সৎকাজের হুকুম দাও, খারাপ কাজে নিষেধ করো এবং যা কিছু বিপদই আসুক সে জন্য সবর করো৷ ২৯ একথাগুলোর জন্য বড়ই তাকিদ করা হয়েছে৷ ৩০
২৯ . এর মধ্যে এদিকে একটি সূক্ষ্ণ ইঙ্গিত রয়েছে যে, সৎকাজের হুকুম দেয়া এবং অসৎকাজে নিষেধ করার দায়িত্ব যে ব্যক্তিই পালন করবে তাকে অনিবার্যভাবে বিপদ আপদের মুখোমুখি হতে হবে। এ ধরনের লোকের পেছনে দুনিয়া কোমর বেঁধে লেগে যাবে এবং সব ধরনের কষ্টের সম্মুখীন তাকে হতেই হবে।
৩০ . এর দ্বিতীয় অর্থ হতে পারে, এটি বড়ই হিম্মতের কাজ। মানবতার সংশোধন এবং তার সংকট উত্তরণে সাহায্য করার কাজ কম হিম্মতের অধিকারী লোকদের পক্ষে সম্ভব নয়। এসব কাজ করার জন্য শক্ত বুকের পাটা দরকার।
সৎ পথ / সঠিক পথ (আরো দেখুন: হ > হেদায়েত,� আ > আখিরাত অস্বীকার করার কুফল-সৎ পথে থাকা অসম্ভব) :
(সে সময় নিশ্চিতভাবে জানা যাবে) প্রকৃতপক্ষে যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতকে মিথ্যা বলেছে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে� এবং তারা মোটেই সঠিক পথে ছিল না৷-১০:৪৫,
যে ব্যক্তিই সৎপথ অবলম্বন করে, তার সৎপথ অবলম্বন তার নিজের জন্যই কল্যাণকর হয়৷ আর যে ব্যক্তি পথভ্রষ্ট হয়, তার পথভ্রষ্টতার ধ্বংসকারিতা তার ওপরই বর্তায়৷-১৭:১৫,
(১৮:১৩) আমি তাদের সত্যিকার ঘটনা তোমাকে শুনাচ্ছি৷ তারা কয়েকজন যুবক ছিলো, তাদের রবের ওপর ঈমান এনেছিলো এবং আমি তাদের সঠিক পথে চলার ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়েছিলাম৷
(১৮:১৭) .......যাকে আল্লাহ সঠিক পথ দেখান সে-ই সঠিক পথ পায় এবং যাকে আল্লাহ বিভ্রান্ত করেন তার জন্য তুমি কোনো পৃষ্ঠপোষক ও পথপ্রদর্শক পেতে পারো না৷
(২০:১৩৫) হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলো, সবাই কাজেই পরিণামের প্রতীক্ষায় রয়েছে৷কাজেই এখন প্রতিক্ষারত থাকো৷ শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে, কারো সোজা-সঠিক পথ অবলম্বনকারী এবং কারা সৎপথ পেয়ে গেছে৷
(বিস্তারিত দেখুন : অপেক্ষা)
(মু�মিনুন:৭৪) কিন্তু যারা পরকাল স্বীকার করে না তারা সঠিক পথ থেকে সরে ভিন্ন পথে চলতে চায় ৷ ৭১
(৭১ . অর্থাৎ আখেরাত অস্বীকার করার ফলে তারা দায়িত্বহীন হয়ে পড়েছে এবং দায়িত্বের অনুভূতি না থাকায় তারা একেবারেই বেপরোয়া হয়ে গেছে। তাদের এ জীবেনের একটা সমাপ্তি ও ফলাফল যে আছে এবং কারোর সামনে এ সমগ্র জীবনকালের কার্যাবলীর হিসেব যে দিতে হবে , এটাই যখন তারা বুঝে না , তখন সত্য কি ও মিথ্যা কি তা নিয়ে তাদের কিইবা চিন্তা হতে পারে৷ জন্তু-জানোয়ারের মতো দেহ ও প্রবৃত্তির প্রয়োজন খুব ভালোভাবে পূর্ণ হবার পর সত্য ও মিথ্যার আলোচনা তাদের কাছে নেহাতই অর্থহীন । আর এ উদ্দেশ্য লাভের ক্ষেত্রে কোন ক্রটি দেখা দিলে বড় জোর তারা এ ক্রটির কারণ কি এবং কিভাবে একে দূর করা যায় এতটুকুই চিন্তা করবে। এ ধরনের মানসিকতা সম্পন্ন লোকেরা কোন দিন সঠিক পথ চাইতে পারেনা এবং পেতেও পারে না।)
অসৎপথে থাকার পরও যারা মনে করে সৎপথে আছে :
(১৮:১০৩) হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলো, আমি কি তোমাদের বলবো নিজেদের কর্মের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশী ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত কারা ? ১০৪) তারাই, যাদের দুনিয়ার জীবনের সমস্ত প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম সবসময় সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত থাকতো এবং যারা মনে করতো যে, তারা সবকিছু সঠিক করে যাচ্ছে৷
সৎ পথ লাভের পদ্ধতি :
(১) মানুষের ইচ্ছাশক্তির প্রয়োজন :
হে মুহাম্মাদ! বলে দাও, হে লোকেরা! তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য এসে গেছে৷ এখন যারা সোজা পথ অবলম্বন করবে তাদের সোজা পথ অবলম্ব তাদের জন্যই কল্যাণকর হবে৷ এবং যারা ভুল পথ অবলম্বন করবে তাদের ভুল পথ অবলম্বন তাদের জন্যই ধ্বংস কর হবে৷ আর আমি তোমাদের ওপর হাবিলদার হয়ে আসিনি৷১০:১০৮।
(২) মানুষের চেষ্টার প্রয়োজন :
(১৯:৭৬) বিপরীত পক্ষে যারা সত্য-সঠিক পথ অবলস্বন করে আল্লাহ তাদেরকে সঠিক পথে চলার ক্ষেত্রে উন্নতি দান করেন এবং স্থায়িত্বলাভকারী সৎজাগুলোই তোমার রবের প্রতিদান ও পরিণামের দিক দিয়ে ভালো৷
(বিস্তারিত দেখুন : চ > চেষ্টা )�
(৩)ভালো মন্দ সর্বাবস্থায় সৎপথে অটল থাকা, আল্লাহর ফায়সালায় সন্তুষ্ট থাকা :
(হাজ্ব:১৫) যে ব্যক্তি ধারণা করে, আল্লাহ দুনিয়ায় ও আখেরাতে তাকে কোনো সাহায্য করবেন না তার একটি রশির সাহায্যে আকাশে পৌঁছে গিয়ে ছিদ্র করা উচিত তারপর দেখা উচিত তার কৌশল এমন কোনো জিনিসকে (অর্থাৎ, আল্লাহর ফায়সালাকে) রদ করতে পারে কিনা যা তার বিরক্তি ও ক্ষোভের কারণ৷১৬) --এ ধরনেরই সুস্পষ্ট কথা সহযোগে আমি কুরআন নাযিল করেছি, আর আল্লাহ যাকে চান তাকে সৎপথ দেখান৷
(অর্থাৎ, মানুষের আসল কর্তব্য হচ্ছে ভালো মন্দ সর্বাবস্থায় সৎপথে অটল থাকা, আরো দেখুন : ত > তাকদীর, স > সীরাতাল মুস্তাকীম)
(৪) অবশ্যই আসমানী কিতাব সমূহের স্মরনাপন্ন হতে হবে :
�(মু�মিনুন:৪৯) আর মুসাকে আমি কিতাব দান করেছি যাতে লোকেরা তার সাহায্যে পথের দিশা পায়৷
(৫) সৎপথ ও সঠিক পথ লাভের প্রধান শর্ত হচ্ছে : আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করা
(নুর:৫৪) বলো, �� আল্লাহর অনুগত হও এবং রসূলের হুকুম মেনে চলো ৷ কিন্তু যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও ৷ তাহলো ভালোভাবে জেনে রাখো, রসূলের ওপর যে দায়িত্বের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে সে জন্য রাসূল দায়ী এবং তোমাদের ওপর যে দায়িত্বের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে সে জন্য তোমরাই দায়ী ৷ তাঁর আনুগত্য করলে তোমরা নিজেরাই সৎ পথ পেয়ে যাবে, অন্যথায় পরিষ্কার ও দ্ব্যর্থহীন হুকুম শুনিয়ে দেয়া ছাড়া রসূলের আর কোন দায়িত্ব নেই ৷��
সৎ পথে থাকার সুফল :
(২০:৮২) তবে যে তাওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তারপর সোজা-সঠিক পথে চলতে থাকে তার জন্য আমি অনেক বেশী ক্ষমাশীল৷
(বিস্তারিত দেখুন: স > সৎকাজ > ঈমান ও সৎকাজ অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত)
মানুষকে সঠিক পথ / সৎ পথ লাভের জন্য আল্লাহর প্রচেষ্টা :
মানুষকে বিপদে আপদে বা দু:খ দুর্দশায় ও দুর্ভিক্ষে নিক্ষেপ করা হয় যাতে তারা বিনম্র হয়ে সঠিক পথে ফিরে আসে �:
�(Av�iv �`Lyb : 1| `ywbqvex wec` Avc`,��� 2| cix�v)
আমি যখনই কোন জনপদে নবী পাঠিয়েছি, সেখানকার লোকেদেরকে প্রথমে অর্থকষ্ট ও দুঃখ -দুর্দশায় সম্মুখীন করেছি, একথা ভেবে যে, হয়তো তারা বিনম্র হবে ও নতি স্বীকার করবে-৭:১৯৪,
ফেরাউনের লোকদেরকে আমি কয়েক বছর পর্যন্ত দুর্ভিক্ষ ও ফসলহানিতে আক্রান্ত করেছি এ উদ্দেশ্যে যে, হয়তো তাদের চেতনা ফিরে আসবে৷-৭:১৩০,
আর আমি ভাল ও খারাপ অবস্থায় নিক্ষেপ করার মাধ্যমে তাদেরকে পরীক্ষা করতে থাকি, হয়তো তারা ফিরে আসবে-৭:১৬৮, �
লোকদেরকে হেদায়াত দান করার পর আবার তাদেরকে পথভ্রষ্ট করা আল্লাহর রীতি নয়, যতক্ষন না তিনি তাদেরকে কোন জিনিস থেকে সংযত হয়ে চলতে হবে তা পরিস্কার করে জানিয়ে দেন৷� আসলে আল্লাহ প্রত্যেকটি জিনিসের জ্ঞান রাখেন :৯:১১৫,
এরা কি দেখে না, প্রতি বছর এদেরকে দুএকটি পরীক্ষার মুখোমুখি করা হয়?� কিন্তু এরপরও এরা তাওবাও করে না কোন শিক্ষাও গ্রহণ করে না -৯:১২৬,
(৩২:২১) সেই বড় শাস্তির পূর্বে আমি এ দুনিয়াতেই (কোন না কোন ) ছোট শাস্তির স্বাদ তাদেরকে আস্বাদন করাতে থাকবো, হয়তো তারা (নিজেদের বিদ্রোহাত্মক নীতি থেকে ) বিরত হবে৷
�("বড় শাস্তি" বলতে আখেরাতের শাস্তিকে বুঝানো হয়েছে। কুফরী ও ফাসেকীর অপরাধে এ শাস্তি দেয়া হবে। এর মোকাবিলায় "ছোট শাস্তি" শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে । এর অর্থ হচ্ছে এ দুনিয়ায় মানুষ যেসব কষ্ট পায় সেগুলো। যেমন ব্যক্তিগত জীবনে কঠিন রোগ, নিজের প্রিয়তম লোকদের মৃত্যু, ভয়াবহ দুর্ঘটনা, মারাত্মক ক্ষতি, ব্যর্থতা ইত্যাদি। সামাজিক জীবনে ঝড়-তুফান, ভূমিকম্প, বন্যা, মহামারী, দুর্ভিক্ষ, দাঙ্গা, যুদ্ধ এবং আরো বহু আপদ-বিপদ, যা লাখো লাখো কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে। এসব বিপদ অবতীর্ণ হওয়ার প্রয়োজন ও কল্যাণকর দিক বর্ণনা করে বলা হয়েছে, এর ফলে বড় শাস্তি ভোগ করার আগেই যেন মানুষ সচেতন হয়ে যায় এবং এমন চিন্তা ও অন্যকথায় এর অর্থ হবে , দুনিয়ায় আল্লাহ মানুষকে একেবারেই পরমানন্দে রাখেননি। নিশ্চিন্তে ও আরামে জীবনের গাড়ি চলতে থাকলে মানুষ এ ভুল ধারণায় লিপ্ত হয়ে পড়বে যে, তার চেয়ে বড় আর কোন শক্তি নেই যে, তার কোন ক্ষতি করতে পারে। বরং আল্লাহ এমন ব্যবস্থা করে রেখেছেন যার ফলে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন ব্যক্তি , জাতি ও দেশের ওপর এমন সব বিপদ-আপদ পাঠাতে থাকেন, যা তাদেরকে একদিকে নিজেদের অসহায়তা এবং অন্যদিকে নিজেদের চেয়ে বড় ও উর্ধ্বে একটি মহাপরাক্রমশালী সর্বব্যাপী শাসন ব্যবস্থার অনুভূতি দান করে। এ বিপদ প্রত্যেকটি ব্যক্তি, দল ও জাতিকে একথা স্মরণ করিয়ে দেয় যে, তোমাদের ভাগ্য ওপরে অন্য একজন নিয়ন্ত্রণ করছেন। সবকিছু তোমাদের হাতে দিয়ে দেয়া হয়নি। আসল ক্ষমতা রয়েছে তার হাতে যিনি কর্তৃত্ব সহকারে এসব কিছু করে চলছেন। তার পক্ষ থেকে যখনই কোন বিপদ তোমাদের ওপর আসে , তার বিরূদ্ধে কোন প্রতিরোধ তোমরা গড়ে তুলতে পারো না এবং কোন জিন, রূহ ,দেব-দেবী, নবী বা অলীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেও তার পথ রোধ করতে সক্ষম ও না।
এদিক দিয়ে বিচার করলে এ বিপদ নিছক বিপদ নয় বরং আল্লাহর সতর্ক সংকেত। মানুষকে সত্য জানাবার এবং তার বিভ্রান্তি দূর করার জন্য একে পাঠানো হয়। এর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে যদি মানুষ দুনিয়াতেই নিজের বিশ্বাস ও কর্ম শুধরে নেয় তাহলে আখেরাতে আল্লাহর বড় শাস্তির মুখোমুখি হবার তার কোন প্রয়োজনই দেখা দেবে না।)
(মু�মিনুন:৭৫) যদি আমি তাদের প্রতি করুণা করি এবং বর্তমানে তারা যে দুঃখ-কষ্টে ভুগছে তা দূর করে দেই, তাহলে তারা নিজেদের অবাধ্যতার স্রোতে একেবারেই ভেসে যাবে৷৭৬) তাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, আমি তাদের দুঃখ-কষ্টে ফেলে দিয়েছি, তারপরও তারা নিজেদের রবের সামনে নত হয়নি এবং বিনয় ও দীনতাও অবলম্বন করে না ৷
(তওবা: ১২৬) এরা কি দেখে না, প্রতি বছর এদেরকে দুএকটি পরীক্ষার মুখোমুখি করা হয়? ১২৫ কিন্তু এরপরও এরা তাওবাও করে না কোন শিক্ষাও গ্রহণ করে না৷
১২৫ . অর্থাৎ এমন কোন বছর অতিবাহিত হয় না যখন তাদের ঈমানের দাবী এক দুবার পরীক্ষার সম্মুখীন হয় না এবং এভাবে তার অন্তসারশূন্যতা প্রকাশ হয়ে যায় না। কখনো কুরআনে এমন কোন হুকুম আসে যার মাধ্যমে তাদের ইচ্ছা ও প্রবৃত্তির আশা আকাংখার ওপর কোন নতুন বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়। কখনো দীনের এমন কোন দাবী সামনে এসে যায় যার ফলে তাদের স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়। কখনো এমন কোন আভ্যন্তরীণ , সংকট সৃষ্টি হয় যার মাধ্যমে তারা নিজেদের পার্থিব সম্পর্ক এবং নিজেদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও গোত্রীয় স্বার্থের মোকাবিলায় আল্লাহর ও তার রসূলের দীনকে কি পরিমাণ ভালবাসে তার পরীক্ষা করাই উদ্দেশ্য হয়। কখনো এমন কোন যুদ্ধ সংঘটিত হয় যার মাধ্যমে তারা যে দীনের ওপর ঈমান আনার দাবী করছে তার জন্য ধন, প্রাণ , সময় ও শ্রম ব্যয় করতে তারা কতটুকু আগ্রহী তার পরীক্ষা হয়ে যায়। এ ধরনের সকল অবস্থায় কেবল তাদের মিথ্যা অংগীকারের মধ্যে যে মুনাফিকীর আবর্জনা চাপা পড়ে আছে তা শুধু উন্মুক্ত হয়ে সামনে চলে আসে না বরং যখন তারা ঈমানদের দাবী থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে পালাতে থাকে তখন তাদের ভেতরের ময়লা আবর্জনা আগের চাইতে আরো বেশী বেড়ে যায়।
(৩০-রূম: ৪১) মানুষের কৃতকর্মের দরুন জলে-স্থলে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, যার ফলে তাদেরকে তাদের কিছু কৃতকর্মের স্বাদ আস্বাদন করানো যায়, হয়তো তারা বিরত হবে৷ ৬৪
৬৪ . এখানে আবার রোম ও ইরানের মধ্যে যে যুদ্ধ চলছিল এবং যার আগুন সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। "লোকদের স্বহস্তের উপার্জন" বাক্যাংশের অর্থ হচ্ছে, ফাসেকী , অশ্লীলতা, জুলুম ও নিপীড়নের এমন একটি ধারা যা শিরক ও নাস্তিক্যবাদের আকীদা- বিশ্বাস অবলম্বন ও আখেরাতকে উপেক্ষা করার ফলে অনিবার্যভাবে মানবিক নৈতিক গুণাবলী ও চরিত্রের মধ্যে সৃষ্টি হয়ে থাকে। " হয়তো তারা বিরত হবে" এর অর্থ হচ্ছে, আখেরাতে শাস্তি লাভ করার পূর্বে আল্লাহ এ দুনিয়ায় মানুষের সমস্ত নয় বরং কিছু খারাপ কাজের ফল এজন্য ভোগ করান যে, এর ফলে সে প্রকৃত সত্য উপলব্ধি করবে এবং নিজের চিন্তাধারার ভ্রান্তি অনুধাবন করে নবীগণ সবসময় মানুষের সামনে যে সঠিক বিশ্বাস উপস্থাপন করে এসেছেন এবং যা গ্রহণ না করলে মানুষের কর্মধারাকে সঠিক বুনিয়াদের ওপর প্রতিষ্ঠিত করার দ্বিতীয় কোন পথ নেই সেদিকে ফিরে আসবে। কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে, এ বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন দেখুন, আত তাওবা, ১২৬; আর রা'আদ, ২১ ; আস সাজদাহ, ২১ এবং আত তূর, ৪৭ আয়াত।
(ত্বুর : ৪৭) আর সেদিনটি আসার আগেও জালেমদের জন্য একটা আযাব আছে৷ কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না ৷ ৩৭
৩৭. এটি সূরা আস সাজদার ২১ আয়াতের বিষয়বস্তুর পুনরাবৃত্তি । সেখানে বলা হয়েছে "সেই বড় আযাবের পূর্বে আমি দুনিয়াতেই তাদেরকে কোন না কোন ছোট আযাবের স্বাদ ভোগ করাতে থাকবো । হয়তো এরা তাদের বিদ্রোহত্মক আচরণ থেকে বিরত হবে" । অর্থাৎ দুনিয়াতে মাঝে মাঝে ব্যক্তিগত ও জাতিগত পর্যায়ে আযাব নাযিল করে আমি তাদের একথা স্বরণ করিয়ে দিতে থাকবো যে, ওপরে কোন এক উচ্চতর শক্তি তাদের ভাগ্যের ফায়সালা করছে । তাঁর ফায়সালা পরিবর্তন করার শক্তি কেউ রাখে না । তবে যারা জাহেলিয়াতের মধ্যে ডুবে আছে তারা এ ঘটনাবলী থেকে পূর্বেও কোন শিক্ষা গ্রহণ করেনি এবং ভবিষ্যতেও কখনো করবে না । দুনিয়াতে যেসব বিপর্যয় আসে তারা তার অর্থ বুঝে না । তাই তারা এসব বিপর্যয়ের এমন এমন সব ব্যাখ্যা করে যা তাদেরকে সত্য উপলব্ধি করা থেকে আরো দূরে নিয়ে যায় । নিজেদের নাস্তিকতা বা শিরকের ক্রুটি ধরা পড়ে তাদের মেধা ও মস্তিষ্ক এমন ব্যাখ্যার দিকে কখনো আকৃষ্ট হয় না । একটি হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বিষয়টি ব্যক্ত করেছেন । তিনি বলেছেনঃ
------------------------------
"মুনাফিক যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং পরে যখন সুস্থ হয়ে যায় তখন তার অবস্থা হয় সেই উটের মত যাকে তার মালিক বেঁধে রাখলো কিন্তু সে বুঝলো না তাকে কেন বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং তারপর আবার যখন খুলে দিল তখনও সে কিছু বুঝলো না তাকে কেন ছেড়ে দেয়া হলো" । ( আরো ব্যাখ্যার দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, আল আম্বিয়া, টীকা ৪৫; আন নামল, টীকা ৬৬; আল আনকাবূত, টীকা ৭২ ও ৭৩) ।
সৎভাই :
(১২:৫৮) ইউসুফের ভাইরো মিসরে এলো এবং তার কাছে হাযির হলো৷ সে তাদেরকে চিনে ফেললো৷ কিন্তু তারা তাকে চিনতে পারলো না৷৫৯) তারপর সে যখন তাদের জিনিসপত্র তৈরী করালো তখন চলার সময় তাদেরকে বললো, �তোমাদের বৈমাত্রেয় ভাইয়ে আমাদের কাছে আনবে, দেখছো না আমি কেমন পরিমাপ পাত্র ভরে দেই এবং আমি কেমন ভালো অতিথিপরায়ণ ?
(১২:৬৫) তারপর যখন তারা নিজেদের জিনিসপত্র খুললো, তারা দেখলো তাদের অর্থও তাদেরকে ফেরত দেয়া হয়েছে৷ এ দৃশ্য দেখে তারা চিৎকার করে উঠলো, �আব্বাজান, আমাদের আর কী চাই ! দেখুন এই আমাদের অর্থও আমাদের ফেরত দেয়া হয়েছে৷ ব্যস্ এবার আমরা যাবো আর নিজেদের পরিজনদের জন্য রসদ নিয়ে আসবো, নিজেদের ভাইয়ের হেফাজতও করবো এবং অতিরিক্ত একটি উট বোঝাই করে শস্যও আনবো, এ পরিমাণ শস্য বৃদ্ধি অতি সহজেই হয়ে যাবে৷�
সহোদর ভাই :
(১২:৬৯) তারা ইউসুফের কাছে পৌঁছলে সে সহোদর ভাইকে নিজের কাছে আলাদা করে ডেকে নিল এবং তাকে বললো, �আমি তোমার সেই (হারানো) ভাই, এখন আর সেসব আচরণের জন্য দুঃখ করো না যা এরা করে এসেছে�
সংখ্যা সমূহ :
আরো দেখুন : গ > গণনা, দ > দিন ।
(১৮:২৫) আর তারা তাদের গুহার মধ্যে তিনশো বছর থাকে এবং (কিছু লোক মেয়াদ গণনা করতে গিয়ে) আরো নয় বছর বেড়ে গেছে৷২৬) তুমি বলো, আল্লাহ তাদের অবস্থানের মেয়াদ সম্পর্কে বেশী জানেন৷
(১৮:২২) কিছু লোক বলবে, তারা ছিল তিনজন আর চতুর্থজন ছিল তাদের কুকুরটি৷ আবার অন্য কিছু লোক বলবে, তারা পাঁচজন ছিল এবং তাদের কুকুরটি ছিল ষষ্ঠ, এরা সব আন্দাজে কথা বলে৷ অন্যকিছু লোক বলে, তারা ছিল সাতজন এবং অষ্টমটি তাদের কুকুর৷ বলো, আমার রবই ভালো জানেন তারা কজন ছিল, অল্প লোকই তাদের সঠিক সংখ্যা জানে৷ কাজেই তুমি সাধারণ কথা ছাড়া তাদের সংখ্যা নিয়ে লোকদের সাথে বিতর্ক করো না এবং তাদের সম্পর্কে কাউকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদও করো না৷
তিনিই আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তারপর আরশে সমাসীন হয়েছেন৷ -১০:৪, তিনিই আকাশ ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, -যখন এর আগে তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল,- যাতে তোমাদের পরীক্ষা করে দেখেন তোমাদের মধ্যে কে ভালো কাজ করে৷ এখন যদি হে মুহাম্মদ! তুমি বলো, হে লোকেরা, মরার পর তোমাদের পুনরুজ্জীবিত করা হবে, তাহলে অস্বীকারকারীরা সংগে সংগেই বলে উঠবে৷ এতো সুস্পষ্ট যাদু৷-১১:৭,
(১৭:৬) এরপর আমি তোমাদেরকে তাদের ওপর বিজয় লাভের সুযোগ করে দিয়েছি এবং তোমাদেরকে সাহায্য করেছি অর্থ ও সন্তানের সাহায্যে আর তোমাদের সংখ্যা আগের চেয়ে বাড়িয়ে দিয়েছি৷
সত্তর জন : �আর মূসা (তার সাথে) আমার নির্ধারিত সময়ে হাযির হবার জন্যে নিজের জাতির সত্তর জন লোককে নির্বাচিত করলো-৭:১৫৫,
চল্লিশ দিন : �মূসাকে আমি তিরিশ রাত-দিনের জন্য (সিনাই পর্বতের ওপর) ডাকলাম এবং পরে দশ দিন আরো বাড়িয়ে দিলাম৷ এভাবে তার রবের নির্ধারিত সময় পূর্ণ চল্লিশ দিন হয়ে গেলো -৭:১৪২ , �
(মু�মিনুন:২০) আর সিনাই পাহাড়ে যে গাছ জন্মায় তাও আমি সৃষ্টি করেছি � তা তেল উৎপাদন করে এবং আহারকারীদের জন্য তরকারীও৷
মূসা আ: এর জাতিতে বরোটি পরিবার / গোত্র ছিল -৭:১৬০,
(১৭:১০১) আমি মূসাকে নয়টি নিদর্শন দিয়েছিলাম, সেগুলো সুস্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল৷
আল্লাহ ১০০০ ফেরেশতা পাঠিয়ে মুমিনদেরকে জিহাদে/যুদ্ধে সহায়তা করেছেন : ৮:৯-১২
মু�মিনদের বিশজন সবরকারী যোদ্ধা কাফেরদের দু�শ জনের উপর জয় হবে আর মু�মিনদের সরকারী একশজন যোদ্ধা কাফেরদের একহাজার জনের উপর জয়ী হবে : ৮:৬৫,
�
(৮-আনফাল:৬৬) বেশ, এখন আল্লাহ তোমাদের বোঝা হালকা করে দিয়েছেন৷ এবং তিনি জেনেছেন যে এখনো তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা রয়েছে৷ কাজেই যদি তোমাদের মধ্যে একশ জন সবরকারী হয় তাহলে তারা দুশ জনের ওপর এবং এক হাজার লোক এমনি পর্যায়ের হলে তারা দুহাজারের ওপর আল্লাহর হুকুমে বিজয়ী হবে৷ �আর আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন৷
(৯-তওবা:২) কাজেই তোমরা দেশের মধ্যে আরো চার মাসকাল চলাফেরা করে নাও ��এবং জেনে রেখো তোমরা আল্লাহকে অক্ষম ও শক্তিহীন করতে পারবে না৷ আর আল্লাহ সত্য অস্বীকারকারীদের অবশ্যই লাঞ্ছিত করবেন৷
(৯-তওবা:৩৬) আসলে যখন আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তখন থেকেই আল্লাহর লিখন ও গণনায় মাসের সংখ্যা বারো চলে আসছে৷� এর মধ্যে চারটি হারাম মাস৷ এটিই সঠিক বিধান৷ কাজেই এ চার মাসের নিজেদের ওপর জুলুম করো না ৷� আর মুশরিকদের সাথে সবাই মিলে লড়াই করো যেমন তারা সবাই মিলে তোমাদের সাথে লড়াই করে৷ ��এবং জেনে রাখো আল্লাহ মুক্তাকীদের সাথেই আছেন৷ (জিলক্বদ, জিলহজ্ব, মহররম ও রজব মাসে যুদ্ধ করা সাধারণত: নিষিদ্ধ)।
(হাজ্ব:৪৭) .....কিন্তু তোমার রবের কাছের একটি দিন তোমাদের গণনার হাজার বছরের সমান হয়৷
(বিস্তারিত দেখুন : অ > অবকাশ > অবকাশ কেন দেওয়া হয় অপরাধীদেরকে)
(২৯-আনকাবুত:১৪) আমি নূহকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠাই� এবং সে তাদের মধ্যে থাকে পঞ্চাশ কম এক হাজার বছর৷ শেষ পর্যন্ত তুফান তাদেরকে ঘিরে ফেলে এমন অবস্থায় যখন তারা জালেম ছিল৷
বিস্তারিত দেখুন : ন > নবী > বিভিন্ন নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত নূহ আ: ।
(২৭.নমল:৪৮) সে শহরে (সামুদ জাতির ভিতরে) ছিল ন�জন দল নায়ক যারা দেশের বিপর্যয় সৃষ্টি করতো এবং কোন গঠনমূলক কাজ করতো না৷
(৬২. অর্থাৎ নয়জন উপজাতীয় সরদার। তাদের প্রত্যেকের সাথে ছিল একটি বিরাট দল।)
সংখ্যা গরিষ্ঠ :
সংখ্যাগরিষ্ঠের অনুসরণই কি সঠিক ? সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকদের অনুসরণ :
(৬:১১৬) আর হে মুহাম্মাদ ! যদি তুমি দুনিয়ায় বসবাসকারী অধিকাংশ লোকের কথায় চলো তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে ফেলবে৷ তারা তো চলে নিছক আন্দাজ-অনুমানের ভিত্তিতে এবং তারা কেবল আন্দাজ-অনুমানই করে থাকে৷
mei / �ah��:
mei Kiv :
তোমরা কি নিজেদের রবের হুকুমের অপেক্ষা করার মত এতটুকু সবরও করতে পারলে না?-7:150,
me�ii Rb� �`vqv :
হে আমাদের রব! আমাদের সবর দান করোএবং তোমার আনুগত্য থাকা অবস্থায় আমাদের দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নাও-7:126,��
m�w� c�m�:
Avj�vn AvKvk I c�w_ex Qq w`�b m�w� K�i�Qb:7:54,
Avj�vn m~h�, P�`� I ZviKvivRx m�w� �K�i�Qb:7:54,
m�w� hvi AvBb Pj�e Zvi : 7:54,
mxgv AwZ�g:
mxgv AwZ�g Kiv : Avj�vn mxgv AwZ�gKvivx�K cQ�` K�ib bv : 7:31,� 7:55, 7:81,
mdjKvg :
mdjKvg n�e Kviv : 7:69 (Avj�vni Acwimxg kw�i K_v g�b iv�Lv), hviv gynv��` mv: Gi mn�hvwMZv K�i I Abymib K�i -7:156,�
mrKvR/mrKg�:
mrKg�kxj :
নিশ্চিতভাবেই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীল লোকদের নিকবর্তী৷� 7:56,�
সার্বভৌমত্ব :
সার্বভৌমত্বের মালিক একমাত্র আল্লাহ, এতদ্বতীত আর কেউই সার্বভৌমত্বের অধিকারী নয় �:
বিস্তারিত দেখুন : র > রাষ্ট্র > ইসলামী রাজনীতি সম্পর্কে ধারাবাহিক বর্ণনা ।
(৩০-রূম: ৩) ক্ষমতা ও কতৃত্ব আগেও আল্লাহরই ছিল৷ পরেও তাঁরই থাকবে৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৮৮) এবং আল্লাহর সাথে অন্য মাবুদদেরকে ডেকো না৷ তিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই৷ সব জিনিসই ধ্বংস হবে কেবলমাত্র তাঁর সত্ত্বা ছাড়া৷ শাসন কর্তৃত্ব একমাত্র তাঁরই � এবং তাঁরই দিকে তোমাদের সবাইকে ফিরে যেতে হবে৷
(৩৪-সাবা: ২২) (হে নবী! এ মুশরিকদেরকে) বল, আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব মাবুদকে তোমরা নিজেদের উপাস্য মনে করে নিয়েছ তাদেরকে ডেকে দেখ৷ তারা না আকাশে কোন অনু পরিমাণ জিনিসের মালিক, না পৃথিবীতে৷ আকাশ ও পৃথিবীর মালিকানায় তারা শরীকও নয়৷ তাদের কেউ আল্লাহর সাহায্যকারীও নয়৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৭০) তিনিই এক আল্লাহ যিনি ছাড়া ইবাদাতের আর কোন হকদার নেই৷ তাঁরই জন্য প্রশংসা দুনিয়ায়ও, আখেরাতেও৷
(২৮-ক্বাছাছ : ৭০) ....... শাসন কর্তৃত্ব তাঁরই এবং তাঁরই দিকে তোমরা ফিরে যাবে৷
(ফুরকান:২) যিনি পৃথিবী ও আকাশের রাজত্বের মালিক, � যাঁর সাথে রাজত্বে কেউ শরীক নেই ..।
(নুর:৬৪) সাবধান হয়ে যাও, আকাশে ও পৃথিবীতে যা কিছু সব আল্লাহরই ৷
(নূর:৪২) আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর রাজত্ব আল্লাহরই ৷
(মু�মিনুন:১১৬) কাজেই প্রকৃত বাদশাহ আল্লাহ হচ্ছেন উচ্চতর ও উন্নততর,� তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, সম্মানিত আরশের তিনিই মালিক।
(মু�মিনুন:৮৮) তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, বলো যদি তোমরা জেনে থাকো, কার কর্তৃত্ব� চলছে প্রত্যেকটি জিনিসের ওপর? আর কে তিনি যিনি আশ্রয় দেন এবং তাঁর মোকাবিলায় কেউ আশ্রয় দিতে পারে না ? ৮৯) তারা নিশ্চয়ই বলবে, এ বিষয়টি তো আল্লাহরই জন্য নির্ধারিত ৷ বলো,তাহলে তোমরা বিভ্রান্ত হচ্ছো কোথায় থেকে ?
(মু�মিনুন:৮৬) তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, সাত আসমান ও মহান আরশের অধিপতি কে ? ৮৭) তারা নিশ্চয়ই বলবে, আল্লাহ ৷� বলো, তাহলে তোমরা ভয় করো না কেন ?
(মু�মিনুন:৮৪) তাদেরকে জিজ্ঞেস করোঃ যদি তোমরা জানো তাহলে বলো এ পৃথিবী এবং এর মধ্যে যারা বাস করে তারা কার ? ৮৫) তারা নিশ্চয় বলবে, আল্লাহর ৷ বলো, তাহলে তোমরা সচেতন হচ্ছো না কেন ?
(হাজ্ব:৬৪) যা কিছু আকাশে ও পৃথিবীতে আছে সব তাঁরই৷ নিসন্দেহে তিনিই অমুখাপেক্ষী ও প্রশংসার্হ৷
(২১:১৯) পৃথিবী ও আকাশের মধ্যে যে সৃষ্টিই আছে তা আল্লাহরই৷
(২০:৬) যা কিছু পৃথিবীতে ও আকাশে আছে, যাকিছু পৃথিবী ও আকাশের মাঝখানে আছে এবং যাকিছু ভুগর্ভে আছে সবকিছুর মালিক তিনিই৷
(২০:৫) তিনি পরম দয়াবান৷ (বিশ্ব-জাহানের) শাসন কর্তৃত্বের আসনে সমাসীন৷
(১৯:৯৩) পৃথিবী ও আকাশের মধ্যে যা কিছু আছে সবই তাঁর সামনে বান্দা হিসেবে উপস্থিত হবে৷
(১৯:৬৫) তিনি আসমান ও যমীনের এবং এ দূয়ের মাঝখানে আছে সবকিছুর রব৷ ....আপনার জানা মতে তাঁর সমকক্ষ কোন সত্তা আছে কি?
(১৯:৬৪) .....যাকিছু আমাদের সামনে ও যাকিছু পেছনেএবং যাকিছু এর মাঝখানে আছে তার প্রত্যেকটি জিনিসের তিনিই মালিক এবং আপনার রব ভুলে যান না৷
(১৮:২৫) ....আকাশ ও পৃথিবীর যাবতীয় প্রচ্ছন্ন অবস্থা তিনিই জানেন, কেমন চমৎকার তিনি দ্রষ্টা ও শ্রোতা
(১৮:২৫) ......পৃথিবী ও আকাশের সকল সৃষ্টির তত্ত্বাবধানকারী তিনি ছাড়া আর কেউ নেই এবং নিজের শাসন কর্তৃত্ব তিনি কাউকে শরীক করেন না৷
(১৬:৫২) সবকিছুই তাঁরই, যা আকাশে আছে এবং যা আছে পৃথিবীতে এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে একমাত্র তাঁরই দীন চলছে৷
আল্লাহ রাজত্ব করছেন, তাঁর সিদ্ধান্ত পুনরবিবেচনা করার কেউ নেই-১৩:৪১,
বরং সমস্ত ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহরই হাতে কেন্দ্রীভূত৷-১৩:৩১,
তাঁর ছাড়া আর কারোর হুকুম চলে না-১২:৬৭,
আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর মালিক/সার্বভৌমত্ব কর্তৃত্বের অধিকারী : ৭:১৫৮, �কে চালাচ্ছে এই বিশ্ব ব্যবস্থাপনা�?তারা নিশ্চয়ই বলবে, আল্লাহ৷ বলো, তবুও কি তোমরা (সত্যের বিরোধী পথে চলার ব্যাপারে৷)সতর্ক হচ্ছো না? -১০:৩১, শোনো, আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব আল্লাহরই-১০:৫৪,
আল্লাহ তার ফায়শালা/আদেশ/বিধান কার্যকর করবেনই: ৮:৪২,
আল্লাহ সমস্ত কাজ যুক্তি ও প্রমাণ সহকারে করে থাকেন : ৮:৪২ (যার ধ্বংস হওয়ার সে ধ্বংস হবে সুষ্পষ্ট প্রমাণ সহকারে আর যার জীবিত থাকার সে জীবিত থাকবে সুষ্পষ্ট প্রমাণ সহকারে)
আর এও সত্য, আসমান ও যমীনের রাজত্ব আল্লাহর নিয়ন্ত্রনাধীন, জীবন ও মৃত্যু তাঁরই ইখতিয়ারভুক্ত এবং তোমাদের এমন কোন সহায় ও সাহায্যকারী নেই যে তোমাদেরকে তাঁর হাত থেকে বাঁচাতে পারে : ৯:১১৬,
আল্লাহর কথার পরিবর্তন নেই৷ � ১০:৬৪,
�জেনে রেখো, আকাশের অধিবাসী, হোক বা পৃথিবীর , সবাই আল্লাহর মালিকানাধীন৷ আর যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে (নিজেদের মনগড়া) কিছু শরীকদের ডাকছে তারা নিছক আন্দাজ ও ধারণার অনুগামী এবং তারা শুধু অনুমানই করে৷-১০:৬৬,
সুবহানাল্লাহ -তিনি মহান-পবিত্র! তিনি তো অভাবমুক্ত৷ আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তার মালিকানাধীন৷-১০:৬৮,
তারপর তিনি নিজের শাসন কর্তৃত্বের আসনে সমাসীন হয়েছে৷-১৩:২, তারপর শাসন কর্তৃত্বের আসনে অধিষ্টিত হয়েছেন এবং বিশ্ব -জগতের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করেছেন -১০:০৩, এবং তারপর আরশে সমাসীন হয়েছেন৷ -১০:৪,
এমন এক আল্লাহর - পথে যিনি প্রবল প্রতাপান্বিত ও আপন সত্তায় আপনি প্রশংসিত-১৪:১,� এবং পৃথিবী ও আকাশের যাবতীয় বস্তুর মালিক৷-১৪:২,
আল্লাহ যা চান তাই করেন৷-১৪:২৭,
তাঁর ছাড়া আর কারোর হুকুম চলে না-১২:৬৭,
আল্লাহ রাজত্ব করছেন, তাঁর সিদ্ধান্ত পুনরবিবেচনা করার কেউ নেই-১৩:৪১,
(১৭:১১০) তাঁর বাদশাহীতে কেউ শরীকও হয়নি এবং তিনি এমন অক্ষমও নন যে, কেউ তাঁর সাহায্যকারী ও নির্ভর হবে৷
(২১:২২) যদি আকাশে ও পৃথিবীতে এক আল্লাহ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো ইলাহ হতো তাহলে (পৃথিবী ও আকাশ) উভয়ের ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যেতো৷ কাজেই এরা যেসব কথা বলে বেড়াচ্ছে আরশের প্রভুব আল্লাহ তা থেকে পাক-পবিত্র৷
(১৩:৪১) ........ আল্লাহ রাজত্ব করছেন, তাঁর সিদ্ধান্ত পুনরবিবেচনা করার কেউ নেই এবং তাঁর হিসেব নিতে একটুও দেরী হয় না৷
(৩০-রূম: ২৫) আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে , আকাশ ও পৃথিবী তাঁর হুকুমে প্রতিষ্ঠিত আছে৷................২৬) আকাশসমূহ ও পৃথিবীর মধ্যে যা কিছুই আছে সবই তাঁর বান্দা , সবাই তাঁর হুকুমের তাবেদার৷
(৩১-লোকমান: ২৬) আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই ৷ ৪৬ নিঃসন্দেহ আল্লাহ অমুখাপেক্ষী ও নিজে নিজেই প্রশংসিত৷
৪৬ . অর্থাৎ কেবল এতটুকুই সত্য নয় যে, পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলীর স্রষ্টা আল্লাহ বরং পৃথিবী ও আকাশের মধ্যে যেসব জিনিস পাওয়া যায় তিনিই এসবের মালিক। আল্লাহ তার এ বিশ্ব-জাহান সৃষ্টি করে একে এমনিই ছেড়ে দেননি যে, যে কেউ চাইলেই এর বা এর কোন অংশের মালিক হয়ে বসবে। নিজের সৃষ্টির তিনি নিজেই মালিক। এ বিশ্ব-জাহানে যা কিছু আছে সবই তার মালিকানাধীন। এখানে তার ছাড়া আর কারো সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হবার এখতিয়ার নেই।
(৩১-লোকমান: ৩০) এ সবকিছু এ কারণে যে, আল্লাহই হচ্ছেন সত্য ৫২ এবং তাকে বাদ দিয়ে অন্য যেসব জিনিসকে এরা ডাকে তা সবই মিথ্যা, ৫৩ আর ( এ কারণে যে, ) আল্লাহই সমুচ্চ ও শ্রেষ্ঠ৷ ৫৪
৫২ . অর্থাৎ প্রকৃত সার্বভৌম ক্ষমতাধর কর্তা , সৃষ্টি ও পরিচালনা ব্যবস্থাপনার আসল ও একচ্ছত্র মালিক।
৫৩ . অর্থাৎ তারা সবাই নিছক তোমাদের কাল্পনিক খোদা। তোমরা কল্পনার জগতে বসে ধারণা করে নিয়েছো যে, অমুকজন আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতার অংশীদার এবং অমুক মহাত্মা সংকট নিরসন ও অভাব মোচন করার ক্ষমতা রাখেন। অথচ প্রকৃতপক্ষে তাদের কেউ কোন কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না।
৫৪ . অর্থাৎ প্রত্যেকটি জিনিসের উর্ধে এবং সবার শ্রেষ্ঠ । তার সামনে সব জিনিসই নিচু। প্রত্যেকের চেয়ে তিনি বড় এবং সবাই তার সামনে ছোট।
(আরো দেখুন : স > সত্য > আল্লাহ হচ্ছেন সত্য। )
(আরো দেখুন : শ > শিরক করা উচিত নয় কেন?, ই > ইলাহ )
একটি হাদীস :
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন :
"জেনে রাখো অচিরেই অনেক
জালিম শাসক আসবে। যারা
সেই সকল শাসকদের সাথে
আঁতাত করবে, তাদের অন্যায়
গুলোকে সমর্থন দিবে এবং
তাদের জুলুমে সহযোগিতা করবে
সে আমার উম্মত
নয় এবং আমিও তাঁদের দায়িত্ব
নিবো না এবং (কিয়ামতের দিন)
তাকে আমার হাউজে কাউসারের
সামনে আসতে দেয়া হবে না।
আর যাঁরা সেই সকল জালিম
শাসকদের সাথে আঁতাত করবে না,
তাদের জুলুমে সহায়তা করবে না
তাঁরা আমার উম্মত এবং আমি
তাঁদের দায়িত্ব নিবো এবং
তাঁদেরকেই (কিয়ামতের দিন)
হাউজে কাউসারের পানি পান
করানো হবে। "
[ তিরমিযি, হাদিস নং ৬১৪,
হাদীস সহিহ]
সার্বভৌমত্ব ক্ষমতায় আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে শরীক করা হলো কর্মগত শিরক :
ইতিপূর্বে তোমরা যে আমাকে আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা ও কতৃত্বের শরীক করেছিলে তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই, এ ধরনের জালেমদের জন্য তো যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি অবধারিত৷- ১৪:২২,
(ব্যাখ্যা : এখানে আবার বিশ্বাসগত শিরকের মোকাবিলায় শিরকের একটি স্বতন্ত্র ধারা অর্থাৎ কর্মগত শিরকের অস্তিত্বের একটি প্রমাণ পাওয়া যায়। একথা সুস্পষ্ট, বিশ্বাসগত দিক গিয়ে শয়তানকে কেউই আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা ও কর্তৃত্বে শরীক করে না এবং কেউ তার পূজা, আরাধনা ও বন্দেগী করে না। সবাই তাকে অভিশাপ দেয়। তবে তার আনুগত্য ও দাসত্ব এবং চোখ বুজে বা খুলে তার পদ্ধতির অনুসরণ অবশ্যি করা হচ্ছে। এটিকেই এখানে শিরক বলা হয়েছে। কেউ বলতে পারেন, এটা তো শয়তানের উক্তি, আল্লাহ এটা উদ্ধৃত করেছেন মাত্র। কিন্তু আমরা বলবো, প্রথমত তার বক্তব্য যদি ভুল হতো তাহলে আল্লাহ নিজেই তার প্রতিবাদ করতেন। দ্বিতীয়ত কুরআনে কর্মগত শিরকের শুধু এ একটিমাত্র দৃষ্টান্ত নেই বরং পূর্ববর্তী সূরাগুলোয় এর একাধিক প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং সামনের দিকে আরো পাওয়া যাবে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ইহুদী ও খৃস্টানদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগঃ তারা আল্লাহ ছাড়া নিজেদের "আহবার" (উলামা) ও "রাহিব"দেরকে (সংসার বিরাগী সন্যাসী) রব হিসেবে গ্রহণ করেছে। জাহেলিয়াতে আচার অনুষ্ঠান উদ্ভাবনকারীদের সম্পর্কে একথা বলাঃ তাদের অনুসারীরা তাদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক করে নিয়েছে। [ আল আন' আমঃ ১৩৭ ] প্রবৃত্তির কামনা বাসনার পূজারীদের সম্পর্কে বলাঃ তারা নিজেদের প্রবৃত্তির কামনা বাসনাকে ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে। (আল ফুরকানঃ ৪৩) নাফরমান বান্দাদের সম্পর্কে এ উক্তিঃ তারা শয়তানের ইবাদাত করতে থেকেছে। (ইয়াসীনঃ ৬০) মানুষের গড়া আইন অনুযায়ী জীবন যাপন কারীদেরকে এ বলে র্ভৎসনা করাঃ আল্লাহর অনুমতি ছাড়া যারা তাদের জন্য শরীয়াত প্রণয়ন করেছে তারা হচ্ছে তাদের "শরীক"। (আশ-শূরাঃ ২১) এগুলো সব কি কর্মগত শিরকের নজীর নয়৷ এ নজীরগুলো থেকে একথা পরিষ্কার জানা যায় যে, কোন ব্যক্তি আকীদাগতভাবে কোন গাইরুল্লাহকে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব শরীক করলো, শিরকের শুধুমাত্র এ একটিই আকৃতি নেই এর আর একটি আকৃতিও আছে। সেটি হচ্ছে, আল্লাহর অনুমোদন ছাড়াই অথবা আল্লাহর বিধানের বিপরীত কোন গাইরুল্লাহর অনুসরণ ও আনুগত্য করতে থাকা। এ ধরনের অনুসারী বা আনুগত্যকারী যদি নিজের নেতার বা যার আনুগত্য করছে তার ওপর লানত বর্ষণ করা অবস্থায়ও কার্যত এ আনুগত্যের নীতি অবলম্বন করে তাহলে কুরআনের দৃষ্টিতে সে তাকে আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের শরীক করছে। শরীয়াতের দৃষ্টিতে আকীদাগত মুশরিকদের জন্য যে বিধান তাদের জন্য সেই একই বিধান না হলেও তাতে কিছু আসে যায় না। )
ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ : একটি শয়তানী চক্রান্ত
বিস্তারিত দেখুন : র > রব > মূসা আ: এর উত্তর : রব কি ? > ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ কি যুক্তিযুক্ত ? এ শয়তানী মতবাদ প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে ।
ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ কি যুক্তিযুক্ত ? এ শয়তানী মতবাদ প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে :� অসৎ রাষ্ট্র পরিচালকরা কখনই আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মেনে নিতে চায়নি :
(২৬.শুআরা:২৯) ফেরাউন বললো, "যদি তুমি আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে মাবুদ বলে মেনে নাও, তাহলে কারাগারে যারা পচে মরছে তোমাকেও তাদের দলে ভিড়িয়ে দেবো৷"
(এ কথোপকথনটি বুঝতে হলে এ বিষয়টি সামনে থাকতে হবে যে,আজকের মতো প্রাচীন যুগেও "উপাস্য"-এর ধারণা কেবলমাত্র ধর্মীয় অর্থের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। অর্থাৎ পূজা, অরাধনা, মানত ও নজরানা লাভের অধিকারী। তার অতি প্রাকৃতিক প্রাধান্য ও কর্তৃত্বের কারণে মানুষ নিজের ব্যবহারিক জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে তার কাছে সাহায্য ও সহযোগিতা লাভের জন্য প্রার্থনা করবে, এ মর্যাদাও তার আছে। কিন্তু কোন উপাস্য আইনগত ও রাজনৈতিক দিক দিয়েও প্রাধান্য বিস্তার করার এবং পার্থিব বিষয়াদিতে তার ইচ্ছামত যে কোন হুকুম দেবে আর তার সামনে মানুষকে মাথা নত করতে হবে। এ কথা পৃথিবীর ভূয়া শাসনকর্তারা আগেও কখনো মেনে নেয়নি এবং আজো মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। তারা সব সময় একথা বলে এসেছে, দুনিয়ার বিভিন্ন ব্যাপারে আমরা পূর্ণ স্বাধীন। কোন উপাস্যের আমাদের রাজনীতিতে ও আইনে হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকার নেই। এটিই ছিল পার্থিব রাষ্ট্র ও সাম্রাজ্যসমূহের সাথে আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম ও তাঁদের অনুসারী সংস্কারকদের সংঘাতের আসল কারণ। তাঁরা এদের কাছ থেকে সমগ্র বিশ্ব-জাহানের মালিক আল্লাহর সার্বভৌম মতা, কর্তৃত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি আদায় করার চেষ্টা করেছেন এবং এরা এর জবাবে যে কেবলমাত্র নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রভূত্ব ও কর্তৃত্বের দাবী পেশ করতে থেকেছে তাই নয় বরং এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে অপরাধী ও বিদ্রোহ গণ্য করেছে, যে তাদের ছাড়া অন্য কাউকে আইন ও রাজনীতির ময়দানে উপাস্য হিসেবে মেনে নিয়েছে। এ ব্যাখ্যা থেকে ফেরাউনের এ কথাবার্তার সঠিক মর্ম উপলব্ধি করা যেতে পারে। যদি কেবলমাত্র পূজা-অর্চনা ও নজরানা-মানত পেশ করার ব্যাপার হতো, তাহলে হযরত মূসা অন্য দেবতাদের বাদ দিয়ে একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে এর একমাত্র হকদার মনে করেন এটা তার কাছে কোন আলোচনার বিষয় হতো না। যদি কেবলমাত্র এ অর্থেই মূসা আলাইহিস সালাম তাকে ইবাদতের ক্ষেত্রে তাওহীদমুখী হবার দাওয়াত দিতেন তাহলে তার ক্রোধান্বত্ত হবার কোন কারণই ছিল না। বড়জোর সে যদি কিছু করতো তাহলে নিজের পিতৃপুরুষের ধর্ম ত্যাগ করতে অস্বীকার করতো অথবা হযরত মূসাকে বলতো, আমার ধর্মের পণ্ডিতদের সাথে বিতর্ক করে নাও। কিন্তু যে জিনিসটি তাকে ক্রোধান্বত্ত করে দিয়েছে সেটি ছিল এই যে, হযরত মূসা আলাইহিস সালাম রব্বুল আলামীনের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে পেশ করে তাকে এমনভাবে একটি রাজনৈতিক হুকুম পৌছিয়ে দিয়েছেন যেন সে একজন অধীনস্থ শাসক এবং একজন উর্দ্ধতন শাসনকর্তার দূত এসে তার কাছে এ হুকুমের প্রতি আনুগত্য করার দাবী করেছেন। এ অর্থে সে নিজের ওপর কোন রাজনৈতিক ও আইনগত প্রাধান্য মেনে নিতে প্রস্তুত ছিল না। বরং তার কোন প্রজা তাকে ছাড়া অন্য কাউকে উর্দ্ধতন শাসনকর্তা হিসেবে মেনে নেবে, এটাও সে বরদাশত করতে পারতো না। তাই সে প্রথমে চ্যালেঞ্জ করলো "রব্বুল আলামীন"-এর পরিভাষাকে। কারণ, তাঁর পক্ষ থেকে যে বার্তা নিয়ে আসা হয়েছিল তার মধ্যে শুধুমাত্র ধর্মীয় উপসনার নয় বরং সার্বভৌম রাজনৈতিক কর্তৃত্বের ভাবধারা সুস্পষ্ট ছিল। তারপর হযরত মূসা যখন বারবার ব্যাখ্যা করে বললেন- তিনি যে রাব্বুল আলামীনের বার্তা এনেছেন তিনি কে৷ তখন সে পরিস্কার হুমকি দিল, মিসর দেশে তুমি যদি আমার ছাড়া অন্য কারো সার্বভৌম কর্তৃত্বের নাম উচ্চারণ করবে তাহলে তোমাকে জেলখানার ভাত খেতে হবে।)
সুপারিশ :
আল্লাহর নিকট সুপারিশের স্বরূপ :
আনুষাংগিক জ্ঞাতব্য : ও > ওসীলা।
সুপারিশ কেমন হবে পরকালে তার স্বরূপ :৭:৫৩,
(৭-আ�রাফ:৫৩) এখন এরা কি এর পরিবর্তে এ কিতাব যে পরিমাণের খবর দিচ্ছে তার প্রতীক্ষায় আছে?� যেদিন সেই পরিনাম সামনে এসে যাবে সেদিন যারা তাকে উপেক্ষা করেছিল তারাই বলবেঃ �যথার্থই আমাদের রবের রসূলগণ সত্য নিয়ে এসেছিলেন৷ এখন কি আমরা এমন কিছু সুপারিশকারী পাবো যারা আমাদের পক্ষে সুপারিশ করবে?
(৩৪-সাবা: ২৩) আর যে ব্যক্তির জন্য আল্লাহ শাফায়াত করার অনুমতি দিয়েছেন আল্লাহর কাছে তার জন্য ছাড়া আর কার জন্য কোন শাফায়াত উপকারী হতে পারে না৷৪০এমনকি যখন মানুষের মন থেকে আশংকা দূর হয়ে যাবে তখন তারা (সুপারিশকারীদেরকে) জিজ্ঞেস করবে, তোমাদের রব কি জবাব দিয়েছেন? তারা বলবে, ঠিক জবাব পাওয়া গেছে এবং তিনি উচ্চতম মর্যাদা সম্পন্ন ও শ্রেষ্ঠতম৷৪১
৪০. অর্থাৎ কারো নিজে মালিক হয়ে বসা, মালিকানায় শরীক হওয়া অথবা আল্লাহর সাহায্যকারী হওয়া তো দূরের কথা সমগ্র বিশ্ব-জাহানে এমন কোন সত্তা নেই যে আল্লাহর সামনে কারো পক্ষে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয় সুপারিশ পর্যন্ত করতে পারে। তোমরা এই ভুল ধারণা নিয়ে বসে রয়েছে যে, আল্লাহর এমন কিছু প্রিয়জন আছে অথবা আল্লাহর সার্বভৌম কর্তৃত্বাধীনে এমন কিছু শক্তিশালী বান্দা আছে যারা একবার বেঁকে বসলে আল্লাহকে তাদের সুপারিশ মানতেই হবে। অথচ সেখানে অবস্থা হচ্ছে এই যে, অনুমতি ছাড়া কেউ মুখ খোলার সাহসই করতে পারে না। যে অনুমতি লাভ করবে একমাত্র সেই কিছু নিবেদন করতে পারবে। আর যার পক্ষে সুপারিশ করার অনুমতি পাওয়া যাবে একমাত্র তার সপক্ষেই আবেদন নিবেদন করা যাবে। (সুপারিশের ইসলামী বিশ্বাস এবং সুপারিশের মুশরিকী বিশ্বাসের মধ্যকার পার্থক্য অনুধাবন করার জন্য তাফহীমুল কুরআন সূরা ইউনুস , ৫ ও ২৩; সূরা হূদ, ৮৪ ও ১০৬; আন নাহল, ৬৪ও ৭৯ ; সূরা তা-হা, ৮৬; আর আম্বিয়া, ২৭ এবং আল হাজ্জ ১২৫ টীকা দেখুন) ।
৪১. কিয়ামতের দিন কোন সুপারিশকারী যখন কারো পক্ষে সুপারিশ করার অনুমতি চাইবে তখনকার চিত্র এখানে তুলে ধরা হয়েছে। সে চিত্রে আমাদের সামনে যে অবস্থা ফুটে উঠছে তা হচ্ছে এই যে, অনুমতি চাওয়ার আবেদন পেশ করার পর সুপারিশকারীও যার পক্ষে সুপারিশ করা হবে তারা দুজনই অত্যন্ত অস্থিরভাবে ভীতি ও উদ্বেগের সাথে জবাবের জন্য প্রতীক্ষারত। শেষ পর্যন্ত যখন ওপর থেকে অনুমিত এসে যায় এবং সুপারিশকারীর চেহারা দেখে যার পক্ষে সুপারিশ করা হবে সে ব্যাপারটা আর উদ্বেগজনক নয় বলে অনুমান করতে থাকে তখন তার ধড়ে যেন প্রান ফিরে আসে। সে এগিয়ে গিয়ে সুপারিশকারীকে জিজ্ঞেস করতে থাকে, কি জবাব এসেছে৷ সুপারিশকারী বলে, এই যে, নির্বোধের দল! এ হচ্ছে যে দরবারের অবস্থা সে সম্পর্কে তোমরা কেমন করে এ ধারণা করতে পারলে যে সেখানে কেউ নিজের বল প্রয়োগ করে তোমাদেরকে ক্ষমা করিয়ে দেবে অথবা কারো সেখানে ধর্ণা দিয়ে বসে পড়ে আল্লাহকে একথা বলার সাহস হবে যে, এ ব্যক্তি আমার প্রিয়পাত্র এবং আমার লোক, একে মাফ করতেই হবে৷
(২৯-আনকাবুত:২২) তোমরা না পৃথিবীতে অক্ষমকারী , না আকাশে ৩৪ এবং আল্লাহর হাত থেকে রক্ষা করার মতো কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী তোমাদের নেই৷ ৩৫
৩৪ . অর্থাৎ তোমরা পালিয়ে এমন কোন জায়গায় চলে যেতে পারো না যেখানে গিয়ে আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচতে পারো। তোমরা ভূগর্ভের তলদেশে কোথাও নেমে যাও অথবা আকাশের কোন উচ্চ মার্গে পৌঁছে যাও না কেন সব জায়গা থেকেই তোমাদেরকে ধরে আনা হবে এবং নিজেদের রবের সামনে হাজির করা হবে। সূরা আর রাহমানের এ কথাটিই জ্বিন ও মানুষকে সম্বোধন করে চ্যালেঞ্জের সুরে এভাবে বলা হয়েছে যে, যদি তোমরা আল্লাহর সার্বভৌম কতৃত্ব ও শাসন থেকে বের হয়ে যেতে পার তাহলে একটু বের হয়ে দেখিয়ে দাও। তা থেকে বের হবার জন্য শক্তির প্রয়োজন এবং সে শক্তি তোমাদের নেই। কাজেই তোমরা কোনক্রমেই বের হতে পারো না।
-----------------------------------
৩৫ . অর্থাৎ আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিজেদের শক্তির জোরে রক্ষা পাওয়ার ক্ষমতা তোমাদের নেই এবং তোমাদের এমন কোন অভিভাবক , পৃষ্ঠপোষক বা সাহায্যকারীও নেই যে আল্লাহর মোকাবিলায় তোমাদের আশ্রয় দিতে পারে এবং তার কাছে জবাবদিহি থেকে তোমাদের বাঁচাতে পারে। যারা শিরক ও কুফরী করেছে, আল্লাহর বিধানের সামনে মাথা নত হতে অস্বীকার করেছে এবং বুক ফুলিয়ে আল্লাহর নাফরমানী করেছে এবং তার যমীনে ব্যাপকভাবে জুলুম ও বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে, সমগ্র বিশ্ব-জাহানে তাদের সাহায্য ও সহায়তা দানকারী হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবার এবং আল্লাহর আযাবের ফায়সালাকে তাদের ওপর কার্যকর হওয়া থেকে ঠেকিয়ে রাখার ক্ষমতা কারো নেই। অথবা সমগ্র বিশ্ব-জগতে এমন একজনও নেই যে আল্লাহর আদালতে দাঁড়িয়ে একথা বলার সাহস রাখে যে, এরা আমার লোক কাজেই এরা যা কিছু করেছে তা মাফ করে দেয়া হোক।
(২০:১০৮) --সেদিন সবাই নকীবের আহবানে সোজা চলে আসবে, কেউ সামান্য দর্পিত ভংগীর প্রকাশ ঘটাতে পারবে না এবং করুণাময়ের সামনে সমস্ত আওয়াজ স্তব্ধ হয়ে যাবে, মৃদু খসখস শব্দ� ছাড়া তুমি কিছুই শুনবে না৷ ১০৯) সেদিন সুপারিশ কার্যকর হবে না, তবে যদি করুণাময় কাউকে অনুমতি দেন এবং তার কথা শুনতে পছন্দ করেন৷
( প্রকৃত ব্যাপারও এই যে, কিয়াতমের দিন কারো সুপারিশ করার জন্য স্বতপ্রণোদিত হয়ে মুখ খোলা তো দূরের কথা, টুঁশব্দটি করারও কারোর সাহস হবে না। আল্লাহ যাকে বলার অনুমতি দেবেন একমাত্র সেই-ই সুপারিশ করতে পারবে। এ দুটি কথা কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় সুস্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে। একদিকে বলা হয়েছেঃ
"কে আছে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর সামনে সুপারিশ করতে পারে"৷ (আল বাকারাহ, ২৫৫ আয়াত)
আরো বলা হয়েছেঃ
"সেদিন যখন রূহ ও ফেরেশতারা সবাই কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়াবে, একটুও কথা বলবে না, শুধুমাত্র সে-ই বলতে পারবে যাকে করুণাময় অনুমতি দেবেন এবং যে ন্যায়সংগত কথা বলবে"। (আন নাবা, ৩৮ আয়াত)
অন্যদিকে বলা হয়েছেঃ
"আর তারা কারোর সুপারিশ করে না সেই ব্যক্তির ছাড়া যার পক্ষে সুপরিশ শোনার জন্য (রহমান) রাজী হবেন এবং তারা তাঁর ভয়ে ভীত হয়ে থাকে"। (আল আম্বিয়া, ২৮ আয়াত)
আরো বলা হয়েছেঃ
"কত ফেরেশতা আকাশে আছে, তাদের সুপারিশ কোনই কাজে লাগবে না, তবে একমাত্র তখন যখন আল্লাহর কাছ থেকে অনুমতি নেবার পর সুপারিশ করা হবে এবং এমন ব্যক্তির পক্ষে করা হবে যার জন্য তিনি সুপরিশ শুনতে চান এবং পছন্দ করেন। (আন নাজম, ২৬ আয়াত))
(১৯:৯৩) পৃথিবী ও আকাশের মধ্যে যা কিছু আছে সবই তাঁর সামনে বান্দা হিসেবে উপস্থিত হবে৷
(১৯:৮৭) সে সময় রহমানের কাছ থেকে যারা পরোয়ানা হাসিল করেছে তারা ছাড়া আর কারো সুপারিশ করার ক্ষমতা থাকবে না৷
(১৮:১০২) তাহলে কি যারা কুফরী অবলম্বন করেছে তারা একথা মনে করে যে, আমাকে বাদ দিয়ে আমার বান্দাদেরকে নিজেদের কর্মসম্পাদনকারী হিসেবে গ্রহণ করে নেবে ? এ ধরনের কাফেরদের আপ্যায়নের জন্য আমি জাহান্নাম তৈরি করে রেখেছি৷
(হাজ্ব:৫৬) সেদিন বাদশাহী হবে আল্লাহর এবং তিনি তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেবেন৷
কোন শাফায়াতকারী (সুপারিশকারী ) এমন নেই, যে তাঁর অনুমতি ছাড়া শাফায়াত করতে পারে-১০:০৩,
�এ লোকেরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের ইবাদত করছে তারা তাদের ক্ষতিও করতে পারে না, উপকারও করতে পারে না৷ আর তারা বলে এরা আল্লাহর কাছে আমাদের সুপারিশকারী -১০:১৮,
(৫৭:১৫) অতএব, তোমাদের নিকট থেকে আর কোন বিনিময় গ্রহণ করা হবে না৷ আর তাদের নিকট থেকেও গ্রহণ করা হবে না যারা সুস্পষ্টভাবে কুফরীরতে লিপ্ত ছিল৷ তোমাদের ঠিকানা জাহান্নাম ৷ সে (জাহান্নাম) তোমাদের খোঁজ খবর নেবে৷ এটা অত্যন্ত নিকৃষ্ট পরিণতি৷
(১১:৩৭) এবং আমার তত্ত্বাবধানে আমার অহী অনুযায়ী একটি নৌকা বানানো শুরু করে দাও৷ আর দেখো যারা জুলুম করেছে তাদের জন্য আমার কাছে কোন সুপারিশ করো না, এরা সবাই এখন ডুবে যাবে৷
�তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর আর না কর। যদি তুমি তাদের জন্য সত্তর বারও ক্ষমাপ্রার্থনা কর, তথাপি কখনোই তাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। তা এজন্য যে, তারা আল্লাহকে এবং তাঁর রসূলকে অস্বীকার করেছে। বস্তুতঃ আল্লাহ না-ফারমানদেরকে পথ দেখান না। (At-Tawba: 80)
(১১:১০৫) সেদিন যখন আসবে তখন কারোর কথা বলার সামর্থ থাকবে না, তবে আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে কেউ কথা বলতে পারবে৷ �তারপর আবার সেদিন কিছু লোক হবে হতভাগ্য এবং কিছু লোক ভাগ্যবান৷
(১৪:৩১) হে নবী! আমার যে বান্দারা ঈমান এনেছে তাদেরকে বলে দাও, তারা যেন নামায কায়েম করে এবং যা কিছু আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে (সৎপথে) ব্যয় করে - সেই দিন আসার আগে যেদিন না বেচা-কেনা হবে আর না হতে পারবে বন্ধু বাৎসল্য৷
সুপারিশ সংক্রান্ত ভুল ধারণায় লিপ্ত ছিল আরবের লোকেরা, তাদের জবাবে আল্লাহ যা বলছেন :
(আস সাজদা: ৪) ......তিনি ছাড়া তোমাদের কোন সাহায্যকারী নেই এবং নেই তার সামনে সুপারিশকারী, তারপরও কি তোমরা সচেতন হবে না ?
(অর্থাৎ পৃথিবী ও আকাশের স্রষ্টাইতো আসল খোদা। তোমাদের চিন্তা-ভাবনা কতই উদ্ভট, বিশ্ব- জাহানের এ বিশাল সাম্রাজ্যে তোমরা তাকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে কর্ম-সম্পাদনকারী মনে করে বসেছো। এ সমগ্র বিশ্ব- জাহান এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে মহান আল্লাহই এসবের স্রষ্টা। তার সত্তা ছাড়া বাকি এখানে যা কিছু আছে সবই সৃষ্টি। মহান আল্লাহ এ দুনিয়া সৃষ্টি করার পর কোথাও গিয়ে ঘুমিয়েও পড়েননি। বরং তিনিই নিজের এ রাজ্যের সিংহাসনে আসীন এবং শাসনকর্তা হয়েছেন। অথচ তোমাদের বুদ্ধি এতই ভ্রষ্ট হয়ে গেছে যে, তোমরা সৃষ্টিকুলের মধ্য থেকে কয়েকটি সত্তাকে নিজেদের ভাগ্যের মালিক গণ্য করে বসেছো। যদি আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করতে না পারেন তাহলে তাদের মধ্যে থেকে কার তোমাদের সাহায্য করার ক্ষমতা আছে ৷ যদি আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন, তাহলে তাদের মধ্য থেকে কে তোমাদেরকে তার হাত থেকে ছাড়িয়ে নেবার শক্তি রাখে ৷ যদি আল্লাহ সুপারিশ না শোনেন, তাহলে তাদের মধ্য থেকে কে তার কাছ থেকে এ সুপারিশ গ্রহণ করিয়ে নেবার ক্ষমতা রাখে ৷ )
ওলী/বুযুর্গ দেরকে সুপারিশ করার অবাধ অনুমতি কেন দেয়া হবে না ?
(২০:১১০) -তিনি লোকদের সামনের পেছনের সব অবস্থা জানেন এবং অন্যেরা এর পুরো জ্ঞান রাখে না৷
(সুপারিশের প্রতি এ বিধি-নিষেধ আরোপিত কেন, এর কারণ এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। ফেরেশতা, আম্বিয়া বা আউলিয়া যে-ই হোন না কেন কারো রেকর্ড সম্পর্কে এদের কারো কিছুই জানা নেই এবং জানার কোন ক্ষমতাও এদের নেই। দুনিয়ায় কে কি করতো এবং আল্লাহর আদালতে কে কোন ধরনের ভূমিকা ও কার্যাবলী এবং কেমন দায়িত্বের বোঝা নিয়ে এসেছে তাও কেউ জানে না। অপরদিকে আল্লাহ প্রত্যেকের অতীতের ভূমিকা ও কর্মকাণ্ড জানেন। তার বর্তমান ভূমিকাও তিনি জানেন। সে সৎ হলে কেমন ধরনের সৎ। অপরাধী হলে কোন পর্যায়ের অপরাধী। তার অপরাধ ক্ষমাযোগ্য কি না। সে কি পূর্ণ শাস্তিলাভের অধিকারী অথবা কম শাস্তির। এহেন অবস্থায় কেমন করে ফেরেশতা, নবী ও সৎলোকদেরকে তাদের ইচ্ছামতো যার পক্ষে যে কোন ধরনের সুপারিশ তারা চায় তা করার জন্য তাদেরকে অবাধ অনুমতি দেয়া যেতে পারে৷ একজন সাধারণ অফিসার তার নিজের ক্ষুদ্রতম বিভাগে যদি নিজের প্রত্যেকটি বন্ধু ও আত্মীয়ের সুপারিশ শুনতে শুরু করে দেন তাহলে মাত্র চারদিনেই সমগ্র বিভাগটিকে ধ্বংস করে ছাড়বেন। তাহলে আকাশ ও পৃথিবীর শাসনকর্তার কাছ থেকে কেমন করে আশা করা যেতে পারে যে, তার দরবারে ব্যাপকভাবে সুপারিশ চলতে থাকবে এবং প্রত্যেক বুযর্গ সেখানে গিয়ে যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করিয়ে আনবেন। অথচ তাদের কেউই যাদের সুপারিশ তারা করছেন তাদের কার্যকলাপ কেমন তা জানেন না। দুনিয়ায় যে কর্মকর্তা দায়িত্বের সামান্যতম অনুভূতিও রাখেন তার কর্মনীতি এ পর্যায়েরই হয়ে থাকে যে, যদি তার কোন বন্ধু তার কোন অধস্তন কর্মচারীর সুপারিশ নিয়ে আসে তাহলে সে তাকে বলে, আপনি জানেন না এ ব্যক্তি কত বড় ফাঁকিবাজ, দায়িত্বহীন, ঘুষখোর ও অত্যাচারী। আমি এর যাবতীয় কীর্তিকলাপের খরব রাখি। কাজেই আপনি মেহেরবানী করে অন্তত আমার কাছে তার সুপারিশ করেবন না। এ ছোট্র উদাহরণটির ভিত্তিতে অনুমান করা যেতে পারে যে, এ আয়াতে সুপারিশ সম্পর্কে যে নিয়ম বর্ণনা করা হয়েছে তা কতদূর সঠিক, যুক্তিসংগত ও ন্যায়ভিত্তিক। আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করার দরজা বন্ধ হবে না। আল্লাহর সৎ বান্দারা, যারা দুনিয়ায় মানুষের সাথে সহানুভূতিশীল ব্যবহার করতে অভ্যস্ত ছিলেন তাদেরকে আখেরাতেও সহানভূতির অধিকার আদায় করার সুযোগ দেয়া হবে। কিন্তু তারা সুপারিশ করা আগে অনুমতি চেয়ে নেবেন। যার পক্ষে আল্লাহ তাদেরকে বলার অনুমতি দেবেন একমাত্র তার পক্ষেই তারা সুপারিশ করতে পারবেন। আবার সুপারিশ করার জন্যও শর্ত হবে যে, তা সংগত এবং ন্যায়ভিত্তিক হতে হবে যেমন () এবং ঠিক কথা বলবে) আল্লাহর এ উক্তিটি পরিস্কার জানিয়ে দিচ্ছে যে, সেখানে আজেবাজে সুপারিশ করার কোন সুযোগ থাকবে না। যেমন একজন দুনিয়ায় শত শত হাজার হাজার লোকের অধিকার গ্রাস করে এসেছে কিন্তু কোন এক বুযুর্গ হঠাৎ উঠে তার পক্ষে সুপারিশ করে দিলেন যে, হে আল্লাহ! তাকে পুরস্কৃত করুন কারণ সে আমার বিশেষ অনুগ্রহ ভাজন।)
�
রাসুল সা: এর যুগের কাফেরগণ নাস্তিক ছিলনা, তার দেবদেবীদের পূজা করত আল্লাহর নিকট সুপারিশ লাভের আশায় :
(মু�মিনুন:৮৮) তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, বলো যদি তোমরা জেনে থাকো, কার কর্তৃত্ব� চলছে প্রত্যেকটি জিনিসের ওপর? আর কে তিনি যিনি আশ্রয় দেন এবং তাঁর মোকাবিলায় কেউ আশ্রয় দিতে পারে না ? ৮৯) তারা নিশ্চয়ই বলবে, এ বিষয়টি তো আল্লাহরই জন্য নির্ধারিত ৷
(মু�মিনুন:৮৬) তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, সাত আসমান ও মহান আরশের অধিপতি কে ? ৮৭) তারা নিশ্চয়ই বলবে, আল্লাহ ৷�
(মু�মিনুন:৮৪) তাদেরকে জিজ্ঞেস করোঃ যদি তোমরা জানো তাহলে বলো এ পৃথিবী এবং এর মধ্যে যারা বাস করে তারা কার ? ৮৫) তারা নিশ্চয় বলবে, আল্লাহর ৷
(মু�মিনুন:৯১) আল্লাহ কাউকে নিজের সন্তানে পরিণত করেননি� এবং তাঁর সাথে অন্য কোন ইলাহও নেই৷ যদি থাকতো তাহলে প্রত্যেক ইলাহ নিজের সৃষ্টি নিয়ে আলাদা হয়ে যেতো ৷এবং তারপর একজন অন্যজনের ওপর চড়াও হতো৷� এরা যেসব কথা তৈরী করে তা থেকে আল্লাহ পাক-পবিত্র৷
সুপারিশ লাভ করার ভ্রান্ত আকীদা থেকেই শিরকের উৎপত্তি ঘটেছে :
(মু�মিনুন:৯১) আল্লাহ কাউকে নিজের সন্তানে পরিণত করেননি এবং তাঁর সাথে অন্য কোন ইলাহও নেই৷ যদি থাকতো তাহলে প্রত্যেক ইলাহ নিজের সৃষ্টি নিয়ে আলাদা হয়ে যেতো ৷এবং তারপর একজন অন্যজনের ওপর চড়াও হতো৷ এরা যেসব কথা তৈরী করে তা থেকে আল্লাহ পাক-পবিত্র৷
৯২) প্রকাশ্য ও গোপন সবকিছু তিনি জানেন ৷ ৮৬ এরা যে শিরক নির্ধারণ করে তিনি তার ধরা ছোঁয়ার বাইরে৷
(৮৬ . কোন কোন সমাজে একটা বিশেষ ধরনের শিরক দেখতে পাওয়া যায় । এর প্রথামিক রূপ হলো শাফায়াত বা সুপারিশ করে পরকালের মুক্তি নিশ্চিত করার ক্ষমতা সংক্রান্ত মুশরিকা আকীদা । তারপর আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য কোন কোন সত্তার অদৃশ্য ও ভূত-ভবিষ্যতের জ্ঞান আছে বলে ধারণা করা।
এখানে এ বিশেষ ধরনের শিরকের প্রতি একটি সূক্ষ্ম ইংগিত রয়েছে, আয়াতটি এ শিরকের উভয় দিককে খন্ডন করে। (ব্যাখ্যার জন্য দেখুন , তাফহীমুল কুরআন , ত্বা-হা , ৮৫ও ৮৬ এবং আল আম্বিয়া , ২৭ টীকা)।)
(২৬.শুআরা:৯২) আর তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে, "আল্লাহকে বাদ দিয়ে তোমরা যাদের ইবাদাত করতে তারা এখন কোথায়? ৯৩) তারা কি এখন তোমাদের কিছু সাহায্য করছে অথবা আত্মরক্ষা করতে পারে? "৯৪) তারপর সেই উপাস্যদেরকে এবং ৯৫) এই পথভ্রষ্টদেরকে আর ইবলীসের বাহিনীর সবাইকে তার মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে৷৯৬) সেখানে এরা সবাই পরস্পর ঝগড়া করবে এবং পথভ্রষ্টরা (নিজেদের উপাস্যদেরকে) বলবে, ৯৭) "আল্লাহর কসম আমরা তো স্পষ্ট ভ্রষ্টতার মধ্যে ছিলাম,৯৮) যখন তোমাদের দিচ্ছিলাম রাব্বুল আলামীনের সমকক্ষের মর্যাদা৷ ৯৯) আর এ অপরাধীরাই আমাদেরকে ভ্রষ্টতায় লিপ্ত করেছে৷১০০) এখন আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই,১০১) এবং কোন অন্তরংগ বন্ধুও নেই৷১০২) হায় যদি আমাদের আবার একবার ফিরে যাওয়ার সুযোগ মিলতো, তাহলে আমরা মুমিন হয়ে যেতাম৷"১০৩) নিঃসন্দেহে এর মধ্যে একটি বড় নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু এদের অধিকাংশ মুমিন নয়৷১০৪) আর প্রকৃতপক্ষে তোমার রব পরাক্রমশালীও এবং করুণাময়ও৷
অথচ শরীকরা তাদের অনুসারীদের ব্যাপারে যে কোন ধরণের সুপারিশ করতে অস্বীকার করবে অথবা সুপারিশ করার ক্ষমতাই পাবে না :
(৩০-রূম: ১৩) তাদের বানানো শরীকদের মধ্য থেকে কেউ তাদের সুপারিশ করবে না ১৬ এবং তারা নিজেদের শরীকদের অস্বীকার করবে৷ ১৭
১৬ . তিন ধরনের সত্তার ওপর শরীক শব্দটির প্রয়োগ হয়। এক, ফেরেশতা, নবী , আউলিয়া , শহীদ ও পুণ্যবান লোক। মুশরিকরা বিভিন্ন যুগে এদেরকে আল্লাহর গুণাবলী ও ক্ষমতাঁর অধিকারী গণ্য করে এদের সামনে বন্দেগী ও পূজার যাবতীয় অনুষ্ঠান পালন করতো। কিয়ামতের দিন তারা পরিষ্কার বলে দেবে , এসব কিছু করেছো তোমরা আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বরং আমাদের শিক্ষা ও পথনির্দেশের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধাচরণ করে। তাই তোমাদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। তোমাদের শাফাআতের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে আমরা কিছূ আবেদন নিবেদন করবো, এ আশা আমাদের ব্যাপারে করো না। দুই, এমন সব জিনিস যেগুলোর চেতনা নেই অথবা প্রাণ নেই। যেমনঃ চাঁদ, সূর্য, তারকা, গাছ, পাথর ও পশু ইত্যাদি। মুশরিকরা তাদেরকে খোদায় পরিণত করে, এদের পূজা- উপাসনা করে এবং এদের কাছে প্রার্থনা নিবেদন করে।কিন্তু এই জড় ও নির্জীব জিনিসগুলো একথা জানতেই পারে না যে, আল্লাহর প্রতিনিধি মানুষ এসব নজরানা তাদের জন্য উৎসর্গ করছে। একথা সুস্পষ্ট যে, এদের মধ্যে একজনও তাদের সুপারিশের জন্য সামনে অগ্রসর হবে না। তিন, এমন সব বড় বড় অপরাধী যারা নিজেরাই চেষ্টা করে, ধোঁকা ও প্রতারণার পথ অবলম্বন করে, মিথ্যার জাল ছড়িয়ে দিয়ে অথবা শক্তি প্রয়োগ করে দুনিয়ায় আল্লাহর বান্দাদের থেকে নিজেদের বন্দেগী ও পূজা আদায় করে নিয়েছে। যেমন শয়তান, ভণ্ড ও ধর্মীয় নেতা এবং জালেম ও স্বৈরাচারী শাসনকর্তা ইত্যাদি। এরা সবাই সেখানে বিপদের শৃঙ্খলে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িতে থাকবে। নিজেদের এ ভক্তবৃন্দের সুপারিশের সামনে অগ্রসর হওয়া তো দূরের কথা বরং তারা নিজেদের আমলনামার বোঝা হালকা করার চেষ্টা করতে থাকবে। হাশরের ময়দানে তারা একথা প্রমাণ করার চেষ্টা করতে থাকবে যে, এদের অপরাধের জন্য এরা নিজেরাই দায়ী এবং এদের পথভ্রষ্টতাঁর জন্য আমাদের দুর্ভোগ পোহানো উচিত নয়। এভাবে মুশরিকরা সেখানে কোন দিক থেকে কোন প্রকার শাফাআত লাভ করতে সক্ষম হবে না।
১৭ . অর্থাৎ সে সময় মুশরিকরা একথা স্বীকার করবে যে, তাদেরকে আল্লাহর শরীক করে তারা ভুল করেছিল। প্রকৃতপক্ষে তাদের মধ্য থেকে কারো আল্লাহর সার্বভৌম কর্তৃত্বে কোন অংশ নেই , এ সত্যটি তখন তাদের সামনে উন্মেচিত হয়ে যাবে। তাই দুনিয়ায় আজ তারা যে শিরকের ওপর টিকে থাকার জন্য চাপ দিচ্ছে আখেরাতে তাকেই অস্বীকার করবে।
ফেরেশতারা কি আল্লাহর নিকট সুপারিশ করার অধিকার রাখে?
(২১:২৭) তারা তাঁর সামনে অগ্রবর্তী হয়ে কথা বলে না এবং শুধুমাত্র তাঁর হুকুমে কাজ করে৷ ২৮) যাকিছু তাদের সামনে আছে এবং যাকিছু আছে তাদের অগোচরে সবই তিনি জানেন৷ যাদের পক্ষে সুপারিশ শুনতে আল্লাহ সম্মত তাদের পক্ষে ছাড়া আর কারো সুপারিশ তারা করে না এবং তারা তাঁর ভয়ে ভীত৷
(মুশরিকরা দু'টি কারণে ফেরেশতাদেরকে মাবুদে পরিণত করতো। এক, তাদের মতে তারা ছিল আল্লাহর সন্তান, দুই তাদরকে পূজা (খোশামোদ তোশামোদ) করার মাধ্যমে তারা তাদেরকে আল্লাহর কাছে নিজেদের জন্য শাফায়াতকারীতে (সুপারিশকারী) পরিণত করতে চাচ্ছিল। যেমন-
(সূরা ইউনুস আয়াত ১৮)এবং সূরা যুমার আয়াত ৩)
এ আয়াতগুলোতে এ দুটি কারণই প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
এ জায়গায় এ বিষয়টিও প্রণিধানযোগ্য যে, কুরআন সাধরণত শাফায়াতের মুশরিকী আকীদা বিশ্বাস, খণ্ডন করতে গিয়ে এ সত্যটির ওপর জোর দিয়ে থাকে যে, যাদেরকে তোমরা শাফায়াতকারী গণ্য করেছো তারা অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী নয় এবং তাদের গোচরে ও অগোচরে যেসব কথা আছে আল্লাহ সেগুলো জানেন। এ থেকে একথা হৃদয়ংগম করানোই উদ্দেশ্য যে, তারা যখন প্রত্যেক মানুষের সামনে পেছনের ও গোপন-প্রকাশ্য অবস্থায় জানে না তখন তারা শাফায়াত করার একচ্ছত্র ও শর্তহীন অধিকার কেমন করে লাভ করতে পারে৷ কাজেই ফেরেশতা, নবী সৎলোক প্রত্যেকের শাফায়াত করার এখ্তিয়ার অবশ্যি আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষ। আল্লাহ তাদের কাউকে কোন ব্যক্তির পক্ষে শাফায়াত করার অনুমতি দিলে তবেই তিনি তার পক্ষে শাফায়াত করতে পারবেন। নিজেই অগ্রণী হয়ে তারা যে কোন ব্যক্তির শাফায়াত করতে পারেন না। আর যখন শাফায়াত শোনা বা না শোনা এবং তা কবুল করা বা না করা সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল তখন এ ধরনের ক্ষমতাহীন শাফায়াতকারীর সামনে মাথা নোয়ানো এবং প্রার্থনার হাত পাতা কিভাবে সমীচীন ও উপযোগী হতে পারে৷ (আরো বেশী ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা ত্বা-হাঃ ৮৫-৮৬ টীকা)।
জালেমদের জন্য কোন সুপারিশ কবুল করা হবে না :
(মু�মিনুন:২৭) ...তাদের ছাড়া যাদের বিরুদ্ধে আগেই ফায়সালা হয়ে গেছে এবং জালেমদের ব্যাপারে আমাকে কিছুই বলো না, তারা এখন ডুবতে যাচ্ছে৷
পরকালে হাশরের ময়দানে কোন আত্মীয়তা কাজে আসবে না :
(মু�মিনুন:১০১) তারপর যখনই শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন তাদের মধ্যে আর কোন আত্মীয়তা বা সম্পর্কে থাকবে না এবং তারা পরস্পরকে জিজ্ঞেসও করবে না ৷
ঈমান না আনলে নবীর পুত্র হলেও কোন কাজ হবেনা :
(১১:৪২) নৌকা তাদেরকে নিয়ে পর্বত প্রমাণ ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে ভেসে চলতে লাগলো৷ নূহের ছেলে ছিল তাদের থেকে দূরে৷ নূহ চীৎকার করে তাকে বললো, � হে আমার পুত্র! আমাদের সাথে আরোহণ করো, কাফেরদের সাথে থেকো না৷� ৪৩) সে পালটা জবাব দিল, �আমি এখনই একটি পাহাড়ে চড়ে বসছি৷ তা আমাকে পানি থেকে বাঁচাবে৷� নূহ বললো, �আজ আল্লাহর হুকুম থেকে বাঁচাবার কেউ নেই, তবে যার প্রতি আল্লাহ রহমত করেন সে ছাড়া৷� এমন সময় একটি তরংগ উভয়ের মধ্যে আড়াল হয়ে গেলো এবং সেও নিমজ্জিতদের দলে শামিল হলো৷
(১১:৪৫) নূহ তার রবকে ডাকলো৷ বললো, � হে আমার রব! আমার ছেলে আমার পরিবারভুক্ত এবং তোমার প্রতিশ্রুতি সত্য আর তুমি সমস্ত শাসকদের মধ্যে সবেচেয়ে বড় ও উত্তম শাসক৷৪৬) জবাবে বলা হলো, �হে নূহ! সে তোমার পরিবারভুক্ত নয়৷ সে তো অসৎ কর্মপরায়ণ৷ কাজেই তুমি আমার কাছে এমন বিষয়ের আবেদন করো না যার প্রকৃত তত্ত্ব তোমার জানা নেই৷ আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি, নিজেকে অজ্ঞদের মতো বানিয়ে ফেলো না�৷৪৭) নূহ তখনই বললো, �হে আমার রব! যে জিনিসের ব্যাপারে আমার জ্ঞান নেই তা তোমার কাছে চাইবো- এ থেকে আমি তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি৷ যদি তুমি আমাকে মাফ না করো এবং আমার প্রতি রহমত না করো তাহলে আমি ধ্বংস হয়ে যাবো৷
আল্লাহকে ভয় করো এবং সেদিনকে ভয় করো যেদিন পিতা পুত্রের এবং পুত্র পিতার কোন কাজে আসবে না :
(৩১-লোকমান: ৩৩) হে মানুষেরা ! তোমাদের রবের ক্রোধ থেকে সতর্ক হও এবং সেদিনের ভয় করো যেদিন কোন পিতা নিজের পুত্রের পক্ষ থেকে প্রতিদান দেবে না এবং কোন পুত্রই নিজের পিতার পক্ষ থেকে কোন প্রতিদান দেবে না৷৫৯
৫৯. অর্থাৎ বন্ধু, নেতা, পীর এবং এ পর্যায়ের অন্যান্য লোকেরা তবু তো দূর সম্পর্কের । দুনিয়ায় সবচেয়ে নিকট সম্পর্ক হচ্ছে সন্তান ও পিতামাতার মধ্যে। কিন্তু সেখানে অবস্থা হবে যদি পুত্র পাকড়াও হয়, তাহলে পিতা এগিয়ে গিয়ে একথা বলবে না যে, তার গোনাহের জন্য আমাকে পাকড়াও করো। অন্যদিকে পিতার দুর্ভোগ শুরু হয়ে গেলে পুত্রের একথা বলার হিম্মত হবে না যে, তার বদলে আমাকে জাহান্নামে পঠিয়ে দাও। এ অবস্থায় নিকট সম্পর্কহীন তিন ব্যক্তিরা সেখানে পরস্পরের কোন কাজে লাগবে এ আশা করার কি অবকাশই বা থাকে। কাজেই যে ব্যক্তি দুনিয়ায় পরের জন্য নিজের পরকাল ঝরঝরে করে অথবা অন্যের ওপর ভরসা করে নিজে ভ্রষ্টতা ও পাপের পথ অবলম্বন করে সে একটা গণ্ডমূর্খ। এ প্রসঙ্গে ১৫ আয়াতের বিষয়বস্তুও সামনে রাখা উচিত। সেখানে সন্তানদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, দুনিয়াবী জীবনের বিভিন্ন কাজে-কারবারে অবশ্যই পিতা-মাতার সেবা করতে ও তাদের কথা মেনে চলতে হবে কিন্তু ধর্ম ও বিশ্বাসের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার কথায় গোমরাহীর পথ অবলম্বন কোনমতেই ঠিক নয়।
ঈমান না আনলে নবীর স্ত্রী হলেও কাজ �হবে না :
(১১:৮১) তখন ফেরেশতারা তাকে বললোঃ �হে লূত! আমরা তোমার রবের প্রেরিত ফেরেশতা৷ এরা তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না৷ তুমি কিছুটা রাত থাকতে তোমার পরিবার পরিজন নিয়ে বের হয়ে যাও৷ আর সাবধান৷ তোমাদের কেউ যেন পেছনে ফিরে না তাকায়৷ �কিন্তু তোমার স্ত্রী ছাড়া (সে সাথে যাবে না) কারণ তার ওপরও তাই ঘটবে যা ঐ সব লোকের ঘটবে৷ তাদের ধ্বংসের জন্য প্রভাতকাল নির্দিষ্ট রয়েছে৷ - প্রভাত হবার আর কতটুকুই বা দেরী আছে!
(১৫:৬০) তার স্ত্রী ছাড়া, যার জন্য (আল্লাহ বলেনঃ) আমি স্থির করেছি, সে পেছনে অবস্থানকারীদের সাথে থাকবে৷
(২৯-আনকাবুত:৩২) ...তারা বললো , � আমরা ভালোভাবেই জানি সেখানে কে কে আছে, আমরা তাকে ও তার পরিবারবর্গকে রক্ষা করবো তার স্ত্রীকে ছাড়া; � সে ছিল পেছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত ৷৫৬ ৩৩) তারপর যখন আমার প্রেরিতগণ লূতের কাছে পৌঁছলো তাদের আগমনে সে অত্যন্ত বিব্রত ও সংকুচিত হৃদয় হয়ে পড়লো৷� তারা বললো, � ভয় করো না এবং দুঃখও করো না৷� আমরা তোমাকে ও তোমার পরিবারবর্গকে রক্ষা করবো, তোমার স্ত্রীকে ছাড়া , সে পেছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত ৷
৫৫ . সূরা হূদে এ কাহিনীর প্রারম্ভিক অংশ এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, প্রথমে হযরত ইবরাহীম (আ) ফেরেশতাদেরকে মানুষের আকৃতিতে দেখে ভয় পেয়ে যান। কারণ এ আকৃতিতে ফেরেশতাদের আগমন কোন ভয়াবহ অভিযানের পূর্বাভাস দেয়। তারপর যখন তারা তাকে সুসংবাদ দান করেন এবং তার ভীতি দূর হয়ে যায় তখন তিনি বুঝতে পারেন যে, লূতের জাতি হচ্ছে এ অভিযানের লক্ষ। তাই সে জাতির জন্য তিনি করুণার আবেদন জানাতে থাকেনঃ
---------------
" কিন্তু তার এ আবেদন গৃহীত হয়নি এবং বলা হয় এ ব্যাপারে এখন আর কিছু বলো না। তোমার রবের ফায়সালা হয়ে গেছে এ আযাবকে এখন আর ফেরানো যাবে না।"
----------------------
এ জবাবের মাধ্যমে হযরত ইবরাহীম (আ) যখন বুঝতে পারেন লূত জাতির জন্য আর কোন অবকাশের আশা নেই তখনই তার মনে জাগে হযরত লূতের চিন্তা। তিনি যা বলেন তা এখানে উদ্ধৃত হয়েছে। তিনি বলেন "সেখানে তো লূত রয়েছে।" অর্থাৎ এ আযাব যদি লূতের উপস্থিতিতে নাযিল হয় তাহলে তিনি ও তার পরিবারবর্গ তা থেকে কেমন করে নিরাপদ থাকবেন।
৫৬ . এ মহিলা সম্পর্কে সূরা তাহরীমের ১০ আয়াতে বলা হয়েছেঃ হযরত লূতের এই স্ত্রী তার প্রতি বিশ্বস্ত ছিল না। এ জন্য তার ব্যাপারে এ ফায়সালা করা হয় যে, একজন নবীর স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও তাকে আযাবের মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে।
সম্ভবত হিজরাত করার পর হযরত লূত জর্দান এলাকায় বসতি স্থাপন করে থাকবেন এবং তখনই তিনি এ জাতির মধ্যে বিয়ে করে থাকবেন। কিন্তু তার সাহচর্যে জীবনের একটি বিরাট অংশ পার করে দেবার পরও এ মহিলা ঈমান আনেনি এবং তার সকল সহানুভূতি ও আকর্ষণ নিজের জাতির ওপরই কেন্দ্রীভূত থাকে। যেহেতু আল্লাহর কাছে আত্মীয়তা ও রক্ত সম্পর্কেও কোন গুরুত্ব নেই, প্রত্যেক ব্যক্তির ব্যাপারে ফায়সালা হয় তার ঈমান ও চরিত্রের ভিত্তিতে , তাই নবীর স্ত্রী হওয়ায় তার কোন লাভ হয়নি। তার পরিণাম তার স্বামীর অনুরূপ হয়নি বরং যে জাতির ধর্ম ও চরিত্র সে গ্রহণ করে রেখেছিল তার অনুরূপ হয়।
নবীর স্ত্রীও যদি অশ্লীল কাজ করে তবে তাদেরকেও কোন ছাড় দেওয়া হবেনা, বরং তাদের জন্য রয়েছে দ্বিগুণ� শাস্তি :
(৩৩-আহযাব: ৩০) হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ কোনো সুস্পষ্ট অশ্লীল কাজ করবে তাকে দ্বিগুন শাস্তিদেয়া হবে৷ ৪৩ আল্লাহর জন্য এটা খুবই সহজ কাজ৷ ৪৪
৪৩. এর অর্থ এ নয় যে, নাউযুবিল্লাহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র স্ত্রীদের থেকে কোন অশ্লীল কাজের আশংকা ছিল। বরং এর মাধ্যমে নবীর স্ত্রীগণকে এ অনুভূতি দান করাই উদ্দেশ্য ছিল যে, ইসলামী সমাজে তাঁরা মেন উচ্চ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত আছেন সেই অনুযায়ী তাঁদের দায়িত্বও অনেক কঠিন। তাই তাঁদের নৈতিক চালচলন হতে হবে অত্যন্ত পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন। এটা ঠিক তেমনি যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে মহান আল্লাহ বলেনঃ (আরবী)" যদি তুমি শিরক করো তাহলে তোমার সমস্ত কৃতকর্ম বরবাদ হয়ে যাবে।" (আয যুমারঃ ৬৫) এর অর্থ এ নয় যে, নাউযুবিল্লাহ নবী করীম (সা) থেকে কোন শিরকের আশংকা ছিল বরং নবী করীমকে এবং তাঁর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে শিরক কত ভয়াবহ অপরপাধ এবং তাকে কঠোরভাবে এড়িয়ে চলা অপরিহার্য, সে কথা বুঝানোই ছিল উদ্দেশ্য।
৪৪. অর্থাৎ তোমরা এ ভুলের মধ্যে অবস্থান করো না যে, নবীর স্ত্রী হওয়ার কারণে তোমরা আল্লাহর পাকড়াও থেকে বেঁচে যাবে অথবা তোমাদের মর্যাদা এত বেশী উন্নত যে, সে কারণে তোমাদেরকে পাকড়াও করা আল্লাহর জন্য কঠিন হয়ে যেতে পারবে।
আরো দেখুন : সুপারিশ,
ঈমান না আনলে �স্বয়ং নবীও �সুপারিশ স্বরূপ �ক্ষমা প্রার্থনা করলেও মুক্তি পাওয়া যাবে না: �
তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর আর না কর। যদি তুমি তাদের জন্য সত্তর বারও ক্ষমাপ্রার্থনা কর, তথাপি কখনোই তাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। তা এজন্য যে, তারা আল্লাহকে এবং তাঁর রসূলকে অস্বীকার করেছে। বস্তুতঃ আল্লাহ না-ফারমানদেরকে পথ দেখান না। (At-Tawba: 80)
স্বয়ং নবীও যদি সৎপথ অবলম্বন না করে দুষ্কৃতিকারীদের অনুসরণ করেন তবে তাকেও শাস্তি পেতে হবে :
(১৭:৭৪) আর যদি আমি তোমাকে মজবুত না রাখতাম তাহলে তোমার পক্ষে তাদের দিকে কিছু না কিছু ঝুঁকে পড়া অসম্ভব ব্যাপার ছিলো না৷৭৫) কিন্তু যদি তুমি এমনটি করতে তাহলে আমি এ দুনিয়ায় তোমাকে দ্বিগুণ শাস্তির মজা টের পাইয়ে দিতাম এবং আখেরাতেও, তারপর আমার মুকাবিলায় তুমি কোনো সাহায্যকারী পেতে না৷
ঈমান না আনলে মুহাম্মদ সা: এর আত্মীয়দেরকেও আত্মীয়তার ভিত্তিতে কোনরূপ সুপারিশ লাভের সুবিধা দেওয়া হয়নি :
বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : আ > আত্নীয়তা > মুহাম্মদ সা: এর আত্মীয়দেরকেও আত্মীয়তার ভিত্তিতে কোনরূপ সুপারিশ লাভের অধিকার দেওয়া হয়নি।
আযাব অবধারিত হয়ে যাবার পর নবীর সুপারিশও কোন কাজে লাগবে না :
(১১:৭৪) তারপর যখন ইবরাহীমের আশংকা দূর হলো এবং (সন্তানের সুসংবাদে) তার মন খুশীতে ভরে গেলো তখন সে লূতের সম্প্রদায়ের ব্যাপারে আমার সাথে বাদানুবাদ শুরু করলো৷৭৫) আসলে ইবরাহীম ছিল বড়ই সহনশীল ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী এবং সে সকল অবস্থায়ই আমার দিকে রুজূ করতো৷ ৭৬) (অবশেষে আমার ফেরেশ্তারা তাকে বললঃ (�হে ইবরাহীম! এ থেকে বিরত হও৷ তোমার রবের হুকুম হয়ে গেছে, কাজেই এখন তাদের ওপর এ আযাব অবধারিত৷ কেউ ফেরাতে চাইলেই তা ফিরতে পারে না৷
যারা কোথাও থেকে সাহায্য পাবে না:
বিস্তারিত দেখুন : স > সাহায্য > যারা কোথাও থেকে সাহায্য পাবে না, এবং কুরআনের আয়াত শুনে যারা পিছনে ফিরে কেটে পড়ত তাদেরকে কোন সাহায্য করা হবে না।
সুবিচার : (দেখুন : ই > ইনসাফ )
ট্যাগ : ন্যায় বিচার, শাসন ব্যবস্থা, আদল ।
সুতা কাটা :
(১৬:৯২) তোমাদের অবস্থা যেন সেই মহিলাটির মতো না হয়ে যায় যে নিজ পরিশ্রমে সূতা কাটে এবং তারপর নিজেই তা ছিঁড়ে কুটি কুটি করে ফেলে৷
সুন্নাত / সুন্নত :
আল্লাহর সুন্নাতে (রীতিনীতিতে) কোন পরিবর্তন নেই :
﴿سُنَّةَ مَن قَدْ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِن رُّسُلِنَا ۖ وَلَا تَجِدُ لِسُنَّتِنَا تَحْوِيلًا﴾
(১৭:৭৭) এটি আমার স্থায়ী কর্মপদ্ধতি৷ তোমার পূর্বে আমি যেসব রসূল পাঠিয়েছিলাম তাদের সবার ব্যাপারে এ কর্মপদ্ধতি আরোপ করেছিলাম৷ আর আমার কর্মপদ্ধতিতে তুমি কোনো পরিবর্তন দেখতে পাবে না৷
(৩৩-আহযাব: ৬২) এটিই আল্লাহর সুন্নাত, এ ধরনের লোকদের ব্যাপারে পূর্ব থেকে এটিই চলে আসছে এবং তুমি আল্লাহর সুন্নাতে কোন পরিবর্তন পাবে না৷১১৫
১১৫. অর্থাৎ আল্লাহর শরীয়াতের একটি স্বতন্ত্র বিধান আছে। সে বিধান হচ্ছে, একটি ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্রে এ ধরনের ফাসাদীদেরকে কখনো সমৃদ্ধি ও বিকাশ লাভের সুযোগ দেয়া হয় না। যখনই কোন সমাজ ও রাষ্ট্রর ব্যবস্থা আল্লাহর শরীয়াতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হবে, সেখানে এ ধরনের লোকদেরকে পূর্বেই সতর্ক করে দেয়া হবে, যাতে তারা নিজেদের নীতি পরিবর্তন করে নেয় এবং তারপর তারা বিরত না হলে কঠোরভাবে তাদেরকে দমন করা হবে।
সুন্নাতের আইনগত মরযাদা �:
মদীনাবাসী ও তাদের আশপাশে বেদুইনদের জন্য আল্লাহর রসূলকে ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে থাকা এবং তার ব্যাপারে বেপরোয়া হয়ে নিজেদের জীবনের চিন্তায় মশগুল হয়ে যাওয়া কোনক্রমেই সমীচীন ছিল না-৯:১২০,
(৩৩-আহযাব: ৩৬) যখন আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোনো বিষয়ের ফায়সালা দিয়ে দেন তখন কোনো মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীর সেই ব্যাপারে নিজে ফায়সালা করার কোনো অধিকার নেই৷ আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নাফরমানী করে সে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত হয়৷
(এ আয়াত যদিও একটি বিশেষ সময়ে নাযিল হয় কিন্তু এর মধ্যে যে হুকুম বর্ণনা করা হয় তা ইসলামী আইনের একটি বড় মূলনীতি এবং সমগ্র ইসলামী জীবন ব্যবস্থার ওপর এটি প্রযুক্ত হয়। এর দৃষ্টিতে যে বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে কোন হুকুম প্রমাণিত হয় সে বিষয়ে কোন মুসলিম ব্যক্তি, জাতি, প্রতিষ্ঠান, আদালত, পার্লামেন্ট বা রাষ্ট্রের নিজের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা ব্যবহাম করার কোন অধিকার নেই। মুসলমান হবার অর্থই হচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সামনে নিজের স্বাধীন ইখতিয়ার বিসর্জন দেয়া। কোন ব্যক্তি বা জাতি মুসলমানও হবে আবার নিজের জন্য এ ইখতিয়ারটিও সংরক্ষিত রাখবে। এ দু'টি বিষয় পরস্পর বিরোধী-এ দুটি কাজ এক সাথে হতে পারে না। কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তি এ দু'টি দৃষ্টিভংগীকে একত্র করার ধারণা করতে পারে না। যে ব্যক্তি মুসলমান হিসেবে বেঁচে থাকতে চায় তাকে অবশ্যই আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সামনে আনুগত্যের শির নত করতে হবে। আর যে মুসলমান নয়। যদি সে না মানে তাহলে নিজেকে মুসলমান বলে যত জোরে গলা ফটিয়ে চিৎকার করুক না কেন আল্লাহ ও বান্দা উভয়ের দৃষ্টিতে সে মুনাফিকই গণ্য হবে।)
সুষ্পষ্ট :
সত্য ও মিথ্যা সুষ্পষ্ট :
কাজেই সত্যের পরে গোমরাহী ও বিভ্রান্তি ছাড়া আর কি বাকি আছে? সুতরাং তোমরা কোনদিকে চালিত হচ্ছো? -১০:৩৩,
হেদায়াত ও পথভ্রষ্টতা তথা সৎপথ ও অসৎপথ �সুষ্পষ্ট :
লোকদেরকে হেদায়াত দান করার পর আবার তাদেরকে পথভ্রষ্ট করা আল্লাহর রীতি নয়, যতক্ষন না তিনি তাদেরকে কোন জিনিস থেকে সংযত হয়ে চলতে হবে তা পরিস্কার করে জানিয়ে দেন৷� আসলে আল্লাহ প্রত্যেকটি জিনিসের জ্ঞান রাখেন :৯:১১৫,
হালাল হারাম সুষ্পষ্ট :
আরো দেখুন : ক >� কুরানের বক্তব্য সুষ্পষ্ট,� মুহাকামাত আয়াত, মুতাশাবিহাত আয়াত� :
(নুর:৫৮) ....এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য নিজের বাণী সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন এবং তিনি সবকিছু জানেন ও বিজ্ঞ ৷
(২৭-নমল:১) ....এগুলো কুরআনের ও এক সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
(২৮-ক্বাছাছ:২) এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত৷
( "সুস্পষ্ট কিতাবের" একটি অর্থ হচ্ছে, এ কিতাবটি নিজের শিক্ষা , বিধান ও নিদের্শগুলোর একেবারে দ্ব্যর্থহীন পদ্ধতিতে বর্ণনা করে দেয়। এর দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, এটি সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য সুস্পষ্ট পদ্ধতিতে তুলে ধরে। আর তৃতীয় একটি অর্থ এই হয় যে , এটি যে আল্লাহর কিতাব সে ব্যাপারটি সুস্পষ্ট। যে ব্যক্তি চোখ খুলে এ বইটি পড়বে, এটি যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিজের তৈরী করা কথা নয় তা তার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।)
মু�মিনদের প্রতি সু-ধারণা রাখা অবশ্য কর্তব্য :
(নূর:১২) যখন তোমরা এটা শুনেছিলে তখনই কেন মু�মিন পুরুষ ও মু�মিন নারীরা নিজেদের সম্পর্কে সুধারণা করেনি এবং কেন বলে দাওনি এটা সুস্পষ্ট মিথ্যা দোষারোপ?
(অর্থাৎ, হযরত আয়শা রা: এর প্রতি মিথ্যা অপবাদের অভিযোগ তথা ইফকের ঘটনা)
সূর্য :
������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������������� আরো দেখুন : স > সৃষ্টি,� সৃষ্টি অধ্যায়
(২১:৩৩) আর আল্লাহই রাত ও দিন তৈরি করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্র সৃষ্টি করেছেন, প্রত্যেকেই এক একটি কক্ষপথে সাঁতার কাটছে৷
(২৫.ফুরকান:৬১) অসীম বরকত সম্পন্ন তিনি যিনি আকাশে বুরুজ নির্মাণ করেছেন এবং তার মধ্যে একটি প্রদীপ ও একটি আলোকময় চাঁদ উজ্জ্বল করেছেন৷
বিস্তারিত দেখুন :� ক > কুরআন ও বিজ্ঞান > মহাকাশ বিজ্ঞান > কক্ষপথ।�
(১৪:৩৩) যিনি সূর্য ও চন্দ্রকে তোমাদের অনুগত করে দিয়েছেন, তারা অবিরাম চলছে এবং রাত ও দিনকে তোমাদের জন্য অনুগত করে দিয়েছেন৷
("তোমাদের জন্য অনুগত করে দিয়েছেন"কে সাধারণত লোকেরা ভুল করে "তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন"-এর অর্থে গ্রহণ করে থাকেন। তারপর এ বিষয়বস্তু সম্বলিত আয়াত থেকে বিভিন্ন অদ্ভুত ধরনের অর্থ বের করে থাকেন। এমন কি কোন কোন লোক এ থেকে এ ধারণা করে নিয়েছেন যে, পৃথিবী ও আকাশ জয় করা হচ্ছে মানুষের জীবনের মূল লক্ষ। অথচ মানুষের জন্য এসবকে অনুগত করে দেয়ার অর্থ এ ছাড়া আর কিচুই নয় যে, মহান আল্লাহ এদেরকে এমন সব আইনের অধীন করে রেখেছেন যেগুলোর বদৌলতে তারা মানুষের জন্য উপকারী হয়েছে। নৌযান যদি প্রকৃতির কতিপয় আইনের অনুসারী না হতো, তাহেলে মানুষ কখনো সামুদ্রিক সফর করতে পারতো না। নদ-নদীগুলো যদি কতিপয় বিশেষ আইনের জালে আবদ্ধ না থাকতো, তাহলে কখনো তা থেকে খাল কাটা যেতো না। সূর্য, চন্দ্র, এবং দিন ও রাত যদি বিশেষ নিয়ম কানুনের অধীনে শক্ত করে বাঁধা না থাকতো তাহলে এ বিকাশমান মানব সভ্যতা সংস্কৃতির উদ্ভব তো দূরের কথা, এখানে জীবনের ষ্ফূরণই সম্ভবপর হতো না।�তাফহিমুল কুরআন)
(১৬:১২) তিনি তোমাদের কল্যাণের জন্য রাত ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে বশীভূত করে রেখেছেন এবং সমস্ত তারকাও তাঁরই হুকুমে বশীভূত রয়েছে৷ যারা বুদ্ধিবৃত্তিকে কাজে লাগায় তাদের জন্য রয়েছে এর মধ্যে প্রচুর নিদর্শন৷
সূর্যকে আকষ্মিক মাথার উপর না উঠিয়ে ধীরে ধীরে উদয় অস্ত করানো আল্লাহর এক বিরাট বৈজ্ঞানিক কর্মকুশলতা:
(২৫.ফুরকান:৪৫) তুমি কি দেখ না কিভাবে তোমার রব ছায়া বিস্তার করেন? তিনি চাইলে একে চিরন্তন ছায়ায় পরিণত করতেন৷ আমি সূর্যকে করেছি তার পথ-নির্দেশক৷৪৬) তারপর (যতই সূর্য উঠতে থাকে) আমি এ ছায়াকে ধীরে ধীরে নিজের দিকে গুটিয়ে নিতে থাকি৷ (ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ছ > ছায়া )
নামাজের সময় নির্ধারণের আসল ঘড়ি হচ্ছে সূর্য� এবং �
সূর্য উদয় হয় ও অস্ত যায় শয়তানের দুই শিং এর মধ্য দিয়ে : হাদীসে একথা বলা হয়েছে সূর্যপূজারীদের জন্য :
(১৭:৭৮) নামায কায়েম করো সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে নিয়ে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত �।
(ব্যাখ্যা : মূলত: সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে শুরু করে� রাত অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকা (তথা সূর্য অস্তগামী থাকা) পর্যন্ত সময়ের মধ্যেই পাচ ওয়াক্ত নামাজ � এর মূল সময় নিহিত । সূর্যাদয়ের পর থেকে সূর্য ঢলে পড়ার আগ পর্যন্ত কোন ফরজ নামাজের ওয়াক্ত নাই।
নামাযের সময় নির্ধারণ করার সময় যেসব প্রয়োজনীয় দিকে নজর রাখা হয়েছে তার মধ্যে সূর্য পূজারীদের ইবাদাতের সময় থেকে দূরে থাকাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে । সকল যুগেই সূর্য মুশরিকদের সবচেয়ে বড় বা অনেক বড় মাবুদের স্থান দখল করেছে । সূর্য উদয় ও অস্তের সময়টায়ই তারা বিশেষ করে তার পূজা করে থাকে । তাই এসব সময় নামায পড়াকে হারাম করা হয়েছে । তাছাড়া সাধারণত সূর্য উদয়ের পর থেকে নিয়ে মধ্য গগণে পৌঁছার সময়ে তার পূজা করা হয়ে থাকে । কাজেই ইসলামে হুকুম দেয়া হয়েছে, দিনের বেলার নামাযগুলো সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে পড়া শুরু করতে হবে এবং সকালের নামায সূর্য হবার আগেই পড়ে ফেলতে হবে । এ প্রয়োজনীয় বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিভিন্ন হাদীসে বর্ণনা করেছেন । একটি হাদীসে হযরত আমর ইবনে আবাসাহ (রা) বর্ণনা করছেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নামাযের সময় জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন:
"ফজরের নামায পড়ো এবং সূর্য উদিত হতে থাকলে বিরত হও, সূর্য ওপরে উঠে যাওয়া পর্যন্ত । কারণ সূর্য যখন উদিত হয় তখন শয়তানের শিং দু'টির মাঝখানে দিয়ে বের হতে থাকে এবং এ সময় কাফেররা তাকে সিজদা কর ।
তারপর তিনি আসরের নামাযের উল্লেখ করার পর বললেন:
"তারপর নামায থেকে বিরত হও সূর্য ডুবে যাওয়া পর্যন্ত । কেননা, সূর্য শয়তানের শিং দু'টির মাঝখানে অস্ত যায় এবং এ সময় কাফেররা তার পূজা করে"। (মুসলিম)
এ হাদীসে সূর্যের শয়তানের শিংয়ের মাঝখানে দিয়ে উদয় হওয়া ও অস্ত যাওয়াকে একটা রূপক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে । এর মাধ্যমে এ ধারণা দেয়া হয়েছে যে সূর্যের উদয় ও অস্ত যাবার সময় শয়তান লোকদের জন্য একটি বিরাট বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে দেয় । লোকেরা যখন সূর্যের উদয় ও অস্ত যাবার সময় তার সামনে সিজদা করে তখন যেন মনে হয় শয়তান তাকে নিজের মাথায় করে এনেছে এবং মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছে । রসূল (সা) তাঁর নিজের নিম্নোক্ত বাক্য দিয়ে এ রূপকের রহস্য ভেদ করেছেন "এ সময় কাফেররা তার পূজা করে"।� তাফহীমুল কুরআন)
পাচ ওয়াক্ত নামাজের কথা কুরআনে ইঙ্গিতে বলা হয়েছে : হামদ ও তসবীহ দ্বারা নামাজ বুঝানো হয়েছে:�
(২০:১৩০) কাজেই হে মুহাম্মাদ! এরা যেসব কথা বলে তাতে সবর করো এবং নিজের রবের প্রশংসা ও গুণকীর্তন সহকারে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো সূর্য উদয়ের আগে ও তার অস্ত যাবার আগে, আর রাত্রিকালেও প্রশংসা ও মহিমা ঘোষণা করো এবং দিনের প্রান্তগুলোতেও৷হয়তো এতে তুমি সন্তুষ্ট হয়ে যাবে৷
(বিস্তারিত দেখুন : ন > নামাজ)
সূর্য নিজ ইচ্ছায় নয় আল্লাহর ইচ্ছায় চলে :
(১৮:১৭) তুমি যদি তাদেরকে গুহায় দেখতে, তাহলে দেখতে সূর্য উদয়ের সময় তাদের গুহা ছেড়ে ডান দিক থেকে ওঠে এবং অস্ত যাওয়ার সময় তাদেরকে এড়িয়ে বাম দিকে নেমে যায় আর তারা গুহার মধ্যে একটি বিস্তৃত জায়গায় পড়ে আছে৷ এ হচ্ছে আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন৷ যাকে আল্লাহ সঠিক পথ দেখান সে-ই সঠিক পথ পায় এবং যাকে আল্লাহ বিভ্রান্ত করেন তার জন্য তুমি কোনো পৃষ্ঠপোষক ও পথপ্রদর্শক পেতে পারো না৷
সূর্যাস্তের সীমানা :
(১৮:৮৫) সে (প্রথমে পশ্চিমে এক অভিযানের) সাজ-সরঞ্জাম করলো৷ ৮৬) এমন কি যখন সে সূর্যাস্তের সীমানায় পৌঁছে গেলো তখন সূর্যকে ডুবতে দেখলো একটি কালো জলাশয়ে এবং সেখানে সে একটি জাতির দেখা পেলো৷
(১৮:৮৯) তারপর সে (আর একটি অভিযানের) প্রস্তুতি নিল৷ ৯০) এমন কি সে সূর্যোদয়ের সীমানায় গিয়ে পৌঁছুলো৷ সেখানে সে দেখলো, সূর্য এমন এক জাতির ওপর উদিত হচ্ছে যার জন্য রোদ থেকে বাঁচার কোনো ব্যবস্থা আমি করিনি৷
সূর্য পূজা :
(২৭-নমল:২৪) আমি তাকে ও তার জাতিকে আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যের সামনে সিজদা করতে দেখেছি�৩০ --- শয়তান তাদের কার্যাবলী তাদের জন্য শোভন করে দিয়েছে এবং তাদেরকে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করে দিয়েছেন এ কারণে তারা সোজা পথ পায় না৷
�
(৩০. এ থেকে জানা যায়, সেকালে এ রানী বিলকিসের সাবা জাতিটি সূর্য দেবতার পূজা করতো। আরবের প্রাচীন বর্ণনাগুলো থেকেও এ জাতির এ একই ধর্মের কথা জানা যায়। ইবনে ইসহাক কুলজি বিজ্ঞান (Genenalogies) অভিজ্ঞদের উক্তি উদ্ধৃত করে বলেন, সাবা জাতির প্রাচীনতম পূর্ব পুরুষ হলো আব্দে শাম্স ( অর্থাত সূর্যের দাস বা সূর্য উপাসক) এবং উপাধি ছিল সাবা। বনী ইসরাঈলের বর্ণনাও এর সমর্থক। সেখানে বলা হয়েছে, হুদ্হুদ যখন সুলাইমানের (আ) পত্র নিয়ে পৌঁছে যায় সাবার রাণী তখন সূর্য দেবতার পূজা করতে যাচ্ছিলেন । হুদ্হুদ পথেই পত্রটি রাণীর সামনে ফেলে দেয়।)
(৩১-লোকমান: ২৯) তুমি কি দেখো না, আল্লাহ রাতকে দিনের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে নিয়ে আসেন এবং দিনকে রাতের মধ্যে ? তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে নিয়মের অধীন করে রেখেছেন, ৫০ সবই চলছে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত৷ ৫১ আর ( তুমি কি জানো না ) তোমরা যা কিছুই করো না কেন আল্লাহ তা জানেন৷
৫০ . অর্থাৎ রাত ও দিনের যথারীতি নিয়মিত আসাই একথা প্রকাশ করে যে, সূর্য ও চন্দ্র একটি নিয়মের নিগড়ে বাঁধা। সূর্য ও চন্দ্রের উল্লেখ এখানে নিছক এ জন্য করা হয়েছে যে, এ দু' টি মহাশূন্যের সবচেয়ে দৃশ্যমান জিনিস এবং মানুষ অতি প্রাচীনকাল থেকে এদেরকে উপাস্যে পরিণত করে আসছে এবং আজো বহুলোক এদেরকে দেবতাজ্ঞানে পূজা করে। অন্যথায় প্রকৃতপক্ষে মহান আল্লাহ পৃথিবীসহ বিশ্ব-জাহানের সমস্ত গ্রহ-নক্ষত্রকে একটি অনড় নিয়ম-শৃঙ্খলা ও আইনের নিগড়ে বেঁধে রেখেছেন। এ থেকে এক চুল পরিমাণ এদিক ওদিক করার ক্ষমতা তাদের নেই।
৫১ . প্রত্যেকটি জিনিসের যে বয়স তথা সময়-কাল নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে সেই সময় পর্যন্ত তা চলছে। চন্দ্র, সূর্য বা বিশ্ব-জাহানের অন্য কোন গ্রহ-নক্ষত্র কোনটাই চিরন্তন ও চিরস্থায়ী নয়। প্রত্যেকের একটি সূচনাকাল আছে। তার পূর্বে তার অস্তিত্ব ছিল না। আবার প্রত্যেকের আছে একটি সমাপ্তিকাল তারপর আর তার অস্তিত্ব থাকবে না। এ আলোচনার উদ্দেশ্য হচ্ছে একথা বুঝিয়ে দেয়া যে, এ ধরনের ধ্বংস ও ক্ষমতাহীন বস্তু ও সত্তাগুলো উপাস্য হতে পারে কেমন করে৷
সুসংবাদ :
১। বিনয়ের নীতি অবলম্বন কারীদেরকে সুসংবাদ দাও :
(হাজ্ব:৩৪) ...আর হে নবী! সুসংবাদ দিয়ে দাও বিনয়ের নীতি অবলম্বন কারীদেরকে।
(মূলে (مُخْبِتِينَ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। কোন একটি মাত্র শব্দের সাহায্যে এর অন্তরনিহিত অর্থ পুরোপুরি প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি অর্থঃ অহংকার ও আত্মম্ভরিতা পরিহার করে আল্লাহর সামনে অক্ষমতা ও বিনয়াবনত ভাব অবলম্বন করা। তাঁর বন্দেগী ও দাসত্বে একাগ্র ও একনিষ্ঠ হয়ে যাওয়া। তাঁর ফায়সালায় সন্তুষ্ট হওয়া।)
(বিস্তারিত : ম > মু�মিন > প্রকৃত মু�মিনদের গুণাবলী, জ > জান্নাত > জান্নাত লাভ করবে কোন ধরণের লোকেরা )
২। সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ দাও :
(হাজ্ব:৩৭) ....আর হে নবী! সৎকর্মশীলদেরকে সুসংবাদ দিয়ে দাও৷
(বিস্তারিত : স > সৎকর্ম )
সুড়ংগ :
সাগরের পানির মধ্যে সুড়ংগ পথ তৈরী :
(১৮:৬১) সে অনুসারে যখন তারা তাদের সংগমস্থলে পৌঁছে গেলো তখন নিজেদের মাছের ব্যাপারে গাফেল হয়ে গেলো এবং সেটি বের হয়ে সুড়ংগের মতো পথ তৈরি করে দরিয়ার মধ্যে চলে গেলো৷
সাহায্য
আল্লাহর সাহায্য : আরো� দেখুন : জিহাদে আল্লাহর সাহায্য :
(১২:১১০) (আগের নবীদের সাথেও এমনটি হতে থেকেছে৷ অর্থাৎ তারা দীর্ঘদিন উপদেশ দিয়ে গেছেন কিন্তু লোকেরা তাদের কথা শোনেনি৷) এমনকি যখন নবীরা লোকদের থেকে হতাশ হয়ে গেলো এবং লোকেরাও ভাবলো তাদেরকে মিথ্যা বলা হয়েছিল তখন অকস্মাত আমার সাহায্য নবীদের কাছে পৌঁছে গেলো৷ তারপর এ ধরনের সময় যখন এসে যায় তখন আমার নিয়ম হচ্ছে, যাকে আমি চাই তাকে রক্ষা করি এবং অপরাধীদের প্রতি আমার আযাব তো রদ করা যেতে পারে না৷
সাহাবী প্রসঙ্গ :
ঈসা আ: এর সাহাবীগণ : ৫:১১১-১১৫,
সাহাবীদের ন্যায় ঈমান আনার তাগিদ :
�২:১৩৭,
যারা ঈমান এনেছে অত:পর হিজরত করে এবং যারা আশ্রয় দিয়েছে এবং যারা জিহাদ করে তারাই প্রকৃত মু�মিন, অর্থাৎ তারা তাদের ঈমানের দাবীতে সত্যবাদী, তাদের জন্যই রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিজিক্ব :৮:৭৪ (নবী সা: এর সঙ্গীসাথীগণ)�
আর যারা পরবর্তীতে ঈমান আনবে এবং হিজরত করবে ও জিহাদ করবে তারাও নবী সা: এর সঙ্গী সাথীদের দলভুক্ত হিসেবে গন্য হবে : ৮:৭৫,
যারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে তারা কখনো জান মাল বিসর্জন দিয়ে জিহাদ/যুদ্ধ থেকে অব্যহতি চাইতে পারেনা, তারাই প্রকৃত মু�মিন, তারাই প্রকৃত পক্ষে আল্লাহকে ভয় করে (মুত্তাকী) : ৯:৪৪,
সাহাবীগণকে আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন :
আল্লাহ নবীকে মাফ করে দিয়েছেন এবং অত্যন্ত কঠিন সময়ে যে মুহাজির ও আনসারগণ নবীর সাথে সহযোগীতা করেন তাদেরকেও মাফ করে দিয়েছেন৷� যদিও তাদের মধ্যে থেকে কিছু লোকের দিল বক্রতার দিকে আকৃষ্ট হতে যাচ্ছিল (কিন্তু তারা এ বক্রতার অনুগামী না হয়ে নবীর সহযোগী হয়েছেন৷ফলে) আল্লাহ তাদেরকে মাফ করে দিয়েছেন৷� নিসন্দেহে এ লোকদের প্রতি তিনি স্নেহশীল ও মেহেরবান �: ৯:১১৭,
�আর যে তিনজনের ব্যাপার মূলতবী করে দেয়া হয়েছিল তাদেরকেও তিনি মাফ করে দিয়ছেন �পৃথিবী তার সমগ্র ব্যাপকতা সত্ত্বেও যখন তাদের জন্য সংকীর্ণ হয়ে গেলো, তাদের নিজেদের প্রাণও তাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ালো এবং তারা জেনে নিল যে, আল্লাহর হাত থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিজের রহমতের আশ্রয় ছাড়া আর কোন আশ্রয়স্থল নেই তখন আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের দিকে ফিরলেন যাতে তারা তার দিকে ফিরে আসে৷ অবশ্যি আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময় : ৯:১১৮,
রাসুল সা: এবং সাহাবীগণ সঠিক পথে রয়েছেন :
আমি নিজেও পূর্ণ আলোকে নিজের পথ দেখছি এবং আমার সাথীরাও৷-১২:১০৮,
সকল সাহাবীগণেই কি আদল এর গুণে গুণান্বিত ছিলেন ?
১। কয়েকজন সাহাবী হযরত আয়শা রা: এর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ আরোপের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন :
(নূর:৪) আর যারা সতী-সাধ্বী নারীর ওপর অপবাদ লাগায়, তারপর চারজন সাক্ষী আনে না , তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করো এবং তাদের সাক্ষ কখনো গ্রহণ করো না ৷ তারা নিজেরাই ফাসেক ৷
(নূর:১১) যারা এ মিথ্যা অপবাদ তৈরী করে এনেছে৮ তারা তোমাদেরই ভিতরের একটি অংশ ৷৯ এ ঘটনাকে নিজেদের পক্ষে খারাপ মনে করো না বরং এও তোমাদের জন্য ভালই৷ যে এর মধ্যে যতটা অংশ নিয়েছে সে ততটাই গোনাহ কামাই করেছে আর যে ব্যক্তি এর দায়দায়িত্বের বড় অংশ নিজের মাথায় নিয়েছে তার জন্য তো রয়েছে মহাশাস্তি ৷
(৮ . হযরত আয়েশার (রা) বিরুদ্ধে যে অপবাদ রটানো হয়েছিল সেদিকে ইংগিত করা হয়েছে। এ অপবাদকে ''ইফক'' শব্দের মাধ্যমে উল্লেখ করে স্বয়ং আল্লাহর পক্ষ থেকেই এ অপরাধকে পুরোপুরি খন্ডন করা হয়েছে । 'ইফক' শব্দের অর্থ হচ্ছে, কথা উলটে দেয়া, বাস্তব ঘটনাকে বিকৃতি করে দেয়া। এ অর্থের দিক দিয়ে এ শব্দটিকে ডাহা মিথ্যা ও অপবাদ দেয়া অর্থে ব্যবহার করা হয়। আর কোন দোষারোপ অর্থে শব্দটি ব্যবহার করলে তখন এর অর্থ হয় সুস্পষ্ট মিথ্যা অপবাদ ।
৯ . এ মিথ্যা অভিযোগ ও গুজব রটানোর ঘটনায় কয়েকজন মু�মিন সাহাবীও জড়িত হয়ে পড়েছিলেন। হাদীসে মাত্র কয়েকজন লোকের নাম পাওয়া যায়। তারা এ গুজবটি ছড়াচ্ছিল। তারা হচ্ছে আবদল্লাহ ইবনে উবাই, যায়েদ ইবনে রিফা'আহ ( এ ব্যক্তি সম্ভবত রিফা'আ ইবনে যায়েদ ইহুদী মুনাফিকের ছেলে), মিস্তাহ ইবনে উসাসাই, হাস্সান ইবনে সাবেত ও হামনা বিনতে জাহশ। এর মধ্যে প্রথম দু'জন ছিল মুনাফিক এবং বাকি তিনজন মু'মিন। মু'মিন তিন জন বিভ্রান্তি ও দুর্বলতার কারণে এ চক্রান্তের ফাঁদে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এরা ছাড়া আর যারা কমবেশী এ গোনাহে জড়িয়ে পড়েছিলেন তাদের নাম হাদীস ও সীরাতের কিতাবগুলোতে সেভাবে উল্লেখ হয়নি। )
২। কোন কোন মহিলা সাহাবীদের স্বামীরা এ অভিযোগ করেছিল যে, তারা (উক্ত মহিলারা) পরপুরুষের সাথে জ্বিনায় লিপ্ত হয়েছে :
(নূর:৬) আর যারা নিজেদের স্ত্রীদেরকে অভিযোগ দেয় এবং তাদের কাছে তারা নিজেরা ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন সাক্ষী থাকে না , তাদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তির সাক্ষ হচ্ছে (এই যে, সে) চার বার আল্লাহর নামে কসম খেয়ে সাক্ষ দেবে যে, সে (নিজের অভিযোগে) সত্যবাদী ৭) এবং পঞ্চম বার বলবে, তার প্রতি আল্লাহর লা�নত হোক যদি সে (নিজের অভিযোগে) মিথ্যাবাদী হয়ে থাকে ৷৯) এবং পঞ্চমবার বলে, তার নিজের ওপর আল্লাহর গযব নেমে আসুক যদি এ ব্যক্তি (তার অভিযোগে) সত্যবাদী হয়৷
(ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন, হেলাল ইবনে উমাইয়াহ এসে নিজের স্ত্রীর ব্যাপারটি পেশ করেন। তিনি তাকে নিজের চোখে ব্যভিচারে লিপ্ত থাকতে দেখেছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ''প্রমাণ আনো, অন্যথায় তোমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদের শাস্তি জারি হবে।' এতে সাহাবীদের মধ্যে সাধারণভাবে পেরেশানী সৃষ্টি হয়ে যায় এবং হেলাল বলেন, সেই আল্লাহর কসম যিনি আপনাকে নবী বানিয়ে পাঠিয়েছেন, আমি একদম সঠিক ঘটনাই তুলো ধরছি, আমার চোখ এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে এবং কান শুনেছে। আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ আমার ব্যাপারে এমন হুকুম নাযিল করবেন যা আমার পিঠ বাঁচাবে। এ ঘটনায় এ আয়াত নাযিল হয়। (বুখারী, আহমাদ ও আবুদ দাউদ) এখানে মীমাংসার যে পদ্ধতি দেয়া হয়েছে তাকে ইসলাম আইনের পরিভাষায় ''লি'আন'' বলা হয়।
এ হুকুম এসে যাবার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেসব মামলার ফায়সালা দেন সেগুলোর বিস্তারিত বিবরণ হাদীসের কিতাবগুলোতে লিখিত আকারে সংরক্ষিত রয়েছে এবং সেগুলোই লি'আন সংক্রান্ত বিস্তারিত আইনগত কার্যধারার উৎস।
হেলাল ইবনে উমাইয়ার মামলার যে বিস্তারিত বিবরণ সিহাহে সিত্তা ও মুসনাদে আহমাদ এবং তাফসীরে ইবনে জারিরে ইবনে আব্বাস ও আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হয়েছে তাতে বলা হয়েছেঃ এ আয়াত নাযিল হবার পর হেলাল ও তার স্ত্রী দু'জনকে নবীর আদালতে হাযির করা হয়। রসূলুল্লাহ (সা) প্রথমে আল্লাহর হুকুম শুনান । তারপর বলেন, ''খুব ভালভাবে বুঝে নাও, আখেরাতের শাস্তি দুনিয়ার শাস্তির চাইতে কঠিন।'' হেলাল বলেন, ''আমি এ বিরুদ্ধে একদম সত্য অভিযোগ দিয়েছি।'' স্ত্রী বলে, ''এ সম্পূর্ণ মিথ্যা।'' রসূলুল্লাহ (সা) বলেন, ''বেশ, তাহলে এদের দু'জনের মধ্যে লি'আন করানো হোক ।'' তদনুসারে প্রথমে হেলাল উঠে দাঁড়ায় । তিনি কুরআনী নির্দেশ অনুযায়ী কসম খাওয়া শুরু করেন । এ সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বারবার বলতে থাকেন, ''আল্লাহ জানেন তোমাদের মধ্যে অবশ্যই একজন মিথ্যেবাদী । তারপর কি তোমাদের মধ্য থেকে কেউ তাওবা করবে ৷ '' পঞ্চম কসমের পূর্বে উপস্থিত লোকেরা হেলালকে বললো, ''আল্লাহকে ভয় করো। দুনিয়ার শাস্তি পরকালের শাস্তির চেয়ে হালকা । এ পঞ্চম কসম তোমার ওপর শাস্তি ওয়াজিব করে দেবে ।'' কিন্তু হেলাল বলেন, যে আল্লাহ এখানে আমার পিঠ বাঁচিয়েছেন তিনি পরকালেও আমাকে শাস্তি দেবেন না । একথা বলে তিনি পঞ্চম কসমও খান। তারপর তার স্ত্রী ওঠে । সেও কসম খেতে শুরু করে। পঞ্চম কসমের পূর্বে তাকেও থামিয়ে বলা হয়, ''আল্লাহকে ভয় করো, আখেরাতের আযাবের তুলনায় দুনিয়ার আযাব বরদাশত করে নেয়া সহজ । এ শেষ কসমটি তোমার ওপর আল্লাহর আযাব ওয়াজিব করে দেবে ।'' একথা শুনে সে কিছুক্ষণ থেমে যায় এবং ইতস্তত করতে থাকে । লোকেরা মনে করে নিজের অপরাধ স্বীকার করতে চাচ্ছে । কিন্তু তারপর সে বলতে থাকে। '' আমি চিরকালের জন্য নিজের গোত্রকে লাঞ্জিত করবো না ।'' তারপর সে পঞ্চম কসমটি ও খায়। অতপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের উভয়ের মধ্যে ছাড়াছাড়ি করে দেন এবং ফায়সালা দেন, এর সন্তান ( যে তখন মাতৃগর্ভে ছিল) মায়ের সাথে সম্পর্কিত হবে । বাপের সাথে সম্পর্কিত করে তার নাম ডাকা হবে না ।তার বা তার সন্তানের প্রতি অপবাদ দেবার অধিকার করোর থাকবে না । যে ব্যক্তি তার বা তার সন্তানের প্রতি অপবাদ দেবে সে মিথ্যা অপবাদের (কাযাফ) শাস্তির অধিকারী হবে । ইদ্দতকালে তার খোরপোশ ও বাসস্থানলাভের কোন অধিকার হেলালের ওপর বর্তায় না। কারণ তাকে তালাক বা মৃত্যু ছাড়াই স্বামী থেকে আলাদা করা হচ্ছে । তারপর তিনি লোকদের বলেন, তার সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার পর দেখো সে কার মতো হয়েছে । যদি এ আকৃতির হয় তাহলে হেলালের হবে । আর যদি ঐ আকৃতির হয়, তাহলে যে ব্যক্তির সাথে মিলিয়ে একে অপবাদ দেয়া হয়েছে এ তার হবে । শিশু ভূমিষ্ঠ হবার পর দেখা গেলো সে শেষোক্ত ব্যক্তির আকৃতি পেয়েছে । এ অবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,------------ অর্থাৎ যদি কসমসমূহ না হতো (অথবা আল্লাহর কিতাব প্রথমেই ফায়সালা না করে দিতো ) তাহলে আমি এ মেয়েটির সাথে কঠোর ব্যবহার করতাম ।
'উওয়াইমির আজলানীর মামলার বিবরণ পাওয়া যায় বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ ও মুসনাদে আহমাদ । সাহল ইবনে সা'দ সা'ঈদী ও ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে এগুলো বর্ণিত হয়েছে । এতে বলা হয়েছেঃ উওয়াইমির ও তার স্ত্রী উভয়কে মসজিদে নববীতে ডাকা হয়। তারা নিজেদের ওপর 'লি'আন' করার আগে রসূলুল্লাহ (সা) তাদেরকেও সতর্ক করে দিয়ে তিনবার বলেন, ''আল্লাহ খুব ভালভাবেই জানেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী । তাহলে কি তোমাদের কেউ তাওবা করবে ৷'' দু'জনের কেউ যখন তাওবা করলো না তখন তাদের 'লি'আন' করানো হয়। এরপর 'উওয়াইমির বলেন, ''হে আল্লাহর রসূল! যদি আমি এ স্ত্রীকে রেখে দেই তাহলে মিথ্যুক হবো ।'' একথা বলেই রসূলুল্লাহ (সা) তাকে হুকুম দেয়া ছাড়াই তিনি তিন তালাক দিয়ে দেন । সাহল ইবনে সা'দ বলেন, '' রসূলুল্লাহ (সা) এ তালাক জারি করেন, তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি করে দেন এবং বলেন, ''যে দম্পতি লি'আন করবে তাদের জন্য এ ছাড়াছাড়ি ।'' লি'আনকারী স্বামী-স্ত্রীকে আলাদা করে দেবার এ সুন্নত কায়েম হয়ে যায় । এরপর তারা আর কখনো একত্র হতে পারবে না । সাহল ইবনে সা'দ একথাও বর্ণনা করেন যে, স্ত্রী গর্ভবতী ছিল এবং 'উওয়াইমির বলেন, এ গর্ভ আমার ঔরসজা নয় । এ জন্য শিশুকে মায়ের সাথে সম্পর্কিত করা হয় এবং এ সুন্নত জারি হয় যে, এ ধরনের সন্তান মায়ের উত্তরাধিকারী হবে এবং মা তার উত্তরাধিকারী হবে । )
সাথে থাকা :
তোমরা যেখানেই থাক আল্লাহ তোমাদের সাথেই আছেন :
তোমরা যেখানেই থাক তিনি তোমাদের সাথে আছেন৷ তোমরা যা করছো আল্লাহ তা দেখছেন-১১:৫,
mvg_�� :
mvg�_��i AwZwi� `vwqZ� Avj�vn �`b bv : 7:40,
mvgy` RvwZ I mv�jn Av: Gi NUbv :
7:73-79,
mvgy` RvwZi �jv�Kiv cvnvo �K�U c�vmv` evbv�Zv :
সমতলভূমিতে বিপুলায়তন প্রাসাদ ও তার পাহাড় কেটে বাসগৃহ নির্মাণ করছো -7:74,
সিদ্দীক :
(৫৭:১৯) যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে �তারাই তাদের রবের কাছে �সিদ্দীক� ও �শহীদ� বলে গণ্য৷ তাদের জন্য তাদের পুরস্কার ও �নূর� রয়েছে৷� আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতকে অস্বীকার করেছে তারাই দোযখের বাসিন্দা৷
সিদ্দিক ও শহীদ কারা :
(৫৭: ১৯) যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে �তারাই তাদের রবের কাছে �সিদ্দীক� �ও �শহীদ� বলে গণ্য৷ তাদের জন্য তাদের পুরস্কার ও �নূর� রয়েছে৷� আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতকে অস্বীকার করেছে তারাই দোযখের বাসিন্দা৷
সিজদা :
�সিজদা� শব্দের অর্থ সমূহ :
১। আল্লাহকে সিজদা করছে� সৃষ্টিজগতের সবকিছু : এর অর্থ : আদেশ পালন করা ও পুরোপুরি মেনে নিয়ে মাথা নত করা :
(১৩:১৫) আল্লহাকে সিজ্দা করছে পৃথিবী ও আকাশের প্রত্যেকটি বস্তু ইচ্ছায় ও অনিচ্ছায় এবং প্রত্যেক বস্তুর ছায়া সকাল-সাঁঝে তাঁর সামনে নত হয়৷ ৷
(হাজ্ব:১৮) তুমি কি দেখো না আল্লাহর সামনে সিজদাবনত সবকিছুই যা আছে আকাশে ও পৃথিবীতে- সূর্য, চন্দ্র, তারকা, পাহাড়, গাছপালা, জীবজন্তু এবং বহু মানুষ �ও এমন বহু লোক যাদের প্রতি আযাব অবধারিত হয়ে গেছে?
(সিজ্দা মানে আনুগত্য প্রকাশ করার জন্য ঝুঁকে পড়া, আদেশ পালন করা এবং পুরোপুরি মেনে নিয়ে মাথা নত করা। পৃথিবী ও আকাশের প্রত্যেকটি সৃষ্টি আল্লাহর আইনের অনুগত এবং তাঁর ইচ্ছার চুল পরিমাণও বিরোধিতা করতে পারে না- এ অর্থে তারা প্রত্যেকেই আল্লাহকে সিজদা করছে। মুমিন স্বেচ্ছায় ও সাগ্রহে তাঁর সামনে নত হয়, �কিন্তু কাফেরকে বাধ্য হয়ে নত হতে হয়। কারণ আল্লাহর প্রাকৃতিক আইনের বাইরে চলে যাওয়ার ক্ষমতা তার নেই। কুরআনের অধিকাংশ স্থানেই এ অর্থেই সিজদা শব্দের ব্যবহার হয়েছে, তবে ইউসুফ আ: কে চন্দ্র সূর্য এর সিজদা করার স্বপ্ন ও সৃষ্টির শুরুতে হযরত আদম আ: কে সকল ফেরেশতাদের সিজদা করা -� এ দুটি স্থানে সিজদা শব্দটি কিছুটা ভিন্ন অর্থ বহন করে।� )
(১৭:১০৭) হে মুহাম্মদ! এদেরকে বলে দাও, তোমরা একে মানো বা না মানো, যাদেরকে এর আগে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তাদেরকে যখন এটা শুনানো হয় তখন তারা আনত মস্তকে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে।
(১৬:৪৯) পৃথিবী ও আকাশে যত সৃষ্টি আছে প্রাণসত্তা সম্পন্ন এবং যত ফেরেশতা আছে তাদের সবাই রয়েছে আল্লাহর সামনে সিজদাবনত৷ তারা কখনো অবাধ্যতা প্রকাশ করে না৷ ৫০) ভয় করে নিজেদের রবকে যিনি তাদের ওপরে আছেন এবং যা কিছু হুকুম দেয়া হয় সেই অনুযায়ী কাজ করে৷
২। ফেরেশতা কর্তৃক আদম আ: কে সিজদা করার অর্থ বিজিত হয়ে যাওয়া, যেহেতু এ পৃথিবীতে আদম ও তার বংশধরদের খিদমতে ফেরেশতাদেরকে কাজে লাগানো হবে :
(১৫:২৯) যখন আমি তাকে পূর্ণ অবয়ব দান করবো এবং তার মধ্যে আমার রূহ থেকে কিছু ফুঁক দেবো৷ তখন তোমরা সবাই তার সামনে সিজদাবনত হয়ো৷
(১৫:৩০) সেমতে সকল ফেরেশতা একযোগে তাকে সিজদা করলো,
(১৫:৩১) ইবলীস ছাড়া, কারণ সে সিজদাকারীদের অন্তরভুক্ত হতে অস্বীকার করলো৷
(এখানে সিজদা করার অর্থ বিজিত হয়ে যাওয়া)
৩। �সিজদা কারী� অর্থাৎ নামাজী : আর সিজদাকারী হওয়া মু�মিনদের প্রধান গুণ :
(২৬.শুআরা:২১৭) আর সেই পরাক্রান্ত ও দয়াময়ের উপর নির্ভর করো ২১৮) যিনি তোমাকে দেখতে থাকেন যখন তুমি ওঠো ২২০) তিনি সব কিছুই শোনেন ও জানেন৷২১৯) এবং সিজ্দাকারীদের মধ্যে তোমার ওঠা-বসা ও নড়া-চড়ার প্রতি দৃষ্টি রাখেন৷
�
ইউসুফ আ:� কে চাঁদ ও সূর্যের সিজদা করার স্বপ্ন দেখার স্বরূপ :
(১২:৪) এটা সেই সময়ের কথা, যখন ইউসুফ তার বাপকে বললো : �আব্বাজান! আমি স্বপ্ন দেখেছি, এগারটি তারকা এবং সূর্য ও চাঁদ আমাকে সিজদা করছে৷�
(১২:১০০) (শহরে প্রবেশ করার পর) সে নিজের বাপ-মাকে উঠিয়ে নিজের পাশে সিংহাসনে বসালো এবং সবাই তার সামনে স্বতস্ফূর্তভাবে সিজদায় ঝুঁকে পড়লো৷ ইউসুফ বললো, �আব্বাজান! আমি ইতিপুর্বে যে স্বপ্ন দেখেছিলাম এ হচ্ছে তার তা�বীর৷ আমার রব তাকে সত্য পরিণত করেছেন ৷ আমার প্রতি তাঁর অনুগ্রহ হিসেবে তিনি আমাকে কারাগার থেকে বের করেছেন এবং আপনাদেরকে মরু অঞ্চল থেকে এনে আমার সাথে মিলিয়ে দিয়েছেন৷ আসলে আমার রব অননুভূত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তাঁর ইচ্ছা পূর্ণ করেন৷ নিসন্দেহে তিনি সবকিছু জানেন ও সুগভীর প্রজ্ঞার অধিকারী।
কাফেররাও কি আল্লাহকে সিজদা করছে ?
(হাজ্ব:১৮) তুমি কি দেখো না আল্লাহর সামনে সিজদাবনত সবকিছুই ..............এবং �এমন বহু লোক যাদের প্রতি আযাব অবধারিত হয়ে গেছে?
(মুমিন স্বেচ্ছায় ও সাগ্রহে আল্লাহর সামনে নত হয়, �কিন্তু কাফেরকে বাধ্য হয়ে নত হতে হয়। কারণ আল্লাহর প্রাকৃতিক আইনের বাইরে চলে যাওয়ার ক্ষমতা তার নেই। কারণ সমগ্র প্রকৃতিই আল্লাহর দেয়া বিধান অনুসরণ করা ও তাঁর হুকুম পালন করার মাধ্যমে আল্লাহকে সিজদা করছে, আর কাফেরের দৈহিক অস্তিত্বও আল্লাহর দেয়া বিধিবিধানের নিগড়ে বাঁধা, তার দেহসত্তা স্বয়ং এ বিধিবিধান পালন করছে। )
ফেরাউনের যাদুকরেরা ঈমান আনলো ও সিজদায় পড়ে গেল :
(২০:৭০) শেষ পর্যন্ত এই হলো যে, সমস্ত যাদুকরকে সিজদাবনত করে দেয়া হলো এবং তারা বলে উঠলোঃ �আমরা মেনে নিলাম হারুন ও মূসার রবকে�৷
ইবলীস শয়তান আদমকে কেন সিজদা করেনি ?
(১৫:৩৩) সে (ইবলীস শয়তান) জবাব দিল, �এমন একটি মানুষকে সিজদা করা আমার মনোপূত নয় যাকে তুমি শুকনো ঠন্ঠনে পচা মাটি থেকে সৃষ্টি করেছো৷�
(১৭:৬১) আর স্মরণ করো, যখন আমি ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সিজদা করো, তখন সবাই সিজদা করলো কিন্তু ইবলীস করলো না৷ �সে বললো, �আমি কি তাকে সিজদা করবো যাকে তুমি বানিয়েছো মাটি দিয়ে ?
(১৮:৫০) .... সে (ইবলীস ) ছিল জিনদের একজন, তাই তার রবের হুকুমের আনুগত্য থেকে বের হয়ে গেলো৷
(২০:১১৬) স্মরণ করো সে সময়ের কথা যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম, আদমকে সিজদা করো, তারা সবাই সিজদা করলো কিন্তু একমাত্র ইবলীস অস্বীকার করে বসলো৷১১৭) এ ঘটনায় আমি আদমকে বললাম, �দেখো,� এ তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু, এমন যেন না হয় যে, এ তোমাদেরকে জান্নাত থেকে বের করে দেয়� এবং তোমরা বিপদে পড়ে যাও৷
�
নেক বান্দাগণের চরিত্র �হচ্ছে : তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে
(১৯:৫৮) এদের অবস্থা এই ছিল যে, যখন করুণাময়ের আয়াত এদেরকে শুনানো হতো তখন কান্নারত অবস্থায় সিজদায় লুটিয়ে পড়তো৷
যেসব মানুষ সিজদাকারী হচ্ছেনা, এর কারণ কি ?
(২৭-নমল:২৫) (শয়তান তাদেরকে বিপথগামী করেছে এ জন্য ) যাতে তারা সেই আল্লাহকে সিজদা না করে যিনি আকাশ ও পৃথিবীর গোপন জিনিসসমূহ বের করেন �এবং সে সবকিছু জানেন যা তোমরা গোপন করো ও প্রকাশ করো৷
কিয়ামতের দিন সকল ব্যক্তির মাথা আল্লাহর নিকট নুয়ে পড়বে :
(২০:১১১) -লোকদের মাথা চিরঞ্জীব ও চির প্রতিষ্ঠিত সত্তার সামনে ঝুঁকে পড়বে, সে সময় যে জুলুমের গোনাহের ভার বহন করবে সে ব্যর্থ হবে৷
সিজদাকারীদের জন্য মসজিদে হারাম-কে নির্বিঘ্ন রাখতে হবে :
(হাজ্ব:২৬) স্মরণ করো সে সময়ের কথা যখন আমি ইবরাহীমের জন্য এ ঘরের (কাবাঘর) জায়গা নির্ধারণ করেছিলাম (এ নির্দেশনা সহকারে) যে, আমার সাথে কোনো জিনিসকে শরীক করবে না এবং আমার ঘরকে তাওয়াফকারী ও রুকূ�-সিজদা-কিয়ামকারীদের জন্য পবিত্র রাখো। (বিস্তারিত দেখুন : ম > মসজিদ > মসজিদুল হারাম > মসজিদে হারাম ও এর সীমানায় অবস্থিত ঘর বাড়ির ভাড়া নেওয়া কি সংগত?� )
প্রকৃত ঈমানদারদের পরিচয় হচ্ছে তারা আল্লাহর কুরআন শুনে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে :
(৩২- আস-সাজদা : ১৫) আমার আয়াতের প্রতি তো তারাই ঈমান আনে যাদেরকে এ আয়াত শুনিযে যখন উপদেশ দেয়া হয় তখন তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে ��।
সিজদার আয়াত সমূহ : (যে সব আয়াত পাঠ করলে সাথে সাথে সিজদা করতে হয় ) :
১।
إِنَّ الَّذِينَ عِندَ رَبِّكَ لَا يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِهِ وَيُسَبِّحُونَهُ وَلَهُ يَسْجُدُونَ [٧:٢٠٦]
নিশ্চয়ই যারা তোমার পরওয়ারদেগারের সান্নিধ্যে রয়েছেন, তারা তাঁর বন্দেগীর ব্যাপারে অহঙ্কার করেন না এবং স্মরণ করেন তাঁর পবিত্র সত্তাকে; আর তাঁকেই সেজদা করেন। (৭:২০৬)
২।
وَلِلَّهِ يَسْجُدُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَظِلَالُهُم بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ [١٣:١٥]
আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে আছে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এবং তাদের প্রতিচ্ছায়াও সকাল-সন্ধ্যায়। (১৩:১৫) ।
৩।
وَلِلَّهِ يَسْجُدُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مِن دَابَّةٍ وَالْمَلَائِكَةُ وَهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُونَ [١٦:٤٩]
আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু নভোমন্ডলে আছে এবং যা কিছু ভুমন্ডলে আছে এবং ফেরেশতাগণ; তারা অহংকার করে না।
|
|
يَخَافُونَ رَبَّهُم مِّن فَوْقِهِمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ [١٦:٥٠]
তারা তাদের উপর পরাক্রমশালী তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে এবং তারা যা আদেশ পায়, তা করে (নাহল : ৪৯-৫০) (১৬:৪৯-৫০)
৪।
وَيَخِرُّونَ لِلْأَذْقَانِ يَبْكُونَ وَيَزِيدُهُمْ خُشُوعًا [١٧:١٠٩]
তারা ক্রন্দন করতে করতে নতমস্তকে ভুমিতে লুটিয়ে পড়ে এবং তাদের বিনয়ভাব আরো বৃদ্ধি পায়। (১৭ আল-ইসরা : ১০৯)
৫।
أُولَٰئِكَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ النَّبِيِّينَ مِن ذُرِّيَّةِ آدَمَ وَمِمَّنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوحٍ وَمِن ذُرِّيَّةِ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْرَائِيلَ وَمِمَّنْ هَدَيْنَا وَاجْتَبَيْنَا ۚ إِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ آيَاتُ الرَّحْمَٰنِ خَرُّوا سُجَّدًا وَبُكِيًّا [١٩:٥٨]
এরাই তারা-নবীগণের মধ্য থেকে যাদেরকে আল্লাহ তা�আলা নেয়ামত দান করেছেন। এরা আদমের বংশধর এবং যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় আরোহন করিয়েছিলাম, তাদের বংশধর, এবং ইব্রাহীম ও ইসরাঈলের বংশধর এবং যাদেরকে আমি পথ প্রদর্শন করেছি ও মনোনীত করেছি, তাদের বংশোদ্ভূত। তাদের কাছে যখন দয়াময় আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করা হত, তখন তারা সেজদায় লুটিয়ে পড়ত এবং ক্রন্দন করত। (১৯মরিয়ম:৫৮)
৬।
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَسْجُدُ لَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَمَن فِي الْأَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُومُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ وَكَثِيرٌ مِّنَ النَّاسِ ۖ وَكَثِيرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ ۗ وَمَن يُهِنِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِن مُّكْرِمٍ ۚ إِنَّ اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يَشَاءُ [٢٢:١٨]
তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু আছে নভোমন্ডলে, যা কিছু আছে ভুমন্ডলে, সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি পর্বতরাজি বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং অনেক মানুষ। আবার অনেকের উপর অবধারিত হয়েছে শাস্তি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন, তাকে কেউ সম্মান দিতে পারে না। আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন (২২সুরা হজ্জ :১৮)
৭।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ارْكَعُوا وَاسْجُدُوا وَاعْبُدُوا رَبَّكُمْ وَافْعَلُوا الْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٢:٧٧]
হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর, সেজদা কর, তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর এবং সৎকাজ সম্পাদন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (২২সুরা হজ্জ :৭৭)
৮।
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اسْجُدُوا لِلرَّحْمَٰنِ قَالُوا وَمَا الرَّحْمَٰنُ أَنَسْجُدُ لِمَا تَأْمُرُنَا وَزَادَهُمْ نُفُورًا [٢٥:٦٠]
�(২৫.ফুরকান: ৬০) তাদেরকে যখন বলা হয়, এই রহমানকে সিজদাহ করো তখন তারা বলে, �রহমান কি? তুমি যার কথা বলবে তাকেই কি আমারা সিজদা করেত থাকবো�? এউপদেশটি উল্টো তাদের ঘৃণা আরো বাড়িয়ে দেয়৷
(এখানে তেলাওয়াতের সিজদা করার ব্যাপারে সকল আলেম একমত। প্রত্যেক কুরআন পাঠক ও শ্রোতার এ জায়গায় সিজদা করা উচিত। তাছাড়া যখনই কেউ এ আয়াতটি শুনবে জবাবে বলবে, زَادَنا اللهُ خُضُوْعًا مَّا زَادَ لِلْأَعْدَاءِ نُفُوْرًا "আল্লাহ করুন, ইসলামের দুশমনদের ঘৃণা যত বাড়ে আমাদের আনুগত্য ও বিনয় যেন ততই বাড়ে।" এটি একটি সুন্নাত।)
৯।
أَلَّا يَسْجُدُوا لِلَّهِ الَّذِي يُخْرِجُ الْخَبْءَ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَيَعْلَمُ مَا تُخْفُونَ وَمَا تُعْلِنُونَ [٢٧:٢٥]
তারা আল্লাহকে সেজদা করে না কেন, যিনি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের গোপন বস্তু প্রকাশ করেন এবং জানেন যা তোমরা গোপন কর ও যা প্রকাশ কর।
اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ [٢٧:٢٦]
আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তিনি মহা আরশের মালিক। (আন নামল) (২৭:২৫-২৬)
১০।
إِنَّمَا يُؤْمِنُ بِآيَاتِنَا الَّذِينَ إِذَا ذُكِّرُوا بِهَا خَرُّوا سُجَّدًا وَسَبَّحُوا بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُونَ [٣٢:١٥]
কেবল তারাই আমার আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে, যারা আয়াতসমূহ দ্বারা উপদেশপ্রাপ্ত হয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং অহংকারমুক্ত হয়ে তাদের পালনকর্তার সপ্রশংস পবিত্রতা বর্ণনা করে।
(আস সাজদা) (৩২:১৫)।
১১।
قَالَ لَقَدْ ظَلَمَكَ بِسُؤَالِ نَعْجَتِكَ إِلَىٰ نِعَاجِهِ ۖ وَإِنَّ كَثِيرًا مِّنَ الْخُلَطَاءِ لَيَبْغِي بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَقَلِيلٌ مَّا هُمْ ۗ وَظَنَّ دَاوُودُ أَنَّمَا فَتَنَّاهُ فَاسْتَغْفَرَ رَبَّهُ وَخَرَّ رَاكِعًا وَأَنَابَ [٣٨:٢٤]
দাউদ বললঃ সে তোমার দুম্বাটিকে নিজের দুম্বাগুলোর সাথে সংযুক্ত করার দাবী করে তোমার প্রতি অবিচার করেছে। শরীকদের অনেকেই একে অপরের প্রতি জুলুম করে থাকে। তবে তারা করে না, যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ও সৎকর্ম সম্পাদনকারী। অবশ্য এমন লোকের সংখ্যা অল্প। দাউদের খেয়াল হল যে, আমি তাকে পরীক্ষা করছি। অতঃপর সে তার পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল, সেজদায় লুটিয়ে পড়ল এবং তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করল। (৩৮সাদ:২৪)
১২।
وَمِنْ آيَاتِهِ اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ ۚ لَا تَسْجُدُوا لِلشَّمْسِ وَلَا لِلْقَمَرِ وَاسْجُدُوا لِلَّهِ الَّذِي خَلَقَهُنَّ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ [٤١:٣٧]
তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে দিবস, রজনী, সূর্য ও চন্দ্র। তোমরা সূর্যকে সেজদা করো না, চন্দ্রকেও না; আল্লাহকে সেজদা কর, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা নিষ্ঠার সাথে শুধুমাত্র তাঁরই এবাদত কর।
|
|
فَإِنِ اسْتَكْبَرُوا فَالَّذِينَ عِندَ رَبِّكَ يُسَبِّحُونَ لَهُ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَهُمْ لَا يَسْأَمُونَ [٤١:٣٨]
অতঃপর তারা যদি অহংকার করে, তবে যারা আপনার পালনকর্তার কাছে আছে, তারা দিবারাত্রি তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে এবং তারা ক্লান্ত হয় না।
(৪১ফুসসিলাত:৩৭-৩৮)
১৩।
فَاسْجُدُوا لِلَّهِ وَاعْبُدُوا [٥٣:٦٢]
অতএব আল্লাহকে সেজদা কর এবং তাঁর এবাদত কর।
(৫৩আন নাজম:৬২)
১৪।
وَإِذَا قُرِئَ عَلَيْهِمُ الْقُرْآنُ لَا يَسْجُدُونَ [٨٤:٢١]
যখন তাদের কাছে কোরআন পাঠ করা হয়, তখন সেজদা করে না।
(৮৪আল ইনশিক্বাক:২১)
১৫।
كَلَّا لَا تُطِعْهُ وَاسْجُدْ وَاقْتَرِب [٩٦:١٩]
কখনই নয়, আপনি তার আনুগত্য করবেন না। আপনি সেজদা করুন ও আমার নৈকট্য অর্জন করুন। (৯৬আল আলাক্ব :১৯)
wmR`vebZ n�q H kn�i cևek Ki (gymv Av: Gi RvwZi NUbv) : 7:161,
�d�ikZviv Avj�vn�K wmR`v K�i : 7:206,
�
সিন্দুক :
(২০:৩৮) (হে মূসা)� সে সময়ের কথা মনে করো যখন আমি তোমার মাকে ইশারা করেছিলাম, এমন ইশারা যা অহীর মাধ্যমে করা হয়, এই মর্মে এই এ শিশুকে সিন্দুকের মধ্যে রেখে দাও এবং সিন্দুকটি দরিয়ায় ভাসিয়ে দাও, দরিয়া তাকে তীরে নিক্ষেপ করবে এবং আমার শত্রু ও এ শিশুর শত্রু একে তুলে নেবে৷
সিনাই পাহাড় :
মূসাকে আমি তিরিশ রাত-দিনের জন্য (সিনাই পর্বতের ওপর) ডাকলাম এবং পরে দশ দিন আরো বাড়িয়ে দিলাম৷ এভাবে তার রবের নির্ধারিত সময় পূর্ণ চল্লিশ দিন হয়ে গেলো -৭:১৪২ , �
(মু�মিনুন:২০) আর সিনাই পাহাড়ে যে গাছ জন্মায় তাও আমি সৃষ্টি করেছি � তা তেল উৎপাদন করে এবং আহারকারীদের জন্য তরকারীও৷
সিংহাসন :
আরো দেখুন : আ > আরশ
সাবার রানীর সিংহাসন : (হযরত সুলাইমান আ: এর ঘটনায় বর্ণিত সিংহাসন)
(২৭-নমল:৩৮) সুলাইমান বললো,�হে সভাসদগণ! তারা অনুগত হয়ে আমার কাছে আসার আগে তোমাদের মধ্যে কে তার সিংহাসন আমার কাছে নিয়ে আসতে পারে?�৩৯) এক বিশালকায় জিন বললো, আপনি নিজের জায়গা ছেড়ে ওঠার আগেই আমি তা এনে দেবো৷আমি এ শক্তি রাখি এবং আমি বিশ্বস্ত৷৪০) কিতাবের জ্ঞান সম্পন্ন অপর ব্যক্তি বললো �আমি আপনার চোখের পলক ফেলার আগেই আপনাকে তা এনে দিচ্ছি৷�৪৭ যখনই সুলাইমান সেই সিংহাসন নিজের কাছে রক্ষিত দেখতে পেলো অমনি সে চিৎকার করে উঠলো, এ আমার রবের অনুগ্রহ, আমি শোকরগুযারী করি না নাশোকরী করি তা তিনি পরীক্ষা করতে চান৷� আর যে ব্যক্তি শোকরগুযারী করে তার শোকর তার নিজের জন্যই উপকারী৷ অন্যথায় কেউ অকৃতজ্ঞ হলে, আমার রব করো ধার ধারে না এবং আপন সত্তায় আপনি মহীয়ান৷৪১) সুলাইমান বললো, �সে চিনতে না পারে এমনভাবে সিংহাসনটি তার সামনে রেখে দাও, দেখি সে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছে যায় কিনা অথবা যারা সঠিক পথ পায় না তাদের অর্ন্তভুক্ত হয়৷৪২) রাণী যখন হাজির হলো, তাকে বলা হলো তোমার সিংহাসন কি এরূপই? সে বলতে লাগলো, �এ তো যেন সেটিই৫২ আমরা তো আগেই জেনেছিলাম এবং আমরা আনুগত্যের শির নত করে দিয়েছিলাম৷ (অথবা আমরা মুসলিম হয়ে গিয়েছিলাম৷)�৫৩ ৪৩) আল্লাহর পরিবর্তে যেসব উপাস্যের সে পূজা করতো তাদের পূজাই তাকে ঈমান আনা থেকে ঠেকিয়ে রেখেছিল৷ কারণ সে ছিল একটি কাফের জাতির অর্ন্তভুক্ত৷৫৪
(৪৭. এ ব্যক্তি কে ছিল, তার কাছে কোন্ বিশেষ ধরনের জ্ঞান ছিল এবং যে কিতাবের জ্ঞান তার আয়ত্বাধীন ছিল সেটি কোন্ কিতাব ছিল, এ সম্পর্কে কোন চূড়ান্ত ও নিশ্চিত কথা বলা সম্ভবপর নয়। কুরআনে বা কোন সহীহ হাদীসে এ বিষয়গুলো সুস্পষ্ট করা হয়নি। তাফসীরকারদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ বলেন, সে ছিল একজন ফেরেশ্তা আবার কেউ কেউ বলেন, একজন মানুষই ছিল। তারপর সে মানুষটিকে চিহ্নিত করার ব্যাপারেও তাদের মধ্যে মতদ্বৈধতা রয়েছে। কেউ আসফ ইবনে বরখিয়াহ (Asaf-B-Barchiah)-এর নাম বলেন । ইহুদী রাব্বীদের বর্ণনা অনুযায়ী তিনি ছিলেন মানব প্রধান (Prince of Men) কেউ বলেন, তিনি ছিলেন খিযির। কেউ অন্য করোর নাম নেন। আর ইমাম রাযী এ ব্যাপারে জোর দিয়ে বলতে চান যে, তিনি ছিলেন হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম নিজেই। কিন্তু এদের কারো কোন নির্ভরযোগ্য উৎস নেই। আর ইমান রাযীর বক্তব্য তো কুরআনের পূর্বাপর আলোচনার সাথে কোন সামঞ্জস্য রাখে না। এভাবে কিতাব সম্পর্কেও মুফাস্সিরগণের বিভিন্ন বক্তব্য পেশ করেছেন। কেউ বলেন, এর অর্থ লাওহে মাহফুজ এবং কেউ বলেন, শরীয়াতের কিতাব। কিন্তু এগুলো সবই নিছক অনুমান। আর কিতাব থেকে ঐ অর্জিত জ্ঞান সম্পর্কেও বিনা যুক্তি-প্রমাণে ঐ একই ধরনের অনুমানের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। আমরা কেবলমাত্র কুরআনে যতটুকু কথা বলা হয়েছে অথবা তার শব্দাবলী থেকে যা কিছু প্রকাশিত হয়েছে ততটুকু কথাই জানি ও মানি। ঐ ব্যক্তি কোনক্রমেই জ্বিন প্রজাতির অর্ন্তভূক্ত ছিল না এবং তার মানব প্রজাতির অর্ন্তভূক্ত হওয়াটা মোটেই অসম্ভব ও অস্বাভাবিক নয়। তিনি কোন অস্বাভাবিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন না। তার এ জ্ঞান আল্লাহর কোন কিতাব থেকে সংগৃহীত ছিল। জ্বিন নিজের দৈহিক শক্তি বলে কয়েক ঘন্টার মধ্যে এ সিংহাসন উঠিয়ে আনার দাবী করছিল। কিন্তু এ ব্যক্তি আসমানী কিতাবের শক্তিবলে মাত্র এক লহমার মধ্যে তা উঠিয়ে আনলেন।
৫১. তাৎপর্যপূর্ণ বাক্য। এর অর্থ হচ্ছে, হঠাৎ তিনি স্বদেশ থেকে এত দূরে নিজের সিংহাসন দেখে একথা বুঝতে পারেন কি না যে এটা তাঁরই সিংহাসন এবং এটা উঠিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। আবার এ বিস্ময়কর মু'জিযা দেখে তিনি সত্য-সঠিক পথের সন্ধান পান অথবা নিজের ভ্রষ্টতার মধ্যে অবস্থান করতে থাকেন কিনা এ অর্থও এর মধ্যে নিহিত রয়েছে।
যারা বলেন, হযরত সুলাইমান (আ) এ সিংহাসন হস্তগত করতে চাচ্ছিলেন, এ থেকে তাদের ধারণার ভ্রান্তি প্রমাণিত হয়। এখানে তিনি নিজেই প্রকাশ করছেন, রাণীকে সঠিক পথপ্রদর্শনের জন্যই তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। অন্য কোন উদ্দেশ্যে নয়।
৫২. এ থেকে তাদের চিন্তার ভ্রান্তিও প্রমাণিত হয়, যারা ঘটনাটিকে কিছুটা এভাবে চিত্রিত করেছেন যেন হযরত সুলাইমান তাঁর সম্মানীয় মেহমানের জন্য একটি সিংহাসন তৈরি করতে চাচ্ছিলেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি টেন্ডার তলব করলেন। একজন বলিষ্ঠ সুঠামদেহী কারিগর কিছু বেশী সময় নিয়ে সিংহাসন তৈরি করে দেয়ার প্রস্তাব দিল। কিন্তু অন্য একজন পারদর্শী ওস্তাদ কারিগর বললো, আমি অতি দ্রুত অতি অল্প সময়ের মধ্যে দেখতে না দেখতেই তৈরি করে দিচ্ছি। একটি মাত্র কথাই এসব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাতে সক্ষম সেটি এই যে, হযরত সুলাইমানের (আ) নিজেই রাণীর সিংহাসনটিই আনার কথা বলেছিলেন। (أَيُّكُمْ يَأْتِينِي بِعَرْشِهَا অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে কে তার সিংহাসনটি আমার কাছে এনে দিতে পারবে৷) সিংহাসনটি নিয়ে আসার পর তিনি তারই সিংহাসন অপরিচিত পদ্ধতিতে তারই সামনে উপস্থাপিত করার জন্য কর্মচারীদেরকে হুকুম দিয়েছিলেন نَكِّرُوا لَهَا عَرْشَهَا তারপর যখন তিঁনি এলেন, তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সিংহাসনটি কি এ রকম (أَهَكَذَا عَرْشُكِ)৷ তিঁনি জবাবে বললেন, এটা যেন সেটাই (كَأَنَّهُ هُوَ)। এ ধরণের সুস্পষ্ট বর্ণনার উপস্থিতিতে ঐসব জল্পনা-কল্পনার অবকাশ কোথায়৷ এরপরও যদি কারো সন্দেহ থাকে তাহলে পরবর্তী বাক্য তাঁকে নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট।
৫৩. অর্থাৎ এ মু'জিযা দেখার আগেই সুলাইমান আলাইহিস সালামের যেসব গুণাবলী ও বিবরণ আমরা জেনেছিলাম তার ভিত্তিতে আমাদের বিশ্বাস জন্মে গিয়েছিল যে, তিনি নিছক একটি রাজ্যের শাসনকর্তা নন বরং আলাহর একজন নবী। যদি এটা মনে করে নেয়া হয় যে, হযরত সুলাইমান (আ) তাঁর জন্য একটি সিংহাসন তৈরি করে রেখে দিয়েছিলেন, তাহলে সিংহাসন দেখার এবং "যেন এটা সেটাই" বলার পর এ বাক্যটি জুড়ে দেয়ার কি স্বার্থকতা থাকে৷ ধরে নেয়া যাক, যদি রাণীর সিংহাসনের অনুরূপ ঐ সিংহাসনটি তৈরি করা হয়ে থাকে তাহলেও তার মধ্যে এমন কি মাহাত্ম ছিল যার ফলে একজন সূর্য পূজারিনী রাণী তা দেখে বলে উঠলেন َأُوتِينَا الْعِلْمَ مِنْ قَبْلِهَا وَكُنَّا مُسْلِمِينَ "আমাদের আগেই এ জ্ঞানলাভের সৌভাগ্য হয়েছিল এবং আমরা মুসলিম হয়ে গিয়েছিলাম।" )
সীরাতাল মুস্তাক্বীম : সরল পথ : সঠিক পথ : (আরো দেখুন : পথ) �
(১৯:৪৩) আব্বাজান! আমার কাছে এমন এক জ্ঞান এসেছে যা আপনার কাছে আসেনি, আপনি আমার অনুসরণ করে চলুন, আমি আপনাকে সোজাপথ দেখিয়ে দেবো৷
(১৯:৩৬) আর (ঈসা বলেছিল)আল্লাহ আমার রব এবং তোমাদেরও রব৷ কাজেই তোমরা তার বন্দেগী করো৷ এটিই সোজা পথ৷
(তোমরা এ অস্থায়ী জীবনের প্রতারণা জালে আবদ্ধ হচ্ছো) আর আল্লাহ তোমাদের শান্তির ভুবনের দিকে আহবান জানাচ্ছেন৷� (হেদায়াত তার ইখতিয়ারভুক্ত) যাকে তিনি চান সোজা পথ দেখান -১০:২৫,
(১৭:৮৪) হে নবী! এদেরকে বলে দাও, �প্রত্যেকে নিজ নিজ পথে কাজ করছে, এখন একমাত্র তোমাদের রবই ভালো জানেন কে আছে সরল সঠিক পথে৷�
(১১:৫৬) আমার ভরসা আল্লাহর ওপর, যিনি আমার রব এবং তোমাদেরও রব৷ তিনিই প্রতিটি প্রানীর ভাগ্যনিয়ন্তা৷ নিসন্দেহে আমার রব সরল পথে আছেন৷
(১২:৪০) শাসন কর্তৃত্ব আল্লাহ ছাড়া আর কারোর নেই৷ তাঁর হুকুম- তোমরা তাঁর ছাড়া আর কারোর বন্দেগী করবে না৷ এটিই সরল সঠিক জীবন পদ্ধতি, কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না৷
(১৫:৪০) তবে এদের মধ্য থেকে তোমার যেসব বান্দাকে তুমি নিজের জন্য নির্বাচিত করে নিয়েছো তাদের ছাড়া৷৪১) বললেন, এটিই আমার নিকট পৌঁছুবার সোজা পথ৷৪২) অবশ্যি যারা আমার প্রকৃত বান্দা হবে তাদের ওপর তোমার কোনো জোর খাটবে না৷
(১৬:৯) আর যেখানে বাঁকা পথও রয়েছে সেখানে সোজা পথ দেখাবার দায়িত্ব আল্লাহর ওপরই বর্তেছে৷ তিনি চাইলে তোমাদের সবাইকে সত্য-সোজা পথে পরিচালিত করতেন৷
(১৭:৭৬) আল্লাহ আর একটি উপমা দিচ্ছেন৷ দুজন লোক৷ একজন বধির ও বোবা, কোনো কাজ করতে পারে না৷ নিজের প্রভুর ঘাড়ে বোঝা হয়ে চেপে আছে৷ যেদিকেই তাকে পাঠায় কোনো ভালো কাজ তার দ্বারা হয়ে ওঠে না৷ দ্বিতীয়জন ইনসাফের হুকুম দেয় এবং নিজে সত্য সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত আছে৷ বলো, এরা দুজন কি সমান ?
(১৬:১২১) সে (হযরত ইব্রাহীম আ:) ছিল আল্লাহর নিয়ামতের শোকরকারী৷ আল্লাহ তাকে বাছাই করে নেন এবং সরল সঠিক পথ দেখান৷
(৩০-রূম: ৩০) কাজেই ( হে নবী এবং নবীর অনুসারীবৃন্দ ) একনিষ্ঠ হয়ে নিজের চেহারা এ দীনের দিকে স্থির নিবদ্ধ করে দাও৷ আল্লাহ মানুষকে যে প্রকৃতির ওপর সৃষ্টি করেছেন তাঁর ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাও৷ আল্লাহ তৈরি সৃষ্টি কাঠামো পরিবর্তন করা যেতে পারে না৷ এটিই পুরোপুরি সঠিক ও যথার্থ দীন৷� কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না৷ (৩০-রূম: ৩১) (প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাও একথার ওপর ) আল্লাহ অভিমুখী হয়ে এবং তাকে ভয় করো,� আর নামায কায়েম করো� এবং এমন মুশরিকদের অন্তরভুক্ত হয়ে যেয়ো না, ৩২) যারা নিজেদের আলাদা আলাদা দীন তৈরি করে নিয়েছে আর বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে ৷ প্রত্যেক দলের কাছে যা আছে তাতেই তারা মশগুল হয়ে আছে৷
(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : চ > চেহারা, ন > নামায, দ > দীন)
সীরাতাল মুস্তাকীমে তারাই অটল থাকতে পারে যাদের অন্তর ইসলাম ও কুরআনের উপর ঝুঁকে পড়ে :
�(হাজ্ব:৫৪) --এবং যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তারা জেনে নেয় যে, তোমার রবের পক্ষ থেকে এটা সত্য এবং তারা এর প্রতি ঈমান আনে এবং এর সামনে তাদের অন্তর ঝুঁকে পড়ে; যারা ঈমান আনে তাদেরকে অবশ্যই আল্লাহ চিরকাল সত্য-সরল পথ দেখিয়ে থাকেন৷
সীরাতাল মুস্তাক্বীম লাভ করা কুরানের অনুসরণ ও� আল্লাহর অনুগ্রহের উপর নির্ভর করে :
(নুর:৪৬) আমি পরিষ্কার সত্য বিবৃতকারী আয়াত নাযিল করে দিয়েছি তবে আল্লাহই যাকে চান সত্য সরল পথ দেখান ৷
কুরআন সোজা পথ দেখায় :
(১৭:৯) আসলে এ কুরআন এমন পথ দেখায় যা একেবারেই সোজা৷ যারা একে নিয়ে ভাল কাজ করতে থাকে তাদেরকে সে সুখবর দেয় এ মর্মে যে, তাদের জন্য বিরাট প্রতিদান রয়েছে৷
নবী রাসুলগণ সীরাতল মুস্তাক্বীমের উপর অটল ছিলেন, এটা আল্লাহর অনুগ্রহের ফলেই সম্ভব হয়েছে : �আরো দেখুন : দ > দৃঢ়তা,� ন > নবীগণ ।
(১২:২৪) মহিলাটি তার দিকে এগিয়ে এলো এবং ইউসুফও তার দিকে এগিয়ে যেতো যদি না তার রবের জ্বলন্ত প্রমাণ প্রত্যক্ষ করতো৷ এমনটিই হলো, যাতে আমি তার থেকে অসৎবৃত্তি ও অশ্লীলতা দূর করে দিতে পারি৷ আসলে সে ছিল আমার নির্বাচিত বান্দাদের অন্তরভুক্ত৷
(১৭:৭৪) আর যদি (হে মুহাম্মদ !) আমি তোমাকে মজবুত না রাখতাম তাহলে তোমার পক্ষে তাদের দিকে কিছু না কিছু ঝুঁকে পড়া অসম্ভব ব্যাপার ছিলো না৷৭৫) কিন্তু যদি তুমি এমনটি করতে তাহলে আমি এ দুনিয়ায় তোমাকে দ্বিগুণ শাস্তির মজা টের পাইয়ে দিতাম এবং আখেরাতেও, তারপর আমার মুকাবিলায় তুমি কোনো সাহায্যকারী পেতে না৷
(হাজ্ব:৬৭) ...(হে মুহাম্মদ) অবশ্যই তুমি সঠিক সরল পথে আছো৷
নবীগণ সীরাতাল মুস্তাক্বীমের দিকে আহ্বান জানিয়েছেন :
(মু�মিনুন:৭৩) তুমি তো তাদেরকে সহজ সরল পথের দিকে ডাকছো ।
সঠিক পথ লাভ করতে হলে : নবীগণের� অনুসরণ করতে হবে :
(হাজ্ব:৬৭) ...(হে মুহাম্মদ) অবশ্যই তুমি সঠিক সরল পথে আছো৷
সামান্য দু:খ কষ্টে বা বিপদে আপদে পড়লেই যারা আল্লাহর পথ থেকে দুরে সরে যায় �:ইবাদতের ক্ষেত্রে যারা ইস্তেক্বামাত / দৃঢ়তা অবলম্বন করে না : তাদের দুনিয়া আখিরাত উভয়ই বরবাদ :
(হাজ্ব:১১) আর মানুষের মধ্যে এমনও কেউ আছে, যে এক কিনারায় দাঁড়িয়ে আল্লাহর বন্দেগী করে,১৫ যদি তাতে তার উপকার হয় তাহলে নিশ্চিন্ত হয়ে যায় আর যদি কোনো বিপদ আসে তাহলে পিছনের দিকে ফিরে যায় ১৬ তার দুনিয়াও গেলো এবং আখেরাতও৷ এ হচ্ছে সুস্পষ্ট ক্ষতি৷১৭ ১২) তারপর সে আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদেরকে ডাকে যারা তার না ক্ষতি করতে পারে, না উপকার, এ হচ্ছে ভ্রষ্টতার চূড়ান্ত৷১৩) সে তাদেরকে ডাকে যাদের ক্ষতি তাদের উপকারের চাইতে নিকটতর১৮ নিকৃষ্ট তার অভিভাবক এবং নিকৃষ্ট তার সহযোগী৷১৯ ১৪) (পক্ষান্তরে) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে ২০ আল্লাহ তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত হবে; আল্লাহ যা চান তাই করেন৷২১
(১৫. অর্থাৎ দীনী বৃত্তের মধ্যখানে নয় বরং তার এক প্রান্তে বা কিনারায় অথবা অন্য কথায় কুফর ও ইসলামের সীমান্তে দাঁড়িয়ে বন্দেগী করে। যেমন কোন দো-মনা ব্যক্তি কোন সেনাবাহিনীর এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকে। যদি দেখে সেনাদল বিজয়লাভ করছে তাহলে তাদের সাথে মিলে যায় আর যদি দেখে পরাজিত হচ্ছে তাহলে আস্তে আস্তে কেটে পড়ে।
১৬. এখানে এমন সব লোকের কথা বলা হয়েছে যাদের মানসিক গঠন অপরিপক্ক, আকীদা-বিশ্বাস নড়বড়ে এবং যারা প্রবৃত্তির পূজা করে। তারা ইসলাম গ্রহণ করে লাভের শর্তে। তাদের ঈমান এ শর্তের সাথে জড়িত হয় যে, তাদের আকাংখা পূর্ণ হতে হবে, সব ধরণের নিশ্চিন্ততা অর্জিত হতে হবে, আল্লাহর দীন তাদের কাছে কোন স্বার্থ ত্যাগ দাবী করতে পারবে না এবং দুনিয়াতে তাদের কোন ইচ্ছা ও আশা অপূর্ণ থাকতে পারবে না। এসব হলে তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট এবং তার দীন তাদের কাছে খুবই ভালো। কিন্তু যখনই কোন আপদ বলাই নেমে আসে অথবা আল্লাহর পথে কোন বিপদ, কষ্ট ও ক্ষতির শিকার হতে হয় কিংবা কোন আকাংখা পূর্ণ হয় না তখনই আর আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা, রসূলের রিসালাত ও দীনের সত্যতা কোনটাই ওপরই তারা নিশ্চিন্ত থাকে না। এরপর তারা এমন প্রতিটি বেদীমূলে মাথা নোয়াতে উদ্যেগী হয় যেখানে তাদের লাভের আশা ও লোকসান থেকে বেঁচে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
১৭. এখানে একটি অনেক বড় সত্যকে কয়েকটি কথায় প্রকাশ করে দেয়া হয়েছে। আসলে দো-মনা মুসলমানের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হয়। কাফের যখন নিজের রবের মুখাপেক্ষী না হয়ে এবং পরকাল থেকে বেপরোয়া ও আল্লাহর আইনের অনুগত্য মুক্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে বস্তুগত স্বার্থের পেচনে দৌঁড়াতে থাকে তখন সে নিজের পরকাল হারালেও দুনিয়ার স্বার্থ কিছু না কিছু হাসিল করেই নেয়। আর মু'মিন যখন পূর্ণ ধৈর্য, অবিচলতা, দৃঢ় সংকল্প ও স্থৈর্য সহকারে আল্লাহর দীনের আনুগত্য করে তখন যদিও পার্থিব সাফল্য শেষ পর্যন্ত তার পদ-চুম্বন করেই থাকে, তবুও যদি দুনিয়া একেবারেই তার নাগালের বাইরে চলে যেতেই থাকে, আখেরাতে তার সাফল্য সুনিশ্চিত হয়। কিন্তু এ দো-মনা মুসলমান নিজের দুনিয়ার স্বার্থ লাভ করতে পারে না এবং আখেরাতেও তার সাফল্যের কোন সম্ভবনা থাকে না। তার মন ও মস্তিষ্কের কোন এক প্রকোষ্ঠ আল্লাহ ও আখেরাতের অস্তিত্বের যে ধারণা রয়েছে এবং ইসলামের সাথে সম্পর্ক তার মধ্যে নৈতিক সীমারেখা কিছু না কিছু মেনে চলার যে প্রবণতা সৃষ্টি করেছে, দুনিয়ার দিকে দৌড়াতে থাকলে এগুলো তার হাত টেনে ধরে। ফলে নিছক দুনিয়াবী ও বৈষয়িক স্বার্থ অন্বেষার জন্য যে ধরনের দৃঢ়তা ও একনিষ্ঠতার প্রয়োজন তা একজন কাফেরের মতো তার মধ্যে সৃষ্টি হয় না। আখেরাতের কথা চিন্তা করলে দুনিয়ার লাভ ও স্বার্থের লোভ, ক্ষতির ভয় এবং প্রবৃত্তির কামনা বাসনাকে বিধিনিষেধের শৃংখলে বেঁধে রাখার ব্যাপারে মানসিক অস্বীকৃতি সেদিকে যেতে দেয় না বরং বৈষয়িক স্বার্থ পূজা তার বিশ্বাস ও কর্মকে এমনভাবে বিকৃত করে দেয় যে, আখেরাতে তার শাস্তি থেকে নিষ্কৃতিলাভের সম্ভাবনা থাকে না। এভাবে সে দুনিয়া ও আখেরাত দুটোই হারায়।
১৮. প্রথম আয়াতে আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য মাবুদদের উপকার ও ক্ষতি করার ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করা হয়েছে। কারণ, মূলত ও যথার্থই তাদের উপকার ও ক্ষতি করার কোন ক্ষমতা নেই। দ্বিতীয় আয়াতে তাদের ক্ষতিকে উপকারের চেয়ে নিকটতর বলা হয়েছে। কারণ, তাদের কাছে দোয়া চেয়ে এবং অভাব ও প্রয়োজন পূরণের জন্য তাদের সামনে হাত পাতার মাধ্যমে সে নিজের ঈমান সংগে সংগেই ও নিশ্চিতভাবেই হারিয়ে বসে। তবে যে লাভের আশায় সে তাদেরকে ডেকেছিল তা অর্জিত হবার ব্যাপারে বলা যায়, প্রকৃত সত্যের কথা বাদ দিলেও প্রকাশ্য অবস্থার দৃষ্টিতে সে নিজেও একথা স্বীকার করবে যে, তা অর্জিত হওয়াটা নিশ্চিত নয় এবং বাস্তবে তা সংঘটিত হবার নিকটতর সম্ভাবনাও নেই । হতে পারে, আল্লাহ তাতে আরো বেশী পরিক্ষার সম্মুখীন করার জন্য কোন আস্তানায় তার মনোবাঞ্চনা পূর্ণ করেছেন। আবার এও হতে পারে যে, সে আস্তানায় সে নিজের ঈমানও বিকিয়ে দিয়ে এসেছে এবং মনোবাঞ্চনা পূর্ণ হয়নি।
১৯. অর্থাৎ মানুষ বা শয়তান যে-ই হোক না কেন, যে তাকে এ পথে এনেছে সে নিকৃষ্টতম কর্মসম্পাদক ও অভিভাবক এবং নিকৃষ্টতম বন্ধু ও সাথী।
২০. অর্থাৎ যাদের অবস্থা উল্লেখিত মতলবী, ধান্দাবাজ, দো-মনা ও দৃঢ় বিশ্বাসহীন মুসলমানের মতো নয় বরং যারা ঠান্ডা মাথায় খুব ভালোভাবে ভেবে চিন্তে আল্লাহ, রসূল ও আখেরাতকে মেনে নেবার ফায়সালা করে তারপর ভালো মন্দ যে কোন অবস্থার সম্মুখীন হতে হোক এবং বিপদের পাহাড় মাথায় ভেঙে পড়ুক বা বৃষ্টিধারার মতো পুরস্কার ঝড়ে পড়ুক সবাবস্থায় দৃঢ়পদে সত্যের পথে এগিয়ে চলে।
২১. অর্থাৎ আল্লাহ ক্ষমতা অসীম। দুনিয়ায় বা আখেরাতে অথবা উভয় স্থানে তিনি যাকে যা চান দিয়ে দেন এবং যার থেকে যা চান চিনিয়ে নেন। তিনি দিতে চাইলে বাধা দেবার কেউ নেই। না দিতে চাইলে আদায় করার ও কেউ নেই।)
(৩০-রূম: ৩৬) যখন লোকদের দয়ার স্বাদ আস্বাদন করাই তখন তারা তাতে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে এবং যখন তাদের নিজেদের কৃতকর্মের ফলে তাদের ওপর কোন বিপদ এসে পড়ে তখন সহসা তারা হতাশ হয়ে যেতে থাকে৷ ৫৫ ৩৭) এরা কি দেখে না আল্লাহই যাকে চান তাঁর রিযিক সম্প্রসারিত করেন এবং সংকীর্ণ করেন (যাকে চান ? ) অবশ্যই এর মধ্যে রয়েছে বহু নিদর্শনাবলী এমন লোকদের জন্য যারা ঈমান আনে৷ ৫৬
৫৫ . ওপরের আয়াতে মানুষের মূর্খতা ও অজ্ঞতা , এবং তাঁর অকৃতজ্ঞতা ও বিশ্বাসঘাতকতার জন্য তাকে পাকড়াও করা হয়েছিল। এ মানুষের হীন প্রবৃত্তি ও তাঁর সংকীর্ণমনতাঁর জন্য তাকে পাকড়াও করা হয়েছে। এ হীনচেতা কাপুরুষটি যখন দুনিয়ায় কিছু ধন- সম্পদ , শক্তি ও মর্যাদা লাভ করে এবং দেখে তাঁর কাজ খুব ভালোভাবে চলছে তখন এ সবকিছু যে মহান আল্লাহর দান, একথা আর তাঁর একদম মনে থাকে না। তখন সে মনে করতে থাকে তাঁর মধ্যে এমন অসাধারণ কিছু আছে যার ফলে সে এমন কিছু লাভ করেছে যা থেকে অন্যেরা বঞ্চিত হয়েছে। এ বিভ্রান্তির মধ্যে অহংকার ও আত্মগরিমার নেশায় সে এমনই বিভোর হয়ে যায় যার ফলে সে আল্লাহ ও সৃষ্টি কাউকেও ধর্তব্যের মধ্যে গণ্য করে না।কিন্তু যখনই সৌভাগ্য মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে হিম্মত হারিয়ে ফেলে এবং দুর্ভাগ্যের একটিমাত্র আঘাতই তাঁর হৃদয়াবৃত্তি ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। তখন এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, হীনতম কাজ করতেও সে কুণ্ঠিত হয় না, এমন কি শেষ পর্যন্ত সে আত্মহত্যাও করে বসে।
৫৬ . অর্থাৎ মানুষের নৈতিক চরিত্রের ওপর কুফর ও শিরক কি প্রভাব বিস্তার করতে পারে এবং এর বিপরীত পক্ষে আল্লাহর প্রতি ঈমানের নৈতিক পরিণাম কি , মুমিনরা এ থেকে সে শিক্ষা লাভ করতে পারে। যে ব্যক্তিই নিষ্ঠা সহকারে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে এবং তাকেই রিযিকের সমুদয় ভাণ্ডারের মালিক মনে করে, সে কখনো আল্লাহকে ভুলে থাকা লোকদের মতো সংকীর্ণ হৃদয়বৃত্তির পরিচয় দিতে পারে না। সে প্রসারিত রিযিক লাভ করলে অহংকারে মত্ত হয় না। বরং আল্লাহর শোকর আদায় করে, আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি মমতা ও ঔদার্যপূণ্য ব্যবহার করে এবং আল্লাহর সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করতে কখনো কুণ্ঠাবোধ করে না। সংকীণ জীবিকা লাভ করুক বা অনাহারে থাকুক সর্বাবস্থায় সে সবর করে , কখনো বিশ্বস্ততা , আমানতদারী ও আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেয় না এবং শেষ সময় পর্যন্ত আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহের আশায় বসে থাকে। কোন নাস্তিক বা মুশরিক এ নৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করতে পারে না।
সীরাতাল মুস্তাক্বীম হলো সীরাতাল হামীদ :
(হাজ্ব:২৪) তাদেরকে পবিত্র কথা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং তাদেরকে দেখানো হয়েছে শ্রেষ্ঠ গুণাবলী সম্পন্ন আল্লাহর পথ৷
আল্লাহর পথে অটল থাকার জন্য নামাজ জরুরী কেন ? সীরাতাল মুস্তাক্বিমে টিকে থাকার জন্য �প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কার্যকারিতা কি? :
দেখুন : ন > নামাজ > আল্লাহর পথে অটল থাকার জন্য নামাজ জরুরী কেন ? সীরাতাল মুস্তাক্বিমে টিকে থাকার জন্য �প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কার্যকারিতা কি? ।
নিজের চেহারা দ্বীনের দিকে স্থির নিবদ্ধ রাখো : দ্বীনের উপর অটল থাকো :
(৩০-রূম: ৩০) কাজেই ( হে নবী এবং নবীর অনুসারীবৃন্দ ) একনিষ্ঠ হয়ে নিজের চেহারা এ দীনের� দিকে স্থির নিবদ্ধ করে দাও৷ আল্লাহ মানুষকে যে প্রকৃতির ওপর সৃষ্টি করেছেন তাঁর ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাও৷ ৪৫ আল্লাহ তৈরি সৃষ্টি কাঠামো পরিবর্তন করা যেতে পারে না৷ ৪৬ এটিই পুরোপুরি সঠিক ও যথার্থ দীন৷ ৪৭ কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না৷
৪৫ . অর্থাৎ সমগ্র মানব জাতিকে এ প্রকৃতির ওপর সৃষ্টি করা হয়েছে যে, এক আল্লাহ ছাড়া তাদের আর কোন স্রষ্টা , রব, মাবুদ ও আনুগত্য গ্রহণকারী নেই। এ প্রকৃতির ওপর তোমাদের প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়া উচিত। যদি স্বেচ্ছাচারীভাবে চলার নীতি অবলম্বন করো তাহলে প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরণ করবে। আর যদি অন্যের বন্দেগীর শিকল নিজের গলায় পরে নাও তাহলেও নিজের প্রকৃতির বিরুদ্ধে কাজ করবে। এ বিষয়টি নবী (সা) বহু হাদীসে সুস্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন। যেমনঃ
--------------------------
" মাতৃগর্ভ থেকে জন্মলাভকারী প্রত্যেকটি শিশু আসলে মানবিক প্রকৃতির ওপরই জন্ম লাভ করে। তাঁরপর তাঁর মা-বাপই তাকে পরবর্তীকালে ইহুদী, খৃষ্টান ও অগ্নিপূজারী হিসেবে গড়ে তোলে।"
এর দৃষ্টান্ত হচ্ছে, যেমন প্রত্যেকটি পশুর পেট থেকে পুরোপুরি নিখুঁত ও সুস্থ পশুই বের হয়ে আসে। কোন একটা বাচ্চাও কান কাটা অবস্থায় বের হয়ে আসে না। পরে মুশরিকরা নিজেদের জাহিলী কুসংস্কারের কারণে তাঁর কান কেটে দেয়।
মুসনাদে আহমাদ ও নাসায়ীতে আর একটি হাদীস আছে, তাতে বলা হয়েছেঃ এক যুদ্ধে মুসলমানরা শত্রুদের শিশু সন্তানদেরকেও হত্যা করে। নবী (সা) এর কাছে এ খবর পৌঁছে যায়। তিনি ভীষণ অসন্তুষ্ট হন এবং বলেনঃ
--------------------------
" লোকদের কি হয়ে গেছে, আজ তারা সীমা ছাড়িয়ে গেছে এবং শিশুদেরকেও হত্যা করেছে ৷ "
একজন জিজ্ঞেস করলো, এরা কি মুশরিকদের সন্তান ছিল না। জবাবে তিনি বলেনঃ
-----------------------------------------
"তোমাদের সর্বোত্ততম লোকেরা তো মুশরিকদেরই আওলাদ।" তাঁরপর বলেনঃ
-----------------------
" প্রত্যেক প্রাণসত্তা প্রকৃতির ওপর জন্ম নেয়, এমনকি যখন কথা বলতে শেখে তখন তাঁর বাপ- মা তাকে ইহুদী খৃষ্টানে পরিণত করে।"
অন্য একটি হাদীসে ইমাম আহমাদ (রা) ঈযায ইবনে হিমার আল মুজাশি'য়ী থেকে উদ্ধৃত করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, একদিন নবী (সা) নিজের ভাষণের মাঝখানে বলেনঃ
-------------------------------------
" আমার রব বলেন, আমার সমস্ত বান্দাদেরকে আমি একনিষ্ঠ সত্যপথাশ্রয়ী করে সৃষ্টি করেছিলাম, তাঁরপর শয়তানরা এসে তাদেরকে দ্বীন থেকে বিপথগামী করে এবং তাদের জন্য আমি যা কিছু হালাল করে দিয়েছিলাম সেগুলোকে হারাম করে নেয় এবং তাদেরকে হুকুম দেয়, আমার সাথে এ জিনিসগুলোকে শরীক গণ্য করো , যেগুলোকে শরীক করার জন্য আমি কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করিনি। "
৪৬ . অর্থাৎ আল্লাহ মানুষকে নিজের বান্দায় পরিণত করেছেন। কেউ চাইলেও এ কাঠামোয় কোন পরিবর্তন সাধন করতে পারে না। মানুষ বান্দা থেকে অ- বান্দা হতে পারে না এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ইলাহ বানিয়ে নিলেও প্রকৃতপক্ষে সে মানুষের ইলাহ হতে পারে না। মানুষ নিজের জন্য যতগুলো উপাস্য তৈরি করে নিক না কেন, মানুষ যে, এক আল্লাহ ছাড়া আর কারো বান্দা নয় এ বাস্তব সত্যটি অকাট্য ও অবিচল রয়ে গেছে। মানুষ নিজের মূর্খতা ও অজ্ঞতাঁর কারণে যাকে ইচ্ছা আল্লাহর গুণাবলী ও ক্ষমতাঁর ধারক গণ্য করতে পারে এবং যাকে চায় তাকে নিজের ভাগ্য ভাঙা- গড়ার মালিক মনে করতে পারে।কিন্তু প্রকৃত ও বাস্তব সত্য এটিই যে, সার্বভৌম কর্তৃত্বের গুণাবলীর অধিকারী একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নয়। কেউ তাঁর মতো ক্ষমতাঁর অধিকারী নয় এবং মানুষের ভাগ্য ভাঙা-গড়ার শক্তিও আল্লাহ ছাড়া কারো নেই।
এ আয়াতটির আর একটি অনুবাদ এও হতে পারেঃ " আল্লাহর তৈরি কাঠামোয় পরিবর্তন করা যাবে না।" অর্থাৎ আল্লাহ যে প্রকৃতির ওপর মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাকে বিকৃত করা ও ভেঙ্গে ফেলা উচিত নয়।
৪৭ . অর্থাৎ শান্ত সমাহিত ভারসাম্যপূর্ণ প্রকৃতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকাই সঠিক ও সহজ পথ।
সীদ্ধান্ত :
সীদ্ধান্ত গ্রহণ করার পর তার উপরে অটল থাকো :
(১৬:৯৪) ......কোনো পদক্ষেপ একবার দৃঢ় হবার পর আবার যেন পিছলে না যায় ..।
(১৬:১০৪) আসলে যারা আল্লাহর আয়াতসমূহ মানে না আল্লাহ কখনো তাদেরকে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছার সুযোগ দেন না এবং এ ধরনের লোকদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব৷
অপরাধীদের সীদ্ধান্ত গ্রহণ ভুল হয় : যা পরিণামের তাদের নিজেদেরই ক্ষতির কারণ হয় :
(২৮-ক্বাছাছ : ৮) . শেষ পর্যন্ত ফেরাউনের পরিবারবর্গ তাকে (দরিয়া থেকে) উঠিয়ে নিল,যাতে সে তাদের শত্রু এবং তাদের দুঃখের কারণ হয়৷১১ যথার্থই ফেরাউন, হামান ও তার সৈন্যরা (তাদের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ) ছিল বড়ই অপরাধী৷
(১১. এটা তাদের উদ্দেশ্য ছিল না বরং এ ছিল তাদের কাজের পরিণাম। যা তাদের জন্য নির্ধারিত ছিল। তারা এমন এক শিশুকে উঠাচ্ছিল যার হাতে শেষ পর্যন্ত তাদেরকে ধ্বংস হতে হবে।)
ইসলামী বিরোধীদের সীদ্ধান্ত ভূল : তওবা করে সঠিক পথে ফিরে না আসলে এর পরিণাম ফল অবশ্যই তাদের ভোগ করতে হবে :
(২৯-আনকাবুত:৪) আর যারা খারাপ কাজ করছে ৪ তারা কি মনে করে বসেছে তারা আমার থেকে এগিয়ে চলে যাবে ? ৫ বড়ই ভুল সিদ্ধান্ত তারা করছে৷
(ব্যাখ্যার জন্য দেখুন : ই > ইসলাম বিরোধী > ইসলামী বিরোধীরা আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষা পাবে না। )
স্বীকারোক্তি :
অপরাধের স্বীকারোক্তি :
হযরত ইউসুফ আ: এর ভাইদের অপরাধের� স্বীকারোক্তি :
(১২:৯১) তারা বললো, �আল্লাহর কসম, আল্লাহ তোমাকে আমাদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং যথার্থই আমরা অপরাধী ছিলাম৷�
(১২:৯৭) সবাই বলে উঠলো, �আব্বাজান৷ আপনি আমাদের গুনাহ মাফের জন্য দোয়া করুন, সত্যিই আমরা অপরাধী ছিলাম৷�
আযাবের সম্মুখীন হওয়ার পর অপরাধীদের স্বীকারোক্তি :
(২১:৪৬) আর যদি তোমার রবের আযাব তাদেরকে সামান্য স্পর্শ করে যায়, তাহলে তারা তৎক্ষণাত চিৎকার দিয়ে উঠবে, হায়! আমাদের দুর্ভাগ্য, অবশ্যই আমরা অপরাধী ছিলাম৷
স্থান : স্থান, এলাকা ও অবস্থান সম্পর্কিত আয়াত সমূহ :
����������������������� আরো দেখুন: এলাকা
১। লূত জাতির ধ্বংসের স্থান :
৭৬) সেই এলাকাটি (যেখানে এটা ঘটেছিল) লোক চলাচলের পথের পাশে অবস্থিত৷
(ব্যাখ্যা: অর্থাৎ হেজায থেকে সিরিয়া এবং ইরাক থেকে মিসর যাবার পথে এই ধবংসপ্রাপ্ত এলাকটি পড়ে । সাধারণত বাণিজ্য যাত্রীদল এ ধ্বংসের নিদর্শনগুলো দেখে থাকে । আজো সমগ্র এলাকা জুড়ে এ ধবংসাবশেষগুলো ছড়িয়ে আছে । এ এলাকাটির অবস্থান লূত সাগরের পূর্বে ও দক্ষিণে । বিশেষ করে এর দক্ষিণ অংশ সম্পর্কে ভূগোলবিদগণের বর্ণনা হচ্ছে , এ এলাকাটি এত বেশী বিধ্বস্ত যার নজীর দুনিয়ার আর কোথাও পাওয়া যায় না । -তাফহীমুল কুরআন)
�
২। আইকাবাসীদের ধ্বংসের স্থান :
(১৫:৭৮) আর আইকাবাসীরা জালেম ছিল৷ ৭৯) কাজেই দেখে নাও আমিও তাদের ওপর প্রতিশোধ নিয়েছি৷ আর এ উভয় সম্প্রদায়ের বিরাণ এলাকা প্রকাশ্য পথের ধারে অবস্থিত৷
(অর্থাৎ হযরত শো' আয়েবের (আ) সম্প্রদায়ের লোক । এ সম্প্রদায়টির নাম ছিল বনী মাদইয়ান । তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় শহরেরও নাম ছিল মাদইয়ান এবং সমগ্র এলাকটিকেও মাদইয়ান বলা হতো । আর " আইকা" ছিল তাবুকের প্রাচীন নাম । এ শব্দটির শাব্দিক অর্থ হচ্ছে ঘন জংগল । বর্তমানে একটি পাহাড়ী ঝরণার নাম আইকা । এটি জাবালে নূরে উৎপন্ন হয়ে আফাল উপত্যকায় এসে পড়ছে । মাদইয়ান ও আইকাবাসীদের এলাকাও হেজায থেকে ফিলিস্তিন ও সিরিয়া যাবার পথে পড়ে ( ব্যাখ্যার জন্য সূরা শূ'আরার ১১৫ টীকা দেখুন )
.
৩। হিজর বাসীর এলাকা : সামুদ জাতির কেন্দ্রীয় শহর
(১৫:৮০) হিজ্রবাসীরাও রসূলদের প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছিল৷
( এটি ছিল সামুদ জাতির কেন্দ্রীয় শহর । মদীনার উত্তর পশ্চিমে বর্তমান আল'উলা শহরের কয়েক মাইল দূরে এ শহরটির ধবংসাবশেষ পাওয়া যায় । মদীনা থেকে তাবুক যাবার সময় প্রধান সড়কের ওপরই এ জায়গাটি পড়ে । এ উপত্যকাটির মধ্য দিয়ে কাফেলা এগিয়ে যায় । কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ অনুযায়ী কেউ এখানে অবস্থান করে না । হিজরী আট শতকে পর্যটক ইবনে বতুতা হজ্জে যাবার পথে এখানে এসে পৌঁছেন । তিনি লেখেন : " এখানে লাল রংয়ের পাহাড়গুলোতে সামুদ জাতির ইরামতগুলো রয়েছে । এগুলো তারা পাহাড় কেটে কেটে তার মধ্যে নির্মাণ করেছিল । এ গৃহগুলোর কারুকাজ এখনো এমন উজ্জ্বল ও তরতাজা আছে যেন মনে হয় আজই এগুলো খোদাই করা হয়েছে । পচাগলা মানুষের হাড় এখনো এখানকার ঘরগুলো মধ্যে পাওয়া যায় । ( আরো বেশী ব্যাখ্যার জন্য সূরা আ'রাফের ৫৭ টীকা দেখুন ) ।
৪। উপত্যকায় উপত্যকায় কারা উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়ায় ?
বিস্তারিত দেখুন : ক > কবি > জবাব ।�
সেনাবাহিনী / সৈন্য �:
ফেরাউনের সৈন্য সমাবেশ :
(২৬.শুআরা:৫৩) এর ফলে ফেরাউন (সৈন্য একত্র করার জন্য) নগরে নগরে নকীব পাঠালো (এবং বলে পাঠালোঃ) ৫৪) এরা (মুসা আ: এর দল ) মুষ্টিমেয় কয়েকজন লোক,৫৫) এরা আমাদের নারাজ করেছে৫৬) এবং আমরা একটি দল, সদা-সতর্ক থাকাই আমাদের রীতি�।
( একথাগুলো ফেরাউনের মনের গোপন ভীতি প্রকাশ করে। লোক দেখানো নির্ভীকতার মোড়কে সেই ভীতিকে সে ঢেকে রেখেছিল। একদিকে তাৎক্ষণিক সাহায্যের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে সে সৈন্য তলব করছিল । এ থেকে মনে হয় যে, সে বনী ইসরাঈলের দিক থেকে বিপদের আশংকা করছিল। অন্যদিকে আবার একথাটিও গোপন করতে চাচ্ছিল যে , একটি দীর্ঘকালের নিগৃহীত-নিষ্পেষিত এবং চরম লাঞ্ছনা ও দাসত্বের জীবন যাপনকারী জাতির দিক থেকে ফেরাউনের মতো মহাশক্তিধর শাসক কোন আশংকা অনুভব করছে, এমনকি ত্বরিত সাহায্যের জন্য সেনাবাহিনী তলব করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। তাই নিজের বার্তা সে এমনভাবে পাঠাচ্ছে যেন মনে হচ্ছে , বেচারা বনী ইসরাঈল তো সামান্য ব্যাপার মাত্র, মুষ্টিমেয় কয়েকজন লোক, তারা আমাদের কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারবে না কিন্তু তারা এমন সব কাজ করেছে যা আমাদের ক্রোধ উৎপাদন করেছে। তাই আমরা তাদেরকে শাস্তি দিতে চাই। কোন আশংকার কারণে আমরা সেনা সমাবেশ করছি না। বরং এটি নিছক একটি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ মাত্র। বিপদের কোন দূরতম সম্ভবনা হলেও যথাসময়ে তার মূলোৎপাটনে প্রস্তুত থাকাই বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক।)
সুলায়মান আ: এর সৈন্য সমাবেশ :
(২৭.নামল:১৭) সুলাইমানের জন্য জিন, মানুষ ও পাখিদের সৈন্য সমবেত করা হয়েছিল �এবং তাদেরকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা হতো৷
(জ্বীনেরা যে হযরত সুলাইমানের সেনাবাহিনীর অংশ ছিল এবং তিনি তাদের কাজে নিয়োগ করতেন, বাইবেল একথারও উল্লেখ নেই। কিন্তু তালমূদে ও রাব্বীদের বর্ণনায় এর বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। (জুয়িশ ইনসাইকোপেডিয়া, ১১ খণ্ড, ৪৪০ পৃষ্ঠা।)
(বিস্তারিত দেখুন : ন� > নবীদের জীবনের ঘটনাবলী > হযরত সুলায়মান আ: > সুলায়মান আ: এর সেনাবাহিনী)
সুলায়মান আ: এর সেনাবাহিনীতে পাখিরাও অন্তর্ভূক্ত ছিল :
(২৭.নামল:২০) (আর একবার) সুলাইমান পাখিদের খোঁজ-খবর নিল এবং বললো, �কি ব্যাপার, আমি অমুক হুদহুদ পাখিটিকে দেখছিনা যে! সে কি কোথাও অদৃশ্য হয়ে গেছে?
(অর্থাৎ এমন সব পাখিদের খোঁজ-খবর যাদের সম্পর্কে ইতিপূর্বে বলা হয়েছে যে, জ্বিন ও মানুষের মতো তাদের সেনাদলও হযরত সুলাইমানের সেনাবাহিনীর অন্তর্ভূক্ত ছিল। সম্ভবত হযরত সুলাইমান তাদের মাধ্যমেই সংবাদ আদান-প্রদান, শিকার এবং এ ধরণের অন্যান্য কাজ করতেন।)